Home Blog

ইতালিতে আ.লীগের বিক্ষোভের জেরে ড. ইউনূসের ‘হতবাক’ প্রতিক্রিয়া দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামের ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টে অংশ নিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১২ অক্টোবর ইতালির রোমে পৌঁছান। এই সফরকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে রোমে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন। এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ছড়িয়ে শিরোনামে লেখা হয়েছে: ‘ইতালিতে~ইউনূস কে আওয়ামীলীগ আপ্যায়ন করার পরে। ইউনূসের প্রতিক্রিয়া,, বেচারা হতবাক হয়ে গেছে।’ ভিডিওতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকে হতবাক, এরকম একটা কান্ড ঘটতে পারে আমরা কেউ কল্পনা করিনি।’

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে। 

একই দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক ইতালি সফরের প্রেক্ষাপটে দেওয়া বক্তব্য নয়। এটি মূলত গত জুলাইয়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ড. ইউনূসের দেওয়া শোকবার্তার একটি অংশ।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে গত ২১ জুলাই পোস্ট করা ৪ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের মূল ভিডিওটি পাওয়া যায়। এতে ড. ইউনূসের পরিহিত পোশাক এবং পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে মূল ভিডিওর ০:১৬ থেকে ০:২৪ সেকেন্ডের অংশ ব্যবহৃত হয়েছে।  

Comparison: Rumor Scanner. 

ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশন অনুযায়ী, ভিডিওটি মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোকবার্তার দৃশ্য।

২১ জুলাই অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেদিন রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস গভীর শোক প্রকাশ করেন।

সুতরাং, মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোকবার্তাকে ইতালির সফরের প্রেক্ষাপটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আবদুল হান্নান মাসউদ অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও রাজনৈতিক পর্ষদের সদস্য আবদুল হান্নান মাসউদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আবদুল হান্নান মাসউদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়ার ভিডিওটি সম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের সময় দেওয়া ভিডিওবার্তাকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ২ আগস্ট শনিবার মিছিল, রবিবার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক | হত্যার প্রতিবাদে | 2 August 2024 শিরোনামে একই ভিডিওর বর্ধিত সংস্করণ প্রচারিত হতে দেখা যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

বিস্তারিত বিবরণী ও ভিডিওটি থেকে জানা যায়, সেসময় দেশব্যাপী চলমান ছাত্র-জনতার আন্দোলনে চালানো হামলা ও হত্যার প্রতিবাদসহ ৯ দফা দাবি জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আবদুল হান্নান মাসউদ উক্ত কর্মসূচির ঘোষণা দেন। 

কিন্তু আবদুল হান্নান মাসউদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করে ২০২৪ সালের ২ আগস্ট প্রচারিত ভিন্ন আরেকটি ভিডিওবার্তা পাওয়া গেলেও আলোচিত ভিডিওবার্তাটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে আলোচিত ভিডিওবার্তাটি সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছিল। এ বছর প্রণীত মেটার সরাসরি সম্প্রচারিত ভিডিও সংরক্ষণ পলিসি অনুযায়ী কোনো লাইভ ভিডিও ৩০ দিন পর প্রচারকারীর অ্যাকাউন্ট বা পেজ থেকে ডিলিট হয়ে যাবে। যার কারণে আবদুল হান্নান মাসউদের সেসময় দেওয়া আলোচিত ভিডিওবার্তাটি ডিলিট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়াও কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে সেসময় তার উক্ত কর্মসূচি ঘোষণা করার প্রেক্ষিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনও খুঁজে পাওয়া যায়। এমন প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আবদুল হান্নান মাসউদের সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়ার ভিডিওকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দেওয়ার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ড. এপিজে আব্দুল কালামের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে জামায়াত আমিরের মন্তব্যটি মিথ্যা

