Home Blog

কক্সবাজার-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে  যমুনা টিভির নামে এআই দিয়ে তৈরি সংবাদ প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মূলধারার গণমাধ্যম ‘যমুনা টিভি’র নাম ও লোগো সংযুক্ত করে একটি সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। উক্ত সংবাদে দাবি করা হয়েছে, “..মহেশখালী ও কুতুবদিয়া আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পক্ষ থেকে সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর এমডি মাহমুদুল্লাহ মাহফুজ ফরিদকে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাটি এসেছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিক থেকে তিনি দলীয় ফোরামের একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বলেন। মহেশখালী কুতুবদিয়া জনগণের আস্থা ও ভালোবাসার প্রতীক আলমগীর ফরিদ। তিনি আবারও ধানের শীষ নিয়ে মাঠে থাকবেন, জনগণের রায় নিয়ে আসবেন। মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার রাজনীতিতে এ খবরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ফিরে এসেছে নতুন আশার আলো। যমুনা টিভি সমাচার বাংলাদেশ।”

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, তারেক রহমানের নির্দেশে কক্সবাজার-২ আসনে আলমগীর ফরিদকে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দাবিতে মূলধারার গণমাধ্যম যমুনা টিভি কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে তৈরি ভিডিওকে যমুনা টিভির আসল সংবাদ প্রতিবেদন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে যমুনা টিভি বা মূলধারার গণমাধ্যম ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। যমুনা টিভির ফেসবুক পেজওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করলেও আলোচিত সংবাদ প্রতিবেদনটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত কক্সবাজার-২ (কুতুবদিয়া-মহেশখালী) আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে কাউকে মনোনীত করার সংবাদ পাওয়া যায়নি।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে সংবাদ উপস্থাপকের অঙ্গভঙ্গি, কথা বলার ধরণ ও সংবাদ উপস্থাপনার ধরণে বেশ অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি কনটেন্টে দেখা যায়।

এছাড়া অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে যমুনা টিভির শিফট ইনচার্জ মিশুক নাজিবের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ৮ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে তিনি বলেন, “যমুনা টেলিভিশনের লোগো ব্যবহার, প্রেজেন্টারের ছবি ভার্চুয়ালি উপস্থাপন এবং Tarique Rahman এর নাম ব্যবহার করে বিএনপি নেতা আলমগীর ফরিদ কক্সবাজার-২ আসনে মনোনয়ন পাচ্ছেন দাবি করে যে ভিডিওটি ছড়ানো হচ্ছে তা এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি। ন্যূনতম কাণ্ডজ্ঞান থাকলেই বুঝা যাবে, এআই কনটেন্টটি যে ভুয়া।”

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে তারেক রহমানের নির্দেশে কক্সবাজার-২ আসনে আলমগীর ফরিদকে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দাবিতে মূলধারার গণমাধ্যম যমুনা টিভির আসল সংবাদ প্রতিবেদন দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

এনসিপি নেত্রী তাসনিম জারার ছবি দাবিতে ভিন্ন নারীর সম্পাদিত ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারার ছবি দাবিতে একটি অর্ধনগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। ছবিটিতে তাকে একট সমুদ্র(সদৃশ) উপকূলে পানির ওপর থাকা একটি পাথরে হেলান দিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ছবিটি ডা. তাসনিম জারার নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন একজন নারীর ছবিতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তার মুখমণ্ডল বসিয়ে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পিন্টারেস্ট-এ প্রচারিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত ছবিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ছবিতে থাকা তাসনিম জারার চেহারা ব্যতীত উভয় ছবির বাকি সকল উপাদানের হুবহু মিল রয়েছে। 

এছাড়াও ‍উক্ত পিন্টারেস্ট অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে একই পোশাকে ওই নারীর আরও দুটি ছবির সন্ধান পাওয়া যায়। ছবিগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে। যা থেকে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, Glendydelvalle নামের পিন্টারেস্ট অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত নারীর ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত নারীর মুখমণ্ডলের  জায়গায় তাসনিম জারার মুখমণ্ডল বসিয়ে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। 

সুতরাং, এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারার ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

  • Pinterest Account Post
  • Pinterest Account Post
  • Pinterest Account Post
  • Rumor Scanner’s Analysis

কর্ণফুলী ইপিজেড হাসপাতালের নামে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

