একই দাবিতে ২০১৭ সালে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে একটি কবুতর স্যালুট করেছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে কবুতরের স্যালুট দেওয়ার অংশটি এডিট করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির কি-ফ্রেম থেকে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ২০১৭ সালের ০১ জুন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদ সংস্থা ‘Ruptly’ এর ওয়েবসাইটে “Russia: Coo-Coo! – Putin blanked by pigeon at Spiritual Centre” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির মিল থাকলেও কবুতরের স্যালুট দেওয়ার কোনো দৃশ্য সেখানে ছিল না।
Image Comparison by Rumor Scanner.
ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শুরুতে প্রেসিডেন্ট পুতিন একজন ধর্মযাজকের সাথে হেঁটে আসছেন। পরবর্তী দৃশ্যে দেখা যায় তিনি এবং ধর্মযাজকের পাশে বেশ কয়েকজন সিকিউরিটি গার্ড ছিল। তারা হেঁটে আসার সময় একটি কালো কবুতর তাদের বাম দিক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। সে সময় পুতিন হাত দিয়ে কবুতরটিকে শুভেচ্ছা সূচক ইশারা করেন। কিন্তু কবুতরটি কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
একই ভিডিও ‘News Russia Ukraine Syria World’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটিতেও পুতিনকে স্যালুট দেওয়ার কোনো দৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
Screenshot from Youtube.
অর্থাৎ, ভ্লাদিমির পুতিনকে একটি কবুতর স্যালুট করার দাবিতে যে ভিডিওটি প্রচারিত হচ্ছে তা এডিট করে তৈরি করা হয়েছে।
মূলত, ২০১৭ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি ধর্মীয় কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আসার সময় একটি কবুতরকে শুভেচ্ছা সূচক ইশারা করলেও কবুতরটি কোনো সাড়া দেয়নি। উক্ত ভিডিওটি বিভিন্ন সময়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে একটি কবুতর স্যালুট করেছে দাবিতে প্রচার হয়ে আসছে।
তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কবুতরের স্যালুট দেওয়ার অংশটি এডিটের মাধ্যমে ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পরলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
উল্লেখ্য, ভ্লাদিমির পুতিন ২০১২ সাল থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সুতরাং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে একটি কবুতরের স্যালুট করার ভিডিওটি এডিটেড।
সম্প্রতি ‘BEXIMCO HEALTH Ramadan government subsidies’ শীর্ষক একটি ক্যাম্পেইন লিংক বিভিন্ন মেসেজ শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে।
Screenshot: Fake Website
উক্ত দাবিতে মেসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়ার স্ক্রিনশট দেখুন এখানে।
Image Collage by Rumor Scanner Screenshot: Fake Website
উক্ত ক্যাম্পেইনের একটি ওয়েবসাইট দেখুন এখানে(আর্কাইভ)
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বেক্সিমকো হেলথ এর পক্ষ থেকে রমজান উপলক্ষে ৩০ হাজার টাকার সরকারি ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে না বরং প্রতারণার উদ্দেশ্যে বেক্সিমকো হেলথ এর ওয়েবসাইট নকল করে উপহার প্রদানের এই প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে ক্যাম্পেইনটির সত্যতা যাচাইয়ে ক্যাম্পেইন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
Screenshot: microwaveconstituency
পরবর্তীতে সেখানে পর্যায়ক্রমে চারটি প্রশ্ন সামনে আসে। সেখানে বয়স, জেন্ডার এবং বেক্সিমকো হেলথ সম্পর্কে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয়।
Image Collage by Rumor Scanner
সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পর এই ধাপটি পার হয়। এরপর অভিনন্দন জানিয়ে এই ধাপটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে পরের ধাপে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ৯টি গিফট বক্স দেখা যায়। সেখানে জানানো হয়, বক্সের ভেতরে থাকা গিফট পেতে হলে সঠিক গিফট বক্স সিলেক্ট করতে হবে এবং এর জন্য ৩ বার সুযোগ দেওয়া হবে।
Image Collage by Rumor Scanner
এই ধাপটি যাচাই করার জন্য প্রদর্শিত গিফটবক্স থেকে অনুমানের ভিত্তিতে একটি বক্স সিলেক্ট করা হয়। সেখানে দুঃখপ্রকাশ করে জানানো হয় বাছাইকৃত বক্সটি খালি এবং এখনো দুইবার সুযোগ রয়েছে। পরবর্তীতে অন্য একটি বক্স সিলেক্ট করলে সেখানে বাছাইকৃত বক্সটি থেকে টাকা বের হতে দেখা যায়। এরপর অভিনন্দন জানিয়ে ৩০ হাজার টাকা জেতার কথা বলা হয়।
Image Collage by Rumor Scanner
পরের ধাপে ৫ টি ফেসবুক গ্রুপ অথবা ২০ জন বন্ধুকে এই ক্যাম্পেইন সম্পর্কে জানাতে বলা হয়। ক্যাম্পেইন সম্পর্কে জানাতে মেসেজিং প্লাটফর্ম মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের অপশন দেওয়া হয়। সেগুলোয় ক্লিক করলে উক্ত অ্যাপগুলোতে একটি লিংক পাঠানোর অপশন সামনে আসে।
Screenshot: Fake Website
উক্ত ওয়েবসাইটে নির্দেশিত সকল ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন করে ক্যাম্পেইনটির সত্যতা যাচাই করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে দাবিকৃত কোনো উপহার পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত হয়েছে রিউমর স্ক্যানার।
বেক্সিমকো হেলথ কি এমনকোনো অফার দিচ্ছে?
যে ওয়েবসাইট থেকে এই উপহার দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হচ্ছে সেটি একটি ভূয়া ওয়েবসাইট। পাশাপাশি বেক্সিমকো ফার্মা ও বেক্সিমকো হেলথ এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এবং এদের ফেসবুকপেজ কিংবা নির্ভরযোগ্য অন্যকোনো সূত্রে উক্ত অফারের সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, বেক্সিমকো ফার্মা কিংবা বেক্সিমকো হেলথ এর পক্ষ থেকে উক্ত ক্যাম্পেইনে উল্লেখিত এমন কোনো অফার দেওয়া হয়নি।
মূলত, বেক্সিমকো হেলথ এর পক্ষ থেকে রমজান উপলক্ষে ৩০ হাজার টাকা সরকারি ভর্তুকি দেওয়ার দাবিতে সম্প্রতি একটি তথ্য বিভিন্ন মেসেজ শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, বেক্সিমকোর হেলথ এর নাম ব্যবহার করে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এমনকোনো অফার দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে একাধিকবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট নকল করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রলোভন দেখানো হয়। সেসময় উক্ত বিষয়গুলোকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বেক্সিমকো হেলথ এর নাম ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে রমজান উপলক্ষে ৩০ হাজার টাকা সরকারি ভর্তুকি দেওয়ার দাবি করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ভুল তথ্য প্রচারের প্রবণতা বেশ কয়েক বছর ধরেই আলোচিত এক ইস্যু। ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বের অংশ হিসেবে রিউমর স্ক্যানারও প্রতিষ্ঠার লগ্ন থেকেই দেশীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ) মোট ৯০ টি বিষয়ে দেশীয় ১৩৩ টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সর্বমোট ৭০২ টি প্রতিবেদনকে ভুল হিসেবে শনাক্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। উল্লিখিত ৯০ টি ঘটনায় ৫১ টি মিথ্যা, ৩৭ টি বিভ্রান্তিকর, ০১ টি আংশিক মিথ্যা এবং ০১ টি বিকৃত তথ্যকে সত্য তথ্য হিসেবে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের ফল: জালোলিদ্দিন মাশারিপোভ রোনালদোকে ৭ নম্বর জার্সি না দেওয়ার কারণে আল নাসর কর্তৃক তার চুক্তি বাতিল করার দাবিটি সত্য নয় বরং মাশারিপোভ ইতোমধ্যেই ৭ নম্বর জার্সির পরিবর্তে ৭৭ নম্বর জার্সি পরে একটি ম্যাচ খেলেছেন এবং আল নাসর কর্তৃক তার চুক্তিও বাতিল করা হয়নি।
অনুসন্ধানের ফল: নিজেকে ভার্জিন দাবি করে কোনো মন্তব্য করেননি শ্রাবন্তী বরং ভারতীয় গণমাধ্যম Zee 24 Ghanta তে তার দেয়া পুরোনো একটি সাক্ষাৎকারকে ভুলভাবে প্রচার করা হয়।
অনুসন্ধানের ফল: বিজ্ঞানও বলছে দাঁড়িয়ে পানি খাওয়া যাবে না শীর্ষক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এর দাবিটি সঠিক নয় বরং মূল প্রতিবেদনে দাঁড়িয়ে পানি খাওয়ার বিষয়ে বৈজ্ঞানিক কোনো তথ্য উল্লেখ নেই।
অনুসন্ধানের ফল: ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এখনো তার বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজকে বিয়ে করেননি বরং জর্জিনার নামে পরিচালিত একটি ভুয়া ফেসবুক পেজের পোস্টকে সূত্র ধরে সৌদিতে রোনালদো তার বান্ধবী জর্জিনাকে বিয়ে করেছেন শীর্ষক তথ্যটি প্রচার করা হয়। এবং প্রকৃতপক্ষে জর্জিনা রদ্রিগেজ ফেসবুক ব্যবহারই করেন না। এছাড়া উক্ত পোস্টে রোনালদো-জর্জিনা দাবিতে প্রথম ব্যবহৃত ছবিটি এডিটেড।
