Home Blog Page 546

কুমিল্লায় অস্ত্র মহড়ার এই ভিডিওটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনের নয়

গতকাল ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৮ আসনে (বরুড়া উপজেলা) ‘ডামি নির্বাচনে অস্ত্র হাতে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার খোশবাস স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে সোনার ছেলেরা’ শীর্ষক দাবিতে কয়েকজন যুবকের অস্ত্র হাতে মহড়া দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

কুমিল্লায় অস্ত্র মহড়ার

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত এই ভিডিওটি গতকাল অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ের নয় বরং এটি ২০২৩ সালের জাতীয় শোক দিবসের ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিও।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘gazi blog’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ০৫ সেপ্টেম্বর ‘অস্ত্র হাতে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার খোশবাস স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে সোনার ছেলেরা অস্ত্র হাতে’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: gazi blog YouTube

সেখানে উল্লেখিত তথ্য থেকে জানা যায়, অস্ত্র হাতে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার খোশবাস স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে মহড়া দেওয়ার সময়ে ধারণকৃত ভিডিও এটি। তবে সেখানে উক্ত ভিডিওটি’র সময়কাল উল্লেখ করা হয়নি।

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি অন্তত ৪ মাস পূর্বের।

পরবর্তীতে ভিডিওটি’র বিষয়ে আরও তথ্য জানতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার একাধিক গণমাধ্যমে এসম্পর্কিত কয়েকটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কুমিল্লার বরুড়ায় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের একটি ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে বরুড়া উপজেলার খোশবাস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষের একটি ভিডিও পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমো ভাইরাল হয়। ভিডিওতে অস্ত্রসহ স্বেচ্ছাসেবক লীগ রিয়াজ ও ফরহাদকে মহড়া দিতে দেখা গেছে।

মূলত, ২০২৩ সালের জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কুমিল্লার বরুড়ায় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের একটি ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে বরুড়া উপজেলার খোশবাস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময়ে কয়েকজন যুবকের অস্ত্র হাতে মহড়া দেওয়ার একটি ভিডিও সেসময় ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে তাতে ‘ডামি নির্বাচন অস্ত্র হাতে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার খোশবাস স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে সোনার ছেলেরা’ শীর্ষক শিরোনাম যুক্ত করে ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গতকাল ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ইন্টারনেটে প্রচারিত একাধিক ভুল তথ্য শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ২০২৩ সালে জাতীয় শোক দিবসের ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে সেসময়ের সংঘর্ষের ঘটনার একটি ভিডিওকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনের ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সমর্থককে সাকিবের চড় মারার ভিডিওটি ভোটের দিনের নয়

গত ০৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটের এই দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় দলের ক্রিকেটার ও মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাকিব আল হাসানের একটি ভিডিও একাধিক গণমাধ্যমসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত ভিডিওটি প্রচার করে দাবি করা হয়, ‘৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন নিজ আসনের একটি কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে ভীড়ের মধ্যে পড়েন সাকিব। যেখানে তাকে ঘিরে ধরেন ভক্তরা। একপর্যায়ে উপস্থিত জনতার হুড়োহুড়িতে মেজাজ হারিয়ে একজনকে চড় মেরে বসেন তিনি।’

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন নয়া দিগন্ত, আমাদের সময়.কম, প্রতিদিনের বাংলাদেশ (ফেসবুক), একাত্তর টিভি, ইত্তেফাক, যুগান্তর, সময়ের কণ্ঠস্বর, জুম বাংলা, খবরের কাগজ, প্রতিদিনের সংবাদ, ঢাকা প্রকাশ, ভোরের কাগজ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, সময়ের আলো, বাংলাদেশ মোমেন্টস, বাংলা ইনসাইডার, আমার সংবাদ, বার্তা বাজার, সংবাদ প্রকাশ, একুশে সংবাদ, ঢাকা ট্রিবিউন (ফেসবুক), দীপ্ত টিভি (ফেসবুক), ফেস দ্যা পিপল (ফেসবুক), সমকাল, মানবজমিন, দেশ টিভি (ইউটিউব), ইনকিলাব, দৈনিক করতোয়া, আজকালের খবর, মাই টিভি (ফেসবুক), বার্তা২৪ (ইউটিউব), এসএ টিভি (ইউটিউব), সোনালী নিউজ, নয়া শতাব্দী, বাংলা আউটলুক, বাংলাদেশ টুডে, বিএনএনিউজ২৪, সময় জার্নাল, স্টার সংবাদ , মোহনা টিভি, দৈনিক শিক্ষা, এমটিনিউজ২৪, ডেল্টা টাইমস, প্রবাসীর দিগন্ত, বিডি২৪রিপোর্ট, ঢাকা রিপোর্ট২৪, বিবার্তা২৪, গ্লোবাল টিভি, তরঙ্গ নিউজ, নাগরিক টিভি (ইউটিউব), বায়ান্ন টিভি (ইউটিউব)।

