Home Blog Page 576

ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের ৮ বিলিয়ন ডলার সামরিক অনুদান ঘোষণার দাবিটি মিথ্যা 

0

সম্প্রতি, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ৮ বিলিয়ন ডলারের মিলিটারি এইড ঘোষণা করেছে।’ শীর্ষক দাবিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথিত নির্দেশনার তথ্য সম্বলিত একটি স্ক্রিনশট  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

৮ বিলিয়ন ডলার

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এছাড়া, জো বাইডেনের কথিত নির্দেশনার তথ্য সম্বলিত স্ক্রিনশট ব্যতীত একই দাবিতে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন; এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), , এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি ইসরায়েলের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কোনো সামরিক অনুদান ঘোষণা করেননি বরং গত ২৫ জুলাই  ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান প্রদানের বিষয়ে হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মেমোরেন্ডামকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।  

ইসরায়েলকে মার্কিন প্রশাসনের সামরিক সহায়তার ঘোষণা দেওয়ার দাবির বিষয়ে অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইট এবং মূলধারার আন্তর্জাতিক ও দেশীয় সংবাদমাধ্যমে উক্ত দাবির স্বপক্ষে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে গত ২৫ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইউক্রেনকে অনুদান প্রদান সম্পর্কিত একটি মেমোরেন্ডাম খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত মেমোরেন্ডামটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত তথ্য সম্বলিত স্ক্রিনশটে থাকা দেশের নাম এবং অনুদানের পরিমাণ ব্যতীত বাকি সকল তথ্যের সাথে এই মেমোরেন্ডামটির হুবহু মিল রয়েছে।

Screenshot Comparison by Rumor Scanner

এছাড়া, এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম AP এর ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র শন সাভেটের বরাতে বলা হয়, প্রচারিত মেমোটি নকল বা জাল। 

তবে, সম্প্রতি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত শুরু হওয়ার পর গত ১০ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে ফোনে কথা বলেছেন। ফোনালাপকালে ইসরায়েলে হামাসের হামলার ঘটনায় বাইডেন নিন্দা জানানোর পাশাপাশি চলমান সংঘাতে ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তার আশ্বাস দেন জো বাইডেন। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন চলমান সংঘাত শুরুর পর এই প্রতিবেদন প্রকাশ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযানের প্রস্তুতির জন্য দুইটি যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

মূলত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। হামলার পর গত ১০ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এর সাথে ফোনে কথা বলে এই হামলার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তার আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলকে ৮ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন শীর্ষক দাবিতে বাইডেনের কথিত নির্দেশনার তথ্য সম্বলিত একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের জন্য কোনো অনুদানের ঘোষণা দেননি। প্রকৃতপক্ষে গত ২৫ জুলাই ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের ৪০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান প্রদানের বিষয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অনুমোদন প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মেমোরেন্ডামকে বিকৃত করে তৈরি স্ক্রিনশটের মাধ্যমে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷

সুতরাং, চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলকে ৮ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা ঘোষণা করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

‘নারীদের জায়গা রান্নাঘর’ শীর্ষক মন্তব্য করেননি করিম দেমিরবে, ছড়ালো ভিন্ন ফুটবলারের ছবি

0

সম্প্রতি নারী রেফারি কর্তৃক লাল কার্ড পাওয়ায় সেই রেফারিকে উদ্দেশ্য করে তুর্কি বংশোদ্ভূত জার্মান ফুটবলার করিম দেমিরবের মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।

পোস্টগুলোতে যা দাবি করা হচ্ছে:

তুর্কি বংশোদ্ভূত জার্মান ফুটবলার করিম দেমিরবেকে মহিলা রেফারি লাল কার্ড দেখান। মাঠ থেকে বের হওয়ার সময় তিনি রাগের মাথায় বলেন, “মহিলাদের জায়গা আসলে রান্নাঘর। এক কান দুই কান করে খবরটা চলে যায় কর্তৃপক্ষের কানে। এবার তারা খেলা বাদ দিয়ে তাকে মহিলাদের ম্যাচে রেফারির দায়িত্ব পালন করতে বলে। তিনিও বাধ্য হলেন। ম্যাচ শেষে দেখা গেল আটজন লাল কার্ড খেয়ে বসে আছে। সবাই যখন এর কৈফিয়ত তলব করল, তিনি বললেন, “মহিলাদের জায়গা আসলে রান্নাঘর।’’

