Home Blog Page 590

সেনাপ্রধান ও নির্বাচন কমিশনারকে জড়িয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি ‘সেনাপ্রধানের নির্দেশে মাঠে সেনাবাহিনী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়।

ভিডিওটির বিস্তারিত অংশের শুরুতে নির্বাচনে সেনা মোতায়েন নিয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ এর একটি বক্তব্য যুক্ত করা হয়েছে।

ইউটিউবে প্রচারিত উক্ত ভিডিওটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার বা সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব কিংবা সেনাপ্রধান কোনো মন্তব্য করেননি বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও সংযুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় একটি ভিডিও তৈরি করে কোনোপ্রকার তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই উক্ত দাবিগুলো প্রচার করা হচ্ছে। 

গত ১১ এপ্রিল Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ১ মিনিট ০৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়।

Screenshot: YouTube 

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ক্লিপ নিয়ে তৈরি একটি নিউজ ভিডিও। সেখানে সাবেক ইসি সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ, এবং নির্বাচনের সময়ে সেনাবাহিনীর কার্যক্রমের পুরনো কিছু ছবি দেখা যায়।

১ মিনিট ০৮ সেকেন্ডের এই নিউজ ভিডিওটি’র শুরুতেই সাবেক ইসি সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদের বক্তব্যের একটি পুরোনো ক্লিপ যুক্ত করা হয়। এরপর ভিডিও’র পরবর্তী অংশে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন নির্বাচন কমিশনার। এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নেওয়া হচ্ছে বলে জানান এই নির্বাচন কমিশনার। নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল বজায় রাখার জন্য মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী, যাতে ভোটাররা নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে উপযুক্ত প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে পারে। এদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ায় খুশি অন্যান্য রাজনৈতিক দল, যাতে তারা সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়ায় নির্বাচনে সকল সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, যাতে ভোটাররা নির্ভয়ে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে। এদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বহাল রাখায় বিপাকে পড়লো আওয়ামী লীগ সরকার।’

উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও উক্ত দাবিগুলোর কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি আলাদা ছবি এবং ভিডিও যুক্ত করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই দাবিগুলো প্রচার করা হচ্ছে। 

পাশাপাশি ভিডিওটি’র কি ফ্রেম কেটে কয়েকটি স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা যায়, ভিডিও’র শুরুর ১৩ সেকেন্ড অর্থাৎ সাবেক ইসি সচিবের বক্তব্যের অংশ ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ‘ভোটের ২-১০ দিন আগে সেনা ও বিজিবি মোতায়েন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন(আর্কাইভ) থেকে নেওয়া হয়েছে। যেখানে তিনি ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ে সেনা মোতায়েন নিয়ে কথা বলেছিলেন।

Image Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও ভিডিওটির ক্যাপশন, থাম্বনেইল এবং বিস্তারিত অংশে কয়েকটি অসঙ্গতি খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

অসঙ্গতি-১

‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন জানালেন সেনাপ্রধান’ শীর্ষক ক্যাপশন ব্যবহার করা হলেও বিস্তারিত প্রতিবেদনে এবিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এছাড়া সেনাপ্রধান এমন কোনো মন্তব্য করেননি।

অসঙ্গতি-২

‘সেনাপ্রধানের নির্দেশে মাঠে সেনাবাহিনী’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করা হলেও বিস্তারিত প্রতিবেদনে এবিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এবং সাম্প্রতিক সময়ে সেনাপ্রধান সেনাবাহিনীকে মাঠে নামার নির্দেশও দেননি।

অসঙ্গতি-৩

ভিডিওতে বলা হয়,জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার। তবে ভিডিও’র শুরুতে যার বক্তব্য প্রদর্শন করা হয়েছে তিনি নির্বাচন কমিশনার নয়। উনি সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ। এছাড়াও বর্তমান নির্বাচন কমিশনার কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকেউ এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি।

অর্থাৎ, ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ছবি এবং ভিডিও সংযুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে। 

এছাড়াও মূলধারার গণমাধ্যম, নির্বাচন কমিশনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট কিংবা অন্যকোনো মাধ্যমে উক্ত দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

মূলত, সম্প্রতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হওয়া নিয়ে নির্বাচন কমিশনারের মন্তব্য দাবিতে সেনাপ্রধানের নাম জড়িয়ে সাবেক ইসি সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদের দেওয়া একটি বক্তব্যের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিতে প্রচারিত বক্তব্যটি তিনি ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েনের বিষয় নিয়ে দিয়েছিলেন। এছাড়া প্রচারিত ভিডিওটি কয়েকটি পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সম্প্রতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হওয়া নিয়ে সেনাপ্রধান বা বর্তমান নির্বাচন কমিশনারদের কেউ কিংবা সাবেক ইসি সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ কোনো মন্তব্য করেননি। 

উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয়েছে। এসব ঘটনা নিয়ে পূর্বেও একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হবে দাবি করে সেনাপ্রধান বা নির্বাচন কমিশনার মন্তব্য করেছেন দাবিতে সাবেক ইসি সচিবের পুরনো বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ভিরাট কোহলির মেয়ে দাবিতে গণমাধ্যমে ভুল ছবি প্রচার

সম্প্রতি, ভারতীয় ক্রিকেট তারকা ভিরাট কোহলির কোলে থাকা এক মেয়ে শিশুকে কোহলির মেয়ে বলে দাবি করা হয়েছে গণমাধ্যম ও ফেসবুকের একাধিক পোস্টে।  

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন যুগান্তর

Screenshot source: Jugantor

একই দাবিতে ফেসবুক ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিরাট কোহলির কোলে থাকা এক মেয়ে শিশুকে কোহলির মেয়ে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং শিশুটি ভারতীয় ক্রিকেটার হারভাজন সিংহ এবং অভিনেত্রী গীতা বস্র এর মেয়ে হিনায়া।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে ২০১৭ সালের ০২ মে  ভারতীয় গণমাধ্যম ‘Times of India’ এর ওয়েবসাইটে “This pic of Geeta Basra’s baby girl with Virat Kohli is too cute to handle” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।  প্রতিবেদনের একটি ছবির সাথে আলোচিত ছবিটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Times of India

