Home Blog Page 589

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে জুমার নামাজ পড়াননি, জুমার খুতবা দিয়েছেন 

গত ২২ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ইসলামিক কালচারাল সেন্টারে জুমার নামাজ পড়িয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম শীর্ষক একটি দাবি দেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রচার করা হয়েছে। 

নিউইয়র্কে

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন সময় টিভি, যুগান্তর, চ্যানেল২৪, কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, কালবেলা, বাংলাদেশ বুলেটিন, বাংলাদেশ জার্নাল, গণকণ্ঠ, বাংলাদেশ টুডে, দৈনিক করতোয়া, ডেইলি বাংলাদেশ, দৈনিক সরোবর, বাহান্ন নিউজ, নিউজজি২৪, জুম বাংলা, রিদ্মিক নিউজ, ঢাকা টুডে, বিডি২৪রিপোর্ট (ফেসবুক), এমটিনিউজ২৪, ফেস দ্য পিপল (ফেসবুক)।

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজসহ অন্যান্য পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২২ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) নিউইয়র্কে ইসলামিক কালচারাল সেন্টারে জুমার নামাজ পড়িয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং সেদিন তিনি সেখানে জুমার খুতবা প্রদান করেছিলেন। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত দাবির সূত্র হিসেবে ‘ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে’র নাম উল্লেখ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে মালয়েশিয়ার অনলাইন পোর্টাল Free Malaysia Today এর ওয়েবসাইটে গত ২৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত আলোচিত প্রতিবেদনটি খুঁজে পেয়েছি আমরা।

Screenshot: Free Malaysia Today:

এই প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম সেদিন নিউইয়র্কে ইসলামিক কালচারাল সেন্টারে জুমার নামাজের সময় উপস্থিত হয়ে খুতবা (Sermon) প্রদান করেন। নামাজ শেষে তিনি এক ব্যক্তিকে ইসলাম গ্রহণের নিমিত্তে শাহাদাত পাঠ করান। কিন্তু এই প্রতিবেদনের কোথাও আনোয়ার ইব্রাহিম সেদিন জুমার নামাজ পড়িয়েছেন শীর্ষক তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে মালয়েশিয়ার জাতীয় সংবাদ সংস্থা Bernama সহ দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যমের (,,) এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে একই তথ্যই উল্লেখ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম।
 
অধিকতর অনুসন্ধানে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সেদিন নিউইয়র্কে ইসলামিক কালচারাল সেন্টারে অবস্থানের সময়ের লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে দেখা যাচ্ছে, তিনি খুতবা প্রদানের পর ইমামের পেছনে প্রথম কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজে শরিক হয়েছেন। তাছাড়া, ইমামের মাথায় স্পষ্টত সাদা টুপি দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে আনোয়ার ইব্রাহিমের মাথায় খুতবা প্রদানের সময় কালো টুপি দেখা গেছে।

Image: Rumor Scanner 

নিউইয়র্কে ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের ইমামের এক ফেসবুক পোস্ট থেকেও জানা যাচ্ছে, আনোয়ারের ইব্রাহিমের সেদিনের খুতবা প্রদানের বিষয়টি পূর্ব নির্ধারিত ছিল। 

Screenshot: Facebook 

মূলত, জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সফররত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম গত ২২ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ইসলামিক কালচারাল সেন্টারে জুমার খুতবা প্রদান করেন। উক্ত বিষয়কেই মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে ইসলামিক কালচারাল সেন্টারে জুমার নামাজ পড়িয়েছেন দাবিতে বাংলাদেশের কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, নিউইয়র্কে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের জুমার খুতবা প্রদানের তথ্যকে জুমার নামাজ পড়িয়েছেন শীর্ষক দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

চট্টগ্রামে হৃদয় হত্যায় অভিযুক্ত আসামিদের ফাঁসি কার্যকর হয়নি

0

সম্প্রতি, “চ্যানেল টুয়েন্টিফোর থেকে প্রচার। হৃদয় হত্যার আসামিদের ফাঁসি” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

হৃদয় হত্যা

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, চট্টগ্রামের রাউজানে নিহত সিবলি সাদিক হৃদয়ের হত্যাকারীদের ফাঁসি কার্যকর হয়নি বরং ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রতিবেদনের সাথে হৃদয়ের হত্যাকারীর ফাঁসির তথ্য জুড়ে দিয়ে প্রচার করা হচ্ছে।

তথ্য যাচাই

শুরুতেই, চট্টগ্রামের রাউজানে চাঞ্চল্যকর সিবলি সাদিক হৃদয় হত্যাকান্ডের ব্যাপারে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার দৈনিক কালেরকণ্ঠের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর “কলেজ শিক্ষার্থী হৃদয় হত্যা, ২ লাখ টাকা গ্রহণকারী আসামি গ্রেপ্তার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কলেজ ছাত্র হৃদয় হত্যাকান্ডের ঘটনায় মুক্তিপণ আদায়কারী অংথাই চিং মারমা প্রকাশ অংথোই চিং মারমা বাবু মারমাকে আটক করে পুলিশ। 

