টিকটকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন ভিডিও (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সৌদি আরবে ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের নয় বরং এটি ২০১৯ সালে ইয়েমেনে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আয়োজিত একটি র্যালির ভিডিও।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েজ অব আমেরিকার ইউটিউব চ্যানেলে ‘Muslims in Yemen Celebrate Prophet Mohammed’s Birthday‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot Comparison by Rumor Scanner
ভিডিও থেকে জানা যায়, ০৯ নভেম্বর হাজার হাজার ইয়েমেনি ও হুথি সমর্থক মহানবীর জন্মদিন পালনে ইয়েমেনের রাজধানী সানায় সমবেত হয়েছে। সড়কসমূহ সবুজ, সাদা পতাকা ও আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে।
পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওতে থাকা তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘Getty Images’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর ‘Yemenis in Sanaa celebrate Prophet Mohammad’s birthday‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। বার্তা সংস্থা এএফপিকে ভিডিওটির কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে। উক্ত ভিডিওতেও একই তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়।
মূলত, ২০১৯ সালের নভেম্বরে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে হাজার হাজার ইয়েমেনি ও হুথি সমর্থক দেশটির রাজধানী সানায় সমবেত হয়েছিল। সেই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ধারণকৃত ভিডিওকে সম্প্রতি সৌদি আরবে ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সৌদি আরবে এমন কোনো আয়োজনই করা হয়নি।
উল্লেখ্য, পূর্বে সৌদি আরবের জাতীয় দিবস উদযাপনের ঘটনাকে ঈদে মিলাদুন্নবীর আয়োজনের প্রস্তুতি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে বিষয়টি মিথ্যা হিসেবে প্রমাণ করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ইয়েমেনের ভিডিওকে সৌদি আরবে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি,“যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশনের ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিং ২০২৪-এ বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি ব্যানার পোস্ট (আর্কাইভ) করে উল্লেখ করা হয়,
‘We are proud to announce that BRAC University has been ranked No. 1 nationally and 801–1000 globally in the Times Higher Education (THE) World University Rankings 2024, announced yesterday.’
অর্থাৎ টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিংস ২০২৪ এ ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে এবং বৈশ্বিকভাবে ৮০১-১০০০ ব্যান্ডের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে।
গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজ ও বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে প্রচারিত এমন কিছু পোস্টের আর্কাইভ দেখুন ১,২,৩,৪,৫,৬,৭।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিংস ২০২৪ এ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এককভাবে প্রথম স্থান অর্জন করেনি। র্যাংকিংয়ে ৮০১-১০০০ এর মধ্যে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম ইংরেজি বর্ণমালার ক্রমানুসারে থাকায় তালিকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আগে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরে এসেছে। প্রকৃতপক্ষে, র্যাংকিংয়ে নির্দিষ্ট ব্যান্ডের মধ্যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আগে বা পরে থাকা মানে র্যাংক আগে বা পরে নয়। বরং, একই ব্যান্ডের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ই(ঢাকা, ব্র্যাক, জাহাঙ্গীরনগর, নর্থ সাউথ) যৌথভাবে প্রথম স্থানে রয়েছে।
টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিংস ২০২৪
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিংস ২০২৪ প্রকাশ করে। এই র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ‘৮০১-১০০০’ ক্রমের মধ্যে ৪টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো ব্র্যাক, ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়।
টাইমস হায়ার এডুকেশন ৫ টি সূচক যথাক্রমে টিচিং, রিসার্চ এনভায়রনমেন্ট, রিসার্চ কোয়ালিটি, ইন্ডাস্ট্রি, ইন্টারন্যাশনাল আউটলুকের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাংকিং করে থাকে।
উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্কোর বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই পাঁচটি সূচকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোর যথাক্রমে ১৪.৮, ১২.৩,৭১.১, ১৫.৭ ও ৪২.২। তারপরেই থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোর যথাক্রমে ১৭.৫, ১০.০০,৬৮.৮, ১৮.১ ও ৪৮.৫। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোর যথাক্রমে ২৪.১, ৮.৯, ৭১.৯, ১৯.৫ ও ৪৯.৭। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোর যথাক্রমে ১২.৯, ১০.০০, ৭৬.১, ১৫.৮ ও ৪৩.৩।
Screenshot: Times Higher Education Rankings2024
অর্থাৎ ভিন্ন ভিন্ন সূচকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্কোর আলাদা হলেও প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট স্কোর একই। সবার মোট স্কোর ৩২.৭ থেকে ৩৬.৯ এর মধ্যে।
নাম প্রথমে থাকা মানেই র্যাংকিংয়ে প্রথম নয়
টাইমস হায়ার এডুকেশনের এই র্যাংকিং প্রকাশের পর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করার আলোচিত দাবিটির প্রেক্ষাপটে রিউমর স্ক্যানার টিম টাইম হায়ার এডুকেশনের একাধিক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে।
এ প্রসঙ্গে জানতে রিউমর স্ক্যানার থেকে টাইমস হায়ার এডুকেশনের কমিউনিকেশন্স ম্যানেজার বেন মিলারকে দেওয়া এক মেইলের উত্তরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওভারওল স্কোর উল্লেখ করে তিনি জানান, ‘র্যাংকিংয়ে স্থান পাওয়া ব্র্যাক, ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও নর্থ সাউথ সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ই যৌথভাবে প্রথম স্থানে আছে। ৮০১-১০০০ ব্যান্ডে থাকা প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান এক এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নামের আদ্যাক্ষর অনুসারে স্থান দেওয়া হয়েছে।
Email of Times Higher Education Authority
পাশাপাশি একই বিষয়ে জানতে টাইমস হায়ার এডুকেশনের ডাটা কালেকশন টিমকেও মেইল দেওয়া হয়। এর উত্তরে ডাটা কালেকশন টিম জানায়, ওয়েবসাইটে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে র্যাংকিং নয়, ইংরেজি বর্ণের ক্রমানুসারে স্থান দেওয়া হয়েছে। একই ব্যান্ডে থাকা প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ে অবস্থান একই। এই কারণে বাংলাদেশ থেকে স্থান পাওয়া ব্র্যাক, ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও নর্থ সাউথ সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ই যৌথভাবে প্রথম স্থানে রয়েছে।
এতে দেখা যায়, এই র্যাংকিংয়ে ১ থেকে ২০০ তম পর্যন্ত স্থান পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে পৃথক পৃথকভাবে তালিকাভুক্তির বিষয়ে বলা হয়েছে। এর পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ২০১-২৫০, ২৫১-২৫০, ২৫১-৩০০, ৩০১-৩৫০, ৩৫১-৪০০, ৪০১-৫০০, ৫০১-৬০০, ৬০১-৮০০, ৮০১-১০০০, ১০০১-১২০০, ১২০১-১৫০০ ও ১৫০১+ শ্রেণিতে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
উপরিউক্ত তথ্যসমূহ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এককভাবে প্রথম স্থান অর্জন করেনি। বরং ৮০১-১০০০ শ্রেণিতে থাকা বাংলাদেশের সবগুলো
বিশ্ববিদ্যালয়ই অর্থাৎ ব্র্যাক, ঢাবি, জাবি ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় সকলেই যৌথভাবে প্রথম স্থান অর্জন করেছে।
টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাংকিংয়ে শাবিপ্রবি দেশসেরা নয়
আলোচিত যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) র্যাংকিংটি প্রকাশের পর জাতীয় দৈনিক কালবেলায় ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাংকিংয়ে দেশসেরা শাবিপ্রবি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ‘দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্য শীর্ষস্থানে অবস্থানে রয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)।’
প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, ‘এবারের তালিকায় বাংলাদেশের মোট নয়টি ইউনিভার্সিটি স্থান করে নিয়েছে ১৫০০ এর মধ্যে। শাবিপ্রবি এবার প্রথমবারের মতো ১২০০ থেকে ১৫০০ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।’
তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, টাইমস হায়ারের এই র্যাংকিংয়ে ১০০১-১২০০ ক্রমের মধ্যে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১২০১ থেকে ১৫০০ এর মধ্যে রয়েছে খুলনা ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
অর্থাৎ টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাংকিংয়ে শাবিপ্রবির অবস্থান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে ১২০০ থেকে ১৫০০ এর মধ্যে। আবার শাবিপ্রবির এই অবস্থানের পূর্বেও যেহেতু ৮০১-১০০০ এর মধ্যে বাংলাদেশের চারটি, ১০০১-১২০০ এর মধ্যে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, তাই র্যাংকিংয়ে শাবিপ্রবিকে আলাদাভাবে দেশসেরা বলার সুযোগ নেই।
