Home Blog Page 591

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে জড়িয়ে মির্জা ফখরুলের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্রিকেট টিমের সবাই আওয়ামি লীগ করে, তাই এই জয়ে আমাদের কিচ্ছু আসে যায় না’ শীর্ষক মন্তব্যকে  বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য দাবিতে একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে, আলোচিত এই ফটোকার্ডটি Bangla Politix নামের একটি কমেডি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে প্রথমে প্রচার করা হয় এবং পরবর্তীতে এটি মির্জা ফখরুলের মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এটির ওপরের অংশে ‘বাংলা পলিটিক্স’ শীর্ষক একটি লোগো খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

এই লোগোর সূত্র ধরে প্রাসাঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে Bangla Politix নামের ফেসবুক পেজে গত ১৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এই ফটোকার্ডটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Bangla Politix Facebook

এছাড়াও, পেজটির ক্যাটেগরি সেকশনে গিয়ে দেখা যায়, এটি একটি কমেডি পেজ। বিভিন্ন সময়ে এই পেজটি থেকে বিভিন্ন কমেডিধর্মী পোস্ট প্রচার করতে দেখা যায়।

Screenshot: Bangla Politix Facebook

অর্থাৎ, এই পেজটি থেকে আলোচিত ফটোকার্ডটি ব্যাঙ্গাত্মক হিসেবে প্রথমে প্রচার হয় এবং পরবর্তীতে তা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।

এছাড়াও, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন কোনো মন্তব্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত ১৫ সেপ্টেম্বর এশিয়া কাপের সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে ভারত ক্রিকেট টিমকে পরাজিত করে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম। এর পরদিন অর্থাৎ গত ১৬ সেপ্টেম্বর ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্রিকেট টিমের সবাই আওয়ামি লীগ করে, তাই এই জয়ে আমাদের কিচ্ছু আসে যায় না’ শীর্ষক একটি ফটোকার্ড Bangla Politix নামের একটি কমেডি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য হিসেবে প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে আলোচিত এই ফটোকার্ডটি বাস্তব দাবিতে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। প্রকৃতপক্ষে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন কোনো মন্তব্য করেননি।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা। এছাড়াও তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নড়াইল-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। জাতীয় ক্রিকেট দলের আরেক সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়ও আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে ইন্টারনেটে ভুয়া মন্তব্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্রিকেট টিমের সবাই আওয়ামি লীগ করে, তাই এই জয়ে আমাদের কিচ্ছু আসে যায় না’ শীর্ষক মন্তব্যটিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বসনিয়ার ছবিকে বঙ্গবন্ধু টানেলের ছবি দাবি গণমাধ্যমে

0

চলতি বছরের বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু টানেলের ছবি দাবিতে একটি ছবি প্রচার করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু টানেল

উক্ত ছবি ব্যবহার করে চলতি বছর (২০২৩) গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও সম্পাদকীয় দেখুন প্রথম আলো, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস), ডেইলি স্টার, বিডিনিউজ২৪ (ফেসবুক), চ্যানেল২৪, ইউএনবি, জনকণ্ঠ, নয়া দিগন্ত, একাত্তর টিভি, সময় টিভি, কালের কণ্ঠ, সমকাল, এটিএন নিউজ (ইউটিউব), ডেইলি সান, ডিবিসি নিউজ, ইত্তেফাক, এনটিভি, যুগান্তর, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, যমুনা টিভি (ইউটিউব), ইনডিপেনডেন্ট টিভি, নিউজ২৪ (ইউটিউব), নাগরিক টিভি (ইউটিউব), ডেইলি অবজারভার, ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস, আরটিভি, বাংলাভিশন, চ্যানেল আই, অর্থসূচক, বাংলানিউজ২৪, এটিএন বাংলা (ইউটিউব), যায়যায়দিন, ভোরের কাগজ, মানবজমিন, দেশ টিভি (ইউটিউব), দীপ্ত টিভি (ইউটিউব), ঢাকা টাইমস, একুশে টিভি, দেশ রূপান্তর, মানবকণ্ঠ, শেয়ার বিজ, কালবেলা, বাংলাদেশ জার্নাল, সময়ের আলো, বাংলা টিভি, সাম্প্রতিক দেশকাল, প্রতিদিনের সংবাদ, বিজয় টিভি (ইউটিউব), ঢাকা প্রকাশ, বিবিএস বাংলা, ডেইলি এশিয়ান এজ, এবিনিউজ২৪, বিজনেস পোস্ট, প্রতিদিনের বাংলাদেশ, বায়ান্ন টিভি, ঢাকা মেইল, বাংলাদেশ বুলেটিন, বাংলাদেশ টুডে, আমাদের সময়.কম, বাহান্ন নিউজ, আমাদের বার্তা, আলোকিত বাংলাদেশ, বাংলা ইনসাইডার, বিডি২৪রিপোর্ট, বিডি২৪লাইভ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, নিউজজি২৪, আমার সংবাদ, সংবাদ প্রকাশ, ফ্রিডম বাংলা নিউজ, রিদ্মিক নিউজ, দৈনিক করতোয়া, ডেইলি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পোস্ট, সুখবর, বার্তা২৪, জুম বাংলা, বিবার্তা২৪, সময়ের কণ্ঠস্বর, আজকালের খবর, দৈনিক সংগ্রাম, স্টার সংবাদ, সোনালী নিউজ, রেডিও টুডে নিউজ, একুশে সংবাদ, নিউজনাউ২৪, বাংলাদেশ মোমেন্টস, জয় যুগান্তর, স্বাধীন আলো, জবাবদিহি, দ্য রিপোর্ট২৪, জনবাণী, বিজনেস জার্নাল, বাংলাদেশ পোস্ট, এসএ টিভি, সারা বাংলা, আমাদের নতুন সময়৷ 

