Home Blog Page 544

আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাননি 

0

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনের প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ঢাকা-৮ আসনের নব নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম নতুন মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

নাছিম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম নতুন মন্ত্রিসভার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পাননি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় কারা থাকছেন তার নাম প্রকাশ করা হলেও কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন তা এখনো ঘোষণা করা হয়নি এবংকি গতকাল ১০ জানুয়ারি ঘোষিত ২৫ জন পূর্ণমন্ত্রী এবং ১১ জন প্রতিমন্ত্রীর তালিকায় আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের নামও নেই। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বিবিসি বাংলায় ১০ জানুয়ারি “মন্ত্রিসভায় নতুন কারা, বাদ পড়লেন কে কে?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন মন্ত্রিসভার দায়িত্ব পেতে যাওয়া ২৫ জন পূর্ণমন্ত্রী এবং ১১ জন প্রতিমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করেন। মো. মাহবুব হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে আয়োজিত শপথ অনুষ্ঠানে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সন্ধ্যা সাতটায় তাদের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।

পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে যাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে তারা হলেন – আ ক ম মোজাম্মেল হক, ওবায়দুল কাদের, নুরুল মজিদ হুমায়ুন, আসাদুজ্জামান খান কামাল, দীপু মণি, তাজুল ইসলাম, ফারুক খান, আবুল হাসান মাহমুদ আলী, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, আবদুস শহীদ, সাধনচন্দ্র মজুমদার, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, আব্দুর রহমান, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, আব্দুস সালাম, মহিবুল হাসান চৌধুরী, ফরহাদ হোসেন, ফরিদুল হক খান, জিল্লুল হাকিম, সাবের হোসেন চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং নাজমুল হাসান পাপন। এছাড়া, টেকনোক্র্যাট কোটায় পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে ২ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তারা হলেন- ইয়াফেস ওসমান এবং সামন্ত লাল সেন।

প্রতিমন্ত্রী হিসেবে যাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে তারা  হলেন- সিমিনি হোসেন রিমি, নসরুল হামিদ, জুনাইদ আহমেদ পলক, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মহিবুর রহমান, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাহিদ ফারুক, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, রুমানা আলী, শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং আহসানুল ইসলাম টিটো।

এছাড়া ইন্টারনেটে এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত তালিকার দুইটি ছবি পাওয়া যায়। উক্ত তালিকার নামের সাথে বিবিসি’র প্রতিবেদনে থাকা নামগুলোর হুবহু মিল রয়েছে।

Collage by Rumor Scanner

একই তারিখে বিডিনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে “৩৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভায় অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তনের আভাস” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা  যায়। 

অর্থাৎ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন ঘোষিত নতুন মন্ত্রিসভার দায়িত্ব পেতে যাওয়া ব্যক্তিদের তালিকায় আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমের নাম নেই এবং কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন সেটিও এখন পর্যন্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানানো হয়নি। তাই নতুন মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব কে পেতে যাচ্ছেন তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলার সুযোগ না থাকলেও যেহেতু আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমের নাম তালিকায় নেই সেহেতু এটি নিশ্চিত যে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পাননি।

মূলত, গত ০৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করে টানা চতুর্থবার সরকার গঠনের সুযোগ পেয়েছে আওয়ামী লীগ। গত ১০ জানুয়ারি সসংসদে ২৯৮ জন সংসদ সদস্যকে শপথ বাক্য পাঠ করান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। আজ ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭ টায় গণভবনে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। এর আগে ১০ জানুয়ারি রাতে নতুন মন্ত্রিসভার দায়িত্ব পেতে চাওয়া ২৫ জন পূর্ণমন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। এরইমধ্যে ঢাকা-৮ আসনের নব নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ১০ জানুয়ারি  মন্ত্রিপরিষদ সচিব ঘোষিত ২৫ জন পূর্ণমন্ত্রী এবং ১১ জন প্রতিমন্ত্রীর তালিকায় ঢাকা-৮ আসনের নব নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের নাম নেই এবং কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন এই প্রতিবেদন লিখার আগ পর্যন্ত সেটিও প্রকাশ করা হয়নি। 

সুতরাং, ঢাকা- ৮ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

পিটার হাস কর্তৃক জাল ভোট হাতেনাতে ধরার ভুয়া তথ্য ইউটিউবে 

গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে “জাল ভোট হাতেনাতে ধরলেন পিটার হাস ভোট কেন্দ্রে কুত্তা ছাড়া কোনো ভোটার নেই” শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

জাল ভোট

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি প্রায় ৬৯ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় সাড়ে ২ হাজার ৪০০ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস কর্তৃক দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলাকালীন জাল ভোট হাতেনাতে ধরা বিষয়ক কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিন্ন ভিন্ন একাধিক ভিডিও ক্লিপের সাথে উক্ত দাবি সম্বলিত শিরোনাম ও থাম্বনেইল যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটিতে কোথাও মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে দেখা যায়নি। তাছাড়া ভিডিওতে বিদেশি পর্যবেক্ষককদের ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করতে দেখা গেলেও সেখানে জাল ভোট ধরার কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি। 

