Home Blog Page 590

ছাত্রলীগের কার্ড সাথে নিয়ে ভুয়া পুলিশ আটকের দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

0

ছাত্রলীগের কার্ড সাথে নিয়ে ভুয়া পুলিশ আটক শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ভুয়া পুলিশ

ফেসবুক প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছাত্রলীগের কার্ড সহ ভুয়া পুলিশ আটক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০১৯ সালের ঘটনাকে উক্ত দাবিতে নতুন করে প্রচার করা হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘Amin Hossain’ নামক ফেসবুক পেজে ২০১৯ সালের ৫ মে প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image comparison by Rumor Scanner

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, চট্টগ্রামে পুলিশের পোশাক পরিহিত এক যুবককে আটক করে পুলিশ।

উক্ত বিষয়ে আরো সুনিশ্চিত তথ্য জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘Banglanews24’ ২০১৯ সালের ১ মে “আসলের হাতে ধরা ভুয়া পুলিশ!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘Banglanews24’

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১ মে চট্টগ্রামে পুলিশ কর্মকর্তার দেহরক্ষী পরিচয় দেয়া এক যুবককে আটক করে পুলিশ। আটক হওয়া ব্যক্তির নাম আটক মো. আইয়ুব। সে নিজেকে উপ-কমিশনার (বন্দর)-এর দেহরক্ষী হিসেবে পরিচয় দিলে পুলিশ তা যাচাই করলে উক্ত উপ-কমিশনারের কোনো দেহরক্ষী নেই জানান এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

মূলত, ২০১৯ সালের ১ মে চট্টগ্রামে মো. আইয়ুব নামক এক ব্যক্তি পুলিশ কর্মকর্তার দেহরক্ষী পরিচয় দিলে পুলিশ তা যাচাই করে জানতে পারে তিনি সেই পুলিশ কর্মকর্তার দেহরক্ষী নন। পরবর্তীতে তাকে আটক করা হয় এবং উক্ত ঘটনা নিয়ে সেই সময় সংবাদ প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। সম্প্রতি, তিন বছর আগের সেই ঘটনার ভিডিও তারিখ উল্লেখ ছাড়াই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। যার ফলে ভিডিওটি নিয়ে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে বিভিন্ন সময়ে পুরোনো ভিডিও সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হলে বিষয়টি শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ২০১৯ সালে ছাত্রলীগের কার্ড সাথে নিয়ে ভুয়া পুলিশ আটকের ঘটনার পুরোনো ভিডিও নতুন করে তারিখ উল্লেখ ছাড়া প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ওবায়দুল কাদেরের নামে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দাবিতে প্রচারিত চেকটি ভুয়া

0

সম্প্রতি ‘প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিল লুট, কাদেরের ভ্রমণ বিলাসে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ’ শীর্ষক দাবিতে একটি ব্যাংক চেকের ছবি  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

চেক

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল লুট করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভ্রমণ বিলাসের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ সংক্রান্ত প্রচারিত চেকটি ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে চেকটিতে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের ব্যাংক একাউন্টের নাম ও নাম্বারের মিল না থাকাসহ বেশ কিছু অসংগতি পাওয়া গেছে। এছাড়া চেকটি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের প্রণোদনার একটি চেক থেকে সম্পাদনা করা হয়েছে।

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতেই রিউমর স্ক্যানার টিম চেকটিতে প্রদত্ত তথ্যসমূহ যাচাই করে। এ যাচাইয়ের কাজে ওপেন সোর্স থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গকে দেওয়া একাধিক চেকের সাহায্য নেওয়া হয়।

অসংগতি ১: প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের অ্যাকাউন্ট নাম এবং নাম্বার ভুল

Image Analysis: Rumor Scanner

ওবায়দুল কাদেরের ভ্রমণ বিলাসের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ সংক্রান্ত প্রচারিত চেক বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেখানে প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের অ্যাকাউন্ট নাম PM’s Relief Fund এবং অ্যাকাউন্ট নাম্বার দেওয়া 4435403007037

অপরদিকে ওপেন সোর্সে পাওয়া প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের চেক বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের অ্যাকাউন্ট নাম PRODHAN MONTRIR TRAN O KALYAN TAHABIL এবং অ্যাকাউন্ট নাম্বার হলো 0107333004093

অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওবায়দুল কাদেরের ভ্রমণ বিলাসের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ সংক্রান্ত প্রচারিত চেকটিতে প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের অ্যাকাউন্ট নাম এবং নাম্বারটি ভুল।

অসংগতি ২: একই চেকে ভিন্ন ভিন্ন অ্যাকাউন্ট নাম্বার

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওবায়দুল কাদেরের ভ্রমণ বিলাসের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ সংক্রান্ত প্রচারিত চেকটির দুই জায়গায় অ্যাকাউন্ট নাম্বারের ভিন্নতা রয়েছে।