অনুসন্ধানের ফল: বিএসএফের কুকুর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশী কুকুরকে সন্দেহ করার দাবিটি সঠিক নয় বরং এই ঘটনায় উক্ত কুকুরকে দেখভাল করা হ্যান্ডলারের গাফিলতি থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হয়।
আর জে কিবরিয়া ও তার স্ত্রী একে অপরের বিরুদ্ধে জিডি করেছেন দাবিতে প্রতিবেদন ঢাকা ট্রিবিউন, দৈনিক জনকণ্ঠ।
ভুল করা গণমাধ্যমের সংখ্যা: ২০
Screenshot collage: Rumor Scanner
অনুসন্ধানের ফল: রাফিয়া লোরা তার স্বামী আরজে কিবরিয়ার বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেননি বরং আরজে কিবরিয়াই তার স্ত্রী রাফিয়া লোরার বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে থানায় জিডি করেন।
অনুসন্ধানের ফল: আল-হিলালের অফিশিয়াল স্টোরে মেসির জার্সি বিক্রি করার কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ মেলেনি বরং মাত্র একটি ছবিকে কেন্দ্র করে উক্ত দাবিটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে এবং অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া যায় যে আল-হিলাল স্টোরের অ্যাপে, ওয়েবসাইট এবং রিয়াদ শাখার ফিজিক্যাল শপে এই জার্সি বিক্রি করা হয়নি।
অনুসন্ধানের ফল: এনামুল হক জজ মিয়া ৯ বছর নয় বরং ৪ বছর সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁও আসন হতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
অনুসন্ধানের ফল: এনামুল হক জজ মিয়া ১৯৮৩ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হননি বরং তিনি ১৯৮৬ এবং ১৯৮৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনই অনুষ্ঠিত হয়নি।
অনুসন্ধানের ফল: আইএমএফের বিষয়ে প্রথম আলোয় প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক নয় বরং আইএমএফের ‘ফরেন ব্রিফ’ নামক কোনো সেকশন নেই। বরং, প্রথম আলো ‘ফরেন ব্রিফ’ নামে একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন ওয়েবসাইটের বক্তব্যকে আইএমএফের বক্তব্য হিসেবে প্রচার করেছে।
অনুসন্ধানের ফল: ১৫ জানুয়ারি ৭২ জন যাত্রী ও ক্রু নিয়ে নেপালের একটি বিমান পোখারা বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হওয়ার পর দেশীয় গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রচার করার ক্ষেত্রে চারটি গণমাধ্যম ১০ বছর ও ৪ বছর আগের পুরোনো বিমান দুর্ঘটনার ছবি ব্যবহার করেছে। এমনকি পুরোনো ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে “ফাইল ছবি” উল্লেখ করেনি।
অনুসন্ধানের ফল: Dr. Nimo Yadav নামের এক ব্যক্তি তার টুইটার অ্যাকাউন্টে বাবর আজম তার সতীর্থের প্রেমিকার সাথে সতীর্থকে দল থেকে বাদ না দেয়ার শর্তে অশ্লীল আলাপ করছেন শীর্ষক একটি দাবি প্রথম প্রচার করলেও পরে টুইটটি ডিলিট করে দিয়ে বিষয়টি মিথ্যা বলে নিজেই নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি তার করা টুইট কোনোরূপ যাচাই না করে সংবাদ প্রচার করার কারণে মিডিয়াগুলিকে Fool এবং Clown হিসেবেও সম্বোধন করেছেন তিনি।
অনুসন্ধানের ফল: জাম্বিয়ার উল্লিখিত ঘটনাটি প্রায় দুই মাসের পূর্বের এবং এটি অফিশিয়াল পুরস্কার ছিলো না বরং গত বছরের নভেম্বরে অফিশিয়াল ম্যাচ সেরা পুরস্কারের বাইরে এক ভক্ত কর্তৃক অতিরিক্ত পুরস্কার হিসেবে উক্ত পুরস্কার দেওয়া হয়।
অনুসন্ধানের ফল: স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী অন্তর রায় সিঁড়ি থেকে পড়ে আহত হয়ে মারা যাননি বরং অন্তর রায় জন্মগতভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন এবং তার মৃত্যু হয়েছিল কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণে।
অনুসন্ধানের ফল: “মেসিকে ২০১৪ বিশ্বকাপে গোল্ডেন বল ভুল করে দেওয়া হয়েছিল” শীর্ষক মন্তব্যটি সাম্প্রতিক সময়ে সাবেক ফিফা সভাপতি সেপ ব্ল্যাটারের করা মন্তব্য নয় বরং ২০১৪ সালে তার করা দুইটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তিনি উক্ত মন্তব্যটি সাম্প্রতিক সময়ে করেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়।
তিন দশক ধরে সমীক্ষাটি পরিচালিত হয়েছে শীর্ষক দাবি করেছে বিডিনিউজ২৪।
ভুল করা গণমাধ্যমের সংখ্যা: ০৬
Screenshot source: Jagonews
অনুসন্ধানের ফল: গত ০২ জানুয়ারি ‘eBioMedicine’ জার্নালে পানি পানের সাথে বার্ধক্যের সম্পর্কের বিষয়ে একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গবেষণাটির বরাতে দাবি করা হয়, দৈনিক ৮ গ্লাস পানি পানেই অন্তত ১৫ বছর পর্যন্ত আয়ু বাড়বে এবং ৩০ এর বেশি বয়স্কদের উপর উক্ত গবেষণা করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত গবেষণায় আয়ু বাড়াতে ঠিক কী পরিমাণ পানি পান করতে হবে সে বিষয়ে উল্লেখ করা হয়নি। তাছাড়া শুধু ৩০ বছরের বেশি বয়স্কদের উপর বা ৩০ বছর ধরে গবেষণাটি পরিচালিত হয়নি বরং ১১ হাজার ২৫৫ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ৩০ বছর সময়কালের স্বাস্থ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে উক্ত গবেষণাটি করা হয়।
অনুসন্ধানের ফল: মেসির ২০২১ ব্যালন ডি’অর জয়কে ‘লজ্জাজনক’ দাবি করা ইন্সটাগ্রাম পোস্টে রোনালদোর সায় দেওয়ার ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২১ সালের ডিসেম্বরের ঘটনা।
অনুসন্ধানের ফল: কিছু খেলোয়াড়ের সাময়িক অনুপস্থিতির জন্য অতিরিক্ত খেলোয়াড় নিতে ২৫ জানুয়ারি পাকিস্তান সুপার লিগের রিপ্লেসমেন্ট ড্রাফট অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ড্রাফটকে কেন্দ্র করে ‘পিএসএলে দল পেলো সাকিব, লাহোর কালান্দার্স তাকে দলে নিয়েছে’ শীর্ষক একটি দাবি ছড়িয়ে পড়লেও পিএসএলের রিপ্লেসমেন্ট ড্রাফটে দল পাওয়া খেলোয়াড়দের তালিকায় সাকিবের নাম ছিল না। এছাড়া, লাহোর কালান্দার্সের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত রিপ্লেসমেন্ট ড্রাফট থেকে ডাক পাওয়া খেলোয়াড়দের তালিকায়ও সাকিবের নাম ছিল না।
অনুসন্ধানের ফল: ষষ্ঠ শ্রেণির ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ অনুশীলন বই যাচাই করে দেখা যায়, সেখানে বানরের ছবি থাকার যে দাবি করা হচ্ছে তা বানরের নয় বরং ছবিগুলো মানুষেরই বিভিন্ন সময়ের আদি ও বর্তমান রূপ। তাছাড়া, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ের “মানুষ ও সমাজ এলো কোথা থেকে?” শিরোনামের পাঠ্যটিতে ‘মানুষ বানর থেকে সৃষ্টি হয়েছে’ শীর্ষক কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি বরং বিষয়টি ভুল বলে বইটির একাধিক পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে।
অনুসন্ধানের ফল: গত ৩০ জানুয়ারী পাকিস্তানের একটি মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে পাকিস্তানের ২০০৪, ২০২০ এবং ২০২২ সালের তিনটি ভিন্ন বিস্ফোরণের ঘটনার ছবি ব্যবহার করে সাম্প্রতিক ঘটনার ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়।
অনুসন্ধানের ফল: ২০১৩ সালে তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের চার গবেষক একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেন যার মূল বিষয়বস্তু ছিল প্রেমের অনুভূতির কারণে মনোযোগসহ পারিপার্শ্বিক বিষয়ে কী ধরনের প্রভাব পড়ে সে বিষয়ে আলোকপাত করা। এ বিষয়ে সম্প্রতি দেশীয় গণমাধ্যমে ‘প্রেমে পড়লে মানুষের বুদ্ধি কমে যায়, বলছে গবেষণা’ শীর্ষক শিরোনামে সংবাদ প্রচার করা হয়। কিন্তু মানুষের বুদ্ধি কমে যাওয়া শীর্ষক কোনো তথ্য উক্ত গবেষণায় ছিল না বলে নিশ্চিত করেছেন গবেষণা দলের দুই সদস্য।
অনুসন্ধানের ফল: রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে, ইউনেস্কোর ওয়েবসাইট এবং প্রতিষ্ঠানটির সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলগুলোতে এমন কোনো জরিপের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া ইউনেস্কোর একজন মুখপাত্র রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছে, “ইউনেস্কো কর্তৃক প্রকাশিত এমন কোনো প্রতিবেদন, জরিপ বা তালিকা নেই।”
অনুসন্ধানের ফল: ৮২৩ বছর পর পর ফেব্রুয়ারি মাসের সপ্তাহের ৭ দিনই চারবার ঘুরে ফিরে আসার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং লিপ ইয়ার ব্যতীত প্রায় প্রতি বছরই ফেব্রুয়ারি মাসে সপ্তাহের ৭ দিনই চারবার ঘুরে ফিরে আসে।
অনুসন্ধানের ফল: প্রচারিত ভিডিওটি তুরস্কের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে বহুতল ভবন ধসের ঘটনার নয় বরং এটি ২০২০ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইজমির শহরে সংঘটিত ভূমিকম্পে ভবন ধসের ভিডিও।
অনুসন্ধানের ফল: রাস্তায় পাখি উড়ার ভিডিওটি তুরস্কের ভূমিকম্পের পূর্ব মুহূর্তের নয় বরং এটি ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টন শহরে ভিন্ন আরেকটি ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিও।
দাবি: আমেরিকার মিসৌরি শহরে ব্যাচেলার থাকতে হলে ট্যাক্স দিতে হয়। এখানে ২১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ব্যাচেলার পুরুষদের কাছ থেকে ট্যাক্স হিসেবে নেওয়া হয় ১ ডলার। ১৮২১ সাল থেকে আমেরিকার মিসৌরিতে এই ট্যাক্স দেওয়া শুরু হয়।
