দৃষ্টিবিভ্রম সৃষ্টিকারী এই ছবিটি জাপানি স্নায়ুবিজ্ঞানী তৈরি করেননি

সম্প্রতি, “এই ছবিটি একজন Japanese neuroscientist (স্নায়ুবিজ্ঞানী) তৈরি করেছেন” শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

Screenshot from CrowdTangle

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

সামাজিক মাধ্যম ইউটিউবে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে
ভিডিওগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে
ভিডিওটির আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে

যা দাবি করা হচ্ছে

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে যে,

“এই ছবিটি একজন Japanese neuroscientist (স্নায়ুবিজ্ঞানী) তৈরি করেছেন। যদি ছবি না নড়ে, আপনি শান্ত। যদি এটা ধীরে ধীরে চলে, আপনি একটু চাপে আছেন। যদি এটা দ্রুত চলে যায়, আপনি খুব ক্লান্ত।”

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়,দৃষ্টিবিভ্রম সৃষ্টিকারী আলোচিত ছবিটি জাপানের স্নায়ুবিজ্ঞানী কর্তৃক তৈরিকৃত নয় বরং এটি একটি ডিজিটাল আর্টওয়ার্ক।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ‘yuryfrom’ নামের একটি ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তারিখে “Optical illusion illustration. Flaming tornado with a ball” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Instagram

পরবর্তীতে, ডিজিটাল আর্টিস্ট ও ছবিটির নির্মাতা ‘Yurii Perepadia’ কর্তৃক প্রকাশিত ইন্সটাগ্রামে ছবির বিবরণীমূলক একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Instagram

ছবিটির নির্মাতা Yurii Perepadia তার পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘তিনি ২০১৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারিখে ফটোশপ সফটওয়্যার ‘Adobe Illustrator’ এর সাহায্যে ছবিটি তৈরি করেন। এতে তিনি আকিয়োশি কিতাওকার একটি ইফেক্ট ব্যবহার করেন, যাতে একজন ব্যক্তির কাছে মনে হতে পারে চিত্রকর্মটি চলমান অবস্থায় আছে। বস্তুত, এই ছবির সঙ্গে জাপানি কোনো সাইকোথেরাপিস্টের (ইয়ামামোতো হাশিমা) কোনো সম্পর্ক নেই।’

অর্থাৎ, ছবিটির নির্মাতা নিজেই নিশ্চিত করেছেন যে আলোচিত ছবিটির সঙ্গে প্রকৃতপক্ষে জাপানের কোনো সাইকোথেরাপিস্ট অথবা স্নায়ুবিজ্ঞানীর কোনো সম্পর্ক নেই। এছাড়া, বিবিসিতে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে Yurii Perepadia বলেন, কেউ কতটুকু চাপ অনুভব করছে, তার পরিমাপের ক্ষেত্রে এই ছবির সাথে কোনো সম্পর্ক নেই।  

মূলত, Yurii Perepadia একজন ডিজিটাল আর্টওয়ার্ক শিল্পী। তিনি Adobe Illustrator ফটোশপ সফটওয়্যার প্রযুক্তির মাধ্যমে উক্ত ডিজিটাল ছবিটি তৈরি করেছিলেন। পরবর্তীতে, তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে ডিজিটাল আর্টওয়ার্কটি প্রকাশ করেন। অর্থাৎ, ডিজিটাল আর্টিস্ট Yurii Perepadia এর আর্টওয়ার্কটিকে সাম্প্রতিক সময়ে জাপানের স্নায়ুবিজ্ঞানী কর্তৃক তৈরি করা ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বে একই ছবি ব্যবহার করে ইয়ামামোতো হাশিমা নামক জাপানি সাইকোথেরাপিস্ট এটি তৈরি করেছেন শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘Reuters’ এর ফ্যাক্টচেক বিভাগ বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রসঙ্গত, ডিজিটাল আর্টিস্টের তৈরি করা ডিজিটাল আর্টওয়ার্ককে বাস্তব ছবি দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত তথ্য নিয়ে পূর্বেও বিস্তারিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Screenshot from Rumor Scanner website

সুতরাং, Yurii Perepadia নামক একজন ডিজিটাল শিল্পীর তৈরি করা দৃষ্টিবিভ্রম সৃষ্টিকারী একটি ডিজিটাল আর্টওয়ার্ককে জাপানের নিউরোসাইন্টিস্টের তৈরি করা ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img