0

গত ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে ঢাকার কাকরাইলে অবস্থিত ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে ফোরাম অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এফডিইবি)-এর বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ভাষণে তিনি বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যদি ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসার সুযোগ পায় তাহলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার, সমাজে মর্যাদা নির্ধারণের মানদণ্ড পরিবর্তন ও দুর্নীতি রুখে দেওয়া হবে। বক্তব্যের এক পর্যায়ে জামায়াতের আমির ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিজ্ঞানী ড. এপিজে আব্দুল কালামের প্রসঙ্গ টেনে দাবি করেন, ‘পাশের দেশ, ড. আব্দুল কালাম, তাদের নিউক্লিয়ার সায়েন্টিস্ট। তিনি কি মাস্টার্স ডিগ্রি ছিলেন নাকি? গ্র্যাজুয়েট ছিলেন? ইন্টারমিডিয়েট ছিলেন? হাইস্কুল পাশ করেছেন? কিছুই না। কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে অনেক কিছুই হয়েছে তার। সেই জাতি তো তাকে সম্মান দিয়েছে। কী জন্যে? তার কন্ট্রিবিউশানের জন্যে। তার কাজের জন্য।’

অর্থাৎ, দাবি করা হয় ড. এপিজে আব্দুল কালামের কোনো ডিগ্রি ছিল না, এমনকি হাইস্কুলও পাশ করেননি তিনি।

গণমাধ্যমে প্রচারিত এরূপ দাবি সম্বলিত জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের ভাষণ দেখুন এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিজ্ঞানী ড. এপিজে আব্দুল কালামের কোনো ডিগ্রি ছিল না, এমনকি হাইস্কুলও পাশ করেননি শীর্ষক দাবি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, তিনি উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে স্নাতক করেছিলেন এবং মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ১৮’ এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৫ অক্টোবরে ড. এপিজে আব্দুল কালামের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বিদ্যালয় জীবনে কালামের ফলাফল ছিল গড়পড়তা, তবে তাকে একজন মেধাবী ও পরিশ্রমী শিক্ষার্থী হিসেবে বর্ণনা করা হয়, যার শেখার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল। তিনি পড়াশোনায়, বিশেষ করে গণিতে, দীর্ঘ সময় ব্যয় করতেন। তিনি রামনাথপুরমের শোয়ার্টজ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল থেকে তার স্কুলজীবন সম্পন্ন করেন। স্কুল শেষ করার পর, কালাম তিরুচিরাপল্লির সেন্ট জোসেফস কলেজে ভর্তি হন। সেন্ট জোসেফস কলেজ থেকে তিনি ১৯৫৪ সালে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৫ সালে তিনি অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যয়নের জন্য মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে ভর্তি হন।

১৯৬০ সালে মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করার পর, কালাম ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (DRDO) অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এস্টাবলিশমেন্টে একজন বিজ্ঞানী হিসেবে যোগ দেন, DRDS-এর সদস্য হওয়ার পর। ১৯৬৯ সালে কালামকে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO)-তে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে তিনি ভারতের প্রথম স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকলের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কাজ করেন।’ (অনূদিত)

অনুসন্ধানে ভারত সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর আর্কাইভে ২০১০ সালের ৮ জুন প্রকাশিত এপিজে আব্দুল কালামের একটি বায়োডাটা পাওয়া যায়। তাতে বলা হয়, ‘তিরুচিরাপল্লির সেন্ট জোসেফস কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর আব্দুল কালাম পরবর্তীতে মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যয়ন করেন, যা পঞ্চাশের দশকে দক্ষিণ ভারতের প্রযুক্তিগত শিক্ষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত ছিল। অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে স্নাতক সম্পন্ন করার পর, আব্দুল কালাম প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের টেকনিক্যাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রোডাকশন অধিদপ্তরে যোগ দেন।’ (অনূদিত)

