Home Blog Page 595

ভিন্ন এক ব্যক্তির কণ্ঠস্বর যুক্ত করে আয়মান সাদিকের এডিটেড বক্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি, টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিকের ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

আয়মান সাদিক

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

যা দাবি করা হচ্ছে 

ভিডিওটিতে ১০ মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিককে একজন ভালো ফাউন্ডার বা সিইও হওয়ার বিষয়ে বলতে শোনা যায়, “If you are the founder, you are the CEO, your job is three. One, hire a beautiful girl. Two, win over the girl. And third, marry the girl. এই তিনটা কাজ যদি প্রপারলি করতে পারো, You are a good founder and CEO, বাকিগুলো করার দরকার নাই।”

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত এই ভিডিওটির বক্তব্যের পুরো কণ্ঠস্বর আয়মান সাদিকের নয়। প্রকৃতপক্ষে ভিন্ন এক ব্যক্তির কণ্ঠস্বর এবং ভিন্ন সাবটাইটেল যুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিককে বলতে শোনা যায়, “If you are the founder, you are the CEO, your job is three. One, hire a beautiful girl. Two, win over the girl. And third, marry the girl. এই তিনটা কাজ যদি প্রপারলি করতে পারো, You are a good founder and CEO, বাকিগুলো করার দরকার নাই।”

বক্তব্যটি বাংলায় অনুবাদ করলে এর অর্থ দাঁড়ায়, “যদি আপনি ফাউন্ডার বা সিইও হন তাহলে আপনার কাজ হলো তিনটি (ভালো সিইও হওয়ার পদ্ধতি)। প্রথমত, একজন সুন্দরী মেয়ে নিয়োগ করুন। দ্বিতীয়ত, তাকে (মনকে) জয় করুন এবং তৃতীয়ত, তাকে বিয়ে করুন। এই তিনটি কাজ যদি প্রোপারলি করতে পারো তাহলে তুমি ভালো ফাউন্ডার এবং সিইও।”

আলোচিত ভিডিওটির বিভিন্ন অংশে আয়মান সাদিকের কণ্ঠস্বরের ভিন্নতা খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটির ‘hire a beautiful girl’,  ‘win over the girl’ এবং ‘marry the girl’ অংশের সাথে অন্যসব অংশে আয়মান সাদিকের কণ্ঠস্বরের পার্থক্য রয়েছে।

বিষয়টি যাচাইয়ে এই ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে 2 Cents Podcast নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘How to be a good founder or CEO’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: 2 Cents Podcast Facebook

সেখানে আয়মান সাদিককে একজন ভালো সিইও এবং ফাউন্ডার হওয়ার জন্য ভিন্ন তিনটি বিষয় বলতে শোনা যায়। তিনি বলেন, If you are the founder, you are the CEO, your job is three. One, set the vision for the company and give the directions. Two, maintain all internal and external stakeholders meaning Government, NBR, Tax সব. And third, make sure the company doesn’t run out of money, meaning that fund raising, profitable হইলেতো luck. এই তিনটি কাজ যদি প্রোপারলি করতে পারো তাহলে তুমি ভালো ফাউন্ডার এবং সিইও।”

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটিতে একজন ভালো ফাউন্ডার এবং সিইও হওয়ার প্রথম পদ্ধতি হিসেবে hire a beautiful girl, দ্বিতীয় পদ্ধতি হিসেবে win over the girl এবং তৃতীয় পদ্ধতি হিসেবে marry the girl বাক্যগুলো বলা হলেও মূল ভিডিওতে সেখানে প্রথম পদ্ধতি হিসেবে set the vision for the company and give the directions, দ্বিতীয় পদ্ধতি হিসেবে maintain all internal and external stakeholders meaning Government, NBR, Tax এবং তৃতীয় পদ্ধতি হিসেবে make sure the company doesn’t run out of money, meaning that fund raising এর কথা বলা হয়।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে 2 Cents Podcast এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৩ আগস্ট প্রকাশিত আয়মান সাদিকের বক্তব্যের এই ভিডিওটির দীর্ঘ সংস্করণ বা মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ২৭.৪৩ মিনিট থেকে ২৮.৮ মিনিট পর্যন্ত এ বিষয়ে বলা হয়।

Screenshot: 2 Cents Podcast YouTube

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে সেখানে ভিন্ন এক ব্যক্তির কণ্ঠস্বর এবং ভিন্ন সাবটাইটেল যুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে।

