সম্প্রতি ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জন্য সৌদি আরবে সাত কোটি টাকার সোনার মোটর সাইকেল তৈরি করা হয়েছে দাবি করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এবং ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটিতে প্রদর্শিত মোটরসাইকেলটি ফুটবল তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জন্য তৈরি করা হয়নি বরং এই মোটরসাইকেলটি সৌদি আরবের ফয়সাল আবু সারা নামের এক ব্যক্তির।
অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে মোটরসাইকেলের পাশে প্রদর্শিত একটি আরবি ভাষা সম্বলিত পতাকা দেখতে পাওয়া যায়। জানা যায়, এটি সৌদি আরবের জাতীয় পতাকা এবং এতে ইনস্টাগ্রামের লোগো সম্বলিত একটি নাম (faisal_abu_sara) প্রদর্শিত হতে দেখা যায়।
Screenshot: Facebook
পরবর্তীতে উক্ত নামের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে Faisal Abu Sara নামের ব্যক্তির ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যায় যেখানে উক্ত মোটরসাইকেল একাধিক ছবি ও ভিডিও পাওয়া যায়।
Screenshot: Instagram
রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, দাবিকৃত মোটরসাইকেলটির নম্বর প্লেটের সাথে ফয়সাল আবু সারাহ নামের ব্যক্তির ইন্সটাগ্রামে প্রদর্শিত একটি মোটরসাইকেল নম্বর প্লেটের হুবহু মিল রয়েছে।
Video Comparison by Rumor Scanner
এছাড়াও Roya Sports নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর ফয়সাল আবু সারাহর একটি সাক্ষাতকারের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানেও রোনালদোর জন্য নির্মিত মোটরসাইকেল দাবিতে প্রচারিত মোটরসাইকেলটির অনুরূপ মোটরসাইকেল দেখতে পাওয়া যায়।
Screenshot: YouTube
অর্থাৎ উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, উক্ত মোটরসাইকেলটি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জন্য তৈরি করা হয়েছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।
তবে উক্ত মোটরসাইকেলটি আসলেই স্বর্নে মোড়ানো কিনা কিংবা বাইকটির সৌন্দর্য বর্ধনে কি ব্যবহৃত হয়েছে সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো তথ্য জানা যায়নি।
পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে রোনালদোর জন্য কোথাও সোনার মোটরসাইকেল তৈরির কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, সম্প্রতি ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জন্য সাত কোটি টাকার সোনার একটি মোটর মোটরসাইকেল তৈরি করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর মোটরসাইকেলটি রোনালদোর জন্য তৈরি করা নয়। প্রকৃতপক্ষে, বাইকটির মালিক ফয়সাল আবু সারা নামের এক সৌদি নাগরিকের।
সুতরাং, ফুটবল তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জন্য সৌদি আরবে সাত কোটি টাকার সোনার মোটরসাইকেল তৈরি করা হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠানোর হুমকি দেওয়ার ঘটনায় উক্ত বক্তব্য প্রদানের তারিখ হিসেবে গণমাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন দিনের কথা উল্লেখ করে সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
২১ মে (রবিবার) উল্লেখ করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন চ্যানেল আই অনলাইন।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠানোর কথা ২০ মে বা ২১ মে বলেননি বরং গত ১৯ মে (শুক্রবার) রাজশাহীর পুঠিয়ায় অনুষ্ঠিত বিএনপির সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘Bangladesh Nationalist Party – BNP’ এর ফেসবুক পেজে গত ১৯ মে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত বিএনপির সমাবেশ থেকে সম্প্রচারিত লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ৪৭ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠানোর বক্তব্যখুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot from Facebook
উক্ত লাইভ ভিডিওর ৪৭ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড হতে ৫০ সেকেন্ড পর্যন্ত রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদকে বলতে শোনা যায়, “আর ২৭ দফা ১০ দফার মধ্যে আমরা নাই। একদফা- শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে। শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করার জন্য যা যা করার দরকার আমরা করব।”
পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে সমাবেশ মূলধারার গণমাধ্যম মানবজমিন এর ওয়েবসাইটে গত ২০ মে ‘পুঠিয়ায় বিএনপির সমাবেশ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Majabzamin Website
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৯মে(শুক্রবার) বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর হাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপি’র জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
অর্থাৎ, বিএনপি নেতা চাঁদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠানোর কথা ১৯ মে(শুক্রবার) রাজশাহীর পুঠিয়ায় অনুষ্ঠিত বিএনপির সমাবেশে বলেছিলেন।
মূলত, গত ১৯ মে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর হাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত বিএনপির সমাবেশে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বক্তব্য প্রদানের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে বলে বক্তব্য প্রদান করেন। এ বিষয়ে একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, তিনি এই বক্তব্য ২০ ও ২১ তারিখে প্রদান করেছেন। প্রকৃতপক্ষে, ২০ ও ২১ তারিখ রাজশাহীর পুঠিয়ায় বিএনপির কোনো সমাবেশই অনুষ্ঠিত হয়নি।
প্রসঙ্গত, পূর্বেও বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের নিয়ে ইন্টারনেটে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের গত ১৯ মে দেওয়া এক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কবরে পাঠানোর ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ে ভিন্ন ভিন্ন তারিখে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করছে; যা বিভ্রান্তিকর।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, চাচাতো বোনের সাথে ৫ বছর সম্পর্ক শেষে অন্য মেয়েকে বিয়ে করার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সত্য নয় বরং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিও।
দাবিটির সত্যতা অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার টিম প্রথমেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রচারিত এই সংক্রান্ত ভিডিওগুলোর কমেন্টবক্স যাচাই করে। কমেন্টবক্সে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনেকেই এটিকে বানানো, ভুয়া, অভিনয় ও স্ক্রিপ্টেড হিসেবে উল্লেখ করেন।
Screenshot Collage: Rumor Scanner
এসব কমেন্টের সূত্রে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবে Proyojon TV নামের একটি চ্যানেলে গত ১৮ মে ‘চাচাতো বোনের সাথে প্রেম হলোনা আর বিয়ে করা!!‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Proyojon Tv Youtube
ভিডিওটির শুরুতে একজনকে বলতে শোনা যায়, চাচাতো বোনের সাথে প্রেম, পারিবারিক কলহের কারণে প্রেমকে অস্বীকার করে অন্যত্র বিয়ের পিড়িতে বসে চাচাতো ভাই। অত:পর যা ঘটে।
এরপর ভিডিওটি চলতে শুরু করে এবং ভিডিওটির শেষ অংশে পুনরায় বলা হয়, ‘যারা প্রেম করেন, তারা আজকের ভিডিওটির কথা একটু চিন্তা করবেন। এমনটি ঘটতে পারে আপনার সাথেও। আবেগের বশে কখনো প্রেম করা উচিত নয়। কারণ, যখন বিবেক জাগ্রত হয়, তখন আর সে প্রেম, আর প্রেম থাকে না। ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।’ পুরো ভিডিওটির কোথাও ঘটনাটি সংগঠনের স্থান, সময় সম্পর্কে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় না।
তবে ইউটিউব চ্যানেলটির বিস্তারিত বিবরণী অনুসন্ধান করে দেখা যায়, প্রয়োজন টিভি বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত একটি চ্যানেল। এই চ্যানেলটি বিভিন্ন ইসলামী বিষয়, শিক্ষামূলক ঘটনা, সাক্ষাৎকার, শর্টফিল্ম, ইসলামী নাটক, নাটক, চলচ্চিত্র ইত্যাদি প্রচার করে থাকে।
Screenshot: Proyojon Tv Youtube
অর্থাৎ এটি একটি বিনোদনধর্মী ইউটিউব চ্যানেল।
পরবর্তীতে চ্যানেলটির সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে Proyojon TV ও Proyojon TV BD নামে দুইটি পেইজ খুঁজে পাওয়া যায়।
Image Collage: Rumor Scanner
পেইজ দুটিতে চাচাতো বোনের সাথে ৫ বছর সম্পর্ক শেষে অন্য মেয়েকে বিয়ে করার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে থাকা ব্যক্তিদের একাধিক ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
