Home Blog Page 3

ছাত্রলীগ কর্মীকে হত্যা করে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেওয়ার দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, ‘ছাত্রলীগের এক কর্মীকে অপহরণ করেন বুড়িগঙ্গায় নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে নদীতে লাশ ফেলে দেওয়া হচ্ছে’ দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মীকে অপহরণের পর পিটিয়ে হত্যা করে লাশ বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দেওয়ার দৃশ্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে শরীয়তপুরের কীর্তিনাশা নদীর তীরে ডাকাতি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাত দলকে ধরে গণধোলাই দেয় স্থানীয় লোকজন। উক্ত ঘটনার ভিডিও এটি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Md Abbas’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ০১ মার্চ প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি, নৌকা এবং পোশাকের মিল রয়েছে।

Video Comparison By Rumor Scanner  

মো. আব্বাস তার পোস্টে দাবি করেন, শরীয়তপুরে গণপিটুনিতে দুই ডাকাত নিহত। উক্ত ঘটনার ভিডিও এটি। উক্ত ঘটনার ভিডিও মিরর করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

একই তথ্যে এবং ভিডিও ওই সময় আরও একাধিক ব্যক্তি পোস্ট করেন। দেখুন– এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ০১ মার্চ ‘‘ডাকাতি’ করে পালানোর সময় নদীতে নেমে ধাওয়া, পাল্টা গুলি-ককটেল, গণপিটুনিতে নিহত ২’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর তীরে ‘ডাকাতি’ করে পালানোর সময় শরীয়তপুর সদরের কীর্তিনাশা নদীর দুই পাড় ও নদীতে নেমে সন্দেহভাজন ডাকাত দলকে ধাওয়া দেন স্থানীয় লোকজন। এ সময় ওই দল স্থানীয় লোকজনকে লক্ষ্য করে গুলি ও ককটেল ছোড়ে। পরে স্পিডবোট ফেলে ওই দলের সদস্যরা একটি ইটভাটায় আশ্রয় নিলে স্থানীয় লোকজন তাদের ঘিরে ধরে পিটুনি দেন। এতে দুজনের মৃত্যু হয়।

তখন একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছিল যমুনা টিভি, চ্যানেল ২৪, ডেইলি স্টার , ইত্তেফাকের মতো মূলধারার গণমাধ্যমগুলো।

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, গত ফেব্রুয়ারিতে শরীয়তপুরের কীর্তিনাশা নদীর তীরে স্থানীয় জনগণ কর্তৃক ডাকাতদের গণধোলাই দেওয়ার দৃশ্যকে সম্প্রতি ছাত্রলীগের কর্মীকে অপহরণের পর পিটিয়ে হত্যা করে লাশ বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌবহর দাবিতে দক্ষিণ চীনের বিভিন্ন বন্দরে জেলেদের সমুদ্রে যাত্রার ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, গাজায় চলমান ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধের প্রতিবাদে গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার নৌ উদ্যোগ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। পরবর্তীতে ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়া, ইতালির সিসিলি দ্বীপ ও গ্রিসের সাইরাস দ্বীপ থেকে আরও কিছু নৌযান ত্রাণ নিয়ে বহরে যুক্ত হয়। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওটি ফ্লোটিলা সমর্থনে নৌবহরের দৃশ্য। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে এবং এখানে। 

এক্সে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে। 

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে এবং এখানে। 

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নয় বরং, দক্ষিণ চীনের বিভিন্ন বন্দরে জেলেদের মাছ ধরার মৌসুমে সমুদ্রে যাত্রার ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Real Time China নামের ফেসবুক পেজে গত ০৫ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ৪৯ সেকেন্ড সময়ের দীর্ঘ এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

চীনা ভাষায় প্রকাশিত এই ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়, এটি চীনের হলুদ সাগর এবং বোহাই সাগরে গ্রীষ্মকালীন মাছ ধরার জাহাজের দৃশ্য। 

এছাড়া, 广州广播电视台 (গুয়াংজু রেডিও এবং টেলিভিশন স্টেশন) নামের আরেক ইউটিউব চ্যানেলে গত ২১ আগস্টে প্রকাশিত আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যাচ্ছে, গত ১৬ আগস্ট দক্ষিণ চীন সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর ইয়াংজিয়াংয়ের ঝাপো মৎস্যবন্দর থেকে জেলেরা নৌকা নিয়ে সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছে। এ ঘটনাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে “গুয়াংডংবাসীর সমুদ্র খাদ্যের স্বাধীনতা ফিরে এসেছে” শিরোনামে প্রচার করা হচ্ছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম CGTN এর ইউটিউব চ্যানেলে উল্লিখিত তারিখে অর্থাৎ গত ১৬ আগস্টে প্রচার হওয়া এই ইভেন্টের লাইভ স্ট্রিমড ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, সাড়ে তিন মাসের গ্রীষ্মকালীন মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর চীনের গুয়াংডং, গুয়াংশি, ফুজিয়ান ও হাইনান প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরে জেলেরা নতুন মাছ ধরার মৌসুমে সমুদ্রে যাত্রা শুরু করেছে, যা স্থানীয় সামুদ্রিক খাদ্য ও জেলেদের ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তোলে। 

