Home Blog Page 545

বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র

সম্প্রতি ‘নির্বাচন কমিশনকে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি বরং গত ২৪ মে বাংলাদেশকে নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টোনি ব্লিঙ্কেনের করা একটি টুইটের তথ্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে এই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

গুজবের সূত্রপাত 

অনুসন্ধানের শুরুতে নির্বাচন কমিশনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Screenshot: Facebook 

ভিডিওটিতে প্রদর্শিত ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘ইউএস ফরেইন সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন উনি আজকে টুইট করেছেন বিশেষ ল আনছে তারা, ভিসা রেস্ট্রিকশন আনছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনারদেরকে নিয়ে।’

তবে এই ভিডিওটি প্রকাশের তারিখে(২২ জুলাই) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টোনি ব্লিঙ্কেনের অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে এ সম্পর্কিত কোনো টুইট খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানে এই ভিডিওটির দীর্ঘ সংস্করণ বা মূল ভিডিওটি Mo Rahman Masum নামের একটি ফেসবুক (আর্কাইভ) পেজে গত ২৪ মে খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

ভিডিওটিতে প্রদর্শিত এই ব্যক্তি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা  দেওয়ার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টোনি ব্লিঙ্কেনের একটি টুইটের বিষয়ে উল্লেখ করেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টোনি ব্লিঙ্কেনের টুইটে কী আছে

উপরোক্ত ভিডিওটি প্রকাশের তারিখে অর্থাৎ গত ২৪ মে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টোনি ব্লিঙ্কেনের অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশের নতুন ভিসানীতি নিয়ে প্রকাশিত একটি টুইট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Twitter

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টোনি ব্লিঙ্কেন নতুন ভিসানীতির ঘোষণায় টুইট বার্তায় বলেন, নতুন নীতির আওতায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশিদের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে গত ২৫ মে ‘বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিলে ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Prothom Alo

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন নীতির আওতায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশিদের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। গত ২৪ মে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দিয়েছেন।

এছাড়াও, মার্কিন ভিসা নীতির ঘোষণা নিয়ে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ওয়েবসাইটে গত ২৪ মে প্রকাশিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আজ, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যকে সহায়তা করতে, আমি ইমিগ্রেশন এন্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের ধারা 212(a)(3)(C) (“3C”) এর অধীনে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করছি। এই নীতির অধীনে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে সক্ষম হবে। এর মধ্যে বর্তমান ও প্রাক্তন বাংলাদেশি কর্মকর্তা/কর্মচারী, সরকারপন্থি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী , বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র গত ৩ মে, ২০২৩ তারিখে বাংলাদেশ সরকারকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।

গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কাজের মধ্যে রয়েছে: ভোট কারচুপি , ভোটারদের ভয় দেখানো , সহিংসতার মাধ্যমে জনগণকে সংগঠিত হবার স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগ করতে বাধা দেয়া, এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখা। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমসহ সকলের। যারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায় তাদের সকলকে আমাদের সমর্থন দিতে আমি এই নীতি ঘোষণা করছি।’

তাছাড়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন ভিসা নীতি ঘোষণার পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল আই এর টকশো অনুষ্ঠান তৃতীয় মাত্রায় লাইভে যুক্ত হন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।

উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থাপক জিল্লুরের প্রশ্নের জবাবে ডোনাল্ড লু বলেন, “আমি একটি বিষয় খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, আজ আমরা কাউকে স্যাংশন দিচ্ছি না। সেক্রেটারি অফ স্টেট একটি নতুন নীতির ঘোষণা করেছেন, যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সেই সব ব্যক্তির ভিসা সুবিধায় বিধি–নিষেধ আরোপ করতে পারবে, যারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”

পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনের ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের ওয়েবসাইট (U.S. DEPARTMENT OF THE TREASURY), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ওয়েবসাইট (USA gov) এবং বাংলাদেশস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এর ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে এ ধরণের নিষেধাজ্ঞা বা তথ্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশিদের যুক্তরাষ্ট্র ভিসা না দেওয়ার ঘোষণা দিলেও সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচন কমিশন বা বাংলাদেশের কারো ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র তাদের নতুন ভিসা নীতির ঘোষণায় কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, দল বা সংগঠনের কথা উল্লেখ করেনি।

মূলত, গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনে সংসদ সদস্যের শূন্য পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন চলাকালে বনানীতে এক ভোটকেন্দ্রের বাহিরে নৌকার ব্যাজ পরিহিত লোকদের হাতে মারধরের শিকার হন নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। উক্ত বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই সম্প্রতি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দাবি করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিটি সঠিক নয় বরং গত ২৪ মে বাংলাদেশকে নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টোনি ব্লিঙ্কেনের করা একটি টুইটের তথ্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন কমিশন বা বাংলাদেশের কারো ওপরই যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।

প্রসঙ্গত, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র‌্যাব ও বাহিনীটির ছয়জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

উল্লেখ্য, পূর্বেও রাষ্ট্রপতিসহ বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দাবিতে ভুয়া তথ্য প্রচার করা হলে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

চটকদার থাম্বনেইলে ইইউ প্রতিনিধির বরাতে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও নির্বাচন নিয়ে গুজব

সম্প্রতি ‘প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করলে নির্বাচন হবে না পরিষ্কার জানালেন ইইউ প্রতিনিধি’ শীর্ষক থাম্বনেইল যুক্ত একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে। 

