Home Blog

গুলিস্তানে ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে ২০২১ সালের ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে দাবি করা হয়েছে, রাজধানীর গুলিস্তানে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক বিক্ষোভ মিছিলের দৃশ্য এটি। 

উক্ত দাবির ফেসবুক ভিডিও দেখুন এখানে

একই দাবির টিকটক ভিডিও দেখুন এখানে

ফেসবুকে ইতোমধ্যেই এই ভিডিওটি ২ লক্ষ ৯৫ হাজারেরও বেশি বার এবং টিকটকে প্রায় ৪২ হাজার বার দেখা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, ২০২১ সালে রাজধানীর গুলিস্তানে ছাত্রলীগের মিছিলের ভিডিওকে বিভ্রান্তিকরভাবে সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।    

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইউটিউবে ২০২১ সালের ২৮ মার্চ Sohra tv নামের একটি চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির বর্ণনা থেকে জানা যায়, সে বছরের ২৭ মার্চ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হয়ে টিএসসি সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ হয়। দেশব্যাপী নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শত শত নেতাকর্মী এ বিক্ষোভ মিছিল এ অংশ নেয়।

Comparison: Rumor Scanner 

একই বছরের ২৬ মার্চ ছাত্রলীগের প্যাডে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকেও এই মিছিলের তথ্য জানা যায়।      

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, ২০২১ সালের।  

সুতরাং, রাজধানীর গুলিস্তানে ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে ২০২১ সালের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

ছাত্রলীগ পুলিশের গাড়ি আটকে দিয়েছে দাবিতে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে দাবি করা হয়েছে, ছাত্রলীগ রাস্তায় পুলিশের গাড়ি আটকে দিয়েছে। 

উক্ত দাবির ফেসবুক ভিডিও দেখুন এখানে

ফেসবুকে ইতোমধ্যেই এই ভিডিওটি ১ লক্ষ ৩২ হাজারেরও বেশি বার দেখা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এই ঘটনার সাথে ছাত্রলীগেরও কোনো সম্পর্ক নেই বরং, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের সময়ে এক তরুণীর পুলিশের গাড়ি রুখে দিয়ে দাঁড়িয়ে নিজের ভাইকে ছাড়াতে চেষ্টা করার সময়ের ভিডিও এটি।    

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইউটিউবে ২০২৪ সালের ০২ আগস্ট জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির বর্ণনা থেকে জানা যায়, ভার্সিটির বড় ভাইকে পুলিশ আটক করলে প্রিজন ভ্যানের সামনে ভাইকে ছাড়াতে দাঁড়িয়ে যান বোন।

Comparison: Rumor Scanner 

একই বছরের ০১ আগস্ট মূল ধারার গণমাধ্যম আরটিভির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সে বছরের ৩১ জুলাই ঢাকার মৎস্যভবন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পুলিশের গাড়ির সামনে একা দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটির নাম নুসরাত নুর। আর পুলিশ যে ছেলেটিকে গ্রেপ্তার করেছিল, তিনি নুসরাতের ভাই নুর হাসান। গ্রেপ্তারের আগে থেকেই ভাইকে যাতে পুলিশ নিয়ে যেতে না পারে, এজন্য সব ধরনের চেষ্টা করেছিলেন বোন নুসরাত। তবে গ্রেপ্তার হওয়া নুর হাসান নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন, পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে।  

জাতীয় আরেক দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের এক প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার নয়, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের সময়ের।  

সুতরাং, সম্প্রতি ছাত্রলীগ রাস্তায় পুলিশের গাড়ি আটকে দিয়েছে দাবিতে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