প্রতিবেদনটির বিস্তারিত পড়ে জানা যায় ভিরাট কোহলি যেই শিশু মেয়ের সাথে ছবি তুলেছেন সে ভারতীয় ক্রিকেটার হারভাজন সিংহ এবং বলিউড অভিনেত্রী গীতা বস্র এর মেয়ে হিনায়া।

পরবর্তীতে একইদিন (২০১৭ সালের ০২ মে) ‘Virat Kohli’ এর ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টের একটি পোস্টেও একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। এই পোস্টে কোহলি শিশুটিকে হারভাজন এবং গীতা বস্রের মেয়ে হিয়ানা বলে উল্লেখ করেন।

Collage by Rumor Scanner

মূলত, সম্প্রতি জাতীয় দৈনিক যুগান্তরের একটি প্রতিবেদনে ভারতীয় ক্রিকেট তারকা ভিরাট কোহলির কোলে থাকা এক মেয়ে শিশুকে কোহলির মেয়ে বলে দাবি করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধানে দেখেছে, কোহলির কোলে থাকা মেয়ে শিশুটি তার মেয়ে নয়৷ প্রচারিত ছবিটি ভারতীয় ক্রিকেটার হারভাজন সিংহ এবং অভিনেত্রী গীতা বস্র এর মেয়ে হিনায়ার।

প্রসঙ্গত, এর আগেও ইন্টারনেটে বিভিন্ন সময়ে ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে ভুল তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ভারতীয় ক্রিকেটার হারভাজন সিংহের মেয়েকে ভিরাট কোহলির মেয়ে দাবি করে গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সমগ্র ভারতে নয়, হিজাব আন্দোলনের তাবাসসুম দ্বাদশের পরীক্ষায় কর্ণাটক রাজ্যে প্রথম হয়েছেন

সম্প্রতি ‘ভারতের কর্ণাটকে হিজাব আন্দোলনের তাবাসসুম দ্বাদশ পরীক্ষায় ভারতে ১ম।‘ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। গণমাধ্যমের ফেসবুক পেইজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন কালবেলা

তাবাসসুম শাইকের সংবাদে ভিন্ন ছাত্রীর ছবি ব্যবহার করে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন; সমকাল, জুম বাংলা, নাগরিক টিভিকালবেলা, উখিয়া নিউজ। 

ওপার বাংলায় প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতের কর্ণাটকের হিজাব আন্দোলনের তাবাসসুম শাইক দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় সমগ্র ভারতে প্রথম হননি বরং তিনি নিজ প্রদেশ কর্ণাটকে মানবিক বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন।

কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম The Indian Express এ গত ২২ এপ্রিল ‘Karnataka 2nd PUC Result 2023 Updates: Over 5.24 lakh students cleared the exam‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: The Indian Express 

প্রতিবেদনে প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী, গত ২২ এপ্রিল চলতি বছরের দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। কর্ণাটক স্কুল পরীক্ষা ও মূল্যায়ন বোর্ড (কেএসইএবি) এই ফলাফল ঘোষণা করে। এর আগে গত ৯ মার্চ শুরু হয়ে ২৯ মার্চ পর্যন্ত এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় ৭ লাখ ২ হাজার ৬৭ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে এবং এর মধ্যে ৫ লাখ ২৪ হাজার ২০৯ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়। 

Screenshot: The Indian Express 

এর মধ্যে বিজ্ঞান, বাণিজ্য বিভাগ এবং মানবিক বিভাগ থেকে ভিন্ন ভিন্ন পরিক্ষার্থী মেধা তালিকায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেন। এই মেধা তালিকায় মানবিক বিভাগ থেকে প্রথম স্থান অর্জন করেন তাবাসসুম শাইক।

Image Collage: Rumor Scanner

ভারতীয় আরেকটি গণমাধ্যম Times of India তেও একইদিনে ‘Karnataka 2nd pre-university pass percentage jumps to 74.7; DK, Udupi districts top‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

Screenshot: Times of India

পাশাপাশি প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, মেধা তালিকায় স্থান করে নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানবিক থেকে তাবাসসুম শাইক ৬০০ নাম্বারের মধ্যে ৫৯৩, বাণিজ্য বিভাগ থেকে অনন্যা কেএ ৬০০ এর মধ্যে ৬০০ পেয়ে ও বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএম কৌশিক ও সুরভী এস ৬০০ এর মধ্যে ৫৯৬ নাম্বার পেয়ে যৌথভাবে প্রথম স্থান অর্জন করেন। 

Screenshot: Times of India
গণমাধ্যমে তাবাসসুম শাইকের ভুল ছবি

বাংলাদেশি গণমাধ্যম সমকালে তাবাসসুম শাইকের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটিও তার নয়।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে দেখা যায়, ভারতীয় গণমাধ্যম Times of India তে ২০২২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ‘Hijab row: Complaint filed against outfit for announcing reward to Mandya girl‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশি গণমাধ্যমে ব্যবহৃত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Comparison: Rumor Scanner

ছবিটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ছবির শিক্ষার্থীটির নাম মুসকান খান৷ তিনি মান্দ্যাইয়া জেলার পিইএস কলেজ অব আর্টস, সায়েন্স অ্যান্ড কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।

অর্থাৎ, তাবাসসুমের ছবি দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবিটি ভিন্ন আরেক শিক্ষার্থীর। এই শিক্ষার্থীর আরও কিছু ছবি দেখুন এখানে, এখানে। 

Screenshot: Zee News

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে হিজাব পরে ক্লাস করতে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনকারী মেয়েদের মধ্যে সম্মুখ সারিতে ছিলেন তাবাসসুম শাইক। সেসময় প্রতিবাদের অংশ হিসেবে বন্ধুদের সঙ্গে স্কুলে যাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। 