Image Analysis: Rumor Scanner

চেকটি বিশ্লেষণে দেখা যায়, এর একস্থানে অ্যাকাউন্ট নাম্বার রয়েছে 4435403007037। আবার এরই নিচে যে অ্যাকাউন্ট নাম্বারটি রয়েছে সেটি হলো 4435403000037। অর্থাৎ শেষ চার সংখ্যার এক জায়গায় লেখা ৭০৩৭, অন্য জায়গায় লেখা ০০৩৭। 

অসংগতি ৩: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবের সিল ও স্বাক্ষর

পাশাপাশি ওপেন সোর্সে পাওয়া প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের চেকগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবের সিল ও স্বাক্ষর লক্ষ্য করা যায়, যা আলোচিত চেকটিতে অনুপস্থিত।

Image Analysis: Rumor Scanner

অসংগতি ৪: চেকে উল্লিখিত ব্যাংকের শাখায় বিভ্রান্তি 

ভাইরাল চেকটিতে দেখা যায়, সেখানে সোনালি ব্যাংকের শাখা উল্লেখ করা হয়েছে তেজগাঁও শাখা, ঢাকা। তবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যান তহবিলের প্রকৃত চেকগুলোতে সোনালি ব্যাংকের শাখা উল্লেখ করা আছে প্রাইম মিনিস্টার অফিস কর্পোরেট, ঢাকা।

Image Analysis: Rumor Scanner

 অসংগতি ৫: চেকে ভাষাগত অসংগতি 

চেকটি নিয়ে বিশ্লেষণে দেখা যায়, চেকটিতে সহায়তা গ্রহণকারীর নাম অর্থাৎ ওবায়দুল কাদেরের নাম ও অর্থের পরিমাণ ইংরেজিতে উল্লেখ রয়েছে।

Image Analysis: Rumor Scanner

তবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের প্রাপ্ত চেকগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেখানে এই তথ্যগুলো বাংলায় উল্লেখ থাকে। 

এছাড়া চেকটিতে প্রদত্ত তারিখ অনুযায়ী এই ঘটনা গত ২২ আগস্টের। তবে এ নিয়ে অনুসন্ধানে কোনো নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যম সূত্রে এমন কোনো তথ্য কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

চেকটি আসলে কার?

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে চলতি বছরের গত ২৪ মে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে ‘ঢাকা আইনজীবী সমিতিকে ছয় কোটি সত্তর লক্ষ পনের হাজার আটশত পঁচাত্তর টাকার আইনজীবী প্রণোদনার চেক প্রদানের মাধ্যমে বার কাউন্সিল হতে প্রণোদনা অর্থ বিতরণ শুরু হল‘ শীর্ষক শিরোনামে একটি বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Bangladesh Bar Council

এই বিজ্ঞপ্তিতে ব্যবহৃত চেকের ছবিটির সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওবায়দুল কাদেরের ভ্রমণ বিলাসের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ সংক্রান্ত প্রচারিত চেকটির অ্যাকাউন্ট নাম্বার ও স্বাক্ষরের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Analysis: Rumor Scanner

উল্লেখ্য, একই চেক সম্পাদনা করে ইতোপূর্বেও ওবায়দুল কাদেরের নামে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে চিকিৎসা সহায়তা নেওয়ার দাবিতেও প্রচার করা হয়েছিল। এছাড়া এই চেকটিই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও বোন শেখ রেহানার নামেও প্রচার হয়েছিল। 

এ নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনগুলো দেখুন 

মূলত, গত আগস্টে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে যাওয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০ লাখ টাকা চিকিৎসা সহায়তা বিদেশ ভ্রমণে গিয়েছেন এমন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি চেকের ছবি ছড়িয়ে পড়ে। যা অনুসন্ধানে ভুয়া হিসেবে প্রমাণিত হয়। পরবর্তীতে একই চেক প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও বোন শেখ রেহানার অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার দাবিতে প্রচার করা হয়। সম্প্রতি একই চেক ঈষৎ সম্পাদনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নামে প্রচার করা হচ্ছে। যা ইতোপূর্বে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে তাঁর চিকিৎসা সহায়তা নেওয়ার দাবিতেও প্রচার হয়েছিল।

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ওবায়দুল কাদেরের ভ্রমণ বিলাসের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ সংক্রান্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত চেকটি ভুয়া এবং উল্লিখিত দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

চটকদার থাম্বনেইলে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর বিচার শুরু শীর্ষক ভুয়া তথ্য প্রচার 

সম্প্রতি “বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন করবেই জাতিসংঘ জাতিসংঘে শেখ হাসিনার বিচার শুরু” শীর্ষক থাম্বনেইল এবং শিরোনামে একটি ভিডিও ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রীর বিচার শুরু

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন ভিডিও (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার শুরু শীর্ষক কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার একাধিক ভিডিও যুক্ত করে কোনরূপ তথ্যসূত্র ছাড়াই চটকদার থাম্বনেইল এবং ক্যাপশন ব্যবহার করে ভিত্তিহীনভাবে উক্ত তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে। 

গুজবের সূত্রপাত 

অনুসন্ধানে পাওয়া যায় ‘Al Minar’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “ব্রেকিং নিউজ। বাংলাদেশ সুষ্ঠু নির্বাচন করবেই জাতিসংঘ। জাতিসংঘে শেখ হাসিনার বিচার শুরু। bdnews।” শীর্ষক শিরোনামে ভিডিওটি পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটির মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে। 