অনুসন্ধানের ফল: আমেরিকার মিসৌরি শহরে ব্যাচেলর থাকতে হলে ২১ থেকে ৫০ বছর বয়সী পুরুষদের ১ ডলার করে ট্যাক্স দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি পুরোনো। ১৮২১ সালে দেশটিতে এই ট্যাক্স প্রথা চালুর এক বছরের মাথাতেই এই প্রথাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অনুসন্ধানের ফল: পর্তুগিজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানো ফেসবুক পেজটি ফ্রেঞ্চ তারকা এমবাপ্পের আসল পেজ নয় বরং এমবাপ্পের নামে তৈরি একটি ভুয়া ফেসবুক পেজ থেকে উক্ত পোস্টটি করা হয়েছিল। এছাড়া এমবাপ্পের ফেসবুক ব্যতীত অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট থেকেও রোনালদোকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো হয়নি।
অনুসন্ধানের ফল: ভবন হেলে পড়ার আলোচিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ে ঘটা তুরস্ক-সিরিয়া ভূমিকম্পের নয় বরং এটি ১৯৯৯ সালে তুরস্কের ডুজসে শহরে হওয়া ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: তুরস্কের সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে বহুতল ভবন ধসের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি তুরস্কের ভূমিকম্পের সময়কার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: তুরস্কের সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে বহুতল ভবন ধসের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২০ সালের ২৪ জানুয়ারি তুরস্কের ভূমিকম্পের সময়কার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: জোনাথন লি রিচেসের নাম সবচেয়ে বেশি মামলাবাজ ব্যক্তি হিসেবে গিনেস বুকে নাম আসেনি বরং গিনেস বুকে সবচেয়ে বেশি মামলাবাজ ব্যক্তি শীর্ষক কোনো ক্যাটাগরিই নেই।
অনুসন্ধানের ফল: ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে বঙ্গবন্ধুর বাবার নাম ও পেশা ভুলভাবে উপস্থাপন করার দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং পাঠ্যবইগুলোতে বঙ্গবন্ধুর বাবার নাম ও পেশা সঠিকভাবেই উপস্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়াও, মূলধারার সংবাদমাধ্যম “প্রতিদিনের বাংলাদেশ”, ও “ঢাকা মেইল” এই বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন করে পরবর্তীতে তা সংশোধন করে ফেলে। পূর্ববর্তী ভার্সনের কোনো আর্কাইভ কপি পাওয়া সম্ভব হয়নি।
Screenshot Collage: Rumor Scanner
ভুল করা গণমাধ্যমের সংখ্যা: ১৩
Screenshot Collage: Rumor Scanner
অনুসন্ধানের ফল: সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ছেলে কানাডায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে সেসময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
দাবি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যকার বাক-বিতণ্ডার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাকে “এই শালা আমি কে!’ শীর্ষক মন্তব্য করেন সহকারী প্রক্টর।
দাবি: সূর্যের একটি অংশ ভেঙে পড়েছে। নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ সূর্যের এই ছবি পাঠিয়েছে। ড. তামিথা স্কোভ নামে যে ব্যক্তি নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে সূর্যের সেই ছবিটি শেয়ার করেছেন, তিনি নাসার একজন কর্মকর্তা।
অনুসন্ধানের ফল: সূর্যের একটি অংশ ভেঙে পড়েছে শীর্ষক গণমাধ্যমের দাবিটি সঠিক নয় বরং সম্প্রতি সূর্যের প্রমিনেন্স বা প্লাজমা বিচ্ছিন্ন হয়ে সূর্যের উত্তর মেরুতে ঘুরতে থাকে। কিন্তু সূর্যের কোনো অংশই “ভাঙেনি”। প্লাজমার এই ঘটনা স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। তাছাড়া, ড. তামিথাকে নাসার কর্মকর্তা এবং ছবিটি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের তোলা বলে যে দাবি করা হচ্ছে সেটিও সঠিক নয়৷
অনুসন্ধানের ফল: মরুভূমিতে বেগুনি ফুলের প্রচারিত ছবিটি সৌদি আরবের নয় বরং এটি ২০১৫ সালে চিলির মরুভমিতে তোলা ছবি। এছাড়া সৌদির মরুভূমির ছবি দাবিতে প্রচারিত অপর ছবিটি সৌদির সাম্প্রতিক সময়ের ছবি নয় বরং সেটি ২০১৭ সালে তোলা।
দাবি: তুরস্কে গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পের ঘটনায় দেশটির বিখ্যাত আইসক্রিম বিক্রির দোকান ‘Çılgın Dondurmacı’ এর মালিক মেহমেত ডিন্ক সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
অনুসন্ধানের ফল: তুরস্কে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনায় তুর্কি আইসক্রিম বিক্রেতা মেহমেত ডিন্ক সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং তার জন্মস্থান আন্তাকিয়ায় কয়েকজন স্বজন হারালেও ভূমিকম্প ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে দূরে হওয়ায় তার ব্যবসার (আন্তালিয়ায়) কোনো ক্ষতি হয়নি।
অনুসন্ধানের ফল: তুরস্কে গত ২০ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে বহুতল ভবন ধসের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি তুরস্কের ভূমিকম্পের সময়কার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: তুরস্কের ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপে মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরীফ পেয়ে চীনা উদ্ধারকর্মী জং সান এর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার তথ্যটি সঠিক নয় বরং উক্ত ব্যক্তি আগে থেকে ইসলাম ধর্মের অনুসারী ছিলেন এবং জন্মসূত্রেই তিনি মুসলমান বলে জানা যায়।
অনুসন্ধানের ফল: লন্ডনে বাংলা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবহৃত ভাষা সম্পর্কিত গণমাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে সিটি লিট নামে একটি বেসরকারি দাতব্য সংস্থার অসংগতিপূর্ণ ও পুরোনো জরিপের ভিত্তিতে করা গবেষণার ভিত্তিতে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছিল।
অনুসন্ধানের ফল: তাজিকিস্তানের সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে সময়কার দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০২১ সালে জাপানের ভূমিকম্পের ভিডিও এটি।
দাবি: মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ‘ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে একটানা ছয় মাসে বেশি থাকা যাবে না’- শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অনুসন্ধানের ফল: মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক-১ শাখার উপসচিব মো. মিজানুর রহমানের কথিত স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির বরাতে এক নাগাড়ে ৬ মাসের বেশি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে না থাকতে পারার দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদটি মিথ্যা এবং প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন সম্পর্কিত উপসচিবের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি দাবিতে প্রচারিত পত্রটি ভুয়া।
অনুসন্ধানের ফল: তাজিকিস্তানে সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিটি তাজিকিস্তানের নয় বরং এটি ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: নেপালে সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে সময়কার দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০১৫ সালে নেপালের ভূমিকম্পের ভিডিও এটি।
দাবি: গত ০৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় শক্তিশালি ভূমিকম্পের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসির ‘লিও মেসি ফাউন্ডেশন’ তুরস্ক ও সিরিয়ার এ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৩৫ লাখ ইউরো দান করার ঘোষণা দিয়েছে।
অনুসন্ধানের ফল: ইউনিসেফের সূত্র দেখিয়ে এই দাবিটির সূত্রপাত ঘটলেও সংস্থাটির সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলগুলো ঘুরেও এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি বিশ্বস্ত কোনো গণমাধ্যমেও এই তথ্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, যে পেজ থেকে প্রথম এই দাবিটি ছড়িয়েছে সে পেজ থেকে ইতোমধ্যেই পোস্টটি সরানো হয়েছে এবং সে পেজ থেকে পূর্বেও গুজব ছড়ানো হয়েছিলো, সে গুজবও শনাক্ত করেছিলো রিউমর স্ক্যানার টিম। তাছাড়া, তিরানাপোস্টে তুরস্কের গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করা হলেও সেদিন অবধি তুরস্কের মূলধারার কোনো গণমাধ্যমই এই বিষয়ে সংবাদ প্রচার করেনি।
অনুসন্ধানের ফল: সদ্য ইসলাম গ্রহণকারী হিলারিয়ান হেইগির ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিটি হেইগির নয় বরং এটি বুদাপেস্টের বিশপ মেট্রোপলিটন হিলারিয়ান আলফেয়েভের ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: ফেসবুকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানের কোনো পেজ কিংবা অ্যাকাউন্ট নেই বরং জাইমা রহমানের নামে পরিচালিত একটি ভুয়া ফেসবুক পেজকে সূত্র ধরে দৈনিক নয়া শতাব্দী জাইমা রহমান ফেসবুকে দেশে আসার কথা জানিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।
