Home Blog Page 542

হিরো আলম প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার

সম্প্রতি, ‘তুমি মিয়া করো টিকটক: রুমিন ফারহানা’ শীর্ষক শিরোনামে বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ভিডিওটিতে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “এত বড় সাহস হয় কি করে? তুমি মিয়া করো টিকটক। তোমার হাইট হলো ৫ ফিট। তোমার গায়ের রং আরাফাতের মত না। তোমার উচ্চতা আরাফাতের মত না। তোমার পেছনে আওয়ামী লীগের মত দল নাই। বিএনপি থাকলেই পারেনা, শুয়াইয়া ফেলে আর পেছনে তো স্বতন্ত্র প্রার্থী!”

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওতে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা হিরো আলমকে উদ্দেশ্য করে এই  মন্তব্যটি করেননি বরং SATV টেলিভিশনের টকশো লেট এডিশনে সরকারকে সমালোচনা করে রুমিন ফারহানার করা দীর্ঘ মন্তব্যের একটি ছোট অংশ কেটে উক্ত ভিডিওটি তৈরী করা হয়েছে।

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধানের মাধ্যমে SA টেলিভিশন এর  ফেসবুক পেজ SATV News এ গত ১৮ জুলাই ‘আ’লীগের পা’ন্ডাদের র’ক্তে মিশে গেছে স’হিং’সতা : রুমিন ফারহানা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে হিরো আলমকে কটাক্ষ করা হয়েছে দাবিতে  প্রচারিত রুমিন ফারহানার বক্তব্যের ভিডিওর সাথে উক্ত ভিডিওর ৭ মিনিট ৪২ সেকেন্ড থেকে ৭ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড পর্যন্ত দেওয়া বক্তব্যের হুবহু মিল রয়েছে। 

SATV News এর ভিডিওটি শুরু থেকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, ভিডিওটি মূলত SATV-র লেট এডিশন নামের টকশোর ১৯৮৭ নম্বর পর্ব ‘কোন পথে রাজনীতি’-র আলোচিত অংশের একটি ক্লিপ। 

পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে SATV Talk Show নামের ইউটিউব চ্যানেলে টকশোটির পুরো ভিডিও পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

লেট এডিশন টক-শো’র ফুল ভিডিও পর্যালোচনা করে দেখা যায়, টক-শো’র অতিথি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাড. এবিএম রিয়াজুল কবীর কাওসার নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতা নিয়ে আলোচনা করলে তার প্রেক্ষিতে রুমিন ফারহানা বলেন, “যোগ্যতাটা কি? কন্সটিটিউশনে তো পরিষ্কার বলে দিয়েছে। বয়স হতে হবে ২৫। বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। পাগল হলে হবে না। দেউলিয়া হলে হবে না। ফৌজদারী মামলায় সাজা প্রাপ্ত হওয়ার পর ২ বছরের সাজা হলে ৫ বছর পার হতে হবে। এই তো ক্রাইটেরিয়া মোটা দাগে? হিরো আলম তার কোনটার মধ্যে পড়েছে? সেতো ঘোষিত প্রার্থী, তার মনোনয়ন একসেপ্ট হয়েছে। তাহলে আপনি তার অযোগ্যতা ধরবেন কিভাবে?”

ভিডিওটিতে তাকে আরও বলতে শোনা যায়, “আমি মনে করি না আজকে যে নির্বাচন হয়েছে সেখানে হিরো আলমকে হেনস্তা করার বা নির্বাচনটাকে বির্তকিত করে ফেলার কোনো নির্দেশনা উপর মহল থেকে ছিল। না, এটা হতে পারে না। এটা রাজনীতির সামান্য জ্ঞান দিয়েই বোঝা যায়। কিন্তু ওইযে পান্ডাদের রক্তে মিশে গেছে স’হিংসতা। পান্ডাদের অভ্যাস হয়ে গেছে ভিন্ন কেউ দাঁড়াবে এত বড় সাহস হয় কি করে!? তুমি মিয়া করো টিকটক। তোমার হাইট হলো ৫ ফিট। তোমার গায়ের রং আরাফাতের মত না। তোমার উচ্চতা আরাফাতের মত না। তোমার পেছনে আওয়ামী লীগের মত দল নাই। বিএনপি থাকলেই পারেনা, শুয়াইয়া ফেলে আর পেছনে তো স্বতন্ত্র প্রার্থী বেচারা। সুতরাং তাকে সহ্য করবে এটাই তো আওয়ামী লীগের ইগোতে লাগার মত বিষয়।”

অর্থাৎ, টকশোতে আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে রুমিন ফারহানার দেওয়া মূল বক্তব্যের একটি অংশ “তুমি মিয়া করো টিকটক। তোমার হাইট হলো ৫ ফিট। তোমার গায়ের রং আরাফাতের মত না। তোমার উচ্চতা আরাফাতের মত না। তোমার পেছনে আওয়ামী লীগের মত দল নাই। বিএনপি থাকলেই পারেনা, শুয়াইয়া ফেলে আর পেছনে তো স্বতন্ত্র প্রার্থী” শীর্ষক কেটে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