মূলত, গত ১৩ সেপ্টেম্বর টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিকের ‘How to be a good founder and CEO’ শীর্ষক বক্তব্যের একটি ভিডিও 2 Cents Podcant নামের একটি প্রতিষ্ঠান তাদের ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে সেখানে ভিন্ন এক ব্যক্তির কণ্ঠস্বর এবং ভিন্ন সাবটাইটেল যুক্ত করে প্রচার করা হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদিত ভিডিও শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ভালো ফাউন্ডার হতে, সুন্দরী মেয়ে নিয়োগ করুন শীর্ষক মন্তব্যটি আয়মান সাদিকের মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি বিকৃত।

তথ্যসূত্র

  • 2 Cents Podcast Facebook: Reel Video
  • 2 Cents Podcast YouTube: Full Video
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

ড. ইউনূসের আগামী তিন বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, “অগ্রীম শুভেচ্ছা স্যার। আগামী তিন বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী। আবার রুখে দাঁড়াবে বাংলাদেশ” শীর্ষক দবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

প্রধানমন্ত্রী

ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন ভিডিও (আর্কাইভ)। 

টিকটকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন ভিডিও (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আগামী তিন বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী ড. ইউনূস শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে গত ৬ আগস্ট আদালত শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলার বিচারকার্যের আদেশ দেন। এই দিনে আদালতে হাজির হওয়ার সময়কালীন একটি ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত ভিডিওটিতে থাকা চ্যানেল ২৪ এর লোগো ধরে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল ২৪’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত জুন মাসে “শ্রম আইন লংঘন:নোবেলবিজয়ী ড. ইউনূসের বিচার শুরু। Dr Yunus। Channel 24” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ৪ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওটির ৩ মিনিট ৫৫ সেকেন্ড থেকে পরের অংশটুকুর সাথে দাবিকৃত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

photo Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে ভিডিওটির সূত্র ধরে চ্যানেল ২৪ এর অনলাইন সংস্করণে গত ৬ জুন “শ্রম আইন লঙ্ঘন : নোবেলবিজয়ী ড. ইউনূসের বিচার শুরু” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের ৯ আগস্ট শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতর। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলা করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান। বিবাদীদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন আদালত।উক্ত মামলায় অভিযোগ গঠন করে ২০২৩ সালের ৬ জুন ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর উপস্থিতিতে উক্ত মামলার বিচারকার্য শুরু করার রায় দেন আদালত।

পাশাপাশি উক্ত প্রতিবেদনে থাকা তথ্য অনুযায়ী আরো অনুসন্ধানে গত ৬ জুন ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের বাংলা সংস্করণে ” শ্রম আদালতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনেও একই বিষয় তুলে ধরা হয়। 

অর্থাৎ, গত ৬ জুন ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের মামলায় আদালতে হাজির হওয়ার সময়কালীন একটি ভিডিওকেই বর্তমানে আগামী তিন বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ ইউনূস দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

এছাড়া অনুসন্ধানে মূলধারার কোনো গণমাধ্যমে আগামী তিন বছরের জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধানমন্ত্রী বিষয়ক কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

মূলত,গত বছরের অর্থাৎ ২০২২ সালের ৯ আগস্ট শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতর। উক্ত মামলায় অভিযোগ গঠন করে চলতি বছরের অর্থাৎ ২০২৩ সালের ৬ জুন ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর উপস্থিতি উক্ত মামলার বিচারকার্য শুরু করার রায় দেন আদালত। এই দিন আদালতে উপস্থিত হওয়ার সময়কার একটি ভিডিওকে সম্প্রতি আগামী তিন বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ ইউনূস শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া নির্ভরযোগ্য কোনো গণমাধ্যমেও আগামী তিন বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিষয়ক কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।  

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস কে কেন্দ্র করে প্রচারিত একাধিক গুজব নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন  

সুতরাং, আগামী তিন বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী ড.মুহাম্মদ ইউনূস শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

চটকদার থাম্বনেইলে সেনাবাহিনীর হাতে আওয়ামী লীগ ১৩ নেতা বা মন্ত্রী আটক হওয়ার ভুয়া খবর

0

গত ১০ সেপ্টেম্বর “দেশ ছাড়লো প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি। আওয়ামী লীগের ১৩,জন নেতাকে গ্রেফতার করলো সেনাবাহিনী” শীর্ষক শিরোনাম এবং প্রায় একই দাবি সম্বলিত থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। 

আওয়ামী লীগ

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন ভিডিও (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়,প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি গোপনে দেশ ছাড়া এবং সেনাবাহিনী কর্তৃক ১৩ জন আওয়ামী লীগ নেতা বা মন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার একাধিক ভিডিও যুক্ত করে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোরূপ তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটি কয়েকটি ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ক্লিপ প্রযুক্তির সাহায্য যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে। 

