Home Blog Page 3

সম্প্রতি নোয়াখালীতে ডুবে যাওয়া বলগেটের ছবি দাবিতে পুরোনো ছবি প্রচার

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ডুবে যাওয়া একটি বলগেট তুলতে গিয়ে গত ২২ অক্টোবর মো. রাসেল (৩৭) ও সারেং মো. সোহেল (৩৫) নামে দুই শ্রমিক গুরুতর আহত হন। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশিয় নানা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এরই মধ্যে কিছু সংবাদমাধ্যমে উক্ত ঘটনায় ডুবে যাওয়া বলগেটের ছবি দাবিতে একটি ছবিও সংযুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন: আরটিভি, দৈনিক আমার সময়। 

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি সম্প্রতি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ডুবে যাওয়া বলগেটের ছবি নয় বরং, ২০২২ সালের ২১ মে নোয়াখালীর হাতিয়ার মেঘনা নদীতে পাথর বোঝাই বলগেট ডুবির ঘটনার ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘ঢাকা মেইল’ এর ওয়েবসাইটে ‘হাতিয়ায় মেঘনা নদীতে পাথর বোঝাই বলগেট ডুবি’ শিরোনামে ২০২২ সালের ২১ মে তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে একটি ছবিরও সংযুক্তি পাওয়া যায়, যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত বলগেটের বিষয়ে ‘ঢাকা মেইল’ এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘নোয়াখালীর হাতিয়ার মেঘনা নদীতে পাথর বোঝাই বলগেট ডুবির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২১ মে ২০২২) সকালে ঝড়ের কবলে পড়ে নলচিরা ইউনিয়নের পাশে মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়ে নদীতে পাথর বোঝাই বলগেটটি ডুবে যায়। এ সময় জাহাজে থাকা মাঝি-মাল্লারা তীরে উঠে পড়েন। কোন হতাহত অথবা নিখোঁজের ঘটনা ঘটেনি। এমবি মক্কা-মদিনা নামে জাহাজটি সিলেট থেকে পাথর বোঝাই করে চট্টগ্রামের সন্দীপ যাচ্ছিল।’

এছাড়াও, সেসময় মূলধারার গণমাধ্যম ‘চ্যানেল২৪’ ও ‘বাংলা ট্রিবিউন’সহ একাধিক গণমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদেও আলোচিত ছবিটির সংযুক্তি পাওয়া যায়।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ডুবে যাওয়া বলগেটের নয়।

সুতরাং, ২০২২ সালে নোয়াখালীর হাতিয়ার মেঘনা নদীতে পাথর বোঝাই বলগেট ডুবির ঘটনার ছবিকে সম্প্রতি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ডুবে যাওয়া বলগেটের ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সাদিক কায়েম ও মোনামীর চুম্বনের ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি 

গত ২৮ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং বারডেম জেনারেল হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে টিএসসি মিলনায়তনে স্তন ক্যানসার বিষয়ে দিনব্যাপী সচেতনতামূলক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন মোনামী।

এরই প্রেক্ষিতে, উক্ত অনুষ্ঠানের মঞ্চে ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম শেহরীন আমিন মোনামীর চুম্বন দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন মোনামীর চুম্বনের ভিডিওটি বাস্তব নয়। মূলত, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির সহায়তায় আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করে প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘National News বাংলা’ নামক একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ২৮ অক্টোবর প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে সাদিক কায়েম এবং শেহরীন আমিন মোনামীর পোশাক, ব্যাকগ্রাউন্ড, সামনে থাকা পানির বোতলসহ সকল উপাদানের মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

তবে, উক্ত ভিডিওতে চুম্বনের কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।

এরপর, ‘নিউজ ইন বাংলাদেশ’ নামের একটি পেজ থেকে একই তারিখে প্রচারিত ১৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পাওয়া যায়। সেখানেও সাদিক কায়েমের সঙ্গে শেহরীন আমিন মোনামীকে পাশে বসে কথা বলতে দেখা যায়। 

অর্থাৎ, সাদিক কায়েমের সঙ্গে শেহরীন আমিন মোনামীর কথোপকথনের সময়ের কোনো একটি অংশ ব্যবহার করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির সহায়তায় আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে, অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ। 

Image By Rumor Scanner 

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিও ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন মোনামীর চুম্বনরত বাস্তব দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