উক্ত ছবি ব্যবহার করে ২০২২ সালে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস), যমুনা টিভি (ইউটিউব), ইত্তেফাক, ইউএনবি, ডেইলি সান, এটিএন নিউজ (ইউটিউব), সারাবাংলা, মাইটিভি (ইউটিউব), প্রতিদিনের সংবাদ, নয়া শতাব্দী, বাংলাদেশ পোস্ট

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিটি বঙ্গবন্ধু টানেলের নয় বরং বসনিয়ার ২০১৪ সালে চালু হওয়া একটি টানেলের ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বেলজিয়াম ভিত্তিক লাইটিং প্রযুক্তি সংযোজন প্রতিষ্ঠান Schreder এর ওয়েবসাইটে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Schreder

স্ক্রেডার (Schreder) মূলত বিভিন্ন বড় প্রজেক্টে লাইট বা আলো লাগানোর কাজ করে থাকে। আলোচিত টানেলটিতেও তারা একই কাজ করেছে। 

স্ক্রেডার বলছে, ‘March 1st’ নামের এই টানেলটি বসনিয়ায় অবস্থিত এবং এটি ২০১৪ সালেই চালু করা হয়েছে। 
একই ছবি বসনিয়ার একটি সংবাদমাধ্যমে ২০১৭ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখুন এখানে।

Screenshot: Visoko 

বিষয়টি নিয়ে আরো অনুসন্ধান করতে গিয়ে ইউটিউবের একাধিক চ্যানেলে ২০১৫ সাল পরবর্তী সময়ে টানেলটির একাধিক ভিডিও (, , ) খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওগুলোতে টানেলের যে দৃশ্য দেখা যাচ্ছে তার সাথে আলোচিত ছবিটির দৃশ্যমান মিল পাওয়া যাচ্ছে। 

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে বসনিয়ার সংবাদমাধ্যম Sarajevo Times এর ওয়েবসাইটে ২০১৪ সালের ২৬ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে সেসময় টানেলটি চালু হওয়ার খবর জানা যায়।

Screenshot: Sarajevo Times

অর্থাৎ, আলোচিত ছবিটি চট্টগ্রামে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা বঙ্গবন্ধু টানেলের নয়। 

বিষয়টি নিয়ে জানতে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুলেন সড়ক টানেল নির্মাণ প্রকল্পের (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল) পরিচালক মোঃ হারুনুর রশীদ চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনিও রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন, ছবিটি বঙ্গবন্ধু টানেলের নয়। 

বঙ্গবন্ধু টানেলের ভেতরের দৃশ্য দেখতে কেমন? 

