Home Blog Page 588

সৌরভ গাঙ্গুলি তামিম ইকবালকে বিশ্বকাপে ফিরিয়ে আনা শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি

0

সম্প্রতি, “নান্নু, পাপনকে বরিষ্কার করে তামিমকে বিশ্বকাপে ফিরিয়ে নেওয়া হোক, ক্ষিপ্ত হয়ে রেগে গিয়ে বললেন সৌরভ গাঙ্গুলীও” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

সৌরভ গাঙ্গুলি

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশের ক্রিকেটার তামিম ইকবালের বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ার প্রেক্ষাপটে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলি এরূপ কোন মন্তব্য করেননি বরং চলতি বছরের জানুয়ারিতে এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় ক্রিকেটার ভিরাট কোহলি প্রসঙ্গে করা মন্তব্যের একটি ভিডিওর অংশ কেটে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ভিডিও বিশ্লেষণ করে সৌরভ গাঙ্গুলীকে বলতে শোনা যায়, “There will be periods when he will not score, but he’s a special player.” অর্থাৎ, একটা সময় সে রান করবে না, কিন্তু সে একজন বিশেষ খেলোয়াড়।

পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম One India Bengali এর ফেসবুক পেজে গত ১১ জানুয়ারি প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও  খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিও বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সৌরভ গাঙ্গুলি এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় ক্রিকেটের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অভিমত তুলে ধরেন। ভিরাট কোহলির সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এতবছর ধরে খেলছে। There will be periods when he will not score, but he’s a special player as I said.”

Source: Oneindia Bengali

পাশাপাশি, ভারতের গণমাধ্যম The Times of India এর ওয়েবসাইটে একইদিন “Ishan Kishan’s time will come: Sourav Ganguly” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সৌরভ গাঙ্গুলি বলেন, “Kohli is a fantastic player. He’s played many such innings, 45 hundreds don’t happen like this. He’s a special talent. There will be periods when he will not score, but he’s a special player.”

Source: Times of India

মূলত, চলতি বছরের জানুয়ারিতে এক সাক্ষাৎকারে ভিরাট কোহলি এবং শচীন টেন্ডুলকারের মধ্যে কে সেরা এমন প্রশ্নের জবাবে সৌরভ গাঙ্গুলি ভিরাট কোহলি সম্পর্কে বলেন, সে (কোহলি) বিশেষ প্রতিভাবান। এমন কিছু সময় থাকবে যখন সে রান করবে না, কিন্তু সে একজন বিশেষ খেলোয়াড়। সৌরভ গাঙ্গুলির এই সাক্ষাৎকারের ভিডিওর অংশ কেটে তিনি তামিম ইকবাল সম্পর্কে “একটা সময় সে রান করবে না, কিন্তু সে একজন বিশেষ খেলোয়াড়” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিশ্বকাপ খেলাকে কেন্দ্র করে তামিম ইকবালের নামে মিথ্যা তথ্য প্রচারিত হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, সৌরভ গাঙ্গুলি তামিমকে নিয়ে “একটা সময় সে রান করবে না, কিন্তু সে একজন বিশেষ খেলোয়াড়” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সজীব ওয়াজেদ জয় নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হননি

0

সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র এবং তাঁর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইটেক এন্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

জয়

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইটেক এন্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয়ের যোগদানের দাবিটি সঠিক নয় বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ব্যতীত উক্ত দাবিটি ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগ। তাছাড়া, নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে হাইটেক এন্ড টেকনোলজি নামে কোনো বিভাগও নেই।

দাবিটির সূত্রের খোঁজে

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত দাবিটির সূত্রপাত খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। এক্ষেত্রে ফেসবুক মনিটরিং টুল ছাড়াও একাধিক পদ্ধতির সাহায্য নিয়ে আমরা দেখেছি গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ১২ টা ৪৪ মিনিটে এ বিষয়ে প্রথম পাবলিক পোস্ট (আর্কাইভ) করা হয় ফেসবুকে। Miah Mohammad Zakaria নামে এক ব্যক্তি সেসময় তার করা আলোচিত পোস্টে জয়ের ছবি ব্যবহার করে দাবি করেন, “আমেরিকার নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইটেক এন্ড টেকনোলজি বিভাগের অনাদারি অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিলেন সজিব ওয়াজেদ জয়।” (বানান অপরিবর্তিত)

