Home Blog Page 544

তামিম ইকবালের হাতে তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত এই ছবিটি এডিটেড

0

সম্প্রতি, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) চলাকালীন খেলার মাঠে ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ও একজন যুবকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি একত্রে ধরে থাকার ছবিযুক্ত একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

তারেক রহমানের ছবি

টিকটকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, তামিম ও একজন যুবক একত্রে তারেক রহমানের ছবি ধরে রাখার দাবিতে প্রচারিত ছবিটি আসল নয় বরং বিপিএলে ম্যাচ শেষে তামিমের একজন শুভাকাঙ্ক্ষীর উপহার দেওয়া হাতে আঁকা তামিমের পরিবারের ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে তারেক রহমানের ছবি যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

ছবিটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে অনলাইন পোর্টাল ঢাকা পোস্ট’র ওয়েবসাইটে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ভক্তের উপহারও পেলেন ম্যাচসেরা তামিম শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Dhakapost

উক্ত প্রতিবেদনের সাথে যুক্ত ফিচার ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির তারেক রহমানের অংশ ব্যতিত বাকি অংশের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Photo Comparison by Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল)-এ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে তামিম ইকবালের দল ফরচুন বরিশাল জয়লাভ করে। সেদিন ম্যাচ শেষে মাহিন নামে একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হাতে আঁকা তামিম ইকবালের পুরো পরিবারের ছবি তাকে উপহার দেন।

এবিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানে MD Mahin Hasan নামক উক্ত ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি করা একটি পোস্টে একই ছবি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

উক্ত ছবিতেও তারেক রহমানের স্থলে তামিম ইকবালের পরিবারের সদস্যদের দেখতে পাওয়া যায়।

পোস্টটিতে তিনি তামিমকে দেওয়া ছবিটি উপহার হিসেবে দিয়েছেন জানিয়ে লিখেন, “আলহামদুলিল্লাহ। কোথার থেকে শুরু করবো বুঝতেছি না। মানুষটার সাথে দেখা করার স্বপ্ন দীর্ঘদিন ধরেই। ছবিটা আমি প্রায় ১৫ দিন সময় নিয়ে এঁকেছি ভাইকে দিবো বলে। আর আজ আসলো আমার সেই দীর্ঘদিনের অপেক্ষার ফল। ভাইয়া এতো ভালো একটা ইনিংস খেলছে আর আমি সেরা ফ্যান হয়েছি। ভাইয়া শুধু যে আমার ছবিটা নিয়েছে এমনটা না, আমাকে কথাও দিয়েছে যে, নিজের একটা জার্সি আমাকে দিবে। আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ।”

এছাড়াও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে গত ২৩ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি ফেসবুক পোস্টেও একই ছবি পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

পাশাপাশি পোস্টটি থেকে জানা যায়, মো. মাহিন হাসান গত ২৩ ফেব্রুয়ারির ম্যাচে সবচেয়ে উদ্যমী শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে মনোনীত হন।

মূলত, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ-(বিপিএল) এ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে তামিম ইকবালের দল ফরচুন বরিশাল জয়লাভ করে। সেদিন ম্যাচ শেষে মো. মাহিন হাসান নামে একজন শুভাকাঙ্ক্ষী তামিম ইকবালের পুরো পরিবারের হাতে আঁকা ছবি তামিমকে উপহার দেন। সম্প্রতি, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত ছবির স্থলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি যুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে তামিম ইকবাল ও তার শুভাকাঙ্ক্ষী মো. মাহিন হাসানের একই ছবিতে মাহিনের স্থলে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছবি বসিয়ে প্রচার করা হলে তা এডিটেড হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, তামিম ইকবাল ও একজন যুবক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি একত্রে ধরে থাকার দাবিতে প্রচারিত ছবি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

পরিত্যক্ত ব্রিজের ছবিগুলো ঢাকা আর্ট সামিটে প্রদর্শিত হয়েছিল, বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে নয়

0

সম্প্রতি, “বঙ্গবন্ধু যাদুঘরে শেখ হাসিনার উন্নয়নের প্রদর্শনী” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিটিতে প্রদর্শনীর ন্যয় একটি দেয়ালে পরিত্যক্ত এবং অব্যবহৃত কিছু ব্রিজের ছবি ঝুলানো অবস্থায় দেখা যাচ্ছে।

ব্রিজের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পরিত্যক্ত এবং অব্যবহৃত ব্রিজের ছবিগুলো বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে নয় বরং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত ঢাকা আর্ট সামিট ২০২৩-এ প্রদর্শিত হয়েছিল।

রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে ফটোগ্রাফি ভিত্তিক মিডিয়া ইনস্টিটিউট পাঠশালার ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টে আলোচ্য প্রদর্শনীর ভিন্ন কিছু ছবি দেখা যায়।

Screenshot: Instagram.

পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এই ছবিগুলো মরীচিকা (Mirage) নামের একটি সিরিজের। ছবিগুলো মোঃ ফজলে রাব্বি ফটিক নামের একজন ফটোগ্রাফার তুলেছেন। এই সিরিজের মাধ্যমে গত দুই দশকে বাংলাদেশে নির্মিত পরিত্যক্ত এবং অব্যবহৃত অবস্থায় থাকা অসংখ্য ব্রিজ দেখানো হয়েছে।

পাঠশালার ইন্সটাগ্রাম পোস্টের সূত্রে ফটোগ্রাফার মোঃ ফজলে রাব্বি ফটিকের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জনাব ফটিক তার ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে মরীচিকা সিরিজের ছবিগুলো পোস্ট করে একই তথ্য দিয়েছেন। একদিন পর অর্থাৎ ০৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে চেক ইন দিয়ে মরীচিকা সিরিজের ছবিগুলো নিজের ফেসবুক আইডিতেও পোস্ট করেছেন ফটিক।

Screenshot: Facebook.

মরীচিকা সিরিজ সম্পর্কে জানতে আমরা সরাসরি ফটোগ্রাফার মোঃ ফজলে রাব্বি ফটিকের সাথে যোগাযোগ করি। ছবিগুলো ঢাকা আর্ট সামিট ২০২৩-এ প্রদর্শিত হয়েছিল জানিয়ে ফটিক বলেন, “শিল্পকলা একাডেমিতে এক্সিবিশন হয়েছিলো। এখানে দেশ বিদেশ সব শিল্পীদের ফটো সিরিজ পেইন্টিং, sculpture (ভাস্কর্য) এমন নানান মিডিয়ামের কাজ দেখানো হয়েছে। আমার ফটো সিরিজটি ছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গাতে নানান ব্রিজ তৈরি হয়েছিলো দুই তিন যুগ ও তার আগে থেকে এখনো চলছে তবে ব্রিজগুলির রাস্তা হয়নি পরিত্যক্ত হয়ে গেছে ব্যবহার ছাড়াই, কিছু ব্রিজ ব্যবহার হলেও কয়েক বছর পর মাটি সরে যায় যার পরে আর ঠিক করা হয়নি এমন ব্রিজগুলিকে দেখানো।”

তিনি আরো বলেন, “আমার কাজটি কোন স্পেসিফিক সরকারের উন্নয়ন অথবা কাজের অবস্থা বুঝাতে করা হয়নি। কারণ এখানে এমন ব্রিজ ও আছে যেটি ২ দশক আগের আবার কিছু আছে তার ও অনেক পরের।”

ছবিগুলোর বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ছবিগুলি খুলে ফেলা হয়েছে এবং ফ্রেমগুলি নষ্ট করা হয়েছে কারণ ফ্রেমগুলি ওয়ানটাইম ইউজের জন্য বানানো হয়েছিলো শুধু এক্সিবিশনের জন্য।”

ফটিকের বক্তব্যের সূত্রে মূলধারার সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোতে ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ঢাকা আর্ট সামিট ২০২৩ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। জানা যায়, ২০২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা আর্ট সামিট (ডিএএস) এর ষষ্ঠ আসর শুরু হয়েছিল। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ভবনে ৯ দিনব্যাপী এই আয়োজন হয়েছিল। 

পরবর্তীতে, আন্তর্জাতিক আর্ট ম্যাগাজিন স্টুডিও ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইটে ঢাকা আর্ট সামিট ২০২৩ সম্পর্কে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে ঢাকা আর্ট সামিট ২০২৩-এ প্রদর্শিত বিভিন্ন শিল্পকর্মের তথ্য উপস্থাপন করা হয়, যার মধ্যে মরীচিকা সিরিজের আলোচ্য ছবিগুলোও রয়েছে। 

অর্থাৎ, অসমাপ্ত ব্রিজের ছবিগুলো মরীচিকা নামের একটি সিরিজের। ছবিগুলো বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে প্রদর্শিত হয়েছিল।

এছাড়া বাংলাদেশে অন্তত তিনটি বঙ্গবন্ধু জাদুঘর রয়েছে। যার মধ্যে দুইটির অবস্থান রাজধানী ঢাকায় এবং একটির অবস্থান রাজশাহীতে। এই তিন জাদুঘরের কোনটিতেই আলোচ্য ছবিগুলো প্রদর্শনের তথ্য কোনো বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া যায়নি।

মূলত, মোঃ ফজলে রাব্বি ফটিক নামের এক বাংলাদেশি ফটোগ্রাফার গত দুই দশকে বাংলাদেশে নির্মিত পরিত্যক্ত এবং অব্যবহৃত অবস্থায় থাকা অসংখ্য ব্রিজের ছবি তুলেন। এই ছবিগুলো বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত ঢাকা আর্ট সামিট ২০২৩-এ প্রদর্শিত হয়েছিল। সম্প্রতি উক্ত ব্রিজের ছবিগুলোই বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে শেখ হাসিনার উন্নয়নের প্রদর্শনী’ শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, ঢাকা আর্ট সামিট ২০২৩-এ প্রদর্শিত হওয়া কিছু পরিত্যক্ত এবং অব্যবহৃত ব্রিজের ছবিকে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের প্রদর্শিত ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