মূলত, গত ৯ মার্চ থেকে ২৯ মার্চ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং গত ২২ এপ্রিল কর্ণাটক স্কুল পরীক্ষা ও মূল্যায়ন বোর্ড (কেএসইএবি) এই পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করে। এতে মানবিক বিভাগ থেকে তাবাসসুম শাইক ৬০০ নাম্বারের মধ্যে ৫৯৩ নাম্বার পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তার এই অর্জনটিকেই বাংলাদেশে ফেসবুকে সমগ্র ভারতে প্রথম হওয়ার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

সুতরাং, ভারতের কর্ণাটকে হিজাব আন্দোলনের তাবাসসুম দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় সমগ্র ভারতে প্রথম হয়েছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

বিএনপির বিক্ষোভে সংঘর্ষে ১০ জনের মৃত্যু দাবিতে বিভ্রান্তিকর থাম্বনেইলে সংবাদ প্রচার

0

সম্প্রতি ‘নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, ১০ জনের মৃত্যু’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

Screenshot: Facebook

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নয়াপল্টনে বিএনপির সাম্প্রতিক বিক্ষোভে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি এবং কেউ নিহতও হয়নি বরং দক্ষিন আফ্রিকায় গুলিতে একই পরিবারের ১০ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে এবং কোন দেশ তা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ না করা এবং থাম্বনেইলে বাংলাদেশের মানুষের পুরোনো সংঘর্ষের ছবি ব্যবহার করায় বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।

গত ২৩ এপ্রিল News Plus নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ‘নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, ১০ জনের মৃত্যু’ শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে বাংলাদেশের মানুষের সংঘর্ষের ছবি ব্যবহার করে ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়।

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এটি কয়েকটি প্রতিবেদন নিয়ে তৈরি একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিও। ৯ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে ১মিনিট ৩০সেকেন্ডের সময় বিএনপির বিক্ষোভের বিষয়ে সংবাদ পাঠ করা হয়। সেখানে বলা হয়, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর  মুক্তির দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রিজভী আহমেদ মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ। তবে সেখানে সংঘর্ষ বা হতাহতের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

অন্যদিকে ভিডিওটি’র ২ মিনিট ১২ সেকেন্ডের সময় দক্ষিণ আফ্রিকায় একই পরিবারের ১০ জনকে গুলি করে হত্যার বিষয়ে বলা হয়। এ বিষয়ে সংবাদ পাঠ ২ মিনিট ১২ সেকেন্ড থেকে শুরু হয়ে ২ মিনিট ৪৯ সেকেন্ড পর্যন্ত চলে। সেখানে বলা হয়, “দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়াজুলু-নাটাল (কেজেডএন) প্রদেশের পিটারমারিটজবার্গ শহরে একই পরিবারের ১০ জনকে হত্যা করেছে কয়েকজন বন্দুকধারী। নিহতদের মধ্যে সাতজন নারী ও তিনজন পুরুষ। দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ মন্ত্রণালয় কাল শুক্রবার (২১ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রাথমিক পুলিশ রিপোর্ট অনুযায়ী, অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীরা পিটারমারিটজবার্গের একটি বাড়িতে হামলা চালায় এবং পরিবারের সদস্যের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি করে। জাতীয় পুলিশের মুখপাত্র অ্যাথলেন্ডা ম্যাথ মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএনকে বলেছেন, এ ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে মূল ধারার গণমাধ্যম আজকের পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় একই পরিবারের ১০ জনকে গুলি করে হত্যা’ শীর্ষক শিরোনামে গত ২১ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন(আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Ajker Patrika

প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়াজুলু-নাটাল (কেজেডএন) প্রদেশের পিটারমারিটজবার্গ শহরে একই পরিবারের ১০ জনকে হত্যা করেছে কয়েকজন বন্দুকধারী। নিহতদের মধ্যে সাতজন নারী ও তিনজন পুরুষ।

দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ মন্ত্রণালয় আজ শুক্রবার (২১ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘প্রাথমিক পুলিশ রিপোর্ট অনুযায়ী, অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীরা পিটারমারিটজবার্গের একটি বাড়িতে হামলা চালায় এবং পরিবারের সদস্যের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি করে।’জাতীয় পুলিশের মুখপাত্র অ্যাথলেন্ডা ম্যাথ মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএনকে বলেছেন, এ ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, আজকের পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আলোচিত নিউজ বুলেটিন ভিডিও’র ওই প্রতিবেদনের অংশে  শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হুবহু পাঠ করা হয়েছে। প্রচারিত ভিডিওতে ব্যবহৃত এই সংবাদের অংশের ছবিও উক্ত প্রতিবেদন থেকে নেওয়া হয়েছে। 

পাশাপাশি, দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সম্প্রতি নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ কিংবা সংঘর্ষে কোনো হতাহতের সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিও’র বিস্তারিত প্রতিবেদন এবং এবিষয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

মূলত, সম্প্রতি নয়াপল্টনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর  মুক্তির দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিক্ষোভ মিছিল করে রিজভী আহমেদ মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় একই পরিবারের ১০ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে। তবে উক্ত ঘটনা দুটিকে পাশাপাশি প্রচার করতে গিয়ে একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিওতে ‘নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, ১০ জনের মৃত্যু’ শীর্ষক অপ্রাসঙ্গিক শিরোনাম এবং চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, চটকদার ক্যাপশন এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে অধিক ভিউ পাবার আশায় উক্ত দাবিতে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এসব ঘটনা নিয়ে পূর্বেও ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় একই পরিবারের ১০ জনকে গুলি করে হত্যার দুটো আলাদা ঘটনাকে পাশাপাশি রেখে ‘নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, ১০ জনের মৃত্যু’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নামে ভুয়া বক্তব্য প্রচার

সম্প্রতি ‘সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঘোষণা দিলো আইনমন্ত্রী’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে। 

