শুক্রবার, ডিসেম্বর 1, 2023
spot_img
Home Blog

লিওনেল মেসি ইন্সটাগ্রামে গার্নাচোকে আনফলো করার বিষয়টি মিথ্যা 

সম্প্রতি, ‘লিওনেল মেসি আর্জেন্টিনার অনুর্ধ্ব-১৭ দলের ফুটবলার আলেজান্দ্রো গার্নাচোকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে আনফলো করেছেন’ শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

দাবি করা হচ্ছে, গত ২৬ নভেম্বর এভারটনের বিপক্ষে গোল করার পর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মত উদযাপন করার জন্য লিওনেল মেসি তাকে ইনস্টাগ্রাম থেকে আনফলো করে দিয়েছেন। 

লিওনেল মেসি

গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও দেখুন- খেলাযোগ ফেসবুক (আর্কাইভ) এবং ইউটিউব (আর্কাইভ)। 

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এছাড়া মূলধারা অনলাইন গণমাধ্যম ঢাকা পোস্টের আর্টিকেলেও একই ভুল তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২৬ নভেম্বর এভারটনের বিপক্ষে গোল করার পর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মত উদযাপন করার কারণে আর্জেন্টিনা অনুর্ধ্ব-১৭ দলের ফুটবলার আলেজান্দ্রো গার্নাচোকে লিওনেল মেসি আনফলো (Unfollow) করার দাবিটি সত্য নয় বরং লিওনেল মেসি তাকে কখনও ইনস্টাগ্রামে Follow (অনুসরণ) করতেন না।

গুজবের সূত্রপাত

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাব এবং ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক খেলোয়াড় রিও ফার্ডিনান্ড তার ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৭ নভেম্বর “Garnacho Goal Better Than Rooney?। Rio Comes To The Defence Of Gary Neville Career” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি টকশো করেন। 

৪৯ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের টক শোটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, রিও ফার্ডিনান্ড ভিডিওটির ১৭ মিনিটে বলেন, আলেজান্দ্রো গার্নাচো আমাকে বলেছে মেসি তাকে (গার্নাচোকে) আনফলো করেছে। 

রিও ফার্ডিনান্ড এই মন্তব্যের পর বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। 

পরবর্তীতে, আলেজান্দ্রো গার্নাচোর ভাই রবার্তো গার্নাচো তার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে এ নিয়ে একটি পোস্ট করেন। 

Screenshot: X

পোস্টে তিনি বলেন, মিথ্যা, মেসি কখনো তাকে (গার্নাচোকে) অনুসরণই করেননি। 

আলেজান্দ্রো গার্নাচোর ভাইয়ের এক্স পোস্টে রিও ফার্ডিনান্ড এটি সার্কাজম বা মজা করে বলেছেন উল্লেখ করে একটি মন্তব্য করেছেন। 

Screenshot: X 

অপরদিকে লিওনেল মেসির অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেখা যায়, লিওনেল মেসি তার ইনস্টাগ্রাম থেকে ৩০৭ টি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টকে অনুসরণ করছেন।

Screenshot: Instagram 

অর্থাৎ, লিওনেল মেসি যদি ২৬ নভেম্বরের পর গার্নাচোকে আনফলো করে থাকেন তাহলে লিওনেল মেসির ইনস্টাগ্রাম Following অবশ্যই ৩০৭ এর বেশি হতে হবে। অন্তত ৩০৮  হতে হবে।

তবে, সমাজিক মাধ্যম পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষণ সংক্রান্ত ওয়েবসাইট Social Blade-এলিওনেল মেসির ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট এর বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২৬ নভেম্বর থেকে লিওনেল মেসির ইনস্টাগ্রাম ফলোয়িং সংখ্যা কমেনি বরং দুইটি বেড়েছে। 

Screenshot: Social Blade

ওয়েবসাইটটিতে লিওনেল মেসির গত ১৫ দিনের INSTAGRAM STATS SUMMARY তে দেখা যায়, লিওনেল মেসির ফলোয়িং সংখ্যা গত ১৭ নভেম্বর একটি বেড়েছে, ১৮ নভেম্বর একটি কমেছে ও ১৯ নভেম্বর একটি বেড়েছে এবং সর্বশেষ ২৮ নভেম্বর আরও দুইটি বেড়েছে।  

অর্থাৎ, Social Blade এর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিসংখ্যান থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় ২৬ নভেম্বরের পর লিওনেল মেসি তার ইনস্টাগ্রাম থেকে কাউকে আনফলো করেননি বরং নতুন দুইটি অ্যাকাউন্টকে ফলো করেছেন। 


