Home Blog

বাংলাদেশে চাঁদাবাজকে ট্রাক চাপা দেওয়ার ভিডিও দাবিতে ইন্দোনেশিয়ার ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি, সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, একটি চলন্ত ট্রাকের সামনে কয়েকজন কিশোর এসে পড়ে, কিন্তু ট্রাকটি না থেমে তাদের ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। এতে স্পষ্টভাবে দেখা যায় একজন (কিশোর) চাকার নিচে পড়ে পিষ্ট হয়।

পোস্টগুলোর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ‘আমি এই দেশ প্রেমিক সাহসী ড্রাইভারকে সেলুট জানাই একটা হলেও চান্দাবাজ মারার জন্য। দেশের সকল ড্রাইভার ভাইদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি এই ভাবে চান্দাবাজদের যেন মাটির সাথে মিলিয়ে দেওয়া হয়।।’ (বানান অপরিবর্তিত)

অর্থাৎ দাবি করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশের কোনো এক এলাকায় চাঁদাবাজির প্রতিবাদে এক ড্রাইভার চাঁদাবাজদের ওপর ট্রাক চালিয়ে দিয়েছেন।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সড়কে ট্রাক থামানোর ঘটনায় একাধিক যুবকের ওপর দিয়ে ট্রাক চালিয়ে দেওয়ার ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় এবং উক্ত ঘটনার সাথে চাঁদাবাজিরও কোনো সম্পর্ক নেই। বরং, এটি ২০২১ সালে ইন্দোনেশিয়ায় ‘মালাকাইত মাউত’ চ্যালেঞ্জ ভিডিও তৈরি করতে গিয়ে একটি ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে এক যুবকের মারা যাওয়ার ঘটনার ভিডিও। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ইন্দোনেশিয়ান সংবাদ পোর্টাল ‘Kompas.com’-এ ২০২১ সালের ১৭ ‍জুলাই ‘Sopir Truk Harus Waspada Saat Bertemu Remaja di Jalanan’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ফিচার ইমেজের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর নির্দিষ্ট ফ্রেমের মিল রয়েছে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ইন্দোনেশিয়ায় ২০২১ সালের একটি দুর্ঘটনা। 

Comparison: Rumor Scanner

একই সংবাদ পোর্টালে একই বছরের ১৮ জুলাই উক্ত বিষয়টি নিয়ে আরও একটি প্রতিবেদন প্রচার করে। এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কিশোরদের মধ্যে জনপ্রিয় একটি চ্যালেঞ্জ চলন্ত ট্রাকের সামনে দাঁড়িয়ে ভিডিও তৈরি করতে গিয়ে এক যুবক ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে মারা যায়।

এছাড়া, মালয়েশিয়ার সংবাদ ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ‘WapCar.my’-এ ২০২১ সালের ২৬ জুলাই ‘Indonesian teen tries to start the next Keke (Kiki) Challenge, dies instead’ শিরোনামে এই বিষয়ে আরও একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৩ বছর বয়সী এক ইন্দোনেশিয়ান কিশোর টিকটক ভিউ বাড়ানোর জন্য ‘কেকে (কিকি) চ্যালেঞ্জ’-এর মতো ‘মালাকাইত মাউত’ বা ‘অ্যাঞ্জেল অফ ডেথ’ চেষ্টা করতে গিয়ে লরির সামনে লাফিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যায়। একই ঘটনায় অন্য একজন অংশগ্রহণকারী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। ঘটনাটি পশ্চিম জাভার বেকাসি জেলার উত্তর সিকারং-এ ঘটেছে। বেকাসি ট্রাফিক পুলিশের বরাতে বলা হয়, মৃত কিশোর আগেও এমন বিপজ্জনক টিকটক কন্টেন্ট তৈরির চেষ্টা করেছিল। 

