একই ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবি দুইটি সাম্প্রতিক সময়ে জাপানে প্রবল বর্ষণের ঘটনায় সৃষ্ট বন্যার নয় বরং পূর্বের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবিকে সাম্প্রতিক ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
ছবি যাচাই- ১
Screenshot: Bangla Tribune
জাপানে সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট বন্যার ঘটনার খবরে ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলা ট্রিবিউন।
কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।
ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি’তে ২০১৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর “Powerful Typhoon Man-yi hits central Japan” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: BBC
ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, সে সময় জাপানের কিয়োটোর লোকেরা বন্যা কবলিত রাস্তায় চলাচলের জন্য নৌকায় চড়তে বাধ্য হয়েছিল।
ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Reuters
ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর জাপানের ইবারাকি প্রিফেকচারের জোসোতে, টাইফুন ইটাউ দ্বারা সৃষ্ট কিনুগাওয়া নদী দ্বারা প্লাবিত একটি এলাকায় অগ্নিনির্বাপকদের দ্বারা যানবাহন থেকে লোকদের উদ্বার করার সময় ছবিটি তোলা।
অর্থাৎ, ছবিটি অন্তত ৮ বছরের পুরোনো।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি বরং কিছু গণমাধ্যম ছবিগুলো সংগৃহীত এবং কোনো কোনো গণমাধ্যম ছবির ক্যাপশনে বিদেশি সংবাদ সংস্থার নাম উল্লেখ করেছে। আবার কোনোটিতে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিগুলো ব্যবহার করে সংগৃহীত উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্য উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই ছবিগুলো জাপানের সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া অমূলক নয়।
মূলত, গত জুলাইতে জাপানে প্রবল বর্ষণের ঘটনায় দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জাপানের ঘটনার দাবিতে দুইটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবিগুলো উক্ত ঘটনার নয়। ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবিকে জাপানের সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণের ঘটনার খবরে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্যও দেওয়া হয়নি। এতে করে স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো জাপানের সাম্প্রতিক বন্যার ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে।
সুতরাং, জাপানের প্রবল বর্ষণের ঘটনায় বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দুইটি পুরোনো ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি, “মেসি কেবল বার্সেলোনার সাথেই সফল হবেন, কিন্তু ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো বিশ্বের যেকোনো দলের সাথেই সফল হবেন” শীর্ষক এই মন্তব্যটি ডেভিড ব্যাকহামের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে ডেভিড ব্যাকহামের এমন কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি বরং ডেভিড ব্যাকহাম লিওনেল মেসিকেই সেরা বলে করা বিভিন্ন মন্তব্য ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া যায়।
সাবেক ইংলিশ ফুটবলার ডেভিড ব্যাকহামের মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত এই বিষয়টির কোনো সূত্র খুঁজে না পাওয়ায় রিউমর স্ক্যানার টিম দাবিটির সূত্রপাত যাচাইয়ের জন্য ফেসবুক মনিটরিং টুল ব্যবহার করে।
ফেসবুক মনিটরিং টুল ব্যবহার করে দেখা যায়, গত ২০ জুলাই রাত ৭ টা ৩১ মিনিটে “Sports Lover” নামক একটি পেজ থেকে এই দাবির পোস্ট (আর্কাইভ) করা হয়।
পোস্টটির ক্যাপশনে ডেভিড ব্যাকহামকে উদ্ধৃতি করে বলা হয়, মেসি কেবল বার্সেলোনার সাথেই সফল হবেন, কিন্তু ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো বিশ্বের যেকোনো দলের সাথেই সফল হবেন।
Screenshot: Facebook
পরবর্তীতে একই তারিখে রাত ১১ টা ৮ মিনিটে “Md Imran” নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একই ক্যাপশনে আরেকটি পোস্ট (আর্কাইভ) করা হয়।
তবে, পোস্টগুলোতে কোনো সূত্র উল্লেখ করা হয়নি।
কিছু ফেসবুক ব্যবহারকারী মন্তব্যটিকে স্যাটায়ার হিসেবে ব্যঙ্গাত্মক অর্থে প্রচার করলেও আবার অনেকেই এই মন্তব্যটিকে বাস্তব বা ডেভিড ব্যাকহামের আসল মন্তব্য দাবিতে প্রচার করছে।
ডেভিড ব্যাকহাম মেসি ও রোনালদোকে নিয়ে করা মন্তব্য
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ডেভিড ব্যাকহাম পূর্বে বিভিন্ন সময় মেসি ও রোনালদোর প্রসঙ্গে মেসিকে সেরা বলে মন্তব্য করেছেন।
লিওনেল মেসি বার্সেলোনায় থাকাকালীন মেসি ও রোনালদোকে নিয়ে ডেভিড ব্যাকহামের করা একটি মন্তব্য খেলাধুলা ভিত্তিক গণমাধ্যম Bleacher Report এর একটি প্রতিবেদনে খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায় ডেভিড ব্যাকহাম বলেছেন, তাদের (মেসি ও রোনালদো) প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং প্রতিভায় মিল থাকতে পারে এবং ফুটবলের জন্য তাদের উভয়ের উপস্থিতি কল্পনাতিত, তবে মেসিই কেবল বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়।
প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, ফুটবল বিশ্বে মেগাস্টার লিওনেল মেসি এবং ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো দক্ষতা এবং দক্ষতার তুলনা করতে আগ্রহী।
Screenshot: Bleacher Report
এছাড়া, SPORTS BRIEF এর ওয়েবসাইটে গত ২১ ফেব্রুয়ারি “Ronaldo vs Messi: David Beckham Finally Reveals His Favourite Player” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায় ডেভিড ব্যাকহাম সেরা খেলোয়াড় নির্বাচনে বলেছেন, এটা মেসি হতে হবে। আমি বিভিন্ন কারণে লিওকে ভালোবাসি। আমি তাকে ভালোবাসি কারণ তিনি একজন মহান বাবা। আমি তাকে ভালোবাসি কারণ তিনি একজন মহান ব্যক্তিত্ব, একটি চরিত্র। তিনি একজন মহান ব্যক্তি।
প্রতিবেদনটি থেকে আরো জানা যায় ডেভিড ব্যাকহাম বলেছেন, আমি মনে করি যে সবাই তার সম্পর্কে যা পছন্দ করে তা হল সে যেভাবে খেলাটি খেলে। তিনি আবেগের সাথে খেলাটি খেলেন। তিনি যেভাবে খেলেন ঠিক সেভাবে বিনামূল্যে গেমটি খেলেন।
প্রতিবেদনটিতে, “কোন খেলোয়াড়কে তিনি বেশি পছন্দ করেন?” এমন প্রশ্নে ব্যাকহাম বলেন, এটা মেসি হতে হবে। আমি বিভিন্ন কারণে লিওকে ভালোবাসি। আমি তাকে ভালোবাসি কারণ তিনি একজন মহান বাবা। আমি তাকে ভালোবাসি কারণ তিনি একজন মহান ব্যক্তিত্ব, একটি চরিত্র। তিনি একজন মহান ব্যক্তি।
মেসিকে সেরা খেলোয়াড় বলে গত ০২ ফেব্রুয়ারি ESPN Argentina কে দেওয়া সাক্ষাৎকারটি খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। সাক্ষাৎকারটির সাথে প্রদত্ত তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়।
Screenshot: ESPN Argentina Twitter Account
মূলত, ইংল্যান্ডের সাবেক ফুটবলার ডেভিড ব্যাকহাম “মেসি কেবল বার্সেলোনার সাথেই সফল হবেন, কিন্তু ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো বিশ্বের যেকোনো দলের সাথেই সফল হবেন” শীর্ষক মন্তব্যটি করেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডেভিড ব্যাকহাম এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং তিনি বিভিন্ন সময়ে মেসিকে সেরা খেলোয়াড় বলে মন্তব্য করেছেন।
উল্লেখ্য, পূর্বে মেসি ও রোনালদোকে নিয়ে ছড়িয়ে পড়া মন্তব্যকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, মেসি এবং রোনালদোকে নিয়ে ছড়িয়ে পড়া মন্তব্যটি ডেভিড ব্যাকহামের মন্তব্য শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
আজ (০৬ আগস্ট) ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার ওয়েবসাইটে “আওয়ামী লীগের দল আজ দিল্লিতে” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সদস্য কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের ছবি দাবিতে একটি ছবি প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে প্রচারিত ছবিটি কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের নয় বরং উক্ত ছবিটি বাংলাদেশের প্রয়াত নায়ক রাজ্জাকের।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে প্রচারিত ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে জাতীয় দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ২১ আগস্ট প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবির ক্যাপশন থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, এটি নায়ক রাজ্জাকের ছবি।
