Home Blog

আগস্ট বন্যা (২০২৪) লাইভ আপডেট

0

ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনা বা প্রেক্ষাপটের ছবি-ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার হচ্ছে, ছড়াচ্ছে বিভ্রান্তিকর নানা তথ্যও। এর প্রেক্ষিতে রিউমর স্ক্যানারের এই লাইভ আপডেটে আপনাকে স্বাগত।

সময়: ২৭ আগস্ট সকাল ০৯:১৬ মিনিট

জিজ্ঞাসা: চলমান বন্যায় কতজন মারা গেছেন?  

ফ্যাক্ট: চলমান বন্যা ইস্যুতে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ বা স্বাধীনভাবে যাচাই সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে তাই গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য নিম্নে তুলে ধরা হলো –  

সরকারি হিসাব – ২৩ জন। ছয়জন কুমিল্লায়, চট্টগ্রামে পাঁচজন, নোয়াখালীতে পাঁচজন, কক্সবাজারে তিনজন, ফেনীতে একজন, খাগড়াছড়িতে একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন এবং লক্ষ্মীপুরে একজন। (২৬ আগস্ট দুপুর)

মূল ধারার সংবাদমাধ্যম 

প্রথম আলো – ২৩ জন। (সরকারি হিসেব)

দ্য ডেইলি স্টার – ২৩ জন। 

বণিক বার্তা – ২৩ জন।  

নিউ এজ – ২৩ জন।

সূত্র: গণমাধ্যম।


৪১/ দাবি: বন্যা পরিস্থিতিতে ভারতের দায় থাকার অভিযোগের প্রেক্ষাপটে ভারতে গ্যাস সরবরাহ (লাইন) বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। 

ফ্যাক্ট: এই দাবিটি ছড়াচ্ছে একটি এক্স পোস্ট এবং একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে৷ আয়রন ক্ল্যাড নামের এক্স অ্যাকাউন্টটি থেকে গতকাল এক পোস্টে দাবি করা হয়, “ভারতের সেভেন সিস্টারে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ।” এরা কী গ্যাস তা অবশ্য পরিস্কার করেনি। এই অ্যাকাউন্টটি অবশ্য প্রোপাগাণ্ডা ছড়াতে সিদ্ধহস্ত৷ এই পোস্টের পর এরা আরেক পোস্টে দাবি করছে, ভারত সরকার নাকি সকল এনজিওকে বলেছে বাংলাদেশে যাতে কোনো ত্রাণ সহায়তা না পাঠানো হয়। আদতে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এমন কোনো নির্দেশনাই আসেনি। ভারতের একজন ফ্যাক্টচেকারও রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছেন, এমন কোনও খবর তাদের চোখে পড়েনি। তিনি বলছিলেন, “কূটনীতিক দোনামনা থাকলেও এমন পরিস্থিতিতে এই ধরনের কোনও নির্দেশনা বা সিদ্ধান্ত অবাস্তব মনে হয়। আজগুবি। সার্চ করেও এই এক্স পোস্ট ছাড়া এই সংক্রান্ত আর কিছু দেখলাম না।” তিনি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন আমাদের। বলছিলেন, “আগেও মনে হয় আন্তর্জাতিক স্তরে গুজব ছড়িয়েছে এই হ্যান্ডলটা। সরকারিভাবে ইন্ডিয়ায় ব্যান করা।”

ভিডিও যেটি ছড়াচ্ছে, তার মূল সোর্স অবশ্য এখনও অনুসন্ধান চলছে। পেলে এই পোস্টেই আপডেট করে জানানো হবে। 

গ্যাস সরবরাহ বন্ধের দাবিটি নিয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার দেখেছে, ২০২২ সালের জুনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতিক্রমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ৮২ মেট্রিক টন তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ভারতে পাঠানো হয়। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর চাহিদা মেটাতে ৮ জুন এসব গ্যাস ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশনের অধীনে ত্রিপুরা রাজ্যের বিশালগড়ের প্লান্টে সরবরাহ করা হয়। 

এই সরবরাহের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় তারও বছর তিনেক আগে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের সেসময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় উভয় দেশের মধ্যে এক সমঝোতা হয়। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ ত্রিপুরার ইন্ডিয়ান করপোশেনের (ওএনজিসি) বিশালগড় বটলিং প্লান্টে ট্যাংকারে করে এলপিজি সরবরাহে সম্মত হয়। ওই সমঝোতা অনুসারে বাংলাদেশের ব্যক্তি মালিকানাধীন ওমেরা, বেক্সিমকো ও বিএম এনার্জি পেট্রোলিয়ামের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর জন্য এলপিজি আমদানি করছে ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন। ২০২২ সালের পর আর এলপিজি গ্যাস পাঠানো হয়েছে কিনা এ বিষয়ে গণমাধ্যম সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়না। 

তবে ভারতে বাংলাদেশ থেকে কখনোই প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করা হয়নি। এ বিষয়টি রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন সরকারের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোঃ নূরুল আলম। 

তথ্যসূত্র: রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণ


সময়: ২৬ আগস্ট সকাল ০৯:১৬ মিনিট

জিজ্ঞাসা: চলমান বন্যায় কতজন মারা গেছেন?  

ফ্যাক্ট: চলমান বন্যা ইস্যুতে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ বা স্বাধীনভাবে যাচাই সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে তাই গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য নিম্নে তুলে ধরা হলো –  

সরকারি হিসাব – ২০ জন। কুমিল্লায় ৬ জন, চট্টগ্রামে ৫, নোয়াখালীতে ৩, কক্সবাজারে ৩ এবং ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষ্মীপুরে একজন। (২৫ আগস্ট সন্ধ্যা)

মূল ধারার সংবাদমাধ্যম 

প্রথম আলো – ২০ জন। (সরকারি হিসেব)

দ্য ডেইলি স্টার – ২১ জন। 

বণিক বার্তা – ২০ জন।  

নিউ এজ – ২০ জন।

সূত্র: গণমাধ্যম।


সময়: ২৫ আগস্ট সকাল ০৯:১৬ মিনিট

জিজ্ঞাসা: চলমান বন্যায় কতজন মারা গেছেন?  

ফ্যাক্ট: চলমান বন্যা ইস্যুতে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ বা স্বাধীনভাবে যাচাই সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে তাই গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য নিম্নে তুলে ধরা হলো –  

সরকারি হিসাব – ১৮ জন। চট্টগ্রামে ৫ জন, কুমিল্লায় ৪ জন, নোয়াখালীতে ৩ জন, কক্সবাজারে ৩ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ জন, ফেনীতে ১ জন ও লক্ষ্মীপুরে ১ জন। (২৪ আগস্ট দুপুর)

মূল ধারার সংবাদমাধ্যম 

প্রথম আলো – ১৮ জন। (সরকারি হিসেব)

দ্য ডেইলি স্টার – ১৮ জন। (সরকারি হিসেব) 

বণিক বার্তা – ১৮ জন।  

নিউ এজ – ২০ জন।

সূত্র: গণমাধ্যম। 


৪০/ দাবি: তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা সেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে থ্রাণ সামগ্রী পাঠানোর দৃশ্য। 

ফ্যাক্ট: ফান্ড রাইজ করে নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের কেনা ত্রাণসামগ্রী প্রস্তুতির ছবিকে নিজেদের বলে প্রচার করা হয়েছে আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে। 

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট। 


৩৯/ দাবি: ছবিতে থাকা শিশুর পরিবারের সবাই মারা গেছে।

ফ্যাক্ট: ছবিটির ফটোগ্রাফার নাজমুল হাসান তপন জানিয়েছেন, বাচ্চা ও তার পরিবার সুস্থ আছেন। 

তথ্যসূত্র : ফটোগ্রাফারের বক্তব্য।


৩৮/ দাবি: পবিত্র জুম্মার দিনে পানি বন্দি মসজিদে নামাজ শেষে মোনাজাতরত অবস্থার দৃশ্য।  

ফ্যাক্ট: বন্যায় অনেক এলাকার মসজিদ এখনও পানির নিচে। কোনো মসজিদের শুধু চালা পানির উপরে রয়েছে, এমন দৃশ্যও গণমাধ্যমের ভিডিওতে এসেছে। তবে এই ছবিটি গতকালের জুম্মার সময়ের নয়। ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর (সেদিনও শুক্রবার ছিল) সাতক্ষীরা থেকে ফটোগ্রাফার সারোয়ার হোসেন ছবিটি তোলেন।  

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট।


৩৭/ দাবি: বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক বন্যার্তদের উদ্ধার অভিযানের ভিডিও। 

ফ্যাক্ট: ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, অন্তত ২০২২ সাল থেকে অনলাইনে রয়েছে।   

তথ্যসূত্র : পুরোনো ভিডিও।


৩৬/ দাবি: বন্যা কবলিত এলাকার দৃশ্য।

ফ্যাক্ট: ২০২২ সালের ভারতের আগরতলায় বন্যার সময়কার ছবি উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স।


৩৫/ দাবি: ফেনী নোয়াখালী অভিমুখে সব নৌযান। এটাই বাংলাদেশ।

ফ্যাক্ট: ছবিটি ২০২৩ সালের মার্চ মাসে কর্ণফুলী নদী রক্ষায় চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত সাম্পান খেলা ও সাম্পান শোভাযাত্রার। 

তথ্যসূত্র : পুরোনো সংবাদ। 


৩৪/ দাবি: লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণের দৃশ্য।  

ফ্যাক্ট: লক্ষ্মীপুরের ছাত্রদল নেতার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণের ছবিকে আওয়ামী লীগের পেজে ছাত্রলীগের ত্রাণ বিতরণ বলে চালিয়ে দেওয়া হলো। 

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট


৩৩/ দাবি: কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে সংগৃহীত ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার টাকা বন্যার্তদের দেওয়া হয়েছে।  

ফ্যাক্ট: ভাইরাল তথ্যটি ভুয়া। উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও সমন্বয়ক সারজিস আলমের নামে তৈরি একটি ভুয়া পেজের পোস্টের ভিত্তিতে এই মিথ্যা তথ্য সামাজিক মাধ্যম এবং গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছেন, এই দাবি সত্য নয়। মসজিদ কমিটির এই বিষয়ে কোনো মিটিং হয়নি।  

তথ্যসূত্র : মসজিদ কমিটির সভাপতির বক্তব্য।


৩২/ দাবি: সীতাকুণ্ড উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্যের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গতদের সহায়তা 