৯ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের এই ভিডিওটির শুরুতে কয়েকটি ভিন্ন ঘটনার ভিডিওর খণ্ডাংশ দেখানো হয়। পরবর্তীতে ভিডিওটিতে চ্যানেলটির উপস্থাপক আলোচিত দাবিটির উদ্দেশ্যে দুটি ভিডিও ক্লিপ দেখান।

ভিডিওগুলো দেখানোর আগে আলোচিত ভিডিওটিতে চ্যানেলটির উপস্থাপক বলেন, ‘নতুন করে আবারও আলোচনায় পুলিশ। আপনারা জানেন প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি মেইন মেইন দায়িত্বশীল দেশের বাহিরে গিয়েছে। অন্যদিকে এই সুযোগে পুলিশ ছাত্রলীগকে গ্রেফতার করে থানার মধ্যে নিয়ে কঠিন থেকে কঠিন নির্যাতন এমনকি দাঁত ফেলে দিচ্ছে প্লাস দিয়ে। তো কঠিন এক অবস্থা হয়েছে। অনেকেই এই বিষয়টা বলতেছে আগামী নির্বাচন কে কেন্দ্র করেই নাকি পরিবর্তন হচ্ছে। অন্যদিকে পুলিশ প্রধান যিনি মূলত তারও কিন্তু চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য দিচ্ছে যে পুলিশের পক্ষে পুলিশ পুলিশের মতনই থাকবে। সর্বপ্রথম থানার মধ্যে ছাত্রলীগের যে কাহিনীটা ঘটেছে সেটা দেখাবো।’

পরবর্তীতে প্রথম ভিডিও ক্লিপটিতে থাকা লোগোর সূত্র ধরে অনুসন্ধানে গত ১১ সেপ্টেম্বর ‘1A News’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “মধ্যরাতে কেন্দ্রীয় দুই ছাত্রলীগ নেতাকে বেধড়ক পেটালো রমনা থানার এডিসি হারুন রহস্য কি?” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওর সঙ্গে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটিতে থাকা প্রথম ভিডিও ক্লিপটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওতে বলা হয়, ‘দর্শক মধ্যরাতের দারুণ খবর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে পেটালেন এডিসি হারুন আপনারা জানেন এডিসি হারুন তিনি রমনা বিভাগের এডিসি হারুন এবং এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে বিএনপি,জামায়াত,ছাত্রলীগ পরিষদ সহ যারা এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তাদেরকে নির্দয়ভাবে পেটান। এবং সর্বশেষ তিনি সুপ্রিমকোর্টের ভেতর সাংবাদিকদের চরমভাবে পিটিয়েছে। এবং এতকাল তিনি পেটালেও ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগ দাঁত কেলিয়ে হাসত কিন্তু এবার তিনি ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে এমনভাবে পিটিয়েছেন দর্শক দেখার মতো না….।’

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানে গত ১০ সেপ্টেম্বর জাতীয় দৈনিক কালবেলার অনলাইন সংস্করণে “কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে পেটালেন এডিসি হারুন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে এ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় ধরে নিয়ে বেদম পিটিয়েছেন পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি হারুন অর রশিদ। দুইজন হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম। তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

উক্ত প্রতিবেদনে থাকা তথ্যগুলো প্রচারিত ভিডিওটিতে দেখানো প্রথম ভিডিওটির ২ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড থেকে হুবহু পাঠ করা হয়। কিন্তু প্রচারিত ভিডিওটিতে কিংবা উক্ত প্রতিবেদনের কোথাও প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির দেশ ছাড়া সহ ১৩ জন আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার বিষয়ক কথা উল্লেখ ছিলো না। 

অনুরূপভাবে আলোচিত ভিডিওটির দ্বিতীয় ক্লিপটির উৎস অনুসন্ধানে নয়া দুর্বার নামক একটি ফেসবুক পেজে “আন্দোলনরত ১৩ জন গ্রেফতার” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির দ্বিতীয় ক্লিপটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটিতে বলা হয়,’আপনারা জানেন যে কার্যক্রম টা আমরা চালাচ্ছিলাম এর ধারাবাহিকতায় আমরা একটা র‍্যালি নিয়ে বের হয়েছিলাম। এবং এই র‍্যালিটা যখন শাহবাগ থানার সামনে যায় তখন শাহবাগ থানার যারা পুলিশ ভাইবোনেরা ছিলেন তারা আমাদের উপর বেধড়ক মারধর করেন…।’ অর্থাৎ, উক্ত বক্তব্যকে কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video comparison by Rumor Scanner 

