Home Blog Page 546

মানুষের সাথে রোবটের ব্যাডমিন্টন খেলার এই ভিডিওটি সম্পাদিত

সম্প্রতি, রোবট মানুষের সাথে ব্যাডমিন্টন খেলছে দাবিতে দুটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

রোবটের ব্যাডমিন্টন

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত আরেকটি ভিন্ন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিনের অনুসন্ধানে জানা যায়, রোবট মানুষের সাথে ব্যাডমিন্টন খেলছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিও গুলো বাস্তব নয় বরং মানুষের ব্যাডমিন্টন খেলার ভিডিওতে কৃত্রিম বুদ্ধিমতার সাহায্যে রোবট যুক্ত করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

ভিডিও যাচাই ০১

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে Phalore bedmation club নামক ফেসবুক পেজে ২০২১ সালের ২১ অক্টোবরে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে উক্ত আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া magicalmagicworld নামক টিকটক অ্যাকাউন্টে গত ৫ সেপ্টেম্বর আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Tiktok

তবে ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায় এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি।

ভিডিও যাচাই ০২

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে Badminton Ham নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৮ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে উক্ত আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটিতে ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর রোবটের জায়গায় দুইজন মানুষ ছিলো। এছাড়া, ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি কোরিয়া বনাম জাপানের ব্যাডমিন্টন খেলা ছিলো। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিও দুটিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এর সাহায্যে মানুষের অবস্থানের স্থলে রোবটের অবয়ব জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

মূলত, সম্প্রতি রোবট মানুষের সাথে ব্যাডমিন্টন খেলছে দাবিতে একাধিক ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায় ভিডিওগুলো সম্পাদনা করা। প্রকৃতপক্ষে দুটি ভিন্ন ব্যাডমিন্টন খেলার ভিডিওতে উপস্থিত থাকা মানুষের দৃশ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে পরিবর্তন করে সেখানে রোবটের দৃশ্য জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে লিওনেল মেসির ইংরেজিতে কথা বলার ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচারিত হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, রোবট মানুষের সাথে ব্যাডমিন্টন খেলছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিও দুটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

মিশরের কোরআন প্রতিযোগিতায় হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহর প্রথম হওয়ার দাবিটি সঠিক নয়

0

সম্প্রতি, “মিশরে কুরআন প্রতিযোগিতায় ২৬০ দেশকে পিছনে ফেলে ১ম হয়েছে বাংলাদেশের হাফেজ মুতাসিম বিল্লাহ মুজাহিদ” শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

কোরআন প্রতিযোগিতায়

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ মিশরের আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হননি বরং বাংলাদেশে আয়োজিত বাছাই পরীক্ষায় দেশের হাফেজদের মধ্যে প্রথম হয়ে আগামী ডিসেম্বরে মিশরের উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন তিনি। 

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ের শুরুতেই মিশরের আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতার বিষয়ে অনুসন্ধানে গত ১৫ নভেম্বর দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রিন্ট ভার্সনের ১৪ নম্বর পাতায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের একটি বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Source: Jugantor Epaper

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক মো. আনিছুর রহমান সরকার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিটি থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ২২ থেকে ২৮ ডিসেম্বর মিশরের রাজধানী কায়রোতে ৩০তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে আগ্রহী বাংলাদেশী হাফেজগণের আবেদনপত্র আহ্বান করা হয় উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে। ২০ নভেম্বর আগ্রহী প্রতিযোগীদের নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানা যায় বিজ্ঞপ্তি থেকে।

অর্থাৎ, বাংলাদেশি হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ মিশরের হিফজুল কুরআন নামের যে প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে তা আগামী ২২-২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।

পরবর্তীতে, দাবিটির সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে গত ২০ নভেম্বর প্রকাশিত  ফেসবুকের একাধিক পোস্ট (, , ) থেকে জানা যায়, নেত্রকোনা জামালুল কোরআন মাদরাসার ছাত্র হাফেজ মুতাসিম বিল্লাহ মুজাহিদ মিশরে আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হয়েছে।

মাসুম বিল্লাহ নামে এক ব্যক্তি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আমার ভাই মুতাসিম বিল্লাহ মুজাহিদ, “৩০ তম আন্তর্জাতিক মিশর কুরআন প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ!! সবাই দোয়া করবেন আমার ভাই যেন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বিশ্ব জয় করে প্রথম স্থান অর্জন করে বাংলাদেশের সুনাম বয়ে আনতে পারে।”