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, এই চ্যালেঞ্জের অংশ হিসেবে, কিশোররা চলন্ত লরির সামনে লাফিয়ে পড়ে এবং শেষ মুহূর্তে সরে এসে গাড়িকে সম্পূর্ণ থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এটি তখনই সফল বলে ধরা হয় যখন লরি চালক দুর্ঘটনা এড়াতে গাড়িটি থামিয়ে দেয়।

ইন্দোনেশিয়ার সুয়ারা ডট কমনিউজ ডট ইনডোজোন ডট আইডি নামক সংবাদ ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও প্রায় একই তথ্য জানা যায়।

সুতরাং, ২০২১ সালে ইন্দোনেশিয়ার কিশোর ‘মালাকাইত মাউত’ চ্যালেঞ্জ ভিডিও তৈরি করতে গিয়ে এক যুবকের  ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে মারা যাওয়ার ঘটনার ভিডিও বাংলাদেশে এক ড্রাইভার চাঁদাবাজের ওপর ট্রাক চালিয়ে দিয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জুলাই অভ্যুত্থানকে হেয় করে শিক্ষার্থীদের গ্রাফিতি অঙ্কনের ভিডিও দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার

২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের একবছর পূর্তি উপলক্ষে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজসহ আওয়ামী লীগ সমর্থিত বিভিন্ন পেজ এবং আইডি থেকে জুলাই অভ্যুত্থানকে হেয় করে ভিন্ন পোস্ট করতে দেখা যায়। যার মধ্যে julycdi শীর্ষক একটি ক্যাম্পেইন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি শিক্ষার্থীরা দেয়ালে JULY CDi শীর্ষক একটি গ্রাফিতি অঙ্কন করেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত একই ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা ‘JULY CDi’ শীর্ষক গ্রাফিতি অঙ্কন করেছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

এবিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনার মাধ্যমে ভিডিওটিতে বেশ কিছু এআই-জনিত অসঙ্গতি লক্ষ্য করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওতে দেখতে পাওয়া শিক্ষার্থীদের কয়েকজনের হাতে ৬ টি আঙুল পরিলক্ষিত হয়  দেখতে পাওয়া যায়।

পাশাপশি ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ গুগলের একটি উন্নত এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। এই ভিডিওটির দৈর্ঘ্যও ৮ সেকেন্ড।

বিষয়টি আরও নিশ্চিতের জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম Hive Moderation এ ভিডিওটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৮০.৯ শতাংশ।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে শিক্ষার্থীদের জুলাই আন্দোলনকে হেয় করে দেয়ালে গ্রাফিতি অঙ্কনের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Hive Moderation
  • Rumor Scanner’s Analysis

শেখ হাসিনা দিল্লি থেকে লন্ডন যাচ্ছেন দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রতিবেদন সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম রিপাবলিক বাংলার লোগো সম্বলিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, শেখ হাসিনা দিল্লি থেকে লন্ডন যাচ্ছেন এবং প্রচারিত ভিডিওটিতে হাসিনাকে বহনকারী সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারটির সরাসরি অবস্থান প্রদর্শিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য যে, উক্ত ভিডিওটিতে বলতে শোনা যায় যে শেখ হাসিনাকে বহনকারী সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারটি বাংলাদেশের এবং বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে এটি দিল্লি অভিমুখী। এবং ধারণা করা যাচ্ছে যে এটি পরবর্তীতে লন্ডন অভিমুখে যাত্রা করবে। এছাড়াও, উক্ত প্রতিবেদনে ৫ আগস্টে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা হারানোর পর ঢাকার উত্তাল রাস্তার দৃশ্যও “এই মূহুর্তের দৃশ্য” দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি প্রতিবেদনটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, এটি গত ৫ আগস্টে শেখ হাসিনাকে বহনকারী দাবিকৃত হেলিকপ্টার ভারতের আকাশে উড্ডয়নরত অবস্থার ভিডিও। তাছাড়া, সেসময় বা সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনা লন্ডন গিয়েছেন দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ নেই।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম রিপাবলিক বাংলার লোগোর সংযুক্তি পাওয়া যায়। পরবর্তীতে উক্ত তথ্য ও প্রতিবেদনে বলা তথ্য সূত্র ধরে অনুসন্ধান করলে রিপাবলিক বাংলার ইউটিউব চ্যানেলে “দিল্লি হয়ে লন্ডনের পথে শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার বিমান কোন পথে। এক্সক্লুসিভ তথ্য একমাত্র রিপাবলিকে” শীর্ষক শিরোনামে গত ০৫ আগস্টে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা হারানোর পর বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেন শেখ হাসিনা এবং সেখান থেকে প্রতিবেদনটি রেকর্ডকালীন সময়ে শেখ হাসিনাকে বহনকারী উড়োজাহাজটি দিল্লি অভিমুখে যাত্রা করছে। প্রতিবেদনটিতে আরো দাবি করা হয়, ধারণা করা হচ্ছে শেখ হাসিনা পরবর্তীতে লন্ডনে যাবেন।

