সম্প্রতি ‘লাভ-জি*হাদের ফাঁদে পড়ে অবশেষে জি*হাদী কর্তৃক প্রতারিত হয়ে নিজের জীবন দিয়ে ভূলের প্রায়াচিত্ত করে গেলো রংপুরের পায়রাবন্দ সরকারী বেগম রোকেয়া স্মৃতি ডিগ্রী কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক তারক চন্দ্র বর্মনের বড় মেয়ে “জয়ত্রী বর্মন কলি”।‘ শীর্ষক শিরোনামে কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, লাভ জিহাদের ফাঁদে পড়ে জয়ত্রী বর্মন কলি নামের এক হিন্দু ধর্মাবলম্বী তরুণীর আত্মহত্যার তথ্যটি সঠিক নয় বরং জয়ত্রী বর্মন কলি পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়াতে বাসা থেকে শাসন করায় আত্মহত্যা করেছে বলে তার পারিবারিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম ফেসবুকে পাওয়া তথ্যের সূত্র ধরে জয়ত্রী বর্মন কলির বাবা পায়রাবন্দ সরকারি বেগম রোকেয়া স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক তারক চন্দ্র বর্মনের সাথে যোগাযোগ করে।
তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, ওর (জয়ত্রীর) পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হওয়াতে বাসা থেকে শাসন করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে টেবিলে একটা চিঠি লিখে সে আত্মহত্যা করে। তবে, আত্মহত্যার পূর্বে তার চলাফেরা এবং আচার–আচরণ স্বাভাবিক ছিলো বলেও জানান তিনি।
এছাড়া, মুসলিম ছেলের সঙ্গে জয়ত্রীর কোনো সম্পর্ক ছিলো কি না, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এ সম্পর্কে আমরা পরিবারের কেউ অবগত ছিলাম না পূর্বে। তবে, জয়ত্রী আত্মহত্যা করেছে এবং এটি তার রেজাল্ট সংক্রান্ত ব্যাপারে, এতটুকুই বলার ছিলো আমার।”
পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে জয়ত্রী কলি বর্মনের মৃত্যু সংক্রান্ত কোনো সংবাদ দেশীয় কোনো সংবাদমাধ্যমে খুঁজে না পাওয়া যায়নি।
কিন্তু ইতোপূর্বে এই ঘটনাটিকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে মুসলমানরা জয়ত্রী বর্মন কলিকে নির্যাতন করে হত্যা করে হত্যা করেছে দাবিতে প্রচার করা হয়।
তবে এ নিয়ে সে সময় ঘটনাটিকে মিথ্যা হিসেবে উল্লেখ করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে।
মূলত, চলতি বছরের ০১ মার্চ তারিখে রংপুরের পায়রাবন্দ সরকারি বেগম রোকেয়া স্মৃতি ডিগ্রী কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক তারক চন্দ্র বর্মনের বড় মেয়ে জয়ত্রী বর্মন কলি আত্মহত্যা করে। এ ঘটনাটিকেই পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয় যে, জয়ত্রী বর্মন কলি লাভ জিহাদের ফাঁদে পড়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়াতে বাসা থেকে শাসন করায় আত্মহত্যা করে জয়ত্রী বর্মন কলি।
সুতরাং, লাভ জিহাদের ফাঁদে পড়ে জয়ত্রী বর্মন কলি নামের এক হিন্দু ধর্মাবলম্বী তরুণীর আত্মহত্যার তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Statement: তারক চন্দ্র বর্মন (জয়ত্রী বর্মন কলি’র বাবা)
- Rumor Scanner Own Analysis