মূলত, ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনের দিন স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিরো আলমের উপর হামলার প্রসংঙ্গে SATV-র জনপ্রিয় টকশো লেট এডিশনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাড. এবিএম রিয়াজুল কবীর কাওসার নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে টকশোর আরেক অতিথি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, “আমি মনে করি না আজকে যে নির্বাচন হয়েছে সেখানে হিরো আলমকে হেনস্তা করার বা নির্বাচনটাকে বির্তকিত করে ফেলার কোনো নির্দেশনা উপর মহল থেকে ছিল। না, এটা হতে পারে না। এটা রাজনীতির সামান্য জ্ঞান দিয়েই বোঝা যায়। কিন্তু ওইযে পান্ডাদের রক্তে মিশে গেছে স’হিংসতা। পান্ডাদের অভ্যাস হয়ে গেছে ভিন্ন কেউ দাড়াবে এত বড় সাহস হয় কি করে!? তুমি মিয়া করো টিকটক। তোমার হাইট হলো ৫ ফিট। তোমার গায়ের রং আরাফাতের মত না। তোমার উচ্চতা আরাফাতের মত না। তোমার পেছনে আওয়ামী লীগের মত দল নাই। বিএনপি থাকলেই পারেনা, শুয়াইয়া ফেলে আর পেছনে তো স্বতন্ত্র প্রার্থী বেচারা। সুতরাং তাকে সহ্য করবে এটাই তো আওয়ামী লীগের ইগোতে লাগার মত বিষয়।” তবে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রুমিন ফারহানার সেই বক্তব্যের একটি ছোট খন্ডিত অংশকে এমনভাবে প্রচার করা হচ্ছে যা দেখে মনে হচ্ছে রুমিন ফারহানা হিরো আলমের যোগ্যতা নিয়ে কটাক্ষ করছেন। যার ফলে আলোচিত বক্তব্যটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত এবং গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের বক্তব্য বিকৃত করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে

সুতরাং, SATV-র  টকশো লেট এডিশনে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে রুমিন ফারহানার দেওয়া একটি দীর্ঘ বক্তব্যের একটি খন্ডিত অংশ বিকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র

  • SATV News Facebook Page: Post
  • SATV Talk Show Youtube Channel: Video
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি পায়নি জামায়াত

সম্প্রতি,’আগামী ৪ আগস্ট ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের জন্য অনুমতি পেয়েছে জামায়াত’ শীর্ষক একটি দাবি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলা ভিশনের সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

বাংলা ভিশন এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন পড়ুন এখানে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আগামী ৪ আগস্ট ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দল সমাবেশের অনুমতি পায়নি বরং জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নামে পরিচালিত একটি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পোস্টের মাধ্যমেই উক্ত ভুয়া দাবিটি গণমাধ্যমের সূত্রে ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়।  

দাবিটির সূত্রপাত 

আলোচিত দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম প্রথমেই বাংলা ভিশনের ওয়েবসাইটে প্রচারিত প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে।

Screenshot: Bangla Vision Website

১ আগস্ট রাত ১০ টা ৪৫ মিনিটে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশের অনুমতি পেল জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। শুক্রবার (৪ আগস্ট) বেলা আড়াইটায় জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। মঙ্গলবার (১ আগস্ট) রাতে জামায়াতের নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ এক ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানিয়েছেন।’

পরবর্তীতে বাংলা ভিশনে দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে সংযুক্ত জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের ফেসবুক পেজ ঘুরে দেখে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের ফেসবুক পেজে উক্ত দাবি সংক্রান্ত কোনো পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে বাংলাদেশের উক্ত দাবির সূত্রপাত অনুসন্ধানে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নামে পরিচালিত একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আলোচিত দাবি সম্বলিত পোস্টটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায় । 

 Screenshot: Facebook

পোস্টে বলা হয়, ‘আলহামদুলিল্লাহ! অনুমতি মিলেছে আগামী ৪ তারিখের জামায়াতের সমাবেশের। তবে স্থান পরিবর্তন- সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, দুপুর ২ঃ৩০ মিনিট।’

অর্থাৎ, শফিকুল ইসলামের নামে পরিচালিত এই ফেইক অ্যাকাউন্টের সূত্র ধরেই সংবাদ প্রকাশ করেছে বাংলা ভিশন। তবে ১১টা ৩১ মিনিটে উক্ত প্রতিবেদনটি কিছুটা সংশোধন করে বাংলা ভিশন।

সংশোধিত প্রতিবেদনে পূর্বের সূত্র ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের কথিত ফেসবুক পোস্টের কথা বাদ দিয়ে বলা হয়, শুক্রবার ( ৪ আগস্ট) বেলা আড়াইটায় জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি দেয় হয় বলে জানিয়েছে দলটি। জামায়াতের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে এমন দাবি করে দলটি। তবে ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

Screenshot: Bangla Vision Website

প্রতিবেদনটিতে জামায়াতের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের কথা উল্লেখ করলেও জামায়াতের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এমন তথ্য সংশ্লিষ্ট কোনো পোস্ট পাওয়া যায়নি। 

প্রতিবেদন সংশোধনের প্রায় ২ ঘন্টা ৪৫ মিনিট পর ২ আগস্ট রাত ২টা ১৬ মিনিটে সংশোধিত প্রতিবেদনের শিরোনাম ও বিস্তারিত তথ্য সরিয়ে নিয়ে “জামায়াতের সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার সংবাদটি সঠিক নয়” শিরোনামে বিস্তারিত অংশসহ পুরো প্রতিবেদন পুনরায় সংশোধন করে গণমাধ্যমটি।

Screenshot: Bangla Vision Website

এ দফায় গণমাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনে দাবি করে, আগামী শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার সংবাদটি সঠিক নয়। মঙ্গলবার (১ আগস্ট) রাতে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নামে পরিচালিত একটি ফেসবুক পেজের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জামায়াত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশ করে বাংলাভিশন। কিন্তু সংবাদ প্রকাশের পর জামায়াত জানিয়েছে, এই পেজটি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালিত নয়। ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজটি ইংরেজি নামে রয়েছে অথচ কে বা কারা তাঁর নামে বাংলায় ফেসবুক পেজ খুলে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে।

তবে, এই ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে তাদের প্রতিবেদনে পূর্বে দাবিকৃত জামায়াতের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে পাওয়া কথিত তথ্যের বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। 

অনুসন্ধানের এ পর্যায়ে দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গত ১ আগস্ট মূলধারার অনলাইন সংবাদমাধ্যম Banglanews24 এর ওয়েবসাইটে ‘সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ডিএমপিতে জামায়েতের আবেদন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনে থেকে জানা যায়, আগামী ৪ আগস্ট রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কাছে আবেদন করেছে জামায়াতে ইসলামী।

