Home Blog Page 579

হামাস আতঙ্কে ইসরায়েলিদের দেশ ত্যাগের দাবিটি সঠিক নয়

সম্প্রতি, ‘ইসরায়েলে ফিলিস্তিনিদের হামলার মুখে দেশ ছাড়ছেন দেশটির নাগরিকেরা’ শীর্ষক একটি দাবি এবং এ সংক্রান্ত সংবাদে একটি ছবি দেশীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রচার করা হয়েছে।

হামাস আতঙ্কে দেশ ছাড়তে বিমানবন্দরে ইসরায়েলিদের উপচেপড়া ভিড় এবং দেশটির বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর দিয়ে একদিনে ৬০ হাজার ইসরায়েলি নাগরিক দেশ ছেড়েছেন দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন যুগান্তর, আপনজন পত্রিকা, খবর সংযোগ, প্রতিদিনের সংবাদ, নিউজ২৪, বাংলা ইনসাইডার, বাংলা ভিশন, সময় টিভি, বৈশাখী টিভি, ভোরের কাগজ, এশিয়ান টিভি, বাংলা২৪লাইভ নিউজপেপার, গ্লোবাল টিভি, দি ঢাকা টাইমস, এটিএন বাংলা (ইউটিউব), চ্যানেল২৪ (ইউটিউব)।

উক্ত ছবি ব্যবহার করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন কালবেলা, ডিবিসি নিউজ, মানবকণ্ঠ, বার্তা২৪, জাগোনিউজ২৪, সংবাদ প্রকাশ, আজকের পত্রিকা, বিডি২৪রিপোর্ট, পিবিএ এজেন্সি, ডেইলি বাংলাদেশ

উক্ত দাবিগুলোতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাতে হামাস আতঙ্কে ইসরায়েলিদের দেশ ত্যাগের দাবিটি সঠিক নয় বরং ইসরায়েলি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের তথ্যকে ভুলভাবে অনুবাদ করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, এই সংবাদে কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবিটিও ছয় মাসের বেশি সময় পূর্বের।

হামাস আতঙ্কে ইসরায়েলিরা কি দেশ ছাড়ছেন?

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে দেশীয় গণমাধ্যমের সংবাদের সূত্রগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কালবেলা, ভোরের কাগজ সহ একাধিক গণমাধ্যম এ সংক্রান্ত দাবির সূত্র হিসেবে ইসরায়েলের দুই সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল ও গ্লোবসের প্রতিবেদনের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। কতিপয় গণমাধ্যম কোনো সূত্রই উল্লেখ করেনি। 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে গত ০৮ অক্টোবর প্রকাশিত গ্লোবসের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদেশি বিমান সংস্থাগুলো বীমা কভারেজ সমস্যার কারণে ফ্লাইট বাতিল করছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি বিমান সংস্থাগুলো ইসরায়েলিদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ফ্লাইট যুক্ত করেছে। হামাসের দ্বারা ইসরায়েলে আশ্চর্যজনক আক্রমণ বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে আগমন এবং প্রস্থানের উপর প্রভাব ফেলেছে, যদিও ইসরায়েল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে যে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর এবং ইলাতের কাছে র্যামন বিমানবন্দর উভয়ই অভ্যন্তরীণ এবং বহির্মুখী উভয় ফ্লাইটের জন্য উন্মুক্ত এবং পরিচালনা করছে।”

প্রতিবেদনে স্পষ্ট করেই বলা হয়, “বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের এক নং টার্মিনালটি সাময়িকভাবে বন্ধ থাকলেও তিন নং টার্মিনাল চালু রয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, ৬০ হাজার যাত্রী সেদিন (০৮ অক্টোবর) বেন গুরিয়ন দিয়ে অতিক্রম করেছেন, যাদের মধ্যে অনেক ইসরায়েলি নাগরিক রয়েছেন, যারা বিদেশে ছুটি কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন এবং বিদেশে অবস্থানরত (ইসরায়েলি) সৈন্যরা তাদের অবস্থানের সময় কমিয়ে দেশে ফিরছেন নিজ নিজ ইউনিটের সাথে যোগ দেওয়ার জন্য।”

Screenshot: Globes

অর্থাৎ, গ্লোবসের প্রতিবেদনে ৬০ হাজার যাত্রীর যে ইসরায়েলি নাগরিক এবং এরা সকলেই দেশ ত্যাগ করেছেন শীর্ষক কোনো তথ্য উল্লেখ নেই, বরং উল্টো অর্থই দাঁড়াচ্ছে।

একইদিন প্রকাশিত টাইমস অফ ইসরায়েলের এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, ফ্লাইট বাতিল হওয়ার কারণে ইসরায়েলে ঘুরতে আসা পর্যটকরা বিমানবন্দরে আটকা পড়েছেন এবং বিদেশে অবস্থানরত ইসরায়েলিরা দেশে ফিরতে বিভিন্ন বিমানবন্দরে জড়ো হচ্ছে।

Screenshot: Times of Israel

অর্থাৎ, এই প্রতিবেদনে ইসরায়েলিদের দেশ ত্যাগ বিষয়ক কোনো তথ্য নেই। 

পরবর্তীতে মধ্যপ্রাচ্যসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের (, , ) এ সংক্রান্ত সংবাদগুলো বিশ্লেষণ করে উক্ত দাবিগুলোর পক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

প্রচারিত ছবিটি কি সাম্প্রতিক সময়ের?

