Home Blog Page 593

চটকদার থাম্বনেইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরানকে গ্রেফতারের গুজব প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরানকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতায় তাকে ফাঁসির নির্দেশ’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে। 

ডেপুটি অ্যাটর্নি

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান গ্রেফতার হননি এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতায় তাকে ফাঁসির নির্দেশও দেওয়া হয়নি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। গত ১১ সেপ্টেম্বর B tv news 24 নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়। ভিডিওটির কোথাও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরানকে গ্রেফতারের বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি এবং এসম্পর্কিত কোনো ভিডিও সেখানে দেখানো হয়নি। তবে সেখানে শুরুতেই বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার এসম্পর্কিত একটি আলোচনার ভিডিও দেখানো হয় যেটি গত ০৯ সেপ্টেম্বর Rumeen’s Voice নামের একটি ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও সেখানে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের অপর একটি ভিডিও যুক্ত করা হয়েছে যেটি গত ০৬ সেপ্টেম্বর ব্যারিস্টার সুমন তার ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেন করেন। এই ভিডিওতেও সুমন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরানের বিবৃতিতে সাক্ষর না করার বিষয়ে আলোচনা করেন। এই দুই আইনজীবীর বক্তব্যেও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরানকে গ্রেফতারের বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে গণমাধ্যম বা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরানের গ্রেফতার বা ফাঁসির নির্দেশের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ওয়েবসাইটে গত ০৮ সেপ্টেম্বর ‘ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদকে অব্যাহতি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর (জিপি/পিপি শাখা) অনুবিভাগ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) তাকে অব্যাহতি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সলিসিটর রুনা নাহিদ আকতার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘দ্য বাংলাদেশ ল অফিসারস অর্ডার, ১৯৭২ এর ৪(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়ার নিয়োগাদেশ জনস্বার্থে বাতিলক্রমে তাকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।’

এছাড়াও, মূলধারার গণমাধ্যম যুগান্তরের ওয়েবসাইটে গত ১২ সেপ্টেম্বর ‘বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না বরখাস্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বরখাস্ত হওয়ার পর গত ০৮ সেপ্টেম্বর বিকালে এমরান স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের ফটকে পাশের অভ্যর্থনাকক্ষে গিয়ে অবস্থান নেন। সন্ধ্যার পর পুলিশ পাহারায় বাসায় ফেরেন তিনি।

সেদিন রাতে এমরান গণমাধ্যমে বলেছিলেন, তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে, এ আশঙ্কা থেকে মার্কিন দূতাবাসে গিয়েছিলেন। পরে তার কোনো ক্ষতি হবে না, সে বিষয়ে আশ্বস্ত হয়ে বাসায় ফিরেছেন।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরানকে গ্রেফতার বা রাষ্ট্রদ্রোহিতায় ফাঁসির নির্দেশ দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। 

মূলত, সাম্প্রতিক সময়ে অধ্যাপক ডক্টর ইউনূসের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি দেন বিশ্বের দেড় শতাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি। সেই খোলা চিঠির প্রতিবাদ জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের সবাইকে সাক্ষর করার কথা বলা হলে ‘ইউনূসকে বিচারিক হয়রানি করা হয়েছে’ মন্তব্য করে এতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান সাক্ষর করা থেকে বিরত থাকেন। পরবর্তী ঐ ঘটনায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করা হয় এবং তিনি নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলে মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয়ের জন্য যান। যদিও পুলিশের আশ্বাসে তিনি আবার বাসায় ফিরেন। কিন্তু এই ঘটনার পরই ‘ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরানকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতায় তাকে ফাঁসির নির্দেশ’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি ইউটউবে প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান গ্রেফতার হননি এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতায় তাকে ফাঁসির নির্দেশও দেওয়া হয়নি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে গ্রেফতারের দাবিতে ভিডিও প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

সুতরাং, সদ্য বরখাস্তকৃত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরানকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

মির্জা ফখরুল ও রিজভীকে নিয়ে রুমিন ফারহানার নামে বিকৃত মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। যেখানে তিনি বলছেন, ‘মির্জা ফখরুল এবং রিজভী মিলে সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ি ভাঙচুর করছে।’

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বিএনপির দুই শীর্ষস্থানীয় নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং রুহুল কবির রিজভী মিলে সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ি ভাঙচুর করেছে এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে তার একটি দীর্ঘ ভিডিও থেকে কিছু অংশ কেটে আলোচিত দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে সমসাময়িক নানা বিষয়ে রুমিন ফারহানার ভিডিও প্রচার করা ফেসবুক পেজ Rumeen’s Voice এ গত ১৬ সেপ্টেম্বর ‘বিচারের নামে প্রহসন..এবার বিচার করতে হবে বিচারকদের’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটিতে বিচার বিভাগের সমালোচনা করতে গিয়ে রুমিন ফারহানা ১ মিনিট ৩১ সেকেন্ডে ঢাকা ট্রিবিউনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লিখিত একটি মামলার এজহার পড়ে শোনান।

