Home Blog Page 587

ঢাবির চারুকলার ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে গুজব

0

গত ২৯ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আন্ডার গ্র্যাজুয়েটের চারুকলা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে পরীক্ষা শুরুর পূর্বে “চারুকলা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে” শীর্ষক দাবিতে একটি পোস্ট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

কী দাবি করা হচ্ছে?  

২৯ এপ্রিল ঢাবির চারুকলা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় বেলা ১১ টা থেকে সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত। এর পূর্বে সকাল ০৮ টা ৩৫ মিনিটে ফেসবুকে ‘Mehedi Hasan Shuvo (আর্কাইভ)‘ নামক একটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত একটি পোস্টে (আর্কাইভ) দাবি করা হয়, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা 2023 চারুকলা ইউনিট এর প্রশ্ন পরীক্ষা শুরুর আগেই দিয়ে দিলাম সময় সকাল ৮ টা ৩৫  মিনিট। যারা ইনবক্সে গিয়ে প্রুভ চাও তাদের জন্য শেষবারের মতো প্রশ্নের কিছু অংশ ফ্রি তে দিলাম। এইটুকু ই প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। যাদের ডেন্টাল, ঢাকা, গুচ্ছ, রাজশাহী, নার্সিং,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার ১০০% কমন প্রশ্ন লাগবে তারা ইনবক্সে  যোগাযোগ করো।আমি এডভান্স টাকা ছাড়া প্রশ্ন সেল করিনা।যাদের এডভান্স করতে সমস্যা আছে তারা আমার থেকে দূরে থাকো। টাকা ফিক্সড এবং এডভান্স। যারা বাংলা কম বুঝো দয়া করে তারা অযথা মেসেজ দিয়ে বিরক্ত  কইরোনা। বিঃদ্রঃ এটাই আমার প্রমাণ দেওয়ার জন্য শেষ পোস্ট আমার আইডি থেকে আর কখনো এইভাবে পোস্ট হবে না। প্রমাণ অনেক দিছি আর কতো।”

পোস্টে একটি ছবি সংযুক্ত রয়েছে, যেখানে একটি ছাপা প্রশ্নের একাংশ দেখা যাচ্ছে।  

Screenshot source: Facebook

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাবির চারুকলা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরুর আগেই ফেসবুকে ঢাবির প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং পরীক্ষা শুরুর পূর্বে প্রশ্নের ছবি ব্যতীত পোস্ট করে পরীক্ষা শেষ হওয়ার আধঘন্টা পর ওই পোস্ট এডিট/সম্পাদনা করে প্রশ্নের ছবিটি যুক্ত করা হয়।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত পোস্টটির (Mehedi Hasan Shuvo নামক একটি অ্যাকাউন্টের পোস্ট) ‘Edit History’ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সকাল ৮ টা ৩৫ মিনিটে যখন পোস্ট করা হয়, তখন পোস্টে প্রশ্নপত্রের কোনো ছবি যুক্ত ছিল না। পরবর্তীতে দুপুর ০১ টা ০৮ মিনিটে ওই পোস্টে প্রশ্নপত্রের ছবিটি যুক্ত করা হয়।

Screenshot collage: Rumor Scanner 

একই অ্যাকাউন্টের এমন ঘটনার আরো উদাহরণ 

Mehedi Hasan Shuvo (আর্কাইভ) নামক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, অ্যাকাউন্টটিতে পূর্বেও এমন প্রশ্নের ফাঁসের গুজব ছড়ানো হয়েছে।  

যেমন, গত ১০ মার্চ তিনি মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে একটি পোস্ট (আর্কাইভ) করেন। পোস্টে তিনি লিখেন, “Medical Admission Question 2023 সময় রাত ১২ টা ৫০  মিনিট। প্রশ্নের কিছু অংশ ফ্রি তে দিলাম পরীক্ষার পর এসে মিলিয়ে নিয়ো।”

কিন্তু পোস্টে কোনো ছবি যুক্ত ছিল না সেসময়। 

সেদিনই (১০ মার্চ) মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। 

এর দুই দিন পর ১২ মার্চ শুভ তার পোস্টটিতে প্রশ্নের ছবি যুক্ত করেন। 

Screenshot source: Facebook

অর্থাৎ, ১০ মার্চের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে দাবি করে সেদিনের কোনো ছবি ছাড়া প্রকাশিত একটি পোস্টে পরীক্ষা শেষ হওয়ার দুইদিন পর প্রশ্নের ছবি যুক্ত করা হয়েছে। 

একই অ্যাকাউন্টে এমন আরেকটি প্রতারণামূলক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

মূলত, গত ২৯ এপ্রিল বেলা ১১ টা থেকে সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আন্ডার গ্র্যাজুয়েটের চারুকলা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে একইদিন সকাল ৮ টা ৩৫ মিনিটে প্রকাশিত একটি পোস্টে দাবি করা হয়, ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। উক্ত পোস্টে প্রশ্নপত্রের একটি ছবিও যুক্ত রয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর দুপুর ০১ টা ০৮ মিনিটে সকালের পোস্টটি এডিট করে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের ছবি যুক্ত করে উক্ত দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছে। 

উল্লেখ্য, গত মার্চেও একই কায়দায় মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের গুজব ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র

ছবিটি কান্নার পর চোখের অবস্থার নয়

0

সম্প্রতি, “কান্না করার পর মানুষের চোখ মাইক্রোস্কোপে এমন দেখায়!” শীর্ষক শিরোনামে রক্তাভ চোখের একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ফেসবুক প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ) এবং এখানে(আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত একটি পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখায় যায়, প্রচারিত ছবিটি প্রকৃতপক্ষে কান্নার পরে চোখের অবস্থার ছবি নয়বরং এটি সাবকংজাক্টিভাল হ্যামোরেজ, ইউভিটিস অথবা পিংক আই রোগে আক্রান্ত একটি চোখের ছবি।

কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, Focal Point Vision নামে একটি চোখ বিষয়ক ওয়েবসাইটে ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে “What a Burst Blood Vessel In Your Eye Means” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে দেখা যায়, চোখের রক্তনালীগুলো খুব ছোট এবং সহজেই ভেঙ্গে যায়। কোনো কারণে এই রক্তনালী ভেঙ্গে গেলে রক্ত কনজেক্টিভাল মেমব্রেনের নিচে আটকে যায়। এই ফেটে যাওয়া রক্তনালীকে সাবকঞ্জাক্টিভাল হেমোরেজ বলা হয়।

Source: Focal Point Vision

এছাড়াও, কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে American Academy of Ophthalmology এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত “What Is Uveitis?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইউভিটিস এমন একটি রোগ যা চোখের মাঝের ট্যিসুকে আক্রমণ করে ফলে রক্তনালী ফুলে ওঠে। 

Source: American Academy of Opthalmology 

পাশাপাশি কান্নার সময় চোখে রক্তক্ষরণ হয় কি না এবিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট Healthline এ ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে “Why Am I Crying Blood?” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে হেমোলাক্রিয়া নামে এক রোগের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে দেখা যায়, হেমোলাক্রিয়া হচ্ছে একটি বিরল অবস্থা যেখানে ব্যক্তি রক্তমিশ্রিত অশ্রু উৎপাদন করে। 

Source: Healthline 

পরবর্তীতে, অধিকতর সত্যতা নিশ্চিতের জন্য ভিশন আই হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন ডাঃ ওমর ফারুকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, কান্না করলে চোখে রক্তক্ষরণ হওয়ার বিষয়টি মিথ্যা এবং উক্ত ছবিটি রোগাক্রান্ত একটি চোখের ছবি। 

অর্থাৎ, কান্নার ফলে সুস্থ্য চোখে কোনো রক্তক্ষরণ হয় না।

মূলত, চোখের সাদা অংশে ছোটো ছোটো রক্তনালী থাকে যা খুব ভঙ্গুর। কোনো কারণে এই রক্তনালী ভেঙ্গে গেলে রক্ত ​​কনজেক্টিভাল মেমব্রেনের নিচে আটকে যায়। এই ফেটে যাওয়া রক্তনালীকে সাবকঞ্জাক্টিভাল হেমোরেজ বলা হয়। তাছাড়া, চোখ ওঠা ও ইউভিটিস রোগেও চোখের রক্তনালী ফুলে যায় ও চোখ লাল হয়ে যায়। তেমনই একটি রোগাক্রান্ত চোখের ছবিকে “কান্নার সময় আইরিশ/Sclera তে এভাবেই রক্তক্ষরণ হয়” দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে সুস্থ সবল একটি চোখে কান্নার সময় আইরিশ/স্ক্লেরা বা চোখের অন্য কোনো অংশে রক্তক্ষরণ হয়না।

এবছরের শুরুর দিকেও একই দাবিতে কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেটিকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

ফাতেমা (রা.) এর কবরের দৃশ্য দাবিতে উসমান ইবনে আফফান (রা.) এর কবরের দৃশ্য প্রচার

0

সম্প্রতি, “মা ফাতেমার কবর” শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 
উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিও এখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখানো কবরটি ফাতেমা (রা.) এর নয় বরং এটি উসমান ইবনে আফফান (রা.) এর কবরের দৃশ্য।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্বের তথ্য ও ছবি সংরক্ষণ বিষয়ক ওয়েবসাইট Madainproject এ “Tomb of Uthman ibn Affan” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে কবরটির ভিন্ন কোণের একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আলোচ্য কবরটি হযরত উসমান ইবনে আফফান(রা.) এর কবর।

Source: Madainproject

পরবর্তীতে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, Hajj and Umrah নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে “Jannatul Baqi | Baqi al-Gharqad Graveyard in Madinah | Full Tour with Locations of Graves جنة البقيع” শীর্ষক শিরোনামে জান্নাতুল বাকি ঘুরে দেখানো সম্পর্কিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ১৫ মিনিট ২ সেকেন্ডে থাকা দৃশ্যতে দেখা যায় আলোচ্য কবরটি উসমান ইবনে আফফান (রা.) এর কবর।

Source: Youtube

মূলত, ২০২২ সাল থেকে কিছু ছবি ও ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি ফাতিমা (রা.) এর কবর। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি উসমান ইবনে আফফান (রা.) এর কবরের ছবি ও ভিডিও।

পূর্বে হযরত উসমান ইবনে আফফান(রা.) এর কবরের ছবিকে মা ফাতেমার কবরের ছবি দাবিতে প্রচার করলে রিউমর স্ক্যানার সেটিকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

সমুদ্র সৈকতে সাদা বিকিনি পরিহিত ছবিটি শাহরুখ কন্যা সুহানা খানের নয়

সম্প্রতি “সমুদ্র সৈকতে সাদা বিকিনিতে শাহরুখ খান কন্যা সুহানা খান” শীর্ষক দাবিতে ভারতের একাধিক গণমাধ্যমে এক নারীর ছবি সম্বলিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। 

ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন; লোকমেট টাইমস, দ্য ওয়াল, টিভি৯ বাংলা, ইন্ডিয়া টুডে, ইন্ডিয়া, টাইমস নাও নিউজ, বলিউড হাঙ্গামা, ইন্টারনেশনাল বিজনেস টাইমস, পেনাসিয়া বিজ