বসনিয়ার ছবিকে বঙ্গবন্ধু টানেলের দাবি করা হলেও বঙ্গবন্ধু টানেলের ভেতরের দৃশ্য অনেকটা বসনিয়ার টানেলের মতোই। একাধিক গণমাধ্যমের সাম্প্রতিক ভিডিও প্রতিবেদনে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত ভিডিও প্রতিবেদন দেখুন যমুনা টিভি, চ্যানেল২৪, সময় টিভি।

Screenshot: YouTube

আগামী ২৮ অক্টোবর টানেলটি উদ্বোধনকে সামনে রেখে টানেলের কাজের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে এখন।

Image comparison: Rumor Scanner

মূলত, ২০২২ সাল থেকেই বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু টানেলের দাবিতে একটি টানেলের ভেতরের দৃশ্যের ছবি প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ছবিটি বঙ্গবন্ধু টানেলের নয়৷ বসনিয়ার ২০১৪ সালে চালু হওয়া একটি টানেলের ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু টানেল দাবিতে ভিন্ন স্থানের আরও দুইটি ছবি প্রচার করা হলে বিষয়টি নিয়ে দুইটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

প্রতিবেদনগুলো দেখুন 

সুতরাং, বসনিয়ার একটি টানেলের ছবিকে বঙ্গবন্ধু টানেলের ছবি দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

হালনাগাদ / Update

২১ জানুয়ারি, ২০২৪ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়েও কতিপয় গণমাধ্যমে একই দাবি প্রচার করার প্রেক্ষিতে সেসব গণমাধ্যমকেও দাবি হিসেবে প্রতিবেদনে যুক্ত করা হলো।

আপন ভাই-বোনের মধ্যকার বিয়ে দাবিতে প্রচারিত এই ভিডিওটি স্ক্রিপটেড

0

সম্প্রতি, ‘আপন বোনকে বিয়ে করলো নিজের আপন মায়ের পেটের ভাই’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে।

মধ্যকার বিয়ে

ফেসবুক প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)। 

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আপন ভাই-বোনের মধ্যকার বিয়ে দাবিতে প্রচারিত এই ভিডিওটি বাস্তব নয় বরং উক্ত ভিডিওটি একটি নাটিকার শ্যুটিংয়ের অংশ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘AAA Tv Bangla’ নামক একটি ফেসবুক পেজে গত ১৯ সেপ্টেম্বরে প্রচারিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Facebook

উক্ত লাইভ ভিডিওটিতে আপন ভাই-বোনের মধ্যকার বিয়ে দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে ভাই হিসেবে থাকা লোকটির একটি সাক্ষাৎকার পাওয়া যায়। সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, এই ব্যক্তির নাম শফিক শাহ।

ভিডিওতে শফিক শাহকে নিজের আপন বোনকে বিয়ের প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, এটা আমার আপন বোন না। আমরা দুইজন বিভিন্ন সময়ে নাটিকায় অভিনয় করে থাকি। আসলে ভিডিওটি একটি নাটিকার রিহার্সাল চলাকালীন ধারণ করা। ভিডিওতে বোনের ভূমিকায় থাকা নারীটি একজন অভিনেত্রী। সে আমার বোন না, আমিও ওর ভাই না। আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট  গুলো থেকে ভিডিওটি ইতোমধ্যে ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। তবে যারা এই ভিডিওটি ডাউনলোড করে রেখেছিল তারা সেগুলো প্রচার করছে। আপনাদের কাছে অনুরোধ আপনারা এই ভিডিওগুলো ডিলিট করে দিন।

এছাড়া অনুসন্ধানে ‘Real life story’ ফেসবুক পেজে ২০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from Facebook

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, তারাই সর্বপ্রথম উক্ত দাবিতে প্রচারিত নাটিকাটি তৈরি করেছিলেন। তারা ভিডিওটি অন্য একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর থেকে দেখে বানিয়েছিলেন। ভিডিওতে দেখানো নারী ও পুরুষ একে অপরের সম্পর্কে আপন ভাই বোন হন না। তারা মূলত কাল্পনিক চরিত্র। এছাড়া তারা এই ভিডিওটি বানানোর জন্য দর্শকের কাছ থেকে ক্ষমা চান।

পরবর্তীতে ‘Real life story 7’ নামক  ফেসবুক পেজে  বিভিন্ন সময়ে শফিক শাহ এর অভিনীত বেশ কিছু নাটিকার ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

শফিক শাহর অভিনিত এমন কিছু নাটিকা দেখুন, 

এছাড়া ‘Real life story 7’ নামক ফেসবুক পেজের ইন্ট্রো থেকে জানা যায়, এটি একটি বিনোদনধর্মী পেজ। এই পেজ থেকে ফানি ভিডিও প্রচার করা হয়। 