ফ্যাক্ট: বড়বাজার সার্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদের এই ত্রাণ কার্যক্রমের পেছনে রাজনৈতিক হাত নেই বলে জানা গেছে।  

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট


৩১/ দাবি: বিদ্যানন্দের প্রকাশিত এই ছবিটি সম্পাদিত।

ফ্যাক্ট: বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ফেসবুক পেজ এক টাকায় আহার এ আলোচিত এই ছবিটি আপলোড করা হয় ২২ আগস্ট রাত ০৮ টা ০৪ মিনিটে। ছবিটি নিয়ে নেটিজেনদের মনে সন্দেহ কুকুরের অবস্থানের কারণে। প্রাণীটি দাঁড়িয়ে আছে পানির উপরে, তার পুরো শরীর শুকনো বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। অনেকেই এটিকে তাই এডিটেড ছবি বলে মনে করছেন। 

রিউমর স্ক্যানার বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনে যোগাযোগ করে ছবির মূল ফাইলসহ একই সময়ের একাধিক ছবি সংগ্রহ করেছে। এই ছবিটির মেটাডাটা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মূল ছবি আর এই ছবির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। ছবিটি তোলা হয় ২২ আগস্ট বিকেল ০৪ টা ৩২ মিনিটে। ফেনীর বন্ধুুয়া ব্রিজের কাছ থেকে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের একজন বোর্ড মেম্বার (নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশ করছি না) শাওমির রেডমি থার্টিন সি ফাইভ জির একটি মডেলের মাধ্যমে এই ছবিটি তোলেন। রিউমর স্ক্যানার বিদ্যানন্দের উক্ত বোর্ড মেম্বারের সাথে কথা বলেছে। তিনি বলছিলেন, “কুকুরটি একটা মাটি কাটার স্কেভেটর গাড়ির উপর দাঁড়িয়েছিল।  আমাদের বাম পাশের স্বেচ্ছাসেবকের পেছনে দেখবেন গাড়ির খাড়া অংশ পানির উপরে। গাড়ির হরাইজন্টাল অংশ পানির লেভেলে ছিল।পানি যথেষ্ট ঘোলা এবং স্কেভেটরের রঙ হলুদ হওয়ায় পানির নীচে কিছু একটা আছে সেটা বুঝা যায়না।” বিদ্যানন্দের এই সদস্য জানালেন, “কুকুরটা নিয়ে আসতে চাইলে দূর থেকে এক ব্যক্তি বলেন সেটি পালিত কুকুর।মালিক দূরে কোথাও আছে। আর নীতিগতভাবে এক এলাকার কুকুর আমরা অন্য এলাকায় ট্রান্সফার করিনা। তাই পাশের রাস্তায় রেখে এসেছি।”

অর্থাৎ, ছবিটি সম্পাদিত বা এডিটেড নয়।

তথ্যসূত্র: ছবির মেটাডাটা বিশ্লেষণ।


সময়: ২৪ আগস্ট সকাল ০৯:২০ মিনিট

জিজ্ঞাসা: চলমান বন্যায় কতজন মারা গেছেন?  

ফ্যাক্ট: চলমান বন্যা ইস্যুতে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ বা স্বাধীনভাবে যাচাই সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে তাই গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য নিম্নে তুলে ধরা হলো –  

সরকারি হিসাব – ১৩ জন। (২৩ আগস্ট দুপুর)

মূল ধারার সংবাদমাধ্যম 

প্রথম আলো – ১৩ জন। 

দ্য ডেইলি স্টার – ১৫ জন। 

বণিক বার্তা – ১৫ জন।  

নিউ এজ – ১৫ জন।

সূত্র: গণমাধ্যম।


৩০/ দাবি: ফেনীতে উদ্ধার কাজ করতে গিয়ে ডুবে মারা গেছে ৩ ছাত্রলীগ নেতা – কালবেলা ফটোকার্ড  

ফ্যাক্ট: কালবেলা উদ্ধার কাজে সাহায্য করতে গিয়ে তিন ছাত্রলীগের নিহতের দাবিতে কোনো সংবাদ প্রচার করেনি।  

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট


২৯/ দাবি: ফেনীতে বন্যার দৃশ্য।  

ফ্যাক্ট: সাম্প্রতিক বন্যার প্রেক্ষাপটে ভাইরাল হলেও, অন্তত গত মে মাস থেকে এই ভিডিওর অস্তিত্ব ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে। 

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট


২৮/ দাবি: ছেলেটাকে একা পাওয়া গেছে। কেউ সাথে ছিল না।  

ফ্যাক্ট: এই ছবিটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে বলে আমাদের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে। গতকালই ছবিটির বিষয়ে জানিয়ে পোস্ট করেছি আমরা। সম্প্রতি, এই ছবির ভিত্তিতেই একটি ভিডিও তৈরি করে প্রচার করা হচ্ছে, যেখানে শিশুটিকে হাত নাড়তে দেখা যায়। প্রথমবারের মতো এই ভিডিওটি ‘Kalachan Miya’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে প্রচার করা হয়েছে। উক্ত পেজে এই ভিডিওটি প্রতীকী হিসাবে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে বলে ডিসক্লেইমার দেয়া থাকলেও, অনেকেই ভিডিওটি আসল ভেবে ফেসবুকে শেয়ার করছেন।  

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট


২৭/ দাবি: ভারত থেকে বন্যার পানি আসছে। 

ফ্যাক্ট: ভিডিওটি দেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতির দৃশ্যের নয়। ২০২০ সালে মাদারীপুরের দৃশ্য।  

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট


২৬/ দাবি: ফেঞ্চুগঞ্জ ছাত্রলীগ বন্যা কবলিতদের খাবার দিচ্ছে।

ফ্যাক্ট: ২০২২ সালে ফেঞ্চুগঞ্জে বন্যার্তদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণের ছবিকে প্রচার করা হচ্ছে সাম্প্রতিক উদ্যোগ দাবিতে।


তথ্যসূত্র: রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট


২৫/ দাবি: ছাত্রলীগের উদ্যোগে চাঁদপুরের বড় স্টেশনে স্পিডবোড ট্রাকে তোলার দৃশ্য৷  

ফ্যাক্ট: এই উদ্যোগে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলেনি। ২২ আগস্টও একই ভিডিও পোস্ট হয়েছে ফেসবুকে, সেখানে লেখা রয়েছে এটি তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্যোগ। একই ঘটনা নিয়ে দেশের একাধিক গণমাধ্যমেও সংবাদ এসেছে। সেগুলোতে এই ঘটনাকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগ বলা হয়েছে। 

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট


২৪/ দাবি: কুমিল্লার পালপাড়া ব্রিজ এলাকায় গোমতী নদীর পাড়ে বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ করছে দাউদকান্দি ছাত্রলীগ। 

ফ্যাক্ট: ছাত্রশিবিরের স্থানীয় কর্মীদের দ্বারা বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজের ছবি এগুলো।  

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট


২৩/ দাবি: বন্যার পানিতে কুমীর, অল্পের জন্য বেঁচে গেল। 

ফ্যাক্ট: এটি বাংলাদেশের ভিডিও নয়৷ ভিডিওটি অন্তত দুই বছর পূর্ব থেকেই ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে।  

তথ্যসূত্র : পুরোনো ভিডিও। 


২২/ দাবি: ফেনিতে বাচ্চাসহ ৪২৮ জনের মৃত্যু৷ নোয়াখালীতে ৩৮৫ জনের মৃত্যু। কুমিল্লাতে 103জনের মৃত্যু। – যমুনা টিভির ফটোকার্ড।

ফ্যাক্ট: যমুনা টিভি এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। যমুনা টিভির নামে তৈরি একটি ভুয়া ফেসবুক পেজ থেকে এই ফটোকার্ড প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া ফেনীতে ৪২৮ জন, নোয়াখালীতে ৩৮৫ জন ও কুমিল্লায় ১০৩ জন মৃত্যুর সংবাদ অনান্য গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি।


তথ্যসূত্র: রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট


২১/ দাবি: ছাত্রলীগের ত্রাণ উদ্যোগের দৃশ্য।  

ফ্যাক্ট: ছাত্রলীগের ত্রাণ উদ্যোগের দাবিতে ডানের পোস্টে তিনটি ছবি যুক্ত করা হয়েছে। যার প্রথম দুটি প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশনের পেজে তাদের গতকালের প্রোগ্রামের ছবি হিসেবে পাওয়া যায় এবং তৃতীয় ছবিটি ঢাবির অমর একুশে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের। 

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট


২০/ দাবি: বন্যায় ফেনী জেলার দৃশ্য। 

ফ্যাক্ট: ফেনীর চলমান বন্যার দৃশ্য দাবিতে পাকিস্তানের ২০২২ সালের পুরোনো ভিডিও প্রচার। 

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট


১৯/ দাবি: চলমান বন্যায় ছাত্রলীগের খিচুড়ি বিতরণের দৃশ্য।

ফ্যাক্ট: গত ২১ আগস্ট কুমিল্লায় ছাত্রদলের খিচুড়ি বিতরণের ভিডিও এটি। 

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট


১৮/ দাবি: চলমান বন্যার প্রেক্ষাপটে শিশু উদ্ধারের দৃশ্য। 

ফ্যাক্ট: এটি সাম্প্রতিক বা পূর্বের কোনো বন্যার দৃশ্য নয়। ২০১৭ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে নদী বিলাসের অন্যান্য ছবির সঙ্গে এই ছবিটিও অন্তর্ভুক্ত থাকতে দেখা যায়। ছবিটির ফটোগ্রাফার নাসিফ ইমতিয়াজ জানিয়েছেন, এটি মুন্সিগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীতে তোলা, যেখানে বাচ্চাটি তার ভাইয়ের সঙ্গে খেলছিল।

তথ্যসূত্র: ফটোগ্রাফারের বক্তব্য।


১৭/ দাবি: শেখ হাসিনার অনুরোধে ভারত বাঁধ খুলে দিয়েছে। – যমুনা টিভির ফটোকার্ড  

ফ্যাক্ট: যমুনা টিভি এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। শেখ হাসিনার অনুরোধে ভারত বাঁধ খুলে দিয়েছে শীর্ষক দাবিতে অন্যান্য গণমাধ্যমেও কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি৷ 