তবে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে সেসময় (০৫ আগস্ট) বা সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনার লন্ডন যাওয়ার সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।

সুতরাং, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে শেখ হাসিনাকে বহনকারী দাবিকৃত হেলিকপ্টার ভারতের আকাশে উড্ডয়নরত অবস্থার ভিডিও সম্প্রতি দিল্লি থেকে শেখ হাসিনা লন্ডনে যাচ্ছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জুলাই আন্দোলনে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের দৃশ্য দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

২০২৪ সালে জুন মাসে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন জুলাই মাসে সারাদেশে ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করে।  পরবর্তীতে তা গণ–অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। অবসান ঘটে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলের। উক্ত আন্দোলনে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরাও ব্যাপকভাবে অংশ গ্রহণ করে। সম্প্রতি জুলাই  অভ্যুত্থামনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে  জুলাই আন্দোলনে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে দৃশ্য শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে ৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি উক্ত দাবিতে ফেসবুক সবচেয়ে ভাইরাল ভিডিওটি ২০ লক্ষবার দেখা হয়েছে। প্রায় ৭ হাজারের ও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট বা পেজ থেকে ভিডিওতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে প্রায় ৩ হাজারবার।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত  ভিডিওটি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের দৃশ্যের নয় বরং, এটি ২০১১ সালে নারী উন্নয়ন নীতিমালার কয়েকটি ধারার বিরুদ্ধে ইসলামি আইন বাস্তবায়ন পরিষদের ডাকা হরতালের ঘটনার ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওর কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে “Javed Alam” নামক চ্যানেলে ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল “Hartal 04th April 2011” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত চ্যানেল আইয়ের লোগো সম্বলিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির ২৬ সেকেন্ড অংশ থেকে ৪২ সেকেন্ড অংশের সাথে হুবহু মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০১১ সাথে নারী উন্নয়ন নীতিমালার বিপক্ষে ইসলামি আইন বাস্তবায়ন পরিষদ সারাদেশে হরতাল ডাকে। এসময় কাফনের কাপড় পরে থাকা পিকেটারদের সাথে পুলিশের ব্যপক সংঘর্ষ হয়। 

সেসময় একই তথ্যসংবলিত ভিডিওটি (,) একাধিক ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করা হয়। 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বিবিসি নিউজের ওয়েবসাইটে ২০১১ সালের ৪ এপ্রিল “হরতালে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ও ভাংচুর” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১১ সালে তৎকালীন সরকারের ঘোষিত নারী উন্নয়ন নীতিমালায় ইসলামবিরোধী কয়েকটি ধারা রয়েছে এই অভিযোগ এনে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটি নামে একটি সংগঠন ৪ এপ্রিল সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল করে।