Image Collage: Rumor Scanner
ভিডিওগুলোতে তাদেরকে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করতেও দেখা যায়।
অর্থাৎ চাচাতো বোনের সাথে ৫ বছর সম্পর্ক শেষে অন্য মেয়েকে বিয়ে করার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিও এভাবেই ধারণকৃত একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিও।
দর্শকের বিভ্রান্তি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত উক্ত ভিডিওগুলোর কমেন্টবক্সে কেউ কেউ ভিডিওগুলোকে বানানো, ভুয়া, অভিনয় ও স্ক্রিপ্টেড হিসেবে উল্লেখ করলেও বিপরীতে এমন অনেক মন্তব্য পাওয়া যায়, যেখানে দর্শকেরা ঘটনাটিকে সত্য হিসেবে ধরে নিয়েছেন।
যেমন, আহমেদ ইকবাল নামে একজন লিখেছেন, ‘এই মেয়েটিকে ফেলে যদি অন্য জায়গায় বিয়ে করে তাহলে শুধু অন্যায় হবে না পাপও হবে, মানুষের মন থেকে ভালবাসা নামক বিশ্বাস উঠে যাবে, আমিও একজন ছেলে এমনটা আমার সাথে হলে কখনও তাকে ফেলে রেখে চলে যেতে পারব না, এই মেয়েকে বিয়ে করলে আর কিছু না হলেও জীবনে সুখি হবে ছেলেটি, মায়া মমতা ভালবাসায় সারাটিজীবন আগলিয়ে রাখবে,,।’
আলমগীর হোসেন বাবুল নামে একজন লিখেছেন, ‘মেয়েটা যেহেতু লাভ করে তা হলে বিয়ে ঠিক হওয়ার আগে কেন এসব কাহিনি করলো না। এখন যদি এই মেয়ে টা কে বিয়ে করে তা হলে অন্য দিকে আরেক টা মেয়ের লাইফ নষ্ট। এভাবে কেউ বিয়ে বন্ধ করে না। ‘
Image Collage: Rumor Scanner
এমডি জুয়েল এমডি রানা নামে একজন লিখেছেন, ‘এটা পাগলামি ছাড়া আর কিছু না। এ সময় যত ভালবাসা থাকুক না কেন উল্টে গেলে আর একটি মেয়ের জীবন লাইফ নষ্ট হয়ে যাবে যে মেয়েটা তার জন্য বধু সেজে বসিয়া আছে সে মেয়েটি তো সমাজের কাছে কলঙ্কিত হয়ে থাকবে।’
কোনো কোনো দর্শককে আবার ঘটনার সবশেষ পরিণতি জানতে চেয়েও মন্তব্য করতে দেখা গেছে পোস্টগুলোতে।
মূলত, গত ১৮ মে ইউটিউবে Proyojon TV নামের একটি চ্যানেলে ‘চাচাতো বোনের সাথে প্রেম হলোনা আর বিয়ে করা!!’ শীর্ষক একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওতে থাকা একজন নারী দাবি করেন, তার সাথে ৫ বছর সম্পর্ক শেষে সেখানে বর সাজে উপস্থিত ব্যক্তিটি অন্য মেয়েকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে ‘চাচাতো বোনের সাথে ৫ বছর রিলেশন করার পরে। বিয়ে করতে যাচ্ছে অন্য এক জনকে’ শীর্ষক দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত দাবিতে ভিডিওটি প্রথম যেখানে প্রচার করা হয়েছিল সেটি একটি বিনোদনধর্মী ইউটিউব চ্যানেল। এছাড়া অনুসন্ধানে উক্ত ভিডিওটিতে থাকা ব্যক্তিদের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে দৃশ্যায়িত একাধিক ভিডিওতে খুঁজে পাওয়া যায়।
সুতরাং, চাচাতো বোনের সাথে ৫ বছর সম্পর্ক শেষে অন্য মেয়েকে বিয়ে করার ঘটনা উল্লেখ করে একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিওকে সত্য ঘটনা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
বিস্তারিত অংশে আরো উল্লেখ করা হয়, “আইটেম গান এর পাশাপাশি তিনি সিনেমাটির প্রধান নারী চরিত্রগুলোর একটিতেও অভিনয় করবেন”
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, NBK108 সিনেমার আইটেম গানের দৃশ্যে ও সিনেমাটিতে তামান্না ভাটিয়ার অভিনয়ের তথ্যটি সঠিক নয় বরং, কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।
কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, ভারতের মূলধারার গণমাধ্যম NDTV এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২০ মে “Tamannaah On Rumours About Her Song In Anil Ravipudi’s Film: “Baseless”” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, “অনীল রবিপুরী পরিচালিত নন্দমুরী বালাকৃষ্ণের পরবর্তী সিনেমা NBK108 এর একটি আইটেম গানের দৃশ্যে তামান্না ভাটিয়া অভিনয় করছেন দাবিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো ভিত্তিহীন।”
পাশাপাশি, ভারতীয় চলচ্চিত্র বিষয়ক ওয়েবসাইট “Filmy Today” এর ওয়েবসাইটে “Tamannaah Bhatia Denies Rumours Of Falling Out With Filmmaker Anil Ravipudi” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনেও তামান্না ভাটিয়ার টুইটার একাউন্টের বরাত দিয়ে উল্লেখ করা হয়, “উক্ত সিনেমায় তামান্না ভাটিয়া অভিনয় করার (আইটেম গান সহ) খবর মিথ্যা।”