Screenshot from Facebook

মূলত, সম্প্রতি ‘Real life story 7’ নামক একটি বিনোদনধর্মী ফেসবুক পেজ থেকে ‘নিজের আপন বোনকে বিয়ে করেছে আপন ভাই’ শীর্ষক একটি নাটিকা ফেসবুকে প্রচার করা হয়। কিন্তু নেটিজেনদের সমালোচনার মুখে ভিডিওটি ঐ পেজ থেকে ডিলিট করে দেওয়া হয়। তাছাড়া, নাটিকাতে ভাই চরিত্রে অভিনয় করা শফিক শাহ উক্ত ভিডিওর বিষয়ে দর্শকদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তবে, উক্ত ভিডিওটি ডাউনলোড করে অনেক ফেসবুক পেজ থেকে ‘আপন বোনকে বিয়ে করলো নিজের আপন মায়ের পেটের ভাই’ শীর্ষক দাবিতে ফেসবুক ও টিকটকে ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে আলোচিত ভিডিওটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে আপন ভাই-বোনের বিয়ের দৃশ্য দাবিতে বানোয়াট ভিডিও প্রচার করলে বিষয়টি শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, আপন ভাই-বোনের মধ্যকার বিয়ের কাল্পনিক ঘটনা নিয়ে তৈরি নাটিকাকে বাস্তব ঘটনা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জার্মানীর ছবিকে বঙ্গবন্ধু টানেলের ছবি দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার

0

সম্প্রতি, একটি টানেল সদৃশ স্থানের প্রবেশমুখের ছবিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা বঙ্গবন্ধু টানেলের ছবি দাবি করে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

বঙ্গবন্ধু টানেল

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন এটিএন নিউজ (ইউটিউব), চ্যানেল২৪ (ইউটিউব), ভোরের ডাক, একুশে সংবাদ, রিদ্মিক নিউজ, সময়ের আলো, একাত্তর টিভি, সকালের সময়। 

একই দাবিতে ২০২২ সালে প্রকাশিত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন ঢাকা টাইমস

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ছবিটি বঙ্গবন্ধু টানেলের নয় বরং জার্মানির একটি টানেল এবং কর্ণফুলী নদীর একটি ছবিকে এডিটের মাধ্যমে জোড়া লাগিয়ে এটিকে বঙ্গবন্ধু টানেলের ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

মূলত, আলোচিত ছবির টানেলটির নাম Engelberg Base Tunnel যা জার্মানির Baden-Württemberg শহরে অবস্থিত। টানেলটির নির্মাণ কাজ ১৯৯৫ সালে শুরু হয়ে ১৯৯৯ সালে সমাপ্ত হয়। জার্মানির এই টানেলের একটি ছবির সাথে কর্ণফুলী নদীর একটি ছবিকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিটের মাধ্যমে দুইটি ছবিকে একত্রিত করে বঙ্গবন্ধু টানেলের ছবি দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে। 

উল্লেখ্য, ২০২২ সালেও ছবিটিকে বঙ্গবন্ধু টানেলের দাবিতে ফেসবুকে প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

হালনাগাদ/ Update

২১ জানুয়ারি, ২০২৪ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়েও কতিপয় গণমাধ্যমে একই দাবি প্রচার করার প্রেক্ষিতে সেসব গণমাধ্যমকেও দাবি হিসেবে প্রতিবেদনে যুক্ত করা হলো।

ইইউ পার্লামেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্যাংশন পাশ করেনি

0

সম্প্রতি, “ইইউ পালামেন্টে হাসিনার বিরুদ্ধে স্যাংশন পাশ!” শীর্ষক শিরোনামে ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনা
YouTube Screenshot

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) পার্লামেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোনো স্যাংশন পাশ করে নি বরং, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার বক্তব্যের একটি ভিডিওকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইইউ এর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতেই ১২ মিনিট ৭সেকেন্ডের আলোচ্য ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাকে বলতে শোনা যায়, “প্রিয় দেশবাসী, আসসালামু আলাইকুম। আজকাল এই প্রশ্নটা একেবারেই কমন হয়ে গেছে, সবাই জিজ্ঞেস করেন যে ভাই কি হচ্ছে? তারপরও ভেতরে কিছু একটা হচ্ছে যেটা আমরা দেখিই না যেটা ভাবে সবাই…”