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, নারী রেফারি কর্তৃক লাল কার্ড পাওয়ায় সেই রেফারিকে উদ্দেশ্য করে ফুটবলার করিম দেমিরবেয় ‘মহিলাদের জায়গা আসলে রান্নাঘর’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়। এছাড়া সাজার অংশ হিসেবে নারী ফুটবল ম্যাচের দায়িত্ব পালনকালে ৮ জন নারী ফুটবলারকে করিম দেমিরবেয়ের লালকার্ড দেখানোর তথ্যটিও বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। পাশাপাশি করিম দেমিরবেয় দাবিতে যে ফুটবলারের ছবি প্রচার করা হচ্ছে, তিনি মূলত নাইজেরিয়ান বংশোদ্ভভূত জার্মান ফুটবলার  করিম আদেয়েমি।

তুর্কি ফুটবলার করিম দেমিরবেয় এমন কোনো মন্তব্য করেননি

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটি ২০২২ সালের ৮ এপ্রিল ক্যাঁচাল-Kechal (আর্কাইভ) নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ব্যানার আকারে প্রথম পোস্ট করা হয়। 

ফেসবুক পেজটি তাদের ব্যানারটির শিরোনামে #satire #humor #football #fun #funny ইত্যাদি একাধিক হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে। কিন্তু পরবর্তীতে একই ব্যানার এসব হ্যাশট্যাগ ব্যতীতই ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। 

সে সময় দাবিটি ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে অনুসন্ধান করে মিথ্যা হিসেবে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

প্রতিবেদনটি দেখুন

নারী রেফারিকে রান্নাঘরে থাকতে বলেননি টার্কিশ ফুটবলার করিম দেমিরবেয় 

পুরানো গুজব ভিন্ন ফুটবলারের ছবি ব্যবহার করে প্রচার

২০২২ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত গুজবটি সম্প্রতি পুনরায় ফেসবুকে প্রচার হতে দেখা যাচ্ছে। তবে এবার দাবিটির সঙ্গে টার্কিশ ফুটবলার করিম দেমিরবেয় হিসেবে ভিন্ন এক ফুটবলারের ছবি ব্যবহার করতে দেখা যায়।  

ছবির এই ফুটবলার নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবিটিতে থাকা ফুটবলারটির নাম করিম আদেয়েমি। তিনি নাইজেরিয়ান বংশোদ্ভূত একজন জার্মান ফুটবলার। জার্মান বুন্দেসলিগার ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ও জার্মানির জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় তিনি।

Image Collage: Rumor Scanner

মূলত, ২০১৫ সালে জার্মানির ক্লাব ফরচুনা ডুসেলডর্ফ মিডফিল্ডার করিম দেমিরবেয় বুন্দেসলিগার দ্বিতীয় বিভাগের এফএসভি ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে খেলায় দ্বিতীয়বার হলুদ কার্ড দেখেন। এই ঘটনার পর দেমিরবেয় মাঠ ছাড়ার সময় ম্যাচের রেফারি বিবি স্টেইনহাউসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ফুটবলে মহিলাদের কোনও স্থান নেই।’ তার এই মন্তব্যের জেরে তিনি পাঁচ ম্যাচ নিষিদ্ধ হন এবং একইসাথে তাকে একটি নারী ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং তিনি সেটি পালন করেন। পাশাপাশি তার এই মন্তব্যের জন্য তিনি ঐ নারী রেফারির কাছে দুঃখ প্রকাশও করেন। সেই সময়ের এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ২০২২ সালে করিম দেমিরবেয়ের বক্তব্য দাবিতে ‘আপনার রান্নাঘরে থাকা উচিত’ শীর্ষক একটি মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়। যা যে সময় রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে মিথ্যা হিসেবে প্রমাণিত হয়। সম্প্রতি এই দাবিটিই আবার নাইজেরিয়ান বংশোদ্ভূত জার্মান ফুটবলার করিম আদেয়েমির ছবি ব্যবহার করে প্রচার করা হচ্ছে।

