Home Blog Page 592

আল-আকসা মসজিদের ইমামকে মেরে ফেলার দাবিটি মিথ্যা

সম্প্রতি,‘আল-আকসা মসজিদের ইমামকে মেরে ফেলেছে ইসরায়েল’ শীর্ষক দাবিতে একটি লাশ বহন করে নিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

Screenshot from Facebook

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক আল-আকসা মসজিদের ইমাম হামলার শিকার হয়ে মারা যাননি বরং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে আল-আকসা মার্টায়ার ব্রিগেড কমান্ডার ইব্রাহিম আল-নাবুলসির মৃতদেহ বহন করে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া, আল-আকসা মসজিদের ইমাম সুস্থ আছেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির কি-ফ্রেম থেকে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ২০২২ সালের ৯ আগস্ট ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম ‘Haaretz’ এ “Two Palestinian Militants, 16-year-old Killed During Israeli Military Raid in Nablus” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের একটি ছবির সাথে উক্ত দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটির একট স্থিরচিত্রের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Collage by Rumor Scanner

ছবিটির ক্যাপশনে লেখা ছিল, মঙ্গলবার শোকাহতরা আল-আকসা মার্টায়ার ব্রিগেড কমান্ডার ইব্রাহিম আল-নাবুলসির মরদেহ বহন করছে।

কী-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ২০২২ সালের ৯ আগস্ট ‘Al Jazeera’ তে “Israeli forces kill al-Aqsa Brigades commander in Nablus raid” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক আল-আকসা মার্টায়ার ব্রিগেড কমান্ডার ইব্রাহিম আল-নাবুলসির মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

Screenshot from Al Jazeera

অর্থাৎ, ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে আল-আকসা মার্টায়ার ব্রিগেড কমান্ডার ইব্রাহিম আল-নাবুলসির মৃতদেহ বহন করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

পরবর্তীতে আল-আকসা মসজিদের ইমামের সাম্প্রতিক অবস্থার বিষয়ে নিশ্চিত হতে অনুসন্ধান করে গত ২২ এপ্রিল সৌদি আরব ভিত্তিক ফেসবুক পেজ ‘Haramain Sharifain’ এ একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিও বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পবিত্র মক্কার মসজিদুল হারামের ইমাম শেখ সুদাইসের সাথে ঈদুল ফিতরে দেখা করেছেন আল আকসার ইমাম। 

Screenshot from Facebook

অর্থাৎ, আল-আকসা মসজিদের ইমাম মারা যাননি। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন।

মূলত, ২০২২ সালে ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক আল-আকসা মার্টায়ার ব্রিগেড কমান্ডার ইব্রাহিম আল-নাবুলসির মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে তার লাশ বহনকারী ভিডিওটি সম্প্রতি ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক আল-আকসা মসজিদের ইমামের মৃত্যুর পর তার লাশ বহন করে নিয়ে যাওয়ার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু দাবিটি সঠিক নয়। তাছাড়া, আল-আকসার ইমামের সাম্প্রতিক অবস্থা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তিনি সুস্থ রয়েছেন। 

প্রসঙ্গত, পূর্বেও আল-আকসা মসজিদে হামলা নিয়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর ছবি ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৯ জুলাই ইসরায়েলি পুলিশ কর্তৃক তৎকালীন আল-আকসা মসজিদের ইমাম শেখ ইকরিমা সাবরি আহত হন।

সুতরাং, ‘আল-আকসা মসজিদের ইমামকে মেরে ফেলেছে ইসরায়েল’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইদ বানান নিয়ে মারামারি শীর্ষক দাবিটি স্যাটায়ার 

0

সম্প্রতি, ফেসবুকে ‘Eid এর বাংলা বানান “ইদ” নাকি,”ঈদ” এ নিয়ে মারামারি। লুঙ্গীসহ পাঞ্জাবি ছিঁড়েছে ৩ জনের’ শীর্ষক দাবিতে একটি পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে। 

ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে কিছু মানুষের মারামারির একটি ছবিও যুক্ত করা হয়েছে। 

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot source: Rumor Scanner

একই দাবি ছবি ছাড়া শুধু পোস্ট হিসেবেও ছড়িয়েছে ফেসবুকে। দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot source: Rumor Scanner

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইদ বানান নিয়ে মারামারি হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং গত বছরের অক্টোবরে বরিশালে শ্রমিক দলের বিভাগীয় প্রস্তুতি সভায় মারামারির একটি ছবি ব্যবহার করে ছড়িয়ে পড়া পোস্টটি মূলত সার্কাজম বা স্যাটায়ার। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে, শুরুতে কি ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে দেশীয় গণমাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে এমন কোনো খবর প্রকাশ হয়েছে কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধান করে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন কি ওয়ার্ড সার্চ করে উক্ত দাবির পক্ষে নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র ছাড়াই ইদ বানান নিয়ে মারামারি হয়েছে শীর্ষক দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছে।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধান 

ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্টে একটি ছবি রয়েছে যেখানে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি মারামারি করছেন। ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে জাতীয় দৈনিক সমকাল পত্রিকার ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উক্ত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।  

প্রতিবেদন এবং ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, বরিশালে ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ উপলক্ষে আয়োজিত শ্রমিক দলের বিভাগীয় প্রস্তুতি সভায় মারামারির ঘটনার ছবি এটি। 

Screenshot source: Samakal

অর্থাৎ, পুরোনো এবং ভিন্ন একটি ঘটনার ছবি ইদ বানান নিয়ে মারামারির ছবি দাবিতে ছড়িয়ে পড়েছে। 

বিভ্রান্তির নমুনা

আলোচ্য ডিজিটাল ব্যানারটিতে ইদ বানান নিয়ে মারামারি হয়েছে শীর্ষক দাবিটি প্রচার করা হলে বাংলাদেশের অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী বিষয়টি যথাযথ যাচাই না করে ফেসবুকে প্রচার করেছেন। ফলে, অনেকে বিষয়টি সত্য ভেবে নিয়ে বিভ্রান্ত হয়েছেন।

