Home Blog Page 2

সারজিস আলমের বন্ধুর বাসা থেকে তিন বস্তা টাকা উদ্ধারের দাবিটি ভুয়া

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের বন্ধুর বাসা থেকে তিন বস্তা টাকা পাওয়া গেছে যা তার (সারজিসের) কাছে রাখা হয়েছিল ঈদের পরে এনসিপির প্রচারণার খরচের জন্য শীর্ষক দাবিতে সারজিস আলমের ছবিযুক্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে ৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত ভিডিওগুলো প্রায় ১০ লক্ষ বার দেখা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত  ভিডিওটি সারজিস আলমের বন্ধুর বাসা থেকে তিন বস্তা টাকা উদ্ধারের ঘটনার নয় বরং এটি মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে মাদক বিক্রির টাকাসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারের ঘটনার ভিডিও। এছাড়া, প্রচারিত পোস্টগুলোতে সারজিস আলমকে উপদেষ্টা বলে দাবি করা হলেও তিনি সরকারের উপদেষ্টা নন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওর কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যম কালের কণ্ঠের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৫ সালের ৫ জুন “মা/দ/ক বিক্রির চার বস্তা টাকাসহ একজনকে আ/ট/ক করলো যৌথ বাহিনী | Bangladesh |Kaler Kantho” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিও থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই ঘটনায় জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ৫ জুন ‘জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান : মাদক বিক্রির আড়াই কোটি টাকাসহ গ্রেপ্তার ১০’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “৪ জুন রাতে সেনাবাহিনী ও র‌্যাব-২ যৌথভাবে মোহাম্মদপুরের হুমায়ুন রোড এলাকায় অবস্থিত বিহারি ক্যাম্পে এই অভিযান চালিয়ে মাদক বিক্রির ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্রসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।  গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো— মো. ইসহাক আহমেদ (৩৮), মো. চুম্মন (২৫), মো. রবিউল ইসলাম (৩০), মো. রায়হান (১৮), মো. শহিদুল ইসলাম বিজয় (১৮), মো. ইমরান সাইদ (৪২), মো. রাসেল (২২), মো. ইমরান (৩২), মো. শাহাদাত (২০) এবং মো. নয়ন (২৩)।”

সেসময় দেশের অন্যান্য গণমাধ্যমও এ বিষয়ে সংবাদ (,,) প্রকাশ করে।

তবে উক্ত প্রতিবেদনগুলোর কোথাও সারজিস আলমের সাথে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের সম্পর্ক আছে বলে তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে মাদক বিক্রির অভিযোগে টাকাসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারের দৃশ্যকে সারজিস আলমের বন্ধুর বাসা থেকে তিন বস্তা টাকা উদ্ধারের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

সরকার নতুন বিনিয়োগ প্লাটফর্ম চালু করেছে দাবিতে ড. ইউনূসের বক্তব্যের বিকৃত ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, “A new project for the citizens of Bangladesh” শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

যেখানে দাবি করা হচ্ছে, সরকার একটি বিনিয়োগ প্লাটফর্ম চালু করেছে যেখানে একজন নাগরিক প্রতি সপ্তাহে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা আয় করতে পারবে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। এছাড়া ভিডিওটিতে আরো দাবি করা হয়েছে, মাত্র ৩০৫০০ টাকা বিনিয়োগ করলেই সপ্তাহে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা আয় করার নিশ্চয়তা রয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকার একটি বিনিয়োগ প্লাটফর্ম চালু করেছে এবং সেখানে ৩০৫০০ টাকা থেকে বিপুল পরিমাণ মুনাফা অর্জন করা যাবে শীর্ষক দাবিটি ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে, কাতার-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরাতে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিওকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি থেকে প্রাপ্ত স্থিরচিত্র রিভার্স সার্চের মাধ্যমে আল জাজিরার ইউটিউব (ইংরেজি) চ্যানেলে চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল “Bangladesh’s future: Change or Elite reshuffle? Muhammad Yunus answers” শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এরূপ বিনিয়োগ উদ্যোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।

Comparison: Rumor Scanner.