এছাড়া এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করে পরবর্তীতে ডিলিট করেছে এনটিভি এবং বাংলাদেশ জার্নাল।

 সাকিবের চড়

একই দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন এই সময়, ওয়ান ইন্ডিয়া এবং হিন্দুস্তান টাইমস

গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজসহ এ সংক্রান্ত অন্যান্য ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকের কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবের কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভোটের দিন সমর্থককে সাকিবের চড় দাবিতে ভাইরাল ভিডিওটি ভোটের দিনের নয় বরং অন্তত গত ০৩ জানুয়ারি থেকে ভিডিওটি ইন্টারনেটে থাকার প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার।

অনুসন্ধানের শুরুতে খেলা ভিত্তিক অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘অলরাউন্ডার’ এর সাংবাদিক আসিফ আফনান পিয়ালের একটি পোস্ট নজরে আসে আমাদের৷ 

পিয়াল গতকাল সন্ধ্যায় দেওয়া পোস্টে (আর্কাইভ) জানান, সাকিবের ওই থাপ্পড়ের ঘটনা আরো সপ্তাহখানেক আগের, ফরিদপুরের।

Screenshot: Facebook 

আমরা পিয়ালের তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধান করতে গিয়ে একই দিন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল২৪’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ‘সাকিবের থাপ্পড় কান্ডের নেপথ্য সত্য’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাই।  

ভিডিওতে চ্যানেল২৪ এর ক্রীড়া সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে এ বিষয়ে এমন দুইজন সংবাদকর্মীর সাক্ষাৎকার নিতে দেখা যায় যারা কিনা গত ০২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর ফরিদপুরের জনসভায় উপস্থিত ছিল বলে দাবি করেছেন। সাকিব ওই জনসভায় গিয়েছিলেন। 

ওই দুই সংবাদকর্মীর একজন ক্রীড়া বিষয়ক অনলাইন সংবাদমাধ্যম ক্রিকফ্রেন্জির পারভেজ আল হাসান। পারভেজ বলছিলেন, এই ভিডিওটি আমি বেশ কয়েকদিন আগে, গতকাল বা তার আগের দিন আমার সহকর্মীদের দেখিয়েছি। সত্য হচ্ছে, এটা আজকের ঘটনা না। 

পারভেজ জানাচ্ছিলেন, ঘটনাটি গত ০২ জানুয়ারি ফরিদপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা থেকে ফেরার পথের ঘটনা এটি।  

আমরা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, দাবিকৃত ভিডিওতে সাকিবের পরিহিত পোশাকের সাথে ০২ জানুয়ারি সাকিবের পরিহিত পোশাকেরও মিল রয়েছে।  

Image Comparison: Rumor Scanner.

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য আমরা পারভেজ আল হাসানের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম। পারভেজ আমাদের বলেছেন, ‘গত ০৩ জানুয়ারি, বুধবার ভিডিওটা আমার সাথে মেসেঞ্জারে শেয়ার হয়েছে। পরবর্তীতে গতকাল (০৬ জানুয়ারি) আমি আমার সহকর্মীদের সাথে শেয়ার করেছি এবং গতকালই সহকর্মীদের একজন ফান করে তার একটা পেইজে আপলোড করেছে।’


বক্তব্যের পাশাপাশি গত ০৩ জানুয়ারি তার ইনবক্সে পাওয়া একই ভিডিওর স্ক্রিনশট রিউমর স্ক্যানারের সাথে শেয়ার করেন পারভেজ, যাতে দেখা যাচ্ছে, এটি গত ০৩ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যায় ফরোয়ার্ড করা হয়েছে। মেসেজটিতে Forwarded many times লেখা দেখা যাচ্ছে, যা থেকে প্রতীয়মান হয় সেসময় এটি মেসেঞ্জারে একাধিকবার ফরোয়ার্ড হয়েছে।

Image Comparison: Rumor Scanner.