আলোচিত সংবাদটিতে কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ইসরায়েলি গণমাধ্যম ‘Globes’ এর ওয়েবসাইটে গত ২৭ মার্চ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন (২৭ মার্চ) ক্ষমতাসীনদের বিচার পদ্ধতির সংশোধন এবং প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ওয়াভ গালান্তকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের শ্রমিক ইউনিয়ন সংগঠন হিস্টাড্রুট এরর প্রধান আর্নন বার ডেভিড জাতীয় নিরাপত্তার প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে একটি সাধারণ ধর্মঘট ঘোষণা করেন। যার কারণে ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবের বিমান বন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকে এবং যাত্রীরা বিমান বন্দরেই অপেক্ষা করতে থাকেন। উক্ত ঘটনারই ছবি এটি। 

অর্থাৎ, ছবিটি ছয় মাসের বেশি সময় পূর্বের।

মূলত, সম্প্রতি ‘ইসরায়েলে ফিলিস্তিনিদের হামলার মুখে দেশ ছাড়ছেন দেশটির নাগরিকেরা’ শীর্ষক একটি দাবি এবং এ সংক্রান্ত সংবাদে একটি ছবি দেশীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ইসরায়েলি গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, ইসরায়েলগামী বিভিন্ন দেশের একাধিক ফ্লাইট বাতিল হয়ে যাওয়ায় বিদেশে আটকে পড়া ইসরায়েলিরা দেশে ফিরতে না পারায় ইসরায়েলের এয়ারলাইন্সগুলো নতুন ফ্লাইট সংযুক্ত করে  ইসরায়েলিদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে। তাছাড়া, ইসরায়েলের বিমানবন্দরে যারা জড়ো হয়েছেন, এদের অনেকেই পর্যটক হিসেবে দেশে এসেছিলেন এবং ০৮ অক্টোবর একদিনেই এক বিমানবন্দর দিয়েই অন্তত ৬০ হাজার যাত্রী আসা যাওয়া করেছেন বলে অনুমান করেছে গ্লোবস নামে দেশটির একটি গণমাধ্যম। এই তথ্যকেই ভুলভাবে অনুবাদ করে দেশীয় গণমাধ্যমে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, এই সংবাদে কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবিটিও ছয় মাসের বেশি সময় পূর্বের।

প্রসঙ্গত, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷ 

সুতরাং, হামাস আতঙ্কে ইসরায়েলিদের দেশ ত্যাগের দাবিটি বিভ্রান্তিকর এবং এই সংবাদে কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবিটিও ছয় মাসের বেশি সময় পূর্বের।

তথ্যসূত্র

হালনাগাদ/ Update

১০ অক্টোবর, ২০২৩ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়েও এ সংক্রান্ত আরো একটি দাবি আমাদের নজরে আসায় সেটির বিষয়েও অনুসন্ধানের ফলাফল প্রতিবেদনে সংযোজন করা হলো।

আল আকসার গত এপ্রিলের ভিডিও সাম্প্রতিক সময়ে ভিন্ন দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল সংঘাত ইস্যুতে ‘আল আকসা মসজিদ দখলে নিয়েছে ফিলিস্তিনিরা’ শীর্ষক শিরোনামে আল -আকসা প্রাঙ্গণে সোনালী গম্বুজবিশিষ্ট ‘ডোম অফ দ্য রক’ এর একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে, যেখানে সমবেত জনতাকে লাব্বাইক আল আকসা লাব্বাইক ধ্বনি উচ্চারণ করতে শোনা যাচ্ছে। 

আল আকসার

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷ 

একই দাবিতে ইউটিউবের কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আল আকসা মসজিদ দখলে নিয়েছে ফিলিস্তিনিরা শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং গত এপ্রিলে লাইলাতুল কদরের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে ভিন্ন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটির ফ্রেমের উপরের দিকে fwaz tobasy নামক দুইটি ইংরেজি শব্দ দেখা যাচ্ছে।

 Screenshot: Facebook 

এই তথ্যের সূত্র ধরে ফেসবুকে একই নামে একটি অ্যাকাউন্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ফাওয়াজ তোবাসির এই অ্যাকাউন্টেই গত ১৮ এপ্রিল ভোর ৩ টা ১৬ মিনিটে প্রকাশিত আলোচিত ভিডিওটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

কিন্তু এই ভিডিওতে লাব্বাইক আল আকসা লাব্বাইক ধ্বনি উচ্চারণ শোনা যায়নি। 

অর্থাৎ, উক্ত ধ্বনি সম্বলিত অডিও যুক্ত করে সাম্প্রতিক দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছে। 

একইদিন ভোর ৩ টা ২৪ মিনিটে আল আকসা প্রাঙ্গণের রাতের দৃশ্যের একটি ভিডিও-ও (আর্কাইভ) আপলোড করেন তিনি। 

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে একই দিনের আরো কিছু ছবি এবং ভিডিও (আর্কাইভ) প্রকাশ করেন ফাওয়াজ। 

Screenshot: Facebook 

অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার টিম দেখেছে, ১৭ এপ্রিল ফিলিস্তিনে লাইলাতুল কদর পালিত হয়। কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এ সংক্রান্ত একটি সংবাদেও আল আকসা প্রাঙ্গণের প্রায় একইরকম দৃশ্য দেখা যায়। 

Screenshot: Al Jazeera 

এ থেকে প্রতীয়মান হয়, ফাওয়াজ তোবাসি কর্তৃক প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওগুলো ১৭ এপ্রিল ধারণ করা হয়েছে। 

তাছাড়া, ছড়িয়ে পড়া দাবিগুলোতে বলা হচ্ছে, আল আকসা মসজিদ দখলে নিয়েছে ফিলিস্তিনিরা। কিন্তু অনুসন্ধানে আমরা দেখেছি, আল-আকসার বিস্তীর্ণ প্রাঙ্গণ ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে জেরুজালেম ও পশ্চিমতীর দখল করে নেবার আগে নিয়ন্ত্রণ করতো জর্ডান। এখন পূর্ব জেরুজালেম ইসরায়েল অধিকৃত হলেও আল-আকসা বা টেম্পল মাউন্ট এলাকাটি নিয়ন্ত্রণ বা পরিচালনা করে জর্ডান-ফিলিস্তিনের একটি ওয়াকফ প্রতিষ্ঠান। তবে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী এই প্রাঙ্গণের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে থাকে। 