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট


১৬/ দাবি: বন্যায় ফেনীতে ছাত্রলীগের সহযোগিতার ছবি। 

ফ্যাক্ট: গত জুলাইয়ে মৌলভীবাজারে ছাত্রলীগের সহযোগিতার ছবি এগুলো। 

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক পোস্ট


১৫/ দাবি: হবিগঞ্জের খোয়াই নদী দিয়ে এই মুহুর্তে প্রচুর পানি আসতে শুরু করেছে। 

ফ্যাক্ট: ভিন্ন দেশের পুরোনো ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র : পুরোনো ভিডিও


১৪/ দাবি: ভারতের ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ার দৃশ্য। 

ফ্যাক্ট: এটি ভারতের শ্রীশাইলম বাঁধের ভিডিও, যার সাথে বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতির কোনো সম্পর্ক নেই।


তথ্যসূত্র : পুরোনো ভিডিও


জরুরি যোগাযোগ ও সহায়তা

প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে সহায়তা

▫️হিসাবের নাম : ‘প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল’

▫️ব্যাংক : সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখা, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় 

▫️হিসাব নম্বর : ০১০৭৩৩৩০০৪০৯৩

এ তহবিলের অর্থ ত্রাণ ও কল্যাণ কাজে ব্যয় করা হয়। প্রেরিত অর্থ সরকার কৃতজ্ঞতার সাথে গ্রহণ করে এর যথাযথ হিসাব সংরক্ষণ করবে।

বার্তা প্রেরক: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব।

বাংলাদেশ পুলিশ

বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করুন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ অথবা,

জেলা পুলিশ, নোয়াখালী

+8801320111898

জেলা পুলিশ, লক্ষ্মীপুর

+8801320112898

জেলা পুলিশ, ফেনী 

+8801320113898

জেলা পুলিশ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া 

+880 1320-115898

জেলা পুলিশ, কুমিল্লা 

+880 1320-114898

জেলা পুলিশ, চাঁদপুর 

+880 13 2011 6898

জেলা পুলিশ, রাঙ্গামাটি

+8801320109898

জেলা পুলিশ, বান্দরবান 

+8801320110898

জেলা পুলিশ, খাগড়াছড়ি 

+8801320110398

জেলা পুলিশ, চট্টগ্রাম 

+8801320108398

জেলা পুলিশ, কক্সবাজার 

+8801320109398

জেলা পুলিশ, মৌলভীবাজার 

+880 1320-120698

জেলা পুলিশ, হবিগঞ্জ

+880 1320-119698

বার্তা প্রেরক: পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকা

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী 

বন্যার্তদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর জরুরী নম্বর সমূহ

 ১। মৌলভীবাজার সদর, শ্রীমঙ্গল, রাজনগর, কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার জেলা: 

০১৭৬৯১৭৫৬৮০

০১৭৬৯১৭২৪০০

২। কুলাউড়া, জুরি, বড়লেখা, মৌলভীবাজার জেলা : 

০১৭৬৩৯০১৬৯৮

৩। হবিগঞ্জ জেলা: 

০১৭৬৯১৭২৫৯৬

০১৭৬৯১৭২৬৩৪

 ৪। ফেনী জেলা:

০১৭৬৯৩৩৫৪৬১

০১৭৬৯৩৩৫৪৩৪

০১৬১৪৪০৯৫৬৫

০১৯১৯৭৭৪৮৪০

টেলিফোন: ০২৩৩৭৭৩৪১১০

৫। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন: ০১৭৬৯-২৪৪০১২

৬। সীতাকুন্ড-মীরসরাই, চট্টগ্রাম জেলা:

০১৭২৮-২০২৬৭৭  ০১৭৬৯-২৪২১৩২  ০১৭৬৯-২৪২১২৮

৭। ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম জেলা: ০১৭৬৯-২৭২৩৪২  ০১৭৬৯-২৭২৩৩৬

৮। খাগড়াছড়ি জেলা: ০১৭৬৯-৩০২৩৪২  ০১৭৬৯-৩০২৩৩৬ 

বার্তা প্রেরক : বাংলাদেশ সেনাবাহিনী 

বাংলাদেশ নৌবাহিনী

বন্যার্তদের সহায়তায় ফেনীতে নৌবাহিনী কনটিজেন্টের গুরুত্বপূর্ণ ফোন নাম্বার সমূহঃ

১. ঢাকাস্থ কেন্দ্রীয় অপারেশন রুম অফিসারঃ ০১৭৬৯৭০১১১১

২. চট্টগ্রামস্থ কেন্দ্রীয় অপারেশন রুম অফিসারঃ ০১৭৬৯৭২১২২০

বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে উদাত্ত আহবান জানাচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। আপনাদের যে কোন রকমের সহযোগিতা (অর্থ, খাদ্য, চিকিৎসা) সংগ্রহ করে বন্যার্তদের নিকট পৌঁছে দেয়া হবে। বন্যার্তদের নিকট খাদ্য সামগ্রী প্রেরণের জন্য যানবাহন সহায়তা দিতেও প্রস্তুত বাংলাদেশ নৌবাহিনী।  বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিবার কল্যাণ সংঘের নিম্নোক্ত ব্যাংক হিসেবে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করার জন্য অনুরোধ করা হলো।

Account Number: 01214-02000279

Account Name: 

BNFWA Donation Fund.

Sonali Bank PLC, NHQ Branch, Banani, Dhaka.

Branch Routing Number: 200263434

বার্তা প্রেরক: বাংলাদেশ নৌবাহিনী

বাংলাদেশ বিমানবাহিনী

বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারকার্য পরিচালনার জন্য এবং দুর্গত এলাকাসমূহে প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার জন্য বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিমানসমূহ প্রস্তুত রয়েছে। উল্লেখ্য, বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকার্য ব্যহত হচ্ছে।

সহায়তার জন্য জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের নম্বর: +8801769993888।  

বার্তা প্রেরক: বাংলাদেশ বিমানবাহিনী

ফায়ার সার্ভিস 

সারা দেশের বন্যা কবলিত এলাকার উদ্ধারকাজ বিষয়ে যেকোনো সেবা গ্রহণের জন্য ফায়ার সার্ভিসের হটলাইন নম্বর ১০২ এবং কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নিয়মিত ফোন নম্বর ০২২২৩৩৫৫৫৫৫ চালু থাকবে। পাশাপাশি মনিটরিং সেলে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য ০১৭১৩-০৩৮১৮১ মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা যাবে। এর পাশাপাশি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করেও ফায়ার সার্ভিসের এ সংক্রান্ত সেবা গ্রহণ করা যাবে। 

বার্তা প্রেরক : ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেল।


সময়: ২৩ আগস্ট সকাল ০৯:২০ মিনিট

জিজ্ঞাসা: চলমান বন্যায় কতজন মারা গেছেন?  

ফ্যাক্ট: চলমান বন্যা ইস্যুতে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ বা স্বাধীনভাবে যাচাই সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে তাই গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য নিম্নে তুলে ধরা হলো –  

সরকারি হিসাব – ০২। একজন ফেনীর, আরেকজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার। (২২ আগস্ট দুপুর)

মূল ধারার সংবাদমাধ্যম 

প্রথম আলো – ০৮ জন, বন্যার পানিতে ডুবে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। এর মধ্যে কুমিল্লায় চারজন, কক্সবাজারে দুজন, ফেনীতে একজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন মারা গেছেন।

দ্য ডেইলি স্টার – ০৫ জন। কক্সবাজারের রামুতে তিনজন এবং ফেনী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন করে ডুবে মারা গেছেন।

বণিক বার্তা – ০৯ জন৷ ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, কুমিল্লা ও রাঙ্গামাটিতে। 

নিউ এজ – ০৭ জন।

সূত্র: গণমাধ্যম।


১৩/ দাবি: ফেনীতে সাম্প্রতিক বন্যার দৃশ্য।

ফ্যাক্ট: এটি গত জুলাই মাসে চীনে অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যার ভিডিও।

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক।


১২/ দাবি: সাম্প্রতিক বন্যায় ঢাকার নিউ মার্কেটের ভেতরে জলাবদ্ধতা।

ফ্যাক্ট: এটি গত জুলাইয়ে ঢাকার নিউ মার্কেটে বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার দৃশ্য।

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক।


১১/ দাবি: ফেনী জেলায় বন্যার পানি প্রবেশের দৃশ্য।

ফ্যাক্ট: ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বন্যার দৃশ্য।

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক।


১০/ দাবি: বন্যার পানিতে মহিষের পাল ভাসার দৃশ্যটি সাম্প্রতিক সময়ের।  

ফ্যাক্ট: সাম্প্রতিক বন্যার নয়। ভিডিওটি অন্তত গত মে মাস থেকেই ইন্টারনেটে রয়েছে। 

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক।


৯/ দাবি: সাম্প্রতিক বন্যার পানি থেকে বাঁচতে কয়েকজন শিশু একটি নারিকেল গাছে আশ্রয় নিয়েছে। 

ফ্যাক্ট: ভিডিওটি সাম্প্রতিক বন্যার নয় বরং অন্তত ২০২২ সাল থেকেই এই ভিডিওটির অস্তিত্ব ইন্টারনেটে রয়েছে।

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক।


৮/ দাবি: বন্যা কবলিত এলাকায় ট্রাক উল্টে যাওয়ার দৃশ্য। 

ফ্যাক্ট: ২০২২ সালের সিলেটের সুনামগঞ্জের বন্যার সময়কার ছবি এটি।

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক।


৭/ দাবি: বাংলাদেশে বন্যার দৃশ্য 

ফ্যাক্ট: এটি পাকিস্তানের করাচিতে অবস্থিত কালারি হ্রদের দৃশ্য।
তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক।


৬/ দাবি: বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক বন্যার্তদের উদ্ধারের ছবি।  

ফ্যাক্ট: প্রচারিত ছবিগুলোর অন্তত তিনটি ছবি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত ছবিগুলোর একটি ২০১৮ সালে মৌলভিবাজারে এবং একটি ২০২২ সালে সুনামগঞ্জে তোলা হয়। এছাড়াও আরেকটি ছবি ২০২২ সাল থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যমান রয়েছে। 

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক।


৫/ দাবি: নোয়াখালীতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার দৃশ্য। 

ফ্যাক্ট: ছবিগুলো নোয়াখালীর বন্যা পরিস্থিতি কিংবা সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং সিলেট ও ভারতের আসামের পুরোনো দুটি ছবি উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক।


৪/ দাবি: শিশুকে নিয়ে যুবকের বন্যার পানিতে ভেসে থাকার ভিডিও। 

ফ্যাক্ট: ভিডিওটি পুরোনো যা গত মে মাস থেকে ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে।

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক।


৩/ দাবি: ফেনীতে বন্যার পানিতে গরু ভেসে যাওয়ার দৃশ্য 

ফ্যাক্ট: এটি মেক্সিকোর ২০২০ সালের পুরোনো ভিডিও।

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক।  


২/ দাবি: বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যার ছবি। 

ফ্যাক্ট: প্রথম ছবিটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের চলমান বন্যার, এবং দ্বিতীয় ছবিটি ২০১১ সালে ভারতের ওড়িশা রাজ্যে সংঘটিত বন্যার দৃশ্য।


তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক।


১/ জিজ্ঞাসা: ছবিটি কি এআই দিয়ে তৈরি? 

