Home Blog Page 543

“আর কোনোদিন কুমিল্লার হয়ে বিপিএল খেলবো না” শীর্ষক মন্তব্য করেননি ইমরুল কায়েস

গত পহেলা মার্চ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এর দশম আসরে ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৬ উইকেটে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় ফরচুন বরিশাল। উক্ত ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের একাদশে জায়গা পাননি দলটির সাবেক অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। এরই প্রেক্ষিতে ইউটিউব এবং ফেসবুকে “আর কোনোদিন কুমিল্লার হয়ে বিপিএল খেলবো নাঃ সংবাদ সম্মেলনে কেঁদে কেঁদে বললেন ইমরুল” শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে ইউটিউবে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও প্রায় ৫৪ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ১ হাজারের বেশি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

উক্ত ইউটিউব ভিডিওটি’র লিংক শেয়ার করে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইমরুল কায়েস ভবিষ্যতে কুমিল্লার হয়ে বিপিএল খেলবেন না শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ইমরুল কায়েসের ভিন্ন একটি মন্তব্যের ভিডিও ক্লিপ ও ছবির সাথে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত দাবি সম্বলিত শিরোনাম ও থাম্বনেইল যুক্ত করে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটিতে ইমরুল কায়েসকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের নিয়ে কোনো নেতিবাচক কথা বলতে দেখা যায়নি।

ভিডিওটির সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, “আর কোনদিন কুমিল্লার হয়ে বিপিএল খেলবো না। সংবাদ সম্মেলনে কেঁদে কেঁদে একি বললেন ইমরুল কায়েস। আমি কুমিল্লাকে দুইবার চ্যাম্পিয়ন করেছি। এবার তারা আমাকে দলে নিলেও আমার সাথে প্রতারণা করে। প্রথমে আমাকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তারপর তারা আমাকে একাদশ থেকেও বাদ দেয়। অথচ আমি যে কয়টি ম্যাচ খেলেছি একটাও খারাপ খেলিনি। আমরা ক্রিকেটার, খেলাটা আমাদের আমাদের নেশা এবং পেশা। কিন্তু এভাবে যদি দলে নিয়ে বসিয়ে রাখা হয় তাহলে একজন খেলোয়াড় হিসেবেতো খারাপ লাগবেই। যদি খারাপ পারফরমেন্সের কারণে বাদ পড়তাম সেটা ভিন্ন কথা ছিল। তবে আমি তো নিয়মিত ভালো খেলছিলাম। সত্যি বলতে এমন ফ্রেঞ্চাইজির অধীনে আমি আর খেলতেই চাই না। আমি কুমিল্লাকে দুইবার চ্যাম্পিয়ন করেছি অথচ কুমিল্লা এবার আমাকে চরম অপমান করেছ।”

বিষয়টি যাচাইয়ে খেলাধুলা বিষয়ক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল T Sports এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ০২ মার্চ ‘ইমরুলের আক্ষেপ যে কারণে, আলিস তাকিয়ে সামনের দিকে’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটিতে ইমরুল কায়েসকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ফাইনাল ম্যাচে পরাজয়ের বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে কথা বলতে দেখা যায়। তবে সেখানে তিনি দলটি’র হয়ে ভবিষ্যতে না খেলা বা অন্যকোনো নেতিবাচক মন্তব্য করেননি। তার দলে না থাকার প্রসঙ্গেও তিনি সেখানে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র শুরুতে দেখানো ইমরুল কায়েসের ভিডিও ক্লিপের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