0

সম্প্রতি ‘নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কর্ণফুলী ইপিজেড হাসপাতাল(Karnaphuli EPZ Hospital) চাকরির সুযোগ!’ দাবিতে ‘BEPZA’ ও ‘EPZ Hospital’ এর লোগো যুক্ত একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটির ছবির ক্যাপশন বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, যোগ্য ও আগ্রহী প্রার্থীদের নিকট থেকে আবেদন আহ্বান করা যাচ্ছে।✅ আবেদনের জন্য যা যা প্রয়োজন:

পূর্ণ জীবনবৃত্তান্ত (CV)
শিক্ষাগত যোগ্যতার সকল সনদপত্র
সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
আবেদন যেভাবে করবেন:
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ আবেদন পাঠান এই ইমেইলে —
📧 [email protected]
🕒 আবেদনের সময়সীমা:
আবেদন শুরু: এখনই শুরু হয়েছে
আবেদন শেষ: ১০ জুলাই ২০২৫, দুপুর ১:০০ টা পর্যন্ত
বিঃদ্রঃ: সময়মতো আবেদন করুন। অসম্পূর্ণ বা বিলম্বিত আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।
📌 একটি সুশৃঙ্খল পেশাগত পরিবেশে কাজ করার দারুণ সুযোগ!

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, Bangladesh Export Processing Zones Authority (BEPZA) এর লোগো সম্বলিত প্রচারিত কর্ণফুলী ইপিজেড হাসপাতালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি BEPZA  কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করেনি বরং, আর্থিক প্রতারণার উদ্দেশ্যে কথিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি কর্ণফুলী ইপিজেড হাসপাতালের নাম ব্যবহার করে প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতেই কথিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশের সময় হিসেবে ০১ জুলাই, ২০২৫ উল্লেখ রয়েছে এবং ছবির উপরে ‘BEPZA’ ও ‘EPZ Hospital’ এরর লোগো যুক্ত আছে।

এছাড়াও, আগ্রহী প্রার্থীদের ১০ জুলাই ২০২৫ এর মধ্যে পূর্ণ জীবন বৃত্তান্ত, শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদপত্র ও সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবিসহ কর্ণফুলী ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বরাবর ‘[email protected]’ জিমেইল আবেদন করতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি Bangladesh Export Processing Zones Authority (BEPZA) এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে কিনা তা জানতে BEPZA এর ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে হেল্প ডেস্ক/তথ্য প্রদানকারী, রিপোর্ট ডেলিভারী কাউন্টার, ফ্রন্ট ডেস্ক অফিসার ও  রিসিপশন/অনুসন্ধানে নিয়োগের কথিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটির সন্ধান মেলেনি।

তবে, BEPZA এর ওয়েবসাইটে Karnaphuli Export Processing Zone এ গত ০৩ জুন প্রকাশিত ও আগামী ১০ জুলাই আবেদনের শেষ সময়েরএকটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়। তবে এটি চুক্তিভিত্তিক প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ও গাইনোকোলজিষ্ট ও অবস নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি। 

Screenshot: BEPZA Website 

উক্ত বিজ্ঞপ্তি ও প্রচারিত বিজ্ঞপ্তি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উভয় বিজ্ঞপ্তিতে ‘সূত্রঃ ০৩.০৬.১৫৬৫.৩৩৫.১১.০০১,২৫/৩৪০৯’, আবেদন আহ্বান ও শর্তাবলীর কিছু তথ্য এবং কথিত বিজ্ঞপ্তিতে ভিন্ন জায়গায় থাকা কর্ণফুলী ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মসিহউদ্দিন বিন মেসবাহ এর স্বাক্ষরে মিল রয়েছে। মূলত, এই বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য ও স্বাক্ষর সংগ্রহ করে করে আলোচিত কথিত বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে। 

সুতরাং, ‘কর্ণফুলী ইপিজেড হাসপাতালহাসপাতালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি’ দাবিতে ‘BEPZA’ ও ‘EPZ Hospital’ এর লোগো সম্বলিত একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Bangladesh Export Processing Zones Authority (BEPZA) – Website 