Screenshot: Facebook 

অর্থাৎ, মিশরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কোরআন প্রতিযোগিতা নয়, উক্ত কোরআন প্রতিযোগিতার জন্য দেশে আয়োজিত বাছাই পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ।

কিন্তু ২১ নভেম্বর কতিপয় ফেসবুক পোস্টে আলোচিত দাবিটি অর্থাৎ মিশরে কোরআন প্রতিযোগিতায় ২৬০ দেশকে পিছনে ফেলে ১ম হয়েছে বাংলাদেশের হাফেজ মুতাসিম বিল্লাহ মুজাহিদ শীর্ষক তথ্যটি প্রচার হতে দেখে রিউমর স্ক্যানার। 

আবার, একইদিন আরো কিছু পোস্টে কতিপয় শব্দ বদলে দিয়ে প্রচার করা হয়, “মিশরে কুরআন প্রতিযোগিতায় ২৬০ জনকে পিছনে ফেলে  ১ম হয়েছে বাংলাদেশের হাফেজ মুতাসিম বিল্লাহ মুজাহিদ।”

Screenshot collage: Rumor Scanner 

অর্থাৎ, একদিনের ব্যবধানে একটি তথ্য বদলে গিয়ে দুইটি ভিন্ন দাবিতে ছড়িয়েছে।

পরবর্তীতে, বিষয়টির অধিকতর সত্যতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক মো. আনিছুর রহমান সরকারের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানান, হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ কোরআন প্রতিযোগিতার জন্য দেশে আয়োজিত বাছাই পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন। 

তাছাড়া, বিষয়টি হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেত্রকোনা জামালুল কোরআন মাদ্রাসা’র সিনিয়র শিক্ষক মো: জুবায়েরুল হাসানও রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন। 

জনাব জুবায়েরুল রিউমর স্ক্যানারকে জানান, উক্ত প্রতিযোগিতায় হাফেজ মুহতাসিম বিল্লাহ্ মুজাহিদ হিফজুল কুরআন ৩০ পারা বিভাগে অংশগ্রহণ করবেন।

মূলত, আগামী ২২-২৮ ডিসেম্বর মিশরে ৩০তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশী হাফেজগণের নির্বাচনী পরীক্ষায় হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ প্রথম স্থান অধিকার করে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছেন। উক্ত ঘটনাকেই হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ মিশরের আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা সঠিক নয়।

উল্লেখ্য, পূর্বে হাফেজ তাকরিমের নামে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, মিশরের আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতার বাছাই পরীক্ষায় দেশের হাফেজদের মধ্যে হাফেজ মুহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ প্রথম হওয়ার ঘটনাকে তিনি মিশরের কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • Jugantor: ই-পেপার 
  • Masum Billah: Facebook Post
  • Statement from Jobayedul Hasan, Senior Teacher, Netrokona Jamalul Quran
  • Statement from Anisur Rahman, Islamic Foundation 
  • Rumor Scanner’s own investigation 

ভিডিওর ব্যক্তিটির বয়স ৩০৯ বছর নয় 

0

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে ভিডিওতে থাকা ব্যাক্তিটির বয়স ৩০৯ বছর। 

৩০৯ বছর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটিকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তিটির বয়স ৩০৯ বছর নয় বরং তিনি ১০৯ বছর বয়সী থাইল্যান্ডের নাগরিক লুয়াং ফো ইয়াই যিনি ২০২২ সালের মার্চ মাসে মারা যান। 

মূলত, আলোচিত ভিডিওর ব্যক্তিটি ১০৯ বছর বয়সী থাইল্যান্ডের নাগরিক লুয়াং ফো ইয়াই। সাম্প্রতিক সময়ে তাকে ৩০৯ বছর দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে একই ব্যক্তির বয়স ১৯৩ বছর বলে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

টিকটকে ৯ তারকার মৃত্যুর গুজব 

গত কিছুদিন ধরে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে Sumon Hosen নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে বিনোদন অঙ্গনের কয়েকজন আলোচিত তারকার মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে।

তারকার মৃত্যুর

উক্ত টিকটক অ্যাকাউন্টটি (আর্কাইভ) থেকে চিত্রনায়ক শাকিব খান, ফেরদৌস, চিত্রনায়িকা শাবনূর, অপু বিশ্বাস, বুবলি, খলনায়ক মিশা সওদাগর, ডিপজল, কমেডি অভিনেতা কাবিলা এবং ছোটপর্দার অভিনেতা মুশফিক ফারহানের মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করা হয়েছে।

টিকটকে উক্ত তারকাদের মৃত্যু দাবিতে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখান (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত তারকাদের কেউই এখন পর্যন্ত মারা যাননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত টিকটক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এই তারকাদের মৃত্যুর ভুয়া দাবি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত তারকাদের মৃত্যুর বিষয়ে প্রচারিত ভিডিওগুলো প্রত্যেকটি আলাদাভাবে পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। রিউমর স্ক্যানারের পাঠকদের সুবিধার্থে পৃথক পর্যবেক্ষণ এবং প্রকৃত তথ্য পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করা হলোঃ

শাকিব খান কি মারা গেছেন?