এছাড়াও, অনুসন্ধানে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’র ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ১৫ অক্টোবর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ড. এপিজে আব্দুল কালাম তার বই ‘মাই জার্নি: ট্রান্সফর্মিং ড্রিমস ইনটু অ্যাকশনস’ এ উল্লেখ করেন, কালামের স্বপ্ন ছিল ফাইটার পাইলট হওয়া। কিন্তু একটুর জন্য তা হতে পারেননি তিনি। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (MIT) থেকে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক সম্পন্ন করার আগেই কালাম ভারতীয় বিমানবাহিনীতে (IAF) যোগ দেওয়ার প্রবল ইচ্ছা পোষণ করতেন। যদিও তিনি বিমানবাহিনীতে যোগ দিতে ব্যর্থ হন, তবুও আকাশের প্রতি তার আকর্ষণ তিনি হারাননি এবং অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যয়নের পথ বেছে নেন।’

অনুসন্ধানে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’ এ এপিজে আব্দুল কালামকে নিয়ে ২০০৬ সালের ২৪ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের আর্কাইভ পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, সেসময় তিনি তিরুচির সেন্ট জোসেফ’স কলেজের একজন শিক্ষকের সাথে দেখা করেন যার কাছে তিনি ১৯৫০ থেকে ১৯৫৪ এর মধ্যবর্তী সময়ে পদার্থবিজ্ঞান পড়েছিলেন।

এছাড়াও, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ১৮ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘রমনাথপুরম জেলার ২০০ বছরেরও বেশি পুরনো প্রতিষ্ঠান শোয়ার্টজ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, যেখানে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ড. এ.পি.জে. আব্দুল কালাম পড়াশোনা করেছিলেন, এখন কোয়েম্বাটুরভিত্তিক এক অলাভজনক সংস্থার সহায়তায় পুনর্নির্মাণের/সংস্কারের পথে।’ (অনূদিত)

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে ড. এপিজে আব্দুল কালাম উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেছেন এবং পরবর্তীতে পদার্থবিজ্ঞান ও অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিগ্রীও অর্জন করেছেন। 

সুতরাং, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান কর্তৃক দাবিকৃত ড. এপিজে আব্দুল কালামের কোনো ডিগ্রি ছিল না, এমনকি হাইস্কুলও পাশ করেননি শীর্ষক দাবি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সিলেটে হিন্দু চিকিৎসক কর্তৃক ধর্ষণের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, ২০২২ সালের

সম্প্রতি, সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ড. রামেন্দ্র কুমার সিংহ কর্তৃক মুসলিম তরুণীকে ধর্ষণের দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সিলেটের ওসমানী মেডিকেলে হিন্দু চিকিৎসক কর্তৃক তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০২২ সালের। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘SYLON TVt’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর ‘তবে কী প্রতারণার শিকার সেই তরুণীর আবেগকে পুজি করে অবশেষে পার পেয়ে যাবে প্রতারক ডাক্তার?’ শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর বিবরণীতে বলা হয়, ডাক্তার এস কে রয়েল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীর সাথে প্রতারণা করেন। 

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে জাতীয় দৈনিক জনকণ্ঠের ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও সাইকিয়াট্রি বিভাগের প্রধান ডা. আর কে এস রয়েলের লালসার শিকার হয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়ে এক তরুণী। ১৬ অক্টোবর (২০২২) ভুক্তভোগী ওই তরুণী সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। অভিযোগের পর ওই চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। নগরীর কাজলশাহ ল্যাবএইড লি. ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে তাকে আটক করা হয়। 

সেসময় এবিষয়ে অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোও সংবাদ (, , ) প্রকাশ করে। 

সুতরাং, ২০২২ সালে সিলেটের ওসমানী মেডিকেলে হিন্দু চিকিৎসক কর্তৃক তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

ভারতে মুসলিম মেয়েদের বন্ধ্যা বানানোর দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পাকিস্তানের ভিন্ন ঘটনার