মূলত, গত ২৬ নভেম্বর আর্জেন্টিনা অনুর্ধ্ব-১৭ দল ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাবের খেলোয়াড় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে এভারটনের বিপক্ষে গোল করার পর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মত উদযাপন করেন। পরবর্তীতে, গত ২৭ নভেম্বর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাবের সাবেক ফুটবলার রিও ফার্ডিনান্ড তার ইউটিউব চ্যানেলের একটি টক শোতে মেসি গার্নাচোকে ইন্সটাগ্রাম থেকে আনফলো করেছেন বলে গার্নাচো তাকে (রিও ফার্ডিনান্ড) জানিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন। তার উক্ত মন্ত্যবের প্রেক্ষিতে, ‘গত ২৬ নভেম্বর এভারটনের বিপক্ষে গোল করার পর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মত উদযাপন করার জন্য লিওনেল মেসি গার্নাচোকে ইনস্টাগ্রাম থেকে আনফলো করেছেন’ দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এক এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টের মাধ্যমে গার্নাচোর ভাই জানায়, লিওনেল মেসিকে কখনো ফলো বা অনুসরণ করেননি। পরবর্তীতে রিও ফার্ডিনান্ড গার্নাচোর ভাইয়ের এক্স পোস্টের কমেন্টে উক্ত বিষয়টি তিনি মজার ছলে বলেছেন বলে মন্তব্য করেন। এছাড়া রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানেও দেখা যায়, লিওনেল মেসি তার ইনস্টাগ্রাম থেকে গত ২৬ নভেম্বরের পর থেকে কোনো অ্যাকাউন্ট আনফলো করেননি বরং দুইটি অ্যাকাউন্টে ফলো দিয়েছেন। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও লিওনেল মেসি আলেজান্দ্রো গার্নাচোকে ইনস্টাগ্রামে আনফলো করেছেন দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে তা মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, গোল করার পর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মত উদযাপন করায় নিজ দেশের ফুটবলার আলেজান্দ্রো গার্নাচোকে লিওনেল মেসি ইনস্টাগ্রামে থেকে আনফলো করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

দিনে দুই হাজার টাকা আয়ের সুযোগ দাবিতে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে টেলিগ্রামে প্রতারণার ফাঁদ 

0

সম্প্রতি, দেশের অসংখ্য মুঠোফোন ব্যবহারকারী একটি খুদে বার্তা পেয়েছেন। ফেসবুকে এ সংক্রান্ত খুদে বার্তাটির স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন বহু মানুষ। রিউমর স্ক্যানার টিম ফেসবুক মনিটরিং টুল এবং ম্যানুয়াল পর্যবেক্ষণে দেখেছে, খুদেবার্তাটির ভাষা প্রায় একই রকম যাতে লেখা রয়েছে, “Dear, you have successfully passed interview. Give me reply today to receive 2000TK,Click: https://wa.me/8801331630313

এই খুদেবার্তাটি একেকজন একেক ফোন নাম্বার থেকে পেয়েছেন। কিন্তু টাকার পরিমাণটি একই উল্লেখ রয়েছে৷

দিনে দুই হাজার টাকা
Screenshot collage: Rumor Scanner  

রিউমর স্ক্যানার টিমের কাছে এই বিষয়ে অসংখ্য জিজ্ঞাসা এবং এই অফারের সত্যতা জানতে চেয়ে মেসেজ আসার পর আমরা বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করি৷ 

আমরা এই খুদেবার্তা পাওয়া এবং পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট ধাপগুলো অনুসরণ করা এক ব্যক্তির সন্ধান পেয়েছি। গত ১৫ নভেম্বর তিরা মোস্তফা নামে ওই নারীর কাছে একই খুদেবার্তা আসে +8801758861759 নাম্বার থেকে।

Screenshot: Tira Mustafa

আমরা নাম্বারটি যাচাই করে দেখেছি, এটি কোনো একটি সি-ফুড রেস্টুরেন্টের Santos, Bruce and Shea নামে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার। 

Screenshot: WhatsApp

তিরা বলছিলেন, “সন্দেহ ছিল যে এটা স্ক্যাম, তাও নক দিলাম আমার দ্বিতীয় একটি হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার থেকে।” 

মেসেজ পাঠানোর পর প্রতিত্তোরে তিরাকে বলা হয়, প্রতিদিন অবসর সময়ে ফেসবুকের নির্দিষ্ট কিছু ভিডিওতে লাইক দেওয়ার বিনিময়ে প্রতি লাইকের বিনিময়ে ৫০ টাকা করে দেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়ায় দিনে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব বলেও জানানো হয়।  

রিউমর স্ক্যানার টিমকে তিরা বলছিলেন, তাকে শুরুতে তিনটি ফেসবুক ভিডিও লিংক পাঠানো হয়। এই ভিডিওগুলো গত জুনে জার্মানভিত্তিক স্বনামধন্য একটি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছিল। 