২৮ মিনিট ১৫ সেকেন্ড সময়ের উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর ভিজুয়াল সাদৃশ্যতা থাকলেও অডিওর (ভয়েস) সঙ্গে অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। 

এছাড়া, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কন্ঠস্বর, ঠোঁটের অস্বাভাবিক নড়াচড়া এবং স্বাভাবিক উপস্হাপনে কিছুটা অমিল দেখতে পাওয়া যায়, যেটা আসল সাক্ষাৎকারে পরিলক্ষিত হয়নি। 

পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে অনুসন্ধানেও সরকারের এরূপ বিনিয়োগ উদ্যোগের বিষয়ে কোনো তথ্যের সন্ধান পাওয়া যায়নি। 

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির ভয়েস এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম হাইভ মডারেশনে অডিওটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৮ শতাংশ। পাশাপাশি, ডিপফেক শনাক্তকরণ টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’-এর  একটি মডেলের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ।

Image Collage by Rumor Scanner 

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি করা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎকারের সম্পাদিত ভিডিওকে সরকার একটি বিনিয়োগ প্লাটফর্ম চালু করেছে দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

  • Al Jazeera English: YouTube Video 
  • Hive Moderation Tool 
  • DeepFake-O-Meter 
  • Rumor Scanner’s analysis 

মামলা থেকে শেখ হাসিনাকে অব্যাহতির বানোয়াট তথ্য, প্রচারিত ছবিটি রুয়ান্ডা ও ইউএইর সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের

0

সম্প্রতি ‘ব্রেকিং নিউজ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আন্তবর্তীন কালিন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডা: মোহাম্মদ ইউনুসের দায়ের করা পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থ লুটপাটের মামলা থেকে অব্যাহিত পাওয়া রাশিয়া, নেদারল্যান্ডস, লন্ডন, মালেশিয়া, সুইজারল্যান্ড আদালতের মুল কপিটি হাতে পেলাম’ ক্যাপশনে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থ লুটপাটের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কিংবা বাংলাদেশের বাহিরে কোনো মামলা দায়ের হয়নি। গত বছরের ১৭ আগস্ট গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামক একটি ওয়েবসাইটে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে শেখ হাসিনা ও তাঁর ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকসহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী রিম আল হাশিমি এবং রুয়ান্ডার পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী ভিনসেন্ট বিরুতার সাক্ষাতের ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রুয়ান্ডার পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এক্স হ্যান্ডেলে ২০২০ সালের ০৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

পোস্টটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, আফ্রিকান ইউনিয়ন এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলে রুয়ান্ডা প্রজাতন্ত্র এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে সহযোগিতার উদ্দেশ্যে যৌথ কমিটি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য রুয়ান্ডার পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী বিরুতা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রীম আল হাশেমীর সাথে দেখা করেন। ছবিটি উক্ত ঘটনার চিত্রের।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৭ আগস্ট গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করেছেন। তবে এই প্রতিবেদনকে ‘উসকানিমূলক’ দাবি করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে ঢাকাস্থ রাশিয়ান দূতাবাস ও প্রকল্পের কাজ করা রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি রোসাটম। ঐ বছরের ৩ সেপ্টেম্বর এই অভিযোগ তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএমের চেয়ারম্যান ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ববি হাজ্জাজ। অভিযোগ ওঠা পাঁচ বিলিয়ন ডলার অর্থ আত্মসাৎ প্রতিরোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ১৫ ডিসেম্বর আলোচিত অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

উল্লেখ্য, Tamanna Akhter Yesman নামে পরিচালিত এই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ভুয়া। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমিরর ছবি ব্যবহার করে এই ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে রাজনৈতিক প্রভাব তৈরির চেষ্টা নিয়ে গত ১৯ জুন বিস্তারিত ফ্যাক্টস্টোরি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, শেখ হাসিনাসহ টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে করা অর্থ লুটপাটের মামলা থেকে বিভিন্ন দেশের আদালত থেকে অব্যাহতি পাওয়ার নথির মূল কপি হাতে পাওয়ার ছবি দাবিতে রুয়ান্ডার পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী বিরুতা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রীম আল হাশিমির সাক্ষাতের ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