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের দৃশ্য দাবিতে তুরস্ক-সিরিয়া সংঘাতের পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘গাজা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে শতশত মিসাইল নিক্ষেপ’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফিলিস্তিন

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফিলিস্তিনের গাজা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে শতশত মিসাইল নিক্ষেপের দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ঘটনার নয় বরং এটি ২০২০ সালে তুরস্ক কর্তৃক সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিও।

ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘RUSA NEWS’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিকে তুর্কি সেনাবাহিনী সিরিয়ায় অন্তত ৬০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। যার কারণে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর সদস্যরা গুরুতর আহত হয়ে জায়গা ত্যাগ পূর্বের দখলকৃত জায়গা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।

তাছাড়া, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম Nedaa Post এর এক্স অ্যাকাউন্টে (সাবেক টুইটার) ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি পোস্ট থেকেও একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from X

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের নয়। 

মূলত, ২০২০ সালে তুরস্ক-সিরিয়া সংঘাত চলাকালে তুর্কি সেনাবাহিনী সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। ঐ ঘটনায় ধারণকৃত একটি ভিডিওকে চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে গাজা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে মিসাইল নিক্ষেপের দৃশ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা করলে ফিলিস্তিন- ইসরায়েলের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত নতুন মাত্রা পায়৷

উল্লেখ্য, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷

সুতরাং, ফিলিস্তিনের গাজা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে মিসাইল নিক্ষেপের দৃশ্য দাবিতে তিন বছর পূর্বে তুরস্ক কর্তৃক সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভিডিওটি ইসরায়েলের কোনো সামরিক কর্মকর্তা আটকের নয়

সম্প্রতি, ‘ ইসরায়েলের কমান্ডার, যার কথামত ফিলিস্তিনে হামলা করা হতো। সে এখন ফিলিস্তিনের পুলিশের হাতে আটক হয়েছে‘- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

ইসরায়েলের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কমান্ডারকে আটকের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের নয়। বরং  আজারবাইজানে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে আটককৃত আরাইক হারুটিউনিয়ান নামে এক ব্যক্তিকে কারাগারে প্রেরণের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।   

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ডিটিএক্সের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৫ অক্টোবর “Arayik Harutyunyan was brought to criminal responsibility” (আজারবাইজানি ভাষা থেকে অনুদিত)’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot comparison: Rumor Scanner

এই ভিডিওটির সাথে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কমান্ডার আটকের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

এছাড়া ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ভিডিওটিতে থাকা ব্যক্তিটি আজারবাইজানের কারাবাখ অঞ্চলে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া আরাইক হারুটিউনিয়ান নামে এক ব্যক্তি। তাকে গত ৩ অক্টোবর দেশটির খানকেন্দি শহর থেকে গ্রেফতার করে আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। 

অপরদিকে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন চলমান সংঘাত শুরু হয়েছে গত শনিবার (৭ অক্টোবর)। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন চলমান সংঘাত শুরুর পূর্ব থেকেই ইন্টারনেটে ভিডিওটির অস্তিত্ব ছিল।

মূলত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এতে হামাস ও ইসরায়েল উভয়পক্ষেই প্রাণহানি ও হামাসের হাতে ইসরায়েলি সেনা আটকের বেশ কিছু ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ইন্টারনেটে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কমান্ডার আটকের দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন চলমান সংঘাত শুরুর পূর্ব থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যমান এবং এটি আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক দেশটির কারাবাখ অঞ্চল থেকে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া আরাইক হারুটিউনিয়ান নামের এক ব্যক্তিকে কারাগারে প্রেরণের ভিডিও। 

উল্লেখ্য, পূর্বের ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের আটকের দাবিতে ভিন্ন ভিডিও প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন চলমান সংঘাতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কমান্ডারকে আটকের দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত ইস্যুতে ডেইলি স্টারের নকল ফটোকার্ডে ড. ইউনূসের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘ইজরায়েল তার আত্মরক্ষার অধিকার রাখে’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইংরেজি জাতীয় দৈনিক ডেইলি স্টারের ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত একটি ছবি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফিলিস্তিন সংঘাত

