Home Blog Page 544

ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে বাংলাদেশি যুবকের গাওয়া প্রবাসীর গানের এই ভিডিওটি এডিটেড

সম্প্রতি, ‘ইন্ডিয়ান মঞ্চে সেরা প্রবাসীর গান, আমি টাকার এক মেশিন’ শীর্ষক শিরোনামে এক যুবকের গান গাওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে।

ইন্ডিয়ান

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে প্রবাসীদের নিয়ে উক্ত যুবকের গান গাওয়ার এই ভিডিওটি আসল নয় বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ভিডিওটির শুরুতেই এক যুবককে ভারতীয় এক টেলিভিশন প্রোগ্রামে মাইক্রোফোন হাতে ‘আমি টাকার এক মেশিন’ শীর্ষক গানটি গাইতে শোনা যায়। গানটি শুনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিচারকের দায়িত্বে থাকা মঞ্চে উপস্থিত তারকাদের মুগ্ধ হতে দেখা যায়।

ভিডিওটিতে ভারতের তারকা সঙ্গীত শিল্পী হিমেশ রেশামিয়া ও নেহা কক্কর সহ বেশ কয়েকজন তারকাকে এসময় মঞ্চে দেখা যায়।

এবিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি থেকে বেশকিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে ভারতীয় জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী হিমেশ রেশামিয়াকে দেখানো হয়। সে দৃশ্যের স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সনি এন্টারটেইনমেন্ট’র অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ‘SET India’তে ২০২২ সালের ০১ অক্টোবর প্রকাশিত Indian Idol প্রোগ্রামের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: YouTube

উক্ত ভিডিওর একটি দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটির একটি দৃশ্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়। তবে ফেসবুকে প্রচারিত আলোচিত ভিডিওটি’তে গান গাওয়া যুবককে এই ভিডিওটিতে দেখা যায়নি।

Video Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়াও, আলোচিত ভিডিওটির শুরুর দিকে ভারতীয় জনপ্রিয় সংঙ্গীত শিল্পী নেহা কক্করকেও দেখানো হয়। সে দৃশ্যের স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সনি এন্টারটেইনমেন্ট’র অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ‘SET India’তে ২০২১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রকাশিত Indian Idol Season 12 এর একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: YouTube

উক্ত ভিডিওর একটি দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটির একটি দৃশ্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়। তবে ফেসবুকে প্রচারিত আলোচিত ভিডিওটিতে গান গাওয়া যুবককে এই ভিডিওটিতেও দেখা যায়নি।

Video Comparison by Rumor Scanner 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি উক্ত টেলিভিশন প্রোগ্রামের কয়েকটি দৃশ্য যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে।

পরবর্তীতে অধিকতর অনুসন্ধানে ভাইরাল ভিডিওটি’র নির্মাতা সবুজ খানকে খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি তার ফেসবুক পেজে গত নভেম্বর ইন্ডিয়ান মঞ্চে সেরা প্রবাসীর গান।  আমি টাকার মেশিন’ শীর্ষক গানের ভিডিওটি পোস্ট করে জানান, “ভিডিওটি এডিট করা। দয়াকরে কেউ সিরিয়াসলি নিবেন না।”

Screenshot: Sobuj Khan Facebook

অর্থাৎ, উপরিউক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটি আসল নয়।

মূলত, সবুজ খান নামের এক যুবক ইন্ডিয়ান আইডল পোগ্রামে ভারতীয় তারকাদের উপস্থিতির পুরোনো কিছু ভিডিও ক্লিক সংগ্রহ করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘প্রবাসী গান’ শীর্ষক একটি গান সম্পাদনার মাধ্যমে যুক্ত করে নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেন। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি ‘ইন্ডিয়ান মঞ্চে সেরা প্রবাসীর গান, আমি টাকার এক মেশিন’ শীর্ষক শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে আসল ভিডিও দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই ব্যক্তির ইন্ডিয়ান আইডল অনুষ্ঠানের মঞ্চে মাকে নিয়ে গান গাওয়ার ভিডিও ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় ভিডিওটিকে এডিটেড হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ‘ইন্ডিয়ান মঞ্চে সেরা প্রবাসীর গান, আমি টাকার এক মেশিন’ শীর্ষক ইন্টারনেটে প্রচারিত বাংলাদেশি যুবকের গান গাওয়ার ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