অনুসন্ধানের ফল: শীতে বরফাচ্ছন্ন মঙ্গোলিয়ার সাম্প্রতিক খবরে গণমাধ্যমে প্রচারিত দুইটি ছবি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এগুলো ২০১০ ও ২০১৬ সালের মঙ্গোলিয়ার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: ফেনীর মতিনকে মেসির সাইন করা জার্সি পাঠানোর দাবিটি সঠিক নয় বরং তাকে আর্জেন্টিনা সরকারের পক্ষ থেকে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জার্সি উপহার দিয়েছেন।
অনুসন্ধানের ফল: আরব আমিরাতে আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি হাফেজ মোঃ ওয়াসিম আইয়ুব ওয়াসিফের ৫২ দেশের শত প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে বা হারিয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেননি বরং উক্ত কোরআন প্রতিযোগিতায় ৫২ টি দেশের চৌদ্দশ প্রতিযোগী বিভিন্ন বিভাগে বিভক্ত হয়ে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে এবং প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদাভাবে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঘোষণাও করা হয়েছে। তার মধ্যে ওয়াসিফ একটি বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন। একই বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন মুসআব মীর কামাল। এছাড়া একই প্রতিযোগিতায় হাদীস বিভাগেও প্রথম স্থান অর্জন করেছেন আব্দুল সবুর শরীফ হোসাইন নামে আরেকজন বাংলাদেশি।
দাবি: পর্তুগাল অধিনায়ক ও সৌদি আরবের আল নাসর ক্লাবের স্ট্রাইকার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সিরিয়া ও তুরস্কের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য বিমান ভর্তি সাহায্য পাঠিয়েছেন।
অনুসন্ধানের ফল: ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো কর্তৃক সিরিয়া ও তুরস্কের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য বিমান ভর্তি সাহায্য পাঠানোর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এছাড়া, তুরস্ক এবং সিরিয়ার একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র এবং তুরস্কের সরকারি সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির রিলিফ ট্র্যাক থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ীও রোনালদো কর্তৃক তুরস্ক বা সিরিয়ায় ত্রাণ ভর্তি বিমান পাঠানোর বিষয়ে কোনো প্রমাণ মেলেনি।
দাবি: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছেন।
দাবির পক্ষে: মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘সময় টিভি ‘এই বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন করে পরবর্তীতে তা সংশোধন করে ফেলে। পূর্ববর্তী ভার্সনের কোনো আর্কাইভ কপি পাওয়া সম্ভব হয়নি।
ভুল করা গণমাধ্যমের সংখ্যা: ০১
Screenshot source: Google
অনুসন্ধানের ফল: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পাননি বরং তাঁর পরিবারের সদস্যরা খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ও মুক্তির শর্ত শিথিল করে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেন।
অনুসন্ধানের ফল: ইংল্যান্ডের ওভাল স্টেডিয়ামের বর্তমান অবস্থা উল্লেখ করে প্রচারিত বরফে ঢাকা স্টেডিয়ামের ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২২ সালে ডিসেম্বরে ধারণকৃত ওভাল স্টেডিয়ামের দৃশ্য। রিউমর স্ক্যানারের প্রতিবেদন:ইংল্যান্ডের ওভাল স্টেডিয়ামের বরফে ঢাকা ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়
৬৩/ ফ্যাক্টচেক: ১৩ মার্চ
দাবি: তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পে বাবা হারানো সিরিয়ান শিশুর দায়িত্ব নিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
অনুসন্ধানের ফল: পর্তুগিজ ফুটবল তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো কর্তৃক ভূমিকম্পে পিতা হারানো সিরিয়ার শিশুর দায়িত্ব নেওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং সিরিয়ার উক্ত শিশুর সাথে রোনালদোর দেখা করার বিষয়টিকেই শিশুর দায়িত্ব নিয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হয়।
অনুসন্ধানের ফল: সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক নয় বরং সম্পদমূল্য বিবেচনায় করা তালিকায় সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকটির অবস্থান ১৬তম।
অনুসন্ধানের ফল: চীনে উত্তরাঞ্চলের লিয়াওনিং প্রদেশে বৃষ্টির সঙ্গে লাখ লাখ কেঁচো পড়ার দাবিতে প্রচারিত বিষয়টি সঠিক নয় বরং পপলার গাছ থেকে ফুল পড়ার দৃশ্যকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়।
অনুসন্ধানের ফল: নিউজিল্যান্ডে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের সময়কার দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি নিউজিল্যান্ড কিংবা সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০১৫ সালের নেপালের ভূমিকম্পের ভিডিও।
অনুসন্ধানের ফল: নিউজিল্যান্ডের সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে ভাঙা রাস্তার দৃশ্য দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত দুইটি ছবি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর দেশটির অন্য এক ভূমিকম্পের ঘটনার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: নিউজিল্যান্ডের সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০১১ সালে দেশটির ভূমিকম্পের সময়কার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: নিউজিল্যান্ডের সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২১ সালে আমেরিকান সামোয়ার পাগো পাগো পোর্ট এলাকার ছবি।
এছাড়াও, মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘ডেইলি বাংলাদেশ’এই বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন করে পরবর্তীতে তা সংশোধন করে ফেলে। পূর্ববর্তী ভার্সনের কোনো আর্কাইভ কপি পাওয়া সম্ভব হয়নি।
গণমাধ্যমের ভুল সংখ্যা: ৩১
Screenshot source: Jugantor
অনুসন্ধানের ফল: মাদারীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সুইটি আলম সুরভী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন নয় বরং তিনি প্রকৃতপক্ষ ঢাকায় অবস্থিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগে অধ্যয়নরত ছিলেন।
অনুসন্ধানের ফল: গত ২০ মার্চ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের মাধ্যমে সিজিপিএ ৩.৮৯ পেয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন (এমএসসি) সম্পন্ন করেছেন বলে এক ফেসবুকে পোস্টে জানান সংগীতশিল্পী কোনাল। কিন্তু মূলধারার অনলাইন সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস এর প্রতিবেদনে কোনাল গ্র্যাজুয়েশন (স্নাতক) সম্পন্ন করেছেন বলে দাবি করা হয়।
দাবি: ২০ মার্চ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) আপরশি মারমা নামে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়টির একটি হলের ছাদ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনার বিষয়ে একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আপরশি মারমার বাড়ি বান্দরবান বলে দাবি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের ফল: নোবিপ্রবির হল থেকে আপরশি মারমা নামে যে মৃত শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তার বাড়ি বান্দরবান নয় বরং তার গ্রামের বাড়ি খাগড়াছড়ি সদরে।
অনুসন্ধানের ফল: ‘টুইটারে নীল টিকের অ্যাকাউন্ট ছাড়া দুই স্তরের লগ-ইন বাতিল’ এবং ‘টুইটারে থাকছে না টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন’ শীর্ষক গণমাধ্যমে প্রচারিত দাবিগুলো সত্য নয় বরং টুইটারের অর্থিক ফিভিত্তিক সেবা ‘টুইটার ব্লু’ এর সাবক্রাইব করা ব্যবহাকারী ব্যতীত ফ্রি ব্যবহারকারীদের জন্য এসএমএসের মাধ্যমে দুই স্তর অথেনটিকেশন কোড পাওয়া বন্ধ হয়েছে। তবে, ফ্রি ব্যবহারকারীরা এখনো অথেনটিকেটর অ্যাপ এবং সিকিউরিটি কী এর মাধ্যমে দুই স্তর অথেনটিকেশন ব্যবহার করতে পারবে।
অনুসন্ধানের ফল: বিভিন্ন সময়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ছবি হিসেবে প্রচারিত ছবিটি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এর প্রকৃত ছবি নয় বরং এটি ২০০৫ সালে আপলোড করা একটি স্যাটেলাইটের ডিজাইনের স্টক ইমেজ সম্পাদনা বা এডিট করে তৈরিকৃত ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: আরাভ খান সম্প্রতি হজে গিয়েছেন জানিয়ে ফেসবুকে কোনো পোস্ট দেননি বরং আরাভ খানের নামে তৈরিকৃত একটি ভুয়া ফেসবুক পেজের পোস্টকে কেন্দ্র করে এই সংবাদটি প্রচার করা হয়।