পারভেজের তথ্যের সূত্র ধরে গত (৬ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা ২৩ মিনিটে ‘Rumky the biggest আইলস্যা’ নামের একটি ফেসবুক পেজে সাকিবের একই ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, সমর্থককে সাকিবের চড় দাবিতে ভাইরাল ভিডিওটি ভোটের দিনের নয়।

মূলত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়ান জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। নির্বাচনের দিন অর্থাৎ ০৭ জানুয়ারি ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়, ‘নির্বাচনের দিন ভীড়ের মধ্যে মেজাজ হারিয়ে একজনকে চড় মারেন সাকিব।’ উক্ত দাবির বিপরীতে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি নির্বাচনের দিনের নয়। গত ০৩ জানুয়ারি ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। তাছাড়া, একাধিক সংবাদকর্মী ভিডিওটিকে গত ০২ জানুয়ারি ফরিদপুরের ঘটনা বলে জানিয়েছেন এবং ০২ জানুয়ারির সাকিবের পরিহিত পোশাকের সাথেও উক্ত ভিডিওর মিল পাওয়া গেছে।

সুতরাং, পুরোনো একটি ভিডিওকে ভোটের দিন সমর্থককে সাকিবের চড়ের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

জাতীয় নির্বাচনে ব্যাপক ভোটার উপস্থিতির দৃশ্য দাবিতে পুরোনো ছবি প্রচার 

গতকাল ৭ জানুয়ারি সারাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এই ভোটগ্রহণ চলাকালে গাইবান্ধা গেজেট- Gaibandha Gazete নামক একটি ফেসবুক পেজ থেকে “গাইবান্ধায় ভোট উৎসবের আমেজ, ভোটারদের দীর্ঘ লাইন….. #গাইবান্ধা #সুন্দরগঞ্জ #পলাশবাড়ী” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ছবি প্রচার করা হয়। অর্থাৎ দাবি করা হয়, ছবিটি গতকাল অনুষ্ঠিত নির্বাচনে গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ), গাইবান্ধা-২ (সদর) কিংবা গাইবান্ধা- ৩ (পলাশবাড়ী) আসনের কোনো একটি আসনের একটি কেন্দ্রের ভোটারদের উপস্থিতির দৃশ্যের।

ভোটার

উক্ত ছবি যুক্ত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবিটি গতকাল ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা কিংবা দেশের অন্য কোনো জেলায় ভোটার উপস্থিতির ঘটনার নয় বরং ২০২১ সালে গাইবান্ধায় অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধান শুরুতে আলোচিত ছবিটির উৎসের খোঁজ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। রিভার্স ইমেজ সার্চ করে জাতীয় গণমাধ্যম ‘সময়ের আলো’ এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর “গাইবান্ধায় ইউপি ভোটে উৎসবের আমেজ, ভোটারদের দীর্ঘ লাইন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে একটি ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির হুবহু মিল রয়েছে।

Picture Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর গাইবান্ধার পলাশবাড়ী ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১৯ ইউনিয়নে তৃতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোট দিতে আসা ভোটারদের দৃশ্য এটি। 

এছাড়া, একই তারিখে অনলাইন গণমাধ্যম ‘রাইজিং বিডি’ এর ওয়েবসাইটে “১০০৭ ইউপিতে ভোট (ফটো স্টোরি)” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটো স্টোরিতে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Picture Comparison: Rumor Scanner 

মূলত, ২০২১ সালের নভেম্বরে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১৯ ইউনিয়নে তৃতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে নিয়ে সেসময় একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভোটারদের দীর্ঘ লাইনের একটি ছবি প্রচার করা হয়। এই ছবিটিই গতকাল ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির দৃশ্য দাবি করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।  

