Home Blog Page 2

ইসরায়েলে ইরানের মিসাইল হামলার দৃশ্য দাবিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভিডিও প্রচার 

চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষাপটে, ইরান কর্তৃক সমুদ্রের তলদেশ থেকে সাবমেরিন দিয়ে প্রথমবারের মত মিসাইল নিক্ষেপের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সমুদ্রের তলদেশ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ইরান কর্তৃক ইসরায়েলে সাবমেরিন দিয়ে মিসাইল হামলার দৃশ্য নয়; বরং এটি ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া কর্তৃক কৃষ্ণসাগর থেকে কিয়েভের কাছে ঝিটোমির শহরে ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামোর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভিডিও। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ২৬ মার্চ তারিখে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে থাকা ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, রাশিয়া কৃষ্ণসাগর থেকে ইউক্রেনের ঝিটোমির অঞ্চলে চারটি ‘কালিব্র’ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। রাশিয়ার এই হামলায় ইউক্রেনের একটি অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের গুদাম সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে। (অনূদিত) 

পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ব্রিটেন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে একই তারিখে অর্থাৎ ২০২৪ সালের ২৬ মার্চে ‘Ukraine War: Russia launch missiles ‘from black sea’ targeting Ukraine’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওর বিস্তারিত বিবরণীতে বলা হচ্ছে, “রাশিয়ান সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা কৃষ্ণসাগর থেকে ইউক্রেনের একটি সামরিক অবকাঠামোর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ঝিটোমির, যা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে প্রায় ৯৬ মাইল দূরে অবস্থিত।” (অনূদিত) 

এছাড়া, স্কাই নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিওর বিস্তারিত অংশে আলোচ্য হামলা ও ঘটনার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, কৃষ্ণসাগর থেকে ছোড়া ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের লভিভ ও ঝিটোমিরে বিস্ফোরণ হয় এবং তেল ডিপো ও সামরিক স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। উক্ত প্রতিবেদনের শিরোনামে একই তথ্যের উল্লেখ রয়েছে এবং বিস্তারিত অংশে একই ভিডিওর উল্লেখ পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের আগ থেকেই ইন্টারনেটে রয়েছে। যা থেকে নিশ্চিত যে এটি চলমান ইরান ইসরায়েল সংঘাতের ভিডিও নয়। 

সুতরাং, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে ইরান কর্তৃক ইসরায়েলে মিসাইল নিক্ষেপের দৃশ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ইরানের হামলায় ইসরায়েলের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার দৃশ্য দাবিতে এআই নির্মিত ভিডিও প্রচার 

গত ১৩ জুন (শুক্রবার) ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েল। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলা এখনো চলমান রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে ইরানের হামলায় ইসরায়েলের অবস্থা দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি প্রায় ১৬ লক্ষ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওতে প্রায় ৫৩ হাজার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটি প্রায় ৩ হাজার পাঁচশতবার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইসরায়েলের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ভিডিও নয়; বরং, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে 3amelyon নামের ইউজার আইডির একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৪ জুন তারিখে “عامليون #جنوب_لبنان” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটির সাথে এটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Comparison : Rumor Scanner 

তাছাড়া, ভিডিওটিতে দেখতে পাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার দৃশ্য পর্যবেক্ষণ করে এটি এআই দ্বারা তৈরি বলে প্রতীয়মান হয়। 

পরবর্তীতে, 3amelyon নামের ইউজার আইডির ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে তাতে এমন ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় নির্মিত একাধিক কন্টেন্ট দেখতে পাওয়া যায়। কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে নির্মিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

পাশাপাশি, অ্যাকাউন্টটির বায়ো সেকশন ইংরেজিতে ভাষান্তরের মাধ্যমে দেখা যায়, সেখানে ‘Resistance to Artificial Intelligence’ শীর্ষক লেখা রয়েছে। যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, উক্ত ভিডিওগুলো এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে।