লক্ষ্য করুন, জনাব জাকারিয়া তার পোস্টের ক্যাপশনে অনাদারি নামক একটি শব্দ ব্যবহার করেছেন। তবে এই শব্দটি আসলে কী বোঝাচ্ছে তা স্পষ্ট নয়। কিওয়ার্ড সার্চে দেখা যাচ্ছে, অনাদারি শব্দটি দেনা পাওনার সাথে সম্পর্কিত। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পদের সাথে এই শব্দের সংশ্লিষ্টতা প্রাসঙ্গিক বলে প্রতীয়মান হয়নি আমাদের কাছে। পরবর্তীতে আমরা এই শব্দটির কাছাকাছি কিছু শব্দ যেমন অনাদায়ী, অনারারি ইত্যাদির সাথে উক্ত পদের সংশ্লিষ্টতা বিশ্লেষণে অনারারি শব্দটি সবচেয়ে উপযুক্ত বলে প্রতীয়মান হয়েছে আমাদের কাছে। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনারারি অধ্যাপক পদ রয়েছে। এই পদে সাধারণত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞদের নিয়োগ দেওয়া হয়। উক্ত দাবিতেও তাই এই শব্দটিই ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন পোস্টদাতা, এমনটা ধারণা করা অমূলক নয়।

Screenshot: Facebook

তবে বিষয়টি যখন পরদিন অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর ভাইরাল হতে শুরু করে তখন দাবিটি কিছুটা পরিবর্তন হয়ে অনাদারি (অনারারি) শব্দটি বাদ দিয়ে ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে।  

Screenshot: Crowd Tangle

নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে কি হাইটেক এন্ড টেকনোলজি নামে বিভাগ রয়েছে? 

নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি শাখা ক্যাম্পাস রয়েছে। মূল ক্যাম্পাসটি নিউইয়র্কে হলেও বাকি দুইটি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে। একটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে। অন্যটি চীনের সাংহাইতে। এই তিন ক্যাম্পাসের অধীনে একাধিক স্কুল এবং কলেজ রয়েছে যেগুলোতে একাধিক অনুষদ এবং বিভাগে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে থাকে। 

রিউমর স্ক্যানার টিম এসকল অনুষদের অধীনে থাকা বিভাগের বিষয়ে যাচাই করে ‘হাইটেক এন্ড টেকনোলজি’ নামে কোনো বিভাগের অস্তিত্ব পায়নি। 

আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টরা কী বলছেন? 

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে জানতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদের সাথে কথা বলেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি  বিষয়টিকে ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছেন। 

তাছাড়া, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশিত একটি পোস্টেও বিষয়টিকে গুজব বলে জানানো হয়েছে। 

Screenshot: Facebook

এছাড়া, ঢাকা ১৭ আসনের সংসদ সদস্য  মোহাম্মদ এ. আরাফাতের এক ফেসবুক পোস্ট থেকেও উক্ত দাবিটি সঠিক নয় বলে জানানো হয়েছে।  

Screenshot: Facebook

মূলত, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র এবং তাঁর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইটেক এন্ড টেকনোলজি নামক একটি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা পেশা শুরু করেছেন শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে হাইটেক এন্ড টেকনোলজি নামে কোনো বিভাগ নেই। তাছাড়া, উক্ত দাবিটিকে ভুয়া বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে। 

সুতরাং, সজীব ওয়াজেদ জয় নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইটেক এন্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Statement from Shah Ali Farhad 
  • Mohammad A. Arafat: Facebook Post
  • Bangladesh Awami League: Facebook Post
  • Rumor Scanner’s own investigation 

আমেরিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে ‘ভোট চোর’ স্লোগান দেওয়া হয়েছে দাবিতে প্রচারিত এই ভিডিওটি এডিটেড

0

সম্প্রতি, আমেরিকায় একটি হোটেলে বক্তব্যের সময় জনগনের তোপের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য না দিয়ে চলে যান দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। প্রচারিত ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ এবং ‘ভোট চোর’ স্লোগান দিতে শোনা যায়।

শেখ হাসিনা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে কেউ ‘ভোট চোর’ স্লোগান দেয়নি এবং প্রধানমন্ত্রীও মঞ্চ ছেড়ে চলে যাননি বরং গত ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের কিছু অংশ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তাতে ভিন্ন অডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ৩৫ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হাসিমুখে মঞ্চে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। তিনি বলেন, উনিশ তম ভাষণ দিচ্ছি, বিশতম ভাষণ দিতে আসছি, খোদা হাফেজ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।” এরপর প্রধানমন্ত্রীকে হাসিমুখে মঞ্চ থেকে চলে যেতে দেখা যায়। তবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য দেওয়ার সময় থেকে মঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার পুরোটা সময়জুড়ে “ভুয়া ভুয়া” এবং “ভোট চোর” স্লোগান শোনা যায় যা ভিডিওটির সাথে অপ্রাসঙ্গিক। 

বিষয়টি অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে TBN24 নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ‘নিউ ইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নাগরিক সংবর্ধনা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: YouTube