মূলত, সম্প্রতি চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল সংঘাত ইস্যুতে আল আকসা মসজিদ দখলে নিয়েছে ফিলিস্তিনিরা শীর্ষক শিরোনামে আল -আকসা প্রাঙ্গণে সোনালী গম্বুজবিশিষ্ট ‘ডোম অফ দ্য রক’ এর একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে, যেখানে সমবেত জনতাকে লাব্বাইক আল আকসা লাব্বাইক ধ্বনি উচ্চারণ করতে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই ভিডিওটি প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস পূর্বে, লাইলাতুল কদরের রাতে ধারণ করা হয়। উক্ত ভিডিওতে লাব্বাইক আল আকসা লাব্বাইক ধ্বনি সম্বলিত অডিও যুক্ত করে সাম্প্রতিক সময়ে ভিন্ন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। তাছাড়া, আল আকসা মসজিদ ফিলিস্তিনিরা দখলে নিয়েছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয়। কারণ এটি জর্ডান-ফিলিস্তিনের একটি ওয়াকফ প্রতিষ্ঠানই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

প্রসঙ্গত, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷ 

সুতরাং, ফিলিস্তিনের আল আকসা প্রাঙ্গণে গত এপ্রিলে লাইলাতুল কদরের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে ভিন্ন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ভিডিওটিতে থাকা তরুণটি সৌদি আরবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মোহাম্মদ বিন মুরসাল নয়

সম্প্রতি, সৌদি আরবে শরীয়া আইনে মোহাম্মদ বিন মুরসাল নামে এক তরুণকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের ঘটনায় ইন্টারনেটে একটি ভিডিও এবং ছবি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিও ও ছবিতে থাকা ঐ তরুণই মোহাম্মদ বিন মুরসাল।

মোহাম্মদ বিন

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)। 

টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন ভিডিও (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সৌদি আরবে মোহাম্মদ বিন মুরসালের শরীয়া আইনে মৃত্যুদণ্ডের ঘটনাটি সত্য হলেও এটিকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবিতে থাকা ব্যক্তিটি তিনি নন। প্রকৃতপক্ষে ভিন্ন ঘটনার পুরানো ভিডিও ও ভিন্ন ব্যক্তির ছবি ব্যবহার করে মোহাম্মদ বিন মুরসাল দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

বোরকা পরিহিতা নারীর সঙ্গে আবেগঘন মূহুর্তে থাকা তরুণটি মোহাম্মদ বিন মুরসাল নয়

আলোচিত ভিডিওর প্রথম দাবিটি যাচাইয়ে ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সৌদি আরব ভিত্তিক সংবাদ চ্যানেল MBC8PM এর ইউটিউবে ২০১৪ সালের ২৮ এপ্রিল “The Eighth brings together Umm Muhammad and her son Misfer, who returned from Syria” (আরবি থেকে অনুদিত) শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : MBC8PM

উক্ত ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে ফিরে আসা এক ব্যক্তি বিমানবন্দরে তার মায়ের সাথে দেখা করছেন। 

এই ভিডিওটির সাথে মোহাম্মদ বিন মুরসালের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়া এই ঘটনাটি সম্পর্কে অধিকতর অনুসন্ধানে সৌদিভিত্তিক গণমাধ্যম ‘Al Arabiya’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল “A Saudi who returned from the Syrian war admits : Preachers are the reason” (ইংরেজি অনুবাদ)  শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সৌদি আরবের নাগরিক মুসফর মালিক সিরিয়ায় গিয়ে একটি জিহাদি দলে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর মুসফরকে সৌদি আরবে আনার জন্য অভিযান চালানো হয়। পরবর্তীতে মুসফর দেশে ফিরে আসলে বিমানবন্দরে তার মা ও পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। 

অর্থাৎ পুরনো একটি ভিন্ন ঘটনার ভিডিওচিত্রকে সাম্প্রতিক মোহাম্মদ বিন মুরসালের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

মোহাম্মদ বিন মুরসাল দাবিতে ছড়ালো সৌদি গায়কের ছবি ও ভিডিও 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওগুলোতে মোহাম্মদ বিন মুরসালের দাবিতে একজন ব্যক্তির ছবি ও ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। 

তবে এ ব্যক্তি সম্পর্কে যাচাইয়ে  রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ‘nader.alsharari‘ নামক একটি অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের মালিক নাদের আলশারারির ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত ব্যাক্তির ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে নাদের আলশারারি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ‘Viberate’ নামক সঙ্গীত ডেটা বিশ্লেষণ কোম্পানির ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot : Viberate

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নাদের আলশারারি সৌদি আরবের একজন সঙ্গীতশিল্পী। তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গীতে বিশেষ করে আরবি লোকসঙ্গীতে দক্ষ। তিনি মধ্যপ্রাচ্যের বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পীদের মধ্যে অন্যতম। 

অর্থাৎ সৌদি আরবের লোকসঙ্গীতশিল্পী নাদের আলশারারিকে মোহাম্মদ বিন মুরসালের ছবি দাবিতে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, সৌদি আরবের নাজরানের আল-রিজক পরিবারের সদস্য মোহাম্মদ বিন মুরসাল কয়েক বছর আগে মুইদ বিন আবদুল্লাহ বিন মোহসেন আল-ইয়ামিকে হত্যা করেছিলেন এবং এর দায়ে গত ২০ সেপ্টেম্বরে মুরসালকে সৌদি আইন অনুযায়ী মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। এ বিষয়টি রিউমর স্ক্যানার টিমকে নিশ্চিত করেছে সৌদি আরবের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান No Rumors। 

মূলত, সম্প্রতি সৌদি আরবে এক যুবককে হত্যার সাজা হিসেবে মোহাম্মদ বিন মুরসাল নামে এক তরুণকে ইসলামী শরীয়া আইনে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এই ঘটনা কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে একজন বোরকা পরিহিতা নারীর এক তরুণের সঙ্গে আবেগঘন মূহুর্তের একটি ভিডিও ও মোহাম্মদ বিন মুরসাল দাবিতে একজন তরুণের ছবি ছড়িয়ে পড়ে। তবে  অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল সৌদি আরবের নাগরিক মুসফর মালিক সিরিয়া থেকে ফিরে সৌদি বিমানবন্দরে তার মায়ের সাথে সাক্ষাতের। পাশাপাশি মোহাম্মদ বিন মুরসালের দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সৌদি সঙ্গীতশিল্পী নাদের আলশারারির।

সুতরাং, সৌদি আরবে মোহাম্মদ বিন মুরসালের মৃত্যুদণ্ডের ঘটনায় মায়ের সাথে আবেগঘন মুহূর্তের দাবিতে একটি ভিডিও এবং মোহাম্মদ বিন মুরসাল দাবিতে একজন তরুণের ছবি ও ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে ;যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচ নিয়ে জস বাটলারের নামে ফেসবুকে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

আগামীকাল (১০ অক্টোবর) চলতি ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড ক্রিকেট ম্যাচকে সামনে রেখে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার বাংলাদেশ দলের বিষয়ে দুইটি মন্তব্য করেছেন দাবি করে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

একটি মন্তব্যে দাবি করা হচ্ছে, জস বাটলার বলেছেন, “আমরা রান রেটের হিসাব নিয়ে চিন্তিত না, আমরা বাংলাদেশকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে আমাদের রান রেট এর গড় পুষিয়ে নিবো!”

বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ভিন্ন আরেকটি মন্তব্য হিসেবে দাবি করা হচ্ছে, বাটলার বলেছেন, “এটা আমাদের জন্য কঠিন খেলা (নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষের ম্যাচ) ছিলো। কিন্তু বাংলাদেশকে এর মূল্য দিতে হবে।”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ১০ অক্টোবর বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড ক্রিকেট ম্যাচকে সামনে রেখে জস বাটলার বাংলাদেশ দলকে নিয়ে এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ক্রিকেট বিষয়ক গণমাধ্যম ইএসপিএন ক্রিকইনফোর ওয়েবসাইটে গত ০৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়া নিউজিল্যান্ড বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচের কমেন্ট্রি খুঁজে পাওয়া যায়। চলতি বিশ্বকাপে এটাই ছিল ইংল্যান্ডের প্রথম ম্যাচ, যা তারা ৯ উইকেটের ব্যবধানে হেরে যায়।

Screenshot from Espncricinfo

ম্যাচ শেষের কমেন্ট্রি থেকে জানা যায়, বাটলার ইংল্যান্ড দলের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে ম্যাচ শেষে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং নিউজিল্যান্ড দলের খেলোয়াড়দের ভালো খেলার প্রশংসা করেন। তবে সেখানে বাটলার বাংলাদেশ বিষয়ক কোনো বক্তব্য দেননি।

ক্রীড়া বিষয়ক আরেক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে Sky Sports এর ইউটিউব চ্যানেলে একই দিন একই ম্যাচের শেষে বাটলারের দেওয়া বক্তব্য থেকেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে একইদিন (০৫ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি)  ফেসবুক পেজে নিউজিল্যান্ড বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচ পরবর্তী মিডিয়া কনফারেন্সের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

সেখানে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সেখানেও বাংলাদেশ বিষয়ক কোনো বক্তব্য দেননি।

Screenshot from Facebook

অর্থাৎ, বাটলার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। 

তাছাড়া, ০৫ অক্টোবর বা তারপরে বাংলাদেশ বিষয়ক তার কোনো মন্তব্য গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি।  

পরবর্তীতে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবির বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘BeanymanNews’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর তারিখে প্রকাশিত ভিডিওর দৃশ্যের সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot Comparison: Rumor Scanner

মূলত, গত ০৫ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ০৯ উইকেটে হেরে যায় ইংল্যান্ড। ইংলিশদের পরের ম্যাচ বাংলাদেশের সাথে, ১০ অক্টোবর। এর মধ্যেই, ফেসবুকের একাধিক পোস্টে দাবি করা হয়েছে,  ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার বাংলাদেশকে হারিয়ে রান রেট এর গড় পুষিয়ে নেওয়া এবং বাংলাদেশকে এর মূল্য দেওয়া সংক্রান্ত দুইটি মন্তব্য করেছেন। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, জস বাটলারের সর্বশেষ ম্যাচ পরবর্তী মিডিয়া কনফারেন্স, খেলা পরবর্তী কমেন্ট্রি কিংবা গণমাধ্যমে উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, পূর্বে ইংল্যান্ড বাংলাদেশকে ওয়ানডে সিরিজের আমন্ত্রণ জানিয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে তথ্য প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার বাংলাদেশকে হারিয়ে রান রেট এর গড় পুষিয়ে নেওয়া এবং বাংলাদেশকে এর মূল্য দেওয়া সংক্রান্ত দুইটি মন্তব্য করেছেন শীর্ষক দুইটি দাবি ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আজারবাইজানের ভিডিওকে ইসরায়েলের সামরিক কর্মকর্তাদের আটকের দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি ‘গাড়ি থেকে যাদেরকে নামানো হচ্ছে তারা সাধারণ কেউ নয়। তারা ইসরায়েলের মতো রাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর কমান্ডার, জেনারেল এবং নানান ডিফেন্স গ্রুপের প্রধান।’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

ইসরায়েলে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের আটকের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের নয় বরং  আজারবাইজানে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে কিছু ব্যক্তির গ্রেফতারের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।   

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ডিটিএক্সের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৫ অক্টোবর (Persons organizing the activities of illegal armed groups in Karabakh were arrested.(আজারবাইজানি ভাষা থেকে অনুদিত)’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।  

Video Screenshot comparison: Rumor Scanner

এই ভিডিওটির সাথে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের আটকের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। পাশাপাশি ভিডিওটিতে আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ডিটিএক্সের মনোগ্রামও দেখা যায়। 

এছাড়া ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এই ভিডিওটি মূলত আজারবাইজানের কারাবাখ অঞ্চলে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে দেশটির রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের। 

অপরদিকে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন চলমান সংঘাত শুরু হয়েছে গত শনিবার (৭ অক্টোবর)। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন চলমান সংঘাত শুরুর পূর্ব থেকেই ইন্টারনেটে ভিডিওটির অস্তিত্ব ছিল।

অর্থাৎ আজারবাইজানের কারাবাখ অঞ্চলে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে দেশটির রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের ভিডিওকেই আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

মূলত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এতে হামাস ও ইসরায়েল উভয়পক্ষেই প্রাণহানি ও হামাসের হাতে ইসরায়েলি সেনা আটকের বেশ কিছু ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ইন্টারনেটে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের আটকের দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন চলমান সংঘাত শুরুর পূর্ব থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যমান এবং এটি আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক দেশটির কারাবাখ অঞ্চল থেকে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের। 

