Home Blog Page 605

কাজী নজরুল ইসলাম মহাভারত লিখেছেন শীর্ষক মন্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেননি

0

সম্প্রতি, “কাজী নজরুল ইসলাম মহাভারত লিখেছেন। বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়…!” শিরোনামে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাভারত কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন বলেননি কিংবা বোঝাননি বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে ভুলভাবে নিয়ে প্রেক্ষাপটের বাইরে বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার করা হয়েছে।  

অনুসন্ধানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর অফিশিয়াল  ফেসবুক পেজে উক্ত দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া বক্তব্যের পুরো ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot : Mamata Banerjee/FB

দেখা যায় ৪৯ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের এ ভিডিওটির ৩৮ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর বলা বক্তব্যকে ভুলভাবে নিয়ে বক্তব্যের খণ্ডাংশ প্রেক্ষাপটের বাইরে নিয়ে আলোচ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করতে ভিডিওটির পূর্ববর্তী অংশ পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রবীন্দ্রনাথ পড়ুন ও জানুন, বিবেকানন্দ পড়ুন ও জানুন, নজরুল পড়ুন ও জানুন, বিরসা মুন্ডা পড়ুন ও জানুন, রঘুমাথ মুর্মু পড়ুন ও জানুন, মতুয়া ঠাকুর পড়ুন ও জানুন, রাজবংশীদের পঞ্চানন বর্মা পড়ুন ও জানুন, ভালো করে.. মহাভারত (এখানে তিনি মূলত মহাভারত পড়ুন ও জানুন বুঝিয়েছেন, যদিও পড়ুন ও জানুন এক্ষেত্রে বলেননি)…”

এরপর ছোট একটি বিরতি দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাজী নজরুল ইসলাম এর একটি কবিতার উদ্ধৃতি দিতে গিয়ে বলেছেন, “নজরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘কোরান-পুরাণ-বেদ-বেদান্ত-বাইবেল-ত্রিপিটক-জেন্দাবেস্তা-গ্রন্থসাহেব প’ড়ে যাত,যত সখ”…

প্রকৃতপক্ষে তিনি এখানে মহাভারত কাজী নজরুল লিখেছেন বোঝাননি, তিনি ‘মহাভারত’ শব্দটি উচ্চারণের পর ছোট একটি বিরতি দিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের সাম্যবাদী কবিতার দুটি লাইন পাঠ করার আগে ‘কাজী নজরুল লিখেছেন’ কথাটি বলেছেন। এই বিষয়টিকেই ভুল বুঝে তার আগের এবং পরের এই দুই কথাকে এক ধরে নিয়ে ‘মহাভারত কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন’ শীর্ষক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে এবং বক্তব্যের এই অংশটির খণ্ডিত অংশ প্রেক্ষাপটের বাইরে নিয়ে বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার করা হয়েছে।

অর্থাৎ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার বক্তব্যে ‘মহাভারত কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন’ এমন কিছু বোঝাননি বরং তিনি উপস্থিত সকলকে বিখ্যাত কিছু লেখকদের নাম উল্লেখ করে পড়তে ও জানতে বলার পাশাপাশি মহাভারত পড়তে ও জানার কথা বুঝিয়েছেন এবং তারপরই কাজী নজরুল ইসলাম এর কবিতার উদ্ধৃতি দিতে গিয়ে ‘কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন বাক্যাংশটি’ উল্লেখ করে কবিতার দুই লাইন পাঠ করেছেন। 

মূলত, ২৮ আগস্ট Trinamool Chhatra Parishad (TMCP) এর প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দেন। সেখানে তার দেওয়া বক্তব্যকে ভুলভাবে নিয়ে সেই বক্তব্যের খণ্ডাংশকে প্রেক্ষাপটের বাইরে নিয়ে কাজী নজরুল ইসলাম মহাভারত লিখেছেন শীর্ষক বক্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছেন দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাজী নজরুল ইসলাম মহাভারত লিখেছেন বোঝাননি বা বলেননি বরং তার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র

জেবা চৌধুরী জয়ার সাজা; গণমাধ্যমে এলো অভিনেত্রী জেবা জান্নাতের ছবি 

সম্প্রতি, প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের মামলায় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী জেবা চৌধুরী জয়া ওরফে ফরিদা পারভীনকে আদালত কর্তৃক সাজা দেওয়ার ঘটনায় গণমাধ্যম ও  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছবি দাবিতে কিছু ছবি প্রচার করা হচ্ছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন ছবিযুক্ত প্রতিবেদন দেখুন সমকাল, ইনডিপেন্ডেন্ট টিভি, বাংলা নিউজ২৪, আজকের পত্রিকা, মানবকণ্ঠ, ডেইলি বাংলাদেশ ,ঢাকা পোস্ট, ঢাকা মেইল, ভোরের ডাক, বিডি২৪রিপোর্ট, নিউজ জি২৪, বিজনেস বাংলাদেশ, রিদ্মিক নিউজ, বাহান্ন নিউজ, একুশে সংবাদ, ডেইলি করতোয়া,  স্টার সংবাদ, বাংলাদেশ মোমেন্টস, রেডিও টুডে, বিজনেস জার্নাল২৪, আমার বার্তা, সংবাদ সারাবেলা, ডেল্টা টাইমস, সিভয়েজ২৪, দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন, স্বাধীন আলো, এমটিনিউজ২৪, দৈনিক সরোবর, ডিজিটাল বাংলা নিউজ। 