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল হারুনের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়, “গ্রেপ্তারের পর তাকে (অংথাই চিং মারমা প্রকাশ অংথোই চিং মারমা বাবু মারমা) বৃহস্পতিবার জবানবন্দীর জন্য কোর্টে প্রেরণ করা হয়। সে জেলা ম্যাজিস্ট্রে আদালত-এর বিজ্ঞ বিচারক জোনায়েদ আহমেদের কাছে অপহরণের কথা এবং বান্দরবান থেকে অপহৃত পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণের দুইলাখ টাকা নিজেই গ্রহণ করে বলে স্বীকার করে।”

এছাড়াও, মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক মানবজমিনের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর “চট্টগ্রামে মুক্তিপণ আদায়ের পরও কলেজ শিক্ষার্থীকে হত্যা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, হৃদয় হত্যা মামলায় অজ্ঞাতসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে ১১ই সেপ্টেম্বর এজাহারের প্রথম আসামি উমংচিং মারমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তার স্বীকারোক্তি অনুসারে ছিন্ন ভিন্ন কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। এ সময় পুলিশ হেফাজত থেকে এলাকাবাসী অভিযুক্ত উমংচিং মারমাকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। এছাড়াও, হৃদয় হত্যাকান্ডের ঘটনায় আরও দুই আসামি আছুমং মারমা, ঊক্যথোয়াই মারমাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 

রাউজান থানার তদন্ত কর্মকর্তা অজয় দেবশীলের বরাত দিয়ে জানানো হয়, “অপহরণে জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”

অর্থাৎ, কলেজ ছাত্র হৃদয় হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত অভিযুক্তদের মধ্যে ঘটনার মূল অভিযুক্ত আসামি উমংচিং মারমা এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে নিহত হন। অভিযুক্ত বাকি আসামিরা বর্তমানে কারাগারে অবস্থান করছেন। উল্লেখ্য, কলেজ ছাত্র হৃদয় হত্যা মামলা এখনও বিচারাধীন রয়েছে। এ ব্যাপারে আদালতের কোনো রায় এখনও পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি।

ভিডিও যাচাই

আলোচ্য ভিডিওটির মূল উৎসের অনুসন্ধানে, Channel 24 এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই “ফাঁসির মঞ্চে একজনের চিৎকার; অন্যজন নির্বিকার!” শীর্ষক শিরোনামে আপলোডকৃত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি পর্যালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির সাথে হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিও প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উক্ত ভিডিওটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলার আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের সময় রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের বাইরে থেকে ধারণ করা হয়। 

Source: Channel 24

মূলত, চলতি বছরের জুলাই মাসে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। সেসময়ের কারাগারের বাইরে ধারণ করা একটি ভিডিও প্রতিবেদনকে সম্প্রতি রাউজানে চাঞ্চল্যকর হৃদয় হত্যা মামলার আসামিদের ফাঁসি কার্যকরের ভিডিও প্রতিবেদন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, কলেজছাত্র হৃদয় হত্যাকান্ডে অভিযুক্তদের একজন গণপিটুনিতে মারা গেছেন এবং গ্রেফতারকৃত বাকি অভিযুক্তদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও আলোচিত হৃদয় হত্যার ঘটনায় মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, আলোচিত হৃদয় হত্যা মামলার আসামীদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের নতুন নিয়মে মিলাদ পড়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড

0

আওয়ামী লীগের মিলাদ পড়ার নতুন নিয়ম” শীর্ষক শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে।

মিলাদ

যা দাবি করা হচ্ছে

আল্লাহুম্মা ধ্বংসওয়ালা প্রধানমন্ত্রী হাসিনা, ওয়ালা’আলিদ সৈয়দ আশরাফ দেওয়ানবাগি মওলানা। গ্যাসের জন্য রমজান আলীর অফিস ঘেরাও করিল পুলিশেরা তার বউসহ গুলি করে মারিলো। আল্লাহুম্মা ধ্বংসওয়ালা প্রধানমন্ত্রী হাসিনা, ওয়ালা’আলিদ সৈয়দ আশরাফ আটরশির সব মাউলানা।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন পোস্ট  (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, “আওয়ামী লীগের মিলাদ পড়ার নতুন নিয়ম” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কর্তৃক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের রুহের মাগফেরাত কামনা করে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলের ভিডিওতে ভিন্ন অডিও যুক্ত করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আলোচিত ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘Md Hamid’ নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০১৯ সালের ৪ জানুয়ারি প্রচারিত লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

ভিডিওটি থেকে জানা যায় সেদিন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ।