অনুসন্ধানের ফল: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শান্তিতে নোবেল পেতে পারেন শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি নোবেল কমিটির ডেপুটি লিডার অ্যাসলে তোজে বরং নোবেল পুরস্কার বিষয়ক তার একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে উক্ত দাবিটি ছড়িয়ে পড়ে।
অনুসন্ধানের ফল: নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের এক কর্মকর্তা রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন, চাঁদের সাথে যাকে দেখা গিয়েছে তা শুক্র গ্রহ এবং চাঁদ ও শুক্র গ্রহের দ্বারা তৈরি হওয়া এমন দৃশ্য কয়েক মাস পর পরই দেখা যায়।
অনুসন্ধানের ফল: অনলাইনে জুয়া খেলে নেইমারের এক মিলিয়ন ইউরো হারানোর দাবিটি সঠিক নয় বরং নেইমার তার স্পন্সর অনলাইন বেটিং প্রতিষ্ঠান ব্লেজ এর পক্ষে প্রচারণার অংশ হিসেবে উক্ত গেমে অংশ নিয়েছিলেন।
অনুসন্ধানের ফল: নিউজিল্যান্ডের সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পের ঘটনায় গণমাধ্যমে ব্যবহৃত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০১০ সালে দেশটির ভূমিকম্পের সময়কার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: প্রলয় গ্যাংয়ের দাবিতে একাত্তর টিভির প্রতিবেদনে ব্যবহৃত একটি ছবিতে যাদেরকে দেখানো হয়েছে তারা কেউ উক্ত গ্যাংয়ের সদস্য নয় বরং ছবিতে থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্তত ৪ জন বিভিন্ন গণমাধ্যমের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন এবং সকলেই ঢাবির অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে প্রলয় গ্যাংয়ের সদস্যরা অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
দাবি: যুক্তরাষ্ট্রে হোয়াইট হাউসের উদ্যোগে আয়োজিত একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের রংপুরের শাহ মুহাম্মদ রাকিব হাসান নামে এক স্কুল শিক্ষার্থী সেরা বিতার্কিক হয়েছেন।
অনুসন্ধানের ফল: হোয়াইট হাউসের নাম ব্যবহার করে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি রাকিবের সাফল্যের যে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তা সঠিক নয় বরং হোয়াইট হাউস সম্প্রতি এমন কোনো প্রতিযোগিতার আয়োজন করেনি। হোয়াইট হাউসের ডোমেইনের সাথে মিল রেখে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে ভুয়া একটি প্রতিযোগিতায় রাকিব সেরা বিতার্কিক হয়েছেন বলে দাবি করেন।
অনুসন্ধানের ফল: প্রিমিয়ার লিগে এর আগেও অনেকেই হ্যাট্রিক অ্যাসিস্ট করেছেন। এমনকি চার অ্যাসিস্টের রেকর্ডও আছে। ট্রসার্ড মূলত প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে কোনো অ্যাওয়ে ম্যাচের প্রথমার্ধে হ্যাট্রিক অ্যাসিস্ট করা প্রথম ফুটবলার হিসেবে রেকর্ড করেছেন।
অনুসন্ধানের ফল: কোর্সেরা নামে একটি এডুকেশন প্লাটফর্মের মাধ্যমে করা এই প্রোগ্রামে কোনো স্কলারশিপ সুবিধাই নেই। রুশোকে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করেই প্রোগ্রামটিতে এনরোল করতে হচ্ছে।
দাবি: পৃথিবীর সবচেয়ে দামি ফুল হলো জুলিয়েট রোজ। এই গোলাপের প্রতিটির মূল্য ১৫.৮ মিলিয়ন, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৩৬ কোটি টাকা। কিছু পোস্টে ১২৬ কোটি টাকার দাবিও দেখা গেছে। একেকটি জুলিয়েট রোজ ফুটতে সময় লাগে প্রায় ১৫ বছর।
অনুসন্ধানের ফল: প্রতিটি জুলিয়েট রোজের পাইকারি মূল্য সাড়ে তিন ডলার। তাই এটি সবচেয়ে দামি ফুলও নয়। এমনকি এই ফুল ফুটতে ১৫ বছর সময় লাগার দাবিটিও সঠিক নয়।
অবাধ তথ্য প্রবাহ এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির এই যুগে ভুল এবং সঠিক তথ্য যাচাই করা এখন আর কোনো কঠিন বিষয় না। কিন্তু গণমাধ্যমে ভুল তথ্যের এই ছড়াছড়ি সহজ এই বিষয়টিকেই প্রশ্নের মুখে ফেলছে, বিভ্রান্ত করে তুলছে সাধারণ মানুষকে। মানুষ তাই আস্থা হারাচ্ছে গণমাধ্যম। রিউমর স্ক্যানার টিম বিশ্বাস করে, গণমাধ্যম তার শ্রোতা এবং পাঠকের কাছে সঠিক তথ্যটি যাচাই সাপেক্ষে তুলে ধরবে, ফিরিয়ে আনবে নিজেদের আস্থার জায়গা।
সংশোধন / Correction
২৯ জুলাই, ২০২৩ : এই পরিসংখ্যান প্রকাশের পর প্রথম তিন মাসের আরও আটটি ভুল সংবাদ শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। উক্ত আটটি ফ্যাক্টচেকে পাওয়া গণমাধ্যমের ভুলগুলো তিন মাসের পরিসংখ্যানে যুক্ত করে পরিসংখ্যানের তথ্য আপডেট করা হয়েছে।
সম্প্রতি, “আগে দৈনিক সাড়ে ৪ কেজি মাংস খাইতাম, এখন মাত্র আড়াই কেজি খাইতে পারি। পেটে মাংস না থাকলে স্বাধীনতা দিয়া কি করুম? আমাদের মাংসের স্বাধীনতা চাই।” শীর্ষক লেখা সম্বলিত একটি ডিজিটাল ব্যানার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
Screenshot from ‘CrowdTangle’
যা দাবি করা হচ্ছে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রথম আলো’র লোগোসহ একটি ডিজিটাল ব্যানারে “আগে দৈনিক সাড়ে ৪ কেজি মাংস খাইতাম, এখন মাত্র আড়াই কেজি খাইতে পারি। পেটে মাংস না থাকলে স্বাধীনতা দিয়া কি করুম? আমাদের মাংসের স্বাধীনতা চাই।” শীর্ষক বক্তব্যটিগণ অধিকার পরিষদের সহকারী আহ্বায়ক তামান্না ফেরদৌস শিখা’র বক্তব্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ডিজিটাল ব্যানারটি প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়নি এবং বক্তব্যটিও গণ অধিকার পরিষদের নেত্রী তামান্না ফেরদৌস শিখার নয় বরং কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত ব্যানারটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। এছাড়া, প্রথম আলোর ওয়েবসাইট সহ সামাজিক মাধ্যমের একাউন্টগুলো পর্যবেক্ষণ করেও এ সংক্রান্ত কোনো ছবি বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পোস্টটির কমেন্ট বক্স বিশ্লেষণ করে গণ অধিকার পরিষদের নেত্রী ‘Tamanna Ferdous Shikha’ এর একটি কমেন্ট দেখতে পাওয়া যায়।
Screenshot from Facebook | Shariful Islam Raju
কমেন্টে তামান্না ফেরদৌস শিখা দাবি করেছেন যে, ‘তার একটি বক্তব্য বিকৃত করে প্রথম আলো’র লোগো ব্যবহার করে আলোচিত ব্যানারটি সম্পাদনা করা হয়েছে।’ পাশাপাশি, তামান্না ফেরদৌস শিখা তার কমেন্টে একটি ফেসবুক পোস্টের লিংক ও সংযুক্ত করে দেন।
উক্ত লিংকে প্রবেশ করলে গত ২৯ মার্চ তারিখে “আমি তামান্না ফেরদৌস শিখা বলছি, “আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো৷”” শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফেসবুক পোস্ট দেখতে পাওয়া যায়।
এছাড়া, তামান্না ফেরদৌস শিখা’র ফেসবুক একাউন্টে প্রচারিত ছবিগুলোর মধ্যে আলোচিত ডিজিটাল ব্যানারে থাকা ছবিটিরও সন্ধান পাওয়া যায়, যা ২০২২ সালের ২২ আগষ্ট তারিখে ‘আ… টি টি টি টি……’ শিরোনামে আপলোড করা হয়েছিলো।
তাছাড়া, প্রথম আলো অনুরূপ ডিজিটাল ব্যানারে কোনো ব্যক্তির ছবিসহ মন্তব্য/বক্তব্য এবং তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত যে ডিজাইন ব্যবহার করে থাকে, গণ অধিকার পরিষদের নেত্রী তামান্না শিখার বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ব্যানারে কিছুটা ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।
Banner Comparison by Rumor Scanner
মূলত, গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর অনলাইনে ‘আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো‘ শীর্ষক শিরোনামে একটি ব্যানার প্রকাশ করা হলে এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। প্রথম আলো’র ডিজিটাল ব্যানারটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার প্রেক্ষিতে গণ অধিকার পরিষদের নেত্রী তামান্না ফেরদৌস শিখা তার ফেসবুক একাউন্টে একটি উদ্ধৃতি প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে, তামান্না শিখার উদ্ধৃতিটি বিকৃত করে প্রথম আলো’র লোগো ব্যবহার করে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও একইভাবে দ্য ডেইলি স্টার এর সম্পাদক মাহফুজ আনামের নামে ভুয়া বক্তব্য প্রচার করা হলে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।
সুতরাং, প্রথম আলোর ডিজিটাল ব্যানারে গণ অধিকার পরিষদের নেত্রী তামান্না ফেরদৌস শিখার বক্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনামের নাম ও ছবি ব্যবহার করে তার দেয়া বক্তব্য দাবি করে তিনটি ডিজিটাল ব্যানার ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
যা দাবি করা হচ্ছে
দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনাম গত ৭ এপ্রিল প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক কলামে নিম্নোক্ত মন্তব্য করেছেন বলে দাবি করা হচ্ছে।
মন্তব্য ১: “স্বাধীনতার পূর্ণ সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে তারেক জিয়াকে দেশে এনে রাজনীতি করতে দেওয়া প্রয়োজন।”
মন্তব্য ২: “বিএনপির সিনিয়র নেতারাই কেবল প্রথম আলোকে বাঁচাতে পারে।”
মন্তব্য ৩: “সাংবাদিকদের মনে প্রশ্ন ওঠা উচিৎ, জনমানুষের কাছে ধিকৃত ও বর্জনযোগ্য পলাতক তারেক জিয়াকে দেশে আনার জন্য প্রথম আলো সম্পাদক কেন এত উঠেপড়ে লাগলেন?”