অর্থাৎ, এটি নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে নৌ উদ্যোগ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সঙ্গে এই ভিডিওটির কোনো সম্পর্ক নেই। 

সুতরাং, দক্ষিণ চীনের বিভিন্ন বন্দরে জেলেদের মাছ ধরার মৌসুমে সমুদ্রে যাত্রার ভিডিওকে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌযানের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

গাজায় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে ত্রাণ পৌঁছানোর দৃশ্য দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার 

গাজায় ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধের প্রতিবাদে গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌকাগুলো গাজায় পৌঁছাতে পারেনি। ইসরায়েল নৌবাহিনী অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন দেশের প্রায় ৪৫০ জন মানবাধিকার কর্মীকে আটক করে। এরই প্রেক্ষিতে, ‘গাজা অভিমুখী ত্রাণবাহী জাহাজ বহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে ৩৭ দেশের ২০০ অধিকারকর্মীকে আটক করেছে ইসরায়েল।’ শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে গাজায় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে ত্রাণ পৌঁছায় নি। প্রকৃতপক্ষে, গত আগস্টে গাজায় পোঁছানো ত্রাণের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ফিলিস্তিনের সাংবাদিক ‘abd__dawas2’ এর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১০ আগস্ট প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, “আল্লাহু আকবার” ধ্বনির মাঝে, যেন ঈদের দিন—অবশেষে গাজায় প্রবেশ করা ত্রাণ থেকে এক ব্যাগ আটা পেতে সক্ষম হয়েছি। আনন্দটা বর্ণনাতীত—আল্লাহ আমাদের কষ্ট শিগগির দূর করুন। (অনূদিত)

পরবর্তীতে, সাংবাদিক দাওয়াসের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানান, ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছিল যখন গাজা উপত্যকায় তীব্র দুর্ভিক্ষ চলছিল, প্রায় তিন মাস আগে। আমি এই ব্যাগটি পেয়েছি গাজার দক্ষিণাঞ্চলে মিরাজ সীমান্ত দিয়ে আসা ত্রাণ ট্রাকগুলো থেকে। 

অর্থাৎ, এটি গাজার সাম্প্রতিক সময়ের ভিডিও নয়। 

সুতরাং, গত আগস্টে গাজায় পৌঁছানো ত্রাণের দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরের ভিডিও দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

গাজায় চলমান ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধের প্রতিবাদে গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার নৌ উদ্যোগ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। পরবর্তীতে ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়া, ইতালির সিসিলি দ্বীপ ও গ্রিসের সাইরাস দ্বীপ থেকে আরও কিছু নৌযান ত্রাণ নিয়ে বহরে যুক্ত হয়। কিন্তু ইসরায়েলি বাঁধার মুখে উক্ত নৌবহরের কোনো জাহাজই গাজা উপত্যকায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়নি। তবে উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরের ভিডিও ফুটেজ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।  

ইউটিউবে প্রচারিত একই ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ভিডিওটির স্ক্রিনশট ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ভিডিও ফুটেজ দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত আলোচিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে এটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Mystic Vibes নামের একটি টিকটক অ্যাকাউন্টে গত ১৮ সেপ্টেম্বর একই ভিডিওটি প্রচারিত হতে দেখা যায়। প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা, উক্ত পোস্টে ভিডিওটিতে এআই জেনারেটেড কনটেন্ট লেভেল রয়েছে। যা দ্বারা টিকটকে প্রচারিত উক্ত কনটেন্ট এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরিকৃত বলে নির্দেশ করা হয়।  

Video Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে আলোচিত এই ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় নির্মিত কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম Hive Moderation এ ভিডিওটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ।

এছাড়াও উক্ত টিকটক অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনা করে এতে ফিলিস্তিন ও গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ইস্যুতে প্রচারিত বেশকিছু এআই জেনারেটেড ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরের ভিডিও দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Mystic Vibes Tiktok Post
  • Hive Moderation
  • Rumor Scanner’s Analysis

