সম্প্রতি, “বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে সরকারের” শীর্ষক শিরোনাম এবং “এইমাত্র গ্রেফতার হাসিনা বিচার করবে জনগণ” শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেফতার হয়নি বরং কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ছবি দিয়ে বিভ্রান্তিকর থাম্বনেইল ব্যবহার করে তৈরী ভিডিওর মাধ্যমে উক্ত ভুয়া দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।
গত ২১ জুলাই AK Azad নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে “বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে সরকারের” শীর্ষক শিরোনাম এবং “এইমাত্র গ্রেফতার হাসিনা বিচার করবে জনগণ” শীর্ষক থাম্বনেইলে আলোচিত ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়।
ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ৮ মিনিট ১ সেকেন্ডের আলোচিত ভিডিওটিতে কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই মনগড়া কিছু কথা উপস্থাপক বলে গিয়েছেন।
ভিডিওর শুরুতে বলা হয়, বিদায়ী ঘন্টা বেজে গেছে সবশেষে দেখবেন বাংলাদেশের গণমাধ্যম কতটা স্বাধীন- জানতে চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
বিস্তারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে শুরুতে বলা শিরোনামের সাথে সম্পর্কিত কোনো তথ্য কিংবা কোনো বিশ্বস্ত সূত্র পাওয়া যায়নি।
পাশাপাশি, ভিডিওটির থাম্বনেইলে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ছবি ব্যবহার করতে দেখা যায়।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতারের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে তা নিয়ে দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যমে তথ্য প্রকাশ হওয়া অনুমেয়। তবে দেশীয় কোনো গণমাধ্যমে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেফতার হলে স্বাভাবিকভাবেই তিনি জেলে থাকার কথা। ২১ জুলাই বিকেল ৩:২৯ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতারের তথ্যটি ফেসবুকে প্রচার করা হলেও ঐ দিন রাতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপের (জিসিআরজি) একটি বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশ নিতে দেখা যায়।
পাশাপাশি, শনিবার (২২ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সেনা নির্বাচন বোর্ড-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেও দেখা যায়।
মূলত, “এইমাত্র গ্রেফতার হাসিনা, বিচার করবে জনগণ” শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিওর মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেফতার হননি। তিনি গতকাল ও আজ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সশরীরে এবং ভার্চুয়ালি যোগ দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কিছু ছবি দিয়ে ভুয়া দাবি সম্বলিত থাম্বনেইল ব্যবহার করে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পূর্বের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ছবি ও বিভ্রান্তকর থাম্বনেইল ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে ইন্টারনেটে প্রচারিত বেশ কয়েকটি ভিডিও যাচাই করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করার দাবিটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- বিডিনিউজ২৪: “ইউক্রেইন যুদ্ধে ঝুঁকি থাকাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা জরুরি: শেখ হাসিনা“
- প্রথম আলো: “সেনাবাহিনী জনগণের আস্থা অর্জন করেছে: প্রধানমন্ত্রী“
- Rumor Scanner’s Own Analysis