সুতরাং, গাইবান্ধার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পুরোনো ছবিকে গতকাল অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

তিন মাসের মধ্যে পুনরায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার ভুয়া তথ্য ইউটিউবে 

গতকাল ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে “তিন মাসের মধ্যে পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা” শীর্ষক শিরোনাম এবং “তিন মাসের মধ্যে পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা, নির্বাচন সঠিক হয়নি” শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

পুনরায় নির্বাচনের

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, তিন মাসের মধ্যে পুনরায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিটি সঠিক নয় এবং নির্বাচন কমিশন থেকে নির্বাচন সঠিক হয়নি শীর্ষক কোনো মন্তব্য করা হয়নি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও  এবং ছবি যুক্ত করে সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন যেখানে ভিডিওটির শুরুতেই কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ দেখানো হয়। পরবর্তীতে ভিডিওটিতে আলোচিত দাবিটি প্রসঙ্গে তিনটি ভিডিও দেখানো হয়। 

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, “হয়ে গেলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। কিন্তু যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি বিএনপি সহ অন্যান্য দল তারা বলছে এই সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে আবারো তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া কারণ তিন মাস এখনও সময় রয়েছে তা না হলে পরিনতি হবে ভয়াবহ এমন একটি নিউজ চলে এসেছে। চলুন আমরা ভিডিওটি দেখি..। ”

সংবাদপাঠ অংশে থাকা বিষয়গুলো নিয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবিটি’র সত্যতা পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটিতে দেখানো ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও ক্লিপের বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই – ০১

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা প্রথম ভিডিওটির অনুসন্ধানে দেশ টিভির লোগোর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেশ টিভির ইউটিউব চ্যানেলে আজ ৮ জানুয়ারি “নির্বাচন নিয়ে যা বললেন গনতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। Zonayed Saki। Election News 2024” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির দুইটি অংশ আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওতে গনতন্ত্র মঞ্চের নেতা জোনায়েদ সাকি সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে গতকাল ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মতামত ব্যক্ত করতে দেখা যায়। 

ভিডিও যাচাই – ০২

দ্বিতীয় ভিডিওটিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের একটি ভিডিও দেখানো হয়। উক্ত ভিডিওটির অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে চ্যানেল ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৭ জানুয়ারি “নির্বাচন যে গ্রহণযোগ্য হয়েছে সেটাতো আমি বলি নি: সিইসি | Election Update | Election News” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।  এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিও ক্লিপটির হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison : Rumor Scanner  

উক্ত ভিডিওতে কাজী হাবিবুল আউয়াল ভোট গ্রহণ শেষে ভোটের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মতামত ব্যক্ত করেন। যেখানে তিনি ভোটের সার্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি এবং নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কিনা সে বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তবে তিনি তার বক্তব্যের কোথাও তিন মাসের মধ্যে পুনরায় নির্বাচন হবে কিংবা নির্বাচন সঠিক হয়নি শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি। 

ভিডিও যাচাই – ০৩ 

সর্বশেষ ভিডিওটির অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণ অধিকার পরিষদের একাংশের নেতা ‘Md Faruk Hasan’ এর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গতকাল ৭ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি ভিডিও বার্তা খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির একটি অংশ আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটিতে ফারুক হাসান গতকাল অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেন। ভিডিওটিতে কোথাও তিন মাসের মধ্যে পুনরায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার দাবির বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি, কি ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার কোনো গণমাধ্যমে আলোচিত দাবিটি প্রসঙ্গে কোনো তথ্য বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গতকাল ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরই প্রেক্ষিতে  “তিন মাসের মধ্যে পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা, নির্বাচন সঠিক হয়নি” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে পুনরায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা এবং নির্বাচন সঠিক না হওয়া সংক্রান্ত দাবির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তিন মাসের মধ্যে পুনরায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা সংক্রান্ত কোনো ঘটনা ঘটেনি। 

সুতরাং, তিন মাসের মধ্যে পুনরায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

নৌকা প্রতীকে সিল মারা ব্যালটের ভাইরাল এই ভিডিওটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নয়

গতকাল ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি ভোট কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারের রুমে নৌকা প্রতীকে সিল মারা ব্যালটের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