বিভ্রান্তির নমুনা দেখুন ছবিতে – 

Screenshot Collage: Rumor Scanner

মূলত, ইদ বানান নিয়ে মারামারি হয়েছে শীর্ষক দাবির প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, বাস্তবে সাম্প্রতিক সময়ে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। গত বছরের অক্টোবরে বরিশালে শ্রমিক দলের বিভাগীয় প্রস্তুতি সভায় মারামারির একটি ছবি ব্যবহার করে উক্ত পোস্টটি স্যাটায়ার হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলা একাডেমির ‘আধুনিক বাংলা অভিধানে’ ‘ঈদ’ শব্দটির ভুক্তি রয়েছে দু’টি। এর মধ্যে একটি লেখা হয়েছে ‘ঈ’ ব্যবহার করে, অন্যটি ‘ই’ ব্যবহার করে। এর মধ্যে ‘ঈদ’কে প্রচলিত ও অসংগত বানান এবং ‘ইদ’কে সংগততর ও অপ্রচলিত বানান বলছে বাংলা একাডেমি। 

Screenshot source: BDTimes365

তবে, বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান অবশ্য ২০১৭ সালে এক ফেসবুক পোস্টে (আর্কাইভ) এই দুটো বানান ব্যবহারের ক্ষেত্রেই মত দিয়েছেন।

সুতরাং, ইদ বানান নিয়ে মারামারি হয়েছে শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে; যা মূলত স্যাটায়ার।

তথ্যসূত্র

হৃত্বিক রোশান ফিলিস্তিনের সমর্থনে কোনো ভিডিও প্রকাশ করেননি 

সম্প্রতি, বলিউড তারকা হৃত্বিক রোশান “ফিলিস্তিনের সাথে অনেক খারাপ হচ্ছে। কিন্তু আপনাদের আমি সমর্থন করছি। ফিলিস্তিনকে আমি ভালোবাসি।” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot from Tiktok

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, হৃত্বিক রোশান ফিলিস্তিনের সমর্থনে সম্প্রতি কোনো ভিডিও প্রকাশ করেননি বরং হৃত্বিকের একটি ভিডিওতে টিকটক ফিল্টার ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে, ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে ‘Hrithik Roshan’ এর অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে ২০২০ সালের ২৭ মার্চ “इन बड़ों को जगाना है। A message from me to all my young friends out there. You can be the hope and the heroes in this fight. @mybmc  #indiavscorona #stayhomesavelives #indiafightscorona” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়, যার সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

Screenshot Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, হৃত্বিক রোশান সেদিন ভিডিওটিতে কোভিড-১৯ প্রসঙ্গে কথা বলেন। সেখানে তিনি করোনাকালীন সতর্কতা এবং করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন। তবে ভিডিওতে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

অনুসন্ধানের মাধ্যমে একইদিনে অর্থাৎ ২০২০ সালের ২৭ মার্চ ‘Hrithik Roshan’ এর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টেও একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, হৃত্বিক রোশান ফিলিস্তিনের সমর্থনে কোনো ভিডিও প্রকাশ করেননি।
 
এছাড়া, হৃত্বিক রোশানের একই ভিডিও (২০২০ সালের ২৭ মার্চ প্রকাশিত) ব্যবহার করে “আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি” শীর্ষক দাবি ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot from Facebook

অনুসন্ধানে টিকটক অ্যাপে একটি ফিলিস্তিন পতাকা এবং আরবিতে ফিলিস্তিন লেখা সহ ‘Palestine’ নামে একটি ফিল্টার পাওয়া যায়। উক্ত ফিল্টার ব্যবহার করে হৃত্বিক রোশানের করোনাকালীন টুইটারে সতর্কতামূলক ভিডিও বার্তা এডিট করে এমনটা করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।

Screenshot from Tiktok

একই ফিল্টার ব্যবহার করে অন্যান্য টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকেও একইরকম কন্টেন্ট (,,) তৈরি হয়েছে।

Screenshot from Tiktok

ইন্টারনেটের বিভিন্ন টুলস ব্যবহার করে অনুসন্ধানে, হৃত্বিক রোশানের টিকটক অ্যাকাউন্ট রয়েছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকসহ ইন্টারনেটে বলিউড তারকা হৃত্বিক রোশান ফিলিস্তিনকে সমর্থন করছেন দাবি করে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, হৃত্বিক রোশান ফিলিস্তিনের সমর্থনে কোনো ভিডিও প্রকাশ করেননি। হৃত্বিক রোশানের ফিলিস্তিনকে সমর্থনের যে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে সেটি হৃত্বিকের পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনার একটি ভিডিওতে টিকটক ফিল্টার ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বলিউড তারকা অক্ষয় কুমার ফিলিস্তিনের সমর্থনে ভিডিও প্রকাশ করেছেন শীর্ষক একটি ভুয়া দাবি ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

প্রসঙ্গত, গত ০৫ এপ্রিল ইসরায়েলি পুলিশ আল আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনিদের নামাজরত অবস্থায় হামলা করলে সেই বিষয়টি নিয়ে অনেকেই ইন্টারনেটে নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

সুতরাং, ভারতীয় অভিনেতা হৃত্বিক রোশান ফিলিস্তিনকে সমর্থন করেছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে; যা এডিটেড।

তথ্যসূত্র

হযরত ফাতেমা (রাঃ) এর বাড়ি দাবিতে তুরস্কে অবস্থিত ভিন্ন বাড়ির ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, হযরত ফাতেমা (রাঃ) এর বাড়ি দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

Screenshot from Facebook

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া এমব কিছু পোস্ট দেখুনঃ এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভাইরাল ফেসবুক পোস্টগুলোতে হযরত ফাতেমা (রাঃ) এর বাড়ি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি হযরত ফাতেমা (রাঃ) এর বাড়ির নয় বরং এটি তুরস্কের সানলিউরফা প্রদেশের হাররান অঞ্চলে অবস্থিত একটি বাড়ির ছবি। উক্ত বাড়িটির সাথে হযরত ফাতিমা (রাঃ) এর কোনো সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম। 

হযরত ফাতেমা (রাঃ) এর বাড়ি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সম্পর্কে বিস্তারিত অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘Adil Hafiza’ নামের একটি টুইটার আইডি থেকে “Harran evleri #Sanliurfa” ক্যাপশনে করা একটি টুইট বার্তার সন্ধান পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। 

উক্ত টুইট বার্তায় সংযুক্ত ছবি এবং ফেসবুকে হযরত ফাতেমা (রাঃ) এর বাড়ি দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলোতে সংযুক্ত ছবির তুলনা করার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় যে দুটি ছবি একই স্থান থেকে তোলা হয়েছে। 

