Home Blog Page 3

সাতক্ষীরায় এক ব্যক্তিকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি জামায়াত নেতা নন

0

সম্প্রতি সাতক্ষীরায় চুক্তি ভঙ্গ করে অন্যের কাছে জমি বিক্রির অভিযোগে ভবেন্দ্র দাস নামের এক ব্যক্তিকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম আব্দুল আহাদ গাজী। ফেসবুকের বিভিন্ন পোস্টে তাকে জামায়াত নেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জামায়াত (জামাত) নেতা দাবি করে প্রচারিত কিছু পোস্ট এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত আবদুল আহাদ গাজী জামায়াত নেতা নন। প্রকৃতপক্ষে, তিনি একটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ের বিএনপি নেতা।

বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে গত ২৯ আগস্ট “খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধরের অভিযোগ বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে” শিরোনামে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে অভিযুক্ত আব্দুল আহাদ গাজীকে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অন্যান্য গণমাধ্যমেও একই রকম তথ্য পাওয়া যায়। 

প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়- “সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় চুক্তি ভঙ্গ করে অন্যের কাছে জমি বিক্রির করার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সকালে উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খেশরা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল আহাদ গাজীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন ভবেন্দ্র দাস (৫৯) নামের এক ব্যক্তি।”

ঘটনার জেরে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলেও সংবাদ পাওয়া যায়। সংবাদে বলা হয়- “ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর আহাদ আলী মোড়লকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। খেশরা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ আব্দুল গফ্ফার গাজী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘অন্যায় করলে যে-ই হোক, তাকে শাস্তি পেতেই হবে। বিএনপি কোনো অন্যায়কারীকে দলে প্রশ্রয় দেয় না।’”

একই ধরনের তথ্য ওই ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতার পোস্ট থেকেও পাওয়া যায়। ইউনিয়ন বিএনপি সার্চ কমিটি সম্মত হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তার ১০ জুলাইয়ের একটি পোস্টে সাধারণ মানুষের সঙ্গে চা-চক্র ও মতবিনিময়ের আড্ডায় ইউনিয়ন বিএনপি ও যুবদল নেতাদের সঙ্গে আহাদ আলী মোড়ল ওরফে আহাদ আলী গাজীর নামও পাওয়া যায়। সেখানে তাকে ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেই উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও, ওই উপজেলার স্থানীয় এক সাংবাদিকের পোস্ট থেকেও একই তথ্য মেলে।

ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়, প্রায় তিন মাস আগে ভবেন্দ্র দাস সাড়ে ৯ শতাংশ জমি বিক্রির জন্য আবদুল আহাদ গাজীর সঙ্গে ৬৮ হাজার টাকায় চুক্তি করেন এবং কয়েকবারে ২৫ হাজার টাকা নেন। পরে নির্ধারিত সময়ে বাকি টাকা না পেয়ে ৭ আগস্ট জমিটি তিনি দ্বিগুণ মূল্যে অন্যের কাছে বিক্রি করেন। জমি অন্যের কাছে বিক্রির বিষয়টি জানাজানি হলে ভবেন্দ্র দাসকে আবদুল আহাদ তার বাড়িতে ডেকে পাঠান। ভবেন্দ্র দাস তার বাসায় আসলে দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাঁকে পিছমোড়া করে একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করার ঘটনা ঘটে। 

অভিযোগের বিষয়ে আবদুল আহাদ গাজী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভবেন্দ্র আমার সঙ্গে চুক্তি করেও জমি লিখে দিতে টালবাহানা করছিলেন। পরে গোপনে অন্যের কাছে বিক্রি করে দেন। খবর পেয়ে তাঁকে ডাকা হয়। তবে ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসী তাঁকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে। এ ঘটনায় তিনিও ভুল করেছেন, আমিও ভুল করেছি। আমার অন্যায় হয়েছে।’

সুতরাং, ভবেন্দ্র দাস নামের এক ব্যক্তিকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি জামায়াত নেতা- শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Prothom Alo 
  • Rupali Bangladesh 
  • FB/Mehedi Hasan Sagar

