সম্প্রতি, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবারো বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনীর ৯২ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) জারি করেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অপকর্মের কারণে এ স্যাংশন জারি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ঢাকার গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক কর্মকর্তা স্যাংশনের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, স্যাংশন প্রাপ্ত সবাই ইতিমধ্যে জেনে গেছেন তাদের বিরুদ্ধে স্যাংশন জারি করা হয়েছে।” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখান, এখানে এবং এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে উক্ত তথ্যটির সত্যতা পাওয়া যায়নি বরং কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই অনুমাননির্ভর হয়ে উক্ত সংবাদটি প্রচার করা হচ্ছে।
গুজবের সূত্রপাত
আলোচিত দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ফেসবুকের নিজস্ব মনিটরিং টুলস এর সহায়তায়, ‘London Bangla Channel’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ২৬ নভেম্বর শনিবার সকাল ৭:২৮ মিনিটে “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবারো বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনীর ৯২ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) জারি করেছে” শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

এছাড়া বিস্তর অনুসন্ধানের মাধ্যমে ফেসবুকে ‘Abdur Rab Bhuttow’ নামের একটি ফেসবুক একাউন্টে একই তারিখে অর্থাৎ ২৬ নভেম্বর শনিবার সকাল ৭:২১ মিনিটে একই শিরোনাম এবং ছবি সম্বলিত পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে, ‘London Bangla Channel’ এর সম্পাদক খ্যাত ‘Abdur Rab Bhuttow’ এর ফেসবুক একাউন্টে আলোচিত পোস্টটির প্রায় ৫ ঘন্টা পূর্বে “লে: জেনারেল এসএম মতিউর রহমান,পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজিপি শাহাবুদ্দিন খান, মেজর জেনারেল হাসনাত সহ ৯২ জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র” শীর্ষক শিরোনামে একই তথ্য সম্বলিত আরেকটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

মূলত, কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবারো বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনীর ৯২ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) জারি করেছে।” শীর্ষক দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের ওয়েবসাইট (U.S. DEPARTMENT OF THE TREASURY), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ওয়েবসাইট (USA gov) এবং বাংলাদেশস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এর ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে এ ধরণের নিষেধাজ্ঞা বা তথ্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ‘London Bangla Channel’ নামক ফেসবুক পেজে ইতিপূর্বেও বেশ কয়েকটি মিথ্যা এবং গুজব পোস্টের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। যেগুলো নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।
ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন গুলো দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবারো বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনীর ৯২ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) জারি করেছে” শীর্ষক উক্ত দাবিটির কোনো ভিত্তি নেই, বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s Own Analysis.