‘খালি মাঠে বসে আর গোল দেওয়ার সুযোগ নেই’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি ড. ইউনূস

সম্প্রতি, “খালি মাঠে আর গোল দেওয়ার সুযোগ নেই। দেশের মানুষকে প্রস্তুত থাকতে হবে: ড. ইউনূস” শীর্ষক একটি তথ্য নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

খালি মাঠে বসে গোল

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ”খালি মাঠে আর গোল দেওয়ার সুযোগ নেই। দেশের মানুষকে প্রস্তুত থাকতে হবে।” শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

মূলত, বাংলাদেশি নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘খালি মাঠে বসে গোল আর দেওয়ার সুযোগ নেই’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি তথ্য সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কয়েক মাস ধরেই প্রচার হয়ে আসছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এমন মন্তব্য ড. ইউনূস করেননি। বরং গত ০৬ জুন ‘Md jashim uddin’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে সূত্রহীনভাবে ড. ইউনূসকে উদ্ধৃত করে আলোচিত মন্তব্যটি প্রথম প্রচার করা হয় এবং পরবর্তীতে তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যায়। এছাড়া ইউনূস সেন্টারের সাথে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠাটি জানায়, এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।  

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ফ্রি ৫০ জিবি ইন্টারনেট শীর্ষক অফারটি ভুয়া

সম্প্রতি, ‘আসন্ন ২০২৪ নির্বাচন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ৫০ জিবি এমবি ফ্রি’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফ্রি ৫০ জিবি

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আসন্ন ২০২৪ নির্বাচন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ৫০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট অফার লিংকটি ভুয়া এবং উক্ত পদ্ধতি ব্যবহার করে ৫০ জিবি ইন্টারনেট পাওয়ার বিষয়টিও মিথ্যা।

প্রচারিত লিংকটিতে ঢুকলে প্রথমেই বিনামূল্যে ইন্টারনেট নেওয়ার জন্য একটি অপশন আসে এবং তারপর মোবাইল নাম্বার দিতে হয়। মোবাইল নাম্বার দেওয়ার পর উক্ত নাম্বারটিতে অফারটি প্রযোজ্য কিনা সেটি চেক করা হয়। 

তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত নাম্বারের স্থানে এক ডিজিটের সংখ্যা কিংবা অপ্রাসঙ্গিক কোনো সংখ্যা প্রদান করা হলেও ওয়েবসাইটটি সেই নাম্বারের জন্যে অফারটি প্রযোজ্য বলে দেখায়।

Screenshot: freemb.elementfx.com

পরবর্তীতে এই ধাপগুলো অনুসরণ করলে ১০ মিনিটের মধ্যে ৫০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট অফারের কনফার্মেশন মেসেজ পাওয়া যাবে বলে ওয়েবসাইটটি জানান দেয়।

মোবাইল নাম্বার দেওয়ার পর ৫০ জিবি ইন্টারনেট ফ্রি পেতে হলে শর্ত হিসেবে এই লিংকটি ফেসবুক মেসেঞ্জারে ১২ জন বন্ধুকে শেয়ার করতে বলা হয়। এছাড়াও উক্ত বার্তার নিচে ‘নির্দেশনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী: শেখ হাসিনা’ তথ্যটি দেখতে পাওয়া যায়।

