গত ১৪ মে তুরস্কের জাতীয় নির্বাচনে রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি একটি গণমাধ্যম এবং ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।
একই দাবিতে ইউটিউবের একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, তুরস্কের জাতীয় নির্বাচনে এরদোয়ান পুনরায় বিজয়ী ঘোষিত বা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হননি বরং নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফলে এরদোয়ান ও অন্য প্রার্থীদের কেউই নিয়ম অনুযায়ী ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় আগামী ২৮ মে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে কাতারের সংবাদমাধ্যম আল জাজিরায় গত ১৫ মে ‘Turkey’s presidential election goes to run-off: Election council’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Al Jazeera
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কোনো প্রার্থী নিয়ম অনুযায়ী এককভাবে ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
পরবর্তীতে আল জাজিরার আরেকটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ সময় সোমবার (১৫ মে) দুপুর ৩টা পর্যন্ত ৯৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ ভোট গণনার ফল প্রকাশ হয়েছে। এতে এরদোয়ান পেয়েছেন ৪৯ দশমিক ৪২ শতাংশ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কিলিচদারোগলু পেয়েছেন ৪৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ ভোট। তৃতীয় প্রার্থী সিনান ওগান পেয়েছেন ৫ দশমিক ২০ শতাংশ ভোট।
Screenshot: Al Jazeera
তুরস্কের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, ভোটের ফল চূড়ান্ত হওয়ার পর যদি কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পান, তবে দুই সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন হবে। জয় নিশ্চিতের জন্য ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হবে। ১৪ মে’র নির্বাচনে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফা নির্বাচন হবে আগামী ২৮ মে।
মূলত, সম্প্রতি তুরস্কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোয়ান এগিয়ে থাকলেও দেশটির নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী বিজয়ী ঘোষণার জন্য ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হতো তাকে, যা তিনি পাননি। এরদোয়ান ছাড়া অন্য প্রার্থীরাও ৫০ শতাংশ ভোট পাননি। এর ফলে নিয়ম অনুযায়ী দ্বিতীয় দফায় পুনরায় ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ২৮ মে। কিন্তু বিষয়টি যথাযথভাবে যাচাই না করেই এরদোয়ান পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন দাবিতে একটি গণমাধ্যম এবং ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, তুরস্কে ছয় কোটি ৪০ লাখ ভোটার নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এরমধ্যে ৫০ লাখ হচ্ছেন নতুন ভোটার, যাদের বয়স ১৮-২২ বছরের মধ্যে, যারা প্রথমবারের মত ভোট দিয়েছেন ভোটার।
সুতরাং, তুরস্কে গত ১৫ মে এর নির্বাচনে রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও অন্য প্রার্থীদের কেউই নিয়ম অনুযায়ী ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় কাউকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত না করা হলেও একটি গণমাধ্যম ও ইন্টারনেটে এরদোয়ান পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি, “মির্জা ফখরুল বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ মহাসচিব। তার এখনই অবসরে যাওয়া উচিত। -হিরো আলম” শীর্ষক শিরোনামে একটি ডিজিটাল ব্যানার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হয়েছে। যেখানে উক্ত বক্তব্যটি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমকে নিয়ে হিরো আলম দিয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘মির্জা ফখরুল বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ মহাসচিব, তার এখনই অবসরে যাওয়া উচিত।’ শীর্ষক ফেসবুকে প্রচারিত এই বক্তব্যটি অভিনেতা হিরো আলম দেননি বরং ভিত্তিহীনভাবে উক্ত মন্তব্যকে হিরো আলমের বক্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
হিরো আলম বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্পর্কে উক্ত মন্তব্য করেছেন কি না তার প্রাথমিক অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে উক্ত বক্তব্য সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে হিরো আলম উক্ত বক্তব্য দিয়েছেন তার কোনো তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় পরবর্তীতে বিষয়টির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে অভিনেতা হিরো আলমের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
হিরো আলমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা নিশ্চিত করে রিউমর স্ক্যানারকে জানান,
“সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট…ভুল। আমি মির্জা ফখরুল এর নামে কিছুই বলিনি এখন পর্যন্ত। এটা সম্পূর্ণ গুজব ছড়াইছে। আর কিছু দিন পর পরই আমার নামে গুজব ছড়ায়, যাতে আমার জনপ্রিয়তা হেয় হয়। আমি এরকম কোনো কথাই বলিনি।”
মূলত, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ মহাসচিব শীর্ষক একটি বক্তব্য হিরো আলমের নামে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার এর অনুসন্ধানে হিরো আলমের উক্ত বক্তব্য দেওয়ার প্রমাণ মেলেনি। বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য হিরো আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এমন কোনো মন্তব্য করেননি বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, পূর্বেও হিরো আলমের নামে ফেসবুকে একাধিক ভুয়া বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। যেগুলোর সত্যতা যাচাই করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন দেখুন এখানে ও এখানে।