মূলত, গত ২৭ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশন ‘ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিং- ২০২৪’ প্রকাশ করেছে। উক্ত র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের ৯ টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। তালিকায় ৮০১-১০০০ ক্রমের মধ্যে রয়েছে ব্র্যাক, ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। পরবর্তীতে উক্ত র্যাংকিংকে কেন্দ্র করে ‘বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তবে টাইমস হায়ার এডুকেশনের একাধিক কর্মকর্তা রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এককভাবে নয় বরং ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে বাংলাদেশে প্রথম স্থান অর্জন করেছে।
প্রসঙ্গত, টাইমস হায়ার এডুকেশনের ২০২৩ সালের র্যাংকিং প্রকাশের পরও তালিকায় স্থান পাওয়া বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থান নিয়ে একইভাবে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল। যা নিয়ে পরবর্তীতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
অর্থাৎ, যৌথভাবে ১ম উল্লেখ না করে এই তথ্যটি প্রচার করা হলে তা বিভ্রান্তিকর হবে। আর উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় চারটির কোনোটি যদি বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম বলে নিজেকে দাবি করে সেক্ষেত্রে সেটা ভুল হবে, কারণ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে র্যাংকিংয়ে যৌথভাবে ১ম হওয়া অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও রয়েছে।
০৩ অক্টোবর, ২০২৩ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়েও কতিপয় গণমাধ্যমে একই দাবি প্রচার করার প্রেক্ষিতে সেসব গণমাধ্যমকেও দাবি হিসেবে প্রতিবেদনে যুক্ত করা হলো।
সম্প্রতি, নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরের সামনে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বিএনপির সমর্থকরা পাকিস্তানি পতাকা হাতে বিক্ষোভ করেছে শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও এবং ভিডিওর কিছু স্থিরচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জাতিসংঘের সদরদপ্তরের সামনে পাকিস্তানের পতাকা হাতে বিএনপি সমর্থকদের মিছিল করার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল পিটিআই সমর্থকরা একই স্থানে একই দিনে তাদের দেশের পতাকা হাতে বিএনপির পাশেই বিক্ষোভ করেছিল।
উক্ত ভিডিওতেও জাতিসংঘের সদরদপ্তরের সামনে পিটিআই এর বিক্ষোভস্থলের পাশেই বাংলাদেশের পতাকা দেখা যায়।
Indication By Rumor Scanner
এছাড়া, পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম AAP Digital এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত “PTI Protest at United Nation | UN | United Nation” শিরোনামের অপর একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওতেও থেকেই একই তথ্য জানা যায়।
Indication By Rumor Scanner
TV One USA নামের একটি ফেসবুক পেজে পোস্টকৃত একটি ভিডিওতে পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল পিটিআই এর বিক্ষোভস্থলের পাশে বাংলাদেশের পতাকা হাতে বিএনপি সমর্থকদের দেখা যায় এবং তাদের মাঝে ডিভাইডার লক্ষ্য করা যায়।
Source: Tv One USA
পাশাপাশি, Mhabub Ahmed নামের এক ব্যবহারকারীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভের একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত লাইভ ভিডিওতেও বিএনপি এবং পাকিস্তানের পিটিআই পাশাপাশি অবস্থানে বিক্ষোভ করার বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়।
Indication By Rumor Scanner
Faruk Hossain নামের একটি ফেসবুক আইডির একটি ভিডিও থেকে জাতিসংঘের সদর দপ্তরের সামনে সেদিন পাশাপাশি স্থানে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং চীনের কিছু বিক্ষোভকারী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কথা জানা যায়। ভিডিওর ধারাবিবরণী থেকে আরও জানা যায় যে, পাকিস্তানি বিক্ষোভকারীরা পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা হাতে এবং বিএনপি সমর্থকরা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা হাতে বিক্ষোভে অংশ নেন।
Source: Faruk Hossain Facebook Profile
এছাড়াও, উক্ত বিক্ষোভে বিএনপির মিছিলের একাধিক ভিডিও বিশ্লেষণ করে তাদের সমর্থকদের হাতে পাকিস্তানি পতাকা দেখা যায়নি।
অর্থাৎ, নিউইয়র্কে পিটিআই এবং বিএনপি সমর্থকদের করা লাইভ, ভিডিও এবং গণমাধ্যমের প্রচারিত ভিডিও বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, জাতিসংঘের সদরদপ্তরের সামনে বিএনপির সদস্যরা পাকিস্তানের পতাকা হাতে বিক্ষোভ করেনি। পাশাপাশি স্থানে পাকিস্তানের রাজনৈতিক সংগঠন পিটিআই সমর্থকরা পাকিস্থানের বিক্ষোভ করায় আলোচিত ভুল দাবির সূত্রপাত হয়েছে বলে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়েছে।