সুতরাং, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন চলমান সংঘাতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের আটকের দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

হামাস যোদ্ধাদের প্যারাসুটের মাধ্যমে ইসরাইলে অবতণের ভিডিও দাবিতে মিশরের পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, Real pubg By Palestine শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

যোদ্ধাদের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ)

যা দাবি করা হচ্ছে

ভিডিওটির মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, গত শনিবার ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী দল হামাসের অতর্কিত হামলার পর আকাশপথে তাদের যোদ্ধারা দেশটিতে প্রবেশ করছে। যেটিকে তারা প্লেয়ারআননোওন’স ব্যাটলগ্রাউন্ড বা পাবজি ভিডিও গেমটির সাথে তুলনা করছেন। গেমটিতে উক্ত প্রক্রিয়ায় যোদ্ধাদের যুদ্ধক্ষেত্রে নামানো হয়ে থাকে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী দল হামাসের যোদ্ধাদের প্যারাসুটের মাধ্যমে ইসরায়েলে প্রবেশের নয়। বরং মিশরের মিলিটারি ট্রেনিং একাডেমির একটি পুরোনো ভিডিওকে ইসরায়েলে হামাসের প্রবেশের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ahmedsaied41 নামের একটি টিকটক আইডিতে গত  ২৪ সেপ্টেম্বর প্রচারিত আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: TikTok

উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে।

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি শেয়ারকারী ব্যক্তির টিকটক আইডি পর্যালোচনা করে দেখা যায় তিনি একটি সামরিক বাহিনীর সদস্য। যদিও সে বিষয়ে তার আইডিতে কোনো সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তার আইডিতে গত ২১ সেপ্টেম্বর #egypt শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: TikTok

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর স্থানের সাথে আলোচিত ভিডিওটির স্থানের মিল রয়েছে। উক্ত ভিডিওটিতে প্যারােসুটের মাধ্যমে সৈনিকদের অবতরণ করতে দেখা না গেলেও বেশকিছু সামরিক হেলিকপ্টার এবং বিমানকে সামরিক মহড়া দিতে দেখা যায়। 

পরবর্তীতে ভিডিওটির স্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্যে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু তাতে কোনো ফলাফল না পাওয়া গেলে উক্ত ভিডিওতে দেখতে পাওয়া বিল্ডিংটির গায়ের লেখা অনুবাদের মাধ্যমে অনুসন্ধানের চেষ্টা করা হয়। 

অনুসন্ধানে ভিডিওটির একটি কী-ফ্রেম নিয়ে গুগল লেন্সের সহায়তায় উক্ত বিল্ডিংয়ের গায়ের লেখা অনুবাদের মাধ্যমে Military College শীর্ষক তথ্যটি পাওয়া যায়। 

Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তী অনুসন্ধানে #egypt এবং Military College তথ্য দুটির সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মিশরের মিলিটারি একাডেমির বেশকিছু ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রাপ্ত ছবিগুলোর সাথে আলোচিত ভিডিওটির স্থানের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে আলোচিত ভিডিওর স্থানের সাথে মিশরের মিলিটারি একাডেমির ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

অর্থাৎ, ইসরায়েলে হামাসের যোদ্ধাদের অবতরেণ ভিডিও দাবিতে প্রাচরিত ভিডিওটি আসলে মিশরের।

মূলত, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে আকস্মিক এবং নজিরবিহীন মিসাইল হামলা চালায় হামাস। এরপর ইসরায়েল সীমানা অতিক্রম করে দেশটিতে প্রবেশ করে অসংখ্য ফিলিস্তিনি নাগরিক। যার পর থেকে ইসরায়েলে হামাসের প্রবেশ নিয়ে ব্যাপক আলোচনার উৎপত্তি হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী দল হামাসের যোদ্ধারা ভিডিও গেমসের আদলে আকাশ থেকে প্যারাসুটের মাধ্যম ইসরায়েলে অবতরণ করছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচারিত হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত ভিডিওটির সাথে হামাস কিংবা ফিলিস্তিনের কোনো সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে মিশরের মিলিটারি একাডেমির একটি পুরোনো ভিডিওকে হামাসের ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, মিশরের মিলিটারি একাডেমির একটি পুরোনো ভিডিওকে ইসরায়েলে হামাসের যোদ্ধাদের প্যারাসুটের মাধ্যমে অবতরণের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

হালনাগাদ/ Update

৩১ জানুয়ারি, ২০২৪ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে একই দাবি সম্বলিত ভিডিও আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে একটি টিকটক পোস্টকে প্রতিবেদনে দাবি হিসেবে যুক্ত করা হলো।

প্রথম আলোর সংবাদ বিকৃত করে ইসরায়েলে হামাসের হামলায় বিএনপির প্রতিবাদ জানানোর ভুয়া তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘ইসরায়েলে হামাসের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি এবং ইজরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকবে দলটি।‘ শীর্ষক একটি মন্তব্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করেছেন দাবিতে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আদলে তৈরি একটি স্ক্রিনশটের মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

হামলা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি কর্তৃক হামাসের ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ জানানোর দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি ভুয়া এবং প্রথম আলোর ওয়েবসাইটেও এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, “প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা থেকে খালি হাতে ঘুরে এসেছেন: মির্জা ফখরুল” শীর্ষক শিরোনামে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি সংবাদের শিরোনাম বিকৃত করে এই ভুয়া তথ্যটি প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত স্ক্রিনশটটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। প্রথম আলোর ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনের আদলে তৈরি এই স্ক্রিনশটটিতে সংবাদ প্রচারের তারিখ স্পষ্টভাবে বোঝা না গেলেও ০৫ বা ০৬ অক্টোবর, ২০২৩ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে স্ক্রিনশটে থাকা তারিখ এবং প্রথম আলোর লোগোর সূত্র ধরে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ০৫ এবং ০৬ অক্টোবর প্রকাশিত সংবাদগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনামে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে একই ছবি ব্যবহার করে ০৫ অক্টোবর ‘প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা থেকে খালি হাতে ঘুরে এসেছেন: মির্জা ফখরুল‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Prothom Alo 