সাকিব-তামিমের দ্বন্দ্ব নিরসনে কোনো লাইভ করেননি মাশরাফি 

সম্প্রতি, নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা লাইভে এসে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও মাগুরা- ১ আসনের সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের মধ্যকার চলমান দ্বন্দ্ব মিটমাট করে দুজনকে মিলিয়ে দিয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওগুলোর কয়েকটিতে আরও দাবি করা হয় উক্ত দ্বন্দ্ব মিটমাট হবার কারণে তামিম ইকবাল পুনরায় অধিনায়ক হিসেবেই দলে ফিরবেন।

দ্বন্দ্ব নিরসনে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন  ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ )।

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ইউটিউবে প্রচারিত একটি ভিডিওই দেখা হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৫৭ হাজার ৭০০  বার। এছাড়াও ভিডিওটিতে প্রায় পাঁচ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়াও দেখানো হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তামিম ও সাকিবের আলোচিত দ্বন্দ্ব নিরসনে তাদের দুজনকে নিয়ে মাশরাফি বিন মর্তুজা কোনো লাইভ প্রোগ্রামে আলোচনায় অংশ নেননি। এছাড়াও তামিম ইকবালের অধিনায়ক হিসেবে পুনরায় জাতীয় দলে ফেরার বিষয়ে এখন অবধি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের তরফ থেকে কিছু জানানো হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, সাকিব, তামিম ও মাশরাফির ভিন্ন ঘটনার দুটি লাইভ প্রোগামের কিছু অংশ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে আলোচিত  ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে তামিম ইকবালকে বলতে শোনা যায় ‘মাশরাফি ভাই তো টেকনোলজি নিয়ে খুব এক্সপার্ট এই কারণে আজকে আমাদের সাড়ে ১০ টা থেকে ১১ টা প্রায় বেজে গেছে। কেমন আছেন ভাই?… ক্যাপটেন একটাই ওইটা হইলো মাশরাফি বিন মর্তুজা…কিছু কিছু আমার প্রশ্ন আছে বুঝছেন?…নরমালি এই জিনিসটা করার মেইন কারণই ছিল ধরেন আমরা এমনেই মনটন খারাপ থাকে। তো আমাদের ইনসাইড স্টোরিটা যদি শুনতে পারে ওরা তাইলে কিছুক্ষণের জন্যে হইলেও ওরা একটু খুশি হবে। যেটা আমি মনে করি।…আপনে ১০ দিন আগে বলছিলেন আমার মনে আছে।…আমি জানতে চাই আপনি এত কনফিডেন্ট কেনো ছিলেন?   আল্লাহ-ই জানে আমি আপনার সাথে বেয়াদবি করছিলাম না কি করছিলাম…ভাই আমার সাথেই এইগুলা কেনো করেন আপনি আমার প্রশ্ন হইলো এইটা’

এরই মাঝে মাঝে মাশরাফি বিন মর্তুজাকে ‘কাপ্তান সাহেব আসসালামু আলাইকুম। আচ্ছা, শোন সবাইকে সরি বল আগে। আমি তো খুব এক্সপার্ট এই বিষয়ে…সব সমস্যা তুই-ই বাঁধাইয়া দিস…আল্টিমেটলি তোরা তো এত কাছাকাছি পাসনি একটা ব্যাপার… সাকিব আসলো…লাইফৈ ডিসএগ্রি আমার সাথে তোর যত হইছে আমার মনে হয় পৃথিবীতে আর কারও সাথে এত হয় নাই। প্রত্যেকটা বিষয় নিয়ে তোরা সাথে আমার ডিসএগ্রি হয় কিন্তু তবুও আমরা সবসময় ভালো বন্ধু ছিলাম’ শীর্ষক কথাগুলো বলার পাশাপাশি আরও কিছু কথা বলে শোনা যায়। তবে তার কোনোটিই আলোচিত দাবির সাথে সম্পর্কিত নয়।

এছাড়াও পুরো ভিডিওটিতে সাকিব আল হাসানকে শুধু ভিডিওটির শুরুর দিকে একবার ‘এখনো ওভাবে আসলে…যেহেতু একটা খেলার ভিতরে আছি ওভাবে চিন্তা করা হয়নি।’ শীর্ষক কথা বলতে শোনা যায়। তাছাড়া পুরো ভিডিওতে তাকে আর কোনো কথা বলতে শোনা যায়নি।

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত লাইভ ভিডিওটিতে ব্যবহৃত ভিডিও ক্লিপগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানে তামিম ইকবালের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ৫ মে  #TI28 Tamim Iqbal Live with Mashrafe Bin Mortaza শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে এটির সাথে আলোচিত ভিডিওর মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং তামিম ইকবালের ফুটেজের বেশকিছু অংশের মিল পাওয়া যায়। মূলত এই ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ কাট করে আলোটিত ভিডিওটির মাশরাফি ও তামিমের অংশটুকু তৈরি করা হয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও ভিডিওটির কোনো অংশেই সাকিব আল হাসানকে তাদের সাথে যুক্ত হতে দেখা যায় না। তাছাড়াও জানা যায়, সে সময় তামিম তার ইউটিউব চ্যানেলে দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে প্রায়ই লাইভ ভিডিও প্রচার করতেন। এসব ভিডিওতে তিনি তাদের সাথে ক্রিকেট নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা করতেন। 