প্রতিবেদনের সূত্র ধরে তামান্না ভাটিয়ার টুইটার একাউন্টে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার। অনুসন্ধানে তামান্না ভাটিয়ার ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্টে গত ২০মে পোস্ট করা একটি টুইট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত টুইট বার্তা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, “আলোচ্য সিনেমায় একটি চরিত্রে অভিনয় ও আইটেম গানের দৃশ্যে অভিনয়ের ব্যাপারে তামান্না ভাটিয়াকে জড়িয়ে যেসব প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে সেগুলো ভিত্তিহীন।”
মূলত, তেলেগু অভিনেতা নন্দমুরী বালাকৃষ্ণের পরবর্তী সিনেমা NBK108 আগামী অক্টোবরে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। সেই সিনেমার একটি আইটেম গানে তামান্না ভাটিয়া অভিনয় করবেন দাবিতে একটি তথ্য ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। কোনো ধরনের গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই তামান্না ভাটিয়ার নাম জড়িয়ে উক্ত প্রতিবেদনগুলো প্রচার করা হচ্ছে। তামান্না ভাটিয়া নিজেও টুইট করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, তেলেগু অভিনেতা নন্দমুরী বালাকৃষ্ণের পরবর্তী সিনেমা NBK108 আগামী অক্টোবরে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। অনীল রবিপুরী পরিচালিত তেলেগু ভাষার সিনেমাটিতে নন্দমুরী বালাকৃষ্ণ ছাড়াও কাজল আগারওয়াল এবং অর্জুন রামপাল অভিনয় করেছেন।
প্রসঙ্গত, পূর্বেও বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত শ্যুটিংয়ের সময় বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন দাবিতে ছড়িয়ে পড়া গুজব শনাক্ত করে বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ভারতীয় গণমাধ্যমে “NBK108 সিনেমার আইটেম গানের দৃশ্যে তামান্না ভাটিয়া অভিনয় করবেন ” শীর্ষক দাবি দাবি প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
দীর্ঘদিন ধরে “ক্যান্সার আদৌ কোনো রোগ নয়” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য ডা: বিকাশ গুপ্ত নামে এক চিকিৎসকের বরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে।
এই পোস্টগুলোতে কেউ ক্যান্সারে মারা যাবে না এমন দাবিতে দুটি উপায় অনুসরণের কথা বলা হয়েছে।
ক্যান্সারে মারা যাবে না এমন দাবিতে পোস্টগুলোতে বর্ণিত দুটি উপায় হলো:
১. চিনি খাওয়া বন্ধ করতে হবে। তাহলে ক্যান্সার এর জীবাণু এমনিতেই মারা যাবে।
২. গরম পানিতে লেবুর শরবত ১-৩ মাস নিয়মিত পান করলে ক্যান্সার নিরাময়/প্রতিরোধ সম্ভব হয়। এটা কেমোথেরাপির চেয়ে ১০০০ গুন ভালো।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ক্যান্সার আদৌ কোনো রোগ নয় দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দাবিগুলোর বৈজ্ঞানিক কোনো প্রমাণ নেই বরং বিশেষজ্ঞদের তথ্য মতে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি, বিস্তার ও মারা যাওয়ার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার সাথে পোস্টগুলোতে প্রচারিত দাবিগুলো অসঙ্গতিপূর্ণ।
প্রতিষ্ঠিত সূত্র উল্লেখ করে ভুয়া তথ্য
“ক্যান্সার আদৌ কোনো রোগ নয়” শীর্ষক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যগুলোতে ‘The University of meryland (শুদ্ধ বানান, maryland) of medicine’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সূত্র উল্লেখ করে দাবি করা হচ্ছে, উক্ত প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ দীর্ঘ গবেষণায় এ কথাটি প্রমাণ করেছেন। তবে অনুসন্ধানে উক্ত প্রতিষ্ঠানের এমন কোনো গবেষণার তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে কোথাও কোথাও এটিকে মেরিল্যান্ড কলেজ অফ মেডিসিনের গবেষণা বলা হচ্ছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে , এখানে।
Image Collage: Rumor Scanner
কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই নামের আলাদা কোনো প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই। বরং জানা যায়, বর্তমানের University of Maryland of Medicine ই ১৮০০ শতকে এই নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৮১২ সালে এটিকে উক্ত নামে নামকরণ করা হয়।
Screenshot: PolitiFact
ডা. বিকাশ গুপ্ত কে? ক্যান্সার নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি কি?
