Home Blog Page 4

ঘরবাড়ি হারিয়ে ইসরায়েলি তরুণীর কান্নার ভিডিও দাবিতে সিরীয় সাঁতারু ইউসরার স্বদেশ ফেরার দৃশ্য প্রচার

চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ঘরবাড়ি হারিয়ে এক ইসরায়েলি তরুণী কান্না করছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ইউটিউবে প্রচারিত একই দাবি দেখুন: এখানে

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ঘরবাড়ি হারিয়ে ইসরায়েলি তরুণীর কান্নার দৃশ্য নয়; বরং এটি সাবেক সিরীয় সাঁতারু ইউসরা মার্দিনির এক দশক পর নিজ এলাকায় ফেরার আবেগপ্রবণ মুহূর্তের ভিডিও।

বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে ‘Yusra Mardini’ নামের একটি ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে ১৪ মার্চ পোস্ট করা একই ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা, “আমি ঘরবাড়িতে, কিন্তু আমার ঘরবাড়ি আর দাঁড়িয়ে নেই। আমার মনের কথা তোমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই, কারণ এটা শুধু আমার গল্প নয়, এই মুহূর্তে অনেক সিরিয়ানই একই রকম হারানো, কষ্ট আর মানসিক আঘাতের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। এটাই ছিল সেই ঘরবাড়ি, যেখানে আমি বড় হয়েছি, স্বপ্ন দেখেছিলাম নিজেকে একজন সেরা নারী হিসেবে গড়ে তোলার, আর বাবার সঙ্গে পাড়ায় দাঁড়িয়ে গাড়ি ধুয়েছিলাম। হ্যাঁ, আমার ঘরবাড়ি এখন শুধু ধ্বংসস্তূপ, কিন্তু সেই স্মৃতিগুলো সবসময় আমাকে এগিয়ে যেতে শক্তি দেবে। আলহামদুলিল্লাহ।”

পবর্তীতে, মিডেল ইস্ট আইয়ের ইউটিউব চ্যানেলেও গত ১৪ মার্চ প্রকাশিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওর বর্ণনায় বলা হয়, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের শুভেচ্ছাদূত ও সাবেক সিরিয়ার সাঁতারু ইউসরা মার্দিনি এক দশক পর নিজ দেশে ফিরে দেখেন, দারায়ার তার এলাকা প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে, এমনকি তার বসবাসের ভবনটিও।

Comparison: Rumor Scanner. 

সৌদি আরব ভিত্তিক গণমাধ্যম আল আরাবিয়াতে গত ২৮ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অলিম্পিক সাঁতারু ও ইউএনএইচসিআরের শুভেচ্ছাদূত ইউসরা মার্দিনি ১৭ বছর বয়সে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে পালিয়ে যান। এক দশক পর প্রথমবার দেশে ফিরে তিনি পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখতে চান। ২৭ বছর বয়সী এই সাঁতারুর জীবন নিয়ে নেটফ্লিক্সে নির্মিত ‘দ্য সুইমারস’ চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছে, কীভাবে ইউসরা ও তার বোন দামেস্ক থেকে পালিয়ে এজিয়ান সাগর সাঁতরে পার হন।

সুতরাং, সিরিয়ার সাবেক সাঁতারু ইউসরা মার্দিনির স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আবেগপ্রবণ ভিডিওকে ইসরায়েলি নারীর কান্নার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ভুয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে আ. লীগের পক্ষে রাজনৈতিক প্রভাব তৈরির চেষ্টা

0

গত বছরের সেপ্টেম্বরে ‘Tamanna Aktar Yesmin’ নামের একটি ফেসবুক প্রোফাইল নিয়ে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে উঠে আসে, প্রোফাইলটি থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমির বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছিল, যেন প্রোফাইলধারী আওয়ামী লীগের পক্ষে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করছেন।