পাশাপাশি, অপর একটি দেশীয় সংবাদমাধ্যমে নায়ক রাজ্জাকের আলোচ্য ছবিটি দেখুন দৈনিক ইত্তেফাক।
পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আরেক জাতীয় দৈনিক যুগান্তরের ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের ছবি সম্বলিত আরো কিছু প্রতিবেদন দেখুন বাংলা ট্রিবিউন, সমকাল।
মুলত, আজ (০৬ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার এর প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সদস্য কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের ছবি দাবিতে যে ছবিটি প্রচার করা হয়েছে তা কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাকের নয়। প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশের প্রয়াত নায়ক রাজ্জাকের ছবিকে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের ছবি দাবিতে প্রচার করেছে পত্রিকাটি।
সুতরাং, বাংলাদেশের প্রয়াত নায়ক রাজ্জাকের ছবিকে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের ছবি দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম খান পান্না ইন্তেকাল করেছেন’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম খান পান্না ওরফে জেড আই খান পান্না ইন্তেকাল করেননি বরং শহীদ জায়া অধ্যাপক পান্না কায়সার ইন্তেকাল করেছেন। প্রকৃতপক্ষে অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম খান পান্না জীবিত এবং সুস্থ আছেন।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম খান পান্নার মৃত্যু দাবিতে প্রচারিত তথ্যটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে তাঁর মেয়ে Nadeemah Khan এর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এসম্পর্কিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Nadeemah Khan Facebook
উক্ত পোস্ট থেকে জানা যায়, অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম খান পান্না বর্তমানে জীবিত এবং সুস্থ আছেন।
পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে প্রথম আলো’র অনলাইন সংস্করণে গত ০৪ আগস্ট ‘পান্না কায়সার মারা গেছেন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Prothom Alo
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, লেখক, গবেষক, শিশু সংগঠক, সাবেক সংসদ সদস্য পান্না কায়সার শুক্রবার (০৪ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।
অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আইনজীবী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম খান পান্না মারা যাননি।
মূলত, গতকাল (০৪ আগস্ট) সকালে শহীদ জায়া অধ্যাপক পান্না কায়সার রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। নামের সাথে মিল থাকায় পরবর্তীতে অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম খান পান্না ওরফে জেড আই খান পান্না মারা গেছেন দাবিতে গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি প্রচারিত হয়। প্রকৃতপক্ষে, অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম খান পান্না বর্তমানে জীবিত এবং সুস্থ আছেন। এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম খান পান্নার মেয়ে নাদীমা খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, পূর্বেও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সম্প্রতি, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদকে আটকের ঘটনায় “সালাহউদ্দিন আহমেদকে আটক করায় বিএনপির নিন্দা ও প্রতিবাদ” শীর্ষক শিরোনামে দেশীয় মুলধারার সংবাদমাধ্যম ‘Channel i’ এর ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। উক্ত প্রতিবেদনে ঐ নেতার ছবি দাবিতে একটি ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘Channel i’ এর ওয়েবসাইটে প্রচারিত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত এই ছবিটি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদের নয় বরং ছবিটি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এর।
অনুসন্ধানের শুরুতে ‘Channel i’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে,
“বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব সালাহউদ্দিন আহমেদকে আটকের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে সংগঠনটি। তাদের দাবি অসত্য ও বানোয়াট মামলায় যাত্রাবাড়ী থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক আটক হয়েছেন সালাহ উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার ৩ আগস্ট বিকেলে সংগঠনটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই প্রতিবাদ জানান। এর আগে দুপুরে আদালতে হাজিরা দিয়ে বাসায় ফেরার পথে যাত্রাবাড়ী থেকে তাকে আটক করা হয় বলে বিএনপি জানায়।”
প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘Bangladesh Nationalist Party-BNP’ এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গত ০৩ আগষ্টে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব সালাহউদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বার্তা খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot from ‘Crowdtangle’
‘Bangladesh Nationalist Party-BNP’ এর ফেসবুক পেজের উক্ত পোস্টে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব সালাহউদ্দিন আহমেদের একটি ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে।
পাশাপাশি, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের আটকের বিষয়ে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে দেশীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘NTV’ এর ওয়েবসাইটে গত ০৩ আগষ্ট “বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন গ্রেপ্তার” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
“দলীয় কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীতে ভাঙচুর ও নাশকতার পৃথক দুই মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।”
~ NTV
তবে, ‘Channel i’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব সালাহউদ্দিন আহমেদের ছবির স্থলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
Image Comparison by Rumor Scanner
মূলত, গত ০৩ আগষ্টে বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব সালাহউদ্দিন আহমেদকে আটকের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বিএনপি’র পক্ষ থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে, সালাহউদ্দিন আহমেদের গ্রেফতার এবং এ নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের বিবৃতি বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনে ‘Channel i’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের ছবি ব্যবহার করে।
প্রসঙ্গত, গত ০২ আগষ্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘ভারতে শিলংয়ে অবস্থানরত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের দেশে ফেরা না ফেরা তার সিদ্ধান্তের বিষয়।’
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন বিএনপির স্থায়ী কমিটির (তৎকালীন যুগ্ম মহাসচিব) সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। নিখোঁজের ৬৩ দিন পর ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ সালাহউদ্দিনকে উদ্ধার করে বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়। পরবর্তীতে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার দেখায় মেঘালয় থানা পুলিশ। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ঐ মামলায় মেঘালয়ের শিলং জজ কোর্ট থেকে খালাস পেয়ে গত ০৮ জুন বাংলাদেশে ফেরার অনুমতি পান বিএনপির এই নেতা।