মঙ্গলবার (১ আগস্ট) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে জামায়াতের ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপি কার্যালয়ে গিয়ে এ আবেদন জমা দেন।

উক্ত প্রতিবেদনে জামায়াতের আইনজীবী প্রতিনিধি দলের প্রধান আব্দুর রাজ্জাকের উদ্ধৃত দিয়ে বলা হয়, ‘বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল জামায়াতে ইসলামী। সেজন্য ডিএমপিতে আবেদন করা হয়েছিল। তারা আমাদের আশ্বস্ত করলেও শেষে অনুমতি দেয়নি। জামায়াতে ইসলামী সুশৃঙ্খল দল। সেজন্য নতুন করে আগামী ৪ আগস্ট শান্তিপূর্ণ সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াত।’

এছাড়া, উক্ত বিষয়ে জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের ফেসবুক পেজে ১ আগস্ট বিকেল ৫ টা ৩০ মিনিটে প্রচারিত পোস্ট থেকে প্রায় একই তথ্য জানা যায়।

Screenshot: Facebook

মূলত, গত ৩১ জুলাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল, আলেম ওলামা ও জামায়াত আমিরের মুক্তি এবং সরকারের পদত্যাগ দাবিতে ১ আগস্ট জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে আবেদন করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তবে ডিএমপির পক্ষ থেকে জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি ডিএমপি। পরবর্তীতে দলটি ৪ আগস্ট ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং অনুমতির জন্য ১ আগস্ট ডিএমপির কাছে আবেদন করে। উক্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের ফেসবুক পেজ ও জামায়াত ইসলামীর ফেসবুক পেজের বরাতে জামায়াত সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে দাবি করে সংবাদ প্রকাশ করে বাংলা ভিশন। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নামের যে ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সূত্র ধরে বাংলা ভিশন সংবাদ প্রকাশ করেছে সেটি একটি ফেইক অ্যাকাউন্ট। প্রকৃতপক্ষে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ তার ফেসবুক পেজ হতে এমন কোনো দাবি জানিয়ে পোস্ট করেননি। এছাড়া জামায়াতের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকেও এই দাবিতে কোনো পোস্ট করা হয়নি। এবং এই প্রতিবেদনের প্রকাশের আগ পর্যন্ত পুলিশ জামায়াত ইসলামীকে আগামী ০৪ আগস্ট সমাবেশ করার অনুমতিও দেয়নি।

সুতরাং, আগামী ৪ আগস্ট ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের জন্য জামায়াতে ইসলামীর অনুমতি পাওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গণঅধিকার পরিষদ নেতা নুরুল হক নুরকে গ্রেপ্তারের গুজব

সম্প্রতি ‘নিজ বাসা থেকে ডিবির হাতে গ্রেপ্তার হলেন ভিপি নূর’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। 

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুর গ্রেপ্তার হননি বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ক্লিপ সংযুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিডিওটি তৈরি করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

গত ০২ আগস্ট Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘নিজ বাসা থেকে ডিবির হাতে গ্রেপ্তার হলেন ভিপি নূর’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইলে ব্যবহার করে ২ মিনিট ০৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি প্রচার করা হয়। 

Screenshot: Sabai Sikhi YouTube 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ছবি ও ভিডিও ক্লিপ নিয়ে তৈরি একটি নিউজ ভিডিও। সেখানে ভিপি নুরের সাম্প্রতিক ফেসবুক লাইভের একটি খণ্ডিত অংশের সাথে নুরের ভিন্ন ভিন্ন সময়ের পুরোনো কয়েকটি ছবি দেখা যায়।

২ মিনিট ০৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে নুরের বাসায় পুলিশের অভিযানের সাম্প্রতিক লাইভের ভিডিও সংযুক্ত করা হয়। এরপর ভিডিওটির পরবর্তী অংশে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এবার সন্ত্রাস ও জঙ্গি মতবাদে আর্থিক সহায়তার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। গতকাল রাত ২ টা ১০ মিনিটে তাঁর নিজ বাসভবন ভেঙে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় ভিপি নুরুল হক নুর ফেসবুক লাইভে এসে ডিবির অভিযানের কথা স্বীকার করেন। ভিপি নুর অভিযোগ করে বলেন, রাত ২ টা ১০ মিনিটে সরকারি সন্ত্রাসীরা তার বাসায় হানা দেন।’

বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানের মাধ্যমে Nurul Haque Nur নামের একটি ফেসবুক পেজে গতকাল(০১ আগস্ট) রাতে নুরের বাসায় পুলিশের অভিযানের কয়েকটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

এতে দেখা যায় সাদা পোশাকে কয়েকজন লোক নুরের বাসায় ঢোকার চেষ্টা করছে। পরে অভিযানের বিষয়টি জানালে নুরের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা।

পরবর্তীতে এবিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম ডেইলি স্টারের অনলাইন সংস্করণে গত ০২ আগস্ট ‘মধ্যরাতে নুরের বাসার ‘দরজা ভেঙে’ ছাত্র অধিকারের সভাপতি বিন ইয়ামিনকে তুলে নিলো ডিবি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: The Daily Star 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মধ্যরাতে ‘দরজা ভেঙে’ গণ অধিকার পরিষদের  সভাপতি নুরুল হক নুরের বাসা থেকে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ।

নুরুল হক নুর জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে হাতিরঝিলের মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় তার বাসার দরজা ভেঙে প্রবেশ করে ডিবি সদস্যরা। পরিচয়ে তারা বলেন, মতিঝিল জোনের ডিবি সদস্য তারা।

এছাড়া পরবর্তীতে মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে একই তারিখে ‘মধ্যরাতে ভিপি নুরুলের বাসা থেকে ছাত্র অধিকারের সভাপতিকে গ্রেপ্তার’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকেও এবিষয়ে একই তথ্য জানা যায়। 

