Home Blog

গোপালগঞ্জে অবরুদ্ধ এনসিপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

গতকাল ১৬ জুলাই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মার্চ টু গোপালগঞ্জ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দলটির নেতাকর্মীরা গোপালগঞ্জে যান। তারা পৌঁছানোর আগেই সমাবেশস্থলে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরপরও সমাবেশ করেন দলটির নেতাকর্মীরা। তবে পরবর্তীতে বিকেলেই সেনাবাহিনীর এপিসি (আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার) ব্যবহার করে তাদের গোপালগঞ্জ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দিরভর সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৪ জন নিহত হন।

এরই প্রেক্ষাপটে, রাতের একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে এটি অবরুদ্ধ এনসিপি নেতাকর্মীদের ওপর দ্বিতীয় দফায় হামলার দৃশ্য। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি গতকাল অর্থাৎ, ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে অবরুদ্ধ এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর স্থানীয় আওয়ামী সমর্থকদের দ্বিতীয় দফায় হামলার কোনো দৃশ্যের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২১ সালে গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার এতে dhakawave.com লেখা একটি লোগো দেখতে পায়। 

পরবর্তীতে প্রাপ্ত লোগোর সূত্র ধরে অনলাইনভিত্তিক গণমাধ্যম ঢাকাওয়েভ-এর ফেসবুক পেজ Dhakawave Digital পর্যবেক্ষণ করে পেজটিতে ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর প্রচারিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।   

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশনের দাবি অনুযায়ী, এটি ২০২১ সালে গোপালগঞ্জে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের হওয়া দফায় দফায় সংঘর্ষ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপের সময় ধারণ করা হয়। ভিডিওতে। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গেটের বাইরে অবস্থানরত পুলিশকে ধাওয়া দিতেও দেখা যায়। আলোচিত ভিডিওতে মূলত সেই অংশটুকুই দেখানো হয়েছে। 

প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হামলা, ভাঙচুরের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন  শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদ খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেবছর ২১ নভেম্বর রাতে মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের মসজিদের সামনের রাস্তার ওপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্রিকেট খেলছিলেন। এসময় মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা তাঁদের সেখানে খেলতে নিষেধ করায় উভয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে উভয় প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা সংঘটিত হয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ৫ পুলিশ সদস্য, সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হন বলেও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়। মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ জাকির হোসেন মেডিকেল কলেজের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূচনা হওয়ার অভিযোগ করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বলেও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি গতকাল ১৬ জুলাইয়ের নয়।

সুতরাং, ২০২১ সালে গোপালগঞ্জের বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সংঘর্ষের ভিডিওকে গতকাল গোপালগঞ্জে অবরুদ্ধ এনসিপি নেতাকর্মীদের ওপর দ্বিতীয় দফায় হামলার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গোপালগঞ্জে জনতার ওপর সেনাবাহিনীর হামলার দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

গতকাল (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে এনসিপির জুলাই পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত ৪ জন নিহত হন। উক্ত ঘটনার পর গতকাল রাত ৮ টা থেকে থেকে আজ সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে, “সন্ধ্যার পর থেকে গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর তাণ্ডব শুরু করেছে, রেহাই পায়নি ছোট্ট ছোট্ট শিশুরা ও মা বোনেরা । শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

জনতা

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনী কর্তৃক জনতাকে মারধরের দৃশ্যের নয় বরং, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ এর বনানীর বাড়িতে লুটপাটের চেষ্টাকালে সেনাবাহিনীর প্রতিহত করার ভিডিও দাবিতে ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান রয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওর কী-ফ্রেমের রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Injamamul Hoq’ নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ১০ই আগস্ট প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, “২০২৪ সালের ৭ আগস্ট রাত ১১টায় বনানীর ৮ নম্বর রোডে আওয়ামী যুবলীগ নেতা শেখ পরশের বাসভবনে বস্তির কিছু লোক ডাকাতি ও লুটতরাজের উদ্দেশ্যে প্রবেশ করে। ঘটনার সময় তাৎক্ষণিকভাবে খবর পেয়ে বনানী থানা বিএনপির ২ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ইমান হোসেন নূর, পাঞ্জাবি পরিহিত অবস্থায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর সহায়তা চান। সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডাকাতদের প্রতিহত করতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে তারা শেখ পরশের বাড়িটি বনানী সোসাইটির নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে বুঝিয়ে দেন।”