উক্ত ভিডিওটি শুরুতেই একজন হুজুর বলেন, “উড়ে যাওরে এই আওয়ামী লীগের মিটিং এর হাওয়া উড়ে যাও সোনার মদিনায়। আমাদের সালাম ও দোয়া পৌঁছায় দাও নবিজির রওজায়। ইয়া নবি সালাম আলাইকা, ইয়া রাসূল সালাম আলাইকা। ইয়া হাবিব সালাম আলাইকা, সালাওয়া তুল্লাহ ওয়াআলাইকা। উড়ে যাওরে জ্যাকসন হাইটসের হাওয়া, উড়ে যাও সোনার মদিনায়, আমাদের সালাম ও দোয়া পৌঁছায় দাও নবিজির রওজায়, ইয়া নবি সালাম আলাইকা, ইয়া রাসূল সালাম আলাইকা। ইয়া হাবিব সালাম আলাইকা, সালাওয়া তুল্লাহ ওয়াআলাইকা।”

‘Ruposhi Bangla রূপসী বাংলা’ নামক ফেসবুক পেজেও ২০১৯ সালের ৪ জানুয়ারি একই ভিডিও প্রচারিত হয়।

অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কর্তৃক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের রুহের মাগফেরাত কামনা করে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে পঠিত দুরুদের ভিডিওর আসল অডিওর স্থলে অন্য অডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে প্রচার করা হচ্ছে।

মূলত, ২০১৯ সালের ৪ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিলে একজন হুজুর আওয়ামী লীগের সাথে সমন্বয় করে দুরুদ পাঠের সময় বলেন, “উড়ে যাওরে এই আওয়ামী লীগের মিটিং এর হাওয়া উড়ে যাও সোনার মদিনায়। আমাদের সালাম ও দোয়া পৌঁছায় দাও নবিজির রওজায়। ইয়া নবি সালাম আলাইকা, ইয়া রাসূল সালাম আলাইকা। ইয়া হাবিব সালাম আলাইকা, সালাওয়া তুল্লাহ ওয়াআলাইকা। উড়ে যাওরে জ্যাকসন হাইটসের হাওয়া, উড়ে যাও সোনার মদিনায়, আমাদের সালাম ও দোয়া পৌঁছায় দাও নবিজির রওজায়, ইয়া নবি সালাম আলাইকা, ইয়া রাসূল সালাম আলাইকা। ইয়া হাবিব সালাম আলাইকা, সালাওয়া তুল্লাহ ওয়াআলাইকা।” সম্প্রতি সেই দুরুদ পাঠের ভিডিওতে “আল্লাহুম্মা ধ্বংসওয়ালা প্রধানমন্ত্রী হাসিনা, ওয়ালা’আলিদ সৈয়দ আশরাফ দেওয়ানবাগি মওলানা। গ্যাসের জন্য রমজান আলীর অফিস ঘেরাও করিল পুলিশেরা তার বউসহ গুলি করে মারিলো। আল্লাহুম্মা ধ্বংসওয়ালা প্রধানমন্ত্রী হাসিনা, ওয়ালা’আলিদ সৈয়দ আশরাফ আটরশির সব মাউলানা।” শীর্ষক ভিন্ন অডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে যুক্ত করে প্রচার করা হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, পূর্বে ইন্টারনেটে  বিএনপিকে সমালোচনা করে দেওয়া ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যকে বিকৃত করে প্রচার করা হলে সে বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ২০১৯ সালে কর্তৃক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের রুহের মাগফেরাত কামনা করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের আয়োজিত দোয়া মাহফিলে পাঠকৃত দুরুদ এর স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে ভিন্ন অডিও যুক্ত করে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিকৃত।

 তথ্যসূত্র

থিয়াগো সিলভার ক্যারিয়ারে কখনো লাল কার্ড না দেখার তথ্যটি সঠিক নয়

0

সম্প্রতি, “সর্বকালের সেরা সেন্টারব্যাক…যে কখনো লাল কার্ড দেখেনি…ব্রাজিলিয়ানদের ছাড়া ফুটবলের ইতিহাস রচনা হয় না” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

থিয়াগো সিলভার

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার থিয়াগো সিলভা তার ক্যারিয়ারে কখনও লাল কার্ড দেখেননি দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং, ফরাসি ক্লাব পিএসজির হয়ে ২০১২/১৩ মৌসুমে একবার এবং ইংলিশ ক্লাব চেলসির হয়ে ২০২০/২১ মৌসুমে একবার লাল কার্ড দেখেন।

অনুসন্ধানের শুরুতে, ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ান এর ওয়েবসাইটে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার থিয়াগো সিলভার প্রোফাইল বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখান থেকে জানা যায়, লিগ ওয়ানে (ফ্রেঞ্চ ফুটবল লিগ) থিয়াগো সিলভা ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) এর হয়ে মোট ৯টি মৌসুম খেলেছেন। এর মধ্যে ২০১২/১৩ মৌসুমের একটি ম্যাচে লাল কার্ড দেখেন তিনি। উল্লেখ্য, ২০৪ ম্যাচের লিগ ওয়ান কারিয়ারে এটিই থিয়াগো সিলভার একমাত্র লাল কার্ড দেখার ঘটনা।