ড. ইউনূসের আপত্তিকর মূর্তির ছবি দাবিতে সম্পাদিত ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি আপত্তিকর মূর্তি বানানো হয়েছে দাবিতে একটি মূর্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা আপত্তিকর ওই মূর্তি পরিদর্শনে গিয়েছেন দাবিতেও আরেকটি ছবি প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস আপত্তিকর ওই মূর্তি পরিদর্শনে গিয়েছেন দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আপত্তিকর মূর্তির ছবিটি আসল নয়। এছাড়াও তাদের সেই মূর্তি পরিদর্শনে যাওয়ার দাবিতে প্রচারিত ছবিটিও বাস্তব নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতে ন্যাংটা কার্তিক পূজার জন্যে তৈরিকৃত মূর্তির ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তি সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে কার্তিকের মাথার স্থলে ড. ইউনূসের মাথার অবয়ব যুক্ত করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। তৈরিকৃত ছবিটি ড. ইউনূসের গণভবনে অবস্থিত জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনের একটি ছবির সাথে যুক্ত করে দ্বিতীয় ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

ছবি যাচাই ১

আলোচিত মূর্তিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিসার্চ ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Dream City Katwa: স্বপ্নের শহর কাটোয়া. নামের একটি ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ১৫ নভেম্বর প্রচারিত একটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

পোস্টে কাটোয়া নামক এলাকার ঐতিহ্যবাহী ন্যাংটা কার্তিক পূজায় ন্যাংটা কার্তিক মূর্তির কয়েকটি ছবি প্রচার করে পূজা সংক্রান্ত আপডেট জানতে পেজটি ফলো করার আহ্বান জানানো হয়। প্রচারিত মূর্তিগুলোর ছবি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে থাকা একটি ছবির সাথে ড. ইউনূসের মূর্তির ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল রয়েছে। উভয় ছবির পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং মূর্তির গঠন হুবহু একই।

Image Comparison by Rumor Scanner

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে যে, ২০২৪ সালে কাটোয়া নামক এলাকায় অনুষ্ঠিত ন্যাংটা কার্তিক পূজার এই মূর্তির ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।  

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম NEWS 18 বাংলা-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কাটোয়া হল ভারতের পূর্ব বর্ধমান জেলার একটি শহর। কাটোয়া তার ন্যাংটা কার্তিক পূজার জন্যে ব্যাপক জনপ্রিয় বলেও জানা যায়। 

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, কাটোয়ার ন্যাংটা কার্তিক পূজার পেছনে একটি আখ্যান রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, ভাগীরথী নদী ও অজয় নদের তীরবর্তী এই শহর একসময় আমদানি ও রপ্তানির জন্য জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। যার কারণে বিভিন্ন জায়গার বণিকদের আনাগোনা বেড়ে যায়। যাকে কেন্দ্র করে শহরে নিষিদ্ধপল্লির যাত্রা শুরু হয়। নিষিদ্ধপল্লির রক্ষিতারা একসময় একটা অবলম্বন খুঁজতে তাদের গ্রাহকদের কাছে সন্তানলাভের প্রার্থনা জানাতো। 

তৎকালীন সমাজে রক্ষিতাদের সন্তানদের কোনও স্বীকৃতি ছিল না। তাই নিষিদ্ধপল্লির মহাজনেরা এই কার্তিক পূজার প্রচলন করেছিলেন। কার্তিককে পুরাণে প্রজননের দেবতা হিসেবেই কল্পনা করা হয়। এভাবেই কাটোয়ার ন্যাংটো কার্তিক বা খোকা কার্তিকের পূজা শুরু হয়।

ছবি যাচাই ২

পরবর্তীতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের আলোচিত কথিত মূর্তিটি পরিদর্শনে যাওয়ার ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার ইংরেজি ভাষার গণমাধ্যম The Business Standerd-এর ওয়েবসাইটে গত ৫ আগস্ট CA inspects progress of July Uprising Memorial Museum শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Comparison by Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে ব্যবহৃত একটি ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির মিল রয়েছে। তবে ছবিটিতে মূর্তির পরিবর্তে দেয়ালে ফ্রেমবন্দী একটি শার্ট ও জুতার ছবি দেখতে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিগুলো গত ৫ আগস্ট গণভবনে নির্মিত জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনের সময় তোলা হয়েছে।