মূলত, সপ্তাহ খানেকের ব্যবধানে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দীন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পৃথক দুই দেশে রাষ্ট্রীয় সফরকে কেন্দ্র করে ‘B tv news 24’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে দেশ ছাড়লো প্রধামন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি, সেনাবাহিনী কর্তৃক ১৩ জন আওয়ামী লীগ  নেতা বা মন্ত্রীকে গ্রেফতার শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়,দাবিটি সঠিক নয়। আদতে ১৩ জন আওয়ামী লীগ নেতা বা মন্ত্রীকে গ্রেফতারের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। অধিকতর ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৫ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ৪৩তম ‘আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন’ এবং ১৮তম ‘পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে’ যোগ দিতে ০৪ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুরে ১৩ দিনের সফর শেষে গত ১৬ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে নয়াদিল্লিতে ৯-১০ সেপ্টেম্বর জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গত ০৮ সেপ্টেম্বর ভারত সফরে যান শেখ হাসিনা এবং ১০ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরেন

সুতরাং, সেনাবাহিনী কর্তৃক ১৩ জন আওয়ামী লীগ নেতা বা মন্ত্রীকে গ্রেফতার দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

চটকদার থাম্বনেইলে মির্জা ফখরুল এর গ্রেফতারের ভুয়া সংবাদ প্রচার 

0

সম্প্রতি,”ইন্না-লিল্লাহ!এইমাত্র গ্রেফতার মির্জা ফখরুল। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নতুন কৌশল” শীর্ষক শিরোনামের একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। 

মির্জা ফখরুল

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন ভিডিও ( আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেফতারের কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় ভিন্ন ভিন্ন একাধিক ভিডিও যুক্ত করে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোরূপ তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। 

গুজবের সূত্রপাত 

অনুসন্ধানে ‘B tv news 24’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে “ইন্না-লিল্লাহ! এইমাত্র গ্রেফতার মির্জা ফখরুল। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নতুন কৌশল ” শীর্ষক শিরোনামে ভিডিওটি পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওর মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে। 

তথ্যযাচাই 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটি কয়েকটি ভিন্ন ইস্যুর খন্ডিত ভিডিও প্রযুক্তির সাহায্যে যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে। 

৮ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের এই ভিডিওটির শুরুতে কয়েকটি ভিন্ন ঘটনার ভিডিওর খন্ডাংশ দেখানো হয়। পরবর্তীতে ভিডিওটিতে চ্যানেলটির উপস্থাপক আলোচিত দাবিটির উদ্দেশ্যে দুটি ভিডিও দেখান। যেখানে রয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুউল আলম হানিফ এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের ভিন্ন দুইটি ভিডিও ক্লিপ।

প্রথম ভিডিওটি দেখানোর আগে আলোচিত ভিডিওটিতে চ্যানেলটির উপস্থাপক বলেন, নির্বাচনের আগ মুহূর্তে বিশেষ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাকে গ্রেফতার করা হবে এমন কিছু তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এবং এই চাপ নাকি উপর থেকে তাদেরকে সদা সর্বদাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

মাহবুবউল আলম হানিফ এর ভিডিওতে কি আছে? 

অনুসন্ধানে গত ৮ আগস্ট Rtv News এর ইউটিউব চ্যানেলে “ড.ইউনুসের জন্য বিদেশিরা যে বিবৃতি দিয়েছেন তা টাকা দিয়ে কেনা :হানিফ। Rtv News” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সঙ্গে ইউটিউব এ প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটিতে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ড.ইউনুসের জন্য বিদেশিরা যে বিবৃতি দিয়েছেন তা টাকা দিয়ে কেনা। কারণ বিবৃতি দাতারা এই মামলা ও বিচারকার্য সম্পর্কে কিছুই জানে না। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার অডিটরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপকার ভোগীদের প্রণোদনা ও আর্থিক সহায়তা বিতরণের অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। 

তবে হানিফ এর বক্তব্যে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি যা ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটির থাম্বনেইলে উপস্থাপিত তথ্যের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক। 

অর্থাৎ কোনো যোগসূত্র ছাড়াই মাহবুবউল আলম হানিফ এর ভিডিওটিকে “ইন্না-লিল্লাহ! এইমাত্র গ্রেফতার মির্জা ফখরুল। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নতুন কৌশল” শীর্ষক শিরোনাম যুক্ত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 
অনুরূপভাবে গত ৯ সেপ্টেম্বর ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন এর ইউটিউব চ্যানেলে “জাতীয় নির্বাচন ঘিরে আন্তর্জাতিক কোনো চাপ নেই: আইজিপি। Chowdhury Abdullah Al-Mamun। Independent TV” শীর্ষক শিরোনামে ইউটিউবে প্রচারিত দ্বিতীয়  ভিডিওটির মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot : Independent Television 

উক্ত ভিডিওটিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্পর্কে কোনো কথা বলেননি পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। উক্ত বক্তব্যকে কোনোপ্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে।