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ডেইলি স্টার ড. ইউনূসের বক্তব্য দাবিতে এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং গত ০৫ অক্টোবর গণমাধ্যমটি প্রকাশিত ভিন্ন একটি ফটোকার্ডে থাকা বক্তব্য এডিট করে উক্ত ভুয়া মন্তব্যটি ড. ইউনূসের নামে প্রচার করা হচ্ছে।  

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে প্রচারিত  ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যাচ্ছে, কথিত এই ফটোকার্ড ডেইলি স্টারের বাংলা সংস্করণের ফেসবুক পেজে প্রকাশের তারিখ উল্লেখ রয়েছে ১০ অক্টোবর, ২০২৩।  

উক্ত তারিখ সূত্রে গণমাধ্যমটির বাংলা সংস্করণের ফেসবুক পেজে গত ১০ অক্টোবর প্রকাশিত এমন কোনো ফটোকার্ডের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটেও আলোচিত মন্তব্য সংবলিত ড. ইউনূস বিষয়ক কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে আরো অনুসন্ধান করে ডেইলি স্টারের বাংলা সংস্করণের ফেসবুক পেজে গত ০৫ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ফটোকার্ডের সঙ্গে ড. ইউনূসের মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটির কিছু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তবে ফটোকার্ড দুইটিতে থাকা ড. ইউনূসের বক্তব্যের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। এই ফটোকার্ডে থাকা ড. ইউনূসের মন্তব্যটি এমন, “কেন শঙ্কিত হবো? আমি অপরাধ করিনি, শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাকে ডেকেছে, সে জন্য আমি এসেছি।”

Photocard comparison: Rumor Scanner 

অন্যদিকে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে ড. ইউনূসের দাবিতে প্রচারিত বক্তব্যটি হলো, “ইজরায়েল তার আত্মরক্ষার অধিকার রাখে।” 

০৫ অক্টোবর প্রকাশিত ডেইলি স্টারের ফটোকার্ডের সূত্রে সেদিন গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদটি পড়ে দেখেছি আমরা। ড. ইউনূস সেদিন দুদক কার্যালয়ে তার বিরুদ্ধে চলা মামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। তবে চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। 

এ বিষয়ে জানতে ডেইলি স্টারের বাংলা সংস্করণের সম্পাদক গোলাম মোর্তোজা ফটোকার্ডটি সম্পর্কে রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, “এটা মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা।”

একইদিন (০৫ অক্টোবর) ড. ইউনূসের নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে সাংবাদিকদের সাথে তার সেদিনের বক্তব্যের বিষয়ে একটি পোস্ট পাওয়া যায়৷ এখানেও তিনি উক্ত দাবিতে এমন কোনো মন্তব্য করার তথ্য মেলেনি। অবশ্য, ড. ইউনূসের তা করার কথাও নয়। কারণ, চলমান এই সংঘাত শুরুই হয়েছে তার দুইদিন পর (০৭ অক্টোবর)। 

ড. ইউনূস পরবর্তীতে এমন কোনো মন্তব্য করেছেন কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধান করে তাঁর ফেসবুক পেজ, তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠান Yunus Centre এর ফেসবুক পেজ এবং দেশীয় গণমাধ্যমে এমন কোনো মন্তব্য তিনি করেছেন শীর্ষক দাবির পক্ষে প্রমাণ মেলেনি। 

এমন বক্তব্য ইউনূস ব্যতিত অন্য কেউ কি দিয়েছেন? 