সুতরাং, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আপত্তিকর মূর্তি কিংবা তার সেটি পরিদর্শনে যাওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিগুলো সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

ঢাকায় আওয়ামী লীগের মিছিল দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি, ঢাকায় আওয়ামী লীগের মিছিল দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। উক্ত ভিডিওতে জনতাকে ‘শেখ হাসিনা বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশে।’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। 

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত এই ভিডিওটি এখন পর্যন্ত দেড় লক্ষাধিক বার দেখা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঢাকায় আওয়ামী লীগের মিছিল দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিও তৈরি করা হয়েছে।

প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে পারিপার্শ্বিক অবস্থাতে খানিকটা অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়। মিছিলে থাকা ব্যক্তিদের মুখের সাথে স্লোগানের অমিল এবং মুখাভঙ্গির অসংগতি রয়েছে। 

বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ।

Screenshot: DeepFake-o-meter

উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। বিজয় সরণি মেট্রোরেল স্টেশনের নিচ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে সংসদ ভবনের রাস্তা ধরে খামারবাড়ি গিয়ে শেষ হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মাদারীপুরের শিবচরের বাসিন্দা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সিরাজুল ইসলামকে ব্যানারসহ আটক করে।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওকে ঢাকায় আওয়ামী লীগের মিছিল দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র 

‘১১ নভেম্বরের পর রাজপথ থাকবে যুবলীগের দখলে’ শীর্ষক শেখ পরশের ২০২২ সালের মন্তব্য সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সাম্প্রতিক মন্তব্য দাবিতে মূলধারার গণমাধ্যম ইত্তেফাকের লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়েছে। প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে লেখা রয়েছে, “১১ নভেম্বরের পর রাজপথ থাকবে যুবলীগের দখলে: পরশ”।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত পোস্টটিতে এককভাবে ৩ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘১১ নভেম্বরের পর রাজপথ থাকবে যুবলীগের দখলে’ শীর্ষক মন্তব্যটি যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ সাম্প্রতিক সময়ে করেননি। প্রকৃতপক্ষে শেখ পরশ আলোচিত মন্তব্যটি ২০২২ সালের ৫ নভেম্বরে করেছিলেন এবং প্রচারিত ফটোকার্ডটিও ইত্তেফাক মূলত সেসময় ২০২২ সালের ৬ নভেম্বরে প্রচার করে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে মূলধারার গণমাধ্যম ‘ইত্তেফাক’ এর লোগো দেখতে পাওয়া যায়। এরই সূত্র ধরে ‘ইত্তেফাক’ এর ফেসবুক পেজে অনুসন্ধান করলে ২০২২ সালের ৬ নভেম্বরে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত মূল ফটোকার্ডটি প্রচার হতে দেখা যায়।

Comparison : Rumor Scanner

পোস্টটির মন্তব্য বিভাগে ২০২২ সালের ৬ নভেম্বরে এ বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের লিঙ্কও পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, “যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, আগামী ১১ নভেম্বরের পর দেশের রাজপথ থাকবে যুবলীগের দখলে। বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখন যত মিছিল সমাবেশ করার ইচ্ছে করে নেন। ১১ নভেম্বর যুবলীগ সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে। সে দিনের পর দেশের রাজপথ যুবলীগের দখলে থাকবে। দেখা যাবে কত ধানে কত চাল।’ শনিবার (২০২২ সালের ৫ নভেম্বর) রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জেলা যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।”

এছাড়াও, এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে মূলধারার গণমাধ্যম সমকাল, বিডিনিউজ২৪সহ একাধিক গণমাধ্যমে সেসময়ে আলোচিত মন্তব্যসমেত সংবাদ প্রকাশ হতে দেখা যায়।