Screenshot: Prothom Alo

অর্থাৎ, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নূরের বাসা থেকে নুরকে নয় বরং  তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাকে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো সূত্রে এখন পর্যন্ত ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুরের বাসা থেকে তাকে ডিবি পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তারের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি ছাত্রঅধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাকে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বাসা থেকে গতকাল মধ্য রাতে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। সেসময় নুরুল হক নুরের নামে পরিচালিত একটি ফেসবুক পেজ থেকে এই ঘটনার লাইভ প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে এই ঘটনার লাইভ ভিডিও’র সাথে নুরের পুরোনো কয়েকটি ছবি যুক্ত করে ‘নিজ বাসা থেকে ডিবির হাতে গ্রেফতার হলেন ভিপি নূর’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে ইউটিউবে প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, ওইদিন নুরুল হক নুর ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হননি।

প্রসঙ্গত, আজ বুধবার (০২ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদের মিছিলে ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে নুরুল হক নুর সহ ছাত্র অধিকার পরিষদের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে জানা যায়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও গণঅধিকার পরিষদ(একাংশ) সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিষয়ে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া একাধিক মিথ্যা তথ্য শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর গ্রেপ্তার হয়েছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

টাঙ্গুয়ার হাওরে আটক বুয়েট শিক্ষার্থীদের সংখ্যা নিয়ে গণমাধ্যমে বিভ্রান্তি

সম্প্রতি সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে গিয়ে তাহিরপুর থানা পুলিশের হাতে কয়েকজন পর্যটক আটক হওয়ার ঘটনায় দেশের মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আটককৃতদের মধ্যে বুয়েট শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে।

আটককৃতদের মধ্যে ১৯, ২৬, ৩১, ৩৩ এবং ৩৪ জন বুয়েটের শিক্ষার্থী দাবি করে গণমাধ্যমগুলো প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

আটককৃতদের মধ্যে ৩৪ জন বুয়েটের শিক্ষার্থী উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ঢাকা পোস্ট, বিডি জার্নাল, ডেইলি ক্যাম্পাস, বাংলাদেশ মোমেন্টস, এশিয়ান টিভি, নিউজবাংলা ২৪, দেশ টিভি, সমকাল, আরটিভি, বাংলা ২৪ লাইভ, ঢাকা মেইল, নয়া শতাব্দী, ইউএনবি, সাম্প্রতিক দেশকাল, স্টার সংবাদ, কুমিল্লার কাগজ, বাংলাভিশন, জনবাণী, জনকণ্ঠ, নয়া দিগন্ত, আমাদের সময়, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি, নিউজ ২৪, আমার সংবাদ, ক্যাম্পাস টাইমস, নিউজজি ২৪, সোনালী নিউজ

আটককৃতদের মধ্যে ৩১ জন বুয়েটের শিক্ষার্থী উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রতিদিনের বাংলাদেশ, কালবেলা, বাংলানিউজ ২৪, দৈনিক বাংলা, রাইজিং বিডি, চ্যানেল ২৪, পদ্মা নিউজ, পূর্বপশ্চিম বিডি, ঢাকা টাইমস ২৪, কালের কণ্ঠ, বিডিনিউজ ২৪, বহুমাত্রিক

আটককৃতদের মধ্যে ২৬ জন বুয়েটের শিক্ষার্থী উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ঢাকা ট্রিবিউন, জাগো নিউজ ২৪, ইত্তেফাক, ঢাকা প্রকাশ ২৪, এবিনিউজ ২৪

আটককৃতদের মধ্যে ৩৩ জন বুয়েটের শিক্ষার্থী উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে একাত্তর টিভি

আটককৃতদের মধ্যে ১৯ জন বুয়েটের শিক্ষার্থী উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আজকের পত্রিকা, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি

গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে টাঙ্গুয়ার হাওরে  আটককৃত ব্যক্তিদের মধ্যে বুয়েটের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৯, ২৬, ৩১, ৩৩ কিংবা ৩৪ জন নয় বরং আটককৃত ব্যক্তিদের মধ্যে বুয়েটের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২৪ জন।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রতিদিনের বাংলাদেশ এর ফেসবুক পেজে আজ ১ আগস্ট “হাওরে ঘুরতে গিয়ে বুয়েটের ২৪ শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার, স্বজনের সংবাদ সম্মেলন থেকে সরাসরি” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Pratidiner Bangladesh Facebook page

উক্ত ভিডিওতে অভিভাবকদের পক্ষে এক ব্যক্তি তাদের লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। ঐ লিখি বক্তব্যে বলা হয়, সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে যাওয়া বুয়েটের ২৪ শিক্ষার্থীসহ মোট ৩৪ জন পর্যটককে পুলিশ আটক করে মামলা দিয়েছে।

এছাড়া টাঙ্গুয়ার হাওরে আটককৃত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে গত ৩১ জুলাই ‘টাঙ্গুয়ার হাওরে আসা বুয়েটের ২৪ শিক্ষার্থীসহ গ্রেপ্তার ৩৪’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Prothom Alo

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সরকারের বিরুদ্ধে ‘গোপন ষড়যন্ত্র ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করার আশঙ্কায়’ ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে আসা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২৪ জন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩৪ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার(৩১ জুলাই) দুপুরে তাঁদের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে।

পরবর্তীতে মূলধারার গণমাধ্যম The Daily Star অনলাইন সংস্করণে গত ৩১ জুলাই ‘টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে ২৪ বুয়েট শিক্ষার্থীসহ গ্রেপ্তার ৩৪’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: The Daily Star

এই প্রতিবেদনেও পুলিশের বরাতে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃত ৩৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৪ জন বুয়েটের এবং বাকিরা অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।