সুতরাং, বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব সালাহউদ্দিন আহমেদকে আটকের ঘটনায় বিএনপির নিন্দা ও প্রতিবাদের বিষয়ে ‘Channel i’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ এফ এম আব্দুল মঈনের দুর্নীতি বিষয়ক একটি বক্তব্যকে ঘিরে সংবাদ প্রকাশের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়টির এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের ঘটনায় জার্মান ভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের বাংলা সংস্করণে গত ৩ আগস্ট ‘আরেকটি গাভী বৃত্তান্তের গল্প’ শীর্ষক শিরোনামে একটি মতামত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনটিতে যা দাবি করা হচ্ছে
প্রতিবেদনটির দাবি করা হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ারকে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ারকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ইকবাল মনোয়ারকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে জনকণ্ঠের ওয়েবসাইটে গত ২ আগস্ট ‘ইকবালকে সাময়িক বহিষ্কার করলো কুবি প্রশাসন কুবি প্রতিনিধি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের বক্তব্যকে ‘বিকৃত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তমূলক মিথ্যা’ তথ্য প্রচার করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।’
Screenshot: Janakantho
পরবর্তীতে এই প্রতিবেদনের সূত্রে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।
বিজ্ঞপ্তিটিতে প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী, ‘গত ৩১ জুলাই, ২০২৩ ইং তারিখে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নবীন বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠান’ এ মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এফ এম আবদুল মঈন এর বক্তব্যকে বিকৃত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তমূলক মিথ্যা তথ্য প্রচার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রক্টরিয়াল বড়ির প্রাথমিক প্রতিবেদন ও সুপারিশ অদ্য ০২/০৮/২০১৩ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের সভায় অনুমোদিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো।’
Office Notice: Comilla University
ইকবালকে সাময়িক বহিষ্কারের বিষয়ে উক্ত অফিস বিজ্ঞপ্তির সূত্রে গণমাধ্যমে প্রকাশিত আরও প্রতিবেদন দেখুন
উল্লেখিত প্রতিবেদন ও অফিস আদেশ থেকে দেখা যাচ্ছে, ইকবাল মনোয়ারকে এক বছরের জন্য নয় বরং সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মূলত, গত ৩১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নবীন বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানে উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের দেওয়া দুর্নীতি বিষয়ক একটি বক্তব্যকে বিকৃত করে সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে গত ২ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও দৈনিক যায়যায়দিনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইকবাল মনোয়ারের এই বহিষ্কারের বিষয়টিকেই ডয়েচে ভেলে বাংলায় প্রকাশিত এক মতামত কলামে এক বছরের জন্য বহিষ্কার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ারকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচারের প্রবণতা বেশ কয়েক বছর ধরেই আলোচিত একটি বিষয়। ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বের অংশ হিসেবে রিউমর স্ক্যানারও প্রতিষ্ঠার লগ্ন থেকেই দেশীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন) মোট ১৭৯ টি বিষয়ে দেশের ১৭৬ টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সর্বমোট ১৪২৭ টি প্রতিবেদনে থাকা ভুল (তথ্য, ছবি, ভিডিও) শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। উল্লিখিত ১৭৯ টি ঘটনায় ৯৮ টি মিথ্যা, ৭৭ টি বিভ্রান্তিকর, ০১ টি আংশিক মিথ্যা, ০১ টি অধিকাংশই মিথ্যা, ০১ টি স্যাটায়ার এবং ০১ টি বিকৃত তথ্যকে সত্য তথ্য হিসেবে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
এখানে উল্লেখ্য যে, চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল এ বছরের প্রথম তিন মাসে গণমাধ্যমের ভুল সংবাদের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। উক্ত পরিসংখ্যান প্রকাশের পর প্রথম তিন মাসের আরও আটটি ভুল সংবাদ শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। উক্ত আটটি ফ্যাক্টচেকে পাওয়া গণমাধ্যমের ভুলগুলো তিন মাসের পরিসংখ্যানে যুক্ত করে প্রথম ছয় মাসের পরিসংখ্যানের সাথে সামঞ্জস্য করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের ফল: এটি হাদিস গ্রন্থ সহীহ বুখারী শরীফ এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ “উমদাতুল কারী শারহু সহীহুল বুখারী” এর ১০ নং ভলিউম। গ্রন্থটির রচয়িতা আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী।
অনুসন্ধানের ফল: ১৯৮২ সালে রাইসউদ্দিন আহমেদ এবং ২০০৩ সালে সাবের হোসেন চৌধুরী যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ইংল্যান্ডের মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) সম্মানসূচক আজীবন সদস্যপদ পান। তাদের পর তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে (প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার) মাশরাফি এই সম্মাননা পান।
অনুসন্ধানের ফল: ২০২১ সালের ১৫ মে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরায়েলি শহরগুলোকে লক্ষ্য করে গাজা থেকে রকেট ছোঁড়ার দৃশ্য এটি।
অনুসন্ধানের ফল: নাসিম শাহ গত ফেব্রুয়ারিতে একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সাথে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে অংশ নেন। উক্ত অনুষ্ঠানে নাসিম শাহকে করা বেশকিছু প্রশ্নের মধ্যে তার বিয়ে নিয়ে এবং ভারতীয় অভিনেত্রী উর্বশী রাউতেলা সংক্রান্ত দুটি ভিন্ন প্রশ্নের উত্তরের সময়কার বক্তব্য এডিটের মাধ্যমে জোড়া লাগিয়ে উর্বশীকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন নাসিম শাহ শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হয়।
অনুসন্ধানের ফল: ফিলিপ কুতিনহো ফিলিস্তিনিদের বিষয়ে ফেসবুকে কোনো পোস্ট দেননি বরং কুতিনহোর নামে বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত একটি ফ্যান পেজ থেকে উক্ত পোস্টটি দেওয়া হয়।
এছাড়াও, সময় টিভি, ঢাকা পোস্ট, ডেইলি বাংলাদেশ, সমকাল এবং বিডি২৪লাইভ এই বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন করে পরবর্তীতে তা সংশোধন করে ফেলে। প্রতিবেদনগুলোর পূর্ববর্তী ভার্সনের কোনো আর্কাইভ কপি পাওয়া সম্ভব হয়নি।
Screenshot collage: Rumor Scanner
এই বিষয়ে ভুল করা গণমাধ্যমের সংখ্যা: ৪২
অনুসন্ধানের ফল: সঞ্জয় দত্ত নিজেই এক টুইট বার্তায় বিষয়টি পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে নিশ্চিত করেছেন।
অনুসন্ধানের ফল: সোফিয়ান বাউফল ১৬ এপ্রিল কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম Al Kass এ একটি সাক্ষাৎকার দেন। সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে উপস্থাপিকার এক প্রশ্নের উত্তরে সোফিয়ান বাউফল বলেন, রোনালদোর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, আমাদের কান্না করার চেয়ে তার কান্না করাটাই স্বাভাবিক ছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে তার এই উত্তরটিকেই বিকৃত করে আলোচিত দাবিটি ছড়িয়ে পড়ে।
দাবি: পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে সৌদি ফুটবল ক্লাব আল নাসরের সভাপতি মুসাইলি আল মুয়াম্মার বলেছেন, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে চুক্তি স্বাক্ষর করিয়ে তিনি প্রতারিত হয়েছেন।
অনুসন্ধানের ফল: পাকিস্তানে এই ধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাছাড়া, যে ছবিটি পাকিস্তানের হিসেবে প্রচার করে উক্ত দাবিটি করা হয়েছে সেটি মূলত ভারতের হায়দ্রাবাদের একটি কবরস্থানের একটি কবর গ্রিলবদ্ধ করার ছবি এবং এই ছবির সাথে ধর্ষণ প্রতিরোধের কোনো সম্পর্ক নেই।
অনুসন্ধানের ফল: ২০১৫ সালের ২৬ অক্টোবর পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ভারতে ভূমিকম্প আঘাত হানে। উক্ত ঘটনায় পাকিস্তানের কোহাত শহরে ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভবনের ছবি এটি।