ইউটিউবে প্রচারিত উক্ত ভিডিওটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইইউ প্রতিনিধির বরাতে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করলে নির্বাচন হবে না শীর্ষক দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটিতে এমন কোনো তথ্য নেই  বরং ভিন্ন ভিন্ন  ব্যক্তির ধারণকৃত দুইটি আলাদা ভিডিও যুক্ত করে  উক্ত দাবিতে ভিডিওটি  প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া ডোনাল্ড লুও  ইইউ বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো প্রতিনিধি নন, প্রকৃতপক্ষে  তিনি যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। 

অপ্রাসঙ্গিক ছবিযুক্ত থাম্বনেইল

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে গত ১৬ জুলাই Al Minar নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করলে নির্বাচন হবে না পরিষ্কার জানালের ইইউ প্রতিনিধি‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওটি যাচাই করে দেখা যায়, ইইউ প্রতিনিধির বরাতে ভিডিওটি প্রচার করা হলেও ভিডিওটির থাম্বনেইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বাংলাদেশে সদ্য সফর করে যাওয়া মার্কিন প্রতিনিধি দলের প্রধান উজরা জেয়া, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস,অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করে ‘ব্রেকিং নিউজ | প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করলে নির্বাচন হবেনা | জানালেন ইইউ প্রতিনিধি ডোনাল্ড লু’ শীর্ষক শিরোনামে থাম্বনেইল তৈরি করে  উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হয়।

Screenshot: Al Minar Youtube Channel

অর্থাৎ থাম্বনেইলটিতে ইইউর কোনো প্রতিনিধির অস্তিত্ব নেই।

কি আছে ভিডিওতে?

এ নিয়ে অনুসন্ধানে  ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে  দেখা যায়, ভিডিওটি ভিন্ন দুইটি  ভিডিও ক্লিপের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে। যেখানে রয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ড.ফয়জুল হকের ভিন্ন দুইটি ভিডিও ক্লিপ।

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার ভিডিওতে কি আছে? 

অনুসন্ধানে গত ১৬ জুলাই ‘Rumeen’s Voice নামের একটি ফেসবুক পেজে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার না এলে সহসা আর নির্বাচন হচ্ছে না।‘ শীর্ষক একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সঙ্গে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Rumeen’s Voice

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বৈঠকের বিষয়ে কথা বলেন পাশাপাশি  এই বৈঠককে কেন্দ্র করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ নিয়েও আলোচনা করেন।

এর মধ্যে আছে জাতীয় দৈনিক মানবজমিনে গত ১৫ জুলাই ‘আগামী নির্বাচন জনগণের ভোটে আদৌ সম্ভব হবে কিনা জানতে চেয়েছে ইইউ: খসরু’ ও একইদিনে অনলাইন পোর্টাল বিডিনিউজ২৪ এ ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব: ইইউকে আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত দুইটি প্রতিবেদনও। 

তবে রুমিন ফারহানার বক্তব্যে ও প্রতিবেদন দুইটি থেকে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি, যা ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটির থাম্বনেইলে উপস্থাপিত তথ্যের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক। 

অর্থাৎ কোনো যোগসূত্র ছাড়াই রুমিন ফারহানার ভিডিওটিকে ইউটিউবের ‘প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করলে নির্বাচন হবে না পরিষ্কার জানালেন ইইউ প্রতিনিধি’ শীর্ষক থাম্বনেইলযুক্ত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

অনুরূপভাবে গত ১৬ জুলাই Dr. Fayzul Huq Thw Youth Leader Of Bangladesh এর ফেসবুক পেজে ইউটিউবে প্রচারিত দ্বিতীয় ভিডিওটির মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot:  Dr. Fayzul Huq Thw Youth Leader Of Bangladesh

৮ মিনিট ২ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে ড. ফয়জুল হক জামায়াতে ইসলামের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈঠক নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলাম বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না বলে ইইউকে জানিয়েছে ও এই সরকারের অধীনে  নির্বাচন হলে তাতে কোনো পর্যবেক্ষক না পাঠাতে অনুরোধ করেছে। 

পাশাপাশি তিনি জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোতে গত ১৫ জুলাই ‘এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না: ইইউ প্রতিনিধিদলকে জামায়াত’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পড়ে শোনান। তবে অনুসন্ধানে উক্ত প্রতিবেদনেও ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটির দাবির অনুরূপ কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ রুমিন ফারহানার ভিডিওটির মতোই এই ভিডিওটিও কোনো প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। 

ডোনাল্ড লু কি ইইউর প্রতিনিধি? 

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটিতে ডোনাল্ড লুকে ইইউর প্রতিনিধি হিসেবে দাবি করা হলেও রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ডোনাল্ড লু মূলত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। 

Screenshot: US Dept. Of State

প্রসঙ্গত, গত ৯ জুলাই থেকে ১০ দিনের সফরে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ছয় সদস্যের প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসে। তবে প্রতিনিধি দলটির এই সফরকালে বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যম সূত্রে ‘প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করলে নির্বাচন হবে না’ শীর্ষক তাদের এমন কোনো বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্প্রতি ১০ দিনের সফরে বাংলাদেশে আসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ছয় সদস্যের প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিদল। এ সময় তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করে। এরই প্রেক্ষিতে ইউটিউবে ইইউ প্রতিনিধি ডোনাল্ড লু’র বরাতে ‘প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করলে নির্বাচন হবে না’ শীর্ষক একটি দাবি প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইইউ প্রতিনিধিদল এমন কোনো মন্তব্য করেনি বরং দুইজন ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির ধারণকৃত আলাদা দুইটি ভিডিও যুক্ত করে চটকদার থাম্বনেইল তৈরি করে  উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র পরিচয়ও ভিডিওটিতে ভুলভাবে উপস্থাপন করে তাকে ইইউর প্রতিনিধি দাবি করা হয়েছে। 