“ক্যান্সার আদৌ কোনো রোগ নয়” শীর্ষক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যগুলোতে ডা: বিকাশ গুপ্ত নামে একজন চিকিৎসকের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। তার পরিচয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কমপ্রিহেনসিভ ক্যান্সার সেন্টার অফ নেভাডার অনকোলজিস্ট ও হেমাটোলজিস্ট৷ এসব তথ্যের সূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের উক্ত প্রতিষ্ঠানটির
ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা যায়, বিকাশ গুপ্ত ভারতের পাটিয়ালার সরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে মেডিসিন ও অস্ত্রোপচারের উপর স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। এরপর তিনি ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাশাস্ত্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন।
Screenshot: Dr. Vikas Gupta Profile
পাশাপাশি ওয়েবসাইটটিতে ক্যান্সার বিষয়ে ডা. বিকাশ গুপ্তের মতাদর্শ হিসেবে উল্লিখিত অংশ বিশ্লেষণ করে ক্যান্সার বিষয়ে তার যে দৃষ্টিভঙ্গি পাওয়া যায়, সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘ক্যান্সার কেবলমাত্র রোগীর জীবনকেই নয়, তার পুরো পরিবারকেই প্রভাবিত করে। তাই আমার লক্ষ্য কেবল ক্যান্সারের গুনগত চিকিৎসা দেওয়াই নয় বরং চিকিৎসা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে রোগীর পুরো পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করা।’
Screenshot: Dr. Vikas Gupta Profile
ডা: বিকাশ গুপ্ত কি “ক্যান্সার আদৌ কোনো রোগ নয়” শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেছেন?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত পোস্টগুলোতে দেখা যায়, ”ক্যান্সার আদৌ কোনো রোগ নয়” শীর্ষক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যগুলোতে ডা: বিকাশ গুপ্তের উদ্ধৃতি হিসাবে প্রচার করা হচ্ছে।
তবে এই সংক্রান্ত অনুসন্ধানে আফ্রিকা ভিত্তিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান আফ্রিকা চেক এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল Beware false cancer cures from ‘Dr Gupta’ on Facebook শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Africa Check
প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ডা. বিকাশ গুপ্তের উদ্ধৃতি দিয়ে যে তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে, সেটি একটি মিথ্যা উদ্ধৃতি। মূলত ২০১৯ সালের ৪ জানুয়ারি থেকে উক্ত তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে। অপরদিকে কমপ্রিহেনসিভ ক্যান্সার সেন্টার অফ নেভাডার ওয়েবসাইটে ক্যান্সার বিষয়ে তার যে দৃষ্টিভঙ্গি পাওয়া যায়, সেটির সঙ্গেও তার এই উদ্ধৃতিটি সাংঘর্ষিক। তার ক্যান্সার বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা যায়, সেখানে ক্যান্সারকে তিনি রোগ হিসেবেই দেখে এটির চিকিৎসা ও সেবা নিয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানগুলো যা বলছে
অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলা ভাষায় ক্যান্সার নিয়ে ডা. বিকাশ গুপ্তের মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো মূলত ইংরেজি থেকে অনুবাদ হয়ে প্রচার হচ্ছে। অর্থাৎ দাবিগুলো ইংরেজিতে প্রথম প্রচার হয় এবং নিয়ে বিভিন্ন ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান Politifact ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি ‘Says cutting out sugar and drinking hot lemon water will cure cancer.‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে জানায়, উক্ত দাবিগুলোর সত্যতার বিষয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানের কোনো পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই।
এছাড়া প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির প্যাথলজি রিসার্চের স্ট্র্যাটেজিক পরিচালক ট্যাড গ্যান্সলারকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, পোস্টগুলোতে যেসব দাবি করা হয়েছে, সেগুলোর পেছনে কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ নেই। এছাড়া দাবিগুলো ক্যান্সার কোষের সৃষ্টি, ছড়িয়ে পড়া এবং মৃত্যু সম্পর্কে বুঝার ক্ষেত্রেও বৈজ্ঞানিকভাবে অপর্যাপ্ত।