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওতে দেখানো সাকিব আল হাসানের ক্লিপটি অনুসন্ধানে দেশীয় ই-কমার্স ওয়েবসাইট দারাজ এর ফেসবুক পেজ Daraz Online Shopping-এ ২০২১ সালের ১ এপ্রিল Shakib Al Hasan Live Adda with Daraz শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পর্যলোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটির সাকিব আল হাসানের ক্লিপের সাথে উক্ত ভিডিওতে দেখানো সাকিব আল হাসানের ফুটেজের বেশকিছু অংশের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

তাছাড়াও ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, পহেলা বৈশাখ ১৪২৮ উপলক্ষে ই-কমার্স ওয়েবসাইটটি ভিন্ন অফার দেন। যার প্রচারণার জন্যে তারা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সাথে একটি অনলাইন আড্ডার আয়োজন করেন। ‍উক্ত ভিডিওটি মূলত সেই অনলাইন আড্ডারই।

পরবর্তীতে মাশরাফি বিন মর্তুজা বাস্তবে কখনো ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালকে নিয়ে আলোচিত দাবিটির বিষয়ে কোনো আলোচনা করেছেন কিনা এবং তামিম ইকবাল পুনরায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে অধিনায়ক হিসেবে ফিরছেন কিনা তা জানতে প্রাসঙ্গিক নানা কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও কোনো গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুই তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা হয়ে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা লাইভে এসে তাদের দুজনকে সাথে নিয়ে তাদের দ্বন্দ্ব মিটমাট করে দুজনকে মিলিয়ে দিয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। কয়েকটিতে ভিডিওতে আরও দাবি করা হয়, উক্ত দ্বন্দ্ব মিটমাট হওয়ার কারণে তামিম ইকবাল পুনরায় জাতীয় ক্রিকেট দলে অধিনায়ক হিসেবে ফিরছেন। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এছাড়াও মাশরাফি বিন মর্তুজা সাকিব ও তামিমকে নিয়ে কোনো লাইভ আলোচনাও করেননি। এছাড়া তামিম ইকবালের পুনরায় জাতীয় দলে অধিনায়ক হিসেবে যোগদান করার দাবির বিষয়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি বিবিসির পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে মাশরাফি, সাকিব ও তামিমের  ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার দুইটি লাইভ ভিডিওর কিছু ক্লিপ যুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, মাশরাফি বিন মর্তুজার লাইভে এসে সাকিব ও তামিমের দ্বন্দ্ব মিটমাট করে দেওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড বা সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

খালেদা জিয়া ৭ বছর পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়েছেন দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ ৭ বছর পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গেছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

খালেদা জিয়া

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সম্প্রতি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যাননি বরং ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিএনপি নেতাকর্মীদের ফুল অর্পণের পুরোনো ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই একাধিক প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও মূলধারার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে আলোচিত দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত দাবির বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানে ভিডিওটিতে দেখানো ভিডিও ক্লিপটির বিষয়ে আলাদাভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল Bangladesh Nationalist Party-BNP এ২০২৪ সালের ২০ফেব্রুয়ারি “একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া | 21 Feb 2017” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison Image By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর শিরোনাম ও বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায় যে, ভিডিওটি ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পুস্তস্তবক অর্পণের ভিডিও।

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাগো নিউজ ২৪ এর ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি “শ্রদ্ধা জানাতে মূল বেদীতেই উঠে পড়লেন খালেদা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Source: জাগো নিউজ ২৪

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া শারীরিক অসুস্থতা ও বয়স বিবেচনায় ২০২০ সালের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতাবলে ছয় মাসের মুক্তি পান। এরপর এই জামিনের মেয়াদ বেশ কয়েকবার বৃদ্ধি করা হয়। সর্বশেষ গত ১২ সেপ্টেম্বর জামিনের মেয়াদ ৬ মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২০২০ সালে জামিনে মুক্তির পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে শারীরিক জটিলতার কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। 

মূলত, ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির নেতা-কর্মীবৃন্দ। ২০১৭ সালে খালেদা জিয়ার পুষ্পস্তবক অর্পণের একটি ভিডিওকেই সম্প্রতি “দীর্ঘ ৭ বছর পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গেলেন খালেদা জিয়া” শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে ইন্টারনেটে মিথ্যা তথ্য প্রচারিত হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, দীর্ঘ ৭ বছর পর সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি  মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সৌদি আরবে রমজান মাসে লাউডস্পিকারে আজান ও মসজিদে ইফতার নিষিদ্ধের দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, ‘রমজানে সৌদিতে লাউডস্পিকারে আজান নিষিদ্ধ! মসজিদের ভিতর ইফতার নয়’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