তথ্যযাচাই 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটি কয়েকটি ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রযুক্তির সাহায্যে যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে উক্ত তথ্য প্রদান করা হলেও ভিডিওটির বিস্তারিত অংশে উক্ত তথ্যের ব্যাপারে কোনো কথাই উল্লেখ নেই।

১৩ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের এই ভিডিওটির শুরুতে কয়েকটি ভিন্ন ঘটনার ভিডিওর খণ্ডিত অংশ দেখানো হয়। পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটিতে চ্যানেলটির উপস্থাপক আলোচিত ভিডিওটির উদ্দেশ্যে দুইটি ভিডিও দেখান। 

ভিডিওটি দেখানোর পূর্বে চ্যানেলটির উপস্থাপক বলেন, বাংলাদেশে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাক ও সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ব্যাপক চ্যালেঞ্জ গ্রহন করেছে আমেরিকা ও জাতিসংঘ এবং এই চ্যালেঞ্জের সামনে যদি কোনো দেশ বা ব্যক্তি বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে স্যাংশন অটোমেটিক্যালি ভারতের নরেন্দ্র মোদিকেও স্যাংশন দেওয়া হয়েছে…। ‘

প্রথম ভিডিও যাচাই 

অনুসন্ধানে ভিডিওটিতে থাকা Voice Bangla এর লোগো ধরে কিওয়ার্চ সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধান করে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ‘Voice Bangla’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “এক দফা দাবিতে ১৫ দিনের কর্মসূচি নিচ্ছে বিএনপি ও সমমানারাঅনিশ্চিত নির্বাচনের পথে দেশ! Voice Bangla” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে ভয়েজ বাংলার প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা ফিরোজ কে দেখা যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।  

Photo Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটিতে সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ এর কথার সূত্র ধরে গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ” ‘এক দফা’ দাবিতে এবার ১৫ দিনের কর্মসূচি নিয়ে আসছে বিএনপি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,’সরকার হটানোর ‘এক দফা’ দাবিতে ১৫ দিনের গুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে আসছে বিএনপি। এই গুচ্ছ কর্মসূচিতে যেমন নানামাত্রিক সমাবেশ থাকবে, তেমনি একাধিক রোডমার্চের কর্মসূচিও থাকবে। ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।’

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় ভিডিওটিতে উক্ত প্রতিবেদনটি হুবহু পাঠ করেন সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ। 

তবে উক্ত ভিডিওতে সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ এর বলা বক্তব্য এবং প্রতিবেদনে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় নি যা আলোচিত ভিডিওর থাম্বনেইল এবং শিরোনামে থাকা তথ্যের সাথে প্রাসঙ্গিক। 

অনুরূপভাবে দ্বিতীয় ভিডিওটির শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির উপস্থাপকের বলা দ্বিতীয় ভিডিওটির চ্যানেলটির উপস্থাপকের নামের সূত্র ধরে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ‘NAYEEM ELLI2’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে “প্রঃমন্ত্রীকে নিয়ে আমেরিকার একি খেলা শুরু।। শনি পিছু ছাড়ছে না” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত দ্বিতীয় ভিডিওটির মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওটিতে থাকা ভিডিওটির উপস্থাপকের কথার সূত্র ধরে গত ১৬ সেপ্টেম্বর দৈনিক যুগান্তরের ওয়েবসাইটে “বাংলাদেশ ভিন্নমত দমনের মাত্রা বাড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে : নিউইয়র্ক টাইমস” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির উপস্থাপক প্রতিবেদনে থাকা তথ্যগুলো হুবহু পাঠ করে। 

তবে উক্ত প্রতিবেদনে থাকা তথ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওর থাম্বনেইল এবং শিরোনামে থাকা তথ্যের কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

মূলত,’Al Minar’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার শুরু শীর্ষক দাবিতে ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায় অধিকতর ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়। পাশাপাশি দেশের নির্ভরযোগ্য কোনো গণমাধ্যম সূত্রেও এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার শুরু শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ভারতীয় ক্রিকেট টিমের জার্সি থেকে ‘ইন্ডিয়া’ বাদ দিয়ে ‘ভারত’ লেখার দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, ভারতীয় ক্রিকেট টিমের জার্সি থেকে ‘ইন্ডিয়া’ বাদ দেওয়া হবে এবং ‘ভারত’ লেখা থাকবে শীর্ষক দাবিতে ভিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মার জার্সিতে ইংরেজিতে ‘ভারত’ লেখা সম্বলিত একটি কোলাজ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ইন্ডিয়া' বাদ

