রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ইন্টারনেট থেকে আফরিন স্বর্ণা নামের ভিন্ন আরেকজন নারীর ছবি সংগ্রহ করে তাতে প্রযুক্তির সাহায্যে আজমেরী হক বাঁধনের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে।
ছবিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Afrin Sorna নামের একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ৪ জুন প্রচারিত কয়েকটি ছবি সম্বলিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
Image Comparison by Rumor Scanner
পোস্টের ছবিগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আজমেরী হক বাঁধনের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর সাথে উক্ত পোস্টের ছবিগুলোর মূখমণ্ডলের পার্থক্য ব্যতীত বাকি সকল উপাদানের হুবহু মিল রয়েছে।
পরবর্তীতে উক্ত পোস্টকারীর প্রোফাইল পর্যালোচনার মাধ্যমে জানা যায়, তার নাম আফরিন স্বর্ণা। তিনি একজন বাংলাদেশী মডেল ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর।
অনুসন্ধানের স্বার্থে রিউমর স্ক্যানার বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আফরিন স্বর্ণার ছবির ওপর আজমেরী হক বাঁধনের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করেছে। এতে সম্পাদিত ছবির মতোই অনুরূপ ফলাফল পাওয়া গেছে।
সুতরাং, অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিটি সম্পাদিত।
সম্প্রতি ‘বিএনপি ক্ষমতাই এলে রাখাইনে অবশিষ্ট রোহিঙ্গাদের কে বাংলাদেশ আশ্রয় দিবে কিন্তু বাংলাদেশের উপর দিয়ে কোন মানবিক করিডোর দিবে না: আমির খসরু’ শিরোনামে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ছবি যুক্ত করে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম একাত্তর টিভির ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাখাইন করিডোর বিষয়ে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এমন কোনো মন্তব্য করেননি এবং একাত্তর টিভিও এরূপ কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় একাত্তর টিভির ভিন্ন একটি ফটোকার্ড নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে একাত্তর টিভির লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ৩০ মে, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।
উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে একাত্তর টিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত তারিখে আলোচিত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, একাত্তর টিভির ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে, একাত্তর টিভির ফেসবুক পেজে গত ০২ জুন প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায় যেটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির আংশিক সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।
Comparison: Rumor Scanner
উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির সাথে প্রচারিত ফটোকার্ডে একাত্তর টিভির লোগো এবং আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ছবির মিল রয়েছে, তবে উভয়ের তারিখ ও শিরোনামে ভিন্নতা রয়েছে। মূলত, এই ফটোকার্ডটির ‘২ জুন, ২০২৫’’ এর স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘৩০ মে, ২০২৫’ প্রতিস্থাপন করে এবং ‘গুণগত দিক থেকে বাজেটে কোন পরিবর্তন দেখি না’ শীর্ষক শিরোনামের স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘বিএনপি ক্ষমতাই এলে রাখাইনে অবশিষ্ট রোহিঙ্গাদের কে বাংলাদেশ আশ্রয় দিবে কিন্তু বাংলাদেশের উপর দিয়ে কোন মানবিক করিডোর দিবে না: আমির খসরু’ শিরোনাম প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া, একাত্তর টিভির প্রচলিত ফটোকার্ডের শিরোনামের ফন্টের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির ফন্টের পার্থক্যও লক্ষ্য করা যায়।
একাত্তর টিভি ব্যতীত অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিকে সমর্থন করে এমন কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি৷
সুতরাং, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে উদ্ধৃত করে ‘বিএনপি ক্ষমতাই এলে রাখাইনে অবশিষ্ট রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিবে কিন্তু বাংলাদেশের উপর দিয়ে কোন মানবিক করিডোর দিবে না’ শিরোনামে একাত্তর টিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত ।