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওর মূল উৎস অনুসন্ধানে ২০২৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার ফেসবুক পেজে পোস্টকৃত একটি ভিডিও খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। 

উক্ত ভিডিওর বক্তব্যের সাথে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটির বক্তব্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, মাহমুদুর রহমান মান্নার ফেসবুক পেজে পোস্টকৃত ভিডিওর শুধুমাত্র ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করে মূল বক্তব্য অপরিবর্তিত রেখে “ইইউ পালামেন্টে হাসিনার বিরুদ্ধে স্যাংশন পাশ!” শীর্ষক থাম্বনেইলে প্রচার করা হচ্ছে।

Source: Mahmudur Rahman Manna Facebook Page

তবে উক্ত ভিডিওতে মাহমুদুর রহমান মান্নার বক্তব্যে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় নি যা আলোচিত ভিডিওর থাম্বনেইল এবং শিরোনামে থাকা তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে। 

এছাড়াও, কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইইউ পার্লামেন্টের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে, কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর “ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাবে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ” শীর্ষক শিরোনাম প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্টের এক যৌথ প্রস্তাবে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতিতে গভীর উদ্বেগ জানানো হয়। প্রস্তাবে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার চর্চার বিষয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুসরণের আহ্বান জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

Source: প্রথম আলো

বিষয়টির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে অনুসন্ধানে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্টের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত “Human rights breaches in Guatemala, Azerbaijan and Bangladesh” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশের মানবাধিকার বিষয়ক পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে রেজুলেশন পাশ করা হয়। বাংলাদেশ ছাড়াও গুয়াতেমালা এবং আজারবাইজানের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্টে রেজুলেশন পাশ করা হয়েছে বলে উক্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। কিন্তু, উক্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তির কোথাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্যাংশন পাশের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Source: EU Parliament

মূলত, গত ১৪ই সেপ্টেম্বর ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্ট বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাশ করে। পরবর্তীতে সে ঘটনাকেই অতিরঞ্জিত করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার বক্তব্যের একটি ভিডিও জুড়ে দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্যাংশন পাশ করেছে দাবিতে প্রচার করা হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ইইউ পার্লামেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্যাংশন পাশ করেছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ছবিকে বঙ্গবন্ধু টানেলের ছবি দাবি গণমাধ্যমে

0

সম্প্রতি, একটি টানেল সদৃশ স্থানের প্রবেশমুখের ছবিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা বঙ্গবন্ধু টানেলের ছবি দাবি করে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন  ইউএনবি, যমুনা টিভি (ইউটিউব), ভোরের কাগজ, নয়া দিগন্ত, ঢাকা টাইমস, নয়া শতাব্দী, দেশ রূপান্তর, বিজনেস আওয়ার২৪, দ্য রিপোর্ট লাইভ, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস), চ্যানেল২৪, সময়ের আলো, বাংলাভিশন, জনকণ্ঠ, কালের কণ্ঠ, এশিয়ান এজ, ইত্তেফাক, আমাদের সময়

বঙ্গবন্ধু টানেলে

একই দাবিতে চলতি বছর ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ২০২২ সালে প্রকাশিত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন কালের কণ্ঠ, বহুমাত্রিক, কলমের বার্তা, দৈনিক চট্টগ্রাম খবর

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ছবিটি কর্ণফুলী টানেলের নয় বরং ইন্টারনেটে থেকে ভিন্ন স্থানের একটি টানেলের ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

মূলত, টানেলের আলোচিত ছবিটি ২০১৫ সাল থেকেই ইন্টারনেটে রয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। তাই ছবিটি বঙ্গবন্ধু টানেলের হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে ছবিটিকে বঙ্গবন্ধু টানেলের ছবি দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে। 

উল্লেখ্য, ২০২২ সালেও ছবিটিকে বঙ্গবন্ধু টানেলের দাবিতে ফেসবুকে প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

হালনাগাদ/ Update

২১ জানুয়ারি, ২০২৪ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়েও কতিপয় গণমাধ্যমে একই দাবি প্রচার করার প্রেক্ষিতে সেসব গণমাধ্যমকেও দাবি হিসেবে প্রতিবেদনে যুক্ত করা হলো।

