Home Blog

সুদ খেলে এবাদত কবুল হয়না শীর্ষক মন্তব্য করেননি ধর্ম উপদেষ্টা, চ্যানেল২৪ এর নামে সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার 

0

সম্প্রতি মূলধারার গণমাধ্যম চ্যানেল২৪ এর আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন মন্তব্য করেছেন যে, “যারা সুদ খায় তাদের এবাদত কবুল হয়না।”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে  (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘যারা সুদ খায় তাদের এবাদত কবুল হয় না’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি ধর্ম উপদেষ্টা এবং উক্ত দাবিতে চ্যানেল২৪ কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে গণমাধ্যমটির ভিন্ন একটি ফটোকার্ডের শিরোনাম বদলে দিয়ে ভুয়া এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে এতে মূল ধারার গণমাধ্যম চ্যানেল২৪ এর লোগো লক্ষ্য করা যায় এবং এটি প্রকাশের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। পরবর্তীতে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে “যারা হারাম টাকার মালিক তাদের এবাদত কবুল হয়না: ধর্ম উপদেষ্টা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। তবে এই ফটোকার্ডে প্রচারিত শিরোনাম বদলে দিয়ে “যারা সুদ খায় তাদের এবাদত কবুল হয়না: ধর্ম উপদেষ্টা” বাক্য প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

অর্থাৎ, চ্যানেল২৪ এর এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদিত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

চ্যানেল২৪ এর ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে শবে বরাতের ফজিলত বয়ানে বলেছেন, যারা হারাম টাকার মালিক, অবৈধ টাকার মালিক তাদের এবাদত আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না।   

এই প্রতিবেদনে আলোচিত দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়নি।  

তাছাড়া, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, “যারা হারাম টাকার মালিক তাদের এবাদত কবুল হয়না: ধর্ম উপদেষ্টা” শীর্ষক শিরোনামে চ্যানেল২৪ এর নামে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

জুমার নামাজ ও ড. ইউনূসকে জড়িয়ে চ্যানেল২৪ এর নামে সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার 

0

সম্প্রতি মূলধারার গণমাধ্যম চ্যানেল২৪ এর আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, “বিশ্বের প্রভাবশালী মুসলিম ডা. ইউনূস প্রতি শুক্রবার জুমা না পড়ায় ক্ষোভ জানালো তৌহিদী জনতা”। 

ইউনূস

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে  (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘বিশ্বের প্রভাবশালী মুসলিম ডা. ইউনূস প্রতি শুক্রবার জুমা না পড়ায় ক্ষোভ জানালো তৌহিদী জনতা’ শীর্ষক দাবিতে চ্যানেল২৪ কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে গণমাধ্যমটির ভিন্ন একটি ফটোকার্ডের শিরোনাম বদলে দিয়ে ভুয়া এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে এতে মূল ধারার গণমাধ্যম চ্যানেল২৪ এর লোগো লক্ষ্য করা যায় এবং এটি প্রকাশের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। পরবর্তীতে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে “চলতি বছরের মে মাসে চবির সমাবর্তন, ডি.লিট ডিগ্রি পাচ্ছেন ড. ইউনূস” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। তবে এই ফটোকার্ডে প্রচারিত শিরোনাম বদলে দিয়ে “বিশ্বের প্রভাবশালী মুসলিম ডা. ইউনূস প্রতি শুক্রবার জুমা না পড়ায় ক্ষোভ জানালো তৌহিদী জনতা” বাক্য প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

অর্থাৎ, চ্যানেল২৪ এর এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদিত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

চ্যানেল২৪ এর ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতার বলেছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে চলতি বছরের মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে। ড. ইউনূসকে ডি. লিট. সম্মাননার মধ্য দিয়ে চবি শিক্ষার্থীদের বহুল আকাঙ্ক্ষিত ৫ম সমাবর্তন উদযাপিত হবে। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় নিজ বাসভবনে চ্যানেল 24 অনলাইনের সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি চবির ৫ম সমাবর্তন নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানান। 