Screenshot: freemb.elementfx.com

অনুসন্ধানের স্বার্থে রিউমর স্ক্যানার তাদের সকল নির্দেশনা অনুসরণ করেছে। কিন্তু কোনো ধরণের ইন্টারনেট অফার পাওয়া যায়নি। শেয়ারকৃত ১২ জনও সকল নির্দেশনা অনুসরণ করেছে, তবে সেই ১২ জনের কেউই ৫০ জিবির ইন্টারনেটের এই ফ্রি অফারটি পায়নি।

এছাড়াও প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে বিনামূল্যে ৫০ জিবি ইন্টারনেট প্রদানের ক্যাম্পেইনের বিষয়ে কোনো গণমাধ্যমেই কোনোপ্রকার তথ্য পাওয়া যায়নি।  

মূলত, ওয়েবসাইটটি নিজেদের প্রচারণার স্বার্থে ৫০ জিবি ইন্টারনেটের প্রলোভন দেখিয়ে এই লিংকটি ছড়াচ্ছে।

উল্লেখ্য, এ ধরণের স্ক্যাম লিংকের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া আইডি হ্যাক, ব্যক্তিগত ডাটা চুরি ও ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে অনলাইন নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করার নজির রয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও রমজান উপলক্ষে ৫০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেটের অফার, নববর্ষ উপলক্ষ্যে বিনামূল্যে ৫০ জিবি ইন্টারনেটের অফার, দারাজের নাম ব্যবহারে  ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট এবং হোয়াটসঅ্যাপের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ৫০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট শীর্ষক একাধিক মিথ্যা তথ্য শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, আসন্ন ২০২৪ নির্বাচন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ৫০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট দেওয়া হচ্ছে দাবিতে যে অফার লিংকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভুয়া।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Own Analysis

আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে পিটার হাসের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার 

সম্প্রতি, “ঢাকায় ফিরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের চমক।  নির্বাচন হবে না বললো পিটার হাস” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

পিটার হাসের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

টিকটকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য করেননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি যুক্ত করে সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন।

প্রথম ও দ্বিতীয় ভিডিও ক্লিপ যাচাই 

আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে বাংলা ভিশন এবং চ্যানেল ২৪ এর সংবাদ পাঠের দুইটি ভিডিও ক্লিপ দেখতে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত সূত্র ধরে কিওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে দেখা যায় আলোচিত ভিডিওতে যুক্ত দুটি ভিডিও ক্লিপই গত ২৭ নভেম্বর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসে’র ছুটি কাটিয়ে ঢাকা ফেরা নিয়ে বাংলা ভিশন এবং চ্যানেল ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন থেকে নেওয়া। 

Video Comparison : Rumor Scanner 
Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত দুইটি প্রতিবেদনের কোথাও মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না শীর্ষক কোনো তথ্য বলা হয়নি।

তৃতীয় ভিডিও ক্লিপ যাচাই 

আলোচিত ভিডিওটির পরবর্তী অংশে অনলাইন একটিভিস্ট ডঃ ফয়জুল হকের একটি ভিডিও দেখানো হয়। কি ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে গত ২৭ নভেম্বর Dr. Fayzul Huq নামক ইউটিউব চ্যানেলে “পিটার হাঁস ঢাকায়! নাকে খত আওয়ামীলীগের! পতনের ভয়ে কাপছে হাসিনা। ড.ফয়জুল হক Dr.Fayzul Huq peter haas” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটিতে তিনি পিটার হাস এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। 

ভিডিওটির কোথাও পিটার হাস নির্বাচন হবে না বলেছেন সংক্রান্ত কোনো বিষয়ের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

চতুর্থ ও পঞ্চম ভিডিও ক্লিপ যাচাই 

আলোচিত ভিডিওটির পরবর্তী অংশে দেখানো ভিডিওগুলোর সূত্র ধরে অনুসন্ধানে গত ২৭ নভেম্বর 1A News এবং Voice Bangla এর ইউটিউব চ্যানেলে একই ভিডিওগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison : Rumor Scanner 
Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওগুলোতে গত ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ঢাকা ফেরা বিষয়ক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের দেশে ফেরা বিষয়ক সংবাদ প্রতিবেদনের বিভিন্ন অংশে পড়ে শোনান চ্যানেল দুইটির উপস্থাপক যার সাথে আলোচিত দাবিটির কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।

এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবির বিষয়ে কেনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ১৬ নভেম্বর ছুটি কাটাতে শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। ছুটি কাটিয়ে গত ২৭ নভেম্বর ঢাকায় ফিরেছেন তিনি। এরই মধ্যে ‘ঢাকায় ফিরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের চমক। নির্বাচন হবে না বললো পিটার হাস’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়। তবে ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পিটার হাস এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় পিটার হাসের ছুটিয়ে কাটিয়ে দেশে ফেরার বিষয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন এবং এই বিষয় নিয়ে অনলাইন এক্টিভিস্টদের আলোচনার  কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ  যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

সুতরাং, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেট প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

শিশুশিল্পী সিমরিন লুবাবা এই ভিডিওতে ‘হেগে দিয়েছি’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি 

সম্প্রতি, শিশুশিল্পী সিমরিন লুবাবা একটি রেস্টুরেন্টের প্রচারণার কাজে গিয়ে ‘হেগে দিয়েছি‘ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

শিশুশিল্পী

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সিমরিন লুবাবা প্রচারিত ভিডিওতে ‘হেগে দিয়েছি’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং সেই ভিডিওতে লুবাবা ‘হেসে দিয়েছি’ শীর্ষক মন্তব্যের স্থলে ‘হেগে দিয়েছি’ শীর্ষক মন্তব্য ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে সিমরিন লুবাবা’র ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৪ নভেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে উক্ত আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, হাওয়া রুফটপ নামে ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে সিমরিন লুবাবা একটি প্রমোশনাল ভিডিও করেন। 

ভিডিওতে সিমরিন লুবাবা বলেন, “কেন্দে দিয়েছি, কেন্দে দিয়েছি, সব জায়গায় কেন্দে দিয়েছি। এখন আপনারা কি মনে করেন আমি কেন্দে দিয়েছি? না আমি হাওয়াতে এসে হেসে দিয়েছি। আরে ভাই সবাই হাসেন, সবাই হাসেন।”

অর্থাৎ, ‘হেগে দিয়েছি’ নয়, লুবাবা হেসে দিয়েছি শীর্ষক মন্তব্য করেছেন ভিডিওতে।

Hawa Rooftop নামের রেস্টুরেন্টের ফেসবুক পেজেও সিমরিন লুবাবার একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

মূলত, সম্প্রতি হাওয়া রুফটপ নামে ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে প্রচারণার কাজে যান শিশুশিল্পী সিমরিন লুবাবা। রেস্টুরেন্টের একটি প্রমোশনাল ভিডিওতেও তাকে অভিনয় করতে দেখা যায়, যেখানে লুবাবা বলেন, “কেন্দে দিয়েছি, কেন্দে দিয়েছি, সব জায়গায় কেন্দে দিয়েছি। এখন আপনারা কি মনে করেন আমি কেন্দে দিয়েছি? না আমি হাওয়াতে এসে হেসে দিয়েছি।” তবে সম্প্রতি উক্ত ভিডিও ডাউনলোড করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় হেসে দিয়েছি শীর্ষক মন্তব্যের স্থলে ‘হেগে দিয়েছি’ আওয়াজ যুক্ত করে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, শিশুশিল্পী সিমরিন লুবাবা হেগে দিয়েছি শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে, যা এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

নির্বাচনের তফসিল বাতিল ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, হঠাৎ তফসিল বাতিল করলো কমিশন। পদত্যাগ করতে বাধ্য হলো প্রধানমন্ত্রী– শীর্ষক শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

তফসিল বাতিল

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কইভ)।

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিল ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও।