এই ভিডিওটির কিছু অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির শেষের দিকে ১ ঘণ্টা ৯ মিনিট ৫২ সেকেন্ড অংশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, “উনিশ তম ভাষণ দিচ্ছি, বিশতম ভাষণ দিতে আসছি, খোদা হাফেজ।” এর আগে তিনি জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক” কথাটিও বলেন। তবে এসময় কাউকে ‘ভুয়া ভুয়া’ বা ‘ভোট চোর’ স্লোগান দিতে শোনা যায়নি বরং উপস্থিত কর্মী সমর্থকরা সেসময় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে করতালি দিচ্ছিলেন।

Video Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভয়েস অফ আমেরিকার বাংলা সংস্করণে একই তারিখে ‘আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য হবে: নিউইয়র্কে নাগরিক সংবর্ধনায় শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের একটি হোটেলে নিউইয়র্ক সিটি আওয়ামী লীগ আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিবেদনের কোথাও প্রধানমন্ত্রীকে উক্ত অনুষ্ঠানে ভুয়া সম্বোধন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, নিউইয়র্কের একটি হোটেলে নিউইয়র্ক সিটি আওয়ামী লীগ আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দেওয়ার সময় উপস্থিত কর্মী সমর্থকরা ‘ভোট চোর’ বা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে কোনো স্লোগান দেয়নি।

মূলত, গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৭৮ অধিবেশনে যোগদানের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে গত ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই বক্তব্যের শেষের দিকে শেখ হাসিনার বলা “উনিশ তম ভাষণ দিচ্ছি, বিশতম ভাষণ দিতে আসছি, খোদা হাফেজ” শীর্ষক অংশের কয়েক সেকেন্ডের ভিডিও কাট করে তাতে ‘ভুয়া ভুয়া’এবং ‘ভোট চোর’ শীর্ষক স্লোগান যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করে উক্ত ভুয়া দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে গত ৩০ সেপ্টেম্বর লন্ডনে পৌছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত লন্ডনে অবস্থান করবেন। লন্ডন সফর শেষে আগামী ৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, চলতি সফরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর হামলার দাবিতে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, আমেরিকার নিউইয়র্কের একটি হোটেলে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দেওয়ার সময় তাঁর সামনে ‘ভুয়া ভুয়া’ এবং ‘ভোট চোর’ শীর্ষক স্লোগান দেওয়া হয়েছে দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

এনটিভি’র ফটোকার্ড নকল করে বিএনপি নেতাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার গুজব

সম্প্রতি, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় বিএনপি নেতা তারেক রহমান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, রুহুল কবির রিজভী, আমানউল্লাহ আমান, হাবিব উন নবী সহ আরও ২৮০ জনের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে’ শীর্ষক দাবিতে এনটিভি’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ভিসা নিষেধাজ্ঞা

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি এবং এনটিভিও উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং আলোচিত এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে এনটিভি’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয় ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩।

Screenshot: Facebook Claim Post

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা এনটিভি’র লোগো ও তারিখের সূত্র ধরে এনটিভি’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও এনটিভি’র ওয়েবসাইট কিংবা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। 

তবে ২৯ সেপ্টেম্বর আরটিভি’র ফেসবুক পেজে প্রচারিত দুইটি ফটোকার্ডের ডিজাইনের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের ডিজাইনে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ফটোকার্ডগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে। এ থেকে ধারণা করা যায়, এই দুইটি ফটোকার্ডের মধ্যে যেকোনো একটিকে এডিট করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

Photocard Analysis by Rumor Scanner 

এছাড়া, আজ ৩০ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমটি তাদের ফেসবুক পেজে ‘এনটিভি’র নামে ভুয়া প্রতারণা’ শীর্ষক দাবিতে সর্তক থাকার পরামর্শ সম্বলিত ফটোকার্ড দিয়ে পোস্ট দিয়ে জানায়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞায় বিএনপিবিষয়ক পোস্টারটি এনটিভি’র না।’ 

Screenshot: Ntv Facebook Post 

অর্থাৎ, বিএনপি’র নেতাদের ওপরমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে দাবিতে এনটিভি কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। 

পাশাপাশি, কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দৈনিক যুগান্তরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর “যে কারণে ভিসা নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্তদের নাম প্রকাশ করে না যুক্তরাষ্ট্র” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গণতন্ত্র ও নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর আনুষ্ঠানিক ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর)  এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। তবে কোনো ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র।

কেন ভিসা নিষেধাজ্ঞা ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হয় না- এ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু বলেন, ভিসানীতির আওতায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা যাদের দেওয়া হবে, তাদের নাম প্রকাশ করা হয় না। কারণ কাউকে ভিসা না দেওয়াসহ যে কোনো ভিসা রেকর্ড মার্কিন আইন অনুযায়ী গোপনীয় তথ্য।