একই দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ছবি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘সমুদ্র সৈকতে সাদা বিকিনিতে সুহানা খান’ শীর্ষক দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবিটি বলিউড তারকা শাহরুখ খানের কন্যা অভিনেত্রী সুহানা খানের নয় বরং এটি ভারতের কান্নাদা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অভিনেত্রী শানভি শ্রীবাস্তবের ছবি।

রিভার্স ইমেজ সার্চ অনুসন্ধানের মাধ্যমে, ভারতের কান্নাদা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অভিনেত্রী শানভি শ্রীবাস্তবের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ২৬ এপ্রিল  “Get ready to get your timeline spammed bichusssssss!” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ছবির সাথে সুহানা খানের ছবি দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

এছাড়া, গত ২৬ এপ্রিল ভারতীয় গণমাধ্যম ‘নিউজ১৮’ এ “Actress Shanvi Srivastava Looks Stunning In White Bikini, Fans React” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনেও একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from News18

অর্থাৎ, ‘সমুদ্র সৈকতে সাদা বিকিনিতে সুহানা’ শীর্ষক দাবিতে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবিটি ভারতীয় অভিনেত্রী শানভি শ্রীবাস্তবের।

মূলত, গত ২৬ এপ্রিল ভারতের কান্নাদা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অভিনেত্রী শানভি শ্রীবাস্তবের তার ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে সমুদ্র সৈকতে সাদা বিকিনি পরিহিত একটি ছবি পোস্ট করেন। সম্প্রতি শানভি শ্রিভাসতেভার সেই ছবিটিকেই বলিউড তারকা শাহরুখ কন্যা অভিনেত্রী সুহানা খানের ছবি দাবিতে ভারতের একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়। 

প্রসঙ্গত, পূর্বেও বিভিন্ন সময়ে বলিউড নিয়ে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

উল্লেখ্য, শাহরুখ খানের কন্য সুহানা খান “The Archies” চলচ্চিত্র অঙ্গনে প্রবেশ করবেন

সুতরাং, সমুদ্র সৈকতে বিকিনি পরিহিত ভারতীয় ভিন্ন অভিনেত্রীর ছবিকে শাহরুখ কন্যা অভিনেত্রী সুহানা খানের ছবি দাবিতে ভারতের একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

চটকদার থাম্বনেইলে পুলিশ প্রধান নিহত হওয়ার বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার

সম্প্রতি ‘বোমা হামলায় পুলিশ প্রধান নিহত’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইলে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত উক্ত দাবিতে কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ) এবং এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বোমা হামলায় বাংলাদেশ পুলিশ প্রধান নিহতের ঘটনা ঘটেনি বরং বোমা হামলায় রুশ অধিকৃত জাপোরিঝিয়া প্রদেশের মেলিটোপোল শহরের পুলিশ প্রধান আলেক্সেন্ডার মিসচেনকো নিহত হয়েছেন এবং ভিডিওর থাম্বনেইলে দেশের নাম উল্লেখ না করে বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের ছবি ব্যবহার করার ফলে বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। 

গত ২৮ এপ্রিল News Plus নামের একটি পেজ থেকে ‘বোমা হামলায় পুলিশ প্রধান নিহত’ শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের ছবি ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়।

Screenshot: Facebook 

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এটি কয়েকটি প্রতিবেদন নিয়ে তৈরি একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিও। ৯ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে ৪ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের সময় বোমা হামলায় পুলিশ প্রধান নিহত হওয়ার বিষয়ে বলা হয়। এবিষয়ে সংবাদ পাঠ ৪ মিনিট ৪২ সেকেন্ড থেকে শুরু হয়ে ৫ মিনিট ১২ সেকেন্ড পর্যন্ত চলে। 

উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বোমা হামলায় রুশ অধিকৃত জাপোরিঝিয়া প্রদেশের মেলিটোপোল শহরের পুলিশপ্রধান আলেক্সেন্ডার মিসচেনকো নিহত হয়েছেন। ২০২২ সালে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করা চার অঞ্চলের একটি হচ্ছে জাপোরিঝিয়া। খবর বিবিসির। জাপোরিঝিয়া রাশিয়া দখলের আগে ও পরে প্রদেশটির মেলিটোপোল শহরের পুলিশ প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন আলেক্সেন্ডার মিসচেনকো। এ কারণে ইউক্রেনের লোকজন তাকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে উল্লেখ করে থাকে। ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেনের সেনারাই তাকে হত্যা করেছে।

Screenshot: Facebook

উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে মূল ধারার গণমাধ্যম যুগান্তরের অনলাইন সংস্করণে ‘বোমা হামলায় মেলিটোপোলের পুলিশ প্রধান নিহত’ শীর্ষক শিরোনামে গত ২৮ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Jugantor

প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির বরাতে জানানো হয়, ‘বোমা হামলায় রুশ অধিকৃত জাপোরিঝিয়া প্রদেশের মেলিটোপোল শহরের পুলিশপ্রধান আলেক্সেন্ডার মিসচেনকো নিহত হয়েছেন। ২০২২ সালে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করা চার অঞ্চলের একটি হচ্ছে জাপোরিঝিয়া। জাপোরিঝিয়া রাশিয়া দখলের আগে ও পরে প্রদেশটির মেলিটোপোল শহরের পুলিশ প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন আলেক্সেন্ডার মিসচেনকো। এ কারণে ইউক্রেনের লোকজন তাকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে উল্লেখ করে থাকে। ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেনের সেনারাই তাকে হত্যা করেছে।’

পরবর্তীতে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি নিউজের অনলাইন সংস্করণে ‘Ukraine war: Partisan attack kills police chief in Russian-occupied Melitopol’ শীর্ষক শিরোনামে গত ২৭ এপ্রিল প্রকাশিত মূল প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: BBC News

রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, যুগান্তরের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দাবিকৃত ভিডিওতে প্রতিবেদনের শেষ পর্যন্ত হুবহু পাঠ করা হয়েছে। এছাড়াও দাবিকৃত ভিডিওতে এই সংবাদ পাঠের অংশে প্রদর্শিত ছবিটিও উক্ত প্রতিবেদন থেকে নেওয়া হয়েছে। 

পাশাপাশি দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো সূত্রে বোমা হামলায় বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান নিহতের কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিও’র বিস্তারিত প্রতিবেদন এবং এবিষয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, বাংলাদেশ পুলিশ প্রধান নয়, বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন রুশ অধিকৃত জাপোরিঝিয়া প্রদেশের মেলিটোপোল শহরের পুলিশ প্রধান আলেক্সেন্ডার মিসচেনকো।

মূলত, সম্প্রতি বোমা হামলায় রুশ অধিকৃত জাপোরিঝিয়া প্রদেশের মেলিটোপোল শহরের পুলিশ প্রধান আলেক্সেন্ডার মিসচেনকো নিহত হয়েছেন। তবে দেশটির নাম উল্লেখ না করে ‘বোমা হামলায় পুলিশ প্রধান নিহত’ শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের ছবি ব্যবহার করার কারণে বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।

উল্লেখ্য, ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে চটকদার শিরোনাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এসব ঘটনা নিয়ে পূর্বেও ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, বোমা হামলায় রুশ অধিকৃত একটি শহরের পুলিশ প্রধান আলেক্সেন্ডার মিসচেনকো নিহত হওয়ার ঘটনার সংবাদের ভিডিও’র ক্যাপশনে দেশের নাম উল্লেখ না করে শুধুমাত্র ‘বোমা হামলায় পুলিশ প্রধান নিহত’ লিখে প্রচার করা হচ্ছে এবং থাম্বনেইলে বাংলাদেশের পুলিশ প্রধানের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

নিঃশ্বাস আটকে রেখে ফুসফুসের সুরক্ষা পরীক্ষা সংক্রান্ত দাবিটি কি বিজ্ঞানসম্মত?

বেশ কয়েক বছর ধরে শ্বাস আটকে রাখার মাধ্যমে ফুসফুসের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত আছে কিনা তার পরীক্ষা সংক্রান্ত কিছু ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে। 

Screenshot from Facebook

উক্ত ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, একটি রেখার উপর A এবং B চিহ্নিত দুটি পয়েন্ট দাগান্বিত থাকে এবং ভিডিও চালু করলে একটি কাঁটা ধীরে ধীরে বাম থেকে ডানদিকে A এবং B বিন্দুর দিকে ধীরে ধীরে এগোতে থাকে। দাবি করা হয়, “যদি আপনি পয়েন্ট A থেকে পয়েন্ট B পর্যন্ত্য শ্বাস ধরে রাখতে পারেন, তাহলে আপনি সুরক্ষিত আছেন।”

বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

বিভিন্ন সময়ে ইউটিউবে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাউভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শ্বাস আটকে রাখার মাধ্যমে ফুসফুসের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা যায় শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিহীন এই দাবিটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাই নাকচ করেছে। তাছাড়া, কিছু গবেষণায় নির্দিষ্ট বয়সের ব্যক্তিদের জন্য এই ধরণের শ্বাস আটকে রাখার পরীক্ষা করা গেলেও বয়সভিত্তিক ফুসফুসের অবস্থা একেকরকম থাকে বলে এই ধরণের পদ্ধতির মাধ্যমে ফুসফুসের সামগ্রিক সুরক্ষা পরীক্ষা সম্ভব নয়। 

যেভাবে অনুসন্ধান 

একজন মানুষের ফুসফুসের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ক্ষেত্রে নানা ধরনের পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরী অব মেডিসিন (Medline Plus) এর তথ্যমতে, যে সমস্ত পরীক্ষা দ্বারা ফুসফুসের স্বাস্থ্য পরিমাপ করা যায় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে: স্পিরোমেট্রি, লাং ভলিউম টেস্ট, গ্যাস ডিফিউশন টেস্ট এবং এক্সারসাইজ স্ট্রেস টেস্ট।  

Screenshot source: NIH

তাছাড়া, ব্রিটিশ লাং ইনস্টিটিউট (BLI) এর ওয়েবসাইটে ফুসফুসের স্বাস্থ্য পরিমাপকারী বেশ কিছু পদ্ধতির ব্যাপারে উল্লেখ রয়েছে। পদ্ধতিগুলো হচ্ছে পিক ফ্লো, স্পাইরোমেট্রি, ফুসফুসের ভলিউম টেস্ট, গ্যাস ট্রান্সফার টেস্ট, FeNO টেস্ট, ব্রঙ্কিয়াল চ্যালেঞ্জ টেস্ট, ইমেজিং স্ক্যান, ব্রঙ্কোস্কোপি, ফুসফুসের বায়োপসি, শ্বাস ছাড়ার কার্বন মনোক্সাইড টেস্ট, অক্সিজেন লেভেল টেস্ট, রেসপাইরেটরি মাসল টেস্ট, স্লিপ ব্রেকিং টেস্ট।

এই দুই প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে শ্বাস আটকে রাখার মাধ্যমে ফুসফুসের সুরক্ষা সংক্রান্ত পরীক্ষার বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে, একাধিক স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটে অনুসন্ধান করেও ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওগুলোর ন্যায় একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে শ্বাস আটকে রাখার মাধ্যমে ফুসফুসের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সংক্রান্ত কোনো পদ্ধতি খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।  