যা দাবি করা হচ্ছে

ভারতীয় ক্রিকেট টিমের জার্সি থেকে ‘ইন্ডিয়া’ বাদ দেওয়া হবে এবং ‘ভারত’ লেখা থাকবে দাবি করে ভারতীয় ক্রিকেটার রোহিত শর্মা এবং ভিরাট কোহলির জার্সিতে ইংরেজি ভাষায় ‘ভারত’ লেখা সম্বলিত একটি কোলাজ ছবি প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুক প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতীয় ক্রিকেট টিমের জার্সিতে ইন্ডিয়ার পরিবর্তে ভারত লেখা থাকার দাবিটি সত্য নয়। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া, এধরণের কোনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এছাড়া, রোহিত শর্মা এবং ভিরাট কোহলির জার্সিতে ইংরেজি ভাষায় ‘ভারত’ লেখা সম্বলিত ছবিটি এডিটেড।

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মাধ্যমে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) এর অফিশিয়াল এক্স এ (সাবেক টুইটার) গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Twitter

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, এটি ভারতীয় ক্রিকেটের কিট স্পন্সর কোম্পানি এডিডাস এর পক্ষ থেকে ক্রিকেট বিশ্বকাপ -২০২৩ জন্য তৈরি করা একটি গান। এই গানে ক্রিকেট বিশ্বকাপ-২০২৩ এর জন্য ভারত ক্রিকেট টিমের জার্সি প্রদর্শন করা হয়। তবে, ভিডিওতে দেখানো ভারতীয় ক্রিকেটারদের জার্সিতে ইংরেজিতে ‘ইন্ডিয়া’ লেখা।

এডিডাস কোম্পানির অফিশিয়াল এক্স (সাবেক টুইতার) অ্যাকাউন্ট থেকে ২০ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

রোহিত শর্মা এবং ভিরাট কোহলির জার্সিতে ইংরেজি ভাষায় ‘ভারত’ লেখা সম্বলিত ছবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘Adidas’ কোম্পানির ওয়েবসাইটে ‘INDIA CRICKET ODI JERSEY MEN’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ছবির সাথে দাবিতে প্রচারিত ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Collage by Rumor Scanner

তবে, এডিডাসের ওয়েবসাইটে পাওয়া রোহিত শর্মা এবং ভিরাট কোহলির জার্সিতে ইংরেজিতে ‘ইন্ডিয়া’ লেখা ছিলো। অর্থাৎ, এই ছবি গুলো ডিজিটাল পদ্ধতিতে এডিট করে তৈরি করা হয়েছে।

এছাড়া ভারত ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) এর ওয়েবসাইটেও খেলোয়াড়দের জার্সি থেকে ‘ইন্ডিয়া’ লেখা বাদ দিয়ে ‘ভারত’ যুক্ত করা হবে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, ভারত ক্রিকেট দলের জার্সিতে দেশের নাম ইংরেজিতে ‘ইন্ডিয়া’ লেখা থাকে। যা আসন্ন ক্রিকেট বিশ্বকাপ – ২০২৩ উপলক্ষে ভারতের ক্রিকেট টিমের জন্য তৈরি জার্সিতেও দৃশ্যমান। তবে সম্প্রতি, ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি থেকে ‘ইন্ডিয়া’ বাদ দেওয়া হবে এবং ‘Bharat’ লেখা থাকবে এমন দাবিতে রোহিত শর্মা এবং ভিরাট কোহলির জার্সিতে ইংরেজি ভাষায় ‘ভারত’ লেখা সম্বলিত একটি কোলাজ ছবি ডিজিটাল পদ্ধতিতে এডিটের মাধ্যমে বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু ভারত ক্রিকেট দলের জার্সি থেকে ‘ইন্ডিয়া’ লেখা বাদ দিয়ে ‘ভারত’ যুক্ত করা হবে এখন পর্যন্ত এমন কোনো ঘোষণা করা হয়নি।

উল্লেখ্য, কিছু দিন পূর্বে ভারতীয় সাবেক ক্রিকেটার ভিরেন্দ্র শেবাগ একটি এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টের মাধ্যমে জার্সি থেকে ‘ইন্ডিয়া’ বাদ দিয়ে ‘ভারত’ লেখার আর্জি জানান।

প্রসঙ্গত, পূর্বে ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য প্রচার করা হলে বিষয়টি শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি থেকে ‘ইন্ডিয়া’ বাদ দিয়ে ‘ভারত’ লেখা হবে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মার্কিন ভিসা বাতিলের গুজব

0

সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মার্কিন ভিসা বাতিলসহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য পিটার হাসকে ধন্যবাদ’ শীর্ষক শিরোনামে সোশ্যাল মিডিয়া এক্টিভিস্ট মিনা ফারাহর একটি ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

মার্কিন ভিসা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মার্কিন ভিসা বাতিল করা হয়নি এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও এসম্পর্কিত কোনো ঘোষণা দেননি বরং নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। গত ২০ সেপ্টেম্বর মিনা ফারাহ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়। ভিডিওটিতে সোশ্যাল মিডিয়া এক্টিভিস্ট মিনা ফারাহ  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মার্কিন ভিসা বাতিল হয়েছে বলে দাবি করেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পিটার হাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মার্কিন ভিসা বন্ধ করে দিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