গত ১৭ নভেম্বর ঢালিউড সুপারস্টার চিত্রনায়ক শাকিব খান মারা গেছেন দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot: TikTok

উক্ত পোস্টে বলা হয়, ‘বাংলা সিনেমার চলচ্চিত্র নায়ক শাকিব খান আজকে শুটিং করতে গিয়ে ভোর ছয়টার দিকে পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নেন।’

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে শুটিং করতে গিয়ে বা অন্যকোনো কারণে শাকিব খানের মৃত্যুর বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়নি। টিকটকে শাকিব খানের মৃত্যুর সংবাদ প্রচারের পরবর্তী সময়ে শাকিব খানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে তার কার্যক্রমের ভিডিও প্রচার হতে দেখা গেছে।

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, চিত্রনায়ক শাকিব খান মারা গেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

ফেরদৌস কি মারা গেছেন?

ঢাকাই সিনেমার তারকা ফেরদৌস মারা গেছেন দাবিতে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot: TikTok

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে ফেরদৌসের মৃত্যুর বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়নি। টিকটকে ফেরদৌসের মৃত্যুর সংবাদ প্রচারের পরবর্তী সময়ে ফেরদৌসের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে তার কার্যক্রমের ভিডিও প্রচার হতে দেখা গেছে।

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, চিত্রনায়ক ফেরদৌস মারা গেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

শাবনূর কি মারা গেছেন?

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা শাবনূরের মৃত্যুর সংবাদ নিয়ে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot: TikoTok

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে শাবনূরের মৃত্যুর বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, চিত্রনায়িকা শাবনূর মারা গেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

অপু বিশ্বাস খান কি মারা গেছেন?

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা অপু বিশ্বাসের মৃত্যুর সংবাদ নিয়ে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot: Tiktok

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে অপু বিশ্বাসের মৃত্যুর বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়নি। টিকটকে আপুর মৃত্যুর সংবাদ প্রচারের পরবর্তী সময়ে অপুর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে তার কার্যক্রমের ভিডিও প্রচার হতে দেখা গেছে।

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস মারা গেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

মিশা সওদাগর কি মারা গেছেন?

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত খলনায়ক মিশা সওদাগরের মৃত্যুর সংবাদ নিয়ে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot: TikTok

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে মিশার মৃত্যুর বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়নি। টিকটকে মিশার মৃত্যুর সংবাদ প্রচারের পরবর্তী সময়ে মিশার ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তার কার্যক্রমের পোস্ট প্রচার হতে দেখা গেছে।

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, খলনায়ক মিশা সওদাগর মারা গেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

ডিপজল কি মারা গেছেন?

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত খলনায়ক ডিপজলের মৃত্যুর সংবাদ নিয়ে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot: TikTok

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে ডিপজলের মৃত্যুর বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়নি। টিকটকে ডিপজলের মৃত্যুর সংবাদ প্রচারের পরবর্তী সময়ে ডিপজলের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে তার কার্যক্রমের ভিডিও প্রচার হতে দেখা গেছে।

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, খলনায়ক ডিপজল মারা গেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

কাবিলা কি মারা গেছেন?

ঢালিউডের আরেক পরিচিত মুখ এক সময়ের জনপ্রিয় কমেডি অভিনেতা কাবিলা মারা যাওয়ার  দাবিতে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখান (আর্কাইভ)।

Screenshot: TikTok

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে ডিপজলের মৃত্যুর বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, কমেডি অভিনেতা কাবিলা মারা গেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

বুবলি কি মারা গেছেন?

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা শবনম বুবলির মৃত্যুর সংবাদ নিয়ে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot: TikTok

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বুবলির মৃত্যুর বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়নি। টিকটকে বুবলির মৃত্যুর সংবাদ প্রচারের পরবর্তী সময়ে বুবলির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে তার কার্যক্রমের পোস্ট প্রচার হতে দেখা গেছে।

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, চিত্রনায়িকা বুবলি মারা গেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

মুশফিক ফারহান কি মারা গেছেন?