প্রতিবেদন প্রকাশের কিছুদিনের মধ্যেই প্রোফাইলটি ফেসবুক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর নামের বানানে সামান্য পরিবর্তন এনে ‘Tamanna Akhter Yesman’ নামে আরেকটি প্রোফাইল খোলা হয়। নতুন এই প্রোফাইলটিও পূর্বের মতো একই কৌশলে পরিচালিত হচ্ছে। এখান থেকেও রিম আল হাশিমির পুরোনো ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে এমনভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে, যাতে একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ভাবমূর্তি গড়ে তোলা যায়।

ফেসবুকের ট্রান্সপারেন্সি সেকশন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রোফাইলটি ২০২৪ সালের ২৪ নভেম্বর খোলা হয়েছে এবং এটি বাংলাদেশ থেকেই পরিচালিত হচ্ছে। সাত মাসের ব্যবধানে এর অনুসারীর সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়েছে।

Screenshot: Facebook.

প্রোফাইলটিতে প্রকাশিত ছবি, ভিডিও ও বিবরণ দেখে সাধারণ ব্যবহারকারীদের মনে হতে পারে, এটি আওয়ামী লীগপন্থি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সক্রিয় কোনো নারী নেত্রীর প্রোফাইল। বিভিন্ন পোস্টে দেখা যায়, তিনি ভারতের কোথাও অবস্থান করছেন এবং সময় সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করছেন। এছাড়া ভারতে আসা বিভিন্ন বিদেশি নেতার সঙ্গে তার যোগাযোগ এবং বিদেশ সফরে গিয়ে বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের কথাও উল্লেখ করা হয়।

তবে অনুসন্ধানে এসব দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। বরং দেখা গেছে, প্রোফাইলটিতে রিম আল হাশিমির পুরোনো কর্মকাণ্ডের ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে ভিন্ন একটি পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা চলছে। এতে প্রোফাইলধারীকে একজন আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত, প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। কখন কোথায় সফর করেছেন, কখন ফিরেছেন, এমন তথ্যও নিয়মিতভাবে জানানো হচ্ছে। 

উদাহরণস্বরূপ, সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘কিংস তৃতীয় চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ পাওয়ার পর ‘Tamanna Akhter Yesman’ নামের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে দাবি করা হয়, প্রোফাইলধারীও এই পুরস্কার পেয়েছেন। তবে, অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়, এই দাবি মিথ্যা। ‘তামান্না আক্তার ইয়াসমিন’ নামে কোনো ব্যক্তি এই পুরস্কার পাননি। এই দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো ২০২২ সালে দুবাই পুলিশ এবং এক্সপো ২০২০ দুবাইয়ের গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অর্জনের সঙ্গে সম্পর্কিত। এছাড়া পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পাওয়া, মনোনয়নের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ, ব্রিটেন সফর, ব্রিটিশ রাজা-রানী এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক ও সফর শেষে ভারতে ফেরার দাবিও প্রচার করা হয়। তবে এসব দাবির সঙ্গে ব্যবহৃত ছবিগুলোর প্রতিটিই রিম আল হাশিমির পুরোনো ছবি ও ভিডিও।

Comparison: Rumor Scanner.

রিউমর স্ক্যানার টিম ২০২৫ সালের ১ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ‘Tamanna Akhter Yesman’ নামের ফেসবুক প্রোফাইলটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে। এ সময়ের মধ্যে প্রোফাইলটি থেকে মোট ১০৩টি পোস্ট করা হয়। এর মধ্যে ৭৯টি ছিল শুধুমাত্র ছবি-ভিত্তিক, ২২টি ভিডিওকেন্দ্রিক এবং একটি পোস্টে ছবি ও ভিডিও দুটোই ব্যবহৃত হয়। একটি পোস্ট ছিল শুধুই লেখাভিত্তিক।