তিনি আরও বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণ ভালোভাবে পর্যালোচনা করার পর আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

অর্থাৎ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতিতে নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্তদের নাম প্রকাশ করে না।

মূলত, গত ২২ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ওই ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের সদস্যরা রয়েছেন। তবে গত ২৯ সেপ্টেম্বর বিএনপি নেতা তারেক রহমান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, রুহুল কবির রিজভী, আমানউল্লাহ আমান, হাবিব উন নবী সহ আরও ২৮০ জনের বিরুদ্ধে ভিসা নীতি আরোপ করা হয়েছে শীর্ষক দাবিতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি’র ডিজাইনে তৈরি একটি ফটোকার্ড  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়। তবে, অনুসন্ধানে জানা যায়, এনটিভি এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। আলোচিত এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু’র বরাতে জানা যায়, ভিসা রেকর্ড মার্কিন আইন অনুযায়ী গোপনীয় তথ্য হওয়ায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করেনা যুক্তরাষ্ট্র।

উল্লেখ্য, গত আট মাসে বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিষয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভিকে উদ্ধৃত করে বিএনপি নেতাদের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের তথ্যটি মিথ্যা এবং প্রচারিত ফটোর্কাডটি এটিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

ক্রিকেট খেলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যটি পাপন-নান্নুকে উদ্দেশ্যে করে দেওয়া নয়

সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে উদ্দেশ্য করে  ‘ক্রিকেট খেলেছেন কখনো? মাঠে গিয়েছেন কখনো? ব্যাট বল ধরছেন?’  শীর্ষক মন্তব্য করেছেন  দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ক্রিকেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যটি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া নয়। বরং ২০২১ সালে একটি সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টিভি চ্যানেল Channel 24 এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর “ক্রিকেট নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নে মজা করে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে  আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor scanner

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এই সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, “ক্রিকেট আপনি খুব মনোযোগ দিয়ে ফলো করেন, আমরাও করি। কিন্তু এবার টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের যে পারফরমেন্স, সেটা আমাদের সবাইকে খুব হতাশ করেছে। ক্রিকেটারদের মধ্যে, বোর্ডের মধ্যে, অনেক কথা, অনেক কিছু। এইটার ব্যাপারে আপনার একটা মন্তব্য জানতে চাই। টি টোয়েন্টির পারফরমেন্স  আমাদের খুব হতাশ করেছে।”

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কেন, আপনি এত হতাশ হন কেন? আমি এই হতাশা দেখতে চাই না। কয়েকটা খেলা তো তারা চমৎকার খেলেছে।” তারপর ঐ সাংবাদিককে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ক্রিকেট খেলেছেন কখনো? মাঠে গিয়েছেন কখনো? ব্যাট বল ধরছেন?”

একইদিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উক্ত বক্তব্যটি যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলেও ‘ক্রিকেটের সাম্প্রতিক ব্যর্থতা নিয়ে হতাশ নই: প্রধানমন্ত্রী‘ শীর্ষক শিরোনামেও প্রচার করা হয়। 

অর্থাৎ, ২০২১ সালের পুরানো একটি ভিডিওকেই ওয়ানডে বিশ্বকাপে তামিম ইকবালের না থাকা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেপে যাওয়ার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

অপরদিকে অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর মার্কিন সংবাদ সংস্থা VOA এর বাংলা সংস্করণের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত একটি  ভিডিও সাক্ষাতকারে ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩ এ বাংলাদেশ দল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রত্যাশার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা সবসময় আশা করি যে,অবশ্যই বিশ্বকাপে একটা ভালো খেলা দেখাতে পারবো। বাংলাদেশের সম্মানটা যেনো বজায় থাকে। তারা নিজেদের সবটুকু ঢেলে দিবে এবং আন্তরিকতার সাথে খেলবে।”

উল্লেখ্য, গত ২৬ সেপ্টেম্বর নানা নাটকীয়তার পর আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা করে বিসিবি। ১৫ সদস্যের এই দলে জায়গা পাননি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ওপেনিং ব্যাটার তামিম ইকবাল। 

প্রসঙ্গত, গত ৬ জুলাই চট্টগ্রামের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তামিম ইকবাল। তবে পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে অবসর ভেঙে ফিরেও আসেন তিনি। 

মূলত, ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।প্রধানমন্ত্রীর এই  সংবাদ সম্মেলনে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি ক্রিকেট নিয়ে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে  প্রধানমন্ত্রী, পুনরায় প্রশ্ন করে বলেন, “ক্রিকেট খেলেছেন কখনো? মাঠে গিয়েছেন কখনো? ব্যাট বল ধরছেন?’’ সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের এই অংশটুকুই ওয়ান ডে বিশ্বকাপের দল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে উদ্দেশ্য করে তার দেওয়া বক্তব্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