প্রতিবেদনে উল্লেখিত গ্রেফতারকৃতরা হলেন বুয়েট শিক্ষার্থী আফিফ আনোয়ার, বখতিয়ার নাফিস, মো. সাইখ, ইসমাইল ইবনে আজাদ, সাব্বির আহম্মেদ, তাজিমুর রাফি, মো. সাদ আদনান, মো. শামীম আল রাজি, মো. আবদুলাহ আল মুকিত, মো. জায়িম সরকার, হাইছাম বিন মাহবুব, মাহমুদুর হাসান, খালিদ আম্মার, মো. ফাহাদুল ইসলাম, তানভির আরাফাত, এ টি এম আবরার মুহতাদী, মো. ফয়সাল হাবিব, আনোয়ারুল্লাহ সিদ্দিকী, আলী আম্মার মৌয়াজ, মো. রাশেদ রায়হান, সাকিব শাহরিয়ার, ফায়েজ উস সোয়াইব, আবদুর রাফি ও মাঈন উদ্দিন।

বাকিরা হলেন আবদুল বারি, মো. বাকি বিল্লাহ, মাহাদি হাসান, টি এম তানভির হোসেন, আশ্রাফ আলী, মো. মাহমুদ হাসান, মো. এহসানুল হকন, রাইয়ান আহম্মেদ, তানিমুল ইসলাম ও মো. আবদুল্লাহ মিয়া।

অর্থাৎ, টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে মোট ৩৪ জন ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ৩৪ জনের মধ্যে সবাই বুয়েটের শিক্ষার্থী নয়। এর মধ্যে বুয়েটের শিক্ষার্থী ২৪ জন। এবং সেখানে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন। 

মূলত,  গত ৩১ জুলাই সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে ৩৪ জন ব্যক্তিকে সরকারের বিরুদ্ধে ‘গোপন ষড়যন্ত্র ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করার আশঙ্কায়’ আটক করে তাহিরপুর থানা পুলিশ। তবে, এ ঘটনায় দেশের গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আটককৃতদের মধ্যে বুয়েটের  ১৯, ২৬, ৩১, ৩৩ কিংবা ৩৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন দাবি করে বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, এই ৩৪ জন ব্যক্তির মধ্যে সবাই বুয়েটের শিক্ষার্থী নয়। প্রকৃতপক্ষে আটককৃতদের মধ্যে বুয়েটের শিক্ষার্থী ২৪ জন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বুয়েট শিক্ষার্থীদের নিয়ে ইন্টারনেটে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে বুয়েটের ১৯, ২৬, ৩১, ৩৩ কিংবা ৩৪ জন শিক্ষার্থী আটক দাবিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রচারিত তথ্যগুলো বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ইতালিতে নিজ দলীয় লোকেরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেয়নি

সম্প্রতি, ‘ইতালিতে শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার দলের লোকজনই তাকে ভুয়া-ভুয়া বলে স্লোগানে মুখর হল’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইতালিতে শেখ হাসিনার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার দলের লোকজন তাকে ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেয়নি বরং ইতালী আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক হাসান ইকবালের নেতৃত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে নতুন কমিটির সাধারন সম্পাদক আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে আলমগীর ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেওয়া হয়। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একাত্তর টেলিভিশনের ইউরোপ প্রতিনিধি Nurul Wahid এর ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে  গত ২৬ জুলাই ‘হাসান ইকবালের ভিডিও ফাঁস! ইতালী আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক হাসান ইকবালের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানে বর্তমান সাধারন সম্পাদক আলমগীর ভুয়া ভুয়া বলে হট্রগোলের অপচেষ্টা। ভিডিওতে দেখা যায় হাসান ইকবাল বার বার পেছন থেকে লোকজনকে হাতের ইশারায় হট্রগোল করার জন্য উস্কানী দেন।’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একই ঘটনায় ধারণাকৃত  ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পুক্ষানুপুক্ষভাবে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ইতালী আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক  হাসান ইকবাল বার বার পেছন ফিরে লোকজনকে হাতের ইশারায় ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেওয়ার জন্য উস্কানী দিচ্ছেন।

পরবর্তী অনুসন্ধানে Nurul Wahid এর ফেসবুক প্রোফাইলে ‘ইতালী আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ইদ্রিস ফরাজী ও সাধারন সম্পাদক হাসান ইকবালকে দল থেকে বহিস্কার করা হউক। সাধারন নেতা কর্মীর এখন সময়ের দাবী।’ শীর্ষক শিরোনামে আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

ভিডিওটিতে সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত একজন ভদ্রলোক সেদিনের মূল ঘটনা জানানোর দাবি করে বলেন, ‘সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নাগরিক সংবধনা দেওয়ার প্রাক্কালে নেত্রীর নির্দেশে ইতালি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন মঞ্চে বক্তৃতা দিতে যান। তখন কিছু সংখ্যক লোক ইতালি আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইদ্রিস ফারাজি এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান ইকবালের নেতৃত্বে কার্ড নকল করে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করে আলমগীরকে ভুয়া ভুয়া বলে নেত্রীর দৃষ্টি আর্কষণ করার চেষ্টা করে। তখন নেত্রী নো নো বলে তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করেন। জনাব মাহাতাব হোসেন ও আলমগীর হোসেনের কমিটিকে লিখিতভাবে অনুমোদন দিয়েছেন সেহেতু তিনি আলমগীর হোসেনকে মঞ্চে ডেকেছেন এবং পরবর্তীতে সভাপতি মাহাতাব হোসেনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ করেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন বিএনপি-জামায়াত যদি এটাকে পুজি করে ট্রল করতে চায় তাহলে তাদের উদ্দেশ্য কখনোই সফল হবে না।’