সৌদি আরবে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ) এবং  এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন এই সময়

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সৌদি আরবে রমজান মাসে মাইক ও লাউডস্পিকারে রাষ্টীয়ভাবে আজান ও মসজিদে ইফতার নিষিদ্ধের দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে দেশটিতে এমন কোনো নিষেধাজ্ঞাই দেওয়া হয়নি।

মূলত, ২০২৩ সালে রমজান মাস উপলক্ষে সৌদি আরবে লাউডস্পিকারে আজান ও মসজিদের ভেতর ইফতার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শীর্ষক দাবি গণমাধ্যমের বদৌলতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, সেসময় সৌদি আরবে রমজান মাসে আজান দেওয়ার ক্ষেত্রে মাইক বা লাউডস্পিকার ব্যবহারে কোনো নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়নি। পাশাপাশি দেশটিতে মসজিদের অভ্যন্তরে ইফতার করার ক্ষেত্রেও কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি ঐ একই দাবিটি পুনরায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এবছরও সৌদি আরবে লাউডস্পিকারে আজান ও মসজিদের ভেতর ইফতার নিষিদ্ধ করার কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। বিগত বছরের মতো এবারও মসজিদের পবিত্রতা রক্ষায় মসজিদের ভেতর নামাজের জায়গায় ইফতারের আয়োজন করা যাবে না। তবে মসজিদের আঙিনা বা চত্বরে ইফতারের আয়োজন করা যাবে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের একটি ঘোষণায় সৌদি সরকার মসজিদে লাউডস্পিকারের সংখ্যা সর্বোচ্চ চারটি নির্ধারিত করে দেয়। এছাড়াও ইতোপূর্বে ২০২১ সালে লাউডস্পিকারের ভলিউম সর্বোচ্চ তিন মাত্রা রেখে ব্যবহারের ব্যাপারেও নির্দেশনা জারি করেছিল দেশটির উক্ত মন্ত্রণালয়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টিকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

ফরচুন বরিশাল ছেড়ে দেশে চলে যাননি মিলার, ফাইনাল খেলতে আসেননি বাটলার

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এর চলতি আসরে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে রংপুর রাইডার্সকে পরাজিত করে ফাইনালে ওঠে ফরচুন বরিশাল। আজ পহেলা মার্চ সন্ধ্যায় ফাইনালে ফরচুন বরিশালের প্রতিপক্ষ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ‘চলে গেলো মিলার, কুমিল্লাকে হারাতে তামিমের চমক বাটলার! প্রাইভেট বিমানে ফাইনাল খেলতে বরিশালে জস বাটলার’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফরচুন বরিশাল

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওর থাম্বনেইল শেয়ার করে ফেসবুকে প্রচারিত একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে ইউটিউবে ভাইরাল ভিডিওটি প্রায় ১৩ হাজারের অধিক বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ৪ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ভিডিওটিতে ১২ টি মন্তব্য করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,  দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার ডেভিড মিলার ফরচুন বরিশাল ছেড়ে দেশে চলে যাননি বরং তিনি দলটি’র হয়ে আজ অনুষ্ঠিতব্য বিপিএলের ফাইনাল ম্যাচে অংশ নেবেন। এছাড়া ইংলিশ ক্রিকেটার জস বাটলারের বরিশালের হয়ে ফাইনাল খেলতে বাংলাদেশে আসার তথ্যটিও সঠিক নয়। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটিতে দাবি করা হয়, পারিবারিক সমস্যার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার ডেলিড মিলার ফরচুন বরিশালের হয়ে বিপিএল ফাইনাল না খেলেই চলে যাচ্ছেন এবং তার বদলে ইংল্যান্ডের ব্যাটার জস বাটলারকে সরাসরি চুক্তিতে দলে নিয়েছে ফরচুন বরিশাল।

উক্ত দাবিগুলো যাচাইয়ে আলোচিত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বিপিএল ফ্রেঞ্চাইজি ফরচুন বরিশালের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ‘Attention Everyone, It’s Our captain’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে তামিম ইকবালকে ফরচুন বরিশালের বিপিএল খেলা প্রসঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়।

Screenshot: Fortune Barishal Facebook

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র শুরুতে প্রদর্শিত তামিম ইকবালের ভিডিও ক্লিপের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি ২০২৩ সালের এবং সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

আলোচিত ভিডিওটি’র শিরোনাম ও থাম্বনেইলে ডেভিড মিলার ফরচুন বরিশাল ছেড়ে চলে গিয়েছেন দাবি করা হলেও ফ্রেঞ্চাইজিটি’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ‘Brace yourselves for an electrifying match!’প্রকাশিত একটি পোস্ট থেকে জানা যায়, মিলার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচ খেলবেন। তবে মিলারের বিয়ে উপলক্ষে তাকে ফাইনালে পাওয়া নিয়ে শুরুতে অনিশ্চয়তা ছিল।

