সম্প্রতি, ইসরাইলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি পরী- শীর্ষক ক্যাপশনে একটি শিশুর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
উক্ত ছবি সহকারে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শিশুটিকে ইসরায়েলি বাহিনী গ্রেফতারই করেনি। তাই তার ইসরায়েলি বাহিনীর কাছে থেকে মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে শিশুটির মা ফাতিমা শাহিনকে ইসরায়েলি বাহিনী গ্রেফতার করেছিল। ছবিটি সম্প্রতি ফাতিমার মুক্তি উপলক্ষে কারাগারের বাহিরে অপেক্ষায় থাকা তার শিশুকন্যা আইলুলের।
অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে “Reem Al-Harmi ريم الحرمي” নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টে (সাবেক টুইটার) আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, শিশুটি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর কাছে বন্দি ফাতিমা শাহিনের (৩৩) একমাত্র মেয়ে। শিশুটি তার মায়ের মুক্তি উপলক্ষে কারাগারের বাহিরে অপেক্ষায় ছিল।
পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতীয় গণমাধ্যম Radiance News এর ওয়েবসাইটে গত ২৫ নভেম্বর “First round of Palestinian prisoners liberated in swap – many see the open sky after years” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকেও শিশুটির বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়। পাশাপাশি শিশুটির এক পোশাক পরিহিত আরেকটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।
এছাড়া, একই তারিখে মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যম Khaleej Times এ “Watch: Palestinian mother’s emotional reunion with daughter released after 8 years” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে আলোচিত শিশুর আরও একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ফাতিমা শাহিন কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তার মেয়ে আইলুল তাকে আদর করছে।
উল্লেখ্য, ফাতিমা শাহীন চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল তারিখে ওয়েস্ট বেথলেহেম শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
মূলত, গত ২৫ নভেম্বর ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে বন্দি ফিলিস্তিনি নাগরিক ফাতিমা শাহীন মুক্তি পান। তার মুক্তি উপলক্ষে কারাগারের বাহিরে অবস্থান করছিলেন তার শিশুকন্যা আইলুল। পরবর্তীতে ঐ শিশুর মায়ের মুক্তির জন্য অপেক্ষারত একটি ছবিকেই ইসরায়েলি বাহিনীর কাছ থেকে কাছ থেকে মুক্তি পাওয়া শিশুর ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক প্রচার করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলও হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা চালায়। এতে দেশ দুইটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত নতুন মাত্রা পায়৷ পরবর্তীতে যুদ্ধ বিরতির প্রথম পর্যায়ের বন্দি আদান প্রদানের চুক্তি করে। এই চুক্তিতে ইজরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি দেওয়া ৩৯ জনকে মুক্তি দেয়। এই ৩৯ জনের মধ্যে ফাতিমা শাহীনও একজন।
সুতরাং, ইসরায়েলি বাহিনীর কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া শিশুর ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।