বিষয়টি অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে গণমাধ্যম বা অন্যকোনো সূত্রে এই বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের এসম্পর্কিত কোনো মন্তব্যও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তাছাড়া, প্রধানমন্ত্রীর মার্কিন ভিসা বাতিলের দাবিটি অধিকতর অনুসন্ধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বা রাজস্ব বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের Sanction Programs and Information সেকশনে উক্ত বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু এর বক্তব্য থেকে জানা যায়, ভিসা নীতির আওতায় যাদের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে, তাদের নাম প্রকাশ করা হবে না। কাউকে ভিসা না দেওয়াসহ যেকোনো ভিসা রেকর্ড মার্কিন আইন অনুযায়ী গোপনীয় তথ্য।

এছাড়াও, মূলধারার গণমাধ্যম ডেইলি স্টারের অনলাইন সংস্করণে গত ১৭ সেপ্টেম্বর শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,  আলোচিত ভিডিওটি প্রচারের তারিখে (১৯ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই অবস্থা করছিলেন।  তিনি নিউইয়র্কে চলমান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুরে ভাষণ দেন। এটা ছিল তার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ১৭তম ভাষণ। এই ভাষণে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা সংকট, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অন্যান্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি প্রচারের সময়ই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থা করেছেন এবং জাতিসংঘের অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন। তাছাড়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রেই রয়েছেন।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নামে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রবণতা বেশ লক্ষণীয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মার্কিন ভিসা বাতিলের বিষয়টি গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, যে সময় তার ভিসা বাতিলের দাবি প্রচার হয় ঠিক সেসময় তিনি সেসময় জাতিসংঘের অধিবেশনে অংশ নিতে খোদ যুক্তরাষ্ট্রেরই অবস্থান করছিলেন এবং তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রেই আছেন। তাছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মার্কিন ভিসা বাতিলের সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার গতকাল (২২ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মার্কিন ভিসা বাতিলের গুজব ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন-

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মার্কিন ভিসা বাতিলের দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

সম্প্রতি, “আমেরিকাকে হুমকি দিয়ে লাভ নেই, সুষ্ঠু নির্বাচন আপনাকে দিতেই হবে” শীর্ষক একটি তথ্য বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাসের মন্তব্য দাবিতে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে।

পিটার হাস

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাস ”আমেরিকাকে হুমকি দিয়ে লাভ নেই, সুষ্ঠু নির্বাচন আপনাকে দিতেই হবে” শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

মূলত, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদেশি গণমাধ্যম, রাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং তাদের নেতৃত্বকে উদ্ধৃত করে ভুয়া মন্তব্য প্রচারের প্রবণতা বেশ লক্ষণীয়। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাসের মন্তব্য দাবিতে “আমেরিকাকে হুমকি দিয়ে লাভ নেই, সুষ্ঠু নির্বাচন আপনাকে দিতেই হবে” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি

0

গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসারের বরাতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদন দেখুন যুগান্তর, নয়া শতাব্দী, শেয়ার নিউজ২৪, বাংলা ইনসাইডার, নিউজজি২৪, বিডি২৪রিপোর্ট (ফেসবুক)।

বাংলাদেশ ব্যাংকে আগুন

এছাড়া যমুনা টিভি, সময় টিভি এবং চ্যানেল২৪ এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে পরে সরিয়ে নিয়েছে। তবে প্রতিবেদনের আর্কাইভ পাওয়া যায়নি।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ২২ সেপ্টেম্বর কোনো আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি বরং ব্যাংকের চলমান সংস্কার কাজের ধোঁয়া ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠার ঘটনাকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে মূল ধারার সংবাদমাধ্যম ঢাকা ট্রিবিউন এর ওয়েবসাইটে গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঢাকার মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংকে আগুনের অ্যালার্ম বেজে ওঠার সংবাদ পেয়েছিল ফায়ার সার্ভিস। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল চারটি ইউনিট। তবে সেটি ফলস অ্যালার্ম ছিল বলে জানা গেছে। 

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিডিয়া শাজাহান শিকদারের বরাত দিয়ে ঢাকা ট্রিবিউন লিখেছে, সেদিন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ফায়ার সার্ভিসের জরুরি নম্বরে একটি ফোন আসে। আগুন লেগেছে এমন একটি সংবাদ দেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে তারা একটি ইউনিট পাঠালে সেখানে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিস জানতে পারে, কে বা কারা ভুল করে সতর্কতামূলক অ্যালার্ম বাজিয়েছে।

একই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হকের বক্তব্যও রয়েছে। জনাব হক বলেছেন, “আমি শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলছি বাংলাদেশ ব্যাংকে আজ (২২ সেপ্টেম্বর) কোনো আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি। তবে কী কারণে ফায়ার সার্ভিসের চাকরি ইউনিট এসেছিল তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। হয়তো কারও ভুল ইনফরমেশনের কারণে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট এসেছিল।” 

Screenshot: Dhaka Tribune 

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে জাতীয় দৈনিক ‘আমার সংবাদ’ এর ওয়েবসাইটে একই ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ব্যাংকের চলমান সংস্কার কাজের ধোঁয়া ভেতরে প্রবেশ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যালার্ম বেজে ওঠে।