ছোটপর্দার তারকা অভিনেতা মুশফিক ফারহানের মৃত্যুর সংবাদ নিয়ে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot: TikTok

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে ফারহানের মৃত্যুর বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়নি। টিকটকে ফারহানের মৃত্যুর সংবাদ প্রচারের পরবর্তী সময়ে ফারহানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে তার কার্যক্রমের ভিডিও প্রচার হতে দেখা গেছে।

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, উক্ত তারকাদের মৃত্যু নিয়ে প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক নয়।

মূলত, বিনোদন অঙ্গণের তারকাদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ইন্টারনেটে সূত্র ও প্রমাণবিহীন নানা ধরনের তথ্য প্রচারের প্রবণতা দেখা যায়। গত কিছুদিন ধরে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে Sumon Hosen নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে চিত্রনায়ক শাকিব খান, ফেরদৌস, চিত্রনায়িকা শাবনূর, অপু বিশ্বাস, বুবলি, খলনায়ক মিশা সওদাগর, ডিপজল, কমেডি অভিনেতা কাবিলা এবং ছোটপর্দার অভিনেতা মুশফিক ফারহানের মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত তারকাদের কেউই এখন পর্যন্ত মারা যাননি। মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত তাদের কারো মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, উক্ত তারকাদের মধ্যে অনেকেই ফেসবুকে সচল থেকে নিয়মিত বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় নির্ভরযোগ্যকোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তারকাদের মৃত্যুর ভুয়া দাবি টিকটকে প্রচার করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন তারকাদের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, চিত্রনায়ক শাকিব খান, ফেরদৌস, চিত্রনায়িকা শাবনূর, অপু বিশ্বাস, বুবলি, খলনায়ক মিশা সওদাগর, ডিপজল, কমেডি অভিনেতা কাবিলা এবং ছোটপর্দার অভিনেতা মুশফিক ফারহান মারা গেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো ভুয়া এবং বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Shakib Khan Facebook: Post
  • Ferdous Ahmed Facebook: Post
  • Apu Biswas Facebook: Post
  • Bubly Facebook: Post
  • Dipjol Facebook: Post
  • Misha Sawdagar Facebook : Post
  • Mushfiqu R Farhan Facebook: Post
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

মাশরাফির সম্পদ ৫১০ কোটি টাকা শীর্ষক দাবিটি ভিত্তিহীন

সম্প্রতি, “২০২২ সালে মাশরাফি বিন মোর্তজার সম্পত্তির পরিমাণ ৫১০ কোটি টাকা” শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে, “২০১৮ সালে নির্বাচনী হলফনামায় মাশরাফি বিন মোর্তজার উল্লেখিত সম্পত্তির পরিমাণ ৯ কোটি ১৫ লাখ। ২০২২ সালে সম্পত্তির পরিমাণ ৫১০ কোটি।”

মাশরাফির সম্পদ

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাশরাফি বিন মোর্তজার সম্পদের পরিমাণ ৫১০ কোটি টাকা শীর্ষক তথ্যটি সঠিক নয় বরং কতিপয় অনির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রচারিত পুরোনো ভিত্তিহীন তথ্যটি নতুন করে প্রচার করা হচ্ছে। 

মূলত, কিছু অনির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইটের দেওয়া ভিত্তিহীন তথ্যের ওপর ভারতীয় ক্রিকেট ভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকট্র্যাকারে ২০২২ সালের ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশর শীর্ষ ১০ ধনী ক্রিকেটারের তালিকা এবং সম্পদের পরিমাণ প্রকাশ করে। সেখানে তারা মাশরাফি মোর্তজার সম্পদের পরিমাণ ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ভিত্তিহীন কিছু ওয়েবসাইটের বরাতে উল্লেখ করার পর সেসময় তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দেশীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। তবে পরবর্তীতে মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর সংবাদের সূত্রের গ্রহণযোগ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তারা দুঃখপ্রকাশ করে সংবাদটি প্রত্যাহার করে নিয়ে।

প্রকৃতপক্ষে মাশরাফি বিন মোর্তজার বর্তমান প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ কত তা যাচাই করা সম্ভব নয়। তবে মাশরাফি মোর্তজার সম্পদের পরিমাণ ৫১০ কোটি শীর্ষক দাবিটি যে সূত্র থেকে এসেছে সেটি যে অনির্ভরযোগ্য এবং ভিত্তিহীন তা ২০২২ সালে ইন্টারনেটে একই দাবিটি ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া যায়। 

আলোচিত এই দাবি নিয়ে সেসময় রিউমর স্ক্যানারে প্রকাশিত বিস্তারিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন দেখুন এখানে। 