এই ১০৩টি পোস্টের মধ্যে ৮৩টিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমির ছবি ব্যবহৃত হয়েছে, যা মোট পোস্টের প্রায় ৮০ শতাংশ। বিষয়বস্তুর দিক থেকে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ পেয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নাম এসেছে ১৮টি পোস্টে, যা মোট পোস্টের প্রায় ১৭ শতাংশ। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাকে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এসব পোস্টে রাশিয়ার আদালতে রূপপুর প্রকল্পে অর্থ আত্মসাতের কথিত মামলায় তার ‘মুক্তি’, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনা, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে কথিত অভিযোগ ‘বাতিল’-এর দাবি উঠে এসেছে। পাশাপাশি শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপ ও সাক্ষাতের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে ঘিরে ছয়টি পোস্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটিতে বিদেশি নেতাদের সঙ্গে তার নির্ধারিত সাক্ষাৎ বাতিলের দাবি, একটিতে ফিনল্যান্ড সরকারের নিষেধাজ্ঞার দাবি এবং দুইটিতে কথিত ‘তামান্না’র সঙ্গে তার সাক্ষাতের উল্লেখ পাওয়া যায়। এসব পোস্টে ড. ইউনূসকে প্রায় প্রতিবারই নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়া একটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আরেকটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘তামান্না’র সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে চিঠি দিয়েছেন।

প্রোফাইল থেকে প্রকাশিত এসব পোস্ট নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দর্শনের অনুসারীদের কাছে দ্রুত পৌঁছে দিতে নিয়মিতভাবে আওয়ামী লীগপন্থি বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে শেয়ার করা হয়। ফলে এগুলোর প্রচারমাত্রা বাড়ে এবং তা ফেসবুকের গণ্ডি পেরিয়ে এক্স (সাবেক টুইটার), ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকের মতো অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।

এই পোস্টগুলো সাধারণ ব্যবহারকারীরা কতটা বিশ্বাস করছেন, তা মূল্যায়নের জন্য আন্তর্জাতিক নেতাদের সঙ্গে কথিত সাক্ষাতের দাবিসংবলিত পাঁচটি পোস্টকে নমুনা হিসেবে বিশ্লেষণ করা হয়। এসব পোস্টে দুবাইয়ের প্রধানমন্ত্রী, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস ও তাঁর স্ত্রী এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের কথা বলা হয়েছে।

Image Collage: Rumor Scanner.

পাঁচটি পোস্টে মোট ১৮৬টি মন্তব্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৮৩টি মন্তব্যেই শুভেচ্ছা, অভিনন্দন বা প্রশংসা জানানো হয়েছে, যা মোট মন্তব্যের প্রায় ৯৮ শতাংশ। মাত্র একটি মন্তব্যে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে (০.৫৪ শতাংশ) এবং দুইটি মন্তব্যে বিরোধী মত এসেছে (১.০৮ শতাংশ)।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে ‘লাইক’, এরপর ‘লাভ’ রিঅ্যাকশন। বিশ্লেষণ বলছে, প্রোফাইল থেকে প্রচারিত তথ্য ও দাবি অধিকাংশ ব্যবহারকারীর কাছেই বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ও এনসিপি নেত্রী অর্পিতা শ্যামা দেবের ব্যক্তিগত দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন নারীর ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘২৪ এর লাল যোদ্ধা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট এর মুখ্য সংগঠক অর্পিতা শ্যামা দেব কট’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ব্যক্তিগত দৃশ্য প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ব্যক্তিগত উক্ত দৃশ্যটি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক অর্পিতা শ্যামা দেবের।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক অর্পিতা শ্যামা দেবের ব্যক্তিগত দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত দৃশ্যটি অর্পিতা শ্যামা দেবের নয় বরং, অনলাইনে অ্যাডাল্ট ওয়েবসাইটে বিদ্যমান ভিন্ন এক নারীর ভিডিও আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ভিডিওটি অর্পিতা শ্যামা দেবের দাবিতে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে, ২০২২ সালে একটি অ্যাডাল্ট ওয়েবসাইটে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায় যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটি ‘AndreAndVictor’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচার করা হয়েছে এবং উক্ত অ্যাকাউন্টে উক্ত নারীর আরো একাধিক ভিডিও পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও, উক্ত ভিডিওটি এরূপ আরো কিছু ওয়েবসাইটেও প্রচার হতে দেখা যায় তবে সংগত কারণে সেসব ওয়েবসাইটেরও নাম উল্লেখ করা হচ্ছে না।