একই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করে পরবর্তীতে সংবাদটি সংশোধন করে নিয়েছে চ্যানেল২৪, বিডিনিউজ২৪, বাংলা ট্রিবিউন, দেশ টিভি, সময় টিভি, কালবেলা, এবিনিউজ২৪, বাংলাদেশ জার্নাল। তবে এই গণমাধ্যমগুলোতে ভুল ছবি সম্বলিত উক্ত সংবাদের উপস্থিতি এখনো ইন্টারেনেট পাওয়া যায়।  

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট  (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতারণার মামলায় আদালত কর্তৃক কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে অভিনেত্রী জেবা চৌধুরী জয়া ওরফে ফরিদা পারভীন দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিগুলো জেবা চৌধুরীর নয় বরং এগুলো আরেক অভিনেত্রী জেবা জান্নাতের ছবি। 

বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে গত ৩০ আগস্ট অভিনেত্রী জেবা জান্নাতের ফেসবুক পেজে ‘These all are fake news (আর্কাইভ)’ শীর্ষক শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Jeba Jannat Facebook Post

পোস্টটিতে জেবা জান্নাত বেশ কিছু গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট উল্লেখ করে লিখেন, “এগুলা সব ভুয়া সংবাদ। আমি জানি না, কেন তারা আমার ছবি ব্যবহার করছে। আমি জেবা চৌধুরী না। আমি এসব নিউজ চ্যানেলের বিরুদ্ধে মামলা করবো। এটা অপরাধ, কেন তারা আমার ছবি ব্যবহার করছে?”

পাশাপাশি জেবা জান্নাতের ফেসবুক পেজেই  অনলাইন পোর্টাল বিডি২৪লাইভকে দেওয়া তার একটি সাক্ষাতকারও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Jeba Jannat Facebook Page

যেখানে জেবা জান্নাত বলেন, নিউজগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে ফরিদা পারভীন ওরফে জেবা চৌধুরী নাম। আর আমার নাম তো জেবা জান্নাত। নিউজগুলোতে অন্য কারো ছবি দিতে গিয়ে আমার ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। কোনো ভেরিফায়েড নিউজ চ্যানেল যখন নিউজ করবে তখন তাদের তো সবকিছু নিশ্চিত হয়ে নিউজ করা উচিত। তারা গুগলে সার্চ করছে জেবা লিখে। সার্চে আমার ছবিটা পেয়েছে, সুন্দর করে আপলোড করে দিয়েছে।

অভিনেত্রী জেবা জান্নাতের এই পোস্টগুলো থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, অভিনেত্রী জেবা চৌধুরীকে আদালত কর্তৃক কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় গণমাধ্যম তার ছবি ভুলভাবে ব্যবহার করেছে।

প্রকৃত জেবা চৌধুরীর ছবি

এ পর্যায়ে রিউমর স্ক্যানার টিম আদালত কর্তৃক কারাদণ্ডপ্রাপ্ত প্রকৃত জেবা চৌধুরীর ছবি অনুসন্ধান করে। 

এতে জাতীয় দৈনিক ইনকিলাবে গত ৩০ আগস্ট ‘প্রতারণার মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ড হলো অভিনেত্রী জেবার’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত প্রকৃত জেবা চৌধুরীর ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Daily Inqilab

পরবর্তীতে জেবা চৌধুরীর ছবিটির বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক যায়যায়দিনের ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ‘মিশা সওদাগরের উপর ক্ষোভের কারণ জানালেন জয়া চৌধুরী‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

এই ভিডিও প্রতিবেদন থেকে নেওয়া একটি স্ক্রিনশটের সাথে ইনকিলাবে প্রকাশিত ছবিটি মিলিয়ে প্রকৃত জেবা চৌধুরী সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। 

Image Comparison: Rumor Scanner 

জেবা চৌধুরী ওরফে জয়া চৌধুরীর কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে। 

Image: Rumor Scanner 

এছাড়া গণমাধ্যমে দাবিকৃত জেবা চৌধুরীর সাথে আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত প্রকৃত জেবা চৌধুরীর ছবির তুলনামূলক বিশ্লেষণ দেখুন-

Image Comparison: Rumor Scanner 

মূলত, গত ৩০ আগস্ট প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা একটি  মামলায় চলচ্চিত্র নায়িকা হিসেবে পরিচয়দানকারী জেবা চৌধুরী জয়া ওরফে ফরিদা পারভীনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানাসহ তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে এ রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এ ঘটনায় দেশের একাধিক গণমাধ্যমে তার ছবি হিসেবে অভিনেত্রী জেবা জান্নাতের ছবি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তবে পরবর্তীতে জেবা জান্নাত এই ছবিগুলো তার এবং তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত নন উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিশ্চিত করেন।