সুতরাং, অভিনেতা হিরো আলম বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ মহাসচিব বলে মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, চট্টগ্রাম-৬ আসনের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ক্যান্সারে আক্রান্ত শীর্ষক দাবিতে একটি ডিজিটাল পোস্টার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
উক্ত পোস্টারে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার খবর জানিয়ে পোস্টারের নিচের অংশে ‘এবিএম ফজলে কবির চৌধুরী ফাউন্ডেশন’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ক্যান্সারে আক্রান্ত হননি বরং বিষয়টি মিথ্যা বলে নিশ্চিত করে তিনি সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন তার পুত্র ফারাজ করিম চৌধুরী।
অনুসন্ধানের শুরুতে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে কিওয়ার্ড সার্চ করে এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে উল্লিখিত এবিএম ফজলে কবির চৌধুরী ফাউন্ডেশন নামক একটি প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে অনুসন্ধান করে এমন কোনো ফাউন্ডেশনের অস্তিত্ব ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর নামে ‘এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ফাউন্ডেশন’ নামে একটি ফাউন্ডেশন রয়েছে যার মাধ্যমে তার পুত্র ফারাজ করিম চৌধুরী সমাজসেবা মূলক কাজ করার তথ্য পাওয়া গেছে ফারাজের ফেসবুক পেজে।
Screenshot source : Facebook
এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে পরবর্তীতে ফারাজ করিম চৌধুরীর ফেসবুক পেজে গতকাল (১৬ মে) প্রকাশিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। সেই ফেসবুক পোস্টে তিনি তার বাবার ক্যান্সার হওয়ার বিষয়টি মিথ্যা এবং বানোয়াট বলে নিশ্চিত করেন।
Screenshot from Facebook
মূলত, সম্প্রতি চট্টগ্রাম-৬ আসনের এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার দাবিতে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর ছবি সহ একটি পোস্টার ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ক্যান্সারে আক্রান্ত হননি। তার পুত্র ফারাজ করিম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, পূর্বেও বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে ইন্টারনেটে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, কোনোপ্রকার তথ্যসূত্র ছাড়াই এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার তথ্যটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি ‘বাংলাদেশের শিক্ষার মান ১৩৮ টা দেশের মধ্যে ১২৩ তম যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন।‘ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শিক্ষার তিনটি বৈশ্বিক সূচকের সবশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী, বাংলাদেশের শিক্ষার মান ১৩৮ টা দেশের মধ্যে ১২৩ তম দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি পুরোপুরি সঠিক নয় বরং এই তিনটি সূচকের দুইটিতেই দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ এবং একটিতে বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার সবার নিচে।
দাবিটির সত্যতা অনুসন্ধানে উক্ত দাবিতে প্রচারিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টগুলোতে কোনো তথ্যসূত্র খুঁজে পাওয়া যায় না। এছাড়া মূলধারার কোনো গণমাধ্যমেও এমন কোনো তথ্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলে বাংলার ফেসবুক পেইজে ২০২২ সালের ২৪ জুন ‘দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান সবার নীচে৷‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: DW Bangla
প্রতিবেদনটিতে ২০২১ সালের শিক্ষার তিনটি বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, তিনটি সূচকের মধ্যে দুইটি বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান সবার নীচে।
২০২১ সালের তিনটি বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান
২০২১ সালের বৈশ্বিক জ্ঞান সূচকে ১৫৪ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২০ তম। এই সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অন্যান্য দেশগুলোর অবস্থান ছিল যথাক্রমে পাকিস্তান (১২৩), নেপাল (১২৮) ও আফগানিস্তান (১৫১)৷ দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে ছিল শ্রীলঙ্কা (৮৬)। ভারত ও ভুটান আছে যথাক্রমে ৯৭ ও ১০৮তম স্থানে৷
Screenshot: DW Bangla
ফ্রান্সভিত্তিক বিজনেস স্কুল ‘ইনসিয়েড’ ও ওয়াশিংটনভিত্তিক ‘পোর্টল্যান্স ইনস্টিটিউটের’ ২০২১ সালের ‘গ্লোবাল ট্যালেন্ট কম্পিটিটিভনেস ইনডেক্সে’ ১৩৪ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৩ তম। এই সূচকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল সবার নীচে। এই অঞ্চলে শীর্ষে ছিল ভারত (৮৮)। এরপর ছিল শ্রীলঙ্কা (৯৩), পাকিস্তান (১০৭) ও নেপাল (১১৩)৷
Screenshot: DW Bangla
এছাড়া জাতিসংঘের সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশনের প্রকাশিত ২০২১ সালের বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচকে ১৩২ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৬ নম্বরে৷ এই সূচকেও দক্ষিণ এশিয়ায় সবার নীচে ছিল বাংলাদেশ। অপরদিকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত (৪৬), শ্রীলঙ্কা (৯৫), পাকিস্তান (৯৯) ও নেপাল (১১১) তম অবস্থানে ছিল।
Screenshot: DW Bangla
উক্ত তিনটি সূচকে বাংলাদেশের সবশেষ অবস্থান কত?