ফ্যাক্ট: রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে ভাইরাল ছবিটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা বলে প্রতীয়মান হয়েছে। তবে বন্যার বাস্তব দৃশ্য প্রকৃতপক্ষে আরো করুণ।

আলোর প্রতিফলন, শিশুটির চোখের অভিব্যক্তি, কপালের ভাঁজ ও ঠোঁটের অস্বাভাবিকতা ইত্যাদি অসংগতি অনুযায়ী আপাতদৃষ্টিতে অনেকেই ভাইরাল ছবিটিকে এআই জেনারেটেড বলেই ধারণা করেছেন। তাছাড়া, এআই ছবি যাচাইয়ের বিভিন্ন ওয়েবসাইটও ছবিটিকে ৬০% থেকে ৯১% পর্যন্ত এআই বলে ফলাফল দিয়েছে। 

রিউমর স্ক্যানার টিম MidJourney AI ব্যবহার করে এই একই ধরনের ছবি পুনরায় তৈরি করার চেষ্টায়ও প্রায় একই ফলাফল পাওয়া গেছে। 

তথ্যসূত্র : রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণ 

উপদেষ্টা রিজওয়ানাকে তানজিম সাকিব পর্দা করতে বলেননি, নকল ফটোকার্ডে অপপ্রচার

0

সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পেসার তানজিম হাসান সাকিব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে পর্দা করতে বলেছেন দাবিতে দৈনিক প্রথম আলো ও কালবেলার ডিজাইন সম্বলিত দুটো ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

প্রথম আলোর ফটোকার্ড দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

কালবেলার ফেসবুক পোস্ট দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে ক্রিকেটার তানজিম সাকিব পর্দা করতে বলেছেন দাবিতে প্রথম আলো বা কালবেলা কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি এবং তানজিম সাকিবও এমন কিছু বলেননি বরং, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে ভুয়া এই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ড দুইটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ফটোকার্ডগুলো প্রথম আলো এবং কালবেলার ডিজাইনের আদলে তৈরি করা হয়েছে এবং উভয় ফটোকার্ড প্রকাশের দিন হিসেবে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত তথ্যের সূত্রে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজ এবং কালবেলা’র ফেসবুক পেজ পর্যালোচনা করে আলোচিত ফটোকার্ডগুলো খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও প্রথম আলোর ইউটিউব চ্যালেন ও ওয়েবসাইট এবং কালবেলার ইউটিউবওয়েবসাইট পর্যালোচনা করেও আলোচিত দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি প্রথম আলোর ফটোকার্ড দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে প্রথম আলোর পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলোর শিরোনামে ব্যবহৃত ফন্টের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। 

Photocard Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও কালবেলার ফেসবুক পেজে ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশেকে ১৩ হাজার কোটি টাকা দেবে জার্মানি শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ফটোকার্ডের সন্ধান পাওয়া যায়, যার সাথে কালবেলার ফটোকার্ড দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডের মিল রয়েছে। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে এটিই প্রতীয়মান হয় যে, এটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ক্রিকেটার তানজিম সাকিবের ছবি ও ভিন্ন শিরোনাম যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে তানজিম সাকিব সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে উদ্দেশ্য করে এমন কোনো মন্তব্য করেছেন কিনা জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

রিউমর স্ক্যানার এ বিষয়ে তানজিম সাকিবের সাথেও কথা বলেছে। তিনি জানিয়েছেন, তিনি এমন কোনো মন্তব্য করেননি। 

সুতরাং, ক্রিকেটার তানজিম সাকিব উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে পর্দা করতে বলেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। এছাড়াও এ দাবিতে প্রথম আলোর নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট এবং কালবেলার নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

সিলেটের শাহপরান (রহ.) মাজারে সংঘর্ষের ঘটনায় মাজারের ফকির নিহতের গুজব

0

গত ১০ সেপ্টেম্বর ভোররাতে সিলেটের শাহপরান (রহ.) মাজারে ওরসের শেষরাতে গাঁজা সেবনকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও মাজারভক্তদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এরই প্রেক্ষিতে, উক্ত সংঘর্ষে মাজারের একজন ফকির মৃত্যুবরণ করেছেন দাবিতে হাসপাতালের বেডে রক্তাক্ত এক ব্যক্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

শাহপরান (রহ.) মাজারে

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সিলেটের শাহপরান (রহ.) এর মাজারে সংঘর্ষের ঘটনায় আলোচিত ছবির ব্যক্তি মারা যাননি বরং আহত হয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে একদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। এছাড়া এই ঘটনায় এখন অবধি কোনো ব্যক্তি মারা যাননি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যম আজকের পত্রিকার সিলেট ভিত্তিক সাংবাদিক ইয়াহ্ইয়া মারুফ এর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি ফেসবুক পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত পোস্টে প্রচারিত মৃত্যুর দাবিটি ভুয়া বলে দাবি করেন তিনি। তিনি তার পোস্টে মৃত্যুর দাবি করা ব্যক্তির চিকিৎসা পরবর্তী একটি ছবি ও সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছাড়পত্র যুক্ত করেন। এছাড়াও, তার পোস্টের মন্তব্যের ঘরে মৃত দাবি করা ব্যক্তির আরো ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

এবিষয়ে আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য আজকের পত্রিকা’র সাংবাদিক ইয়াহ্ইয়া মারুফ এর সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। প্রচারিত মৃত্যুর দাবিটি ভুয়া এবং তিনি সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন বলে রিউমর স্ক্যানারকে জানান। এছাড়াও, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তীর বরাতে ইয়াহ্ইয়া মারুফ জানান, উক্ত সংঘর্ষের পর সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত হয়ে সাতজন ভর্তি হন এবং সকলকেই চিকিৎসা সেবা দিয়ে পরবর্তীতে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয় এবং তারা কোনো মৃত্যুর খবর পাননি।  

এছাড়াও, একই বিষয়ে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে (, ) মৃত্যু সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, সিলেটের শাহপরান (রহ.) মাজারে গাঁজা সেবনকে কেন্দ্র করে মাজার ভক্ত ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সংঘর্ষে একজন ফকির মারা গেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Yahya Maruf: Facebook Post
  • Statement from Yahya Maruf
  • Rumor Scanner’s own analysis 

সময়ের কন্ঠস্বর এর ফটোকার্ড নকল করে হাসনাত আবদুল্লাহ ও সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার 

0

সম্প্রতি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এর ছবি যুক্ত করে ‘ঢাকা থেকে পালিয়ে যাবার সময়ে সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি হাসনাত আবদুল্লাহ’ শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম সময়ের কন্ঠস্বর’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘ঢাকা থেকে পালিয়ে যাবার সময়ে সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি হাসনাত আবদুল্লাহ’ শীর্ষক দাবিতে সময়ের কন্ঠস্বর বা অন্য কোনো গণমাধ্যম কোনো প্রতিবেদন বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং, সময়ের কন্ঠস্বর এর ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি ফটোকার্ডের শিরোনাম পরিবর্তন করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটি সময়ের কন্ঠস্বর এর ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডের ডিজাইনের আদলে তৈরি করা হয়েছে। আলোচিত ফটোকার্ডটিতে প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ উল্লেখ রয়েছে।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে সময়ের কন্ঠস্বর এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে ১২ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে গত ১২ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ একইদিনে “কক্সবাজারে সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর স্মার্টফোন চুরি” শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ফটোকার্ডের সঙ্গে আলোচিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত গ্রাফিক্যাল ডিজাইন ও হাসনাত আবদুল্লাহ এর ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে এই ফটোকার্ডটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির তূলনামূলক বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ফটোকার্ড দুটির ছবির মিল থাকলেও আলোচিত ফটোকার্ডের শিরোনাম ও শিরোনামে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে সময়ের কন্ঠস্বর এর ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডের ফন্টের ডিজাইনের মিল নেই। 

Photocard Comparison: Rumor Scanner 

আলোচিত ফটোকার্ডটির শিরোনামে “কক্সবাজারে সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর স্মার্টফোন চুরি” বাক্যাংশের পরিবর্তে “ঢাকা থেকে পালিয়ে যাবার সময়ে সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি হাসনাত আবদুল্লাহ” বাক্যাংশটি যুক্ত করা হয়েছে। এটি থেকে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, সময়ের কন্ঠস্বর এর ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডটিকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

একই দিনে অর্থাৎ গত ১২ সেপ্টেম্বর  সময়ের কন্ঠস্বর এর ওয়েবসাইটে “কক্সবাজারে সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর স্মার্টফোন চুরি” শিরোনামে প্রকাশিত এই সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রতিবেদনের বরাতে জানা যায়, হাসনাত আবদুল্লাহ গত ১১ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার জেলার পেকুয়া-চকরিয়া এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের পরিবারের সাথে দেখা করতে যান। তিনি সেখান থেকে পরদিন কক্সবাজার ছাত্র-জনতার আলোচনা সভায় যোগ দেয়ার আগে কক্স সিলিটন নামের এটি হোটেলে বিশ্রাম নেয়ার সময় তার স্মার্টফোনটি চুরি হয়ে যায়। 

এছাড়া অনুসন্ধানে অন্য কোনো গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বরং উক্ত দাবি প্রচার পরবর্তী সময়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাসনাত আবদুল্লাহর সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। (, )