সম্প্রতি ‘ভারতে ব্লাড ক্যান্সারের টিকা বলে স্কুলে মুসলিম মেয়েদের দেওয়া হচ্ছে বন্ধা বানানোর ইঞ্জেকশন’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে। প্রচারিত ভিডিওতে একটি কক্ষের ভেতরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম পরা বেশকিছু নারী শিক্ষার্থীকে কাশতে এবং হাঁপাতে দেখা যায়।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ভারতে ব্লাড ক্যান্সারের টিকা বলে স্কুলে মুসলিম মেয়েদের বন্ধ্যা বানানোর ইনজেকশন দেওয়ার ঘটনার নয়৷ প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরে পুলিশের টিয়ারশেলে আহত শিক্ষার্থীদের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Baaghi নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ০৯ মে ‘Police fired tear gas at girls’ schools in Dadyal’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য রয়েছে। 

উক্ত ভিডিওটির শিরোনামে উল্লেখ করা হয়, ডডিয়ালে বালিকা বিদ্যালয়ে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। এই ভিডিওটি উক্ত ঘটনার পরবর্তী দৃশ্য। 

উল্লেখিত তথ্যের সূত্র ধরে পাকিস্তানের গণমাধ্যম এবিএন নিউজের সাংবাদিক বাশারাত রাজার এক্স অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ০৯ মে প্রকাশিত আলোচিত ভিডিওর অনুরূপ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, এটিও ডডিয়ালের একটি ভিডিও ক্লিপ, যেখানে পুলিশ এবং বেসামরিক পোশাকে থাকা অজ্ঞাতপরিচয়ের ব্যক্তিরা স্কুলগুলোতে নির্বিচারে টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে, যার ফলে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত ছাত্রীরা জ্ঞান হারায়। 

এ বিষয়ে পাকিস্তানের গণমাধ্যম Dawn এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ১০ মে ‘Police crackdown in AJK prompts ‘shutter-down strike’ call’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মিরপুরের ডডিয়াল তহসিলে রাতভর অভিযানে এক ডজনেরও বেশি কর্মীকে আটকের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা মকবুল বাট শহীদ চকে বিক্ষোভ করার পর সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। পুলিশের ছোড়া টিয়ারগ্যাসের শেলগুলো একটি স্কুলেও গিয়ে পড়ে, যার ফলে বেশ কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীর অবস্থার অবনতি ঘটে।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর ঘটনাটি ভারতে ঘটেনি। 

সুতরাং, ভারতে মুসলিম মেয়েদের বন্ধ্যা বানানোর ইঞ্জেকশন দেওয়ার ভিডিও দাবিতে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরে পুলিশের টিয়ারশেলে আহত নারী শিক্ষার্থীদের পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

কাকরাইলে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে নুরুল হক নুর আহত হওয়ার দাবিটি ভুয়া 

0

সম্প্রতি, “কাকরাইলে সংঘর্ষ: নুরুল হক নুরসহ আহত অনেকে” শীর্ষক দাবিতে মূলধারার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম এনপিবি নিউজের লোগো ও ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি রাজধানীর কাকরাইলে সংঘর্ষে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর আহত হওয়ার দাবিটি ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে, এনপিবি নিউজের প্রচলিত ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে এনপিবি নিউজের লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১০ অক্টোবর, ২০২৫ উল্লেখ রয়েছে। উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে এনপিবি নিউজের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত শিরোনাম সংবলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, এনপিবি নিউজের ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়াও, অন্য কোনো গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য সূত্রেও সাম্প্রতিক সময়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের আহত হওয়ার দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

তাছাড়া, গত ১০ অক্টোবর সন্ধ্যায় গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের মাসিক সাধারণ সভায় নুরকে বক্তব্য দিতে দেখা যায় এবং গত ২৯ আগস্ট গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ভিপি নুরসহ নেতাকর্মীদের উপর সেনা-পুলিশের যৌথ হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গঠিত তদন্ত কমিশনের সাথে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমে কথা বলতে দেখা যায়। 

যা থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, রাজধানীর কাকরাইলে সংঘর্ষে নুর আহত হননি। 

উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর রাজধানীর কাকরাইলে অনুমতি ছাড়া জাতীয় পার্টির কর্মী সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও জাপা নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। 

সুতরাং, ১০ অক্টোবর রাজধানীর কাকরাইলে সংঘর্ষে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর আহত দাবিতে এনপিবি নিউজের আদলে তৈরি ফটোকার্ডটি ভুয়া। 