ভিডিও যাচাই 

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে Dr. Fayzul Haq নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ২০ নভেম্বর “তফসিল স্থগিত? বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে নতুন ধান্দা শুরু! চিপায় পড়ে নরম সুর! ড.ফয়জুল হক Dr. Fayzul Huq” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিওটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ড. ফজলুর হকের এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

১০ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় ড. ফয়জুক হক নামের একজন আলোচক বাংলা নিউজ২৪ এ গত ২০ নভেম্বর “বিএনপি ভোটে এলে পুনঃতফসিলের বিবেচনা করবে ইসি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা করেছেন৷ 

এছাড়া, উক্ত ব্যক্তির আলোচনায় তফসিল বাতিল এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পদত্যাগ সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। 

এছাড়া আলোচিত ভিডিওটিতে বিএনপি জামায়াতে ডাকা সাম্প্রতিক হরতাল অবরোধে মিছিলের বেশ কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ দেখানো হয়।

একটি দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল বাতিল করলে এবং একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে তা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ হবে স্বাভাবিক। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধান করে বাংলাদেশের আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল বাতিল এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পদত্যাগ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ পায়নি। এতে প্রতীয়মান হয় যে প্রচারিত দাবিগুলো মিথ্যা। 

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে নানা ধরনের তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইন্টারনেটে “হঠাৎ তফসিল বাতিল করলো কমিশন। পদত্যাগ করতে বাধ্য হলো প্রধানমন্ত্রী”- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

সুতরাং, নির্বাচনের তফসিল বাতিল এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ করছে  দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সিইসি কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পদত্যাগ চাওয়ার ভুয়া তথ্য

গত ২৮ নভেম্বর শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে ‘এবার নিষেধাজ্ঞার চিঠি নিয়ে আসলো পিটার হাঁস, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলো সিইসি’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

 শেখ হাসিনা

টিকটকে প্রচারিত উক্ত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবদি ভিডিওটিতে প্রায় ১২ হাজার ৪ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ২ শত বার শেয়ার করা হয়েছে। ভিডিওটি’র মন্তব্যঘর ঘুরে অধিকাংশ নেটিজেনকে উক্ত দাবির প্রেক্ষিতে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞার চিঠি নিয়ে আসেননি এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ও ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার বাক্য বসিয়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ ও পুরোনো কিছু ছবি যুক্ত করা হয়েছে।

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে সেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং সরকরের বিপক্ষে নিয়মিত বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করা অনলাইন এক্টিভিস্ট ফয়জুল হকের পৃথক দুটি ভিডিও দেখা যায়।

এবিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোর এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৮ নভেম্বর ‘নির্বাচন ঘিরে দেশ সংকটে আছে: প্রধান নির্বাচন কমিশনার’ শীর্ষক শিরোনামে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের বক্তব্য নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: YouTube 

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের বক্তব্য অংশের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

তবে উক্ত বক্তব্যে কোথায় তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাইতে দেখা যায়নি। বরং সেখানে তিনি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।

পরবর্তীতে, ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানের মাধ্যমে Dr. Fayzul Huq-ডঃ ফয়জুল হক নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ২৮ নভেম্বর ‘অ*বৈধ পথে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে না!অর্থনীতি ও গার্মেন্টস শিল্পে ধ*স আসতে পারে এমন ইঙ্গিত করলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার!ডঃ ফয়জুল হক’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র অনলাইন এক্টিভিস্ট ফায়েজুল হকের বক্তব্য অংশের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও, মুলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞার চিঠি নিয়ে আসার বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে গণমাধ্যম সূত্রে গত ২৭ নভেম্বর কলোম্বো সফর শেষে তার ঢাকায় ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর আগে তিনি গত ১৬ নভেম্বর ছুটি কাটাতে শ্রীলঙ্কায় গিয়েছিলেন। তাছাড়া, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাওয়ার বিষয়টিরও সত্যতা পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত দাবিগুলো সঠিক নয়।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি এবং সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছে। এসব ঘটনায় প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের তথ্য ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ নভেম্বর শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে একটি বেনামি অ্যাকাউন্ট থেকে ‘এবার নিষেধাজ্ঞার চিঠি নিয়ে আসলো পিটার হাঁস, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলো সিইসি’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ও ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার বাক্য বসিয়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিগুলো প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে ‘এবার নিষেধাজ্ঞার চিঠি নিয়ে আসলো পিটার হাঁস, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলো সিইসি’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