অনুসন্ধানের ফল: সংযুক্ত ছবিটি মেহেদী হাসানের নয় বরং এটি গত ২৯ এপ্রিল মারা যাওয়া একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. রাজু আহমেদের ছবি।
অনুসন্ধানের ফল: কোনোপ্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত এক নারীর ছবিকে রংপুরের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদেবী চৌধুরাণীর ছবি দাবি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের ফল: প্রচারিত ছবিগুলো গত মে মাসের নয় বরং গত জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বন্যার পুরোনো ছবিকে নিউজিল্যান্ডের মে মাসের বন্যার ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
দাবি: পিকি ব্লাইন্ডার্স ড্রামা সিরিজে মারফি অভিনয় করেননি। সিরিজের ছয়টি সিজন তৈরি করেছেন ক্রিস্টোফার নোলান। নোলানের ব্যাটম্যান সিরিজের তিনটি চলচ্চিত্র সহ ইনসেপশন ও ডানকার্ক সিনেমায় মারফিকে অভিনয় করার প্রস্তাব দেননি বা সিনেমাগুলোতে মারফি অভিনয় করেননি। নোলানের ওপেনহেইমার চলচ্চিত্রে প্রথমবারের মতো অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন কিলিয়ান মারফি।
অনুসন্ধানের ফল: কিলিয়ান মারফি অভিনিত ড্রামা সিরিজ পিকি ব্লাইন্ডার্স এর এ পর্যন্ত ৬ টি সিজন মুক্তি পেয়েছে। এ ড্রামা সিরিজের পরিচালক ছিলেন যথাক্রমে টম হারপার, অটো বাদার্স্ট, ডেভিড ক্যাফেরি, টিম মিলেন্টস, কম ম্যাক কার্থি, এনথনি বায়ার্ন। এই জুলাই মাসের শেষের দিকে ক্রিস্টোফার নোলান পরিচালিত এবং কিলিয়ান মারফি অভিনীত আসন্ন নতুন চলচ্চিত্র ‘ওপেনহেইমার’ মুক্তি পাবে। এখানে অনুমেয় যে, কিলিয়ান মারফি’র অভিনীত এই সিরিজটির জনপ্রিয়তা এবং ওপেনহাইমারের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন মারফি সেহেতু সিনেমাটি নিয়ে প্রকাশিত সংবাদে পিকি ব্লাইন্ডার্স সিনেমার নাম ভুলক্রমে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও, নোলানের ব্যাটম্যান সিরিজের তিনটি চলচ্চিত্র সহ ইনসেপশন ও ডানকার্ক সিনেমাগুলোতে মারফি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেননি উল্লেখ করতে গিয়ে; নোলানের ব্যাটম্যান সিরিজের তিনটি চলচ্চিত্র সহ ইনসেপশন ও ডানকার্ক সিনেমাগুলোতে মারফি অভিনয় করেননি উল্লেখ করে ফেলেছে দেশীয় গণমাধ্যম “বণিক বার্তা”।
দাবি: গত ১৪ মে ঘূর্ণিঝড় মোখা’র তাণ্ডবে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন ইউনিয়নে দুইজনের মৃত্যুর খবর (কোনো গণমাধ্যমে একজন মৃত্যুর খবর এসেছে) প্রচার।
অনুসন্ধানের ফল: ১৪ মে এর নির্বাচনে এরদোয়ান পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হননি। নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফলে এরদোয়ান ও অন্য প্রার্থীদের কেউই নিয়ম অনুযায়ী ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় ২৮ মে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুসন্ধানের ফল: প্রতিবেদনের ১ থেকে ১৪ সেকেন্ডের ভিডিও ফুটেজটি ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবের ঘটনার দৃশ্য নয় বরং এটি এটি গত এপ্রিল মাসে সোমালিয়াতে হওয়া বন্যার ভিডিও।
দাবি: বাংলাদেশের শেষ আট ওয়ানডে সিরিজ আইসিসির সুপার লিগের অন্তর্ভুক্ত। লিগে মিরাজ সর্বোচ্চ চারবার ম্যাচ সেরা হয়েছেন। তামিম সুপার লিগে একবারও ম্যাচসেরা হননি। লিগের অন্তর্ভুক্ত সিরিজে জিম্বাবুয়ের সাথে ২০২২ সালের সিরিজ হারে বাংলাদেশ।
অনুসন্ধানের ফল: বাংলাদেশের শেষ আট সিরিজের চারটি ছিল সুপার লিগের অংশ। উক্ত আট সিরিজ ধরে সুপার লিগে বাংলাদেশের ম্যান অব দ্য ম্যাচ বিষয়েও ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। মিরাজ নয়, সাকিব সর্বোচ্চ সংখ্যকবার (৪) ম্যাচ সেরা হয়েছেন। তাছাড়া, তামিম জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একবার ম্যাচসেরা হয়েছেন। একইসাথে সুপার লিগ বর্হিভূত জিম্বাবুয়ের সাথে ২০২২ সালের সিরিজ হারের তথ্যকে সুপার লিগের সিরিজ হারের ঘটনা বলে দাবি করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
দাবি: জম্মু ও কাশ্মীরে চেনাব নদীর ওপর ১০৯ ফুট উঁচু রেলসেতুটি আইফেল টাওয়ার থেকে ১০ ফুটের চেয়েও বেশি উচ্চতায় নির্মাণ করা হয়েছে। কতিপয় গণমাধ্যমে রেলসেতুটি আইফেল টাওয়ারের চেয়ে ৩৫ মিটার বা ১১৫ ফুট বেশি উচ্চতায় নির্মাণ করা হয়েছে শীর্ষক দাবিও করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের ফল: ফান্ডিং এবং প্রযুক্তিগত নানা কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই প্রজেক্ট ঘিরে আলোচিত দাবিটি প্রজেক্ট চলাকালীন সময়েই ফিনিশ একটি সংবাদপত্রের এপ্রিল ফুল বিষয়ক সংবাদ (যা কিনা একটি পাঠক কলামের গল্প থেকে নেওয়া) থেকে পরবর্তীতে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে নিশ্চিত করেন প্রজেক্ট প্রধান।
অনুসন্ধানের ফল: যুক্তরাজ্যে চলা এই সিএনজিটির চালক একজন নারী। কোনোরকম তথ্যসূত্র ছাড়াই সিএনজিটি একজন বাংলাদেশির বলে বানোয়াট একটি দাবি প্রচার করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানের ফল: টকশোটি নিয়ে ২০২১ সালের জুন-জুলাই মাসের একটি পুরানো ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নতুন করে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।
দাবি: ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীকে চিনতে পারেননি জো বাইডেন এবং তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে অন্যত্র সরিয়ে দিয়ে শ্বেতাঙ্গ এক ভদ্রলোকের সাথে হ্যান্ডশেক করেছেন।
দাবি: জরিপে দেখা গেছে, তিনি (ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোলু) জেলের বাইরে থাকলে ভালোভাবেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোয়ানকে হারাতে পারতেন। ইমামোলুর অনুপস্থিতিতে সবচেয়ে দুর্বল ভাবমূর্তির নেতা কিলিচদারওলুকে বিরোধীরা সমর্থন দিতে বাধ্য হয়।
অনুসন্ধানের ফল: প্রথম আলোয় ইংরেজি থেকে অনূদিত কলামের তথ্য দাবি করা হলেও মূল ইংরেজি কলামে প্রথম আলোয় প্রকাশিত ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোলুর বিষয়ে তিনি জেলে আছেন এবং তার অনুপস্থিতিতে দুর্বল ভাবমূর্তির নেতা কিলিচদারওলুকে বিরোধীরা সমর্থন দিতে বাধ্য হয় শীর্ষক তথ্যগুলো উল্লেখ নেই। তাছাড়া, নির্বাচনের সময় তিনি কারাবন্দীও ছিলেন না এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অনুপস্থিতও ছিলেন না। প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ইমামোলুর অনীহা থাকলেও তার দলের প্রার্থীর পক্ষে তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন।
অনুসন্ধানের ফল: চাকরিটি সরকারি নয় বরং এটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব সিকিউরড ই-মেইল ফর গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার’ প্রজেক্টে ‘কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট এন্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার’ পদে ছয় মাসের চুক্তিভিত্তিক একটি অস্থায়ী চাকরি।
অনুসন্ধানের ফল: উক্ত মন্তব্যটি চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ইসলাম করেছেন এমন অভিযোগ তুলে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলামের বরাতে সংবাদ প্রকাশ করেছে জাতীয় দৈনিক আজকের পত্রিকা। এবং সেই সংবাদের সত্যতা সম্পর্কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মন্তব্য প্রদান করেছেন সিএমপি কমিশনার।
দাবি: এক তুর্কি নারী তার বক্তব্যে বলেছেন, “আল্লাহর কাছে শুকরিয়া এরদোয়ানের জয় হয়েছে। তিনি যদি পরাজিত হতেন, তাহলে তুর্কিরা নিজস্ব যে সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যকে ধারণ করছে এটা মুছে যেত।”
অনুসন্ধানের ফল: যমুনা টিভিতে তুরস্কের নির্বাচন বিষয়ক ভিডিও প্রতিবেদনে তুরস্কের তিনজন নাগরিকের তুর্কি ভাষায় দেওয়া বক্তব্যের যে বাংলা অনুবাদ প্রচার করা হয়েছে তা সঠিক নয় বরং ভুল এবং অসঙ্গতিতে ভরা বাংলা অনুবাদকে উক্ত তিন ব্যক্তির বক্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের ফল: আন্তোনেল্লা রোকুজ্জো ফেসবুকে মেসিকে বাড়ি ফেরার কথা বলে কোনো পোস্ট দেননি বরং মেসির স্ত্রীর নামে তৈরি একটি ভেরিফাইড ভুয়া ফেসবুক পেজের পোস্টকে কেন্দ্র করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে রোকুজ্জোর কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই।