Screenshot: Fortune Barishal Facebook

তাছাড়া, খেলাধুলা বিষয়ক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল T Sports এর ওয়েবসাইটে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ‘ফাইনালেও মিলারকে পাচ্ছে বরিশাল’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও ডেভিড মিলারের বিপিএল ফাইনালে খেলার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।

অর্থাৎ, দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার ডেভিড মিলার ফরচুন বরিশাল ছেড়ে চলে যাননি। তিনি দলটি’র হয়ে ফাইনাল ম্যাচ খেলবেন।

এছাড়াও, আলোচিত ভিডিওটিতে বরিশালে হয়ে ফাইনাল খেলতে ইংল্যান্ডের ব্যাটার জস বাটলার বরিশালে এসেছেন বলে দাবি করা হলেও গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিষয়টি’র সত্যতা পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি, বিপিএল ফ্রেঞ্চাইজি ফরচুন বরিশাল’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দলটি’র সাথে চুক্তিবদ্ধ অন্যান্য বিদেশি ক্রিকেটারদের বিষয়ে নিয়মিত আপডেট থাকলেও সেখানে জস বাটলারের বিপিএলের ফাইনালে খেলতে আসা নিয়ে কোনো পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এর চলতি আসরে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে রংপুর রাইডার্সকে পরাজিত করে ফাইনালে ওঠে ফরচুন বরিশাল। আজ পহেলা মার্চ সন্ধ্যায় ফাইনালে ফরচুন বরিশালের প্রতিপক্ষ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এরইমধ্যে  ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে ‘চলে গেলো মিলার, কুমিল্লাকে হারাতে তামিমের চমক বাটলার! প্রাইভেট বিমানে ফাইনাল খেলতে বরিশালে জস বাটলার’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে তামিম ইকবালের ভিন্ন প্রেক্ষাপটের পুরোনো একটি ভিডিও’র সাথে ডেভিড মিলার, জস বাটলার ও অন্যান্য ক্রিকেটারদের কিছু ছবি যুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে এবং নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিগুলো প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিপিএলের চলতি আসরে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, বিপিএলের ফাইনালের আগে ফরচুন বরিশাল ছেড়ে ডেভিড মিলার দেশে চলে গেছেন এবং জস বাটলার বরিশালের হয়ে খেলতে এসেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জাপানি স্নায়ুবিজ্ঞানী দৃষ্টিবিভ্রম সৃষ্টিকারী এই ছবিটি তৈরি করেননি

0

সম্প্রতি, সম্প্রতি, “এই ছবিটি একজন Japanese neuroscientist (স্নায়ুবিজ্ঞানী) তৈরি করেছেন” শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

স্নায়ুবিজ্ঞানী

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দৃষ্টিবিভ্রম সৃষ্টিকারী আলোচিত ছবিটি জাপানের স্নায়ুবিজ্ঞানী কর্তৃক তৈরিকৃত নয় বরং এটি একটি ডিজিটাল আর্টওয়ার্ক।

মূলত, Yurii Perepadia নামের একজন ডিজিটাল আর্টওয়ার্ক শিল্পী Adobe Illustrator নামের সফটওয়্যার প্রযুক্তির মাধ্যমে উক্ত ডিজিটাল ছবিটি তৈরি করেছিলেন। পরবর্তীতে, তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে উক্ত ডিজিটাল আর্টওয়ার্কটি প্রকাশ করেন। সম্প্রতি, ডিজিটাল আর্টিস্ট Yurii Perepadia এর আর্টওয়ার্কটিকে জাপানের স্নায়ুবিজ্ঞানী কর্তৃক তৈরি করা ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টিকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

আইসিইউতে মৃত রোগীকে গরুর ইনজেকশন দিয়ে জীবিত রাখার গুজব প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘মেডিকেলের গোপন তথ্য’ শিরোনামে ‘আইসিইউ-তে মৃত রোগীকে গরুর ইনজেকশন দেওয়ার সিরিঞ্জ পুশ করে জীবিত দেখানো হয়’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

মৃত রোগীকে

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে টিকটকে ভাইরাল ভিডিওটি প্রায় ৩ লাখ ৮১ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ভিডিওটিতে  হাজার ৩ শত ৩৮ টি মন্তব্য করা হয়েছে এবং ভিডিওটি ৪ হাজার ৬ শত ৫০ বার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আইসিইউ-তে মৃত রোগীকে গরুর ইনজেকশন দেওয়ার সিরিঞ্জ পুশ করে জীবিত দেখানোর দাবিটি ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে, গরুর ইনজেকশন পুশ করে মানুষকে বাঁচিয়ে রাখাও সম্ভব নয়।