সম্প্রতি, ঢাকার সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে দাবিতে কথিত বিজ্ঞপ্তিটির একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। গত ২৫ মে এর তারিখে প্রকাশিত এই বিজ্ঞপ্তিতে চারটি পদে আবেদন করতে আহ্বান জানিয়ে [email protected] এই ইমেইল ঠিকানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। জানানো হয়েছে, আবেদনের সময়সীমা ০২ জুন দুপুর ১২ টা।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কথিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ঢাকার গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেয়নি বরং ভিন্ন একটি হাসপাতালের ২০২২ সালের পুরোনো বিজ্ঞপ্তি সম্পাদনা করে ভুয়া এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে স্টাডি এবং নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক ওয়েবসাইটে (১, ২) ২০২২ সালের আগস্টে প্রকাশিত চট্টগ্রাম ইপিজেড হাসপাতালের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির খোঁজ মেলে। এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সূত্র নং ছিল ০৩.০৬.১৫৩৫.৩৩৫.১১.০২৯.১০-৪৬৪৬। একই সূত্র নং দেখা যায় সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নামে প্রচারিত কথিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেও। দুইটি বিজ্ঞপ্তির ছবির ডিজাইন, কালার গ্রেডিং এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদি পর্যবেক্ষণ করে সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তির ছবিটি ২০২২ সালের চট্টগ্রাম ইপিজেড হাসপাতালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি থেকে সম্পাদনা করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। পুরোনো বিজ্ঞপ্তিটির ছবিতে তারিখ, ঠিকানা, পদের বিষয়, আবেদনের মাধ্যম ও সময়সীমা সংক্রান্ত নির্দেশনা বদলে দিয়ে নতুন বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে।
Comparison: Rumor Scanner
অনুসন্ধানে ঢাকার গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়েবসাইট এবং জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিভিন্ন কিওয়ার্ড সার্চ করে এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কোনো অস্তিত্ব মেলেনি।
তাছাড়া, হাসপাতালটির একটি প্রচলিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের জন্য কোনো ইমেইল ঠিকানা নয় বরং আগ্রহী প্রার্থীকে অধ্যক্ষ বরাবর আবেদন করতে বলা হয়েছে। আবেদনের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে, গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, মির্জানগর, সাভার, ঢাকা-১৩৪৪।
Image: Website
অন্যদিকে, প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটিতে দেওয়া ইমেইল ঠিকানাটি ([email protected]) জিমেইল পরিষেবার, যা বিজ্ঞপ্তিটির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে সক্ষম।
ভুয়া নিয়োগের এই ধরনটি খুব সাধারণ। গেল কয়েক বছর ধরেই এই ধরনের মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণা করে আসছেন প্রতারকরা। রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিট গত বছর এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরে। দেখুন এখানে।
সুতরাং, ঢাকার গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়োগের এই বিজ্ঞপ্তিটি বানোয়াট ও প্রতারণামূলক।
সম্প্রতি, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে সেনাবাহিনী গ্রেফতার করেছে দাবিতে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে গ্রেফতার করা হয়নি । প্রকৃতপক্ষে, কোনোপ্রকার তথ্যসূত্র ছাড়াই সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার। ভিডিওটিতে সংবাদপাঠিকাকে দাবি করতে শোনা যায়, উক্ত ভিডিওটি প্রকাশের দিন অর্থাৎ, গত ৫ জুন সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ ইউনিটের অভিযানের মাধ্যমে রাজধানীর সেনানিবাস থেকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি তারও দাবি করেন, জাতীয় নিরাপত্তা ও সংবিধান বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরাসরি নির্দেশে এই অভিযান চালানো হয়। উক্ত সংবাদটি সেদিন রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল অর্থাৎ, বিটিভিতে সকাল ৮ টায় এবং সংক্ষিপ্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জনসাধারণকে জানানোর কথাও বলা হয় ভিডিওটিতে । পাশাপাশি রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে উক্ত ভিডিওটির ডান পাশের দিকে উপরে CSB NEWS শীর্ষক একটি লোগোও লক্ষ্য করা যায়।
পরবর্তীতে উক্ত লোগোর সূত্র ধরে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে CSB News নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩ জুন প্রচারিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। মূল ভিডিওটিতে একাধিক সংবাদের পাশাপাশি একই ভিডিওতে আলোচিত সংবাদটি দেখতে পাওয়া যায়। অর্থাৎ, উক্ত সংবাদ অনুসারে সেনাপ্রধানকে গ্রেফতারের ঘটনাটি সেদিনই হয়েছে এবং সেদিনই বিটিভিতে ও সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাকে আটক হওয়ার তথ্যটি জানানো হয়।
তবে বিটিভির ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেল পর্যালোচনা করে গত ৩ জুন এমন কোনো সংবাদ প্রচারিত হতে দেখা যায়নি। পরবর্তীতে বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ফেসবুক পেজ এবং আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের ওয়েবসাইট পর্যালোচনা করেও আলোচিত ভিডিওটিতে উল্লেখিত সংক্ষিপ্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বরং গত ৩ জুন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান সেনা সদরে ইন্দোনেশিয়ার মান্যবর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী Armanatha Christiawan Nasir-এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বলে জানা যায়। এছাড়াও গত ৭ জুন পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সস্ত্রীক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বলেও জানা যায়।