আসন্ন ওয়ান ডে বিশ্বকাপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত বিভিন্ন দাবি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের কিছু ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন দেখুন

সুতরাং, ওয়ান ডে বিশ্বকাপ দলে তামিম ইকবালের না থাকা নিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিবৃতি দেয়নি 

সম্প্রতি, ‘মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিবৃতি’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

ভিডিওটিতে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদকে বলতে শোনা যায়, ‘নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে ডেফিনেটলি যে অশান্ত পরিবেশ, পরিস্থিতির কারণে। এই নিষেধাজ্ঞা চলে যাবে, যখন পরিস্থিতিটা শান্ত হবে। আর আমি খুবই আশাবাদী, কারণ আমরা সারাবিশ্বে মানবিকতার জন্য বিখ্যাত। আপনারা জানেন যে, জাতিসংঘে আমরা অনেকদিন ধরে এক নম্বর শান্তিরক্ষাকারী দেশ৷ আর এটা অর্জনের পেছনে যে সমস্ত গুণাবলি আছে, তার ভেতরে অন্যতম হলো যে আমাদের এই মানুষের প্রতি দরদ এবং সহনশীলতা। মানবাধিকার লঙ্ঘন- টঙ্গন এই ধরনের কোনো অ্যাক্টিভিটিস বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নাই।…দেশের ক্ষতি করছে, দেশের জনগণের ক্ষতি করছে সেটাকে রোধ করতে যেয়ে যদি আমাদের একটু শক্ত অবস্থানে যেতে হয়, অবশ্যই যাবো। বাট সেটা আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই সবকিছুর সমাধান চাই। মরণ কামড় কেউ দিলে আমরাও তা প্রতিহত করবো৷ এটাই ন্যাচারাল।’

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ

ইউটিউবে প্রচারিত একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ কোনো বক্তব্য দেননি। বরং গত জুন মাসে বান্দরবান সেনানিবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বান্দরবানের তিন উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে দেওয়া সেনাপ্রধানের একটি বক্তব্যকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সেনাবাহিনীর বিবৃতি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে বেসরকারি টিভি চ্যানেল যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউবে গত ৪ জুন “পাহাড়ে সন্ত্রাস বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে: সেনাপ্রধান” শীর্ষক শিরোনামে  একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, বান্দরবানে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বান্দরবানের তিন উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আলোচিত বক্তব্যটি দেন। 

একইদিনে জাতীয় দৈনিক আজকের পত্রিকায় “সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে: সেনাপ্রধান” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘পাহাড়ে সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে। কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টে (কেএনএফ) মূল ঘাঁটিসহ অধিকাংশ আস্তানা ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী কবজায় নিয়েছে। শিগগিরই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন করা যাবে। সেই সঙ্গে কেউ যদি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়, তাদেরও স্বাগতম জানানো হবে।’

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বান্দরবানের তিন উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে করা প্রশ্নে সেনাপ্রধান বলেন, ‘অশান্ত পরিস্থিতির কারণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত হলে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হবে। আমি আশাবাদী, কারণ যেহেতু আমাদের দ্বিতীয় ধাপে যেটুকু দখল করার কথা, সেটুকু আমরা দখল করে ফেলেছি।’

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করেও আলোচিত দাবিটি সম্পর্কিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও উক্ত দাবি সম্পর্কিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

এ পর্যন্ত অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়, সেনাপ্রধানের বান্দরবানের তিন উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত একটি বক্তব্যকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সেনাবাহিনীর বিবৃতি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

মূলত, গত ৪ জুন বান্দরবানে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডের জন্য বান্দরবানের তিন উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন। সেই সংবাদ সম্মেলনের একটি ভিডিওকেই সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সেনাবাহিনীর বিবৃতি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া অনুসন্ধানে দেখা যায়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে আমেরিকার ভিসা নীতি নিয়ে সেনাবাহিনী থেকে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। 

সুতরাং, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিবৃতি দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়নি

0

সম্প্রতি, “ব্রেকিং নিউজ। আমেরিকায় হাসিনার শেষ পরিনতি। প্রধানমন্ত্রীর ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে। 

নিষেধাজ্ঞা

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়নি বরং সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির বক্তব্যের একটি ভিডিও ব্যবহার করে কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটি ভিন্ন ঘটনার এবং এটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে প্রধানমন্ত্রীর ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার দেওয়ার কথা বলা হলেও ভিডিওটির বিস্তারিত অংশে উক্ত তথ্যের ব্যাপারে কোনো কথাই উল্লেখ নেই।