ছাত্রদের গায়ে হাত তোলা প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলামকে জড়িয়ে ইনডিপেনডেন্ট টিভির সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, “ছাত্ররা চাইলে যে কারো গায়ে হাত দিতে পারবে” তবে কেউ ছাত্রদের গায়ে হাত দিয়ে পারবে না” শীর্ষক শিরোনামে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট টিভির ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে  (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে  (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছাত্রদের গায়ে কেউ হাত তুলতে পারবে না প্রসঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের মন্তব্য দাবিতে ইনডিপেনডেন্ট টিভি কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ইনডিপেনডেন্ট টিভির ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে ইনডিপেনডেন্ট টিভির লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ২ জুলাই, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।

ইনডিপেনডেন্ট টিভির লোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, ইনডিপেনডেন্ট টিভির ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ২ জুলাই গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে “ছাত্রদের গায়ে হাত দেওয়ার পরিণতি ভালো হবে না: নাহিদ ইসলাম” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। ইনডিপেনডেন্ট টিভির মূল ফটোকার্ডটিতে ‘ছাত্রদের গায়ে হাত দেওয়ার পরিণতি ভালো হবে না: নাহিদ ইসলাম’ শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে ‘ছাত্ররা চাইলে যে কারো গায়ে হাত দিতে পারবে” তবে কেউ ছাত্রদের গায়ে হাত দিয়ে পারবে না’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।

Photocard Comparison By Rumor Scanner

অর্থাৎ, ইনডিপেনডেন্ট টিভির এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

মূল ফটোকার্ড সম্বলিত ইনডিপেনডেন্ট টিভির পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে কুড়িগ্রামের ঘোষপাড়া ও রাজারহাটের পথসভায় বক্তব্যে চট্টগ্রামের পটিয়ার ঘটনার উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ‘চট্টগ্রামের পটিয়ায় গণঅভ্যুত্থানের সৈনিকদের ওপর পুলিশ যে হামলা করেছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। আমরা পুলিশের সংস্কার চাই, পুলিশ কারো গায়ে হাত তুলবে না সেটা চাই। আমরা হানাহানি চাই না। তবে শিক্ষার্থীদের অন্যায়ভাবে কেউ আঘাত করলে তার পরিণতি ভালো হবে না।’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।”

পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, “ছাত্ররা চাইলে যে কারো গায়ে হাত দিতে পারবে” তবে কেউ ছাত্রদের গায়ে হাত দিয়ে পারবে না” শিরোনামে ইনডিপেনডেন্ট টিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

পিএসজির সাথে হওয়া ৫ জুলাইয়ের ম্যাচে চোট পাওয়ার পর মুসিয়ালার পায়ের ছবি দাবিতে পুরোনো ছবি প্রচার

0

গত ৫ জুলাই ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পিএসজির সাথে হওয়া ম্যাচে পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইসি ডোনারুম্মার সাথে সংঘর্ষে পায়ে গুরুতর চোট পান বায়ার্ন মিউনিখ তারকা জামাল মুসিয়ালা। এরই প্রেক্ষিতে এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি চোট পাওয়া পায়ের ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ছবিটি গত ৫ জুলাইয়ে চোট পাওয়ার পর জামাল মুসিয়ালার পায়ের ছবি।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত একটি পোস্টে এককভাবে প্রায় ৪০ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জামাল মুসিয়ালার পায়ের এই ছবিটি গত ৫ জুলাইয়ে পিএসজির বিপক্ষে হওয়া ম্যাচে চোট পাওয়ার পরবর্তী সময়ের নয় বরং, প্রচারিত ছবিটি অন্তত ২০১৮ সাল থেকেই অনলাইনে বিদ্যমান আছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘@Hawes_squad’ ইউজারনেমের একটি এক্স অ্যাকাউন্টে “Rt or bad things will happen” শীর্ষক ক্যাপশনে ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বরে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টটিতে দুইটি ছবির সংযুক্তি পাওয়া যায়, যার মধ্যে একটি ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির হুবহু মিল রয়েছে।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ছবিটি ২০১৯ সালে তৎকালীন এভারটন ফুটবলার আন্দ্রে গোমেজের চোট পাওয়া পায়ের ছবি দাবিতেও প্রচার করা হয়েছে। তবে ছবিটি কার পায়ের তা পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। তবে, উক্ত ছবিটি যে সাম্প্রতিক সময়ের নয় এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়। অপরদিকে জামাল মুসিয়ালা গত ৫ জুলাই তার পা ও গোড়ালিতে চোট পান।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়া, জামাল মুসিয়ালা বাম পায়ে চোট পেলেও প্রচারিত ছবিটি ডান পায়ের ছবি বলে প্রতীয়মান হয়। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, জামাল মুসিয়ালার পায়ের এই ছবিটি গত ৫ জুলাইয়ে পিএসজির বিপক্ষে হওয়া ম্যাচে চোট পাওয়ার পরবর্তী সময়ের নয়।