পরবর্তীতে উক্ত সূচকগুলোতে বাংলাদেশের সবশেষ অবস্থান সম্পর্কে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এক্ষেত্রে উক্ত তিনটি সূচকেরই সবশেষ হালনাগাদ যাচাই করে দেখা হয়।
এতে দেখা যায়, বৈশ্বিক জ্ঞান সূচক ২০২২ এ ১৩২ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৫ তম। যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চতুর্থ, বৈশ্বিক জ্ঞান সূচকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে শ্রীলঙ্কা, ভূটান ও ভারত। সূচকে দেশগুলোর অবস্থান শ্রীলঙ্কা ৭৯ তম, ভূটান ৮৯ তম এবং ভারত ৯১ তম।
এই সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিচে আছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে ভারত ১০১ তম, পাকিস্তান ১১৩ তম, শ্রীলঙ্কা ৯৩ তম এবং নেপালের অবস্থান ১১১ তম।
তবে এই সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার ভূটান, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তানের কোনো অবস্থান খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এছাড়া বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচক ২০২২ এর সবশেষ হালনাগাদ যাচাই করে দেখা যায়, বাংলাদেশ এই সূচকে বিশ্বের ১৩২ টি দেশের মধ্যে ১০২ তম অবস্থানে আছে।
Screenshot: Global Innovation Index
এই সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে প্রথম স্থানে ভারত ৪০ তম, দ্বিতীয় স্থানে থাকা শ্রীলঙ্কা ৮৫ তম ও তৃতীয় স্থানে থাকা পাকিস্তান ৮৭ তম এবং পঞ্চম স্থানে থাকা নেপালের অবস্থান ১১১ তম।
এই সূচকেও দক্ষিণ এশিয়ার ভূটান, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তানের কোনো অবস্থান খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার তিনটি বৈশ্বিক সূচকের ২০২২ সালের সবশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী, বাংলাদেশ কেবল গ্লোবাল ট্যালেন্ট কম্পিটিটিভনেস ইনডেক্স বা সূচকে দক্ষিণ এশিয়া থেকে স্থান পাওয়া অন্যান্য দেশগুলো থেকে পিছিয়ে আছে। বাদ বাকী অন্য দুইটি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থতম।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে প্রকাশিত বৈশ্বিক জ্ঞান সূচকের তালিকায় ১৩৮ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১২তম ছিল। যা সেসময়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।
Screenshot: Global Knowledge Index 2020
মূলত, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বাংলাদেশের শিক্ষার মান ১৩৮ টা দেশের মধ্যে ১২৩ তম যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন।’ শীর্ষক একটি তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত তথ্যটি কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই প্রচার করা হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষার তিনটি বৈশ্বিক সূচক যথা, বৈশ্বিক জ্ঞান সূচক, বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচক ও গ্লোবাল ট্যালেন্ট কম্পিটিটিভনেস ইনডেক্স বা সূচকের সবশেষ হালনাগাদ যাচাই করেও এই দাবির পক্ষে কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘বাংলাদেশের শিক্ষার মান ১৩৮ টা দেশের মধ্যে ১২৩ তম যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন।’ শীর্ষক যে দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে; সেটি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডাক অধিদপ্তরের ‘উপজেলা পোস্ট মাস্টার’ পদের নিয়োগ পরীক্ষা আগামী ০৩ জুন অনুষ্ঠিত হবে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং, উক্ত পদের নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ এখনো প্রকাশিত হয়নি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, জাতীয় দৈনিক ‘প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে আজ (১৭ই মে) “নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে গুজব, সতর্ক করল ডাক অধিদপ্তর” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সম্প্রতি উপজেলা পোস্টমাস্টার পদের নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ও সময় নির্ধারণ এবং প্রবেশপত্র ডাউনলোড সংক্রান্ত পোস্টগুলো সম্পূর্ন বানোয়াট।
এ বিষয়ে ডাক অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে, ডাক অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে নিয়োগ পরীক্ষা সংক্রান্ত গুজবের প্রেক্ষিতে গতকাল (১৬ মে) প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ সংক্রান্ত যে তথ্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে তা সম্পূর্ন বানোয়াট ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত। ডাক অধিদপ্তরের সেই বিজ্ঞপ্তিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে উক্ত তথ্যের দ্বারা প্রভাবিত না হওয়ার অনুরোধ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষরকারি ডাক অধিদপ্তরের পরিচালক (কর্মী ও সংস্থান) মো: আলতাফুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “আমরা পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেইনি। ২০২১ সালের ১২ জুলাই এ বিষয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল৷ পরীক্ষার তারিখ বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তারিখ প্রকাশে দেরি হবে।”