১৪ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের এই ভিডিওটির শুরুতে কয়েকটি ভিন্ন ঘটনার ভিডিওর খণ্ডিত অংশ দেখানো হয়। পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটিতে চ্যানেলটির উপস্থাপক দর্শকদের উদ্দেশ্যে দুইটি ভিডিও দেখান।

ভিডিওটি দেখানোর পূর্বে চ্যানেলটির উপস্থাপক বলেন, “আমেরিকায় শেখ হাসিনার শেষ পরিণতি। অবশেষে ক্ষমতার অবসান কী সেইখানেই ঘটবে? নাকি তিনি আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য জাতিসঙ্ঘ বা বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে আসবে?…”

ভিডিও যাচাই 

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে সাবেক সাংসদ গোলাম মাওলা রনির ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর পোস্টকৃত একটি ভিডিও খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। 

উক্ত ভিডিও বিশ্লেষণ করে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওর সাথে হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Source : Golam Maula Rony Facebook Page

তবে, উক্ত ভিডিওর কোথাও এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার সত্যতা প্রমাণ করে।

এছাড়াও কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবামাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

প্রাসঙ্গিক কী ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, আন্তজার্তিক মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১২জুন “UN Should Enhance Screening of Bangladesh Peacekeepers” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি বিবৃতি খুঁজে পাওয়া যায়। 

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর এই বিবৃতিতে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগের ক্ষেত্রে মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয় যাচাই বাছাইয়ের আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, জাতিসংঘের উচিত কোনো বাংলাদেশি কর্মকর্তা র‍্যাবের সঙ্গে জড়িত থাকলে, তা প্রকাশ করা এবং বাহিনী–সংশ্লিষ্ট কাউকে শান্তি রক্ষা মিশনে যোগদানে বিরত রাখা। শুধু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নয়, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সব সদস্যের মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট বিষয় যাচাই–বাছাই করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন বিভাগকে।

Source: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

পরবর্তীতে উক্ত বিবৃতি নিয়ে দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন প্রথম আলো, যুগান্তর

পাশাপাশি, জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ৮ জুলাই “জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন ও মানবাধিকার হরণকারীদের নিষিদ্ধের দাবি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের সদস্যপদ স্থগিতে অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ, শান্তিরক্ষা মিশনে র‍্যাবের মানবাধিকার হরণকারীদের নিষিদ্ধ এবং জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ও পরিচালনায় নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ডকে চিঠি দিয়েছেন ১৪ কংগ্রেসম্যান।

Source: ইত্তেফাক

তাছাড়া, এ বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যম যুগান্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে

উল্লেখ্য, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে ভাষণদান করেন। 

মূলত, গত ১৭ সেপ্টেম্বর সাবেক সাংসদ গোলাম মাওলা রনি তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে পোস্টকৃত একটি ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দিক নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। তার সেই ফেসবুক ভিডিওকেই পরবর্তীতে কোনোরকম তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই চটকদার থাম্বনেইলের মাধ্যমে জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও র‍্যাব সদস্যদের জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে নিষিদ্ধ করার মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পাপনকে নিয়ে প্রথম আলো’র সংবাদ দাবিতে প্রচারিত স্ক্রিনশটটি বানোয়াট

0

সম্প্রতি, “সাকিব তামিম ইস্যু নিয়ে মুখ খুলেছেন বিসিবি সভাপতি। বললেন, এদের মতো যন্ত্রণা আমার বউও আমাকে কোনোদিন দেয় নি…” শীর্ষক মন্তব্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন করেছেন দাবিতে প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ডিজাইন সম্বলিত একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

পাপন

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাকিব-তামিম ইস্যুতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমন কোনো মন্তব্য করেননি এবং প্রথম আলোও উক্ত শিরোনামে কোনো প্রতিবেদন তাদের ফেসবুক পেজে শেয়ার করেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ডিজাইন সম্বলিত স্ক্রিনশট তৈরি করে নাজমুল হাসান পাপনের নামে এই ভুয়া মন্তব্যটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ডিজাইন সম্বলিত স্ক্রিনশটটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটির শিরোনাম “সাকিব তামিম ইস্যু নিয়ে মুখ খুলেছেন বিসিবি সভাপতি। বললেন, এদের মতো যন্ত্রণা আমার বউও আমাকে কোনোদিন দেয় নি…”  উল্লেখ করা।