হালনাগাদ/ Update

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে একই দাবি সম্বলিত পোস্ট আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে একটি টিকটক পোস্টকে প্রতিবেদনে দাবি হিসেবে যুক্ত করা হলো।

আল আকসা মসজিদের জুমার নামাজের দৃশ্য দাবিতে কারবালার আশুরার ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘আল আকসা মসজিদের জুমার নামাজের দৃশ্য’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

আল আকসা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদের জুমার নামাজের দৃশ্যের নয় বরং এটি আশুরা উপলক্ষে ইরাকের কারবালায় অবস্থিত ইমাম হোসাইন ইবনে আলীর মাজারে হাজারো মানুষদের প্রবেশের ঘটনার ভিডিও। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে SIPAH-E -ABBAS নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট MILLIONS OF PEOPLE GATHERED IN KARBALA ❤️#karbala #iraq #iran #viralvideo #abbas #karbalastatus শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ইউটিউব শর্টস ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। এছাড়াও ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, ভিডিওটি ইরাকের কারবালা শহরে ধারণ করা। 

Video Comparison by Rumor Scanner

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে KARRAR_ABBAS নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট شاهد اقوى مشهد مرعب لدخول ركضة طويريج للأمام الحسين(ع) #اشتركو_بالقناة_ليصلكم_الجديد_ودعماً_لنا_للاس শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একই ঘটনার আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ভিডিওটির ১৬ সেকেন্ড থেকে ৩২ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটুকুর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। এছাড়াও ভিডিওটির শিরোনাম ইংরেজিতে অনুবাদ করে ভিডিওটি সম্পর্কে কারবেলার একই তথ্য জানা যায়।

Screenshot: Youtube

পরবর্তী অনুসন্ধানে Tuwairij’s run এবং Hussein শব্দ দুটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ইরানের সংবাদ সংস্থা Iran Press এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর  ‘Tuwairij run’ takes place in Holy city of Karbala, Iraq শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Iran Press

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, প্রতিবছর মহররমের ১০ম দিনে ইরাকের কারবালা শহরে ইমাম হোসাইন (আ.) এর পরিবার এবং সঙ্গীদের দুঃখ ও কষ্টের কথা স্মরণ করে কালো পোশাকধারী শোকার্ত তীর্থযাত্রীরা তুওয়াইরিজ দৌঁড় পালন করে থাকেন। এটি মূলত হাঁটা এবং দৌড়ের মধ্যবর্তী পর্যায়কে নির্দেশ করে যা উদ্বেগ, ভয় ও উত্তেজনা থেকে বেরিয়ে আসে।

Screenshot: Iran Press

এছাড়াও কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ইমাম হোসাইনের মাজারের প্রবেশদারের একটি ছবি পাওয়া যায়। যার সাথে আলোচিত ভিডিওটির দরজার মিল পাওয়া যায়।

Place Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি আল আকসা মসজিদের জুমার নামাজের ভিডিও নয়।

মূলত, প্রতিবছর মহররমের সময় ইরাকের কারবালায় তীর্থযাত্রীরা ইমাম হোসাইন (আ.) এর পরিবার এবং সঙ্গীদের দুঃখ কষ্টের কথা স্মরণ করে তুওয়াইরিজ দৌড় পালন করে থাকেন। এসময় তীর্থযাত্রীরা ২-৩ কিলোমিটার রাস্তা দৌড়ে ইমাম হোসাইনের মাজারে যান। উক্ত ঘটনার একটি ভিডিও সম্প্রতি আল আকসা মসজিদের জুমার নামাজের দৃশ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, ইরাকের কারবালায় আশুরা উদযাপনের ভিডিওকে আল আকসা মসজিদের জুমার নামাজের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সেনাবাহিনী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো ঘোষণা দেয়নি 

গত ২৩ নভেম্বর ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে Sabai Sikhi নামের একটি চ্যানেল থেকে ‘হাসিনাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলো সেনাবাহিনী, ভয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীর্ষক থাম্বনেইল ও ‘হাসিনাকে গ্রেফতারের নির্দেশ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন জানালেন সেনাপ্রধান’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

জাতীয় নির্বাচন

উক্ত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি ১ লক্ষ ৯৭ হাজার বার দেখা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটিতে প্রায় ২ হাজার তিনশত লাইক এবং ১১২টি মন্তব্য করা হয়েছে।

পরবর্তীতে একই ভিডিও বেশ কিছু ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রচার করা হয়। পোস্টগুলো দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত ভিডিওটি লিংক শেয়ার করে ফেসবুকে প্রচারিত একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সেনাবাহিনী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের নির্দেশ কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন গ্রহণের ঘোষণা দেয়নি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার পুরোনো ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন, যেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যদের পুরোনো কিছু কার্যক্রমের দৃশ্য দেখানো হয়।