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের দৃশ্য দাবিতে ইন্দোনেশিয়ার ভিডিও প্রচার 

0

সম্প্রতি, “এই মুহূর্তে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়! গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দেশ” ক্যাপশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক অবস্থা দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে। 

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত এই ভিডিওটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভের দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওর একাধিক কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ‘DJ KIMKIM’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৯ আগস্ট প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্যাবলীর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

ইন্দোনেশিয়ান ভাষায় প্রকাশিত উক্ত ভিডিওটির বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি ব্রিমব সদর দফতরে বিক্ষোভ চলাকালে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার দৃশ্য। 

উল্লেখিত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে ‘user3zzh6qd10’ নামক ইউজারের একটি টিকটক অ্যাকাউন্টে আলোচ্য ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত অনুরূপ আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির ক্যাপশনেও এটিকে মধ্য জাকার্তার ব্রিমব সদর দফতরের সামনে কুইতাং বাজারে বিক্ষোভের দৃশ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। 

এছাড়া, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘The Guardian’ এর ওয়েবসাইটে একই তারিখে অর্থাৎ গত ২৯ আগস্টে “Protests erupt in Indonesia over death of man hit by police vehicle” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from: The Guardian 

প্রতিবেদনটির বিস্তারিত অংশ থেকে জানা যায়, ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল রাইড-শেয়ারিং চালকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবন ও পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে জড়ো হয়ে দায়ীদের শাস্তির দাবি জানায়। ঘটনাটি নিয়ে প্রেসিডেন্ট প্রববো সুবিয়ান্তো দুঃখ প্রকাশ করে স্বচ্ছ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি, এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সাত পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 

অর্থাৎ, এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা বাংলাদেশের কোনো স্থানের ঘটনা নয় তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে। 

সুতরাং, ইন্দোনেশিয়ার একটি বিক্ষোভের দৃশ্যকে বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক দৃশ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

বাংলাদেশের কোনো নৌবন্দরের নয়, এই ভিডিওটি আলজেরিয়ার আনাবা বন্দরের 

সম্প্রতি ‘This is Bangladesh. Where is Greta?’ ক্যাপশনে বাংলাদেশের দূষিত-আবর্জনাপূর্ণ বন্দরের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও একাধিক ভারতীয় এক্স হ্যান্ডেল থেকে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো বন্দরের দৃশ্য নয়। বরং, আলজেরিয়ার আনাবা বন্দরের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্লাটফর্মে একাধিক পোস্ট (, , , ) এই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে ভিডিওটিকে আলজেরিয়ার আনাবা বন্দরের চিত্র বলে দাবি করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে, মরক্কো ভিত্তিক গণমাধ্যম Achtari 24 এর ফেসবুক পেজে গত ২০ আগস্ট প্রকাশিত পোস্টে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভিডিওটিতে একজন আলজেরীয় নাগরিক দেশটির আনাবা বন্দরের পানি দূষণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন৷ 

একই বিষয়ে মরক্কো ভিত্তিক আরেক গণমাধ্যম MA5 TV এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২০ আগস্ট প্রকাশিত একটি ভিডিওতেও একই চিত্র ও তথ্য পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে আলজেরীয় ফ্যাক্টচেকার Nozha Khelalef এর সাথে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ভিডিওটি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত করেন যে এটি আলজেরিয়ার আনাবা বন্দরের চিত্র। একইসাথে তিনি ওই নির্দিষ্ট স্থানের জিও লোকেশনও রিউমর স্ক্যানারের সাথে শেয়ার করেছেন, যার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় যে আলোচিত ভিডিওর স্থানটি আলজেরিয়ার আনাবা বন্দর। 