সেসময় একই দাবিতে বিভিন্ন ইউটিউব অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি (, , ) পোস্ট হতে দেখা যায়।

প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে গুগল ম্যাপের সহায়তায় বনানী ৮ নাম্বার রোডের স্ট্রিটভিউ পর্যালোচনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওর বাড়ির সাথে স্ট্রিটভিউয়ের বাড়ির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। প্রচারিত ভিডিওতে থাকা বাড়ির বিপরীত পাশের বাড়ির দেয়ালে আওয়ামী লীগ ও পরশের ছবি সম্বলিত বিভিন্ন পোস্টার দেখতে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Google Maps 

উল্লেখ্য, ভিডিওতে সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত ব্যক্তির নাম মোঃ ইমান হোসেন নূর, তিনি বনানী থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। আলোচিত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তির সাথে উক্ত ব্যক্তি চেহারা ও শারীরিক গঠনের মিল রয়েছে। 

College: Rumor Scanner

অর্থাৎ, এটি নিশ্চিত যে আলোচিত ভিডিওটি গত আগস্ট মাসে রাজধানীর বনানীতে ধারণ করা।

সুতরাং, ২০২৪ সালে আগস্ট মাসে বনানীর একটি বাড়িতে লুটপাটের চেষ্টাকালে সেনাবাহিনীর প্রতিহত করার দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ে গোপালগঞ্জে জনতার ওপর সেনাবাহিনীর হামলার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় রুহুল কবির রিজভীর নামে ভুয়া পেজ থেকে অপপ্রচার

গতকাল (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে এনসিপির জুলাই পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত ৪ জন নিহত হন। এরই প্রেক্ষিতে, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ফেসবুকে পোস্ট করে,  “গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর গুলিতে ইতোমধ্যে ৮-১০ জন সাধারণ মানুষের নিহত হওয়ার খবরে জনমনে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। বৃহত্তর ফরিদপুর—ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও শরীয়তপুর—সব জেলা থেকে সাধারণ মানুষ এখন একতাবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। এই মুহূর্তে গোপালগঞ্জে আশ্রয় নেওয়া এনসিপি নেতারা যে পথেই পালানোর চেষ্টা করবে, সেই সব রাস্তাঘাট আগে থেকেই ঘিরে ফেলুন। জনগণের হত্যাকারীদের যেন পালিয়ে যাওয়ার একটিও সুযোগ না থাকে!” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন এমন একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত পোস্টটি রুহুল কবির রিজভী করেননি বরং তার নাম ব্যবহার করে পরিচালিত একটি ফেক পেজের এই পোস্টকে রুহুল কবির রিজভীর আসল পোস্ট ভেবে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

রুহুল কবির রিজভী’র নামে পরিচালিত উক্ত ফেসবুক পেজটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি তাতে প্রায় ১৯,০০০ ফলোয়ার রয়েছে এবং এটি ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট তৈরি করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook 

উক্ত ফেসবুক পেজটি পর্যবেক্ষণ করে এটি রিজভীর ফেসবুক পেজ কিনা তা নিয়ে সন্দেহ হয় রিউমর স্ক্যানার টিমের। পরবর্তীতে এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি রুহুল কবির রিজভীর নামে পরিচালিত একটি ভুয়া ফেসবুক পেজ। ফেসবুকে রুহুল কবির রিজভীর কোনো অফিশিয়াল পেজ নেই। (,)

সুতরাং, গোপালগঞ্জের সংঘর্ষে নিহত ইস্যুতে রুহুল কবির রিজভীর নামে পরিচালিত ফেক ফেসবুক পেজের পোস্টকে রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

এনসিপির নেতাকর্মীদের সেনা সদস্যের পায়ে ধরে আকুতি জানানোর দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার 