Comparison : Rumor Scanner

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত নারী ও অর্পিতা শ্যামা দেবের মুখমন্ডলের তুলনা করলেও বৈসাদৃশ্য দেখা যায় এবং নিশ্চিত হওয়া যায় যে দু’জন আলাদা ব্যক্তি।

সুতরাং, অনলাইনে অ্যাডাল্ট ওয়েবসাইটে বিদ্যমান ভিন্ন এক নারীর ভিডিও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক অর্পিতা শ্যামা দেবের ব্যক্তিগত দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

এনসিপি নেতা তুষারকে নিয়ে তাসনিম জারার বক্তব্য দাবিতে কালবেলার নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার 

0

সম্প্রতি, “তুষার আমাকেও লাগাতে চেয়েছিল” শীর্ষক শিরোনামে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারার বক্তব্য দাবিতে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলার ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এনসিপি নেত্রী ডা. তাসনিম জারা ‘তুষার আমাকেও লাগাতে চেয়েছিল’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি এবং কালবেলাও উক্ত দাবিতে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে কালবেলার ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে কালবেলার লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ১৬ জুন, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। 

কালবেলার লোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, কালবেলার ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে গত ১৬ জুন গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে “নারী কর্মীকে কুপ্রস্তাব এনসিপি নেতার, অডিও ফাঁস” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। কালবেলার মূল ফটোকার্ডটিতে ‘নারী কর্মীকে কুপ্রস্তাব এনসিপি নেতার, অডিও ফাঁস’ শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে ‘তুষার আমাকেও লাগাতে চেয়েছিল- তাসনীম জারা’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে। 

Photocard Comparison By Rumor Scanner 

অর্থাৎ, কালবেলার এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

মূল ফটোকার্ড সম্বলিত কালবেলার পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে এক নারী নেত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যার প্রমাণ হিসেবে একটি অডিও ফাঁস করেছেন সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর। অডিওতে রাতের বেলা ছবি চাওয়া ও দেখা করার প্রস্তাবসহ আপত্তিকর কথোপকথন শোনা যায়। তবে, উক্ত প্রতিবেদনটিতে কোথাও ডা. তাসনিম জারার নাম প্রচারিত মন্তব্যটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো সংবাদমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারাকে উদ্ধৃত করে ‘তুষার আমাকেও লাগাতে চেয়েছিল’ শিরোনামে কালবেলার নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র 

বাংলাদেশকে জড়িয়ে জাম্বিয়ার নেতাকে তাজিকিস্তানের নেতা দাবিতে ভুয়া দাবি প্রচার

0

সম্প্রতি ‘Tamanna Akhter Yesman’ নামে পরিচালিত এক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার ছবি সদৃশ দুইটি ছবিসহ কয়েকটি ছবি সংযুক্ত করে দাবি প্রচার করা হয়েছে, “বাংলাদেশের জন্য বড় একটি উপহার। ভারতে সফররত তাজিকিস্তানের আবাসন উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রী মোহাম্মদ ফয়সাল বিন ফারহানের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেছি। বাংলাদেশের জন্য ৫৮৯ টি ইসলামিক রিপাবলিক মসজিদ উপহার হিসেবে গ্রহণ করেছি। মসজিদ গুলোর বাজেটে ব্যায় হবে ৪ হাজার ২৬৭ কোটি টাকা। আমরা মসজিদ নির্মাণ প্রকল্প নিরাপত্তা বিষয়ে ২ বছরের সমঝোতা স্মারক সই করেছি। মানবতায় একটি দিস্টান্ত দেখালেন তাজিকিস্তান সরকার আমি জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং মোবারকবাদ।” 