Source: Ligue 1

পাশাপাশি, লিগ ওয়ানের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল Leaguge 1 Uber Eats Official এ ২০১৩ সালের ৬মে “Incredible red card for PSG’s Thiago Silva / 2012-13” শিরোনামে আপলোডকৃত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ম্যাচের ৪৩তম মিনিটে লাল কার্ড দেখেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার থিয়াগো সিলভা। সেই সাথে ভিডিওর বিস্তারিত বিবরণ থেকে জানা যায় যে, ২০১২/১৩ মৌসুমের ভ্যালেনসিয়েনেস এর বিপক্ষে নিজেদের ৩৫তম ম্যাচে লাল কার্ড দেখেন পিএসজির ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা।

Source: YouTube

পরবর্তীতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ওয়েবসাইটে থিয়াগো সিলভার প্রোফাইলে বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, থিয়াগো সিলভা তার ইংলিশ লিগ ক্যারিয়ারে ১টি লাল কার্ড দেখেছেন। 

পাশাপাশি, Falco News Tv এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল “Thiago Silva’s red card and frustration from Tuchel” শীর্ষক শিরোনামে আপলোডকৃত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চেলসি বনাম ওয়েস্টব্রম ম্যাচের ২৯তম মিনিটে থিয়াগো সিলভা লাল কার্ড দেখেন।

Source: YouTube 

এছাড়াও, খেলাধুলা বিষয়ক ওয়েবসাইট Transfermarkt এর তথ্য অনুসারে, মাইনর লিগ ব্রাজিলিয়ান সিরি আ ক্যারিয়ারেও ৩টি লাল কার্ড দেখেছেন থিয়াগো সিলভা। 

সেইসাথে, ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলে থিয়াগো সিলভার ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে খেলাধুলা বিষয়ক Besoccer এর ওয়েবসাইটে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার থিয়াগো সিলভার প্রোফাইল খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

উক্ত ওয়েবসাইটে থিয়াগো সিলভার জাতীয় দলের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০০৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মোট ১৪ বছরে ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে থিয়াগো সিলভা কখনো লাল কার্ড দেখেননি।

Source: Besoccer

পাশাপাশি কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, মূলধারার গণমাধ্যম যমুনা টিভির ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ৩ডিসেম্বর “১৪ বছরের ক্যারিয়ারে লাল কার্ড দেখেননি থিয়োগো সিলভা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।  

উক্ত প্রতিবেদন থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে অংশ নেওয়া আন্তজার্তিক ম্যাচে থিয়াগো সিলভা কখনও লাল কার্ড দেখেননি।

Source: Jamuna TV

মূলত, ফুটবলার থিয়াগো সিলভা তার জাতীয় দলের ক্যারিয়ারে ব্রাজিলের হয়ে কখনও লাল কার্ড দেখেননি। উক্ত, বিষয়টিকেই থিয়াগো সিলভা তার পুরো ক্যারিয়ারে কখনও লাল কার্ড দেখেননি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা ফ্রেঞ্চ লিগে ১বার, ইংলিশ লিগে ১বার এবং মাইনর ব্রাজিলিয়ান লিগে ৩বার লাল কার্ড দেখেছেন। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও থিয়াগো সিলভার নাম জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচারিত হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার থিয়াগো সিলভা তার পুরো ক্যারিয়ারে কখনও লাল কার্ড দেখেননি শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

দৈনিক ইত্তেফাকের নাম এবং খালেদা জিয়ার ছবি যুক্ত করে ভুয়া তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি, “পশ্চিমবঙ্গের বুকে বাংলাদেশের পতাকা দেখতে চাইলে, বাংলাপক্ষের মতো ভারতের সমস্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের হাত মজবুত করে তুলুন।” শীর্ষক শিরোনামে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছবিসহ একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

ভুয়া মন্তব্য

ফেসবুক প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “পশ্চিমবঙ্গের বুকে বাংলাদেশের পতাকা দেখতে চাইলে, বাংলাপক্ষের মতো ভারতের সমস্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের হাত মজবুত করে তুলুন” শীর্ষক শিরোনামে ইত্তেফাক কোনো সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছবিসহ উক্ত প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটটি এডিটেড।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত স্ক্রিনশটটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। স্ক্রিনশটটি লক্ষ্য করে দেখা যায় প্রচারিত প্রতিবেদনটি প্রকাশের তারিখ ২৩ জুলাই ২০২৩ উল্লেখ করা। 