এই প্রতিবেদনে আলোচিত দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, “বিশ্বের প্রভাবশালী মুসলিম ডা. ইউনূস প্রতি শুক্রবার জুমা না পড়ায় ক্ষোভ জানালো তৌহিদী জনতা” শীর্ষক শিরোনামে চ্যানেল২৪ এর নামে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে সহবাস প্রসঙ্গে মন্তব্য করেননি শায়খ আহমাদুল্লাহ, জনকণ্ঠের নামে সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার 

0

১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে জাতীয় দৈনিক জনকণ্ঠ এর আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, ইসলামিক স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ মন্তব্য করেছেন যে “ভ্যালেন্টাইনস ডে আমাদের সংস্কৃতি নয়। আমাদের সংস্কৃতি যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে সহবাস করা।”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে  (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে সহবাস প্রসঙ্গে সম্প্রতি কোনো মন্তব্য করেননি শায়খ আহমাদুল্লাহ এবং জনকণ্ঠও এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে জনকণ্ঠের ভিন্ন একটি ফটোকার্ডের শিরোনাম বদলে দিয়ে ভুয়া এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে এতে জাতীয় দৈনিক জনকণ্ঠ এর লোগো লক্ষ্য করা যায় এবং এটি প্রকাশের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। পরবর্তীতে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে এদেশের মাটি ও মানুষের সংস্কৃতি নয়।’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। তবে এই ফটোকার্ডে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে এদেশের মাটি ও মানুষের সংস্কৃতি নয়।’ শীর্ষক শিরোনাম থাকলেও আলোচিত ফটোকার্ডে তা বদলে দিয়ে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে আমাদের সংস্কৃতি নয়। আমাদের সংস্কৃতি যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে সহবাস করা।’ বাক্য উল্লেখ করা হয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

অর্থাৎ, জনকণ্ঠ এর এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদিত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

জনকণ্ঠ এর ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, ভ্যালেন্টাইনস ডে নিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি এক ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ভ্যালেন্টাইনস ডে এদেশের মাটি ও মানুষের সংস্কৃতি নয়। এই অপসংস্কৃতি বর্জন করুন। পবিত্র জীবন যাপন করুন। 

শায়খ আহমাদুল্লাহর ফেসবুক পেজের এই পোস্টে আলোচিত দাবি সংক্রান্ত কোনো বাক্য উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, “ভ্যালেন্টাইনস ডে আমাদের সংস্কৃতি নয়। আমাদের সংস্কৃতি যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে সহবাস করা : শায়খ আহমাদউল্লাহ” শীর্ষক শিরোনামে জনকণ্ঠের নামে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

মুসলিম ব্যক্তিদের লাশের ছবিকে হিন্দু দাবিতে অপপ্রচার

0

সম্প্রতি, “বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এর সদস্য টাঙ্গাইল জেলার এই দুই ভাই মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন করায় বিএনপি জামাত শিবিরের লোকজনরা রাতে বাসা থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। তাদের পরিবার থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ বিএনপি জামাত শিবিরের লোকজনদের বিরুদ্ধে মামলা নিবে না বলে ওদেরকে পাঠিয়ে দেয়। তার ২ দিন পর জেলা পরিষদের পাশে বিলে এই দুই জনের লাশ পাওয়া যায়।..” শিরোনামে একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। 

একই ছবিটি হিন্দু নির্যাতন নিয়ে প্রতিবাদ করায় দুজন বাংলাদেশি হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছে দাবিতে এক্সেও বিভিন্ন ভারতীয় এবং বাংলাদেশী অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এ দাবি সম্বলিত কিছু পোস্ট এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এক্সে প্রচারিত কিছু পোস্ট এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দুটি মরদেহ সম্বলিত প্রচারিত ছবিটি কোনো হিন্দু ব্যক্তির কিংবা টাঙ্গাইলের কোনো ঘটনার ছবি নয় এবং এ ছবির সাথে প্রচারিত দাবিগুলোও মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে, ছবির মৃত ব্যক্তিদ্বয় মুসলিম এবং ছবিটি গত বছরের ডিসেম্বরে কুমিল্লা থেকে উদ্ধার হওয়া দুটি লাশের।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Sayed Babu নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বরের একটি পোস্টে একই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পোস্টে ছবিটি যুক্ত করে লেখা হয়, “কুমিল্লার দেবিদ্বার উপ‌জেলার জাফরগঞ্জ এলাকায় নির্জন বিল থেকে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে‌ছে পু‌লিশ। নিহতরা হলো জাফরগ‌ঞ্জের মনিরুল ইসলাম  ও  খাগড়াছড়ি রামগড় এলাকার মোহন মিয়া।”