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত স্ক্রিনশটের সংবাদের সাথে উক্ত সংবাদের প্রতিবেদকের ক্রেডিট লাইন, ফিচারে থাকা মির্জা ফখরুলের ছবি এবং ছবির নিচে উল্লিখিত ক্যাপশনের হুবহু মিল রয়েছে। 

Screenshot Comparison: Rumor Scanner

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০৫ অক্টোবর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কালাকচুয়া খন্দকার ফুড গ্যালারি মাঠে বিএনপির রোডমার্চের উদ্বোধনী সমাবেশে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। উক্ত বক্তব্যের বিষয়ে এই সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে। তবে ফখরুলের বক্তব্যে চলমান ফিলিস্তিন- ইসরায়েল সংঘাত ইস্যু আসেনি। 

এটি অবশ্য আসার কথাও নয়। কারণ, চলমান ফিলিস্তিন- ইসরায়েল সংঘাত শুরুই হয়েছে গত ০৭ অক্টোবর। তাই ফখরুলের পক্ষে দুই দিন আগেই এ বিষয়ে মন্তব্য করা সম্ভব নয়।

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে, চলমান ফিলিস্তিন- ইসরায়েল সংঘাত ইস্যুতে বিএনপি বা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কর্তৃক কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি দেওয়ার সংবাদ গণমাধ্যমে পাওয়া যায়নি। 

এ বিষয়ে জানতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্ক্যানার টিমকে জানান, বিএনপি বা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি দেননি। 

দাবিটির সূত্রপাত কীভাবে? 

ফেসবুকের মনিটরিং টুলসহ একাধিক পদ্ধতিতে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম দেখেছে, গতকাল (০৮ অক্টেবর) সকাল ১১ টা ৪৪ মিনিটে ফেসবুকে Ayesha Rahman নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে এ বিষয়ে সম্ভাব্য প্রথম পাবলিক পোস্ট করা হয়৷ 

পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

Screenshot: Facebook

আয়শা রহমানের অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে সেখানে গত জুলাইয়ে বিএনপির সমালোচনা করে একটি পোস্ট ছাড়া রাজনৈতিক কোনো পোস্ট পাওয়া যায়নি। 

তবে রিউমর স্ক্যানার টিম গত সেপ্টেম্বর একই অ্যাকাউন্ট থেকে একই কায়দায় (প্রথম আলোর সংবাদ বিকৃত করে) বিএনপির চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মারা গেছেন‘ শীর্ষক একটি দাবি ছড়িয়ে পড়তে দেখেছিল। সে সময় এ বিষয়ে একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়েছিল। 

মূলত, সম্প্রতি ইসরায়েলে হামাসের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি এবং ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকবে দলটি শীর্ষক একটি মন্তব্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করেছেন দাবিতে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আদলে তৈরি একটি স্ক্রিনশটের মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে এমন কোনো সংবাদই প্রকাশিত হয়নি। মির্জা ফখরুলও চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে এই বক্তব্য দেননি। প্রকৃতপক্ষে, প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি সংবাদের শিরোনাম বিকৃত করে এই ভুয়া তথ্যটি প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে সম্প্রতি আরেকটি প্রথম সারির গণমাধ্যমের ফটোকার্ড ব্যবহার করে ভুয়া মন্তব্য প্রচার করা হয়। 

এ নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধান পড়ুন-

সুতরাং, জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোকে উদ্ধৃত করে ইসরায়েলে হামাসের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি শীর্ষক একটি তথ্য মির্জা ফখরুলের মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ‍উক্ত দাবিতে প্রচারিত স্ক্রিনশটটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