Photo Credit ( to the right): Nozha Khelalef

তিনি আরও জানান, ভিডিওটিতে ভিডিও রেকর্ড করা ব্যক্তি আনাবা বন্দর কতটা দূষিত সে বিষয়ে অভিযোগ করছেন। ওই ব্যক্তি উল্লেখ করেছেন যে নৌকার মালিকরা মাসে ১৪,০০০ ডিনার (DZD) পরিশোধ করে, অথচ বিনিময়ে তাদের আবর্জনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ভিডিওতে বক্তাকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে তিনি আগে করা একটি তুলনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন, যেখানে তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে বাংলাদেশের বন্দরগুলো দূষিত। তিনি বলছেন, ‘আসলে বাংলাদেশের বন্দরগুলো আনাবার বন্দরের চেয়ে অনেক বেশি পরিষ্কার’। (অনূদিত)

সুতরাং, বাংলাদেশের দূষিত বন্দরের ভিডিও দাবিতে আলজেরিয়ার আনাবা বন্দরের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণে পাকিস্তানের কাদিরাবাদ বাঁধ উড়িয়ে দেওয়ার ছবি দাবিতে এআই ছবি প্রচার

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পাকিস্তান তাদের নিজেদের ভূখণ্ডের পাঞ্জাব প্রদেশের কাদিরাবাদ বাঁধের তীররক্ষা বাঁধ গত ২৭ আগস্ট নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে উড়িয়ে দিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে দেশীয় নানা সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদে কোনোরকমের ডিসক্লেইমার ছাড়া বিস্ফোরণের একটি ছবিও সংযুক্ত করা হয়। তবে ছবিটি কাদিরাবাদ বাঁধে বিস্ফোরণের আসল ছবি কি না তা নিয়ে নেটিজেনদের মনে সংশয় জাগে।

আলোচিত ছবির সংযুক্তিসহ এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ দেখুন: যমুনা টিভি, আরটিভি, কালবেলা (ফেসবুক), দৈনিক আমাদের সময়, ইনকিলাব, জনকণ্ঠ, ঢাকা প্রকাশ, বাংলাদেশ টাইমস, বিডি টুডে, প্রবাস টাইম, ঠিকানা নিউজ, আলোকিত বাংলাদেশ, পদ্মা সংবাদ, আমাদের বার্তা, বাংলা এডিশন, ইউএস বাংলা বার্তা, নতুন বার্তা, দৈনিক ঢাকা২৪, চ্যানেল মুসকান, প্রভাত আলো, আওয়ার টাইমস নিউজ, সিগন্যাল বিডি

আলোচিত ছবিটি থাম্বনেলে সংযুক্ত করে এ বিষয়ে গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন: গ্লোবাল টিভি নিউজ, যুগান্তর, মানবজমিন, রূপালী বাংলাদেশ

ভিডিওতে আলোচিত ছবির সংযুক্তিসহ এ বিষয়ে গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন: ইত্তেফাক

এ বিষয়ে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে

এ বিষয়ে গণমাধ্যমের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

এ বিষয়ে গণমাধ্যমের এক্স অ্যাকাউন্টে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি সম্প্রতি নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণে পাকিস্তানের কাদিরাবাদ বাঁধ উড়িয়ে দেওয়ার আসল ছবি নয়। প্রকৃতপক্ষে প্রচারিত ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে মানুষের অবস্থান, বিস্ফোরণের ছবি ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্যে অস্বাভাবিকতা লক্ষ করা যায় যা সাধারণত এআই প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।

প্রচারিত ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইকোনমিক টাইমস’ এর ফেসবুক পেজে গত ২৭ আগস্টে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা হয়, “পাকিস্তান কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে—বন্যার বিশাল জলোচ্ছ্বাস নিয়ন্ত্রণে বাঁধের তীররক্ষা বাঁধ উড়িয়ে দিয়েছে! পানির স্তর বাড়তে থাকায় জীবন ও অবকাঠামো রক্ষায় প্রস্তুত হচ্ছে কর্তৃপক্ষ। প্রকৃতির প্রলয়ংকরী শক্তির মুখোমুখি মরিয়া প্রতিরক্ষা—এই পদক্ষেপ কি বিপর্যয় ঠেকাতে পারবে?” (অনূদিত)