Screenshot: Tira Mustafa/Whatsapp

তিরা ভিন্ন একটি অ্যাকাউন্ট থেকে লাইক রিয়েক্ট দিলেন ৩টি পোস্টেই। উক্ত ব্যক্তির নির্দেশনা মেনে পাঠালেন এ সংক্রান্ত স্ক্রিনশটও। পরবর্তীতে তিরাকে একটি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট দেওয়া হয়, যার লিংক https://t.me/NuwairaAhamedHridhi। এই লিংকে গিয়ে নির্দিষ্ট জব কোড দেওয়ার পর তাকে ১৫০ টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানো হয়। 

Screenshot: Tira Mustafa/Whatsapp

আমরা অ্যাকাউন্টটি যাচাই করে দেখেছি, এটি এখন আর সচল নেই। তিরা আমাদের কাছে বিকাশ পেমেন্টের স্ক্রিনশটটিও পাঠিয়েছেন। তাকে 01932831884 এই নাম্বার থেকে বিকাশ করা হয়েছিল। 

আমরা নাম্বারটি ট্রু-কলারে যাচাই করে দেখেছি, এটি উজ্জ্বল (Ujjal) নামে কোনো এক ব্যক্তির নামে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফেসবুকে চলতি বছর এমন আরো কিছু অফার সংক্রান্ত একাধিক পোস্টে (, , ) একই নাম্বার ব্যবহার করে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করার প্রমাণ মিলেছে।  

Screenshot collage: Rumor Scanner  

তিরা রিউমর স্ক্যানার টিমকে বলছিলেন, এরপর তাকে বলা হলো ৩২ টি টাস্ক সম্পন্ন করতে পারলে ১৬০০ টাকা পাবেন তিনি। তবে আগে তাকে ইনভেস্ট বা বিনিয়োগ করতে হবে। তিরা তাদের সাথে আর কথোপকথন চালিয়ে যেতে চাননি। টেলিগ্রাম গ্রুপটি থেকে লিভ নিয়ে নেন তিনি। 

তিরা বলছেন, এরা শুরুতেই বিনিয়োগের কথা বলে না। টাস্ক দিতে থাকে। এরপর হঠাৎ করে বিনিয়োগ করতে বলে। বিনিয়োগ না করলে প্রতি টাস্কের বিপরীতে ৫০ টাকার পরিবর্তে ২৫ টাকা দেয়। এরপর আবার এভাবে চারটা টাস্ক সম্পন্ন করার পর বিনিয়োগের টাস্ক আসে। তখনও বিনিয়োগ না করলে ২৫ টাকা থেকে টাস্ক প্রতি উপার্জন ৫ টাকায় নেমে আসে। এরপর ওরা বলে, যদি বিনিয়োগ না করি তাহলে সারাদিনে যে টাকা উপার্জন হবে সেটা তারা দেবে না।  

তিরা হোয়াটসঅ্যাপের যে স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন তাতে আলোচিত নাম্বারটিতে এক নারীর ছবি দেখা যাচ্ছে। তিরা আমাদের জানিয়েছেন, টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টটিতেও একই ছবি ছিল। আমরা ছবি এবং টেলিগ্রামের অ্যাকাউন্টটির নামের সূত্র (NuwairaAhamedHridhi) ধরে ফেসবুকে এই নামে একই নারীর দুইটি অ্যাকাউন্টের (, ) খোঁজ পেয়েছি। এর মধ্যে একটি অ্যাকাউন্টে গত ২২ অক্টোবর আলোচিত ছবিটি প্রকাশ করা হয়। 

Screenshot collage: Rumor Scanner

হ্রদি নামের এই নারী চলতি বছর ঢাকার আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন বলে নিশ্চিত হয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। তার অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে জানা যাচ্ছে, তিনি প্রায়ই কনটেন্ট প্রমোশনের কাজ করে থাকেন। রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে তার সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া মেলেনি। 

এই কেস স্টাডিতে আমরা যে পন্থা অবলম্বন করতে দেখেছি তা যে সকলের ক্ষেত্রেই একইরকম এমন নয়। 

ইউটিউবে আমরা গত ০২ নভেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পেয়েছি যেখানে একইরকম আরেকজন ভুক্তভোগীর কেস স্টাডি শেয়ার করা হয়েছে। এই কেস স্টাডিতেও একই পন্থা এমনকি একই নারীর (NuwairaAhamedHridhi) নাম সম্বলিত টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট ব্যবহার হতে দেখা গেছে। 

Screenshot: YouTube

তবে এক্ষেত্রে ভিন্ন বিকাশ নাম্বার (01878435234) ব্যবহার করা হয়েছে। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করা দেখা যায়, ভুক্তভোগী দুই দফায় (প্রথমে তিন এবং পরে ১৬ হাজার) নির্দেশদাতাকে প্রায় ১৯ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। তৃতীয় টাস্কের অংশ হিসেবে তাকে আরো ৩৪ হাজার টাকা পাঠাতে বলা হয়। জানানো হয়, এই টাকা পাঠালে তাকে ৮০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু তার কাছে সমপরিমাণ অর্থ না থাকায় তিনি পাঠাতে পারেননি। 