মূলত, ‘B tv news 24’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কে গ্রেফতার করা হয়েছে শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায় অধিকতর ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়।

সুতরাং, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গ্রেফতারের দাবিতে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

তারেক রহমান জামিন পেয়ে বাংলাদেশে আসছেন দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, ‘তারেক রহমানের মামলায় জামিন হইছে তারেক রহমান আসছে বাংলাদেশে’ শীর্ষক দাবিতে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে।

তারেক রহমান

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তারেক রহমানের মামলায় জামিন হওয়া এবং তার বাংলাদেশে আসার দাবিতে প্রচারিত ভিডিও সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত রাজনৈতিক কর্মশালায় ধারণকৃত ভিডিওর সাথে বিভ্রান্তিকর শিরোনাম যুক্ত করে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়াও গত ২ আগস্ট তারেক রহমানকে ৬ মামলায় ৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। 

তারেক রহমানের জামিন পাওয়ার তথ্যটির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, দৈনিক আজকের পত্রিকার অনলাইন পোর্টালে  ‘৬ মামলায় সাজা হলো তারেকের’ শীর্ষক শিরোনামে গত ২ আগস্ট প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Ajker Patrika

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের মামলায় তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে সাজা দেয় ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ আদালত ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। রায়ে তারেক রহমানকে ৯ বছর ও জোবাইদাকে ৩ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এছাড়াও প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গত ২ আগস্ট মহানগর দায়রা জজ আদালতের রায়ের একাধিক সংবাদ পাওয়া গেলেও তার জামিনের বিষয়ে কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে তারেক রহমানের বাংলাদেশে আসার ভিডিও দাবিতে প্রচারিত ফুটেজের সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম। 

রিভার্স সার্চের মাধ্যমে, JSSD UK নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে  ‘দেশনায়ক তারেক রহমানের সভায় প্রবেশ | রাজনৈতিক কর্মশালা ২০১৬’ শীর্ষক শিরোনামে ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর সাথে উক্ত ভিডিওর ৫ সেকেন্ড থেকে ৪২ সেকেন্ড পর্যন্ত হুবহু মিল রয়েছে। 

ভিডিওটি থেকে আরও জানা যায়, উক্ত ভিডিওটি ২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর পূর্ব লন্ডনের রিজেন্ট বেঙ্কুয়েটিং হলে যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত রাজনৈতিক কর্মশালা-র সময় ধারণ করা হয়। 

অর্থাৎ, তারেক রহমানের মামলায় জামিন পাওয়া এবং বাংলাদেশে আসার তথ্যটি সত্য নয়।

মূলত, গত ২ আগস্ট জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা এক মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৯ বছর এবং তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড দেয় সিনিয়র বিশেষ জজ আদালত ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে তারেক রহমানের মামলায় জামিন হয়েছে এবং তিনি বাংলাদেশে আসছেন দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি তারেক রহমান তার চলমান কোনো মামলায় জামিন পাননি এবং বাংলাদেশে এসেছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ২০১৬ সালে পূর্ব লন্ডনে যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত একটি কর্মশালায় ধারণকৃত।

সুতরাং, তারেক রহমানের মামলায় জামিন হওয়া এবং তার দেশে আসার দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

এডিসি হারুনের সাথে বিয়ের পোশাক পরিহিত এই নারী এডিসি সানজিদা নন

0

সম্প্রতি, এডিসি হারুন ও এডিসি সানজিদা আফরিনের বিয়ের ছবি দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)।

পরবর্তীতে উক্ত ছবিকে এডিসি হারুন ও এডিসি সানজিদা আফরিনের বিয়ের ছবি দাবি করে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। 

গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন আরটিভি, সময়ের আলো, ঢাকা মেইল, তৃতীয় মাত্রা, কারেন্ট নিউজ, ভোরের আকাশ। 

একই ছবিকে এডিটেড দাবি করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন যুগান্তর, কালবেলা, বিডি জার্নাল, সোনালী নিউজ, ফ্রিডম বাংলা নিউজ। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পুলিশের সাময়িক বরখাস্তকৃত অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদ ও ডিএমপির ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সানজিদা আফরিনের বিয়ের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি এডিটেড নয় এবং ছবিতে থাকা নারীটি (এডিসি) সানজিদা আফরিন নন। প্রকৃতপক্ষে এটি এডিসি হারুন অর রশীদের সাথে তার স্ত্রী ডা. ফারিয়া তাসনিমের ছবি।

দাবিটি নিয়ে সত্যতা যাচাইয়ে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানের মাধ্যমে এডিসি হারুন অর রশীদের ছোট ভাই শরীফুল ইসলামের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