তবে এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সাম্প্রতিক সময়ে শেখ পরশের এরূপ কোনো মন্তব্য করার সপক্ষে নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ২০২২ সালে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ পরশের ‘১১ নভেম্বরের পর রাজপথ থাকবে যুবলীগের দখলে’ শীর্ষক মন্তব্যকে শেখ পরশের সাম্প্রতিক সময়ের মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

এনসিপির কথিত আহ্বায়ক পরকীয়া করতে গিয়ে আটক দাবিতে স্ক্রিপ্টেড ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কথিত আহ্বায়ক পরকীয়া করতে গিয়ে জনগণের হাতে ধরা পড়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। প্রচারিত ভিডিওতে এক নারী ও পুরুষকে জুতার মালা পড়িয়ে বাজার প্রদক্ষিণ করানোর পাশাপাশি মারধর করতে দেখা যায়। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত একই ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এক্স (সাবেক টুইটার)-এ প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

থ্রেডসে একই দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পরকীয়ার সময় এনসিপির কথিত আহ্বায়কের জনগণের হাতে আটক ও মারধরের শিকার হওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, আলোচিত ভিডিওটি সত্য কোনো ঘটনার নয়। স্ক্রিপ্টেড বা অভিনীত ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এনসিপির কোনো আহ্বায়কের আলোচিত পরিস্থিতিতে আটক হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি দেখা যায়, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ দলটির ১৬ জন যুগ্ম আহ্বায়কের কারোর চেহারার সাথেই ভিডিওতে আটক কারও চেহারার মিল নেই।

পরবর্তী অনুসন্ধানে Asia Bangla Media নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রচারিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির শিরোনামে দাবি করা হয়, এটি প্রবাসীর স্ত্রী পরকীয়া করার সময় জনগণের হাতে আটক হওয়ার ঘটনার ভিডিও। উক্ত ভিডিওটি ব্যতীতও তাদেরকে মারধরের আরেকটি ভিডিও পেজটিতে পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে পেজটি পর্যালোচনা করে আটক ব্যক্তিদের পরকীয়ার দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটিতেও ওই নারী ও পুরুষকে একই পোশাকে দেখতে পাওয়া যায়। তবে জনগণের হাতে আটক হওয়ার ভিডিওগুলোতে প্রবাসীর স্ত্রী বলা হলেও এই ভিডিওতে মহিলা বলেন তার স্বামী একজন ব্যবসায়ী এবং তিনি দেশেই থাকেন। 

Screenshot: Facebook 

এছাড়াও উক্ত ভিডিওগুলো ব্যতীতও পেজটিতে প্রচারিত একাধিক ভিডিওতে ওই নারীকে দেখতে পাওয়া যায়। এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

Comparison by Rumor Scanner 

প্রতিটি ভিডিওতেই ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপট এবং চরিত্রে তাকে দেখা যায়। যা থেকে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, এর কোনোটিই সত্য ঘটনা নয় বরং সবগুলোই স্ক্রিপ্টেড ভিডিও।

সুতরাং, স্ক্রিপ্টেড ভিডিওকে এনসিপির কথিত আহ্বায়কের পরকীয়া করার সময় জনগণের হাতে ধরা পড়ার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Asia Bangla Media Facebook Page Post
  • Asia Bangla Media Facebook Page Post
  • Asia Bangla Media Facebook Page Post

নেপালের রয়্যাল কোর্ট লাইব্রেরিতে অগ্নিসংযোগ দাবিতে সিংহ দরবারের ছবি প্রচার  

0

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং সরকারের মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সম্প্রতি নেপালের রাজপথে নেমে আসেন কয়েক হাজার মানুষ। বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগে গত ০৯ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। তার পদত্যাগের ঘোষণার পরেও বিক্ষোভকারীরা নেপালের পার্লামেন্ট ভবন ও মন্ত্রীদের বাসভবন সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভবনে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

এরই প্রেক্ষিতে একটা জাতিকে ১০০০ বছর পিছিয়ে দিতে তাদের লাইব্রেরিগুলো পু’ড়িয়ে দিলেই যথেষ্ট! পু’ড়ছে নেপালের রয়াল লাইব্রেরি, পু’ড়ছে চর্যাপদ!