কি ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রথম আলোর ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত শিরোনামে সম্বলিত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে কথিত মন্তব্যটি সম্পর্কে আরও অনুসন্ধানের লক্ষ্যে অন্য কোনো গণমাধ্যমেও প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে ‘সাকিব-তামিমের মতো যন্ত্রণা আমার বউও আমাকে কোনোদিন দেয়নি’ শীর্ষক কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, পত্রিকাটি তাদের ফেসবুক পেজেও আজ (২৯ সেপ্টেম্বর) ‘মিথ্যা প্রচারণা’ শীর্ষক একটি পোস্ট দিয়ে জানায়, ‘প্রথম আলোর নামে ছড়ানো এই ছবিটি নকল, আমাদের তৈরি নয়। বিভ্রান্তি এড়াতে আমাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ও অনলাইনের সঙ্গে থাকুন।’

Screenshot From Facebook

তবে সাম্প্রতিক সাকিব-তামিম ইস্যুতে দেশীয় ব্রডকাস্ট গণমাধ্যম ‘ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশন’ এর অনলাইন পোর্টালে ৩০ সেপ্টেম্বর ‘সাকিব-তামিম দ্বন্দ্ব নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি বিসিবি সভাপতি‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সাকিব-তামিম দ্বন্দ্ব নিয়ে কোন ধরনের মন্তব্য করেননি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। বিশ্বকাপে দলের ওপর যাতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে, সেজন্য তিনি গণমাধ্যম এড়িয়ে গেছেন। বিসিবির অবস্থান পরবর্তীতে কোনো এক সময় স্পষ্ট করবেন বলে জানিয়েছেন বোর্ড প্রধান।

তাছাড়া, গত ২৭ সেপ্টেম্বর অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘ঢাকা পোস্ট’ এর ওয়েবসাইটে ‘তামিমের ১২ মিনিটের জবাবে পাপনের ১২ সেকেন্ড’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তামিম ইকবাল গত ২৭ সেপ্টেম্বরে তার ফেসবুক পেজে ভিডিও বার্তায় দেওয়া বক্তব্যর প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতির কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি এক বাক্যের উত্তরে জানান ‘বলবো, বলবো…আজকে না।’

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত থেকে এটা স্পষ্ট যে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সাকিব-তামিম ইস্যুতে তার স্ত্রীকে জড়িয়ে এমন কোনো মন্তব্য করেননি।

মূলত, আসন্ন বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের স্কোয়াডে তামিম ইকবালের থাকা না থাকা নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই গণমাধ্যমসহ ক্রিকেট অঙ্গনে নানা কথার চাউর হয়। এরই মাঝে গতকাল ২৬ সেপ্টেম্বর তামিম ইকবালকে ছাড়াই ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। স্কোয়াড ঘোষণার পরদিন অর্থাৎ ২৭ সেপ্টেম্বর তামিম ইকবাল তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় জানান, ক্রিকেট বোর্ডের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সরাসরি টেলিফোন করে তাকে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ খেলতে নিষেধ করেন কিংবা তিনি যদি প্রথম ম্যাচে খেলেন তাহলে তাকে ওপেনিংয়ের পরিবর্তে নিচের দিকে খেলতে হবে। এমন শর্তে রাজি না থাকায় তিনি বিশ্বকাপ দল থেকে ‘বাদ পড়েছেন’ বলেও জানান তিনি। পরবর্তীতে এই দিনে খেলাধুলা ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম  ‘টি স্পোর্টস’ এর ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে তামিমের বিশ্বকাপ দলে না থাকা প্রসঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব জানান, এই বিষয়ে কারও সঙ্গে তার কোনো আলোচনাই হয় নি। সম্প্রতি প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ডিজাইন সম্বলিত একটি স্ক্রিনশটের মাধ্যমে সাকিব-তামিম ইস্যুতে নাজমুল হাসান পাপনের মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নাজমুল হাসান পাপন এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ডিজাইন সম্বলিত একটি স্ক্রিনশট তৈরি করে সাকিব-তামিমকে ইস্যুতে নাজমুল হাসান পাপনের নামে উক্ত ভুয়া মন্তব্যটি প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে নিয়ে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য প্রচার করা হলে বিষয়গুলো চিহ্নিত করে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে,

সুতরাং, মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজে প্রচারিত প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট সম্বলিত ‘সাকিব-তামিমের মতো যন্ত্রণা আমার বউও আমাকে কোনোদিন দেয়নি’ শীর্ষক মন্তব্য বিসিবি সভাপতি করেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং স্ক্রিনশটটি বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

ম্যাথু মিলারকে উদ্ধৃত করে নুরসহ সরকার বিরোধী ১০ নেতার ভিসা নিষেধাজ্ঞার ভুয়া তথ্য

0

সম্প্রতি, ‘ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর সহ বিরোধী শিবিরের ১০ নেতা মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় জানিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ডিজিটাল ব্যানার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ভিসা নিষেধাজ্ঞা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ সরকার বিরোধী ১০ নেতা মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছেন দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার কোনো বিবৃতি দেননি। প্রকৃতপক্ষে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী ভিসা রেকর্ড গোপনীয় বিষয় হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হয় না বলে জানিয়েছে দেশটি।  