Screenshot: Dhaka Tribune

প্রতিবেদনে প্রকাশিত মামলার এজহারকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর রাজধানীর পল্টন মডেল থানার মিন্টু রোডে মির্জা ফখরুল ইসলাম ও রিজভীর নেতৃত্বে ২০০-২৫০ নেতাকর্মী লাঠিসোঁটা নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। এ সময় তারা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লার গাড়ি ভাঙচুর করে এবং বিস্ফোরণ ঘটায়।’

এরপর তিনি ২ মিনিট ৫ সেকেন্ডের মাথায় পুনরায় এজহারটি নিজের ভাষায় পড়ে দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের কি মনে হচ্ছে না নূন্যতম কমনসেন্সে মামলাটি তৎক্ষণাৎ খারিজ হয়ে যাওয়ার কথা। 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, রুমিন ফারহানার আলোচনার ১ মিনিট ৩১ সেকেন্ড থেকে  ২ মিনিট ৫ সেকেন্ডের এই অংশটি থেকেই একটি খন্ডিত অংশ কেটে নিয়ে আলোচিত দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত গত ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন অভিযোগ গঠন করেন। 

মূলত, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর রাজধানীর পল্টন মডেল থানার মিন্টু রোডে মির্জা ফখরুল ইসলাম ও রিজভীর নেতৃত্বে ২০০-২৫০ নেতাকর্মী লাঠিসোঁটা নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লার গাড়ি ভাঙচুর ও বিস্ফোরণ ঘটানোর হয়েছে অভিযোগ করে ডিএসসিসির গাড়িচালক মো. আয়নাল একটি মামলা দায়ের করেন। ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর আদালতে এই মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়। সম্প্রতি গত ৩ সেপ্টেম্বর এই মামলায় ফখরুল-রিজভীসহ আটজনের বিচার শুরু হয়। এর প্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা একটি ভিডিওতে মামলার বিষয়বস্তু উল্লেখ করে বিচার বিভাগের সমালোচনা করেন। অনুসন্ধানে দেখা যায়, রুমিন ফারহানার এই সমালোচনামূলক বক্তব্যের ভিডিও থেকেই একটি অংশ কেটে নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ি ভাঙচুরের সাথে মির্জা ফখরুল ও রুহুল কবির রিজভী জড়িত এমন একটি মন্তব্য তার নামে ছড়ানো হচ্ছে। 

সুতরাং, বিচার বিভাগকে সমালোচনা করে ‘মির্জা ফখরুল এবং রিজভী মিলে সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ি ভাঙচুর করছে।’ শীর্ষক রুমিন ফারহানার দেওয়া বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ ইন্টারনেটে বিকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র

প্রথম আলো’র সংবাদ বিকৃত করে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর গুজব প্রচার 

0

সম্প্রতি, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মারা গেছেন‘ শীর্ষক দাবিতে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনের আদলে তৈরি একটি স্ত্রিনশট ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

খালেদা জিয়ার

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এছাড়া একই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আলোচিত স্ক্রিনশটটি স্টোরিতেও প্রচার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের(বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মারা যাননি এবং প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটেও এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে ‘খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে নেওয়া হলো’ শীর্ষক শিরোনামে প্রথম আলো’র ওয়েবসােইটে প্রকাশিত  একটি সংবাদের শিরোনাম বিকৃত করে এই ভুয়া তথ্যটি প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত স্ক্রিনশটটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। প্রথম আলোর ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনের আদলে তৈরি এই স্ক্রিনশটটিতে সংবাদ প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে স্ক্রিনশটে থাকা তারিখ এবং প্রথমআলোর লোগোর সূত্র ধরে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত সংবাদগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনামে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে একই দিনে ‘খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে নেওয়া হলো’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Prothomalo

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত স্ক্রিনশটের সংবাদের সাথে উক্ত সংবাদের প্রতিবেদকের ক্রেডিট লাইন, ফিচারে থাকা খালেদা জিয়ার ছবি  এবং ছবির নিচে উল্লিখিত ক্যাপশনের হুবহু মিল রয়েছে। 

Screenshot Comparison by Rumor Scanner

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদ্‌রোগে ভুগছেন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা। তবে গত ১৭ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় তাঁকে কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়েছে।

পরবর্তীতে,খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানে কোনো গণমাধ্যমে উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। এছাড়া, খালেদা জিয়ার পরিবার কিংবা বিএনপির পক্ষ থেকে এ ধরণের কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