দৈত্যাকৃতির সিল মাছের ‘আল্লাহু আল্লাহু’ বলে ডাকার ভিডিওটি এডিটেড

সম্প্রতি, ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহর কুদরত দেখুন’ শীর্ষক শিরোনামে দৈত্যাকৃতির একটি সিল মাছ আল্লাহু আল্লাহু বলে ডাকছে দাবিতে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

দৈত্যাকৃতির

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট  দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দৈত্যাকৃতির সিল মাছটির আল্লাহু আল্লাহু বলে ডাকার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ইংল্যান্ডের সাউথ জর্জিয়া দ্বীপের তীরে উক্ত দৈত্যাকৃতির সিল মাছটি দেখা যায়। যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরবর্তীতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। উক্ত ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় মিরর করে তার সাথে আল্লাহু আল্লাহু ডাকার অডিওটি যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ডিজিটাল আধেয় বা কন্টেন্ট প্রকাশক LAD Bible এর ফেসবুক পেজে গত ১০ এপ্রিল That is one huge seal 😳 শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। তবে এটিও দেখা যায় যে, আলোচিত ভিডিওটি উক্ত ভিডিওর মিরর ভার্সন   এবং উক্ত ভিডিওতে তা ধারণ করার সময়কার পারিপার্শ্বিক শব্দ ব্যতীত আর কোনো শব্দ শুনতে পাওয়া যায় না। 

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও ভিডিওটি থেকে জানা যায়, উক্ত দৈত্যাকৃতির সিল মাছটিকে সাউথ জর্জিয়া দ্বীপের তীরে দ্বীপটির পেঙ্গুইনদের সাথে দেখা যায়। 

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে উক্ত তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যভিত্তিক দৈনিক ট্যাবলয়েড পত্রিকা Daily Mail এর ফেসবুক পেজে গত ৯ মার্চ The Godzilla of seals 😱 শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত উক্ত সিল মাছের আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করেও আলোচিত ভিডিওটি সম্পর্কে একই তথ্য পাওয়া যায়।

এছাড়াও রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম NDTV এর ওয়েবসাইটে গত ২ আগস্ট  This huge creature was seen on the seashore, some said sea elephant, some called lion শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: NDTV

উক্ত প্রতিবেদনের সাথে যুক্ত দৈত্যাকৃতির সিল মাছেরএকই ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটি পর্যালোচনা করেও সিলটির আল্লাহু আল্লাহু বলার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভিন্ন একটি অডিও যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে।

মূলত, চলতি বছরের শুরুর দিকে ইংল্যান্ডের সাউথ জর্জিয়া দ্বীপের তীরে একটি দৈত্যাকৃতির সিল মাছ দেখা যায়। সিল মাছটির অস্বাভাবিক আকৃতির কারণে সেটির ভিডিও সেসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। উক্ত সিল মাছের সেই ভিডিওটিতে সম্প্রতি আল্লাহু আল্লাহু শীর্ষক অডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে সিল মাছটি আল্লাহু বলে ডাকছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, দৈত্যাকৃতির সিল মাছের ‘আল্লাহু আল্লাহু’ বলে ডাকার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

শিশুটি ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ছিল না

0

সম্প্রতি, ইসরাইলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি পরী- শীর্ষক ক্যাপশনে একটি শিশুর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

