সম্প্রতি,“ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন অধিক তাপমাত্রায় গাড়িতে সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত জ্বালানি তেল ভরতে নিষেধ করেছে কারণ এতে জ্বালানি ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণ হতে পারে” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুক পোস্টগুলোতে বলা হচ্ছেঃ
“ সতর্কবার্তা
ইন্ডিয়ান অয়েল একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে আগামী দিনে তাপমাত্রা বাড়তে চলেছে, তাই সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত আপনার গাড়িতে জ্বালানি ভরবেন না। এটি জ্বালানী ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। আপনার গাড়ির অর্ধেক জ্বালানী ট্যাঙ্ক পূরণ করে বাতাসের জন্য জায়গা রাখুন। সর্বোচ্চ পেট্রোল ভরার কারণে চলতি সপ্তাহে ৫টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
দিনে একবার পেট্রোল ট্যাঙ্ক খুলুন এবং ভিতরে তৈরি গ্যাসটি বেরিয়ে আসতে দিন।
আপনার পরিবারের সদস্যদের এবং অন্য সবাইকে এই বার্তাটি পাঠান, যাতে লোকেরা এই দুর্ঘটনা এড়াতে পারে।”
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অধিক তাপমাত্রায় গাড়িতে সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত জ্বালানি ভরলে জ্বালানী ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে উল্লেখ করে কোনো বিবৃতি দেয়নি ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন বরং কোন রকম তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই উক্ত দাবিটি দীর্ঘদিন ধরে ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশনের নামে প্রচারিত হয়ে আসছে।
অনুসন্ধান
ইন্ডিয়ান ওয়েল করপোরেশন উক্ত বিষয়ে কোন বিবৃতি দিয়েছে কিনা সে ব্যাপারে বিস্তারিত অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ এর মাধ্যমে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের করা একটি টুইট বার্তা খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।
২০১৯ সালের ০৩ জুন প্রতিষ্ঠানটি এক টুইট বার্তায় জানায়, “শীত-গ্রীষ্ম নির্বিশেষে প্রস্তুতকারকের দ্বারা নির্দিষ্ট সীমা (সর্বোচ্চ) পর্যন্ত যানবাহনে জ্বালানি পূরণ করা সম্পূর্ণ নিরাপদ।”
Screenshot from Indian Oil Corporation
তাছাড়া, একই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৯ এপ্রিল ২০২২ তারিখে ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশনের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে করা একটি পোস্ট খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম টিম।
Screenshot from Indian Oil Corporation
এছাড়াও, সাম্প্রতিক সময়ে ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশনের নামে উক্ত দাবিগুলো নতুন করে প্রচারিত হলে গত ১২ এপ্রিল, ২০২৩ তারিখে তাদের ফেসবুক পেইজে আরো একটি পোস্ট করা হয়।
Screenshot from Indian Oil Corporation
অর্থাৎ, প্রায় তিন বছর আগের টুইট, ২০২২ এবং ২০২৩ সালের করা এই ফেসবুক পোস্ট প্রমাণ করে যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশনের নাম দিয়ে এই দাবিগুলো দীর্ঘদিন ধরেই ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে।
উক্ত দাবিগুলোর বিপরীতে ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন প্রতিবারই তাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছে যে, “অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচার কোম্পানীগুলো গাড়ির নিরাপত্তা অন্যান্য আনুসঙ্গিক প্রতিটি দিক বিবেচনা করেই গাড়ি ডিজাইন করেন। আর পেট্রোল/ডিজেল চালিত গাড়িতে জ্বালানির ট্যাঙ্ক তৈরির ক্ষেত্রেও এই ব্যাপারটি প্রযোজ্য। তাই, শীত-গ্রীষ্ম নির্বিশেষে সকল সময়েই গাড়ির প্রস্তুতকারকের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী জ্বালানি ট্যাঙ্কে পূর্ণ মাত্রায় তেল ভরা সম্পূর্ণ নিরাপদ।
উল্লেখ্য যে, একই দাবি পূর্বেও পাকিস্তান স্টেট অয়েল (PSO) এর নামে প্রচারিত হলে ১৯ মে ২০১৮ তারিখে পাকিস্তান স্টেট অয়েল তাদের ফেসবুক পোস্টে জানায় যে তার পূর্ণ ক্ষমতায় জ্বালানি ট্যাঙ্ক ভর্তি করা গাড়ি বা এর যাত্রীদের জন্য কোনও হুমকির কারণ নয়।
পাকিস্তান স্টেট অয়েল আরো জানায়, যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পেট্রোল স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলে উঠে তা পাকিস্তানের গ্রীষ্মকালীন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার থেকেও অনেক বেশি। তাই আপনার ফুয়েল ট্যাঙ্ককে তার পূর্ণ ক্ষমতায় পূরণ করলে তা গাড়ি কিংবা যাত্রী কারো জন্যই কোনো ধরনের হুমকির কারণ হয় না এবং গাড়ি চালানোর জন্য এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং উপকারী বলেও মনে করা হয়।
Screenshot from Pakistan State Oil
মূলত, অধিক তাপমাত্রায় গাড়িতে সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত জ্বালানী পূর্ণ করলে জ্বালানি ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণ ঘটার দাবিটি কোনো রকম তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই বহুকাল ধরে ভারত এবং পাকিস্তানের দুইটি বৃহৎ জ্বালানি কোম্পানীর নাম দিয়ে প্রচারিত হয়ে আসছে। তবে উভয় দেশের কোম্পানীগুলোই তাদের নামে প্রচারিত উক্ত দাবিগুলোকে মিথ্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
সুতরাং, অধিক তাপমাত্রায় গাড়িতে সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত জ্বালানি ট্যাঙ্ক পূর্ণ করলে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলে ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন সতর্কবার্তা দিয়েছে দাবি করে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কোয়েল মল্লিক দ্বিতীয়বার মা হতে যাচ্ছেন শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয়, বরং তার প্রথমবার মা হওয়ার পুরোনো ছবিকেই বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে কোয়েল মল্লিকের দ্বিতীয়বার মা হওয়ার ব্যাপারে মূলধারার গণমাধ্যমে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায় নি।
এছাড়াও, কোয়েলের ভেরিফাইড ইনস্টাগ্রাম একাউন্টের সাম্প্রতিক অ্যাক্টিভিটি পর্যালোচনা করেও দ্বিতীয়বার মা হওয়ার ব্যাপারে কোনো তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায় নি।
এই তথ্যের সূত্র ধরে কোয়েল মল্লিকের ভেরিফাইড ইনস্টাগ্রাম একাউন্টে ২০২০ সালের ০৩ মে প্রকাশিত একটি পোস্টে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Source: Rumor Scanner Collage
অর্থাৎ, টলিউড অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিকের বেবিবাম্পের ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, তার প্রথম সন্তান জন্মদানের সময়ের ছবি।
অনলাইন পোর্টালগুলোতে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রতিবেদনগুলোতে কোয়েল মল্লিক দ্বিতীয়বার মা হতে যাচ্ছেন দাবি করা হলেও বিস্তারিত প্রতিবেদনে এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রের বরাত দেওয়া হয় নি।
উপরন্তু, বিস্তারিত প্রতিবেদনগুলোতে শুধুমাত্র কোয়েল মল্লিকের অনুরাগী মহলের কল্পনার ব্যাপারে বলা হয়েছে। এমনকি প্রতিবেদনগুলোতে এ-ও বলা হয়েছে যে, কোয়েল মল্লিকের প্রথম সন্তান জন্মদানের সময়ের ছবিগুলোই পুনরায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে এই জল্পনার জন্ম দিয়েছে।
Source: Rumor Scanner Collage
মূলত, প্রথম সন্তান জন্মদানের পূর্বে ২০২০ সালে টলিউড অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিক বেবিবাম্পের কিছু ফটোশ্যুট করেন। তার সেই পুরোনো ছবিকে ব্যবহার করে কোয়েল মল্লিক দ্বিতীয়বার যমজ সন্তানের জন্ম দিতে যাচ্ছেন দাবিতে সম্প্রতি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ০৫ মে দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন কোয়েল মল্লিক।
সুতরাং, পুরোনো ছবি ব্যবহার করে কোয়েল মল্লিক দ্বিতীয়বার মা হতে যাচ্ছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত ছবিটি গত ফেব্রুয়ারি মাসের নয় বরং ২০১৮ সালে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের হামলার সময়কার দৃশ্যকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদমাধ্যম Middle East Eye এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ১৩ নভেম্বর “Gaza: Six killed as Israel and Hamas exchange fire” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Middle East Eye
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর ফিলিস্তিনের গাজা শহরের আল-আকসা টিভি অফিসে হওয়া ইসরাইলি বিমান হামলার সময়ের ছবি।
পাশাপাশি, জেরুজালেম ভিত্তিক গণমাধ্যম The Times of Israel এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর “Bombed out and broke, Hamas-asffiliated Al-Aqsa TV to go off air” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, ছবিটি ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর ইসরাইলি বিমান হামলায় গাজা শহরের হামাস পরিচালিত টেলিভিশন স্টেশন আল-আকসা টিভি ভবনের।
Screenshot: The Times of Israel
অর্থাৎ, ফেব্রুয়ারি মাসে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে সাড়ে চার বছরের পূর্বের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে ছবিটি মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যম Middle East Eye থেকে সংগৃহীত বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবং একটিতে কিছুই লিখা হয়নি। মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যম Middle East Eye এর প্রতিবেদন থেকে জানা যায় এটি ২০১৮ সালের ছবি। কিন্তু, সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিটি ব্যবহার করায় স্বাভাবিকভাবেই ছবিটি ফিলিস্তিনে ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলার ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া অমূলক নয়।
মূলত, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একটি ছবি প্রচারের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি সে সময়ের নয়। এটি ২০১৮ সালের ১৩ নভেম্বর ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের হামলায় সময়কার ছবি। গণমাধ্যমের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য না দেওয়ায় ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে।
সুতরাং, ফিলিস্তিনের গাজায় সাম্প্রতিক সময়ে ইসরাযইলের হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সাড়ে চার বছর পূর্বের ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সুইডিশ ফুটবলার জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের উক্তি সম্বলিত একটি ডিজিটাল ব্যানার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে তিনি বিশ্বকাপে দুর্নীতি বিষয়ে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন।
যা দাবি করা হচ্ছে
ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে, জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ বলেছেন, “২০২২ সালে এসেও যদি বিশ্বকাপে দুর্নীতি হয়, তবে আগের আমলের জুলে রীমে ট্রফিতে কি হতো? তখন বোধহয়, ট্রফিটাই কিনতে পাওয়া যেতো!”