সুতরাং, গত ৫ জুলাইয়ে পিএসজির বিপক্ষে হওয়া ম্যাচে চোট পাওয়ার পর জামাল মুসিয়ালার পায়ের ছবি দাবিতে অন্তত ৬ বছর পুরোনো একটি ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

গাইবান্ধায় অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার চার ব্যক্তি জামায়াত কিংবা বৈছাআর সদস্য নয় 

সম্প্রতি, গোবিন্দগঞ্জে জামায়াত নেতার বাড়িতে যৌথ বাহিনীর সারারাত অভিযান, দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার চার জন – এই দাবিতে মোহনা টিভির লোগো যুক্ত একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

Sujan Datta’ ও ‘Abdur Razzak’ নামের দুটি এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে একই ভিডিওটি প্রচার করে ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়, ‘গোবিন্দগঞ্জে সারা রাত যৌথবাহিনীর অভিযান চালিয়ে জুলাই সন্ত্রাসে ব্যবহৃত এবং বিভিন্ন সময়ে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি এবং হত্যা সহ বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহৃত হওয়া বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র এবং মাদকদ্রব্য সহ স্থানীয় জামায়াত নেতা এবং স্থানীয় সমন্বয়ককে গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনীর একটি দল।’ (বানান অপরিবর্তিত)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার চারজন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী কিংবা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নয় এবং অভিযান এই দুই সংগঠনের কোনো সদস্য্যের বাড়িতে হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, গ্রেফতারকৃতদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটিতে থাকা মোহনা টিভির লোগোর সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে গত ৫ জুলাই ‘যৌথ বাহিনীর সারারাত অভিযান, গোবিন্দগঞ্জে দেশীয় অ’স্ত্র মা’দকসহ গ্রেফতার চার’ ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

তবে প্রতিবেদনে গ্রেফতাকৃত ব্যক্তিদের কোনো  রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি এবং  অভিযানটি জামায়াত কিংবা সমন্বয়কদের বাড়িতে হয়েছে এমন তথ্যেরও উল্লেখ নেই।

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে একাত্তর টিভির ওয়েবসাইটে গত ৫ জুলাই ‘সেনা অভিযানে দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ চার সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ চার চিহ্নিত সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। শনিবার (৫ জুলাই) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সেনা ক্যাম্পের মেজর ইনজামামুল আলম। এর আগে শুক্রবার (৪ জুলাই) দিনগত রাতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। গ্রেপ্তার সন্ত্রাসীরা হলেন- আজাদ মিয়া, আসাদ আলী, মোশাররফ হোসেস ও ছোটন ছোটন মিয়া।’

এছাড়াও বলা হয়, ‘সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার দিনগত রাতে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় জব্দ করা হয়‎ ইয়াবা, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও একটি খেলনা পিস্তল। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ’

এছাড়াও, বাংলাভিশন, এনটিভি, দেশ টিভি এর ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও প্রায় একই তথ্য জানা যায়।

 দৈনিক দেশ রূপান্তরের ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত ‘গাইবান্ধায় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ৪’ শিরোনামের প্রতিদেনে শেষের দিকে বলা হয়, ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। একাধিক ব্যক্তি জানান, আজাদ মন্ডল ও তার লোকজন বিগত আওয়ামী লীগের সরকারের ছত্রছায়ায় ছিলেন। উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকার অপরাধীদের গডফাদার ছিল তারা। তাদের ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলত না।’

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টাতার বিষয়ে জানতে চাইলে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বলেন, “গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের সাথে জামায়াত বা সমন্বয়কদের সংশ্লিষ্টতা নেই।”

সুতরাং, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার চারজন জামায়াত কিংবা বৈছাআর সদস্য শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