Comparison: Rumor Scanner 

পোস্টটি থেকে মরদেহ উদ্ধার হওয়া দুই ব্যক্তি যথাক্রমে মনিরুল ইসলাম এবং মোহন মিয়া বলে জানা যায়। 

পরবর্তীতে উক্ত ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এসব সংবাদ প্রতিবেদনের তথ্যের সাথে উপরের ফেসবুক পোস্ট এর তথ্যের মিল পাওয়া যায়। বিডিনিউজ২৪ এর একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, “মৃতরা হলেন-দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ গ্রামের দুলু মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (২৫) ও খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার সুখাকেন্দ্রায় গ্রামের রহুল আমিন মিয়ার ছেলে মোহন মিয়া (৩৫)।”

উক্ত ঘটনার উপর এনটিভি এর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, “কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ এলাকায় বিলের মধ্যে থেকে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আজ রোববার (৮ ডিসেম্বর ২০২৪) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন দেবিদ্বার জাফরগঞ্জ এলাকার মনিরুল ইসলাম ও অন্যজন হলেন খাগড়াছড়ি রামগঞ্জ এলাকার মোহন মিয়া। নিহত দুজনেই ইন্টারনেটের বিল উত্তোলনসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাজ করতেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দেবিদ্বার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ মো. শাহিন জানান, এটা হত্যাকাণ্ড নাকি অন্য কিছু তা এখন বলা সম্ভব না। তবে অনেকগুলো তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও তদন্ত চলছে। তদন্তের পরে বিস্তারিত বলা যাবে।”

অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিটির মৃত দুজন ব্যক্তিই ইসলাম ধর্মের এবং তাদের মরদেহ গত বছর ডিসেম্বরে কুমিল্লা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। 

সুতরাং, হিন্দু নির্যাতন নিয়ে প্রতিবাদ করায় টাঙ্গাইলে দুজন হিন্দু ব্যক্তিকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ বিলে ফেলে রাখা হয়েছে বলে প্রচারিত দাবিগুলি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

১ দিনে ৬ কোটি টাকার কনডম বিক্রি শীর্ষক খবর প্রকাশ করেনি প্রথম আলো

0

সম্প্রতি, জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো ‘১ দিনেই ৬ কোটি টাকার কনডম বিক্রি করা হয়েছে।’ শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে দাবিতে কথিত সংবাদটির একটি স্ক্রিনশট ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

কনডম বিক্রি

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, “১ দিনেই ৬ কোটি টাকার কনডম বিক্রি হয়েছে” শিরোনামে প্রথম আলোর সংবাদের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি আসল নয়। এটি ২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোতে প্রকাশিত “একদিনেই ৬ কোটি টাকার ফুল বিক্রি” শীর্ষক একটি প্রতিবেদনের শিরোনামকে সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়েছে। মূল প্রতিবেদনে যশোরের ফুলের বাণিজ্য সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হয়েছিল, যেখানে বলা হয়েছিল যে ভালোবাসা দিবস ও পয়লা ফাল্গুন উপলক্ষে ৬ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। তবে সম্পাদিত ছবিতে “ফুল” শব্দটিকে “কনডম” দিয়ে প্রতিস্থাপন করে ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয়েছে। 

রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে প্রথম আলো এবং অন্যান্য মূলধারার গণমাধ্যমে উল্লিখিত কনডম বিক্রি সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পায়নি। এছাড়া, ফেসবুকে প্রচারিত ছবিটির ফন্ট এবং ফরমেট প্রথম আলোর মূল ফন্টের সাথে মিলে না। ২০১৯ সাল থেকেই এই সম্পাদিত ছবিটি ভালোবাসা দিবসের সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বারবার শেয়ার হয়ে আসছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার।

১৪ ফেব্রুয়ারি নিয়ে সেনাবাহিনীর মাইকিং দাবিতে সম্পাদিত ভিডিও প্রচার

0

আজ (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভ্যালেন্টাইনস ডে বা ভালোবাসা দিবস। সম্প্রতি এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও সামনে হ্যান্ডমাইক হাতে একজন সেনা সদস্য ঘোষণা করছেন, “আসিতেছে ১৪-ই ফেব্রুয়ারি। এইদিনে অবিবাহিত কোনো ছেলে-মেয়েকে একসাথে পাওয়া গেলে ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পানিতে চুবিয়ে রাখার আদেশ করা হইলো।”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