সুতরাং, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ঢাকা থেকে পালিয়ে যাবার সময়ে সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি হয়েছেন দাবিতে সময়ের কন্ঠস্বর এর নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

যমুনা টিভির নকল ফটোকার্ডে মাদক নিয়ে ড. ইউনূসের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি, “১৮ বছরের নিচে মাদক খেলে ৩ মাস কারাদন্ড ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টেলিভিশনের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

মাদক নিয়ে ড. ইউনূসের

উক্ত দাবিতে কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, “১৮ বছরের নিচে মাদক খেলে ৩ মাস কারাদন্ড ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা” শীর্ষক মন্তব্য ড. মুহাম্মদ ইউনূস করেননি এবং একই তথ্যে বা শিরোনামে যমুনা টেলিভিশন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে যমুনা টেলিভিশনের ডিজাইন সম্বলিত আলোচিত ভুয়া ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে ১২ সেপ্টেম্বর তারিখে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। যমুনা টেলিভিশনের ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলেও এমন কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে যমুনা টেলিভিশন কর্তৃক প্রকাশিত ফটোকার্ডের শিরোনামে ব্যবহৃত ফন্টের পার্থক্য রয়েছে।

Photocard Comparison: Rumor Scanner

পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, “১৮ বছরের নিচে মাদক খেলে ৩ মাস কারাদন্ড ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে যমুনা টেলিভিশনের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

ভাইরাল হওয়া শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রটি ভুয়া

0

ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে গত ০৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন তার দেশ ত্যাগ পরবর্তী এক ব্রিফিংয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) পদত্যাগ করেছেন। এখন একটা অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবো।’ ঐদিন রাতেই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (০৫ আগস্ট) রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।’ তবে শেখ হাসিনার দাবি, সংবিধান অনুযায়ী তিনি এখনো দেশের ‘বৈধ প্রধানমন্ত্রী’। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি কথিত ফোনালাপে এমন দাবি করতে দেখা যায় তাকে। তার দাবি, দেশ ছাড়ার আগে তিনি পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে গণভবন থেকে বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে পারেননি। এর আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি। সংবিধান অনুযায়ী তিনি এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্যাডে রাষ্ট্রপতি বরাবর লেখা তার একটি কথিত পদত্যাগপত্র গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে৷ 

হাসিনার পদত্যাগপত্রটি

উক্ত পদত্যাগপত্র আসল দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন একুশে টিভি, যুগান্তর, যায়যায়দিন, প্রতিদিনের বাংলাদেশ, দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস, সাম্প্রতিক দেশকাল, বাংলাদেশ জার্নাল, নিউজজি২৪, ঢাকা প্রকাশ, জুম বাংলা, ফেস দ্যা পিপল, অর্থ সংবাদ, এমটিনিউজ২৪, করপোরেট সংবাদ, দেশ বিদেশে, বিডি টুডে, জয় নিউজ

বিএনপির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে একই দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে গণমাধ্যমের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাইরাল হওয়া শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রটি আসল নয় বরং বেশ কিছু অসঙ্গতি থাকা এই পদত্যাগপত্রটি ভুয়া।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে পদত্যাগপত্রটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে বেশ কয়েকটি অসঙ্গতি রয়েছে। পত্রে ইংরেজি ০৫ আগস্টকে বাংলা ২০শে শ্রাবণ উল্লেখ করা হলেও সেদিন ছিল মূলত বাংলা ২১শে শ্রাবণ। 

ওপেন সোর্সে থাকা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়) একাধিক প্যাড পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, তারিখের ঘরে বাংলা মাসের তারিখ উপরে থাকে। নিচে থাকে ইংরেজি মাসের তারিখ। তবে এই পদত্যাগের চিঠিতে ইংরেজি তারিখ উপরে রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner 

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্যাডগুলোতে সাধারণত পত্র সংখ্যা নামে একটি সিরিয়াল নাম্বার থাকে। কিন্তু কথিত এই

পদত্যাগপত্রে পত্র সংখ্যা শীর্ষক কোনো তথ্যই নেই।   

তাছাড়া, চিঠিতে বিভিন্ন বাক্যে ব্যবহৃত যতিচিহ্ন ‘।’ মোবাইলে টাইপ করা যা এর গঠন দেখে স্পষ্ট।

শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র দাবি করে গণমাধ্যম প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো পর্যবেক্ষণ করে পদত্যাগপত্রটি প্রাপ্তির কোনো বিশ্বস্ত সূত্রের উল্লেখ  পাওয়া যায়নি। গণমাধ্যমগুলোতে সূত্র হিসেবে ইন্টারনেট বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যা কখনো এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়ের প্রতিবেদনের একমাত্র সূত্র হতে পারে না।

রিউমর স্ক্যানার চিঠিটির মনস্তাত্ত্বিক ভাষা বিশ্লেষণ করে দেখেছে। ০৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার ঘোষণার সময়ের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শেষ সময়েও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং আরও রক্তপাতের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা। পরিস্থিতি যে একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে, সেটা তিনি কিছুতেই মানতে চাচ্ছিলেন না। পরে পরিবারের সদস্যরাসহ বোঝানোর পর পদত্যাগে রাজি হন। এরপর দ্রুততম সময়ে পদত্যাগ করে সামরিক হেলিকপ্টারে করে গোপনে বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।

বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শেখ হাসিনা পরিস্থিতি মানতে নারাজ ছিলেন। তিনি ধারণা করেছিলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে শক্তি প্রয়োগ করে। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে ধারণা দিয়েছেন যে এটি আর সামাল দেয়া যাবে না। কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে বিবিসি বাংলা বুঝতে পেরেছে, শেখ হাসিনা তার হাতে ‘দুটো অপশন’ খোলা রাখতে চেয়েছেন। দেশ ছেড়ে যাবার ব্যাপারে প্রস্তুতিও ছিল এবং শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বল প্রয়োগ করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিলেন। 

বিশ্লেষণ বলছে, সেসময়ের ঘটনাপ্রবাহে শেখ হাসিনার যে মনোভাবের বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ এসেছে তার সাথে এই চিঠির ভাষার মিল পাওয়া যায় না। কারণ চিঠিতে শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, তিনি বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে মানুষ প্রাণ হারানোর সম্পূর্ণ দায়িত্ব স্বীকার করেছেন।

এমনও বাক্য রয়েছে এই চিঠিতে যাতে লেখা রয়েছে, “এ মুহূর্তে দেশকে এগিয়ে নিতে অন্য নেতৃত্বের প্রয়োজন। আমি আশা করি, আমার পদত্যাগ বাংলাদেশের উন্নয়নের নতুন পথ খুলে দেবে এবং শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।”

অর্থাৎ, শেখ হাসিনার ৫ আগস্টের মনোভাবের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণেও চিঠিটি ভুয়া বলেই প্রতীয়মান হয়। 

কথিত চিঠিটির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছেন, তার কাছে এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। 

কথিত এই চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের (যদিও নামের বানান ব্যাঙ্গাত্মকভাবে লেখা) ভুয়া পদত্যাগপত্র বানিয়ে প্রচার করতে দেখা গেছে নেটিজেনদের। 

Collage: Rumor Scanner 

সুতরাং, ০৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের চিঠি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত এই চিঠিটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s own analysis 

আলজেরিয়ার যুদ্ধের ছবিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ছবি দাবিতে প্রচার

0

১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ছবি দাবিতে একটি ছবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ছবিতে কয়েকজন সৈন্য মিলে এক নারীকে হেনস্তা করতে দেখা যাচ্ছে।

আলজেরিয়ার যুদ্ধের

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আইর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিটি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নয় বরং এটি আলজেরিয়ার স্বাধীনতা যু্দ্ধের সময় ফরাসি সৈন্যদের দ্বারা একজন আলজেরিয়ান নারীকে যৌন নির্যাতনের ছবি।

ছবিটির সত্যতা জানতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, জ্ঞানের বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ার শাখা উইকিমিডিয়া কমনস এর ওয়েবসাইটে “File:Algerian woman sexually abused by the French army.jpg“ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ছবি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ছবির সাথে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায।

Image Collage: Rumor Scanner

ছবির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ১৯৫৪ থেকে ১৯৬০ সালের দিকে আলজেরিয়ার স্বাধীনতা যু্দ্ধের সময় ফরাসি সৈন্য কর্তৃক আলজেরিয়ান একজন নারীকে যৌন নির্যাতনের সময় এই ছবি তোলা হয়েছিল।

আলজেরিয়া ভিত্তিক গণমাধ্যম Algeria Times এর ওয়েবসাইটে ২০১৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি “جرائم الاستعمار الفرنسي التي لا تغتفر” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

সুতরাং, আলজেরিয়ার স্বাধীনতা যু্দ্ধের সময় ফরাসি সৈন্য কর্তৃক আলজেরিয়ান নারীকে যৌন নির্যাতনের ছবিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

গণমাধ্যমে ভুল: ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসের পরিসংখ্যান

0

চলতি বছরের (২০২৪) প্রথম ছয় মাসে দেশের গণমাধ্যমগুলোতে ভুল সংবাদ প্রকাশের হার উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। রিউমর স্ক্যানারের ওয়েবসাইটে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত প্রকাশিত ফ্যাক্টচেকগুলোয় গণমাধ্যমের ভুলগুলো বিশ্লেষণ এবং পূর্বের পরিসংখ্যানের সাথে তুলনা করে এমন তথ্যই পাওয়া যাচ্ছে। 

পরিসংখ্যান কী বলছে?