Image Collage by Rumor Scanner
সুতরাং, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে সেনাবাহিনী করেছে শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, “গত ১৬ বছর ভালই ছিলাম, নির্বাচন নিয়ে কোন ঝামেলা ছিলনা-দুদু” শিরোনামে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর ছবিসহ ইত্তেফাকের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান দুদু আলোচিত মন্তব্যটি করেননি এবং আলোচিত শিরোনামে ইত্তেফাক কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, শামসুজ্জামান দুদুর ভিন্ন মন্তব্য নিয়ে ইত্তেফাকে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তার সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে ইত্তেফাকের লোগো এবং এটি প্রকাশের কোনো তারিখ উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি অন্য কোনো গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজে গত ০৩ জুন ‘নির্বাচনের কথা বললেই ভারত-আওয়ামী লীগের দালাল বানিয়ে দিচ্ছে: দুদু’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।
Photocard Comparison: Rumor Scanner
উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডের সাথে উক্ত ফটোকার্ডের শিরোনাম ব্যতীত বাকি সকল উপাদানের মিল রয়েছে। ইত্তেফাকের মূল ফটোকার্ডটিতে ‘নির্বাচনের কথা বললেই ভারত-আওয়ামী লীগের দালাল বানিয়ে দিচ্ছে: দুদু’ শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে ‘গত ১৬ বছর ভালই ছিলাম, নির্বাচন নিয়ে কোন ঝামেলা ছিলনা-দুদু’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।
অর্থাৎ, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ইত্তেফাকের ফটোকার্ড সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
মূল ফটোকার্ড সম্বলিত ইত্তেফাকের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২ জুন জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তবে উক্ত প্রতিবেদনে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান দুদুকে উদ্ধৃত করে “গত ১৬ বছর ভালই ছিলাম, নির্বাচন নিয়ে কোন ঝামেলা ছিলনা” শিরোনামে ইত্তেফাকের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি তাসনিয়া ফারিণের নয়। বরং, ইন্টারনেট থেকে ভারতীয় এক অভিনেত্রীর ছবি সংগ্রহ করে তাতে প্রযুক্তির সাহায্যে তাসনিয়া ফারিণের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিটি প্রচার করা হয়েছে।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে 𝐏𝐫𝐢𝐲𝐚𝐧𝐤𝐚 𝐀𝐠𝐫𝐚𝐰𝐚𝐥 নামে একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ০১ এপ্রিল প্রকাশিত একটি ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। ছবিতে উক্ত নারীর মূখমণ্ডলে পার্থক্য ছাড়া অন্য সব উপাদানে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Comparison: Rumor Scanner
ভারতে বসবাসকারী এই নারী একজন অভিনেত্রী।
অর্থাৎ, মূল ছবিটি প্রিয়াংকা আগারওয়াল নামের ভিন্ন এক নারীর।
অনুসন্ধানের স্বার্থে রিউমর স্ক্যানার বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রিয়াংকা আগারওয়ালের ছবির ওপর তাসনিয়া ফারিণের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করেছে। এতে সম্পাদিত ছবির মতোই অনুরূপ ফলাফল পাওয়া গেছে।
সুতরাং, অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিটি সম্পাদিত।
সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষিতে ‘ইরানি ড্রোন হা’ মলায় নেতানিয়াহু নি’ হত’ শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইরানের ড্রোন হামলায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মারা যাননি বরং কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ব্লগস্পটের ফ্রি ডোমেইন সাইটে প্রকাশিত একটি কথিত প্রতিবেদনের বরাতে ভুয়া এই দাবি প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত দাবিগুলোর পোস্টের কমেন্টে তথ্যসূত্র হিসেবে একটি ব্লগপোস্টের লিংক দেওয়া হয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে ‘amardeesh247.blogspot.com’ নামের ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইনের এই সাইটটি একটি ভূঁইফোড় সাইট বলে প্রতীয়মান হয়।
উক্ত লিংকে ‘মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের আগুন: ইরানের পাল্টা হামলায় নিহত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: blogspot