নৌকা প্রতীকে সিল

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

KN TV MEDIA নামের ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশিত এই ভিডিওটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং ৪ হাজার ৭ শত বার শেয়ার করা হয়েছে। এছাড়াতে ভিডিওতে ৯ হাজার ১ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভোট কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারের রুমে নৌকা প্রতীকে সিল মারা ব্যালটের এই ভিডিওটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নয় বরং পূর্বের ভিন্ন নির্বাচনের একটি ভিডিও উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে ভিডিওটিতে ব্যালটে  ‘হাত পাখা’ প্রতীক মার্কা লক্ষ্য করা যায়।

Screenshot: Facebook

হাতপাখা’ বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দলীয় প্রতীক। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিবন্ধিত ৪৯টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৮ টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। নির্বাচন বর্জন করা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ অন্যতম। এছাড়া দলটির পক্ষ থেকে এই নির্বাচন বর্জনের জন্য জনসাধারণের নিকট আহবানও জানানো হয়।

যেহেতু ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি সেহেতু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোনো আসনের ব্যালটে হাতপাখা প্রতীকের ছবি থাকার বিষয়টি অমূলক। সে হিসেবে ভাইরাল ভিডিওটি যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোনো ভোট কেন্দ্রের নয় তা স্পষ্টই প্রতীয়মান হয়।

তবে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কয়েকটি আসনের একাধিক কেন্দ্রে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকের ব্যালটে সিল মারার বা নৌকা প্রতীকের সিল সম্বলিত ব্যালটের ভিডিও প্রকাশ হওয়ার কথা গণমাধ্যম সূত্রে (, ,) জানা যায়। এসব অভিযোগে একাধিক কেন্দ্রে সিল মারা ব্যালট বাতিল ও কেন্দ্রের ভোট বাতিলের সংবাদও পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, আলোচিত দাবিতে ভাইরাল ভিডিওটি কবে কোথায় ধারণ করা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

মূলত, গতকাল ৭ জানুয়ারি সারাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট চলাকালে কয়েকটি আসনের বেশকয়েকটি কেন্দ্রে প্রকাশ্যে ব্যালটে নৌকা প্রতীকে সিল মারার অভিযোগ উঠে এবং নৌকায় সিল মারার ঘটনায় কয়েকটি ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়। উক্ত দাবিতে ভাইরাল ভিডিওগুলোর মধ্যে একটি ভিডিওর ব্যালটে হাতপাখা প্রতীক থাকতে দেখা যায়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘হাতপাখা’ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দলীয় দলীয় প্রতীক। এই দলটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। উক্ত নির্বাচনে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ব্যালটে প্রকাশ্যে নৌকার সিল মারার ঘটনা ঘটলেও হাতপাখা প্রতীক সম্বলিত ভাইরাল এই ভিডিওটি এই নির্বাচনের নয়।

অর্থাৎ, ভিন্ন নির্বাচনের পুরোনো ভিডিওকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি ভোট কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারের রুমে নৌকায় সিল মারা ব্যালটের দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

নির্বাচনে সহিংসতা স্বাভাবিক ঘটনা শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি সলিমুল্লাহ খান

সম্প্রতি, লেখক এবং অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খানের উক্তি সংবলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দাবি করা হচ্ছে, সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, “নির্বাচনে সহিংসতা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। দুই একজন নিহতের জন্যে মায়াকান্না না করে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হোন।” 

সলিমুল্লাহ খান

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নির্বাচন নিয়ে সলিমুল্লাহ খান এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ব্যতীত উক্ত মন্তব্যটি তার নামে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে সলিমুল্লাহ খানের এমন কোনো মন্তব্যের অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।

তার ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজঅন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত পোস্ট, ভিডিও পর্যবেক্ষণ করেও এমন কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে বিষয়টির সত্যতা জানতে চেয়ে খোদ সলিমুল্লাহ খানের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি বলেন, “এই দাবি সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা। এটি একটি গুজব, একেবারেই সহিংসতার একটি কাজ। আমার এরূপ কোনো মন্তব্য করার কোনো কারণ নেই। আমি এমন কোনো মন্তব্য করেছি বলে স্পষ্টভাবে অস্বীকার করছি। এই নির্বাচন, দুর্ঘটনা অথবা যাই বলুন না কেন, আমি কোনো মন্তব্য করিনি।”