মূলত, গত ২২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদরদপ্তরের সামনে একই সময়ে একই স্থানে পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল পিটিআই এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল বিএনপি নিজ নিজ দেশের পতাকা ও নিজ নিজ দাবির প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করে। তাদের বিক্ষোভের স্থানের মাঝে ডিভাউডার লক্ষ্য করা যায়, যার এক পাশে বিএনপি, অন্যপাশে পিটিআই সমর্থকরা বিক্ষোভ করে। পাশাপাশি বিক্ষোভ করার সময়ে এলোমেলো অবস্থায় ধারণকৃত ফুটেজ প্রচার করার মাধ্যমে বিএনপি সমর্থকরা পাকিস্তানি পতাকা হাতে বিক্ষোভ করেছে শীর্ষক ভুয়া দাবি প্রচারিত হয়। প্রকৃতপক্ষে, বিএনপি সমর্থকরা বাংলাদেশের পতাকা হাতে বিক্ষোভ করেছে এবং উক্ত স্থানে পাকিস্তানের পতাকা হাতে মূলত ইমরান খানের পিটিআই সমর্থকরা বিক্ষোভ করেছিল। উল্লেখ্য, ঐ দিন জাতিসংঘের সামনে উক্ত স্থানে আওয়ামী লীগ সমর্থকরাও বিক্ষোভ করেছে। তাছাড়া একই স্থানে চীন, ইসরায়েলসহ অনেক দেশের মানুষই অবস্থান নিয়ে তাদের দাবি জানায় কিংবা বিক্ষোভ করে।
সুতরাং, জাতিসংঘের সদর দপ্তরের সামনে বিএনপি সমর্থকরা পাকিস্তানের পতাকা হাতে মিছিল করেছে দাবিতে প্রচারিত দাবিটি মিথ্যা।
সম্প্রতি, “বিশ্বকাপের চার সেমিফাইনালিস্ট বেছে নিলেন আমলা। পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা” শীর্ষক শিরোনামে একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটার হাশিম আমলা ২০২৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে বাংলাদেশকে বেছে নেননি বরং এক সাক্ষাৎকারে হাশিম আমলা ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইংল্যান্ডকে এই চার দলকে ২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে বেঁচে নিয়েছেন।
উক্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০২৩ বিশ্বকাপের সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে নিজ দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ডকে বেছে নিয়েছেন সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার হাশিম আমলা।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দক্ষিণ আফ্রিকা ভিত্তিক গণমাধ্যম ‘Independent Online’ কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটার হাশিম আমলা ২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইংল্যান্ডকে বেছে নিয়েছেন।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সম্প্রতি Zaahier Adams নামক জনৈক সংবাদকর্মী দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটার হাশিম আমলার একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। সেই সাক্ষাৎকারের শেষ অংশে ২০২৩ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্ট হতে পারে কোন কোন দল এমন প্রশ্নের জবাবে হাশিম আমলা বলেন, “আমার মনে হয় ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইংল্যান্ড।
মূলত, জহির অ্যাডামস নামের এক সংবাদকর্মী সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার হাশিম আমলার একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। উক্ত সাক্ষাৎকারে বিশ্বকাপের সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্টদের নাম জানতে চাওয়া হলে হাশিম আমলা সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইংল্যান্ডকে বেছে নেন। তার সেই ভবিষ্যদ্বাণীতেই বাংলাদেশের নাম যুক্ত করে প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, হাশিম আমলা ২০২৩ বিশ্বকাপের সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে বাংলাদেশকে বেছে নেননি।
উল্লেখ্য, পূর্বেও ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম এবং ইমরুল কায়েসের ছবি বিকৃত করে প্রচার করা হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটার হাশিম আমলা বিশ্বকাপের সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, ‘আমাকে আগামী নির্বাচনে এমপি প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিন্তু আমি রাজি হয়নি’ শীর্ষক ক্যাপশনে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার তামিম ইকবালের মন্তব্য দাবিতে একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে নির্বাচনে এমপি প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব পাওয়া সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য করেননি তামিম বরং কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, বিশ্বকাপ স্কোয়াডে না থাকার কারণ জানিয়ে সম্প্রতি তামিম কর্তৃক প্রকাশিত ভিডিওতে অথবা অন্য কোথাও তিনি এমন কোনো মন্তব্য করেননি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে তামিম ইকবালের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ‘আমি চাইনি আপনারা ভুল কিছু জানুন….’ শীর্ষক শিরোনামে গত ২৭ সেপ্টেম্বর প্রচারিত ১২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওতে তামিমের পরনের পোশাকের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডে থাকা পোশাকের মিল পাওয়া যায়।