ভিডিওতে থাকা দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এরূপ কোনো দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটিতে দেখানো ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও ক্লিপের বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই – ০১ ও ০২

অনুসন্ধানে দেখা যায় আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত প্রথম দুটি ভিডিও ক্লিপই গত ৭ জানুয়ারি বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনের বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যম এনটিভি ও কালবেলা’য় প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন (,) থেকে নেওয়া। 

Video Comparison : Rumor Scanner 
Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিও দুটি থেকে জানা যায়, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ এর বিষয়টি সার্বিকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখেন বিদেশি পর্যবেক্ষকরা। তবে ভিডিওগুলোর কোথাও ভোটগ্রহণ চলাকালীন জাল ভোট ধরার কোনো দৃশ্য কিংবা তথ্যের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। 

ভিডিও যাচাই – ০৩ 

আলোচিত ভিডিওটির পরবর্তী অংশে ব্যালট পেপারের একটি দৃশ্য দেখানো হয়। উক্ত ভিডিও ক্লিপটির বিষয়ে অনুসন্ধানে BNP Media Cell এর ফেসবুক পেজে গত ৭ জানুয়ারি একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

পরবর্তীতে ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে দ্য বিসনেস স্ট্যান্ডার্ড এর বাংলা সংস্করণে গত ৭ জানুয়ারি “নরসিংদীতে ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা, এক কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বাতিল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে দেখানো স্থিরচিত্রের সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়। 

ভিডিওটির বিষয়ে উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ শুরুর পূর্বে নরসিংদী-৪ (মনোহরদী ও বেলাবো) আসনের একটি ভোটকেন্দ্রে স্থানীয় ৮-১০ জন ব্যক্তি ইব্রাহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ঢুকে জোরপূর্বক প্রিজাইডিং অফিসারের কাছ থেকে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং কয়েকটি ব্যালটে নৌকা প্রতীকে সিলও মারে। এই ঘটনায় ঐ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বাতিল করা হয়।

তবে ভিডিওটির কোথাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের জাল ভোট ধরার কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি। 

মূলত, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ভোটগ্রহণে দেশের কয়েক আসনের বেশকয়েকটি কেন্দ্রে অনিয়মের ঘটনা গণমাধ্যমে উঠে ঘটনা ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ‘জাল ভোট হাতেনাতে ধরলেন পিটার হাস ভোট কেন্দ্রে কুত্তা ছাড়া কোনো ভোটার নেই’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে গত ০৭ জানুয়ারির নির্বাচনেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস কর্তৃক জাল ভোট হাতেনাতে ধরার কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর কোথাও স্বপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার থাম্বনেইল এবং শিরোনাম ব্যবহার করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

সুতরাং, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস কর্তৃক হাতেনাতে জাল ভোট ধরার দাবিতে ইন্টারনেটে একটি তথ্য প্রচার করা হচ্ছে ; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আদম হাওয়া পাপ করল শীর্ষক পৃষ্ঠার ছবিটি শিক্ষাক্রমের কোনো পাঠ্য বইয়ের নয়

0

সম্প্রতি আদম হাওয়া পাপ করল শীর্ষক শিরোনামে একটি বইয়ের পৃষ্ঠার ছবিকে নতুন শিক্ষা কারিকুলাম তথা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রণীত একাধিক বইয়ের পৃষ্ঠা দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

দাবি ০১

আলোচিত বইয়ের পৃষ্ঠাটি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রকাশিত তৃতীয় শ্রেণীর বইয়ের পৃষ্ঠার ছবি দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এখানে, (আর্কাইভ)।

পাঠ্য বই

দাবি ০২

একই ছবিকে সপ্তম শ্রেণীর বইয়ের দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

দাবি ০৩

নির্দিষ্ট কোনো শ্রেণীর কথা উল্লেখ না করে বইটির মাধ্যমে দেশের স্কুলগুলোতে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে এমন দাবি করে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিগুলোতে টিকটকে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আদম হাওয়া পাপ করল শীর্ষক শিরোনামের বইয়ের পৃষ্ঠার ছবিটি এনসিটিবি কর্তৃক প্রণীত কোনো পাঠ্যবইয়ের নয় বরং, লাইট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ নামে একটি প্রতিষ্ঠান ২০২১ সালে সর্বশেষ বইটি প্রকাশ করেছিল যার সাথে এনসিটিবি বা দেশের শিক্ষাক্রমের কোনো সম্পর্ক নেই।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ছবিটির উৎসের খোঁজ করার চেষ্টা চালিয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ফেসবুকের মনিটরিং টুল এবং ম্যানুয়াল সার্চ করে আলোচিত ছবি সম্বলিত প্রথম পোস্টের সন্ধান মেলে গত বছর (২০২৩)।   আশরাফ আলী ফয়েজি (Ashraf Ali Foyji) নামে এক ব্যক্তি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত প্রথম পোস্ট (আর্কাইভ) করেন।