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ইন্টারনেটে নিঃশ্বাস আটকে রাখার মাধ্যমে ফুসফুসের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সংক্রান্ত কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। 

সংস্থাটি বিবৃতিতে জানায়, “কোনো রকম অস্বস্তি ছাড়াই যদি আপনি ১০ সেকেন্ড কিংবা এর বেশি সময় আপনার শ্বাস আটকে রাখেন তার অর্থ এই নয় যে আপনি কোভিড ১৯ অথবা অন্য যেকোনো ফুসফুসের রোগ থেকে মুক্ত।”

Screenshot from WHO

অর্থাৎ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে স্পষ্ট বলা হয়েছে, শ্বাস আটকে রাখার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার ফুসফুস সুরক্ষিত আছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারবে না। 

পরবর্তীতে আরো বিস্তর অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘Science Direct’ এর একটি আর্টিকেলে ক্লিনিক্যাল নিউরোলজির একটি পাঠ্যবইয়ের বরাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, একজন মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের ধরণ ব্যক্তি সাপেক্ষে পরিবর্তিত হয় এবং এটি আমাদের ব্যথা, আবেগ, শরীরের তাপমাত্রা, ঘুম, শারীরিক অবস্থা, দৈহিক কার্যকলাপের পরিমাণ, স্নায়ুতন্ত্রের রোগের উপস্থিতিসহ আরো কিছু ফ্যাক্টর দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে।

Screenshot Source: Science Direct

তবে বেশকিছু বৈজ্ঞানিক জার্নালে “Breath Holding Test” নামক একটি পরীক্ষা পদ্ধতির ব্যাপারে উদ্ধৃত হয়েছে যেটি সরাসরি ফুসফুসের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সাথে সম্পৃক্ত না হলেও অন্য বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত ত্রুটি নির্ণয় করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে বলা হচ্ছে।

এদের মধ্যে একটি গবেষণাপত্র থেকে জানা যায়, সেরিব্রোভাসকুলার রিয়েক্টিভিটি (CVR) নির্ধারনের ক্ষেত্রে “Breath Holding Test” এর বিশেষ উপযোগিতা রয়েছে। এই গবেষণা পরিচালনার ক্ষেত্রে ১৩-১৫ বছর বয়সী ২১ জন কিশোর-কিশোরীকে বেছে নেওয়া হয়, যেখানে বিভিন্ন সময়ে ৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত নিশ্বাস আটকে রেখে ট্রান্সক্র্যানিয়াল ডপলার আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে তাদের কার্ডিও সেরিব্রোভাসকুলার রিয়েক্টিভিটি পর্যবেক্ষণ করা হয়। 

Screenshot from Wiley Online Library

গবেষণাটির উপসংহারে বলা হয়, সেরিব্রোভাসকুলার রিয়েক্টিভিটি (CVR) নির্ধারণের ক্ষেত্রে কিশোর বয়সে “Breath Holding Test” পরিমাপ করা গেলেও তরুণদের ক্ষেত্রে এটিকে অপ্রয়োজনীয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। 

Screenshot from Wiley Online Library

তাছাড়া, গবেষণাগুলোতে “Breath Holding Test” এর কিছু সীমাবদ্ধতার কথাও তুলে ধরা হয়েছে। 

“Breath Holding Test” সম্পর্কিত এমন আরো কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র দেখুন এখানে, এখানে, এখানে

ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে নিঃশ্বাস আটকে রাখার মাধ্যমে ফুসফুসের স্বাস্থ্য পরীক্ষার যে পদ্ধতিটি দেখানো হচ্ছে তার স্বপক্ষে কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি খুঁজে না পেলেও Medical News Today, Healthline, American Lung Association এর মতো স্বাস্থ্যবিষয়ক কিছু ওয়েবসাইট থেকে দৈনন্দিন Breath Holding Practice এর মাধ্যমে আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি, মস্তিষ্কে নতুন টিস্যুর রি-জেনারেশন, ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধ, অক্সিজেন লেভেল বৃদ্ধিসহ আরো বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত উপকারিতার কথা জানা যায়। 

Screenshot from Healthline
Screenshot from American Lung Association

তাছাড়া, Medical News Today এর তথ্যমতে, একজন সাধারণ মানুষ গড়ে ৩০ থেকে ৯০ সেকেন্ডের জন্য তাদের শ্বাস ধরে রাখতে পারে।

Screenshot from Medical News Today

অর্থাৎ একজন স্বাভাবিক ব্যক্তির ক্ষেত্রে ৩০-৯০ সেকেন্ড নিশ্বাস আটকে রাখা স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে শারীরিক বিভিন্ন কারণে এই সময়কালের তারতম্য হতে পারে। বলা হয়, একজন মানুষ দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে শ্বাস আটকে রাখার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তার ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে।

Screenshot from Medical News Today

যেহেতু, একজন মানুষ অনায়াসেই ৩০-৯০ সেকেন্ড নিজের শ্বাস আটকে রাখতে সক্ষম তাই এই সময়টুকুতে শ্বাস আটকে রাখার মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয়না যে আপনার ফুসফুস সুরক্ষিত রয়েছে। 