এছাড়া একই বিষয়ে জার্মান ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে এর ওয়েবসাইটে ২০১১ সালের ৪ এপ্রিল “শেষ হলো ইসলামি আইন বাস্তবায়ন পরিষদের হরতাল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪ এপ্রিল (২০১১) হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে চার ঘন্টা ধরে পুলিশের সংঘর্ষ হয় ঢাকার অদূরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এবং পুলিশ রাজধানী থেকে শতাধিক হরতাল সমর্থককে আটক করে৷ এদিন হরতাল সমর্থকরা লাঠি সোটায় সজ্জিত ছিল, কেউ কেউ কাফনের কাপড় পরে মাঠে নামে৷

সুতরাং, ২০১১ সালে ইসলামি আইন বাস্তবায়ন পরিষদের ডাকা হরতালের ঘটনাকে ২০২৪ সালের  জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

এনসিপির পদযাত্রার ছবি সম্পাদনা করে কর্মসূচির টি-শার্টের লেখা বিকৃত

0

২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া জনসাধারণের কথা শুনতে এবছরের পুরো জুলাই মাস জুড়ে দেশের সব জেলায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। উক্ত কর্মসূচির নাম দেওয়া হয় ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’। গত ১ জুলাই রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এর প্রেক্ষিতে উক্ত কর্মসূচির একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। যেখানে এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশিরের গায়ে পরিহিত কর্মসূচির টি-শার্টে ‘দেশ চুদতে জুলাই পদযাত্রা’ শীর্ষক লেখা দেখতে পাওয়া যায়।  

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ছবি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এনসিপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে সংগঠনটির নেতা জয়নাল আবেদীন শিশিরের ‘দেশ চুদতে জুলাই পদযাত্রা’ শীর্ষক লেখা সম্বলিত টি-শার্ট পড়ার দাবিতে প্রচারিত ছবিটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় টি-শার্টে লেখা কর্মসূচির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শীর্ষক নাম পরিবর্তন করে ‘দেশ চুদতে জুলাই পদযাত্রা’ লেখা যুক্ত করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

আলোচিত ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক দৈনিক ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজে গত ১ জুলাই প্রচারিত এনসিপির জুলাই পদযাত্রার প্রথমদিনের রংপুরের কয়েকটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook 

উক্ত ছবির অ্যালবামে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটিও খুঁজে পাওয়া যায়। তবে ছবিটিতে এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশিরের গায়ে পরিহিত কর্মসূচির টি-শার্টে ‘দেশ চুদতে জুলাই পদযাত্রা’ শীর্ষক লেখার পরিবর্তে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শীর্ষক লেখা দেখতে পাওয়া যায়। 

Image Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে জয়নাল আবেদীন শিশিরের ফেসবুক আইডিতে এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর ফেসবুক পেজে একই কর্মসূচির রংপুরের বেশ কয়েকটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে জয়নাল আবেদীন শিশিরের গায়ে পরিহিত কর্মসূচির টি-শার্টে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শীর্ষক লেখা দেখতে পাওয়া যায়।

Screenshot Collage by Rumor Scanner 

অর্থাৎ, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির ছবিতে জয়নাল আবেদীন শিশিরের পরিহিত টি-শার্টের লেখা পরিবর্তন করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, এনসিপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশিরের পরিহিত টি-শার্টে ‘দেশ চুদতে জুলাই পদযাত্রা’ শীর্ষক লেখা ছিল দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

  • Daily Ittefaq Facebook Page Post
  • Joynal Abedin Shishir Facebook Account Post
  • National Citizen Party – NCP Facebook Page Post
  • Rumor Scanner’s Analysis

তাসনিম জারার হাফ প্যান্ট পরিহিত অবস্থায় ভাইরাল ছবিটি সম্পাদিত 

0

সম্প্রতি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারার হাফ প্যান্ট পরিহিত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু ছবি দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