Image Comparison by Rumor Scanner

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, Sanliurfa হচ্ছে তুরস্কের একটি প্রদেশ এবং Harran এই প্রদেশেরই একটি শহরের নাম। তুর্কি শব্দ evleri এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে House (বাংলায়ঃ বাড়ি)। অর্থাৎ উক্ত টুইট দ্বারা মূলত তুরস্কের সানলিউরফা প্রদেশের হাররান অঞ্চলে অবস্থিত একটি বাড়িকে বোঝানো হয়েছে। 

তাছাড়া, হাররানে অবস্থিত এই বাড়ি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে turktoyu.com নামক ওয়েবসাইট কর্তৃক Domed Harran Houses শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি আর্টিকেল খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানেও ফাতেমা (রাঃ) বাড়ি দাবিতে প্রচারিত ছবিটির ন্যায় একই রকম দেখতে অন্য আরেকটি ছবি রয়েছে। 

Image Comparison by Rumor Scanner

উক্ত আর্টিকেলে বলা হয়, এথেন্স এবং মার্ডিনের শহরগুলোর মতো একসময়ের “বিজ্ঞান কেন্দ্র” হিসেবে পরিচিত Harrnan ছিলো একটি সুপ্রতিষ্ঠিত জনবসতি যেখানে শতাব্দী ধরে বহু সভ্যতা গড়ে উঠেছে। 

গম্বুজযুক্ত বাড়িগুলো হাররানের অন্যতম ঐতিহ্যের প্রতীক যা খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। এটি একটি স্থানীয় স্থাপত্যের উদাহরণ যার অস্তিত্ব রক্ষার্থে ১৯ শতকে এটিকে পুনরায় সংস্করণের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং এখনও সানলিউরফার দক্ষিণ-পূর্বে এই বাড়িগুলো ব্যবহৃত হয়ে আসছে। 

Screenshot Source: Turktoyu

উক্ত আর্টিকেলে আরো বলা হয়, হাররানের বাড়িগুলোর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে একটি হল এগুলোর গম্বুজে কোনো প্রকার গাছ ব্যবহার করা হয় না। মরুভূমির পরিবেশে গাছের সংকট হওয়ার কারণে গম্বুজ নির্মাণে ইটের ব্যবহারকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। তাছাড়া এই এলাকায় ইট ছিলো সহজলভ্য। 

সাধারণত ৩০-৪০টি ইটের সারির মাধ্যমে গড়ে ওঠা এই ঘরগুলোর সর্বোচ্চ উচ্চতা ৫ মিটার। অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক পৃষ্ঠগুলোতে মূলত স্লাইম প্লাস্টার করা হতো। গ্রীষ্মকালে নিজেদের  শীতল এবং শীতকালে উষ্ণ রাখতে সক্ষম এই বাড়িগুলো ১৯৮৯ সাল থেকে সুরক্ষার অধীনে রয়েছে। এই স্থান থেকে কোনোপ্রকার উপকরণ সংগ্রহ করা, চ্যানেল খনন করা এবং নতুন নির্মাণ নিষিদ্ধ। তবে এই বাড়িগুলোর মধ্যে একটিকে ১৯৯৯ সালে পুনরধিষ্ঠিত করার মাধ্যমে “Harran Culture House” নামে পর্যটনের পরিষেবায় রাখা হয়েছিল।

Screenshot Source: Turktoyu

তাছাড়া, হাররানের এই বাড়িগুলোর ইতিহাস, নির্মাণশৈলী এবং শীত-গ্রীষ্মে কীভাবে এদের ভেতরের পরিবেশের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকতো সে ব্যাপারে অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার টিম Vernacular domed houses of Harran, Turkey শিরোনামে একটি রিসার্চ আর্টিকেল খুঁজে পায়। 

উক্ত আর্টিকেলের সূচনাতে বলা হয়, হাররান হলো তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বে ইউফ্রেটিস এবং টাইগ্রিস নদীর মধ্যবর্তী একটি সমতল ভূমির শহর যা  তার আকর্ষণীয় স্থানীয় স্থাপত্য-শৈলীর দ্বারা সহজেই মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করে। সচরাচর এই ধরণের স্থাপত্য তুরস্কের আর কোথাও দেখা যায়না, যেখানে মূল নির্মাণ সামগ্রী হচ্ছে রোদে শুকানো ইট (Adobe)। বর্তমানে এই ধরনের স্থাপত্য কেবলমাত্র দক্ষিণ ইতালি, সাইপ্রাস, এবং লিবিয়ার ফেজান ও কুফরা এলাকাতেই দেখা যায়।

উক্ত আর্টিকেলে আরো উল্লেখ করা হয়, হাররানের শঙ্কু আকৃতিযুক্ত গম্বুজ-ঘরগুলোর শিকড় বোঝার জন্য হাররানের ইতিহাসের দিকে একটু নজর দেওয়া প্রয়োজন। হাররান সম্পর্কে আমাদের এখন পর্যন্ত জানা লিখিত নথিগুলো এটাই নির্দেশ করে যে এর ইতিহাস ২৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মতো। উর্বর ভূমি এবং বাণিজ্যপথে এর অবস্থান হওয়ার কারণে, অনেক সভ্যতা হাররানে বিকাশ লাভ করেছে।

Screenshot Source: Vernacular domed houses of Harran, Turkey

এছাড়া আরো বলা হয় যে, মেসোপটেমিয়ান সভ্যতার মাধ্যমে হাররানের ঘরগুলো শিকড় অনুসন্ধান করা প্রয়োজন। ২৫০০-৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, এই অঞ্চল শাসন করা আসিরিয়ানদের কিছু পাথরের শিল্পকর্মে হাররানের বাড়িগুলোর অনুরূপ চিত্র দেখা যায়। মিসোপটেমিয়ার প্রত্নতাত্তিক খননগুলোর মাধ্যমে জানা যায়, একটি বর্গাকার কক্ষে গম্বুজবিশিষ্ট এই বাড়িগুলো খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দীর প্রথম দিকে ব্যবহার করা হয়েছিল এবং এই বাড়িগুলোতে ব্যবহৃত গম্বুজের ব্যাস ছিল ০৫ থেকে ১০ মিটারের মধ্যে। 