Screenshot: Rumor Scanner

পরবর্তীতে, বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী একাধিক টুল দিয়ে যাচাই করলে তা এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯৩ শতাংশ পর্যন্ত বলে জানা যায়। 

Screenshot: Rumor Scanner 

সুতরাং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওকে চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইরানের হামলায় ইসরায়েলের অবস্থা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

  • 3amelyon: Instagram Post
  • AI-Generated Detection Tool: Cantilux 
  • Rumor Scanner’s Analysis 

ঢাকার গাবতলীতে আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে খুলনার এপ্রিলের ভিডিও প্রচার 

গত ১২ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। গত ১৭ জুন রাজধানী ঢাকার গাবতলীতে দলটির ব্যানারে সংঘটিত মিছিল দাবিতে ‘এই মুহূর্তে আজকের #ব্রেকিং,, জয় বাংলার স্লোগান এ উত্তাল ঢাকা গাবতলী থেকে সরাসরি।’ একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত মিছিলের ভিডিওটি ঢাকার গাবতলীর নয় এবং ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়েরও নয় বরং, গত এপ্রিল মাসে খুলনার জিরো পয়েন্ট এলাকায় খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে অনুষ্ঠিত মিছিলের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম Channel 24 এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২০ এপ্রিল ‘খুলনায় আওয়ামী লীগের মিছিল, নেতা-কর্মীদের খুঁজছে পুলিশ’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

একই ভিডিও ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম Independent Television এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২০ এপ্রিল ‘খুলনার জিরো পয়েন্টে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ঝটিকা মিছিল’ শিরোনামে প্রকাশ করা হয়।

ভিডিওটির বিবরণী থেকে জানা যায়, সেদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খুলনা জেলার জিরো পয়েন্ট এলাকায় ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, খুলনা জেলা শাখা’ এর ব্যানারে খুলনায় ঝটিকা মিছিল করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর খুলনায় এটাই ছিল প্রথম দলটির প্রথম কোনো মিছিল। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার গাবতলীতে আওয়ামী লীগের ব্যানারে কোনো মিছিলের নয়।

সুতরাং, সম্প্রতি ঢাকার গাবতলীতে আওয়ামী লীগের ব্যানারে মিছিলের ভিডিও দাবিতে গত এপ্রিল মাসে খুলনায় আওয়ামী লীগের ব্যানারে অনুষ্ঠিত মিছিলের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ইরান কর্তৃক মোসাদের এজেন্টদের গ্রেফতারের নয়, ভিডিওটি তুরস্কে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের

সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষিতে ‘ব্রেকিং নিউজ:> ইরান ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ইহুদি এজেন্টদের গ্রেপ্তার করেছে! তারা তেহরানের কাছে একটি গোপন ভূগর্ভস্থ ইসরাইলি ড্রোন কারখানা  করেছিল। সেখান থেকে যা ইরানি নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করে হামলা করা হয়েছিল।’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইরান কর্তৃক ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্টদের গ্রেফতারের নয় বরং, ২০১৬ সালে তুরস্কে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার অভিযুক্তদের তদন্তের অংশ হিসেবে গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে তুরস্কের গণমাধ্যম Medyascope এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান আকিন ওজতুর্ক এবং অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার অন্যান্য অভিযুক্তদের তদন্তের অংশ হিসেবে সেসময় গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এটি সে ঘটনারই দৃশ্য। 

একই বিষয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম The Sun এর ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ১৯ জুলাই ‘COUP KINGPINS Turkey parades coup ‘plotters’ as Merkel threatens EU ban over plan to execute them’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনেও একই ভিডিও ও তথ্য পাওয়া যায়। 

আলোচিত ভিডিওতে বিমান বাহিনীর প্রাক্তন প্রধান আকিন ওজতুর্ক সহ অভ্যুত্থানের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের হাত বেঁধে ক্যামেরার সামনে কুচকাওয়াজ করানো হয়েছিল এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়ার আগে তাদের নাম এবং পদমর্যাদা জানাতে বলা হয়েছিল। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে ইরান কর্তৃক ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্টদের গ্রেফতারের দাবির ঘটনার নয়।