মূলত, গতকাল ০৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান “নির্বাচনে সহিংসতা খুব স্বাভাবিক ঘটনা দুই একজন নিহতের জন্যে মায়াকান্না না করে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হোন” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ফটোকার্ড ফেসবুক ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি এমন কোনো মন্তব্য করেননি। বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে তার করা এমন মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া সলিমুল্লাহ খান নিজেও রিউমর স্ক্যানার টিমকে এ বিষয়টি গুজব বলে নিশ্চিত করেছেন।

সুতরাং, অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান “নির্বাচনে সহিংসতা খুব স্বাভাবিক ঘটনা” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত বিষয়টি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রথম আলো’র ফটোকার্ড নকল করে নির্বাচন নিয়ে পিটার হাসের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

সম্প্রতি “নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র” শীর্ষক একটি মন্তব্যকে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের মন্তব্য দাবিতে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

পিটার হাস

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পিটার হাস “নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র” শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি এবং প্রথম আলোও উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং আলোচিত এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলো’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ৬ জানুয়ারির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

Screenshot : Facebook

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগো ও তারিখের সূত্র ধরে প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ৬ জানুয়ারি বা তার আগে পরে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, প্রথম আলো’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে ৬ জানুয়ারি প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজে প্রকাশিত কয়েকটি ফটোকার্ডের ডিজাইনের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির ডিজাইনের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু প্রথম আলো’র পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডের শিরোনামে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের মিল নেই। ধারণা করা যায়, এই ফটোকার্ডগুলো থেকে কোনো একটি সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

Image Collage : Rumor Scanner

আলোচিত বিষয়ে অনুসন্ধান চলাকালে গত ৭ জানুয়ারি প্রথম আলো’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ফটোকার্ডটিকে মিথ্যা প্রচারণা উল্লেখ করে একটি ফটোকার্ড পোস্ট হতে দেখে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Screenshot : Prothom Alo

উক্ত ফটোকার্ড পোস্টে আরও বলা হয়, “প্রথম আলোর নামে ছড়ানো এই ছবি ও তথ্য নকল, আমাদের তৈরি নয়। বিভ্রান্তি এড়াতে আমাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ও অনলাইনের সঙ্গে থাকুন।”

অর্থাৎ, ‘নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস’ শীর্ষক শিরোনামে প্রথম আলো সাম্প্রতিক সময়ে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে এখন পর্যন্ত পিটার হাস এমন মন্তব্য করেছেন দাবিতে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে ‘নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র ‘ শীর্ষক একটি মন্তব্যকে পিটার হাসের মন্তব্য দাবিতে প্রথম আলো’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে যে পিটার হাস এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রথম আলো’র ফেসবুক পেজ কিংবা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মেও উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রচার করা হয়নি বরং প্রথম আলো’র পক্ষ থেকে আলোচিত ফটোকার্ডটিকে ভুয়া বলে জানানো হয়েছে।

সুতরাং,‘নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র’ শীর্ষক মন্তব্যকে পিটার হাসের মন্তব্য দাবিতে প্রথম আলো’র নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র 

ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার বিষয়ে ডিবি প্রধান হারুনকে উদ্ধৃত করে ভুয়া মন্তব্যের ডিপ ফেক ভিডিও ইন্টারনেটে 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদ এর দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ০৫ জানুয়ারি থেকেই ভিডিওটি ফেসবুকে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ভিডিওতে জনাব হারুন সদৃশ ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, “আমার আম্মা শেখ হাসিনা একটি মিথ্যুক। সে নিজেই ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করে। আবার বিএনপি ভোট বর্জন করলে অসাংবিধানিক বলে আটক করতে বলে। কি যে বিপদে আছি। ০৭ তারিখ সারাদিন হরতাল পালন করুন। ওইদিন কেউ ভোটকেন্দ্রে যাবেন না।”

