সম্প্রতি মঙ্গোলিয়ায় অন্তত ১০টি প্রদেশ ভয়াবহ ঠান্ডার কবলে পড়ার ঘটনায় কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দুইটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রথম ছবি –
বাংলাদেশের গণমাধ্যমে উক্ত ছবি ব্যবহার করে প্রতিবেদন দেখুন নয়া দিগন্ত।

একই ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।

দ্বিতীয় ছবি –
বাংলাদেশের গণমাধ্যমে উক্ত ছবি ব্যবহার করে প্রতিবেদন দেখুন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা, নিউজজি২৪ এবং এবিনিউজ২৪।

একই ছবি ব্যবহার করে কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে।
আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে এবং এখানে।

ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শীতে বরফাচ্ছন্ন মঙ্গোলিয়ার সাম্প্রতিক খবরে গণমাধ্যমে প্রচারিত দুইটি ছবি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এগুলো ২০১০ ও ২০১৬ সালের মঙ্গোলিয়ার ছবি।
মঙ্গোলিয়া প্রতি পাঁচ বছর অন্তর তীব্র শীতের কবলে পড়ে। স্থানীয় ভাষায় ‘dzud’ নাম দেওয়া এই ঘটনায় মানুসহ অন্যান্য প্রাণীদের মৃত্যুর খবরও নিয়মিত এক ঘটনা। ২০১০ এবং ২০১৬ সালের পর ২০২৩ সালেও সাম্প্রতিক সময়ে এমন ঘটনা ঘটেছে দেশটিতে। গণমাধ্যমে সেই বিষয়ে প্রকাশিত খবরে দুইটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রথম ছবিটি কবের?
প্রথম ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে অনুসন্ধান করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘Eurosianet’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ০১ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০১০ সালে মঙ্গোলিয়ায় দীর্ঘ এবং তীব্র শীতের সময় তুষার দ্বারা আচ্ছাদিত পশুর ছবি এটি, যা তুলেছে ইউএনডিপি মঙ্গোলিয়া।
পরবর্তীতে জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ইউএনডিপি মঙ্গোলিয়ার ফ্লিকার অ্যাকাউন্টে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচারিত প্রথম ছবিটি ১৩ বছরের পুরোনো ঘটনার।
দ্বিতীয় ছবিটি কবের?
দ্বিতীয় ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে অনুসন্ধান করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম BBC এর ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ১৪ মে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালে মঙ্গোলিয়ায় দীর্ঘ এবং তীব্র শীতের সময়ের ছবি এটি, যা তুলেছেন সাংবাদিক হেলেন রাইট৷ হেলেনের ব্যক্তিগত সাইটেও উক্ত ছবিটি রয়েছে। দেখুন এখানে।
অর্থাৎ, সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচারিত দ্বিতীয় ছবিটি ছয় বছরের বেশি সময়ের পুরোনো ঘটনার।
মূলত, মঙ্গোলিয়া প্রায় প্রতি পাঁচ বছর অন্তর তীব্র শীতের কবলে পড়ে। ২০১০ এবং ২০১৬ সালের পর ২০২৩ সালেও সাম্প্রতিক সময়ে এমন ঘটনায় গণমাধ্যমে দুইটি ছবি প্রকাশিত হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবি দুইটি সাম্প্রতিক ঘটনার নয়। প্রথম ছবিটি ২০১০ সালের এবং দ্বিতীয় ছবিটি ২০১৬ সালের।
সুতরাং, সম্প্রতি মঙ্গোলিয়ায় তীব্র শীতের সংবাদ প্রচার করতে গিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য উল্লেখ ব্যতীত পুরোনো দুইটি ছবি গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।