রিউমর স্ক্যানার টিমের কাছে আরো একজন ভুক্তভোগী সমজাতীয় প্রতারণায় শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। মাহিন দেওয়ান নামে এই ব্যক্তির কাছে সম্প্রতি একটি ফোনকল আসে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি মাহিনকে বলেন, তাদের হাতে একটা কাজ আছে। টিকটক আইডি ফলো করলে ২০ টাকা করে দেওয়া হবে। এরপর হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে চক্রটির সাথে যোগাযোগ শুরু হয় মাহিনের। হোয়াটসঅ্যাপে মাহিনকে চক্রের অন্য এক সদস্য ল প্লে স্টোরে থাকা নির্দিষ্ট অ্যাপ্লিকেশনের প্রচারণার কাজের অফার দেন। তাদের নির্দেশনা মেনে নির্দিষ্ট অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করলে ৫০ টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। মাহিন অ্যাপ্লিকেশনগুলো ইনস্টল করার পর তাকে টাকা পাঠানো হয়। এরপর তাকে ১৭০০ টাকা পাঠাতে বলা হয়। জানানো হয়, এই টাকা পাঠালে তাকে প্রায় ২২০০ টাকা দেওয়া হবে। মাহিন তাদের কথামতো ১৭০০ টাকা পাঠালেও তিনি ২২০০ টাকা পাননি। 

সাম্প্রতিক সময়ের এই প্রতারণাগুলোর বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন  কাজ শুরু করেছে। সাইবার অপরাধ ইনভেস্টিগেশন বিভাগের এডিসি নাজমুল ইসলাম বলছেন, “ওই চাকরির মেসেজ নিয়ে আমাদের কাছে দু-একটা অভিযোগও এসেছে। আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। হয়তো অচিরেই এই অপরাধীদের শনাক্ত করা যাবে। তার আগে আমরা স্বউদ্যোগী হয়ে সচেতনতা তৈরিরও চেষ্টা চালাচ্ছি-যাতে কেউ এদের ফাঁদে পা না দেয়।” 

তাদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে একটি সচেতনতামূলক ফেসবুক পোস্টও দেওয়া হয়েছে। 

Screenshot: Facebook 

এতে লিংকে ক্লিক না করে এসএমএস মুছে ফেলার পরামর্শ যেমন দেওয়া হয়েছে, তেমনই এসএমএস পাঠানো নম্বরগুলোকে ব্লক করে দিতে বলেছে পুলিশ। 

অর্থাৎ, মুঠোফোনে খুদেবার্তা এবং সরাসরি ফোনকলের মাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে চাকরির অফার পেয়েছেন দেশের অসংখ্য মানুষ৷ রিউমর স্ক্যানার টিম এই ধরণের তিনটি প্রতারণার কেস স্টাডি এই লেখায় তুলে ধরেছে। এগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, দৈবচয়নভিত্তিতে কোনো ব্যক্তিকে মুঠোফোনে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আয়ের সুযোগের কথা জানিয়ে খুদেবার্তা বা ফোনকল দেওয়া হয়৷ কেউ যদি তাতে সাড়া দেয়, তাকে কিছু টাস্ক দেওয়া হয়। টাস্ক সম্পন্ন হওয়া সাপেক্ষে প্রথমদিকে কিছু অর্থ প্রদান করা হলেও পরবর্তীতে বিনিয়োগ করতে প্রলুব্ধ করা হয় ভুক্তভোগীকে। কেউ সে ফাঁদে পা দিয়ে অর্থ খুইয়ে প্রতারিত হওয়ার প্রমাণও মিলেছে। তবে পুলিশ এ বিষয়ে কাজ করছে এবং অচিরেই এই অপরাধীদের শনাক্ত করা যাবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।  

তথ্যসূত্র

বেগম খালেদা জিয়ার পুরনো বক্তব্যকে বিকৃত করে প্রচার 

0

সম্প্রতি, “২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে গোপন মিটিং- এ যা বলেছিলেন খালেদা জিয়া” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

বেগম খালেদা জিয়ার

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

টিকটিকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রচারিত বক্তব্যটি ২০০১ সালের নয় বরং ২০১৭ সালের বেগম খালেদা জিয়ার এই বক্তব্যের আলাদা সময়ের খণ্ড খণ্ড অংশের মন্তব্য সংযুক্ত করে বিকৃত আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে।

মূলত, ২০১৭ সালের পহেলা জানুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউট মিলনায়তনে ছাত্রদল আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া একটি দীর্ঘ বক্তব্য দেন। উক্ত বক্তব্যে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ সরকারকে ইঙ্গিত দিয়ে করা সমালোচনা সূচক মন্তব্যের দুটি আলাদা সময়ের খণ্ড খণ্ড অংশকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সংযুক্তের মাধ্যমে বিকৃত আকারে বিভ্রান্তিকর শিরোনামে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই ভিডিও ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