সুতরাং, প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত অভিনেত্রী জেবা চৌধুরী জয়ার জায়গায় জেবা জান্নাত নামে ভিন্ন আরেক অভিনেত্রীর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

তারেক রহমানকে নিয়ে দেওয়া নুরুল হক নুরের বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার 

সম্প্রতি, গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুরের বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক প্রচার করা হচ্ছে।

ভিডিওতে নুরুল হক নুরকে বলতে শোনা যাচ্ছে, তারেক রহমানের পরিচয় কী? তারেক রহমান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক এই দেশের মানুষ যখন দিকভ্রান্ত ছিলো, অস্থির ছিলো কী করবে।

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গণঅধিকার পরিষদ নেতা নুরুল হক নুর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং নুরুল হক নুরের দেওয়া দীর্ঘ একটি বক্তব্যের অংশবিশেষ কেটে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধানের মাধ্যমে Bangladesh Nationalist Publicity Party এর পেজে গত ২৩ আগস্ট “ডিআরইউ থেকে সরাসরি ২৩ আগস্ট, ২০২৩ বুধবার “সাংবিধানিক মৌলিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা” শীর্ষক গণঅধিকার পরিষদের আয়োজনে আলোচনা সভা। প্রধান অতিথিঃ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহাসচিব, বিএনপি।” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি লাইভ ভিডিও (আর্কাইভ) পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook 

২ ঘন্টা ৩১ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ১ ঘন্টা ৫২ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে বক্তব্য দিতে মঞ্চে উঠেন নুরুল হক নুর। ১ ঘন্টা ৫৯ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডে তিনি বলেন, তারেক রহমানের পরিচয় কী? তারেক রহমান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক এই দেশের মানুষ যখন দিকভ্রান্ত ছিলো, অস্থির ছিলো কী করবে, কী না করবে বুঝতে পারছিল না। আওয়ামী লীগের নেতারা যখন আত্মগোপনে চলে গিয়েছিল তারেক রহমানের বাবা মেজর জিয়াউর রহমান সেই সময় এই জাতিকে হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালার মত জাতিকে স্বাধীনতার ডাক দিয়ে জাতিকে উদ্ভুদ্ধ করেছিলেন। তারপর এই দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়, সংকটকালীন সময় এই দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন…।

অর্থাৎ, নুরুল হক নুর তার মূল বক্তব্যে তারেক রহমানের পরিচয় দিতে গিয়ে জিয়াউর রহমানের কথা বলেন। কিন্তু, ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটিতে মূল বক্তব্যের আগে ও পরের বক্তব্য বাদ দিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। 

মূলত, গত ২৩ আগস্ট “সাংবিধানিক মৌলিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা” শীর্ষক একটি আলোচনা সভায় গণ অধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর একটি দীর্ঘ বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি তারেক রহমানের পরিচয় দিতে গিয়ে তারা বাবা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বলেন৷ তবে, সম্প্রতি নুরুল হক নুরের দীর্ঘ বক্তব্যের কিছু অংশ কেটে “তারেক রহমানের পরিচয় কী? তারেক রহমান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক এই দেশের মানুষ যখন দিকভ্রান্ত ছিলো, অস্থির ছিলো কী করবে।” শীর্ষক খণ্ডিত অংশটুকু বিকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে। যার ফলে আলোচিত বক্তব্যটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা এবং গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের বক্তব্য বিকৃত করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

সুতরাং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গণ অধিকার পরিষদের নুরুল হক নুরের দেওয়া এক দীর্ঘ বক্তব্যের একটি খণ্ডিত অংশ বিকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে।

তথ্যসূত্র

ভারতে শুঁয়োপোকার হুলে দুজনের মৃত্যুর দাবিটি সত্য নয় 

সম্প্রতি, ভারতে বিষাক্ত শুঁয়োপোকার হুলে মৃত্যু সম্পর্কিত কিছু পোস্ট এবং মৃত্যুবরণকারী দুইজন ব্যক্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। যেখানে ছবির দুই ব্যক্তিকে বিষাক্ত পোকার হুলে মারা যাওয়ার দাবি করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে( আর্কাইভ) ,এখানে ( আর্কাইভ) এবং এখানে ( আর্কাইভ

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলোতে যে দুইজন মৃত ব্যক্তির ছবি প্রচার করা হয়েছে, তারা শুঁয়োপোকার হুলে বা কামড়ে মারা যাননি বরং ছবি দুটি বজ্রপাতে মারা যাওয়া দুজন ব্যক্তির ছবি। এখানে শুঁয়োপোকার সাথে তাদের মারা যাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘Team AZN’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৭ জুলাই প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। “The worm that kills 3 people in 5 minutes?? What is the matter after all…#truth” (অনূদিত) শিরোনামে ঐ ভিডিওটির আলোচ্য বিষয়ের সাথে ফেসবুকে প্রচারিত দাবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : Team AZN /YT