এক্সে প্রচারিত একই দাবি দেখুন: এখানে

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে

টিকটকে প্রচারিত একই দাবি দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডা. তাসনিম জারার হাফ প্যান্ট পরিহিত ভাইরাল ছবিটি আসল নয়। বরং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার ফুল প্যান্ট পরা একটি ছবি সম্পাদনা করে এই ছবি তৈরি করা হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে অনুসন্ধানে ‘Fariha Nishat’ নামের একটি ফেসবুক প্রোফাইলে ৩ জুলাই প্রকাশিত একটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়। তিনি জানান, তাসনিম জারার সঙ্গে তার তোলা একটি ছবি বিকৃত করে সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া প্রচারণা চালানো হচ্ছে। পোস্টটিতে ভাইরাল ছবির পাশাপাশি মূল ছবিটিও যুক্ত করা হয়, যেখানে দুজনকে ফুল প্যান্ট পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়।

Screenshot: Facebook. 

পরবর্তীতে ফারিহা নিশাতের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে, গত ৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবি দুইটির তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভাইরাল ছবির সঙ্গে মূল ছবির পটভূমি ও অন্যান্য উপাদানে উল্লেখযোগ্য মিল থাকলেও তাসনিম জারা এবং ফারিহা নিশাতের পোশাকে পার্থক্য রয়েছে।

এছাড়া ভাইরাল ছবিতে তাসনিম জারার হাতের আঙুলগুলো অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও বিকৃতভাবে দেখা যায়, যা সাধারণত এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্টে দেখা যায়।

Claim Image analysis: Rumor Scanner. 

বর্তমানে বিভিন্ন এআই টুলের মাধ্যমে ছবির প্রেক্ষাপট অপরিবর্তিত রেখে পোশাক বা নির্দিষ্ট উপাদান সহজেই পরিবর্তন করা সম্ভব। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে ভাইরাল ছবিটিও এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সম্পাদিত হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।

সুতরাং, তাসনিম জারার হাফ প্যান্ট পরিহিত আলোচিত ছবিটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

ভিডিওটি ভোলার তজুমদ্দিনে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনার নয়, কুমিল্লার মুরাদগরের 

কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বসতঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর ভুক্তভোগী নারীকে যৌন নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। উক্ত ঘটনা নিয়ে তোলপাড়ের মধেই ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিবিসি বংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ঘটনায় বিএনপির অঙ্গসংগঠন শ্রমিক দল, যুবদল ও ছাত্রদলের কর্মীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন ওই নারীর স্বামী। ভোলার এই ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটিতে এক ব্যক্তিকে মারধর এবং হলুদ জার্সি পড়া এক ব্যক্তি কর্তৃক এক নারীকে যৌন নির্যাতন করতে দেখা যায়।

ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ‘ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার কামারপট্টি এলাকায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে বেঁধে মারধর ও স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে শ্রমিক দল ও ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। রোববার (২৯ জুন) সকালে এ ঘটনা ঘটে। তজুমদ্দিন থানার ওসি মো. মহব্বত খান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।’ (বানান অপরিবর্তিত)।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত এই ভিডিওটি ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনার নয় বরং, কুমিল্লার মুরাদনগরের ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় ধারণকৃত একটি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে আরটিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩০ জুন ‘নারী নির্যাতনের ঘটনায় নতুন আরেকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে | Rtv News ’ শীর্ষক ক্যাপশনের একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি কুমিল্লার মুরাদনগরের আলোচিত ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আরেকটি ভিডিও। ভিডিও প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “ভিডিওতে দেখা যায় ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ আলী সুমনের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল অভিযুক্ত ফজর আলীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করছে। নির্যাতনের পর তার শরীর, হাত এবং মাথা থেকে জরছে রক্ত। সুমনের সহযোগী অনিক ঐ নারীকে নিজ হাতে বিবস্ত্র করছে, পাশ থেকে রমযান সহ অন্যরা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করছে।”