পরবর্তীতে শরীফুল ইসলামের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সূত্রে এডিসি হারুন ও এডিসি সানজিদা আফরিনের বিয়ের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সম্পর্কে জানতে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, ছবির নারীটি সানজিদা আফরিন নন। বরং ছবির নারীটি তার ভাবী ডাক্তার ফারিয়া তাসনীম।

শরীফুল ইসলামের প্রদত্ত তথ্যের সূত্রে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২০ সালের ১০ জুলাই ‘ভাই ও ভাবী। অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ ও ডাক্তার ফারিয়া তাসনিম। তোমাদের নতুন জীবনে শুরুতে রইল অভিনন্দন ও শুভ কামনা।’ শীর্ষক একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook Post

এছাড়া ফরহাদুল ইসলাম শান্ত নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও একইদিনে প্রায় একই ক্যাপশনে আলোচিত ছবিটিসহ আরও একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook Post

অনুসন্ধানের এ পর্যায়ে ছবিটির বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার লক্ষ্যে হারুনের সাথে বিয়ের পোশাক পরিহিত নারীটির সঙ্গে ইন্টারনেটে পাওয়া এডিসি সানজিদা আফরিনের ছবির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দুই নারীর মুখমণ্ডলের গঠনগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

Image Analysis: Rumor Scanner

পাশাপাশি অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক আজকের পত্রিকায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর  ‘এডিসি হারুনের সঙ্গে সানজিদার বিয়ে হয়নি, তাই ছাড়াছাড়িরও প্রশ্ন নেই’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এডিসি সানজিদা আফরিনের বড় বোন হোসনে আরা কামনা জানান, রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুনই সানজিদার স্বামী। এডিসি হারুন তাঁর কলিগ মাত্র। তাঁর সঙ্গে সানজিদার বিয়ে হয়নি। প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, ২০১৭ সালের ১০ মার্চ গাজীপুরের কাপাসিয়ার বাসিন্দা রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুনের সঙ্গে সানজিদা আফরিন নিপার বিয়ে হয়।

এছাড়াও সংবাদ মাধ্যমের কাছে সানজিদা আফরিন নিজেও দাবি করেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমি বুলিংয়ের শিকার হচ্ছি। অনেকে নোংরা মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছে। একটি ছবি ছড়িয়ে দিয়ে হারুন স্যারের সঙ্গে আমার বিয়ের কল্পকাহিনি প্রচার করছে। ছবির ওই নারী আমি নই।’

মূলত, গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠে পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে। এর আগে বারডেম হাসপাতালে ডিএমপির ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সানজিদা আফরিনের চিকিৎসা নেওয়াকে কেন্দ্র করে এডিসি হারুনের সঙ্গে সানজিদা আফরিনের স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুনের বাগবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এডিসি হারুন ও এডিসি সানজিদা আফরিনের বিয়ের ছবি দাবিতে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। এডিসি হারুনের সাথে বিয়ের পোশাক পরিহিত ঐ নারী তার স্ত্রী ডা. ফারিয়া তাসনিম। 

উল্লেখ্য, এডিসি হারুন ও এডিসি সানজিদা আফরিনের উল্লিখিত ঘটনাটির পর অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদকে প্রথমে বদলি এবং পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে তাকে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজির কার্যালয়ে যুক্ত করা হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে যে, এডিসি সানজিদা আফরিনকেও রংপুরে বদলি করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে বিষয়টি মিথ্যা বলে প্রতীয়মান হয়।

এ নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেখুন 

সুতরাং, এডিসি হারুন ও এডিসি সানজিদা আফরিনের বিয়ের ছবি দাবি করে ইন্টারনেটে প্রচারিত এই বিষয়টি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জাইমা রহমানের লন্ডন পলিটিক্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১ম হওয়ার তথ্যটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমান লন্ডনের পলিটিক্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১ম স্থান অর্জন করেছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

জাইমা রহমান

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানের লন্ডনের পলিটিক্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম হওয়ার দাবিটি ভিত্তিহীন।

অনুসন্ধানে, ‘লন্ডন পলিটিক্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা লন্ডনে কোনো পলিটিক্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানের নামে পরিচালিত একটি ভুয়া ফেসবুক পেজে (Zaima Rahman) কোনো প্রকার তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ‘জাইমা রহমান লন্ডনের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনৈতিক বিষয়ক পরীক্ষা দিয়ে বিশ্বে প্রথম হয়েছেন’ শীর্ষক তথ্যটি প্রথম প্রচার করা হয়। যা পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে এই বিষয়টিকেই কিছুটা বিকৃত করে জাইমা রহমান লন্ডনের পলিটিক্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১ম স্থান অর্জন করেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়। তবে লন্ডন বা অন্য কোনো দেশে এই নামে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই নেই।