Screenshot: YouTube

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক কর্তৃক সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঘোষণা দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও সংযুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিডিওটি তৈরি করে কোনোপ্রকার তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

গত ১৩ এপ্রিল Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার বহালের ঘোষণায়, রেগে বহিস্কারের নির্দেশ’ শীর্ষক শিরোনাম এবং ‘সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঘোষণা দিল আইনমন্ত্রী’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে উক্ত ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়।

Screenshot: YouTube

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ছবি ও ভিডিও ক্লিপ নিয়ে তৈরি একটি নিউজ ভিডিও। সেখানে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনের সময়কার কয়েকটি ছবি দেখা যায়।

১ মিনিট ৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে বলা হয়, এবার সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঘোষণা দিলো আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নেওয়া হচ্ছে বলে জানান এই আইনমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে এই আইনটি সংশোধন করা হবে। আগামী তিনমাসের মধ্যেই এই আইন পুনরায় বহাল করা হবে বলে জানান এই আইনমন্ত্রী। এদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ঘোষণায় খুশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। এরফলে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে যাতে ভোটাররা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে পারে।

উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও উক্ত দাবিগুলোর কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি আলাদা ছবি এবং ভিডিও যুক্ত করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই দাবিগুলো প্রচার করা হচ্ছে।

পাশাপাশি ভিডিওটির কি ফ্রেম কেটে কয়েকটি স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা যায় ভিডিওটি শুরুর ১৬ সেকেন্ড গত ২১ জানুয়ারি ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই: আইনমন্ত্রী’ শীর্ষক শিরোনামে মোহনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত প্রতিবেদনের(আর্কাইভ) সাথে মিল পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়াও ভিডিওটি থেকে নেওয়া কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে দেখা যায় সেগুলো অনেক পুরোনো প্রতিবেদন থেকে নেওয়া ছবি। ভিডিওটির ১ মিনিট ৩ সেকেন্ডের সময় প্রদর্শিত একটি ছবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানাকে কান্নারত অবস্থায় আলিঙ্গন করতে দেখা যায়। তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে উক্ত ছবিটি প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ২০১৮ সালের ১৫ আগস্ট ‘বেঁচে আছে শুধু দুই বোন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে নেওয়া হয়েছে।

Image Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ছবি এবং ভিডিও সংযুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে। 

পাশাপাশি মূল ধারার গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো সূত্রে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক কর্তৃক সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঘোষণা দেওয়ার দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়াও, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৮ এপ্রিল  ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য সংবিধান সংশোধনের ঘোষণা দিলো আইনমন্ত্রী আনিসুল হক’ শীর্ষক শিরোনামে প্রায় একই ধরনের আরেকটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। 

মূলত, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক কর্তৃক সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে দাবি করে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আইনমন্ত্রী সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঘোষণা দেননি।

উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয়েছে। এসব ঘটনা নিয়ে পূর্বেও একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক কর্তৃক সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

২০২৪ সালের এইচএসসি পূনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি

বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যম ‘একাত্তর টিভি’ আজ ২৫ এপ্রিল এসএসসি ও এইচএসসি প্রসঙ্গে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন, ফেসবুক পোস্ট এবং টেলিভিশন স্ক্রলে কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে।

যা দাবি করা হচ্ছে 

একাত্তর টিভি‘র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামে ‘এইচএসসি পরীক্ষা’ লিখে প্রতিবেদনের শুরুর প্যারাতেই দাবি করা হয়েছে, “আগামী ৩০ এপ্রিল থেকে অনুষ্ঠিত হতে চলা এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কেন্দ্রসচিব ছাড়া অন্য কোনো শিক্ষককের কাছে মোবাইল থাকলে সেই কেন্দ্রের সব শিক্ষকের এমপিও বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।”

একই দাবিতে অন্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন নিউজ২৪ (ইউটিউব)।

Screenshot source: YouTube

একই দাবি ছড়িয়েছে ফেসবুকেও। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot source: Facebook

একাত্তর টিভির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একই প্রতিবেদনের শেষ প্যারায় দাবি করা হয়েছে, “২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষা পূনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে হবে। এবারের এইচএসসি পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল থেকে ২৫ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।”

Screenshot source: Ekattor tv website 

একই দাবিতে একাত্তর টিভির ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot source: Facebook

একই দাবিতে টেলিভিশনে একাত্তর টিভির স্ক্রল নিউজের স্ক্রিনশট দেখুন –

 Screenshot source: Facebook 

২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষা পূনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে হবে শীর্ষক দাবিটি ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়েছে। দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

Screenshot source: Facebook

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, একাত্তর টিভি ও নিউজ২৪ এর প্রতিবেদনে এইচএসসি পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল শুরু এবং একাত্তরের ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষা পূনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে হবে শীর্ষক প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক নয় বরং ৩০ এপ্রিল এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। তাছাড়া, ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষা পূনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে হবে কিনা সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। 

৩০ এপ্রিল কি এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে?

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে জাতীয় দৈনিক The Daily Star এর গত ৩০ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ৩০ এপ্রিল।

পরবর্তীতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার সময়সূচি থেকে জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল শুরু হবে। 

Screenshot source: Dhaka Education Board

অর্থাৎ, ৩০ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষাকে এইচএসসি পরীক্ষা দাবিতে সংবাদ প্রচার করা হয়েছে একাত্তর টিভি এবং নিউজ২৪ এ। 

২০২৪ সালের এইচএসসি কি পূনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে হবে?