কনটেন্ট ক্রিয়েটর কাফির ব্যক্তিগত মুহুর্তের ছবি দাবিতে ভারতীয় দম্পতির ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির এক নারীর সাথে ব্যক্তিগত মুহুর্তের ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কয়েকটি আপত্তিকর ছবি প্রচার করা হয়েছে।  

ফেসুবকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত আপত্তিকর ছবিগুলো কনটেন্ট ক্রিয়েটর কাফির নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের কেরালা রাজ্যের মালয়ালি দম্পতি শারুন রাজ-বৈষ্ণবীর ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ছবিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানে একটি পর্নোগ্রাফিক এমএমএস প্রচারকারী ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর ছবিগুলো প্রচারিত হতে দেখা যায়। যেখানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর বাইরেও আরও বেশকিছু আপত্তিকর ছবি দেখতে পাওয়া যায়। যেখানে ছবিতে থাকা ব্যক্তির চেহারা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। এছাড়াও শিরোনামে উল্লেখ করা হয়, ছবিগুলো বৈষ্ণবী ও রাজ নামের মালয়ালি একটি দম্পতির। (সঙ্গত কারণে লিংক সংযুক্ত করা হয়নি)।

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে বৈষ্ণবীরাজ দম্পতির উক্ত সদস্যের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Collage by Rumor Scanner 

ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে জানা যায়, রাজ নামের ওই ব্যক্তির পুরো নাম শারুন রাজ। তাদের অ্যাকাউন্টে প্রচারিত ভিডিওগুলো পর্যালোচনা করেও দেখা যায়, তারা ভারতের কেরালা রাজ্যের মালয়ালি ভাষায় কথা বলেন। পাশাপাশি তাদের ইউটিউব চ্যানেলটি থেকে জানা যায়, চ্যানেলটি ভারতীয়। যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলো ভারতীয় দম্পতির। 

এছাড়াও উক্ত ব্যক্তির চেহারার সাথে কাফির চেহারার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তাদের দুজনের চুল কোঁকড়া হলেও চেহারায় বিস্তর পার্থক্য রয়েছে।

Comparison by Rumor Scanner

সুতরাং, ভারতীয় দম্পতি শারুন রাজ-বৈষ্ণবীর ব্যক্তিগত মুহুর্তের ছবিকে বাংলাদেশি কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Analysis

শেখ হাসিনার রয়টার্সে সাক্ষাৎকারের ভিডিও দাবিতে ভুয়া লাইভ ভিডিও প্রচার

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পাশ্বর্বর্তী দেশ ভারতে আশ্রয় নেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তিনি অনলাইনে বেশ কয়েকবার দলটির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান ও কলে কথা বললেও কখনো গণমাধ্যমে বা প্রকাশ্যে আসেননি। তবে গত ২৯ অক্টোবর প্রথমবারের মত তিনটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তার সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়। গণমাধ্যমগুলো হলো ব্রিটেনের দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকা, মার্কিন গণমাধ্যম রয়টার্স ও ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি। গণমাধ্যমগুলোতে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারগুলো ইমেইলের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি, রয়টার্সে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রদানের ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের Sheikh Hasina मैं सिर्फ़ भक्त हूँ নামের একটি পেজে শেখ হাসিনার কথা বলার একটি ভিডিও সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে সরাসরি প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি শেখ হাসিনার রয়টার্সে সাক্ষাৎকার প্রদানের ভিডিও নয়। এছাড়াও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিও আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, প্রচারিত ভিডিওটি একটি ভুয়া লাইভ ভিডিও। ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রদানের পুরোনো ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করে তার সাথে সাম্প্রতিক সময়ে অনলাইনে দেওয়া বক্তব্য যুক্ত করে আলোচিত দাবির ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে শেখ হাসিনার রয়টার্সকে ইমেইলে সাক্ষাৎকার প্রদানের বাইরে ক্যামেরার সামনে সাক্ষাৎকার প্রদানের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অন্য কোনো গণমাধ্যমেও তার ক্যামেরার সামনে সাক্ষাৎকার প্রদানের কথা জানা যায়নি। 