উক্ত দাবিতে ফেসবুক প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো সম্প্রতি তাজিকিস্তানের কোনো মন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশের জন্য মডেল মসজিদের বিষয়ে কোনো সমঝোতা স্মারকের ছবি নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২০ সালে জাম্বিয়ার সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হওয়া চুক্তির ছবি আলোচিত ভুয়া দাবিতে প্রচার করা হয়েছে এবং প্রদর্শিত নারীর নাম তামান্না নয় বরং, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম বিনতে ইব্রাহিম আল হাশিমী।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সমঝোতা স্মারকের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে জাম্বিয়া ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘জাম্বিয়া রিপোর্টস’ এর ফেসবুক পেজে ২০২০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারিতে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে তিনটি ছবির সংযুক্তি পাওয়া যায় যার মধ্যে দুইটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবি দুইটির মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ফেসবুক পোস্টটির ক্যাপশনে ছবিগুলোর সম্পর্কে বলা হয়, “সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: জাম্বিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ৩টি অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।… জাম্বিয়ার পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাননীয় জোসেফ মালাঞ্জি এবং বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী মাননীয় ক্রিস্টোফার ইয়ালুমা স্বাক্ষর করেন, আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের পক্ষে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রমন্ত্রী মহামান্যা রিম ইব্রাহিম আল-হাশিমি এবং দুবাই ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২০ বিড কমিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।..” (অনূদিত)

এছাড়াও, জাম্বিয়ার বাণিজ্য, বাণিজ্যিক লেনদেন ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের নামে পরিচালিত ফেসবুক পেজেও আলোচিত ছবিগুলোর সংযুক্তিসহ ২০২০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, জাম্বিয়া প্রজাতন্ত্র সরকার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE) দুটি দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে তিনটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। স্বাক্ষরিত তিনটি চুক্তির মধ্যে রয়েছে: ১. বিনিয়োগ সংরক্ষণ ও পারস্পরিক সুরক্ষার জন্য চুক্তি, ২. দ্বৈত কর পরিহার এবং আয় ও কর সংক্রান্ত কর ফাঁকি প্রতিরোধের চুক্তি, ৩. কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য পারস্পরিক ভিসা অব্যাহতির চুক্তি।

অর্থাৎ, প্রচারিত চুক্তি স্বাক্ষরের ছবিতে বাংলাদেশের কোনো সম্পৃক্ততা নেই এবং প্রদর্শিত নারী বাংলাদেশ সরকারের কেউ নন বরং, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম বিনতে ইব্রাহিম আল হাশিমী।

পরবর্তী অনুসন্ধানে আলোচিত দাবির অনুরূপ তাজিকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের কোনো সমঝোতা স্মারক সম্প্রতি স্বাক্ষরিত হয়েছে কি না এ বিষয়ে অনুসন্ধান করলে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রেই আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমীর ছবি ব্যবহার করে তামান্না আক্তার ইয়াসমান (Tamanna Akhter Yesman) নাম দাবি করে একটি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে ক্রমাগত ভুল তথ্য প্রচার করতে দেখা যায়। উক্ত অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত গুজবের বিষয়ে বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ২০২০ সালে জাম্বিয়ার সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হওয়া চুক্তির ছবি সম্প্রতি তাজিকিস্তানের মন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশের জন্য মডেল মসজিদের বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে: যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইসরায়েলি সৈনিকের হামলা বন্ধের অনুরোধ দাবিতে এআই তৈরি ভুয়া ভিডিও প্রচার 

চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে এক ইসরায়েলি সৈনিক ইরানকে হামলা থামানোর অনুরোধ জানাচ্ছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে ধ্বংসস্তূপের মাঝে দাঁড়িয়ে আবেগঘনভাবে কাঁদতে দেখা যায় ওই সৈনিককে। মাইক হাতে তিনি ইংরেজিতে বলেন, “ইরান, আমরা আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি। দয়া করে হামলা বন্ধ করুন। ইসরায়েলের অর্ধেক ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা আত্মসমর্পণ করছি। শুধু এই ধ্বংসযজ্ঞ থামান।” ভিডিওটির এক কোণে বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভির লোগোও দেখা যায়।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন:  এখানে, এখানে, এখানে