Screenshot Source: Vernacular domed houses of Harran, Turkey

শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে এই অঞ্চলে কাঠ ছিলো বিরল। এজন্য লোকেরা তাদের ঘরগুলো তৈরি করেছিল অ্যাডোব, ইট এবং ছোট পাথর দিয়ে যা তাদের জন্য খুবই সহজলভ্য ছিল। হাররানের বাড়িগুলো আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল এটি খুব দ্রুত নির্মাণ করা যায়। যাযাবর জীবনধারা এবং জলবায়ু পরিস্থিতি মানুষকে এমন ধরনের বাড়ি তৈরিতে বাধ্য করেছিল যা সহজেই তাঁবুর মতো তৈরি করা যেতে পারে এবং একই সাথে তাপ এবং ঠাণ্ডা প্রতিরোধ করে।

১৯৯৮ সালের এই গবেষণাপত্রটিতে দেখা যায়, একজন পুরোনো কারিগর তার দেওয়া সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে গবেষকদের কিছু অবজারভেশন নিশ্চিত করেছেন। সেই কারিগর বলেন,‘‘আমরা খননের সময় প্রাচীন ভবনের গম্বুজগুলো দেখেই কীভাবে এই শঙ্কু আকৃতির গম্বুজগুলো তৈরি করতে হয় তা শিখেছি। বর্তমান বাড়িগুলো ১৯৩৯ সালের দিকে নির্মিত হয়েছিল যখন আমি একটি বালক ছিলাম। আমাদের একটি গম্বুজের জন্য ১৩০০টি ইটের প্রয়োজন হয়েছিল। তবে এই ইট আমরা হাররানে তৈরি করিনি বরং প্রাচীন ভবনগুলোর ধ্বংসাবশেষ থেকেই এই ইটগুলো সরবরাহ করেছি। আমি একদিনে দুই ডোম তৈরি করতে পারতাম।”

Screenshot Source: Vernacular domed houses of Harran, Turkey

উক্ত আর্টিকেলে আরো বলা হয় যে, হাররানের বাড়িগুলো তৈরিতে ব্যাবহৃত মূল উপকরণ  যেহেতু মাটি এবং ক্লে (Clay) দ্বারা তৈরি ইট দ্বারা নির্মিত হয়েছিল তাই এদের আয়ুষ্কাল নির্দিষ্ট। এটা বলা যায় যে, বর্তমানে যে বাড়িগুলো দেখা যাচ্ছে সেগুলো ৭০-১৫০ বছরের বেশি পুরাতন নয়। এটা প্রবলভাবে সম্ভব যে সময়ের সাথে সাথে শঙ্কু আকৃতির গম্বুজযুক্ত হাররানের এই বাড়িগুলো বহুবার ধ্বংস হয়ে গেছে, এবং পুনর্নির্মিত হয়েছে। ফলে সময়ের সাথে সাথে তাদের আকারে পরিবর্তনও হয়েছে। 

তবে, হাররানের বাড়িগুলো ঠিক কত বছরের পুরোনো তা নিয়ে আরো অনুসন্ধান চালালে, তুরস্কের মূলধারার গণমাধ্যম Daily Sabah এর একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায় যেখানে হাররানের এই বাড়িগুলোর বয়স ২৫০ বছরের বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

Screenshot source: Daily Sabah

অর্থাৎ হাররানের বাড়িগুলো নিয়ে করা গবেষণা এবং তুরস্কের গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, হাররানের বাড়িগুলোর সাথে প্রায় ২৫০০ হাজার বছরেরও পুরোনো ইতিহাস জড়িয়ে থাকলেও বর্তমানে যেসব গম্বুজবিশিষ্ট বাড়ি দেখা যায় সেগুলো সর্বোচ্চ ২৫০ বছর পুরোনো বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই এত অল্প সময়কাল পূর্বে তুরস্কে তৈরিকৃত এই বাড়িগুলোকে প্রায় ১৫০০ বছর পূর্বে আরবের মক্কা নগরীতে বসবাসকারী হযরত ফাতেমা (রাঃ) এর বাড়ি দাবিতে প্রচারিত হলে তা স্পষ্টতই মিথ্যাচার। তাছাড়া, হযরত ফাতেমা (রাঃ) জীবিত থাকাকালীন অবস্থাতেও তুরস্কে তার কোনো বাড়ি ছিল কিনা সে ব্যাপারে ঐতিহাসিক প্রমাণও খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য যে, তুরস্ক ব্যাতীত দক্ষিণ ইতালি, সাইপ্রাস এবং লিবিয়ার কিছু এলাকায় এই ধরনের গম্বুজ আকৃতির বাড়ি থাকার ব্যাপারে তথ্য থাকলেও সোদি আরবের মক্কায় এই ধরনের বাড়ি রয়েছে কিনা সেটির ব্যাপারেও কোনো প্রমাণ খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম। 

মূলত, তুরস্কের সানলিউরফা প্রদেশের হাররান অঞ্চলে অবস্থিত একটি বাড়ির ছবিকে হযরত ফাতিমা (রাঃ) এর বাড়ি দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে, রিউমর স্ক্যানারের বিস্তর অনুসন্ধানে তুরস্কের উক্ত স্থানটিতে হযরত ফাতিমা (রাঃ) এর বাড়ি থাকার ব্যাপারে কোনো ঐতিহাসিক প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, তুরস্কের সানলিউরফা প্রদেশের হাররান অঞ্চলে অবস্থিত একটি বাড়ির ছবিকে কোনোপ্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই হযরত ফাতিমা (রাঃ) এর বাড়ির ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

মালয়েশিয়ায় গত মার্চের বন্যার ঘটনায় গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি

গত মার্চে, মালয়েশিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে একটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। 

উক্ত ছবি যুক্ত করে দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত  প্রতিবেদন দেখুন সময় টিভি। 

উক্ত ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি গত মার্চের নয় বরং মালয়েশিয়ায় ২০২১ সালের বন্যার ঘটনার পুরোনো ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আন্তজার্তিক সংবাদমাধ্যম গণমাধ্যম Yahoo News এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ১৮ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ায় বন্যায় বেশকিছু ঘরবাড়িতে বন্যার পানি ঢুকে পড়ে। তেমনই কিছু বাড়ির দৃশ্য এটি। 

Screenshot source: Yahoo News

পরবর্তীতে মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম New Straits Times এর ওয়েবসাইটে একইদিন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: NST

পোস্টের ক্যাপশন থেকেও ছবিটির বিষয়ে একই তথ্যই পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, আলোচিত ছবিটি গত মার্চে মালয়েশিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনার নয়। 

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। ফলে স্বাভাবিকভাবে ছবিটি মালয়েশিয়ার গত মার্চের বন্যার ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হওয়া অমূলক নয়। 