সেনাবাহিনীর মাইকিং

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত উক্ত টিকটক ভিডিওটি ১ কোটি ২১ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ৫ লক্ষ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে লাইক দেওয়া হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৪-ই ফেব্রুয়ারিতে অবিবাহিত কোনো ছেলে-মেয়েকে একসাথে পাওয়া গেলে ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পানিতে চুবিয়ে রাখার কোনো আদেশ সেনাবাহিনী বা সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, করোনাকালীন সময়ে সেনাসদস্যের মাইকিংয়ের ভিন্ন ঘটনার দৃশ্যতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আলোচিত অডিওটি সংযুক্ত করে এই ভুয়া দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য বা প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির ব্যাপারে অনুসন্ধান করলে মূলধারার গণমাধ্যম এটিএন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে “করোনা সচেতনতা সৃষ্টিতে প্রশাসনের সঙ্গে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা” শীর্ষক শিরোনামে ২০২০ সালের ২৮ মার্চে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটির ৩৬ সেকেন্ড পরবর্তী সময়ের দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্যের তুলনা করলে হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া যায়। সংবাদ প্রতিবেদনটিতে দৃশ্যটি সম্পর্কে বলা হয় এটি নোয়াখালীতে ধারণকৃত এবং করোনার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে কাজ করছে সেনাবাহিনী। তবে, উক্ত সেনা সদস্য হ্যান্ডমাইকে কী বলছিলেন তা শোনা যায়নি। তবে উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনে ভালোবাসা দিবসের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি এবং সংবাদ প্রতিবেদনটি প্রকাশের সময়কালও ভালোবাসা দিবস পেরিয়ে যাওয়ার প্রায় দেড় মাস পর। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে উক্ত সেনা সদস্য ভালোবাসা দিবস নয় বরং করোনার বিষয়ে জনসচেতনতামূলক কোনো কথা বলছিলেন।

সুতরাং, প্রায় পাঁচ বছর আগে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত জনসচেতনতা তৈরিতে সেনা সদস্যের মাইকিংয়ের ভিডিওতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন অডিও সংযুক্ত করে ১৪ ফেব্রুয়ারি নিয়ে সেনাবাহিনীর মাইকিং দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির হিন্দু বাড়ির আগুনের ঘটনাকে সাম্প্রতিক ঘটনা হিসেবে প্রচার

0

সম্প্রতি, হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা দাবিতে বেশকিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পোস্টগুলোর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “হিন্দু’র বাড়ি পুড়ছে, এটা কাফির মত সংখ্যাগুরু মুসলিমের বাড়ি না। তাই মিডিয়া এখানে নিশ্চুপ। এটাই বাংলাদেশি মিডিয়া, ছিঃ ধিক্কার আপনাদের। 

দুটি সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবার দুষ্কৃতীকারীদের আগুনে সর্বশান্ত হয়ে গেছে। মেয়ের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বিয়ের সমস্ত বাজার ঘরে, বাদ যায়নি বিয়ের শাড়িটাও। একমাত্র আয়ের উৎস ভ্যানটিও পুড়ে ছাই। উল্লেখ্য, গতকাল পিরোজপুরের ডুমুরিতলা, শারিকতলা ইউনিয়নের, সাহা পারায় রাতের অন্ধকারে সমীর সাহা এবং কালা সাহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের ভাষ্যমতে রাতের আঁধারে দুষ্কৃতীকারীরা তাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। 

তারা অভিযোগ করেছে রাতের অন্ধকারে ঘরের চারপাশ থেকে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার উদ্দেশ্য ছিল দুষ্কৃতীকারীদের। এই বাড়িতে গত মাসেও একবার আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় দুষ্কৃতীকারীদের চেষ্টা সফল হয়েছে।”

আগুনের ঘটনা

এমন দাবির কিছু পোস্ট এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত স্থানে উল্লিখিত ব্যক্তিদের বাড়িতে আগুনের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং গত বছরের (২০২৪) ফেব্রুয়ারির একটি ঘটনাকে সাম্প্রতিক হিসেবে নতুন করে প্রচারের ঘটনা ঘটেছে।

