সম্প্রতি “দোয়া না করে কেউ এড়িয়ে যাবেন না, আল্লাহ সুস্থতা দান করো। আমিন।” শীর্ষক শিরোনামের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিটি কোনো আসল শিশুর নয় বরং এটি একটি পুতুলের ভাস্কর্যের ছবি।
রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে ইনস্টাগ্রামে ‘𝕍𝕀ℕℂ𝔼ℕℤ𝕀ℕ𝔸 Doll Sculptor’ নামক একটি অ্যাকাউন্টে গত ১৭ আগস্ট প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
পোস্টে সংযুক্ত ছবিটির সাথে আলোচিত ছবিটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, “আমি এই পুতুলগুলো সাধারণত বাবা-মা বা পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে তৈরি করি। আমি জানি আমি এমন একটি সমাজের বিরুদ্ধে লড়াই করছি যেটি এই শিশুদেরকে এড়িয়ে চলে এবং মানুষের চেয়ে কম বলে মনে করে কিন্তু আমি পড়াশোনা করবো এবং অর্থ ও সচেতনতা বাড়াতে এই পুতুলগুলো তৈরি করব কারণ আমি চাই না যে কেউ এমন মনে করুক যেন তারা অবাঞ্ছিত।”
অর্থাৎ, এটি কোনো প্রকৃত শিশু নয়। কেবল এটি একটি পুতুলের ভাস্কর্য।
পরবর্তীতে, ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি ঘুরে এ ধরনের আরও কিছু পুতুলের ভাস্কর্যের ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে উল্লিখিত ওয়েবসাইট লিংকের সূত্র ধরে ‘Chenza Dolls By Vincenzina Care’ নামক একটি ওয়েবসাইট খুঁজে পাওয়া যায়।
ওয়েবসাইটটি থেকে জানা যায়, পুতুলগুলো তৈরি করা হয় পলিমার ক্লে দিয়ে এবং পেইন্ট করা হয় আক্রোলিক পেইন্টের মাধ্যমে।

পরবর্তীতে পুতুলগুলোর নির্মাতা কানাডিয়ান নারী ভিনচেনজিনা কেয়ারের ওয়েবসাইট খুঁজে পাওয়া যায়। ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, কানাডিয়ান এই শখের পুতুলের ভাস্কর্যের নির্মাতা সাত বছর বয়স থেকে পুতুলের নানা ধরনের ভাস্কর্য তৈরি করে আসছেন।

মূলত, গত ১৭ আগস্ট ইন্সটাগ্রামে ‘Chenza Dolls By Vincenzina Care’ নামক কানাডিয়ান পুতুলের ভাস্কর্য বিষয়ক একটি অ্যাকাউন্টে দুই মাথাওয়ালা একটি পুতুলের ভাস্কর্য প্রকাশ করা হয়। উক্ত পোস্টে বলা হয়, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মানুষকে এই ধরনের শিশু সম্পর্কে সচেতন করে তোলার জন্য এই পুতুলটি বানানো হয়েছে। ভাস্কর্যের নির্মাতা ভিনচেনজিনা কেয়ার ৭ বছর বয়স থেকেই পুতুলের ভাস্কর্য বানিয়ে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি উক্ত ভাস্কর্যের ছবি ব্যবহার করে বাস্তবিক শিশুটির সুস্থতা দানের প্রার্থনা করে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং, পুতুলের ভাস্কর্যের ছবিকে বাস্তব শিশুর ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- 𝕍𝕀ℕℂ𝔼ℕℤ𝕀ℕ𝔸 Doll Sculptor: Instagram post
- Chenza Dolls By Vincenzina Care: FAQ
- Vincenzina Care: Website