বিএনপি-জামায়েত এক হয়েছে দাবিতে জামায়াত নেতার পুরোনো বক্তব্য প্রচার

সম্প্রতি, আলহামদুল্লিাহ। বিএনপি জামায়াত অভিমান ভুলে এক কাতারে চলে আসলো। বিএনপির প্রোগ্রামে জামায়াতকে আমন্ত্রন করে নজীর সৃষ্টি করলো।  সময়ের সাহসি পদক্ষেপ। আগামি কমসূচি গুলোও এককাতারে দেখতে চাই জনগণ। সুদিন খুব নিকটে। খালেদা জিয়া এমন দ্বায়ীত্বশীল ব‍্যক্তি, যিনি দলমত নির্বিশেষে সবার কছে স্মরণীয় ও বরনীয়।– শীর্ষক ক্যাপশনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিমের বক্তব্য দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ভিডিওটিতে মাওলানা আব্দুল হালিমকে তার বক্তব্যে বলতে শোনা যায়, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবিলম্বে মুক্তি প্রদান এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ প্রেরণের দাবিতে আয়োজিত আজকের এই গণঅনশন কর্মসূচীর সম্মানিত সভাপতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সম্মানি মহাসচিব, রাজপথের অকুতোভয় যোদ্ধা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের স্থায়ী কমিটির সম্মানিত নেতৃবৃন্দ ও সদস্যবৃন্দ, অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। বিভিন্ন দলের প্রধানগণ উপস্থিত জনতা। আজকে আমরা অন্তত মনভাঙা হয়ে এখানে উপস্থিত হয়েছি। বাংলাদেশের মানুষের দলমত নির্বিশেষে… দেশদ্রোহী নেতা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপার্সন, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, বারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য, বিএনপি দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার আজকে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। আমরা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে জামায়াতে ইসলামীর সম্মানীয় আমির ড. শফিকুল আলমের পক্ষ থেকে মহান আল্লাহ তা আলার কাছে দোয়া করেছি দোয়া করছি আল্লাহ তা আলা যেন দেশনেত্রীকে দ্রুত সুস্থতা দান করেন। সংগ্রামী জনতা… দেশের জন্যে, মানুষের জন্যে, মানুষের দোয়ায় আল্লাহ তা আলা দেশনেত্রীকে সুস্থতা দান করে আবারও রাজপথে ফিরিয়ে আনার তৌফিক করে দিতে পারেন৷ আমরা আল্লাহ তা আলার কাছে দোয়া করি, তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন। গতকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য…  সাথে কথা হইতেছিলো যে আমরা উদ্বিগ্ন। প্রতিদিনেই ভাবি কোন সময় আবার দুঃসংবাদ এসে যায় কি না। আল্লাহ তা আলা কাছে আমরা দোয়া করি, আল্লাহ এই দেশের জন্যে, দেশের মানুষের জন্যে, দেশের মানুষের মুক্তির জন্যে… মানুষের মুক্তির জন্যে বাংলাদেশের মানুষের গণমানুষের নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে সুস্থতার সাথে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দাও। সংগ্রামী জনতা বাংলাদেশের বেগম খালেদা জিয়া এমন দায়িত্বশীল নেত্রী তিনি দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে শ্রদ্ধীয় এবং বরণীয়। বেগম খালেদা জিয়া শুধুমাত্র বিএনপির চেয়ারপার্সন নয়, এই দেশের ১৬ কোটি মানুষের নন্দিত নেত্রী তিনি। বেগম খালেদা জিয়া তিনবার পাঁচটি আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।… তিনবার তিনটি আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন৷ এতে প্রমানিত হয় বাংলাদেশের মানুষের দলমত নির্বিশেষে সকলের নন্দিত নেত্রী হচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। আমরা আজকে দাবী জানাবো মানবিক দিক বিবেচনা করে রাষ্ট্র এবং সরকার যেকোনো নাগরিককে সুস্থতার জন্যে মুক্তি দিতে পারে। বেগম খালেদা জিয়া সাধারণ একজন নাগরিক নন। তিনি বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। বেগম খালেদা জিয়া এই দেশের সবচেয়ে জনসমর্থক গোষ্ঠী একটি দলের প্রধান। বেগম খালেদা জিয়া এদেশের মানুষের মুক্তির জন্যে গণতন্ত্রের নেতৃত্ব দিয়ে তিনি গণতন্ত্রকে মুক্ত করেছেন। আপোষহীন নেত্রীর খেতাব তিনি অর্জন করেছিলেন। চার দলীয় জোট, আঠারো দলীয় জোট সকলের তীর্থনীয় জেট গঠন করে দুইশ আসনের বিরুদ্ধে তিনি মানুষের নিয়ে মুক্তির নেতৃত্ব দিয়েছেন। আসুন তার জন্যে আমরা আল্লাহ তা আলার কাছে দোয়া করি এবং সরকারের কাছে আমরা দাবী জানাবো, জোর দাবী অবিলম্বে, কাল বিলম্ব না করে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে৷ সাথে সাথে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্যে আমরা দাবি জানাচ্ছি। আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একেক সময় একেক ব্যাখ্যা দিতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে বেগম খালেদা জিয়া শুধু নাগরিক নন, তিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব দিয়েছেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী। তিনি রাষ্ট্রপতিয় শাসনব্যবস্থা থেকে সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় গণতন্ত্রকে নিয়ে গিয়েছেন।…  আসুন তার মুক্তির দাবিতে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই সংগ্রাম করি এবং তার মুক্তি নিশ্চিত করে তার সুচিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্যে সরকারকে বাধ্য করি। আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, বিশ দলীয় জোট জিন্দাবাদ। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি  বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দল বিএনপির সাথে জোট গঠন করেনি এবং জামায়াতে ইসলামী দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিমও সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে বক্তব্য দেননি বরং ২০২১ সালের বিএনপির কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে মাওলানা আব্দুল হালিমের বক্তব্যকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

রিভার্স ইমেজ সার্চ করে Jamaat Dhaka City South নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর “বেগম খালেদা জিয়াকে দ্রুত মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ করে দিন- মাওলানা আবদুল হালিম” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত মূল ভিডিওটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।  

৫ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিএনপির ডাকা অনশন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম।

বিএনপি-জামায়েত

আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

পরবর্তীতে কী-ওয়ার্ড সার্চ করে বিবিসি বাংলায় ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর “খালেদা জিয়া: অসুস্থ চেয়ারপার্সনকে বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে গণঅনশন করছে বিএনপি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিএনপির অসুস্থ চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার দাবিতে ঢাকা, জেলা ও মহানগরগুলোয় অনশন কর্মসূচী করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। ২০ নভেম্বর ঢাকায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনশন কর্মসূচীতে বসেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা।

অর্থাৎ, ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর বিএনপির ডাকা কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামী দল কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম।

মূলত, ২০২১ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অসুস্থ চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার দাবিতে গণঅনশনের ডাক দেয়। পরবর্তীতে বিএনপির বিশ দলীয় জোটে থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম সেখানে একমত পোষণ করে বক্তব্য দেন। সম্প্রতি প্রায় দুই বছর পুরোনো সেই বক্তব্যের ভিডিও যুক্ত করে দাবি করা হচ্ছে, বিএনপির প্রোগ্রামে জামায়াতকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে এবং বিএনপি জামায়াত এক হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে জামায়াতে ইসলামী দলের সাথে বিএনপির বিশ দলীয় জোট ভেঙে যায়৷ এরপর থেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দল এবং বিএনপি আলাদাভাবে কর্মসূচী পালন করে আসছে। 

সুতরাং, বিএনপি-জামায়েত এক হয়েছে দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতার পুরোনো বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

দুর্গাপূজার সময় বৃষ্টির সম্ভাবনার পুরোনো খবর সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি, এবারের দুর্গাপূজায় বৃষ্টির সম্ভাবনা দাবিতে একটি সংবাদ প্রতিবেদনের ছবি সম্বলিত তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

দুর্গাপূজা

উক্ত দাবিতে বাংলাদেশে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

যা দাবি করা হচ্ছে

ভার‍ত এবং বাংলাদেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা একটি সংবাদ প্রতিবেদনের ছবি শেয়ার করে দাবি করছেন, এবারের দুর্গাপূজায় ষষ্ঠী থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং নবমী-দশমীতে এর তীব্রতা বাড়তে পারে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত সংবাদ প্রতিবেদনটি এ বছরের নয় বরং এটি ২০১৯ সালে দুর্গা পূজার বিষয়ে প্রচারিত চার বছর পূর্বের প্রতিবেদন। প্রকৃতপক্ষে, এবারের দুর্গাপূজায় বৃষ্টির সম্ভাবনার বিষয়ে বাংলাদেশ কিংবা ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে এ সম্পর্কিত কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনো আসেনি।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত সংবাদ প্রতিবেদনের ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