জনাব ফয়েজি তার পোস্টে দুইটি ছবি যুক্ত করেছেন। একটি আদম হাওয়া পাপ করল শীর্ষক শিরোনামের আলোচিত সেই পৃষ্ঠার ছবি আর অন্যটি এই পৃষ্ঠা যে বইতে রয়েছে তার ভেতরের পরিচিতি পাতার ছবি। 

এই পরিচিতি পাতা থেকে জানা যাচ্ছে,  বইটির নাম আলোর দিশারি, যা শিক্ষার্থীদের অনুশীলন বই হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বইটির প্রকাশনায় রয়েছে ‘লাইট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ২০১৪ সালে প্রথম প্রকাশ হওয়ার পর সর্বশেষ এটি প্রকাশিত হয় ২০২১ সালের নভেম্বরে। বইটি কোন শ্রেণির সে বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ নেই এই পাতায়। 

জনাব ফয়েজি তার এই পোস্টের ক্যাপশনে লিখেছেন, “বাংলাদেশের মুসলমান নিষ্পাপ শিশুদেরকে এগুলো কি শিক্ষা দেওয়া হইতেছে? বিশেষ করে অশিক্ষিত অভিভাবক নিজের সন্তানকে বর্তমানে জেনারেল শিক্ষা দেওয়া থেকে বিরত রাখা ফরজ।” 

অর্থাৎ, তিনি ধরেই নিয়েছেন দেশের স্কুলগুলোতে এই বইটি পড়ানো হচ্ছে। 

তার পোস্টে একজন জানতে চেয়েছেন, এটি কোন স্কুলে পড়ানো হচ্ছে। জবাবে তিনি জানালেন, সেদিন সকালে বাসা থেকে বের হতেই তিনি দেখেন পাশের বাসার একটা মেয়ের হাতে এই বই। তিনি ভেবেছেন এটা নতুন বছরের বই। তখন এই ছবি দুটো তুলেছেন তিনি। 

Screenshot collage: Rumor Scanner 

অথচ, ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যবই পৌঁছায় না। রেওয়াজ অনুযায়ী পহেলা জানুয়ারি বই উৎসবের মাধ্যমে সারা দেশে নতুন পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়। তাই জনাব ফয়েজির ভাবনা ভুল বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। তাছাড়া, দেশের স্কুলগুলোতে যে সকল পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়ে থাকে সেসব বইয়ে স্পষ্ট করেই শ্রেণির নাম উল্লেখ থাকে। কিন্তু আলোচিত এই বইতে সেটির উল্লেখ নেই। 

‘লাইট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ নামক প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে অনুসন্ধানে বাংলাদেশি এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের বিষয়ে জানা যায়নি। 

আমরা পরবর্তীতে এ সংক্রান্ত দাবিগুলো নিয়ে ধাপে ধাপে অনুসন্ধান করেছি। 

দাবি ০১: তৃতীয় শ্রেণির বইতে রয়েছে এই পৃষ্ঠা 

অনুসন্ধানে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রণীত ২০২৪ সালের তৃতীয় শ্রেণীর পাঠ্যবইগুলো পর্যবেক্ষণ করে কোনো বইতেই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পৃষ্ঠাটির উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, আলোচিত পৃষ্ঠার ছবিটি তৃতীয় শ্রেণীর কোনো পাঠ্যবইয়ের নয়।

দাবি ০২: সপ্তম শ্রেণির বইতে রয়েছে এই পৃষ্ঠা 

অনুসন্ধানে এনসিটিবি কর্তৃক প্রকাশিত সপ্তম শ্রেণীর ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের সপ্তম শ্রেণীর (মাধ্যমিকদাখিল) বইগুলো পর্যবেক্ষণ করেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পৃষ্ঠাটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, আলোচিত পৃষ্ঠার ছবিটি সপ্তম শ্রেণীর ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ের নয়।

দাবি ০৩: নির্দিষ্ট কোনো শ্রেণীর কথা উল্লেখ না করে বইটির মাধ্যমে দেশের স্কুলগুলোতে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার টিম তৃতীয় এবং সপ্তম শ্রেণি বাদে অন্য শ্রেণিগুলোর পাঠ্যবইগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে। এনসিটিবি কর্তৃক প্রকাশিত ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রাক-প্রাথমিক পর্যায় ও প্রাথমিক স্তরের সকল বই এবং মাধ্যমিক স্তর ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সকল বই পর্যবেক্ষণ করেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পৃষ্ঠাটির উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

তাছাড়া, এ সংক্রান্ত ছবিটি যেহেতু গত ডিসেম্বরে পোস্ট করা হয়েছে ফেসবুকে এবং বইটিতে দেখা যাচ্ছে এটি সর্বশেষ ২০২১ সালে প্রকাশিত হয়েছে, সেহেতু গেল বছর এবং ২০২১ সালের পাঠ্যবইগুলোও পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু উক্ত বছরগুলোর পাঠ্যবইতে প্রচারিত পৃষ্ঠাটির অস্তিত্ব মেলেনি। 