পাশাপাশি, গণমাধ্যম, ইমরুল কায়েসের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ, কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে ইমরুল কায়েস ভবিষ্যতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে বিপিএলে খেলবেন শীর্ষক দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত পহেলা মার্চ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এর দশম আসরের ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৬ উইকেটে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় ফরচুন বরিশাল। উক্ত ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের একাদশে জায়গা পাননি দলটি’র সাবেক অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। এরই প্রেক্ষিতে ইন্টারনেটে “আর কোনোদিন কুমিল্লার হয়ে বিপিএল খেলবো নাঃ সংবাদ সম্মেলনে কেঁদে কেঁদে বললেন ইমরুল” শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ইমরুল কায়েস এমন কোনো মন্তব্য করেননি। কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ইমরুল কায়েসের ভিন্ন একটি মন্তব্যের ভিডিও ক্লিপ ও ছবির সাথে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত দাবি সম্বলিত শিরোনাম ও থাম্বনেইল যুক্ত করে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিপিএলের সদ্য সমাপ্ত আসরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ইমরুল কায়েস “আর কোনোদিন কুমিল্লার হয়ে বিপিএল খেলবো না” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শ্রেণীর শিক্ষা কার্যক্রম ৩ মাসের জন্যে বন্ধ থাকবে দাবিতে ‘১ম থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল আবারো ৩ মাসের জন্য বন্ধ রাখার সিন্ধাত্ব নিলেন ৮ জুন থেকে বন্ধ থাকবে’ শীর্ষক একটি দাবি ভিডিওর মাধ্যমে টিকটকে প্রচার করা হয়েছে। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি টিকটকে প্রচারিত উক্ত দাবির একটি ভিডিওই দেখা হয়েছে প্রায় ২৯ লাখ ৭৩ হাজার ২৭০ বার। এছাড়াও ভিডিওটিতে প্রায় ৬৮ হাজার ৫৭৪ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়াও দেখানো হয়েছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শ্রেণীর (১ম-১০ম) শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের আলোচিত সংবাদটি বর্তমান সময়ের নয় বরং, ২০২৩ সালের জুন মাসে দেশব্যাপী তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে দেশের সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধের ঘোষণার একটি সংবাদের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওতে থাকা ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের লোগো এবং ‘আগামীকাল সকল মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ ঘোষণা’ শীর্ষক লেখাটির সূত্র ধরে Independent Television এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ৮ জুন তীব্র গরমের কারণে এবার বন্ধ মাধ্যমিক স্কুল || High School Closed শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনের মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে দেশব্যাপী তীব্র তাপ প্রবাহের সম্ভাবনা থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় ২০২৩ সালের ৫ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রাণালয়। পরবর্তীতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরও এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৮ জুন দেশের সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে।

এছাড়াও সেসময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘটনায় BBC News বাংলা-র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনেও একই তথ্য পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বর্তমান সময়ের নয়। 

মূলত, তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে ২০২৩ সালের জুন মাসের ৫-৮ তারিখ পর্যন্ত মোট ৪ দিনের জন্যে দেশের প্রাথমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রাণালয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তাপ প্রবাহের সতর্কবার্তায় ৭ জুন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৮ জুন দেশের সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদানও বন্ধ ঘোষণা করে। উক্ত ঘটনায় ইনডিপেনডেন্ট টিভিতে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদনকে সম্প্রতি, ‘১ম থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল আবারো ৩ মাসের জন্য বন্ধ রাখার সিন্ধাত্ব নিলেন ৮ জুন থেকে বন্ধ থাকবে’ শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, ২০২৩ সালের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার সংবাদকে সাম্প্রতিক ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

তামিম ইকবালকে জাতীয় দলের অধিনায়ক ঘোষণা করেননি পাপন

সম্প্রতি, সাকিব পুড়লো তামিমকে অধিনায়ক করে জাতীয় দলে, বিপিএল ফাইনালের পরে তামিমকে নিয়ে যে ঘোষণা দিলেন পাপন- শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

অধিনায়ক

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিপিএল ফাইনালের পর তামিম ইকবালকে জাতীয় দলের অধিনায়ক ঘোষণা করেননি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নাজমুল হাসান পাপন বরং সদ্য অনুষ্ঠিত বিপিএলে তামিম ইকবালের পারফরম্যান্স নিয়ে পাপনের দেওয়া বক্তব্যকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, শুরুতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। 