আলোচিত মন্তব্যটি ড. ইউনুস ব্যতিত অন্য কেউ করেছে কিনা সে বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করে রিউমর স্ক্যানার টিম দেখেছে, হুবহু একই মন্তব্য বিভিন্ন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং দেশটির প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। 

সর্বশেষ গত ০৭ অক্টোবর মূল ধারার সংবাদমাধ্যম ‘দেশ রূপান্তর’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনেও একই মন্তব্য পাওয়া যায়। হামাস ইস্যুতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন উক্ত মন্তব্য করেছেন বলে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম  আল জাজিরার বরাতে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

 Screenshot: Google

এ সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন এখানে। 

তাছাড়া, চলতি বছরের ০৬ এপ্রিলও একই ধরণের মন্তব্য করা হয় যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের পক্ষ থেকে। দেখুন এখানে। 

অর্থাৎ ড. ইউনূসকে নিয়ে করা ডেইলি স্টারের পুরোনো একটি ফটোকার্ডে তাঁর বক্তব্যটির উপর ভিন্ন আরেকজনের বক্তব্য জুড়ে দিয়ে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

দাবিটির সূত্রপাত কীভাবে? 

ফেসবুকের মনিটরিং টুলসহ একাধিক পদ্ধতিতে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম দেখেছে, গত ১০ অক্টেবর রাত ১০ টা ০১ মিনিটে ফেসবুকে Mohona Sanju নামে একটি অ্যাকাউন্ট (আর্কাইভ) থেকে “শেখ হাসিনা রিজার্ভ ফোর্স ” নামক ছয় সদস্য বিশিষ্ট একটি গ্রুপে (আর্কাইভ) এ বিষয়ে সম্ভাব্য প্রথম পাবলিক পোস্ট করা হয়৷ 

পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

Screenshot: Facebook 

মোহনা সানজুর অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে আমাদের কাছে এটি ফেক আইডি বলে প্রতীয়মান হয়েছে। গত ০১ অক্টোবর এই অ্যাকাউন্টে প্রথম পাবলিক পোস্ট করা হয়। সর্বশেষ গত ১০ অক্টোবর রাতে যে নারীর ছবি তিনি পাবলিক প্রাইভেসিতে আপলোড করেছেন তা পূর্ব থেকেই ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে পেয়েছি আমরা। দেখুন এখানে, এখানে। 

Screenshot: Facebook 

আমরা “শেখ হাসিনা রিজার্ভ ফোর্স ” নামক ছয় সদস্য বিশিষ্ট গ্রুপটিও পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, এই গ্রুপটি (আর্কাইভ) গত ১০ অক্টোবর সন্ধ্যা ছয়টা ৫৪ মিনিটে চালু করা হয়েছে এবং চালু করা হয়েছে মোহনা সানজুর অ্যাকাউন্ট থেকেই। 

Screenshot: Facebook

মূলত, গত ০৫ অক্টোবর দুদক কার্যালয়ে নিজের বিরুদ্ধে চলা মামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেদিন ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের ফেসবুক পেজে তাঁর বক্তব্য নিয়ে একটি ফটোকার্ড প্রকাশিত হয়। উক্ত ফটোকার্ডে ড. ইউনূসের বক্তব্য এডিট করে তিনি “ইজরায়েল তার আত্মরক্ষার অধিকার রাখে।” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে জেনেছে, ড. ইউনূস চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে এমন কোনো মন্তব্য করেননি। তবে, যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাম্প্রতিক সময়ে এবং পূর্বে বিভিন্ন সময়ে হুবহু একই মন্তব্য করেছেন।

প্রসঙ্গত, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷

সুতরাং, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস “ইজরায়েল তার আত্মরক্ষার অধিকার রাখে।” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটিও বিকৃত বা এডিটেড। 

তথ্যসূত্র

তুরস্কের বন্দীদের ভিডিওকে হামাসের হাতে বন্দী ইসরায়েলি কর্মকর্তা দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল সংঘাতকে কেন্দ্র করে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, নয়জন আটক ব্যক্তির নাম এবং পদবী জানতে চাওয়া হচ্ছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে, এই ভিডিওটি হামাস প্রকাশ করেছে এবং ভিডিওতে যে ব্যক্তিদের দেখানো হচ্ছে, তারা ইসরায়েলি সামরিক ও গোয়েন্দা মোসাদের কর্মকর্তা। এরা হামাসের হাতে বন্দী।