এছাড়া জাতীয় দৈনিক ‘দৈনিক আমাদের সময়’এর ওয়েবসাইটে একই দাবিতে সংবাদ প্রকাশ করা হলেও গণমাধ্যমটি পরবর্তীতে সংবাদটি সংশোধন করে নেয়। তবে সংশোধন পূর্ববর্তী সংবাদটির আর্কাইভ ভার্সন পাওয়া সম্ভব হয়নি।
অনুসন্ধানের ফল: কোনোপ্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সুইডেন যৌনতাকে খেলা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে শীর্ষক দাবিতে প্রচার করে।
দাবি: সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ব্যক্তির মৃত্যুর খবরে দেড় বছর বয়সী আবদুর রহমান দাবিতে এক শিশুর ছবি প্রচার। কতিপয় গণমাধ্যমে শিশুটির বাবা মাহবুবুরকে জীবিত দাবি।
অনুসন্ধানের ফল: আবদুর রহমানের প্রায় আট বছর বয়সী মেঝো ভাই আবু হুরায়রার ছবিকে আবদুর রহমানের ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় শুধু শিশুটিই নয়, ঘটনাস্থলেই মারা গেছে তার বাবা মাহবুব আলম।
দাবি: ‘রাজধানী ঢাকাকে জঙ্গল মনে হয়। যেখানে-সেখানে অনেক গাছ লাগানো। এগুলো অনেক জায়গা দখল করে আছে। কিন্তু বাতাস পাওয়া যায় কম।‘ শীর্ষক বক্তব্যকে গাছ কাটা নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের বক্তব্য দাবি।
অনুসন্ধানের ফল: ভাইরাল হওয়া বক্তব্যটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের নয় বরং গাছ কাটা সংক্রান্ত বিষয়ে গত ১৩ মে জাতীয় দৈনিক ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি রম্য রচনায় থাকা কল্পিত মেয়রের বক্তব্যকে মেয়র তাপসের আসল বক্তব্য হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানের ফল: ২৫ মে প্রকাশিত উক্ত চিঠিটি আসল বলে চিঠিতে স্বাক্ষরকারী কংগ্রেসম্যান স্কট পেরি’র (PA-10) ডিস্ট্রিক্ট ডিরেক্টর জে ওস্ট্রিচ রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।
অনুসন্ধানের ফল: মেসির স্ত্রীর নামে তৈরি একটি ভেরিফাইড ভুয়া ফেসবুক পেজের পোস্টকে কেন্দ্র করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে রোকুজ্জোর কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই।
দাবি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কুমিল্লা-১১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক আহত হয়েছেন।
অনুসন্ধানের ফল: অন্তত ২০২০ সাল থেকেই একই তথ্য সম্বলিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রতিষ্ঠানটির ওয়েববসাইটে খুঁজে পাওয়া যায়। ইন্টারনেট আর্কাইভ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সর্বশেষ গত ৩০ মেও প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে একই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
অনুসন্ধানের ফল: নেইমারের বাবা নেইমার ডি সিলভা সান্তোসকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ গ্রেফতারের আদেশ দিলেও পরে তা বাতিল করা হয়। তাছাড়া, নেইমার বা তার বাবাকে কোনো জরিমানা করা হয়নি। অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে জরিমানা করা হবে।
দাবি: চলতি বছরের হজে অংশে নেওয়া হাজিদের ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা (৩০ লাখ, ২৫ লাখ, ২০ লাখ, ২৩ লাখ, ১৬ লাখ ৫ হাজার) ও এই হজকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ উল্লেখ করে প্রচার।
অনুসন্ধানের ফল: আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেলের মার্গারেট হ্যালো নামে কোনো গার্লফ্রেন্ড বা বান্ধবী ছিল না এবং টেলিফোন আবিষ্কারের পর তিনি প্রথম শব্দ “হ্যালো” বলেননি বরং গ্রাহামবেলের স্ত্রীর নাম ছিল ম্যাবেল হাববার্ড। এছাড়া ১৮৭৬ সালের ৭ মার্চ বেল যখন প্রথম সফলভাবে টেলিফোনে কল করতে সমর্থ হন, তখন তিনি সর্বপ্রথম কথা বলেছিলেন তার সহযোগী টমাস ওয়াটসনের সঙ্গে। তিনি তাকে বলেছিলেন, “মি. ওয়াটসন, এখানে আসুন। আমি আপনাকে দেখতে চাই।
অনুসন্ধানের ফল: যমুনা টিভি গত ২৩ জুন টাইটানের ধ্বংসাবশেষের দাবিতে যে ছবিটি প্রকাশ করেছে সেটি টাইটান সংশ্লিষ্ট কোনো ছবি ছিল না। তাছাড়া, ছবিটি প্রচারের সময় টাইটানের ধ্বংসাবশেষের কোনো ছবি প্রকাশই করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
অনুসন্ধানের ফল: ভুয়া ঠিকানা ও ফোন নম্বর ব্যবহার করে হংকং থেকে পরিচালিত নামসর্বস্ব একটি কথিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থের বিনিময়ে ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়েছেন রুশো।
অনুসন্ধানের ফল: প্রচারিত ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং পূর্বে পাকিস্তানের বিভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবিকে দেশটির গত জুনের ভারী বর্ষণের ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
ইন্টারনেট এবং সামাজিক মাধ্যমের বিকাশের ফলে ভুল তথ্যের প্রচার সহজ হয়ে উঠেছে। ফলশ্রুতিতে গণমাধ্যমগুলোতেও ভুল সংবাদ প্রকাশিত হতে দেখা যাচ্ছে নিয়মিত। তথ্য যাচাইয়ে যথাযথ গুরুত্ব না দেওয়া, দ্রুত সংবাদ প্রকাশের প্রবণতাসহ নানান কারণে এই ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে বলে লক্ষণীয়। এটি যেমন গণমাধ্যমের নির্ভরযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে তেমনি মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ও অবিশ্বাসের সৃষ্টি করছে। গণমাধ্যমে ভুল তথ্যের প্রচার গণমাধ্যমের ওপর পাঠক ও দর্শকের আস্থাকেও দূর্বল করছে। এজন্য ভুল তথ্য প্রচার কমিয়ে আনতে তথ্য যাচাই প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। প্রযুক্তির অগ্রগতি যেমন ভুল তথ্য প্রচার করাকে আরও সহজ করে তুলেছে, তেমনি তথ্য যাচাই করার প্রক্রিয়াও আরও সহজতর হয়েছে। রিউমর স্ক্যানার টিম বিশ্বাস করে, দর্শক ও পাঠকের কাছে যাচাই সাপেক্ষে সঠিক তথ্য তুলে ধরার মাধ্যমে গণমাধ্যমে ভুল সংবাদ পরিবেশনের প্রবণতা কমিয়ে আনা এবং মানুষের নিকট আস্থার জায়গা হিসেবে গণমাধ্যমের সেই অবস্থান বজায় রাখা সম্ভব।
সম্প্রতি ‘গোপন বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমোদন দিলো পিটার হাস’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস কর্তৃক বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমোদন দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
গত ০৩ আগস্ট Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘গোপন বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমোদন দিলো পিটার হাস’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হয়।
Screenshot: Sabai Sikhi YouTube
২ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে বলা হয়, ‘এবার আওয়ামী লীগের সাথে পিটার হাসের গোপন বৈঠক ফাঁস। আগামী জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নেওয়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানান। যদি আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে না দেওয়া হয় তাহলে কঠোর নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়বে বাংলাদেশ সরকার।’
উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও আলোচিত দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে উল্লিখিত দাবির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি প্রকাশের তারিখে (০৩ আগস্ট) দেশের মূলধারার গণমাধ্যম ডেইলি স্টারের অনলাইন সংস্করণে ‘আ. লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে পিটার হাস’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: The Daily Star
প্রতিবেদনে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তী অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে মূলধারার গণমাধ্যম বিডিনিউজ ২৪ এর ওয়েবসাইটে একই তারিখে (০৩ আগস্ট) ‘নির্বাচন কীভাবে সেটা রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়: পিটার হাস’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: bdnews24.com
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে নির্বাচন দলীয় সরকার না তত্ত্বাবধায়কের অধীনে হবে, প্রধান দুই দলের এই বিরোধের জায়গায় নিজেকে জড়াতে রাজি নন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছেন, “এটা রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়। আমাদের আগ্রহ শুধু সহিংসতামুক্ত, অবাধ, সুষ্ঠু, নির্বাচন।”
