Home Blog

ইরানের পথে রওনা দিলাম শীর্ষক মন্তব্য করেননি সাদিক কায়েম, জনকণ্ঠের সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম “শাহা’দাতের তামান্না নিয়ে পথে নেমেছি৷ ভয় শুধু আল্লাহর। ইরানের পথের রওনা দিলাম।” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে দৈনিক জনকণ্ঠের লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানে।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাদিক কায়েম আলোচিত মন্তব্যটি করেননি এবং উক্ত শিরোনামে দৈনিক জনকণ্ঠও কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, সাদিক কায়েমের ভিন্ন মন্তব্য সম্বলিত জনকণ্ঠের ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তার সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে জনকণ্ঠের লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ ১৮ জুন ২০২৫ উল্লেখ পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে জনকণ্ঠের ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি অন্য কোনো গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, জনকণ্ঠের ফেসবুক পেজে গত ১৮ জুন ‘শাহা’দাতের তামান্না নিয়ে পথে নেমেছি৷ ভয় শুধু আল্লাহর।’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

Photocard Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডের সাথে উক্ত ফটোকার্ডের শিরোনাম ব্যতিত বাকি সকল উপাদানের মিল রয়েছে। জনকণ্ঠের মূল ফটোকার্ডটিতে ‘শাহা’দাতের তামান্না নিয়ে পথে নেমেছি৷ ভয় শুধু আল্লাহর।’ শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে ‘শাহা’দাতের তামান্না নিয়ে পথে নেমেছি৷ ভয় শুধু আল্লাহর। ইরানের পথের রওনা দিলাম।’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।

অর্থাৎ, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে জনকণ্ঠের ফটোকার্ড সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

মূল ফটোকার্ড সম্বলিত জনকণ্ঠের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম। নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসে উক্ত মন্তব্য করেন তিনি। তবে উক্ত পোস্টে তাকে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।

সুতরাং, সাদিক কায়েম ‘শাহা’দাতের তামান্না নিয়ে পথে নেমেছি৷ ভয় শুধু আল্লাহর। ইরানের পথের রওনা দিলাম।’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে জনকণ্ঠের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র


যাত্রাবাড়ীর নারী সমন্বয়কের একান্ত মুহূর্তের ছবি দাবিতে ভারতীয় দম্পতির ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, দুই নারী-পুরুষের একান্ত মুহূর্তের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওর ক্যাপশনে নারীকে যাত্রাবাড়ীর মুখ্য সমন্বয়ক সামান্তা জাহান কলি বলে দাবি করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

উক্ত দাবিতে এক্স- এ প্রচারিত ছবি ও  ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওর নারী ‘জুলাই আন্দোলন’ এর যাত্রাবাড়ী কিংবা অন্য কোনো শাখার সমন্বয়ক নন। বরং, ইন্টারনেট থেকে ভারতীয় দম্পতির ভিডিও সংগ্রহ করে তা আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Indrani Ghosh’ নামক ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ৩০ এপ্রিল প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় অ্যাকাউন্টটি থেকে প্রতিনিয়ত এই দুই নারী-পুরষের ভিডিও প্রচার করা হয়ে থাকে (, , , , )। পোস্টগুলোতে গুলোতে ‘Suvro Ghosh’ নামের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টকে ট্যাগ করা হয়। Suvro Ghosh এর অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে এটি নিশ্চিত হওয়া যে প্রচারিত ভিডিওতে থাকা পুরুষ এই শুভ্র ঘোষই এবং ভিডিওতে থাকা নারী সম্পর্কে তার স্ত্রী। দুইটি অ্যাকাউন্টেই লোকেশন হিসেবে ভারতের নাম উল্লেখ রয়েছে। 

তাছাড়া, ইন্দ্রাণী ঘোষশুভ্র ঘোষ এর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করেওও নিশ্চিত হওয়া যায়, তারা দুইজন স্বামী-স্ত্রী।

উল্লেখ্য, সামান্তা জাহান কলি নামের কোনো নারী যাত্রাবাড়ী থানার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক থাকার পক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ইন্টারনেট থেকে ভারতীয় দম্পতির ভিডিও সংগ্রহ করে তা যাত্রাবাড়ীর নারী সমন্বয়ক ও তার বয়ফ্রেন্ডের একান্ত মুহূর্তের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মোসাদের প্রধান ঘাঁটিতে আগুন দাবিতে চীনের অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও প্রচার

চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের তেল আবিবে অবস্থিত প্রধান ঘাঁটিতে আগুন লাগার দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি মোসাদের প্রধান ঘাঁটির নয় বরং চীনের একটি মোটরসাইকেল পার্কিংয়ে অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে গত ১১ জুন ‘Wbo’ নামের একটি টিকটক প্রোফাইলে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়, যার সঙ্গে আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যগত মিল দেখা যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে চীনা ভাষায় ‘ভয়াবহ আগুন’ লেখা থাকলেও নির্দিষ্ট কোনো স্থান বা বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে আরও অনুসন্ধানে, ‘Facts Prime’ নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টে একই দিন পোস্ট করা কিছু ছবি ও ভিডিওর সঙ্গেও আলোচিত ভিডিওর মিল পাওয়া যায়। পোস্টে জানানো হয়, চীনের শিকিয়াপু এলাকায় একটি মোটরসাইকেল পার্কিংয়ে ভয়াবহ আগুন লাগে, যাতে বহু মোটরসাইকেল ও ইলেকট্রিক যান পুড়ে যায়। 

Comparison: Rumor Scanner.

১২ জুন বিবিসিতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়, চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় চোংকিং শহরের জিউলংপো জেলার শিকিয়াপু এলাকায় ওই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ভিডিওতে দেখা যায়, আগুন থেকে প্রচুর ধোঁয়া বের হচ্ছে এবং স্থানীয়রা তা দাঁড়িয়ে দেখছে। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয় এবং এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
সুতরাং, চীনের একটি মোটরসাইকেল পার্কিংয়ে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিওকে মোসাদের প্রধান ঘাঁটিতে আগুন লাগার দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে ছড়ানো হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সিলেট মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়োগের ভুয়া বিজ্ঞপ্তি 

0

সম্প্রতি, সিলেট মা ও শিশু হাসপাতাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে দাবিতে কথিত বিজ্ঞপ্তিটির একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। গত ১১ জুন এর তারিখে প্রকাশিত এই বিজ্ঞপ্তিতে চারটি পদে আবেদন করতে আহ্বান জানিয়ে [email protected] এই ইমেইল ঠিকানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। জানানো হয়েছে, আবেদনের সময়সীমা ১৯ জুন দুপুর ১২ টা।

উক্ত দাবির ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কথিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সিলেট মা ও শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেয়নি বরং ভিন্ন একটি হাসপাতালের ২০২২ সালের পুরোনো বিজ্ঞপ্তি সম্পাদনা করে ভুয়া এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে স্টাডি এবং নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক ওয়েবসাইটে (, ) ২০২২ সালের আগস্টে প্রকাশিত চট্টগ্রাম ইপিজেড হাসপাতালের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির খোঁজ মেলে। এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সূত্র নং ছিল ০৩.০৬.১৫৩৫.৩৩৫.১১.০২৯.১০-৪৬৪৬। এই সূত্রের শেষের চারটি সংখ্যা (৪৬৪৬) বদলে ২০২৫ লেখা হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট মা ও শিশু হাসপাতালের নামে প্রচারিত কথিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেও। দুইটি বিজ্ঞপ্তির ছবির ডিজাইন এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদি পর্যবেক্ষণ করে সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তির ছবিটি ২০২২ সালের চট্টগ্রাম ইপিজেড হাসপাতালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি থেকে সম্পাদনা করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এছাড়া, পুরোনো বিজ্ঞপ্তিটির ছবিতে তারিখ, ঠিকানা, পদের বিষয়, আবেদনের মাধ্যম ও সময়সীমা সংক্রান্ত নির্দেশনা বদলে দিয়ে নতুন বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে।  

Comparison: Rumor Scanner  

অনুসন্ধানে সিলেট মা ও শিশু হাসপাতালের ওয়েবসাইট এবং জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিভিন্ন কিওয়ার্ড সার্চ করে এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কোনো অস্তিত্ব মেলেনি।  

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে, “সিলেট মা ও শিশু হাসপাতাল অনলাইনে কোন ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি। সবাই সব ধরনের লেনদেনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন। কে বা কারা আমাদের হাসপাতালের নাম ও লোগো ব্যবহার করে ভূয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনলাইনে প্রচার করছে।”

ভুয়া নিয়োগের এই ধরনটি খুব সাধারণ। গেল কয়েক বছর ধরেই এই ধরনের মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণা করে আসছেন প্রতারকরা। রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিট গত বছর এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরে। দেখুন এখানে। 