পরবর্তীতে কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ এবং ছবি যুক্ত করে উপস্থাপককে কথা বলতে শোনা যায়। তিনি বলেন, “বিপিএলের ট্রফি জিতে উচিত জবাব দিলেন তামিম ইকবাল। অধিনায়ক হয়ে জাতীয় দলে ফিরছেন তামিম ইকবাল। সাকিবের আর রাজত্ব চলবে না৷ তামিমই হবে দলের অধিনায়ক। বিপিএলের ফাইনালের পরে একি বললেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। দর্শক গতকাল ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে এবারের বিপিএল। আর এই বিপিএলে বাজিমাত ব্যাটিং তাণ্ডব করেছেন তামিম ইকবাল। যেমন করেছেন ব্যাটিং তেমনি অধিনায়কত্বে দারুণভাবে দলকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এনে চ্যাম্পিয়ন করেই ছাড়লেন। তিন বুড়োর ভ্যাল্কি দেখলো ক্রিকেট বিশ্ব। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবাল এই বাংলাদেশের পঞ্চপাণ্ডবের তিনপাণ্ডব ফরচুন বরিশালের হয়ে খেলে দলকে চ্যাম্পিয়ন করলেন৷ গতকাল ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নিয়েছে তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল। যেখানে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স আগে বের করে ১৫৪ রান করেছিল। ১৫৫ রানের টার্গেটে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই তামিম ইকবাল মারমুখী ব্যাটিংয়ে দলকে জয়ের পথটা সহজ করে দেন৷ এরপরে কায়েল মায়ার্স অবিশ্বাস্য ব্যাটিং তাণ্ডব হাঁকিয়েছেন। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ফরচুন বরিশাল এক ওভার ও ৬ উইকেট হাতে রেখেই দুর্দান্ত ভাবে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আর চ্যাম্পিয়ন হয়েই তামিম দিয়েছেন উচিত জবাব। কেননা গত ভারত বিশ্বকাপে তামিম ইকবালকে নানান বিতর্কে ফেলে বাদ রেখেছিল বাংলাদেশের বোর্ড ম্যানেজমেন্টরা। তবে তার জবাব তামিম দিয়েছেন ব্যাট হাতে মারকুটে ব্যাটিং করে৷ এবারের বিপিএলে টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন বরিশালের দলপতি তামিম ইকবাল। ট্রফি জিতার পাশাপাশি তিনি হয়েছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও। ১৫ ম্যাচে ১২৭.১৩ স্ট্রাইক রেটে ৪৯২ রান করেছেন তামিম, যা সবার উপরে। ফাইনালে তার ব্যাচ থেকে এসেছিল গুরুত্বপূর্ণ ৩৯ রান। তামিম প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়ে পেয়েছেন ১০ লক্ষ টাকা। আর টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে পেয়েছেন ৫ লক্ষ টাকা৷ এবারের বিপিএলে তামিমের মারকুটে ব্যাটিংয়ে অভাব নাজমুল হাসান পাপন৷ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বস নাজমুল হাসান পাপন জানিয়ে দিয়েছেন অচিরেই তামিমের সঙ্গে বৈঠক বসবেন। বৈঠকে বসে আবারও তামিমকে দলের অধিনায়ক হিসেবে যোগ করাবেন তিনি৷” 

পরবর্তীতে এবিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যমে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

এরপর নাজমুল হাসান পাপনের বক্তব্যের ক্লিপটির বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

অনুসন্ধানে ইনডিপেনডেন্ট টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ২ মার্চ “বিপিএলে দেশি ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সে খুশি বিসিবি সভাপতি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা নাজমুল হাসান পাপনের বক্তব্যের হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, বিপিএলে তামিম ইকবালের ভালো পারফরম্যান্সের কারণে তামিম ইকবালকে  জাতীয় দলে নেওয়া প্রসঙ্গে পাপন বলেন, জালাল ভাই এবং আমাদের সিরাজ ভাই এই দুইজন আগে তামিমকে ডেকে নিয়ে একটু বসুক। তারপর আমি ওর সাথে বসবো। কারণ, এখন আমি এভেইলেবল। এমন তো নয় যে আমি দেশের বাইরে চলে যাচ্ছি। সো আমার ধারণা খুব শীগ্রই আবার যদি দেখি যে উনারা পারছে না তাহলে আমি আগে বসবো। 

একই বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে ATN News. 

অর্থাৎ, এখন অবধি তামিম ইকবালকে পুনরায় জাতীয় দলের অধিনায়ক করার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। 

মূলত, গত বছরের আগস্ট মাসে জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন তামিম ইকবাল। এরপর থেকেই জাতীয় দলের বাইরে আছেন তিনি। সম্প্রতি, বিপিএলে ফরচুন বরিশালের অধিনায়কত্ব গ্রহণ করে দারুণ পারফরম্যান্স করে দলকে করেছেন চ্যাম্পিয়ন। এরইমধ্যে আবারও তামিম ইকবালকে জাতীয় দলের অধিনায়ক ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে, বিপিএলে দারুণ পারফরম্যান্স করে দলকে চ্যাম্পিয়ন করার পর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সামনে তামিম ইকবালকে জাতীয় দলে ভিড়ানোর জন্য আলোচনায় বসবেন বলে বক্তব্য দেন। সেই বক্তব্যকে এডিট করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, তামিম ইকবালকে জাতীয় দলের অধিনায়ক ঘোষণা করার তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা পুনরায় চালু হওয়ার গুজব 

0

সম্প্রতি, অষ্টম শ্রেণির স্টুডেন্টরা রেডি আছো তো আবারো শুরু হচ্ছে JSC পরিক্ষা শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি এই ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৮৫ হাজার বার। ভিডিওটিতে প্রায় তিন হাজার ৪০০ টি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পুরনায় জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা চালু হওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং কোনোপ্রকার তথ্যসূত্র ছাড়া জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রচারিত পুরোনো সংবাদের ফুটেজ ব্যবহার করে আলোচিত দাবি সম্বলিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