নিজ দলের কর্মীদের নয়, এটি ২০২৩ সালে আ.লীগ ও পুলিশকে লক্ষ্য করে বিএনপি নেতার গুলি ছোড়ার ভিডিও

সম্প্রতি, ‘নিজ দলের কর্মী দের লক্ষ্য করে গুলি,,, আহা রাজনীতি এরাই নাকি আবার দেশ চালাবে’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

অর্থাৎ দাবি করা হচ্ছে, এক বিএনপি নেতার নিজ দলের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার দৃশ্য এটি। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বিএনপি নেতা কর্তৃক নিজ দলের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার কোনো ঘটনার নয় এবং ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়েরও নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালের পহেলা এপ্রিল নাটোরে বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় নাটোর জেলা বিএনপির তৎকালীন আহবায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু আওয়ামী লীগ ও পুলিশের দিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। সেই ঘটনার দৃশ্য এটি। 

অনুসন্ধানে আজকের পত্রিকার ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ০২ এপ্রিল ‘বিএনপি নেতা বাচ্চুর গুলি ছোড়ার ভিডিও ভাইরাল’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি, পোশাক, স্থানের মিল রয়েছে। 

Comparison By Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের পহেলা এপ্রিল দুপুরে সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন নাটোর জেলা বিএনপির তৎকালীন আহবায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু। 

তবে, শহিদুল ইসলাম গুলি ছোড়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তখন বলেছিলেন, ‘আমার পিস্তলটি লাইসেন্স করা ও সম্পূর্ণ বৈধ অস্ত্র। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি বারবার আওয়ামী লীগের হামলার শিকার হয়েছি। আত্মরক্ষার্থে আমি সঙ্গে অস্ত্র রাখি। আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনে অস্ত্র ব্যবহার করা অপরাধ না। তবে শনিবারের সংঘর্ষে আমি গুলি ছুড়িনি।’

সেইসময় নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদা শারমিন নেলী বলেছিলেন, ‘বিএনপির নেতার অস্ত্রটি বৈধ কিনা বা কী কারণে তিনি গুলি ছুড়েছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর ব্যত্যয় হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

একই তথ্য ও ছবি দিয়ে তখন সংবাদ প্রকাশ করেছিল সমকাল, যুগান্তর সহ মূলধারার গণমাধ্যমগুলোও। 

সুতরাং, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে বিএনপি নেতা কর্তৃক পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার দৃশ্যকে সম্প্রতি বিএনপি নেতা কর্তৃক নিজ দলের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

আফগানিস্তানে পাকিস্তানের বিমান হামলার দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবি প্রচার

গত ১০ অক্টোবর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। যাকে তালিবান সরকার এবং আফগানিস্তানের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে বিমান হামলা বলে দাবি করা হয়েছে। তালিবান সরকার কথিত এই বিমান হামলার জন্যে পাকিস্তানকে দায়ী করেন। সম্প্রতি, এ ঘটনায় দেশীয় গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উক্ত হামলার দৃশ্য দাবি একটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রচারিত ওই ছবিটিতে রাতের আকাশে বিস্ফোরণের ধোঁয়া দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।  

গণমাধ্যমে প্রকাশিত উক্ত ছবি সম্বলিত প্রতিবেদন দেখুন ডিবিসি নিউজ, আরটিভি, বাংলাভিশন, এখন টিভি, বিজয় টিভি, ইনকিলাব, যায়যায়দিন, মানবকণ্ঠ, জনকণ্ঠ, ঢাকা পোস্ট, ঢাকা মেইল, বার্তা বাজার, জুম বাংলা,বাংলাদেশ জার্নাল, আমাদের সময়, আমার সংবাদ, প্রতিদিনের সংবাদ, সোনালী নিউজ, আমার বার্তা, বিডি টুডে, বায়ান্ন, সংবাদ প্রকাশ, ডেল্টা টাইমস, ভিউস বাংলাদেশ, দ্য ঢাকা এক্সপ্রেস, দৈনিক পরিবার, বর্তমান কথা, রেডিও টুডে, আমাদের ব্রাক্ষণবাড়িয়া, নিউজ নাও২৪, সংবাদ, বিডি২৪লাইভ, দৈনিক সাঙ্গু, সবার দেশ, দৈনিক বাংলা এক্সপ্রেস, বাংলাবাজার পত্রিকা, আপন দেশ, নন্দিত টিভি, দিনের কণ্ঠ, এইদিন এইসময়, সকালের বাণী, সকালের আলো, আমাদের কাগজ, প্রবাসীর দিগন্ত, খবর সংযোগ, সদ্য সংবাদ, ডায়মন্ড নিউজ, স্বদেশ বিদেশ, ঢাকা রিপোর্ট২৪, প্রবাল নিউজ এবং ব্রেকিং নিউজ বিডি। 

গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফেসবুকে প্রচারিত অন্যান্য পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই ছবি ব্যবহার করে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন ভাস্কর, ডেইলি জাগরাণ, কাশ্মীর মনিটর, রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড, ডেইলি গার্ডিয়ান, উরিষ্যা বাইটস, হিন্দুস্তান টাইমস এবং নজরবন্দী।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ছবিটির সাথের আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে হওয়া সাম্প্রতিক বিস্ফোরনের কোনো সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে, ছবিটি গত আগস্ট থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান রয়েছে। সেসময় সিরিয়ার দামেস্ক শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা চালানোর ঘটনার দাবি করে একাধিক গণমাধ্যমে ছবিটি প্রচার করা হয়েছিল।

আলোচিত ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ইরানভিত্তিক গণমাধ্যম ইসলামিক রিপাবলিক নিউজ এজেন্সি-এর ওয়েবসাইটে গত ১৬ আগস্ট১৭ আগস্ট প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উভয় প্রতিবেদনেই উক্ত ছবিটি ফিচার ইমেজ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। 

Comparison by Rumor Scanner 

প্রতিবেদনগুলোতে দাবি করা হয়, ছবিটি সেসময় সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের আল-মাজা এলাকায় হওয়া একটি গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনার। উক্ত বিস্ফোরণের সাথে ইসরায়েলি বাহিনীর সংযোগ রয়েছে বলেও একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।

প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আফগানিস্তানভিত্তিক গণমাধ্যম Afghan Voice Agency-এর ওয়েবসাইটেও গত ৭ আগস্ট প্রকাশিত একই ছবি সম্বলিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। তবে প্রতিবেদনটিতে উক্ত ছবিকে সিরিয়ার ভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলার দৃশ্য বলে দাবি করা হয়। 

কিন্তু একাধিক প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করেও সেসময় সিরিয়ায় হওয়া হামলা বা বিস্ফোরণের কোনো ঘটনার ভিডিওর সাথে উক্ত ছবির সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, আলোচিত বিস্ফোরনের ছবিটি সিরিয়ার কিনা সেটি নিশ্চিত না হওয়া গেলেও এটি নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে যে ছবিটি আফগানিস্তানে হওয়া সাম্প্রতিক বিস্ফোরণের ঘটনার নয়।

সুতরাং, ইন্টারনেটে বিদ্যমান পুরোনো বিস্ফোরণের ছবিকে আফগানিস্তানে হওয়া সাম্প্রতিক বিস্ফোরণের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

নিজেদের নিরাপত্তা শঙ্কা জানিয়ে প্রেস সচিব এমন কোনো মন্তব্য করেননি, ইত্তেফাকের নামে সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার 

0

সম্প্রতি, “আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন” শিরোনামে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের করা মন্তব্য দাবিতে মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক ইত্তেফাকের লোগো সংবলিত ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রেস সচিব শফিকুল আলম “আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন” বলে কোনো মন্তব্য করেননি এবং দৈনিক ইত্তেফাকও আলোচিত মন্তব্য সংবলিত কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, দৈনিক ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ভিন্ন একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত দাবি সম্বলিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে দৈনিক ইত্তেফাকের লোগো রয়েছে। তবে, ফটোকার্ডটিতে এটি প্রকাশের কোনো তারিখ দেখতে পাওয়া যায়নি। 

উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত শিরোনাম সংবলিত  কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে, দৈনিক ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজে গত ০৮ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। যেটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির আংশিক মিল লক্ষ্য করা যায়। 

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির সাথে প্রচারিত ফটোকার্ডে ইত্তেফাকের ডিজাইন, লোগো এবং শফিকুল আলমের ছবির মিল রয়েছে, তবে উভয়ের শিরোনামে ভিন্নতা রয়েছে। মূলত, ‘শহিদুল আলমের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন’ শিরোনামে শফিকুল আলমের মন্তব্য সম্বলিত মূল ফটোকার্ডের স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন’ শীর্ষক মন্তব্য প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

পাশাপাশি, দৈনিক ইত্তেফাকের মূল ফটোকার্ডটিতে আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলমের ছবি থাকলেও আলোচিত ফটোকার্ডে তা নেই।

অর্থাৎ, ইত্তেফাকের এই ফটোকার্ডটি সম্পাদনা করেই আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

ইত্তেফাকের মূল ফটোকার্ডটির মন্তব্যের ঘরে সংযুক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হওয়ায় গভীর উদ্বেগ ও তার প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, শহিদুল আলম যে নৌবহরে ছিলেন, ইসরায়েলি বাহিনী তা আটক করেছে। শহিদুল জানিয়েছেন, তারা এখন ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর হাতে অপহৃত অবস্থায় আছেন।