তবে অনুসন্ধানে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিষয়ে গণমাধ্যমে দেওয়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়। গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সংকটমুক্ত নয় দাবি করে তাঁকে (খালেদা) বিদেশে চিকিৎসা করানোর স্বার্থে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। অন্যথায় যেকোনো পরিস্থিতির দায়দায়িত্ব সরকারকে বহন করতে হবে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।

অর্থাৎ, প্রথম আলোতে প্রকাশিত খালেদা জিয়ার সিসিইউতে নেওয়ার সংবাদটির শিরোনাম বিকৃত করে উক্ত দাবিতে আলোচিত স্ক্রিনশটটি তৈরি করা হয়েছে। 

মূলত, গত ৯ আগস্ট রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। তবে গত ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়। এ বিষয়ে গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর অনলাইন পোর্টালে ‘খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে নেওয়া হলো’ শীর্ষক শিরোনামে একটি নিউজ প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত সংবাদের একটি স্ক্রিনশট নিয়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এর শিরোনাম বিকৃতের মাধ্যমে ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মারা গেছেন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রথম আলোর সংবাদ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।

সুতরাং, মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলোকে উদ্ধৃত করে ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মারা গেছেন’ শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং ‍উক্ত দাবিতে প্রচারিত স্ত্রিনশটটি এডিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

সম্প্রতি মরক্কোয় ভূমিকম্পের পূর্বে আকাশে রহস্যময় আলো দাবিতে গণমাধ্যমে ভুল দৃশ্য প্রচার 

সম্প্রতি, ভূমিকম্পের পূর্বে মরক্কোর আকাশে রহস্যময় আলো দাবিতে দুইটি ছবি এবং একটি ভিডিও কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন সময় টিভি (১), ঢাকা পোস্ট, পদ্মা টাইমস২৪, সময় টিভি (ইউটিউব) (২), জুম বাংলা, চ্যানেল২৪ (ইউটিউব)। 

মরক্কো

উক্ত দাবিগুলোতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজসহ অন্যান্য অ্যাকাউন্টে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভূমিকম্পের পূর্বে মরক্কোর আকাশে রহস্যময় আলো দাবিতে প্রচারিত দুইটি ছবি এবং একটি ভিডিও মরক্কোর নয় বরং পুরোনো ও ভিন্ন স্থানের দুইটি ছবি এবং সিজিআই পদ্ধতিতে তৈরি একটি ফুটেজকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

ছবি যাচাই ১

এই ছবিটি মরক্কোর ভূমিকম্পের পূর্বে আকাশের দৃশ্য দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন সময় টিভি, ঢাকা পোস্ট, পদ্মা টাইমস২৪।

কিন্তু ছবিটি মরক্কোর নয়। 

এ বিষয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম CNN এর ওয়েবসাইটে গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। সিএনএন বলছে, ছবিটি ইকুয়েডরের গুওয়াকুইল নামক স্থানের। 

Screenshot: CN

অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিটি মরক্কো নয়, ইকুয়েডরের। 

ছবি যাচাই ২

Screenshot: YouTube 

এই ছবিটি মরক্কোর ভূমিকম্পের পূর্বে আকাশের দৃশ্য দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন সময় টিভি (ইউটিউব), জুম বাংলা।

কিন্তু এই ছবিটিও মরক্কোর নয়। 

এ বিষয়ে CNN এর একই প্রতিবেদনেই এই ছবিটিও খুঁজে পাওয়া যায়। সিএনএন বলছে, ছবিটি মেক্সিকোর।

Screenshot: CNN

অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিটি মরক্কো নয়, মেক্সিকোর। 

ভিডিও যাচাই ১

Screenshot: YouTube 

এই ভিডিও ফুটেজটি মরক্কোর ভূমিকম্পের পূর্বে আকাশের দৃশ্য দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন চ্যানেল২৪ (ইউটিউব)। 

কিন্তু দৃশ্যটি আসল নয়।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে টিকটকের একটি অ্যাকাউন্টে ২০২০ সালে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে উক্ত ফুটেজটি খুঁজে পাওয়া যায়। এটিসহ উক্ত অ্যাকাউন্টের অন্য ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, অ্যাকাউন্টটিতে মূলত কম্পিউটার জেনারেটেড (CG) ভিডিও প্রকাশ করা হয়। 

Screenshot: Tiktok

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিও ফুটেজটি বাস্তব না হলেও এটিকে মরক্কোর দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

মূলত, গত ৯ সেপ্টেম্বর মরক্কোর মধ্যাঞ্চলে ৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে প্রায় দুই হাজার জন মারা গেছে বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে মরক্কোর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। উল্লিখিত ভূমিকম্পের পূর্বে মরক্কোর আকাশে রহস্যময় আলো দাবিতে দুইটি ছবি এবং একটি ভিডিও সাম্প্রতিক সময়ে কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ছবি দুইটির একটি মেক্সিকোর এবং অন্যটি ইকুয়েডরের। তাছাড়া, একই দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাস্তব নয়, যা সিজিআই পদ্ধতিতে তৈরি করে ২০২০ সালে প্রকাশ করা হয়। 