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নেপালে সাম্প্রতিক সময়ের বিক্ষোভ-অগ্নিসংযোগে দেশটির রয়্যাল লাইব্রেরি এবং চর্যাপদ পুড়ে যাওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, নেপালে সাম্প্রতিক বিক্ষোভকালে দেশটির সরকারি প্রশাসনিক ভবন সিংহ দরবারে অগ্নিসংযোগের ঘটনার ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে স্টক ফটো ওয়েবসাইট gettyimages এ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ছবির সাথে আলোচিত ছবিটির আংশিক সাদৃশ্য রয়েছে। প্রচারিত ছবিতে ভবনটি অগ্নিসংযোগের মুহূর্তে জ্বলন্ত অবস্থায় রয়েছে, অন্যদিকে গেটি ইমেজের ছবিটি একটি স্বাভাবিক সময়ে ধারণকৃত। 

Comparison: Rumor Scanner 

চেক ফটো-সাংবাদিক পল পপারের সৌজন্যে প্রকাশিত ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ছবিটি ১৯৬৭ সালে ধারণকৃত নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু শহরের কেন্দ্রস্থলে সিংহ দরবার, যা সিংহের প্রাসাদ নামেও পরিচিত, এর বাইরের দৃশ্যের। 

পরবর্তীতে, স্টক ফটো প্লাটফর্ম gettyimages এর ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত পোস্টে আলোচিত ছবির অনুরূপ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়৷ 

Screenshot: Instagram 

পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ছবিটি সাম্প্রতিক আন্দোলনে নেপাল সরকারের মূল প্রশাসনিক ভবন সিংহ দরবারে বিক্ষোভকারীদের অগ্নিসংযোগের চিত্র। 

অর্থাৎ, আলোচিত ছবিটি নেপালের সরকারি প্রশাসনিক ভবন সিংহ দরবারের। 

এছাড়া, নেপালের রয়্যাল লাইব্রেরি এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাচীন যুগের নিদর্শন চর্যাপদের পুড়ে যাওয়ার বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি ‘রঙিন চর্যাপদের খোঁজে’ শিরোনামে হালনাগাদকৃত একটি নিবন্ধ খুঁজে পাওয়া যায়। 

১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপাল রাজদরবারের গ্রন্থাগার থেকে চর্যাপদের পুথি আবিষ্কার করেন। উক্ত নিবন্ধ থেকে জানা যায়, নেপালের রয়্যাল দরবার লাইব্রেরি বলতে এখন আর কিছু নেই। লেখক জেনেছেন, নেপালের সরকারি অনেক অধিদপ্তর এর সম্পদগুলো বণ্টন করে নিয়েছে। তার বিশ্বাস ছিল, ভক্তপুর দরবার নয়, সিংহদরবারের গ্রন্থাগারেই হরপ্রসাদ শাস্ত্রী পুথিটি দেখেছিলেন। কারণ, ভক্তপুর দরবারে একটি মিউজিয়াম ছিল, সেটি তিনি দেখেছিলেন ২০১৪ সালে, সেখানে চর্যাপদ পাননি।

চর্যাপদ হলো প্রাচীন তান্ত্রিক-বৌদ্ধধর্মের গান ও শিক্ষার সংকলন, যা পূর্ব-ভারতের হাজার বছরের পুরনো সমাজ ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে। এটি মূলত তালপাতার পুথিতে লেখা ছিল, যেখানে চর্যাকাররা গান ও টীকা একত্রিত করেছেন। ১৯০৭ সালে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রয়্যাল কোর্ট লাইব্রেরিতে এই পুথির প্রতিলিপি আবিষ্কার করেন। মূল পুথিটি মুনিদত্তের টীকার পুথি হিসেবে পরিচিত, এবং শাস্ত্রী এর ভাষা প্রাচীন বাংলা হিসেবে শনাক্ত করেন। মূল পুথি বর্তমানে নেপালে নেই; তবে চর্যাপদের অমূল্য তথ্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের জন্য ন্যাশনাল আর্কাইভ অফ নেপালে এটি সংরক্ষিত আছে।