রিউমর স্ক্যানার চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের তথ্যের উপর ভিত্তি করে প্রকাশিত এই পরিসংখ্যানে দেশের ১৬৪টি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলো যাচাই করেছে। এই সংবাদমাধ্যমগুলোতে সর্বোচ্চ ২০টি থেকে সর্বনিম্ন একটি ভুল তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া গেছে।  চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ভুল না পাওয়ায় পূর্বের পরিসংখ্যানে (২০২৩ সালের শেষ ছয় মাসের) থাকা ৫৮টি সংবাদমাধ্যমকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে ভুল তথ্যের প্রমাণ মিলেছে এমন আরো ১৮টি সংবাদমাধ্যম নতুন করে যুক্ত হয়েছে এই পরিসংখ্যানে। সব মিলিয়ে ১৬৪টি সংবাদমাধ্যমে থাকা ৬৮১টি প্রতিবেদন যাচাই করে ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে এবার। 

পরিসংখ্যানে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য প্রচারের দরুন প্রথম স্থানে রয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম ‘কালবেলা’। ভুল তথ্য ছিল এমন শনাক্ত হওয়া ৭৮টি প্রতিবেদনের মধ্যে ২০টি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মূলধারার এই সংবাদমাধ্যম। 

Image: Rumor Scanner 

গণমাধ্যমে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের মধ্যে মার্চ মাসে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য প্রচার হতে দেখা গেছে। পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে জানা যায়, সবচেয়ে বেশি ভুল সংবাদ প্রচারিত হয়েছে জাতীয় বিষয়ে। পরিসংখ্যানে বেসরকারি গণমাধ্যমের পাশাপাশি ভুল সংবাদ প্রচারের তালিকায় যেমন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমও রয়েছে তেমনি বাদ যায়নি বিদেশী গণমাধ্যমও। 

  • ১৬৪টি গণমাধ্যমের অবস্থান দেখুন এখানে
  • ভুল সংবাদগুলোর তালিকা দেখুন এখানে 

মার্চে ভুল তথ্য বেশি

গণমাধ্যমে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ৭৮টি প্রতিবেদনকে ভুল হিসেবে শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২২টি ভুল তথ্য (২৮ শতাংশ) শনাক্ত হয়েছে মার্চ মাসে। এপ্রিলে শনাক্ত ১৪টি (১৮ শতাংশ)। সবচেয়ে কম ভুল তথ্য শনাক্ত হয়েছে ফেব্রুয়ারিতে, ৭টি।

মিথ্যা আর বিভ্রান্তিকর সংবাদের ছড়াছড়ি  

২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন) মোট ৭৮টি ঘটনায় ৪১টি মিথ্যা, ৩৫টি বিভ্রান্তিকর এবং ০২টি বিকৃত তথ্যকে সত্য তথ্য হিসেবে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

এই পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, এসব ঘটনায় মিথ্যা তথ্য প্রচারের হার ছিল প্রায় ৫২ শতাংশ। তাছাড়া, বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর হারও নেহায়েত কম নয়, প্রায় ৪৫ শতাংশ।  

কালবেলা যেভাবে প্রথম  

গণমাধ্যমের ভুল সংবাদের এই পরিসংখ্যানের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে দেশের অন্যতম জাতীয় দৈনিক কালবেলা। সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক পেজে প্রকাশিত সংবাদগুলো বিশ্লেষণ করে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ২০টি ভুল সংবাদ প্রচারের প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার৷ এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাঁচটি ভুল সংবাদ প্রচার হয়েছে ধর্মীয় বিষয়ে, শতকরা হিসেবে যা প্রায় ২৫ শতাংশ।  

ক্যাটাগরি বা বিষয়ের বাইরে ধরনভিত্তিক ভুল সংবাদ বিবেচনায় কালবেলার সবচেয়ে বেশি ভুল ছিল তথ্য কেন্দ্রিক (৯), যা মোট ভুলের প্রায় ৪৫ শতাংশ। এছাড়া, প্রকাশিত সংবাদে কালবেলা সংশ্লিষ্ট ঘটনায় পুরোনো বা ভিন্ন ঘটনার ভুল ছবি ব্যবহার করেছে পাঁচটি, যা মোট ভুলের ২৫ শতাংশ। এর বাইরে ভিডিও কেন্দ্রিক ভুল সংবাদ প্রকাশের হার প্রায় ৩০ শতাংশ।

রিউমর স্ক্যানার কর্তৃক প্রকাশিত ২০২৩ সালের শেষ ছয় মাসের পরিসংখ্যানেও যৌথভাবে প্রথম অবস্থানে দেখা গেছে এই সংবাদমাধ্যমকে।  

কোন ক্যাটাগরিতে বেশি ভুল?  

গণমাধ্যমগুলোর চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রচারিত ভুল সংবাদের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, সবচেয়ে বেশি ভুল সংবাদ প্রচারিত হয়েছে জাতীয় বিষয়ে (১৪টি), শতকরার হিসেবে যা ১৮ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক বিষয়ে ভুল সংবাদ প্রচার হতে দেখা গেছে (১৩টি)। খেলাধুলা ও ধর্মীয় বিষয়ে ভুল সংবাদ প্রচারের সংখ্যা ছিল ১১টি, যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। এর বাইরে পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ে ৯টি, রাজনীতি বিষয়ে ৭টি, বিনোদন বিষয়ে ৬টি, শিক্ষা বিষয়ে ৩টি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে ২টি ভুল সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও প্রতারণা বিষয়ে সমানসংখ্যক (একটি করে) ভুল সংবাদ প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।   

কী ধরনের ভুল বেশি?  

ধরনভিত্তিক ভুল সংবাদ বিবেচনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে গণমাধ্যমগুলোয় সবচেয়ে বেশি ভুল সংবাদ ছিল তথ্য কেন্দ্রিক (৪১টি), যা মোট ভুলের ৫২ শতাংশ। এছাড়া, প্রকাশিত সংবাদে গণমাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ঘটনায় পুরোনো বা ভিন্ন ঘটনার ভুল ছবি ব্যবহার করেছে ১৯টি, যা শতকরা হিসেবে ২৪ শতাংশ। এর বাইরে ভিডিও কেন্দ্রিক ভুল সংবাদ প্রচারিত হয়েছে ১৮টি।   

কোন খবরে বেশি ভুল? 

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ৭৮টি বিষয়ের মধ্যে পাঁচটি বিষয়ে অর্ধশতাধিক গণমাধ্যমে ভুল সংবাদ প্রচার হতে দেখা গেছে। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞার খবরকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারের প্রেক্ষিতে প্রকাশিত ফ্যাক্টচেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক (৭২) গণমাধ্যমকে ভুল তথ্য প্রচার করতে দেখা গেছে। একটি খবরে অন্তত ১০টি গণমাধ্যম ভুল সংবাদ দিয়েছে এমন বিষয় পাওয়া গেছে ১৮টি। এসব বিষয়ের মধ্যে জাতীয়, আন্তর্জাতিক, ধর্মীয় এবং খেলাধুলা ক্যাটাগরিতে তিনটি করে ভুল সংবাদ শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, রাজনীতি ক্যাটাগরিতে একটি, শিক্ষায় একটি, বিনোদনে দুইটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে একটি এবং পরিবেশ ও জলবায়ু ক্যাটাগরিতে একটি করে ভুল সংবাদ পাওয়া গেছে। 

ক্রমিকফ্যাক্টচেকভুল তথ্য প্রদানকৃত গণমাধ্যম সংখ্যা 
০১সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি প্রশাসন৭২
০২‘পঞ্চায়েত-২’ সিরিজের অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারির মৃত্যুর গুজব গণমাধ্যমে৫৪
০৩সমর্থককে সাকিবের চড় মারার ভিডিওটি ভোটের দিনের নয়৫৩
০৪ফেসবুক ডাউনের ঘটনায় ব্যবহারকারীদের ‘চিল’ করতে বলেননি মার্ক জাকারবার্গ৫০
০৫পুরোনো ভিডিও প্রচার করে কাবায় তারাবিতে মুসুল্লিদের দীর্ঘ স্রোতের ভুল দাবি গণমাধ্যমে৫০

কোন ইস্যুতে বেশি ভুল? 

চলতি বছরের ০৭ জানুয়ারি দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একাধিক গুজব ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায় গণমাধ্যমসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে। রিউমর স্ক্যানার গত জানুয়ারিতে এই নির্বাচন কেন্দ্রিক চারটি ভুল সংবাদ শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছে। ফ্যাক্টচেকগুলো দেখুন , , , । চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে একক কোনো ঘটনা বিবেচনায় এই নির্বাচন নিয়েই সর্বোচ্চ ভুল সংবাদ প্রচার করেছে গণমাধ্যমগুলো। এছাড়া, অযোধ্যার রাম মন্দির উদ্বোধন ইস্যু, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪ ইস্যু এবং রাসেল’স ভাইপার ইস্যুতে তিনটি করে ভুল সংবাদ শনাক্ত করা হয়েছে। এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ অপহরণ ইস্যুতে গণমাধ্যমে প্রচারিত দুইটি সংবাদকে ভুল হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যু ইস্যুতে একটি ভুল সংবাদ প্রচার করেছে গণমাধ্যম।

কাদের বিষয়ে বেশি ভুল? 

জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান চলতি বছর আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। খেলোয়াড় পরিচয়ের পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণেও চলতি বছর বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমের খবরে এসেছে তার নাম। রিউমর স্ক্যানারের চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের গণমাধ্যমের ভুল সংবাদের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, একক কোনো ব্যক্তি হিসেবে সাকিবের বিষয়েই সবচেয়ে বেশি (৩টি) ভুল সংবাদ প্রচারিত হয়েছে গণমাধ্যমে। এই তিনটির মধ্যে একটি রাজনীতি কেন্দ্রিক হলেও বাকি দুইটি খেলাধুলা বিষয়ক। ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনগুলো দেখুন , , ।   এর বাইরে গণমাধ্যমের সংবাদের মাধ্যমে একটি করে ভুল তথ্যের শিকার হয়েছেন এমন ব্যক্তিরা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সাবেক অর্থ মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সাবেক সংসদ সদস্য সায়েদুল হক সুমন, সংগীত শিল্পী ও সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় জাহানারা আলম, জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় তামিম ইকবাল, পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার শোয়েব মালিক, ভারতের টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা, শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটার কুসাল মেন্ডিস, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড, ব্রাজিলের সাবেক ফুটবলার কাকা এবং ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। এছাড়া স্থাপনা হিসেবে সবচেয়ে বেশি (২টি করে) ভুল সংবাদের শিকার হয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেল ও ভারতের বাবরি মসজিদ। এছাড়া শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিষয়ে একটি ভুল সংবাদ প্রচার করা হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমেও ভুল তথ্যের প্রচার

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ‘বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)’ এর ওয়েবসাইটে প্রথম ছয় মাসে একটি ভুল সংবাদ প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। গত মার্চে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৩০০ টন পেঁয়াজ আমদানি শীর্ষক দাবিতে একটি সংবাদ গণমাধ্যমটি প্রচার করে। পরে অনুসন্ধানে দেখা যায়, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সে সময় ভারত থেকে কোনো পেঁয়াজ আমদানি করা হয়নি। তবে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশনে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কোনো ভুল তথ্য সম্বলিত সংবাদ প্রচারের প্রমাণ মেলেনি।