পোস্টটিতে একটি ছবিরও সংযুক্তি পাওয়া যায় যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির তুলনা করলে মিল পাওয়া যায়। তবে পোস্টটিতে ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি বলে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও এ বিষয়ে গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটেও একইদিনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হতে দেখা যায়। প্রতিবেদনটিতেও উক্ত ছবির সংযুক্তি পাওয়া যায় এবং ছবির বর্ণনায় বলা হয়, ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

পরবর্তীতে কাদিরাবাদ বাঁধের ডিজাইনের ছবির বিষয়ে অনুসন্ধানে গুগল ম্যাপ, ইউটিউবসহ একাধিক অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কাদিরাবাদ বাঁধের একাধিক ছবি পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, কাদিরাবাদ বাঁধটি বেশ বড় এবং বহুমুখী। এছাড়া, কাদিরাবাদ বাঁধটির ডিজাইনের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির ডিজাইনের তুলনা করলেও বৈসাদৃশ্য দেখা যায়।

এছাড়াও, অনুসন্ধানে কাদিরাবাদ বাঁধে হওয়া বিস্ফোরণের একটি ভিডিও পাকিস্তানের মূলধারার গণমাধ্যম ‘ডন’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৭ আগস্টে প্রচারিত হতে দেখা যায় যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির পারিপার্শ্বিক অবস্থার বৈসাদৃশ্য পাওয়া যায়।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ছবিটি মূলত এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি ছবিকে সম্প্রতি নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণে পাকিস্তানের কাদিরাবাদ বাঁধ উড়িয়ে দেওয়ার আসল ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অর্থ লুটপাটের কথিত মামলায় শেখ হাসিনাকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, “ব্রেকিং নিউজ  চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষের অর্থ লুটপাটের মামলার অব্যাহত ফাইল হাতে পেলাম।। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর দায়ের কৃত চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষের অর্থ লুটপাটের মামলা থেকে অব্যাহত পেলেন শেখ হাসিনা।  লুক্সেমবার্গ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট থেকে তার অব্যাহত কোর্ট ফাইলটি প্রকাশ করা হয়। গেলো বছর চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষের ৬৭ হাজার কোটি টাকার অর্থ লুটপাটের মামলা দায়ের করেন বাংলাদেশ আন্তবর্তীন কালিন সরকার। মামলাটি তদন্ত শেষে পাঁচবার ফেরত আসে বাংলাদেশ কোন সাড়া না পেয়ে অবশেষে দালিলিক প্রমাণ না পাওয়ায় মামলাটি বাতিল করলো লুক্সেমবার্গ আদালত।” ক্যাপশনে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অর্থ লুটপাট মামলায় লুক্সেমবার্গ আন্তর্জাতিক আদালত অব্যাহতি দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ছবিটির রিভার্স সার্চ করে স্প্যানিশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল “El Correo del Golfo” এর ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর “দুবাই এক্সপো ২০২০-এ অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি জানালো উরুগুয়ে।” (অনূদিত) শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল রয়েছে। উক্ত ছবির বিবরণীতে বলা হয়, ছবিতে রয়েছেন উরুগুয়ের সহ-রাষ্ট্রপতি রাউল সেন্ডিক ও দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক রাষ্ট্রমন্ত্রী ও এক্সপো ২০২০-এর মহাপরিচালক রিম আল হাসিমি। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উরুগুয়ের প্রজাতন্ত্রের সহ-রাষ্ট্রপতি রাউল সেন্ডিক সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সফরকালে দুবাই এক্সপো ২০২০-এ অংশগ্রহণের জন্য তার দেশের অঙ্গীকার প্রকাশ করেছেন। সেন্ডিক ব্যক্তিগতভাবে সেই অঙ্গীকারের নথিটি হস্তান্তর করেছেন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক রাষ্ট্রমন্ত্রী এবং এক্সপো ২০২০-এর মহাপরিচালক রিম আল হাশিমিকে। (অনূদিত) 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অর্থ লুটপাটের মামলা করেছে এমন কোন তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। এছাড়া, লুক্সেমবার্গ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট নামক কোনো সংস্থা আছে বলে নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এর সদরদপ্তর নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অর্থ লুটপাট মামলা যদি থেকেও থাকে, আইসিসি সেটি অব্যাহতি দেওয়া বা বিচার করার এখতিয়ার রাখে না।