শবনম ফারিয়া দাবিতে ভারতীয় ডিজিটাল ক্রিয়েটরের সম্পাদিত ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি বাংলাদেশী অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া দাবিতে একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো শবনম ফারিয়ার নয় বরং, একজন ভারতীয় ডিজিটাল ক্রিয়েটরের ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার  ফেসবুক পেজইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট যাচাই করে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে, arjohi নামক ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ২৪ জুন থেকে ০২ জুলাই প্রকাশিত একাধিক পোস্টে কিছু ছবি (, , ) খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ছবিগুলোর সাথে আলোচিত ছবিগুলোর আংশিক সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, প্রচারিত ছবির সাথে এসব ছবিতে থাকা ব্যক্তির পোশাক, অঙ্গভঙ্গি ও পারিপার্শ্বিক সবকিছুর মিল রয়েছে কিন্তু উভয় ছবিতে থাকা নারীদের চেহারা ভিন্ন। 

Comparison: Rumor Scanner 

ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে প্রতীয়মান হয়, আর্জহী নামক নারীর ছবিগুলোতে তার মুখমণ্ডলের স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় শবনম ফারিয়ার মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে। 

তাছাড়া, অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া তার ফেসবুক পেজে গত ০৩ জুলাই একটি পোস্টের মাধ্যমে জানান, প্রচারিত ছবিগুলোতে থাকা ব্যক্তি তিনি নন, ছবিগুলো সম্পাদিত। উক্ত পোস্টে তিনি ভারতের কলকাতা ভিত্তিক ডিজিটাল ক্রিয়েটর আর্জহীর ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টের লিংক যুক্ত করেন দেন। 

Screenshot: Facebook 

সুতরাং, অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক সংঘাতের দৃশ্য দাবিতে ভারতের শুটিংয়ের ভিডিও প্রচার

সাম্প্রতিক সময়ে  ‘এভাবে চলছে বিএনপি, এনসিপি শিবিরের রাজনীতি।’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তির কাঁধে কোদাল দিয়ে কেউ একজন আঘাত করেছেন। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক সংঘাতের ভিডিও নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতীয় একটি পাঞ্জাবি গানের মিউজিক ভিডিওর শুটিংয়ের দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটি বিষয়ে অনুসন্ধানে এটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Kashyap up35k নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১ জুলাই প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এটি নিশ্চিত যে এটি আলোচিত ভিডিওর দীর্ঘ সংস্করণ।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির শিরোনাম এবং হ্যাশট্যাগ থেকে জানা যায়, এটি ভারতীয় একটি পাঞ্জাবি গানের মিউজিক ভিডিওর অ্যাকশন সিনের শুটিংয়ের সময় ধারণ করা দৃশ্য। এছাড়াও ভিডিওটির লোকেশন ট্যাগ থেকে জানা যায়, এটি ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের রাজধানী চণ্ডীগড়ে ধারণ করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে উক্ত ইউটিউব চ্যানেলটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, চ্যানেলটিতে মূলত পাঞ্জাবি মিউজিক ভিডিওর শুটিংয়ের দৃশ্য প্রচার করা হয়। চ্যানেলটিতে প্রচারিত এমন কিছু শুটিংয়ের ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। তবে চ্যানেলটির বিস্তারিত বিবরণীতে চ্যানেলটি পরিচালনকারীর সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য না থাকায় তার বিষয়ে বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি। 

উল্লেখ্য, মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)-এর তথ্য মতে, দেশে গত ৬ মাসে কমপক্ষে ৫২৯টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় ৭৯ জন নিহত এবং অন্তত ৪ হাজার ১২৪ জন  আহত হয়েছেন।

সুতরাং, ভারতীয় মিউজিক ভিডিওর শুটিংয়ের দৃশ্যকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংঘাতের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশে বৃদ্ধকে প্রকাশ্যে মারধরের ভিডিও দাবিতে ভারতের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, “বাংলাদেশের সর্বসাধারণের কাছে একটি প্রশ্ন এর নামি”ই কি দেশ চালানো👇” ক্যাপশনসহ ভিন্ন ভিন্ন ক্যাপশনে এক বৃদ্ধকে প্রকাশ্যে মারধরের সাম্প্রতিক দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বৃদ্ধকে প্রকাশ্যে মারধরের ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয়। বরং, ২০২১ সালে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে প্রকাশ্যে এক বৃদ্ধকে মারধরের দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি থেকে প্রাপ্ত ইমেজ রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম India Today এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর “TDP worker thrashed on camera, party blames ruling YSRCP” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেসময় অন্ধ্র প্রদেশের ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টি (ওয়াইএসআরসিপি) সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছে তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)। টিডিপি দাবি করেছে , মারধরের শিকার ব্যক্তি তাদের দলের (টিডিপি) কর্মী, ওয়াইএসআরসিপি সদস্যরা তাকে মারধর করেছে। 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই তারিখে আলোচিত বিষয়ে Ashish নামক ভারতীয় এক সাংবাদিকের এক্স পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। একই ভিডিও প্রকাশ করে তিনি ক্যাপশনে লিখেছেন, “ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে সাঈদা নামে এক ব্যক্তিকে শিবা রেড্ডি ও অন্যরা নির্মমভাবে মারধর করছে—এমন একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। বিরোধী দল তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) অভিযোগ করেছে, হামলাকারীরা ওয়াইএসআরসিপি দলের সঙ্গে যুক্ত। তবে পুলিশ বলেছে, এটি একটি জমি-সংক্রান্ত বিরোধ। অভিযুক্ত সবাই পলাতক রয়েছে।” (অনূদিত) 