0

গোপালগঞ্জে গতকাল (১৬ জুলাই) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ও সমাবেশে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। সমাবেশ শেষে এনসিপির নেতাকর্মীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। এরপর সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে গোপালগঞ্জ ছাড়েন এনসিপির নেতারা। দিনভর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত ৪ জন নিহত হন। 

এরই প্রেক্ষিতে, গতকাল (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জের ঘটনায় নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সেনাবাহিনীর পায়ে ধরে এনসিপির নেতাকর্মীদের আকুতি করার দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন ব্যক্তি সেনাবাহিনীর সদস্যদের পায়ে ধরে রেখেছেন। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সেনা সদস্যদের পা ধরে কয়েকজন ব্যক্তির আকুতি জানানোর এই ভিডিওটি গোপালগঞ্জের নয় বরং, এটি গত মে মাসে চার দফা দাবি আদায়ে সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্যদের আন্দোলনের ঘটনার ভিডিও।

অনুসন্ধানে ‘Asif Creation’ নামক একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ১৮ মে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে দাবি করা হয়, প্রচারিত ভিডিওটি সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্যদের কর্তৃক চাকরিরত সদস্যদের পায়ে ধরার দৃশ্যের। 

উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম বাংলাদেশ প্রতিদিনের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে সাংবাদিককে বলতে শোনা যায়, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্যরা চার দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন। সেইসব সেনাবাহিনীর গাড়ি আটকে দেয় এবং গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন। 

ভিডিওটিতে দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা সেনাসদস্যদের পায়ে ধরেছেন এবং ধারাভাষ্যে একই বর্ণনা সাংবাদিককেও দিতে শোনা যায়। এছাড়া ভিডিওটিতে ‘জাতীয় প্রেস ক্লাব’ নামফলক যুক্ত ভবনও দেখা যায়। 

Image By Rumor Scanner 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি গতকালের গোপালগঞ্জের দৃশ্যের নয়। 

এরপর প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগো নিউজে গত ১৮ মে “কর্মকর্তাদের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়লেন চাকরিচ্যুত সেনা সদস্যরা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চার দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন করছেন সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্যরা। এর অংশ হিসেবে গত ১৮ মে বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে তাদের বৈঠক হয় সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তবে বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় তারা কর্মকর্তাদের গাড়ি আটকে গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন।

সুতরাং, গত মে মাসে চার দফা দাবি আদায়ে সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্যদের আন্দোলনের ঘটনার ভিডিওকে গোপালগঞ্জে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য এনসিপি নেতাদের সেনাবাহিনীর সদস্যদের পায়ে ধরে আকুতি জানানোর দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

গোপালগঞ্জের ঘটনায় খুলনায় বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

গতকাল (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে এনসিপির জুলাই পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত ৪ জন নিহত হন।

এরই প্রেক্ষিতে আজ (১৭ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “গোপালগঞ্জ ইউনূসের নির্দেশে গণহত্যার প্রতিবাদ খুলনায় বিক্ষোভ মিছিল করে আওয়ামী লীগ৷”

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গত ১৬ জুলাইয়ে গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে খুলনায় বিক্ষোভ মিছিলের দৃশ্যের নয় বরং, গত ২০ এপ্রিলে খুলনায় হওয়া আওয়ামী লীগের এক ঝটিকা মিছিলের ভিডিও আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে মূলধারার গণমাধ্যম চ্যানেল২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে “খুলনায় আওয়ামী লীগের মিছিল, নেতা-কর্মীদের খুঁজছে পুলিশ ” শীর্ষক শিরোনামে গত ২০ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও, “খুলনার জিরো পয়েন্টে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ঝটিকা মিছিল” শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলেও গত ২০ এপ্রিলে আলোচিত মিছিলের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হতে দেখা যায়।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে আরেক মূলধারার গণমাধ্যম ‘কালের কণ্ঠ’ এর ওয়েবসাইটে “খুলনায় ‘কয়েক মিনিট’ মিছিল দিলেন আ.লীগ নেতাকর্মীরা” শীর্ষক শিরোনামে এ বিষয়ে গত ২০ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটিতে সংযুক্ত ছবির সাথেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্যের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