সুতরাং, সিলেট মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়োগের এই বিজ্ঞপ্তিটি বানোয়াট ও প্রতারণামূলক। 

তথ্যসূত্র 


সিরিয়ার ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে ইরানের পক্ষে মুসলিম যোদ্ধাদের সমাবেশের দৃশ্য দাবিতে প্রচার

শুক্রবার (১৩ জুন) ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান ইসরায়েলে পাল্টা হামলা করে। দুই দেশের মধ্যে এই হামলা ও পাল্টা হামলা এখনো চলমান।

এরই প্রেক্ষিতে, ইরানের পক্ষে লড়াইয়ের জন্য ইরাক-ইয়েমেন সীমান্তে জড়ো হচ্ছে মুসলিম যোদ্ধারা – এই দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইরানের পক্ষে লড়াইয়ের জন্য ইরাক-ইয়েমেন সীমান্তে মুসলিম যোদ্ধাদের জড়ো হওয়ার দৃশ্যের নয়। বরং, সিরিয়া-ইরাক সীমান্তে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা জোরদার করার উদ্দেশ্যে পাঠানো সামরিক বহরের দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে সিরিয়ার গণমাধ্যম সংস্থা ‘Levant24’ এর এক্স অ্যাকাউন্টে গত ১৪ জুন একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

ভিডিওটির ক্যাপশন বর্ণনায় বলা হয়, সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনী দেইর এজোর প্রদেশের সিরিয়া-ইরাক সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা পাঠিয়েছে। এর মধ্যে গত রাতে (Levant24 -এ ভিডিওটি প্রচার অনুয়ায়ী ১৩ জুন) ইরাকি মিলিশিয়া ও সিরীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।

Comparison: Rumor Scanner

এছাড়াও, কুর্দিশ-ইরাকি গণমাধ্যম ‘Channel 8 Kurmanci’ এর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৪ জুন প্রচারিত ভিডিওটির একটি দীর্ঘতম সংষ্করণ খুঁজে পাওয়া যায়। এতে দাবি করা হয়, সূত্রগুলো জানিয়েছে যে, গতকাল ইরাকের ভূখণ্ড থেকে দেইর এজোর-এর পশ্চিমাঞ্চলে দামেস্কের (সিরীয় সরকারের) অনুগত বাহিনীর ওপর একটি হামলা চালানো হয়েছে, যার ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। (অনূদিত)

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (Syrian Observatory for Human Rights – SOHR) এর ওয়েবসাইটে গত ১৪ জুন প্রকাশিত Hectic movements | General Security forces send military convoy towards Syria-Iraq border to counter threats of “PMF” শীর্ষক শিরোনমের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: syriahr

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, সিরিয়ার জেনারেল সিকিউরিটি বাহিনী দেইর এজোরে সিরিয়া-ইরাক সীমান্তের কাছাকাছি এলাকাগুলোতে একটি সামরিক বহর পাঠিয়েছে। এর উদ্দেশ্য হলো ইরাকের পপুলার মবিলাইজেশন ফোর্সেস (PMF) এবং অন্যান্য গোষ্ঠীর ক্রমবর্ধমান হুমকির বিরুদ্ধে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা জোরদার করা, যারা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে।

অর্থাৎ এটি নিশ্চিত যে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ইরানের পক্ষে লড়াইয়ের জন্য ইরাক-ইয়েমেন সীমান্তে মুসলিম যোদ্ধাদের জড়ো হওয়ার দৃশ্যের নয়।

সুতরাং, সিরিয়া-ইরাক সীমান্তে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা জোরদার করার উদ্দেশ্যে পাঠানো সামরিক বহরের দৃশ্যকে চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইরানের পক্ষে লড়াইয়ের জন্য ইরাক-ইয়েমেনের সীমান্তে মুসলিম যোদ্ধাদের জড়ো হওয়ার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভোলা থেকে গরু ও ছাগল চুরি করে এনে ববি শাখা ছাত্রশিবিরের কোরবানি করার দাবিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, ‘ভোলা থেকে চুরি করা ২টি গরু ও ১টি ছাগল দিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের কোরবানি’- শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভোলা থেকে একটি গরু ও দুইটি খাসি চুরি করে এনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের কোরবানি করার দাবিটি সঠিক নয় বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

শুরুতে আলোচিত দাবিটির সূত্রপাতের বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ফেসবুক মনিটরিং টুলস ব্যবহার করে Sabuj Howlader নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাভিশন-সংবাদ নামক একটি গ্রুপে গত ০৮ জুন বিকাল ৩ টা ০৫  মিনিটে উক্ত দাবিতে প্রচারিত সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook 