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,ইসরায়েলি সৈনিকের ইরানকে হামলা বন্ধের অনুরোধ জানানোর দাবিতে ভাইরাল এই ভিডিওটি বাস্তব নয়; এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে সময় টিভির লোগোর সূত্র ধরে চ্যানেলটির ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওটির খোঁজ করা হয়। কিন্তু সেখানে এমন কোনো ভিডিও প্রচারের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

ভিডিওটির বিষয়ে আরও অনুসন্ধানে ‘Jax Teller Motivation’ নামের একটি টিকটক প্রোফাইলে গত ১৪ মে প্রচারিত একই ভিডিওর উন্নত সংস্করণ পাওয়া যায়। ভিডিওটির মন্তব্য ঘরে অনেক ব্যবহারকারী এটিকে এআই দিয়ে তৈরি বলে দাবি করলেও, প্রকাশকারী কোনো প্রতিবাদ না করে মন্তব্যের জবাবে শুধু লাভ ইমোজি ব্যবহার করেছেন।

এছাড়া, এই প্রোফাইল থেকে প্রচারিত উচ্চমানের ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ হলো গুগলের একটি অত্যাধুনিক এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে পারে। এই টুল দিয়ে তৈরি ভিডিওতে সাধারণত ‘Veo’ জলছাপ থাকে। এই ভিডিওটিতেও ‘Veo’ জলছাপ রয়েছে এবং এর দৈর্ঘ্য ৮ সেকেন্ড।

Screenshot: Claimed Video. 

রিউমর স্ক্যানার টিমের পর্যবেক্ষণেও ভিডিওটিতে এআই-জনিত বেশ কিছু অসংগতি ধরা পড়েছে। সৈনিকের মুখভঙ্গি ও কান্না অতিরঞ্জিত, চেহারার টেক্সচার বাস্তবসম্মত নয় এবং পেছনের ধোঁয়া ও আগুনের দৃশ্য কম্পিউটার গ্রাফিকসের মতো। সৈনিকের হাতে থাকা মাইক্রোফোনটি নতুন ও অক্ষত, যা যুদ্ধক্ষেত্রের পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

আরও নিশ্চিতকরণের জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম হাইভ মডারেশনে ভিডিওটি পরীক্ষা করে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ।

Screenshot: Hive Moderation. 

তাছাড়া, এমন একটি ভিডিও যদি বাস্তব হতো, তবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হতো। কিন্তু নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে ভিডিওটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে ইসরায়েলি সৈনিক ইরানের কাছে হামলা বন্ধের অনুরোধ জানাচ্ছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s analysis.
  • Hive Moderation. 

মোসাদের হেডকোয়ার্টারে ইরানের হামলার দৃশ্য দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার

চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষাপটে, ইসরায়েলের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দফতরে ইরানের মিসাইল হামলার দৃশ্য দাবি করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, মিসাইলের আঘাতে একটি বহুতল ভবন ধসে পড়ছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে,।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি মোসাদের সদর দফতরে ইরানের হামলার দৃশ্য নয়; বরং এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও।

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

রিউমর স্ক্যানার টিমের বিশ্লেষণে ভিডিওতে একাধিক এআই-জনিত অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে। মিসাইল আঘাতের পূর্বেই ভবনের নিচে অ্যাম্বুলেন্সের উপস্থিতি দেখা যায়, যা বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে মানানসই নয়। পাশাপাশি, ভবন ধসে পড়ার পরও ওই অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে সম্পূর্ণ অক্ষত থাকতে দেখা যায়। মিসাইল, ধোঁয়া, ধ্বংসাবশেষ এবং ভবনের ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্যগুলোও কৃত্রিমভাবে তৈরি বলে প্রতীয়মান হয়। ভিডিওতে কয়েকটি মিসাইল হঠাৎ করে দৃশ্যে এসে যায়, যা বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ গুগলের একটি উন্নত এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। এই ভিডিওটির দৈর্ঘ্যও ৮ সেকেন্ড।

Screenshot of claimed Video. 

বিষয়টি আরও নিশ্চিতের জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম হাইভ মডারেশনে ভিডিওটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ।

Screenshot: Hive Moderation. 