পরবর্তীতে ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে অনলাইন গণমাধ্যম Bayanno TV-এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ২৪ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রদানের সরাসরি সম্প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর বেশ কিছু অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর ফুটেজের মিল রয়েছে। উভয় ভিডিওতেই শেষ হাসিনাকে একই মাইক্রোফোনের সামনে একই শাড়িতে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে। শুধু আলোচিত ভিডিওটিতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় প্রাপ্ত ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড মুছে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, এটি বঙ্গবন্ধু স্কলার অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে ততকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রদানের ভিডিও। অর্থাৎ, উক্ত ভিডিওর সাথে সাম্প্রতিক সময়ে তার রয়টার্সে দেওয়া সাক্ষাৎকারের কোনো সম্পর্ক নেই। এছাড়াও উক্ত ভিডিওর বক্তব্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর বক্তব্যের অমিল লক্ষ্য করা যায়।

তাই পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটিতে ব্যবহৃত শেখ হাসিনার বক্তব্যের বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির পুরো বক্তব্য পর্যালোচনা করে শেখ হাসিনাকে তার পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী সংক্রান্ত আলোচনা করতে শোনা যায়। প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে আওয়ামী লীগের ইউটিউব চ্যানেলে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত শেখ হাসিনার একটি অডিওবার্তা খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত অডিওবার্তার বক্তব্যের সাথে আলোচিত ভিডিওতে শুনতে পাওয়া বক্তব্যের মিল রয়েছে। এ থেকে নিশ্চিত যাচ্ছে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রদানের পুরোনো ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করে তার সাথে উক্ত অডিওবার্তা যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এছাড়াও Sheikh Hasina मैं सिर्फ़ भक्त हूँ নামের পেজটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রদানের একই ভিডিওটি পরবর্তীতে আরও দুইবার তার রয়টার্সে সাক্ষাৎকার প্রদানের ভিডিও দাবিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। ভিডিওগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে। পাশাপাশি পেজটিতে শেখ হাসিনার একাধিক ভুয়া লাইভ ভিডিও প্রচার করতেও দেখা যায়। এমন কিছু ভুয়া লাইভ ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, আন্তজার্তিক গণমাধ্যম রয়টার্সে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রদানের ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

প্যারাগুয়ের ভিডিওকে ভারতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীর চুরির দৃশ্য দাবিতে প্রচার 

সম্প্রতি, “বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ভারতে এক হিন্দু ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে সাইকেল চুরি করেছে” দাবিতে একটি সিসিটিভি ফুটেজের দৃশ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে এবং এখানে। 

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে। 

থ্রেডসে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ভারতের কোনো চুরির ঘটনার নয় এবং এই ঘটনার সাথে ভারতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীর কোনো সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে, প্যারাগুয়ের রাজধানী আসুনসিওনে ঘটা একটি স্থানীয় চুরির ঘটনার ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Radio Cáritas UC’ নামক ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ৩০ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবির ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, প্যারাগুয়ের রাজধানী আসুনসিওনে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, একটি বাড়িতে কাঁটাতারের নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও এক যুবক ভেতরে প্রবেশ করে এবং একটি সাইকেল চুরি করে নিয়ে যায়। 

পরবর্তীতে উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে, ‘SNT Paraguay’ নামের প্যারাগুয়ে ভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেলে একই তারিখে অর্থাৎ চলতি বছরের ৩০ এপ্রিলে প্রকাশিত ভিডিও পাওয়া যায় এবং এক সাংবাদিককে আলোচিত ঘটনার বিষয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করতে দেখা যায়। 

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে একই তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। অর্থাৎ এটি, প্যারাগুয়ের রাজধানী শহর আসুনসিওনের ঘটনা এবং এই ঘটনার সাথে ভারতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী কিংবা ধর্মীয় সম্পৃক্ততার কোনো সম্পর্ক নেই। 

সুতরাং, প্যারাগুয়ের চুরির ভিডিওকে মোহাম্মদ জুবায়ের নামক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ভারতে এক হিন্দু ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে সাইকেল চুরি করেছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

  • Radio Cáritas UC: Instagram Video 
  • SNT Paraguay: Youtube Video 

জুলাই আন্দোলন প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বাঁধনের নামে জনকণ্ঠের সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন “জুলাইয়ে রাস্তায় নামাটা আমার জীবনের ভুল সিদ্ধান্ত” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে দৈনিক জনকণ্ঠের লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাঁধন আলোচিত মন্তব্যটি করেননি এবং উক্ত শিরোনামে দৈনিক জনকণ্ঠও কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, গত ২৫ অক্টোবর প্রকাশিত জনকণ্ঠের ভিন্ন শিরোনামের একটি ফটোকার্ড সম্পাদনা করে ভুয়া ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে জনকণ্ঠের লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ ২৫ অক্টোবর, ২০২৫ উল্লেখ রয়েছে। 