সুতরাং, শেখ হাসিনাকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অর্থ লুটপাট মামলায় লুক্সেমবার্গ আন্তর্জাতিক আদালত অব্যাহতি দেওয়ার দাবিটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র 

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে আ.লীগের অংশগ্রহণ থাকতে হবে জানিয়ে ট্যামি ব্রুস কোনো মন্তব্য করেননি

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র এবং জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের মনোনীত উপ-প্রতিনিধি ট্যামি ব্রুস, ‘বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দিতে বলেছেন’ এবং ‘সাংবিধানিক ভাবে নির্বাচিত আওয়ামী সরকারের ক্ষমতায় ফেরার ব্যবস্থা নেবেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান ভলকার তুর্ক’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ট্যামি ব্রুস বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে এবং নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ থাকতে হবে বলে কোনো মন্তব্য করেননি। এছাড়া, নির্বাচন আয়োজনে সেনাবাহিনী ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হলে সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলেও কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে, এটি গত ২০ জুন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুসের ভিন্ন একটি বিষয়ের প্রেস ব্রিফিংয়ের খণ্ডিত অংশ। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর একাধিক কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলে গত ২১ জুন প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর শেষের অংশের দৃশ্যের সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল রয়েছে। 

উক্ত ভিডিওর ২৭ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড হতে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আলোচনা শুনতে পাওয়া যায়। এসময় এক ব্যক্তি কর্তৃক ট্যামি ব্রুসকে প্রশ্ন করতে দেখা যায়, Given UN Human Rights Commission chief Volker Turk concern over the banning of political parties in Bangladesh – also, Human Rights Watch has accused the Yunus-led interim government for arbitrarily targeting Awami League supporters. Does the U.S. consider this violation of democratic principle and condemn these actions? 

যার অর্থ দাঁড়ায় করলে দাঁড়ায়, “বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধকরণ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ওপর নির্বিচার পদক্ষেপকে কি যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিক নীতির লঙ্ঘন হিসেবে দেখে এবং এসব কর্মকাণ্ডকে নিন্দা জানায়?” 

প্রতিত্তোরে ট্যামি ব্রুস বলেন, “Obviously, when it comes to a – let’s say a White House reaction to what is occurring in another country, I would suggest you contact the White House. But when it comes to the Secretary of State and the State Department, let’s take that back and we’ll get an answer for you in that regard. But what I can tell you about Bangladesh is that Deputy Secretary Landau met with Bangladesh National Security Advisor Rahman yesterday – I should say Wednesday – and discussed the interim government’s efforts ahead of the national elections. They discussed the U.S.-Bangladesh relationship, including expanding trade and commercial ties. The United States is committing – committed to working with Bangladesh to promote peace and stability in the region.”

অর্থাৎ, পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেছেন, হোয়াইট হাউসের অবস্থান জানতে হলে সেখানে যোগাযোগ করতে হবে। তবে স্টেট ডিপার্টমেন্ট বিষয়টি খতিয়ে দেখে আনুষ্ঠানিক উত্তর দেবে। তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি সেক্রেটারি ল্যান্ডাউ সম্প্রতি বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে আসন্ন নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। 

অর্থাৎ, এটি নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, ট্যামি ব্রুস বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আওয়ামী লীগসহ সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে জাতীয় নির্বাচন এবং নির্বাচন আয়োজনে সেনাবাহিনী ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হলে সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে জানিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। 

পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো বিশ্বস্ত সূত্রে ‘সাংবিধানিক ভাবে নির্বাচিত আওয়ামী সরকারের ক্ষমতায় ফেরার ব্যবস্থা নেবেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান ভলকার তুর্ক’ শীর্ষক দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস ও জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান ভলকার তুর্ককে জড়িয়ে বাংলাদেশের বিষয়ে প্রচারিত দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

  • U.S. Department of State: Youtube Video 
  • Rumor Scanner’s analysis  

“হাসিনা বলতো ২০টা হুন্ডা, ১০টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠাণ্ডা” শীর্ষক হাসনাত আবদুল্লাহর দাবিটি বিভ্রান্তিকর

0

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের ওপর জমা হওয়া আবেদনের ওপর ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) গত ২৪ আগস্টে শুনানিকালে ধাক্কাধাক্কি-হাতাহাতি-কিল-ঘুষির ঘটনা ঘটেছে। এতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহর অভিযোগ, তিনিসহ তার দলের নেতা-কর্মীদের ওপরও হামলা হয়েছে। হামলা চালিয়েছেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা ও তার সঙ্গে থাকা দলীয় নেতা-কর্মীরা। পরবর্তীতে এসব ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে রুমিন ফারহানা বলেন, “আমি কোনো গুন্ডা-বদমাশের মেলা করিনি। করতে চাইলে করতে পারতাম। গুন্ডা আনতে চাইলে গুন্ডা আনা যায়। অসুবিধা হয় না”। এরই প্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনে রুমিন ফারহানার সমালোচনা করে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এক পর্যায়ে দাবি করেন, “হাসিনা বলতো ২০টি হোন্ডা, ১০টি গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা।”

উক্ত দাবি সম্বলিত হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্যের ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে

এছাড়াও, পরবর্তীতে শেখ হাসিনার ‘১০ টি হোন্ডা, ২০ টি গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা’ বক্তব্যের ভিডিওও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাসনাত আবদুল্লাহর দাবিকৃত ‘২০ টি হোন্ডা, ১০ টি গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা’ শীর্ষক উক্তিটি শেখ হাসিনার নিজের নয়। প্রকৃতপক্ষে শেখ হাসিনা আলোচিত উক্তিটি মূলত বিএনপি, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সময়কালীন নির্বাচন ব্যবস্থাকে উদ্দেশ্য করে করেছিলেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে ‘‘জিয়াউর রহমানের নীতি ছিল, ১০ হুন্ডা ২০ গুন্ডা নির্বাচন ঠান্ডা’’ শিরোনামে ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “নির্বাচন নিয়ে বিএনপি যে প্রশ্ন তোলে, তার সমালোচনা করেছেন (সাবেক) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আজকে বিএনপি নেতারা নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন, নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাদের আমি জিয়াউর রহমানের হ্যাঁ-না ভোট ও ১৯৮১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দিতে চাই। কেমন নির্বাচন তারা করেছিল। সেখানে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেনি। তাদের কথা-ই ছিল ১০টা হুন্ডা ২০টা গুন্ডা নির্বাচন ঠান্ডা। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করেছিল জেনারেল এরশাদও।’ শনিবার (৩০ নভেম্বর, ২০১৯) দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।”

এছাড়াও, অনুসন্ধানে ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারিতে মূলধারার গণমাধ্যম ‘দ্য ডেইলি স্টার’ এর ওয়েবসাইটে ‘১০টা গুন্ডা, ২০টা হোন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা— সে পদ্ধতি এখন আর নেই: প্রধানমন্ত্রী’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের গায়ে হাজার কালির ছিটা, তারা আবার এত বড় কথা বলে কোন মুখে?’ ‘সামরিক আমলে জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকার ছিল না। যেটা মিলিটারি শাসকেরা ঠিক করে দিত, সেটাই হতো। রেজাল্টও পরিবতন করা হতো। অতীতে ভোট চুরির অপরাধে সরকারপ্রধানকে পদত্যাগও করতে হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০টা গুন্ডা, ২০টা হোন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা— সে পদ্ধতি এখন আর নেই। ইভিএমে ভোট কারচুপির সুযোগ নেই।”