ভিডিওতে পোকার কামড়ে মানুষ মারা যাওয়ার দাবিটি খণ্ডন করতে দেখা যায়। ভিডিও থেকে জানা যায় ঘটনাটিকে অনেকে ভারতের কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র বা তেলেঙ্গানার বলে প্রচার করছেন। বজ্রপাতের কারনে মৃত্যুবরন করা ব্যক্তিদের আশেপাশের গাছে শুঁয়োপোকা থাকার কারনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষজন পোকার কামড়ে তাদের মৃত্যু দাবিসহ বিভিন্ন তথ্য প্রচার করছে বলে তিনি জানান। 

পরবর্তী অনুসন্ধানে মহারাষ্ট্রের স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেল Aadhar News এ ২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ‘চালিসগাঁওয়ে বজ্রপাতে পিতা-পুত্র নিহত হয়েছেন(অনূদিত)’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করে জানা যায়, ২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ৪৫ বছর বয়সী কৃষক এবং তার ১৪ বছর বয়সী ছেলে বজ্রপাতের সময় একটি গাছের নীচে আশ্রয় নেওয়ার পরে বজ্রপাতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

Screenshot : Aadhar News/YT

উক্ত প্রতিবেদনে প্রকাশিত ছবিগুলোর সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ছবিগুলোর হুবহু মিল পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে একটি টুইটার অ্যাকাউন্টের টুইটে মৃত ঐ দুই ব্যক্তির ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বরের সেই টুইটে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীকে ট্যাগ করে বাবা এবং ছেলের বজ্রপাতে নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। 

Screenshot : X

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম Maharashtra Times এ উক্ত ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও তাদের বজ্রপাতে নিহত হওয়ার একই তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : Maharashtra Times 

অর্থাৎ, যে ছবি দুটি প্রচার করে তাদের পোকার হুলে বা কামড়ে মারা যাওয়ার দাবি করা হয়েছে তারা মূলত বজ্রপাতের আঘাতে মারা গেছেন।

মূলত, ২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ভারতের মহারাষ্ট্রের জলগাঁওতে বজ্রপাতে নিহত বাবা এবং ছেলের মাটিতে পড়ে থাকা মৃতদেহের ছবি প্রচার করার মাধ্যমে তাদের পোকার হুলে বা কামড়ে মারা যাওয়ার ভুয়া দাবি করা হয়েছে।

সুতরাং, প্রচারিত ছবির ব্যক্তি দুজনের বিষাক্ত শুঁয়োপোকার হুলে মৃত্যু হওয়ার দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ডিবিসি নিউজের ফটোকার্ড নকল করে তসলিমা নাসরিনের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

সম্প্রতি, ‘সানি লিওনকে চরিত্রহীন বললেন তসলিমা নাসরিন’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘ডিবিসি নিউজ’ এর লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বলিউড অভিনেত্রী সানি লিওনকে নিয়ে লেখক তসলিমা নাসরিনের মন্তব্য দাবিতে ভাইরাল এই ফটোকার্ডটি ডিবিসি নিউজের নয়। বরং ডিবিসি নিউজের ফেসবুক পেজ থেকে একটি ফটোকার্ড নিয়ে তাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে তসলিমা নাসরিন ও সানি লিওনের ছবি এবং উক্ত শিরোনাম যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

গুজবের সূত্রপাত

অনুসন্ধানের শুরুতে এডভান্স কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই দাবিতে ২০২০ সালের ২৩ এপ্রিল AlD for MEN নামের একটি ফেসবুকে পেজে প্রকাশিত একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Claim post

সাম্প্রতিক সময়ে অর্থাৎ গত ২৬ আগস্ট ঐ একই পেজ থেকে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসি নিউজের ফটোকার্ডের আদলে উক্ত তথ্যটি পুনরায় প্রচার হওয়ার পর বিষয়টি ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

Screenshot: Claim post

ডিবিসি নিউজ কি এমন কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেছে?

অনুসন্ধানের এই পর্যায়ে ডিবিসি নিউজের প্রচারিত ফটোকার্ডটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Image: Facebook

এতে আলোচিত ফটোকার্ড এবং ডিবিসিতে প্রকাশিত অন্যান্য ফটোকার্ডের শিরোনামের ফন্টের সুস্পষ্ট পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

Comparison: Rumor Scanner

ডিবিসির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রচারিত প্রতিটি ফটোকার্ডের শিরোনাম লেখার ফন্ট এবং আলোচিত ফটোকার্ডের ফন্ট ভিন্ন। এছাড়াও ডিবিসির প্রকাশিত ফটোকার্ডে শিরোনাম লেখার ক্ষেত্রে সাধারণত লাল এবং কালো এই ‍দুই রঙের ফন্ট দেখা যায়। যা আলোচিত ফটোকার্ডের ক্ষেত্রে অনুপস্থিত।

পরবর্তী অনুসন্ধানে গত ৩ মাসের ডিবিসির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত নিউজগুলো পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত সময়ের মাঝে ডিবিসি নিউজে তাদের নিয়ে কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম ডিবিসি নিউজের সাথে যোগাযোগ করলে ফটোকার্ডটিকে মিথ্যা উল্লেখ করে তারা জানান, “সর্বশেষ গত ১২ মার্চ সানি লিওনকে শিরোনাম করে নিউজ প্রকাশ করা হয়। এরপর ডিবিসি নিউজে সানি লিওনের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়নি।” 

অর্থাৎ, বলিউড অভিনেত্রী সানি লিওনকে লেখক তসলিমা নাসরিনের চরিত্রহীন বলার দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ডিবিসি নিউজের নয়। 

তসলিমা নাসরিন কি সানি লিওনকে নিয়ে এমন কোনো মন্তব্য করেছেন?