মিছিলটির বিষয়ে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “খুলনায় ঝটিকা মিছিল করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। রবিবার (২০ এপ্রিল) সকালে শহরতলীর জিরোপয়েন্ট এলাকা থেকে এ ঝটিকা মিছিল বের হয়। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই মিছিলটি শেষ হয়। এতো দ্রুত মিছিলটি শেষ হয়েছে যে মিছিলকারীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।” এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি গত ২০ এপ্রিলের।

সুতরাং, গত ২০ এপ্রিলে খুলনায় হওয়া আওয়ামী লীগের এক ঝটিকা মিছিলের দৃশ্যকে গত ১৬ জুলাইয়ে গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে খুলনায় বিক্ষোভ মিছিলের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

জুলাই আন্দোলনে অস্ত্রধারী ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীর পুরোনো ছবিকে গোপালগঞ্জের গতকালের দৃশ্য দাবিতে প্রচার

২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে এবছর জুলাই মাস জুড়ে দেশের প্রতিটি জেলায় পদযাত্রা করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। উক্ত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ যায় দলটির নেতাকর্মীরা। তবে কর্মসূচিটির নাম দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা দেওয়া হলেও গোপালগঞ্জের কর্মসূচিটিকে তারা মার্চ টু গোপালগঞ্জ হিসেবে অভিহিত করেন। এনসিপির এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গতকাল গোপালগঞ্জের আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। যাতে অন্তত ৪ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি অনেকে আহতও হন। উক্ত সংঘর্ষের সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মাঠে নামেন দাবিতে কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে গণমাধ্যম কর্মীদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

অস্ত্রধারী ব্যক্তিদের একই ছবি ফেসবুকে প্রচার করে ভিন্ন দাবি করতেও দেখা যায়। পোস্টটিতে দাবি করা হয়, অস্ত্রধারী এই ব্যক্তিরা এনসিপির সদস্য। যারা গতকাল পুলিশ ও সেনাবাহিনীদের সাথে একত্র হয়ে গোপালগঞ্জ বাসীদের ওপর হামলা চালায়। এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত ছবিগুলোর পাশাপাশি দেশীয় অস্ত্র হাতে কয়েকজন ব্যক্তির ছবিও ফেসবুকে প্রচার করা হয়। ছবিগুলো প্রচার করে দাবি করা হয়, এই ছবিগুলোও গতকাল গোপালগঞ্জে ধারণ করা। যাতে গতকাল এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণকারী আওয়ামী সমর্থকদের দেখা যাচ্ছে। এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অস্ত্রধারী ব্যক্তিদের ছবিগুলো গতকাল গোপালগঞ্জের সংঘর্ষের সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, গতবছর কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন জুলাইয়ের বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীদের হামলার ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তিন ব্যক্তির ছবিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক যুগান্তর ও খবরের কাগজ-এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের জুলাই ও সেপ্টেমর মাসে চট্টগ্রামে সংঘর্ষে নিহত ৩ এবং অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করা সেই ফিরোজ গ্রেফতার শিরোনামে প্রকাশিত দুটি পৃথক পৃথক প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনগুলোতে ব্যবহৃত ছবিগুলোর সাথে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ব্যক্তিদের ছবির হুবহু মিল লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়, ছবিগুলো গতবছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সময় ধারণ করা হয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি করা যুবকরা ছাত্রলীগের কর্মী। 

Image Comparison by Rumor Scanner 

অপরদিকে আরেক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, হেলমেট পরিহিত অবস্থায় গুলি করতে দেখা ব্যক্তির নাম মো. ফিরোজ। তিনি চট্টগ্রাম নগরীর যুবলীগ কর্মী। চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি করে সায়মন ওরফে মাহিন নামের দোকান কর্মচারী হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম ডেইলি স্টার-এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই ডেইলি স্টারের ক্যামেরায় সায়েন্সল্যাবে রামদা-লাঠিসোঁটা হাতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত পোস্টে দেখতে পাওয়া দেশীয় অস্ত্রধারী ব্যক্তিদের ছবির সাথে উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত দুটি ছবির হুবহু মিল রয়েছে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিগুলো গতবছর জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন ঢাকার সায়েন্সল্যাব এলাকায় ১৬ ‍জুলাই ধারণ করা হয়। ছবিগুলোতে দেখতে পাওয়া অস্ত্রধারী ব্যক্তিরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