এছাড়া, ইরানের বিপ্লবী গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দফতরে হামলা চালিয়েছে এবং একটি ঘাঁটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তবে, ইরানের তাসনিম নিউজ এজেন্সি প্রচারিত দৃশ্যের সঙ্গে এই ভিডিওর কোনো মিল পাওয়া যায়নি। আইআরজিসির দাবি অনুযায়ী, ঘটনাটি ১৬ জুন ঘটলেও, উল্লিখিত ভিডিওটি এর আগে থেকেই ইন্টারনেটে আলোচিত দাবিতে প্রচার হচ্ছিল।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে ইরানের হাইপারসনিক মিসাইল হামলার দৃশ্য দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s analysis.
  • Hive Moderation. 

বাংলাদেশের জনগণ চাইলে পুনরায় শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবেন শীর্ষক মন্তব্য করেননি ট্রাম্প, বিটিভির নামে ভুয়া ফটোকার্ড

0

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য দাবিতে ‘যদি বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগ কে পুনরায় চায় তবে বাংলাদেশ পরবর্তী প্রাইম মিনিস্টার হাসিনা হবে’ শীর্ষক শিরোনামে বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ড দেখুন এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘যদি বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগ কে পুনরায় চায় তবে বাংলাদেশ পরবর্তী প্রাইম মিনিস্টার হাসিনা হবে’ শিরোনামে বিটিভি কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি এবং ট্রাম্পও এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে বিটিভির ডিজাইন নকল করে ভুয়া দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে বিটিভির লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ ১১ জুন, ২০২৫ উল্লেখ রয়েছে।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে বিটিভির ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি দেশের অন্য গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি। সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্পকেও আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। 

এছাড়া, পর্যবেক্ষণে আলোচিত দাবির ফটোকার্ডটির ফন্টের সাথে বিটিভির প্রচলিত ফটোকার্ডের ফন্টের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। এমনকি বিটিভির ফটোকার্ডে ইংরেজি ভাষায় তারিখ লেখা হলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে বাংলা ভাষায় তারিখ লেখা রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

অর্থাৎ, বিটিভির ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, ‘যদি বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগ কে পুনরায় চায় তবে বাংলাদেশ পরবর্তী প্রাইম মিনিস্টার হাসিনা হবে’ শীর্ষক শিরোনামে বিটিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s own analysis

জি এম কাদেরের মৃত্যুর গুজব 

0

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের মারা গেছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবির ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জিএম কাদেরের মৃত্যুর দাবিটি সঠিক নয় বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুকের উক্ত দাবির কতিপয় পোস্টে একটি ওয়েবসাইটের লিংক সূত্র হিসেবে দেওয়া হয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে ‘news6angla.site’ নামের সাইটটি ব্লগস্পট প্ল্যাটফর্মে তৈরি ও .site ডোমেইনে হোস্ট করা একটি ভূঁইফোড় ওয়েবসাইট বলে প্রতীয়মান হয়। উক্ত ‘news6angla.site’ নামের এই ওয়েবসাইটে কথিত দাবির বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদটি পরবর্তীতে সরিয়ে নেওয়ায় তাতে কী উল্লেখ ছিল তা জানা যায়নি।  

তবে জিএম কাদেরের মতো শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মৃত্যু হলে সে বিষয়ে গণমাধ্যমগুলোতে ঢালাওভাবে সংবাদ প্রচার হতো। কিন্তু, দেশের কোনো গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার হতে দেখা যায়নি। এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো বিশ্বস্ত সূত্রেও উক্ত দাবির সত্যতা মেলেনি। বরং, গতকাল (১৭ জুন) জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জাতীয় পার্টির দশম কেন্দ্রীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এবার জ্যেষ্ঠ নেতাদের বড় একটি অংশ জি এম কাদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর তৎপরতায় যুক্ত হয়েছে। এই অংশটি ২৮ জুন রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই প্রতিবেদনে জি এম কাদেরের বক্তব্যও রয়েছে। 