তথ্য যাচাই

অনুসন্ধানের শুরুতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি “জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা বাতিল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনে ২০২৩ সাল থেকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছে।

একই সময়ে মূলধারার অন্যান্য(, ,) গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

উল্লেখ্য, নতুন শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর মহিবুল হাসান চৌধুরী একাধিকবার (,) প্রয়োজনে নতুন কারিকুলাম ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানিয়েছেন। তবে পুনরায় পিইসি-জেএসসি পরীক্ষা ফিরার ব্যাপারে বা নতুন শিক্ষা কারিকুলাম প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দেননি তিনি। 

গত জানুয়ারি মাসে “নতুন কারিকুলাম আবার ফিরে যাচ্ছে আগের পরীক্ষা পদ্ধতিতে! ২০২৪ ব্যাচ থেকে PSC ও JSC পরিক্ষা নেওয়ার চূড়ান্ত ঘোষণা” শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়েরের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তখন তিনি জানান, ‘এটা গুজব। এমন কোনো নির্দেশনা নাই।’

সেসময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে প্রচারিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমেও বিষয়টিকে গুজব বলে জানানো হয়।

Screenshot: Facebook.

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু ব্যক্তি  প্রচার করছেন যে প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০২৪ সালে জেএসসি এবং পিএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই তথ্যটি মিথ্যা ও বানোয়াট।  এ ধরনের তথ্যে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করা হল।”

ভিডিও যাচাই 

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত ক্লিপটির বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

অনুসন্ধানে দেশিয় বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম বৈশাখী টিভির ইউটিউব চ্যানেলে  প্রচারিত শর্মার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২০১৯ সালের ০২ নভেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর একটি অংশই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, এটি ২০১৯ সালে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা শুরু হওয়া নিয়ে একটি সংবাদ প্রতিবেদন।

মূলত, ২০১৯ সালে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা শুরুর দিন  দেশিয় বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম বৈশাখী টিভিতে একটি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সম্প্রতি সেই প্রতিবেদনের ফুটেজ সংগ্রহ করে আবার জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা শুরু হচ্ছে দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা পুনরায় চালু হওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, পুনরায় জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা চালু হচ্ছে দাবি ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সাকিবের উইকেট ব্যাঙ্গাত্মকভাবে উদযাপনের জন্য তামিম ইকবাল লাইভে এসে ক্ষমা চাননি 

সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এর গ্রুপ পর্বের একটি ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আউট হলে সেটি ব্যাঙ্গাত্মকভাবে উদযাপন করেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এরই প্রেক্ষিতে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব ও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে ‘সাকিব দয়াকরে আমাকে মাফ করে দিস, হঠ্যাৎ লাইভে এসে একি বললেন তামিম ইকবাল’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

সাকিবের উইকেট

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে ইউটিউবে ভাইরাল ভিডিওটি প্রায় ১৫ হাজর বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় আড়াই শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ভিডিওটিতে ১৩ টি মন্তব্য করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাকিবের আউট হওয়া নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মকভাবে সেলিব্রেশনের জন্য তামিম ইকবাল লাইভে এসে সাকিব আল হাসানের কাছে ক্ষমা চাননি বরং তামিম ইকবালের ভিন্ন প্রেক্ষাপটের পুরোনো একটি ভিডিও ক্লিপের সাথে তামিম ইকবাল এবং সাকিব আল হাসানের কিছু ছবি যুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটিতে তামিম ইকবালকে সাকিব আল হাসানের কাছে ক্ষমা চাইতে দেখা যায়নি। ভিডিওটির সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, “লাইভে এসে তামিম ইকবাল বলেন, “ সাকিবের আউটে আমি যেভাবে ব্যঙ্গাত্মকভাবে উদযাপন করেছি সেটা করা আমার উচিত হয়নি, তাই আমি সাকিবকে বলবো, তুই আমাকে দয়া করে মাফ করে দিস। আমি খেলার মধ্যে উত্তেজনায় করে ফেলেছি। এটা করা আমার উচিত হয়নি।”

বিষয়টি যাচাইয়ে আলোচিত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে তামিম ইকবালের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ‘আমি চাইনি আপনারা ভুল কিছু জানুন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটিতে তামিম ইকবালকে ২০২৩ সালের ওডিআই বিশ্বকাপের স্কোয়াডে না থাকার বিষয়ে কথা বলতে দেখা যায়।