আলোচিত পৃষ্ঠার ছবিটির বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলছেন, আলোর দিশারি শিক্ষার্থীদের অনুশীলন বই-১ নামে এনসিটিবির কোনো বই নেই। এনসিটিবির বইয়ের তালিকা ওয়েবসাইটেই দেওয়া আছে। লাইট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের সঙ্গেও এনসিটিবির কোনো সম্পর্ক নেই।

মূলত, আদম হাওয়া পাপ করল শীর্ষক শিরোনামের একটি বইয়ের পৃষ্ঠার ছবি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রকাশিত বইয়ের পৃষ্ঠার ছবি দাবি করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২৩ সালে প্রথম ছড়িয়ে পড়া এই বইয়ের ছবিটির সাথে দেশের শিক্ষাক্রমের কোনো সম্পর্ক নেই। আলোচিত বইয়ের ছবিটিও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রকাশিত কোনো বইয়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, বইটি ‘লাইট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২১ সালে সর্বশেষ প্রকাশিত হয়েছিল।

সুতরাং, আদম হাওয়া পাপ করল শীর্ষক শিরোনামের একটি বইয়ের পৃষ্ঠার ছবি  এনসিটিবি কর্তৃক প্রকাশিত বইয়ের পৃষ্ঠার ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

এমপি হওয়ার পর নয়, সাকিবের বিরুদ্ধে ব্যারিস্টার সুমনকে মারতে চাওয়ার অভিযোগের ভিডিওটি ২০২৩ সালের 

গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাকিব আল হাসান এবং হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে ঈগল প্রতীক নিয়ে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে সাকিব আল হাসান হামলা করতে উদ্যত হয়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

সুমনকে মারতে চাওয়ার

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর সাকিব আল হাসান ব্যারিস্টার সুমনকে হামলা করতে উদ্যত হননি বরং ২০২৩ সালে ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ চলাকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে সাকিব আল হাসান কর্তৃক হামলা চেষ্টার অভিযোগ এনে ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করেছিলেন সুমন, যা নতুন করে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘যমুনা টিভি’র একটি ভিডিও প্রতিবেদন যুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ ‘যমুনা টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ‘ব্যারিস্টার সুমনকে দেখা মাত্রই মারতে আসেন সাকিব! কী ঘটেছিল হোটেলে?’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Jamuna TV

ভিডিওতে ২০২৩ সালের মার্চে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের ফেসবুকে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তার বরাতে জানানো হয়, ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ চলাকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে মারতে উদ্যত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

পরবর্তীতে সুমনের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ ‘সাকিব আল হাসান একজন সেলেব্রিটি হওয়ায় তার অপরাধের কি বিচার হবে না?’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

উক্ত ভিডিও বার্তায় তিনি ঘটনাটির বিষয়ে বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যকার যে সিরিজ হয়, সেখানে তার (সাকিব) সঙ্গে আমার হোটেল সোনারগাঁওয়ে দেখা হয়েছিল। ওই সময় আমাকে দেখে সে পুলিশ এবং বিসিবি কর্মকতার্দের সামনে আমাকে মারতে এসেছিল। সেখানে কিছু আমেরিকান লোকজন ছিল, যাদের সঙ্গে আমি দেখা করতে গিয়েছিলাম। তাদের সামনে সবাইকে অগ্রাহ্য করে আমাকে মারতে আসছিলেন। আমি কিছু বলিনি।’’

অর্থাৎ, ব্যারিস্টার সুমনকে সাকিব আল হাসান মারতে উদ্যত হওয়ার অভিযোগ সম্বলিত এই ভিডিওটি ২০২৩ সালের মার্চের।

মূলত, ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে এক ভিডিও বার্তায় ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিষয়ে অভিযোগ করে বলেন, সাকিব তাকে ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ চলাকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে দেখা হওয়ার পর মারতে উদ্যত হয়েছিলো। সেসময় বিষয়টি নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত বিষয়টিকেই সাকিব আল হাসান মাগুরা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে সদ্য নির্বাচিত সদস্য সদস্য (স্বতন্ত্র) ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে হামলা করতে উদ্যত হয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং ব্যারিস্টার সুমনকে জড়িয়ে প্রচারিত ভুয়া তথ্য শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ব্যারিস্টার সুমনকে সাকিব আল হাসান হামলা চেষ্টার অভিযোগ সম্পর্কিত পুরোনো ঘটনার ভিডিওকে সাকিব এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরের ঘটনা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

‘জয় বাংলা’ গান শুনে নুরুল হক নুরের আওয়ামী লীগের মিছিলে যোগদানের দাবিটি মিথ্যা 

সম্প্রতি, “জয় বাংলা গান শুনে নিজেকে সামলাতে পারলো না নুরুল হক নুর” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর ‘জয় বাংলা’ গান শুনে আওয়ামী লীগের মিছিলে যোগ দিয়েছেন। 

