গতকাল ২০ মার্চ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) আপরশি মারমা নামে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়টির একটি হলের ছাদ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনার বিষয়ে একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আপরশি মারমার বাড়ি বান্দরবান বলে দাবি করা হয়েছে।
উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদন দেখুন প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ, যুগান্তর, আরটিভি, সময়ের আলো, ডেইলি ক্যাম্পাস, ঢাকা পোস্ট, প্রতিদিনের বাংলাদেশ, সময় টিভি, বাংলা ট্রিবিউন, নয়া শতাব্দী, বাংলাদেশ জার্নাল, জাগোনিউজ২৪, ডেইলি বাংলাদেশ, চ্যানেল২৪, দৈনিক আমাদের সময়, কুমিল্লার কাগজ, বাংলাদেশ টুডে, Daily Obsever, যমুনা টিভি, বাংলাদেশ প্রতিদিন, এনটিভি, মানবজমিন, বি-বার্তা২৪, বাংলাদেশ মোমেন্টস, সংবাদ প্রকাশ, ঢাকা প্রকাশ, সময় জার্নাল, দৈনিক শিক্ষা, নিউজজি২৪, নয়া দিগন্ত, সোনালি নিউজ, ইনকিলাব, আগামী নিউজ, বার্তা২৪, আমাদের সময়, সাম্প্রতিক দেশকাল, ভোরের কাগজ, ডেইলি মেসেঞ্জার, বাহান্ন নিউজ।
একই দাবিতে কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
চ্যানেল আইয়ের ফেসবুক পোস্টে উক্ত শিক্ষার্থীকে ছাত্রী হিসেবে দাবি করা হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নোবিপ্রবির হল থেকে আপরশি মারমা নামে যে মৃত শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তার বাড়ি বান্দরবান নয় বরং তার গ্রামের বাড়ি খাগড়াছড়ি সদরে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনলাইন সংবাদমাধ্যম Bdnews24 এর ওয়েবসাইটে ২১ মার্চ “নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ে হলের ছাদে ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, আপরশি মারমার বাড়ি খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায়।
পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানার টিম আপরশি মারমা নামে উক্ত মৃত শিক্ষার্থীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পায়, তার About সেকশনে তার বাড়ি খাগড়াছড়ি বলে উল্লেখ রয়েছে।
তাছাড়া, তিনি এসএসসি এবং এইচএসসি যে দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সম্পন্ন করেছেন সেগুলো হচ্ছে যথাক্রমে মাইসছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় এবং খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ। দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই খাগড়াছড়ির জেলার অন্তর্গত।
অর্থাৎ, আপরশি মারমার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে এটা স্পষ্ট যে, তার বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলায়।
আমরা এ বিষয়ে জানতে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টর এবং অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. ইকবাল হোসাইন সুমনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনিও আপরশি মারমার বাড়ি খাগড়াছড়ি বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে পরবর্তীতে আপরশি মারমার বড় ভাই ‘এসএম কং’ এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত তার পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
মূলত, গতকাল ২০ মার্চ নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলের ছাদ থেকে আপরশি মারমা নামে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে আপরশি মারমার বাড়ি বান্দরবান বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, আপরশির বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলায়৷
প্রসঙ্গত, পূর্বে সড়ক দুর্ঘটনায় নোয়াখালী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাবি করে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, নোবিপ্রবির হল থেকে উদ্ধারকৃত মৃত শিক্ষার্থীর বাড়ি খাগড়াছড়ি হলেও গণমাধ্যমে বান্দরবান বলে দাবি করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Aprushi Marma: Facebook Account
- Bdnews24: নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ে হলের ছাদে ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ
- Statement from Dr. Md. Iqbal Hossain Sumon