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, “এবার সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এদিকে কমিশনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা প্রদান করা হয়। নির্বাচন কমিশনের এই প্রধান কর্মকর্তা বলেন, প্রয়োজনে পুনরায় তফসিল গ্রহণ করে সকল রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের মাধ্যমে এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”

উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, ভিডিওটি’র শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে উল্লেখিত তথ্যের সাথে বিস্তারিত সংবাদপাঠ অংশের অমিল রয়েছে। শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে সেনাবাহিনী কর্তৃক গ্রেফতারের নির্দেশ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন গ্রহণের বিষয়টি উল্লেখ করা হলেও সেবিষয়ে বিস্তারিত সংবাদপাঠ অংশে কিছুই বলা হয়নি। এমনকি সেখানে সেনাপ্রধান কিংবা সেনাবাহিনীর অন্যকোনো সদস্যের এসংক্রান্ত কোনো ঘোষণার ভিডিও ক্লিপও দেখানো হয়নি।

তবে চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম আর টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ‘বেসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কাজ করতে চায় সেনাবাহিনী’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: RTV

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র সেনাপ্রধানের বক্তব্যের অংশের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এর সাথে আলোচিত দাবির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

এছাড়াও, ২০১১ সালে বাংলাদেশে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। পরবর্তীতে এই ব্যবস্থা আর পুর্ণবহাল করা হয়নি। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন গ্রহণের বিষয়টি সেনাবাহিনীর আওতার বাইরে।

পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের নির্দেশ কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন গ্রহণের দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক নয়।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ নভেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘হাসিনাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলো সেনাবাহিনী, ভয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীর্ষক থাম্বনেইল ও ‘হাসিনাকে গ্রেফতারের নির্দেশ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন জানালেন সেনাপ্রধান’ শীর্ষক শিরোনামে ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি বেশ কয়েকটি ইউটিউব চ্যানেলেও প্রচার করা হয়। ভিডিওটির দাবির বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি পুরোনো ভিডিও ক্লিপ ও ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের নির্দেশ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন গ্রহণের ঘোষণা দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আওয়ামী লীগের ভোট চুরির ভিডিও দাবিতে টিকটকে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘আওয়ামী লীগের ভোট চোরির কি যোগ্যতা জীবনে প্রথম দেখলাম’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে।

ভোট চুরির

ভিডিওটির বাম পাশে ঢাকা-১৭ আসনে ভোট সুষ্ঠু না হলে ডিএমপি কমিশনারের নাকে খত দিয়ে পদত্যাগের ঘোষণার একটি তথ্য দেখা যাচ্ছে এবং অপরপাশে একজন ব্যক্তিকে দ্রুত কাগজে সিল মারতে দেখা যাচ্ছে।  

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোট সুষ্ঠু না হলে ডিএমপি কমিশনারের নাকে খত দিয়ে পদত্যাগের ঘোষণার বিষয়টি সত্য হলেও উক্ত দাবির সাথে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নির্বাচনে ভোটের অনিয়মের ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, এক ব্যক্তি কর্তৃক অফিশিয়াল নথিপত্রে দ্রুত সিল মারার পুরোনো ভাইরাল একটি ভিডিওতে উক্ত শিরোনাম যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

মূলত, গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহম্মদ আলী আরাফাত জয় লাভ করেন। এর আগে গত ৪ জুলাই ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোট সুষ্ঠু না হলে নাকে খত দিয়ে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার-ই প্রেক্ষিতে ডিএমপি কমিশনারের নাকে খত দেওয়ার বক্তব্যের অংশ এবং এক ব্যক্তির কাগজে দ্রুত সিল মারার  একটি ভিডিও একত্রিত করে এটিকে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট চুরির ভিডিও বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধান দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও ২০১৭ সাল থেকে ভারত ও পাকিস্তানের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে বিদ্যমান রয়েছে। উক্ত ভিডিওটির সাথে বাংলাদেশের নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। 

প্রসঙ্গত, গত ০৫ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনে উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণের সময় চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আজাদ হোসেন কর্তৃক প্রকাশ্যে ৫৭ সেকেন্ডে ৪৩টি ব্যালটে নৌকা প্রতীকে সিল মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় অভিযুক্ত আজাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়া একই দিনে অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে অবৈধভাবে ব্যালটে নৌকা প্রতীকে সিল মারার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এসব ঘটনায় গত ০৭ নভেম্বর এই দুই আসনে উপনির্বাচনের ফল স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে ভিডিওটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সারাদেশে নয়, বরগুনার একটি কলেজে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে 