কালক্রমে বিভিন্ন পণ্ডিত চর্যাপদকে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ ও অধ্যয়ন করেছেন, যেমন হিন্দি, অসমীয়া, ওড়িয়া, মৈথিলি, ইংরেজি ও ফরাসি। বর্তমানে নেপালের সরকারি সংরক্ষণাগারে কিছু পাতা আছে, এবং কিছু রঙিন প্রতিলিপি সংগ্রহ করা হয়েছে, যা উচ্চ রেজল্যুশনে ছবি তোলা হয়েছে।

সুতরাং, সাম্প্রতিক বিক্ষোভে নেপালের রয়্যাল কোর্ট লাইব্রেরিতে অগ্নিসংযোগ ও এতে চর্যাপদের পুড়ে যাওয়ার দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

দুয়া লিপা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সি পরেছেন দাবিতে এআই ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সিতে ইংলিশ-আলবেনিয়ান সঙ্গীতশিল্পী দুয়া লিপার ছবি দাবিতে একটি ছবি প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সিতে দুয়া লিপার ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি আসল নয় বরং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির মাধ্যমে দুয়া লিপার ভিন্ন এক ছবি ব্যবহার করে আলোচিত এই ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। 

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে দুয়া লিপার মতো আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় ব্যক্তি এরূপ কোনো ছবি প্রচার করলে তা দেশীয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হতো।

এছাড়া, প্রচারিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে কিছু অসঙ্গতি দেখা যায় যেমন ছবিটি মিরর সেলফি হলেও জার্সির ‘BANGLADESH’ লেখায় কোনো পরিবর্তন নেই। এছাড়া দুয়া লিপার গঠনেও খানিকটা অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি ভিডিওতে দেখা যায়।

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে দুয়া লিপার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করলে গত ২৯ আগস্টে ‘🖤 NOLA 🖤’ ক্যাপশনে ১৯টি ছবি পোস্ট হতে দেখা যায়। পোস্টগুলোর মধ্যে ৭ম ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির তুলনা করলে জার্সি ব্যতীত দুয়া লিপার ব্যাগ, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, ছবি তোলার ভঙ্গির মিল পাওয়া যায় এবং নিশ্চিত হওয়া যায় যে মূলত উক্ত ছবিটি ব্যবহার করে কৃত্রিম আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

Comparison : Rumor Scanner 

এছাড়া, দুয়া লিপা’র মূল ছবিতে দুয়া লিপাকে বামে খানিকটা উপরের দিকে তাকাতে দেখা গেলেও প্রচারিত ছবিতে অস্বাভাবিকভাবে অনেকটা সোজাসুজি তাকাতে দেখা যায়।

Screenshot: Rumor Scanner/Hive Moderation

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-ভিত্তিক কনটেন্ট শনাক্তকরণ প্ল্যাটফর্ম হাইভ মডারেশন ব্যবহার করে যাচাই করলে হাইভের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ছবিটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৯ শতাংশ। এছাড়াও, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-ভিত্তিক কনটেন্ট শনাক্তকরণ আরেক প্ল্যাটফর্ম ডিপফেক ও মিটার ব্যবহার করে যাচাই করলে এই প্ল্যাটফর্মটির বিশ্লেষণেও আলোচিত ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি বা ভুয়া ছবি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ছবিটি মূলত দুয়া লিপার ভিন্ন এক ছবি ব্যবহার করে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সিতে দুয়া লিপার ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

ডাকসু নির্বাচনে জিয়াউর রহমান হলে ভিপি পদে প্রার্থীদের প্রাপ্তভোট দাবিতে ভুল সংখ্যা প্রচার