এছাড়াও, সংবাদমাধ্যম ‘প্রতিদিনের বাংলাদেশ’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বরে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, “বাংলাদেশে নির্বাচন কী ছিল? নির্বাচন মানেই ছিল, আমরা যেটা বলতাম, ১০ টা হোন্ডা, ২০ টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা।” 

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবরে প্রচারিত আরেকটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, “..জনগণের ভোটাধিকার জনগণের হাতে আমরা ফিরিয়ে দিয়েছি। মিলিটারি ডিক্টেটর জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া, এদের সময়ে কেউ ভোট দিতে পারতো না। কথায়ই ছিল ১০ টা হোন্ডা, ২০ টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা। এখন আর সে অবস্থা নেই।..”

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে আলোচিত উক্তিটি শেখ হাসিনার নয় বরং, শেখ হাসিনা প্রকৃতপক্ষে জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও খালেদা জিয়ার আমলের নির্বাচন ব্যবস্থার উদ্দেশ্যে উক্তিটি নানাসময়ে ব্যবহার করেছেন।

উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা মূলত ‘১০টি হোন্ডা, ২০ টি গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা’ বলে থাকলেও হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন ‘২০ টি হোন্ডা, ১০টি গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা।’

সুতরাং, এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর ‘হাসিনা বলতো ২০টি হোন্ডা, ১০টি গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা’ শীর্ষক দাবিটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

রাজনৈতিক নয়, বরিশালে এক ব্যক্তির চোখ তুলে ফেলার কারণ পারিবারিক দ্বন্দ্ব

সম্প্রতি, “আওয়ামীলীগ নেতার চোখ তুলে ফেলতছে বিএনপির মহিলা-পুরুষ জঙ্গিরা। আর কত নিচে নামবে এই সন্ত্রাসীরা। আহা সোনার বাংলাদেশ শেষ! সবাই শেয়ার করে দেশবাসীকে, এদের মুখোশ খুলে দিন।” দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি বিএনপির লোকজন কর্তৃক আওয়ামী লীগ নেতার চোখ তুলে ফেলার ঘটনার নয় বরং, এটি বরিশালে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে ভাইয়ের চোখ অন্য ভাইদের তুলে ফেলার ঘটনার ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে “Bitter Truth বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক” নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২৫ সালের ২৭ আগস্ট প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়,  বরিশাল জেলার মুলাদি উপজেলা নাজিরপুর ইউনিয়ন সাহেবের চর গ্রামে সম্পত্তির ভাগাভাগি জেরে আপন ভাইয়ের চোখ উঠিয়ে বাবা আশেদ বেপারী হাতে তুলে দিয়েছে অপর দুই ভাই রোকন বেপারী  তার স্ত্রী ও মেয়ে, সপন বেপারী। 

উল্লিখিত সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ২৭ আগস্ট “‘বাবার নির্দেশ’, ছোট ভাইয়ের দু’চোখ তুলে নিল বড় ২ ভাই” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২২ আগস্ট (শুক্রবার) বরিশালের মুলাদী উপজেলার সাহেবেরচর গ্রামে পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও টাকার লোভে ছোট ভাইয়ের দুই চোখ উপড়ে ফেলে বাবার হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চোখ হারানো ব্যক্তি সিরাজুল ইসলাম ওরফে রিপন বেপারীর (৫০) স্ত্রী রোকসনা বেগম বাদী হয়ে আদালতে নালিশি আবেদন করলে আদালত তা মামলা হিসেবে রুজু করার নির্দেশ দেন। তিনি গ্রামের আরশেদ বেপারীর ছোট ছেলে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই ভাই হলেন- রোকন বেপারী ও স্বপন বেপারী। তাদের সঙ্গে রোকনের স্ত্রী নুর নাহার বেগম ও মেয়ে সুবর্না আক্তারের নামও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