সময় টিভির ফটোকার্ড বিকৃত করে সাকিব আল হাসানের নামে ভুয়া তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘দেশে ফিরেই মাগির ফিতা কাটলো সাকিব’ শীর্ষক শিরোনামে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভির আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

সাকিব

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘দেশে ফিরেই মাগির ফিতা কাটলো সাকিব’ শীর্ষক শিরোনামে সময় টিভি কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং চ্যানেলটির একটি ফটোকার্ডের শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে এটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

ফটোকার্ডটির উপরের ডান কোণে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভির লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। এই সূত্রে ধরে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে সময় টিভির ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে সময় টিভির ফেসবুক পেজে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ‘এশিয়া কাপে টাইগাররা যখন একের পর এক ম্যাচে হেরে সমালোচনায় জর্জরিত, ঠিক তখন দেশে ফিরে আসেন সাকিব আল হাসান।…’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ফেসবুক পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Somoy TV Facebook Post

এই পোস্টে ব্যবহৃত ফটোকার্ডের সঙ্গে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটির ছবি ও শিরোনামের কিছু অংশের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে এই ফটোকার্ডটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির তূলনামূলক বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে বেশ কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। 

প্রথমত আলোচিত ফটোকার্ডে ‘মাগির ফিতা কাটলো সাকিব’ শীর্ষক বাক্যাংশ যে ফন্টে লেখা হয়েছে সে ফন্টের সাথে ‘দেশে ফিরেই’ বাক্যাংশে ব্যবহৃত ফন্টের মিল নেই। 

দ্বিতীয়ত সময় টিভির ফটোকার্ডে এই অংশের নিচে লেখা ছিল ‘সিমেন্ট কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সাকিবের।’ যেখানে আলোচিত ফটোকার্ডে লেখা, ‘মাগির ফিতা কাটলো সাকিব।’

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

এসব বিশ্লেষণ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে ‘মাগির ফিতা কাটলো সাকিব’ শীর্ষক বাক্যাংশ যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

মূলত, সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপ খেলে দেশে ফিরে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ফ্রেশ সিমেন্ট এর সাথে ‘শুভেচ্ছাদূত’ হিসেবে চুক্তি সম্পাদন করেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এ চুক্তি সম্পাদন নিয়ে ‘দেশে ফিরেই সিমেন্ট কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সাকিবের’ শীর্ষক একটি ফটোকার্ড ও প্রতিবেদন প্রকাশ করে বেসরকারি টিভি চ্যানেল সময় টিভি। পরবর্তীতে সময় টিভির এই ফটোকার্ডটিকেই সম্পাদনা করে ‘দেশে ফিরেই মাগির ফিতা কাটলো সাকিব’ শীর্ষক শিরোনামে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

সুতরাং, সময় টিভির ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘দেশে ফিরেই মাগির ফিতা কাটলো সাকিব’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং আলোচিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

রোনালদোর ফ্রি-কিকে আঘাতপ্রাপ্ত ক্যামেরাম্যানের ছবি দাবিতে ভিন্ন ব্যক্তির ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘সৌদি প্রো লিগের ম্যাচে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ফ্রি-কিকে আঘাতপ্রাপ্ত ক্যামেরাম্যান’ দাবিতে এক ব্যক্তির কপালে ক্ষত অবস্থার একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

রোনালদোর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সৌদি প্রো লিগের আল-রায়েদ বনাম আল-নাসরের ম্যাচে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ফ্রি-কিকে আঘাতপ্রাপ্ত ক্যামেরাম্যান দাবিতে প্রচারিত ছবিটি আলোচিত ক্যামেরাম্যানের নয় বরং এটি জিয়াদ আল-শামারী নামের ভিন্ন এক ব্যক্তির। 

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, ‘POWR Hunter’ নামের একটি ভেরিফায়েড এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্টে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি وضعي مع الدنيا وهي’ تسطرني অর্থাৎ, ‘My situation is with the world and it rules me’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত একটি টুইটে হুবহু একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: X (Twitter)

উক্ত টুইট প্রচারকারী ব্যক্তির ছবির সাথে আলোচিত ছবিতে থাকা ব্যক্তির চেহারার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দুই ব্যক্তির মুখমণ্ডলের গঠনগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। অর্থাৎ, ছবিতে থাকা ব্যক্তিটি ‘POWR Hunter’ নামের টুইটার ব্যবহারকারী নয়, তিনি তার টুইটারে ভিন্ন কোনো ব্যক্তির ছবি প্রচার করেছে। 