পরবর্তীতে ডাক অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে আলোচিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
মূলত, ডাক অধিদপ্তরের ‘উপজেলা পোস্ট মাস্টার’ পদের নিয়োগ পরীক্ষা আগামী ০৩ জুন অনুষ্ঠিত হবে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। ডাক অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এখনও ‘উপজেলা পোস্টমাস্টার’ পদের নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। বিষয়টি ডাক অধিদপ্তরের পরিচালক (কর্মী ও সংস্থান) মো: আলতাফুর রহমান রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, পূর্বে ইউনিসেফের স্বাস্থ্য প্রকল্পের ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ডাক অধিদপ্তরের ‘উপজেলা পোস্টমাস্টার’ পদে নিয়োগ পরীক্ষা আগামী ০৩ জুন অনুষ্ঠিত হবে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে ৫ সেনা সদস্য নিহত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং অপারেশন বালুচিস্তানে পাকিস্তানের ৭ সেনা নিহত হয়েছে এবং কোন দেশের সেনা তা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ না করে থাম্বনেইলে ঘূর্ণিঝড় মোখার দৃশ্যের সাথে বাংলাদেশের মানুষের লাশ এবং আহাজারির ছবি ব্যবহার করায় বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
গত ১৪ মে News Plus নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ‘ভয়াবহ মোখার হামলায় ৫ সেনা নিহত’ শীর্ষক শিরোনামে ও থাম্বনেইলে ঘূর্ণিঝড় মোখার দৃশ্যের সাথে বাংলাদেশের মানুষের লাশ এবং আহাজারির ছবি যুক্ত করে ৯ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়।
Screenshot: Facebook
ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এটি কয়েকটি প্রতিবেদন নিয়ে তৈরি একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিও। সেখানে কোথাও ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে সেনা নিহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। তবে ৯ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে ৫ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের সময় পাকিস্তানে অপারেশন বালুচিস্তানে ৭ সেনা নিহতের বিষয়ে সংবাদ পাঠ করা হয়। এবিষয়ে সংবাদ পাঠ ৫ মিনিট ১৯ সেকেন্ড থেকে শুরু হয়ে ৬ মিনিট ৪৩ সেকেন্ড পর্যন্ত চলে।
এবিষয়ে সংবাদপাঠে বলা হয়, পাক সেনাদের মৃত্যু নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। প্রেস বিবৃতিতে একথা জানানো হয়েছে। তাদের পরিবারের প্রতি তিনি সমবেদনা জানিয়েছেন। ১২ মে সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছিল জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জোরদার অভিযান। পাকিস্তানের উত্তর বালুচিস্তানের মুসলিম বাগ এলাকার ঘটনা। ১৩ মে সেই অপারেশন শেষ হল বলে খবর। মিলিটারি মিডিয়া উইং শনিবার এই বার্তা দিয়েছে। একাধিক পাক সংবাদ মাধ্যমে এনিয়ে সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে। ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশনসের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, একটি রেসিডেন্সিয়াল ব্লকে পণবন্দি করা রাখা হয়েছিল পরিবারকে। তিনটি পরিবারকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। জঙ্গিরা শিশুদেরও রেহাই দেয়নি। সব মিলিয়ে ৬জন জঙ্গি ছিল। পুরো অস্ত্রে সজ্জিত ছিল তারা। তাদের নিকেশ করা সম্ভব হয়েছে। এদিকে তাদের সঙ্গে আর কাদের যোগসূত্র রয়েছে সেটাও দেখা হচ্ছে। তাদের খোঁজেও চলছে তল্লাশি। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে অপারেশনের সময় সব মিলিয়ে সাতজন পাক সেনার মৃত্যু হয়েছে। একজন সিভিলিয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। অন্তত এক মহিলা সহ ৬জন জখম হয়েছেন। এদিকে কারা এই চক্রান্তের পেছনে রয়েছে তা দেখা হচ্ছে। পাক সেনাদের মৃত্যু নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। প্রেস বিবৃতিতে একথা জানানো হয়েছে। তাদের পরিবারের প্রতি তিনি সমবেদনা জানিয়েছেন। পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ জানিয়েছেন. জঙ্গিদের নিকেশ করতে পাক সেনারা সবরকমভাবে চেষ্টা করছে। গোটা দেশ সেনাদের পাশে রয়েছে। জখমদের সর্বোত্তম চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন তিনি।
পরবর্তীতে উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম Hindustan Times এর বাংলা সংস্করণে গত ১৩ মে ‘শেষ হল অপারেশন বালুচিস্তান, ৭ পাক সেনার মৃত্যু, নিকেশ ৬ জঙ্গি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Hindustan Times
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাক সেনাদের মৃত্যু নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। প্রেস বিবৃতিতে একথা জানানো হয়েছে। তাদের পরিবারের প্রতি তিনি সমবেদনা জানিয়েছেন। ১২ মে সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছিল জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জোরদার অভিযান। পাকিস্তানের উত্তর বালুচিস্তানের মুসলিম বাগ এলাকার ঘটনা। ১৩ মে সেই অপারেশন শেষ হল বলে খবর। মিলিটারি মিডিয়া উইং শনিবার এই বার্তা দিয়েছে। একাধিক পাক সংবাদ মাধ্যমে এনিয়ে সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে।
ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশনসের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, একটি রেসিডেন্সিয়াল ব্লকে পণবন্দি করা রাখা হয়েছিল পরিবারকে। তিনটি পরিবারকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। জঙ্গিরা শিশুদেরও রেহাই দেয়নি। সব মিলিয়ে ৬জন জঙ্গি ছিল। পুরো অস্ত্রে সজ্জিত ছিল তারা। তাদের নিকেশ করা সম্ভব হয়েছে।
এদিকে তাদের সঙ্গে আর কাদের যোগসূত্র রয়েছে সেটাও দেখা হচ্ছে। তাদের খোঁজেও চলছে তল্লাশি। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে অপারেশনের সময় সব মিলিয়ে সাতজন পাক সেনার মৃত্যু হয়েছে। একজন সিভিলিয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। অন্তত এক মহিলা সহ ৬জন জখম হয়েছেন।এদিকে কারা এই চক্রান্তের পেছনে রয়েছে তা দেখা হচ্ছে।
পাক সেনাদের মৃত্যু নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। প্রেস বিবৃতিতে একথা জানানো হয়েছে। তাদের পরিবারের প্রতি তিনি সমবেদনা জানিয়েছেন। পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ জানিয়েছেন. জঙ্গিদের নিকেশ করতে পাক সেনারা সবরকমভাবে চেষ্টা করছে। গোটা দেশ সেনাদের পাশে রয়েছে। জখমদের সর্বোত্তম চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন তিনি।
রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দাবিকৃত ভিডিওতে প্রতিবেদনের শেষ অংশ পর্যন্ত হুবহু পাঠ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রচারিত ভিডিওতে ব্যবহৃত এই সংবাদের অংশের ছবিও উক্ত প্রতিবেদন থেকে নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে কোনো সেনা সদস্যের নিহত হওয়ার বিষয়ে সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিও’র বিস্তারিত প্রতিবেদন এবং এবিষয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে ৫ সেনা সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনাটি সঠিক নয়।
মূলত, সম্প্রতি পাকিস্তানের অপারেশন বালুচিস্তানে ৭ সেনা নিহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে উক্ত ঘটনাটিকে বিকৃত করে ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে ৫ সেনা সদস্য নিহত হয়েছে দাবি করে নিউজ বুলেটিন ভিডিও’র থাম্বনেইলে ঘূর্ণিঝড় মোখার দৃশ্যের সাথে বাংলাদেশের মানুষের লাশ এবং আহাজারির ছবি ব্যবহার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে চটকদার ক্যাপশন এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে অধিক ভিউ পাবার আশায় উক্ত দাবিতে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে সাগরের মধ্যে আট বর্গ কিলোমিটার আয়তনের প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনে। রোববার(১৪ মে) বেলা দুইটা থেকে বিকেল সোয়া পাঁচটা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার তাণ্ডবে দ্বীপটির অন্তত ৯০০ কাঁচা ও টিনের আধা পাকা ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। ৪২০টি নারকেলগাছসহ অন্তত ৩ হাজার গাছগাছালির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে আহত হয়েছেন ১১ জন। এ ছাড়া জলোচ্ছ্বাসে দ্বীপটির উত্তর পাড়া, পশ্চিম পাড়া ও পূর্ব দিকের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে মোখার তাণ্ডবে সেন্টমার্টিনে দুই ব্যক্তি নিহত হওয়ার গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা সনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, পাকিস্তানে অপারেশন বালুচিস্তানে ৭ সেনা নিহতের ঘটনার সাথে ঘূর্ণিঝড় মোখার ভিন্ন একটি সংবাদ পাশাপাশি রেখে ‘ভয়াবহ মোখার তাণ্ডবে ৫ সেনা নিহত’ শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে ঘূর্ণিঝড় মোখার দৃশ্যের সাথে বাংলাদেশের মানুষের লাশ এবং আহাজারির ছবি যুক্ত করে প্রচার করা হচ্ছে ; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি “ম্যারাডোনার জার্সিতে লেখা ‘নো ড্রাগস’, প্লাতিনির জার্সিতে লেখা ‘নো করাপশন’।” শীর্ষক শিরোনামে ম্যারাডোনা ও প্লাতিনির একটি ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়,এই ছবিতে ম্যারাডোনার জার্সিতে No Drug লেখা থাকার বিষয়টি সত্য হলেও প্লাতিনির জার্সিতে No Corruption লেখা থাকার বিষয়টি সঠিক নয় বরং প্লাতিনির জার্সিতেও ফরাসি ভাষায় নো ড্রাগস লেখা ছিল।
কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ফ্রান্সের ফুটবল ক্লাব Nancy Lorraine এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই “Were you at the Platini Jubilee?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot from Nancy Lorraine
প্রতিবেদনে থাকা ছবিটিতে দেখা যায়, আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার ম্যারাডোনার জার্সিতে ইংরেজিতে ‘No DRUG’ লেখা এবং ফরাসি ফুটবলার মিশেল প্লাতিনির জার্সিতে ফরাসী ভাষায় ‘DROGUE NO’ লেখা।
পরবর্তীতে মিশেল প্লাতিনির জার্সিতে ফরাসী ভাষায় ‘DROGUE NO’ শব্দটি অনুবাদ করে দেখা যায়, এটির অর্থ ‘Drug no’ বা মাদক নয়।
Screenshot from Google
অর্থাৎ, ম্যারাডোনার জার্সির মতোই মিশেল প্লাতিনির জার্সিতেও মূলত No Drug-ই লেখা।
এখানেও প্লাতিনির জার্সিতে একই লেখা অর্থাৎ ‘DROGUE NO’ বা মাদক নয় শব্দগুচ্ছই খুঁজে পাওয়া যায়।