উল্লেখ্য, মরক্কোর সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের দৃশ্য দাবিতে একাধিক পুরোনো ও ভিন্ন স্থানের ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচারের প্রেক্ষিতে সেসব বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।

সুতরাং, পুরোনো ও ভিন্ন স্থানের দুইটি ছবি এবং সিজিআই পদ্ধতিতে তৈরি একটি ফুটেজকে ভূমিকম্পের পূর্বে মরক্কোর আকাশে রহস্যময় আলো দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেত্রী সাই পল্লবীর সাথে পরিচালক পেরিয়াসামির বিয়ের গুজব

0

সম্প্রতি, দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেত্রী সাই পল্লবী এবং পরিচালক রাজকুমার পেরিয়াসামির গলায় মালা পরিহিত একটি ছবিকে তাদের বিয়ের ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

সাই পল্লবী

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত এই ছবিটি দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেত্রী সাই পল্লবী এবং পরিচালক রাজকুমার পেরিয়াসামির বিয়ের ছবি নয় বরং এটি সাই পল্লবীর পরবর্তী চলচ্চিত্র SK21-এ চুক্তিবদ্ধ হওয়ার সময়ে তোলা ছবি।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ভারতের তামিল সংবাদমাধ্যম Dinamani এর ওয়েবসাইটে গত ১২ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটির অনুরূপ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Dinamani News

সেখানে উল্লিখিত বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, পরিচালক রাজকুমার পেরিয়াসামির SK21 চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার সময়ে পেরিয়াসামি এবং সাই পল্লবীর এই ছবিটি তোলা হয়। এই চলচ্চিত্রটিতে সাই পল্লবীর বিপরীতে অভিনয় করবেন অভিনেতা শিবাকার্তিকেয়ন।

পরবর্তীতে, রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে পরিচালক রাজকুমার পেরিয়াসামির ভেরিফাইড এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে গত ০৯ মে সাই পল্লবীর জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে দেওয়া একটি পোস্টে দুই জনের বেশ কিছু ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। এই পোস্টের কোথাও তাদের বিয়ে সম্পর্কিত কোন বিষয়ের কথা পাওয়া যায়নি। 

Screenshot: Rajkumar Periasamy X(Former Twitter)

এই ছবিগুলোর মধ্যে আলোচিত ছবিটির পূর্ণদৈর্ঘ্যের মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Rajkumar Periasamy X(Former Twitter)

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত এই ছবিটি তাদের বিয়ের কোনো ছবি নয়।

তাছাড়া, রাজকুমার পেরিয়াসামি আগে থেকেই বিবাহিত। তিনি ২০১৮ সালে যশ্বিনি নামের এক নারীকে বিয়ে করেছেন।

পাশাপাশি, ভারতীয় গণমাধ্যম বা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেত্রী সাই পল্লবী এবং পরিচালক রাজকুমার পেরিয়াসামির বিয়ের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, চলতি বছরের মে মাসে দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেত্রী সাই পল্লবী পরিচালক রাজকুমার পেরিয়াসামির চলচ্চিত্র SK21 এ চুক্তিবদ্ধ হন। সেসময়ে এই মুভির কলাকুশলীদের সাথে সাই পল্লবী বেশকিছু ছবি তোলেন। সাই পল্লবীর সাথে পরিচালক রাজকুমার পেরিয়াসামির গলায় মালা পরিহিত একটি ছবিও তখন তোলা হয়৷ সম্প্রতি, সেই ছবিটি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে ক্রপ করে এই দুই তারকার বিয়ের ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও অভিনেত্রী সাই পল্লবী মুসলিম হওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার সময়ে তোলা দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেত্রী সাই পল্লবী এবং পরিচালক রাজকুমার পেরিয়াসামির গলায় মালা পরিহিত একটি ছবিকে তাদের বিয়ের ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

‘এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনা কবে যাবি’ শীর্ষক স্লোগান সম্বলিত প্রচারিত এই ভিডিওটি এডিটেড

0

সম্প্রতি, ‘এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনা কবে যাবি’ শীর্ষক শীরোনামে এক তরুণীর নেতৃত্বে এক দল তরুণীর স্লোগানের একটি ভিডিও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটক এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

এক দফা এক দাবি

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)।

ভিডিওতে যা বলতে শোনা যাচ্ছে

‘ভেঙ্গে দাও- গুড়িয়ে দাও, ভোট ডাকাতদের আস্তানা, ভেঙ্গে দাও- গুড়িয়ে দাও, আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙ্গে দাও- গুড়িয়ে দাও, এক দফা এক দাবি, শেখ হাসিনা কবে যাবি। হাসিনা তুই এখন যাবি, এক দফা এক দাবি।’