মতবিনিময় শেষে পিটার হাস সাংবাদিকদের বলেন, “আওয়ামী লীগের সঙ্গে এ বৈঠক, বাংলাদেশে সব দলের সঙ্গে যে সিরিজ বৈঠক করেছি তারই অংশ। আমি অন্য রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ, পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় করেছি, এটা আমি করেছি আমেরিকান রাষ্ট্রদূত হিসেবে।
“প্রতিটি মিটিংয়ে আমি একই বার্তার পুনরাবৃত্তি করেছি। এটা আমেরিকার পলিসি- আমরা অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সমর্থন করি। কারো দ্বারা কোনো সহিংসতা চাই না।”
তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, অবাধ-সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে প্রত্যেকের ভূমিকা পালন করার আছে। সরকারের ভূমিকা আছে, গণমাধ্যমে ভূমিকা আছে, বিচার বিভাগ, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, নিরাপত্তা বাহিনী; অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রত্যেকেরই ভূমিকা পালন করার আছে।
“আমি আবারও বলছি, যুক্তরাষ্ট্র কোনো নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে না। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করি, যে পদ্ধতিতে বাংলাদেশের জনগণ তাদের পরবর্তী সরকার বেছে নেবে।”
অর্থাৎ, ওই বৈঠকে বা তার আগেপরে আওয়ামী লীগের সাথে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা ক্ষমতা হস্তান্তর সম্পর্কিত কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনাই হয়নি।
পাশাপাশি, ২০১১ সালে বাংলাদেশে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সর্ম্পকিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। পরবর্তীতে এই ব্যবস্থা আর পূর্ণবহাল করা হয়নি।
তাছাড়া, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, জাতীয় সংসদে বিল পাশ হওয়ার পূর্বে এধরণের বিষয়ে কোনো ব্যক্তির হস্তক্ষেপেরও সুযোগ নেই। এছাড়াও বিদেশি কোনো রাষ্ট্রদূতের পক্ষে বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অনুমোদন দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত দাবিটি সঠিক নয়।
মূলত, সম্প্রতি ‘গোপন বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমোদন দিলো পিটার হাস’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানের প্রেক্ষিতে দেখা যায়, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রের উল্লেখ নেই এবং আলোচিত দাবিগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস কর্তৃক বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমোদন দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কোনভাবেই বিদেশি কোনো রাষ্ট্রদূতের পক্ষে এমন কাজ করার সুযোগও নেই।
উল্লেখ্য, পূর্বেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে ইন্টারনেটে একাধিক ভুয়া তথ্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমোদন দিয়েছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার ভারী বর্ষণ ও বন্যার ঘটনার নয় বরং পূর্বের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবিকে দক্ষিণ কোরিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
ছবি যাচাই- ১
এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নয়া দিগন্ত।
কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।
ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে কোরিয়া ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা YONHAPNEWS এর একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Yonhapnews
ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ৮ আগস্ট ছবিটি ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়।
ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে কোরিয়া ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম News1 এর ওয়েবসাইটে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: News1
ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, ২০২০ সালের ৮ আগস্ট ছবিটি প্রকাশিত হয় যা সেসময় সানমাক-ডং, গুয়াংসান-গু, গুয়াংজু এর কাছে ১১৯ জন উদ্ধারকর্মীর নৌকা ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার করার দৃশ্য।
ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ব্রিটিশ গণমাধ্যম BBC এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ৫ আগস্ট “South Korea battles deadly floods and landslides” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: BBC
ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, মধ্য দক্ষিণ কোরিয়ার ডেজিওনে প্রবল বর্ষণে অনেক বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পানির নিচে চলে গেছে।
অর্থাৎ, এই ছবিটিও সাম্প্রতিক সময়ের নয়।
ছবি যাচাই- ৭
এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আলোকিত বাংলাদেশ।
ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, দক্ষিণ চুংচেং প্রদেশের চেওনানে ৩ তারিখে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে নাগরিকরা তাদের গাড়ি পানিতে ফেলে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে পড়ে।
অর্থাৎ, ছবিটি অন্তত তিন বছরের পুরোনো।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি বরং কিছু গণমাধ্যম ছবিগুলো সংগৃহীত এবং কোনো কোনো গণমাধ্যম ছবির ক্যাপশনে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিগুলো ব্যবহার করে সংগৃহীত উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্য উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই ছবিগুলো দক্ষিণ কোরিয়ার সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণ ও বন্যার ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া অমূলক নয়।
মূলত, গত জুলাইতে দক্ষিণ কোরিয়ায় ভারী বর্ষণ ও বন্যায় ঘটনায় দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দক্ষিণ কোরিয়ার ঘটনার দাবিতে সাতটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবিগুলো উক্ত ঘটনার নয়। ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ছবিকে দক্ষিণ কোরিয়ার সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণ ও বন্যার ঘটনার খবরে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্যও দেওয়া হয়নি। এতে করে স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো দক্ষিণ কোরিয়ার সাম্প্রতিক বন্যার ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে।
সুতরাং, দক্ষিণ কোরিয়ার ভারী বর্ষণ ও বন্যার ঘটনায় বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একাধিক পুরোনো ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি ‘বিএনপিকে আবারো সন্ত্রাসী সংগঠন বললো কানাডার আদালত’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যম সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে
ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন সংবাদ প্রতিদিন।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপিকে কানাডার ফেডারেল কোর্ট কর্তৃক এবারও সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যায়িত করার দাবিটি সঠিক নয় বরং দেশটির উক্ত কোর্ট গত ১৫ জুন দেওয়া রায়ে বিএনপি’র সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য কোনো ভিত্তি খুঁজে না পাওয়ার কথা জানিয়েছে।
এই আবেদনটি করেছিলেন মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হক নামে এক ব্যক্তি, যিনি ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপির একজন কর্মী ছিলেন। বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার জন্য এই আবেদনে মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হক ২০২২ সালের ১০ জুন কানাডার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ডের ইমিগ্রেশন ডিভিশন (আইডি)’র দেওয়া একটি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য আদালতকে অনুরোধ করেন।
ইমিগ্রেশন ডিভিশন (আইডি)’র সিদ্ধান্তটি কি ছিল?