তথ্যসূত্র 

৭ দিনের মধ্যে শেখ হাসিনার হাতে ক্ষমতা বুঝিয়ে দিতে ট্রাম্পের নির্দেশ দাবিতে আরটিভির নামে সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার 

0

সম্প্রতি, “০৭ দিনের ভিতর শেখ হাসিনার হাতে ক্ষমতা বুঝিয়ে দিতে হবে ট্রাম্পের নির্দেশ” শিরোনামে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি সংযুক্ত দাবি মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম আরটিভির লোগো সংবলিত ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্ধৃত করে ‘০৭ দিনের ভিতর শেখ হাসিনার হাতে ক্ষমতা বুঝিয়ে দিতে হবে ট্রাম্পের নির্দেশ’ শিরোনামে আরটিভি কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, আরটিভির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ভিন্ন একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত দাবি সম্বলিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে আরটিভির লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে গত ০৮ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখের উল্লেখ রয়েছে। 

উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে আরটিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত শিরোনাম সংবলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, আরটিভির ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে, আরটিভির ফেসবুক পেজে একই তারিখে গত ০৮ অক্টোবর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্ধৃত করে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। যেটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির মিল লক্ষ করা যায়। 

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির সাথে প্রচারিত ফটোকার্ডে আরটিভির ডিজাইন, লোগো এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবির মিল রয়েছে। তবে উভয়ের শিরোনামে ভিন্নতা রয়েছে। মূলত, ‘জিম্মি মুক্তির পর গাজায় পুনরায় হামলা করবে না ইসরায়েল, ট্রাম্পের আশ্বাস’ শিরোনামে ট্রাম্পের ছবি সম্বলিত মূল ফটোকার্ডের স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘০৭ দিনের ভিতর শেখ হাসিনার হাতে ক্ষমতা বুঝিয়ে দিতে হবে ট্রাম্পের নির্দেশ’ শীর্ষক বাক্য প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অর্থাৎ, আরটিভির এই ফটোকার্ডটি সম্পাদনা করেই আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

আরটিভির মূল ফটোকার্ডটির মন্তব্যের ঘরে সংযুক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফিলিস্তিনের গাজায় আটক জিম্মিদের মুক্তির পর ইসরায়েল পুনরায় হামলা শুরু করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

এছাড়াও, অন্য কোনো গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উধদৃত করে ‘০৭ দিনের ভিতর শেখ হাসিনার হাতে ক্ষমতা বুঝিয়ে দিতে হবে ট্রাম্পের নির্দেশ’ শিরোনামে আরটিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র 

নেতানিয়াহুর গাজা বিষয়ক নারী উপদেষ্টার মৃত্যু দাবিতে সুইডিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর গাজা বিষয়ক নারী উপদেষ্টা মৃত্যুবরণ করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নেতানিয়াহু সরকারের গাজা বিষয়ক নারী উপদেষ্টা শীর্ষক কোনো পদই নেই। প্রকৃতপক্ষে, গত সেপ্টেম্বরে সুইডিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রেস কনফারেন্স চলাকালে হঠাৎ অসুস্থ হওয়ার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে অস্ট্রেলিয়ান টিভি প্রোগ্রাম ‘The Project’ এর এক্স অ্যাকাউন্টে গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর ১৯ সেকেন্ড অংশ থেকে ২৩ সেকেন্ড অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, সুইডেনে এক সংবাদ সম্মেলনের সময় হঠাৎ পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী এলিজাবেথ ল্যান। প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন এবং অন্যান্য কর্মকর্তার পাশে দাঁড়িয়ে বক্তব্য শোনার সময় তিনি হঠাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এতে তার মাথায় আঘাত লাগে এবং সঙ্গে সঙ্গে সম্মেলনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। (অনূদিত) 