তুরস্কের

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি হামাস প্রকাশ করেনি এবং ভিডিওতে দেখানো ব্যক্তিরা হামাসের হাতে বন্দী ইসরায়েলি সামরিক ও গোয়েন্দা মোসাদের কর্মকর্তাও নন। বরং ২০১৬ সালে তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর গ্রেফতার হওয়া সামরিক কর্মকর্তাদের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির কিছু কি ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে তুরস্কের ইংরেজি দৈনিক Daily Sabah এর এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই প্রকাশিত এক ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: X

এই ভিডিওটির বিবরণী থেকে জানা যায়, সে সময় তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের মাস্টারমাইন্ডদের জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়ার আগে আঙ্কারা পুলিশ সদর দফতরে এনে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। 

পরবর্তীতে ডেইলি সাবাহ’র ওয়েবসাইটে ১৭ জুলাই প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই রাতে তুরস্কে অভ্যুত্থানের চেষ্টা করা হয়। এই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড সামরিক কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আলোচিত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তিদের ছবি এই প্রতিবেদনেও রয়েছে।

আলোচিত ভিডিওতে বন্দী এক ব্যক্তিকে দেখানো হয়েছে, যিনি তার পরিচয় আকিন ওজতুর্ক (Akin Ozturk) বলে জানিয়েছেন।

এই নামটি কিওয়ার্ড সার্চ করে বিবিসির সে বছরের (২০১৬) ১৮ জুলাই একই ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনেও একই ব্যক্তির একই পোশাক পরিহিত ছবি পাওয়া যায়। বিবিসি বলছে, তিনি তুরস্কের এয়ার ফোর্সের সাবেক কমান্ডার। 

Screenshot comparison: Rumor Scanner 

এটা থেকে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে যে, ভিডিওতে দেখানো ব্যক্তিরা ইসরায়েলের কোনো সামরিক কর্মকর্তা নয়।  

মূলত, গত ০৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাতকে কেন্দ্র করে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, নয়জন আটক ব্যক্তির নাম এবং পদবী জানতে চাওয়া হচ্ছে। আলোচিত এই ভিডিওটির বিবরণীতে দাবি করা হচ্ছে, এই ভিডিওটি হামাস প্রকাশ করেছে এবং ভিডিওতে যে ব্যক্তিদের দেখানো হচ্ছে, তারা ইসরায়েলি সামরিক ও গোয়েন্দা মোসাদের কর্মকর্তা। এরা হামাসের হাতে বন্দী। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে জেনেছে, এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। এমন কি এই ভিডিওর সাথে ফিলিস্তিন বা ইসরায়েলেরও কোনো সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৬ সালে তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর গ্রেফতার হওয়া সামরিক কর্মকর্তাদের ভিডিও এটি, যা ভিন্ন দাবিতে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷ 

সুতরাং, তুরস্কের বন্দীদের ভিডিওকে হামাসের হাতে বন্দী সামরিক ও গোয়েন্দা মোসাদের কর্মকর্তা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

বিশ্বকাপে পাকিস্তান বনাম নেদারল্যান্ডস ম্যাচে ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড না থাকার গুজব 

সম্প্রতি, “পাকিস্তান vs নেদারল্যান্ডস ম্যাচে স্কোরবোর্ড,নেই কোন ইলেকট্রনিক বোর্ড এটাই হলো ভারত, এর থেকে বাংলাদেশ আয়োজন হলে ভালো হতো” শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

নেদারল্যান্ডস

অর্থাৎ দাবি করা হচ্ছে, বিশ্বকাপের এই ম্যাচে মাঠে কোনো ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড ছিল না। যার ফলে মানবচালিত স্কোরবোর্ড দিয়েই কার্যক্রম চালানো হয়েছে।

উক্ত দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন- অনফিল্ড (ইউটিউব)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতে চলমান বিশ্বকাপ ক্রিকেটে  গত ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত পাকিস্তান বনাম নেদারল্যান্ডস ম্যাচে স্টেডিয়ামে কোনো ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড না থাকার দাবিটি সঠিক নয় বরং উক্ত ম্যাচে ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড ছিল। তবে প্রযুক্তিগতস মস্যার কারণে কিছুক্ষণের জন্য টিভি স্ক্রিনে স্কোরবোর্ড দেখা যায়নি। তা থেকেই আলোচিত দাবির সূত্রপাত। 