প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে জনকণ্ঠের ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি, অন্য কোনো গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, পত্রিকাটির ফেসবুক পেজে ২৫ অক্টোবরে ‘জুলাইয়ে রাস্তায় নামাটা আমার জীবনের সেরা সিদ্ধান্ত’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। 

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডের সাথে উক্ত ফটোকার্ডের প্রায় সকল উপাদানের মিল রয়েছে। শুধু আলোচিত ফটোকার্ডটিতে উক্ত ফটোকার্ডের শিরোনামের উপরে ‘সেরা সিদ্ধান্ত’ এর জায়গায় ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ শীর্ষক লেখাগুলো যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। 

অর্থাৎ, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে দৈনিক জনকণ্ঠের ফটোকার্ড সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

সুতরাং, অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন “জুলাইয়ে রাস্তায় নামাটা আমার জীবনের ভুল সিদ্ধান্ত” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে দৈনিক জনকণ্ঠের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র 

মীনা বাজার অগ্নিকাণ্ডে জঙ্গি হামলা ও নারী হতাহতের ভুয়া দাবি 

সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুর মিনাবাজার সুপার শপে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বহু নারী হতাহত হয়েছে দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত পোস্টের ক্যাপশনে #জঙ্গি_হামলা #বাংলাদেশ’ হ্যাশট্যাগও ব্যবহার করা হয়েছে।  

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মোহাম্মদপুর এলাকার মীনা বাজার সুপার শপের অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি এবং সেখানে আগুন লাগার কারণ এখনো তদন্তাধীন। মূলত, কোনো প্রকার তথ্যপ্রমাণ ছাড়া উক্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে জঙ্গি হামলা এবং এতে বহু নারীর হতাহতের ভুয়া দাবিটি প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩১ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার মীনা বাজার সুপার শপে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার দৃশ্য। 

একাত্তর টিভির ওয়েবসাইটে গত ৩১ অক্টোবর ‘মোহাম্মদপুরে সুপারশপে আগুন’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদিয়া হাউজিং এলাকার মীনা বাজার সুপারশপে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ওই সুপারশপে আগুনের সূত্রপাত হওয়া আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই দ্রুত তা নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের ডিউটি অফিসার গণমাধ্যমকে জানান, আগুনের খবর পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত ১০টার আগেই আগুন পুরোপুরি নেভানো হয়। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। তাছাড়া এ ঘটনায় কোনো হতাহতের সংবাদও পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে আজকের পত্রিকার ওয়েবসাইটে একই দিনে ‘মোহাম্মদপুরে মীনা বাজারে অগ্নিকাণ্ড’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

অর্থাৎ, উল্লিখিত মীনা বাজার অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি এবং আগুন লাগার বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন৷ 

সুতরাং, সাম্প্রতিক সময়ে মোহাম্মদপুরের মীনা বাজার সুপার শপের অগ্নিকাণ্ডকে জঙ্গি হামলা ও এতে বহু নারীর হতাহত হওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

লিটন দাসকে ‘ফ্যাসিস্ট’ এর সমর্থক দাবি করে শামীম পাটোয়ারী ফেসবুক পোস্ট দেননি

0

গত ২৭ অক্টোবর চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে প্রথম টি২০ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট দল। উইন্ডিজের কাছে ম্যাচটি ১৬ রানে হারের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন কুমার দাস বলেন, ‘শামীম যেভাবে ব্যাটিং করেছে, সেটা সত্যিই হতাশাজনক। তার দায়িত্ব নিয়ে খেলা উচিত ছিল।’ উল্লেখ্য, ম্যাচটিতে শামীম পাটোয়ারী ৪ বলে ১ রান করেন। এরই প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি কথিত স্ক্রিনশট প্রচার করা হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে শামীম পাটোয়ারী তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে লিটন দাসের একটি পোস্টের ছবির স্ক্রিনশট সংযুক্ত করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘Throwback Litton Kumer Das in July Protest, Supported Facist’