সুতরাং, ইউটিউবে ইইউ প্রতিনিধি দলের বরাতে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করলে নির্বাচন হবে না শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য দেশি-বিদেশি বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের ছবির মাধ্যমে থাম্বনেইল তৈরি করে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

 তথ্যসূত্র

ব্রাজিলের ২০১৩ সালের বিশ্ব যুব দিবসের ছবিকে ১৯৯৪ সালের কনসার্টের ছবি দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি ‘১৯৯৪ সালে ব্রাজিলের একটা কনসার্টে ৩.৫ মিলিয়ন মানুষ এসেছে কনসার্ট দেখার জন্য’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ২০২২ সালে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ২০২১ সালে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত এই ছবিটি ১৯৯৪ সালে ব্রাজিলের কোনো কনসার্টে ৩.৫ মিলিয়ন মানুষের উপস্থিতির নয় বরং এটি ২০১৩ সালের ২৮ জুলাই ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে হওয়া বিশ্ব যুব দিবসের সমাপনী অনুষ্ঠানের ছবি।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে কানাডাভিত্তিক ক্যাথোলিক সংবাদের ওয়েবসাইট Catholic Register এ ২০১৩ সালের ২৮ জুলাই ‘Pope commissions young people to be missionaries without borders’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Catholic Register

ছবিটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি ২০১৩ সালের ২৮ জুলাই ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে হওয়া বিশ্ব যুব দিবসের সমাপনী অনুষ্ঠানের ছবি। 

পরবর্তী অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে America Magazine নামের একটি ওয়েবসাইটে ‘Pope Francis Calls for Solidarity and Dialogue’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

  Screenshot: America Magazine

এই প্রতিবেদন থেকেও ছবিটির বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, প্রচারিত ছবিটি ১৯৯৪ সালে ব্রাজিলের কোনো কনসার্টের নয়।

মূলত, সম্প্রতি ১৯৯৪ সালে ব্রাজিলের একটি কনসার্টে ৩.৫ মিলিয়ন মানুষ উপস্থিত হয়েছিল দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ছবিটি ১৯৯৪ সালে ব্রাজিলের কোনো কনসার্টে ৩.৫ মিলিয়ন মানুষের উপস্থিতির নয়। প্রকৃতপক্ষে এটি ২০১৩ সালের ২৮ জুলাই ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে হওয়া বিশ্ব যুব দিবসের সমাপনী অনুষ্ঠানের ছবি।

সুতরাং, ব্রাজিলে ২০১৩ সালের বিশ্ব যুব দিবসের অনুষ্ঠানের একটি ছবিকে দেশটির ১৯৯৪ সালের কনসার্টের ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

ক্রিকেটার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী কোরআনের হাফেজ নয়

0

সম্প্রতি, ক্রিকেটার মোহাম্মদ মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী বাংলাদেশ দলের একমাত্র কোরআনের হাফেজ দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ক্রিকেটার মোহাম্মদ মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী হাফেজ নয় বরং কোনোপ্রকার তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই বানোয়াট এই তথ্যটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের জন্যে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে   ক্রিকেটার মোহাম্মাদ মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে আজ ২৩ জুলাই সন্ধায় প্রকাশিত একটি পোস্ট  খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

পোস্টটিতে তিনি লিখেছেন, “কিছুদিন ধরে দেখছি আমাকে নিয়ে একটি নিউজ ভাইরাল হচ্ছে যে আমি হাফেজ কিন্তু আসলে আমি হাফেজ নয়। হাফেজ হওয়া একটা নেয়ামতের বিষয় যা আল্লাহ সবাইকে দেন না এবং আমিও সেই নেয়ামতের অংশ হতে পারিনি এখনো, তবে ইচ্ছে অনেক আছে (ইন শা আল্লাহ)।”

অর্থাৎ, ক্রিকেটার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী কোরআনের হাফেজ নয়।

মূলত, গত কয়েকদিন যাবৎ বাংলাদেশের ক্রিকেটার মৃত্যুঞ্জয়কে ক্রিকেট দলের একমাত্র কোরআনে হাফিজ দাবি করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, উল্লিখিত দাবিটি সঠিক নয়। আলোচিত বিষয়ে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে করা এক পোস্টে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী বিষয়টিকে মিথ্যা বলে উল্লেখ করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালেও একই দাবিটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

তথ্যসূত্র

  • Mohammad Mrittunjoy Chowdhury Facebook Account : Post

ডেইলি স্টারের ফটোকার্ড নকল করে হিরো আলমের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার 