অনুসন্ধানে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে একই ধরনের ক্যাপশনে এবং ছবির বিভিন্ন পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। গৌতম হালদার নামের একটি ফেসবুক আইডির ২০২৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারির একটি পোস্টে একই ছবিগুলো হুবহু একই ক্যাপশনে পাওয়া যায়। যার মাধ্যমে ঘটনাটি গত বছরের বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে উক্ত ঘটনার ওপর বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদ পাওয়া যায়। ২০২৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ঢাকা মেইল-এর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, ওইদিন ভোররাতে পিরোজপুর সদর উপজেলার পশ্চিম ডুমরিতলা গ্রামে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে তিনটি বাড়ি পুড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে রয়েছেন ভ্যানচালক দিপঙ্কর সাহা কালা, মৃনাল কান্তি সাহা ও সুকান্ত সাহা। আগুনে দিপঙ্করের ভ্যানসহ ঘরের সবকিছু ভস্মীভূত হয়।

প্রতিবেদনে দিপঙ্কর সাহার বক্তব্য উদ্ধৃত করে লেখা হয় “রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে ঘরের মধ্যে আগুন দেখতে পেয়ে আমি চিৎকার দিই। তখন ঘরের প্রায় সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পাশের মন্দিরসহ আত্মীয় মৃনাল কান্তি সাহা ও সুকান্ত সাহার ঘরেও আগুন লাগায় দুর্বৃত্তরা। কয়েক দিন আগেও তারা আমাদের ঘরে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, যা নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছিল।”

এ বিষয়ে দিপঙ্কর সাহা কালার সঙ্গে মুঠোফোনে রিউমর স্ক্যানার এর কথা হলে তিনি বলেন, ঘটনাটি গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঘটেছে। তবে কে বা কারা আগুন লাগিয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি বলে তিনি জানান।

সুতরাং, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের একটি আগুনের ঘটনাকে সাম্প্রতিক ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির ঘটনা হিসেবে প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

আয়নাঘর নিয়ে শেখ হাসিনার স্বীকারোক্তির এই ভিডিও ডিপফেক প্রযুক্তিতে তৈরি

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেখ হাসিনার স্বীকারোক্তি সদৃশ একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, “হাসিনার স্বীকারোক্তি—কীভাবে আয়নাঘর তৈরি হলো, কীভাবে নির্যাতন ও ভয়ের মাধ্যমে আয়নাঘরে দিনের পর দিন আটকে রাখা হয়”।

কথিত শেখ হাসিনার স্বীকারোক্তির উক্ত ভিডিওটিতে শেখ হাসিনাকে আয়নাঘর বিষয়ে নানা কথা বলতে দেখা যায়। শেখ হাসিনা বলেন, আয়নাঘরের বুদ্ধি তারেক সিদ্দিকী দিয়েছেন। ক্রসফায়ারে লোক জানাজানি ও সমালোচনা বেশি হওয়ায় আয়নাঘরের পরীক্ষামূলক পরিকল্পনা করা হয়৷ তিন ফুট বাই তিন ফুট ঘর বানিয়ে প্রথমে বিরোধী দলীয় নেতা ও সাংবাদিকদের তুলে আনা হয়। এছাড়াও আয়নাঘরের পরিবেশসহ নানা বিষয়ে শেখ হাসিনাকে কথা বলতে দেখা যায়।

উক্ত ভিডিওটি আয়নাঘর বিষয়ে শেখ হাসিনার স্বীকারোক্তির দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত সবচেয়ে ভাইরাল ভিডিওটি প্রায় ৫০ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ৩৬ হাজারটি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আয়নাঘর বিষয়ে শেখ হাসিনার স্বীকারোক্তির ভিডিও দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয় বরং ডিপফেক প্রযুক্তির সহায়তায় শেখ হাসিনার প্রায় পাঁচ বছরের পুরোনো ভিন্ন একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও ব্যবহার করে তাতে ভুয়া অডিও সংযুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করে প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে শেখ হাসিনা এরূপ স্বীকারোক্তি কাকে, কখন দিয়েছেন সে বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। পরবর্তী অনুসন্ধানে এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণও মেলেনি।