স্ক্রিনশটটির সত্যতা যাচাইয়ে স্ক্রিনশটে থাকা তারিখ এবং দৈনিক ইত্তেফাকের নামের সূত্র ধরে দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে থাকা প্রিন্টের আর্কাইভে গত ২৩ জুলাইয়ের প্রকাশিত সংবাদগুলোর প্রথম প্রকাশ এবং দ্বিতীয় প্রকাশ পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনামে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, অনুসন্ধানে ইত্তেফাকের অনলাইন ভার্সন এবং ফেসবুকে পেজে এমন কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, উক্ত দাবিতে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনটির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে দেশের অন্য কোনো গণমাধ্যমে এমন কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য দৈনিক ইত্তেফাক ডিজিটাল এর নিউজ এডিটর শান্তনু চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “এ ধরনের কোনো নিউজ আমাদের প্রকাশ হয়নি। এটি ইত্তেফাকের নাম দিয়ে অপপ্রচার।”

মূলত, সম্প্রতি ‘পশ্চিমবঙ্গের বুকে বাংলাদেশের পতাকা দেখতে চাইলে, বাংলাপক্ষের মতো ভারতের সমস্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের হাত মজবুত করে তুলুন’ শীর্ষক শিরোনামে ‘২৩ জুলাই ২০২৩ তারিখ উল্লেখ করে খালেদা জিয়ার ছবিসহ একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে, গত ২৩ জুলাই সহ অন্যান্য তারিখেও দৈনিক ইত্তেফাকের প্রিন্ট এবং অনলাইন ভার্সনে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। দৈনিক ইত্তেফাক ডিজিটাল এর নিউজ এডিটর শান্তনু চৌধুরী উক্ত স্ক্রিনশটে থাকা প্রতিবেদন ইত্তেফাক প্রকাশ করেনি বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে প্রথম আলো’র সংবাদ বিকৃত করে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর গুজব প্রচার করা হলে বিষয়টি শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, দৈনিক ইত্তেফাকের নাম উল্লেখ করে ‘পশ্চিমবঙ্গের বুকে বাংলাদেশের পতাকা দেখতে চাইলে, বাংলাপক্ষের মতো ভারতের সমস্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের হাত মজবুত করে তুলুন’ শীর্ষক শিরোনামে বেগম খালেদা জিয়ার ছবিসহ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বারাক ওবামা কেনিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানকে ‘ফলো বাংলাদেশ, ফলো শেখ হাসিনা’ বলেননি

0

গত ২৩ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনস মাঠে নবনির্মিত ইনডোর প্লে-গ্রাউন্ডের উদ্বোধন শেষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন,”আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আফ্রিকার একটি দেশে গিয়ে বলেছেন- যদি তোমরা উন্নয়ন দেখতে চাও, তবে বাংলাদেশে যাও, শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করো” 

বারাক ওবামা

পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এর এই বক্তব্যটি যুগান্তর, কালবেলার ফেসবুক পেজ সহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আফ্রিকার কোন দেশে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার বক্তব্যে “যদি তোমরা উন্নয়ন দেখতে চাও, তবে বাংলাদেশে যাও,শেখ হাসিনাকে অনুসরন করো ” শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায় একমাত্র রাষ্ট্রীয় সফরের এক বক্তব্যে ওবামা বাংলাদেশ এবং জিম্বাবুয়ের নির্বাচন ব্যবস্থায় কেনিয়ার আবিষ্কৃত উশাহিদি নামের প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেছিলেন।

মূলত, কেনিয়া বারাক ওবামার জন্মভূমি হলেও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তিনি কেবলমাত্র একবারই কেনিয়া সফরে গিয়েছিলেন। এটিই ছিলো কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রথম কেনিয়া সফর। বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবার ২০১৫ সালের ২৪ জুলাই কেনিয়ার উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রীয় সফরে যান। সেই সফরে ২৫ জুলাই নাইরোবিতে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়ার সঙ্গে বৈশ্বিক উদ্যোক্তা বিষয়ক এক যৌথ সম্মেলনে বক্তব্য প্রদান করেন বারাক ওবামা। সেই বক্তব্যে কেনিয়ার প্রযুক্তিতে পারদর্শী তরুণ উদ্যোক্তাদের কথা বলতে গিয়ে ওবামা বলেছিলেন, “বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন, লক্ষ লক্ষ মানুষ এম-পেসা [কেনিয়ার মোবাইল মানি ট্রান্সফার সার্ভিস] দিয়ে অর্থ পাঠায় এবং সঞ্চয় করে… জিম্বাবুয়ে থেকে বাংলাদেশে, নাগরিকরা ক্রাউড-সোর্সিং প্ল্যাটফর্ম উশাহিদি ব্যবহার করে নির্বাচন নিরাপদ রাখতে কাজ করে – এবং এটি একটি দুর্দান্ত ধারণা যা এখানে কেনিয়া থেকে শুরু হয়েছিল।” অর্থাৎ, বারাক ওবামা কেনিয়া সফরের সেই বক্তব্যে জিম্বাবুয়ে এবং বাংলাদেশের নির্বাচনে কেনিয়ার তৈরি সফটওয়্যার ব্যবহৃত হচ্ছে বলে কেনিয়ার তরুণদের প্রশংসা করতে গিয়েই বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করেছিলেন। বারাক ওবামার দেয়া বক্তব্য এবং দেশীয় গণমাধ্যমে সেই বক্তব্যের বিকৃত রূপ প্রচারের কারণেই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। যার ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন সময়ে একাধিক মন্ত্রী কর্তৃক উক্ত বিষয়টিকে উদাহরণ হিসেবে দেখিয়ে বক্তব্য প্রদান করতে দেখা গেছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বক্তব্য প্রদান করলে বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে আমেরিকায় প্রধানমন্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্লক সংক্রান্ত ভুয়া সংবাদ প্রচার 