অর্থাৎ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেওয়া হয়নি।

মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৩ জুলাই ইউনাইটেড নেশনস ফুড সিস্টেম সামিট+২ স্টকটেকিং মোমেন্টে (ইউএনএফএসএস+২) সহ বেশকিছু প্রোগ্রামে যোগ দিতে ৩ দিনের সফরে ইতালি যান। সেখানে ইতালি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। যেখানে কয়েকজন মানুষকে ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দিতে দেখা যায়। ভিডিওটি ‘ইতালিতে শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার দলের লোকজনই তাকে ভুয়া-ভুয়া বলে স্লোগানে মুখর’ দাবিতে প্রচার করা হয়। কিন্তু রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ইতালি আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যবর্তী দ্বন্দের কারণে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন মঞ্চে উঠলে সাবেক সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে তার সমর্থকগোষ্ঠী আলমগীর ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেন।

সুতরাং,ইতালিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার দলের লোকজনই তাকে ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগানে মুখর হওয়ার দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Nurul Wahid Facebook Account: Post
  • Nurul Wahid Facebook Account: Post
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

ভারতের তাইমারা অঞ্চলে গেলে ফোনের তারিখ বদলে যাওয়ার  দাবিটি গুজব 

সম্প্রতি ‘রহস্যময় তাইমারা উপত্যকায় গেলে বদলে যায় ফোনের তারিখ’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

যা দাবি করা হচ্ছে

Durbin News‘ নামের একটি অনলাইন পোর্টালের ফেসবুক পেজে গত ৭ জুলাই ‘যেই অঞ্চল দিয়ে গেলে বদলে যায় ফোনের তারিখ!’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ভিডিওটিতে দাবি করা হয়, ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের রাচি-টাটা ন্যাশনাল হাইওয়েতে অবস্থিত তাইমারা নামক রহস্যময় অঞ্চল অতিক্রমের সময় ফোনের সময় পরিবর্তন হয়ে যায়। এবং পরিবর্তিত সময়টি ভবিষ্যৎ এর কোনো সময়কে নির্দেশ করে অর্থাৎ ২০২৩ সালে যদি কোনো ব্যাক্তি সেই অঞ্চল দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যায় তাহলে তার ফোনে সময় পরিবর্তিত হয়ে ২০২৪ কিংবা ২০২৫ সাল দেখাবে। 

একই দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন  TrueScoope, ZEENEWS

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের ঝাড়খন্ডের তাইমারা উপত্যকা অতিক্রমের সময় ফোনের সময় পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে তাইমারা উপত্যকায় এমন কোনো ঘটনা ঘটে না বরং এটি সম্পূর্ণ গুজব। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতের একটি আঞ্চলিক সংবাদ মাধ্যম Prabath Khabar এ ২০২২ সালের ১১ জুলাই ‘Taimara Valley Fact Check: Neither time nor date has changed in mobile, Prabhat Khabar has done a complete investigation’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: Prabhat Khabar

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সরেজমিনে বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে প্রভাত খবর গণমাধ্যমটি তাদের কয়েকজন সাংবাদিককে তাইমারা উপত্যকায় পাঠায়। সেখানে তারা ৪ ঘন্টা অবস্থান করেছে এবং তাদের কারোর ফোনেরই সময় বা তারিখ পরিবর্তন হয়নি। পাশাপাশি তারা স্থানীয়দের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেও বিষয়টির কোনো প্রকার সত্যতা খুঁজে পায়নি। 

এছাড়া গণমাধ্যমটির কর্মীরা স্থানীয় কস্তুরবা গান্ধী বালিকা বিদ্যালয়ের উপস্থিতির ডিজিটাল রেকর্ডারে তারিখ পরিবর্তিত হয়ে যাওয়ার যে দাবি উঠেছিল, তা নিয়ে অনুসন্ধানে জানতে পারে যে, বিদ্যালয়টিতে ঘটনাটি একবারই মাত্র ঘটেছিল। তবে এটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেও ঘটতে পারে বলে সংবাদ প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়। 

সর্বোপরি, গণমাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে সম্পূর্ণ গুজব হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।  

এছাড়াও একই বিষয়ে ভারতের আরো একটি আঞ্চলিক সংবাদ মাধ্যম Jagran  এ ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট ‘Know the truth of Jharkhand’s Taimara Valley, does the year really change here, read the full story’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যেখান থেকে এই গুজবের সূত্রপাত অর্থাৎ কস্তুরবা গান্ধী বালিকা বিদ্যালয়টি তাইমারা উপত্যকাতেই অবস্থিত নয়। বিদ্যালয়টি জামচুন নামক অন্য এক এলাকায় অবস্থিত, যেটি তাইমারা উপত্যকা থেকে অনেক দূরে। 

Screenshot source : Jagran

পাশাপাশি উক্ত সংবাদ মাধ্যমের কয়েকজন সাংবাদিক তাইমারা উপত্যকায় নিজের মোবাইলে  সময় যাচাই করে দেখেছেন  এবং ছবিও তুলেছেন, কিন্তু সময় বা তারিখে কোনো ধরনের পরিবর্তন তারা দেখতে পাননি। 

মানুষের পক্ষে মোবাইলের সময় পরিবর্তন করে ভবিষ্যতের সময় আনা সম্ভব

যেমন, নিচে প্রদর্শিত স্ক্রিনশটটিতে লক্ষ্য করুন। ২০২৩ সালের ৩১ শে জুলাই তারিখে একই সময়ে ২০২৪ সাল থেকে আসা একটি মিসড কল রয়েছে এখানে। যা মোবাইলের ডেট অ্যান্ড টাইমসের সেটিংস পরিবর্তন করে অন্য আরেকটি ডিভাইস থেকে কল করে এমন ‘ভবিষ্যৎ থেকে আসা মিসড কল’ রেকর্ড করা হয়েছে। অর্থাৎ বর্তমান থেকেই ভবিষ্যত অনুযায়ী এক বছর সময় এগিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