Screenshot: Facebook
উক্ত ভিডিওতে তামিম ইকবালকে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে না থাকার ব্যাখ্যা দিতে দেখা গেলেও আগামী নির্বাচনে তাকে এমপি প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাবের বিষয়ে কিছু বলতে শোনা যায়নি।
পরবর্তীতে উক্ত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে কোনো গণমাধ্যমে এমন কোনো মন্তব্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ, ক্রিকেটার তামিম ইকবাল আগামী নির্বাচনে তাকে এমপি প্রার্থী হওয়ার জন্যে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক তাকে প্রস্তাব দেওয়ার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি।
মূলত, গত ২৬ সেপ্টেম্বর তামিম ইকবালকে বাদ দিয়েই বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করা হয়। এর আগে থেকেই তামিম ইকবালের ফিটনেস ইস্যু নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা শুরু হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন তামিম। উক্ত ভিডিওর একটি স্থিরচিত্র ব্যবহার করে ‘আমাকে আগামী নির্বাচনে এমপি প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিন্তু আমি রাজি হয়নি’ শীর্ষক ক্যাপশনে তামিম ইকবালের মন্তব্য দাবিতে একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, তামিম ইকবাল তার ভিডিওতে এমন কোনো মন্তব্য করেননি।
সুতরাং, ‘আমাকে আগামী নির্বাচনে এমপি প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিন্তু আমি রাজি হয়নি’ শীর্ষক মন্তব্যটি তামিম ইকবালের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, “আমাদের বাংলাদেশের পুলিশ ভাইয়ারাও যে নাচতে পারে দেখিয়ে দিল অসাধারণ ড্যান্স হয়েছে” শীর্ষক শিরোনামে একটি নাচের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত ভিডিওতে অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য নন বরং নারায়ণগঞ্জ ইপিজেড এর এপিক গ্রুপ নামের একটি গার্মেন্টস পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মী।
অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচ্য ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যালোচনায় দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির ব্যানারে EPIC UTSAAB-2022, Egmcl Annual Cultural Ceremony লেখা দেখতে পাওয়া যায়।
Indication By Rumor Scanner
পরর্বতীতে, একই ভিডিওর আরো কিছু কী-ফ্রেমের স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে ‘Ayman Haq’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ২০ সেপ্টেম্বর ‘পুলিশ চোরের প্রেমে পড়েছি।’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
Source: Aynul Haq Facebook Page
ভিডিওটি সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করে উক্ত ফেসবুক পেজের প্রোফাইল পিকচারে থাকা ব্যক্তির ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওতে পুলিশের ভূমিকায় নাচা ব্যক্তির মুখমণ্ডলের গঠনগত মিল লক্ষ্য করা যায়।
Image Analysis: Rumor Scanner
বিস্তারিত অনুসন্ধানে, একই ব্যক্তির ‘Aynul Haq Ayman’ নামের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত অ্যাকাউন্ট থেকে ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি পোস্টে সংযুক্ত কিছু ছবির সাথে আলোচ্য ভিডিওর পুরোপুরি লক্ষ্য করা যায়। এতে স্পষ্ট হয় যে, ছবিগুলো উক্ত নাচের সময় ধারণকৃত।
Source: Aynul Haq Ayman Facebook Profile
অধিকতর সত্যতা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে আয়নুল হক আয়মানের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, তিনি এপিক গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচার কোম্পানির একজন চাকুরিজীবী। ২০২২ সালে বাৎসরিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এবং তার ইউনিটের সহকর্মীরা মিলে উক্ত নাচের দৃশ্য পরিবেশন করেন। গানের বিষয়বস্তুর সাথের মিল রাখার উদ্দেশ্যে পুলিশের পোশাক ভাড়া করেন তারা।
বক্তব্যের পাশাপাশি প্রাণস্বরূপ বি.এফ.ডি.সি, তেজগাঁও এর কামরুল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি দোকান থেকে পুলিশের পোশাক ভাড়া নেওয়ার রসিদ রিউমর স্ক্যানারকে প্রদান করেন তিনি।
Image: Memo of renting police uniforms.