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনা কবে যাবি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড। প্রকৃতপক্ষে ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ভিন্ন একটি ভিডিও থেকে অডিও যুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

ভিডিও যাচাই

ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক ‘সমকাল’ এর ফেসবুক পেজে গত ১ সেপ্টেম্বর “ছাত্র সমাবেশে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগ নেত্রীদের মিছিল-স্লোগান” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিওতে ইডেন মহিলা শাখা ছাত্রলীগ কর্মীদের “জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ, নেতা মোদের শেখ মুজিব। ইডেন কলেজের মাটি, ছাত্রলীগের ঘাঁটি। … কোনো নেত্রী আছে? আছে। কোন সে নেত্রী? শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনা। ইডেন কলেজ, শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা, ইডেন কলেজ। বার বার দরকার, শেখ হাসিনা সরকার। উন্নয়নের সরকার, বার বার দরকার। মেট্রোরেলের সরকার, বার বার দরকার।” শীর্ষক স্লোগান দিতে শোনা যায়। 

সমকালের উক্ত ভিডিওর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার সংবাদমাধ্যম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এর ওয়েবসাইটে গত ০১ সেপ্টেম্বর “সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সমাবেশ আজ, চলছে নেতাকর্মীদের স্লোগান” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কর্তক ছাত্রসমাবেশের আয়োজন করা হয়। উক্ত সমাবেশের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

অডিও যাচাই

এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনা কবে যাবি শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ভিডিওটির অডিও অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে ‘ঝরনা চৌধুরী’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২৬ আগস্ট প্রকাশিত ভিডিওর অডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির অডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এটি বিএনপি কর্তৃক আওয়ামী লীগের বিপক্ষে আন্দোলনের ভিডিও। উক্ত ভিডিওর ১ থেকে ১৮ সেকেন্ড পর্যন্ত এক তরুণীর নেতৃত্ব একদল নেতা-কর্মীকে স্লোগান দিতে দেখা যায়। স্লোগানে বলতে শোনা যায়, “ভেঙ্গে দাও- গুড়িয়ে দাও, ভোট ডাকাতদের আস্তানা, ভেঙ্গে দাও- গুড়িয়ে দাও, আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙ্গে দাও- গুড়িয়ে দাও,। এক দফা এক দাবি, শেখ হাসিনা কবে যাবি। হাসিনা তুই এখন যাবি, এক দফা এক দাবি।”

অর্থাৎ, গত ১ সেপ্টেম্বর সমকালের ফেসবুক পেজে প্রচারিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত ছাত্রসমাবেশে ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগ কর্মীদের স্লোগানের ভিডিও সংগ্রহ করে বিএনপি কর্তৃক আওয়ামী লীগের বিপক্ষে আন্দোলনের স্লোগানের পুরোনো একটি ভিডিওর অডিও অংশ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওতে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

মূলত, গত ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত ছাত্রসমাবেশে ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগ কর্মীদের শেখ হাসিনা সরকারকে সমর্থন জানিয়ে দেওয়া স্লোগানের অডিও আওয়ামী লীগের বিপক্ষে বিএনপির আন্দোলনে দেওয়া স্লোগানে বিএনপির নেতা কর্মীদের “এক দফা এক দাবি হাসিনা তুই এখন যাবি, এক দফা এক দাবি হাসিনা তুই কবে যাবি?” শীর্ষক স্লোগানের অডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে ছাত্রলীগ নেত্রীদের স্লোগান বিকৃত করে প্রচার করা হলে বিষয়টি শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনটি দেখুন-

সুতরাং, ‘এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনা কবে যাবি’ শীর্ষক স্লোগান শিরোনামে  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে ডলার গায়েবের ঘটনা ঘটেনি

0

সম্প্রতি, “বাংলাদেশ ব্যাংকের ভোল্ট থেকে ডলার গায়েব! পরিমাণ কত এখনো জানা যায়নি” শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে ডলার গায়েব হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত এই দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ফেসবুকের নিজস্ব মনিটরিং টুলস ক্রাউডট্যাংগেল ব্যবহার করে জানা যায়, Maruf Sikder’ নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে ডলার গায়েব শীর্ষক দাবিতে সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়। লক্ষ্য করে দেখা যায়, উক্ত পোস্ট তিনি কোনো তথ্যসূত্র ব্যবহার করা হয়নি।