উপরিউক্ত ছবিটি দুইটির কোথাও প্লাতিনির জার্সিতে ‘No Corruption’ শব্দগুচ্ছ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, সম্প্রতি “ম্যারাডোনার জার্সিতে লেখা ‘নো ড্রাগস’, প্লাতিনির জার্সিতে লেখা ‘নো করাপশন’।” শীর্ষক শিরোনামে ম্যারাডোনা ও প্লাতিনির একটি ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি পুরোপুরি সত্য নয়। ফ্রান্সের ন্যান্সি স্টেডিয়ামে প্লাতিনির পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় হিসাবে ক্যারিয়ারের সমাপ্তি উদযাপন করার জন্য ১৯৮৮ সালের ২৩ মে একটি বিদায়ের আয়োজন করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানে ব্রাজিলের কিংবদন্তি পেলেকে মাঝে রেখে ইংরেজিতে ‘NO DRUG’ বা ‘মাদক নয়’ লেখা জার্সিতে আর্জেন্টিনার ম্যারাডোনা, ও ফরাসি ভাষায় ‘DROGUE NO’ বা ‘মাদক নয়’ লেখা জার্সিতে ফ্রান্সের মিশেল প্লাতিনির একটি ছবি তোলা হয়। এই আয়োজনের কোথাও প্লাতিনির জার্সিতে ‘No Corruption’ শব্দগুচ্ছ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, পূর্বেও এই বিষয়টি নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আফ্রিকায় অদ্ভুত ডানাওয়ালা সাপ ধরা পড়ার দাবিতে প্রচারিত ছবিটি বাস্তব নয় বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি সাপের ছবিকে বাস্তব দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে অনলাইন গ্রাফিক্স ডিজাইন সম্পর্কিত ওয়েবসাইট ‘Deviantart’ এ ‘kuramay’ নামক অ্যাকাউন্টে ২০১০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ‘Winged Snake’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত ছবির সাথে আলোচিত ছবিটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot collage: Rumor Scanner
ছবিটির বিস্তারিত অংশ থেকে জানা যায়, ‘kuramay’ অ্যাকাউন্টের ব্যক্তি একটি ডানাওয়ালা সাপ বানাতে চেয়েছিলেন এবং এই ছবিটি কম্পিউটার গ্রাফিক প্রকল্পের জন্য করা হয়েছিল।
Screenshot from Deviantart website
উক্ত ছবির বিস্তারিত অংশে সাপ এবং পাখা সংগ্রহের সোর্স দেওয়া আছে।
Screenshot from Deviantart website
এছাড়া ডানাসহ সাপের ছবিটিতে ডানার ছবিটি উল্টোদিকে অবস্থান করছে এমন দাবিতে এক ব্যক্তিকে ছবির পোস্টে মন্তব্য করলে ‘kuramay’ নামক অ্যাকাউন্টধারী জানান, তিনি এই ছবিটি ক্লাস প্রজেক্টের জন্য বানিয়েছিলেন এবং স্টক ইমেজ সাইট থেকে সঠিক ছবি খুঁজে না পাওয়ায় এমন হয়েছে।
Screenshot from Deviantart website
অধিকতর অনুসন্ধানে আফ্রিকায় ডানাসহ সাপের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে শীর্ষক কোনো তথ্য ইন্টারনেটে নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে পাওয়া যায়নি।
মূলত, সম্প্রতি আফ্রিকায় অদ্ভুত ডানাওয়ালা একটি সাপ ধরা পড়েছে দাবিতে একটি ডানাসহ সাপের ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি বাস্তব কোনো সাপের নয় এবং আফ্রিকায় এমন অদ্ভুত ডানাওয়ালা কোনো সাপও ধরা পড়েনি। ২০১০ সালে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে এক ব্যক্তি ডানাসহ সাপের উক্ত ছবিটি একটি অনলাইন সাইটে প্রকাশ করেন। সম্প্রতি সেই ছবিটিই আফ্রিকায় অদ্ভুত ডানাওয়ালা সাপ ধরা পড়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, পূর্বেও ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার করে বিভিন্ন ছবি বাস্তব দাবিতে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, ডিজিটাল প্রযুক্তিতে তৈরি সাপের ছবিকে বাস্তব দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
একই ছবি ব্যবহার করে ইউটিউবের থাম্বনেইল সম্বলিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)
একই ছবি চলতি বছরের জানুয়ারিতে কঙ্গোর মাটিধ্বসের ঘটনা দাবিতে প্রচার করেছে ডেইলি বাংলাদেশ।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কঙ্গোতে সাম্প্রতিক ভূমিধসের খবরে গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০১৯ সালে কঙ্গোতে ভারী বর্ষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের ছবি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম TRT World এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন এবং ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, সে সময় কঙ্গোতে ভারী বর্ষণের ফলে বহু মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় একাধিক সড়ক। দেশটির লেম্বা জেলায় উক্ত ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের ছবি এটি।
Screenshot source: Trt World
পরবর্তীতে ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘Getty Images’ এর ওয়েবসাইটে একই দিন (২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর) প্রকাশিত মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। সংবাদ সংস্থা এএফপির জন্য ছবিটি তুলেছিলেন আঙ্গে কাসোঙ্গো।
Screenshot source gettyimages
অর্থাৎ, কঙ্গোতে সাম্প্রতিক ভূমিধসের খবরে গণমাধ্যমে তিন বছরের পুরোনো ছবি প্রচার করা হয়েছে।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। বরং কিছু গণমাধ্যম ছবিটি সংগৃহিত এবং কোনো কোনো গণমাধ্যম ছবির ক্যাপশনে কিছুই লিখে নি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিটি ব্যবহার করে সংগৃহিত উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্যই উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবে ছবিটি সাম্প্রতিক ভূমিধসের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হওয়া অমূলক নয়।
কঙ্গোর ভূমিধস বিষয়ে সময় টিভির টাইপিংয়ে গন্ডগোল?