ফেসবুকে প্রচারিত মন্তব্য-৩ সম্পর্কিত একটি পোস্ট এখানে (আর্কাইভ)।
Rumor Scanner Collage
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনাম এর নামে প্রচারিত উল্লেখিত বক্তব্যগুলো তিনি দেননি বরং তার প্রকৃত বক্তব্য সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানারকে বিকৃত করে ভুয়া বক্তব্য বসিয়ে তার নামে প্রচার করা হয়েছে।
ব্যানারগুলোতে প্রথম আলোর লোগো থাকায় প্রথমেই প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে অনুসন্ধান করা হয় এবং প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একই জাতীয় কিছু ডিজিটাল ব্যানার খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে দেখা যায় ৭ ও ৮ এপ্রিল মাহফুজ আনাম এর বক্তব্য নিয়ে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ডিজিটাল ব্যানার সংগ্রহ করে সেখানে থাকা প্রকৃত বক্তব্যকে বিকৃত করে ভিন্ন বক্তব্য বসিয়ে মাহফুজ আনামের বক্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
১ম বক্তব্যের সত্যতা যাচাই
মাহফুজ আনামের নামে প্রচারিত একটি বক্তব্য হলো– “স্বাধীনতার পূর্ণ সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে তারেক জিয়াকে দেশে এনে রাজনীতি করতে দেওয়া প্রয়োজন।”এ বক্তব্যের সত্যতা যাচাইয়ের অনুসন্ধানে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে গত ৭ এপ্রিল প্রকাশিত একটি পোস্টে মূল ব্যানারটি খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার। দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের উক্তি সম্বলিত সেই ডিজিটাল ব্যানারে তাকে উদ্ধৃতি করে লেখা হয়, “স্বাধীনতার পূর্ন সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে একটি সমাজে মুক্ত সাংবাদিকতা প্রয়োজন।”
মাহফুজ আনাম এর এই বক্তব্যকে বিকৃত করে বদলিয়ে “স্বাধীনতার পূর্ণ সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে তারেক জিয়াকে দেশে এনে রাজনীতি করতে দেওয়া প্রয়োজন।” শীর্ষক বক্তব্যটি প্রচার করা হয়েছে।
Rumor Scanner Collage
দ্বিতীয় বক্তব্যের সত্যতা যাচাই
মাহফুজ আনাম এর নামে প্রচারিত আরেকটি বক্তব্য হলো– “বিএনপির সিনিয়র নেতারাই কেবল প্রথম আলোকে বাঁচাতে পারে।”
এ বক্তব্যের সত্যতা যাচাইয়ের অনুসন্ধানে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে গত ৮ এপ্রিল প্রকাশিত অপর একটি পোস্টে এডিটেড ডিজিটাল ব্যানারটির মূল ছবি ও বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়। মাহফুজ আনামের উক্তি সম্বলিত সেই প্রকৃত ডিজিটাল ব্যানারে লেখা ছিলো– “সাংবাদিকেরাই কেবল সাংবাদিকতাকে বাঁচাতে পারে”। তার করা এই বক্তব্য সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানারকে বিকৃত করে “বিএনপির সিনিয়র নেতারাই কেবল প্রথম আলোকে বাঁচাতে পারে” শিরোনামের ভুয়া বক্তব্যটি প্রচার করা হয়েছে।
Rumor Scanner Collage
তৃতীয় বক্তব্যের সত্যতা যাচাই
দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনাম এর বক্তব্য হিসেবে প্রচারিত অপর বক্তব্যটি হলো– “সাংবাদিকদের মনে প্রশ্ন ওঠা উচিৎ, জনমানুষের কাছে ধিকৃত ও বর্জনযোগ্য পলাতক তারেক জিয়াকে দেশে আনার জন্য প্রথম আলো সম্পাদক কেন এত উঠেপড়ে লাগলেন?”
উক্ত বক্তব্যের সত্যতা অনুসন্ধানে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে ৮ এপ্রিল প্রকাশিত অন্য একটি পোস্টে এডিটেড ডিজিটাল ব্যানারটির মূল ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। সেই ডিজিটাল ব্যানারে মাহফুজ আনাম যা বলেছেন তা হলো– “সাংবাদিকদের মনে প্রশ্ন ওঠা উচিত, জনমানুষের কাছে সমাদৃত ও গ্রহণযোগ্য বাংলা দৈনিকটিকে হেয় করার জন্য আমাদেরই অনেকে কেন এত উঠেপড়ে লাগলেন?” তার এই বক্তব্যটিই বিকৃত করে এক্ষেত্রে “সাংবাদিকদের মনে প্রশ্ন ওঠা উচিত, জনমানুষের কাছে ধিকৃত ও বর্জনযোগ্য পলাতক তারেক জিয়াকে দেশে আনার জন্য প্রথম আলো সম্পাদক কেন এতো উঠেপড়ে লাগলেন” এ পরিবর্তন করে প্রচার করা হয়েছে।
Rumor Scanner Collage
পরবর্তীতে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে প্রথম আলোতে গত ৮ এপ্রিল প্রকাশিত “সাংবাদিকেরাই কেবল সাংবাদিকতাকে বাঁচাতে পারেন” শিরোনামে মাহফুজ আনামের লেখা একটি কলাম খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার। সেই কলামে মাহফুজ আনামের দেয়া প্রকৃত বক্তব্যগুলো পাওয়া যায় এবং এর মাধ্যমে আরও নিশ্চিত হওয়া যায় যে মাহফুজ আনামের বক্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত উল্লেখিত বক্তব্য তিনটি ভুয়া।
Rumor Scanner Collage
পাশাপাশি ৭ এপ্রিল দ্য ডেইলি স্টার বাংলায় প্রকাশিত মাহফুজ আনামের লেখা একই কলাম খুঁজে পাওয়া যায়। সেই কলামেও মাহফুজ আনামের বক্তব্যের ভিন্নতা পাওয়া যায়নি।
মূলত, প্রথম আলোর সাংবাদিক গ্রেফতারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৭ এপ্রিল দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনামের লেখা “সাংবাদিকেরাই কেবল সাংবাদিকতাকে বাঁচাতে পারেন” শীর্ষক একটি কলামের কয়েকটি বক্তব্য প্রথম আলো তাদের ফেসবুক পেজে ডিজিটাল ব্যানার আকারে প্রকাশ করে। মাহফুজ আনাম এর বক্তব্যের ওপর প্রকাশিত প্রথম আলোর সেই ডিজিটাল ব্যানার তিনটিকেই মূলত বিকৃত করে সেখানে ভিন্ন বক্তব্য বসিয়ে মাহফুজ আনামের নামে ভুয়া বক্তব্যগুলো প্রচার করা হয়েছে।
সুতরাং, দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনামের নামে ফেসবুকে প্রচারিত উল্লেখিত বক্তব্য তিনটি ভুয়া।
এছাড়াও, সময় টিভি, ঢাকা পোস্ট, ডেইলি বাংলাদেশ, সমকাল এবং বিডি২৪লাইভ এই বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন করে পরবর্তীতে তা সংশোধন করে ফেলে। প্রতিবেদনগুলোর পূর্ববর্তী ভার্সনের কোনো আর্কাইভ কপি পাওয়া সম্ভব হয়নি।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত শুটিংয়ে বিস্ফোরণে আহত হননি বরং বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে সঞ্জয় দত্ত নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমের (১,২,৩) প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে খবরটির সূত্র হিসেবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘Times of India’ এর নাম ব্যবহার করতে দেখা যায়। পরবর্তীতে গত ১২ এপ্রিল বিকেলে ‘Times of India’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
সংবাদমাধ্যমটি দাবি করেছে, ‘কেডি: দ্য ডেভিল’ ছবির সেটে বোমা বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়েছেন বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত। বুধবারই (১২ এপ্রিল) দুর্ঘটনাটি ঘটে। বেঙ্গালুরুর পাশেই মাগাড়ি রোড অঞ্চলে চলছিল এই ছবির অ্যাকশন দৃশ্যের শুটিং। শুটিং চলাকালীন আচমকাই বোমা ফাটে। আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে ছবির শুটিং। সঞ্জয় দত্তের হাত, কনুই ও মুখে চোট লেগেছে। সঞ্জয় দত্তের এই চোটের জন্য আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে এই ছবির শুটিং। শুটিং টিম বিষয়টি নিশ্চিত করেনি বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
Screenshot source: Times of India
টাইমস অফ ইন্ডিয়া একইদিন আরেক প্রতিবেদনে দাবি করে, সংবাদমাধ্যমটিকে একটি সূত্র খবরটি দিয়েছে। তবে সূত্রের বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি প্রতিবেদনে।
তবে একইদিন রাতে ভারতের আরেক সংবাদমাধ্যম NDTV এক প্রতিবেদনে জানায়, শুটিংয়ে বিস্ফোরণে সঞ্জয় দত্তের গুরুতর আহত হওয়ার খবরটি সম্পূর্ণ গুজব। সঞ্জয় নিজেই তার টুইটার অ্যাকাউন্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
Screenshot source: NDTV
পরবর্তীতে সঞ্জয় দত্তের টুইটার অ্যাকাউন্টে ১২ এপ্রিল রাতে প্রকাশিত আলোচিত টুইটটি খুঁজে পাওয়া যায়।
সঞ্জয় টুইটে লিখেছেন,“আমার আহত হওয়া নিয়ে খবর হয়েছে। আমি সবাইকে বলতে চাই, এটা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। ঈশ্বরের কৃপায়, আমি সুস্থ ও সবল আছি। আমি “কেডি”র শুটিং করছি। পুরো টিম আমার দৃশ্যগুলো ধারণের সময় সতর্ক আছে। আমার খোঁজ নেওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।”
Screenshot source: Twitter
মূলত, কেডি- দ্য ডেভিল নামক একটি সিনেমার শুটিংয়ে ব্যাঙ্গালোরে অবস্থান করছেন বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত। সেখানেই শুটিংয়ে চলাকালে বিস্ফোরণে তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন বলে বাংলাদেশ ও ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়। তবে সঞ্জয় দত্ত নিজেই এক টুইট বার্তায় বিষয়টি পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, কেডি- দ্য ডেভিল সিনেমার মূল চরিত্রে রয়েছেন কন্নড়ের আরেক অভিনেতা ধ্রুব সরজা। কন্নড় সিনেমার অন্যতম পরিচালক প্রেম পরিচালিত সিনেমাটি হিন্দি, তামিল, তেলেগু ও মালয়ালম ভাষায়ও মুক্তি পাবে। এই সিনেমায় খলনায়কের চরিত্রে রয়েছেন ‘মুন্না ভাই’ খ্যাত অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত।