ছবিটি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, শামীম পাটোয়ারী লিটন দাসকে ‘ফ্যাসিস্ট’ এর সমর্থক দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। কিছু পোস্টে আরো দাবি করা হয়, পোস্টটি তৎক্ষণাৎ ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, লিটন দাসকে ‘ফ্যাসিস্ট’ এর সমর্থক দাবি করে শামীম পাটোয়ারী এমন কোনো ফেসবুক পোস্ট দেননি। প্রকৃতপক্ষে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি কথিত এই স্ক্রিনশটের ছবিটি প্রথমে একটি মিম/ট্রল পেজ থেকে প্রচার করা হলেও পরবর্তীতে তা আসল দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Cricket Sarcasm Memes’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ২৮ অক্টোবরে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত সম্ভাব্য মূল ছবিটি পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

পেজটির বায়ো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এটি একটি ট্রল পেজ এবং এদের কনটেন্ট ‘সিরিয়াসলি’ না নিতে বলা হয়েছে।

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলেও মূলধারার গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত স্ক্রিনশটটি আসল হওয়ার সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে শামীম পাটোয়ারী এরূপ কোনো পোস্ট করলে তা মূলধারার সংবাদমাধ্যমে প্রচার করা হতো।

এছাড়াও, অনুসন্ধানে স্ক্রিনশটের কেবলমাত্র এই একটি সংস্করণই পাওয়া যায়। কিন্তু, স্ক্রিনশটে প্রায় ২ হাজারেরও অধিক রিয়েক্ট সংখ্যা দেখা যায়। অর্থাৎ, স্বাভাবিকভাবেই এরূপ কোনো পোস্ট শামীম পাটোয়ারী করে থাকলে তার একাধিক সংস্করণ থাকতো।

এছাড়াও অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিটি প্রচার হওয়াকালীন সময়ে (২৮ অক্টোবর) শামীম পাটোয়ারীর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করলে উইন্ডিজের বিপক্ষে টি২০ সিরিজ শুরু হওয়ার বিষয়ে গত ২৭ অক্টোবরের একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টটির রিয়েক্ট সংখ্যা (2.1K) এবং শেয়ার সংখ্যা (4) এর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত স্ক্রিনশটের রিয়েক্ট সংখ্যা ও শেয়ার সংখ্যার মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

মন্তব্য সংখ্যা আলোচিত দাবিতে প্রচারিত কথিত স্ক্রিনশটে ২৮৭ হলেও রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানকারীর অনুসন্ধানের সময় তা ২৯৫ দেখা যায় এবং বাড়তি ৮টি কমেন্ট শেষ কয়েক ঘন্টার ভেতর হতে দেখা যায়। এ থেকে স্পষ্ট যে শামীম পাটোয়ারীর উক্ত পোস্টের রিয়েক্ট, কমেন্ট ও শেয়ার সংখ্যা নিয়ে তা আলোচিত দাবিতে প্রচারিত কথিত স্ক্রিনশটে সংযুক্ত করা হয়েছে বা উক্ত পোস্টের স্ক্রিনশট ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত স্ক্রিনশটটি তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, লিটন দাসকে ‘ফ্যাসিস্ট’ এর সমর্থক দাবি করে শামীম পাটোয়ারী ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন শীর্ষক দাবি মিথ্যা এবং প্রচারিত কথিত স্ক্রিনশটটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

সাতক্ষীরায় হাসপাতালে ডাক্তার ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতরা এনসিপির নেতা-কর্মী নন

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, “সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে এনসিপির নেতাকর্মীরা ডাক্তারের ওপরে হামলা।”

উক্ত দাবির ফেসবুক ভিডিও দেখুন এখানে।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটির সাথে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই বরং, সাতক্ষীরায় হাসপাতালে ডাক্তারের ওপরে হামলার এ ঘটনায় দায়ী হিসেবে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নাম এসেছে গণমাধ্যমে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ফেসবুকে জাতীয় দৈনিক সমকালের পেজে ৩০ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, সাতক্ষীরায় দুর্ঘটনায় আহত শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালে হামলা করেছেন স্বজনরা।