Screenshot: Tamim Iqbal Facebook

এই ভিডিওটি’র একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র শুরুতে প্রদর্শিত তামিম ইকবালের ভিডিও ক্লিপের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি ২০২৩ সালের এবং সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

পাশাপাশি, গণমাধ্যম, তামিম ইকবালের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত ম্যাচের পর তামিম ইকবালকে লাইভে এসে সাকিব আল হাসানের কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মূলত, সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এর দশম আসরে গ্রুপ পর্বের একটি ম্যাচে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ফরচুন বরিশালের মুখোমুখি হয় রংপুর রাইডার্স। উক্ত ম্যাচে ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবালকে আউট করে উদযাপন করেন সাকিব আল হাসান। পরবর্তীতে রংপুর রাইডার্সের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আউট হলে সেটি ব্যাঙ্গাত্মকভাবে উদযাপন করেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এরই প্রেক্ষিতে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব ও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে ‘সাকিব দয়াকরে আমাকে মাফ করে দিস, হঠ্যাৎ লাইভে এসে একি বললেন তামিম ইকবাল’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে তামিম ইকবাল উক্ত ঘটনায় লাইভে এসে সাকিবের কাছে ক্ষমা চাননি। ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তামিম ইকবালের ভিন্ন প্রেক্ষাপটের পুরোনো একটি ভিডিও ক্লিপের সাথে তামিম ইকবাল এবং সাকিব আল হাসানের কিছু ছবি যুক্ত করে আলোচিত দাবি সম্বলিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গতকাল (পহেলা মার্চ) বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এর দশম আসরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৬ উইকেটে পরাজিত করে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন ফরচুন বরিশাল।

উল্লেখ্য, বিপিএলের সদ্য সমাপ্ত আসরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, তামিম ইকবাল লাইভে এসে সম্প্রতি সাকিব আল হাসানের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বিপিএলে ফরচুন বরিশাল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রেক্ষিতে কোনো ফেসবুক লাইভ করেননি সাকিব আল হাসান

সম্প্রতি, “ফাইনালে তামিমের চ্যাম্পিয়ন হওয়া দেখে লাইভে এসে একি বললো সাকিব আল হাসান” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

চ্যাম্পিয়ন

টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ) ।

ইউটিউবে একই দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায় যে, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এর সদ্যসমাপ্ত আসরে তামিম ইকবালের দল ফরচুন বরিশাল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রেক্ষিতে সাকিব আল হাসান কোনো ফেসবুক লাইভ করেননি বরং ২০২২ সালে মালয়েশিয়ায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত শিক্ষামেলার প্রচারণার উদ্দেশ্যে ধারণ করা ভিডিওকেই উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত দাবির বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও জাতীয় ও আন্তজার্তিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র হতে আলোচিত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত পেজের সর্বশেষ পোস্টটি গত ১ মার্চ দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে করা হয়। 

অর্থাৎ এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত, সাকিব আল হাসানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের সর্বশেষ পোস্টটি গত ১ মার্চ বিপিএল ফাইনালের অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্বেই করা হয়েছে।

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে  সাকিব আল হাসানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ২১ নভেম্বরের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison Image By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও থেকে জানা যায়, মালয়েশিয়ায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষামেলা আয়োজনের প্রচারণার উদ্দেশ্যে ভিডিওটি তৈরি করা।

অর্থাৎ, ভিডিওটি পুরোনো ও ভিন্ন প্রেক্ষাপটে তৈরি।

মূলত, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে মালয়েশিয়ায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত শিক্ষামেলা উপলক্ষ্যে সাকিব আল হাসান তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে একটি ভিডিও প্রচার করেন। সেই ভিডিওটি ব্যবহার করেই সম্প্রতি, “ফাইনালে তামিমের চ্যাম্পিয়ন হওয়া দেখে লাইভে এসে একি বললো সাকিব আল হাসান” শীর্ষক শিরোনামে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, বিপিএলে ফরচুন বরিশাল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রেক্ষিতে সাকিব আল হাসান লাইভে এসেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

হালনাগাদ/ Update

১১ মার্চ, ২০২৪ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে ইউটিউবে একই দাবি সম্বলিত ভিডিও আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে উক্ত ভিডিওকে প্রতিবেদনে দাবি হিসেবে যুক্ত করা হলো।

সংসদে ব্যারিস্টার সুমনকে উলঙ্গ করে পেটানোর ভুয়া দাবি 

সম্প্রতি, ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে “সংসদে উলঙ্গ করে পিটালো ব্যারিস্টার সুমনকে সংসদে এটি কি ঘটালো আ.লীগ” শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