সুতরাং, বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত শুটিংয়ে বিস্ফোরণে আহত হওয়ার দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মৃত্যুবরণ করার দাবিটি সঠিক নয় বরং তিনি সুস্থ আছেন এবং গণমাধ্যম ও ফেসবুক পেজে তার সরব উপস্থিতি রয়েছে।
ওবায়দুল কাদেরের মৃত্যুর দাবিতে যে ভিডিওটি প্রচার করা হচ্ছে তা মূলত একটি সংবাদ বুলেটিনের ফুটেজ। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় দেখা যায়, উপস্থাপকের ঠোঁটের সাথে ভিডিওতে শুনতে পাওয়া শব্দের মিল নেই। অর্থাৎ, কোনো একটি সংবাদ বুলেটিনের ভিডিওকে এডিট করে ওবায়দুল কাদেরের মৃত্যুর সংবাদের অডিও জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের সাম্প্রতিক অ্যাক্টিভিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, গত ১৪ই এপ্রিল নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওয়ায়দুল কাদের নিজের ছবি সম্বলিত একটি পোস্ট করেছেন।
এছাড়াও, কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ১৪ই এপ্রিল মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলোর প্রকাশিত “বাংলা নববর্ষে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলার শপথ নিতে হবে: ওবায়দুল কাদের” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। প্রতিবেদনটিতে দেখা যায়, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোভাযাত্রাপূর্ব আলোচনা সভায় বক্তব্য দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।
পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে ১৫ এপ্রিল মূলধারার নিউজ মিডিয়া সময় টিভির ইউটিউব চ্যানেলে আপলোডকৃত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন তালিকার ঘোষণাপত্র পাঠ করতে দেখা যায়।
যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওয়াবদুল কাদের মৃত্যুর সংবাদটি সম্পূর্ন বানোয়াট এবং মিথ্যা।
মূলত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মারা গেছেন বলে যে দাবি করা হচ্ছে সেটি সঠিক নয়, বরং সম্প্রতি তিনি একাধিকবার জনসভা এবং সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, অতীতেও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মৃত্যু সম্পর্কে গুজব ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে।
প্রসঙ্গত, পূর্বেও একাধিক ব্যক্তির মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে বিষয়গুলো নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মারা যান গেছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ন মিথ্যা।
সম্প্রতি ‘দেখুন কি ভয়াবহ অবস্থা, নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষ-১০০ জনের মৃত্যু’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইলে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।
Screenshot: Facebook
ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের নারায়নগঞ্জে সংঘর্ষে ১০০ জন নিহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় ১০০ জন নিহত হয়েছে এবং প্রতিবেদনের শিরোনাম ও থাম্বনেইলে দেশটির নাম উল্লেখ না করায় বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
গত ১২ এপ্রিল News Plus নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ”দেখুন কি ভয়াবহ অবস্থা, নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষ-১০০ জনের মৃত্যু’ শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়।
Screenshot: Facebook
ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এটি কয়েকটি প্রতিবেদন নিয়ে তৈরি একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিও। ৮ মিনিট ১ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে ৫ মিনিট ১০ সেকেন্ডের সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় ১০০ জন নিহতের বিষয়ে বলা হয়। এবিষয়ে সংবাদ পাঠ ৫ মিনিট ১০ সেকেন্ড থেকে শুরু হয়ে ৫ মিনিট ৪২ সেকেন্ড পর্যন্ত চলে। এবিষয়ে বিস্তারিত সংবাদে বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০ জনে। নিহতদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে। সেনা শাসনের বিরোধীদের আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া এসব মানুষের ওপর মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) বোমা হামলা চালায় সামরিক বাহিনী। এর আগে প্রাথমিকভাবে নিহতের সংখ্যা অর্ধশতাধিক বলে জানা গিয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় গণতন্ত্রপন্থি গোষ্ঠীর সদস্য এবং মিয়ানমারের স্বাধীন মিডিয়ার বরাত দিয়ে আজ বুধবার (১২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এপি।
উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে অনলাইন সংবাদমাধ্যম এবি নিউজে ‘মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় নিহত বেড়ে ১০০’ শীর্ষক শিরোনামে গত ১২ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন(আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: abnews24.com
প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০ জনে। নিহতদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে। সেনা শাসনের বিরোধীদের আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া এসব মানুষের ওপর মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) বোমা হামলা চালায় সামরিক বাহিনী। এর আগে প্রাথমিকভাবে নিহতের সংখ্যা অর্ধশতাধিক বলে জানা গিয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় গণতন্ত্রপন্থি গোষ্ঠীর সদস্য এবং মিয়ানমারের স্বাধীন মিডিয়ার বরাত দিয়ে আজ বুধবার (১২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এপি।
রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, এবি নিউজে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটি দাবিকৃত ভিডিওতে প্রতিবেদনের শেষ পর্যন্ত হুবহু পাঠ করা হয়েছে।
অন্যদিকে ভিডিওটি’র ৪ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের সময় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে পথচারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে বলা হয়। এবিষয়ে সংবাদ পাঠ ৪ মিনিট ১৩ সেকেন্ডে শুরু হয়ে ৪ মিনিট ২৬ সেকেন্ড পর্যন্ত চলে। সেখানে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার চনপাড়া এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিন পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বুধবার (১২ এপ্রিল) সকালে এ ঘটনা ঘটে। তবে আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে মূল ধারার গণমাধ্যম আরটিভির অনলাইন সংস্করণে গত ১২ এপ্রিল ‘নারায়ণগঞ্জে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, ৩ পথচারী গুলিবিদ্ধ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন(আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: RTV Online
প্রতিবেদনে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার চনপাড়া এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিন পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বুধবার (১২ এপ্রিল) সকালে এ ঘটনা ঘটে। তবে আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, আরটিভি অনলাইনে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটি দাবিকৃত ভিডিওতে প্রতিবেদনের শেষ পর্যন্ত হুবহু পাঠ করা হয়েছে।
এছাড়াও, আরটিভি অনলাইনের উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিরা সকলে বর্তমানে শঙ্কামুক্ত। অর্থাৎ নারায়ণগঞ্জের উক্ত সংঘর্ষে কেউ মারা যাননি।
পাশাপাশি, দেশীয় গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো সূত্রে নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষে ১০০ জনের মৃত্যু সম্পর্কিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিও’র বিস্তারিত প্রতিবেদন এবং এবিষয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষে ১০০ জন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