সুতরাং, ইরান কর্তৃক ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্টদের গ্রেফতারের ভিডিও দাবিতে  ২০১৬ সালে তুরস্কে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পদ্মা সেতুর দুটি সংযোগ সড়ক সেতু ভেঙে যাওয়ার দৃশ্য দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, পদ্মা সেতুর দুটি সংযোগ সড়ক সেতু ভেঙে যাওয়ার দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পদ্মা সেতুর দুটি সংযোগ সড়ক সেতু ভেঙে যাওয়া দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাস্তব নয়। প্রকৃতপক্ষে, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সহায়তার তৈরি একটি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার ভিডিওটিতে @THE.WORLDAI শীর্ষক একটি মিরর ওয়াটার মার্ক দেখতে পায়। যে থেকে ধারণা করা যাচ্ছে, ভিডিওটি কোনো একটি ভিডিওকে মিরর করে তৈরি করা হয়েছে।

পরবর্তীতে প্রাপ্ত ওয়াটারমার্কের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে the.worldai ইউজারনেমের একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া যায়। উক্ত অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনার মাধ্যমে গত ১৪ জুন প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাথে এটির হুবহু মিল রয়েছে। তবে উক্ত ভিডিওটিকে মিরর করে আলোচিত দাবির ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও ভিডিওর শিরোনাম থেকে জানা যায় এটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

পরবর্তীতে the.worldai নামক ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনা করে জানা যায়, অ্যাকাউন্টটিতে এআই প্রযুক্তির সহায়তায় কনটেন্ট তৈরি করে প্রচার করা হয়।

এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানেএখানেএখানে এবং এখানে

এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে পদ্মা সেতুর কোনো সংযোগ সড়ক সেতু ভাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে কিনা জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো সূত্রে এ বিষয়ক কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওকে পদ্মা সেতুর দুটি সংযোগ সড়ক সেতু ভেঙে যাওয়ার দৃশ্য  দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • The.worldai Instagram Account Post
  • Rumor Scanner’s Analysis

ভারতের সাথে বন্ধুত্ব গড়তে দ্রুত নির্বাচন দরকার শীর্ষক মন্তব্য করেননি দুদু, যমুনা টিভির সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু “ভারতের সাথে বন্ধুত্ব গড়তে দ্রুত নির্বাচন দরকার।” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে যমুনা টিভির লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।


ফেসবুকে প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানেএখানেএখানে।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শামসুজ্জামান দুদু আলোচিত মন্তব্যটি করেননি এবং উক্ত শিরোনামে যমুনা টিভিও কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, শামসুজ্জামান দুদুর ভিন্ন মন্তব্য সম্বলিত যমুনা টিভির ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তার সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে যমুনা টিভির লোগো এবং এটি প্রকাশের কোনো ০৪ জুন ২০২৫ উল্লেখ পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে যমুনা টিভির ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি অন্য কোনো গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে গত ০৪ জুন ‘ভারতের অপপ্রচার রুখতে নির্বাচ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই: দুদু’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডের সাথে উক্ত ফটোকার্ডের শিরোনাম ব্যতিত বাকি সকল উপাদানের মিল রয়েছে। যমুনা টিভির মূল ফটোকার্ডটিতে ‘ভারতের অপপ্রচার রুখতে নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই: দুদু’ শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে ‘ভারতের সাথে বন্ধুত্ব গড়তে দ্রুত নির্বাচন দরকার-দুদু’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।

অর্থাৎ, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে যমুনা টিভির ফটোকার্ড সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

মূল ফটোকার্ড সম্বলিত যমুনা টিভির পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত লাগাতারভাবে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেছেন, এসব রুখতে হলে দেশে নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। ৪ জুন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাঠেরপুল এলাকায় সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে তাকে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।