পরবর্তীতে, ছবিতে থাকা ব্যক্তির আসল পরিচয় জানার জন্য আলোচিত পোস্টসহ আরো কিছু পোস্ট পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে زياد الشمري অর্থাৎ, Zeeyad Al-Shamri নামের এক ব্যক্তির এক্স (টুইটার) আইডির সন্ধান পাওয়া যায়। এই ব্যক্তির সাথে আলোচিত ছবির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে মুখমণ্ডলের হুবহু মিল পাওয়া যায়। যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় ক্যামেরাম্যান দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ছবিটি জিয়াদ আল-শামারীর ছবি। 

Image Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ব্যক্তির এক্স (টুইটার) আইডিসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করে জানা যায়, তিনি একজন গেমার ও স্ট্রিমার। তিনি ভিডিও লাইভ স্ট্রিমিং প্লার্টফ্রম টুইচে ভিডিও গেম লাইভ স্ট্রিমিং করেন, পাশাপাশি তিনি ইউটিউব কনটেন্ট তৈরি করেন।

পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ফুটবল ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম  GOAL এর ওয়েবসাইটে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ‘WATCH: Ouch! Cristiano Ronaldo hits camera operator with wayward free-kick during Al-Nassr’s win over Al-Raed’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

Screenshot: GOAL

উক্ত প্রতিবেদনে গত ১৬ সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত আল রায়েদ বনাম আল নাসর ম্যাচে রোনালদোর নেওয়া ফ্রি-কিকে  ক্যামেরাম্যানের আঘাত পাওয়ার ভিডিও পাওয়া যায়। কিন্তু সেখানে ক্যামেরাম্যানের এরূপ কোনো ছবি পাওয়া যায়নি।

Screenshot: GOAL

এছাড়াও প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আল-রায়েদ এবং আল-নাসরের ম্যাচে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ফ্রি-কিকে ক্যামেরাম্যান আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার একাধিক সংবাদ পাওয়া গিয়েছে। তবে কোনো মাধ্যমেই আঘাতপ্রাপ্ত সেই ক্যামেরাম্যানের পরিচয় কিংবা আঘাতের পরবর্তী সময়ে তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত ১৬ সেপ্টেম্বর সৌদি প্রো লিগের ম্যাচে কিং আবদুল্লাহ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামের মাঠে নামে আল রায়েদ এবং আল নাসর। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে আল নাসরের হয়ে ফ্রি কিক নেয় পর্তুগিজ ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। কিন্তু এসময় তার নিশানা মিস হয়ে বলটি গিয়ে লাগে গোল পোস্টের পেছনে থাকা ক্যামেরাম্যানের মাথায়। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে কপালে আঘাত পাওয়া এক ব্যক্তির ছবি উক্ত ক্যামেরাম্যানের ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, রোনালদোর ফ্রি-কিকে আঘাতপ্রাপ্ত ক্যামেরাম্যান দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ছবিটি মূলত জিয়াদ আল-শামারী নামের সৌদি আরব ভিত্তিক একজন গেমার ও গেমিং কনটেন্ট নির্মাতার এবং উক্ত ছবিটি পূর্ব হতেই ইন্টারনেটে রয়েছে।

সুতরাং, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ফ্রি-কিকে আঘাতপ্রাপ্ত ক্যামেরাম্যানের ছবি দাবিতে ভিন্ন এক ব্যক্তির ছবি প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

চীনে গত ০৬ আগস্টের ভূমিকম্পে গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি প্রচার

চীনে গত ০৬ আগস্টের ভূমিকম্পে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দুইটি ভিন্ন ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।

ভূমিকম্পে

ছবিগুলো ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে একাত্তর টিভি, নয়া দিগন্ত। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ে চীনের ভূমিকম্পের ঘটনার নয় বরং পূর্বের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবিকে চীনের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

ছবি যাচাই ০১

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে একাত্তর টিভি। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা Reuters এর ওয়েবসাইটে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Reuters

ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালের মে মাসে চীনে সিচুয়ান প্রদেশে হওশা ভূমিকম্পের ঘটনার দৃশ্য এটি। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি ১৫ বছরের পুরোনো।