0

সম্প্রতি, ইংরেজি জাতীয় দৈনিক ডেইলি স্টারের একটি ফটোকার্ড ব্যবহার করে আলোচিত ব্যক্তি ও ঢাকা-১৭ আসন উপ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমকে উদ্ধৃত করে ‘ঢাকা ১৭ আসনে আমাকে বলা হয়েছিল মার না খেলে নেতা হওয়া যায়না, রক্ত না জড়ালে ইতিহাস লেখা যায়না। তাই আমি সেদিন সাদা পাঞ্জাবি পরেছিলাম। যেন বিশ্ব আমার রক্তমাখা পাঞ্জাবি মিডিয়ায় ফলাওভাবে প্রচার করতে পারে’ শীর্ষক একটি মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট(আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে হিরো আলমকে নিয়ে এমন কোনো ফটোকার্ড কিংবা সংবাদ প্রচার করা হয়নি বরং ভিন্ন একটি ফটোকার্ড এডিট করে দাবির বিষয়টি প্রচার করা হচ্ছে।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ ও ডেইলি স্টারের লোগোর সূত্রে গণমাধ্যমটির বাংলা সংস্করণের ফেসবুক পেজে গত ২২ জুলাই হিরো আলমকে নিয়ে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। এই ফটোকার্ডটির সঙ্গে হিরো আলমের মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটির কিছু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তবে ফটোকার্ড দুইটিতে থাকা হিরো আলমের বক্তব্যের মধ্যে ভিন্নতা দেখা যায়। 

Image Collage: Rumor Scanner 

ডেইলি স্টারে প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে হিরো আলমের বক্তব্য ছিল, ‘একজন নারী ভোটারকে দিয়ে ৪০টি ভোট দেওয়ানো হয়েছে। ১২-১৩ বছরের ছেলে-মেয়েদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকিয়ে ভোট দেওয়ানো হয়েছে। যারা ভোট দিয়েছেন তাদের অনেকের নাম-ঠিকানা ভোটার তালিকায় ছিল না। এসবের ভিডিও ফুটেজ আমার কাছে আছে।’

বিপরীতে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে হিরো আলমের বক্তব্যটি হলো, ‘ঢাকা ১৭ আসনে আমাকে বলা হয়েছিল মার না খেলে নেতা হওয়া যায়না, রক্ত না জড়ালে ইতিহাস লেখা যায়না। তাই আমি সেদিন সাদা পাঞ্জাবি পরেছিলাম। যেন বিশ্ব আমার রক্তমাখা পাঞ্জাবি মিডিয়ায় ফলাওভাবে প্রচার করতে পারে।’

এছাড়া ডেইলি স্টারের ফেসবুক পেজে গত ২২ জুলাই উক্ত ফটোকার্ডটি ছাড়া হিরো আলমকে নিয়ে করা আর কোনো ফটোকার্ডও খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, ডেইলি স্টারের বাংলা সংস্করণের সম্পাদক গোলাম মোর্তোজাও ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনকে ঘিরে ডেইলি স্টারের লোগো ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটিকে মিথ্যা বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।

অর্থাৎ হিরো আলমকে নিয়ে করা ডেইলি স্টারের ফটোকার্ডটিতে তার বক্তব্যটির উপর ভিন্ন আরেকটি বক্তব্য জুড়ে দিয়ে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

তাছাড়া, রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে হিরো আলমের ‘ঢাকা ১৭ আসনে আমাকে বলা হয়েছিল মার না খেলে নেতা হওয়া যায় না, রক্ত না জড়ালে ইতিহাস লেখা যায়না।…..’ এরূপ কোনো মন্তব্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হিরো আলমের মন্তব্যগুলো দেখুন:

মূলত, গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন হিরো আলম। নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলাকালে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে হামলার শিকার হন তিনি। এরই প্রেক্ষিতে ডেইলি স্টারের একটি ফটোকার্ডে হিরো আলমের ‘ঢাকা ১৭ আসনে আমাকে বলা হয়েছিল মার না খেলে নেতা হওয়া যায়না, রক্ত না জড়ালে ইতিহাস লেখা যায়না। তাই আমি সেদিন সাদা পাঞ্জাবি পরেছিলাম। যেন বিশ্ব আমার রক্তমাখা পাঞ্জাবি মিডিয়ায় ফলাওভাবে প্রচার করতে পারে’ শীর্ষক একটি মন্তব্য ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ডেইলি স্টারের নামে প্রচারিত উক্ত ফটোকার্ডটি এডিটেড এবং হিরো আলমও এমন কোনো বক্তব্য দেননি।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের ফটোকার্ড সম্পাদনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত একাধিক গুজব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন 

সুতরাং, ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনের দিন হিরো আলমের সাদা পাঞ্জাবি পরার কারণ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া।

তথ্যসূত্র

হিরো আলমকে দেখতে হাসপাতালে যাননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সম্প্রতি, হিরো আলমকে দেখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালে গিয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালে হিরো আলমকে দেখতে যাননি বরং প্রধানমন্ত্রীর ২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহতদের হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার পুরোনো একটি ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে সেই সাথে ইনডিপেনডেন্ট টিভির পুরোনো সংবাদের একটি ক্লিপ যুক্ত করে উক্ত ভিডিওটি তৈরী করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওটি (আর্কাইভ) পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটির শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হিরো আলমকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার কোনো দৃশ্য দাবিতে একটি ছবি দেখানো হয়েছে। এছাড়াও প্রচারিত এই ভিডিওটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিরো আলমকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

Screenshot: Facebook 

পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর এর ওয়েবসাইটে ২০১৩ সালের ২৮ এপ্রিল ‘হাসপাতালে গিয়ে আহতদের খোঁজ নিলেন প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটির সদৃশ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: bdnews24.com

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেসময় রানাপ্লাজা ধসের ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নিতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

রিউমর স্ক্যানারের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত এই ছবিটি থেকে আহত মেয়েটির ছবি সরিয়ে হিরো আলমের ছবি বসিয়ে প্রচার করা হয়েছে।