মূলত, গত মার্চে মালয়েশিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে যে ছবিটি প্রচার করা হয়েছে তা সেসময়ের নয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২১ সালে মালয়েশিয়ার বন্যার ঘটনার ছবি এটি। প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্যও দেওয়া হয়নি। এতে করে স্বাভাবিকভাবে ছবিটি মালয়েশিয়ার বন্যার ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে।

সুতরাং, গত মার্চে মালয়েশিয়ায় বন্যার ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে পুরোনো ঘটনার ছবিকে উক্ত ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

সোফিয়ান বাউফলের রোনালদোর কান্নায় খুশি হওয়ার তথ্যটি মিথ্যা

সম্প্রতি মরোক্কান ফরোয়ার্ড সোফিয়ান বাউফল পর্তুগীজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে  কাতার বিশ্বকাপে কাঁদতে দেখে খুশি হয়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যম সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে  প্রচার করা হচ্ছে।

 সোফিয়ান

গণমাধ্যমের ফেসবুক পেইজে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন Prothom Alo Sports (আর্কাইভ),  প্রথম আলো (আর্কাইভ), চ্যানেল আই (আর্কাইভ), চ্যানেল আই স্পোর্টস (আর্কাইভ), বিজয় টিভি (আর্কাইভ)।  

গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন প্রতিবেদন দেখুন প্রথম আলো, চ্যানেল আই, প্রতিদিনের বাংলাদেশ, ডেইলি বাংলাদেশ, দেশ রূপান্তর, বিজয় টিভি (ইউটিউব), সোনালী নিউজ। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত বছর অনুষ্ঠিত কাতার বিশ্বকাপে পর্তুগীজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে কাঁদতে দেখে মরোক্কান ফরোয়ার্ড সোফিয়ান বাউফল খুশি হয়েছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে কাতারের একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সোফিয়ান বাউফলের একটি সাক্ষাৎকারকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ফুটবল ভিত্তিক ওয়েবসাইট goal এ গত ১৫ এপ্রিল ‘Sofiane Boufal DENIES saying he ‘enjoyed seeing Cristiano Ronaldo cry’ after Morocco’s World Cup triumph over Portugal‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Goal

প্রতিবেদনটিতে সোফিয়ান বাউফলের একটি ইনস্টাগ্রাম স্টোরির ছবিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, সোফিয়ান বাউফল তার নামে প্রচারিত ‘রোনালদোকে কান্না করতে দেখা আমি উপভোগ করেছি’ শীর্ষক একটি ছবিকে ভুয়া হিসেবে উল্লেখ করে তার ইনস্টাগ্রামে স্টোরি দিয়েছেন। 

Screenshot: Goal

পাশাপাশি মরক্কোর অনলাইন পোর্টাল Morocco World News এ ‘World Cup: Sofiane Boufal Denies Saying He Enjoyed Seeing Ronaldo Cry‘. শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে সোফিয়ান বাওফলের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সম্পর্কে বলা তার উক্তিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Morocco World News

যেখানে সোফিয়ান বাউফল বলেন, রোনালদোর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, আমাদের কান্না করার চেয়ে তার কান্না করাটাই স্বাভাবিক ছিলো। এছাড়া তিনি তার বক্তব্যে  নিজের এবং তার দলের সফল বিশ্বকাপ যাত্রার জন্য আনন্দ এবং গর্ব প্রকাশ করেছিলেন।

বিষয়টি নিয়ে আরও অধিকতর অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার টিম কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম Alkass এ দেওয়া সোফিয়ান বাউফলের সাক্ষাৎকারটি পর্যবেক্ষণ করে। 

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সাক্ষাৎকারটির ১০ মিনিট সময়কালে সোফিয়ান বাউফল উপস্থাপিকার একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর প্রতি আমার শ্রদ্ধা জানিয়ে বলছি, বিশ্বকাপে আমাদের কান্না করার চেয়ে তার কান্না করাটাই স্বাভাবিক। আমরা আমাদের খেলা নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলাম। আমাদের অন্য কারো আনুকুল্যের প্রয়োজন পড়েনি।

Screenshot: Al Kass Interview 

অর্থাৎ সোফিয়ান বাউফল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে  কাতার বিশ্বকাপে কাঁদতে দেখে খুশি হয়েছেন এমনটি বলেননি। বরং তিনি বলেছিলেন, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কান্না করাটা স্বাভাবিক।

পাশাপাশি আলকাসের প্রতিবেদক ওমর কাহাতানও তার টুইটার অ্যাকাউন্টে (আর্কাইভ) সোফিয়ান বাউফলের সাক্ষাৎকার নিয়ে ব্যাখ্যা দেন।

টুইটারে তিনি ফুটবল ভিত্তিক ওয়েবসাইট Goal এর আরবি সংস্করণ GoalAR কে উল্লেখ করে  লেখেন, রোনালদোর ব্যাপারে সোফিয়ান বাউফলের নামে প্রকাশ করা মন্তব্যটি ভুল। 

Screenshot: Omar Khatan_Twitter

উল্লেখ্য, মরোক্কান ফরোয়ার্ড সোফিয়ান বাউফল পর্তুগীজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে  কাতার বিশ্বকাপে কাঁদতে দেখে খুশি হয়েছেন শীর্ষক দাবিতে গত ১৬ এপ্রিল সংবাদ প্রচার করে বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো৷ তবে একইদিনে উক্ত সংবাদকে মিথ্যা উল্লেখ সোফিয়ান বাউফলের সূত্রে পুনরায় নতুন আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে গণমাধ্যমটি। 

Image Collage: Rumor Scanner

মূলত, কাতার বিশ্বকাপ মাতানো মরক্কো ফুটবল দলের ফরোয়ার্ড সোফিয়ান বাউফল গত ১৬ এপ্রিল কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম Al Kass এ একটি সাক্ষাৎকার দেন। সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে উপস্থাপিকার এক প্রশ্নের উত্তরে সোফিয়ান বাউফল বলেন, রোনালদোর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, আমাদের কান্না করার চেয়ে তার কান্না করাটাই স্বাভাবিক ছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে তার এই উত্তরটিকেই বিকৃত করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয় যে, পর্তুগীজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে  কাতার বিশ্বকাপে কাঁদতে দেখে খুশি হয়েছিলেন সোফিয়ান বাউফল। পরবর্তীতে বিষয়টি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সোফিয়ান বাউফল তার ইনস্টাগ্রামে নিজেই বিষয়টি গুজব বলে নিশ্চিত করেন।