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ বিশ্বকাপে দুর্নীতি বিষয়ে সম্প্রতি কোনো মন্তব্য করেননি বরং জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের ছবি ব্যবহার করে ডিজিটাল ব্যানারের মাধ্যমে তার নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের সাম্প্রতিক অ্যাক্টিভিটি পর্যালোচনা করে তার এরূপ কোনো বক্তব্য খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।
পাশাপাশি, জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের ভেরিফাইড ইনস্টাগ্রাম ও টুইটার অ্যাকাউন্টের সাম্প্রতিক অ্যাক্টিভিটিও পর্যালোচনা করা হয়। সেখানেও উল্লিখিত বক্তব্যের সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ডিজিটাল ব্যানারগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের নামসম্বলিত ডিজিটাল ব্যানারগুলো ক্রীড়াবিষয়ক বাংলাদেশী সংবাদমাধ্যম প্যাভিলিয়নের ব্যানারের আদলে তৈরি করা। কিন্তু প্যাভিলিয়নের ফেসবুক পেজে অনুসন্ধান চালিয়ে উক্ত ব্যানারটি খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।
তবে, প্যাভিলিয়নের ব্যানারের সাথে আলোচ্য ব্যানারের তুলনামূলক পর্যালোচনা করে ব্যবহৃত ফন্টের ভিন্নতা খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার।
Screenshot Collage: Rumor Scanner
অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে, উক্ত ব্যানারটি প্যাভিলিয়নের তৈরি নয় বলে নিশ্চিত করেছেন প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের উক্তি সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানারটি ভুয়া।
মূলত, সম্প্রতি ফেসবুকে সুইডিশ ফুটবলার জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের উক্তি সম্বলিত একটি ডিজিটাল ব্যানার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দাবি করা হচ্ছে তিনি বিশ্বকাপে দুর্নীতি বিষয়ে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন। উক্ত দাবিতে ক্রীড়াবিষয়ক ওয়েবসাইট প্যাভিলিয়নের একটি ব্যানারও ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্যাভিলিয়ন এমন কোনো ব্যানার তৈরি করেনি। তাছাড়া, নির্ভরযোগ্য কোনও সূত্র থেকেই জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের আলোচ্য উক্তির সত্যতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, পূর্বেও জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের নামে প্রচারিত মিথ্যা উক্তির ব্যাপারে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে।
সুতরাং, সুইডিশ ফুটবলার জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ বিশ্বকাপে দুর্নীতি বিষয়ে মন্তব্য করেছেন শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে; যা সম্পূর্ন মিথ্যা।
সম্প্রতি ‘২ মাসের বাচ্চা নিয়ে মায়ের শপিং। প্রচন্ড গরমে মায়ের কোলেই বাচ্চার মৃত্যু। শপিংয়ের মনোযোগে বুঝতেই পারে নি “মা”।‘ শীর্ষক দাবিতে ভিন্ন ভিন্ন স্থানের নাম এবং ভিন্ন ভিন্ন নারী ও শিশুর ছবি উল্লেখ করে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচণ্ড গরমে শপিংয়ে মায়ের কোলে দুই মাসের শিশুর মৃত্যুর দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট তথ্যসূত্র ছাড়াই সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে ভিন্ন ভিন্ন স্থানের নাম এবং ভিন্ন ভিন্ন নারী ও শিশুর ছবি ব্যবহার করে উক্ত তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে।
তথ্যটির সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম প্রথমে ফেসবুকে প্রচারিত দাবিটির তথ্যসূত্র জানার চেষ্টা করে।
এক্ষেত্রে পোস্টগুলো বিশ্লেষণে দেখা যায়, পোস্টগুলোতে কোনো তথ্যসূত্রের উল্লেখ নেই। অর্থাৎ ঘটনাটি কোন মার্কেটে, কখন ঘটেছে, ঘটনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পরিচয় এমন কোনো তথ্য উক্ত পোস্টগুলো থেকে পাওয়া যায়নি। বিপরীতে একই দাবিতে রিউমর স্ক্যানার টিম অজ্ঞাত স্থান সহ দুইটি আলাদা আলাদা স্থানের নামের উল্লেখ পায়।
এর মধ্যে কোনো কোনো পোস্টে দাবি করা হয়, এই ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে, আবার কেউ কেউ বলছেন এই ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার চান্দিনায়। আবার কিছু পোস্টে এই ঘটনাটির কোনো স্থান উল্লেখ না করে কেবল তথ্যটিই প্রচার করা হচ্ছে।
Image Collage: Rumor Scanner
দাবিটি নিয়ে আরও অধিকতর যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানেও কোনো গণমাধ্যমে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে উক্ত দাবির বিপরীতে ফেসবুকে কুমিল্লার স্থানীয় সাংবাদিক ও বাসিন্দাদের পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
এ প্রসঙ্গে চান্দিনা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, জাতীয় দৈনিক যুগান্তরের চান্দিনা প্রতিনিধি মো. আব্দুল বাতেন লিখেন, ‘ফেসবুকে একটি মিথ্যা সংবাদের শিরোনাম পোস্ট করেছে। চান্দিনায় এ বছর এধরনের কোন ঘটনাই ঘটেনি, তবে গেল বছর রমজান মাসে ঘটেছিল এই ঘটনাটি, চান্দিনায় ২ মাসের বাচ্চা নিয়ে শপিংয়ে আসা মায়ের কোলে শিশুর মৃত্যু! তীব্র গরমে শিশুটির মৃত্যু ঘটেছে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসক।
Screenshot: Abdul Baten Facebook Post
বাচ্চা নিয়ে শপিং। মায়ের কোলে বাচ্চা মরে আছে, নিজের কোলের শিশু মৃত্যুর অনেক পরে বুঝতে পেরেছে মা!! ) পোস্ট করে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। এ নিয়ে নেটিজেনরা অনেক মন্তব্য করেছেন। যে সংবাদ সম্পূর্ণ মিথ্যা যা এই বছর ঘটেনি পূর্বে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি পুনঃ প্রকাশ করেছেন কিছু কপি পেস্ট সাংবাদিকরা…।’
মুনীর সাঈদ নামে কুমিল্লার চান্দিনার স্থানীয় এক বাসিন্দা লিখেন, ‘চান্দিনা নিয়ে মহাগুজব! আজকে সারাদিন দেখলাম, চান্দিনায় নাকি কোন মহিলা শপিং করা অবস্থায় তার কোলে থাকা ২ মাসের বাচ্চা মারা গেছে! সে মহিলা টেরই পায়নি।
ভাইরে ভাই, আমি নিজেই কুমিল্লা জেলার চান্দিনার ছেলে। সারাদেশের চমকপ্রদ সংবাদগুলো সবার আগে পোস্ট করতে চেষ্টা করি। অথচ আমার এলাকায় এমন একটা ঘটনা ঘটে গেলো, অথচ আমিই জানলাম না, বিষয়টা কেমন হয়ে গেল না? হতে পারে, এই খবরটা আমার দৃষ্টিতে আসে নি। আমার ছোটভাই এখনো চান্দিনাতেই কর্মরত। তার নজরেও এমন খবর পড়েনি! এমনকি স্থানীয় সাংবাদিক ও প্রশাসনের কাছেও এমন তথ্য নেই। তাহলে ফেইসবুকের লাইক কমেন্ট ব্যবসায়ীরা এই তথ্য কোথায় পেলো? তবে এক সাংবাদিক লিখেছেন, এমন ঘটনা গত বছর ঘটে থাকতে পারে। কিন্তু এ বছর এ জাতীয় কোনো ঘটনাই ঘটেনি!…’
Screenshot: Munir Sayed Facebook Post
পাশাপাশি রিউমর স্ক্যানার টিমও তথ্যটির সত্যতা যাচাইয়ে বেসরকারি টিভি চ্যানেল এখন টিভির সিনিয়র রিপোর্টার ও কুমিল্লা ব্যুরো চীফ সাইফুল্লাহ খালিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি কুমিল্লা চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বরাতে জানান, ঘটনাটি মিথ্যা। এছাড়া চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাহাবুদ্দীন খাঁনের সঙ্গেও যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনিও চান্দিনায় এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া কোনো কোনো পোস্টে চান্দিনার ঘটনা দাবিতে প্রচারিত উক্ত তথ্যটির তথ্যসূত্র হিসেবে কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টারকে (টাওয়ার হাসপাতাল) উদ্ধৃত করা হয়।
Screenshot: Chandinar Somoy 24
পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানার টিম থেকে কুমিল্লার টাওয়ার হাসপাতালেও যোগাযোগ করা হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেখানে গতকাল এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করে।
অপরদিকে অনুসন্ধানে যমুনা ফিউচার পার্কেও এমন কোনো ঘটনা ঘটার বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। রিউমর স্ক্যানারের সার্বিক বিশ্লেষণে স্বাভাবিকভাবেই প্রতীয়মান হয় যে, রাজধানী ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কের মতো জনবহুল জায়গায় এমন কোনো ঘটনা ঘটলে সেটার সংবাদ গণমাধ্যম সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিস্তারিত তথ্যসহ পাওয়া যেত।
উক্ত ঘটনার দাবিতে প্রচারিত ছবির সত্যতা যাচাই
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ঘটনার ছবি দাবিতে অন্তত চারটি ভিন্ন ভিন্ন ছবি প্রচার করা হচ্ছে৷
Image Collage: Rumor Scanner
রিউমর স্ক্যানার টিম ছবিগুলোর সত্যতা যাচাই করে৷
Image Comparison: Rumor Scanner
এর মধ্যে অন্তত দুইটি ছবির ক্ষেত্রে দেখা যায়, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবি দুইটি পুরানো ও ভিন্ন ঘটনার। ছবিটির মূল উৎস দেখুন এখানে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, একইরকম একটি ঘটনা পূর্বেও ২০২০ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক আকারে প্রচার হয়েছিল। তবে তখনকার পোস্টগুলোতে বাচ্চার বয়স দেখানো হয়েছিল ৬ মাস এবং ঘটনাস্থল উল্লেখ করা হয়েছিল নারায়নগঞ্জের আড়াইহাজার। সেসময়কার এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