Image Comparison by Rumor Scanner 

অর্থাৎ, হিরো আলম কে প্রধানমন্ত্রীর হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার দাবিতে প্রচারিত ছবিটি আসল নয়।

পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ইনডিপেনডেন্ট টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ‘ওবায়দুল কাদেরকে দেখতে হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Independent TV YouTube 

এই প্রতিবেদনের শুরুর ১৫ সেকেন্ডের সাথে আলোচিত ভিডিওটির শুরুর অংশের কথোপকথনের অডিও’র মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়াও গত ৪ বছর আগে ইনডিপেনডেন্ট টিভিতে প্রচারিত এই ভিডিওটির সংবাদ পাঠিকার সাথেও সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সংবাদ পাঠিকার হুবহু মিল পাওয়া যায়।

 Video Comparison by Rumor Scanner 

পাশাপাশি মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হিরো আলমকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি ঢাকা ১৭ আসনের নির্বাচনে সদ্য পরাজিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী এবং টিকটকার হিরো আলমকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালে দেখতে গিয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত এই দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহতদের হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার একটি ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে সেখানে এডিট করে হিরো আলমের ছবি বসিয়ে, সেই সাথে ইনডিপেনডেন্ট টিভির সংবাদের একটি পুরোনো ক্লিপ বসিয়ে উক্ত ভিডিওটি তৈরী করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত,গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনে ভোট চলাকালে সংসদ সদস্য প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম বেলা সোয়া তিনটার দিকে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে সেখানে নৌকা মার্কার প্রার্থীর ব্যাজ পরিহিত একদল লোক পেছন থেকে তাঁর উদ্দেশ্যে গালাগাল করতে থাকেন এবং কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা হিরো আলমকে ঘিরে রেখে স্কুলের ফটকের দিকে নিয়ে যান। পরে নৌকার ব্যাজধারী ব্যক্তিরা ধাওয়া দিয়ে তাঁকে বাইরে আনার পর রাস্তায় তার ওপর হামলা করেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় হিরো আলমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে হামলায় জড়িত অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একাধিকবার হিরো আলমকে জড়িয়ে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, হিরো আলমকে দেখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালে গিয়েছেন শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের ভুয়া দাবি

সম্প্রতি, “বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে সরকারের” শীর্ষক শিরোনাম এবং “এইমাত্র গ্রেফতার হাসিনা বিচার করবে জনগণ” শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেফতার হয়নি বরং কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ছবি দিয়ে বিভ্রান্তিকর থাম্বনেইল ব্যবহার করে তৈরী ভিডিওর মাধ্যমে উক্ত ভুয়া দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

গত ২১ জুলাই AK Azad নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে “বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে সরকারের” শীর্ষক শিরোনাম এবং “এইমাত্র গ্রেফতার হাসিনা বিচার করবে জনগণ” শীর্ষক থাম্বনেইলে আলোচিত ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়। 

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ৮ মিনিট ১ সেকেন্ডের আলোচিত ভিডিওটিতে কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই মনগড়া কিছু কথা উপস্থাপক বলে গিয়েছেন।

ভিডিওর শুরুতে বলা হয়, বিদায়ী ঘন্টা বেজে গেছে সবশেষে দেখবেন বাংলাদেশের গণমাধ্যম কতটা স্বাধীন- জানতে চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। 

বিস্তারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে শুরুতে বলা শিরোনামের সাথে সম্পর্কিত কোনো তথ্য কিংবা কোনো বিশ্বস্ত সূত্র পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, ভিডিওটির থাম্বনেইলে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ছবি ব্যবহার করতে দেখা যায়।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতারের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে তা নিয়ে দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যমে তথ্য প্রকাশ হওয়া অনুমেয়। তবে দেশীয় কোনো গণমাধ্যমে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেফতার হলে স্বাভাবিকভাবেই তিনি জেলে থাকার কথা। ২১ জুলাই বিকেল ৩:২৯ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতারের তথ্যটি ফেসবুকে প্রচার করা হলেও ঐ দিন রাতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপের (জিসিআরজি) একটি বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশ নিতে দেখা যায়। 

Screenshot: bdnews24

পাশাপাশি, শনিবার (২২ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সেনা নির্বাচন বোর্ড-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেও দেখা যায়।   

Screenshot: Prothomalo 

মূলত, “এইমাত্র গ্রেফতার হাসিনা, বিচার করবে জনগণ” শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিওর মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেফতার হননি। তিনি গতকাল ও আজ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সশরীরে এবং ভার্চুয়ালি যোগ দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে  পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কিছু ছবি দিয়ে ভুয়া দাবি সম্বলিত থাম্বনেইল ব্যবহার করে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ছবি ও বিভ্রান্তকর থাম্বনেইল ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে ইন্টারনেটে প্রচারিত বেশ কয়েকটি ভিডিও যাচাই করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করার দাবিটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সামুদ্রিক শামুকের ছবিকে শঙ্খপুষ্প ফুল দাবিতে প্রচার

0

গেল কয়েক বছর ধরেই শঙ্খপুষ্প ফুল দাবিতে একটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি হিন্দুপুরানে বর্ণিত ফুল যা ৫০ বছরে একবার ফোটে। মহীশূ্রের রাজবাড়িতে দুর্লভ এই ফুলের গাছ আছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ) এবং 