সুতরাং, শামসুজ্জামান দুদু ‘ভারতের সাথে বন্ধুত্ব গড়তে দ্রুত নির্বাচন দরকার’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে যমুনা টিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

অভিনেত্রী রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা দাবিতে ভারতীয় অভিনেত্রীর সম্পাদিত ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, অভিনেত্রী রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা দাবিতে কিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ছবিগুলো দেখুন এখানেএখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো রাফিয়াথ রশিদ মিথিলার নয়। বরং, ইন্টারনেট থেকে ভারতীয় এক অভিনেত্রীর ছবি সংগ্রহ করে তাতে প্রযুক্তির সাহায্যে রাফিয়াথ রশিদ মিথিলার মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিগুলো প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে Jina নামে একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৪ জুন প্রকাশিত কিছু ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। ছবিতে উক্ত নারীর মূখমণ্ডলে পার্থক্য ছাড়া অন্য সব উপাদানে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

ভারতের কলকতায় বসবাসকারী জিনা তরফদার নামের এই নারী একজন অভিনেত্রী।  

অর্থাৎ, মূল ছবিগুলো জিনা তরফদার নামের ভিন্ন এক নারীর।

অনুসন্ধানের স্বার্থে রিউমর স্ক্যানার বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জিনা তরফদারের ছবির ওপর রাফিয়াথ রশিদ মিথিলার মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করেছে। এতে সম্পাদিত ছবির মতোই অনুরূপ ফলাফল পাওয়া গেছে।

সুতরাং, অভিনেত্রী রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিগুলো সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র 

করোনার কারণে স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা দেওয়ার দাবিটি ভুয়া

0

দেশে নতুন করে দেখা দিচ্ছে করোনা ভাইরাস। বাড়তে শুরু করেছে এতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। করোনায় প্রাণ হারানোর খবরও ইতোমধ্যে সামনে এসেছে। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৬ জুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি প্রচার করা হয়েছে, “কাল থেকে (১৭ জুন) থেকে করোনা ভাইরাসের কারণে স্কুল কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” এছাড়াও বলা হয়, করোনা ভাইরাস হানা দিচ্ছে, যেকোনো সময় সারা বাংলাদেশে লকডাউন হয়ে যাবে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুক প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টটি ৩০ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে, ৫০ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ৯ হাজারেরও অধিক বার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, করোনা ভাইরাসের কারণে গত ১৭ জুন থেকে স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভুয়া দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলেও মূলধারার গণমাধ্যম বা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে এরূপ কোনো ঘোষণা দেওয়া হলে তা গণমাধ্যমে প্রচার করা হতো।

বরং এ বিষয়ে গত ১৪ জুন মূলধারার গণমাধ্যম ঢাকা পোস্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটির পর খুলছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ডেঙ্গু ও করোনার ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের মধ্যেই খুলছে এসব প্রতিষ্ঠান, ফলে উদ্বেগ বাড়ছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রোববার (১৫ জুন) থেকে প্রথম ধাপে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হবে। এরপর ২২ জুন থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলবে। মাদ্রাসাগুলোর ছুটি সবচেয়ে দীর্ঘ হওয়ায় সেগুলো খুলবে ২৬ জুন।”

সুতরাং, করোনা ভাইরাসের কারণে গত ১৭ জুন থেকে স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা দেওয়ার দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আওয়ামী লীগ এবং ইন্ডিয়া বিরোধী কথা বললেই আপনি হিরো শীর্ষক মন্তব্য করেননি শফিকুল আলম