একই অ্যাকাউন্ট থেকে ঐদিন কাছাকাছি সময়ে কয়েকটি গ্রুপে (, , , , ) একই পোস্টটি করা হয়।  

তবে উক্ত পোস্টগুলোতে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

তবে, কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে গত ০৭ জুন “ঈদে ববি ছাত্রশিবিরের মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানরত শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। গত ৭ জুন ঈদের নামাজ শেষে দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির দ্বিতীয় তলায় শুরু হয় এই আয়োজন। অনুষ্ঠানে দুটি গরু ও একটি খাসির মাংস দিয়ে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

সুতরাং, ভোলা থেকে চুরি করা গরু-ছাগল দিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের কোরবানি শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ইসরায়েলে ইরানের মিসাইল হামলার দৃশ্য দাবিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভিডিও প্রচার 

চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষাপটে, ইরান কর্তৃক সমুদ্রের তলদেশ থেকে সাবমেরিন দিয়ে প্রথমবারের মত মিসাইল নিক্ষেপের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সমুদ্রের তলদেশ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ইরান কর্তৃক ইসরায়েলে সাবমেরিন দিয়ে মিসাইল হামলার দৃশ্য নয়; বরং এটি ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া কর্তৃক কৃষ্ণসাগর থেকে কিয়েভের কাছে ঝিটোমির শহরে ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামোর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভিডিও। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ২৬ মার্চ তারিখে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে থাকা ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, রাশিয়া কৃষ্ণসাগর থেকে ইউক্রেনের ঝিটোমির অঞ্চলে চারটি ‘কালিব্র’ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। রাশিয়ার এই হামলায় ইউক্রেনের একটি অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের গুদাম সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে। (অনূদিত) 

পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ব্রিটেন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে একই তারিখে অর্থাৎ ২০২৪ সালের ২৬ মার্চে ‘Ukraine War: Russia launch missiles ‘from black sea’ targeting Ukraine’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওর বিস্তারিত বিবরণীতে বলা হচ্ছে, “রাশিয়ান সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা কৃষ্ণসাগর থেকে ইউক্রেনের একটি সামরিক অবকাঠামোর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ঝিটোমির, যা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে প্রায় ৯৬ মাইল দূরে অবস্থিত।” (অনূদিত) 

এছাড়া, স্কাই নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিওর বিস্তারিত অংশে আলোচ্য হামলা ও ঘটনার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, কৃষ্ণসাগর থেকে ছোড়া ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের লভিভ ও ঝিটোমিরে বিস্ফোরণ হয় এবং তেল ডিপো ও সামরিক স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। উক্ত প্রতিবেদনের শিরোনামে একই তথ্যের উল্লেখ রয়েছে এবং বিস্তারিত অংশে একই ভিডিওর উল্লেখ পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের আগ থেকেই ইন্টারনেটে রয়েছে। যা থেকে নিশ্চিত যে এটি চলমান ইরান ইসরায়েল সংঘাতের ভিডিও নয়। 

সুতরাং, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে ইরান কর্তৃক ইসরায়েলে মিসাইল নিক্ষেপের দৃশ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ইরানের হামলায় ইসরায়েলের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার দৃশ্য দাবিতে এআই নির্মিত ভিডিও প্রচার 

গত ১৩ জুন (শুক্রবার) ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েল। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলা এখনো চলমান রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে ইরানের হামলায় ইসরায়েলের অবস্থা দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি প্রায় ১৬ লক্ষ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওতে প্রায় ৫৩ হাজার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটি প্রায় ৩ হাজার পাঁচশতবার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইসরায়েলের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ভিডিও নয়; বরং, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে 3amelyon নামের ইউজার আইডির একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৪ জুন তারিখে “عامليون #جنوب_لبنان” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটির সাথে এটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Comparison : Rumor Scanner 

তাছাড়া, ভিডিওটিতে দেখতে পাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার দৃশ্য পর্যবেক্ষণ করে এটি এআই দ্বারা তৈরি বলে প্রতীয়মান হয়। 

পরবর্তীতে, 3amelyon নামের ইউজার আইডির ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে তাতে এমন ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় নির্মিত একাধিক কন্টেন্ট দেখতে পাওয়া যায়। কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে নির্মিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