Screenshot: Facebook Claim Post 

‘ষষ্ঠী থেকেই বৃষ্টি, তীব্রতা আরও বাড়ার সম্ভাবনা নবমী-দশমীতে’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত এই প্রতিবেদনটি প্রকাশের কোনো তারিখ উল্লেখ করা হয়নি। সংবাদটির প্রতিবেদক হিসেবে ‘নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা’ উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরে বরাতে দুর্গাপূজার সময়ে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানানো হয়।

বিষয়টি যাচাইয়ে কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে বাংলাদেশ কিংবা ভারতীয় কোনো গণমাধ্যমে এবারের দুর্গাপূজায় বৃষ্টির সম্ভাবনার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অধিদপ্তরের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে ভারতীয় গণমাধ্যম বর্তমান পত্রিকার ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ০৯ অক্টোবর উক্ত শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Bartaman Patrika

এই প্রতিবেদনটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত প্রতিবেদনটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, ‘ষষ্ঠী থেকে বৃষ্টি, তীব্রতা আরও বাড়ার সম্ভাবনা নবমী-দশমীতে’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি ২০১৯ সালের। তাছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে এই শিরোনামে বা এমন তথ্য সম্বলিত কোনো প্রতিবেদন অন্য কোনো গণমাধ্যমও প্রকাশ করেনি।

মূলত, ২০১৯ সালের ০৯ অক্টোবর ভারতীয় গণমাধ্যম বর্তমান পত্রিকা ‘ষষ্ঠী থেকেই বৃষ্টি, তীব্রতা আরও বাড়ার সম্ভাবনা নবমী-দশমীতে’ শীর্ষক শিরোনামে সেবছরের দুর্গাপূজায় বৃষ্টির সম্ভাবনার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরবর্তীতে সেই প্রতিবেদনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করে এবছরের দুর্গাপূজায় বৃষ্টি সম্ভাবনার দাবিতে  প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, এবারের দুর্গাপূজায় বৃষ্টির সম্ভাবনার বিষয়ে বাংলাদেশ কিংবা ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে এসম্পর্কিত কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনো আসেনি।

সুতরাং, দুর্গাপূজায় বৃষ্টির সম্ভাবনা সম্পর্কিত চার বছর পূর্বের প্রতিবেদনকে সাম্প্রতিক দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালে নেইমারের উপস্থিতির দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, ‘ব্রেকিং নিউজ ভারতে হতে যাওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপে ফাইনাল ম্যাচে সরাসরি উপস্থিত থাকবেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টা নেইমার জুনিয়র’ শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ওয়ানডে বিশ্বকাপ

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট ( আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে, আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের এবারের আসরের ফাইনাল ম্যাচে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল তারকা নেইমার জুনিয়রের সরাসরি উপস্থিত থাকার বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উক্ত তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে।

গুজবের সূত্রপাত

ফেসবুকের নিজস্ব মনিটরিং টুল ব্যবহার করে দেখা যায়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুর ৩ টা ৩১ মিনিটে ‘স্টার জলসা, পাপন দা, শো রুম আল হাসান বলছি লর্ড সভাপতি থেকে’ নামের একটি ফেসবুক পেজে এবং পেজের অ্যাডমিন AK Jibrail Islam এর প্রোফাইলে  ‘???? ব্রেকিং নিউজ ভারতে হতে যাওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপে ফাইনাল ম্যাচে সরাসরি উপস্থিত থাকবেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টা নেইমার জুনিয়র ????????????????’ শীর্ষক শিরোনামে একই সময় উক্ত দাবিতে সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি করা হয়। তবে লক্ষ্য করে দেখা যায়, উক্ত পোস্টটিতে পোস্টদাতা কোনো তথ্যসূত্র ব্যবহার করেননি।

Collage by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উক্ত তথ্যটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সেগুলোতেও কোনো তথ্যসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উক্ত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে নেইমারের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলো পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু তার কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই তার পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে দাবিটি নিয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও দেশীয় কিংবা বিদেশী গণমাধ্যমে নেইমারের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালে সরাসরি উপস্থিত থাকার ব্যাপারে কোনো তথ্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে বিশেষ ব্যক্তিবর্গের জন্যে গোল্ডেন টিকিট নামে বিশেষ এক ধরনের টিকিটের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানা যায়। এই টিকিটধারী ব্যক্তিরা বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচ উপভোগের পাশাপাশি বিসিসিআই কর্তৃক নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকবেন। এপর্যন্ত জনপ্রিয় অভিনেতা রজনীকান্ত, অমিতাভ বচ্চন এবং শচীন টেন্ডুলকারকে এই গোল্ডেন টিকিট দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচে বা সমাপনী অনুষ্ঠানে নেইমার কিংবা কোনো বিশেষ ব্যক্তির উপস্থিতি এবং সেদিন কী কী আয়োজন থাকছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি বিসিসিআই। 

অন্যদিকে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে The Times of India এর ওয়েবসাইটে  ‘Brazilian superstar Neymar could play in India’ শীর্ষক শিরোনামে গত ২৪ আগস্ট প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: The Times of India

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, আগামী ৬ নভেম্বর এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি দল মুম্বাই সিটি ‘র মুখোমুখি হতে যাচ্ছে নেইমারের দল আল হিলাল। কিন্তু উক্ত ম্যাচে মাঠে নামার জন্যে নেইমার ভারতে আসছেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

মূলত, কোনো তথ্যসূত্র ও সুনির্দিষ্ট তথ্য উল্লেখ করা ছাড়াই কিছু ফেসবুক পেজ ও আইডির মাধ্যমে ভারতে হতে যাওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল তারকা নেইমারের সরাসরি উপস্থিত থাকার দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের এবারের আসরের ফাইনাল ম্যাচে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল তারকা নেইমার জুনিয়রের সরাসরি উপস্থিত থাকার দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র