প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়েছে, ইসরায়েলর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছে “প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আজ ভোরে একটি শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্থ আঘাতে গুরুতর আহত হন এবং হাসপাতালে লওয়ার কিছুক্ষণের মাধাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।” নেতানিয়াহুর মৃত্যুতে ইসরায়েল জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। কনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী গালিত ডিক্টেল আকবারিয়ান সাময়িকভারে দায়িত্ব পালন করছেন।
উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে ইসরায়েলের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মৃত্যু সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মৃত্যুর তথ্যটি গত ১৪ জুন থেকে প্রচারিত হয়ে আসলেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সর্বশেষ রবিবার ১৫ জুন প্রকাশিত একটি ভিডিওতে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সিকিউরিটি কেবিনেটের মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।
ইরানের ড্রোন হামলায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মারা গেলে তা নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে গুরুত্বসহকারে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার কথা৷ তবে গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো সূত্রে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি রিউমর স্ক্যানারের ইনভেস্টিগেশন ইউনিট এসব ফ্রি ডোমেইনের সাইটগুলো নিয়ে বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যেখানে দেখা গেছে এসব ফ্রি ডোমেইনের পেছনে সংঘবদ্ধ চক্র কাজ করছে।
সুতরাং, ইরানের ড্রোন হামলায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মারা গেছেন শীর্ষক
সম্প্রতি ‘তারেক রহমান কে? লন্ডনে বসে ইউনুস এর পরামর্শে নির্বাচন এর তারিখ ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারণ করার? নির্বাচন বিজয়ের মাস ডিসেম্বরেই হতে হবে। নির্বাচন বিজয়ের মাস ডিসেম্বরেই হতে হবে। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা -ফজলুর রহমান’ শিরোনামে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের ছবি যুক্ত করে গণমাধ্যম ইত্তেফাকের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আগামী সংসদ নির্বাচনের তারিখ বিষয়ে বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান এমন কোনো মন্তব্য করেননি এবং ইত্তেফাকও উক্ত দাবিতে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ইত্তেফাকের ভিন্ন একটি ফটোকার্ড সম্পাদনা করে প্রচারিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে ইত্তেফাকের লোগো রয়েছে।
উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত তারিখে আলোচিত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, ইত্তেফাকের ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে, ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজে গত ১২ জুন প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায় যেটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।
Comparison: Rumor Scanner
উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির সাথে প্রচারিত ফটোকার্ডে ইত্তেফাকের লোগো এবং ফজলুর রহমানের ছবির মিল রয়েছে, তবে উভয়ের শিরোনামে ভিন্নতা রয়েছে। মূলত, এই ফটোকার্ডটির ‘ইউনূস সাহেব যখন বাংলাদেশের সমস্ত পথ হারাইয়া ফেলছেন। উনি পথ পাওয়ার জন্য আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেবের কাছে ১২ ঘণ্টা প্লেন চালাইয়া লন্ডন পর্যন্ত গেছেন। বলছেন, আমাকে একটু কথা বলার সুযোগ দেন। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা -ফজলুর রহমান’ শীর্ষক শিরোনামের স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তারেক রহমান কে? লন্ডনে বসে ইউনুস এর পরামর্শে নির্বাচন এর তারিখ ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারণ করার? নির্বাচন বিজয়ের মাস ডিসেম্বরেই হতে হবে।’ শিরোনাম প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া, ইত্তেফাকের প্রচলিত ফটোকার্ডের শিরোনামের ফন্টের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির ফন্টের পার্থক্যও লক্ষ্য করা যায়।
মূল ফটোকার্ড সম্বলিত ঢাকা পোস্টের ফেসবুক পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, ‘ইউনূস সাহেব যখন বাংলাদেশের সমস্ত পথ হারাইয়া ফেলছেন। উনি পথ পাওয়ার জন্য আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেবের কাছে ১২ ঘণ্টা প্লেন চালাইয়া লন্ডন পর্যন্ত গেছেন। বলছেন আমাকে একটু কথা বলার সুযোগ দেন।’
ইত্তেফাক ব্যতীত অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিকে সমর্থন করে এমন কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি৷
সুতরাং, বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানকে উদ্ধৃত করে নির্বাচনের তারিখ বিষয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জড়িয়ে ইত্তেফাকের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।