পাশাপাশি, অ্যাকাউন্টটির বায়ো সেকশন ইংরেজিতে ভাষান্তরের মাধ্যমে দেখা যায়, সেখানে ‘Resistance to Artificial Intelligence’ শীর্ষক লেখা রয়েছে। যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, উক্ত ভিডিওগুলো এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে।

Screenshot: Rumor Scanner

পরবর্তীতে, বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী একাধিক টুল দিয়ে যাচাই করলে তা এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯৩ শতাংশ পর্যন্ত বলে জানা যায়। 

Screenshot: Rumor Scanner 

সুতরাং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওকে চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইরানের হামলায় ইসরায়েলের অবস্থা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

  • 3amelyon: Instagram Post
  • AI-Generated Detection Tool: Cantilux 
  • Rumor Scanner’s Analysis 

ঢাকার গাবতলীতে আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে খুলনার এপ্রিলের ভিডিও প্রচার 

গত ১২ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। গত ১৭ জুন রাজধানী ঢাকার গাবতলীতে দলটির ব্যানারে সংঘটিত মিছিল দাবিতে ‘এই মুহূর্তে আজকের #ব্রেকিং,, জয় বাংলার স্লোগান এ উত্তাল ঢাকা গাবতলী থেকে সরাসরি।’ একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত মিছিলের ভিডিওটি ঢাকার গাবতলীর নয় এবং ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়েরও নয় বরং, গত এপ্রিল মাসে খুলনার জিরো পয়েন্ট এলাকায় খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে অনুষ্ঠিত মিছিলের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম Channel 24 এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২০ এপ্রিল ‘খুলনায় আওয়ামী লীগের মিছিল, নেতা-কর্মীদের খুঁজছে পুলিশ’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

একই ভিডিও ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম Independent Television এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২০ এপ্রিল ‘খুলনার জিরো পয়েন্টে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ঝটিকা মিছিল’ শিরোনামে প্রকাশ করা হয়।

ভিডিওটির বিবরণী থেকে জানা যায়, সেদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খুলনা জেলার জিরো পয়েন্ট এলাকায় ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, খুলনা জেলা শাখা’ এর ব্যানারে খুলনায় ঝটিকা মিছিল করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর খুলনায় এটাই ছিল প্রথম দলটির প্রথম কোনো মিছিল। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার গাবতলীতে আওয়ামী লীগের ব্যানারে কোনো মিছিলের নয়।

সুতরাং, সম্প্রতি ঢাকার গাবতলীতে আওয়ামী লীগের ব্যানারে মিছিলের ভিডিও দাবিতে গত এপ্রিল মাসে খুলনায় আওয়ামী লীগের ব্যানারে অনুষ্ঠিত মিছিলের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ইরান কর্তৃক মোসাদের এজেন্টদের গ্রেফতারের নয়, ভিডিওটি তুরস্কে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের

সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষিতে ‘ব্রেকিং নিউজ:> ইরান ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ইহুদি এজেন্টদের গ্রেপ্তার করেছে! তারা তেহরানের কাছে একটি গোপন ভূগর্ভস্থ ইসরাইলি ড্রোন কারখানা  করেছিল। সেখান থেকে যা ইরানি নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করে হামলা করা হয়েছিল।’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইরান কর্তৃক ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্টদের গ্রেফতারের নয় বরং, ২০১৬ সালে তুরস্কে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার অভিযুক্তদের তদন্তের অংশ হিসেবে গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে তুরস্কের গণমাধ্যম Medyascope এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান আকিন ওজতুর্ক এবং অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার অন্যান্য অভিযুক্তদের তদন্তের অংশ হিসেবে সেসময় গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এটি সে ঘটনারই দৃশ্য। 

একই বিষয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম The Sun এর ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ১৯ জুলাই ‘COUP KINGPINS Turkey parades coup ‘plotters’ as Merkel threatens EU ban over plan to execute them’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনেও একই ভিডিও ও তথ্য পাওয়া যায়। 

আলোচিত ভিডিওতে বিমান বাহিনীর প্রাক্তন প্রধান আকিন ওজতুর্ক সহ অভ্যুত্থানের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের হাত বেঁধে ক্যামেরার সামনে কুচকাওয়াজ করানো হয়েছিল এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়ার আগে তাদের নাম এবং পদমর্যাদা জানাতে বলা হয়েছিল। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে ইরান কর্তৃক ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্টদের গ্রেফতারের দাবির ঘটনার নয়।

সুতরাং, ইরান কর্তৃক ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্টদের গ্রেফতারের ভিডিও দাবিতে  ২০১৬ সালে তুরস্কে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র