‘আমার সংবাদ’ বলছে, বেলা আড়াইটার দিকে সংস্কার কাজ থেকে কিছুটা ধোঁয়ার  সৃষ্টি হয়। সেই ধোঁয়া ভেতরে প্রবেশ করলে জোরেশোরে ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠে। তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে থাকা স্ট্যান্ডবাই ফায়ার ইউনিট ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় নিরাপত্তা বিভাগ থেকে ফায়ার সার্ভিসের জরুরি নম্বরে কল করা হলে আরও তিনটি ইউনিট ছুটে আসে।

 Screenshot: Amar Sangbad

একই ঘটনার বিষয়ে সময় টিভি’র একটি ভিডিও প্রতিবেদনে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, “একটি ভুল তথ্য দিয়েছে। একটি মিসকল চলে গেছে। মিসকল যাওয়ায় উনি বলবে যে মিসকল গিয়েছে, তা না বলে উনি ভুলে বলে ফেলেছে যে আগুন লেগেছে।”

এই প্রতিবেদনেও ব্যাংকের চলমান সংস্কার কাজের ধোঁয়া ভেতরে প্রবেশ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যালার্ম বেজে ওঠে বলে জানানো হয়েছে। 

মূলত, গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আগুন লেগেছে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ব্যাংকের চলমান সংস্কার কাজের ধোঁয়া ভেতরে প্রবেশ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠলে উক্ত দাবিটি ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে কোনো আগুন লাগার ঘটনার অস্তিত্ব পায়নি৷ 

সুতরাং, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে চলমান সংস্কার কাজের ধোঁয়া ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠার ঘটনাকে ব্যাংকে আগুন লাগার ঘটনা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে: যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

কবি নজরুলের মৃত্যুদিবস নিয়ে বিভ্রান্তির নেপথ্যে কী?

0

মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে কাজী নজরুল ইসলামকে ভারত থেকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। স্বাধীন দেশে ১৯৭৪ সালে কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির মর্যাদায় সম্মানিত করে বাংলাদেশ সরকার। এর বছর দুয়েক পরেই, ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট(বাংলা ১২ই ভাদ্র) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম পরলোক গমন করেন। তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পতন ঘটে বাংলার প্রগতিবাদী বিদ্রোহী সাহিত্যধারার উজ্জ্বল এক নক্ষত্রের।

গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে কবির মৃত্যু ঘটে ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৯ আগস্ট। কিন্তু, বর্তমানে ২৭ আগস্ট দেশব্যাপী জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুদিবস পালন করা হয়। অর্থাৎ, জাতীয় কবির প্রয়াণ ২৯ আগস্ট হলেও ২৭ আগস্ট তাঁর মৃত্যুদিবস পালন করা হয়। এখন প্রশ্ন হলো, জাতীয় কবির মৃত্যুদিবস নিয়ে এই বিভ্রান্তির শুরু কিভাবে? এ প্রশ্নের উত্তর জানতে আমাদের ফিরে যেতে হবে আরেকটু পেছনে।

১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট। অর্থাৎ, যেদিন কবির প্রয়াণ ঘটে দিনটি ছিল বাংলা সনের হিসেবে ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ই ভাদ্র। সে হিসেবেই অর্থাৎ, বাংলা সনের হিসেব ধরে জাতীয় কবির মৃত্যুদিবস পালন করা হয় ১২ই ভাদ্র। আর ঠিক এখানেই জাতীয় কবির মৃত্যুদিবস নিয়ে বিভ্রান্তির শুরু। বিষয়টি আরেকটু পরিষ্কার করা যাক।

আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রসারের সাথে সাথে সনাতন বিভিন্ন প্রথার বিলোপ ঘটা ইতিহাসের সাধারণ ঘটনা। বাংলা দিনপঞ্জিকাও ইতিহাসের বিভিন্ন সময় সেই সংস্কার যন্ত্রের ভেতর দিয়ে গেছে। ঋতু বিভ্রাটসহ বেশ কিছু আর্থ সামাজিক দিক বিবেচনায় বাংলা দিনপঞ্জির এই সংস্কারসাধন করা হয়েছে।

গত শতাব্দীতে বাংলা দিনপঞ্জিকা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয় ১৯৫০ সালে। বাংলা দিনপঞ্জিকা আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত করার উদ্দেশ্যে ১৯৫০ সালে ভারত সরকার প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ড.মেঘনাদ সাহাকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে। জ্যোতির্বিজ্ঞানের সূক্ষ্ম হিসাব নিকাশ এবং সৌর আবর্তনের নিরিখে ১৯৫৪ সালে মেঘনাদ সাহা কমিটি বাংলা পঞ্জিকাকে সংস্কার করার বেশকিছু সুপারিশ প্রস্তাব করেন। 