পরবর্তীতে এ বিষয়ে বিডিনিউজ২৪ ডট কমের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী রিপনের বাবার নির্দেশে দুই ভাই রোকন ও স্বপন মিলে তাকে মারধর করে এবং দুই চোখ সমূলে উৎপাটন করে বাবার হাতে তুলে। মুলাদী থানার এসআই মো. মাসুদের বরাতে বলা হয়, রিপন বেপারীর বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা থানায় চুরি ও ছিনতাইয়ের ৮টি২০২৪ মামলা রয়েছে। এছাড়া মুলাদী থানায় হত্যা মামলাসহ তার বিরুদ্ধে কমপক্ষে ২০টি মামলা রয়েছে।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে ঘটনার সাথে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে ভাইয়ের চোখ অন্য ভাইদের তুলে ফেলার ঘটনার ভিডিওকে বিএনপির লোকজন কর্তৃক আওয়ামী লীগ নেতার চোখ তুলে ফেলার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে বগুড়ার পুরোনো মিছিলের ভিডিও প্রচার

সকল ধরনের দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগ সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিপুল সংখ্যক জনবল নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত একই ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিলের এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ারও নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিলের পুরোনো ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার মিছিলের ব্যানারে ‘আয়োজনে: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বগুড়া জেলা শাখা’ শীর্ষক লেখাটি দেখতে পায়। 

Screenshot: Facebook 

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিনের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ৩০ জুলাই বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ | Bogura Zila Awami League শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও সাথে উক্ত বিক্ষোভ মিছিলের সামনের সারিতে থাকা ব্যক্তি এবং মিছিলের ব্যানারের ‍হুবহু মিল রয়েছে। উক্ত ভিডিওর ব্যানার এবং শিরোনামে থেকে জানা যায়, এটি বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিলের  ভিডিও। ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, সেদিন ‘বিএনপি সংঘটিত অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের’ প্রতিবাদে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করে। 

উক্ত ভিডিওটি ছাড়াও রফি নেওয়াজ খান রবিনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করে সেদিনের মিছিলের কয়েকটি ছবিসহ প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

এছাড়াও পরবর্তীতে ভিডিওটিতে দেখতে পাওয়া ‘মরিয়ম ফল ভান্ডার’ নামের দোকানটি সূত্র ধরে গুগল ম্যাপের সহায়তায় জিওলোকেশন বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেখা যায়, প্রচারিত মিছিলের ভিডিওটি বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকায় ধারণ করা হয়েছিল। 

Comparison by Rumor Scanner 

সুতরাং, ব্রাহ্মণবাড়িয়া আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও দাবিতে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের পুরোনো মিছিলের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

মাশরাফি নড়াইলে আওয়ামী লীগের জনসভা আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছেন দাবিতে ২০২৩ সালের পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি ‘নড়াইল আওয়ামী লীগ কোন নিষিদ্ধ নয় আমি হলাম মাশরাফি ভাই | নড়াইল স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের বিরাট জনসভা পালন করার উদ্যোগ নিয়েছে মাশরাফি ভাই’ ক্যাপশনে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার নড়াইল স্কুল মাঠে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জনসভা আয়োজনের কোনো ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার একটি পুরোনো ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘MONIR ON FIRE’ নামক টিকটক অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ১৯ জুন প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশন বা মন্তব্যের ঘর থেকে এটির স্থান বা উপলক্ষ্য সম্পর্কে জানা যায়নি। 

তবে, ভিডিওটির অস্তিত্ব অন্তত ২০২৩ সাল থেকে ইন্টারনেটে রয়েছে। 

গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার নড়াইলে ভ্রমণ ও সেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সৌজন্যে কোনো জনসভা আয়োজনের উদ্যোগের সংবাদ বা তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা নড়াইলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সৌজন্যে জনসভা আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র