উক্ত বিষয়টি যাচাইয়ে প্রথমেই লেখক তসলিমা নাসরিনের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করি আমরা। অনুসন্ধানে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে তসলিমা নাসরিনকে নিয়ে বিগত ৩ বছরে  ভারতীয় ও দেশীয় মূলধারার একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে এই জাতীয় মন্তব্য খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।

মন্তব্যটির বিষয়ে অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে লেখক তসলিমা নাসরিনের যোগাযোগের চেষ্টা করেছি আমরা। তবে এ প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত এ বিষয়ে তার মন্তব্য জানা যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি ‘সানি লিওনকে চরিত্রহীন বললেন তসলিমা নাসরিন’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল ‘ডিবিসি নিউজ’ এর আদলে তৈরি করা একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজের ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ডিবিসি নিউজের অনলাইন টিম উক্ত ফটোকার্ডকে ভুয়া বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছে। এছাড়া দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম এবং তসলিমা নাসরিনের ফেসবুক একাউন্টে উক্ত দাবি সম্বলিত কোনো তথ্য নেই। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের ফটোকার্ড নকল করে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে  ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং,  ‘সানি লিওনকে চরিত্রহীন বললেন তসলিমা নাসরিন’ শীর্ষক দাবিতে ডিবিসি নিউজের আদলে তৈরি ফটোকার্ডটি ভুয়া এবং আলোচিত দাবিটিও সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

‘Raised by Wolves’ সিরিজের জন্য তৈরি থ্রিডি মডেলকে বাস্তব প্রাণী দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, হুবহু মানুষের মত দেখতে অদ্ভুত আশ্চর্যজনক এক প্রাণী সমুদ্র থেকে খুঁজে পাওয়া গেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটি হুবহু মানুষের মত দেখতে কোনো অদ্ভুত বা আশ্চর্যজনক প্রাণীর ভিডিও নয় বরং এটি আমেরিকান সায়েন্স ফিকশন টিভি সিরিজ ‘Raised by Wolves’ এর জন্য তৈরি থ্রিডি মডেলের ভিডিও।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে furio_tedeschi নামের একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ২০ এপ্রিল ‘Raised by Wolves Creature model from Concept we worked on with @andrea_chiampo and @filippoubertino …model by @dreamsmith_ @matt_ht’ শীর্ষক শিরোনাম এবং ‘#raisedbywolves #creaturedesign #creature #monster #puppet #concept #conceptartist #vfx #instagram’ শীর্ষক হ্যাশট্যাগে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Instagram

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, Raised by Wolves টিভি সিরিজের জন্য এই থ্রিডি মডেল বা কনসেপ্ট মডেলটি তৈরি করা হয়েছে।

এই ভিডিওটির সাথে মানুষের মত দেখতে অদ্ভুত প্রাণী দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Smooth-On, Inc নামের একটি টিকটক অ্যাকাউন্টেও ‘Creature made for “Raised by Wolves” using Ecoflex™ 00-03 in a 3D Printed Mold by the fabrication team at Dreamsmith. #raisedbywolves #prop’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আলোচিত ভিডিওটির অনুরূপ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: TikTok

এই ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকেও এবিষয়ে একই তথ্য জানা যায়।

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, এটি মানুষের মত দেখতে কোনো অদ্ভুত বা আশ্চর্যজনক প্রাণীর ভিডিও নয়।

পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত প্রাণীর অনুরূপ বাস্তব কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, ‘Raised by Wolves’ নামের আমেরিকান টিভি সিরিজের জন্য তৈরি একটি থ্রিডি মডেলের ভিডিও গত এপ্রিলে ইন্টারনেটে প্রকাশ করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে সেই ভিডিওটিকেই সমুদ্র থেকে হুবহু মানুষের মত দেখতে অদ্ভুত একটি প্রাণী খুঁজে পাওয়ার ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। 

প্রসঙ্গত, ‘Raised by Wolves’ একটি আমেরিকান সায়েন্স ফিকশন টিভি সিরিজ যা HBO MAX এ ২০২০ সালে প্রথম প্রিমিয়ার হয়। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি কয়েকটি ভিডিওকে বাস্তব দাবিতে প্রচার নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন-