পরবর্তীতে, ১৯৬৩ সালে ঢাকাস্থ বাংলা একাডেমি ড. মোহান্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে একটি দিনপঞ্জি সংস্কার কমিটি গঠন করে। উক্ত কমিটি বিভিন্ন বাংলা মাস ও ঋতুতে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আর্থ-সাংস্কৃতিক জীবনের কিছু সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতাকে নির্ণয় করেন। এই প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য ১৯৬৬ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ কমিটি ড.মেঘনাদ সাহা কমিটির মূল্যায়নের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কয়েকটি প্রস্তাব বাংলা একাডেমির কাছে পেশ করে। সেগুলো হলো-

১. বছরের প্রথম পাঁচ মাস অর্থাৎ বৈশাখ থেকে ভাদ্র হবে ৩১ দিনের। 
২. বাকি মাসগুলো অর্থাৎ আশ্বিন থেকে চৈত্র হবে ৩০ দিনের মাস। 
৩. প্রতি চতুর্থ বছরের(লিপ ইয়ার) ফাল্গুন মাসে অতিরিক্ত একটি দিন যোগ করে তা হবে ৩১ দিনের। 

পরবর্তীতে, ১৯৯৬ সালে ড.মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর পুত্র ও ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক মুহাম্মদ তকীয়ূল্লাহ পূর্বের দিনপঞ্জির লিপইয়ার সংক্রান্ত দুর্বলতা সমাধান করে নতুন দিনপঞ্জিকার সুপারিশ করেন। আধুনিক এই দিনপঞ্জিকায় গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার এবং বাংলা তারিখের দিনগুলোর স্থির ছিল। অর্থাৎ, প্রতিবছর বাংলা সনের প্রথম দিন অর্থাৎ, পহেলা বৈশাখ হবে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের তারিখ অনুযায়ী ১৪ই এপ্রিল। এতে পহেলা বৈশাখ ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দিবস বাংলা সনের সাথে সমন্বয় করাও সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বাংলাদেশ সরকার এই সুপারিশ অনুমোদন করে ১৯৯৬ সালে বঙ্গাব্দ ১৪০২-১৪০৩ বর্ষপঞ্জি প্রকাশ করে। এর নাম দেওয়া হয় “শহীদুল্লাহ পঞ্জিকা”। 

সবশেষ, ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের নেতৃত্বে বাংলা দিনপঞ্জির সাথে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সামঞ্জস্যপূর্ণ সংস্কারের জন্য একটি কমিটি গঠন করে। উক্ত কমিটির সুপারিশ অনুসারে-

১. বাংলা সনের প্রথম ৬ মাস হবে ৩১ দিনের। 
২. বাকি ৬ মাসের মধ্যে ফাল্গুন ব্যতীত অন্য ৫ মাস হবে ৩০ দিনের এবং ফাল্গুন মাস হবে ২৯ দিনের। 
৩. লিপইয়ারের বছর ফাল্গুন মাস হবে ৩০ দিনের। 

এই কমিটির সুপারিশ অনুসারে নতুন করে সংস্কার করা হয় বাংলা দিনপঞ্জি। বর্তমানে এই দিনপঞ্জিই সরকারিভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। 

এবার ফিরে আসা যাক কবির মৃত্যুদিবস বিভ্রান্তিতে। কবির মৃত্যুর সময়, অর্থাৎ ১৯৭৬ সালে সনাতন বাংলা দিনপঞ্জিকা অনুসারে বাংলা দিন-তারিখ গণনা করা হতো। সেই হিসেবে কবির মৃত্যুদিবস ১২ই ভাদ্র হলো সনাতন দিনপঞ্জিকার বাংলা তারিখ। যা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে ছিল ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট।  কিন্তু, পরিবর্তিতে সংস্কারকৃত আধুনিক বাংলা দিনপঞ্জি অনুসারে কবির মৃত্যুদিবস ১২ই ভাদ্র পড়েছে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে ২৭ আগস্টে। আর যেহেতু কবির জন্মদিবস বাংলা সন মতে পালন করা হয়, সেহেতু কবির মৃত্যুদিবস পালনে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের দিন-তারিখ উপেক্ষা করা হয়। অর্থাৎ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে ২৯ আগস্ট মৃত্যুবরণ করলেও সংস্কারকৃত বাংলা দিনপঞ্জি মোতাবেক বাংলা ১২ই ভাদ্র ইংরেজি ২৭ আগস্টে পড়ায় কবির মৃত্যুদিবস ২৯ আগস্টের পরিবর্তে ২৭ আগস্ট পালন করা হয়।

তথ্যসূত্র

ভিডিওটি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ব্যাটিংয়ের নয়

0

সম্প্রতি, ‘Ronaldo Playing Cricket’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এরূপ ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

রোনালদো

টিকটকে একই দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচ্য ভিডিওটি ফুটবল তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ব্যাটিং করার কোনো দৃশ্যের নয় বরং এটি ২০২২ সালের ২৩শে জুন ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ভাইটালিটি ব্লাস্ট টি টুয়েন্টি লিগে ইংলিশ ক্রিকেটার টম বেনটনের ব্যাটিংয়ের ভিডিও। 

আলোচ্য ভিডিওর কি ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট ইউটিউবে ২০২২ সালের ২ জুলাই “Ridiculous shot by Tom banton” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Source: YouTube Screenshot