উলঙ্গ

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি প্রায় ৪০ হাজারের অধিক বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ১ হাজারের অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য  কর্তৃক হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে উলঙ্গ করে পেটানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং গত ৬ ফেব্রুয়ারি সংসদীয় আলোচনায় অংশ নেওয়ার সময়কার ব্যারিস্টার সুমনের বক্তব্যের একটি ভিডিওর সাথে চটকদার থাম্বনেইল যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। আলোচিত ভিডিওটি’র শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে উল্লেখিত দাবির সাথে ভিডিওটি’র বিস্তারিত অংশের মিল পাওয়া যায়নি। ভিডিওতে ব্যারিস্টার সুমনকে দেখা গেলেও আলোচিত দাবির স্বপক্ষে কোনো দৃশ্য কিংবা তথ্যের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি৷ 

ভিডিওতে প্রচারিত আলোচিত দাবিটি নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওতে দেখানো ব্যারিস্টার সুমনের ভিডিওটির অনুসন্ধানে বাংলা ভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে গত ৭ ফেব্রুয়ারি “সংসদে ব্যারিস্টার সুমনের বক্তব্য শুনে হাসলেন প্রধানমন্ত্রী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির একটি অংশই আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

ভিডিওতে ৬ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্যারিস্টার সুমনকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। এই ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবির কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা নেই। 

এছাড়া, থাম্বনেইলে থাকা অর্ধনগ্ন ব্যক্তির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানারের ২০২৩ সালের ৫ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ২০১৩ সালে মেক্সিকোর সংসদ সদস্য আন্তোনিও গার্সিয়ার সংসদে পাশ পাওয়া একটি বিতর্কিত জ্বালানি আইনের বিরোধিতা করে নিজের জামা-কাপড় খুলে ফেলার দৃশ্য।

মূলত, সংসদে গত ৬ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বক্তব্য দেন। তার সংসদে দেওয়া সেই বক্তব্যের ভিডিওর সাথে “সংসদে উলঙ্গ করে পিটালো ব্যারিস্টার সুমনকে সংসদে এটি কি ঘটালো আ.লীগ” শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে যে, সংসদে এরূপ কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

সুতরাং, সংসদে আওয়ামী লীগ কর্তৃক ব্যারিস্টার সুমনকে উলঙ্গ করে পেটানো হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি নিহত হননি

0

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ড

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি নিহত হওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত ৪৫ বা ৪৬ জন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং ৫ জন ব্যক্তি চিকিৎসাধীন আছেন। 

অনুসন্ধানে শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বেইলি রোডে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক ব্যক্তি নিহত হওয়া সংক্রান্ত কোনো তথ্য গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া যায়নি। 

তবে, সময় টিভি’র ফেসবুক পেজে আজ ০২ মার্চ “কথা বলছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎকারের একটি ভিডিও পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৫ জন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়া রোগীদের চিকিৎসায় ১৭ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এ বোর্ডের প্রধান হিসেবে রয়েছেন তিনি নিজেই। দগ্ধ ১১ জন রোগীর মধ্যে ৬ জনকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর ৫ জন চিকিৎসাধীন থাকবে। 

পাশাপাশি, দৈনিক সমকালে “বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে ফিরছেন ৬ জন, ‘শঙ্কামুক্ত নয়’ ৫” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনেও একই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। 

এছাড়া, গত ১ মার্চ দৈনিক প্রথম আলো এর ওয়েবসাইটে “আহত ১২ জনের কেউ শঙ্কামুক্ত নন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের বরাতে ৪৬ জন ব্যক্তির নিহতের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। 

একই তথ্যে সংবাদ এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ভিডিও সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে ডেইলি স্টার। 

অর্থাৎ, বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শতাধিক নয় বরং ৪৫ বা ৪৬ জন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। 

মূলত, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবন গ্রিন কোজিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় শতাধিক নিহত হয়েছেন- শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক ব্যক্তি নিহত হওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে উক্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন গত ১ মার্চ ৪৬ জন এবং ২ মার্চ প্রায় ৪৫ জন ব্যক্তি নিহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন। এছাড়া, উক্ত প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি উক্ত দুর্ঘটনায় আহত ৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।

সুতরাং, রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবন গ্রিন কোজিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৫ বা ৪৬ জন মানুষ মারা গেলেও উক্ত ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি নিহত হওয়ার দাবি প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

‘অহংকার থাকলে ফাইনালে যাওয়া যায় না’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য তামিম ইকবাল করেননি

