সম্প্রতি, ‘আওয়ামী লীগের ভোট চোরির কি যোগ্যতা জীবনে প্রথম দেখলাম’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে।
ভিডিওটির বাম পাশে ঢাকা-১৭ আসনে ভোট সুষ্ঠু না হলে ডিএমপি কমিশনারের নাকে খত দিয়ে পদত্যাগের ঘোষণার একটি তথ্য দেখা যাচ্ছে এবং অপরপাশে একজন ব্যক্তিকে দ্রুত কাগজে সিল মারতে দেখা যাচ্ছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোট সুষ্ঠু না হলে ডিএমপি কমিশনারের নাকে খত দিয়ে পদত্যাগের ঘোষণার বিষয়টি সত্য হলেও উক্ত দাবির সাথে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নির্বাচনে ভোটের অনিয়মের ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, এক ব্যক্তি কর্তৃক অফিশিয়াল নথিপত্রে দ্রুত সিল মারার পুরোনো ভাইরাল একটি ভিডিওতে উক্ত শিরোনাম যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
মূলত, গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহম্মদ আলী আরাফাত জয় লাভ করেন। এর আগে গত ৪ জুলাই ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোট সুষ্ঠু না হলে নাকে খত দিয়ে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার-ই প্রেক্ষিতে ডিএমপি কমিশনারের নাকে খত দেওয়ার বক্তব্যের অংশ এবং এক ব্যক্তির কাগজে দ্রুত সিল মারার একটি ভিডিও একত্রিত করে এটিকে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট চুরির ভিডিও বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধান দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও ২০১৭ সাল থেকে ভারত ও পাকিস্তানের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে বিদ্যমান রয়েছে। উক্ত ভিডিওটির সাথে বাংলাদেশের নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রসঙ্গত, গত ০৫ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনে উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণের সময় চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আজাদ হোসেন কর্তৃক প্রকাশ্যে ৫৭ সেকেন্ডে ৪৩টি ব্যালটে নৌকা প্রতীকে সিল মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় অভিযুক্ত আজাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়া একই দিনে অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে অবৈধভাবে ব্যালটে নৌকা প্রতীকে সিল মারার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এসব ঘটনায় গত ০৭ নভেম্বর এই দুই আসনে উপনির্বাচনের ফল স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন।
উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে ভিডিওটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।