দাবিটির সত্যতা যাচইয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে গত ৬ অক্টোবর আইসিসির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে “Pakistan v Netherlands। Urdu Highlights। CWC23” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত ম্যাচের হাইলাইটস ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot Collage by Rumor Scanner 

উক্ত হাইলাইটস ভিডিওতে স্টেডিয়ামে থাকা ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড দেখতে পাওয়া যায়। 

এছাড়া, বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচে স্টেডিয়ামে ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড না থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এরকম কোনো ঘটনা ঘটলে সেটি অবশ্যই আন্তর্জাতিক ও দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যমে প্রকাশ হতো। অনুসন্ধানে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘Latestly’ এর ওয়েবসাইটে গত ৬ অক্টোবর “No Scorecard During PAK vs NED ICC Cricket World Cup 2023 Match! Fans Irked After Digital Scoreboard on Broadcast Temporarily Disappears Due to Technical Glitch” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পাকিস্তান বনাম নেদারল্যান্ডস আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩ ম্যাচটিতে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে কিছুক্ষনের জন্য ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু পরবর্তীতে  এটি ঠিক করা হয়। 

মূলত, গত ৬ অক্টোবর আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩ এর দ্বিতীয় ম্যাচে হায়দারবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে পাকিস্তান এবং নেদারল্যান্ডস মুখোমুখি হয়। উক্ত ম্যাচে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে কিছু সময়ের জন্য ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড কাজ করছিল না। আর এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড অচল থাকাকালীন সময়ের একটি ভিডিও প্রচার করে পাকিস্তান বনাম নেদারল্যান্ডস ম্যাচে কোনো ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড না থাকার ভুয়া দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

সুতরাং, পাকিস্তান বনাম নেদারল্যান্ডস ম্যাচে কোনো ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড ছিল না দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়টি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যের ছবি সম্বলিত মদের দোকানের সাইনবোর্ডের এই ছবিটি এডিটেড

0

সম্প্রতি, ‘সরকারি দেশী মদের দোকান‘ লিখা একটি সাইনবোর্ডের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। সাইনবোর্ডটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয় এবং আওয়ামী লীগের লোগোর ছবি দেখা যাচ্ছে।

মদের দোকান

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয় এবং আওয়ামী লীগের লোগোর ছবি সংযুক্ত মদের দোকানের সাইনবোর্ডের এই ছবিটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে  ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে একটি মদের দোকানের সাইনবোর্ডে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, জয় এবং আওয়ামী লীগের লোগোর ছবি সংযুক্ত করে উক্ত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

মূলত, আলোচিত ছবিতে থাকা আলোচিত সাইনবোর্ডটি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার একটি অনুমোদিত দেশি মদের দোকানের। মূল সাইনবোর্ডে কোথাও কোনো ব্যক্তির ছবি না থাকলেও বিকৃত করা সাইনবোর্ডের ছবিটির ডানপাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি এবং বাম পাশে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক সংযুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও এডিটেড এই সাইনবোর্ডের ছবিটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো রিউমর স্ক্যানার। 

ফিলিস্তিন ইস্যুতে পুতিনের পুরোনো বক্তব্যের ভিডিওতে ভিন্ন দাবি যুক্ত করে প্রচার

সম্প্রতি, “আমি আমেরিকাকে সতর্ক করে দিচ্ছি, যেন ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে যুদ্ধে হস্তক্ষেপ না করে। আমেরিকা যদি তা করে, আমরা খোলাখুলিভাবে ফিলিস্তিনকে সাহায্য করব।” শীর্ষক একটি বক্তব্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দিয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

ফিলিস্তিন

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাম্প্রতিক ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত ইস্যুতে আমেরিকাকে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেননি বরং ২০২২ সালে মানবাধিকার নিয়ে পুতিনের দেওয়া বক্তব্যের ভিডিওর সাবটাইটেল এডিটের মাধ্যমে পরিবর্তন করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘USA Today’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ০৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ০৮ ডিসেম্বরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মানবাধিকার কাউন্সিলের সভায় বক্তব্য রাখছিলেন। সেই সভায় তিনি পারমাণবিক অস্ত্র এবং যুদ্ধের হুমকি নিয়ে কথা বলেছিলেন। তিনি বলেন, রাশিয়া কখনই ইউক্রেনের উপর পারমাণবিক হামলা শুরু করবে না। রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্রকে কেবল সুরক্ষা বা আত্মরক্ষার উপায় হিসেবে ব্যবহার করবে।