এ বিষয়ে জানতে মূলধারার অনলাইন গণমাধ্যম Bdnews24 এর ওয়েবসাইটে আজ ২৫ এপ্রিল “অগাস্টের মাঝামাঝি এইচএসসি শুরুর আশা শিক্ষামন্ত্রীর” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা (৩০ এপ্রিল শুরু) সামনে রেখে মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। 

৩০ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষার বিষয়ে মূল আলোচনা থাকলেও মন্ত্রী চলতি বছরের এইচএসসি এবং ২০২৪ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়েও কথা বলেন সাংবাদিকদের সাথে। 

চলতি বছরের এইচএসসি প্রসঙ্গে দীপু মনি জানান, “আমরা আশা করছি, অগাস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে আমরা হয়ত পরীক্ষাটি নিতে পারব।”

২০২৪ সালের দুই পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে শিগগিরই বৈঠক হবে জানিয়ে দীপু মনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেব যে তাদের জন্যেও আমরা পূনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে যাব কি না। আমরা চাই, পরীক্ষার সময়টাকে যতদূর সম্ভব এগিয়ে আনা যায়।

“এ বছরও চেয়েছিলাম, এর আগে তো নভেম্বর ডিসেম্বরে আমরা পরীক্ষা নিয়েছি, এ বছর এসএসসি মেতে আর এইচএসসি হয়ত অগাস্টে নিতে পারব। পরের বছর স্বাভাবিক সময়ের আরও কত কাছে আসা যায় সেই চেষ্টা করব। কাজেই যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে আগামী বছরের জন্যও হয়ত আমরা সিলেবাস পূনর্বিন্যাসের একটা চিন্তা করব।”

Screenshot source: Bdnews24

এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানার টিম শিক্ষামন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের লাইভ ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখেছে। 

এ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়েরের ফেসবুক লাইভের ভিডিও বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শুরুতে এসএসসির বিষয়ে লিখিত কিছু তথ্য পড়ে শোনান। তিনি উল্লেখ করেন, এসএসসি পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল শুরু হবে। 

প্রায় ২৮ মিনিটের লাইভ ভিডিওর ১২:১৫ মিনিট থেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন দীপু মনি। 

ভিডিওর ১৬:৫৪ মিনিটে দেখা যায়, একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, আমরা খুব শীঘ্রই বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবো ২০২৪ এর জন্য পূনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে যাবো কি যাবো না, প্রয়োজন হবে কিনা। 

দীপু মনি বলেন, “আমরা চাই, পরীক্ষার সময়টাকে যতদূর সম্ভব এগিয়ে আনা যায়। এ বছরও চেয়েছিলাম, এর আগে তো নভেম্বর ডিসেম্বরে আমরা পরীক্ষা নিয়েছি, এ বছর এসএসসি মেতে আর এইচএসসি হয়ত অগাস্টে নিতে পারব। পরের বছর গিয়ে স্বাভাবিক সময়ের আরও কত কাছে আসা যায় সেই চেষ্টা করব। কাজেই যদি প্রয়োজন হয়, নিশ্চয়ই আগামী বছরের জন্যও হয়ত একটা সিলেবাস পূনর্বিন্যাসের একটা চেষ্টা করব।”

Screenshot source: Facebook

একই সংবাদ সম্মেলনের লাইভ ভিডিওর বাকি অংশ দেখুন চ্যানেল২৪। 

এ বিষয়ে জানতে মোহাম্মদ আবুল খায়েরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেন, ২০২৪ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পূনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে হবে কি না সে বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

মূলত, আজ ২৫ এপ্রিল মূলধারার গণমাধ্যম ‘একাত্তর টিভি’ এবং নিউজ২৪ এ প্রচারিত প্রতিবেদনে ৩০ এপ্রিল এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে এবং একাত্তরের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের এইচএসসি পূনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে হবে শীর্ষক দাবির প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, ৩০ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষাকে এইচএসসি পরীক্ষা দাবিতে সংবাদ প্রচার করা হয়েছে একাত্তর টিভির ওয়েবসাইটে। তাছাড়া, ২০২৪ সালের এইচএসসি পূনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে হওয়া বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

সুতরাং, ২০২৪ সালের এইচএসসি পূনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে হওয়ার সিদ্ধান্ত না হলেও একাত্তর টিভি দাবি করেছে পূনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসেই পরীক্ষাটি হবে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

নিউজিল্যান্ডে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের খবরে গণমাধ্যমে একাধিক পুরোনো ছবি প্রচার

নিউজিল্যান্ডে গত ২৪ এপ্রিলের ভূমিকম্পের ঘটনায় বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সাতটি ছবি প্রচারিত হয়েছে।  

১ম ছবি –

Screenshot source: Jagonews24

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে উক্ত ছবি ব্যবহার করে প্রতিবেদন দেখুন জাগোনিউজ২৪, জনকণ্ঠ, দৈনিক করতোয়া

২য় ছবি –

Screenshot source: DBC News

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে উক্ত ছবি ব্যবহার করে প্রতিবেদন দেখুন ডিবিসি নিউজ, ইনকিলাব, এবিনিউজ২৪, বাংলাদেশ টাইমস, বার্তা২৪

একই ছবি ব্যবহার করে প্রকাশিত কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

৩য় ছবি –

Screenshot source: Daily Messenger 

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে উক্ত ছবি ব্যবহার করে প্রতিবেদন দেখুন ডেইলি মেসেঞ্জার

একই ছবি ব্যবহার করে প্রকাশিত কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

৪র্থ ছবি –

Screenshot source: NayaShatabdi

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে উক্ত ছবি ব্যবহার করে প্রতিবেদন দেখুন নয়া শতাব্দী

৫ম ছবি

Screenshot source: Shampratik Deshkal

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে উক্ত ছবি ব্যবহার করে প্রতিবেদন দেখুন সাম্প্রতিক দেশকাল

ভারতের গণমাধ্যমে উক্ত ছবি ব্যবহার করে প্রতিবেদন দেখুন আজতাক বাংলা (ইউটিউব)। 

৬ষ্ঠ ছবি

Screenshot source: Amar Sangbad

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে উক্ত ছবি ব্যবহার করে প্রতিবেদন দেখুন আমার সংবাদ