পরবর্তীতে উক্ত রসিদের সত্যতা যাচাইয়ে কামরুল এন্টারপ্রাইজের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। রসিদটি সত্য বলে দোকানটির তরফ থেকে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়।
মূলত, ২০২২ সালে নারায়ণগঞ্জ ইপিজেড এর এপিক গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচার কোম্পানির বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির কিছু কর্মী পুলিশের পোশাক পড়ে একটি নাচের দৃশ্য পরিবেশন করেন। উক্ত অনুষ্ঠানের ভিডিওকেই পুলিশ সদস্যের নাচের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও পুলিশ সদস্যদের মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ভিডিওকে পুলিশ সদস্যদের নাচের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, কথিত তাসনিম আয়েশা নামের এক তরুণীর বেশ কিছু আপত্তিকর ছবি এবং ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে। এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ঐ তরুণী আত্মহত্যা করেছে দাবিতে সময় টিভি’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তাসনিম আয়েশা নামের কথিত ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার বিষয়ে সময় টিভি কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর ‘তেজগাওয়ে গুলি/ ছয় দিন পর মৃত্যুর কাছে হার মানলের আইনজীবী’ শীর্ষক শিরোনামে সময় টিভির অফিসিয়াল ফেসবুকে পেজে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ডকে ডিজিটাল প্রযুক্তি সহায়তায় এডিট বা বিকৃত করে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও, তাসনিম আয়েশা নামের কোনো তরুণীর আত্মহত্যার কোনো সংবাদ কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানের শুরুতে সময় টিভির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও সময় টিভির ওয়েবসাইটেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সময় সংবাদের সেন্ট্রাল ডেস্কের সাব এডিটর মাহবুব সরকার-এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সময় টিভিতে এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করা হয়নি।
সময় টিভির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া না গেলেও গত ২৫ সেপ্টেম্বর ‘তেজগাওয়ে গুলি/ ছয় দিন পর মৃত্যুর কাছে হার মানলের আইনজীবী’ শীর্ষক দাবিতে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Facebook
উক্ত ফটোকার্ডের ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের ব্যাকগ্রাউন্ডের হুবহু মিল পাওয়া যায়।
এছাড়াও প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে উক্ত তরুণীর আত্মহত্যার কোনো সংবাদ কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ, তাসনিম আয়েশা নামের তরুণীর আত্ম-হত্যার বিষয়ে সময় টিভি কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি।
মূলত, গত ২৪ তারিখে কথিত তাসনিম আয়েশা ও মুন্তাসির বিল্লাহ নামের ঢাকা সিটি কলেজের পোশাক পরিহিত দুই শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত আলাপচারিতার কিছু স্ক্রিনশট ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, সেই তাসনিম আয়েশা আত্মহত্যা করেছে দাবিতে সময় টিভি’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঢাকা সিটি কলেজের কথিত তাসনিম আয়েশা নামের কোনো শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার বিষয়ে সময় টিভি কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর ‘তেজগাওয়ে গুলি/ ছয় দিন পর মৃত্যুর কাছে হার মানলের আইনজীবী’ শীর্ষক শিরোনামে সময় টিভির অফিসিয়াল ফেসবুকে পেজে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ডকে ডিজিটাল প্রযুক্তি সহায়তার এডিট বা বিকৃত করে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং, কথিত তাসনিম আয়েশা নামের তরুণী আত্মহত্যা করেছে দাবিতে সময় টিভি’র ফটোকার্ডের আদলে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।
সম্প্রতি, “মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের মন্তব্য দাবিতে মূলধারার গণমাধ্যম এনটিভি’র আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাস বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি এবং এনটিভিও উক্ত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং আলোচিত এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে এনটিভি’র আদলে তৈরি করা আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩।
Screenshot : Facebook Claim Post