‘দেশটা আপনার বাপের সম্পত্তি না’ শিরোনামে র‍্যাব সদস্যের বক্তব্য দাবিতে এআই নির্মিত ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, “দেশটা আপনার বাপের সম্পত্তি না, এইটা আমাদের সবার। লুটপাট বন্ধ করেন ভাই, দিন শেষ হইছে। চেয়ারটা সাময়িক ভাই, কিন্তু বদনামটা চিরস্থায়ী। কিছু তো লজ্জা করেন!” শিরোনামে র‍্যাব সদস্যের বক্তব্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

এরূপ দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘দেশটা আপনার বাপের সম্পত্তি না, এইটা আমাদের সবার’ শিরোনামে র‍্যাব সদস্যের বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিও প্রতিবেদনটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত এই ভিডিওর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও রিউমর স্ক্যানার টিমের বিশ্লেষণে ভিডিওতে এআই-জনিত অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে। যেমন- র‍্যাব সদস্যের পেছনের মানুষগুলোর অস্বাভাবিক নড়াচড়া।

পাশাপশি ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ গুগলের একটি উন্নত এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের অনুরূপ বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। এই ভিডিওটির দৈর্ঘ্যও ৮ সেকেন্ড। 

Screenshot from Facebook by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে, বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতে ভিডিওটি এআই (AI) কন্টেন্ট ডিটেকশন টুল ‘Cantilux’ দিয়ে যাচাই করলে তা এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯৩ শতাংশ পর্যন্ত বলে জানা যায়। 

Screenshot From Cantilux by Rumor Scanner 

সুতরাং, ‘দেশটা আপনার বাপের সম্পত্তি না, এইটা আমাদের সবার’ শিরোনামে র‍্যাব সদস্যের বক্তব্য দাবিতে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে বাস্তব দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Google Tool: Veo 
  • AI Content Detection Tool: Cantilux 
  • Rumor Scanner’s Analysis 

আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমানের বক্তব্যকে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দাাবিতে প্রচার 

0

সম্প্রতি, ‘যাদের নির্বাচিত হওয়ার ফিটনেস নেই, তারাই পিআর পদ্ধতি চায়’ শীর্ষক মন্তব্যটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান করেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘যাদের নির্বাচিত হওয়ার ফিটনেস নেই, তারাই পিআর পদ্ধতি চায়’ শীর্ষক মন্তব্যটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নয় বরং, সম্প্রতি একটি টকশোতে এমন মন্তব্য করেছেন আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমান। 

অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গত ২৯ জুন  কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে “যাদের নির্বাচিত হওয়ার ফিটনেস নেই, তারাই পিআর পদ্ধতি চায় : তারেক রহমান”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সম্প্রতি একটি টক শোতে অংশ নিয়ে আমজনতার দলের সদস্যসচিব তারেক রহমান বলেন, যারা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় তাদের দেশের কোনো এলাকায় নির্বাচিত হওয়ার ফিটনেস নেই।

তারেক রহমান বলেন, ‘ভোটে নির্বাচিত হওয়ার ফিটনেস না থাকায় তারা সারা দেশের ভোটকে একত্রিত করে সংসদে যেতে চান। তারা সমন্বিত গড়কে সামনে আনতে চান।’

তিনি বলেন, ‘পিআর পদ্ধিতিতে নির্বাচন হলে সবচেয়ে লাভবান হবে আওয়ামী লীগ। দলটি যদি ২০ শতাংশ ভোটও পায় তাহলে ৬০ জন এমপি তাদের ভাগে পড়বে। কিন্তু পিআর পদ্ধতি যদি না হয় তাহলে তারা হয়তো একজন এমপিও নির্বাচিত করতে পারবেন না।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবে না। প্রতিনিধি নির্বাচন করবে দলের হাই কমান্ড। এতে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে অনেকের সংসদে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। এমপি পদ বিক্রি করে দলের সভাপতি-সম্পাদক রাতারাতি অঢেল সম্পদের মালিক বনে যাবেন।’ 

তারেক রহমান বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে একজন খারাপ প্রার্থীকে বয়কট করার সুযোগ জনগণের থাকবে না। এভাবে উল্টো অযোগ্যদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হবে।’ 

উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে গত ২৮ জুন ফেস দ্যা পিপল নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত একটি লাইভ টকশো খুঁজে পাওয়া যায়। ০১ ঘন্টা ০৯ মিনিটের উক্ত টকশোর প্রথম তিন মিনিটে তারেক রহমানকে উক্ত মন্তব্যটি করতে শোনা যায়। 

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এমন কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, প্রচারিত মন্তব্যটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নয়। 

উল্লেখ্য, ১ জুলাই বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অনলাইনে যুক্ত হয়ে দেওয়া বক্তব্যে বলেছেন,  ‘কোনো কোনো দল সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনী ব্যবস্থার দাবি তুলেছেন। বিশ্বের কোনো কোনো দেশে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনী বিধান রয়েছে। তবে বাংলাদেশের বিদ্যমান বাস্তবতায়, ভৌগোলিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই মুহূর্তে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা কতটুকু উপযোগী, বা উপযোগী কিনা ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ রাখব।’ তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, নিত্যনতুন ইস্যু যদি আমরা সামনে নিয়ে আসতে থাকি, এর সুযোগে ষড়যন্ত্রকারীরা আবারও মাথাচাড়া দেওয়ার সুযোগ পাবে।’

সুতরাং, আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমানের ‘যাদের নির্বাচিত হওয়ার ফিটনেস নেই, তারাই পিআর পদ্ধতি চায়’ শীর্ষক মন্তব্যকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

ধর্ষণের পর নারীকে হত্যা করে জঙ্গলে ফেলে রাখার ঘটনা দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাজানো

সম্প্রতি “বাংলাদেশে আর কত সংখ্যা ধর্ষণ হলে জামাত বিএনপি শান্ত হবে?? এই মেয়ে কে ধর্ষণ করার পর হত্যা করে ঝোপ জঙ্গেলের জলে পেলে চলে গেছে। এই ভাবে আর কত নারী ধর্ষণে পর হত্যা হবে??…” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ধর্ষণের পর হত্যা করে নারীকে জঙ্গলে ফেলে রেখে যাওয়ার দৃশ্যের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সত্য কোনো ঘটনার নয় বরং, স্ক্রিপ্টেড বা অভিনীত ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘kallo_tejyain’ নামক ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২০২৫ সালের ১০ জুন “Kallo Nali mein Nadi video” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত রিল ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে৷ 

Video Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও প্রচারকারী পেজটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, এটি একটি কনটেন্ট ক্রিয়েশন এ্যাকাউন্ট। তারা বিভিন্ন ধরণের বিনোদনমূলক ভিডিও (,,) বানিয়ে থাকেন। আলোচিত ভিডিওটিও রিল ভিডিওর জন্য ধারণকৃত অভিনয়ের অংশ।

সুতরাং, ধর্ষণের পর হত্যা করে নারীকে জঙ্গলে ফেলে রেখে যাওয়ার বাস্তব ঘটনা দাবিতে একটি স্ক্রিপ্টেড বা সাজানো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

বান্দরবানের আলীকদমের পাহাড়ি সড়কের ছবি দাবিতে ভারতের ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার একটি পাহাড়ি সড়কের ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়,  প্রচারিত পাহাড়ি সড়কের ছবিটি বান্দরবানের আলীকদমের কোনো সড়কের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জেলা দার্জিলিংয়ের কার্শিয়াং শহরের রোহিনী রোডের ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Prithvi Travel -Siliguri নামের একটি ভারতীয় ট্র্যাভেল এজেন্সির ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ৭ আগস্ট প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

পোস্টটি পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের গন্তব্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জেলা দার্জিলিংয়ের কার্শিয়াং শহর  নিয়ে। পোস্টটিতে ‍উক্ত শহরের বেশ কয়েকটি ছবিও প্রচার করা হয়েছে। যেখানে কার্শিয়াংয়ের অন্যান্য ছবির পাশাপাশি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটিও দেখতে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে TravelGangtok নামের আরেকটি ট্র্যাভেল এজেন্সির ফেসবুকে পেজে প্রচারিত একই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ছবিটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, ছবির সড়কটির নাম রোহিনী রোড। এটি ভারতের দার্জিলিংয়ের কার্শিয়াং শহরে অবস্থিত। 