নুরুল হক নুরের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘জয় বাংলা’ গান শুনে নুরুল হক নুরের আওয়ামী লীগের মিছিলে যোগদান করার দাবিটি সঠিক নয় বরং গত ০৫ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জন এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে গণঅধিকার পরিষদের গণমিছিলের ভিডিওতে ‘জয় বাংলা’ গানটি সম্পাদনার মাধ্যমে যুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা ব্যানারের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ‘BNP Media Celll এর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ০৫ জানুয়ারি “গণঅধিকার পরিষদ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।  

Video Comparison : Rumor Scanner 

ভিডিওটির বিস্তারিত বর্ণনা থেকে জানা যায়, সেদিন গণবিরোধী ডামি নির্বাচন বর্জন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশব্যাপী হরতালের সমর্থনে রাজধানীর পুরানা পল্টনে মিছিল ও সমাবেশ করে গণঅধিকার পরিষদ। 

উক্ত মিছিলের ভিডিওটিতে ‘মুজিব থেকে হাসিনা, বাকশাল মানি না’ ‘মুজিব থেকে হাসিনা, স্বৈরাচার মানি না’ ‘ভোট চোর, ভোট চোর, শেখ হাসিনা ভোট চোর’ শীর্ষক স্লোগান শুনতে পাওয়া যায়। 

তবে ভিডিওটির কোথাও ‘জয় বাংলা’ গানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, উক্ত মিছিলের ভিডিওটিতে ‘জয় বাংলা’ গানটি সম্পাদনার মাধ্যমে যুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে। 

এছাড়া, উক্ত মিছিলের বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কালের কণ্ঠ এর ওয়েবসাইটে গত ০৫ জানুয়ারি “ভোটের দিন ‘গণকারফিউ’ পালনের আহ্বান গণঅধিকার পরিষদের” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে থাকা স্থিরচিত্রের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একটি অংশের মিল পাওয়া যায়। অর্থাৎ প্রতিবেদনে আলোচিত ভিডিওটির বিষয়েই বলা হয়েছে। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন বর্জন ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে গণমিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ। 

মূলত, গত ০৫ জানুয়ারি গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুরের সভাপতিত্বে ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে গণমিছিল ও সমাবেশ করে দলটি। উক্ত গণমিছিলের ভিডিও ব্যবহার করে ‘জয় বাংলা গান শুনে নিজেকে সামলাতে পারলো না নুরুল হক নুর’ শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে জেনেছে, উক্ত মিছিলের ভিডিওটি আওয়ামী লীগের মিছিলের ভিডিও নয় এবং ভিডিওটির ব্যাকগ্রাউন্ডের কোথাও ‘জয় বাংলা’ গানটির অস্তিত্ব ছিল না। প্রকৃতপক্ষে গণঅধিকার পরিষদের একটি মিছিলের ভিডিওতে ‘জয় বাংলা’ গানটি সম্পাদনার মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে।

সুতরাং, ‘জয় বাংলা’ গান শুনে নুরুল হক নুরের আওয়ামী লীগের মিছিলে যোগদান করার দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

আশা’র নামে ফেসবুকে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার

0

সম্প্রতি, দেশের আত্মনির্ভরশীল ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান Association for Social Advancement (আশা)’তে কর্মী নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে দাবিতে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হচ্ছে, সংস্থাটি ট্রেইনি হিসাবরক্ষক পদে ৫৪৭ জন এবং ফিল্ড অফিসার পদে ৭৩৩ জন নিয়োগ দিচ্ছে।

ভুয়া নিয়োগ

উক্ত দাবিতে প্রচারিত কিছু ফেসবুক পোস্ট এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বেসরকারি সংস্থা আশা ট্রেইনি হিসাবরক্ষক এবং ফিল্ড অফিসার পদে নিয়োগের জন্য সম্প্রতি এমন কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়নি বরং এনজিওটির নাম ও লোগো ব্যবহার করে প্রচারিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটিকে সংস্থাটির পক্ষ থেকে ভুয়া বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে বেসরকারি সংস্থা আশা’র নাম ও লোগো সম্বলিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২০২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত সূত্র ধরে আশা’র অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইট  পর্যবেক্ষণ করে ২০২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর তারিখে সংস্থাটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত এমন কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে উক্ত বিজ্ঞপ্তিটির বিষয়ে আশা’র ফেসবুক পেজে ১০ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি সতর্কীকরণ পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তির একটি ছবি প্রকাশ করে আশা তাদের ফেসবুক পোস্টে জানায়, “কিছু অসাধু লোক ও চক্র আশার নামে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কুটকৌশলে অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার করে সাধারণ মানুষদের নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। সংযুক্ত নিয়োগ বিজ্ঞাপ্তটি যার একটি অংশমাত্র। এদের প্রতারণার ফাঁদে পা না দেয়ার জন্য সর্বসাধারণকে সতর্ক করা যাচ্ছে।”