মাহিয়া মাহির সাথে ডা. মুরাদ হাসানের ভাইরাল এই ছবিটি সম্পাদিত

0

সম্প্রতি, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি’র সাথে সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

মাহিয়া মাহির

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সংসদ সদস্য (এমপি) ডা. মুরাদ হাসান এবং চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সাথে সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের এই ছবিটি বাস্তব নয় বরং স্বামী রাকিব সরকারের মাহির তোলা একটি ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে রাকিবের মুখমণ্ডলের স্থলে ডা. মুরাদ হাসানের মুখমণ্ডল জুড়ে দিয়ে উক্ত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চ করে সিনে বাংলা জগৎ নামক ফেসবুক গ্রুপে গত ৩১ অক্টোবরে প্রকাশিত একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত পোস্টের সংযুক্ত ছবির সাথে উক্ত আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে, অনুসন্ধানে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ৩০ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা যায়, সেদিন মাহিয়া মাহি এবং রাকিব সরকারের ছেলে ফারিশ’র মুখে ভাত অনুষ্ঠান উপলক্ষে তোলা কিছু ছবি প্রকাশ করেন। উক্ত ফেসবুক পোস্টের সাথে সংযুক্ত কিছু ছবিতে মাহিয়া মাহি এবং তার স্বামী রাকিব সরকারের পোশাকের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া মাহিয়া মাহির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ৩০ সেপ্টেম্বরে পোস্টকৃত ছবি গুলো ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে ছবি গুলোর নিচের দিকে কার্টেসী হিসেবে Shahriar Tamim শীর্ষক ওয়াটার মার্ক লক্ষ্য করা যায়।

Photo: Facebook

পরবর্তীতে এই ওয়াটার মার্কের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Photography by Shahriar TAmim নামের ফেসবুক পেজে গত ১২ নভেম্বর প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

উক্ত ফেসবুক পোস্টের সাথে সংযুক্ত মাহিয়া মাহি এবং রাকিব সরকারের ছেলে ফারিশ’র মুখে ভাত অনুষ্ঠানের বেশ কিছু ছবির পাশাপাশি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির আসল ছবিটিও খুঁজে পাওয়া যায়।

মূলত, গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি এবং রাকিব সরকারের ছেলে ফারিশ’র মুখে ভাত অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানের ফটোগ্রাফি করেন শাহরিয়ার তামিম নামের একজন ফটোগ্রাফার। পরবর্তীতে শাহরিয়ার তামিম তার ফেসবুক পেজ Photography by Shahriar TAmim এ মাহিয়া মাহি এবং রাকিব সরকারের ছেলে ফারিশ’র মুখে ভাত অনুষ্ঠানের কিছু ছবি প্রকাশ করেন। তবে সম্প্রতি, সেই অনুষ্ঠানে তোলা মাহিয়া মাহি এবং তার স্বামী রাকিব সরকারের একসাথে তোলা ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে রাকিব সরকারের মুখমণ্ডল বাদ দিয়ে তাতে সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের মুখমণ্ডল যুক্ত করে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সাথে সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের ছবি দাবিতে ইন্টারনেট প্রচারিত এই ছবিটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

৯ বছর নয়, মুমিনুল হক টেস্টে উইকেট পেয়েছেন প্রায় দুই বছর পর

সিলেটে গত ২৮ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্ট। টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম ইনিংসে গতকাল বোলিং করতে এসে উইকেট পেয়েছেন বাংলাদেশের মুমিনুল হক। ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, মুমিনুল ৯ বছর পর টেস্টে উইকেট পেয়েছেন। ফেসবুকের কিছু পোস্টে এমনও দাবি করা হয়েছে যে, তিনি ৯ বছর পর টেস্টে বোলিং করেছেন। 

মুমিনুল হক

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন আজকের পত্রিকা। 

একই দাবিতে ফেসবুক প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

তাছাড়া, গতকাল মুমিনুল উইকেট পাওয়ার পর টেলিভিশন কমেন্ট্রিতে ধারাভাষ্যকারও দাবি করেন, মুমিনুল ৯ বছর পর বোলিং করেছেন।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মুমিনুল ৯ বছর পর টেস্টে উইকেট পেয়েছেন শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং ২০২২ সালের জানুয়ারিতেও তিনি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই টেস্টে এক উইকেট পান। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট Howstat এ মুমিনুল হকের প্লেয়ার প্রোফাইল থেকে জানা যাচ্ছে, মুমিনুল সর্বশেষ গত এপ্রিলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে বোলিং করেছিলেন। সেই ম্যাচে এক ওভার বোলিং করে কোনো উইকেট পাননি তিনি।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, টেস্টে মুমিনুল সর্বশেষ উইকেট পেয়েছেন ২০২২ সালে জানুয়ারিতে। ক্রাইস্টচার্চে সেবার দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৩ ওভার বোলিং করে এক উইকেট পান তিনি।  