0

সম্প্রতি, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ! শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

স্মার্টফোন ব্যবহার

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

পোস্ট গুলোর মন্তব্য ঘরে করা বিভিন্ন মানুষের মন্তব্য পড়ে দেখা যায়, আদেশটি সারাদেশের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ভেবে মানুষ বিষয়টি নিয়ে নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছে।

Collage: Rumor Scanner

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ হওয়ার আদেশটি সারাদেশের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য নয় বরং বরগুনা সরকারি কলেজে ক্লাস চলাকালীন একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার তথ্যটি দেশের সকল একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য দাবিতে প্রচারিত হচ্ছে।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দেশিয় অনলাইন পোর্টাল ঢাকা পোস্ট’র ফেসবুক পেজে গত ২৩ নভেম্বরে “একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ” শীর্ষক তথ্যে আলোচিত দাবিতে প্রকাশিত সম্ভাব্য প্রথম ফেসবুক পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

ঢাকা পোস্ট’র উক্ত ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে একই শিরোনামে গত ২৩ নভেম্বর ঢাকা পোস্ট’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বরগুনা সরকারি কলেজে ক্লাস চলাকালীন একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। গত ২২ নভেম্বর বরগুনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মতিউর রহমান স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে উক্ত নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

অর্থাৎ, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ব্যবহারের নিষেথাজ্ঞা শুধুমাত্র বরগুনা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য।

এছাড়া, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করার ব্যপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট এবং দেশিয় গণমাধ্যমে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ২২ নভেম্বর বরগুনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মতিউর রহমান স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে উক্ত কলেজে ক্লাস চলাকালীন একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে উক্ত নিষেধাজ্ঞার বিজ্ঞপ্তি নিয়ে অনলাইন পোর্টাল ঢাকা পোস্ট তাদের ফেসবুক পেজে ‘একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ’ শীর্ষক তথ্যে একটি ফেসবুক পোস্ট করে এবং একই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে। তবে উক্ত সংবাদ শিরোনাম এবং ফেসবুক পোস্টে বরগুনা সরকারি কলেজের কথা  উল্লেখ না থাকায় নেটিজেনরা বিষয়টি সারাদেশের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য আদেশ ভেবে বিভ্রান্ত হয়েছে এ বিষয়ে নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন এবং উক্ত পোস্টটিকে কপি পেস্ট করে বরগুনার বিষয় উল্লেখ না করে প্রচার করেছেন। 

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল আগামীকাল ২৬ নভেম্বর প্রকাশিত হবে।

সুতরাং, একটি কলেজের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধের আদেশকে সারাদেশের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য আদেশ ভেবে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সম্প্রতি ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের গাড়িবহরে হামলা হয়নি

সম্প্রতি, দেশের একাধিক গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের গাড়িবহরে হামলা করে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে এবং এই ঘটনায় তার এক দেহরক্ষী নিহত হয়েছেন। গত ০৭ নভেম্বর অধিকৃত পশ্চিম তীর এলাকায় এই হামলা হয় বলে দাবি করা হয়েছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলোতে। 

ফিলিস্তিনের

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন- সময় টিভি, কালবেলা, নিউজ২৪, ভোরের কাগজ, দেশ রূপান্তর, বাংলাদেশ জার্নাল, ডেইলি বাংলাদেশ, আজকের দর্পণ, বাংলাদেশ মোমেন্টস, ঢাকা টুডে, বিবার্তা২৪, বার্তা২৪

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজের পোস্টসহ আরও কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাহমুদ আব্বাসের উপর সাম্প্রতিক সময়ে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি বরং দেশটির একটি শরণার্থী শিবিরে মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের ঘটনার ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত দাবিটি নিয়ে যেসকল গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করেছে, সেসব খবরগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, খবরটির সূত্র হিসেবে রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস, সিএনএন তুর্ক, দ্য গার্ডিয়ান এবং হুররিয়াত এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। 

সূত্রগুলো যাচাই করতে গিয়ে TASS এর ওয়েবসাইটে গত ০৭ নভেম্বর প্রকাশিত আলোচিত প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়। ‘তাস’ও খবরটির সূত্র হিসেবে সিএনএন তুর্ক এবং হুররিয়াত এর নাম উল্লেখ করেছে।