0

সম্প্রতি, “আমেরিকায় শেখ হাসিনার ব্যাংক একাউন্ট ব্ল’ক। সজিব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে মামলা” শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। 

ব্যাংক

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন ভিডিও (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়,আমেরিকায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাংক একাউন্ট ব্লক, সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে মামলা বিষয়ক কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

গত ১৯ সেপ্টেম্বর Al Minar নামের ইউটিউব চ্যানেলে “আমেরিকায় শেখ হাসিনার ব্যাংক একাউন্ট ব্ল’ক। সজিব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে মামলা” শীর্ষক শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও (আর্কাইভ)  প্রকাশ করা হয়।

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ১৩ মিনিট সাত সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে দেখা যায়, ভিডিওটির থাম্বনেইলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রীর  আইসিটি পরামর্শক সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটিতে কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই 

আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে কয়েকটি ভিডিওর খণ্ডাংশ দেখানো হয়। পরবর্তীতে ভিডিওটিতে চ্যানেলটির উপস্থাপক আলোচিত ভিডিওটির উদ্দেশ্যে দুটি ভিডিও দেখান যেখানে রয়েছে অনলাইন এক্টিভিস্ট পিনাকি ভট্টাচার্য এবং ভয়েজ বাংলার প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ। 

প্রথম ভিডিও যাচাই 

অনুসন্ধানের শুরুতে কিওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে গত ১৮ সেপ্টেম্বর Pinaki Bhattacharya নামক ইউটিউব চ্যানেলে “বাঘের থাবা থেকে বাঁচতে হাসিনার দুই ধারি কৌশন।। Pinaki Bhattacharya।। The Untold ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা প্রথম ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওর থাম্বনেইল এবং শিরোনামে থাকা তথ্যের সাথে এই ভিডিওটির কোনো প্রকার মিল খুঁজে পাওয়া যায় নি। 

অনুরূপভাবে আলোচিত ভিডিওটির দ্বিতীয় অংশে সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজকেও কথা বলতে দেখা যায়। 

পরবর্তীতে মোস্তফা ফিরোজের মূল ভিডিওটির অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গত ১৭ সেপ্টেম্বর Voice Bangla নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “সরকার যেনো খাদে পড়েছে! তাই পেয়ে বসেছেন রানা দাশ গুপ্ত! Mostofa Feroz। Voice Bangla” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

৬ মিনিট ১২ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় মোস্তফা ফিরোজ দৈনিক সমকালে গত ১৬ সেপ্টেম্বর “কী দেবেন আর কী নেবেন, নির্বাচনের আগেই পরিষ্কার করতে হবে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পড়ে শুনাচ্ছেন। প্রতিবেদনে থাকা তথ্যের সাথে ভিডিওটির থাম্বনেইল এবং শিরোনামে থাকা বিষয়বস্তুর কোনো প্রাসঙ্গিকতা নেই।

এই ভিডিওটি কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটির সাথে যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া উক্ত দাবি সম্পর্কে দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো তথ্য খুঁজে  পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ প্রচারিত ভিডিওটিতে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার যে ভিডিও ক্লিপগুলো যুক্ত করা হয়েছে সেগুলোতে আমেরিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্লক এবং সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে মামলা বিষয়ক কোনো তথ্য উল্লেখ নেই। 

মূলত, Al Minar নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে আমেরিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্লক শীর্ষক থাম্বনেইল এবং শিরোনামে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায় অধিকতর ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়। পাশাপাশি দেশের নির্ভরযোগ্য কোনো গণমাধ্যম সূত্রেও এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, আমেরিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্লক সংক্রান্ত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ঢাকার ম্যানহোলের প্লাস্টিকের বর্জ্যের ছবি দাবিতে ভারতের বিহারের ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, রাস্তার ম্যানহোল থেকে উদ্ধারকৃত প্লাস্টিকের বর্জ্যের একটি ছবি বাংলাদেশের ঢাকা থেকে তোলা দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ম্যানহোলের