উল্লেখ্য, পূর্বেও জাইমা রহমান রাজনৈতিক বিষয়ক পরীক্ষায় বিশ্বে প্রথম হওয়ার একটি দাবি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টিকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

বাংলাভিশনের ফটোকার্ড সম্পাদনার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার

সম্প্রতি, ‘প্রশাসনের কাছে আরেকবার সুযোগ চাইলেন শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনামে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনের আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

প্রধানমন্ত্রীর

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘প্রশাসনের কাছে আরেকবার সুযোগ চাইলেন শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনামে বাংলাভিশন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এমন কোনো বক্তব্য দেননি বরং  বাংলাভিশনের ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে’প্রশাসনের কাছে’ শীর্ষক শব্দদ্বয় যুক্ত করে এটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

 Screenshot: Facebook

ফটোকার্ডটির উপরের বাম কোণে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশন এর লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। এই সূত্রে ধরে বাংলাভিশন এর ফেসবুক পেজ হতে একটি ফটোকার্ড সংগ্রহ করে আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে তূলনামূলক বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে বেশকিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। প্রথমত আলোচিত ফটোকার্ডে ‘প্রশাসনের কাছে’ শীর্ষক শব্দদয় যে ফন্টে লেখা হয়েছে সে ফন্টের সাথে বাংলাভিশনে ব্যবহৃত ফন্টের মিল নেই। দ্বিতীয়ত বাংলাভিশন এর ফটোকার্ডের নিচে সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইটের ঠিকানা এবং ‘নিউজ লিংক কমেন্টে’ শীর্ষক বাক্য উল্লেখ থাকলেও আলোচিত ফটোকার্ডটিতে এই তথ্যগুলো অনুপস্থিত।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে বাংলাভিশনের ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং  ইউটিউব চ্যানেলে সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, অন্যকোনো গণমাধ্যমেও প্রধানমন্ত্রীর এমন কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে বাংলাভিশনের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ০২ আগস্ট ‘আরেকবার সুযোগ চাইলেন শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড এবং এর কমেন্টে একই শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Bangla Vision Facebook

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০২ আগস্ট রংপুর জেলা স্কুল মাঠে রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নতির জন্য আরেকবার আওয়ামী লীগ সরকারকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় যেতে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।

অর্থাৎ, এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে ‘প্রশাসনের কাছে’ শীর্ষক শব্দদ্বয় যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

পাশাপাশি, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত এই ফটোকার্ডটি বাংলাভিশনের নয় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এমন কোনো বক্তব্য প্রদান করেননি।

মূলত, গত ০২ আগস্ট রংপুর জেলা স্কুল মাঠে রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নতির জন্য আরেকবার আওয়ামী লীগ সরকারকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় যেতে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। এবিষয়ে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশন তাদের ফেসবুক পেজে ‘আরেকবার সুযোগ চাইলেন শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড এবং সংবাদ প্রকাশ করে। পরবর্তীতে সেই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ‘প্রশাসনের কাছে’ শীর্ষক শব্দদয় যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত আট মাসে বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিষয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের ফটোকার্ড নকল করে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, বাংলাভিশনকে উদ্ধৃত করে ‘প্রশাসনের কাছে আরেকবার সুযোগ চাইলেন শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনামে  প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং আলোচিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

বিএনপিকে সমালোচনা করে দেওয়া ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যকে বিকৃত করে প্রচার

0

সম্প্রতি, “ইলেকশন হলে কী হবে সেটা বুঝতে হলে, বোঝাতে হলে কী দরকার, ইলেকশন করা। এই দেশে একশো বছরেও শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসতে পারবে না।” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ওবায়দুল

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘একশো বছরেও শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসতে পারবে না’ শীর্ষক কোনো বক্তব্য দেননি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তার পুরোনো একটি বক্তব্যের খণ্ড খণ্ড অংশ জোড়া লাগিয়ে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘বাংলা ভিশন’ এর ফেসবুক পেজে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি “বিএনপিই খালেদা জিয়াকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করেছে: কাদের” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video comparison by Rumor Scanner

ভিডিওতে ৩ মিনিট ৫৫ সেকেন্ড এর দিকে ওবায়েদুল কাদেরকে “সুষ্ঠু নির্বাচন দিলে আওয়ামী লীগের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে, তাই এতো ভয়।” শীর্ষক একটি লিখিত প্রশ্ন পড়তে দেখা যায়।

পরবর্তীতে ঐ প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ঘোড়ার ডিম বলে না? এই কথার অর্থ ঘোড়ার ডিম।”