দাবি ১: চিনি খাওয়া বন্ধ করতে হবে। তাহলে ক্যান্সারের জীবাণু এমনিতেই মারা যাবে
দাবিটির সত্যতা অনুসন্ধানে, যুক্তরাজ্যের ‘ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে‘ নামের একটি ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর ”Sugar and cancer – what you need to know শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Cancer Research UK
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, চিনিমুক্ত খাবার কম খাওয়ার সঙ্গে ক্যান্সারের নিম্ন ঝুঁকি অথবা দীর্ঘায়ুর কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ক্যান্সার কোষ সাধারণত খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়৷ যার কারণে তাদের প্রচুর শক্তি অর্থ্যাৎ গ্লুকোজের দরকার হয়। তবে এর পাশাপাশি অন্যান্য উপাদান যেমন অ্যামিনো এসিড ও ফ্যাটের প্রয়োজন পড়ে। আবার দেহের সুস্থ কোষেরও গ্লুকোজের প্রয়োজন আছে। তাই চিনি বা মিষ্টি জিনিস বাদ দিলেই ক্যান্সার থেকে বাঁচা যাবে, ব্যাপারটা এত সহজ নয়।
একই বিষয়ে ক্যান্সার কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়ার সিইও, অধ্যাপক সানচিয়া আরন্দা এবিসি নিউজকে ২০১৭ সালের ২৬ জুলাইয়ে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ক্যান্সার থেকে বাঁচতে চিনি পরিহার করার অর্থ দেহের সুস্থ কোষগুলোকেও প্রয়োজনীয় চিনি থেকে বঞ্চিত করা। আমি মনে করি, এর মাধ্যমে আপনি ওজন কমাতে পারবেন, কিন্তু এটি আপনার দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে দিবে। যা ক্যান্সারের জন্য উপযোগী।
Screenshot: ABC.NET
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট ‘Common Cancer Myths and Misconceptions‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানায়, গবেষণায় দেখা যায়, ক্যান্সার আক্রান্ত কোষগুলো সাধারণ কোষের চেয়ে বেশি চিনি (গ্লুকোজ) গ্রহণ করে। তবে এমন কোনো গবেষণা নেই যে, যার মাধ্যমে প্রমাণ করা যায় যে, চিনি গ্রহণ ক্যান্সার পরিস্থিতিকে জটিল করতে পারে অথবা চিনি না খেলে ক্যান্সার হবে না বা সেরে যাবে।
Screenshot: National Cancer Institute USA
প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, তবে অতিরিক্ত চিনিগ্রহণ অতিরিক্ত ওজন বাড়াতে সহায়তা করে এবং এর ফলে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, চিনি খাওয়া বন্ধের সঙ্গে ক্যান্সার হওয়া না হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।
দাবি ২: গরম পানিতে লেবুর শরবত ১-৩ মাস নিয়মিত পান করলে ক্যান্সার নিরাময়/প্রতিরোধ সম্ভব হয়। এটা কেমোথেরাপির চেয়ে ১০০০ গুন ভালো।
এই দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে University of Arkansas for Medical Sciences এর ওয়েবসাইট UAMS এ Do Lemons and Lemon Juice Cure Cancer? শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক কিছু গবেষণার উপর ভিত্তি করে এ ধরনের প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এসব গবেষণায় বলা হয়েছে, লেবু সহ টক জাতীয় ফল কিছু কিছু ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার জন্য উপযোগী।
আর এই তথ্যটিকেই লেবুর শরবত ক্যান্সারের প্রতিষেধক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। যদিও লেবুর শরবত কেবল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে কিন্তু এর সাথে কেমোথেরাপির কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই৷
Screenshot: UAMS Health
একই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর হেলথ রিসার্চ ”Do Lemons Prevent Cancer?” শীর্ষক প্রতিবেদনে জানায়, সকল ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লেবু প্রমাণিত প্রতিষেধক নয়। এটিকে কেমোথেরাপির কার্যকারিতার সঙ্গে তুলনা করার মতো কোনো গবেষণাও এখন পর্যন্ত হয়নি।
তবে কিছু কিছু গবেষণা বলছে লেবু সহ এ জাতীয় অন্যান্য ফলে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করার উপাদান থাকতে পারে। তবে এসব উপাদান এখনো মানুষের দেহে পরীক্ষা করা হয়নি।