ফেসবুক প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ম্যানহোল থেকে উদ্ধারকৃত প্লাস্টিকের বর্জ্যের ছবিটি ঢাকার কোনো জায়গার নয় বরং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি ভারতের বিহার রাজ্যের পাটনা শহর থেকে তোলা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আলোচিত ছবিটির বিষয়ে প্রকৃত তথ্য যাচাইয়ের জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘The Wire’ এ ২০১৯ সালের ৯ অক্টোবর “How 330 mm of Rain Flushed Down 15 Years of Urban Development in Bihar” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সংযুক্ত একটি ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, বিহারের পাটনা শহরে পলিথিন এবং প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করা হলেও এসবের যত্রতত্র ব্যবহারের কারণে যথাযথভাবে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। যার কারণে, ২০১৯ সালে ভারতের পাটনা শহরে ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় প্রায় সমস্ত এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

পরবর্তীতে, ভারতীয় ‘Dubeat’ নামক অনলাইন পোর্টালে ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবরে “Sorrow of Bihar Glooms the Capital City Patna” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনেও একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

মূলত, ২০১৯ সালে ভারতের বিহার রাজ্যের পাটনা শহরে ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় প্রায় সমস্ত এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঘটনা ঘটে। তখন সেই এলাকার রাস্তার ম্যানহোলের পাশে বেশ কিছু প্লাস্টিকের বর্জ্যের ছবি প্রকাশ করে এসব বর্জ্যের কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়া নিয়ে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়। তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতের ঐ ছবিকে ঢাকায় অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার ঘটনায় ঢাকার ম্যানহোল থেকে উদ্ধারকৃত প্লাস্টিকের বর্জ্যের ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। যার ফলে আলোচিত ছবিটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকায় সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টায় ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দিনের বিভিন্ন সময় বৃষ্টির পর সন্ধ্যা থেকে একটানা ৬ ঘন্টা বৃষ্টি হয়। এতে তেজগাঁও, ধানমন্ডি, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, মহাখালী, বনানী এলাকার সড়ক পানিতে ডুবে যায়।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি অতিবৃষ্টিতে ঢাকায় জলাবদ্ধতার ঘটনায় ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া একটি মিথ্যা এবং একটি বিভ্রান্তিকর তথ্য শনাক্ত করে আলাদা দুইটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ঢাকায় অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির ঘটনায় ভারতের বিহারের পাটনা শহরের ম্যানহোল থেকে উদ্ধারকৃত প্লাস্টিকের বর্জ্যের ছবিকে বাংলাদেশের ঢাকার ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে নায়ক রিয়াজের বক্তব্য এডিট করে প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘কোন প্রার্থী দেখার টাইম নাই। প্রার্থী শুধু একজন। বেগম খালেদা জিয়া’ শীর্ষক’ শিরোনামে চিত্রনায়ক রিয়াজের বক্তব্যের একটি ভিডিও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে।

রিয়াজের বক্তব্য

টিকটকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

যা দাবি করা হচ্ছে

ভিডিওটিতে চিত্রনায়ক রিয়াজকে বলতে শোনা যায়, “কে কোথায় প্রার্থী এর কোনো হিসাব নাই। আমরা প্রার্থী বিবেচনা করি না এবং আমি মনেকরি আজকের এই নির্বাচনে একমাত্র প্রার্থী হচ্ছে খালেদা জিয়া। “

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত এই ভিডিওটিতে শোনা যাওয়া বক্তব্যের কণ্ঠস্বর চিত্রনায়ক রিয়াজের নয় বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে কুমিল্লার এক জনসভায় কাদের সিদ্দিকীর দেওয়া বক্তব্যের কিছু অংশের অডিও যুক্ত করে এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে চিত্রনায়ক রিয়াজকে বলতে শোনা যায়, “কে কোথায় প্রার্থী এর কোনো হিসাব নাই। আমরা প্রার্থী বিবেচনা করি না এবং আমি মনেকরি আজকের এই নির্বাচনে একমাত্র প্রার্থী হচ্ছে খালেদা জিয়া।”

এই ভিডিওটির কণ্ঠস্বরের সাথে চিত্রনায়ক রিয়াজের প্রকৃত কণ্ঠস্বরের পার্থক্য খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। 

বিষয়টি যাচাইয়ে এই ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Desh Bangla নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি ‘মৃত্যর হুমকি মাথায় নিয়ে মাঠে নামলেন নায়ক রিয়াজ। কাঞ্চন নিপুণ প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠান’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত চিত্রনায়ক রিয়াজের বক্তব্যের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: YouTube 

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি ২০২২ সালে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে কাঞ্চন-নিপুন প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠানে চিত্রনায়ক রিয়াজের বক্তব্য দেওয়ার সময়ের ভিডিও।

এই ভিডিওটিতে চিত্রনায়ক রিয়াজের পোশাক, ব্যাকগ্রাউন্ড এবং আশেপাশের মানুষের সাথে আলোচিত ভিডিওটির পোশাক, ব্যাকগ্রাউন্ড এবং আশেপাশের মানুষের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