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে একই বিষয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের পালনাড়ু জেলা পুলিশের এক্স একাউন্টে প্রকাশিত পোস্ট খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। পালনাড়ু জেলা পুলিশের বক্তব্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, তুম্মলচেরুভু টোল প্লাজার কাছে সাঈদার ওপর হামলার ঘটনায় FIR নম্বর 651/21 অনুযায়ী সেসময় মামলা রুজু করা হয়েছে। 

অর্থাৎ, এ থেকে নিশ্চিত যে এটি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার ভিডিও নয়। 

সুতরাং, ২০২১ সালে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে প্রকাশ্যে এক বৃদ্ধকে মারধরের দৃশ্যকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ে ঘটনা বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

  • India Today: Website News 
  • Ashish: X Post 
  • PALNADU DISTRICT POLICE: X Post 

কুমিল্লায় সেনাবাহিনীর মব দমনের দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘কুমিল্লায় সমন্বয়করা মব সৃষ্টি করতে গেলে সেনাবাহিনী তাদের ধরে ফেলে এবং কড়া ডোজের থেরাপি দেয়’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, মুখে মাস্ক পরিহিত কিছু ব্যক্তি একটি ব্রীজের উপর গড়াগড়ি খাচ্ছে, এবং তাদের কয়েকজনকে সেনাসদস্য পেটাচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক মারধরের কোনো ঘটনার নয়। বরং, অন্তত ২০২১ সালের জুলাই থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান একটি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘ABIDUR ISLAM SHAJIB’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল ‘Bangladesh Army Punishment // বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শাস্তি’ ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

এছাড়াও, ‘TV TIME Live’ নামক ফেসবুক পেজে ২০২১ সালের ১ জুলাই ‘একটু লকডাউন দেখতে বের হয়েছে-যশোর। ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন’ ক্যাপশনে ভিডিওটি  প্রচার করতে দেখা যায়।

এছাড়াও, একই বছরের জুলাইয়ের ১ তারিখ ‘Jm Khan’ নামক ফেসবুক পেজ থেকে ‘শার্টডাউন হচ্ছে টেলার নাম বাবাজি… তেমন কিছু না বন্ধুরা মিলে একটু ঘুরতে বের হয়েছিলাম’ (বানান অপরিবর্তিত) এবং ‘ফ্রুটিকাツ’ নামক পেজ থেকে ‘বন্ধুরা মিলে সবাই ঘুরতে গেছিলো , বাকিটা ইতিহাস’ ক্যাপশনে প্রচার করতে  দেখা যায়।

উল্লিখিত সূত্রগুলোর কোনোটিতেই ভিডিওটি সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্যের উল্লেখ নেই। ভিডিও আপলোডের সময়কাল ও ক্যাপশনগুলো পর্যবেক্ষণ করে ধারণা করা যায় যে, ভিডিওগুলো ২০২১ সালে করোনা মহামারী চলাকালীন সময়ের। ভিডিওটি কোন স্থানের কিংবা কবে ধারণ করা তা নিশ্চিত না হওয়া গেলেও এটি নিশ্চিত যে এটি একটি পুরোনো ভিডিও। স্বাভাবিকভাবেই ভিডিওটির সাথে জুলাই আন্দোলন কিংবা বর্তমান সময়ের সম্পৃক্ততা নেই।

সুতরাং, অন্তত ২০২১ সালের জুলাই থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান একটি ভিডিওকে সম্প্রতি কুমিল্লায় সমন্বয়করা মব সৃষ্টি করতে গেলে সেনাবাহিনী তাদের ধরে কঠোর শাস্তি দিয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র