মূলত, শ্বাস আটকে রাখার মাধ্যমে ফুসফুসের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত আছে কিনা তার পরীক্ষা সংক্রান্ত কিছু ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসার প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। বৈজ্ঞানিকভাবে অপ্রমাণিত এই পদ্ধতিটি দ্বারা একজন মানুষের ফুসফুসের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে কখনোই পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। কিছু গবেষণায় নির্দিষ্ট বয়সের ব্যক্তিদের জন্য এই ধরণের শ্বাস আটকে রাখার পরীক্ষার বিষয়ে উল্লেখ থাকলেও ফুসফুসের অবস্থা বয়সভেদে একেকরকম হওয়ায় এই ধরণের পদ্ধতির মাধ্যমে ফুসফুসের সামগ্রিক সুরক্ষা পরীক্ষা সম্ভব নয়। তবে দৈনন্দিন জীবনে একজন ব্যক্তি নিশ্বাস আটকে রাখার অনুশীলনের মাধ্যমে ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ আরো কিছু স্বাস্থ্যগত উপযোগীতা লাভ করার বিষয়ে বলা হয়েছে কিছু গবেষণায়।  

সুতরাং, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শ্বাস আটকে রাখার মাধ্যমে ফুসফুসের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

লিটন দাসকে নিয়ে কেকেআর অধিনায়ক নিতিশ রানার বক্তব্যটি বানোয়াট

সম্প্রতি, আইপিএলের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক নিতিষ রানা বাংলাদেশের ক্রিকেটার লিটন দাসের বিষয়ে একটি বক্তব্য দিয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

যা দাবি করা হচ্ছে 

আইপিএলের এবারের আসর শুরু হয় গত ৩১ মার্চ। বাংলাদেশের ক্রিকেটারকে এই আসরে দলে ভিড়ায় কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)। তবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ম্যাচ থাকায় আসরের শুরু থেকে লিটনকে পায়নি কেকেআর। কলকাতা নাইট রাইডার্স হয়ে লিটন প্রথম ম্যাচ খেলেন গত ২০ এপ্রিল। এই এক ম্যাচ খেলার পর পরবর্তী ম্যাচেই বাদ পড়েন লিটন। এরপর দলে আর জায়গা হয়নি তার। পরবর্তীতে গত ২৫ এপ্রিল থেকে ইন্টারনেটে দলটির অধিনায়ক নিতিষ রানা লিটনের বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ছড়িয়ে পড়েছে। 

ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে, আজ (২৫ এপ্রিল) লাইভে এসে নিতিষ রানা জানিয়েছেন, লিটন দাসকে যদি আর কোন ম্যাচে বসিয়ে রাখা হয় তাহলে তিনি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেবেন।

Screenshot from Tiktok

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচার হওয়া পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচার হওয়া ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচার হওয়া ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নিতিশ রানা সম্প্রতি লাইভে এসে লিটন দাসের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি বরং নিতিষের গত ১৭ জানুয়ারির একটি ভিডিও ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছে। উক্ত ভিডিওতে লিটন প্রসঙ্গে কোনো কথাই বলেননি তিনি। 

রিভার্স ইমেজ সার্চ অনুসন্ধানের মাধ্যমে, গত ১৭ জানুয়ারি প্রকাশিত নিতিশ রানার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির ফ্রেমের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি লাইভ ধারণকৃত ছিল না। রেকর্ড করা ভিডিও পোস্ট করেন তিনি।  

ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নিতিষ ভিডিওতে ক্রিকেট স্ট্রাটেজি গেমিং প্লাটফর্ম ‘Rario Global’ এর সাথে সংযুক্তির কথা জানান।

Image Comparison by Rumor Scanner

একই ভিডিও নিতিশ রানার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টেও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Instagram

অর্থাৎ, নিতিষ রানার ভিন্ন প্রসঙ্গের বক্তব্যের একটি পুরোনো ভিডিও ব্যবহার করে লিটন দাস সম্পর্কিত সাম্প্রতিক দাবিটি ছড়িয়েছে। 

রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে, কলকাতা নাইট রাইডার্স কর্তৃপক্ষ গত ২৭ মার্চ নিতিশ রানাকে অধিনায়ক ঘোষণা করে। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, নিতিষের ১৭ জানুয়ারির ভিডিও যখন পাবলিশ হয় তখন তিনি অধিনায়ক ছিলেন না। তাই সেই ভিডিওতে নিতিষের অধিনায়ক হিসেবে লিটন দাসকে নিয়ে এমন কোনো বক্তব্য দেওয়াও সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে, অধিকতর অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম, নিতিশ রানার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট এবং কলকাতা নাইট রাইডার্সের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্টগুলোতে অনুসন্ধান করেও নিতিশ রানা লিটন দাসের বিষয়ে উক্ত মন্তব্য করেছেন শীর্ষক দাবির কোনো সত্যতা মেলেনি।

মূলত, গত ১৭ জানুয়ারি আইপিএলের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক নিতিশ রানা একটি গেমিং প্লাটফর্মের সাথে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে ভিডিও পোস্ট করেন। উক্ত ভিডিওর কিছু অংশ ব্যবহার করে সম্প্রতি নিতিষ রানা লিটন দাসকে আর কোনো ম্যাচে বসিয়ে রাখা হলে তিনি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেবেন শীর্ষক দাবিটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, নিতিষ তার ভিডিওটি প্রকাশের সময় কেকেআরের অধিনায়ক ছিলেন না। তাই উক্ত ভিডিওতে লিটন প্রসঙ্গে উক্ত মন্তব্যও করার বিষয়টিও অবাস্তব।

উল্লেখ্য, লিটন দাস গত ২০ এপ্রিল তার আইপিএল ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে দিল্লি ক্যাপিটালের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে ৪ রানে আউট হন।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও বিভিন্ন সময়ে ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, লিটন দাসকে যদি আর কোন ম্যাচে বসিয়ে রাখা হয় তাহলে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে একটি বক্তব্য ভারতীয় ক্রিকেটার নিতিশ রানার নামে প্রচারিত হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কাগজের ভোকাল কর্ডে সিগারেট পান করা শীর্ষক দাবি মাধ্যমিকের পদার্থবিজ্ঞানের লেখা বিকৃত করে প্রচার 