ডিবি প্রধান

ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “একসময় সে নিজেই ভোট বর্জনের ডাক দিয়েছিল। তখন সেটা খুব গণতান্ত্রিক অধিকার মনে হয়েছিল তার। আর এখন একই অধিকারের কথা বিরোধীরা বললে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে আটক করতে বলে। তার এই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। ৭ তারিখের ভুয়া নির্বাচন তীব্রভাবে বর্জন করুন। দেশ বাঁচাতে এর বিকল্প নেই।”

উক্ত ভিডিও সম্বলিত ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার বিষয়ে ডিবি প্রধান হারুন কোনো মন্তব্য করেননি এবং এই ভিডিওটিও তার নয় বরং হারুনের ফেসবুক পেজ থেকে একটি ছবি সংগ্রহ করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ডিপফেক ভিডিও বানিয়ে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।  

আমরা এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে হারুন অর রশিদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের প্রোফাইল পিকচারে একটি ছবির সন্ধান পাই যার সাথে ভিডিওতে দেখানো হারুনের পোশাক এবং আনুষঙ্গিক বিষয়বস্তুর হুবহু মিল পরিলক্ষিত হয়। 

Comparison: Rumor Scanner 

আমরা জনাব হারুনের পেজটির সাম্প্রতিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি। তার পেজ থেকে প্রায় প্রতিদিনই দিনের বিভিন্ন কর্মকান্ডের বিষয়ে ছবি ও ভিডিও পোস্ট করতে দেখা যায়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তার ভিডিওগুলোর সাথে এই ভিডিওতে বলা তার মন্তব্যের মিল পাওয়া যায়নি। এমনকি সাম্প্রতিক ভিডিওগুলোতেও তাকে এই পোশাকে দেখা যায়নি। 

পরবর্তীতে বিভিন্ন কিওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যমে আলোচিত এই মন্তব্যটির বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রকাশ হয়েছে কিনা জানার চেষ্টা করেছি আমরা। কিন্তু কোনো গণমাধ্যমেই উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ মেলেনি। 

অর্থাৎ, পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ শাখার এই কর্মকর্তা ডিপফেকের শিকার হয়েছেন। 

ডিপফেক হলো বাস্তবসম্মত দেখতে কিন্তু নকল বা কিছুটা পরিবর্তিত কন্টেন্ট যা ভিডিও বা অডিওর উপাদান সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়। ডিপফেক ভিডিওতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে একজন ব্যক্তির মুখের অবয়ব বা ভয়েসকে অন্য কারোর সাথে বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই প্রযুক্তির সহায়তায় একজন ব্যক্তির এমন কিছু ভিডিও বা অডিও কন্টেন্ট তৈরি করা সম্ভব যা তিনি নিজে বলেননি বা করেননি।

মূলত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ০৭ জানুয়ারি। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ “০৭ তারিখ সারাদিন হরতাল পালন করুন। কেউ ভোটকেন্দ্রে যাবেন না।” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধানে দেখেছে, তিনি এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে, হারুনের ফেসবুক পেজ থেকে একটি ছবি ব্যবহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ডিপফেক ভিডিও বানিয়ে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-২ আসনের ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ‘বিউটি বেগম’ও একইভাবে ডিপফেকের শিকার হয়েছেন৷ এ সংক্রান্ত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন দেখুন এখানে।

সুতরাং, একটি ডিপফেক ভিডিওর মাধ্যমে ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ “০৭ তারিখ সারাদিন হরতাল পালন করুন। কেউ ভোটকেন্দ্রে যাবেন না।” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন বলে একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীকে জড়িয়ে যমুনা টেলিভিশনের নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার 

গতকাল জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলাকালে “মুন্সিগঞ্জে- ৩ জয়ের পথে হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব” শীর্ষক শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টেলিভিশনের নামে একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জ-৩

উক্ত ফটোকার্ড সম্বলিত কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের (সদর ও গজারিয়া) স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব জয়ের পথে- শীর্ষক তথ্যে যমুনা টেলিভিশন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং মুন্সিগঞ্জের নির্বাচনের ভিন্ন ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমটিতে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে যমুনা টিভি’র লোগো সম্বলিত আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এতে প্রচারের তারিখ হিসেবে ৭ জানুয়ারি ২০২৪ সালের কথা উল্লেখ রয়েছে। 