প্রসঙ্গত, Al Kass এর সাক্ষাৎকারে উপস্থাপিকার আরেকটি প্রশ্নের উত্তরে সোফিয়ান বাউফল রোনালদো থেকে মেসিকে এগিয়ে রেখেছেন এবং মেসির সাবেক ক্লাব বার্সেলোনায় খেলার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন।

প্রসঙ্গত আরও উল্লেখ্য যে, কাতার বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে মরক্কোর কাছে হেরে গোলে হারে পর্তুগাল। ম্যাচ শেষে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছেড়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।

সুতরাং, মরোক্কান ফরোয়ার্ড সোফিয়ান বাউফল পর্তুগীজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে কাতার বিশ্বকাপে কাঁদতে দেখে খুশি হয়েছেন শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

Goal:  Boufal DENIES saying he ‘enjoyed seeing Cristiano Ronaldo cry’ after Morocco’s World Cup triumph over Portugal

Morocco World News: World Cup: Sofiane Boufal Denies Saying He Enjoyed Seeing Ronaldo Cry

Omar Khatan_Twitter: https://twitter.com/omarqahtan_/status/1647011630830501892?t=RB2cMQyZ2GmTHhV5miLNKw&s=19 (আর্কাইভ)

Al Kass: ‘Sofiane Boufal  Interview

Independent UK: Cristiano Ronaldo Left in Tears after Portugal Upset by Morocco at World Cup

ব্রাজিলে মার্চের ভূমিধসের ঘটনায় গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি

ব্রাজিলে গত মার্চ মাসে ভূমিধসের ঘটনায় বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনটি ভিন্ন ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। 

ছবিগুলো ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সময় টিভি, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ইনকিলাব, ভোরের কাগজ, বৈশাখী টিভি

একই দবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো গত মার্চ মাসের ঘটনার নয় বরং পূর্বে ব্রাজিলের ভূমিধসের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবিকে উক্ত ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

ছবি যাচাই ০১

Screenshot source: Somoy Tv

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সময় টিভি, বাংলাদেশ প্রতিদিন

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম Reuters এর ওয়েবসাইটে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ‘Brazil downpours leave at least 50 dead as rescue ship arrives’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: Reuters

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ২২ ফেব্রুয়ারিতে ব্রাজিলের সাও সেবাস্তিয়াওয়ে ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভূমিধসের স্থানে একজন ফায়ার ফাইটার এবং অপর এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে থাকার ছবি। রয়টার্সের পক্ষে ছবিটি তুলেছেন আমান্ডা পেরোবেলি। 

অর্থাৎ, আলোচিত ছবিটি গত মার্চের নয়। 

ছবি যাচাই ০২

Screenshot source: Inqilab

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইনকিলাব, ভোরের কাগজ

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম BBC এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের পহেলা ডিসেম্বর ‘Deadly landslide engulfs motorway in Brazil’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: BBC

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিটি ব্রাজিলের পারানা রাজ্যের গুয়ারাতুবা এলাকায় ভারী বর্ষণে একটি রাস্তায় ভূমিধসের ঘটনায় ধারণকৃত। 

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে ফ্রান্স ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম France 24 এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের পহেলা ডিসেম্বর ‘Deadly landslides cut off access to major Brazilian grains port’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot source: France24

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ব্রাজিলের সেসময়ের ভূমিধসের এই ছবিটি সে বছরের ২৯ নভেম্বর তোলা হয়।

অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিটি সাত মাস পূর্বের ভিন্ন ঘটনার৷ 

ছবি যাচাই ০৩

Screenshot source: Boishakhi 

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বৈশাখী টিভি

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম AP এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি ‘Rain-fed landslides, flooding kill at least 19 in Brazil’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot source: AP

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ব্রাজিলের সাও পাওলো রাজ্যে ২০২২ সালের ২২ জানুয়ারি ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভূমিধসে বাড়িঘরের ধ্বংসস্তুপ থেকে ফায়ার ফাইটাররা বাসিন্দাদের খোঁজার সময়ের ছবি।

অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিটি এক বছরেরও বেশি সময়ের পুরোনো। 

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি বরং কিছু গণমাধ্যমে ছবিগুলো সংগৃহীত, কোনো কোনো গণমাধ্যমে ছবির ক্যাপশনে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিগুলো ব্যবহার করে সংগৃহীত উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্যই উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই ছবিগুলো গত মার্চে ব্রাজিলের ভূমিধসের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া অমূলক নয়।

মূলত, গত মার্চে ব্রাজিলে ভূমিধসের ঘটনায় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্রাজিলে ভূমিধসের পুরোনো তিনটি ভিন্ন ঘটনার ছবি ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্যও উল্লেখ করা হয়নি। এতে করে স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো ব্রাজিলের গত মার্চে ভূমিধসের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বে কঙ্গোতে ভারী বর্ষণে বন্যার ঘটনায় গণমাধ্যমে একাধিক পুরোনো ছবি ব্যবহার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ব্রাজিলে গত মার্চের ভূমিধসের ঘটনায় গণমাধ্যমে একাধিক পুরোনো ঘটনার ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

মিষ্টান্ন তৈরির ভিডিওকে নকল ডিম তৈরির ভিডিও দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি, “দেখুন কিভাবে নকল ডিম তৈরি করা হচ্ছে” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।

Screenshot from Facebook

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি নকল ডিম তৈরির ভিডিও নয় বরং এটি ভারতের ‘পেঠা’ নামক মিষ্টান্ন তৈরির ভিডিও। 

ভিডিওটির কি-ফ্রেম থেকে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে গত ২৭ জানুয়ারি ‘Thefoodiebae’ নামের ফেসবুক পেজে “Bulk Level Making of Petha – Cheapest Indian Sweet” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওর সাথে নকল ডিম তৈরির ভিডিও দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner 

 এছাড়া, গত জানুয়ারি ২৯ তারিখ ‘Thefoodiebae’ এর ফেসবুক পেজে “Anguri Petha Aise Banta Hai #Sweet #petha” শীর্ষক শিরোনামে একই ভিডিও রিল হিসেবে প্রকাশিত হয়।