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে আলোচিত ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ এবং এনটিভি’র লোগোর সূত্র ধরে এনটিভি’র ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৪ সেপ্টেম্বর প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায় নি। এছাড়া অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে গত ২৪ সেপ্টেম্বর এনটিভি’র ফেসবুক পেজে ‘মাকিন ভিসা নীতিতে যুক্ত হবে গণমাধ্যমও : পিটার হাস’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড এবং এর কমেন্টে একই শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot : NTV Facebook Page
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘আগামীতে গণমাধ্যমও যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিতে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। গত ২৪ সেপ্টেম্বর চ্যানেল টুয়েন্টিফোর কার্যালয়ে এক টকশোতে তিনি এ কথা বলেন।’
এনটিভি’র এই ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডের সাথে উক্ত ফটোকার্ডের ডিজাইন এবং ফটোকার্ডে থাকা তারিখ ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাসের ছবির হুবহু মিল রয়েছে।
Photocard Comparison by Rumor Scanner
অর্থাৎ, এনটিভি’র ফেসবুক পেজে ২৪ সেপ্টেম্বর প্রচারিত এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম এডিট করে তাতে ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে’ শীর্ষক শিরোনাম যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
মূলত, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমেরিকার ভিসানীতিতে গণমাধ্যমও যুক্ত হতে পারে বলে জানান। এরই প্রেক্ষিতে এনটিভি’র ফেসবুক পেজে ‘মার্কিন ভিসা নীতিতে যুক্ত হবে গণমাধ্যমও: পিটার হাস’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত ফটোকার্ডটির শিরোনাম বিকৃত করে তাতে ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে : পিটার হাস’ শীর্ষক শিরোনাম যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার গত ২২ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
গত আট মাসে বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিষয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, মূলধারার গণমাধ্যম এনটিভিকে উদ্ধৃত করে ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে’ শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।
সম্প্রতি, “তামিমকে বিশ্বকাপে না নেয়া হলে বিসিবির কর্মকর্তা, নির্বাচকবৃন্দ, কোচ ও ক্যাপ্টেনের উপর ভিসানীতি আরোপ করা হবে: পিটার হাস” শীর্ষক শিরোনামে প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ডিজাইন সম্বলিত একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তামিম ইকবালকে নিয়ে এমন কোনো মন্তব্য করেননি এবং প্রথম আলোও এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং উক্ত সংবাদের ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলো’র আদলে তৈরি আলোচিত সংবাদের ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩।
Screenshot: Facebook Claim Post
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে স্ক্রিনশটে থাকা তারিখ এবং প্রথম আলো’র লোগোর সূত্র ধরে প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে গত ২৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত সংবাদগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনামে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। তবে একই দিনে “ভিসা নীতিতে গণমাধ্যমও যুক্ত হবে: পিটার হাস” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস মার্কিন ভিসা নীতির বিষয়ে বলেন, রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সাবেক-বর্তমান সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি গণমাধ্যমও আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিতে যুক্ত হবে।
প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত স্ক্রিনশটের সংবাদের সাথে উক্ত সংবাদের প্রতিবেদকের ক্রেডিট লাইন, ফিচারে থাকা মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাসের ছবির হুবহু মিল রয়েছে।
Screenshot Comparison by Rumor Scanner
এছাড়া, গণমাধ্যমটি তাদের ফেসবুক পেজে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ‘মিথ্যা প্রচারণা’ শীর্ষক একটি পোস্ট দিয়ে জানায়, প্রথম আলোর নামে ছড়ানো এই ছবিটি নকল, ছবিটি তাদের তৈরি নয়। পাঠকদের বিভ্রান্তি এড়াতে তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ও অনলাইনে সঙ্গে থাকার জন্য অনুরোধও করেছে গণমাধ্যমটি।