কানাডার ইমিগ্রেশন ডিভিশন (আইডি) আবেদনকারী অর্থাৎ মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হক কানাডায় নিরাপত্তাজনিত কারণে দেশটির দ্যা ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রটেকশন অ্যাক্টের ধারা ৩৪(১)(এফ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়ার যোগ্য নয় বলে জানায়।
Screenshot: Haque v. Canada (Public Safety and Emergency Preparedness)
আইডির সিদ্ধান্তে উপধারাটি আরও নির্দিষ্ট করে দিয়ে বলা হয়, মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হক এমন একটি সংগঠনের সদস্য, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রটেকশন অ্যাক্টের ধারা ৩৪(১) (বি) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যেই সংগঠনের বিরুদ্ধে সরকারকে বলপ্রয়োগ করে উৎখাতের চেষ্টা করার বা এর সাথে জড়িত থাকার মতো ব্যাপারে যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে।
আইডির সিদ্ধান্তে আরও বলা হয়, মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হক ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র কর্মী ছিলেন। আইডি এই সময়ে এমন কিছু যুক্তিসঙ্গত কারণ খুঁজে পেয়েছে, যার মাধ্যমে প্রতীয়মান হয় যে, বিএনপি এমন একটি সংগঠন, যারা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারকে বলপ্রয়োগ করে উৎখাতের চেষ্টা করার বা এই চেষ্টার সাথে জড়িত ছিল।
Screenshot: Haque v. Canada (Public Safety and Emergency Preparedness)
তবে আইডি বিএনপি সন্ত্রাসবাদে লিপ্ত সংগঠন বলে বিশ্বাস করার মতো যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ খুঁজে পায়নি।
এছাড়া কানাডার PUBLIC SAFETY AND EMERGENCY PREPAREDNESS মন্ত্রণালয়ের মিনিস্টারও আইডির সিদ্ধান্ত তথা ‘আবেদনকারী সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নন’ বিষয়টির সাথে দ্বিমত পোষণ করেননি, অর্থাৎ একমত পোষণ করেছেন।
Screenshot: Haque v. Canada (Public Safety and Emergency Preparedness)
উপরের এই অংশ থেকে আরও বোঝা যায়, আবেদনকারী এমন কোনো সংগঠনের সদস্য ছিলেন না যা অনুচ্ছেদ 34(1)(f) এবং (c) এর অধীনে সন্ত্রাসবাদে জড়িত বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। অর্থাৎ 34(1)(f) এর অধীনে থাকা সন্ত্রাসবাদ তথা c এর সন্ত্রাসবাদের সাথে আবেদনকারীর সংগঠনকে বিবেচনা করা হয়নি।
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, কানাডার ইমিগ্রেশন ডিভিশন (আইডি) দেশটির দ্যা ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রটেকশন অ্যাক্টের ধারা ৩৪(১)(এফ), [নির্দিষ্ট করে (বি)] অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিএনপির একজন কর্মীকে দেশটিতে থাকার অনুমতি দেয়নি। কারণ, উল্লেখিত আইনের ৩৪(১) (বি) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিএনপির বিরুদ্ধে সরকারকে বলপ্রয়োগ করে উৎখাতের চেষ্টা করার বা এর সাথে জড়িত থাকার মতো ব্যাপারে যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। তবে আইডি বিএনপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ বা সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার ব্যাপারে যথাযথ কোনো ভিত্তি খুঁজে পায়নি। ফলে এটি প্রতীয়মান হয় যে, বিএনপিকে কানাডার আদালত এই রায়ে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেনি।
কানাডার যে আইন নিয়ে এত আলোচনা, চলুন দেখে আসি সেই আইনে কি আছে
দ্যা ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রটেকশন অ্যাক্ট (আইআরপিএ) কানাডার অভিবাসন সংক্রান্ত একটি আইন, যার উদ্দেশ্য বাস্তুচ্যুত, নির্যাতিত বা বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিদের শরনার্থী বিষয়ক সুরক্ষা প্রদান।
Screenshot: Justice Laws Website
এই আইনের ৩৪ ধারা অনুযায়ী, কোনো অভিবাসী বা বিদেশী নাগরিক নিরাপত্তার কারণে দেশটিতে অগ্রহণযোগ্য হবেন যদি তিনি
এ. গুপ্তচরবৃত্তির কাজে জড়িত হন যা কানাডার বিরুদ্ধে বা কানাডার স্বার্থের পরিপন্থী
বি. যে কোন সরকারকে বলপ্রয়োগ করে উৎখাতের চেষ্টা করেন, এর সাথে জড়িত থাকেন বা কাউকে প্ররোচিত করেন
বি (১). কোনো গণতান্ত্রিক সরকার, প্রতিষ্ঠান বা প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে জড়িত হন
(সি) সন্ত্রাসে জড়িত হন
(ডি) কানাডার নিরাপত্তার জন্য বিপদ হিসেবে প্রতীয়মান হন
(ই) সহিংসতায় জড়িত হন যা কানাডার নাগরিকদের জীবন বা নিরাপত্তাকে বিপন্ন করতে পারে বা হতে পারে
(এফ) এমন কোনো সংগঠনের সদস্য হন, যে সংগঠনটি অনুচ্ছেদ (এ), (বি), (বি ১) কিংবা (সি) তে উল্লেখিত কাজগুলোতে জড়িত, বর্তমানে নিযুক্ত বা ভবিষ্যতে নিযুক্ত হবে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে৷
কানাডার কোনো অভিবাসী বা বিদেশী নাগরিক উপরিউক্ত বিষয়গুলোর কোনোটির সাথে সম্পৃক্ত হলে তিনি দেশটিতে থাকার জন্য অনুমতি পান না।
সম্প্রতি এই আইনের যে ধারায় মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হককে কানাডায় থাকার বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হয়নি তার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের সংশ্লিষ্টতা নেই। এই আইন অনুযায়ী, সন্ত্রাসবাদের ধারাটি হচ্ছে ৩৪(১) (সি), অপরদিকে মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হককে যে ধারায় দেশটিতে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি সেটি নির্দিষ্ট করে ৩৪(১) (বি) বা ৩৪(১) (এফ) এর অন্তর্ভুক্ত (বি)। অর্থাৎ এই পর্যালোচনায় আবেদনকারীর আশ্রয় আবেদন নাকচ করার পিছনে (সি) তথা সন্ত্রাসবাদ উল্লেখ নেই। এদিকে পূর্বের একাধিক ঘটনায় যখন ‘বিএনপি সন্ত্রাসবাদে যুক্ত’ এই যুক্তিসঙ্গত বিশ্বাসের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল, তখন সেখানে সরাসরি (সি) উপধারার উল্লেখ দেখা গেছে৷ এক্ষেত্রে জিপসেদ ইবনে হকের ঘটনায় সি উপধারাটি (সন্ত্রাসে জড়িত হওয়া) উল্লেখ করা হয়নি।
Screenshot: Haque v. Canada (Public Safety and Emergency Preparedness