0

সম্প্রতি, ফেসবুকে পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের প্রিন্ট সংস্করণের একটি পৃষ্ঠার ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। উক্ত পৃষ্ঠায় লাল কালির মার্ককৃত একটি ছবিতে এক শিশুকে মুখে সিগারেট সদৃশ বস্তুতে ফুঁ দিতে দেখা যাচ্ছে। ছবিটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, কাগজ দিয়ে ভোকাল কর্ড তৈরি করে সিগারেট পান করা যায়। 

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ২০২২ সালে ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কাগজ দিয়ে ভোকাল কর্ড তৈরি করে সিগারেট পান করার তথ্যটি মাধ্যমিকের পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে থাকার দাবিটি সঠিক নয় বরং নবম-দশম শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের একটি ছবি ও ক্যাপশন এডিট করে উক্ত দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে মাধ্যমিকের নবম-দশম শ্রেণির ২০২৩ সালের পদার্থবিজ্ঞান বইটির অনলাইন সংস্করণে অনুসন্ধান করে, ২০০ পৃষ্ঠায় সপ্তম অধ্যায়ে আলোচিত পৃষ্ঠার ছবিটির সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: Class 9-10 Physics Textbook 

আলোচিত ছবির পৃষ্ঠা এবং পাঠ্যবইয়ের একই পৃষ্ঠার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ছড়িয়ে পড়া পোস্টে এক শিশুকে মুখে সিগারেট সদৃশ বস্তুতে ফুঁ দিতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু নবম – দশম শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান পাঠ্যবইয়েে একই শিশুর মুখে সিগারেট সদৃশ কোনো বস্ত নেই। 

তাছাড়া, বইতে ছবিটির ক্যাপশনে ‘কাগজ দিয়ে ভোকাল কর্ড তৈরি করে সেটাকে ফুঁ দিয়ে কাঁপিয়ে শব্দ তৈরি করা যায়’ শীর্ষক তথ্য দেওয়া থাকলেও ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে পাঠ্যবইয়ের উক্ত অংশে ‘কাগজ দিয়ে ভোকাল কর্ড তৈরি করে সিগারেট পান করা যায়’ শীর্ষক ক্যাপশন রয়েছে। 

Screenshot comparison: Rumor Scanner 

একই ভাবে দাখিলের নবম-দশম শ্রেণির ২০২৩ সালের পদার্থবিজ্ঞান বইতেও মাধ্যমিকের পদার্থবিজ্ঞান পাঠ্যবইয়ের মতোই একই চিত্রই খুঁজে পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

পাশাপাশি বইটির প্রিন্ট সংস্করণেও একই চিত্র দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

Image: Class 9-10 Physics Textbook 

তাছাড়া ২০২২ সালের মাধ্যমিকদাখিলের নবম-দশম শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান বইতেও ২০২৩ সালের মাধ্যমিকের পদার্থবিজ্ঞান পাঠ্যবইয়ের মতোই একই চিত্রই খুঁজে পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

মূলত, ২০২২ সাল থেকে কাগজ দিয়ে ভোকাল কর্ড বানিয়ে সিগারেট পান করা যায় শীর্ষক তথ্য পদার্থবিজ্ঞানের পাঠ্যবইয়ে রয়েছে শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। নবম দশম শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান পাঠ্যবইয়ের একটি শিশুর ছবি এবং ক্যাপশন ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে উক্ত দাবিটি প্রচার হয়ে আসছে।

প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারিতে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে বঙ্গবন্ধুর বাবার নাম ভুল ও বঙ্গবন্ধুর বাবার পেশাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে শীর্ষক একটি দাবি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে অনুসন্ধান করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, ‘কাগজ দিয়ে ভোকাল কর্ড বানিয়ে সিগারেট পান করা যায়’ শীর্ষক তথ্য পদার্থবিজ্ঞানের পাঠ্যবইয়ে রয়েছে দাবি করে ফেসবুকে প্রচারিত ছবিটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

নবজাতক শিশুর মুখে আল্লাহ্ ও রাসূল (সা.) এর বাণী দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা

সম্প্রতি, “এক নবজাতকের শিশুর মুখে আল্লাহ ও রাসূল (সা.) এর বাণী” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

যা দাবি করা হচ্ছে 

ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, একটি সদ্যজাত শিশু আল্লাহ, রাসূল (সা.), পার্থিব জীবন এবং আখিরাত ও কেয়ামত সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে মিনিট তিনেকের বেশি সময় কথা বলছে।

উক্ত ভিডিও ব্যবহার করে ‘এক নবজাতক শিশুর মুখে আল্লাহ ও রাসূল(সা.) এর বাণী’ শীর্ষক দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে একই দাবিতে প্রচারিত একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এক নবজাতক শিশু আল্লাহ ও রাসূলের বাণী উচ্চারণ করেছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং নবজাতক শিশুটির স্থিরচিত্র ব্যবহার করে এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভিডিও ও কথাগুলো সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত ভিডিও তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচ্য ভিডিওর কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পাবলিক রেডিও নেটওয়ার্ক ‘npr’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত “How One Country Drastically Cut Its Newborn Death Rate” শীর্ষক শিরোনামের একটি নিবন্ধে আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে দেখা যায়, Karen Kasmauski নামক ব্যক্তি আলোচ্য ছবিটি ধারণ করেছিলেন। npr ছবিটি নিয়েছে Getty Images থেকে। 

Source: npr.org

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে পরবর্তীতে ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান Getty Images এর ওয়েবসাইটে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটির বিষয়ে গেটি ইমেজেস থেকে জানা যায়, Karen Kasmauski বাংলাদেশ থেকে সদ্যজাত শিশুর এই ছবিটি তুলেছিলেন।