0

সম্প্রতি, ‘এই মুহুর্তে আওয়ামীলীগ এবং ইন্ডিয়া বিরোধী কথা বললেই আপনি হিরো’ শীর্ষক শিরোনামে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের ছবিযুক্ত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানেএখানে।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শফিকুল আলম ‘এই মুহুর্তে আওয়ামীলীগ এবং ইন্ডিয়া বিরোধী কথা বললেই আপনি হিরো’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং, কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই শফিকুল আলমকে উদ্ধৃত করে তার ছবি যুক্ত আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট পর্যবেক্ষণ করলে তাতে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। সাধারণত কোনো গণমাধ্যম কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করে থাকলে, প্রচারিত ফটোকার্ডে গণমাধ্যমটির নাম বা লোগোর সংযুক্তি থাকে৷ তবে, প্রচারিত উক্ত ফটোকার্ডটিতে এমন কোনো গণমাধ্যমের নাম বা লোগোর উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে ফটোকার্ডটির ডিজাইনের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে গত ১৭ জুন ‘বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নেই: প্রেস সচিব’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটির ডিজাইনের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ড এর ডিজাইনের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে কালের কণ্ঠের ফটোকার্ড সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

উক্ত ফটোকার্ড সম্বলিত কালের কণ্ঠের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নেই। দলটির নেতারা টাকা-পয়সা চুরি করে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়ালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

পরবর্তী অনুসন্ধানে ‘এই মুহুর্তে আওয়ামীলীগ এবং ইন্ডিয়া বিরোধী কথা বললেই আপনি হিরো’ শীর্ষক মন্তব্য শফিকুল আলম করেছেন কিনা জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে আলোচিত দাবিটির পক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে উদ্ধৃত করে ‘এই মুহুর্তে আওয়ামীলীগ এবং ইন্ডিয়া বিরোধী কথা বললেই আপনি হিরো’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত মন্তব্যটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

কুমিল্লায় অস্ত্রসহ আটক শিমুল সমন্বয়ক নয়

সম্প্রতি, ‘কুমিল্লার সমন্বয়ক শিমুলের বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার করছে সেনবাহিনী’- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ আটক মো. আবু ওবায়েদ ওরফে শিমুল সমন্বয়ক নন বরং, শিমুল কুমিল্লার আলোচিত সন্ত্রাসী যিনি কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের অস্ত্র সরবরাহকারী রেজাউলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন এবং পরবর্তীতে তিনি নিজেকে মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবুর অনুসারী হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেন বলে জানিয়েছে যৌথ বাহিনী।।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটিতে মূলধারার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির এর লোগো লক্ষ্য করা যায়। লোগোর সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৬ জুন প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে।

ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, কুমিল্লায় শীর্ষ সন্ত্রাসী শিমুলের বাসায় যৌথবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র উদ্ধারের দৃশ্য এটি।

উক্ত সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক যুগান্তরের ওয়েবসাইটে গত ১৬ জুন “কুমিল্লায় অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ ‘সন্ত্রাসী’ শিমুল গ্রেফতার”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ১৪ জুন রাতে দিকে জেলার সদর উপজেলার কার্তিকপুর এলাকায় থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযানে মো. আবু ওবায়েদ ওরফে শিমুলকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৫ জুন এক বিজ্ঞপিতে র‍্যাব-১১ সিপিসি-২ জানায়, শিমুল দীর্ঘদিন যাবৎ কুমিল্লার আলোচিত সন্ত্রাসী চাপাপুর এলাকার রেজাউলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছিল। সন্ত্রাসী রেজাউল সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে অস্ত্র সরবরাহ করতেন। পরবর্তীতে তিনি নিজেকে মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবুর অনুসারী হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ চক্রটি অস্ত্রের মাধ্যমে রাজনৈতিক সহিংসতা, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রোববার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে শিমুলকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি ৭.৬৫ মিমি পিস্তল, দুটি পাইপগান, তিনটি ককটেল, ছয় রাউন্ড শটগানের গুলি, একটি ৭.৬৫ মিমি গুলি, একটি স্মার্টফোন ও একটি বাটন ফোন জব্দ করা হয়।

এছাড়া, অনুসন্ধানে মো. আবু ওবায়েদ ওরফে শিমুল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লার সমন্বয়ক ছিলেন- এমন দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, কুমিল্লায় অস্ত্রসহ আটক শিমুল সমন্বয়ক শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র