Screenshot: Facebook Claim Post

পরবর্তীতে উক্ত সূত্র ধরে যমুনা টিভি ফেসবুক পেজ অনুসন্ধান করে এরূপ কোনো ফটোকার্ড পাওয়া যায়নি। এছাড়া, যমুনা টেলিভিশনের ওয়েবসাইটে এবং ইউটিউব চ্যানেলেও এ সংক্রান্ত কোনে সংবাদ পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।

তবে, যমুনা টেলিভিশনের ফেসবুক পেজে গতকাল ৭ জানুয়ারি প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো অনুসন্ধান করে “মুন্সিগঞ্জে নৌকা সমর্থককে কুপিয়ে হত্যা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড পাওয়া যায়।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, উক্ত ফটোকার্ডটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির ডিজাইনের অনেকাংশে মিল রয়েছে। কিন্তু, যমুনা টেলিভিশনের ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে আলোচিত ফটেকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের কোনো মিল নেই। 

Photocard Comparison: Rumor Scanner  

পাশাপাশি, একই তারিখে যমুনা টেলিভিশনের ওয়েবসাইটে “মুন্সিগঞ্জে নৌকার সমর্থককে কুপিয়ে হত্যা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মুন্সিগঞ্জ-৩ (সদর এবং গজারিয়া) আসনে নৌকার এক সমর্থককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাসের সমর্থক বলে জানা গেছে।

৭ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার টেঙ্গর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান। নিহত ব্যক্তির নাম মো. জিল্লুর রহমান। 

অর্থাৎ, আলোচিত দাবির ফটোকার্ডটি নকল।

উল্লেখ্য, মুন্সিগঞ্জ- ৩ আসনের নির্বাচনে ভোট গণনা শেষে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত বেসরকারি ফল অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফয়সার বিপ্লব জয় লাভ করেছেন। ফয়সাল বিপ্লবের প্রাপ্ত ভোট ৮৯ হাজার ৬৯৫। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস পেয়েছেন ৮২ হাজার ৮৩৩ ভোট।

মূলত, গতকাল ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলাকালে  মুন্সিগঞ্জে মো. জিল্লুর রহমান নামের এক নৌকা সমর্থককে  কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে। । এরই প্রেক্ষিতে বেসরকারি টেলিভিশন যমুনা টেলিভিশন একটি সংবাদ প্রকাশ করে, যা ফটোকার্ড আকারে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজেও প্রকাশ করা হয়।  পরবর্তীতে সেই ফটেকার্ডটি প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে “মুন্সিগঞ্জে- ৩ জয়ের পথে হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব” শীর্ষক শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়। 

সুতরাং, মুন্সিগঞ্জে-৩ জয়ের পথে হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব- শীর্ষক শিরোনামে যমুনা টেলিভিশনের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

নারীদের ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার এই ছবিটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নয়

সম্প্রতি, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গাইবান্ধা-৫ আসনে নারী ভোটারদের ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি প্রচার করা হয়েছে।

নারী

ফেসবুকে প্রচারিত ছবিটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২৩ সালে একই আসনের উপনির্বাচনের সময়ে তোলা ছবি।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম ‘সময় টিভি’র ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি “কেন্দ্রে কেন্দ্রে নারী ভোটারের দীর্ঘ লাইন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনের সাথে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ২২ জুলাই গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া মারা গেলে একই বছরের ১২ অক্টোবর উপনির্বাচনের আয়োজন করা হয়। তবে অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের  ৪ জানুয়ারি পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

মূলত, ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি গাইবান্ধা-৫ আসনে উপ-নির্বাচন হয়। সেসময় উক্ত নির্বাচন নিয়ে গণমাধ্যমে নারী ভোটারদের দীর্ঘ লাইনের একটি ছবি প্রকাশিত হয়। সম্প্রতি সেই ছবিটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গাইবান্ধা-৫ আসনে নারী ভোটারদের ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গাইবান্ধা-৫ আসনে নারী ভোটারদের ছবি দাবিতে ২০২৩ সালের উপনির্বাচনের ছবি ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র