Source: getty image

পাশাপাশি, অনুসন্ধানের স্বার্থে আলোচ্য ছবিটি ব্যবহার করে এডিটিং টুলসের সহায়তায় একটি ডামি ভিডিও তৈরি করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ভিডিওটি দেখুন ভিডিও

D-ID নামক এডিটিং টুল ব্যবহার করে সমধর্মী একটি ভিডিও নির্মাণ করে তুলনামূলক পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার।

আলোচ্য ভিডিও এবং তৈরিকৃত ভিডিওর সাদৃশ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

মূলত, সম্প্রতি এক নবজাতক শিশুর মুখে রাসূল (সা.) এর বাণী শোনা গেছে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ফটোগ্রাফার কারেন কাসমাউস্কির ধারণকৃত বাংলাদেশের এক সদ্যজাত শিশুর স্থিরচিত্র ব্যবহার করে ভিডিও এডিটিং টুলসের সাহায্যে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি বৌদ্ধ ভিক্ষুর পোশাক পরিহিত অবস্থায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একটি ছবি ব্যবহার করে তিনি ৭ দিনের জন্য বৌদ্ধ ধর্মের শ্রামন হয়ে বৌদ্ধধর্ম চর্চা করার একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে  ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, নবজাতক শিশুর মুখে আল্লাহ ও রাসূল (সা.) এর বাণী শোনা গেছে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভোগ ম্যাগাজিনে দেওয়া শাহরুখ কন্যা সুহানা খানের বক্তব্য দাবিতে ভুয়া তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি,বলিউড তারকা শাহরুখ কন্যা সুহানা খানের ‘ভোগম্যাগাজিনে দেওয়া বক্তব্য দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।

যা দাবি করা হচ্ছে

ভোগ ম্যাগাজিনে একটি ছবি প্রকাশ করে ইংরেজি ভাষার প্রতিবেনে সুহানা খানের নামে বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে। বক্তব্যটি হচ্ছে, “বেশিরভাগ মানুষ মনে করে যে আমি ভোগ কভারে আসার জন্য যথেষ্ট সংগ্রাম করিনি। তবে আমি আপনাকে বলি, আমার জীবন হাজার হাজার উচ্চাকাঙ্ক্ষী নতুনদের থেকে আলাদা নয়।” সে (সুহানা খান) জানায়।

সুহানা খান তার ভোগ শুটের বর্ণনা দিতে গিয়ে জানায়, “এটা আমার জন্য একটি কঠিন দিন ছিল। আমার জাগুয়ার ভেঙে গেছে এবং আমাকে একটি অডিতে করে স্টুডিওতে যেতে হয়েছিল। উল্লেখ করার দরকার নেই যে স্টুডিওটি প্রথম তলায় ছিল এবং বিল্ডিংটিতে লিফট ছিল না। তাই সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হয়েছিলো। পুরো ৫ মিনিটের জন্য আমি শহরের তাপ এবং আর্দ্রতা সহ্য করেছি।” (অনূদিত)

Screenshot from Facebook

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ছবির পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বলিউড তারকা শাহরুখ খানের কন্যা সুহানা খান ভোগ’ ম্যাগাজিনে এমন কোনো বক্তব্য দেননি বরং কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই সুহানা খানের নামে উক্ত বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।

কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে গত ২০১৮ সালের ১ আগস্ট এ ‘Vogue’ ম্যাগাজিনে “Suhana Khan on growing up a star kid: “I hated the attention” শীর্ষক শিরোনামে সোহানা খানের বক্তব্য সহ প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। তবে সেই প্রতিবেদনে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত বক্তব্যের কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot from Vogue

এছাড়া সেই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner 

অনুসন্ধানের মাধ্যমে গত ২০১৮ সালের ১৬ আগস্টে ভারতীয় গণমাধ্যম “International Business Time’ এ “Shah Rukh Khan’s Daughter Suhana Khan Trolled As Her Fake Quote On Vogue Photoshoot Goes Viral” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from IBT

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১ আগস্ট ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনে সুহানা খানকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই ‘Fakingnews.com’ নামে একটি ওয়েবসাইটে সুহানা খানের জীবন সংগ্রামের বর্ণনা দিয়ে একটি সংবাদ প্রতিবেদন করেছিলো। তবে সেই প্রতিবেদনটি ব্যঙ্গাত্মকভাবে তৈরি করা হয়েছিলো। আর সেই অংশটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছিলো এবং অনেকে এটিকে সত্য বলেও বিশ্বাস করেন।

তবে বর্তমানে ‘Fakingnews.com’ এর কার্যক্রম বন্ধ আছে এবং ওয়েবসাইটিও অচল অবস্থায় আছে।

মূলত, ২০১৮ সালের ১ আগস্ট ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনে বলিউড তারকা শাহরুখ খানের কন্যা সুহানা খানকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর কিছুদিন পর সেই প্রতিবেদন নিয়ে অন্য আরেকটি ওয়েবসাইট সুহানা খানের নামে ব্যঙ্গাত্মক এবং বানোয়াট বক্তব্য প্রচার করে। সম্প্রতি সেই ব্যঙ্গাত্মক প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে সুহানা খানের বক্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, শাহরুখ খানের কন্য সুহানা খান “The Archies” চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র অঙ্গনে প্রবেশ করবেন

প্রসঙ্গত, পূর্বেও বলিউড তারকা শাহরুখ খানের কন্যা সুহানা খানকে নিয়ে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, শাহরুখ খানের কন্যা সুহানা খানের ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনে দেওয়া বক্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র