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ড্রোন দিয়ে ধারণ করা রোহিনী রোডের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যার সাথে আলোচিত ছবির সড়কের হুবহু মিল পাওয়া যায়। এছাড়াও একাধিক প্ল্যাটফর্মে উক্ত সড়কের ভিন্ন ভিন্ন পজিশন থেকে ধারণ করা কয়েকটি ছবি দেখতে পাওয়া যায়। যেখানে সড়কটিকে রোহিনী রোড বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জেলা দার্জিলিংয়ের কার্শিয়াং শহরের রোহিনী রোডের ছবিকে বাংলাদেশের বান্দরবানের আলীকদমের পাহাড়ি সড়কের ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Prithvi Travel -Siliguri Facebook Page Post
  • TravelGangtok Facebook Page Post
  • Sikkim Diaries Facebook Page Post
  • Rumor Scanner’s Analysis

আবু নছর আশরাফীর ওপর জামায়াত-শিবির হামলা করেছে দাবিতে ডেইলি ক্যাম্পাসের সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, “চাঁদপুর ১ (কচুয়া) আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী – আবু নছর আশরাফীর উপর, জামায়াত-শিবিরের হামলা…” শীর্ষক শিরোনামে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি ক্যাম্পাসের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

নছর

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সংসদ সদস্য (এমপি) প্রার্থী মুহাদ্দিস আবু নছর আশরাফীর ওপর জামায়াত-শিবির হামলা করেছে শীর্ষক দাবিতে ডেইলি ক্যাম্পাস কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ডেইলি ক্যাম্পাসের একটি ফটোকার্ড নকল করে এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে ডেইলি ক্যাম্পাসের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ১১ জুন, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।

ডেইলি ক্যাম্পাসের লোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবিসম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, ডেইলি ক্যাম্পাসের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ১০ জুন গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে “জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থীর ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা, আহত ২” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। ডেইলি ক্যাম্পাসের মূল ফটোকার্ডটিতে ‘জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থীর ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা, আহত ২’ শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে ‘চাঁদপুর ১ (কচুয়া) আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী – আবু নছর আশরাফীর উপর, জামায়াত-শিবিরের হামলা…’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।

Photocard Comparison By Rumor Scanner

অর্থাৎ, ডেইলি ক্যাম্পাসের এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

মূল ফটোকার্ড সম্বলিত ডেইলি ক্যাম্পাসের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “গত ১১ জুন চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সংসদ সদস্য (এমপি) প্রার্থী মুহাদ্দিস আবু নছর আশরাফীর ওপর হামলা হয়। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। কচুয়া উপজেলার ১০নং গোহাট উত্তর ইউনিয়নে নাউলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্থানীয়দের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গেলে স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়। এ সময় সন্ত্রাসীদের হাত থেকে আবু নছর আশরাফীকে বাঁচাতে গিয়ে জামায়াতের দুজন কর্মী আহত হয়।  তাদের তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়  হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হামলায় জড়িতদের মধ্যে রয়েছেন—মো. আরিফ হোসেন, রহিম, স্বপন, শাহপরান ও মোহাম্মদ মুরাদ। এদের সবাই স্থানীয় বিএনপি নেতা ও ওয়ার্ড মেম্বার পদপ্রার্থী সুমনের অনুসারী বলে জানা যায়।” 

পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, “চাঁদপুর ১ (কচুয়া) আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী – আবু নছর আশরাফীর উপর, জামায়াত-শিবিরের হামলা…” শিরোনামে ডেইলি ক্যাম্পাসের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

ভিডিওটি সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপির বাসা থেকে অস্ত্র উদ্ধার দাবির ঘটনা, জামায়াত আমীরের নয়