সুতরাং, আমেরিকান সায়েন্স ফিকশন টিভি সিরিজ ‘Raised By Wolve’ এর জন্য তৈরি থ্রিডি মডেলের একটি ভিডিওকে মানুষের মত দেখতে সমুদ্র থেকে খুঁজে পাওয়া প্রাণীর ভিডিও দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • furio_tedeschi Instagram: Video Post
  • Smooth-On, Inc TikTik: Video Post
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সিরিজের স্কোয়াড ঘোষণা দাবিতে আরটিভিতে ভুল তথ্য প্রচার 

গত ৩০ আগস্ট ‘আফগানিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে  সিরিজের জন্য বাংলাদেশ ‘এ’ দলের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বিসিবি ‘শীর্ষক দাবিতে মূলধারার সংবাদমাধ্যম আরটিভির ওয়েবসাইটে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

আরটিভিতে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন এখানে

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিসিবি আফগানিস্তানের বিপক্ষে কোনো সিরিজের জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশ ‘এ’ দলের কোনো স্কোয়াড ঘোষণা করেনি বরং ২০১৯ সালে আফগানিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে সিরিজের জন্য বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সিরিজের স্কোয়াডকে সাম্প্রতিক ঘটনার দাবিতে প্রচার করেছে আরটিভি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ওয়েবসাইটে আফগানিস্তান ‘এ’ দল বনাম বাংলাদেশ ‘এ’ দলের আসন্ন কোনো সিরিজ আছে কিনা তার খোঁজ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়নি। একইসাথে বিসিবির ফেসবুক পেজেও (আর্কাইভ) এ বিষয়ে কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। 

তাছাড়া, আরটিভি ব্যতিত দেশের আর কোনো গণমাধ্যমেই সম্প্রতি বাংলাদেশ ‘এ’ দল বনাম আফগানিস্তান ‘এ’ দলের সিরিজ  সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে, খেলা বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ‘বিডিক্রিকটাইম’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ৩০ জুন “‘এ’ দলে ডাক পেলেন ইমরুল-বিজয়রা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সে সময় বাংলাদেশ ‘এ’ দল বনাম আফগানিস্তান ‘এ’ দলের মধ্যে একটি সিরিজকে সামনে রেখে  বাংলাদেশ ‘এ’ দলের স্কোয়াড ঘোষণা করে বিসিবি। স্কোয়াডে ছিলেন ইমরুল কায়েস, এনামুল হক বিজয়, জাকির হাসান, আফিফ হোসেন ধ্রুব, কামরুল ইসলাম রাব্বি,রকিবুল হাসান, তানবীর হায়দার চৌধুরী, সানজামুল ইসলাম, জাকের আলী অনিক, সালাউদ্দিন শাকিল, নাঈম শেখ, ইরফান হোসেন, সুমন খান, তানভিরুল ইসলাম।

রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে, এই স্কোয়াডের সাথে সম্প্রতি আরটিভির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদে উল্লিখিত স্কোয়াডের হুবহু মিল রয়েছে।  

Screenshot collage by Rumor Scanner

অর্থাৎ, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ‘এ’ দল বনাম আফগানিস্তান ‘এ’ দলের সিরিজের স্কোয়াডকে সাম্প্রতিক দাবিতে আরটিভিতে প্রচার করা হয়েছে।

মূলত, সম্প্রতি আরটিভির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, আফগানিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সিরিজকে সামনে রেখে বাংলাদেশের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বিসিবি। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। আফগানিস্তানের সাথে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের কোনো সিরিজ আয়োজন করা হয়নি এবং বিসিবিও সম্প্রতি ‘এ’ দলের কোনো স্কোয়াড ঘোষণা করেনি ।প্রকৃতপক্ষে, ২০১৯ সালে আফগানিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে একটি সিরিজের জন্য বাংলাদেশ ‘এ’ দলের স্কোয়াড ঘোষণার খবরকে সাম্প্রতিক ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।  

উল্লেখ্য, শারীরিক অসুস্থতার কারণে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটার লিটন দাস এশিয়া কাপ থেকে বাদ পড়ায় তার পরিবর্তে ডাক পেয়েছেন এনামুল হক বিজয়।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে ইন্টারনেটে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ২০১৯ সালে আফগানিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে সিরিজের জন্য বাংলাদেশ ‘এ’ দলের স্কোয়াড ঘোষণার খবরকে সাম্প্রতিক ঘটনার দাবিতে আরটিভিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গ্র‍্যান্ড মাস্টার প্রজ্ঞানন্দের মায়ের রাস্তায় ঠেলা গাড়িতে রুটি বিক্রির গুজব

0

সম্প্রতি, দাবা বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা ভারতীয় তরুণ দাবাড়ু রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দের মা রাস্তার ঠেলা গাড়িতে রুটি বিক্রি করে দাবিতে একটি ছবি সম্বলিত তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গ্র‍্যান্ডমাস্টার রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দের মা নাগালক্ষ্মী রাস্তার ঠেলা গাড়িতে করে রুটি বিক্রি করেন না বরং তিনি একজন গৃহিনী (Homemaker) এবং বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশ নিতে প্রজ্ঞানন্দ যখন বাইরে যায় তখন তিনিও ছেলের সফরসঙ্গী হন।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম The Statesman এর ওয়েবসাইটে গত ২৫ আগস্ট ‘Who are Rameshbabu and Nagalakshmi? Details about Praggnanandhaa parents’ শীর্ষক শিরোনামে প্রজ্ঞানন্দের পরিবারকে নিয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: The Statesman