শিশুটি

উক্ত ছবি সহকারে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শিশুটিকে ইসরায়েলি বাহিনী গ্রেফতারই করেনি। তাই তার ইসরায়েলি বাহিনীর কাছে থেকে মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে শিশুটির মা ফাতিমা শাহিনকে ইসরায়েলি বাহিনী গ্রেফতার করেছিল। ছবিটি সম্প্রতি ফাতিমার মুক্তি উপলক্ষে কারাগারের বাহিরে অপেক্ষায় থাকা তার শিশুকন্যা আইলুলের।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে “Reem Al-Harmi ريم الحرمي” নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টে (সাবেক টুইটার) আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: X

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, শিশুটি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর কাছে বন্দি ফাতিমা শাহিনের (৩৩) একমাত্র মেয়ে। শিশুটি তার মায়ের মুক্তি উপলক্ষে কারাগারের বাহিরে অপেক্ষায় ছিল। 

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতীয় গণমাধ্যম Radiance News এর ওয়েবসাইটে গত ২৫ নভেম্বর “First round of Palestinian prisoners liberated in swap – many see the open sky after years” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

Screenshot: Radiance News

উক্ত প্রতিবেদন থেকেও শিশুটির বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়। পাশাপাশি শিশুটির এক পোশাক পরিহিত আরেকটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

এছাড়া, একই তারিখে মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যম Khaleej Times এ “Watch: Palestinian mother’s emotional reunion with daughter released after 8 years” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে আলোচিত শিশুর আরও একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Khaleej Times

উক্ত ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ফাতিমা শাহিন কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তার মেয়ে আইলুল তাকে আদর করছে। 

উল্লেখ্য, ফাতিমা শাহীন চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল তারিখে ওয়েস্ট বেথলেহেম শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

মূলত, গত ২৫ নভেম্বর ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে বন্দি ফিলিস্তিনি নাগরিক ফাতিমা শাহীন মুক্তি পান। তার মুক্তি উপলক্ষে কারাগারের বাহিরে অবস্থান করছিলেন তার শিশুকন্যা আইলুল। পরবর্তীতে ঐ শিশুর মায়ের মুক্তির জন্য অপেক্ষারত একটি ছবিকেই ইসরায়েলি বাহিনীর কাছ থেকে কাছ থেকে মুক্তি পাওয়া শিশুর ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলও হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা চালায়। এতে দেশ দুইটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত নতুন মাত্রা পায়৷ পরবর্তীতে যুদ্ধ বিরতির প্রথম পর্যায়ের বন্দি আদান প্রদানের চুক্তি করে। এই চুক্তিতে ইজরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি দেওয়া ৩৯ জনকে মুক্তি দেয়। এই ৩৯ জনের মধ্যে ফাতিমা শাহীনও একজন। 

সুতরাং, ইসরায়েলি বাহিনীর কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া শিশুর ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

হিন্দু থেকে মুসলিম হওয়া নারীকে মুসলিম থেকে হিন্দু হওয়ার দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘দুবাইয়ে মুসলিম মহিলা হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন’ শীর্ষক দাবিতে এক নারীর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়েছে দুবাইতে ওই মুসলিম মহিলা হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে তার নাম পরিবর্তন করে রাধা রেখেছেন এবং জানিয়েছেন, “হিন্দুদের খারাপ দেখানো হয়, সত্যি কথা বলতে, আমি হিন্দুদের ভয় পেতাম, কিন্তু সনাতনের সত্যতা যখন জানলাম তখন দেখি সম্পূর্ণ আলাদা। তারপর আমি আমি গীতা পড়লাম এবং পরবর্তীতে আমার মন পরিবর্তন হয়ে আমি সত্য সনাতন ধর্ম গ্রহন করলাম।”