তবে উক্ত ভিডিওতে পুতিন ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে কোনো কথা বলেননি।

তাছাড়া, প্রেসিডেন্ট পুতিন সাম্প্রতিক ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত ইস্যুতে আমেরিকাকে হস্তক্ষেপ করতে বাধা দেওয়া সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য করেছেন শীর্ষক দাবিতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা ‘Reuters’ এর ওয়েবসাইটে গত ১১ অক্টোবর “Putin blames failure of US policy for Mideast conflict, Russia says talking to both sides” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতি ব্যর্থ হয়েছে এবং তারা ফিলিস্তিনিদের কোনো খোঁজ নেননি বলে মন্তব্য করেন পুতিন।

ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, তারা যুদ্ধরত উভয় পক্ষের সাথে যোগাযোগ করছে এবং বিরোধ সমাধানে চেষ্টা করবে তবে সেটা কিভাবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া, তিনি এই যুদ্ধটি অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ার আশংকা করেন।

মূলত, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আমেরিকাকে সাম্প্রতিক ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও সম্প্রতি ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ২০২২ সালের ভিন্ন ঘটনার। উক্ত বক্তব্যে তিনি ফিলিস্তিন বা ইসরায়েলের বিষয়ে কোনো মন্তব্যই করেননি। 

প্রসঙ্গত, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷

সুতরাং, ফিলিস্তিন ইস্যুতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পুরোনো বক্তব্যের ভিডিওতে ভিন্ন দাবি যুক্ত করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ফিলিস্তিনিদের পক্ষে শিকাগোতে মানুষের বিক্ষোভের ভিডিওটি পুরোনো

সম্প্রতি, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের রাস্তায় মানুষের বিক্ষোভ মিছিলের ঘটনায় একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে, যা সাম্প্রতিক সময়ের বলে দাবি করা হচ্ছে। 

ফিলিস্তিনি

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শিকাগোতে সম্প্রতি ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভ মিছিল হলেও প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০২১ সালের একটি ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে AMU Citizens নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২১ সালের ১৭ মে আলোচিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।  

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, সে সময় শিকাগোতে ফিলিস্তিনের পক্ষে প্রতিবাদ মিছিল হয়।

Screenshot comparison: Rumor Scanner 

পরবর্তীতে আরো অনুসন্ধান করে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম ABC7 Chicago এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ১৩ মে “Thousands protest in downtown Chicago over Israel-Palestine conflict” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জেরুজালেমে ইসরায়েলি কর্মকাণ্ড এবং ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় এবং ইসরায়েলের করা গাজায় বিমান হামলার প্রতিবাদে শিকাগো শহরের কেন্দ্রস্থলে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিল।

এছাড়া, উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত এ সংক্রান্ত একটি ভিডিওর সাথেও আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

পাশাপাশি, একই দিনে ABC7 Chicago এর ইউটিউব চ্যানেলেও এ সংক্রান্ত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।  

অর্থাৎ, আলোচিত বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

তবে, এই ভিডিওটি ২০২১ সালের হলেও সম্প্রতি শিকাগোতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সংঘাতের ঘটনাতেও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। 

মূলত, সম্প্রতি ফিলিস্তিনিদের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের রাস্তায় মানুষের বিক্ষোভ মিছিলের ঘটনায় একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে, যা সাম্প্রতিক সময়ের বলে দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ০৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাতের ঘটনায় শিকাগো শহরে বিক্ষোভ হলেও আলোচিত ভিডিওটি উক্ত ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২১ সালে ইসরায়েল কর্তৃক গাজায় বিমান হামলার ঘটনার প্রতিবাদে করা বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷ 

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে মানুষের বিক্ষোভ মিছিলের ২০২১ সালের পুরোনো ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র