৭ম ছবি

Screenshot source: Somoy Journal

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে উক্ত ছবি ব্যবহার করে প্রতিবেদন দেখুন সময় জার্নাল। 

একই ছবি ব্যবহার করে প্রকাশিত কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নিউজিল্যান্ডের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে গণমাধ্যমে প্রচারিত সাতটি ছবি উক্ত ভূমিকম্পের নয় বরং সেগুলো পূর্বে বিভিন্ন সময়ের ভূমিকম্পের ঘটনার ছবি।

১ম ছবির সূত্রের খোঁজ 

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম BBC এর ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত প্রথম ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, সেদিন (২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর) নিউজিল্যান্ডে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। সাউথ আইল্যান্ড এর একটি হাইওয়ের রাস্তা এই ভূমিকম্পের ফলে ভেঙে যায়।

Source: BBC

ছবিটির সূত্র হিসেবে বিবিসি রয়টার্সের নাম উল্লেখ করেছে। 

পরবর্তীতে একই ঘটনার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এর ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটি তুলেছেন অ্যান্থনি ফেলেপস।

Screenshot source: Reuters

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি নিউজিল্যান্ডে প্রায় সাড়ে ছয় বছরের পুরোনো ভিন্ন একটি ভূমিকম্পের ঘটনার।

২য় ছবির সূত্রের খোঁজ 

গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ২য় ছবিটি রয়টার্সের একই প্রতিবেদনেই খুঁজে পেয়েছি আমরা। এটিও তুলেছেন অ্যান্থনি ফেলেপস। 

Screenshot source: Reuters

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটিও সাম্প্রতিক সময়ে নিউজিল্যান্ডের ভূমিকম্পের ঘটনার নয়।

৩য় ছবির সূত্রের খোঁজ 

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, অস্ট্রেলিয়ান সংবাদ নেটওয়ার্ক The Conversion এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এবং বিজ্ঞানভিত্তিক ওয়েবসাইট Phys.org এ ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে আলোচিত তৃতীয় ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot source: Phys.org

দুইটি প্রতিবেদনেই ছবিটির ক্যাপশনে ছবির সূত্র হিসেবে Shutterstock এর নাম উল্লেখ থাকলেও ছবিটি ঠিক কোন ঘটনার সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। 

পরবর্তীতে স্টক ফটোগ্রাফি বিষয়ক ওয়েবসাইট Shutterstock এ আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। Shutterstock এ ছবিটি প্রকাশের তারিখ উল্লেখ না থাকলেও ছবিটি বিধ্বস্ত রাস্তার বলে উল্লেখ রয়েছে।

Screenshot source: Shutterstock

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ছবিটি অন্তত দুই বছরের পুরোনো। 

৪র্থ ছবির সূত্রের খোঁজ 

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, বিজ্ঞানভিত্তিক ওয়েবসাইট Phys.org এ ২০২১ সালের ০৫ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত চতুর্থ ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

ছবিটির সূত্র হিসেবে নিউজিল্যান্ড হ্যারাল্ডের নাম উল্লেখ রয়েছে ক্যাপশনে। তাছাড়া, ছবিটি সেদিনই (০৫ মার্চ) তোলা হয়েছে বলে লেখা রয়েছে ছবিটির ক্যাপশনে।

Screenshot source: Phys.org

পরবর্তীতে নিউজিল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম The New Zealand Herald এর ওয়েবসাইটের একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ০৫ মার্চে সুনামি সতর্কতায় রাস্তায় মানুষের জটলার ছবি এটি। 

Screenshot source: The New Zealand Herald

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ছবিটি অন্তত দুই বছরের বেশি সময়ের পুরোনো।

৫ম ছবির সূত্রের খোঁজ

নিউজিল্যান্ডে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ছবি দাবিতে গণমাধ্যমের প্রকাশিত ৫ম ছবিটির উৎসের খোঁজে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘Getty Images’ এর ওয়েবসাইটে ২০১১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ডে একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এই ঘটনায় একটি ধ্বংসস্তূপের ছবি এটি। 

Screenshot source: Getty Images 

অর্থাৎ, সাম্প্রতিক সময়ে নিউজিল্যান্ডের ভূমিকম্পের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিটি ১৩ বছরেরও বেশি সময়ের পুরোনো। 

একই ছবি নিউজিল্যান্ডে গত ১৬ মার্চের আরেকটি ভূমিকম্পের দাবিতে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

৬ষ্ঠ ছবির সূত্রের খোঁজ 

নিউজিল্যান্ডে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ছবি দাবিতে গণমাধ্যমের প্রকাশিত ৬ষ্ঠ ছবিটির উৎসের খোঁজে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ‘REUTERS’ এর ওয়েবসাইটে ২০১১ সালের ০৬ মার্চ প্রকাশিত মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের ০২ মার্চ নিউজিল্যান্ডে একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এই ঘটনায় উদ্ধারকাজে নিয়োজিত এক উদ্ধারকর্মীর ছবি এটি। 

Screenshot source: Reuters 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ছবিটি ১২ বছরের পুরোনো।

৭ম ছবির সূত্রের খোঁজ 

নিউজিল্যান্ডে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ছবি দাবিতে গণমাধ্যমের প্রকাশিত ৭ম ছবিটির উৎসের খোঁজে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা AP এর ওয়েবসাইটে গত ১১ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, গত ০৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এই ঘটনায় একটি বিধ্বস্ত ভবনের ছবি এটি। 

Screenshot source: AP

অর্থাৎ, আলোচিত ছবিটি নিউজিল্যান্ডের নয় বরং গত মার্চের তুরস্কের ভূমিকম্পের ঘটনার ছবি।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। বরং কিছু গণমাধ্যম ছবিগুলো সংগৃহিত, কেউ-বা ছবিসূত্র হিসেবে বিদেশী গণমাধ্যমের নাম উল্লেখ করেছে। কোনো কোনো গণমাধ্যম ছবির ক্যাপশনে কিছুই লিখে নি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিগুলো ব্যবহার করে সংগৃহিত উল্লেখ, বিদেশী গণমাধ্যমের নাম উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্যই উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো নিউজিল্যান্ডে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হওয়া অমূলক নয়।