Screenshot from Facebook

তাছাড়া ‘The Street Menu’ নামক ফেসবুক পেজে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ এ “World’s Largest Factory Making Petha in Bulk | WorldFood” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওতেও একই পদ্ধতিতে ভারতীয় ‘পেঠা’ তৈরি করতে দেখা যায়।

Screenshot from Facebook

অর্থাৎ, এটি ভারতের মুখরোচক খাবার পেঠা তৈরির ভিডিও।

মূলত, সম্প্রতি নকল ডিম তৈরি করার ভিডিও দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি নকল ডিম তৈরির ভিডিও নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের মুখরোচক মিষ্টান্ন খাবার ‘পেঠা’ তৈরির ভিডিওকেই নকল ডিম তৈরির ভিডিও দাবিতে প্রচারিত হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, এর আগেও নকল ডিম নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

উল্লেখ্য, পেঠা হচ্ছে ভারতীয় মুখরোচক খাবার। যা চালকুমড়া, চিনি এবং অন্যান্য উপাদানের মিশ্রনে তৈরি করা হয়।

সুতরাং, মিষ্টান্ন তৈরির একটি ভিডিওকে নকল ডিম তৈরির দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ভাইরাল ছাত্রী শিক্ষকের বিয়ে দাবিতে ভিন্ন দম্পতির বিয়ের ছবি ও ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি, রাজধানীর একটি কলেজের ছাত্রী-শিক্ষকের ব্যক্তিগত আলাপ ভাইরাল হওয়াকে কেন্দ্র করে নানারূপ প্রতিক্রিয়ায় সরব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত ছাত্রী ও শিক্ষকের বিয়ে হয়েছে শীর্ষক একটি দাবি ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে। 

কী দাবি করা হচ্ছে?  

ছড়িয়ে পড়া একাধিক পোস্টে এক নারী ও পুরুষের বিয়ের দুইটি ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, “ভাইরাল হওয়া দুই অতৃপ্ত প্রেমিক প্রেমিকা মানে ইংলিশ স্যার আর ছাত্রীর বিয়া সম্পূর্ন।” উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং  এখানে (আর্কাইভ)।

শিক্ষক
Screenshot source: Crowdtangle

কিছু পোস্ট করা হয়েছে একটি ভিডিও যুক্ত করে। সেখানেও একই পুরুষ ও নারীকে দেখা গেছে। ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে, “সবশেষে বিয়ে করে  ফেললেন Viral হওয়া সেই English Teacher & Student”।

Screenshot source: Crowdtangle

এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

কিছু পোস্টে ছবি এবং ভিডিও সংযুক্ত না করেই দাবি করা হয়েছে, “আলোচিত সেই স্যার ও ছাত্রী বিয়ে করছে তা মাত্র জানা আমি.!”

উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot source: Facebook

উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ) এবং এখানে(আর্কাইভ)।

Screenshot: Tiktok

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবে একই দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ) এবং এখানে(আর্কাইভ)।

Screenshot: Youtube

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাইরাল ছাত্রী শিক্ষকের বিয়ে হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং গত ফেব্রুয়ারিতে বরিশালে বিয়ে হওয়া ভিন্ন এক দম্পতির বিয়ের ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে রিউমর স্ক্যানার টিম ভাইরাল শিক্ষক ও ছাত্রীর বিষয়ে অনুসন্ধানে মূল ধারার সংবাদমাধ্যম ‘Rtv’ এর ওয়েবসাইটে গত ১৭ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায়।  

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের এক শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রীর ‘ব্যক্তিগত আলাপের’ স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী মাহির আসেফ পুলক (২৬)। 

আরটিভি লিখেছে, “উত্তরখান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী আবুল কালাম বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, থানার এসআই (নিরস্ত্র) মো. মনিরুজ্জামানকে জিডির বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” 

উক্ত জিডির একটি কপি রিউমর স্ক্যানারের কাছেও এসেছে। 

অর্থাৎ, ভাইরাল শিক্ষক ও ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে দাবি করা হলেও সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী উক্ত শিক্ষক জিডি করেছেন ছাত্রীর বিরুদ্ধে। তাছাড়া, তাদের বিয়ে হয়েছে শীর্ষক কোনো তথ্য গণমাধ্যমেও আসেনি। 

ছবি ও ভিডিওগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধান 

ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম দেখেছে, ছবিগুলোর নিচের দিকে টিকটকের @Queen লেখা একটি ইউজার নেমসহ একাধিক হ্যাশট্যাগ দেখা যাচ্ছে। 

Screenshot source: Facebook

উক্ত তথ্যগুলোর সূত্র ধরে পরবর্তীতে অনুসন্ধানে টিকটকে ‘syedchaity’ নামক একটি অ্যাকাউন্টে গত ১২ মার্চ প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: Tiktok

উক্ত ভিডিওতে থাকা বিয়ের পাত্র পাত্রীর সাথে আলোচিত ছবিটির পাত্র পাত্রীর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধান করতে গিয়ে ফেসবুকে Rakesh Rakib নামক একটি পেজে ১৭ এপ্রিল একই পাত্র-পাত্রীর বিয়ের ভিডিও খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, পাত্রের নাম হিমু এবং পাত্রী চৈতী। দশ বছরের প্রেমের সম্পর্ক শেষে তারা দুইজন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।

Screenshot source: Facebook

পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, রাকেশ রাকিব মূলত একজন ফটোগ্রাফার। তার পেজে একই পাত্র পাত্রীর গত ২৭ মার্চ প্রকাশিত হলুদ অনুষ্ঠানের ভিডিও-ও খুঁজে পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

রাকেশ রাকিব তার পেজে গত ২৭ মার্চ আরেক পোস্টে একই দম্পতির বেশকিছু ছবি প্রকাশ করেন। 

পরবর্তীতে ফেসবুকে Days of Diba নামক একটি পেজে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একই পাত্র পাত্রীর বিয়ের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: Facebook

লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, রাজধানীর একটি কলেজের ছাত্রী-শিক্ষকের ব্যক্তিগত আলাপ প্রকাশ্যে আসে গত ১৫ এপ্রিল। কিন্তু তাদের বিয়ে হয়েছে শীর্ষক দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ছবি অনলাইনে রয়েছে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে। 

একইভাবে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে আমরা Syed Chaity নামক টিকটক অ্যাকাউন্টসহ এডভান্স টুলস ব্যবহার করে একাধিক উপায়ে খুঁজেও ভিডিওটির মূল সূত্র পাওয়া সম্ভব হয়নি। 

এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে এবং সার্বিক বিষয়ে জানতে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে রাকেশ রাকিবের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, উক্ত ভিডিওটিও Syed Chaity নামক টিকটক অ্যাকাউন্টে রয়েছে। তবে উক্ত ভিডিওর প্রাইভেসি বন্ধুতালিকায় সীমাবদ্ধ থাকায় ভিডিওটি সকলের জন্য উন্মুক্ত নয়৷ জনাব রাকেশ উক্ত ভিডিও সমেত আলোচিত পোস্টের স্ক্রিনরেকর্ড পাঠিয়েছেন রিউমর স্ক্যানারের কাছে। রাকেশ রাকিব নিশ্চিত করেছেন, উক্ত টিকটক অ্যাকাউন্টটি পাত্রী চৈতীর। 

উক্ত স্ক্রিনরেকর্ড থেকে নেওয়া একটি স্ক্রিনশট দেখুন –

Screenshot source: Rakesh Rakib

রাকেশের মাধ্যমে রিউমর স্ক্যানার টিম জানতে পারে, পাত্র নীরব হিমু এবং পাত্রী মুনমুন আহমেদ চৈতী। তাদের দশ বছরের সম্পর্ক ছিল। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বরিশালে বিয়ে হয় এই দম্পতির। হিমু একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন এবং পাত্রী চৈতী গৃহিণী। পাত্র হিমু রাজধানীর সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি এবং পাত্রী চৈতী বরিশাল বিএম কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানার টিম নীরব হিমুর সাথে যোগাযোগ করলে তিনিও তথ্যগুলো নিশ্চিত করেন এবং বিষয়টি তাদের বেশ বিব্রত করছে বলে জানান। 

মূলত, সম্প্রতি রাজধানীর একটি কলেজের ছাত্রী-শিক্ষকের ব্যক্তিগত আলাপ ভাইরাল হওয়াকে কেন্দ্র করে ‘উক্ত ছাত্রী ও শিক্ষকের বিয়ে হয়েছে’ দাবিতে কিছু ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত ছাত্রী ও শিক্ষকের বিয়ে হয়নি। তাছাড়া, ভাইরাল হওয়া বিয়ের ছবি ও ভিডিওগুলো গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বরিশালে বিয়ে হওয়া ভিন্ন এক দম্পতির।

সুতরাং, ভাইরাল ছাত্রী-শিক্ষকের বিয়ে হয়েছে দাবিতে ভিন্ন দম্পতির বিয়ের দৃশ্য প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

টিউলিপ সিদ্দিকের যুক্তরাজ্যের শিশুবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হওয়ার তথ্যটি পুরোনো

সম্প্রতি ‘ব্রিটিশ পার্লামেন্টের মাননীয় সংসদ সদস্য, রিজোয়ানা টিউলিপ সিদ্দিককে, প্রাণঢালা  অভিনন্দন, যুক্তরাজ্যের শিশু বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার জন্য।’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

Screenshot from CrowdTangle

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ) ও এখানে (আর্কাইভ)। 

Screenshot from Ajker Patuakhali website

অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন যুক্তরাজ্যের শিশু বিষয়ক ছায়া মন্ত্রী হলেন টিউলিপ সিদ্দিক (আজকের পটুয়াখালী)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও ব্রিটিশ সংসদের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের শিশুবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি পুরোনো। প্রকৃতপক্ষে তিনি ২০২১ সালেই এই পদের দায়িত্ব শেষ করেন এবং বর্তমানে তিনি লেবার পার্টির অর্থনৈতিক বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানের মাধ্যমে পাওয়া টিউলিপ সিদ্দিকের ভ্যারিফাইড টুইটার একাউন্টে প্রদত্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

Screenshot: Tulip Siddiq Twitter

টুইটার একাউন্টের বায়োতে টিউলিপ সিদ্দিকের প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী, তিনি হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসনের লেবার পার্টির সংসদ সদস্য ও ছায়া সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের সংসদের ওয়েবসাইট UK Parliament এর ওয়েবসাইটে টিউলিপ সিদ্দিক সম্পর্কে প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী দেখা যায়, টিউলিপ সিদ্দিক ২০২১ সালের ৪ ডিসেম্বর থেকে লেবার পার্টির অর্থনৈতিক বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

Screenshot: UK Parliament Website

ওয়েবসাইটটি থেকে আরও জানা যায়, এর পূর্বে ২০২০ সালের ১০ এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি শিক্ষা বিভাগের ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

Screenshot:  UK Parliament Website

উপরিউক্ত তথ্যসমূহ বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, টিউলিপ সিদ্দিকের শিশুবিষয়ক এবং আর্লি ইয়ার্স ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার তথ্যটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। তিনি ২০২১ সালের ৪ ডিসেম্বরই উক্ত দায়িত্ব পালন সম্পন্ন করেছেন। 

অপরদিকে ছায়ামন্ত্রী হলেন ছায়া মন্ত্রিসভার একজন সদস্য। এই ছায়া মন্ত্রিসভা সরকার দলীয় মন্ত্রিসভার কাজকে মূল্যায়নের জন্য দেশটির বিরোধী দলের নেতা দ্বারা নির্বাচিত জৈষ্ঠ্য সদস্যদের নিয়ে গঠন করা হয়। এই ছায়া মন্ত্রিসভার প্রতিটি সদস্যকে তাদের দলের হয়ে একটি নির্দিষ্ট নীতির উপর নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য এবং মন্ত্রিসভায় তাদের প্রতিপক্ষকে প্রশ্ন ও চ্যালেঞ্জ করার জন্য নিযুক্ত করা হয়।

Screenshot: UK Parliament Website

মূলত, সম্প্রতি বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও ব্রিটিশ সংসদের এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে যুক্তরাজ্যের শিশু বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৫ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসনের লেবার পার্টির সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করা টিউলিপ সিদ্দিকের যুক্তরাজ্যের শিশু বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার তথ্যটি পুরোনো। প্রকৃতপক্ষে টিউলিপ সিদ্দিক ২০২০ সালের ১০ এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা বিভাগের ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং তার পরবর্তী সময় থেকে লেবার পার্টির অর্থনৈতিক বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সুতরাং, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও ব্রিটিশ সংসদের এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের যুক্তরাজ্যের শিশু বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় পুরোনো তথ্যকে সাম্প্রতিক সময়ের তথ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র