Screenshot: Prothom Alo Facebook Page
মূলত, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমেরিকার ভিসানীতি গণমাধ্যমও যুক্ত হবে বলে জানান। এ বিষয়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে “ভিসা নীতিতে গণমাধ্যমও যুক্ত হবে: পিটার হাস” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তবে গত ২৬ সেপ্টেম্বর তামিম ইকবালকে ছাড়া আসন্ন ক্রিকেট বিশ্বকাপের দল ঘোষণার পর প্রথম আলো’র ঐ সংবাদ প্রতিবেদনের একটি স্ক্রিনশট নিয়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এর শিরোনাম বিকৃতের মাধ্যমে ‘তামিমকে বিশ্বকাপে না নেয়া হলে বিসিবির কর্মকর্তা, নির্বাচকবৃন্দ, কোচ ও ক্যাপ্টেনের উপর ভিসানীতি আরোপ করা হবে’ শীর্ষক শিরোনামে প্রথম আলোর সংবাদ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার গত ২২ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
উল্লেখ্য, পূর্বেও প্রথম আলোকে জড়িয়ে ভুয়া সংবাদ প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমনকিছু প্রতিবেদন পড়ুন এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোকে উদ্ধৃত করে ‘তামিমকে বিশ্বকাপে না নেয়া হলে বিসিবির কর্মকর্তা, নির্বাচকবৃন্দ, কোচ ও ক্যাপ্টেনের উপর ভিসানীতি আরোপ করা হবে’ শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি এডিটেড বা বিকৃত।
কক্সবাজার ছাত্রলীগের একটি মিছিলে পুলিশ ছাড়া আওয়ামী লীগ হিজরা, পুলিশ ছাড়া ছাত্রলীগ হিজরা- শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
ভিডিওটিতে, ‘পুলিশ ছাড়া আওয়ামী লীগ হিজরা হিজরা, পুলিশ ছাড়া ছাত্রলীগ হিজরা হিজরা’ এমন স্লোগান দিতে শোনা যায়।
টিকটকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘পুলিশ ছাড়া আওয়ামী লীগ হিজরা হিজরা, পুলিশ ছাড়া ছাত্রলীগ হিজরা হিজরা” শীর্ষক স্লোগান সম্বলিত প্রচারিত এই ভিডিওটি এডিটেড। প্রকৃতপক্ষে ভিন্ন আরেক রাজনৈতিক কর্মসূচির স্লোগানের অডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
ভিডিও যাচাই
অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে Koheli TV নামক একটি পেজে গত বছরের ৩১ আগস্ট “কক্সবাজারের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গণজমায়েত ও র্যালি করলো কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি সংবাদ ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
৩ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে ভিডিওতে ‘পুলিশ ছাড়া আওয়ামী লীগ হিজরা হিজরা, পুলিশ ছাড়া ছাত্রলীগ হিজরা হিজরা’ নয় বরং ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, শেখ শেখ শেখ মুজিব, লও লও লও সালাম, ছাত্রলীগের মূলনীতি, শিক্ষা শান্তি প্রগতি’ শীর্ষক স্লোগান দিতে শোনা যায়।
এছাড়া, গত বছরের ৩০ আগস্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজেও উক্ত মিছিলের একটি লাইভ ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।
৪৮ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের লাইভ ভিডিওটিতেও ‘পুলিশ ছাড়া আওয়ামী লীগ হিজরা হিজরা, পুলিশ ছাড়া ছাত্রলীগ হিজরা হিজরা’ শীর্ষক কোনো স্লোগান দিতে শোনা যায়নি।
অডিও যাচাই
অডিও নিয়ে অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চে RAKIB নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১৮ সেপ্টেম্বর “পুলিশ ছাড়া আওয়ামী লীগ হিজরা হিজরা, নিউইয়র্কে বিএনপি-যুবদলের নতুন স্লোগান উদ্ভাবন” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে, কয়েকজন মানুষকে একত্রিত হয়ে ‘পুলিশ ছাড়া আওয়ামী লীগ হিজরা হিজরা, পুলিশ ছাড়া ছাত্রলীগ হিজরা হিজরা’ শীর্ষক স্লোগান দিতে দেখা যায়।
অর্থাৎ, এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির স্লোগানের হুবহু মিল রয়েছে।
মূলত, ২০২২ সালের ৩০ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে শোক র্যালির আয়োজন করে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ। সম্প্রতি সেই র্যালির একটি ভিডিওতে নিউইয়র্কের বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দেওয়া ‘পুলিশ ছাড়া আওয়ামী লীগ হিজরা হিজরা, পুলিশ ছাড়া ছাত্রলীগ হিজরা হিজরা’ শীর্ষক স্লোগান এডিটের মাধ্যমে সংযুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও ছাত্রলীগের একটি মিছিলের ভিডিওর সাথে ভিন্ন ঘটনার অডিও যুক্ত করে প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ‘পুলিশ ছাড়া আওয়ামী লীগ হিজরা হিজরা, পুলিশ ছাড়া ছাত্রলীগ হিজরা হিজরা’ শীর্ষক স্লোগান সম্বলিত প্রচারিত এই ভিডিওটি বিকৃত বা এডিটেড।