Screenshot: National Centre for Health Research
পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের ক্যান্সার রিসার্চ ইউকের ওয়েবসাইটের ২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ‘Miracle cancer cures? Ask for evidence‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, “লেবুর রস ক্যান্সার নিরাময় করতে পারে এমন কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
Screenshot: Cancer Research UK
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান Snopes ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল ‘Do Lemons Cure Cancer?‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানায়, সাইট্রাস বা টক জাতীয় ফল ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে এমন সম্ভাব্য ক্যান্সার বিরোধী বৈশিষ্ট্যগুলোকে ধারণ করতে পারে।
Screenshot: Snopes
তবে এখন পর্যন্ত এমন কোনো গবেষণা হয়নি যা লেবুকে নিশ্চিতভাবে “সব ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রমাণিত প্রতিকার” অথবা কেমোথেরাপির চেয়ে শক্তিশালী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। বরং এই সমস্ত দাবিগুলো অতিরঞ্জিত, যা কোনো সত্য তথ্য দ্বারা সমর্থিত নয়।
মূলত, যুক্তরাষ্ট্রের কমপ্রিহেনসিভ ক্যান্সার সেন্টার অফ নেভাডার অনকোলজিস্ট ও হেমাটোলজিস্ট ডা. বিকাশ গুপ্তের সূত্রে ”ক্যান্সার আদৌ কোনো রোগ নয়” শিরোনামে দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুইটি উপায় অনুসরণ করলে কেউ ক্যান্সারে মারা যাবে না শীর্ষক কিছু তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে ডা. বিকাশ গুপ্ত এমন কোনো মন্তব্য করেছেন বলে প্রতীয়মান হয় না। এছাড়া ক্যান্সারের প্রতিষেধক বা প্রতিরোধক হিসেবে যে দুইটি উপায় অনুসরণ করতে বলা হয়েছে, সেগুলোর পক্ষেও সমর্থনযোগ্য কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে ওশ স্টেট মেডিকেল ইউনিভার্সিটি, মস্কো, রাশিয়ার ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. গুপ্তপ্রসাদ রেড্ডি (বি ভি) বলেছেন, ক্যান্সার কোনো মরণব্যাধি নয়, কিন্তু মানুষ এই রোগে মারা যায় শুধুমাত্র উদাসীনতার কারণে। তার মতে, মাত্র দুটি উপায় অনুসরণ করলেই উধাও হবে ক্যান্সার।” শীর্ষক শিরোনামে উপরিউক্ত পরামর্শগুলোর প্রায় কাছাকাছি দুই পরামর্শ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হলে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে সেটি মিথ্যা হিসেবে প্রতীয়মান হয়। এ সম্পর্কিত রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানটি পড়ুন এখানে।
এছাড়া ইন্ডিয়ার টাটা মেমোরিয়াল সেন্টার হসপিটালের ডিরেক্টর ডা. রাজেন্দ্র বুড়বের নাম ব্যবহার করে “নারকেল ফুটানো গরম জলপানে ক্যান্সার নিরাময়ের” দাবিতে আরেকটি তথ্য ফেসবুকে প্রচারিত হলে সেটিও রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে মিথ্যা হিসেবে প্রতীয়মান হয়। এ সম্পর্কিত রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানটি পড়ুন এখানে।
সুতরাং, দুইটি উপায় অনুসরণ করলে কেউ ক্যান্সারে মারা যাবে না শীর্ষক শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, “আগামীকাল (কতিপয় পোস্টে আজ দাবি) থেকে নতুন ফেসবুক/মেটা নিয়ম শুরু হবে যেখানে তারা আপনার ছবি ব্যবহার করতে পারবে।” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
কী দাবি করা হচ্ছে?
ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়েছে, “সম্ভবত আজ থেকে নতুন ফেসবুক/মেটা নিয়ম শুরু হবে যেখানে তারা আপনার ছবি ব্যবহার করতে পারবে। ভুলে যাবেন না শেষ তারিখ আজ! এটা আপনার বিরুদ্ধে মামলায় ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনি যা কিছু পোস্ট করেছেন বা আজ পোস্ট করা হয়েছে – এমনকি মেসেজ যা মুছে ফেলা হয়েছে। এতে কোন খরচ নেই, শুধু কপি করে পোস্ট করুন, পরে আফসোস করার চেয়ে ভালো।
বাংলাদেশ তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এবং বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ মোতাবেক আমি আমার অধিকার সংরক্ষণ আরোপ করছি…..