Screenshot from facebook

এছাড়া একই দাবিতে অন্যান্য ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত পোস্টে কোনো তথ্যসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে দাবিটি নিয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও দেশের কোনো নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যম সূত্রেও বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে ডলার গায়েব হওয়ার ব্যাপারে কোনো তথ্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকে পূর্বে অর্থাৎ ২০১৬ সালে রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটেছিল। তবে তা ভল্ট থেকে নয়। এ বিষয়ে জাতীয় দৈনিক ‘প্রথম আলো’ এর অনলাইন ভার্সনে ২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন এখানে।  

মূলত, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে ডলার গায়েব শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়তে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো কোনো প্রকার তথ্যসূত্র ছাড়াই প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, গত ০৩ সেপ্টেম্বর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুল্ক বিভাগের গুদামে থাকা লকার থেকে ৫৫ কেজির বেশি স্বর্ণ চুরির ঘটনা ঘটে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য প্রচার করা হলে সেই বিষয়গুলো চিহ্নিত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদন গুলো দেখুন,

সুতরাং, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে ডলার গায়েব শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

৫০ হাজার নয়, এশিয়া কাপ ফাইনালে ম্যাচসেরার উপহার পাঁচ হাজার ডলার মাঠকর্মীদের দিয়েছেন ভারতের সিরাজ

0

সম্প্রতি, চলতি বছরের এশিয়া কাপে ভারত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ম্যান অফ দা ম্যাচের পুরো ৫০ হাজার ডলার মাঠকর্মীদের উপহার দিয়েছেন ভারতের ক্রিকেটার মোহাম্মদ সিরাজ শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ম্যাচসেরার উপহার

ফেসবুক প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)।

সিরাজ সাড়ে ৫ কোটি টাকা উপহার দিয়েছেন এমন দাবিতে ফেসবুক পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মোহাম্মদ সিরাজের ৫০ হাজার ডলার মাঠকর্মীদের উপহার দেওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং সিরাজ সেদিন প্রাইজমানি হিসেবে পাঁচ হাজার ডলার পান এবং সেই টাকা তিনি মাঠকর্মীদের উপহার দেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তথ্যটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘The Statesman’ এর ওয়েবসাইটে গত ১৭ সেপ্টেম্বর “Asia Cup: Siraj dedicates MoM prize money worth Rs 4.15 lakh to Colombo ground staff” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘The Statesman’

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা এশিয়া কাপ ফাইনাল-২০২৩ এ প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটার মোহাম্মদ সিরাজ। প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচের প্রাইজমানি হিসেবে তিনি পাঁচ হাজার ডলার পেয়েছিলেন এবং সেই সম্পূর্ণ টাকা তিনি মাঠকর্মীদের উপহার দিয়ে দেন।

ক্রিকেট বিষয়ক গণমাধ্যম ‘ESPN CricInfo’ এর ওয়েবসাইটে একইদিন (১৭ সেপ্টেম্বর) “They deserve it fully’ – Siraj donates Asia Cup final prize money to groundspersons” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও একই তথ্য উল্লেখ রয়েছে। 

Screenshot from ESPNCricinfo

এছাড়া উক্ত প্রতিবেদন আরও জানা যায়, পুরো এশিয়া কাপে মাঠকর্মীদের অবদানস্বরূপ এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল এর পক্ষ থেকে তাদের ৫০ হাজার ডলার উপহার দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সিরাজের দেওয়া বক্তব্য থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

মূলত, গত ১৭ সেপ্টেম্বর ভারত বনাম শ্রীলঙ্কার মধ্যকার এশিয়া কাপ ফাইনাল-২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়। সেই ম্যাচে ভারতের ক্রিকেটার মোহাম্মদ সিরাজ প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ হিসেবে পাঁচ হাজার ডলার প্রাইজমানি পান। সিরাজ তার এই পুরস্কারের পুরো অংশ মাঠকর্মীদের উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু ফেসবুকে দাবি করা হয়েছে, সিরাজ ৫০ হাজার ডলার মাঠকর্মীদের উপহার দিয়েছেন, যা সত্য নয়। তবে এই টুর্নামেন্টে মাঠকর্মীদের উল্লেখযোগ্য অবদান থাকার কারণে খেলা শেষে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল এর পক্ষ থেকে তাদের জন্য ৫০ হাজার ডলার পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, ১৭ সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত ভারত বনাম শ্রীলঙ্কার মধ্যকার এশিয়া কাপ ফাইনাল-২০২৩ খেলায় ভারত ১০ উইকেটে জয় লাভ করে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য প্রচার করা হলে বিষয়টি শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ভারতের ক্রিকেটার মোহাম্মদ সিরাজ এশিয়া কাপে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচের প্রাইজমানি হিসেবে পাওয়া পাঁচ হাজার ডলার মাঠকর্মীদের উপহার দেওয়ার তথ্যকে ৫০ হাজার ডলার উপহার দিয়েছেন শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

কালবেলার নকল ফটোকার্ডে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা রাকিবকে জড়িয়ে প্রচারিত তথ্যটি অধিকাংশ মিথ্যা