উক্ত ভিডিওর সাথে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়াও, ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি টম বেনটনের ব্যাটিংয়ের ভিডিও।

Video Comparison by Rumor scanner

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, Vitality Blast এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ২৪ জুন পোস্টকৃত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor scanner

উক্ত ভিডিওর ১.১৪ মিনিট থেকে ১.২০ সেকেন্ড অংশে আলোচ্য ভিডিওর সাথে হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়াও, ভিডিওর নিচের অংশে প্রদর্শিত স্কোরকার্ড এবং ভিডিওর ক্যাপশন থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, উক্ত ভিডিওটি টম বেনটনের ব্যাটিংয়ের ভিডিও।

Source: Vitality Blast

অধিকতর সত্যতা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে, উক্ত ম্যাচের স্কোরকার্ড অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। খেলাধুলা বিষয়ক ওয়েবসাইট cricinfo এর তথ্যমতে, ২০২২ সালের ২৩ জুন ভাইটালিটি ব্লাস্ট টি টুয়েন্টি লিগের হ্যাম্পশায়ার বনাম সমারসেটের ম্যাচে হ্যাম্পশায়ারের দেওয়া ২০৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামে সমারসেট। সমারসেটের ব্যাটসম্যান টম বেনটন সেই ম্যাচে ৩৮ বলে ৫৪ রানের একটি ইনিংস খেলেন। 

মূলত, ২০২২ সালের ২৩শে জুন ভাইটালিটি ব্লাস্ট টি টুয়েন্টি লিগে ইংলিশ ক্রিকেটার টম বেনটন ৩৮ বলে ৫৪ রানের একটি ইনিংস খেলেন। সাম্প্রতিক সময়ে তার সেই ম্যাচের ভিডিও ক্লিপের একটি দৃশ্যকে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ব্যাটিংয়ে ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকেজড়িয়ে ইন্টারনেটে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, ইংলিশ ক্রিকেটার টম বেনটনের ব্যাটিংয়ের ভিডিওকে ফুটবল তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ব্যাটিংয়ের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মিরপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৯ জন নয়, ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে

0

সম্প্রতি, রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা কমার্স কলেজ সংলগ্ন হাজী রোড ঝিলপাড় বস্তি এলাকার জলাবদ্ধ সড়কে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুসহ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে মিরপুরে জলাবদ্ধ সড়কে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৯ জন নয় বরং একই পরিবারের তিনজনসহ ৪ জন মারা গেছেন। 

অনুসন্ধানের শুরুতে কি ওয়ার্ড সার্চ করে ডেইলি স্টারে গত ২২ সেপ্টেম্বর “মিরপুরে জলাবদ্ধ সড়কে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৪ জনের মৃত্যু” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর রাত ১০ টায় মিরপুরে জলাবদ্ধ সড়কে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মিরপুরে ঢাকা কমার্স কলেজ সংলগ্ন হাজী রোড ঝিলপাড় বস্তি এলাকার সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে ১ জন শিশু, ১ জন নারী ও ২ জন পুরুষ। মৃতরা হলেন- মিজান, তার স্ত্রী মুক্তা, তাদের মেয়ে লিমা এবং এই ৩ জনকে বাঁচাতে যাওয়া যুবক অনিক। 

প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, ৬ মাস বয়সী শিশুকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে শিশু হাসপাতালে ভর্তি করেছে স্থানীয়রা। পরে সেখান থেকে শিশুটিকে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে রেফার করা হয়েছে।

একই দিনে বিবিসি বাংলায় “ঢাকায় মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের তার নেয়া যায়নি তিন বছরেও” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

এই প্রতিবেদনটিতেও ৪ জন মারা যাওয়ার তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া, একই তারিখে প্রথম আলোতে “মিরপুরে জলাবদ্ধ রাস্তায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক পরিবারের তিনজনসহ নিহত ৪” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন থেকেও ৪ জন মারা যাওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, সম্প্রতি মিরপুরের জলাবদ্ধ সড়কে বিদ্যুৎ তারে জড়িয়ে ৯ জন নয় বরং ৪ জন মারা গেছেন। 

মূলত, গত ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকার মিরপুরে জলাবদ্ধ রাস্তায় বিদ্যুৎস্পষ্ট হয়ে একই পরিবারের তিনজনসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। মিরপুরে কমার্স কলেজ সংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তির বিপরীত পাশে রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। সেই সময়কার ধারণা করা হৃদয় বিদারক মুহূর্তের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরই প্রেক্ষিতে মিরপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৯ জন মারা গিয়েছে দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকায় সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টায় ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দিনের বিভিন্ন সময় বৃষ্টির পর সন্ধ্যা থেকে একটানা ৬ ঘন্টা বৃষ্টি হয়। এতে তেজগাঁও, ধানমন্ডি, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, মহাখালী, বনানী এলাকার সড়ক পানিতে ডুবে যায়।

উল্লেখ্য, মিরপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনায় আহত শিশু হোসাইন বেঁচে আছে। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শিশুটিকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সুতরাং, মিরপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৪ জন মারা গেলেও উক্ত ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে;  যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র