মূলত, “মেডিকেলের গোপন তথ্য!!!” শীর্ষক শিরোনামে ২০১৭ সালে প্রথম এই দাবিটি সামাজিক যোগাযগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হয়। এরপর থেকেই বিভিন্ন সময়ে (প্রায় প্রতিবছর) এই দাবিটি কোনো বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ফেসবুকে প্রচার করে হচ্ছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে একইভাবে এই তথ্যটি পুনরায় প্রচার করা হচ্ছে। তবে, ঢাকায় অবস্থিত একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ বিশেষজ্ঞ ডাঃ সিরাজুল ইসলাম এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ-ঢাকা এর শিশু সার্জারি বিভাগের ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ দাবিটিকে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছিলেন। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টিকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

পাশাপাশি, ২০২৩ সালে উক্ত দাবিটি নিয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্টফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

পাকিস্তানি নৃত্যশিল্পীর ভিডিওকে মাহিয়া মাহির নাচের ভিডিও দাবিতে প্রচার 

0

সম্প্রতি চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি’র নাচের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

মাহিয়া মাহির নাচের ভিডিও

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি এই ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ১৪ লক্ষ বারেরও বেশি বার। ভিডিওটিতে ৫ হাজার দুইশত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির নয় বরং পাকিস্তানি একজন নৃত্যশিল্পীর ভিডিও উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ভিডিওটিতে @saiqa401 শীর্ষক ইউজার আইডি সম্বলিত একটি টিকটক অ্যাকাউন্টের সূত্র পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

পরবর্তী অনুসন্ধানে আমরা উক্ত ইউজার আইডিতে GrooveMaster নামক টিকটক অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পেয়েছি।

উক্ত ভিডিওর সাথে উক্ত আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

এই টিকটক অ্যাকাউন্টে থাকা ইন্ট্রো থেকে জানা যায়, তিনি পাকিস্তানে নৃত্য পরিবেশন করেন।

আরো অনুসন্ধান করে Shaheen Studio Pak নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ২ মার্চ প্রকাশিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube

এই ভিডিও থেকে জানা যায়, যিনি নৃত্য পরিবেশন করছিলেন তার নাম চিরিয়া কুইন।

অনুসন্ধানে চিরিয়া কুইনের আরও কিছু নৃত্য (, , ) ইন্টারনেটে পাওয়া যায়।

মূলত, একজন পাকিস্তানি নৃত্যশিল্পীর ভিডিও অন্তত ২০২২ সাল থেকেই ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে। সম্প্রতি এই ভিডিও ব্যবহার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির নাচের ভিডিও।

সুতরাং, পাকিস্তানি নৃত্যশিল্পীর নাচের দৃশ্যকে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির নাচের ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

‘পঞ্চায়েত-২’ সিরিজের অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারির মৃত্যুর গুজব গণমাধ্যমে

0

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারতের বিহার রাজ্যের কাইমুর জেলায় একটি সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত নয় জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় ভারতের জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ ‘পঞ্চায়েত ২’ এর অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারি মারা গিয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যমের বরাতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

অভিনেত্রী আঁচল

“পঞ্চায়েত-২” সিরিজের অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারি মারা গিয়েছেন দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন এনটিভি, ঢাকা ট্রিবিউন, কালের কণ্ঠ, চ্যানেল আই (ফেসবুক), প্রথম আলো (ইউটিউব), বাংলাভিশন, সময় টিভি, বণিক বার্তা, ভোরের কাগজ, নিউজ২৪, আমাদের সময়.কম, বাংলানিউজ২৪, ঢাকা পোস্ট, দৈনিক আমাদের সময়, এবিনিউজ২৪, অর্থসূচক, আজকের দর্পণ, বাহান্ন নিউজ, সময়ের কণ্ঠস্বর, পূর্ব পশ্চিম বিডি, বিবার্তা২৪, বিডি২৪রিপোর্ট, খবর সংযোগ, নিরাপদ নিউজ, জনমত, বিজনেস জার্নাল২৪, স্বাধীন আলো, বাঙ্গি নিউজ, ডেইলি পাঞ্জেরি, সময়ের খবর, বাংলা আউটলুক

আবার কতিপয় কিছু গণমাধ্যম “পঞ্চায়েত-২” সিরিজের অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারি ছবি ব্যবহার করে উক্ত দুর্ঘটনার সংবাদ প্রচার করেছে। এমন প্রতিবেদন দেখুন বিজয় টিভি (ইউটিউব), যায়যায়দিন, আরটিভি, দীপ্ত টিভি, ডেইলি বাংলাদেশঢাকা মেইল, বিডি২৪লাইভ, সংবাদ প্রকাশ, বিজনেস বাংলাদেশ, জুম বাংলা, জনবাণী, এমটিনিউজ২৪, ডেইলি মেসেঞ্জার, একুশে সংবাদ, ঢাকা রিপোর্ট২৪, পদ্মা টাইমস, করপোরেট সংবাদ, সরোবর, নিউজ জোন এবং ভিন্ন বার্তা। 

এছাড়া, চ্যানেল২৪, জনকণ্ঠ এবং সোনালী নিউজ উক্ত দাবিতে প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও পরবর্তীতে সংশোধন করে নেওয়ায় সংশোধন পূর্ববর্তী প্রতিবেদনের আর্কাইভ কপি পাওয়া যায়নি।