এছাড়া, ভিডিওতে ৪ মিনিট ১০ সেকেন্ড থেকে পরবর্তী সময়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ইলেকশন হলে কী হবে সেটা বুঝতে হলে, বোঝাতে হলে কী দরকার, ইলেকশন করা। এই দেশে একশো বছরেও শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এই দম্ভোক্তি করেছে আপনার নেত্রী। তিনি কোথায় আর শেখ হাসিনা কোথায়।”

অর্থাৎ, ওবায়দুল কাদের উক্ত কথা গুলো বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন।

একইদিনে ওবায়দুল কাদেরের উক্ত বক্তব্যটি ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করে।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

Screenshot from Independent Tv

মূলত, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বক্তব্য প্রদানকালে বিএনপিকে নিয়ে সমালোচনা করে বলেন, “ইলেকশন হলে কী হবে সেটা বুঝতে হলে, বোঝাতে হলে কী দরকার, ইলেকশন করা। এই দেশে একশো বছরেও শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এই দম্ভক্তি করেছে আপনার নেত্রী। তিনি কোথায় আর শেখ হাসিনা কোথায়।” সম্প্রতি সেই অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া বক্তব্যের “এই দম্ভক্তি করেছে আপনার নেত্রী। তিনি কোথায় আর শেখ হাসিনা কোথায়।” শীর্ষক অংশ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বাদ দিয়ে শুধুমাত্র “ইলেকশন হলে কী হবে সেটা বুঝতে হলে, বোঝাতে হলে কী দরকার, ইলেকশন করা। এই দেশে একশো বছরেও শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসতে পারবে না।” শীর্ষক অংশটুকু বিকৃতভাবে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। যার ফলে আলোচিত ভিডিওটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও ইন্টারনেটে একাধিকবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদন গুলো দেখুন-

সুতরাং, ‘ইলেকশন হলে কী হবে সেটা বুঝতে হলে, বোঝাতে হলে কী দরকার, ইলেকশন করা। এই দেশে একশো বছরেও শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসতে পারবে না।” শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিও সম্পূর্ণ এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

কালবেলা’র ফটোকার্ড নকল করে আমির খসরুকে নিয়ে রুমিন ফারহানার নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি, জাতীয় দৈনিক ‘কালবেলা’র সূত্রে আমীর খসরুকে ‘অক্ষম পুরুষ’, বললেন রুমিন ফারহানা শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

রুমিন ফারহানা

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে নিয়ে এমন কোনো মন্তব্য করেননি এবং উল্লিখিত দাবিতে কালবেলাও কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং গণমাধ্যমটির আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উক্ত ফটোকার্ডটিতে কালবেলা’র লোগো এবং ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ উল্লেখ রয়েছে।

পরবর্তীতে উল্লিখিত তথ্যের সূত্র ধরে কালবেলা’র ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এমন কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটেও এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। 

এ বিষয়ে জানতে কালবেলা অনলাইন বিভাগের প্রধান পলাশ মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, “কালবেলা কি এমন কোনো নিউজ করতে পারে? এটা মূলত, কালবেলা এখন জনপ্রিয় হওয়ায় কালবেলার পোস্টার (ফটোকার্ড) ব্যবহার করে এটা করছে যাতে মানুষকে বিভ্রান্ত করা যায়। সাইবার জগতে যারা প্রপাগাণ্ডা ছড়ায়, গুজব ছড়ায় এটা তাদের কাজ।”

তাছাড়া, অন্যান্য গণমাধ্যম এবং নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রেও রুমিন ফারহানা এমন মন্তব্য করেছেন শীর্ষক কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে উক্ত বিষয়ে জানতে রুমিন ফারহানার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “না, এটি ফেক নিউজ। আমি এমন কোনো মন্তব্য করিনি।”

মূলত, সম্প্রতি জাতীয় দৈনিক ‘কালবেলা’র সূত্রে আমীর খসরুকে ‘অক্ষম পুরুষ’, বললেন রুমিন ফারহানা শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, রুমিন ফারহানা এমন কোনো মন্তব্য করেননি। কালবেলাও এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।  গণমাধ্যমটির আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। রুমিন ফারহানাও বিষয়টি ভুয়া বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও কালবেলাকে সূত্র উল্লেখ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয় এবং তা নিয়েও ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। এমন দুইটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে। 

প্রসঙ্গত, গত আট মাসে বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিষয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ‘কালবেলা’র সূত্রে আমির খসরুকে ‘অক্ষম পুরুষ’ বললেন রুমিন ফারহানা শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত ভুয়া তথ্যটি কালবেলার আদলে তৈরি ফটোকার্ডের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Own Analysis 
  • Statement from Palash Mahmud 
  • Statement from Rumin Farhana