সময় টিভির ওয়েবসাইটে কঙ্গোতে সাম্প্রতিক ভূমিধসের ঘটনা প্রসঙ্গে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভূমিধস ঘটেছে গত ০২ মার্চ রবিবার।
Screenshot source somoynews
কিন্তু গত ০২ মার্চ রবিবার ছিল না। ছিল মঙ্গলবার।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কঙ্গোতে ভূমিধসের ঘটনাটি ঘটেছে গত ০২ এপ্রিল রবিবার।
মূলত, গত ০২ এপ্রিল কঙ্গোতে ভূমিধসের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার একটি ছবি প্রচারের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। ২০১৯ সালে কঙ্গোতে ভারী বর্ষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সড়কের ছবি এটি। গণমাধ্যমের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিটির ক্যাপশনে পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য না দেওয়ায় ছবিটি সাম্প্রতিক ভূমিধসের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে।
সুতরাং, কঙ্গোতে সাম্প্রতিক সময়ে ভূমিধসের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে পুরোনো ঘটনার ছবি প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি ‘ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যেই বিএনপি-আ’লীগ মারামারি, লাশের মিছিল দেখুন’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় চলাকালে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো মারামারি ক ঘটনা ঘটেনি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশের আলাদা সংবাদের সাথে ঘূর্ণিঝড় মোখার সংবাদ এবং ইসরাইলের হামলায় ৪ দিনে ৩৩ ফিলিস্তিনি নিহতের সংবাদ পাশাপাশি রেখে প্রচার করায় বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
গত ১৩ মে News Plus নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ‘ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যেই বিএনপি-আ’লীগ মারামারি, লাশের মিছিল দেখুন’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইলে ঘূর্ণিঝড় মোখার দৃশ্যের সাথে বাংলাদেশের মানুষের লাঠি হাতে রাস্তায় নামার ছবি যুক্ত করে ৭ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়।
Screenshot: Facebook
ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় এটি কয়েকটি প্রতিবেদন নিয়ে তৈরি একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিও। উক্ত ভিডিওটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে সেখানে কোথাও ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে আওয়ামী ও বিএনপি মারামারিতে লাশের মিছিল সম্পর্কিত কোনো সংবাদ পাঠ করা হয়নি। তবে বিস্তারিত সংবাদ পাঠের ৪ মিনিট ৩২ সেকেন্ড থেকে ৫ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড অংশে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশের বিষয়ে বলা হয়।
এবিষয়ে সংবাদপাঠে বলা হয়, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ দাবি, নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দফা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানোর দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে বিএনপি। শনিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠে। দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। দুপুর ২টায় সমাবেশ ও মিছিল শুরুর কথা থাকলেও বেলা ১টার পর থেকে নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকে নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বিভিন্ন ইউনিটের ছোট ছোট মিছিল আসতে থাকে। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠছে নয়াপল্টন। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য, সিনিয়র সদস্য ও অঙ্গ সংগঠন নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। সঞ্চালনায় থাকবেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু।
উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে গত ১৩ মে মূলধারার গণমাধ্যম ঢাকা টাইমস এর অনলাইন সংস্করণে
‘নয়াপল্টনে জড়ো হচ্ছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Dhaka Times
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ দাবি, নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দফা ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানোর দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে বিএনপি। শনিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠে। দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। দুপুর ২টায় সমাবেশ ও মিছিল শুরুর কথা থাকলেও বেলা ১টার পর থেকে নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকে নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বিভিন্ন ইউনিটের ছোট ছোট মিছিল আসতে থাকে। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠছে নয়াপল্টন। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য, সিনিয়র সদস্য ও অঙ্গ সংগঠন নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। সঞ্চালনায় থাকবেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু।
রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, ঢাকা টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দাবিকৃত ভিডিওতে প্রতিবেদনের শেষ অংশ পর্যন্ত হুবহু পাঠ করা হয়েছে।
এছাড়াও ভিডিও’র ৫ মিনিট ৩৮ সেকেন্ড থেকে ৬ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড অংশে ইসরাইলের হামলায় ৪ দিনে ৩৩ ফিলিস্তিনি নিহতের বিষয়ে সংবাদ পাঠ করা হয়।