Image Collage: Rumor Scanner
তবে এসব ফেসবুক পোস্ট ব্যতীত রিউমর স্ক্যানারের প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে সেসময় কোনো গণমাধ্যম সূত্রে নারায়ণগঞ্জে এমন কোনো ঘটনার সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকদিন ধরে দেশ জুড়ে প্রচণ্ড দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ১৯৬৫ সালের পর গতকাল শনিবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া টানা ১৪ দিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা পঞ্চগড়ে।
মূলত, পুরো দেশ জুড়ে বেশ কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যেই মানুষ ঈদের কেনাকাটা সারছেন। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে যে, ‘২ মাসের বাচ্চা নিয়ে মায়ের শপিং। প্রচণ্ড গরমে মায়ের কোলেই বাচ্চার মৃত্যু। শপিংয়ের মনোযোগে বুঝতেই পারে নি “মা”।’ তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যগুলোতে এই ঘটনার কোনো তথ্যসূত্র উল্লেখ করা হয়নি। পাশাপাশি ঘটনাটি বর্ণনার ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন জায়গার নাম ও ভিন্ন ভিন্ন শিশুর ছবি প্রচার করা হচ্ছে। এর মধ্যে উক্ত ঘটনাটি কুমিল্লা জেলার চান্দিনার ঘটনা হিসেবে প্রচার করা হলেও চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্থানীয় সাংবাদিক ও বাসিন্দা সূত্রে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, চান্দিনায় এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া ইতোপূর্বে ২০২০ সালেও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানাকে উদ্ধৃত করে প্রায় কাছাকাছি এমন তথ্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। তবে ঐ ঘটনারও কোনো বিশ্বস্ত সূত্রে সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, প্রচণ্ড গরমে শপিংয়ে মায়ের কোলে দুই মাসের শিশুর মৃত্যু ও মায়ের বুঝতে না পারার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন গত ১৫ এপ্রিল তাদের ফেসবুকে পেজ থেকে এবং এক টাকার আহার নামক তাদেরই একটি গ্রুপে কিছু ছবি সমেত একটি পোস্ট করা হয়।
পোস্টের দাবি
বিদ্যানন্দের আলোচিত পোস্টে ছয়টি অলংকারের একটি কোলাজ ছবি রয়েছে। তিনটি সারিতে সাজানো ছবিগুলোর প্রতি সারিতে দুইটি করে অলংকারের ছবি স্থান পেয়েছে।
অলংকারগুলোর বিষয়ে আলোচিত পোস্টের ক্যাপশনে বিদ্যানন্দ দাবি করেছে, “পোড়া কাপড়ের তৈরী সজ্জার অলংকার! আবর্জনা থেকে সম্পদ; এটাই প্রতিষ্ঠা করতে চাই। কয়েক ঘন্টা আগেই এসব দামী কাপড় ছিলো, আগুন শেষে ছাইয়ে চাপা পোড়া কাপড়। আর সেখান থেকে কাপড়ের অংশ উদ্ধার করে তৈরী করা হচ্ছে সুন্দর সব অলংকার।”
Screenshot source: Facebook
উক্ত দাবিতে বিদ্যানন্দের ফেসবুক পেজের পোস্টটির স্ক্রিনশট পাওয়া গেলেও পোস্টটটি ডিলিট করে দেওয়ায় এর কোনো আর্কাইভ ভার্সন পাওয়া সম্ভব হয়নি।
Screenshot source: Facebook
তবে, এক টাকায় আহার গ্রুপে বিদ্যানন্দের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। বিদ্যানন্দের পেজ থেকে সংস্থাটির অফিশিয়াল ফেসবুক গ্রুপের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
উল্লেখ্য, গতকাল (১৫ এপ্রিল) ঢাকার নিউমার্কেট লাগোয়া নিউ সুপার মার্কেটে ভয়াবহ আগুন লাগলে সহায়তার হাত বাড়ায় (১,২,৩) বিদ্যানন্দ। তবে সেখান থেকে পোড়া কাপড় সংগ্রহ করেছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি তাদের পোস্ট থেকে।
তবে, গত ০৪ এপ্রিল ঢাকার আরেক সুপরিচিত মার্কেট বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুন লেগে প্রায় পাঁচ হাজার দোকানের সব পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় সেখান থেকে পোড়া কাপড় সংগ্রহ করে (১,২) সংস্থাটি। পরবর্তীতে উক্ত কাপড় বিক্রি এবং কিছু কাপড় থেকে নতুন জামা তৈরির দাবিও রয়েছে সংস্থাটির ফেসবুকে পেজের একাধিক পোস্টে।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন গতকাল যে পোস্টটি করেছে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে কয়েক ঘন্টা আগুনে পুড়ে যাওয়া কাপড়কে কাজে লাগিয়ে অলংকারগুলো তৈরি করা হয়েছে। অর্থাৎ, এই পোড়া কাপড়গুলো নিউ মার্কেটের অগ্নিকান্ডের ঘটনায় উদ্ধারকৃত কাপড় বলেই প্রতীয়মান হয়।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিদ্যানন্দের পোড়া কাপড় থেকে তৈরি অলংকার দাবিটি সঠিক নয় বরং সংস্থাটির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ৬ টি ছবির মধ্যে ৪ টি ছবিই গত ৯ মার্চ WE নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে শুরুতে ফেসবুকে Parvin Shirin নামক একটি অ্যাকাউন্ট থেকে আজ (১৬ এপ্রিল) মধ্যরাতে প্রকাশিত একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
পোস্টে তিনি অভিযোগ করেন, বিদ্যানন্দ তার নিজের পন্যের ছবি কপি করেছে।
শিরিন লিখেছেন, “আমি আমার এই পন্যের ছবিগুলো ৯ই মার্চ অর্থাৎ বঙ্গবাজারের দুর্ঘটনার অনেক আগেই Women and e-Commerce Trust – WE গ্রুপে পোষ্ট করেছি।আর বিদ্যানন্দ আজকে ১৫ই এপ্রিল পোষ্ট করেছে যা স্বাভাবিকভাবেই আমার ছবিগুলো কপি করা।”
Screenshot source: Facebook
পরবর্তীতে Women and e-Commerce Trust – WE নামক ফেসবুক গ্রুপটিতে গত ০৯ই মার্চ প্রকাশিত পারভীন শিরিনের মূল পোস্টটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot source: Facebook
শিরিন তার পোস্টে পাঁচটি অলংকারের ছবি যুক্ত করেছেন। এর মধ্যে চারটি অলংকারের ছবিই বিদ্যানন্দের আলোচিত পোস্টে রয়েছে।
Image Comparison: Rumor Scanner
অর্থাৎ, বিদ্যানন্দের পেজে ‘পোড়া কাপড়ের তৈরি অলংকার’ ক্যাপশনে প্রকাশিত ৬ টি ছবির মধ্যে ৪ টি ছবিই গত ৯ মার্চ WE নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করা হয়েছিল।
বাকি দুই ছবি এবং সার্বিক বিষয়ে জানতে বিদ্যানন্দ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত তাদের পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।
তবে আজ (১৬ এপ্রিল) দুপুরে বিদ্যানন্দের ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে একটি পোস্টে (আর্কাইভ) উল্লেখ করা হয়, “সাম্প্রতিক বিদ্যানন্দ পেইজে পোস্ট হওয়া একটি কোলাজ ছবি তে ভুল ছবি সংযুক্ত হওয়ায় আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমাদের প্রজেক্ট টিম বঙ্গবাজারের পোড়া কাপড় থেকে অলংকার বানানোর জন্য ইন্টারনেট থেকে বেশ কিছু স্যাম্পল ছবি ডাউনলোড করে। স্যাম্পল ছবি দেখে বানানো প্রোডাক্টগুলোর ছবি সোশ্যাল মিডিয়া টিমকে পাঠানোর সময় ভুল বশত ইন্টারনেটের রেফারেন্সিয়াল ছবিগুলোও পাঠিয়ে দেয়।”
বিদ্যানন্দ তাদের পোস্টে দাবি করেছে, “সোশ্যাল মিডিয়া টিম যথাযথ ভেরিফিকেশন ও অনুমোদন ছাড়া ছয়টি ছবির একটি কোলাজ তৈরী করে যেখানে দুইটি ছবি বিদ্যানন্দের হলেও বাকী চারটি ছবিই হয় ইন্টারনেটের সে রেফারেন্সিয়াল ছবি।”
পোস্টে উল্লেখ করা হয়, “এ ভুল আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ার সাথে সাথে আমরা পোস্টটি ডিলিট করি এবং ইন্টারনাল ইনভেস্টিগেশন করি। আমরা ভুল ছবি কমিউনিকেট করার দায়ভার নিচ্ছি এবং পেইজের সম্মানিত শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।”
Screenshot source: Facebook
অর্থাৎ, বিদ্যানন্দ স্বীকার করেছে যে, তাদের প্রকাশিত ৬ টি ছবির মধ্যে ৪ টি ছবিই ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা।
মূলত, সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে কিছু অলংকারের ছবি যুক্ত করে দাবি করে, সেগুলো পোড়া কাপড় থেকে তৈরি। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, বিদ্যানন্দের পেজে ‘পোড়া কাপড়ের তৈরি অলংকার’ ক্যাপশনে প্রকাশিত ৬ টি ছবির মধ্যে ৪ টি ছবিই গত ৯ মার্চ WE নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করা হয়েছিল। বিদ্যানন্দ মূলত পুরোনো ছবিগুলোই কয়েক ঘন্টা আগে পুড়ে যাওয়া কাপড় থেকে তৈরি অলংকার’ দাবিতে প্রচার করেছে।
সুতরাং, কয়েক ঘন্টা আগে পুড়ে যাওয়া কাপড় থেকে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন অলংকার তৈরি করেছে দাবিতে ভিন্ন একজনের তৈরি পুরোনো অলংকারের ছবি প্রচার করেছে; যা বিভ্রান্তিকর।
একই দাবিতে ২০১৭ সালে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে একটি কবুতর স্যালুট করেছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে কবুতরের স্যালুট দেওয়ার অংশটি এডিট করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির কি-ফ্রেম থেকে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ২০১৭ সালের ০১ জুন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদ সংস্থা ‘Ruptly’ এর ওয়েবসাইটে “Russia: Coo-Coo! – Putin blanked by pigeon at Spiritual Centre” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির মিল থাকলেও কবুতরের স্যালুট দেওয়ার কোনো দৃশ্য সেখানে ছিল না।
Image Comparison by Rumor Scanner.
ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শুরুতে প্রেসিডেন্ট পুতিন একজন ধর্মযাজকের সাথে হেঁটে আসছেন। পরবর্তী দৃশ্যে দেখা যায় তিনি এবং ধর্মযাজকের পাশে বেশ কয়েকজন সিকিউরিটি গার্ড ছিল। তারা হেঁটে আসার সময় একটি কালো কবুতর তাদের বাম দিক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। সে সময় পুতিন হাত দিয়ে কবুতরটিকে শুভেচ্ছা সূচক ইশারা করেন। কিন্তু কবুতরটি কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
একই ভিডিও ‘News Russia Ukraine Syria World’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটিতেও পুতিনকে স্যালুট দেওয়ার কোনো দৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
Screenshot from Youtube.
অর্থাৎ, ভ্লাদিমির পুতিনকে একটি কবুতর স্যালুট করার দাবিতে যে ভিডিওটি প্রচারিত হচ্ছে তা এডিট করে তৈরি করা হয়েছে।
মূলত, ২০১৭ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি ধর্মীয় কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আসার সময় একটি কবুতরকে শুভেচ্ছা সূচক ইশারা করলেও কবুতরটি কোনো সাড়া দেয়নি। উক্ত ভিডিওটি বিভিন্ন সময়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে একটি কবুতর স্যালুট করেছে দাবিতে প্রচার হয়ে আসছে।
তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কবুতরের স্যালুট দেওয়ার অংশটি এডিটের মাধ্যমে ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পরলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
উল্লেখ্য, ভ্লাদিমির পুতিন ২০১২ সাল থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সুতরাং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে একটি কবুতরের স্যালুট করার ভিডিওটি এডিটেড।
সম্প্রতি ‘BEXIMCO HEALTH Ramadan government subsidies’ শীর্ষক একটি ক্যাম্পেইন লিংক বিভিন্ন মেসেজ শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে।
Screenshot: Fake Website
উক্ত দাবিতে মেসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়ার স্ক্রিনশট দেখুন এখানে।
Image Collage by Rumor Scanner Screenshot: Fake Website
উক্ত ক্যাম্পেইনের একটি ওয়েবসাইট দেখুন এখানে(আর্কাইভ)
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বেক্সিমকো হেলথ এর পক্ষ থেকে রমজান উপলক্ষে ৩০ হাজার টাকার সরকারি ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে না বরং প্রতারণার উদ্দেশ্যে বেক্সিমকো হেলথ এর ওয়েবসাইট নকল করে উপহার প্রদানের এই প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে ক্যাম্পেইনটির সত্যতা যাচাইয়ে ক্যাম্পেইন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
Screenshot: microwaveconstituency
পরবর্তীতে সেখানে পর্যায়ক্রমে চারটি প্রশ্ন সামনে আসে। সেখানে বয়স, জেন্ডার এবং বেক্সিমকো হেলথ সম্পর্কে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয়।
Image Collage by Rumor Scanner
সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পর এই ধাপটি পার হয়। এরপর অভিনন্দন জানিয়ে এই ধাপটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে পরের ধাপে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ৯টি গিফট বক্স দেখা যায়। সেখানে জানানো হয়, বক্সের ভেতরে থাকা গিফট পেতে হলে সঠিক গিফট বক্স সিলেক্ট করতে হবে এবং এর জন্য ৩ বার সুযোগ দেওয়া হবে।
Image Collage by Rumor Scanner
এই ধাপটি যাচাই করার জন্য প্রদর্শিত গিফটবক্স থেকে অনুমানের ভিত্তিতে একটি বক্স সিলেক্ট করা হয়। সেখানে দুঃখপ্রকাশ করে জানানো হয় বাছাইকৃত বক্সটি খালি এবং এখনো দুইবার সুযোগ রয়েছে। পরবর্তীতে অন্য একটি বক্স সিলেক্ট করলে সেখানে বাছাইকৃত বক্সটি থেকে টাকা বের হতে দেখা যায়। এরপর অভিনন্দন জানিয়ে ৩০ হাজার টাকা জেতার কথা বলা হয়।
Image Collage by Rumor Scanner
পরের ধাপে ৫ টি ফেসবুক গ্রুপ অথবা ২০ জন বন্ধুকে এই ক্যাম্পেইন সম্পর্কে জানাতে বলা হয়। ক্যাম্পেইন সম্পর্কে জানাতে মেসেজিং প্লাটফর্ম মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের অপশন দেওয়া হয়। সেগুলোয় ক্লিক করলে উক্ত অ্যাপগুলোতে একটি লিংক পাঠানোর অপশন সামনে আসে।
Screenshot: Fake Website
উক্ত ওয়েবসাইটে নির্দেশিত সকল ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন করে ক্যাম্পেইনটির সত্যতা যাচাই করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে দাবিকৃত কোনো উপহার পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত হয়েছে রিউমর স্ক্যানার।
বেক্সিমকো হেলথ কি এমনকোনো অফার দিচ্ছে?