এছাড়াও এই বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনাটি মূলত হয়েছে অনুচ্ছেদ 34(1)(b) তথা বল প্রয়োগ করে সরকার উৎখাতের উদ্দেশ্য থাকা না থাকার বিষয়ে। বিএনপি বলপ্রয়োগ করে সরকার উৎখাতের চেষ্টা করেছে বা প্ররোচিত করেছে আইডি এটি বিশ্বাসের যুক্তিসঙ্গত কারণ খুঁজে পেয়েছিল। অপরদিকে আবেদনকারী যুক্তি দেখিয়ে বিএনপি সরকার উৎখাতের চেষ্টা করছে এমন কোনো প্রমাণ না থাকার দাবি করে তাদের হরতাল, আন্দোলন সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে ছিল বলে যুক্তি উপস্থাপন করে। তবে শেষ পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনায় আদালত আইডির সিদ্ধান্তের বিপক্ষে প্রমাণযোগ্য কোনো ক্রটি পায়নি এবং আবেদনকারীর আবেদন নাকচ করে এটি খারিজ করে দেয়।
Screenshot: Haque v. Canada (Public Safety and Emergency Preparedness
অর্থাৎ মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হক বা বিএনপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের কোনো বিষয় উত্থাপন করা হয়নি। বরং তার রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার আবেদন বলপ্রয়োগ সরকার উৎখাতের চেষ্টা বা প্ররোচনা উপধারায় নাকচ করা হয়।
তবে এই আইনের অধীনেই একাধিকবার কানাডা বিএনপিকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ বলেছে
সাম্প্রতিক ঘটনায় এই আইনের অধীনে কানাডার আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন না বললেও ইতোপূর্বে চারবার এই আইনের অধীনেই দলটির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি আনা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এই সংক্রান্ত প্রথম ঘটনাটি পাওয়া যায় ২০১৭ সালে। সে বছরের ২৫ জানুয়ারি দেশটির ফেডারেল কোর্টের ‘Gazi v. Canada (Citizenship and Immigration)‘ শীর্ষক একটি বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনায় মুহাম্মদ জুয়েল হোসেন গাজী নামে এক বিএনপি কর্মীর আইআরপিএ’র ৩৪(১)(এফ) [সংগঠনের সদস্য] ও ৩৪(১) (সি) [সন্ত্রাসমূলক কার্যক্রম] এর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাওয়ায় অভিবাসী হওয়ার আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয়।
Screenshot: Gazi v. Canada (Citizenship and Immigration)
এই সংক্রান্ত দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঘটনাটি খুঁজে পাওয়া ২০১৮ সালের মে ও অক্টোবর মাসে।
২০১৮ সালের ৪ মে দেশটির ফেডারেল কোর্টের ‘Kamal v. Canada (Immigration, Refugees and Citizenship)‘ শীর্ষক একটি বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনায় বিএনপির সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ও সরকারকে বলপ্রয়োগ করে উৎখাতের চেষ্টা ও এর সাথে জড়িত থাকার কারণ দেখিয়ে মুহাম্মদ মুস্তফা কামাল নামে এক বিএনপি কর্মীর শরণার্থী হওয়ার আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রেও আইআরপিএ’র ৩৪(১)(সি) ও ৩৪(১) (বি) কে মানদণ্ড ধরা হয়।
Screenshot: Kamal v. Canada (Immigration, Refugees and Citizenship)
অনুরূপভাবে একই বছরের ২৯ অক্টোবর ‘Rana v. Canada (Public Safety and Emergency Preparedness)’ শীর্ষক আরেকটি বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনায় মাসুদ রানা নামে এক বিএনপি কর্মীর শরনার্থী হওয়ার আবেদন আইআরপিএ’র ৩৪(১)(এফ) [এমন কোনো সংগঠনের সদস্য হন, যে সংগঠনটি অনুচ্ছেদ (এ), (বি), (বি ১) বা (সি) তে উল্লেখিত কাজগুলোতে জড়িত, বর্তমানে নিযুক্ত বা ভবিষ্যতে নিযুক্ত হবে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে৷], ৩৪(১)(সি) [সন্ত্রাসে জড়িত হওয়া], ৩৪(১) (বি) [যে কোন সরকারকে বলপ্রয়োগ করে উৎখাতের চেষ্টা, এর সাথে জড়িত থাকা বা কাউকে প্ররোচিত করা], ও ৩৪(১) (বি.১) [কোনো গণতান্ত্রিক সরকার, প্রতিষ্ঠান বা প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে জড়িত হওয়া] অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যাখ্যান করা হয়।
Screenshot: Rana v. Canada (Public Safety and Emergency Preparedness)
এছাড়া ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর ‘Badsha v. Canada (Citizenship and Immigration)’ শীর্ষক আরেকটি বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনায় সেলিম বাদশা নামে বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এক কর্মীর আবেদনও প্রত্যাখ্যান করা হয় আইআরপিএ’র ৩৪(১)(এফ) ও ৩৪(১)(সি) এর অধীনে।
Screenshot: Badsha v. Canada (Citizenship and Immigration)
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, কানাডায় আশ্রয় গ্রহণের উদ্দেশ্যে করা উপরিউক্ত আবেদনগুলো প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিটিতেই কারণ হিসেবে আইআরপিএ’র ধারা ৩৪ (১) (সি) অনুচ্ছেদের বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। যা সম্প্রতি আলোচিত মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হকের আবেদনের পর্যালোচনায় উল্লেখ নেই। এখান থেকেও প্রতীয়মান হয় যে, কানাডার ফেডারেল আদালত এবার বা পঞ্চমবার বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেনি।
মূলত, চলতি বছরের গত ১৫ জুন কানাডার ফেডারেল আদালত মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হক নামে এক বিএনপি কর্মীর কানাডায় আশ্রয় গ্রহণের আবেদন বাতিল করে দেয়। সেই বাতিলের রায়ে উল্লেখ করা হয়, মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হক কানাডায় নিরাপত্তাজনিত কারণে দেশটির দ্যা ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রটেকশন অ্যাক্টের ধারা ৩৪(১)(এফ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়ার যোগ্য নয়। কারণ, মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হক বিএনপির কর্মী এবং ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রটেকশন অ্যাক্টের ধারা ৩৪(১) (বি) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিএনপির বিরুদ্ধে সরকারকে বলপ্রয়োগ করে উৎখাতের চেষ্টা করার বা এর সাথে জড়িত থাকার মতো ব্যাপারে যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। এই রায়ে বিএনপির সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, রায়ের এই বিষয়টিকেই ভিত্তিহীনভাবে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বিএনপিকে কানাডার আদালত কর্তৃক ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং, বিএনপিকে কানাডার আদালতে পঞ্চমবারের মতো সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যায়িত করার দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।