সুতরাং, গতবছরের জুলাই মাসে আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পুরোনো ছবিকে গোপালগঞ্জে অস্ত্রধারী আওয়ামী লীগ ও এনসিপি সমর্থকদের ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গোপালগঞ্জে নিহত ব্যক্তির ছবি দাবিতে জুলাই আন্দোলনকারীর ছবি প্রচার গণমাধ্যমে

গতকাল (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে এনসিপির জুলাই পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত ৪ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে একজনের নাম রমজান কাজী বলে একাধিক গণমাধ্যমের সূত্রে জানা যায়। এই প্রেক্ষাপটে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে এক যুবককে বলতে শোনা যায়, “প্রয়োজনে জীবন দিব, আমার ভাই রক্ত দিয়েছে, আমিও রক্ত দিব।” ভিডিওটি আওয়ামী লীগের একজন সমর্থকের বক্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়। 

এই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে। 

পরবর্তীতে, ভিডিওতে থাকা ওই যুবকের একটি স্থিরচিত্র সংযুক্ত করে কিছু গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, তিনিই গোপালগঞ্জের সংঘর্ষে নিহত কোটালীপাড়ার রমজান কাজী। এই দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন: সমকাল, জনকণ্ঠ, মানবকণ্ঠ

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি গতকাল গোপালগঞ্জে নিহত রমজান কাজী নন। বরং, এটি গত বছরের ৪ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে সিরাজগঞ্জে ধারণ করা একটি ভিডিও, যেখানে হৃদয় নামের এক আন্দোলনকারীকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Bondhu Mahol বন্ধু মহল’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ২৭ জুন প্রকাশিত এক পোস্টে হুবহু একই ভিডিও পাওয়া যায়। সেখানে ওই যুবককে “জুলাই যোদ্ধা হৃদয়” হিসেবে পরিচয় দেওয়া হয়।

Comparison: Rumor Scanner. 

‘হৃদয়’ নামের সূত্র ধরে ‘Jubayer Hasan Jihad’ নামের একটি ফেসবুক প্রোফাইলে ১৭ জুলাই প্রকাশিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। সেখানে ভিডিওর ওই যুবককে রমজান কাজী দাবি করে সমকালের একটি প্রতিবেদন শেয়ার করা হয়। পোস্টের ক্যাপশনে জনাব জিহাদ জানান, ৪ নম্বর ছবিতে থাকা ব্যক্তি হৃদয়, যার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। তিনি আরও উল্লেখ করেন, একজন জীবিত মানুষকে রমজান কাজী দাবি করে গোপালগঞ্জের নিহত ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

রিউমর স্ক্যানার জনাব জিহাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারে, ভিডিওটি গত বছরের এবং ভিডিওর ওই ব্যক্তি ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট জুলাই আন্দোলন চলাকালে সিরাজগঞ্জের জামতলী এলাকায় ছাত্রলীগের হামলায় আহত হন।

পরবর্তীতে হৃদয়ের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে নিশ্চিত হওয়া যায়, ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি তিনিই। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ভিডিওটি গত বছরের ৪ আগস্ট ধারণ করা হয় এবং সম্প্রতি একটি ফেসবুক পেজে প্রচারের মাধ্যমে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

সুতরাং, সিরাজগঞ্জে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া হৃদয় নামের এক ব্যক্তির পুরোনো ভিডিওকে গোপালগঞ্জে নিহত রমজান কাজী দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

গোপালগঞ্জে যৌথ বাহিনীর অভিযানের সাম্প্রতিক দৃশ্য দাবিতে গত বছরের আগস্টের ভিডিও প্রচার