মূলত, দেশীয় বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) আশা’র নাম ও লোগো ব্যবহার করে সংস্থাটিতে ট্রেইনি হিসাবরক্ষক এবং ফিল্ড অফিসার পদে কর্মী নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। আশা সম্প্রতি এরূপ কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি বলে সংস্থাটি তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে এক সতর্কীকরণ পোস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে।  

উল্লেখ্য, পূর্বেও ইন্টারনেটে বেসরকারি সংস্থা আশা’র নামে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, “আশা’য় কর্মী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি” শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। 

তথ্যসূত্র

জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদকে গ্রেফতারের গুজব 

সম্প্রতি, এই মাত্র জামায়াত নেতা গ্রেফতার, ঢাকা ঘিরে ফেলছে জামাত শিবির মিনি কেয়ামত শুরু– শীর্ষক শিরোনামে এবং এই মাত্র জামায়াত নেতা ডক্টর মাসুদ গ্রেফতার, ঢাকা ঘিরে ফেলছে জামাত মিনি কেয়ামত শুরু– শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ড. শফিকুল ইসলাম

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ গ্রেফতার করা হয়নি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, একজন লাইভ ভিডিও এটি। ভিডিওটিতে দেখা যা পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া লাইভ করা ব্যক্তির ভাষ্যমতে ঘটনাটি গত ০৫ জানুয়ারি বায়তুল মোকাররম এলাকার ঘটনা। 

ভিডিও যাচাই

আলোচিত ভিডিওটিতে পুলিশ কর্তৃক এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে দেখা যায়। ভিডিওতে উপস্থাপকের ভাষ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Musfiq R. Islam নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ০৫ জানুয়ারি “বায়ুতল মোকাররম থেকে সরাসরি ৫ জানুয়ারী ২০২৪ শুক্রবার বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজের পর মুসল্লিদের প্রতিবাদ মিছিলে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের হামলা এবং অনেক নেতা করমি গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটিতে পুলিশ কর্তৃক একজনকে গ্রেফতার করতে দেখা যায়। যার সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির চেহারার হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

এছাড়া, Alokito protidin নামক একটি ফেসবুক পেজে একই তারিখে “বাইতুল মোকাররম মসজিদের আশপাশে ব্যাপক পুলিশের উপস্থিতি। চারদিকে থমথমে অবস্থা, জনমনে আ_শং_কা। কি জানি কি হয়!!” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটিতেও আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা ব্যক্তিকেই গ্রেফতার হতে দেখা যায়। 

তবে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির সাথে জামায়াতে ইসলামীর নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের চেহারার কোনো মিল নেই। 

Image Comparison: Rumor Scanner 

পাশাপাশি, দৈনিক ইত্তেফাকের ইউটিউব চ্যানেলে ০৫ জানুয়ারি “বায়তুল মোকাররম থেকে তিনজন আটক” শীর্ষক শিরোনামে একটি লাইভ ভিডিও পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটি থেকে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে সেদিন জামায়াতে ইসলামীর নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ গ্রেফতার হননি। তবে তিনজন মুসুল্লিকে আটক করেছে পুলিশ। 

মানবজমিনের ওয়েবসাইটে ০৬ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও তিনজন মুসুল্লি আটকের তথ্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ গ্রেফতার হওয়া সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। 

এরপর, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ সাম্প্রতিক সময়ে গ্রেফতার হয়েছেন কি না সে বিষয় অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা সামাজিক মাধ্যমের বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, তার গ্রেফতার হওয়ার দাবির একদিন পর অর্থাৎ ০৬ জানুয়ারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করছেনে। 

Screenshot: Dr. Md. Shafiul Islam Masud Facebook Post 

মূলত, গত ০৫ জানুয়ারি  জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে কিছুসংখ্যক মুসল্লি সরকারবিরোধী বক্তব্য ও ৭ তারিখের নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে উপস্থিত অনলাইন গণমাধ্যমে বক্তব্য প্রদান করেন। ঐ সময় ঘটনাস্থল থেকে তিন ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। পরবর্তীতে ইন্টারনেটে উক্ত ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ করে দাবি করা হয়, ঐ স্থান থেকে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঘটনাস্থলে জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ উপস্থিতই ছিলেন না এবং তাকে গ্রেফতারও করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন ব্যক্তি গ্রেফতার হওয়ার ভিডিওতে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, জামায়াতে ইসলামীর নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ গ্রেফতার হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

নৌকা প্রতীকে সিল মারা ব্যালটের ভাইরাল এই ভিডিওটি কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের নয়

গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের একটি ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে সিল মারা ব্যালটের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

নৌকা প্রতীকে সিল মারা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে সিল মারা ব্যালটের ভিডিওটি কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের নয় বরং ভিডিওটি কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনে নৌকা প্রতীকে সিল মারা ব্যালটের।