0

গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। নির্বাচনে ভিপি (সহ-সভাপতি) পদে জয়লাভ করেন মোঃ আবু সাদিক (সাদিক কায়েম)। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি অনলাইনে দাবি প্রচার করা হয়েছে, ডাকসু নির্বাচনে জিয়াউর রহমান হল ও ফজলুল হক হলে আবিদুল ইসলাম খান (১৮১), সাদিক কায়েম (৮৪১), আব্দুল কাদের (৪৭), উমামা ফাতেমা (১৫৩) ও শামীম হোসেন (১৪১) একই সংখ্যক ভোট পেয়েছেন। 

ডাকসু নির্বাচনে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে আবিদুল ইসলাম খান ১৮১ ভোট, সাদিক কায়েম ৮৪১ ভোট ও উমামা ফাতেমা ১৫৩ ভোট পেয়েছেন দাবিতে গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। দেখুন বাংলাভিশন (ফেসবুক), দেশ টিভি (ফেসবুক), ডিবিসি নিউজ (ফেসবুক), নয়া দিগন্ত, যায় যায় দিন, আজকের পত্রিকা, দেশ রূপান্তর, জাগোনিউজ২৪, দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস, ফেস দ্যা পিপল (ফেসবুক), রূপালী বাংলাদেশ, খবর সংযোগ, খবরের কাগজ (ফেসবুক), ক্যাম্পাস রিপোর্ট ২৪, বাংলা এডিশন, দৈনিক শিক্ষা, সিটি নিউজ ঢাকা, স্বদেশ বাংলা, দেশকাল নিউজ, ডোনেট বাংলাদেশ

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডাকসু নির্বাচনে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও ফজলুল হক মুসলিম হলে আবিদুল ইসলাম খান ১৮১ ভোট, সাদিক কায়েম ৮৪১ ভোট, উমামা ফাতেমা ১৫৩ ভোট, শামীম হোসেন ১৪১ ভোট ও আব্দুল কাদেরের ৪৭ ভোট পাওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্ষেত্রে প্রচারিত সংখ্যাটি সঠিক তবে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে আবিদুল ইসলাম খান ২৪৮ ভোট, সাদিক কায়েম ৬৭৪ ভোট, উমামা ফাতেমা ১৫১ ভোট, শামীম হোসেন ১৩১ ভোট ও আব্দুল কাদের ৭০ ভোট পেয়েছেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ডাকসু নির্বাচনে প্রতিটি হলে প্রতিটি পদের প্রার্থীদের পাওয়া ভোটের সংখ্যার একটি তালিকা পাওয়া যায়। তালিকাটি থেকে ফজলুল হক মুসলিম হলে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীদের পাওয়া ভোটের সংখ্যা পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, ফজলুল হক হলে ভিপি পদে আবিদুল ইসলাম খান ১৮১ ভোট, সাদিক কায়েম ৮৪১ ভোট, উমামা ফাতেমা ১৫৩ ভোট, শামীম হোসেন ১৪১ ভোট ও আব্দুল কাদের ৪৭ ভোট পেয়েছেন।

Screenshot : Dhaka University/DUCSU

পরবর্তীতে, তালিকাটি থেকে মু্ক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীদের পাওয়া ভোটের সংখ্যা পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, মু্ক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ভিপি পদে আবিদুল ইসলাম খান ২৪৮ ভোট, সাদিক কায়েম ৬৭৪ ভোট, উমামা ফাতেমা ১৫১ ভোট, শামীম হোসেন ১৩১ ভোট ও আব্দুল কাদের ৭০ ভোট পেয়েছেন।

অর্থাৎ, তালিকাটিতে প্রদত্ত তথ্যানুসারে ফজলুল হক হলে ভিপি পদে আলোচিত প্রার্থীদের পাওয়া ভোটের সংখ্যা দাবিতে প্রচারিত সংখ্যাগুলো সঠিক হলেও মু্ক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ক্ষেত্রে ভিপি পদে আলোচিত প্রার্থীদের পাওয়া ভোটের সংখ্যা সঠিক নয়।