গোপালগঞ্জে গতকাল (১৬ জুলাই) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ঘিরে দিনভর দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে এখন অবধি ৪ জন নিহতের তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। এরপর গতকাল (১৬ জুলাই) রাত আটটা থেকে আজ (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। 

এরই প্রেক্ষিতে, গোপালগঞ্জে যৌথ বাহিনীর অভিযোগ দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, সেনাবাহিনীর সদস্যরা আটককৃত এক ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে একটি ভবনে অভিযানে গিয়েছেন। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে একই ভিডিও শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কেও শেয়ার করতে দেখা যায়। 

একই দাবি টেলিগ্রামে দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গতকাল (১৬ জুলাই) রাতে গোপালগঞ্জে যৌথ বাহিনীর অভিযানের দৃশ্যের নয় বরং, ভিডিওটি গত বছরের আগস্ট মাস থেকেই ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে। 

অনুসন্ধানে ‘Smart miraj 02’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত বছরের ১১ আগস্ট প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত পোস্টের ক্যাপশনের দাবি অনুযায়ী এটি গত আগস্টে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সেনাবাহিনীর অভিযানের ভিডিও।

উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ১০ আগস্ট গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী শনিবার ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এতে মহাসড়কের দুই পাশে গাড়ি আটকা পড়ে। খবর পেয়ে গোপালগঞ্জে কর্মরত সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। এক পর্যায়ে সেনাসদস্যদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান তারা। সেনাসদস্যরা তাদের সড়ক থেকে সরতে বললে ক্ষিপ্ত হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করেন সেনাসদস্যরা। এ সময় নেতাকর্মীরা সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতে ভাঙচুর শেষে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় সেনা সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরবর্তীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোপালগঞ্জে অতিরক্তি সেনা মোতায়েনের কথা জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

উল্লেখ্য, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এটি নিশ্চিত হওয়া গেলেও ভিডিওটি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ারই কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সুতরাং, গত বছরের আগস্ট থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান সেনাবাহিনীর অভিযানের একটি দৃশ্যকে গতকাল ১৬ জুলাই রাতে গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর অভিযানের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

গোপালগঞ্জের ১৬ জুলাইয়ের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো পুরোনো

0

গোপালগঞ্জে গতকাল (১৬ জুলাই) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ঘিরে দিনভর দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে এখন অবধি ৪ জন নিহতের তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। এরই প্রেক্ষাপটে, গোপালগঞ্জে জনগণের ওপর পুলিশের হামলার দৃশ্য দাবিতে তিনটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই ছবি গতকালের গোপালগঞ্জের ঘটনার বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ইকোনোমিক টাইমস এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও ব্যবহার করা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো গতকাল (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে পুলিশের সাথে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, প্রচারিত তিনটি ছবির একটি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির নেতাকর্মীদের দিকে ডিবি পুলিশের এক সদস্যের গুলি করার দৃশ্যের। আর বাকি দুইটি ছবি গত বছরের আগস্ট মাসে গোপালগঞ্জে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বিক্ষোভ মিছিলের। 

অনুসন্ধানের শুরুতে ডিবি পুলিশ সদস্যের গুলি করার ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে নিউজবাংলা ২৪ এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ০৭ সেপ্টেম্বর “সেই অস্ত্র কনকের নয়, গুলি করার সুযোগও ছিল না” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ছবিটির মিল রয়েছে। 

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ২০২২ সালের ০১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নারায়ণগঞ্জে দলটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মাহফুজুর রহমান কনকের গুলি করার দৃশ্য এটি।


এছাড়া, বাকি দুইটি ছবির বিষয়ে অনুসন্ধানে ছবিগুলো রিভার্স সার্চ করে ডেইলি দেশ সময় নামক একটি সংবাদ ভিত্তিক ওয়েবসাইটে গত বছরের ০৮ আগস্ট “গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর গুলিতে শিশু আহত বিক্ষুব্ধ জনতা সেনাবাহিনীর গাড়িতে আগুন”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবি দুইটির সাথে আলোচিত পোস্টগুলোতে থাকা বাকি দুইটি ছবির মিল রয়েছে।

উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের ০৮ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে গোপালগঞ্জের গোপিনাথপুরে জনতা সমাবেশের ডাক দেন। সেই সমাবেশের এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর সাথে জনতার সংঘর্ষ বাঁধে। সেই সময়কাল দৃশ্য এটি। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিগুলো গোপালগঞ্জের গতকালের (১৬ জুলাই) সংঘর্ষের ঘটনার নয়। 

সুতরাং, ২০২২ সালে একটি ছবি এবং গত বছরের আগস্ট মাসের দুইটি ছবিকে গতকাল (১৬ জুলাই) জাতীয় নাগরিক পার্টির গোপালগঞ্জ পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সংঘর্ষের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

গোপালগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি করে গণহত্যার ভিডিও দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ শেষে তাদের ঘিরে হামলার ঘটনার পর ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “১৪৪ ধারা জারি করে রাতের আঁধারে গণহত্যা চালানো হচ্ছে।”

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
উল্লেখ্য যে, উক্ত ভিডিওটি ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচারিত ভিডিও (লাইভ) হিসেবেও প্রচার করতে দেখা যায় এবং আলোচিত দাবিতে প্রচারিত একটি পোস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কেও শেয়ার করতে দেখা যায়।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এরূপ দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গত ১৬ জুলাইয়ে গোপালগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি করার পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের দৃশ্যের নয় বরং, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় ঘটা যৌথবাহিনীর অভিযানের দৃশ্য আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ‘যমুনা টিভি’ এর ইউটিউব চ্যানেলে “মোহাম্মদপুরে চাঁদ উদ্যানের সেই অভিযানের ভিডিও” শীর্ষক শিরোনামে গত ২২ ফেব্রুয়ারিতে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে মিল পাওয়া যায়।

এছাড়াও, মূলধারার গণমাধ্যম সময় নিউজ টিভির ফেসবুক পেজসহ নানা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও সেসময় এ ঘটনার ভিডিওটি প্রচার হতে দেখা যায়।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধান করলে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে “মোহাম্মদপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানকালে ‘গুলিবিনিময়ে’ নিহত ২: পুলিশ” শীর্ষক শিরোনামে গত ২০ ফেব্রুয়ারিতে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “রাজধানীর মোহাম্মদপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানকালে ‘গুলিবিনিময়ে’ দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান এই তথ্য জানিয়েছেন। পুলিশ বলছে, গতকাল বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত একটার দিকে মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুজন হলেন জুম্মন ও মিরাজ। পুলিশ তাঁদের সন্ত্রাসী বলছে। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী।”

এছাড়াও এ বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যম ‘বিডিনিউজ২৪’ এর ওয়েবসাইটে গত ২০ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একইরকম তথ্য জানা যায়। পাশাপাশি, এ বিষয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকেও গত ২০ ফেব্রুয়ারিতে ‘সংবাদ বিজ্ঞপ্তি’ পোস্ট হতে দেখা যায়। পোস্টটিতে বলা হয়, “আজ (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত আনুমানিক ০০৩০ ঘটিকায় মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় ছিনতাই এর প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে যৌথবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের সময় যৌথ বাহিনীর সদস্যরা একটি গলির দুই পাশে ঘেরাও করলে সন্ত্রাসীরা একটি একতলা ভবনের ছাদ থেকে আভিযানিক দলটির উপর অতর্কিত গুলি চালায়। আভিযানিক দলটি আত্মরক্ষার্থে তৎক্ষণাৎ পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং ৫ জন সন্ত্রাসীকে অস্ত্রসহ আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে, বাড়িটিতে তল্লাশি চালিয়ে ছাদের উপর থেকে দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। আটককৃত ব্যক্তিদের নিকট হতে একটি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি এবং একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষার্থে এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং প্রচারিত লাইভ বা সরাসরি সম্প্রচারের বিষয়টিও ভুয়া।

সুতরাং, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় ঘটা যৌথবাহিনীর অভিযানের দৃশ্যকে গতকাল ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি করার পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র