স্বাস্থ্য সংক্রান্ত খবর পরিবেশনের ওয়েবসাইট মেডিভয়েসের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার শ্রীফলকাঠি এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবদল কর্মী রাহিম ইসলামের তিন বছরের ছেলে নিশাত গুরুতর আহত হয়। তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কিন্তু শিশুটির মাথার খুলি ভেঙে মগজ বের হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে সাতক্ষীরায় রেফার করেন। পথে খানপুর এলাকায় শিশুটির মারা যায়। এর পর স্বজনরা অ্যাম্বুলেন্সসহ আবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফিরে এসে জরুরি বিভাগে প্রবেশ করে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবদুল আজিজের ওপর হামলা চালান। এতে বাধা দিলে আব্দুর রহমান নামে স্থানীয় একজন রাজনৈতিক নেতা ও তার গাড়িচালক নুরুজ্জামান তাদের হামলার শিকার হন। ২৮ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

জাতীয় দৈনিক খবরের কাগজের ওয়েবসাইটে একই ঘটনা সংক্রান্ত প্রকাশিত খবরে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানানো হয়, হামলাকারীরা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। 

পরবর্তীতে, অন্যান্য গণমাধ্যমেও আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো সংবাদ বা তথ্য পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর ঘটনাটির সাথে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই।

সুতরাং, ভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী কর্তৃক সাতক্ষীরায় হাসপাতালে ডাক্তারের ওপরে হামলার ঘটনাকে এনসিপির নেতাকর্মী কর্তৃক হামলা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে ; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের ঘটনা দাবিতে ভারতের ভিডিও প্রচার 

0

সম্প্রতি ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলাকাবাসীর দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে সাউন্ড স্পিকার ভাড়া করে গান শোনাচ্ছে।’ একটি ভিডিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোনো ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের দুটি ইটভাটার স্বত্বাধিকারীদের আয়োজিত অনুষ্ঠানের দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Robiul Funny নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৭ জানুয়ারি প্রচারিত আলোচিত ভিডিওটির অনুরূপ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির শিরোনামে উল্লেখ করা হয়, এটি ভারতের মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ার মধ্যে একটি প্রতিযোগিতার দৃশ্য।

উক্ত ইউটিউব চ্যানেলটি পর্যবেক্ষণ করে এতে একই ঘটনার বেশ কয়েকটি শর্টস ভিডিওর সন্ধান পাওয়া যায়। যার মধ্যে একটির শিরোনামে ‘পিকনিক VS পিকনিক’ এবং অপর একটি ভিডিওতে ‘পিকনিক 2025 সাল’ উল্লেখ করা হয়েছে।  ‘পিকনিক 2025 সাল’ শীর্ষক ভিডিওটি পর্যালোচনা করে সাউন্ড সিস্টেমের একটি বক্সে ‘সুপার সাউন্ড’ লেখা দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও এটিতে ‘নাটনা, পূর্বপাড়া এবং নদীয়া’ নামগুলো দেখা যায়। পাশাপাশি ‘9775105686’ শীর্ষক একটি মোবাইল নাম্বার দেখতে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner  

উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে Sahin Sekh নামক একটি ভারতীয় ফেসবুক প্রোফাইলে ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

উক্ত পোস্টটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটি সুপার সাউন্ড নামক সাউন্ড সিস্টেম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের একটি বিজ্ঞাপনধর্মী পোস্ট। এতে ব্যবহৃত ছবিগুলো পর্যালোচনা করে একই তথ্য সম্বলিত সাউন্ড সিস্টেম বক্সও দেখতে পাওয়া।

পরবর্তীতে, পোস্টটিতে ব্যবহৃত ভারতীয় মোবাইল নাম্বারে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে উক্ত নাম্বার ব্যবহারকারী রিউমর স্ক্যানারকে জানান তার নাম শাহীন শেখ। তিনি ‘সুপার সাউন্ড’- এ সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেন। আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ভিডিওটি পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের গোবিন্দপুরের মুক্তারপুর এলাকার। মূলত, পাশাপাশি অবস্থিত দুটি ইটভাটার স্বত্বাধীকারী পিকনিকের আয়োজন করেন। পিকনিককে কেন্দ্র করেই তারা সাউন্ডবক্স এবং মাইকের এমন আয়োজন করেছিলেন।

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওর ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই ভিডিওটি ব্যবহার করে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা সম্পর্কিত একটি ভুয়া দাবি প্রচার করা হয়েছিলো। তখন এ বিষয়ে প্রকাশিত রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন দেখুন এখানে। 

সুতরাং, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া করে গান বাজানোর দৃশ্য দাবিতে ভারতের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র