0

সম্প্রতি ‘বিএনপির ছাত্রদল নেতার জন্মদিন পালন করতে কুড়িগ্রামে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল হাসান রাকিব’ শীর্ষক শিরোনামে জাতীয় দৈনিক কালবেলার আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট  (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছাত্রদল নেতার জন্মদিন পালন করতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতার কুড়িগ্রামে যাওয়ার দাবিতে  দৈনিক কালবেলার নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া। এছাড়া রাব্বি ইসলাম বাঁধন পূর্বে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও বর্তমানে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।

কালবেলার ফটোকার্ডটি বানোয়াট 

অনুসন্ধানের শুরুতে ফেসবুকে প্রচারিত কালবেলার ফটোকার্ডটির সত্যতা সম্পর্কে যাচাইয়ে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে ১৬ সেপ্টেম্বর তারিখ উল্লেখ রয়েছে। 

এই তারিখ সূত্রে কালবেলার ফেসবুক পেজ কালবেলা নিউজ, কালবেলা অনলাইনকালবেলা ওয়ার্ল্ড ঘুরে উক্ত তারিখে গণমাধ্যমটি কর্তৃক প্রকাশিত এমন কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।  

এছাড়া ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে কালবেলার ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ড বিশ্লেষণ করে দুই ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টে বৈসাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

এসব থেকে প্রতীয়মান হয় যে,  ছাত্রদল নেতার জন্মদিন পালন করতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতার কুড়িগ্রামে যাওয়ার দাবিতে দৈনিক কালবেলার নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া।

রাব্বি ইসলাম বাঁধনের রাজনৈতিক পরিচয়

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত পোস্টগুলোর সূত্রে দেখা যায়, রাব্বি ইসলাম বাঁধনকে কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রদলের ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দাবি করা হচ্ছে।

এ নিয়ে অনুসন্ধানে ২০১৭ সালের ২৩ এপ্রিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের তৎকালীন সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আকরামুল হাসান স্বাক্ষরিত কুড়িগ্রাম জেলা শাখা ছাত্রদলের একটি তালিকা খুঁজে পাওয়া যায়। এ তালিকাটি খুঁজে দেখা যায়, এতে ৫ নং যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে রাব্বি ইসলাম বাঁধনের নাম রয়েছে। 

Image: collected from facebook

এছাড়া সে সময়ে একইদিনে অনলাইন পোর্টাল জাগো নিউজে ‘ছাত্রদলের ৭ ইউনিটের নতুন কমিটি ঘোষণা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও ৫ নং যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে তার নাম খুঁজে পাওয়া যায়। পাশাপাশি ২০১৮ সালে ঘোষিত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কুড়িগ্রাম জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও  (আর্কাইভ) ৫ নং যুগ্ম সম্পাদক হিসেবেই তার নাম খুঁজে পাওয়া যায়।

Image: collected from facebook

অর্থাৎ রাব্বি ইসলাম বাঁধন কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রদলের ১নং যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন না। তবে এ পর্যন্ত অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয় যে, রাব্বি ইসলাম বাঁধন নামে এক ব্যক্তি কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রদলের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

পরবর্তীতে রাব্বি ইসলাম বাঁধন নামের এই ব্যক্তিই সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত রাব্বি ইসলাম বাঁধন কিনা সে বিষয়ে অধিকতর নিশ্চয়তার জন্য অনুসন্ধানে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য আল আমিনের ‘ভুরুঙ্গামারী‌তে আমরাই ছাত্রদল প‌রিবারের একাংশ’ শীর্ষক একটি পোস্টে  রাব্বি ইসলাম বাঁধনের একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook post 

এছাড়া জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব তারেকসহ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অভিনন্দন জানিয়ে করা জেলা ছাত্রদলের কর্মসূচিতে রাব্বি ইসলাম বাঁধনের একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়, যেটি সেসময় জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আমিমুল ইহছান তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টেই পোস্ট করেছিলেন।

Screenshot: Facebook post 

এসব পোস্ট থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রদলের কমিটিতে থাকা রাব্বি ইসলাম বাঁধনই আলোচিত রাব্বি ইসলাম বাঁধন। 

অপরদিকে বাঁধনের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে অনুসন্ধানে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ঘুরে দেখা যায়, তিনি অন্তত ২০২২ সাল থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। 

Screenshot: Facebook post  

তার ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে  (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে  (আর্কাইভ)। 

এছাড়া কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি রাজু আহমেদ কর্তৃক ২০২২ সালে রাব্বি ইসলাম বাঁধনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এসব পোস্ট থেকে প্রতীয়মান তিনি পূর্বে ছাত্রদলের রাজনীতি ও সংগঠনটির কুড়িগ্রাম জেলা শাখার ৫ নং যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও বর্তমানে তিনি সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। 