আলোচিত ভিডিওটিতে রিয়াজের বক্তব্যের কণ্ঠস্বরের সাথে ২০১৮ সালের ডিসেম্বররে কুমিল্লার এক জনসভায় কাদের সিদ্দিকীর দেওয়া বক্তব্যের কণ্ঠস্বরের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

তাছাড়া, গণমাধ্যম বা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে খালেদা জিয়াকে নিয়ে রিয়াজের এমন কোনো বক্তব্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি, চিত্রনায়ক রিয়াজ বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকার বিষয়েও কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি বরং বিভিন্ন সময় তাকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা গেছে।

অর্থাৎ, চিত্রনায়ক রিয়াজের বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে ব্যবহৃত কণ্ঠস্বরটি রিয়াজের নয়।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভিন্ন ব্যক্তিকে জড়িয়ে ইন্টারনেটে নানা ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় চিত্রনায়ক রিয়াজের ২০২২ সালে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেওয়ার সময়ের একটি ভিডিও’র কিছু অংশের সাথে ২০১৮ সালে কুমিল্লার এক জনসভায় কাদের সিদ্দিকী দেওয়া বক্তব্যের কিছু অংশের অডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ভিডিও এবং অডিও এডিট করে প্রচারের বিষয়ে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, বিএনপি’র চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে চিত্রনায়ক রিয়াজের বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত এই ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

মিরপুরে জলাবদ্ধ সড়কে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া শিশু হোসাইন মারা যায়নি 

0

সম্প্রতি, গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে মিরপুরে জলাবদ্ধ রাস্তা থেকে উদ্ধারকৃত এক শিশুর ছবি প্রচার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে এই শিশুটি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে।

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে  (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা, মিরপুরে জলাবদ্ধ রাস্তা থেকে উদ্ধার হওয়া ছবির এই শিশুটি মারা যায়নি বরং হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বর্তমানে শিশুটি তার আত্মীর কাছে রয়েছে এবং সুস্থ আছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে কি ওয়ার্ড সার্চ করে দৈনিক সমকালে গত ২২ সেপ্টেম্বর “জলাবদ্ধতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-বাবা-বোনহারা শিশুটি বেঁচে আছে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শিশু হুসাইন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন স্থানীয় আমিনাসহ কয়েকজন। ২২ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সকাল ১০টার দিকে পুলিশ শিশু হোসাইনকে আমিনার জিম্মায় হস্তান্তর করে। 

একই দিনে অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগোনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে “অলৌকিকভাবে বেঁচে আছে মিরপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট শিশু হোসাইন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটিতে এই শিশুর নানার মন্তব্য পাওয়া যায়। নিহত মুক্তার বাবা সানোয়ার শেখ জাগো নিউজকে বলেন, “শিশু হোসাইনকে উদ্ধার করে প্রথমে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাতে সেখানেই তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে চিকিৎসক এসে বলেন, হোসাইন মোটামুটি সুস্থ, তাকে বাসায় নিয়ে যেতে পারেন। পরে আমরা তাকে বাসায় নিয়ে এসেছি।”

এছাড়া, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল Rtv এর ইউটিউব চ্যানেলে “বৃহস্পতিবার বৃষ্টিতে জমে থাকা পানিতে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হওয়া সাত মাসের শিশু হুসাইন বেঁচে আছে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি  ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

১ মিনিট ২০ সেকেন্ডের সংবাদ ভিডিওতে দেখা যায়, শিশু হুসাইন একজন নারীর কোলে শুয়ে আছে।

Screenshot: Rtv

এছাড়া, একই বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও শিশুটির বেঁচে থাকার বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন প্রথম আলো, যুগান্তর এবং ইত্তেফাক

মূলত, গত ২১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা কমার্স কলেজ সংলগ্ন সড়কে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের তিনজনসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সেসময় জলাবদ্ধ ঐ সড়ক থেকে আহত অবস্থায় সাত মাস বয়সী হোসাইন নামের এক শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। উক্ত ঘটনা পরবর্তী সময়ে ঐ শিশুর মারা যাওয়ার দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে, অনুসন্ধানে জানা যায়, শিশু হুসাইন মারা যায়নি। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শিশু হোসাইনকে তার আত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শিশুটি বর্তমানে সুস্থ আছে। 

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকায় সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টায় ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দিনের বিভিন্ন সময় বৃষ্টির পর সন্ধ্যা থেকে একটানা ৬ ঘন্টা বৃষ্টি হয়। এতে তেজগাঁও, ধানমন্ডি, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, মহাখালী, বনানী এলাকার সড়ক পানিতে ডুবে যায়।

উল্লেখ্য, একই ঘটনায় ৯ জন মারা যাওয়ার দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে তা বিভ্রান্তিকর হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, মিরপুরে জলাবদ্ধ রাস্তা থেকে উদ্ধার হওয়া বিদ্যুৎস্পৃষ্ট সাত মাস বয়সী শিশু হুসাইন মারা যাওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র