অনুসন্ধানে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজের বাংলা সংস্করণের ইউটিউব চ্যানেলে “শেখ হাসিনা: নির্বাচন, গণতন্ত্র, মানবাধিকারসহ সাম্প্রতিক ইস্যু নিয়ে বিবিসির মুখোমুখি প্রধানমন্ত্রী” শীর্ষক শিরোনামে ২০১৯ সালের ৬ আগস্টে প্রচারিত শেখ হাসিনার একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনার পরিধেয় পোশাক, পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায়। এছাড়া, উক্ত ভিডিওতে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার নেওয়া নারী বিবিসি বাংলার মানসী বড়ুয়ার উপস্থিতিও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে লক্ষ্য করা যায়। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্য মূলত উক্ত সাক্ষাৎকার থেকেই নেওয়া হয়েছে। 

Comparison : Rumor Scanner

কিন্তু, শেখ হাসিনার উক্ত সাক্ষাৎকারটি শুনলে তাতে শেখ হাসিনাকে আয়নাঘর বিষয়ে আলোচিত দাবির কথাগুলো বলতে শোনা যায়নি। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া উক্ত সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বরং বাংলাদেশে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন ও ‘ত্রুটিপূর্ণ’ গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যা, ব্যাংকিং খাতের নাজুক অবস্থা, পদ্মা সেতুতে কাটা মাথার গুজব ও তাকে কেন্দ্র করে গণপিটুনিতে হত্যা, ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ব্যর্থতা, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও দেশ ছেড়ে যেতে গিয়ে নিম্নবিত্ত আয়ের লোকেদের ভূ-মধ্যসাগরে মারা যাওয়ার ঘটনাসহ সেসময়ের সমসাময়িক নানা বিষয়ে কথা বলেন। তাছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে শেখ হাসিনার অঙ্গভঙ্গিতেও কিছুটা অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায় যেটি মূল সাক্ষাৎকার ভিডিওতে পরিলক্ষিত হয়নি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত উক্ত ভিডিওটির সম্ভাব্য মূল ভিডিও আরটিনিউজ২৪ বিডি নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির বর্ণনা অংশ পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিও কনটেন্টটি পরিবর্তিত বা কৃত্রিম এবং এর শব্দ বা ভিজ্যুয়াল উল্লেখযোগ্যভাবে সম্পাদিত বা ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে বলে লেবেল করা হয়েছে। 

এই চ্যানেলের অধীনে থাকা ফেসবুক পেজেও আলোচিত ভিডিওটি পোস্ট করেছে। তবে সেখানে এরূপ কোনো লেবেল বা সতর্কতা দেওয়া হয়নি বরং, আসল দাবিতেই পোস্ট করেছে।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, মূলত প্রায় পাঁচ বছর পূর্বে বিবিসি বাংলাকে শেখ হাসিনার দেওয়া উপরোল্লিখিত সাক্ষাৎকার ভিডিওটির দৃশ্য নিয়ে তাতে ডিপফেক প্রযুক্তির সহায়তায় শেখ হাসিনার ভুয়া অডিও সংযুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য যে, ডিপফেক হল বাস্তবসম্মত দেখতে কিন্তু নকল বা কিছুটা পরিবর্তিত কন্টেন্ট যা ভিডিও বা অডিওর উপাদান সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়। ডিপফেক ভিডিওতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে একজন ব্যক্তির মুখের অবয়ব বা ভয়েসকে অন্য কারোর সাথে বা নিজেরই ভুয়া ভিন্ন ঘটনার ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই প্রযুক্তির সহায়তায় একজন ব্যক্তির এমন কিছু ভিডিও বা অডিও কন্টেন্ট তৈরি করা সম্ভব যা তিনি নিজে বলেননি বা করেননি।

এই ইউটিউব চ্যানেল পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, তারা নিয়মিতভাবে এআই এবং বিভিন্ন প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি এমন ভুয়া কনটেন্ট প্রচার করে থাকে। উক্ত ফেসবুক পেজটি থেকে এর আগে এরকম আরেকটি এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও আসল দাবিতে প্রচার করা হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, শেখ হাসিনার পুরোনো সাক্ষাৎকার ভিডিওর দৃশ্যতে ডিপফেক প্রযুক্তির সহায়তায় শেখ হাসিনার ভুয়া অডিও যুক্ত করে আয়নাঘর বিষয়ে শেখ হাসিনার স্বীকারোক্তির ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ঢাবিতে ট্রাম্প এবং নেতানিয়াহুর ছবিতে জুতা নিক্ষেপ নিয়ে ট্রাম্প এক্সে কোনো পোস্ট করেননি 