মূলত, সম্প্রতি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় দেশটিতে ১০০ জন নিহতের ঘটনা ঘটে। তবে বাংলাদেশে একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিওতে উক্ত ঘটনার সাথে নারায়নগঞ্জে সংঘর্ষের অন্য একটি সংবাদ যুক্ত করে ‘দেখুন কি ভয়াবহ অবস্থা, নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষ-১০০ জনের মৃত্যু’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে চটকদার ক্যাপশন ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে অধিক ভিউ পাবার আশায় উক্ত দাবিতে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে চটকদার শিরোনাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এসব ঘটনা নিয়ে পূর্বেও ফ্যাক্টচেকপ্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় ১০০ জন নিহত এবং নারায়ণগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষের বিষয়টিকে উক্ত নিউজ বুলেটিন ভিডিও’র ক্যাপশন ও থাম্বনেইলে শুধুমাত্র নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষে ১০০ জনের মৃত্যু লিখে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি ‘লাভ-জি*হাদের ফাঁদে পড়ে অবশেষে জি*হাদী কর্তৃক প্রতারিত হয়ে নিজের জীবন দিয়ে ভূলের প্রায়াচিত্ত করে গেলো রংপুরের পায়রাবন্দ সরকারী বেগম রোকেয়া স্মৃতি ডিগ্রী কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক তারক চন্দ্র বর্মনের বড় মেয়ে “জয়ত্রী বর্মন কলি”।‘ শীর্ষক শিরোনামে কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, লাভ জিহাদের ফাঁদে পড়ে জয়ত্রী বর্মন কলি নামের এক হিন্দু ধর্মাবলম্বী তরুণীর আত্মহত্যার তথ্যটি সঠিক নয় বরং জয়ত্রী বর্মন কলি পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়াতে বাসা থেকে শাসন করায় আত্মহত্যা করেছে বলে তার পারিবারিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম ফেসবুকে পাওয়া তথ্যের সূত্র ধরে জয়ত্রী বর্মন কলির বাবা পায়রাবন্দ সরকারি বেগম রোকেয়া স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক তারক চন্দ্র বর্মনের সাথে যোগাযোগ করে।
তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, ওর (জয়ত্রীর) পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হওয়াতে বাসা থেকে শাসন করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে টেবিলে একটা চিঠি লিখে সে আত্মহত্যা করে। তবে, আত্মহত্যার পূর্বে তার চলাফেরা এবং আচার–আচরণ স্বাভাবিক ছিলো বলেও জানান তিনি।
এছাড়া, মুসলিম ছেলের সঙ্গে জয়ত্রীর কোনো সম্পর্ক ছিলো কি না, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এ সম্পর্কে আমরা পরিবারের কেউ অবগত ছিলাম না পূর্বে। তবে, জয়ত্রী আত্মহত্যা করেছে এবং এটি তার রেজাল্ট সংক্রান্ত ব্যাপারে, এতটুকুই বলার ছিলো আমার।”
পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে জয়ত্রী কলি বর্মনের মৃত্যু সংক্রান্ত কোনো সংবাদ দেশীয় কোনো সংবাদমাধ্যমে খুঁজে না পাওয়া যায়নি।
কিন্তু ইতোপূর্বে এই ঘটনাটিকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে মুসলমানরা জয়ত্রী বর্মন কলিকে নির্যাতন করে হত্যা করে হত্যা করেছে দাবিতে প্রচার করা হয়।
Screenshot: International Hindu Voice Twitter
তবে এ নিয়ে সে সময় ঘটনাটিকে মিথ্যা হিসেবে উল্লেখ করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে।
Screenshot: Rumor Scanner website
মূলত, চলতি বছরের ০১ মার্চ তারিখে রংপুরের পায়রাবন্দ সরকারি বেগম রোকেয়া স্মৃতি ডিগ্রী কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক তারক চন্দ্র বর্মনের বড় মেয়ে জয়ত্রী বর্মন কলি আত্মহত্যা করে। এ ঘটনাটিকেই পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয় যে, জয়ত্রী বর্মন কলি লাভ জিহাদের ফাঁদে পড়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়াতে বাসা থেকে শাসন করায় আত্মহত্যা করে জয়ত্রী বর্মন কলি।
সুতরাং, লাভ জিহাদের ফাঁদে পড়ে জয়ত্রী বর্মন কলি নামের এক হিন্দু ধর্মাবলম্বী তরুণীর আত্মহত্যার তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি “নর্থ ইন্ডিয়ায় জন্ম নিলো বৃদ্ধ শিশু। পবিত্র কোরআনের সূরা মুযযাম্মিল এর ১৭ নম্বর আয়াতে বলা আছে যে যখন কেয়ামত কাছে আসবে তখন এই ধরনের বৃদ্ধ শিশুর জন্ম হবে। এই শিশুটির রক্ত পরীক্ষা করে দেখা গেছে এই শিশুর বয়স ১০৫ বৎসর। তাই আবারো আল কোরআনের সত্যতা প্রমাণিত হলো” শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি সহ সমজাতীয় দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি নর্থ ইন্ডিয়ায় বৃদ্ধ শিশু জন্ম নেওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় এবং রক্ত পরীক্ষায় শিশুটির বয়স ১০৫ বছর দেখার দাবিটিও সঠিক নয় বরং নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ব্যতীত ভিত্তিহীনভাবে উক্ত ছবি সহ দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।
ইন্টারনেটে গুজবটির শুরু সম্পর্কে কি জানা যায়
কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই দাবিতে ২০১৯ এবং ২০২১ সালে প্রকাশিত বেশকিছু ফেসবুক পোস্ট এবং প্রায় এক বছর আগে আপলোডকৃত ইউটিউব ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
শিশুটির বিরল ত্বকের অবস্থার জন্য বাবা মা তাকে লালনপালনে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে ২ সপ্তাহ বয়সী মেয়ে শিশুটি বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শিশুটিকে দুই সপ্তাহ ধরে তার দাদা দেখাশোনা করছেন এবং তিনি শিশুটিকে পশ্চিম ভারতের মহারাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। শিশুটি প্রেগন্যান্সির সপ্তম মাসে জন্মগ্রহণ করার ফলে তখন তার ওজন হয় ৮০০ গ্রাম। ডাক্তাররা বলেন, শিশুটির অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যের কারন হতে পারে Intra-Uterine Growth Retardation(IUGR) এবং কিছু ক্রোমোজমের অস্বাভাবিকতা।। শিশুটির অস্বাভাবিক চেহারার জন্য তার বাবা মা তাকে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
TV9 এর আঞ্চলিক সংস্করণ Marathi TV9 এর লোগোযুক্ত ভিডিও উক্ত প্রতিবেদনের সাথে সংযুক্ত করে দেওয়া হয়।
মাইক্রাসেফালি টেস্টে শিশুটির নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার ধরা পড়ে যেখানে নবজাতক শিশুর মাথার পরিধি স্বাভাবিকের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে ছোট হয়। মুম্বাইয়ের ওয়াদিয়া হাসপাতালের নিও-ন্যাটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের প্রধান ডাক্তার সুধা রাও এর ভাষ্য অনুযায়ী, শিশুটির এই অবস্থার সম্ভাব্য কারন হতে পারে জেনেটিক সিন্ড্রোম, ক্রোমোজমের অস্বাভাবিকতা অথবা অভ্যন্তরীণ জরায়ু সংক্রমণ। ছোট মেয়েটির হৃদপিণ্ডে একটি ছোট ছিদ্রও রয়েছে; চিকিৎসার ভাষায় একে পেটেন্ট ফোরামেন ওভাল বলা হয়।
এছাড়াও, ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম Jagran TV এর অনলাইন সংস্করণে ২০১৫ সালের ২০ জুন আলোচিত শিশুটির ছবি সহ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: jagran.com
হিন্দি ভাষায় প্রকাশিত এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “জন্ম থেকে বয়স্ক চেহারার অধিকারী হওয়ায় মেয়েটিকে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তার মা। বাচ্চাটি ইন্ট্রা জরায়ু বৃদ্ধি প্রতিবন্ধকতা রোগে ভুগছে তাই শিশুটি দেখতে একজন বৃদ্ধ মহিলার মত, তার মুখ এবং শরীর কুঁচকে ভরা এবং খুব দুর্বল (অনূদিত)”।
অর্থাৎ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এটা স্পষ্ট যে, সম্প্রতি নর্থ ইন্ডিয়ায় বৃদ্ধ শিশু জন্ম নেওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় এবং দাবিকৃত ছবির শিশুটির বয়স ১০৫ বছর নয়। গণমাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সে সময়ে (২০১৫ সালে) শিশুটির বয়স ছিল দুই সপ্তাহ।
মূলত, নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার (বিরল) রোগে আক্রান্ত মাথার পরিধি স্বাভাবিকের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে ছোট এক নবজাতক শিশুর ছবি ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরেই ইন্ডিয়ায় বৃদ্ধ শিশু জন্ম নেওয়ার দাবিতে উক্ত ছবিটি প্রচার করা হচ্ছে এবং দাবি করা হচ্ছে রক্ত পরীক্ষায় জানা যায় শিশুটির বয়স ১০৫ বছর। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং শিশুটির বয়স ১০৫ বছর হওয়ার দাবিটিও সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে এটি ২০১৫ সালে নর্থ ইন্ডিয়ায় জন্ম নেওয়া বিরল ত্বকের রোগে আক্রান্ত দুই সপ্তাহ বয়সী এক শিশুর ছবি যার চেহারা বয়স্কদের মত দেখতে।
প্রসঙ্গত, ইতোপূর্বে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বেশকিছু ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “সম্প্রতি নর্থ ইন্ডিয়ায় ১০৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ শিশু জন্ম নিয়েছে” শীর্ষক দাবি প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।