অর্থাৎ, ৯ বছর পূর্বে নয়, মুমিনুল টেস্টে উইকেট পেয়েছেন গত বছরই৷ 

মূলত, সিলেটে গত ২৮ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম ইনিংসে বোলিং করতে এসে উইকেট পান বাংলাদেশের মুমিনুল হক। এ বিষয়ে কতিপয় গণমাধ্যমে মুমিনুল ৯ বছর পর টেস্টে উইকেট পেয়েছেন এবং ফেসবুকের কিছু পোস্টে তিনি ৯ বছর পর টেস্টে বোলিং করেছেন শীর্ষক দাবি করা হয়৷ তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। মুমিনুল সর্বশেষ গত এপ্রিলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে বোলিং করলেও কোনো উইকেট পাননি তিনি। টেস্টে মুমিনুল সর্বশেষ উইকেট পেয়েছেন ২০২২ সালে জানুয়ারিতে। 

প্রসঙ্গত, মুমিনুল ওডিআই ক্রিকেটে সর্বশেষ উইকেট পেয়েছেন ২০১৪ সালে, পাকিস্তানের বিপক্ষে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মুমিনুলের কোনো উইকেট নেই। 

সুতরাং, গেল বছর টেস্টে উইকেট পেলেও মুমিনুল ৯ বছর পর টেস্টে উইকেট পেয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

‘খালি মাঠে বসে আর গোল দেওয়ার সুযোগ নেই’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি ড. ইউনূস

0

সম্প্রতি, “খালি মাঠে আর গোল দেওয়ার সুযোগ নেই। দেশের মানুষকে প্রস্তুত থাকতে হবে: ড. ইউনূস” শীর্ষক একটি তথ্য নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

খালি মাঠে বসে গোল

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ”খালি মাঠে আর গোল দেওয়ার সুযোগ নেই। দেশের মানুষকে প্রস্তুত থাকতে হবে।” শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

মূলত, বাংলাদেশি নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘খালি মাঠে বসে গোল আর দেওয়ার সুযোগ নেই’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি তথ্য সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কয়েক মাস ধরেই প্রচার হয়ে আসছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এমন মন্তব্য ড. ইউনূস করেননি। বরং গত ০৬ জুন ‘Md jashim uddin’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে সূত্রহীনভাবে ড. ইউনূসকে উদ্ধৃত করে আলোচিত মন্তব্যটি প্রথম প্রচার করা হয় এবং পরবর্তীতে তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যায়। এছাড়া ইউনূস সেন্টারের সাথে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠাটি জানায়, এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।  

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

শিশুশিল্পী সিমরিন লুবাবা এই ভিডিওতে ‘হেগে দিয়েছি’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি 

সম্প্রতি, শিশুশিল্পী সিমরিন লুবাবা একটি রেস্টুরেন্টের প্রচারণার কাজে গিয়ে ‘হেগে দিয়েছি‘ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

শিশুশিল্পী

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সিমরিন লুবাবা প্রচারিত ভিডিওতে ‘হেগে দিয়েছি’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং সেই ভিডিওতে লুবাবা ‘হেসে দিয়েছি’ শীর্ষক মন্তব্যের স্থলে ‘হেগে দিয়েছি’ শীর্ষক মন্তব্য ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে সিমরিন লুবাবা’র ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৪ নভেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে উক্ত আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, হাওয়া রুফটপ নামে ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে সিমরিন লুবাবা একটি প্রমোশনাল ভিডিও করেন। 

ভিডিওতে সিমরিন লুবাবা বলেন, “কেন্দে দিয়েছি, কেন্দে দিয়েছি, সব জায়গায় কেন্দে দিয়েছি। এখন আপনারা কি মনে করেন আমি কেন্দে দিয়েছি? না আমি হাওয়াতে এসে হেসে দিয়েছি। আরে ভাই সবাই হাসেন, সবাই হাসেন।”

অর্থাৎ, ‘হেগে দিয়েছি’ নয়, লুবাবা হেসে দিয়েছি শীর্ষক মন্তব্য করেছেন ভিডিওতে।

Hawa Rooftop নামের রেস্টুরেন্টের ফেসবুক পেজেও সিমরিন লুবাবার একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