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গ্র‍্যান্ডমাস্টার প্রজ্ঞানন্দের বাবা রমেশবাবু তামিলনাড়ু স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার এবং মা নাগালক্ষ্মী একজন গৃহিনী (Homemaker)।

Screenshot: The Statesman

পরবর্তী অনুসন্ধানে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম The Times of India এর ওয়েবসাইটে গত ২৩ আগস্ট ‘Behind Praggnanandhaa’s meteoric rise, a proud mother who is always by his side’ শীর্ষক শিরোনামে প্রজ্ঞানন্দের মায়ের বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: The Times of India

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রজ্ঞানন্দ যখন টুর্নামেন্টে অংশ নিতে বিভিন্ন জায়গায় যায়, তখন তার মা চাল, রাইস কুকার, বিভিন্ন ধরনের মশলা সাথে নিয়ে যান যাতে প্রজ্ঞানন্দ ভালো খাবার খেয়ে খেলায় আরও ভালো করতে পারে। 

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, গ্রান্ডমাস্টার প্রজ্ঞানন্দের মায়ের রুটি বিক্রি করার দাবিটি সঠিক নয়। 

পাশাপাশি, গণমাধ্যম বা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রজ্ঞানন্দের মা নাগালক্ষ্মী রাস্তার ঠেলা গাড়িতে করে রুটি বিক্রি করার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি দাবা বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে ভারতীয় তরুণ রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দ। পরবর্তীতে তার সাফল্যের পেছনে মায়ের ভূমিকার কথা লিখতে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নেটিজেনরা তার মা নাগালক্ষ্মী রাস্তার ঠেলা গাড়িতে রুটি বিক্রি করে ছেলের স্বপ্ন পূরণ করেছে দাবিতে প্রচার করে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত এই দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে প্রজ্ঞানন্দের মা নাগালক্ষ্মী একজন গৃহিনী (Homemaker) এবং বাবা রমেশবাবু তামিলনাড়ু স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার। 

প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে দাবা বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছেন প্রজ্ঞানন্দ। একইসাথে তিনি দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে ক্যান্ডিডেটস টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছেন।

সুতরাং, ভারতীয় গ্র‍্যান্ডমাস্টার প্রজ্ঞানন্দের মা নাগালক্ষ্মী রাস্তার ঠেলা গাড়িতে করে রুটি বিক্রি করেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

চন্দ্রযান-৩ এর মিশন ডিরেক্টর ঋতু করিধাল নয়

গত ২৩ আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে ভারতীয় স্পেসক্রাফট চন্দ্রযান-৩। চন্দ্রযান-৩ এর বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদে বাংলাদেশ ও ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমে এই মিশনের ডিরেক্টর ঋতু করিধাল বলে দাবি করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের কিছু প্রতিবেদন দেখুন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, বাংলাদেশ জার্নাল, নয়া দিগন্ত, উইমেন চাপ্টার।

একই দাবিতে ভারতের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবদন দেখুন আনন্দবাজার, এই সময়, দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া, নিউজ১৮ বাংলা, ওয়ান ইন্ডিয়া, আজতক।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চন্দ্রযান-৩ মিশনের ডিরেক্টর ঋতু করিধাল বলে যে দাবি করা হয়েছে তা সঠিক নয় বরং এই মিশনের ডিরেক্টর এস মোহানা কুমার। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভারতের সংবাদমাধ্যম The Economic Times এর ওয়েবসাইটে গত ২৪ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চন্দ্রযান-৩ এর মিশন ডিরেক্টর এর দায়িত্বে আছেন জ্যৈষ্ঠ বিজ্ঞানী এস মোহানা কুমার। 

Screenshot: The Economic Times

এই প্রতিবেদনে ঋতু করিধালের বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ না থাকলেও The Economic Times এরই গত ২৫ আগস্ট প্রকাশিত আরেক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঋতু করিধাল এই মিশনে জ্যৈষ্ঠ বিজ্ঞানী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

Screenshot: The Economic Times

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে ভারতের সংবাদমাধ্যম Times Now এর ওয়েবসাইটে গত ২৬ আগস্ট এস মোহানা কুমারের ভিডিও সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। 

Screenshot: Times Now

সাক্ষাৎকারের শুরুতে এস মোহানা কুমারের উপস্থিতিতে উপস্থাপক তাকে চন্দ্রযান-৩ মিশনের ডিরেক্টর হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। 

রিউমর স্ক্যানার টিম পরবর্তীতে এ বিষয়ে জানতে চন্দ্রযান-৩ অভিযানের দায়িত্বে থাকা ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো’র সাথে যোগাযোগ করলে ইসরোর পক্ষ থেকে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়েছে, এস মোহানা কুমারই এই মিশনের ডিরেক্টর।