ছবি যাচাই ২

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নয়া দিগন্ত।

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে মানবাধিকার সংস্থা World Vision এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: World Vision 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার ভূমিকম্পের ঘটনার দৃশ্য এটি। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি চীনের নয়, ইন্দোনেশিয়ার। 

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি বরং কিছু গণমাধ্যমে ছবিগুলো সংগৃহীত এবং কোনো কোনো গণমাধ্যমে ছবির ক্যাপশনে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিগুলো ব্যবহার করে সংগৃহীত উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্যই উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই ছবিগুলো চীনের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া অমূলক নয়।

মূলত, চলতি বছরের গত ০৬ আগস্ট চীনে ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে চীনের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনার দাবিতে দুইটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ের নয়। চীন ও ইন্দোনেশিয়ার পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনার ছবিকে চীনের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনার খবরে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্যও দেওয়া হয়নি। এতে করে স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো চীনের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বে পুরোনো ও ভিন্ন স্থানের দুইটি ছবি এবং সিজিআই পদ্ধতিতে তৈরি একটি ফুটেজকে ভূমিকম্পের পূর্বে মরক্কোর আকাশে রহস্যময় আলো দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হলে বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, চীনের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনায় বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একাধিক পুরোনো ঘটনার ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

জাতিসংঘ কর্তৃক শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার গুজব 

0

সম্প্রতি, “জাতিসংঘে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ, হাসিনাকে ধ্বংস করলো ড. ইউনূস” শীর্ষক শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফেসবুক প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের কোনো নির্দেশনা দেয়নি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে উক্ত ভিডিও তৈরি করা হয়েছে। 

গত ১৮ সেপ্টেম্বর Al Minar নামের ইউটিউব চ্যানেলে জাতিসংঘে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ, হাসিনাকে ধ্বংস করলো ড. ইউনূস” শীর্ষক শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও (আর্কাইভ) প্রকাশ করা হয়৷ 

১৪ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, ভিডিওটির থাম্বনেইলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘের প্রসিডেন্টের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটিতে ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করা হয়েছে। 

ভিডিও যাচাই 

প্রচারিত ভিডিওটির শুরুতে দেশীয় বেসরকারি টেলিভিশন সময় টিভির একটি ভিডিওর কিছু অংশ প্রচার করতে দেখা যায়। পরবর্তীতে অনলাইন এক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে সময় টিভির ভিডিওটি খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিমের। ৩ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ২৭ সেকেন্ড থেকে ৩৫ সেকেন্ড পর্যন্ত কেটে আলোচিত ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে, কি ওয়ার্ড সার্চ করে পিনাকী ভট্টাচার্যের ভিডিওটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২০ সালের ২ জুলাই “প্রফেসর ইউনূস কি হাসিনাকে হটাচ্ছেন?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ১০ মিনিট ৫ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটিতে কোনো গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই এক ব্যক্তি মনগড়া ভাবে কথা বলে যাচ্ছেন।

প্রচারিত ভিডিওটিতে সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজকেও কথা বলতে দেখা যায়। 

পরবর্তীতে মোস্তফা ফিরোজের মূল ভিডিওটি অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে Voice Bangla নামক একটি ফেসবুক পেজে গত ১৭ সেপ্টেম্বর “বাংলাদেশ বিষয়ে ইইউ পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাশের প্রভাব পড়তে পারে তৈরি পোশাক খাতে?” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

৬ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, মোস্তফা ফিরোজ দৈনিক যুগান্তরে গত ১৬ সেপ্টেম্বর “বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাশ, যে প্রভাব পড়ার শঙ্কা” (আর্কাইভ) শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পড়ে শোনাচ্ছেন৷  

এছাড়াও একটি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে জাতিসংঘ পদত্যাগের নির্দেশ দিলে তা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু, উক্ত দাবি সম্পর্কে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি জাতিসংঘের ওয়েবসাইটেও এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটিতে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার যে ভিডিও ক্লিপগুলো যুক্ত করা হয়েছে সেগুলোতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের কোনো বিষয় উল্লেখ নেই। 

মূলত, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগদানের উদ্দেশে গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্ক গমন করেন। এর মধ্যেই জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও ব্যবহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, জাতিসংঘ কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। 

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনে নিউইয়র্কে আসা রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্ট-এ আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দিয়েছেন। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ নিয়ে ইন্টারনেটে গুজব ছড়ানো হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, জাতিসংঘ কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র