এছাড়া, একাত্তর টিভির ওয়েবসাইটে ‘মুরাদনগরকাণ্ডে আরেকটি ভিডিও ভাইরাল’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিদেনটিতে বলা হয়, ‘কুমিল্লার মুরাদনগরের পাচকিত্তা গ্রামে ঘরের দরজা ভেঙে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আরও একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে মারধরের সময় ওই নারীকে এক ব্যক্তি বি…ব…স্ত্র করছেন, এমন চিত্র দেখা গেছে। সোমবার (৩০ জুন) সকালে ‘তোর বাপেরা আইছে’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে তিন মিনিট ৪২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে ফজর আলীকে নির্যাতন করতে দেখা গেছে। সেই সঙ্গে ওই সময় ভিকটিমকে আরেক ব্যক্তি বি….ব…স্ত্র ও মারধর করতে দেখা গেছে’। 

অর্থাৎ, এটি নিশ্চিত যে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ভোলার নয়। 

তাছাড়া, ভোলা জেলা পুলিশ পরিচালিত ফেসবুক পেজ থেকেও এই বিষয়ে একটি পোস্ট করতে দেখা যায়।

পোস্টটিতে বলা হয়, ‘আজকের কণ্ঠসহ কয়েকটি অনলাইন মাধ্যমে  একটি এডিটেড ভিডিওকে ভোলা জেলার তজুমদ্দিন থানার ঘটনা বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে ভোলা জেলার তজমুদ্দিন থানায় এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। যাচাই-বাছাই ছাড়া এ ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচারণা হতে  সচেতন থাকার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সম্মানিত নাগরিকবৃন্দকে অনুরোধ করা যাচ্ছে।’ 

সুতরাং, ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় কুমিল্লার মুরাদনগরের ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনার ভিন্ন ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

জুলাই আন্দোলন এবং পাঁচ আগস্ট বিষয়ে আইসিসি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ দাবিতে বানোয়াট তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি ‘নেদারল্যান্ডস ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট থেকে বাংলাদেশ জুলাই আন্দোলন এবং পাঁচ আগস্টের তদন্তের প্রকাশ রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। রিপোর্টের কপি আমার হাতে সহ সৌদি রাষ্ট্রদূত, ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত,এবং সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের হাতে প্রেরন করা হয়েছে।…..’ দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের জুলাই আন্দোলন এবং পাঁচ আগস্ট বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত থেকে কোনো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি বরং, ASDA’A Burson-Marsteller দ্বারা পরিচালিত ‘Arab Youth Survey 2018’ উন্মোচনের পুরোনো ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Entrepreneur Media এর মধ্যপ্রাচ্যের সংস্করণে ২০১৮ সালের ১৩ মে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ছবিটি বিশ্বব্যাপী জনসংযোগ পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান  ASDA’A Burson-Marsteller দ্বারা পরিচালিত মধ্যপ্রাচ্যের যুবদের বার্ষিক জরিপ, ‘Arab Youth Survey 2018’ উন্মোচনের দৃশ্যের।

একই বিষয়ে সৌদি আরবের গণমাধ্যম Al Arabiya এর ইংরেজি সংস্করণে ২০১৮ সালের ০৮ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একই চিত্র ও তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। 

এছাড়া, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে বাংলাদেশের ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলন এবং পাঁচ আগস্ট বিষয়ে প্রকাশিত কোনো তদন্ত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, Tamanna Akhter Yesman নামে পরিচালিত এই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ভুয়া। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমিরর ছবি ব্যবহার করে এই ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে রাজনৈতিক প্রভাব তৈরির চেষ্টা নিয়ে গত ১৯ জুন বিস্তারিত ফ্যাক্টস্টোরি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, জুলাই আন্দোলন এবং পাঁচ আগস্ট বিষয়ে আইসিসির তদন্ত প্রতিবেদন হাতে সৌদি আরব-ব্রিটেন-যুক্তরাষ্ট্র-সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতদের সাথে এক নারীর ছবি দাবিতে ‘Arab Youth Survey 2018’ উন্মোচনের ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনার নিয়োগপ্রাপ্ত কথিত লবিস্টের সাথে আইসিসিতে যাওয়ার বানোয়াট তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি ‘নেদারল্যান্ডস ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট পরিদর্শন সহ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিয়োগপ্রাপ্ত লবিস্ট ড্রোসোফিলা হর্তিকের সাথে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় নেদারল্যান্ডস হেগ শহরে অবস্থিত নেদারল্যান্ডস ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে  বিশেষ নিরাপত্তায় পৌঁছেছি’ দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি শেখ হাসিনার নিয়োগপ্রাপ্ত কথিত লবিস্ট ড্রোসোফিলা হর্তিকের সাথে আলোচনার জন্য কথিত তামান্না আক্তার ইয়াসমানের নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যাওয়ার নয় বরং, আমস্টারডামে ন্যাশনাল হলোকাস্ট মিউজিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের রাষ্ট্রপতি আইজ্যাক হারজোগের উপস্থিতির প্রতিবাদের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইরানি বংশোদ্ভূত সুইডিশ লেখক Trita Parsi এর এক্স হ্যান্ডেলে ২০২৪ সালের ১০ মার্চ প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে যুক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