সম্প্রতি, সাতক্ষীরায় জামায়াত আমিরের বাসা থেকে স্নাইপার রাইফেল উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী – এই দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে এক্স -এ প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি সাতক্ষীরায় জামায়াত আমীরের বাসা থেকে অস্ত্র উদ্ধারের কোনো ঘটনার নয়। বরং, এটি গত ১৫ জুন সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য রিফাত আমিনের বাসায় সেনাবাহিনীর অভিযানের ঘটনা। সেনাবাহিনীর দাবি অনুযায়ী, এই অভিযানে রিফাত আমিনের ছোট ছেলে সাফায়েত সরোওয়ার রুমনকে অস্ত্র ও মাদকসহ আটক করা হয়।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটিতে থাকা নাগরিক টিভির লোগোর সূত্র ধরে নাগরিক টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৫ জুন প্রচারিত ‘সাতক্ষীরায় সাবেক আ: লীগের এমপির ছেলে মা/দ/ক ও অ/স্ত্র/স/হ আটক | Nagorik TV’ শীর্ষক ক্যাপশনের একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির শুরুর অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, এটি সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য রিফাত আমিনের বাসায় সেনাবাহিনীর অভিযানের ঘটনা। এই অভিযানে রিফাত আমিনের ছোট ছেলে সাফায়েত সরোওয়ার রুমনকে অস্ত্র ও মাদকসহ আটক করা হয়।

উক্ত ঘটনার ডিবিসি নিউজ, যমুনা টিভি, একাত্তর টিভিতে প্রচারিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

যুগান্তরের ওয়েবসাইটে গত ১৬ জুন এই বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘সাতক্ষীরা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভানেত্রী ও সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি রিফাত আমিনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। এ সময় তার ছোট ছেলে সাফায়েত সরোওয়ার রুমনকে আটক করা হয়। রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুর এলাকায় অবস্থিত রিফাত আমিনের বাড়িতে এ অভিযান চালানো হয়।’

সুতরাং, সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্যের বাসায় সেনাবাহিনীর অভিযানের ঘটনায় তাঁর ছেলেকে অস্ত্র ও মাদকসহ আটক করার দাবির একটি ভিডিও ক্লিপ সাতক্ষীরায় জামায়াত আমীররের বাসা থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ফারজানা সিথির গোসলের দৃশ্য দাবিতে সম্পাদিত ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিচিত মুখ ফারজানা সিথির ভিডিও দাবিতে সম্প্রতি এক নারীর গোসলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, ‘সবকিছু ভুলে গেলেও জামাতের পেইড এজেন্ট এই নর্তকীর কথা ভূলে যাবেন না…..।’ (বানান অপরিবর্তিত)

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ফারজানা সিথির নয় বরং, ইন্টারনেট থেকে এক ভারতীয় নারীর ভিডিও সংগ্রহ করে তাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে ফারজানা সিথির মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘cine_biju’ নামক একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ৬ মে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। মুখমণ্ডল ব্যতীত উক্ত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তির পোশাক, অঙ্গভঙ্গি ও ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। অ্যাকাউন্টটির লোকেশন হিসেবে ভারত উল্লেখ রয়েছে। 

ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে এটি নিশ্চিত হওয়া যায় যে, এই ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভিডিওতে থাকা নারীর মুখমণ্ডলের স্থলে ফারজানা সিথির মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশন বর্ণনায় উল্লেখ পাওয়া যায়, ভিডিওর মূল ব্যক্তি স্বর্ণালী রায় (Swarnali Roy) এবং চিত্রগ্রহণের (ভিডিও ধারণ) দায়িত্বে ছিলেন Bi Ju( SK Entertainment)। অ্যাকাউন্টটি থেকে একই মেয়ের প্রচারিত আরও একটি ছবি ও  ভিডিও দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও, এই ছবি ও ভিডিওতে ট্যাগ করা অ্যাকাউন্টের মধ্যে ‘royswarnali007’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

royswarnali007’ নামে অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে প্রতিনিয়ত এমন ভিডিও প্রচার করা হয়ে থাকে (, , )। এই অ্যাকাউন্টটিরও লোকেশন হিসেবে ভারত উল্লেখ রয়েছে। 

সুতরাং, ইন্টারনেট থেকে ভারতীয় নারীর ভিডিও সংগ্রহ করে তাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে ফারজানা সিথির মুখমণ্ডল বসিয়ে জামায়াতের পেইড এজেন্ট দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র