উক্ত দাবিতে ওপার বাংলার গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন আনন্দবাজার, টিভি৯বাংলা, হিন্দুস্তান টাইমস এবং এবিপি আনন্দ

গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায় যে, সড়ক দুর্ঘটনায় “পঞ্চায়েত-২” সিরিজের অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারির মৃত্যুর সংবাদটি সত্য নয়। বাস্তবে, সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন একই নামের অপর এক তারকা। “পঞ্চায়েত-২” সিরিজের অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারি এবং সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আঁচল তিওয়ারি দুইজন ভিন্ন ব্যক্তি।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারতের বিহার রাজ্যের কইমুর জেলার দেবকলি গ্রামে একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনায় নয়জন মানুষ প্রাণ হারায়। নিহতদের মধ্যে ছিল জনপ্রিয় ভোজপুরি গায়ক ছটু পাণ্ডে, আঁচল তিওয়ারি এবং সিমরান শ্রীবাস্তবা।

এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে থাকা আঁচল তিওয়ারি এবং ভারতের জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ “পঞ্চায়েত-২” এর অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারি একই ব্যক্তি ভেবে “পঞ্চায়েত-২” এর অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারি মারা গিয়েছেন দাবিতে ভারতের কিছু কতিপয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার করা হয়। তৎক্ষণাৎ বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোও একই দাবিতে সংবাদ প্রচার করে। 

তবে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি “পঞ্চায়েত-২” এর অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারির ভেরিফাইড ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে জানান, তিনি বেঁচে আছেন। 

ভিডিওটির ক্যাপশনে তিনি বলেন, “আমি বেঁচে আছি এবং ভালো আছি। আমি লক্ষ্য করেছি যে, আমার ছবি ব্যবহার করে আমি গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গেছি দাবিতে একটি মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। এই অপেশাদার ও লজ্জাজনক কর্মকাণ্ড আমাকে গভীরভাবে মানসিক আঘাত দিয়েছে। আমি সকল মিডিয়া আউটলেটকে তথ্য ছড়ানোর আগে সতর্কতার সাথে তথ্য যাচাই করার আহ্বান জানাচ্ছি। কারো ছবির এমন বিভ্রান্তিকর ব্যবহার অগ্রহণযোগ্য।”

Screenshot: Instagram.

উক্ত ভিডিওতে আঁচল তিওয়ারি জানান, তিনি “পঞ্চায়েত-২” এর অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারি এবং তিনি বেঁচে আছেন। নিহত আঁচল তিওয়ারি ভিন্ন ব্যক্তি, যে কিনা ভোজপুরি অভিনেত্রী। তিনি আরো জানান, ভোজপুরি চলচ্চিত্রের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই, তিনি হিন্দি চলচ্চিত্র করেন।

পরবর্তীতে অনুসন্ধানের মাধ্যমে আলোচ্য সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আঁচল তিওয়ারির ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ওপেন সোর্স অনুসন্ধানের মাধ্যমে রিউমর স্ক্যানার টিম জানতে পারে, নিহত আঁচল তিওয়ারি বিভিন্ন ভোজপুরি গানের ভিডিওতে অভিনেত্রী এবং প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন। 

অর্থাৎ, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আঁচল তিওয়ারি এবং “পঞ্চায়েত-২” এর অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারির নাম এক হলেও তারা দুইজন ভিন্ন ব্যক্তি। 

Image Comparison: Rumor Scanner.

মূলত, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারতের বিহার রাজ্যের কইমুর জেলার দেবকলি গ্রামে একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নয়জন প্রাণ হারায়। এ ঘটনায় “পঞ্চায়েত-২” এর অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারি মারা গিয়েছেন দাবিতে ভারতের কিছু কতিপয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার করে। পরবর্তীতে একই বিষয়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোও সংবাদ প্রচার করে। তবে উক্ত সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর “পঞ্চায়েত-২” এর অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারি এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে জানান তিনি বেঁচে আছেন। রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানেও জানা যায়, পঞ্চায়েত-২” সিরিজের অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারি এবং সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আঁচল তিওয়ারি দুইজন ভিন্ন ব্যক্তি। নিহত আঁচল তিওয়ারি বিভিন্ন ভোজপুরি গানের ভিডিওতে অভিনেত্রী এবং প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন।

উল্লেখ্য, “পঞ্চায়েত” একটি ভারতীয় কমেডি-ড্রামা ওয়েব সিরিজ। এই সিরিজটির এখন পর্যন্ত মোট ২ টি সিজন প্রকাশিত হয়েছে। আঁচল তিওয়ারি “পঞ্চায়েত” সিরিজের দ্বিতীয় সিজনে রবীনা চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

সুতরাং, “পঞ্চায়েত-২” এর অভিনেত্রী আঁচল তিওয়ারির মৃত্যু ঘটেছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত সংবাদটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র