পোস্টটির বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে ইসরায়েলের রাষ্ট্রপতি আইজ্যাক হারজোগের আগমনে প্রতিবাদের চিত্র। 

উক্ত সূত্র ধরে নেদারল্যান্ডসের গণমাধ্যম Dutch News এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ১০ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে একই ধরনের চিত্র ও তথ্য পাওয়া যায়। 

এছাড়া, প্রচারিত পোস্টে উল্লিখিত ‘ড্রোসোফিলা হর্তিক’ নামক ব্যক্তি বা কোনো লবিস্টের তথ্য ওপেন সোর্সে খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, Tamanna Akhter Yesman নামে পরিচালিত এই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ভুয়া। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমিরর ছবি ব্যবহার করে এই ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে রাজনৈতিক প্রভাব তৈরির চেষ্টা নিয়ে গত ১৯ জুন বিস্তারিত ফ্যাক্টস্টোরি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, কথিত লবিস্ট ড্রোসোফিলা হর্তিকের সাথে আলোচনার জন্য এক নারীর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যাওয়ার ভিডিও দাবিতে আমস্টারডামে ন্যাশনাল হলোকাস্ট মিউজিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের রাষ্ট্রপতি আইজ্যাক হারজোগের উপস্থিতির প্রতিবাদের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

বিরাট কোহলি ও মেয়ে ভামিকার নামে এআই দিয়ে বানানো ভুয়া ছবি ভাইরাল

0

সম্প্রতি বিরাট কোহলি ও তার মেয়ে ভামিকার একসঙ্গে থাকার দাবিতে তিনটি ছবি নিয়ে তৈরি একটি কোলাজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দাবি করা হচ্ছে, এটি তাদের আসল ছবি।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে
ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত একই দাবি দেখুন: এখানে

টিকটকে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে

থ্রেডসে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিগুলো বাস্তব নয়; বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে এগুলো তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে একটি অসংগতি শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনটি ছবির মধ্যে প্রথম ছবিতে ভামিকার চেহারা বাকি দুটি ছবির চেহারা থেকে আলাদা।

এছাড়া, বিশ্বস্ত কোনো উৎসেও কোহলি ও তার কন্যার এমন কোনো ছবির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, বিরাট কোহলি ও আনুশকা শর্মা তাদের সন্তানদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার কথা বিবেচনা করে এখনো মেয়ে ভামিকা ও ছেলে আকায়-এর কোনো ছবি বা চেহারা প্রকাশ করেননি।

পরবর্তীতে ছবিগুলো ‘সাইটইঞ্জিন’ ও ‘হাইভ মোডারেশন’ নামের দুটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী ওয়েবসাইটে যাচাই করে দেখা হয়। উভয় ওয়েবসাইটের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ছবিগুলো এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ।

Screenshot: Sightengine. 
Screenshot: Hive Moderation. 

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ছবিকে বিরাট কোহলি ও তার কন্যা ভামিকার আসল ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র