ভিডিওটির সত্যতা জানতে ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে অনলাইন পোর্টাল বিডিনিউজ২৪ এ গত ৭ জানুয়ারি “চান্দিনায় তিন কেন্দ্রে নৌকায় সিল মারা ব্যালট জব্দ, পরে বাতিল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে সাথে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৭ আসনের চান্দিনা উপজেলায় তিনটি ভোটকেন্দ্রে আগে থেকে নৌকায় সিল মারা ব্যালট জব্দ করা হয়। গত ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর উচ্চ বিদ্যালয়, মহিচাইল উচ্চ বিদ্যালয় এবং নাওতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র থেকে এসব ব্যালট জব্দ করা হয়।

জাতীয় দৈনিক দ্য বিজনেস স্টান্ডার্ড এ গত ৭ জানুয়ারি “কুমিল্লার একাধিক কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের সিল মারা ব্যালট জব্দ, পরে বাতিল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

Indication by Rumor Scanner 

এছাড়া আসন দুইটির প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতীক যাচাই করে ভাইরাল ভিডিওর ব্যালটে থাকা প্রতীকের সাথে কুমিল্লা-৭ আসনের প্রার্থীদের প্রতীকের হুবহু মিল এবং কুমিল্লা-১১ আসনের প্রার্থীদের প্রতীকের অমিল খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন- ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ব্যালটে গাছমা, মাছ, একতারা ও ডাব প্রতীকের ছবি দেখা গেলেও কুমিল্লা-১১ আসনের প্রার্থীদের এই প্রতীকগুলো ছিল না।

Comparison by Rumor Scanner 

মূলত, গত ৭ জানুয়ারি সারাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট চলাকালে কয়েকটি আসনের বেশকয়েকটি কেন্দ্রে প্রকাশ্যে ব্যালটে নৌকা প্রতীকে সিল মারার অভিযোগ উঠে এবং নৌকায় সিল মারার ঘটনায় কয়েকটি ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়। গণমাধ্যম সূত্রে কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনের অন্তত তিনটি কেন্দ্রে নৌকার সিল মারা ব্যালটের অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায় এবং উক্ত ব্যালটগুলো বাতিল হওয়া কথা জানানো হয়। তবে কুমিল্লা-৭ আসনের একটি কেন্দ্রের নৌকায় সিল মারা ব্যালটের একটি ভিডিও কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের ভোট জালিয়াতির প্রমাণের ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়।

প্রসঙ্গত, ৭ জানুয়ারি দুপুরে ভোট চলাকালে কেন্দ্র দখল, জাল ভোট দেওয়া, এজেন্টদের জোরপূর্বক কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন কুমিল্লা- ১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফুলকপি প্রতীকের মো. মিজানুর রহমান এবং কুমিল্লা- ৭ (চান্দিনা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের মুনতাকিম আশরাফ টিটু।

সুতরাং, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনে ভোট কেন্দ্রে নৌকায় সিল মারা ব্যালটের ভিডিও কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ট্রেনে পুলিশের আগুন দেওয়া এবং সেনাবাহিনী কর্তৃক হাতেনাতে ধরা পড়ার গুজব 

সম্প্রতি, ট্রেনে আগুন লাগিয়ে ধরা খেল পুলিশ, হাতেনাতে ধরলো সেনাবাহিনী– শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ট্রেনটিতে পুলিশ আগুন দিয়েছে এবং সেনাবাহিনী পুলিশকে হাতেনাতে ধরেছে। 

ট্রেনে পুলিশের আগুন

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজারবার দেখা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ০৫ জানুয়ারি রাতে রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ মিলেনি। এছাড়া এ বিষয়ে সেনাবাহিনী কর্তৃক পুলিশকে হাতেনাতে ধরার দাবিটিও বানোয়াট বরং বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আইজিপির দেওয়া একটি বক্তব্য এবং আইজিপির দেওয়া বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজের একটি সমালোচনামূলক বক্তব্যের ভিডিও যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

ভিডিও যাচাই-১ 

আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে কয়েকজনকে বক্তব্য দিতে দেখা যায় এবং ভিডিওটিতে বেসরকারি টেলিভিশন সময় টিভি’র লোগো দেখা যায়। সেই লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধানে সময় টিভি’র ফেসবুক পেজে গত ০৫ জানুয়ারি “ভেতরে বাচ্চা আছে বলা যুবকও ট্রেন থেকে বের হতে পারেননি” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, গত ০৫ জানুয়ারি রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যের ভিডিও এটি। 

অর্থাৎ, এখানে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে পুলিশের আগুন দেওয়া বা সেনাবাহিনী পুলিশকে হাতেনাতে ধরার দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। 

ভিডিও যাচাই- ২

এই অংশে একজন সাংবাদিককে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় লাইভ করতে দেখা যায়। সেই লাইভে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য নেওয়া হয় এবং ভিডিওটিতে বেসরকারি টেলিভিশন দেশ টিভি’র লোগো দেখা যায়। সেই লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধানে দেশ টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৫ জানুয়ারি “স্ত্রী-সন্তানের জন্য টান দিয়েও বের করা যায়নি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি লাইভ ভিডিও পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটিও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় লাইভ দেশ টিভি ঘটনাস্থল থেকে লাইভ সম্প্রচার করে। সেই লাইভ করার সময় প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যের ভিডিও এটি। 