যে ওয়েবসাইট থেকে এই উপহার দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হচ্ছে সেটি একটি ভূয়া ওয়েবসাইট। পাশাপাশি বেক্সিমকো ফার্মা ও বেক্সিমকো হেলথ এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এবং এদের ফেসবুকপেজ কিংবা নির্ভরযোগ্য অন্যকোনো সূত্রে উক্ত অফারের সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, বেক্সিমকো ফার্মা কিংবা বেক্সিমকো হেলথ এর পক্ষ থেকে উক্ত ক্যাম্পেইনে উল্লেখিত এমন কোনো অফার দেওয়া হয়নি।
মূলত, বেক্সিমকো হেলথ এর পক্ষ থেকে রমজান উপলক্ষে ৩০ হাজার টাকা সরকারি ভর্তুকি দেওয়ার দাবিতে সম্প্রতি একটি তথ্য বিভিন্ন মেসেজ শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, বেক্সিমকোর হেলথ এর নাম ব্যবহার করে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এমনকোনো অফার দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে একাধিকবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট নকল করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রলোভন দেখানো হয়। সেসময় উক্ত বিষয়গুলোকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বেক্সিমকো হেলথ এর নাম ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে রমজান উপলক্ষে ৩০ হাজার টাকা সরকারি ভর্তুকি দেওয়ার দাবি করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ভুল তথ্য প্রচারের প্রবণতা বেশ কয়েক বছর ধরেই আলোচিত এক ইস্যু। ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বের অংশ হিসেবে রিউমর স্ক্যানারও প্রতিষ্ঠার লগ্ন থেকেই দেশীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ) মোট ৯০ টি বিষয়ে দেশীয় ১৩৩ টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সর্বমোট ৭০২ টি প্রতিবেদনকে ভুল হিসেবে শনাক্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। উল্লিখিত ৯০ টি ঘটনায় ৫১ টি মিথ্যা, ৩৭ টি বিভ্রান্তিকর, ০১ টি আংশিক মিথ্যা এবং ০১ টি বিকৃত তথ্যকে সত্য তথ্য হিসেবে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের ফল: জালোলিদ্দিন মাশারিপোভ রোনালদোকে ৭ নম্বর জার্সি না দেওয়ার কারণে আল নাসর কর্তৃক তার চুক্তি বাতিল করার দাবিটি সত্য নয় বরং মাশারিপোভ ইতোমধ্যেই ৭ নম্বর জার্সির পরিবর্তে ৭৭ নম্বর জার্সি পরে একটি ম্যাচ খেলেছেন এবং আল নাসর কর্তৃক তার চুক্তিও বাতিল করা হয়নি।
অনুসন্ধানের ফল: নিজেকে ভার্জিন দাবি করে কোনো মন্তব্য করেননি শ্রাবন্তী বরং ভারতীয় গণমাধ্যম Zee 24 Ghanta তে তার দেয়া পুরোনো একটি সাক্ষাৎকারকে ভুলভাবে প্রচার করা হয়।
অনুসন্ধানের ফল: বিজ্ঞানও বলছে দাঁড়িয়ে পানি খাওয়া যাবে না শীর্ষক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এর দাবিটি সঠিক নয় বরং মূল প্রতিবেদনে দাঁড়িয়ে পানি খাওয়ার বিষয়ে বৈজ্ঞানিক কোনো তথ্য উল্লেখ নেই।
অনুসন্ধানের ফল: ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এখনো তার বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজকে বিয়ে করেননি বরং জর্জিনার নামে পরিচালিত একটি ভুয়া ফেসবুক পেজের পোস্টকে সূত্র ধরে সৌদিতে রোনালদো তার বান্ধবী জর্জিনাকে বিয়ে করেছেন শীর্ষক তথ্যটি প্রচার করা হয়। এবং প্রকৃতপক্ষে জর্জিনা রদ্রিগেজ ফেসবুক ব্যবহারই করেন না। এছাড়া উক্ত পোস্টে রোনালদো-জর্জিনা দাবিতে প্রথম ব্যবহৃত ছবিটি এডিটেড।
অনুসন্ধানের ফল: বিএসএফের কুকুর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশী কুকুরকে সন্দেহ করার দাবিটি সঠিক নয় বরং এই ঘটনায় উক্ত কুকুরকে দেখভাল করা হ্যান্ডলারের গাফিলতি থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হয়।
আর জে কিবরিয়া ও তার স্ত্রী একে অপরের বিরুদ্ধে জিডি করেছেন দাবিতে প্রতিবেদন ঢাকা ট্রিবিউন, দৈনিক জনকণ্ঠ।
ভুল করা গণমাধ্যমের সংখ্যা: ২০
Screenshot collage: Rumor Scanner
অনুসন্ধানের ফল: রাফিয়া লোরা তার স্বামী আরজে কিবরিয়ার বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেননি বরং আরজে কিবরিয়াই তার স্ত্রী রাফিয়া লোরার বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে থানায় জিডি করেন।
অনুসন্ধানের ফল: আল-হিলালের অফিশিয়াল স্টোরে মেসির জার্সি বিক্রি করার কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ মেলেনি বরং মাত্র একটি ছবিকে কেন্দ্র করে উক্ত দাবিটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে এবং অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া যায় যে আল-হিলাল স্টোরের অ্যাপে, ওয়েবসাইট এবং রিয়াদ শাখার ফিজিক্যাল শপে এই জার্সি বিক্রি করা হয়নি।
অনুসন্ধানের ফল: এনামুল হক জজ মিয়া ৯ বছর নয় বরং ৪ বছর সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁও আসন হতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
অনুসন্ধানের ফল: এনামুল হক জজ মিয়া ১৯৮৩ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হননি বরং তিনি ১৯৮৬ এবং ১৯৮৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনই অনুষ্ঠিত হয়নি।
অনুসন্ধানের ফল: আইএমএফের বিষয়ে প্রথম আলোয় প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক নয় বরং আইএমএফের ‘ফরেন ব্রিফ’ নামক কোনো সেকশন নেই। বরং, প্রথম আলো ‘ফরেন ব্রিফ’ নামে একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন ওয়েবসাইটের বক্তব্যকে আইএমএফের বক্তব্য হিসেবে প্রচার করেছে।
অনুসন্ধানের ফল: ১৫ জানুয়ারি ৭২ জন যাত্রী ও ক্রু নিয়ে নেপালের একটি বিমান পোখারা বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হওয়ার পর দেশীয় গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রচার করার ক্ষেত্রে চারটি গণমাধ্যম ১০ বছর ও ৪ বছর আগের পুরোনো বিমান দুর্ঘটনার ছবি ব্যবহার করেছে। এমনকি পুরোনো ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে “ফাইল ছবি” উল্লেখ করেনি।
অনুসন্ধানের ফল: Dr. Nimo Yadav নামের এক ব্যক্তি তার টুইটার অ্যাকাউন্টে বাবর আজম তার সতীর্থের প্রেমিকার সাথে সতীর্থকে দল থেকে বাদ না দেয়ার শর্তে অশ্লীল আলাপ করছেন শীর্ষক একটি দাবি প্রথম প্রচার করলেও পরে টুইটটি ডিলিট করে দিয়ে বিষয়টি মিথ্যা বলে নিজেই নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি তার করা টুইট কোনোরূপ যাচাই না করে সংবাদ প্রচার করার কারণে মিডিয়াগুলিকে Fool এবং Clown হিসেবেও সম্বোধন করেছেন তিনি।
অনুসন্ধানের ফল: জাম্বিয়ার উল্লিখিত ঘটনাটি প্রায় দুই মাসের পূর্বের এবং এটি অফিশিয়াল পুরস্কার ছিলো না বরং গত বছরের নভেম্বরে অফিশিয়াল ম্যাচ সেরা পুরস্কারের বাইরে এক ভক্ত কর্তৃক অতিরিক্ত পুরস্কার হিসেবে উক্ত পুরস্কার দেওয়া হয়।
অনুসন্ধানের ফল: স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী অন্তর রায় সিঁড়ি থেকে পড়ে আহত হয়ে মারা যাননি বরং অন্তর রায় জন্মগতভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন এবং তার মৃত্যু হয়েছিল কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণে।
অনুসন্ধানের ফল: “মেসিকে ২০১৪ বিশ্বকাপে গোল্ডেন বল ভুল করে দেওয়া হয়েছিল” শীর্ষক মন্তব্যটি সাম্প্রতিক সময়ে সাবেক ফিফা সভাপতি সেপ ব্ল্যাটারের করা মন্তব্য নয় বরং ২০১৪ সালে তার করা দুইটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তিনি উক্ত মন্তব্যটি সাম্প্রতিক সময়ে করেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়।
তিন দশক ধরে সমীক্ষাটি পরিচালিত হয়েছে শীর্ষক দাবি করেছে বিডিনিউজ২৪।
ভুল করা গণমাধ্যমের সংখ্যা: ০৬
Screenshot source: Jagonews
অনুসন্ধানের ফল: গত ০২ জানুয়ারি ‘eBioMedicine’ জার্নালে পানি পানের সাথে বার্ধক্যের সম্পর্কের বিষয়ে একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গবেষণাটির বরাতে দাবি করা হয়, দৈনিক ৮ গ্লাস পানি পানেই অন্তত ১৫ বছর পর্যন্ত আয়ু বাড়বে এবং ৩০ এর বেশি বয়স্কদের উপর উক্ত গবেষণা করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত গবেষণায় আয়ু বাড়াতে ঠিক কী পরিমাণ পানি পান করতে হবে সে বিষয়ে উল্লেখ করা হয়নি। তাছাড়া শুধু ৩০ বছরের বেশি বয়স্কদের উপর বা ৩০ বছর ধরে গবেষণাটি পরিচালিত হয়নি বরং ১১ হাজার ২৫৫ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ৩০ বছর সময়কালের স্বাস্থ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে উক্ত গবেষণাটি করা হয়।
অনুসন্ধানের ফল: মেসির ২০২১ ব্যালন ডি’অর জয়কে ‘লজ্জাজনক’ দাবি করা ইন্সটাগ্রাম পোস্টে রোনালদোর সায় দেওয়ার ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২১ সালের ডিসেম্বরের ঘটনা।
অনুসন্ধানের ফল: কিছু খেলোয়াড়ের সাময়িক অনুপস্থিতির জন্য অতিরিক্ত খেলোয়াড় নিতে ২৫ জানুয়ারি পাকিস্তান সুপার লিগের রিপ্লেসমেন্ট ড্রাফট অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ড্রাফটকে কেন্দ্র করে ‘পিএসএলে দল পেলো সাকিব, লাহোর কালান্দার্স তাকে দলে নিয়েছে’ শীর্ষক একটি দাবি ছড়িয়ে পড়লেও পিএসএলের রিপ্লেসমেন্ট ড্রাফটে দল পাওয়া খেলোয়াড়দের তালিকায় সাকিবের নাম ছিল না। এছাড়া, লাহোর কালান্দার্সের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত রিপ্লেসমেন্ট ড্রাফট থেকে ডাক পাওয়া খেলোয়াড়দের তালিকায়ও সাকিবের নাম ছিল না।