0

সম্প্রতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েলের প্রসিডেন্ট বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ছবিতে জুতা নিক্ষেপের কর্মসূচী পালন করে শিক্ষার্থীরা। 

উক্ত কর্মসূচির প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট দিয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাবিতে ট্রাম্প এবং নেতানিয়াহুর ছবিতে জুতা নিক্ষেপ করা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক্সে কোনো পোস্ট করেননি।

প্রচারিত পোস্টের এক্স অ্যাকাউন্টটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অফিশিয়াল কোনো অ্যাকাউন্ট নয় বরং অ্যাকাউন্টে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এটি একটি ব্যক্তিগত প্রোফাইল যা একজন সাধারণ নাগরিক পরিচালনা করেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত পোস্টগুলোতে থাকা এক্স অ্যাকাউন্টের পোস্টের স্ক্রিনশট সূত্রে এক্সে ‘Donald J. Trump🇺🇲 Update’ নামক উক্ত এক্স অ্যাকাউন্ট ও উক্ত এক্স পোস্টটি খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার। 

Screenshot: X

উক্ত এক্স অ্যাকাউন্টটির বায়োতে লেখা পরিচিতি থেকে জানা যাচ্ছে, এটি অফিসিয়াল কোনো অ্যাকাউন্ট নয়। এর বায়ো অনুযায়ী, এটি একটি ব্যক্তিগত প্রোফাইল যা একজন সাধারণ নাগরিক পরিচালনা করেন। অ্যাকাউন্টটি সর্বশেষ খবর গুলো পোস্ট করে থাকে। 

অ্যাকাউন্টটির নামের পাশে ভেরিফাইড চিহ্ন থাকলেও এটি এক্স প্ল্যাটফর্মের পেইড সাবস্ক্রিপশন মডেলের মাধ্যমে অর্জিত। ২০২১ সালে চালু হওয়া এই মডেলে নির্দিষ্ট একটি মাসিক ফি প্রদান করে যেকোনো ব্যবহারকারী ব্লু টিক ভেরিফিকেশন পেতে পারেন। তাই ভেরিফাইড চিহ্ন থাকলেও এটি কোনো সরকারি বা অফিসিয়াল সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করে না। এছাড়া, ডোনাল্ড ট্রাম্পের অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টেও উক্ত দাবিতে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, আলোচিত পোস্ট দেওয়া এক্স অ্যাকাউন্টটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের নয়। 

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় গণমাধ্যমেও আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, ঢাবিতে ট্রাম্প এবং নেতানিয়াহুর ছবিতে জুতা নিক্ষেপ নিয়ে ট্রাম্প এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করেছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

এখন টিভির ফটোকার্ড নকল করে মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের ভূমিকা প্রসঙ্গে সংগঠনটির আমীরের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি, “’৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল জামাত ইসলামের সঠিক সিদ্ধান্ত’- জামায়াতের আমির” শীর্ষক শিরোনামে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এখন টিভির ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “’৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল জামাত ইসলামের সঠিক সিদ্ধান্ত’- জামায়াতের আমির” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে এখন টিভির কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে এখন টিভির ডিজাইন নকল করে এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে এখন টিভির লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।

পরবর্তী অনুসন্ধানে এখন টিভির লোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে ‘’৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল জামাত ইসলামের সঠিক সিদ্ধান্ত’- জামায়াতের আমির’ শীর্ষক শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, এখন টিভির ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Comparison: Rumor Scanner

তবে গত ৩ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে “’ন্যূনতম সংস্কারের আগে নির্বাচন দেয়া ঠিক হবে না’-জামায়াত আমির” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। 

অর্থাৎ, এখন টিভির এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং,  “৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল জামাত ইসলামের সঠিক সিদ্ধান্ত- জামায়াতের আমির” শীর্ষক শিরোনামে এখন টিভির নামে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র