অর্থাৎ, এখানেও আলোচিত দাবিগুলো নিয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। 

ভিডিও যাচাই- ৩

এই অংশে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল আল-মামুনকে বক্তব্য দিতে দেখা যায় এবং চ্যানেল ২৪ এর লোগোও লক্ষ্য করা যায়। সেই লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধানে চ্যানেল ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৫ জানুয়ারি “নির্বাচন ঘিরে বিএনপির সকল পরিকল্পনা আমরা জেনে গেছি” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, ০৫ জানুয়ারি দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজে এক বিফ্রিংয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল আল-মামুনের দেওয়া একটি বক্তব্যের ভিডিও এটি। 

তবে, বক্তব্যে আইজিপি চৌধুরী আব্দুল আল-মামুন আলোচিত দাবিগুলো সম্পর্কিত কোনো তথ্য উল্লেখ করেননি বা এ-সংক্রান্ত কোনো কথাও বলেননি। 

ভিডিও যাচাই- ৪

এই অংশে সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। পরবর্তীতে অনুসন্ধানে Voice Bangla নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৬ জানুয়ারি “বিএনপির নাম ধরে আইজিপি ভয়*ঙ্কর ইঙ্গিত দিলেন” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, ০৫ জানুয়ারি আইজিপি’র দেওয়া একটি বক্তব্যের সমালোচনা করা তিনি একটি বক্তব্য দেন। এছাড়া ভিডিওটিতে দৈনিক সমকাল এর ওয়েবসাইটে ০৫ জানুয়ারি “বিএনপির পরিকল্পনা জেনে গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: আইজিপি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাঠ করতেও শোনা যায়। 

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত ০৫ জানুয়ারি রাত ৯ টার দিকে রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে লাইভ সম্প্রচার করে সময় টিভি এবং দেশ টিভি। এছাড়া, গত ০৫ জানুয়ারি আইজিপির দেওয়া একটি বক্তব্য প্রচার করে চ্যানেল ২৪ এবং আইজিপির দেওয়া বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা করে একটি বক্তব্য দেন সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওগুলোথেকে কিছু অংশ কেটে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিডিওগুলো যুক্ত করে “ট্রেনে আগুন লাগিয়ে ধরা খেল পুলিশ, হাতেনাতে ধরলো সেনাবাহিনী” শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, বেনোপাল ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, পুলিশ কর্তৃক ট্রেনে আগুন দেওয়া এবং সেনাবাহিনী কর্তৃক হাতেনাতে পুলিশকে আটক করা হয়েছে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

নির্বাচনে হেরে মমতাজের কান্নার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি নির্বাচনী প্রচারণার সময়ের

গত ০৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম হেরে যান। পরবর্তীতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে যাতে মমতাজকে কান্না করতে দেখা যাচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, নির্বাচনে হারার পর মমতাজের কান্নার দৃশ্য এটি। 

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন দীপ্ত টিভি (ফেসবুক), এটিএন নিউজ (ইউটিউব)।

মমতাজের কান্না

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজসহ অন্যান্য অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই ক্লিপ ব্যবহার করে ইউটিউবের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই ক্লিপে টিকটকের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মমতাজ বেগমের কান্নার ভিডিওটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হারার পরবর্তী সময়ের নয় বরং এটি গত ০৪ জানুয়ারি নির্বাচনী প্রচারণায়র সময়ের ঘটনা।

প্রচারিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘সাহসী কণ্ঠ নিউজ’ নামক ফেসবুক পেজে গত ৫ জানুয়ারি একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারণার শেষ দিনে  মমতাজ বেগম প্রচারণার সময় পিতা-মাতার কথা স্মরণ করে কান্না করেন।

পরবর্তীতে মমতাজ বেগম এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গত ০৪ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত মূল লাইভ ভিডিও থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

অর্থাৎ, এটি নির্বাচনের পূর্বের দৃশ্য।

মূলত, গত ০৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে  মানিকগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গেছেন মমতাজ বেগম। তিনি হেরে যাওয়ার পর একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে যাতে দাবি করা হচ্ছে, হেরে গিয়ে তার কান্না করার দৃশ্য এটি। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায় ভিডিওটি নির্বাচন পরবর্তী সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওটি গত ০৪ জানুয়ারি মমতাজ বেগমের নির্বাচনী প্রচারণার সময়ের দৃশ্য।

উল্লেখ্য, নির্বাচনে হারার পর মমতাজ বেগম গত ৯ জানুয়ারি বক্তব্য রাখেন এবং সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা জানান।

সুতরাং, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসনে মমতাজ বেগম হেরে কান্না করছেন দাবিতে নির্বাচনের পূর্বে প্রচারণায় গিয়ে তার কান্না করার ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র