উক্ত দাবিতে ২০২০ সালের পোস্ট দেখুন-  এখানে(আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে ২০১৮ সালের পোস্ট দেখুন-  এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচ্য ছবিটি শঙ্খপুষ্প নামক কোনো ফুলের ছবি নয় বরং এটি Hirtomurex teramachii নামের একধরনের সামুদ্রিক শামুক জাতীয় প্রাণির ছবি। 

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, আলোচ্য ছবিটিকে Chong Chen নামের ফেসবুক প্রোফাইলে ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিলের একটি পোস্টে (আর্কাইভ) খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায় যে, Hirtomurex teramachii নামের এই প্রজাতিটি উত্তর পূর্ব তাইওয়ান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। 

Source: Chong Chen Facebook Account

পরবর্তীতে জানা যায়, ড. চং চেন একজন জাপানি জীববিজ্ঞানী। যিনি গভীর সমুদ্র ও মলাস্কা পর্বের প্রাণিদের নিয়ে গবেষণা করছেন। জীববৈচিত্র্য এবং তার বিবর্তন নিয়ে আগ্রহী চং চেন নিজেও একজন শঙ্খ সংগ্রাহক এবং ফটোগ্রাফার। ড. চং চেনের প্রোফাইলে তার সংগ্রহ করা বহু শঙ্খজাতীয় প্রাণির ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

Source: squamiferum.net

এছাড়াও, ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আলোচ্য ছবিটি ২০১৬ সালে ক্রিসটফ এভোন সংকলিত Gastropoda Pacifica নামক একটি বৈজ্ঞানিক সংকলনে খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত সংকলনের ৪৬৬ নম্বর পাতার বিবরণী থেকে জানা যায়, সামুদ্রিক এই প্রজাতির শামুকের বৈজ্ঞানিক নাম Hirtomurex teramachii. বিংশ শতকের বিখ্যাত জাপানি পেইন্টার এবং শঙ্খ সংগ্রাহক Akibumi Teramachi এর নামানুসারে এই শামুক জাতীয় প্রাণির নামকরণ করা হয়। 

Source: Gastropoda Pacifica

Gastropoda Pacifica থেকে আরো জানা যায়, সংকলনটিতে মলাস্কা পর্বের বিভিন্ন প্রজাতির তথ্য সংকলিত রয়েছে। এছাড়াও, উক্ত সংকলনের বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর (স্পেসিমেন) ছবিসূত্র হিসেবে বিজ্ঞানী চং চেন এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। 

পাশাপশি, শঙ্খপুষ্প নামে যে ফুলের ছবি দাবিতে উক্ত ছবিটি প্রচার করা হচ্ছে সে নামের ফুলের ব্যাপারে কোনো তথ্য খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম। 

তবে, ‘শঙ্খপুষ্পি‘ নামের একধরনের ফুলের সন্ধান পাওয়া যায়। কিন্তু, শঙ্খপুষ্পি ফুলের বর্ণনা হতে জানা যায়, এটি একটি পেরেনিয়াল হার্ব বা বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। উদ্ভিদটিতে বেশকিছু ঔষধি গুণাগুণ বিদ্যমান। তবে, ৫০ বছরে একবার এ ফুল ফোটে- এ জাতীয় কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গেল কয়েক বছর ধরেই শঙ্খপুষ্প ফুল দাবিতে একটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি হিন্দুপুরানে বর্ণিত ফুল যা ৫০ বছরে একবার ফোটে। মহীশূ্রের রাজবাড়িতে দুর্লভ এই ফুলের গাছ আছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়৷ প্রচারিত ছবিটি Hirtomurex teramachii নামের এক সামুদ্রিক শামুক জাতীয় প্রাণির। তাছাড়া, শঙ্খপুষ্প নামে কোনো ফুলের তথ্য পাওয়া না গেলেও ‘শঙ্খপুষ্পি’ নামের একধরনের ফুলের সন্ধান পাওয়া যায় যা একটি পেরেনিয়াল হার্ব বা বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। কিন্তু উদ্ভিদটিতে ৫০ বছরে একবার ফুল ফোটে- এ জাতীয় কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, সামুদ্রিক একটি শামুকের ছবিকে হিন্দু পুরাণে বর্ণিত শঙ্খপুষ্প ফুলের ছবি দাবি করে বিগত কয়েক বছর ধরে প্রচার হয়ে আসছে; যা সম্পূর্ন মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ডেঙ্গুর প্রতিষেধক হিসেবে নারকেল তেল ব্যবহারের দাবিটি মিথ্যা 

0

বিগত কয়েক বছর ধরেই,‘ডেঙ্গু মশা আমাদের হাঁটুর সমপরিমাণ পর্যন্ত উড়তে পারে এবং নারিকেল তেল ডেঙ্গুর প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে’ শীর্ষক একটি দাবি ভারতের চিকিৎসক ডাঃ বি সুকুমারের বরাতে ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে।

চলতি বছর ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

২০২২ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 
২০২১ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 
২০২০ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 
২০১৯ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডেঙ্গু মশার বিষয়ে ডাঃ সুকুমার উক্ত বক্তব্যটি দেননি বরং তার নাম ব্যবহার করে ভিত্তিহীন এই পরামর্শটি গেল কয়েক বছর ধরে প্রচার হয়ে আসছে।  

দাবিটি যাচাইয়ে অনুসন্ধান করে মূলধারার কোনো গণমাধ্যম এবং নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে উক্ত বক্তব্য সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে অন্ধ্র প্রদেশের ত্রিপাঠির সাই সুধা হাসপাতালের কনসালটেন্ট অর্থোপেডিক সার্জন ডাক্তার বি সুকুমারের সাথে যোগাযোগ করা হয়। 