Screenshot: Rumor Scanner Analysis

মূলত, সম্প্রতি ভারতের তাইমারা অঞ্চল অতিক্রম করার সময় মোবাইলের সময় পরিবর্তন হয়ে ভবিষ্যতের  সময়কে নির্দেশ করে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার কর্মা হচ্ছে। তবে এ নিয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, তাইমারা উপত্যকায় এমন কোনো ঘটনা আদতে ঘটে না। বরং মোবাইল ফোনের সময়ের সেটিংস পরিবর্তন করে বর্তমানে থেকেও ভবিষ্যত থেকে কল পাওয়া সম্ভব। 

সুতরাং, ভারতের তাইমারা উপত্যকা দিয়ে যাওয়ার সময় ফোনের সময় পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ইয়েমেনে সরকার কর্তৃক বহুবিবাহ সংক্রান্ত নতুন আইন প্রণয়নের তথ্যটি ভুয়া 

0

সম্প্রতি, “ইয়ামান সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত বহু বিবাহ সংক্রান্ত নতুন আইন: ১। প্রত্যেক পুরুষকে কমপক্ষে দু’জন স্ত্রীকে বিবাহ করতে হবে, এবং বিবাহ ও আবাসনের ব্যয় রাষ্ট্র বহন করবে। ২। যে ব্যক্তি সিদ্ধান্তটি প্রত্যাখ্যান করে তাকে কমপক্ষে ১৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হবে। ৩। যে মহিলা তার স্বামীকে দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে বিবাহ বন্ধনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে, তাকেও কমপক্ষে ১৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হবে” শীর্ষক শিরোনামে আরবি হরফে ইয়েমেনের মন্ত্রীর স্বাক্ষরিত একটি সরকারী নথির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইয়েমেনে একাধিক বিয়ে বাধ্যতামূলক দাবিতে যে আইনের কথা প্রচার করা হচ্ছে তা সত্য নয় বরং ফটোশপের মাধ্যমে নথি এবং স্বাক্ষর নকল করে উক্ত তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে।

মূলত, নকল নথি ও জাল স্বাক্ষর ব্যবহার করে আরব বিশ্বের দেশগুলোতে বাধ্যতামূলক একাধিক বিয়ের আইন শিরোনামে একটি গুজব ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। তারই ধারাবাহিকতায় ইয়েমেনে বাধ্যতামূলক ভাবে পুরুষদের একাধিক বিয়ে, অন্যথায় জেল জরিমানার বিধান করে একটি আইন পাশ হয়েছে দাবিতে ইয়েমেনের মন্ত্রীর স্বাক্ষরিত একটি নথির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইয়েমেনে বহুবিবাহ বাধ্যতামূলক সংক্রান্ত এমন কোনো আইন পাস হয়নি। উল্লিখিত দাবিতে ইয়েমেনের মন্ত্রীর স্বাক্ষর সম্বলিত নথিটি সম্পূর্ণ বানোয়াট।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় এটিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

গুইসাপের ছবিকে ঘড়িয়ালের ছবি দাবি করে মূলধারার একাধিক সংবাদমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ 

0

সম্প্রতি, “রাজবাড়ীতে বিলুপ্ত ও বিরল প্রজাতির একটি ঘড়িয়াল উদ্ধার করা হয়েছে। ঘড়িয়ালটির দৈর্ঘ্য পাঁচ ফুট এবং ওজন প্রায় ২৫ কেজি” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সম্বলিত ছবি দেশীয় মূলধারার একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে। 

দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে

কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিরল প্রজাতির ঘড়িয়াল দাবিতে দেশীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত ছবিটি আসলে ঘড়িয়ালের নয় বরং এটি একটি গুইসাপের ছবি।

উক্ত দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানে বণ্যপ্রাণী, সাপের কামড় নিয়ে সচেতনতা ও পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ‘Deep Ecology And Snake Conservation Foundation’ এর ফেসবুক গ্রুপে গত ৩০ জুলাই এ বিষয়ে একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from ‘Shahadut Hossain Shohan’ Facebook Post

ফেসবুক পোস্টটিতে সাহাদাত হোসেন জানান,

“‘রাজবাড়ীতে বিলুপ্ত ও বিরল প্রজাতির একটি ঘড়িয়াল উদ্ধার করা হয়েছে’ – বলে কালের কণ্ঠ অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে যা সম্পূর্ণ ভুল।

প্রানীটি ঘড়িয়াল বলে দাবী করা হলেও এটি একটি গুইসাপ (Bengal monitor lizard)। অর্থাৎ ঘড়িয়াল দাবীটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং এটি একটি মিথ্যা সংবাদ।” 

পরবর্তীতে, ঘড়িয়াল এবং গুইসাপের মধ্যে পার্থক্য খুঁজে দেখার চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার।

Image Comparison by Rumor Scanner

বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঘড়িয়াল (Gavialis gangeticus) আকৃতিতে গুইসাপের চেয়ে সরু ও লম্বা প্রজাতির হয়ে থাকে। লম্বা মুখ যুক্ত পুরুষ ঘড়িয়ালের দৈর্ঘ্য স্বাভাবিকভাবে ৬.৫ মি. এবং স্ত্রী ঘড়িয়ালের দৈর্ঘ্য ৪.৫ মি. হয়ে থাকে।

অপরদিকে, গুইসাপ (Varanus bengalensis) ঘড়িয়ালের চেয়ে আকৃতিতে সামান্য ছোট হয়ে থাকে। লম্বা লেজ বিশিষ্ট একেকটি গুইসাপ স্বাভাবিকভাবে ৩ মিটারের কাছাকাছি হয়ে থাকে। 

মূলত, গত ৩০ জুলাই দেশীয় একাধিক মূলধারার সংবাদমাধ্যমে “খাবারের খোঁজে বাড়িতে ঢুকল ৫ ফুটের বিরল প্রজাতির ঘড়িয়াল” শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিবেদন গুলোতে ব্যবহৃত ছবিটি কোনো ঘড়িয়ালের ছবি ছিলো না। প্রকৃতপক্ষে এটি একটি গুইসাপের ছবি। 