বিদেশী গণমাধ্যমও বাদ যায়নি

বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করা বিদেশি গণমাধ্যম বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দুইটি ভুল সংবাদের প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। 

জালালউদ্দিন হায়দারের তোলা ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি রেসকোর্স ময়দানের সমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ দেওয়ার সময়কার একটি ছবিকে সে বছরের ৭ মার্চের ছবি দাবি করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে গণমাধ্যমটি। এ বিষয়ে রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক এখানে। 

২০২০ সালে ইরানে একটি বিমান দুর্ঘটনার ছবিকে গত মে মাসে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের বিধ্বস্ত অবস্থার ছবি দাবিতে বিবিসি বাংলা সংবাদ প্রচার করে। এ বিষয়ে ফ্যাক্টচেক দেখুন এখানে। 

তবে ‘ডয়চে ভেলে বাংলা’ এবং ‘ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা’য় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কোনো ভুল তথ্য সম্বলিত সংবাদ প্রচারের প্রমাণ মেলেনি।   

৫৮ গণমাধ্যম বাদ, নতুন করে যুক্ত ১৮টি

গণমাধ্যমে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ভুল তথ্যের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, গত বছর অন্তত একটি সংবাদে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে, তবে এ বছর একটিও ভুল তথ্য সম্বলিত সংবাদ পাওয়া যায়নি এমন ৫৮টি গণমাধ্যম রয়েছে। এসব গণমাধ্যমকে এবারের পরিসংখ্যান থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে৷ এই তালিকায় দ্য ডেইলি স্টার, ডয়চে ভেলে বাংলা, ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা, বাংলা ট্রিবিউন, নিউ এজের মতো মূল ধারার গণমাধ্যমগুলোও রয়েছে। পূর্বের পরিসংখ্যানে ছিল না, তবে এ বছর ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে, নতুন করে এমন ১৮টি গণমাধ্যম যুক্ত হয়েছে পরিসংখ্যানে। 

Image: Rumor Scanner

৮১ শতাংশ গণমাধ্যমে উন্নতির চিত্র 

রিউমর স্ক্যানার ২০২৩ সালের শেষ ছয় মাসের ভুল সংবাদের পরিসংখ্যানের সাথে ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসের ভুল সংবাদের পরিসংখ্যানের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে দেখেছে, ১১৭টি গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে পূর্বের পরিসংখ্যানের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ভুল সংবাদ প্রচারের হার হ্রাস (শতকরা ৮১ শতাংশ প্রায়) পেয়েছে। উন্নতির এই তালিকায় সবার উপরে ৮৯ শতাংশ হ্রাসের হার নিয়ে অবস্থান করছে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)। গণমাধ্যমটি গত বছরের শেষ ছয় মাসে  ০৯টি ভুল সংবাদ প্রচার করলেও চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রচার করেছে একটি ভুল সংবাদ। এছাড়া, ৫০ শতাংশ বা তার বেশি হারে ভুলের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে এমন গণমাধ্যমের তালিকায় রয়েছে প্রথম আলো, সময় টিভি, আজকের পত্রিকা, মানবজমিন, যমুনা টিভি, চ্যানেল২৪, ইনডিপেনডেন্ট টিভি, ঢাকা ট্রিবিউন, ঢাকা পোস্ট, একাত্তর টিভি, বিডিনিউজ২৪, ডেইলি অবজারভার, ডেইলি সান, কালের কণ্ঠ, দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস, ইউএনবি, পূর্ব পশ্চিম বিডি, সময়ের আলো, রাইজিং বিডি, বাংলাদেশ পোস্ট, সংবাদ, সমকাল, সাম্প্রতিক দেশকাল, নিউজজি২৪, দৈনিক সংগ্রাম, বিবিএস বাংলা, এশিয়ান টিভি, বাংলাদেশ জার্নাল, রেডিও টুডে নিউজ, ভোরের ডাক, নাগরিক টিভি, ডেইলি মেসেঞ্জার, সময় জার্নাল, চ্যানেল আই, আমাদের সময়, বার্তা২৪, আলোকিত বাংলাদেশ, বহুমাত্রিক, ইত্তেফাক, নিউজ নাউ২৪, জনবাণী, বিজনেস জার্নাল, দৈনিক সরোবর, সুখবর, নিউজ২৪, মানবকণ্ঠ, নয়া দিগন্ত, এবিনিউজ২৪, ইনকিলাব, নয়া শতাব্দী, প্রতিদিনের সংবাদ, দৈনিক আমাদের সময়, বাহান্ন নিউজ, বাংলাদেশ টুডে, বাংলাভিশন, জাগোনিউজ২৪, বায়ান্ন টিভি, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, বাংলা ইনসাইডার, দেশ টিভি, ডেইলি বাংলাদেশ, স্বাধীন আলো, ২৪ লাইভ নিউজপেপার বাংলা, বাংলাদেশ প্রতিদিন, সোনালী নিউজ, দৈনিক করতোয়া, বণিক বার্তা, শেয়ার বিজ, দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস, সংবাদ প্রকাশ, ফ্রিডম বাংলা নিউজ, বিবার্তা২৪, এসএ টিভি, আজকের দর্পণ, একুশে সংবাদ, বাংলাদেশ মোমেন্টস, দৈনিক শিক্ষা, স্টার সংবাদ, পদ্মা নিউজ, ডেল্টা টাইমস, গ্লোবাল টিভি, সানবিডি২৪, বিএনএ নিউজ২৪, প্রবাসীর দিগন্ত, পদ্মা টাইমস২৪। পুরো তালিকা দেখুন এখানে 

২০২৩ সালের শেষ ছয় মাসে শীর্ষ পাঁচে ছিল কিন্তু এবারের পরিসংখ্যানে শীর্ষ পাঁচের তালিকায় আসেনি, এমন গণমাধ্যমের মধ্যে রয়েছে একাত্তর টিভি ও দৈনিক ইত্তেফাক। দুইটি গণমাধ্যমেরই ৬৭ শতাংশ হারে ভুল সংবাদ প্রচারের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। 

শীর্ষ পাঁচের সকল গণমাধ্যমেই উন্নতির চিত্র

এবার তালিকার শীর্ষ পাঁচে অবস্থান করছে ১২টি গণমাধ্যম। তবে এই সবগুলো গণমাধ্যমেরই পূর্বের পরিসংখ্যানের তুলনায় ভুল সংবাদ প্রচারের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। এসব গণমাধ্যমে সর্বোচ্চ ৬৭ শতাংশ থেকে সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ পর্যন্ত ভুল সংবাদ প্রচারের হার হ্রাস পেয়েছে। গণমাধ্যমগুলোর ভুল সংবাদ প্রচারের হার হ্রাস পাওয়ার শতকরা পরিমাণ যথাক্রমে চ্যানেল২৪ ৬৭ শতাংশ, সময় টিভি ৬৩ শতাংশ, ঢাকা পোস্ট ৫৮ শতাংশ, ডেইলি বাংলাদেশ ৫৮ শতাংশ, কালবেলা ৩৯ শতাংশ, জনকণ্ঠ ৩৬ শতাংশ, জুম বাংলা ৩৬ শতাংশ, যুগান্তর ৩৩ শতাংশ, আরটিভি ২৯ শতাংশ, ডিবিসি নিউজ ২৮ শতাংশ, বিডি২৪রিপোর্ট ২৫ শতাংশ এবং যায়যায়দিন ১০ শতাংশ। 

১৪ গণমাধ্যমের অবনমন

রিউমর স্ক্যানার ২০২৩ সালের শেষ ছয় মাসের ভুল সংবাদের পরিসংখ্যানের সাথে ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসের ভুল সংবাদের পরিসংখ্যানের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে দেখেছে, ১৪টি গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে পূর্বের পরিসংখ্যানের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ভুল সংবাদ প্রচারের হার বৃদ্ধি (শতকরা সাড়ে নয় শতাংশ প্রায়) পেয়েছে। 

অবনমনের এই তালিকায় সবার উপরে ২০০ শতাংশ হার নিয়ে অবস্থান করছে যৌথভাবে এখন টিভি, নতুন সময়, তরঙ্গ নিউজ এবং বাঙ্গি নিউজ। এছাড়া, ৫০ শতাংশ বা তার বেশি হারে ভুলের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এমন গণমাধ্যমের তালিকায় রয়েছে বিবিসি বাংলা, এটিএন নিউজ, দৈনিক গণমুক্তি, সংবাদ সারাবেলা, নিউজবাংলা২৪, মাই টিভি, ফেস দ্যা পিপল, অর্থ সংবাদ এবং প্রবাস জার্নাল। পুরো তালিকা দেখুন এখানে

প্রথম ছয় মাসে শীর্ষ পাঁচে ছিল না কিন্তু এবার আছে এমন গণমাধ্যমের তালিকায় রয়েছে আরটিভি, ডিবিসি নিউজ, যুগান্তর, যায়যায়দিন, জনকণ্ঠ এবং বিডি২৪রিপোর্ট। তবে এদের মধ্যে সকলেরই পূর্বের তুলনায় ভুল সংবাদ প্রচারের হার হ্রাস পেয়েছে।   

আরো ১৪ গণমাধ্যমের অবস্থানের পরিবর্তন নেই

রিউমর স্ক্যানার ২০২৩ সালের শেষ ছয় মাসের ভুল সংবাদের পরিসংখ্যানের সাথে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের ভুল সংবাদের পরিসংখ্যানের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে দেখেছে, পরিসংখ্যানের অধীনে থাকা ১৪টি গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে ভুল সংবাদ প্রচারের হার হ্রাস বা বৃদ্ধি পায়নি। এরা হলো সময়ের কণ্ঠস্বর (৬), ঢাকা রিপোর্ট২৪ (৫), বাংলাদেশ টাইমস (৫), বিজনেস বাংলাদেশ (৪), মত ও পথ (৪), খবরের কাগজ (৩), আমার সংবাদ (৩), বিজনেস ইনসাইডার (২), ডেইলি মিরর অব বাংলাদেশ (২), অধিকার বিডি (২), প্রাইম নিউজ (১), নিরাপদ নিউজ (১), স্টার গল্প (১), অধিকার.নিউজ (১)। এসব গণমাধ্যমে গত বছরের শেষ ছয় মাসে যে পরিমাণ ভুল সংবাদ প্রচার করা হয়েছিল, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসেও একই পরিমাণ ভুল সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। 