মূলত, সম্প্রতি হাওয়া রুফটপ নামে ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে প্রচারণার কাজে যান শিশুশিল্পী সিমরিন লুবাবা। রেস্টুরেন্টের একটি প্রমোশনাল ভিডিওতেও তাকে অভিনয় করতে দেখা যায়, যেখানে লুবাবা বলেন, “কেন্দে দিয়েছি, কেন্দে দিয়েছি, সব জায়গায় কেন্দে দিয়েছি। এখন আপনারা কি মনে করেন আমি কেন্দে দিয়েছি? না আমি হাওয়াতে এসে হেসে দিয়েছি।” তবে সম্প্রতি উক্ত ভিডিও ডাউনলোড করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় হেসে দিয়েছি শীর্ষক মন্তব্যের স্থলে ‘হেগে দিয়েছি’ আওয়াজ যুক্ত করে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, শিশুশিল্পী সিমরিন লুবাবা হেগে দিয়েছি শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে, যা এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

সিইসি কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পদত্যাগ চাওয়ার ভুয়া তথ্য

গত ২৮ নভেম্বর শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে ‘এবার নিষেধাজ্ঞার চিঠি নিয়ে আসলো পিটার হাঁস, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলো সিইসি’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

 শেখ হাসিনা

টিকটকে প্রচারিত উক্ত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবদি ভিডিওটিতে প্রায় ১২ হাজার ৪ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ২ শত বার শেয়ার করা হয়েছে। ভিডিওটি’র মন্তব্যঘর ঘুরে অধিকাংশ নেটিজেনকে উক্ত দাবির প্রেক্ষিতে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞার চিঠি নিয়ে আসেননি এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ও ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার বাক্য বসিয়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ ও পুরোনো কিছু ছবি যুক্ত করা হয়েছে।

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে সেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং সরকরের বিপক্ষে নিয়মিত বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করা অনলাইন এক্টিভিস্ট ফয়জুল হকের পৃথক দুটি ভিডিও দেখা যায়।

এবিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোর এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৮ নভেম্বর ‘নির্বাচন ঘিরে দেশ সংকটে আছে: প্রধান নির্বাচন কমিশনার’ শীর্ষক শিরোনামে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের বক্তব্য নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: YouTube 

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের বক্তব্য অংশের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

তবে উক্ত বক্তব্যে কোথায় তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাইতে দেখা যায়নি। বরং সেখানে তিনি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।

পরবর্তীতে, ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানের মাধ্যমে Dr. Fayzul Huq-ডঃ ফয়জুল হক নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ২৮ নভেম্বর ‘অ*বৈধ পথে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে না!অর্থনীতি ও গার্মেন্টস শিল্পে ধ*স আসতে পারে এমন ইঙ্গিত করলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার!ডঃ ফয়জুল হক’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র অনলাইন এক্টিভিস্ট ফায়েজুল হকের বক্তব্য অংশের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও, মুলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞার চিঠি নিয়ে আসার বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে গণমাধ্যম সূত্রে গত ২৭ নভেম্বর কলোম্বো সফর শেষে তার ঢাকায় ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর আগে তিনি গত ১৬ নভেম্বর ছুটি কাটাতে শ্রীলঙ্কায় গিয়েছিলেন। তাছাড়া, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাওয়ার বিষয়টিরও সত্যতা পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত দাবিগুলো সঠিক নয়।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি এবং সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছে। এসব ঘটনায় প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের তথ্য ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ নভেম্বর শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে একটি বেনামি অ্যাকাউন্ট থেকে ‘এবার নিষেধাজ্ঞার চিঠি নিয়ে আসলো পিটার হাঁস, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলো সিইসি’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ও ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার বাক্য বসিয়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিগুলো প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে ‘এবার নিষেধাজ্ঞার চিঠি নিয়ে আসলো পিটার হাঁস, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলো সিইসি’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

দৈত্যাকৃতির সিল মাছের ‘আল্লাহু আল্লাহু’ বলে ডাকার ভিডিওটি এডিটেড

সম্প্রতি, ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহর কুদরত দেখুন’ শীর্ষক শিরোনামে দৈত্যাকৃতির একটি সিল মাছ আল্লাহু আল্লাহু বলে ডাকছে দাবিতে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

দৈত্যাকৃতির

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট  দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দৈত্যাকৃতির সিল মাছটির আল্লাহু আল্লাহু বলে ডাকার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ইংল্যান্ডের সাউথ জর্জিয়া দ্বীপের তীরে উক্ত দৈত্যাকৃতির সিল মাছটি দেখা যায়। যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরবর্তীতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। উক্ত ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় মিরর করে তার সাথে আল্লাহু আল্লাহু ডাকার অডিওটি যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ডিজিটাল আধেয় বা কন্টেন্ট প্রকাশক LAD Bible এর ফেসবুক পেজে গত ১০ এপ্রিল That is one huge seal 😳 শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। তবে এটিও দেখা যায় যে, আলোচিত ভিডিওটি উক্ত ভিডিওর মিরর ভার্সন   এবং উক্ত ভিডিওতে তা ধারণ করার সময়কার পারিপার্শ্বিক শব্দ ব্যতীত আর কোনো শব্দ শুনতে পাওয়া যায় না। 