গত ১৩ জুন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও অস্ত্রাগারে হামলা চালায় ইসরায়েল। যার প্রতিশোধ স্বরূপ একইদিন রাতে ইসরায়েলের তেল আবিব ও জেরুজালেমকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে ইরান। এতে তেল আবিব, পশ্চিম গ্যালিলি এবং হাইফা অঞ্চলে আঘাত হানা ক্ষেপনাস্ত্রের আঘাতে অন্তত ৮ জন নিহত এবং ১৩০ জনের অধিক আহত হয়েছে বলে জানা যায়। এর প্রেক্ষিতে ইরানের ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের ডিফেন্স হেডকোয়ার্টার্স ধ্বংস হয়ে যাওয়ার দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ইরানের ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের ডিফেন্স হেডকোয়ার্টার্স ধ্বংস হওয়ার নয়। প্রকৃতপক্ষে, ইসরায়েলের বিমান হামলায় লেবাননের একটি বাসভবন ধ্বংস হওয়ার পুরোনো এই ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে dunia_ya_vita ইউজারনেমের একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৬ জানুয়ারি প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison by Rumor Scanner
ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মূল সংস্করণ। মূলত, এই ভিডিওতে দেখা যাওয়া ভবনে ক্ষেপনাস্ত্র আঘাত হানার অংশটুকু ক্রপ করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটির শিরোনাম ইংরেজিতে ভাষান্তরের মাধ্যমে জানা যায়, ভিডিওটি লেবাননের রাজধানী বৈরুতের।
প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৫ নভেম্বর লেবাননের রাজধানী বৈরুতের তায়ুনেহ এলাকায় অবস্থিত একটি বাসভবনে উক্ত হামলার ঘটনাটি ঘটে। ওই ভবনটিতে হিযবুল্লাহর সদস্যরা অবস্থান করছিল এমন দাবি করে সেখানে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। প্রতিবেদনটিতে সেসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের ফটোগ্রাফারের ধারণ করা বেশ কয়েকটি ছবিও রয়েছে।
তবে চলমান সংঘাতে ইরানের হামলায় আইডিএফ সদর দফতর বা ইসরায়েলের ডিফেন্স ফোর্সের হেডকোয়ার্টার্স ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কিনা সে বিষয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সুতরাং, ইরানের ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের ডিফেন্স হেডকোয়ার্টার্স ধ্বংস হওয়ার দৃশ্য দাবিতে লেবাননে ইসরায়েলের চালানো বিমান হামলার পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি ‘প্রধান উপদেষ্টাকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে, নাহলে আমরা নির্বাচনে যাব না: তাহের’ শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম কালের কণ্ঠের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে এমন কোনো মন্তব্য করেননি এবং কালের কণ্ঠও উক্ত দাবিতে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে কালের কণ্ঠের ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে কালের কণ্ঠের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ০৯ জুন, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।
কালের কণ্ঠেরলোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে গত ৯ জুন গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে “প্রধান উপদেষ্টাকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। কালের কণ্ঠের মূল ফটোকার্ডটিতে “প্রধান উপদেষ্টাকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে” শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে “প্রধান উপদেষ্টাকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে, নাহলে আমরা নির্বাচনে যাব না: তাহের” শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।
Photocard Comparison By Rumor Scanner
অর্থাৎ, কালের কণ্ঠের এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
মূল ফটোকার্ড সম্বলিত কালের কণ্ঠের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “৯ জুন দুপুরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাশিনগর মাদরাসা মিলনায়তনে কাশিনগর ইউনিয়ন জামায়াতের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘আপনি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার সময় ওয়াদা করেছিলেন স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। আপনার ওয়াদা যাতে পূরণ হয়, এ জাতি তা দেখতে চায়। নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় তা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। আবারও বিনা ভোটের নির্বাচন হলে বাংলাদেশ অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।”
পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, জামায়াত নেতা ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহেরকে উদ্ধৃত করে “প্রধান উপদেষ্টাকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে, নাহলে আমরা নির্বাচনে যাব না” শিরোনামে কালের কণ্ঠের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।