ধরে রাখতে হবে উন্নতির চেষ্টা  

দেশের গণমাধ্যমগুলোয় ভুল তথ্য প্রচারের হার ক্রমশ কমে আসছে। উন্নতির এই চেষ্টা রিউমর স্ক্যানারের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য পূরণে বড় এক সাফল্য বলে মনে করছি আমরা। গণমাধ্যমে ভুল সংবাদের পরিসংখ্যান প্রকাশের উদ্দেশ্য একটাই, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন করা। গণমাধ্যম তার আস্থার জায়গা হারিয়ে ফেলুক, এমনটা প্রত্যাশিত নয়। সেই লক্ষ্যে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার বিকল্প নেই। সংবাদ প্রকাশের পূর্বে একাধিক সূত্র থেকে ক্রসচেক করে নেওয়া, প্রয়োজনে মূল সূত্র থেকেই সংশ্লিষ্ট বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে নিতে পারে গণমাধ্যমগুলো। তবে কিছু সংবাদের ক্ষেত্রে সাধারণ ক্রসচেক কিংবা প্রচলিত অনুসন্ধান কাজে দেয় না। এ ধরণের সংবাদ যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সারাবিশ্বেই ফ্যাক্টচেকিং সংস্থাগুলোর সহায়তা নেওয়া একটি সাধারণ বিষয়। বাংলাদেশেও এ বিষয়টির চর্চা শুরু হতে দেখেছি আমরা। দেশের একাধিক গণমাধ্যম তথ্য যাচাইয়ে বিগত সময়ে রিউমর স্ক্যানারের সহায়তা নিয়েছে। রিউমর স্ক্যানার টিম এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতারই আশ্বাস দিয়ে থাকে। 

শেখ হাসিনা মানসিকভাবে অসুস্থ শীর্ষক  ভুয়া মন্তব্য জয়ের নামে যমুনা টিভির ভুয়া ফটোকার্ডে প্রচার

0

সম্প্রতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে আওয়ামী লীগের এক কর্মীর কলরেকর্ড গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে ‘‘আমার মা মানসিকভাবে এখন অসুস্থ। তার কলরেকর্ডকে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই : যমুনা টিভিকে জয়’’ শীর্ষক শিরোনামে বেসরকারি ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম যমুনা টেলিভিশন এর লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

এছাড়া, যমুনা টেলিভিশনের বরাতে উক্ত দাবিতে পোস্ট হতেও দেখা যায়। 

ফটোকার্ড যুক্ত করে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফটোকার্ড ছাড়া করে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘আমার মা মানসিকভাবে এখন অসুস্থ। তার কলরেকর্ডকে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই’ যমুনা টিভিকে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা এবং যমুনা টিভি বা অন্য কোনো গণমাধ্যম কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে যমুনা টিভির লোগো রয়েছে। উক্ত তথ্যের সূত্রে যমুনা টিভি‘র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে, যমুনা টিভির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে ১৪ সেপ্টম্বর আলোচিত ফটোকার্ডের বিষয়ে একটি পোস্ট পাওয়া যায়। আলোচিত ফটোকার্ডটি ভুয়া উল্লেখ করে গণমাধ্যমটি জানায়, ‘যমুনা টিভি এমন কোনো সংবাদ প্রচার করেনি; গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না’।

Screenshot: Jamuna Television Facebook Page 

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে যমুনা টিভি বা অন্য কোনো গণমাধ্যমেও সাম্প্রতিক সময়ে সজীব ওয়াজেদ জয়ের কোনো সাক্ষাৎকার খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি সজীব ওয়াজেদ জয়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং,‘‘আমার মা মানসিকভাবে এখন অসুস্থ। তার কলরেকর্ডকে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই : যমুনা টিভিকে জয়’’ শীর্ষক শিরোনামে যমুনা টিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

গাজীপুরে বেক্সিমকো কোম্পানিতে অগ্নিসংযোগে ১৩০ জন নিহতের দাবিটি গুজব

0

গত ১১ সেপ্টেম্বর তারিখে গাজীপুরের কাশিমপুর সারাবো এলাকায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের দেওয়া অগ্নিসংযোগে পুড়ে যায় বিগবস করপোরেশন লিমিটেডের কারখানা। এরই প্রেক্ষিতে দেশীয় গণমাধ্যম দেশ টিভির বরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দাবি প্রচার করা হচ্ছে, “গাজীপুর বেক্সিমকো কোম্পানিতে আগুনে ১৩০ জন নিহত।”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুরে আগুন দেওয়া প্রতিষ্ঠানটি বেক্সিমকো গ্রুপের মালিকানাধীন নয় এবং সেখানে কোনো নিহতের ঘটনাও ঘটেনি। দেশটিভিও এমন কোনো সংবাদ দেয়নি বরং অগ্নিসংযোগের শিকার প্রতিষ্ঠানটি এপটেক গ্রুপের মালিকানাধীন বিগবসের কারখানা। ভুয়া দাবিটি দেশ টিভিকে জড়িয়ে প্রচার করা হয়েছে।

আগুন দেওয়া কারখানাটি বেক্সিমকো গ্রুপের মালিকানাধীন কি না এ বিষয়ে অনুসন্ধানে, এপটেক গ্রুপের চিফ এইচআর মোঃ আলী আহাদ বিন জাহিদসহ একাধিক ব্যক্তিবর্গের সাথে যোগাযোগ করে ও নিজস্ব অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার টিম নিশ্চিত হয়, গাজীপুরে শ্রমিকদের দেওয়া আগুনে পুড়ে যাওয়া ‘বিগবস’ কারখানাটি বেক্সিমকো গ্রুপের মালিকানাধীন নয় বরং, কারখানাটি ‘এপটেক’ গ্রুপের। যার মালিক সৈয়দ রেজাউল হোসেন কাজী। এ বিষয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

কারখানায় আগুনে ১৩০ জন নিহত হয়েছেন কি না তা জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে দেশ টিভির ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজে আলোচিত দাবির স্বপক্ষে প্রচারিত কোনো সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। 

এ বিষয়ে দেশ টিভির ফেসবুক পেজে খুঁজে পাওয়া সর্বশেষ প্রকাশিত দুই প্রতিবেদনেও ১৩০ জন নিহতের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি। বরং, কারখানায় আগুন দেওয়া, শ্রমিকদের অসন্তোষ ইত্যাদি তথ্য পাওয়া যায়।

বিগবস কারখানার আগুনে ১৩০ জন নিহত হয়েছেন দাবিতে দেশ টিভি কোনো সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল কি না তা জানতে রিউমর স্ক্যানার যোগাযোগ করে দেশ টিভির সম্পাদক আরিফ হাসানের সাথে। তিনি জানান, “আমরা (দেশ টিভি) এমন (বিগবস কারখানার আগুনে ১৩০ জন নিহত শীর্ষক) কোনো সংবাদ প্রকাশ করিনি।”

দেশ টিভি ছাড়া অন্য কোনো বিশ্বস্ত বা মূলধারার গণমাধ্যম সূত্রে এমন কোনো দাবি প্রচার করা হয়েছিল কি না তা অনুসন্ধান করতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে গণমাধ্যম বা বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবিটির স্বপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

উক্ত কারখানার আগুনে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে দেশীয় সংবাদমাধ্যম জাগোনিউজ২৪ গত ১২ সেপ্টেম্বর “বিগবস কারখানায় আগুনে ক্ষতি ৫৫ কোটি টাকা” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি পড়ে জানা যায়, “গাজীপুরের কাশিমপুর সারাবো এলাকায় বহিরাগত শ্রমিকদের দেওয়া আগুনে পুড়ে যাওয়া বিগবস করপোরেশন লিমিটেডের কারখানায় ৫৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ।” এছাড়াও প্রতিবেদনটিতে জানানো হয়, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারখানার সিনিয়র ম্যানেজার এডমিন এমএম হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে জিডি করেছেন। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, ১১ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাতপরিচয় তিন থেকে চার হাজার দুষ্কৃতকারী এ্যাপটেক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বিগবস করপোরেশন, বিগবস ওয়াসিং, এপটেক ক্যাসুয়ার, সালিনা ফ্যাশন লিমিটেডের গোডাউনের মেইন গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে। তারা সিকিউরিটি গার্ডদের বেধড়ক মারধর করে। তখন তাদের বিরত করার জন্য ফ্যাক্টরির কর্মকর্তা ও শ্রমিকরা চেষ্টা করলে ২৫ জনকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে আহত করে। একপর্যায়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে গোডাউনে থাকা ফেব্রিক্স, কেমিক্যাল, কার্টন, প্লাস্টিক হ্যাংগারসহ চলমান বায়ারের আরও অন্যান্য মালামাল ও একটি স্টাফ বাস পুড়িয়ে দেয়। যাতে আনুমানিক ৫৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়।

অর্থাৎ, আলোচিত দাবির স্বপক্ষে কোনো তথ্য বা উল্লেখ কারখানার সিনিয়র ম্যানেজারের পক্ষ থেকেও আসেনি। 
সুতরাং, গাজীপুরে বেক্সিমকো কোম্পানিতে অগ্নিসংযোগে ১৩০ জন নিহত হয়েছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

এটি কর্ণফুলী টানেলের ছবি নয়

0

সম্প্রতি কর্ণফুলী টানেলের (বঙ্গবন্ধু টানেল) নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে প্রকাশিত প্রতিবেদনে কর্ণফুলী টানেলের ছবি মর্মে গণমাধ্যমে একটি ছবি প্রকাশিত হয়৷ 

কর্ণফুলী টানেলের ছবি মর্মে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন : এসএ টিভি

উক্ত ছবিকে কর্ণফুলী টানেলের ছবি মর্মে ব্যবহার করে ফেসবুকেও ফটোকার্ড প্রকাশ করা হয়। ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিটি কর্ণফুলী টানেলের নয় বরং বসনিয়ার ২০১৪ সালে চালু হওয়া একটি টানেলের ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও উক্ত ছবিটি কর্ণফুলী টানেলের ছবি দাবিতে গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হলে রিউমর স্ক্যানার টিম ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।