অনুসন্ধানের ফল: ষষ্ঠ শ্রেণির ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ অনুশীলন বই যাচাই করে দেখা যায়, সেখানে বানরের ছবি থাকার যে দাবি করা হচ্ছে তা বানরের নয় বরং ছবিগুলো মানুষেরই বিভিন্ন সময়ের আদি ও বর্তমান রূপ। তাছাড়া, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ের “মানুষ ও সমাজ এলো কোথা থেকে?” শিরোনামের পাঠ্যটিতে ‘মানুষ বানর থেকে সৃষ্টি হয়েছে’ শীর্ষক কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি বরং বিষয়টি ভুল বলে বইটির একাধিক পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে।
অনুসন্ধানের ফল: গত ৩০ জানুয়ারী পাকিস্তানের একটি মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে পাকিস্তানের ২০০৪, ২০২০ এবং ২০২২ সালের তিনটি ভিন্ন বিস্ফোরণের ঘটনার ছবি ব্যবহার করে সাম্প্রতিক ঘটনার ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়।
অনুসন্ধানের ফল: ২০১৩ সালে তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের চার গবেষক একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেন যার মূল বিষয়বস্তু ছিল প্রেমের অনুভূতির কারণে মনোযোগসহ পারিপার্শ্বিক বিষয়ে কী ধরনের প্রভাব পড়ে সে বিষয়ে আলোকপাত করা। এ বিষয়ে সম্প্রতি দেশীয় গণমাধ্যমে ‘প্রেমে পড়লে মানুষের বুদ্ধি কমে যায়, বলছে গবেষণা’ শীর্ষক শিরোনামে সংবাদ প্রচার করা হয়। কিন্তু মানুষের বুদ্ধি কমে যাওয়া শীর্ষক কোনো তথ্য উক্ত গবেষণায় ছিল না বলে নিশ্চিত করেছেন গবেষণা দলের দুই সদস্য।
অনুসন্ধানের ফল: রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে, ইউনেস্কোর ওয়েবসাইট এবং প্রতিষ্ঠানটির সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলগুলোতে এমন কোনো জরিপের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া ইউনেস্কোর একজন মুখপাত্র রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছে, “ইউনেস্কো কর্তৃক প্রকাশিত এমন কোনো প্রতিবেদন, জরিপ বা তালিকা নেই।”
অনুসন্ধানের ফল: ৮২৩ বছর পর পর ফেব্রুয়ারি মাসের সপ্তাহের ৭ দিনই চারবার ঘুরে ফিরে আসার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং লিপ ইয়ার ব্যতীত প্রায় প্রতি বছরই ফেব্রুয়ারি মাসে সপ্তাহের ৭ দিনই চারবার ঘুরে ফিরে আসে।
অনুসন্ধানের ফল: প্রচারিত ভিডিওটি তুরস্কের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে বহুতল ভবন ধসের ঘটনার নয় বরং এটি ২০২০ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইজমির শহরে সংঘটিত ভূমিকম্পে ভবন ধসের ভিডিও।
অনুসন্ধানের ফল: রাস্তায় পাখি উড়ার ভিডিওটি তুরস্কের ভূমিকম্পের পূর্ব মুহূর্তের নয় বরং এটি ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টন শহরে ভিন্ন আরেকটি ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিও।
দাবি: আমেরিকার মিসৌরি শহরে ব্যাচেলার থাকতে হলে ট্যাক্স দিতে হয়। এখানে ২১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ব্যাচেলার পুরুষদের কাছ থেকে ট্যাক্স হিসেবে নেওয়া হয় ১ ডলার। ১৮২১ সাল থেকে আমেরিকার মিসৌরিতে এই ট্যাক্স দেওয়া শুরু হয়।
অনুসন্ধানের ফল: আমেরিকার মিসৌরি শহরে ব্যাচেলর থাকতে হলে ২১ থেকে ৫০ বছর বয়সী পুরুষদের ১ ডলার করে ট্যাক্স দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি পুরোনো। ১৮২১ সালে দেশটিতে এই ট্যাক্স প্রথা চালুর এক বছরের মাথাতেই এই প্রথাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অনুসন্ধানের ফল: পর্তুগিজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানো ফেসবুক পেজটি ফ্রেঞ্চ তারকা এমবাপ্পের আসল পেজ নয় বরং এমবাপ্পের নামে তৈরি একটি ভুয়া ফেসবুক পেজ থেকে উক্ত পোস্টটি করা হয়েছিল। এছাড়া এমবাপ্পের ফেসবুক ব্যতীত অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট থেকেও রোনালদোকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো হয়নি।
অনুসন্ধানের ফল: ভবন হেলে পড়ার আলোচিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ে ঘটা তুরস্ক-সিরিয়া ভূমিকম্পের নয় বরং এটি ১৯৯৯ সালে তুরস্কের ডুজসে শহরে হওয়া ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: তুরস্কের সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে বহুতল ভবন ধসের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি তুরস্কের ভূমিকম্পের সময়কার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: তুরস্কের সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে বহুতল ভবন ধসের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২০ সালের ২৪ জানুয়ারি তুরস্কের ভূমিকম্পের সময়কার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: জোনাথন লি রিচেসের নাম সবচেয়ে বেশি মামলাবাজ ব্যক্তি হিসেবে গিনেস বুকে নাম আসেনি বরং গিনেস বুকে সবচেয়ে বেশি মামলাবাজ ব্যক্তি শীর্ষক কোনো ক্যাটাগরিই নেই।
অনুসন্ধানের ফল: ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে বঙ্গবন্ধুর বাবার নাম ও পেশা ভুলভাবে উপস্থাপন করার দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং পাঠ্যবইগুলোতে বঙ্গবন্ধুর বাবার নাম ও পেশা সঠিকভাবেই উপস্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়াও, মূলধারার সংবাদমাধ্যম “প্রতিদিনের বাংলাদেশ”, ও “ঢাকা মেইল” এই বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন করে পরবর্তীতে তা সংশোধন করে ফেলে। পূর্ববর্তী ভার্সনের কোনো আর্কাইভ কপি পাওয়া সম্ভব হয়নি।
Screenshot Collage: Rumor Scanner
ভুল করা গণমাধ্যমের সংখ্যা: ১৩
Screenshot Collage: Rumor Scanner
অনুসন্ধানের ফল: সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ছেলে কানাডায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে সেসময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
দাবি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যকার বাক-বিতণ্ডার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাকে “এই শালা আমি কে!’ শীর্ষক মন্তব্য করেন সহকারী প্রক্টর।
দাবি: সূর্যের একটি অংশ ভেঙে পড়েছে। নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ সূর্যের এই ছবি পাঠিয়েছে। ড. তামিথা স্কোভ নামে যে ব্যক্তি নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে সূর্যের সেই ছবিটি শেয়ার করেছেন, তিনি নাসার একজন কর্মকর্তা।
অনুসন্ধানের ফল: সূর্যের একটি অংশ ভেঙে পড়েছে শীর্ষক গণমাধ্যমের দাবিটি সঠিক নয় বরং সম্প্রতি সূর্যের প্রমিনেন্স বা প্লাজমা বিচ্ছিন্ন হয়ে সূর্যের উত্তর মেরুতে ঘুরতে থাকে। কিন্তু সূর্যের কোনো অংশই “ভাঙেনি”। প্লাজমার এই ঘটনা স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। তাছাড়া, ড. তামিথাকে নাসার কর্মকর্তা এবং ছবিটি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের তোলা বলে যে দাবি করা হচ্ছে সেটিও সঠিক নয়৷
অনুসন্ধানের ফল: মরুভূমিতে বেগুনি ফুলের প্রচারিত ছবিটি সৌদি আরবের নয় বরং এটি ২০১৫ সালে চিলির মরুভমিতে তোলা ছবি। এছাড়া সৌদির মরুভূমির ছবি দাবিতে প্রচারিত অপর ছবিটি সৌদির সাম্প্রতিক সময়ের ছবি নয় বরং সেটি ২০১৭ সালে তোলা।
দাবি: তুরস্কে গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পের ঘটনায় দেশটির বিখ্যাত আইসক্রিম বিক্রির দোকান ‘Çılgın Dondurmacı’ এর মালিক মেহমেত ডিন্ক সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
অনুসন্ধানের ফল: তুরস্কে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনায় তুর্কি আইসক্রিম বিক্রেতা মেহমেত ডিন্ক সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং তার জন্মস্থান আন্তাকিয়ায় কয়েকজন স্বজন হারালেও ভূমিকম্প ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে দূরে হওয়ায় তার ব্যবসার (আন্তালিয়ায়) কোনো ক্ষতি হয়নি।
অনুসন্ধানের ফল: তুরস্কে গত ২০ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে বহুতল ভবন ধসের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি তুরস্কের ভূমিকম্পের সময়কার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: তুরস্কের ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপে মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরীফ পেয়ে চীনা উদ্ধারকর্মী জং সান এর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার তথ্যটি সঠিক নয় বরং উক্ত ব্যক্তি আগে থেকে ইসলাম ধর্মের অনুসারী ছিলেন এবং জন্মসূত্রেই তিনি মুসলমান বলে জানা যায়।
অনুসন্ধানের ফল: লন্ডনে বাংলা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবহৃত ভাষা সম্পর্কিত গণমাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে সিটি লিট নামে একটি বেসরকারি দাতব্য সংস্থার অসংগতিপূর্ণ ও পুরোনো জরিপের ভিত্তিতে করা গবেষণার ভিত্তিতে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছিল।
অনুসন্ধানের ফল: তাজিকিস্তানের সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে সময়কার দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০২১ সালে জাপানের ভূমিকম্পের ভিডিও এটি।
দাবি: মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ‘ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে একটানা ছয় মাসে বেশি থাকা যাবে না’- শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অনুসন্ধানের ফল: মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক-১ শাখার উপসচিব মো. মিজানুর রহমানের কথিত স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির বরাতে এক নাগাড়ে ৬ মাসের বেশি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে না থাকতে পারার দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদটি মিথ্যা এবং প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন সম্পর্কিত উপসচিবের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি দাবিতে প্রচারিত পত্রটি ভুয়া।