মূলত, গত ১৫ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগ কর্মী রাব্বি ইসলাম বাঁধনের জন্মদিন ছিল। তার এ জন্মদিনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ সভাপতি রাকিবুল হাসান রাকিব। তার এ উপস্থিতিকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক কালবেলার আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড সূত্রে ছাত্রদল নেতার জন্মদিন পালন করতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতার কুড়িগ্রামে যাওয়ার একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত দাবিতে কালবেলাকে উদ্ধৃত করে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া। পাশাপাশি ফটোকার্ডটিতে যে ব্যক্তিকে ছাত্রদল নেতা হিসেবে দাবি করা হয়েছে তার প্রসঙ্গে জানা যায়, তিনি পূর্বে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও অন্তত ২০২২ সাল থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। 

সুতরাং, ছাত্রদল নেতার জন্মদিন পালন করতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল হাসান রাকিবের কুড়িগ্রামে গিয়েছেন দাবিতে দৈনিক কালবেলাকে উদ্ধৃত করে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া এবং প্রচারিত ফটোকার্ডে উল্লিখিত তথ্যটি অধিকাংশ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কালবেলা’র ফটোকার্ড নকল করে প্রধানমন্ত্রীর নামে ভুয়া তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি, জাতীয় দৈনিক ‘কালবেলা’র সূত্রে সরকারি ওয়েবসাইটে প্রধানমন্ত্রীর নামের পাশে ‘ভোট চোর’ শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সরকারি ওয়েবসাইটে প্রধানমন্ত্রীর নামের পাশে ‘ভোট চোর’ শীর্ষক শিরোনামে দৈনিক কালবেলা কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি এবং বাস্তবে এমন কোনো ঘটনাও ঘটেনি বরং গত ১৭ সেপ্টেম্বর কালবেলার ফেসবুক পেজে ‘সরকারি ওয়েবসাইটে চেয়ারম্যানের নামের পাশে ‘ভোট চোর’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ফটোকার্ডের শিরোনাম বিকৃত করে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে কালবেলার আদলে তৈরি আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩।

Screenshot: Facebook

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ এবং কালবেলার লোগোর সূত্র ধরে কালবেলার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ১৭ সেপ্টেম্বর প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও কালবেলার ওয়েবসাইট কিংবা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। 

তবে  একই দিনে কালবেলার ফেসবুক পেজে সরকারি ওয়েবসাইটে চেয়ারম্যানের নামের পাশে ‘ভোট চোর’ শীর্ষক শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড এবং এর কমেন্টে একই শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে স্থানীয় এক তথ্যপ্রত্যাশী জাতীয় তথ্য বাতায়নের লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের অপশনে প্রবেশ করলে পরিষদের চেয়ারম্যানের নামের পাশে ‘ভোট চোর’ শব্দটি দেখতে পান। পরে তিনি তার নিজের ফেসবুক আইডিতে এ সংক্রান্ত একটি স্ট্যাটাস দিলে তা মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়, যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। 

অর্থাৎ, কালবেলার ফেসবুক পেজে ১৭ সেপ্টেম্বর প্রচারিত এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম এবং ছবি এডিট করে তাতে ‘সরকারি ওয়েবসাইটে প্রধানমন্ত্রীর নামের পাশে ‘ভোট চোর’ শীর্ষক শিরোনাম ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রচার করা হচ্ছে।

 Photocard Comparison by Rumor Scanner 

মূলত, গত ১৫ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের  এক তথ্যপ্রত্যাশী জাতীয় তথ্য বাতায়নের উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের অপশনে প্রবেশ করলে পরিষদের চেয়ারম্যানের নামের পাশে ‘ভোট চোর’ শব্দটি দেখতে পান। পরে তিনি তার নিজের ফেসবুক আইডিতে উক্ত তথ্যটি জানিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন।এরই প্রেক্ষিতে ১৭ সেপ্টেম্বর দৈনিক পত্রিকা কালবেলার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘সরকারি ওয়েবসাইটে চেয়ারম্যানের নামের পাশে ভোট চোর’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড প্রচারিত হয়। পরবর্তীতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত ফটোকার্ডের শিরোনাম এবং ছবি বিকৃতের মাধ্যমে ‘সরকারি ওয়েবসাইটে প্রধানমন্ত্রীর নামের পাশে ‘ভোট চোর’ শীর্ষক শিরোনামে কালবেলার ফটোকার্ড দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও কালবেলাকে সূত্র উল্লেখ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয় এবং তা নিয়েও ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। এমন তিনটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলাকে উদ্ধৃত করে ‘সরকারি ওয়েবসাইটে প্রধানমন্ত্রীর নামের পাশে ‘ভোট চোর’ শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র