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে তুরস্কের জাতীয় সংবাদ সংস্থা ‘Anadolu Agency’ এর ওয়েবসাইটে গত ৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৯ সেপ্টেম্বর স্টকহোমে অনুষ্ঠিত প্রথম সংবাদ সম্মেলনের সময় হঠাৎ পড়ে যান সুইডেনের নবনিযুক্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী এলিজাবেথ ল্যান। ঘটনাটি ঘটে যখন সরকার তাকে নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে উপস্থাপন করছিল। এর আগে সাবেক মন্ত্রী আক্কো আঙ্কারবার্গ জোহানসন আকস্মিকভাবে তার মন্ত্রিত্ব ও সংসদীয় দায়িত্ব—দু’টিই থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন এবং জ্বালানি ও শিল্পমন্ত্রী এব্বা বুচ। ল্যান হঠাৎ পড়ে গেলে বুচ দ্রুত তার পাশে গিয়ে সহায়তা করেন। কিছু সময় পর ল্যান নিজে উঠে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন,“আজকের মঙ্গলবারটা একদম স্বাভাবিক ছিল না। রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গেলে এমনটা ঘটতে পারে।”

সেসময় এ বিষয়ে অন্যান্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও সংবাদ (, , ) প্রকাশ করে। 

উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব শুরু করেন ক্যারোলাইন গ্লিক। 

সুতরাং, সুইডিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রেস কনফারেন্স চলাকালে হঠাৎ অসুস্থ হওয়ার ভিডিওকে নেতানিয়াহুর কথিত গাজা বিষয়ক নারী উপদেষ্টার মৃত্যুবরণ করার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র 

পটুয়াখালীতে ছাত্রলীগ কর্মীর গাছে উঠার দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, পটুয়াখালীর দশমিনায় ভুয়া মামলার শিকার কথিত এক ছাত্রলীগ কর্মী মবের হাত থেকে রক্ষা পেতে গাছের মগডালে উঠে আশ্রয় নেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। প্রচারিত পোস্টগুলোতে বলা হয়, মবের হাত থেকে রক্ষা পেতে গাছে উঠলেও পরবর্তীতে তিনি উত্তেজিত জনতার হাতে ধরা পড়েন। ভিডিওগুলোতেও উক্ত ব্যক্তিকে গাছ থেকে নামিয়ে আনতে দেখা যায়।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।  

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত একই ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পটুয়াখালীর দশমিনায় ভুয়া মামলার শিকার হয়ে ছাত্রলীগ কর্মীর মবের হাত থেকে রক্ষা পেতে গাছের মগডালে উঠে আশ্রয় নেওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, গাছের মগডালে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিটি মানসিক ভারসাম্যহীন। নারী-শিশুসহ ছয়জনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপানোর পর স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তিনি রক্ষা পেতে গাছে উঠে যান। 

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওগুলো পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার ভিডিওগুলোতে ‘আমাদের পটুয়াখালী’ শীর্ষক একটি লেখা থাকার সূত্রে ‘আমাদের পটুয়াখালী’ নামে পটুয়াখালীর একটি স্থানীয় গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে গত ৯ অক্টোবর প্রচারিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। তবে ভিডিওর শিরোনামে ‘দশমিনায় গ্রেফ’তার এড়াতে গাছের মগডালে উঠে পরা যুবককে নামানো হচ্ছে …’ শীর্ষক তথ্য ব্যতীত বিস্তারিত কোনো তথ্য না থাকায় ঘটনাটি সম্পর্কে জানা যায়নি। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

আরেক স্থানীয় গণমাধ্যম Voice of Marichbunia এর ফেসবুক পেজে একই ঘটনার ভিন্ন আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিও পোস্টটির শিরোনামে বলা হয়, আলোচিত ওই ব্যক্তির নাম সবুজ। তার বাড়ি পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার চর হোসনাবাদ গ্রামে। তিনি মাদকাসক্ত হয়ে নিজ বাড়ির ৭ জনকে কুপিয়ে জখম করেন। যাদের মধ্যে আহত এক শিশু হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। পরবর্তীতে তিনি উত্তেজিত জনতার হাত থেকে রক্ষা পেতে গাছের মগডালে উঠে যান। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সহায়তায় তাকে নামানো হয় বলেও পোস্টটিতে উল্লেখ করা হয়। 