মূলত, ভারতীয় স্পেসক্রাফট চন্দ্রযান-৩ এর বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদে বাংলাদেশ ও ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমে এই মিশনের ডিরেক্টর ঋতু করিধাল বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, এই মিশনের ডিরেক্টরের দায়িত্বে রয়েছেন এস মোহানা কুমার। 

প্রসঙ্গত, চন্দ্রযান-৩ এর বিষয়ে পূর্বেও একাধিক গুজব ছড়িয়ে পড়লে সেসব বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, চন্দ্রযান-৩ এর মিশন ডিরেক্টর ঋতু করিধাল দাবিতে কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে ড. ইউনূসকে জড়িয়ে প্রথম আলোর সংবাদ এডিট করে পিটার হাসের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

সম্প্রতি, “অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পাচ্ছেন ড. ইউনূস: পিটার হাস” শীর্ষক দাবিতে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনের আদলে তৈরি একটি স্ক্রিনশট ফেসবুক এবং শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্য দাবিতে অক্টোবরে ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পাওয়ার কথা প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন, এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন, এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আগামী অক্টোবরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস কোনো মন্তব্য করেননি এবং প্রথম আলোতেও এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে প্রথম আলোর ওয়েব পেজের স্ক্রিনশট এডিট করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নামে ভুয়া বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটের একটি নিউজ এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত নিউজের স্ক্রিনশট পর্যবেক্ষণ করে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার। এতে দেখা যায় প্রথম আলোর ওয়েবসাইটের শিরোনামের ফন্টের সাথে প্রচারিত ঐ স্ক্রিনশটের ফন্ট এবং লেখার এলাইনমেন্টের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। উক্ত দাবির স্ক্রিনশটে যে ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে প্রথম আলো সে ধরনের কোনো ফন্ট ব্যবহার করে না। পাশাপশি ঠিক নেই ক্রেডিট লাইনের ফন্ট এবং প্রচারিত সেই স্ক্রিনশটে নেই প্রতিবেদন প্রকাশের সময়সূচিও।

Image Comparison by Rumor Scanner

প্রথম আলোর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ, টুইটার(X) এবং ওয়েবসাইটে অনুসন্ধান করেও প্রথম আলোতে প্রকাশিত এ ধরনের কোনো প্রতিবেদনের অস্ত্বিত্ব পাওয়া যায়নি। গুগলে সার্চ করার মাধ্যমেও উক্ত শিরোনামে প্রকাশিত কোনো প্রতিবেদন আসেনি। 

Screenshot: Google Search

পরবর্তীতে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশের দ্বাদশ নির্বাচন বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে এমন কোনো বক্তব্য দিয়েছে কি না তা অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অক্টোবরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পাওয়া শীর্ষক তার কোনো মন্তব্য কোনো মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের নির্বাচন বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে তার একটি বক্তব্য ঢাকা ট্রিবিউনে গত ৩ আগস্ট “রাষ্ট্রদূত: তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো মন্তব্য নেই” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। যেখানে পিটার হাস বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। তবে জনগণ যাতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তার সরকার বেছে নিতে পারে সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো মন্তব্য নেই।.. এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোই স্বীয় অবস্থান নির্ধারণ করবে। আমরা শুধু চাই একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অসহিংস নির্বাচন।”

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের একই বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায় বিডিনিউজ২৪ একইদিনে ‘নির্বাচন কীভাবে সেটা রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়: পিটার হাস’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও।

এভাবে রিউমর স্ক্যানার টিম তাদের অনুসন্ধানে মুহাম্মদ ইউনূসের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এমন কোনো মন্তব্যে করেননি এবং জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোও এমন কোনো সংবাদ তাদের ওয়েবসাটে প্রকাশ করেনি বলে নিশ্চিত হয়।

এদিকে ‘অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পাচ্ছেন ড. ইউনুস: পিটার হাস’ শীর্ষক দাবিটি প্রথম আলোর ওয়েব প্রতিবেদনের আদলে তাদের নিউজ হিসেবে প্রচারিত হলে প্রথম আলো তাদের একটি ফেসবুক পোস্টে সেটিকে মিথ্যা প্রচারণা নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ‘প্রথম আলোর নামে ছড়ানো এই স্ক্রিনশটটি নকল, আমাদের তৈরি নয়। বিভ্রান্তি এড়াতে আমাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ও অনলাইনের সঙ্গে থাকুন।’

Screenshot: Prothom Alo/Facebook 

মূলত, প্রথম আলোর ওয়েব প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট এডিট করে ‘অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পাচ্ছেন ড. ইউনুস -পিটার হাস’ শীর্ষক শিরোনাম বসিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নামে ভুয়া এ বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পাচ্ছেন ডক্টর ইউনুস শীর্ষক বক্তব্য দেওয়ার দাবি এবং তা প্রথম আলোতে উক্ত শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের দাবিটি বানোয়াট এবং স্ক্রিনশটটি এডিটেড। 

তথ্যসূত্র