এছাড়াও, অন্য কোনো গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ‘আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন’ শিরোনামে দৈনিক ইত্তেফাকের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র 

একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, শেখ হাসিনার ভাষণ দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। উক্ত ভিডিওতে শেখ হাসিনাকে ‘আবার ক্ষমতায় এলে একটা রাজাকারের বাচ্চাকেও আস্ত রাখব না, দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করবো’ বলতে দেখা যায়। 

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় আটানব্বই হাজারবার দেখা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ক্ষমতায় এলে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিও তৈরি করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে ইন্টারনেটে ভিডিওটির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভিডিওতে থাকা শেখ হাসিনা সদৃশ ব্যক্তির মুখাবয়বের অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।  

বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ।

Screenshot: DeepFake-o-meter

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওকে শেখ হাসিনার বক্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র 

চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের মৃত্যুর খবরটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, চিত্রনায়ক ও ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন মারা গেছেন- শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন মারা যাননি বরং, বর্তমানে তিনি লন্ডনে চিকিৎসাধীন আছেন। 

অনুসন্ধানে শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে ইলিয়াস কাঞ্চন মারা যাওয়ার কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। 

তবে, আজ (১১ অক্টোবর) প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ইলিয়াস কাঞ্চনের ছেলে মিরাজুল মইন জয়ের বরাতে বলা হয়েছে, ইলিয়াস কাঞ্চন মারা যাওয়ার তথ্যটি গুজব। তিনি এখন লন্ডনে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গত ০৫ আগস্ট মাসে লন্ডনের উইলিংটন হাসপাতালে তাঁর মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। 

প্রথম আলো ইলিয়াস কাঞ্চনের জামাতা আরিফুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, গত ২৬ এপ্রিল থেকে লন্ডনে জামাতা আরিফুর রহমানের বাসায় আছেন। গত ০৫ আগস্ট মাথায় টিউমারের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। পুরোটা অপসারণ করা যায়নি। তাই টার্গেট থেরাপি চলছে।

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে সমকাল, কালের কণ্ঠ, ইত্তেফাক সহ মূলধারার গণমাধ্যমও। 

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য ইলিয়াস কাঞ্চনের সংগঠন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ এর কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান লিটন এরশাদের সাথে যোগাযোগ করে তিনি রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানান, ‘এটি সম্পূর্ণ গুজব। তিনি আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ আছেন!’

সুতরাং, ইলিয়াস কাঞ্চনের মারা যাওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ফিলিস্তিনি ডাক্তার সাফিয়া নন, এ বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার মারিয়া কোরিনা

0

এ বছর ফিলিস্তিনি ডাক্তার হুসাম ইদ্রিস আবু সাফিয়া শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

উক্ত দাবির ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে৷ 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এ বছর ফিলিস্তিনি ডাক্তার হুসাম ইদ্রিস আবু সাফিয়া শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাননি বরং, গত ১০ অক্টোবর ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো শান্তিতে এ বছরের নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জানিয়ে ঘোষণা দিয়েছে নোবেল কমিটি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দাবিটির সূত্রপাত হিসেবে পাবলিকিয়ান পরিবার নামে একটি পেজের পোস্ট শেয়ার হতে দেখা যায়। ১০ অক্টোবর রাত ১২ টা ৫১ মিনিটে এই পোস্টে শুরুতে ফিলিস্তিনি ডাক্তার হুসাম ইদ্রিস আবু সাফিয়া শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন শীর্ষক দাবি করা হলেও পরবর্তীতে তা সম্পাদনা করে লেখা হয়, তিনি এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন।

Comparison: Rumor Scanner 

রেওয়াজ অনুযায়ী, প্রতি বছর ১০ অক্টোবর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। সাধারণত বাংলাদেশ সময় দুপুরে এই ঘোষণা আসে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। নোবেল প্রাইজের ফেসবুক পেজে ১০ অক্টোবর দুপুরের এক পোস্টে জানানো হয়, শান্তিতে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো।

অর্থাৎ, নোবেল কমিটির ঘোষণার আগেই ফেসবুকে ফিলিস্তিনি ডাক্তার হুসাম ইদ্রিস আবু সাফিয়া এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন বলে যে দাবি করা হয়েছে তা সঠিক নয়। 

সুতরাং, এ বছর ফিলিস্তিনি ডাক্তার হুসাম ইদ্রিস আবু সাফিয়া শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র