Screenshot: Facebook 

মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একই ঘটনা সম্পর্কিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অভিযুক্ত সবুজ দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্তির ফলে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। গত ৯ অক্টোবর বিকেলে কোনো কারণ ছাড়াই একই বাড়ির ছয়জনকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেন সবুজ। এ সময় ভুক্তভোগীদের চিৎকারে পাশের বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। লোকজনের উপস্থিতি দেখে ভয়ে তিনি একটি গাছের মগডালে আশ্রয় নেন। পরবর্তীতে রাতে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় তাঁকে গাছ থেকে নামিয়ে আনা হয় বলেও জানা যায়। এছাড়াও আহতদের মধ্যে সাফায়েত হোসেন নামের আট বছরের এক শিশু হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান বলেও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়।

অভিযুক্ত সবুজ গাছে অবস্থানকালীন সময়ে হাতে থাকা দা দিয়ে নিজের হাত ও শরীরের একাধিক স্থানে জখম করায় তারও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এ ঘটনায় পরবর্তীতে মামলা দায়ের করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রতিবেদনটিতে দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ আবদুল আলীমের বরাতে জানানো হয়। তবে প্রতিবেদনটির কোথাও সবুজের ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্টতা কিংবা ভুয়া মামলার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অন্যকোনো গণমাধ্যমে এ ঘটনায় প্রকাশিত কোনো প্রতিবেদনেও এর কিছুর উল্লেখ নেই।

সুতরাং, পটুয়াখালীতে ভুয়া মামলার শিকার কথিত ছাত্রলীগ কর্মীর মবের হাত থেকে রক্ষা পেতে গাছের মগডালে উঠে আশ্রয় নেওয়ার দাবিতে একই এলাকার মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির ভিন্ন ঘটনার ব্যক্তির ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

নাঙ্গলকোট উপজেলার শিবির সভাপতি দাবিতে ভারতের বাস কন্ডাক্টরের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি ‘কুমিল্লা নাঙ্গলকোট উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি বাস যাতায়াত করার সময়ে মহিলা সহ আটক।’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওর ঘটনাটি বাংলাদেশে ঘটেনি এবং ভিডিওতে থাকা পুরুষটি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নাঙ্গলকোট উপজেলার সভাপতিও নন৷ প্রকৃতপক্ষে, ভারতের উত্তরপ্রদেশের গোবিন্দ সিং নামের একজন বাস কন্ডাক্টরের পুরোনো ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে UnMuteINDIA নামক একটি এক্স অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ০১ জুলাই প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির সাদৃশ্য রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভারতের উত্তর প্রদেশে চলন্ত বাসে যৌন সম্পর্কের সময় ধরা পড়ে বাস কন্ডাক্টর। ভিডিওটি উক্ত ঘটনার দৃশ্য। 

উল্লেখিত তথ্যের সূত্র ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম The Daily Jagran এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ০১ জুলাই ‘Conductor Caught Engaging In S*xual Act With Woman On Moving Bus In UP; FIR Registered’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের উত্তর প্রদেশের হাতরাস বাস ডিপোর একটি চলন্ত বাসে নারীর সঙ্গে বাস কন্ডাক্টরের যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার ঘটনা ঘটে। বাসের যাত্রীরা এই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে। পরবর্তীতে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ বাসটির চালক ও কন্ডাক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে তাদের চুক্তি বাতিল করে। 

এ বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম ABP News  ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ০২ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অভিযুক্ত বাস কন্ডাক্টরের নাম গোবিন্দ সিং। 

এছাড়াও, Patrika নামে আরেক ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনেও অভিযুক্ত বাস কন্ডাক্টরের নাম গোবিন্দ সিং বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

সুতরাং, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার শিবির সভাপতির আপত্তিকর ভিডিও দাবিতে ভারতের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র