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) দশম আসরের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে ফরচুন বরিশাল। ওই ম্যাচ পরবর্তী পুরস্কার প্রদান অংশে  ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবালের দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, সাকিব আল হাসানকে উদ্দেশ্য করে অপমানসূচক মন্তব্য করেছেন তামিম ইকবাল। টিকটকে ভিডিওটি “অহংকার থাকলে ফাইনালে যাওয়া যায়না! সাকিবকে অপমান করে একি বললো তামিম” শীর্ষক শিরোনামে প্রচার করা হয়।

তামিম

টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল সাকিব আল হাসানকে উদ্ধৃত করে ‘অহংকার থাকলে ফাইনালে যাওয়া যায়না!’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং চলমান বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচ পরবর্তী পুরস্কার প্রদান অংশে জয়ী দল ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবালের সাক্ষাৎকারের একটি ভিডিও ক্লিপের সাথে উক্ত ম্যাচের একাধিক ছবি যুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটিতে ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবালকে কথা বলতে দেখা যায়। তবে ভিডিওটিতে তামিম ইকবালকে সাকিব আল হাসানের প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে দেখা যায়নি।

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স বনাম ফরচুন বরিশালের তারিখের ম্যাচের খেলা দেখে লাইভে এসে সাকিব আল হাসান বলেন, “মনে অহংকার থাকলে ফাইনালে যাওয়া যায় না। এবার ম্যাচটিতে ফাইনালে গিয়ে উপস্থাপকের প্রশ্নে সাকিবকে চরম অপমান করে একি বললো ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল…।”

ভিডিওটি’র শুরুর অংশে প্রচারিত তামিম ইকবালের  ভিডিও ক্লিপটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে খেলাধুলা বিষয়ক চ্যানেল ‘টি স্পোর্টস’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি “Rangpur Riders vs Fortune Barishal Post Match Presentation। Qualifier 2। BPL 2024।  T Sports” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে তামিম ইকবালকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রংপুর রাইডার্স এর বিপক্ষে ম্যাচ জিতে উক্ত ম্যাচ সম্পর্কে উপস্থাপকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে দেখা যায়।

Screenshot : T Sports 

এই ভিডিওটির ৩ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড থেকে ৩ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটুকুর সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র শুরুতে দেখানো তামিম ইকবালের ফুটেজ অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison : Rumor Scanner 

অর্থাৎ, এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিটি’র কোনো সম্পর্ক নেই।

পাশাপাশি, তামিম ইকবালের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ কিংবা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টেও আলোচিত দাবির বিষয়ে তার মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তাছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাকিব আল হাসানকে উদ্ধৃত করে তামিম ইকবালের ‘অহংকার থাকলে ফাইনালে যাওয়া যায় না’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ‘অহংকার থাকলে ফাইনালে যাওয়া যায় না’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য তামিম ইকবাল করেননি।

মূলত, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি চলমান বিপিএলের দশম আসরের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের মুখোমুখি হয় তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল। উক্ত ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে ফরচুন বরিশাল। ম্যাচ পরবর্তী সময়ে পুরস্কার গ্রহণ শেষে ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল ম্যাচ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নের উত্তরে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও ক্লিপ শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচার করে দাবি করা হয় তিনি(তামিম ইকবাল) সাকিব আল হাসানকে উদ্ধৃত করে ‘অহংকার থাকলে ফাইনালে যাওয়া যায়না!’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে যে, সাকিব আল হাসানকে নিয়ে এমন কোনো মন্তব্য তামিম ইকবাল করেননি। ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভিন্ন বিষয়ের একটি ভিডিও ক্লিপের সাথে উক্ত ম্যাচের কিছু ছবি যুক্ত করে আলোচিত দাবি সম্বলিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিপিএলের দশম আসরে এবার রেকর্ড  চারবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স

কে হারিয়ে প্রথমবারের মতন চ্যাম্পিয়ন হলো ফরচুন বরিশাল। 

সুতরাং, সাকিব আল হাসানকে উদ্ধৃত করে তামিম ইকবাল ‘অহংকার থাকলে ফাইনালে যাওয়া যায় না’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

ইসরায়েল নয় বরং নিজ দেশের জাতীয় সংগীতের সময় উল্টোদিকে তাকিয়ে ছিল আয়ারল্যান্ড ফুটবল দল

0

সম্প্রতি আয়ারল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দল বনাম ইসরায়েল অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দলের ফুটবল খেলায় আয়ারল্যান্ডের খেলোয়াড়রা ইসরায়েলের জাতীয় সঙ্গীতের সময় মাঠে উল্টোদিক করে দাঁড়িয়ে থাকায় হিব্রু মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফুটবল

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আয়ারল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দলের খেলোয়াড়রা ইসরায়েলের জাতীয় সংগীত চলাকালীন উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে ছিল না বরং তারা নিজ দেশের অর্থাৎ আয়ারল্যান্ডের জাতীয় সংগীতের সময় উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়ান।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলবেনিয়ান ফুটবল সংস্থা Federata Shqiptare e Futbollit-FSHF এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৩ ফেব্রুয়ারিতে “Kualifikueset e Europianit U-17 për vajza / Irlandë – Izrael” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আয়ারল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দল বনাম ইসরায়েল অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দলের ফুটবল ম্যাচটির সম্পূর্ণ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube

ভিডিও ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, নীল জার্সি পরিহিত খেলোয়াড়রা ইসরায়েল অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দলের এবং সবুজ জার্সি পরিহিত খেলোয়াড়রা আয়ারল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দলের খেলোয়াড়। 

উক্ত খেলায় নীল জার্সি পরিহিত অর্থাৎ ইসরায়েল অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দলের খেলোয়াড়েরা আগে জাতীয় সংগীত গান। সেসময় সবুজ জার্সি পরিহিত অর্থাৎ আয়ারল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দলের খেলোয়াড়রা পাশেই দাঁড়িয়েই ছিলেন।

Image Collage: Rumor Scanner

ইসরায়েল অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দলের খেলোয়াড়দের জাতীয় সংগীত শেষ হলে আয়ারল্যান্ডের জাতীয় সংগীত শুরু হলে আয়ারল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দলের খেলোয়াড়েরা উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়ান।

পরবর্তীতে আয়ারল্যান্ড ভিত্তিক ক্রীড়া গণমাধ্যম Irish Mirror এর ওয়েবসাইটে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি “FAI deny claim that U-17 team turned back on Israeli National anthem before Euro qualifier” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে আলোচিত দাবির বিষয়ে আয়ারল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএআই) এর একটি বিজ্ঞপ্তি পাওয়া যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ইউইএফএ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের ইসরায়েল নারী দলের বিপক্ষে খেলা ম্যাচের শুরুতে জাতীয় সংগীত চলাকালীন উল্টো দিকে ঘুরে তাকানোর বিষয়ে প্রচারিত ভুল ব্যাখ্যার বিষয়ে আয়ারল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন সত্যতা জানাতে চায়”

“ইসরায়েলের জাতীয় সংগীত চলাকালীন দুই দলই একই (সামনের) দিকে তাকানো অবস্থায় ছিলেন। তবে যখন আয়ারল্যান্ডের জাতীয় সংগীত আমহারেন না ভিফান শুরু হয় তখন দেশটির রীতি অনুযায়ী আয়ারল্যান্ডের অন্যান্য ক্রীড়া দলের খেলোয়াড়দের মতোই আয়ারল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দলের সদস্যরা নিজ দেশের পতাকার দিকে মুখ করে ঘুরে দাঁড়ান।

পরবর্তীতে আয়ারল্যান্ডের অপর গণমাধ্যম The Irish Times এর ওয়েবসাইটে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত FAI clarify confusion as Ireland U17s mistakenly accused of turning backs on Israeli flag শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন (আর্কাইভ) থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

মূলত, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের (অনূর্ধ্ব-১৭) আয়ারল্যান্ড নারী দল বনাম ইসরায়েল নারী দলের ম্যাচের শুরুতে নিজ দেশের জাতীয় সংগীত চলাকালীন আয়ারল্যান্ড দলের খেলোয়ারড়েরা উল্টো দিকে ফিরে দাঁড়ান। পরবর্তীতে উক্ত বিষয়টিকেই ইসরায়েলের জাতীয় সংগীত চলাকালীন আয়ারল্যান্ড দলের খেলোয়াড়রা উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আয়ারল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দলের খেলোয়াড় ইসরায়েলের জাতীয় সংগীত চলাকালীন সামনের দিকেই তাকিয়ে ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে আয়ারল্যান্ডের রীতি অনুযায়ী দেশটির অন্যান্য ক্রীড়া দলের খেলোয়াড়দের মতোই আয়ারল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দল তাদের দেশের জাতীয় সংগীত চলাকালীন নিজ দেশের পতাকার দিকে তাকাতে উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন।

সুতরাং, ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের (অনূর্ধ্ব-১৭) আয়ারল্যান্ড নারী দল বনাম ইসরায়েল নারী দল ম্যাচে আয়ারল্যান্ড দলের খেলোয়ারড়েরা ইসরায়েলের জাতীয় সংগীতের সময় উল্টো দিকে তাকিয়ে ছিলেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র