ডাঃ বি সুকুমার রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “এই বক্তব্য আমার নয়। অন্য কেউ আপডেট করেছে, এটি মিথ্যা তথ্য। এই (মিথ্যা তথ্য) আর প্রচার করবেন না।”

ডেঙ্গু চিকিৎসায় নারকেল তেল ব্যবহার করা যায় কিনা এমন জিজ্ঞাসায় ডাঃ সুকুমার বলছেন, “ডেঙ্গু থেকে বাঁচার জন্য নারকেল তেল কোনোভাবেই সাহায্য করে না। এক্ষেত্রে আপনার (রোগীর) যৌক্তিক চিকিৎসা দরকার।”

পরবর্তীতে, ডেঙ্গুর চিকিৎসার সাথে নারকেল তেল ব্যবহারের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে ডেঙ্গুর চিকিৎসা বিষয়ক দিক নির্দেশনাগুলো পড়ে দেখেছি আমরা। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ডেঙ্গু জ্বরের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো ভ্যাকসিন বা অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা নেই। জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়। অ্যাসপিরিন এবং নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্রেমেটরি ড্রাগ (এনএসএআই) যেমন আইবুপ্রোফেন এড়ানো উচিত।  

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে পাঁচটি পরামর্শের কথা উল্লেখ করেছে ওয়েবসাইটে। 

সেগুলো হলো: এমন পোশাক পড়া যা শরীরকে ভালোভাবে ঢেকে রাখে (বিশেষ করে পা), দরজা-জানালায় পর্দা লাগানো যাতে কীটপতঙ্গ ও মশা বাহিরে থাকে, পোকামাকড় নিরোধক প্রয়োগ করা, মশারির ভেতরে ঘুমানো (রাতে এবং দিনেও) এবং মশার কামড়ে পরিবারের কেউ সংক্রমিত হলে সংক্রমণ প্রতিরোধে সতর্কতা অবলম্বন করা। 

Screenshot: WHO Website 

এই পরামর্শগুলোর মধ্যে নারকেল তেল সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য উল্লেখ নেই। 

তাছাড়া, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে কিওয়ার্ড সার্চ করেও নারকেল তেল ও ডেঙ্গু সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এমনকি অনুসন্ধানে এ বিষয়ে বৈজ্ঞানিক কোনো গবেষণারও উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গেল কয়েক বছর ধরেই ভারতের চিকিৎসক ডাঃ বি সুকুমারের বক্তব্য দাবি করে ‘ডেঙ্গু মশা আমাদের হাঁটুর সমপরিমাণ পর্যন্ত উড়তে পারে এবং নারিকেল তেল ডেঙ্গুর প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে’ শীর্ষক একটি দাবি প্রচার হয়ে আসছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডাঃ বি সুকুমার এমন কোনো বক্তব্য দেননি যা তিনি নিজেই রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন। তাছাড়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রেই ডেঙ্গু প্রতিষেধকের সাথে নারকেল তেলের সংশ্লিষ্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি।  

প্রসঙ্গত, ডেঙ্গুর বিষয়ে বিভিন্ন মিথ নিয়ে পূর্বে ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 
সুতরাং, ডেঙ্গু মশা হাঁটুর সমপরিমাণ পর্যন্ত উড়তে পারে এবং নারিকেল তেল ডেঙ্গুর প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে শীর্ষক একটি বক্তব্য ভারতের চিকিৎসক ডাঃ বি সুকুমার দিয়েছেন বলে প্রচার হয়ে আসছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Dr. B Sukumar Statement
  • World Health Organisation (WHO): Website 
  • Rumor Scanner’s Own Analysis 

পাকিস্তানে সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টি ও বন্যার খবরে গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি

পাকিস্তানের লাহোরে চলতি মাসে (জুলাই) রেকর্ড বৃষ্টির ঘটনায় বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ১০ টি ভিন্ন ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। 

ছবিগুলো ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সময় টিভি (১), সময় টিভি (২), যমুনা টিভি, বাংলাভিশন, নিউজ২৪, ঢাকা রিপোর্ট২৪, রেডিও টুডে (১), রেডিও টুডে (২), ইনকিলাব (১), ইনকিলাব (২), ইনকিলাব (৩), সাম্প্রতিক দেশকাল, যায়যায়দিন, বায়ান্ন টিভি, ঢাকা মেইল, বাংলাদেশ জার্নাল, বার্তা২৪, আমার সংবাদ, ঢাকা পোস্ট (১), ঢাকা পোস্ট (২), এবিনিউজ২৪, জনবাণী, সংবাদ, বিবার্তা২৪, নিউজনাউ২৪, সময়ের আলো, বাংলাদেশ মোমেন্টস, নিউজজি ২৪। 

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং পূর্বের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ছবিকে সাম্প্রতিক ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

ছবি যাচাই ০১

Screenshot: Somoy TV

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সময় টিভি, ঢাকা রিপোর্ট২৪

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান Getty Images এর ওয়েবসাইটে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Getty Images

সেখানে উল্লেখিত বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এই ছবিটির ফটোগ্রাফার এএফপির আরিফ আলী। এটি ২০২০ সালের ২০ আগস্ট সংঘটিত ভারী বৃষ্টিপাতে লাহোরের একটি রাস্তায় গাড়ি এবং গাছপালা ডুবে যাওয়ার ছবি। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি পাকিস্তানে জুলাইয়ের বন্যার ঘটনার নয়।