এছাড়াও, অনুসন্ধানে ডাকসু নির্বাচনে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ভিপি পদে প্রার্থীদের পাওয়া ভোটের সংখ্যা নানা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও গত ১০ সেপ্টেম্বরে প্রচার হতে দেখা যায় যার সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত সংখ্যার মিল পাওয়া যায়।

পাশাপাশি, ১০ সেপ্টেম্বর ভোরে মূলধারার গণমাধ্যম যমুনা টিভি, এটিএন বাংলাসহ একাধিক গণমাধ্যমেও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ভিপি পদে প্রার্থীদের পাওয়া ভোটের সংখ্যা প্রচার হতে দেখা যায় যার সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত সংখ্যার মিল পাওয়া যায়।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে প্রকৃতপক্ষে আবিদুল ইসলাম খান ২৪৮ ভোট, সাদিক কায়েম ৬৭৪ ভোট, উমামা ফাতেমা ১৫১ ভোট, শামীম হোসেন ১৩১ ভোট ও আব্দুল কাদের ৭০ ভোট পেয়েছেন এবং মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও ফজলুল হক মুসলিম হলে আলোচিত প্রার্থীরা একইসংখ্যাক ভোট পেয়েছেন শীর্ষক দাবিটিও সঠিক নয়।

সুতরাং, ডাকসু নির্বাচনে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে আবিদুল ইসলাম খান ১৮১ ভোট, সাদিক কায়েম ৮৪১ ভোট, উমামা ফাতেমা ১৫৩ ভোট, শামীম হোসেন ১৪১ ভোট ও আব্দুল কাদের ৪৭ ভোট পেয়েছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

টঙ্গীতে আওয়ামী লীগের সমাবেশ দাবিতে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি, টঙ্গী, আব্দুল্লাহপুর এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশ দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে টঙ্গীতে আওয়ামী লীগের কোনো সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, গত ২৫ আগস্ট তুরাগ নদের ওপর বেইলি সেতু নির্মাণ ও সড়ক সংস্কারের দাবিতে সড়ক অবরোধের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Trinomul TV’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৫ আগস্ট ‘টঙ্গী ও ঢাকা আব্দুল্লাহপুর সংযোগস্থল তুরাগ নদীর উপর বেইলি ব্রিজ নির্মাণের জন্য মানববন্ধন’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর শুরু থেকে ১২ সেকেন্ড অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির বর্ণনা থেকে জানা যায়, ২৫ আগস্ট (সোমবার) সকাল ১০টা থেকে পৌনে এক ঘণ্টা গাজীপুরের টঙ্গী ও ঢাকার আবদুল্লাহপুরে যাতায়াতের জন্য তুরাগ নদের উপর বেইলি সেতু নির্মাণ ও সড়ক সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন স্থানীয় বাসিন্দা ও টঙ্গী বাজার এলাকার ব্যবসায়ীরা। 

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ২৫ আগস্ট  প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে টঙ্গী-আবদুল্লাহপুরের মাঝে তুরাগ নদের বেইলি সেতু নির্মাণ ও সড়ক সংস্কারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেন ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী। পরে তাঁরা টঙ্গী উড়ালসড়কের নিচে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ‘উত্তরা ও টঙ্গী গাজীপুরবাসী’র ব্যানারে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে তুরাগ নদের ওপর সেতু নির্মাণ করতে তাদের এক দফা, এক দাবি জানায়। এ সময় তারা আবদুল্লাহপুর সড়ক সংস্কারের দাবিও জানান।

অর্থাৎ, ভিডিওটি আওয়ামী লীগের সমাবেশের নয়।

সুতরাং, তুরাগ নদের ওপর বেইলি সেতু নির্মাণ ও সড়ক সংস্কারের দাবিতে সড়ক অবরোধের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র