অনুসন্ধানের ফল: তাজিকিস্তানে সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিটি তাজিকিস্তানের নয় বরং এটি ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: নেপালে সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে সময়কার দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০১৫ সালে নেপালের ভূমিকম্পের ভিডিও এটি।
দাবি: গত ০৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় শক্তিশালি ভূমিকম্পের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসির ‘লিও মেসি ফাউন্ডেশন’ তুরস্ক ও সিরিয়ার এ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৩৫ লাখ ইউরো দান করার ঘোষণা দিয়েছে।
অনুসন্ধানের ফল: ইউনিসেফের সূত্র দেখিয়ে এই দাবিটির সূত্রপাত ঘটলেও সংস্থাটির সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলগুলো ঘুরেও এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি বিশ্বস্ত কোনো গণমাধ্যমেও এই তথ্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, যে পেজ থেকে প্রথম এই দাবিটি ছড়িয়েছে সে পেজ থেকে ইতোমধ্যেই পোস্টটি সরানো হয়েছে এবং সে পেজ থেকে পূর্বেও গুজব ছড়ানো হয়েছিলো, সে গুজবও শনাক্ত করেছিলো রিউমর স্ক্যানার টিম। তাছাড়া, তিরানাপোস্টে তুরস্কের গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করা হলেও সেদিন অবধি তুরস্কের মূলধারার কোনো গণমাধ্যমই এই বিষয়ে সংবাদ প্রচার করেনি।
অনুসন্ধানের ফল: সদ্য ইসলাম গ্রহণকারী হিলারিয়ান হেইগির ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিটি হেইগির নয় বরং এটি বুদাপেস্টের বিশপ মেট্রোপলিটন হিলারিয়ান আলফেয়েভের ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: ফেসবুকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানের কোনো পেজ কিংবা অ্যাকাউন্ট নেই বরং জাইমা রহমানের নামে পরিচালিত একটি ভুয়া ফেসবুক পেজকে সূত্র ধরে দৈনিক নয়া শতাব্দী জাইমা রহমান ফেসবুকে দেশে আসার কথা জানিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।
অনুসন্ধানের ফল: শীতে বরফাচ্ছন্ন মঙ্গোলিয়ার সাম্প্রতিক খবরে গণমাধ্যমে প্রচারিত দুইটি ছবি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এগুলো ২০১০ ও ২০১৬ সালের মঙ্গোলিয়ার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: ফেনীর মতিনকে মেসির সাইন করা জার্সি পাঠানোর দাবিটি সঠিক নয় বরং তাকে আর্জেন্টিনা সরকারের পক্ষ থেকে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জার্সি উপহার দিয়েছেন।
অনুসন্ধানের ফল: আরব আমিরাতে আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি হাফেজ মোঃ ওয়াসিম আইয়ুব ওয়াসিফের ৫২ দেশের শত প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে বা হারিয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেননি বরং উক্ত কোরআন প্রতিযোগিতায় ৫২ টি দেশের চৌদ্দশ প্রতিযোগী বিভিন্ন বিভাগে বিভক্ত হয়ে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে এবং প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদাভাবে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঘোষণাও করা হয়েছে। তার মধ্যে ওয়াসিফ একটি বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন। একই বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন মুসআব মীর কামাল। এছাড়া একই প্রতিযোগিতায় হাদীস বিভাগেও প্রথম স্থান অর্জন করেছেন আব্দুল সবুর শরীফ হোসাইন নামে আরেকজন বাংলাদেশি।
দাবি: পর্তুগাল অধিনায়ক ও সৌদি আরবের আল নাসর ক্লাবের স্ট্রাইকার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সিরিয়া ও তুরস্কের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য বিমান ভর্তি সাহায্য পাঠিয়েছেন।
অনুসন্ধানের ফল: ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো কর্তৃক সিরিয়া ও তুরস্কের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য বিমান ভর্তি সাহায্য পাঠানোর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এছাড়া, তুরস্ক এবং সিরিয়ার একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র এবং তুরস্কের সরকারি সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির রিলিফ ট্র্যাক থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ীও রোনালদো কর্তৃক তুরস্ক বা সিরিয়ায় ত্রাণ ভর্তি বিমান পাঠানোর বিষয়ে কোনো প্রমাণ মেলেনি।
দাবি: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছেন।
দাবির পক্ষে: মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘সময় টিভি ‘এই বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন করে পরবর্তীতে তা সংশোধন করে ফেলে। পূর্ববর্তী ভার্সনের কোনো আর্কাইভ কপি পাওয়া সম্ভব হয়নি।
ভুল করা গণমাধ্যমের সংখ্যা: ০১
Screenshot source: Google
অনুসন্ধানের ফল: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পাননি বরং তাঁর পরিবারের সদস্যরা খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ও মুক্তির শর্ত শিথিল করে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেন।
অনুসন্ধানের ফল: ইংল্যান্ডের ওভাল স্টেডিয়ামের বর্তমান অবস্থা উল্লেখ করে প্রচারিত বরফে ঢাকা স্টেডিয়ামের ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২২ সালে ডিসেম্বরে ধারণকৃত ওভাল স্টেডিয়ামের দৃশ্য। রিউমর স্ক্যানারের প্রতিবেদন:ইংল্যান্ডের ওভাল স্টেডিয়ামের বরফে ঢাকা ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়
৬৩/ ফ্যাক্টচেক: ১৩ মার্চ
দাবি: তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পে বাবা হারানো সিরিয়ান শিশুর দায়িত্ব নিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
অনুসন্ধানের ফল: পর্তুগিজ ফুটবল তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো কর্তৃক ভূমিকম্পে পিতা হারানো সিরিয়ার শিশুর দায়িত্ব নেওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং সিরিয়ার উক্ত শিশুর সাথে রোনালদোর দেখা করার বিষয়টিকেই শিশুর দায়িত্ব নিয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হয়।
অনুসন্ধানের ফল: সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক নয় বরং সম্পদমূল্য বিবেচনায় করা তালিকায় সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকটির অবস্থান ১৬তম।
অনুসন্ধানের ফল: চীনে উত্তরাঞ্চলের লিয়াওনিং প্রদেশে বৃষ্টির সঙ্গে লাখ লাখ কেঁচো পড়ার দাবিতে প্রচারিত বিষয়টি সঠিক নয় বরং পপলার গাছ থেকে ফুল পড়ার দৃশ্যকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়।
অনুসন্ধানের ফল: নিউজিল্যান্ডে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের সময়কার দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি নিউজিল্যান্ড কিংবা সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০১৫ সালের নেপালের ভূমিকম্পের ভিডিও।
অনুসন্ধানের ফল: নিউজিল্যান্ডের সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে ভাঙা রাস্তার দৃশ্য দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত দুইটি ছবি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর দেশটির অন্য এক ভূমিকম্পের ঘটনার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: নিউজিল্যান্ডের সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০১১ সালে দেশটির ভূমিকম্পের সময়কার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: নিউজিল্যান্ডের সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পে গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২১ সালে আমেরিকান সামোয়ার পাগো পাগো পোর্ট এলাকার ছবি।
এছাড়াও, মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘ডেইলি বাংলাদেশ’এই বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন করে পরবর্তীতে তা সংশোধন করে ফেলে। পূর্ববর্তী ভার্সনের কোনো আর্কাইভ কপি পাওয়া সম্ভব হয়নি।
গণমাধ্যমের ভুল সংখ্যা: ৩১
Screenshot source: Jugantor
অনুসন্ধানের ফল: মাদারীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সুইটি আলম সুরভী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন নয় বরং তিনি প্রকৃতপক্ষ ঢাকায় অবস্থিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগে অধ্যয়নরত ছিলেন।
অনুসন্ধানের ফল: গত ২০ মার্চ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের মাধ্যমে সিজিপিএ ৩.৮৯ পেয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন (এমএসসি) সম্পন্ন করেছেন বলে এক ফেসবুকে পোস্টে জানান সংগীতশিল্পী কোনাল। কিন্তু মূলধারার অনলাইন সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস এর প্রতিবেদনে কোনাল গ্র্যাজুয়েশন (স্নাতক) সম্পন্ন করেছেন বলে দাবি করা হয়।
দাবি: ২০ মার্চ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) আপরশি মারমা নামে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়টির একটি হলের ছাদ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনার বিষয়ে একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আপরশি মারমার বাড়ি বান্দরবান বলে দাবি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের ফল: নোবিপ্রবির হল থেকে আপরশি মারমা নামে যে মৃত শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তার বাড়ি বান্দরবান নয় বরং তার গ্রামের বাড়ি খাগড়াছড়ি সদরে।