উল্লেখ্য, ফ্রি ডোমেইনের ব্লগসাইট ব্যবহার করে অপতথ্য ছড়ানোর এই পদ্ধতি গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। সম্প্রতি রিউমর স্ক্যানারের ইনভেস্টিগেশন ইউনিট এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যাতে বেরিয়ে এসেছে এসব সাইটের পেছনে কারা আছেন, কারাই বা এসব 

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন এবং কাদের এসব অপতথ্যের শিকার বানানো হচ্ছে। পড়ুন এখানে। 

সুতরাং, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের মারা গেছেন শীর্ষক তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনীর জন্য জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন সাময়িক স্থগিতের দাবিটি ভুয়া 

0

সম্প্রতি, “বাংলাদেশ থেকে মিশন বাতিল করলো জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। দুর্নীতি অর্থ লুটপাট গুম হত্যা কান্ডে জড়িত থাকার কারন দেখিয়ে বাংলাদেশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ সশস্ত্র বাহিনীসহ সব ধরনের ডিপার্টমেন্টের জন্য মিশন সাময়িক স্থগিত করলো জাতিসংঘ। আগামী জুলাই মাসের ৭ তারিখ হইতে এই নিয়ম কার্যকর হবে। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যাস্তনিয়ো গুতেরেসের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেছি এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি।” শীর্ষক দাবিতে ‘Tamanna Akhter Yesman’ নামক একটি অ্যাকাউন্ট থেকে কিছু ছবি প্রচার করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে উক্ত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট, গ্রুপ ও পেজে প্রচার করা হয়। দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতিসংঘ বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা ও সশস্ত্র বাহিনীর জন্য শান্তিরক্ষা মিশন সাময়িক স্থগিত করেনি বরং, কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ বা সংশ্লিষ্ট কোনো বিশ্বস্ত সূত্র থেকেও আলোচিত দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, ছবিতে থাকা নারীর নাম তামান্না আক্তার ইয়াসমান নয়, তিনি হলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে জাতিসংঘ, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিষয়ক অফিশিয়াল ওয়েবসাইট, সামাজিক মাধ্যমে ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্টসহ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ-পিয়ের লাক্রুয়ার (Jean-Pierre Lacroix) ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণে আলোচিত দাবির পক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

প্রচারিত ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ‘Tamanna Akhter Yesman’ নামক একটি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রথমে প্রচার করা হয় এবং তিনি নিজেকে প্রচারিত ছবিতে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সাথে থাকা নারী বলে দাবি করেছেন। 

পরবর্তীতে আলোচ্য ছবির বিষয়ে বিস্তারিত জানতে  কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাতিসংঘের ছবি ও ডিজিটাল মিডিয়া সামগ্রী সংরক্ষণ ও শেয়ার করার অনলাইন ডেটাবেস প্ল্যাটফর্মে একই পোশাক পরিহিত কর্দনরত নারীর সঙ্গে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে দেখতে পাওয়া যায়। 

Image Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত ছবির বিস্তারিত বিবরণীতে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে কর্দনরত নারীকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। 

অন্যদিকে, বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের অন্যতম অংশীদার এবং সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যমতে, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে ৪৪৪ নারীসহ ৫ হাজার ৮১৮ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী ১০টি দেশে নিয়োজিত রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশ বিষয়ে এমন কোনো স্থগিতাদেশ বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ঢালাওভাবে তা প্রচার হতো। তবে, মূলধারার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো পর্যবেক্ষণে আলোচিত দাবির স্বপক্ষে কোনো সংবাদ প্রকাশ হতে দেখা যায়নি। 

উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমীর ছবি ব্যবহার করে তামান্না আক্তার ইয়াসমান (Tamanna Akhter Yesman) নাম দাবি করে একটি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে ক্রমাগত ভুল তথ্য প্রচার করতে দেখা যায়। উক্ত অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত গুজবের বিষয়ে বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, জাতিসংঘ বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা ও সশস্ত্র বাহিনীর জন্য শান্তিরক্ষা মিশন সাময়িক স্থগিত করেছে শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র