মূলত, নিউজিল্যান্ডে গত ২৪ এপ্রিলের ভূমিকম্পের ঘটনায় বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সাতটি ছবি প্রকাশের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবিগুলো ভিন্ন ভিন্ন স্থান ও ঘটনার পুরোনো ছবি।  

প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক মাসে ঘটে যাওয়া একাধিক ভূমিকম্পকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, নিউজিল্যান্ডের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ছবি দাবিতে গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

ছবির এই খালটি নরসিংদীর মাধবদীতে অবস্থিত নয়

0

সম্প্রতি, “শ্বাস ছেড়ে একটু শান্তির নিঃশ্বাস, মাধবদী নরসিংদী” শীর্ষক ক্যাপশনে গাছপালা বেষ্টিত একটি খালে মানুষের গোসলের দৃশ্যকে বাংলাদেশের নরসিংদী জেলার মাধবদী উপজেলার ছবি দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

Screenshot from Facebook

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ছবি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, সবুজ গাছপালা বেষ্টিত খালে মানুষের গোসল করার ছবিটি বাংলাদেশের নরসিংদী জেলার মাধবদী উপজেলার কোনো স্থানের নয় বরং এটি যা ভারতের কেরালায় অবস্থিত ওনজাপাড়া খালে(কৃত্রিম) মানুষের গোসলের দৃশ্য।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে গত ২৭ জুন ‘Aravind’ নামের এক ভারতীয় ব্যক্তির টুইটারে  “நமக்கு எது நிரந்தரமானது என்பதை தெரிந்து பயணித்தாலே மகிழ்ச்சி என்றும் கூடவே இருக்கும்..!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ছবির সাথে উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Collage by Rumor Scanner

অনুসন্ধানের মাধ্যমে গত জানুয়ারি গত ১৩ এপ্রিল ২০১৮ এ ভারতীয় গণমাধ্যম ‘Times of India’ এ “Curb likely on access to Oonjapara aqueduct” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ওনজাপাড়া খালের ছবির সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবির  মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Times of India

গুগলে ‘Oonjapara Canal’ শীর্ষক কী-ওয়ার্ড অনুসন্ধান করে জানা যায় এটি ভারতের কেরালাতে অবস্থিত। 

Screenshot from Google

এছাড়া অনুসন্ধানের মাধ্যমে নরসিংদীতে অবস্থিত এরকম কোনো খালের তথ্য ইন্টারনেটে পাওয়া যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি গাছপালা বেষ্টিত একটি কৃত্রিম খালে মানুষের গোসলের দৃশ্যকে বাংলাদেশের নরসিংদী জেলার মাধবদী উপজেলার ছবি উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায় উক্ত দাবিতে প্রচারিত খালটি বাংলাদেশের নরসিংদীতে নয়। প্রকৃতপক্ষে এটি ভারতের কেরালায় অবস্থিত ওনজাপাড়া খালে(কৃত্রিম) মানুষের গোসলের ছবি।

উল্লেখ্য, বর্তমানে ভারতের কেরালার ওনজাপাড়ার খালটি বন্ধ আছে।

সুতরাং, ভারতের কেরালা রাজ্যের একটি কৃত্রিম খালের ছবিকে বাংলাদেশের নরসিংদী জেলায় অবস্থিত খালের ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী নিয়োগ ও বেতন-ভাতা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিগুলো ভুয়া

0

সম্প্রতি ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ ও বেতন-ভাতা সংক্রান্ত গেজেট’ শীর্ষক শিরোনামে দুইটি বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ সংক্রান্ত প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ ও বেতন-ভাতা সংক্রান্ত গেজেট নিয়ে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ ও বেতন-ভাতা সংক্রান্ত গেজেটের দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিগুলো ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে কোনোপ্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যপ্রমাণ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে এই ভুয়া বিজ্ঞপ্তিগুলো প্রচার করা হচ্ছে। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ের দৈনিক প্রথম আলোতে গত ১৯ এপ্রিল ‘প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়–সংক্রান্ত তথ্য ওয়েবসাইটে যাচাইয়ের আহ্বান‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Daily Prothom Alo

প্রতিবেদনটিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি বিজ্ঞপ্তিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন অধিশাখার নামে দপ্তরি কাম প্রহরী নিয়োগ, বেতন-ভাতাসংক্রান্ত প্রকাশিত ভুয়া গেজেট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রকাশিত গেজেটটি ভুয়া এবং এতে মাঠপর্যায়ে সর্বমহলে ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা প্রচলিত আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী গুরুতর অপরাধ।’

Screenshot: Daily Prothom Alo 

প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আইন অধিশাখা নামে কোনো অধিশাখা নেই। এছাড়া গেজেটে যে কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে, সে নামে এ মন্ত্রণালয়ে কোনো কর্মকর্তা কর্মরত নেই।

পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানেও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে আইন অধিশাখা নামে কোনো অধিশাখা খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

Screenshot: Primary and Mass Education Ministry

পাশাপাশি আলোচিত গেজেটটিতে উল্লেখিত মৃণাল কান্দি দে নামে কোনো উপসচিবও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া গেজেটটি বিজিপ্রেস থেকে গত ৯ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়েছে দাবি করা হলেও প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটেও এমন কোনো গেজেট এর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে দাবিটির বিষয়ে অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনিও রিউমর স্ক্যানারকে বিষয়টি গুজব বলে নিশ্চিত করেন।

মূলত, গত ৫ ও ৯ এপ্রিল যথাক্রমে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ ও বেতন-ভাতা সংক্রান্ত গেজেট’ শীর্ষক শিরোনামে দুইটি বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ ও বেতন-ভাতা সংক্রান্ত গেজেট’ শীর্ষক বিজ্ঞপ্তি দুইটি সঠিক নয়। উক্ত বিজ্ঞপ্তি দুইটি ভুয়া ও ভিত্তিহীন বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেমন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।