হিন্দু থেকে মুসলিম

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যে নারীর ছবি প্রচার করে তাকে মুসলিম থেকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার দাবি করা হয়েছে প্রকৃতপক্ষে সেই নারী বেশ কয়েকবছর পূর্বে হিন্দু ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হয়েছেন। 

অনুসন্ধানে overcometv নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৬ সালের ৩০ এপ্রিল ‘Religion Was Always a Confusion- New Muslim’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওর ঐ নারীর সাথে উক্ত দাবির সাথে যুক্ত নারীর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।  

Screenshot: overcometv YouTube

ভিডিওতে overcometv কে দেওয়া ২০১৬ সালের সেই সাক্ষাতকারে ঐ নারী জানান, তার নাম মারিয়াম। বয়স ২৭। তিনি ভারত থেকে এসেছেন এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন। তার পরিবার খুব একটা প্রাকটিসিং বা রিলিজিয়াস ছিল না। ধর্ম  সবসময় একটা কনফিউশান ছিল। পালন করতে হতো তাই করত। খুব একটা প্রাকটিসিং না হলেও তারা তাদের বিশ্বাসে দৃঢ় ছিলেন। মারিয়াম ভারতে বসবাস করলেও তার আশেপাশে যে মুসলিমরা ছিলো তাঁদের সাথে সে পরিচিত হতে পারেনি। ছোটবেলা থেকেই সে শিখেছিল মুসলিমরা ভালো মানুষ নয়, তাঁরা সন্ত্রাসের সাথে যুক্ত, তাঁরা জঙ্গি, তাঁরা খারাপ, তাঁদের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে।

আরব আমিরাতে আসার আগ পর্যন্ত তার কখনোই কোন মুসলিমের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ হয়নি। তারপর কর্মসূত্রে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এসে  মুসলিমদের সাথে তার পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয় এবং বুঝতে পারেন মুসলিমরা অনেক ভালো। মুসলিম বন্ধুদের আচরণ দেখে তার ভালো লেগে যায় এবং তারপরই তিনি ইসলাম নিয়ে আগ্রহী হয়ে ইসলাম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন। তিনি ইসলাম সম্পর্কিত পড়াশোনা করেন এবং পরবর্তীতে একটা সময় ইসলাম গ্রহণ করেন। এসময় কোরআন পড়ার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি আবেগাপ্লুত হোন।

অর্থাৎ, ওই নারী  মুসলিম থেকে হিন্দু হননি বরং তিনি হিন্দু ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন এবং তিনি হিন্দুদের খারাপ দেখানো হত শীর্ষক কোনো বক্তব্য দেননি বরং মুসলিমরা খারাপ তাকে এমন শেখানোর কথা তিনি বলেছেন। 

মূলত, এক ভারতীয় হিন্দুধর্মী নারী সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসার পর মুসলিমদের ভালো আচরণ দেখে ইসলামের প্রতি আগ্রহী হয়ে একটা সময় ইসলাম গ্রহণ করেন। তার ইসলাম গ্রহনের ঘটনা নিয়ে তিনি যুক্তরাজ্য ভিত্তিক প্লাটফর্ম overcome tv কে একটি সাক্ষাতকার দেন। সেই সাক্ষাতকারে তিনি মুসলিমদের নিয়ে আগে কি ভাবতেন, কিভাবে ইসলামের প্রতি আগ্রহী হলেন এবং কিভাবে ইসলাম গ্রহণ করলেন তা নিয়ে কথা বলেন। সাম্প্রতিক সময়ে তার সেই সাক্ষাতকারের ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট নিয়ে কয়েকটি ছবি প্রচার করে তিনি মুসলিম থেকে হিন্দু হয়েছেন শীর্ষক ভুয়া দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচার করা হয়।

সুতরাং, হিন্দু ধর্ম থেকে ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়া এক নারীর পুরোনো সাক্ষাতকার থেকে ছবি নিয়ে  তাকে মুসলিম থেকে হিন্দু ধর্ম গ্রহণকারী হিসেবে প্রচার করার বিষয়টি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র