এবিষয়ে সংবাদপাঠে বলা হয়, “অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বিমান হামলায় আরও অন্তত তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। এ নিয়ে গত চার দিনে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৪৭ জন আহত হয়েছেন। খবর বিবিসি, আল জাজিরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, সর্বশেষ ইসরাইলি বিমান হামলায় ফিলিস্তিন ইসলামিক জিহাদের ষষ্ঠ সিনিয়র নেতা নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত চার দিনে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ৩৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ১৪৭ জন।”
খবরে বলা হয়েছে, “শুক্রবারের সর্বশেষ বিমান হামলাটি চালানো হয় গাজার আন-নাসর এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্টে। হামলায় নিহতদের মধ্যে ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের সামরিক শাখা আল-কুদস ব্রিগেডের একজন কমান্ডার রয়েছেন। নিহত কমান্ডারের আইয়াদ আল-আব্দ আল-হাসানি ওরফে আবু আনাস বলে জানিয়েছে প্রতিরোধ সংগঠনটি। গাজাভিত্তিক সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার ভোররাত থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ছয় শিশু ও তিন নারী রয়েছেন। এ ছাড়া ১৪৭ জন আহত হয়েছেন।অপরদিকে ইসরাইলি বাহিনী গাজার আবাসিক এলাকাগুলো যে হামলা চালিয়েছে, তার প্রতিশোধ স্বরূপ ইসরাইলের গভীরে রকেট হামলা চালিয়েছে প্রতিরোধ সংগঠনগুলো।”
পরবর্তীতে উক্ত প্রতিবেদনের সূত্রধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম যুগান্তরের অনলাইন সংস্করণে গত ১৩ মে ‘৪ দিনে ইসরাইলি হামলায় ৩৩ ফিলিস্তিনি নিহত’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Jugantor
প্রতিবেদনে বলা হয়, “অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বিমান হামলায় আরও অন্তত তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। এ নিয়ে গত চার দিনে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৪৭ জন আহত হয়েছেন। খবর বিবিসি, আল জাজিরা।”
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, “সর্বশেষ ইসরাইলি বিমান হামলায় ফিলিস্তিন ইসলামিক জিহাদের ষষ্ঠ সিনিয়র নেতা নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত চার দিনে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ৩৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ১৪৭ জন।”
খবরে বলা হয়েছে, “শুক্রবারের সর্বশেষ বিমান হামলাটি চালানো হয় গাজার আন-নাসর এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্টে। হামলায় নিহতদের মধ্যে ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের সামরিক শাখা আল-কুদস ব্রিগেডের একজন কমান্ডার রয়েছেন। নিহত কমান্ডারের আইয়াদ আল-আব্দ আল-হাসানি ওরফে আবু আনাস বলে জানিয়েছে প্রতিরোধ সংগঠনটি।”
গাজাভিত্তিক সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “গত মঙ্গলবার ভোররাত থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ছয় শিশু ও তিন নারী রয়েছেন। এ ছাড়া ১৪৭ জন আহত হয়েছেন।
অপরদিকে ইসরাইলি বাহিনী গাজার আবাসিক এলাকাগুলো যে হামলা চালিয়েছে, তার প্রতিশোধ স্বরূপ ইসরাইলের গভীরে রকেট হামলা চালিয়েছে প্রতিরোধ সংগঠনগুলো।”
রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দাবিকৃত ভিডিওতে প্রতিবেদনের শেষ অংশ পর্যন্ত হুবহু পাঠ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রচারিত ভিডিওতে ব্যবহৃত এই সংবাদের অংশের ছবিও উক্ত প্রতিবেদন থেকে নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি, মূল ধারার গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় চলাকালে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো মারামারিরসংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিও’র বিস্তারিত প্রতিবেদন এবং এবিষয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, ঘূর্ণিঝড়ের সময় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে মারামারি এবং এতে লাশের মিছিল নিয়ে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।
মূলত, সম্প্রতি নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ এবং ইসরাইলের হামলায় ৪ দিনে ৩৩ ফিলিস্তিনির নিহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে উক্ত ঘটনা দুইটিকে পাশাপাশি প্রচার করতে গিয়ে একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিওতে ‘ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যেই বিএনপি-আ’লীগ মারামারি, লাশের মিছিল দেখুন’ শীর্ষক অপ্রাসঙ্গিক শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে ঘূর্ণিঝড়ের দৃশ্যের সাথে বাংলাদেশের মানুষের লাঠি হাতে রাস্তায় নামার ছবি যুক্ত করে ব্যবহার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে চটকদার ক্যাপশন এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে অধিক ভিউ পাবার আশায় উক্ত দাবিতে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ মে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় ভূমিকা রাখতে সিরাজগঞ্জে বেলকুচিতে ছাত্রলীগের ডাকা সমাবেশে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয় এবং এতে ১৭ জন আহত হয়েছে বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এসব ঘটনা নিয়ে পূর্বেও ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ এবং ইসরাইলের হামলায় ৪ দিনে ৩৩ ফিলিস্তিনির নিহতের ঘটনার দুইটি সংবাদকে পাশাপাশি রেখে ‘ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যেই বিএনপি-আ’লীগ মারামারি, লাশের মিছিল দেখুন’ শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে ঘূর্ণিঝড়ের দৃশ্যের সাথে বাংলাদেশের মানুষের লাঠি হাতে রাস্তায় নামার ছবি যুক্ত করে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।