সুতরাং, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগ ও বেতন-ভাতা সংক্রান্ত গেজেট শীর্ষক ফেসবুকে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তি দুইটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও ভিত্তিহীন।

তথ্যসূত্র

অভিনেতা ডিপজল হাফেজ তাকরিমকে বাস উপহার দেননি

সম্প্রতি হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমকে অভিনেতা ডিপজলের পক্ষ থেকে কোটি টাকার বাস উপহার দেওয়ার দাবিতে একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

Screenshot: Facebook

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ) এবং এখানে(আর্কাইভ)।

Screenshot: YouTube

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত কয়েকটি ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ) এবং এখানে(আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত কয়েকটি ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ) এবং এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, অভিনেতা ডিপজলের পক্ষ থেকে হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমকে বাস উপহার দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার ক্যাপশন এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, সেখানে কোথাও ডিপজল কর্তৃক হাফেজ তাকরিমকে বাস উপহার দেওয়ার বিষয়ে কোন তথ্যসূত্র উল্লেখ করা হয়নি।

গত ১০ এপ্রিল আমরা ও মানুষ নামের একটি ফেসবুক পেজে ‘এইমাত্র বিশ্বজয়ী হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমকে কোটি টাকার বাস উপহার দিলেন ডিপজল’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ১ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের ভিডিও(আর্কাইভ) প্রকাশ করা হয়।

Screenshot: Facebook 

১ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওতে বলা হয়, কপাল খুললো তাকরিমের। বিশ্বজয়ী হাফেজ তাকরিমকে কোটি টাকার একটি বাস উপহার দিলেন ডিপজল। আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় আবারও বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশের হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম। এবার দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম হয়েছেন তিনি। তাকরিমের এই সাফল্যে উচ্ছাসিত হয়েছে পুরো বাংলাদেশ। 

এরপর ভিডিও’র ১ মিনিট ০৫ সেকেন্ড অংশে বলা হয়, তাকরিমের এমন বিশ্বজয়ে খুশি হয়ে তার নামে একটি বাস উপহার দিলেন ডিপজল। তিনি তাকরিমকে তার পক্ষ থেকে কোটি টাকার বাসটি উপহার দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তার ডিপজেল নামের একটি বাস তিনি তাকরিমের নামে প্রচার করবেন, যা ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রোডে নিয়মিত চলবে।

রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, উক্ত দাবিটি প্রচারিত ভিডিওটি অভিনেতা ডিপজলের ছবির সাথে ডিপজল নামের একটি বাসের ছবি এবং তাকরিমের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার ও বিভিন্ন জায়গায় সংবর্ধনার কয়েকটি ছবি যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে। 

পাশাপাশি গণমাধ্যমে কিংবা নির্ভরযোগ্য অন্য কোনো সূত্রে এখন পর্যন্ত হাফেজ তাকরিমকে অভিনেতা ডিপজলের পক্ষ থেকে বাস উপহার দেওয়ার কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে অভিনেতা ডিপজলের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১৩ এপ্রিল হাফেজ তাকরিমকে নিয়ে একটি পোস্ট(আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে তিনি হাফেজ তাকরিমের একটি ছবি শেয়ার করে লেখেন ‘আল্লাহ তুমাকে আরও বড় করুক। দোয়া থাকবে।’

Screenshot: Facebook

এছাড়াও প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে মূল ধারার গণমাধ্যম কালের কণ্ঠের অনলাইন সংস্করণে ‘আল্লাহ তোমাকে আরো বড় করুক’ তাকরিমের প্রতি ডিপজলের দোয়া” শীর্ষক শিরোনামে গত ১৪ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Kalerkantho Online

প্রতিবেদনে বলা হয়,

আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় আবারো বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশের হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরিম। এবার ২৬তম দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম হলেন তাকরিম। এবার হাফেজ তাকরিমকে নিয়ে কথা বললেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় খলঅভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে ফেসবুকে তাকরিমকে নয়ে একটি পোস্ট দেন ডিপজল। ওই পস্টে তাকরিমের ছবি ব্যবহার করে ডিপজল বলেন, ‘আল্লাহ তোমাকে আরও বড় করুক। দোয়া থাকবে।’

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে গত ১৮ এপ্রিল Islamic Culture BD নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘সত্যি কি ডিপজল বাস উপহার দিয়েছেন? জেনে নিন আসল সত্য‘ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে তাকরিমের উপস্থিততে তার শিক্ষক মুফতি মুরতজা হাসান ফয়েজী মাসুম উক্ত পুরস্কারটি পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন।

Screenshot: YouTube

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওগুলোর বিস্তারিত প্রতিবেদন এবং এ বিষয়ে তাকরিমের শিক্ষকের বক্তব্য পর্যবেক্ষণ করলে এটা স্পষ্ট যে, অভিনেতা ডিপজলের পক্ষ থেকে হাফেজ তাকরিমকে বাস উপহার দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। 

মূলত, সম্প্রতি দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জন করেন বাংলাদেশের হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম। হাফেজ তাকরিমের এ অর্জনে অভিনেতা ডিপজল খুশি হয়ে তাকরিমকে কোটি টাকার বাস উপহার দেওয়ার দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব এবং টিকটকে একাধিক ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারে অনুসন্ধানে জানা যায়, অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইলে ডিপজলের এবং ডিপজল পরিবহনের একটি বাসের ছবি ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিডিওগুলো প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে অভিনেতা ডিপজল তাকরিমকে কোনো বাস উপহার দেননি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করে অভিনেতা শাকিব খান তাকরিমকে এক কোটি টাকা উপহার দিয়েছেন দাবিতে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টিকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, অভিনেতা ডিপজলের পক্ষ থেকে হাফেজ তাকরিমকে কোটি টাকার বাস উপহার দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র