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ব্যানারটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Screenshot: Facebook

এতে দেখা যায়, ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী’র ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়, ” মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ভিপি নুরসহ বিরোধী শিবিরের ১০ নেতা। ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।”

এবিষয়ে অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে উক্ত ব্যক্তিদের মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানের মাধ্যমে বাংলাদেশস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এর ওয়েবসাইটে গত ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন ভিসানীতির বিষয়ে ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের পদক্ষেপ গ্রহণ’ শীর্ষক শিরোনামে ম্যাথু মিলারের দেওয়া বিবৃতি নিয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: US Embassy BD

উক্ত বিবৃতিতে কোথাও ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বা অন্যকোনো ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়নি।

এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম ডেইলি স্টারের অনলাইন সংস্করণে গত ২২ সেপ্টেম্বর ‘ভিসা নীতির প্রয়োগ নিয়ে ডেইলি স্টারকে যা বললেন ডোনাল্ড লু’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: The Daily Star

প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু এর সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, ভিসা নীতির আওতায় যাদের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে, তাদের নাম প্রকাশ করা হবে না। কাউকে ভিসা না দেওয়াসহ যেকোনো ভিসা রেকর্ড মার্কিন আইন অনুযায়ী গোপনীয় তথ্য।

অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার কোনো বিবৃতিতে নুরুল হক নুর সহ সরকার বিরোধী  ১০ নেতা মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায়  থাকার কথা বলেননি। 

পাশাপাশি, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, কেউ ভিসা নিষেধাজ্ঞায় থাকলেও সেই ব্যক্তির নাম যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ করে না। 

মূলত, গত ২২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশি কিছু নাগরিকের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রক্রিয়া শুরুর কথা জানানো হয়। এর পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য প্রচারের প্রবণতা দেখা যায়। এরই ধারাবাহিকতায় ‘ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর সহ বিরোধী শিবিরের ১০ নেতা মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় জানিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার’ শীর্ষক দাবিটি ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে ম্যাথু মিলারের বিবৃতিতে উক্ত ব্যক্তিদের ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, গণমাধ্যম এবং সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে উক্ত ব্যক্তিদের মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকার বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মার্কিন ভিসা বাতিলের গুজব ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন-

সুতরাং, গত ২২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এক বিবৃতিতে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ সরকারবিরোধী ১০ নেতা মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছেন বলে জানিয়েছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি  মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইয়েমেনের ভিডিওকে সৌদি আরবে ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি, “সৌদি আরবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর জুলুস” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

ঈদে মিলাদুন্নবী

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন ভিডিও (আর্কাইভ), ভিডিও (আর্কাইভ), ভিডিও (আর্কাইভ), ভিডিও (আর্কাইভ) এবং ভিডিও (আর্কাইভ)। 

টিকটকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন ভিডিও (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সৌদি আরবে ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের নয় বরং এটি ২০১৯ সালে ইয়েমেনে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আয়োজিত একটি র‍্যালির ভিডিও। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চ করে  ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েজ অব আমেরিকার ইউটিউব চ্যানেলে ‘Muslims in Yemen Celebrate Prophet Mohammed’s Birthday‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিও থেকে জানা যায়, ০৯ নভেম্বর হাজার হাজার ইয়েমেনি ও হুথি সমর্থক মহানবীর জন্মদিন পালনে ইয়েমেনের রাজধানী সানায় সমবেত হয়েছে। সড়কসমূহ সবুজ, সাদা পতাকা ও আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে।

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওতে থাকা তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘Getty Images’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর ‘Yemenis in Sanaa celebrate Prophet Mohammad’s birthday‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। বার্তা সংস্থা এএফপিকে ভিডিওটির কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে। উক্ত ভিডিওতেও একই তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। 

মূলত, ২০১৯ সালের নভেম্বরে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে হাজার হাজার ইয়েমেনি ও হুথি সমর্থক দেশটির রাজধানী সানায় সমবেত হয়েছিল। সেই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ধারণকৃত ভিডিওকে সম্প্রতি সৌদি আরবে ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সৌদি আরবে এমন কোনো আয়োজনই করা হয়নি। 

উল্লেখ্য, পূর্বে সৌদি আরবের জাতীয় দিবস উদযাপনের ঘটনাকে ঈদে মিলাদুন্নবীর আয়োজনের প্রস্তুতি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে বিষয়টি মিথ্যা হিসেবে প্রমাণ করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ইয়েমেনের ভিডিওকে সৌদি আরবে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র