সুতরাং, দেশীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদন গুলোতে বিরল প্রজাতির ঘড়িয়াল দাবিতে একটি গুইসাপের ছবি ব্যবহৃত হয়েছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • Facebook Post: Shahadut Hossain Shohan 
  • Conversation with Shahadut Hossain Shohan 
  • Rumor Scanner’s own analysis 

বিএনপি নেতাদের আটকের ঘটনায় নুরের নেতৃত্বে প্রতিবাদ মিছিল দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, ‘আমানউল্লাহ ও গয়েশ্বরের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে নূর বাহিনীর প্রতিবাদ গন মিছিল’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২২ সালের ০৭ অক্টোবর ছাত্রলীগ কর্তৃক ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মারধর করে পুলিশে দেওয়ার অভিযোগের ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকায় গণ অধিকার পরিষদের মশাল মিছিলের ভিডিও।   

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম সমকালের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২০২২ সালে ০৭ অক্টোবর আলোচিত ভিডিওটির অনুরূপ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Samakal Facebook

ভিডিওতে গণঅধিকার পরিষদের মিছিলের ব্যানারে থাকা লেখা থেকে থেকে জানা যায়, প্রয়াত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফরহাদের স্মরণসভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদ এর নেতাকর্মীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার আয়োজনে উক্ত মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।  

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে সমকালের অনলাইন বিভাগের প্রধান সংবাদ দাতা Zakaria Ibn Yusuf এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজেও একই তারিখে একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Zakaria Ibn Yusuf Facebook

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে, ‘আমানউল্লাহ ও গয়েশ্বরের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে নূর বাহিনীর প্রতিবাদ গণ মিছিল’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাথে এই ভিডিওটির ব্যানার এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

পাশাপাশি, গণমাধ্যম বা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে এ প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ এবং গয়েশ্বরের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে গণঅধিকার পরিষদ বা নুরুল হক নুরের বিক্ষোভ বা প্রতিবাদ মিছিলের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, ২০২২ সালের ০৭ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের স্মরণসভায় ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। উক্ত ঘটনার প্রতিবাদে ঐ দিনই মশাল মিছিল করে গণ অধিকার পরিষদ। সম্প্রতি ঐ মশাল মিছিলের একটি ভিডিওকে গত ২৯ জুলাই বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে নুর বাহিনীর প্রতিবাদ মিছিলের ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার আহবায়ক আমানুল্লাহ আমানকে আটক করে পুলিশ। পরবর্তীতে দুজনকেই ছেড়ে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বে ঢাকার প্রবেশ পথে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি কেন্দ্রিক একাধিক ভুল তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ২০২২ সালে ছাত্র অধিকার পরিষদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগের ঘটনার প্রতিবাদে করা মশাল মিছিলের একটি ভিডিওকে সম্প্রতি বিএনপির কর্মসূচি থেকে বিএনপি নেতাদের আটকের ঘটনায় নুর এবং তার দলের প্রতিবাদ মিছিলের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সম্প্রতি পুলিশের ওপর বিএনপি নেতা-কর্মীদের হামলার ছবি দাবিতে পুরোনো ছবি প্রচার

সম্প্রতি, আজকের বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের এক ঝলক। তারা তাদের আসল চরিত্রে ফিরে আসছে! শীর্ষক দাবিতে পুলিশের ওপর হামলার তিনটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে এমপি মোহাম্মদ আলী আরাফাতের টুইটারে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের ওপর বিএনপির নেতা-কর্মীদের হামলার ছবির দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো এই ছবিগুলোকে সাম্প্রতিক সময়ের ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

ছবি যাচাই- ১

সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির আন্দোলনে পুলিশের ওপর হামলার ছবি দাবিতে এই ছবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

কিন্তু, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে অনলাইন সংবাদমাধ্যম Jagonews24 এর ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি “আবারো নাশকতাকারীদের টার্গেট পুলিশ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Jagonews24

উক্ত প্রতিবেদনে ছবিটি তোলার সময় এবং সময় সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য না থাকলেও এটি নিশ্চিত বলা যায় যে, এটি ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি বা পূর্ববর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী কোনো কর্মসূচি থেকে ধারণ করা।

অর্থাৎ, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

ছবি যাচাই- ২

সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির আন্দোলনের সময়ের ছবি দাবিতে এই ছবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

কিন্তু, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দৈনিক জনকণ্ঠে ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর “পুলিশের সঙ্গে জামায়াত নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, আটক ১১” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Daily Janakantha

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিটি সেসময় রাজধানীর মালিবাগ এলাকায় জামায়াতের নেতা-কর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ধারণকৃত।

অর্থাৎ, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

ছবি যাচাই-৩ 

সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির আন্দোলনের সময় পুলিশের গাড়িতে হামলার ছবি দাবিতে এই ছবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

কিন্তু, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে অনলাইন পোর্টাল BNA News24 এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি “শাহবাগে পুলিশের উপর হামলা: প্রতিবেদন ১৩ মার্চ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: BNA News24

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিটি লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর তদন্ত ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে মশাল মিছিলের চলাকালে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় তোলা। 

অর্থাৎ, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

মূলত, গত ৩০ জুলাই সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। এই কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সাথে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে বিএনপি নেতা-কর্মী ছাড়াও ২০ পুলিশ সদস্য আহত হন। পরবর্তীতে ঐ সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ওপর বিএনপি নেতা কর্মীদের হামলার ছবি দাবিতে তিনটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে এগুলো পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ঘটনায় ধারণকৃত এই ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ের ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, রাজধানীতে বিএনপির কর্মসূচিকে ঘিরে ইন্টারনেটে প্রচারিত বেশকিছু ছবিকে ইতিমধ্যে বিভ্রান্তিকর হিসাবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, তিনটি পুরোনো ছবিকে সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের ওপর বিএনপি নেতা-কর্মীদের হামলার ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র