Screenshot: TASS

তবে সিএনএন তুর্ক এর ওয়েবসাইটে সংশ্লিষ্ট সংবাদটি খুঁজে পাওয়া না গেলেও ইন্টারনেট আর্কাইভে সংবাদটি খুঁজে পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। অর্থাৎ, সংবাদমাধ্যমটি এ সংক্রান্ত খবরটি প্রকাশ করে পরবর্তীতে তা সরিয়ে নিয়েছে। 

তুরস্কের সংবাদমাধ্যম Hurriyet এর ওয়েবসাইটে অবশ্য এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি এখনও পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, Sons of Abu Jandal নামক একটি গ্রুপ হামলার দায় স্বীকার করেছে। 

হুররিয়াত এর প্রতিবেদনটি পাওয়া গেলেও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম The Guardian এর ওয়েবসাইটে মাহমুদ আব্বাসের বিষয়ে এ সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

Hurriyet এর দাবিকৃত Sons of Abu Jandal নামক গ্রুপের হামলার দায় স্বীকার সংক্রান্ত তথ্যের বিষয়ে অনুসন্ধানে নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিটির পক্ষে কোনো তথ্য মেলেনি। 

তবে ফিলিস্তিনের সংবাদমাধ্যম Palestine Chronicle এর ওয়েবসাইটে গত ০৬ নভেম্বর গ্রুপটির বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়৷ এতে বলা হয়, গত ০৫ নভেম্বর গ্রুপটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বার্তায় মাহমুদ আব্বাসকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বিবৃতির বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়ে নিজের অবস্থান পরিস্কার করার জন্য ২৪ ঘন্টার সময় বেঁধে দিয়েছে গ্রুপটি। গ্রুপটির বার্তায় মাহমুদ আব্বাসকে আবু মাজেন (মাহমুদ আব্বাস এই নামেও পরিচিত) বলে অভিহিত করা হয়েছে। 

প্যালেস্টাইন ক্রনিকল আরেক প্রতিবেদনে জানাচ্ছে, ‘সন্স অফ আবু জান্দাল’ গ্রুপের হুমকির খবর প্রকাশ্যে আসার (০৬ নভেম্বর) পরদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে যে, ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের একটি গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, এক্সের (সাবেক টুইটার) কিছু অ্যাকাউন্ট থেকে এই ঘটনাকে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের উপর একটি ‘হত্যার প্রচেষ্টা’ বলে অভিহিত করা হয়, যেখানে আব্বাসের একজন দেহরক্ষী যুদ্ধে নিহত হয়েছেন বলেও দাবি করা হয়। 

প্যালেস্টাইন ক্রনিকল লিখেছে, ইসরায়েলি সাংবাদিক এলিয়র লেভি অভিযোগ করেছেন যে একটি ফিলিস্তিনি সূত্র তাকে বলেছিল যে “ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনী একজন মাদক ব্যবসায়ীকে বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান চালানোর সময় গুলি বিনিময় হয় এবং মাহমুদ আব্বাসের গাড়িবহর সে সময় কাছাকাছি ছিল। 

এই তথ্যগুলো ছড়িয়ে পড়েছিল মূলত এ সংক্রান্ত একাধিক ভিডিওকে ব্যবহার করে৷ এসব ভিডিও মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানেরই।  

Screenshot: X

ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যম ‘France24′ এই ভিডিও এবং প্রাসঙ্গিক দাবি নিয়ে গত ৯ নভেম্বর একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রচারিত ভিডিওটি শরণার্থী শিবিরে মাদক পাচারকারীদের উপর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের ঘটনার৷ এর সাথে মাহমুদ আব্বাসের উপর হামলার ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। এই ঘটনায় সেসময় ফিলিস্তিন নিরাপত্তা বাহিনীর সাতজন সদস্য আহত হন। 

ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের একাধিক গণমাধ্যম সূত্রও (, ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 

তাছাড়া, গ্রীসের ফিলিস্তিন দূতাবাসও জানিয়েছে, মাহমুদ আব্বাসের উপর সেদিন (০৬ নভেম্বর) কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। 

মূলত, সম্প্রতি দেশের একাধিক গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে হত্যার চেষ্টা করা হলে তার এক দেহরক্ষী নিহত হয়েছেন। গত ০৭ নভেম্বর অধিকৃত পশ্চিম তীর এলাকায় তার গাড়িবহরে হামলার এই ঘটনা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। একইসাথে একই ঘটনার দাবিতে একাধিক ভিডিও-ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে জেনেছে, মাহমুদ আব্বাসের উপর সেদিন কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, পশ্চিম তীরের রামাল্লার কাছে অবস্থিত জালাজোন শরণার্থী শিবিরে মাদক পাচারকারীদের উপর পুলিশি অভিযানের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে শীর্ষক একটি দাবি গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র