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও ভিডিওটি থেকে জানা যায়, উক্ত দৈত্যাকৃতির সিল মাছটিকে সাউথ জর্জিয়া দ্বীপের তীরে দ্বীপটির পেঙ্গুইনদের সাথে দেখা যায়। 

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে উক্ত তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যভিত্তিক দৈনিক ট্যাবলয়েড পত্রিকা Daily Mail এর ফেসবুক পেজে গত ৯ মার্চ The Godzilla of seals 😱 শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত উক্ত সিল মাছের আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করেও আলোচিত ভিডিওটি সম্পর্কে একই তথ্য পাওয়া যায়।

এছাড়াও রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম NDTV এর ওয়েবসাইটে গত ২ আগস্ট  This huge creature was seen on the seashore, some said sea elephant, some called lion শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: NDTV

উক্ত প্রতিবেদনের সাথে যুক্ত দৈত্যাকৃতির সিল মাছেরএকই ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটি পর্যালোচনা করেও সিলটির আল্লাহু আল্লাহু বলার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভিন্ন একটি অডিও যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে।

মূলত, চলতি বছরের শুরুর দিকে ইংল্যান্ডের সাউথ জর্জিয়া দ্বীপের তীরে একটি দৈত্যাকৃতির সিল মাছ দেখা যায়। সিল মাছটির অস্বাভাবিক আকৃতির কারণে সেটির ভিডিও সেসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। উক্ত সিল মাছের সেই ভিডিওটিতে সম্প্রতি আল্লাহু আল্লাহু শীর্ষক অডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে সিল মাছটি আল্লাহু বলে ডাকছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, দৈত্যাকৃতির সিল মাছের ‘আল্লাহু আল্লাহু’ বলে ডাকার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

শিশুটি ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ছিল না

0

সম্প্রতি, ইসরাইলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি পরী- শীর্ষক ক্যাপশনে একটি শিশুর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

শিশুটি

উক্ত ছবি সহকারে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শিশুটিকে ইসরায়েলি বাহিনী গ্রেফতারই করেনি। তাই তার ইসরায়েলি বাহিনীর কাছে থেকে মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে শিশুটির মা ফাতিমা শাহিনকে ইসরায়েলি বাহিনী গ্রেফতার করেছিল। ছবিটি সম্প্রতি ফাতিমার মুক্তি উপলক্ষে কারাগারের বাহিরে অপেক্ষায় থাকা তার শিশুকন্যা আইলুলের।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে “Reem Al-Harmi ريم الحرمي” নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টে (সাবেক টুইটার) আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: X

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, শিশুটি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর কাছে বন্দি ফাতিমা শাহিনের (৩৩) একমাত্র মেয়ে। শিশুটি তার মায়ের মুক্তি উপলক্ষে কারাগারের বাহিরে অপেক্ষায় ছিল। 

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতীয় গণমাধ্যম Radiance News এর ওয়েবসাইটে গত ২৫ নভেম্বর “First round of Palestinian prisoners liberated in swap – many see the open sky after years” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

Screenshot: Radiance News

উক্ত প্রতিবেদন থেকেও শিশুটির বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়। পাশাপাশি শিশুটির এক পোশাক পরিহিত আরেকটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

এছাড়া, একই তারিখে মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যম Khaleej Times এ “Watch: Palestinian mother’s emotional reunion with daughter released after 8 years” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে আলোচিত শিশুর আরও একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Khaleej Times

উক্ত ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ফাতিমা শাহিন কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তার মেয়ে আইলুল তাকে আদর করছে। 

উল্লেখ্য, ফাতিমা শাহীন চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল তারিখে ওয়েস্ট বেথলেহেম শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

মূলত, গত ২৫ নভেম্বর ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে বন্দি ফিলিস্তিনি নাগরিক ফাতিমা শাহীন মুক্তি পান। তার মুক্তি উপলক্ষে কারাগারের বাহিরে অবস্থান করছিলেন তার শিশুকন্যা আইলুল। পরবর্তীতে ঐ শিশুর মায়ের মুক্তির জন্য অপেক্ষারত একটি ছবিকেই ইসরায়েলি বাহিনীর কাছ থেকে কাছ থেকে মুক্তি পাওয়া শিশুর ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলও হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা চালায়। এতে দেশ দুইটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত নতুন মাত্রা পায়৷ পরবর্তীতে যুদ্ধ বিরতির প্রথম পর্যায়ের বন্দি আদান প্রদানের চুক্তি করে। এই চুক্তিতে ইজরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি দেওয়া ৩৯ জনকে মুক্তি দেয়। এই ৩৯ জনের মধ্যে ফাতিমা শাহীনও একজন। 

সুতরাং, ইসরায়েলি বাহিনীর কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া শিশুর ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র