ছবি যাচাই ০২

Screenshot: Radio Today

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রেডিও টুডে, ইনকিলাব, ঢাকা মেইল, বার্তা২৪, আমার সংবাদ, সাম্প্রতিক দেশকাল, নিউজনাউ২৪

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম Arab News এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: ARAB NEWS

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ২০১৯ সালে পাকিস্তানে রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ার ছবি। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি পাকিস্তানে জুলাইয়ের বন্যার ঘটনার নয়।

ছবি যাচাই ০৩

Screenshot: Bangla Vision

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাভিশন, যায়যায়দিন, রেডিও টুডে

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম Al Jazeera-র ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ০৯ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Al Jazeera 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ২০২০ সালে পাকিস্তানে সংঘটিত মৌসুমী বৃষ্টি এবং বন্যায় রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ার ছবি।

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি পাকিস্তানে জুলাইয়ের বন্যার ঘটনার নয়।

ছবি যাচাই ০৪

Screenshot: The Daily Inqilab

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইনকিলাব

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ইমেজ শেয়ারিং সাইট Alamy তে ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই প্রকাশিত আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: alamy

ছবিটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ছবিটি ২০১৮ সালের ০৩ জুলাই পাকিস্তানের লাহোরে বন্যায় প্লাবিত একটি রাস্তায় ট্রাক উল্টে যাওয়ার ঘটনায় ধারণকৃত। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি পাঁচ বছরের পুরোনো। 

ছবি যাচাই ০৫

Screenshot: Somoy TV

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সময় টিভি, বাংলাদেশ জার্নাল, বায়ান্ন টিভি। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা AP এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: AP

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিটি ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট পাকিস্তানের ভারী বর্ষণে ফলে সৃষ্ট বন্যার ঘটনায় রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ার সময়ের।

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

 ছবি যাচাই ০৬

Screenshot: Jamuna TV

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যমুনা টিভি। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে Getty Images এর ওয়েবসাইটে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Getty Images

সেখানে উল্লিখিত বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই পাকিস্তানের লাহোরে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ডুবে যাওয়া রাস্তার ছবি।

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটিও পাকিস্তানে সাম্প্রতিক বন্যার ঘটনার নয়।

ছবি যাচাই ০৭

Screenshot: NEWS24

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নিউজ২৪, ইনকিলাব, ঢাকা পোস্ট, এবিনিউজ২৪, জনবাণী, সংবাদ, বিবার্তা২৪, নিউজজি ২৪। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম Latestly এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: LATESTLY

জলাবদ্ধতার ঘটনায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে ফাইল ছবি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। সে হিসেবে ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি পাকিস্তানে জুলাইয়ের বন্যার ঘটনার নয়।

ছবি যাচাই ০৮

Screenshot: Somoyer Alo

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সময়ের আলো। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম Reuters এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২৯ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Reuters 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট পাকিস্তানে বৃষ্টি ও বন্যায় একটি প্লাবিত রাস্তায় লোকজনের আসবাবপত্র বহন করে নিয়ে যাওয়ার সময়ের দৃশ্য এটি।

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি পাকিস্তানে জুলাইয়ের বন্যার ঘটনার নয়।

ছবি যাচাই ০৯

Screenshot: Bangladesh moments

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মোমেন্টস। 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে Getty Images এর ওয়েবসাইটে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Getty Images

সেখানে উল্লেখিত বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি ২০২২ সালের ২৬ আগস্ট পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশে ভারী বর্ষণের ফলে ডুবে যাওয়া জায়গা থেকে একটি স্যাটেলাইট ডিশে করে বাচ্চাদের সরিয়ে নেওয়ার সময়ের ছবি।

ছবি যাচাই ১০

এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ঢাকা পোস্ট

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম REUTERS এর ওয়েবসাইটে ২০১১ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: REUTERS

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ২০১০ সালের জুলাইয়ে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের নওশেরা জেলায় অবস্থিত রিসালপুরে একটি প্লাবিত রাস্তা দিয়ে বাসিন্দারা তাদের জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার সময়ের ছবি।

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি পাকিস্তানে জুলাইয়ের বন্যার ঘটনার নয়।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিগুলোরর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি বরং কিছু গণমাধ্যমে ছবিগুলো সংগৃহীত এবং কোনো কোনো গণমাধ্যমে ছবির ক্যাপশনে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিগুলো ব্যবহার করে সংগৃহীত উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্যই উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই ছবিগুলো পাকিস্তানের লাহোরে সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাতের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া অমূলক নয়।

মূলত, চলতি জুলাই মাসে পাকিস্তানের লাহোরে ভারী বৃষ্টিপাত এবং তা থেকে সৃষ্ট বন্যার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে পাকিস্তানে বন্যা ও ভারী বর্ষণে রাস্তা ডুবে যাওয়ার পুরোনো ১০ টি ভিন্ন ঘটনার ছবি ব্যবহার করা হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্যও দেওয়া হয়নি। এতে করে স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টিপাতের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বে কঙ্গোতে ভারী বর্ষণে বন্যার ঘটনায় গণমাধ্যমে একাধিক পুরোনো ছবি ব্যবহার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, পাকিস্তানে সাম্প্রতিক সময়ে ভারী বৃষ্টি ও বন্যার ঘটনায় বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একাধিক পুরোনো ঘটনার ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র