অনুসন্ধানের ফল: ‘টুইটারে নীল টিকের অ্যাকাউন্ট ছাড়া দুই স্তরের লগ-ইন বাতিল’ এবং ‘টুইটারে থাকছে না টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন’ শীর্ষক গণমাধ্যমে প্রচারিত দাবিগুলো সত্য নয় বরং টুইটারের অর্থিক ফিভিত্তিক সেবা ‘টুইটার ব্লু’ এর সাবক্রাইব করা ব্যবহাকারী ব্যতীত ফ্রি ব্যবহারকারীদের জন্য এসএমএসের মাধ্যমে দুই স্তর অথেনটিকেশন কোড পাওয়া বন্ধ হয়েছে। তবে, ফ্রি ব্যবহারকারীরা এখনো অথেনটিকেটর অ্যাপ এবং সিকিউরিটি কী এর মাধ্যমে দুই স্তর অথেনটিকেশন ব্যবহার করতে পারবে।
অনুসন্ধানের ফল: বিভিন্ন সময়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ছবি হিসেবে প্রচারিত ছবিটি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এর প্রকৃত ছবি নয় বরং এটি ২০০৫ সালে আপলোড করা একটি স্যাটেলাইটের ডিজাইনের স্টক ইমেজ সম্পাদনা বা এডিট করে তৈরিকৃত ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: আরাভ খান সম্প্রতি হজে গিয়েছেন জানিয়ে ফেসবুকে কোনো পোস্ট দেননি বরং আরাভ খানের নামে তৈরিকৃত একটি ভুয়া ফেসবুক পেজের পোস্টকে কেন্দ্র করে এই সংবাদটি প্রচার করা হয়।
অনুসন্ধানের ফল: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শান্তিতে নোবেল পেতে পারেন শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি নোবেল কমিটির ডেপুটি লিডার অ্যাসলে তোজে বরং নোবেল পুরস্কার বিষয়ক তার একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে উক্ত দাবিটি ছড়িয়ে পড়ে।
অনুসন্ধানের ফল: নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের এক কর্মকর্তা রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন, চাঁদের সাথে যাকে দেখা গিয়েছে তা শুক্র গ্রহ এবং চাঁদ ও শুক্র গ্রহের দ্বারা তৈরি হওয়া এমন দৃশ্য কয়েক মাস পর পরই দেখা যায়।
অনুসন্ধানের ফল: অনলাইনে জুয়া খেলে নেইমারের এক মিলিয়ন ইউরো হারানোর দাবিটি সঠিক নয় বরং নেইমার তার স্পন্সর অনলাইন বেটিং প্রতিষ্ঠান ব্লেজ এর পক্ষে প্রচারণার অংশ হিসেবে উক্ত গেমে অংশ নিয়েছিলেন।
অনুসন্ধানের ফল: নিউজিল্যান্ডের সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্পের ঘটনায় গণমাধ্যমে ব্যবহৃত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০১০ সালে দেশটির ভূমিকম্পের সময়কার ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: প্রলয় গ্যাংয়ের দাবিতে একাত্তর টিভির প্রতিবেদনে ব্যবহৃত একটি ছবিতে যাদেরকে দেখানো হয়েছে তারা কেউ উক্ত গ্যাংয়ের সদস্য নয় বরং ছবিতে থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্তত ৪ জন বিভিন্ন গণমাধ্যমের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন এবং সকলেই ঢাবির অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে প্রলয় গ্যাংয়ের সদস্যরা অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
দাবি: যুক্তরাষ্ট্রে হোয়াইট হাউসের উদ্যোগে আয়োজিত একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের রংপুরের শাহ মুহাম্মদ রাকিব হাসান নামে এক স্কুল শিক্ষার্থী সেরা বিতার্কিক হয়েছেন।
অনুসন্ধানের ফল: হোয়াইট হাউসের নাম ব্যবহার করে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি রাকিবের সাফল্যের যে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তা সঠিক নয় বরং হোয়াইট হাউস সম্প্রতি এমন কোনো প্রতিযোগিতার আয়োজন করেনি। হোয়াইট হাউসের ডোমেইনের সাথে মিল রেখে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে ভুয়া একটি প্রতিযোগিতায় রাকিব সেরা বিতার্কিক হয়েছেন বলে দাবি করেন।
অনুসন্ধানের ফল: প্রিমিয়ার লিগে এর আগেও অনেকেই হ্যাট্রিক অ্যাসিস্ট করেছেন। এমনকি চার অ্যাসিস্টের রেকর্ডও আছে। ট্রসার্ড মূলত প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে কোনো অ্যাওয়ে ম্যাচের প্রথমার্ধে হ্যাট্রিক অ্যাসিস্ট করা প্রথম ফুটবলার হিসেবে রেকর্ড করেছেন।
অনুসন্ধানের ফল: কোর্সেরা নামে একটি এডুকেশন প্লাটফর্মের মাধ্যমে করা এই প্রোগ্রামে কোনো স্কলারশিপ সুবিধাই নেই। রুশোকে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করেই প্রোগ্রামটিতে এনরোল করতে হচ্ছে।
দাবি: পৃথিবীর সবচেয়ে দামি ফুল হলো জুলিয়েট রোজ। এই গোলাপের প্রতিটির মূল্য ১৫.৮ মিলিয়ন, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৩৬ কোটি টাকা। কিছু পোস্টে ১২৬ কোটি টাকার দাবিও দেখা গেছে। একেকটি জুলিয়েট রোজ ফুটতে সময় লাগে প্রায় ১৫ বছর।
অনুসন্ধানের ফল: প্রতিটি জুলিয়েট রোজের পাইকারি মূল্য সাড়ে তিন ডলার। তাই এটি সবচেয়ে দামি ফুলও নয়। এমনকি এই ফুল ফুটতে ১৫ বছর সময় লাগার দাবিটিও সঠিক নয়।
অবাধ তথ্য প্রবাহ এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির এই যুগে ভুল এবং সঠিক তথ্য যাচাই করা এখন আর কোনো কঠিন বিষয় না। কিন্তু গণমাধ্যমে ভুল তথ্যের এই ছড়াছড়ি সহজ এই বিষয়টিকেই প্রশ্নের মুখে ফেলছে, বিভ্রান্ত করে তুলছে সাধারণ মানুষকে। মানুষ তাই আস্থা হারাচ্ছে গণমাধ্যম। রিউমর স্ক্যানার টিম বিশ্বাস করে, গণমাধ্যম তার শ্রোতা এবং পাঠকের কাছে সঠিক তথ্যটি যাচাই সাপেক্ষে তুলে ধরবে, ফিরিয়ে আনবে নিজেদের আস্থার জায়গা।
সংশোধন / Correction
২৯ জুলাই, ২০২৩ : এই পরিসংখ্যান প্রকাশের পর প্রথম তিন মাসের আরও আটটি ভুল সংবাদ শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। উক্ত আটটি ফ্যাক্টচেকে পাওয়া গণমাধ্যমের ভুলগুলো তিন মাসের পরিসংখ্যানে যুক্ত করে পরিসংখ্যানের তথ্য আপডেট করা হয়েছে।
সম্প্রতি, “আগে দৈনিক সাড়ে ৪ কেজি মাংস খাইতাম, এখন মাত্র আড়াই কেজি খাইতে পারি। পেটে মাংস না থাকলে স্বাধীনতা দিয়া কি করুম? আমাদের মাংসের স্বাধীনতা চাই।” শীর্ষক লেখা সম্বলিত একটি ডিজিটাল ব্যানার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
Screenshot from ‘CrowdTangle’
যা দাবি করা হচ্ছে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রথম আলো’র লোগোসহ একটি ডিজিটাল ব্যানারে “আগে দৈনিক সাড়ে ৪ কেজি মাংস খাইতাম, এখন মাত্র আড়াই কেজি খাইতে পারি। পেটে মাংস না থাকলে স্বাধীনতা দিয়া কি করুম? আমাদের মাংসের স্বাধীনতা চাই।” শীর্ষক বক্তব্যটিগণ অধিকার পরিষদের সহকারী আহ্বায়ক তামান্না ফেরদৌস শিখা’র বক্তব্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ডিজিটাল ব্যানারটি প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়নি এবং বক্তব্যটিও গণ অধিকার পরিষদের নেত্রী তামান্না ফেরদৌস শিখার নয় বরং কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত ব্যানারটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। এছাড়া, প্রথম আলোর ওয়েবসাইট সহ সামাজিক মাধ্যমের একাউন্টগুলো পর্যবেক্ষণ করেও এ সংক্রান্ত কোনো ছবি বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পোস্টটির কমেন্ট বক্স বিশ্লেষণ করে গণ অধিকার পরিষদের নেত্রী ‘Tamanna Ferdous Shikha’ এর একটি কমেন্ট দেখতে পাওয়া যায়।
Screenshot from Facebook | Shariful Islam Raju
কমেন্টে তামান্না ফেরদৌস শিখা দাবি করেছেন যে, ‘তার একটি বক্তব্য বিকৃত করে প্রথম আলো’র লোগো ব্যবহার করে আলোচিত ব্যানারটি সম্পাদনা করা হয়েছে।’ পাশাপাশি, তামান্না ফেরদৌস শিখা তার কমেন্টে একটি ফেসবুক পোস্টের লিংক ও সংযুক্ত করে দেন।
উক্ত লিংকে প্রবেশ করলে গত ২৯ মার্চ তারিখে “আমি তামান্না ফেরদৌস শিখা বলছি, “আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো৷”” শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফেসবুক পোস্ট দেখতে পাওয়া যায়।
এছাড়া, তামান্না ফেরদৌস শিখা’র ফেসবুক একাউন্টে প্রচারিত ছবিগুলোর মধ্যে আলোচিত ডিজিটাল ব্যানারে থাকা ছবিটিরও সন্ধান পাওয়া যায়, যা ২০২২ সালের ২২ আগষ্ট তারিখে ‘আ… টি টি টি টি……’ শিরোনামে আপলোড করা হয়েছিলো।
তাছাড়া, প্রথম আলো অনুরূপ ডিজিটাল ব্যানারে কোনো ব্যক্তির ছবিসহ মন্তব্য/বক্তব্য এবং তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত যে ডিজাইন ব্যবহার করে থাকে, গণ অধিকার পরিষদের নেত্রী তামান্না শিখার বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ব্যানারে কিছুটা ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।
Banner Comparison by Rumor Scanner
মূলত, গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর অনলাইনে ‘আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো‘ শীর্ষক শিরোনামে একটি ব্যানার প্রকাশ করা হলে এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। প্রথম আলো’র ডিজিটাল ব্যানারটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার প্রেক্ষিতে গণ অধিকার পরিষদের নেত্রী তামান্না ফেরদৌস শিখা তার ফেসবুক একাউন্টে একটি উদ্ধৃতি প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে, তামান্না শিখার উদ্ধৃতিটি বিকৃত করে প্রথম আলো’র লোগো ব্যবহার করে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও একইভাবে দ্য ডেইলি স্টার এর সম্পাদক মাহফুজ আনামের নামে ভুয়া বক্তব্য প্রচার করা হলে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।
সুতরাং, প্রথম আলোর ডিজিটাল ব্যানারে গণ অধিকার পরিষদের নেত্রী তামান্না ফেরদৌস শিখার বক্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।