আমি ফেসবুক/মেটা বা অন্য কোন ফেসবুক/মেটা সম্পর্কিত ব্যক্তিকে আমার ছবি, তথ্য, বার্তা বা বার্তা ব্যবহার করার অনুমতি দিচ্ছি না, অতীতে এবং ভবিষ্যতে উভয় সময়েই।
এই পোস্টের যেকোনো জায়গায় আপনার আঙ্গুল ধরুন এবং একটি কপি দেখা যাবে। কপিতে ক্লিক করুন। তারপর আপনার পেজে যান এবং নতুন একটি পোস্ট শুরু করুন। আমি আবারও সজ্ঞানে প্রত্যয়ী যেঃ
আমি ফেসবুক/মেটাকে তাদের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা আমার তথ্য শেয়ার করার অনুমতি দিচ্ছি না। ছবি, বর্তমান বা অতীত, জনসংখ্যা, ফোন নম্বর বা পোস্ট… একদম আমার লিখিত অনুমতি ছাড়া কোন কিছু কোন রূপে ব্যবহার করা যাবে না।”
ওপার বাংলার চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ফেসবুক টাইমলাইনে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবি ব্যবহার সংক্রান্ত নতুন ফেসবুক/মেটা নিয়মের ভাইরাল বিষয়টি সঠিক নয় বরং কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে ফেসবুকের প্রাইভেসি পলিসি পরিবর্তনের বিষয়টি প্রচার করা হচ্ছে।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফেসবুকের Terms of service এ প্রতিষ্ঠানটির প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী, “The Facebook company is now Meta. While our company name is changing, we are continuing to offer the same products, including the Facebook app from Meta. Our Data Policy and Terms of Service remain in effect, and this name change does not affect how we use or share data” অর্থাৎ ফেসবুক বর্তমানে নাম পরিবর্তন করে মেটা হয়েছে। নাম পরিবর্তন করলেও আমরা একই পণ্য বা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের ডাটা পলিসি ও টার্মস অব সার্ভিস অপরিবর্তিত রয়েছে এবং নামের এই পরিবর্তন এগুলোতে কোনো প্রভাব ফেলবে না।
Screenshot: Facebook Terms of service
একই পেইজে আরও উল্লেখ রয়েছে যে, “You own the intellectual property rights (things like copyright or trademarks) in any such content that you create and share on Facebook and the other Facebook Company Products you use. Nothing in these Terms takes away the rights you have to your own content. You are free to share your content with anyone else, wherever you want.” অর্থাৎ আপনি যখন Facebook-এ কিছু পোস্ট করেন, তখন আপনার তৈরি এবং শেয়ার করা যেকোনো সামগ্রীর জন্য আপনি মেধা সম্পত্তির অধিকারের মালিকানা অব্যাহত রাখেন।
Screenshot: Facebook Terms of service
পাশাপাশি একই ধরনের দাবি ২০১২ সালেও ছড়িয়ে পড়লে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ঐ বছরের ৯ নভেম্বর একটি বিবৃতি দিয়ে জানায়, ‘There is a rumor circulating that Facebook is making a change related to ownership of users’ information or the content they post to the site. This is false. Anyone who uses Facebook owns and controls the content and information they post, as stated in our terms. They control how that content and information is shared. That is our policy, and it always has been.’
অর্থাৎ একটি গুজব ছড়িয়েছে যে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ব্যবহারকারীদের তথ্যের মালিকানা বা সাইটে পোস্ট করা সামগ্রীর সাথে সম্পর্কিত নীতিমালা পরিবর্তন করছে৷ এটা মিথ্যা। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা নিজেরাই তাদের পোস্ট করা বিষয়বস্তু এবং তথ্যের মালিক এবং তারা নিজেরাই এটা নিয়ন্ত্রণ করে, যেমন আমাদের শর্তাবলীতে বলা হয়েছে। এটা আমাদের নীতি, এবং এটা সবসময় হয়েছে।
Screenshot: Facebook Newsroom
এছাড়া ২০১৯ সালেও একই ধরনের দাবি ছড়িয়ে পড়লে মার্কিন সংবাদপত্র Forbes ঐ বছরই এক প্রতিবেদনে দাবিটি স্ক্যাম হিসেবে উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ফোর্বসের Stop Falling For This Facebook Scam’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে।
একই দাবিতে প্রচারিত তথ্যকে মিথ্যা উল্লেখ করে আমেরিকান ফ্যাক্টচেকিং ওয়েবসাইট Snopes এ প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন এখানে।
মূলত, সম্প্রতি ছবি ব্যবহার সংক্রান্ত নতুন ফেসবুক/মেটা নিয়ম চালুর মাধ্যমে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ব্যবহারকারীদের ছবি ব্যবহার করতে পারবে শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তার গ্রাহকদের ছবি ব্যবহার করতে পারবে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটির সঙ্গে ফেসবুকের টার্মস অব সার্ভিসের কোনো প্রাসঙ্গিকতা নেই। এছাড়া একই ধরণের দাবি ২০১২ সালেও ছড়িয়ে পড়লে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সে সময় বিবৃতি দিয়ে বিষয়টিকে গুজব হিসেবে চিহ্নিত করেছিল।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালেও একই দাবি বাংলাদেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা প্রচার করলে সেসময়ে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। রিউমর স্ক্যানারের সেই সময়ের অনুসন্ধানটি পড়ুন এখানে।
সুতরাং, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তার গ্রাহকদের ছবি ব্যবহার করতে পারবে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে সেন্টমার্টিনে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবের দৃশ্যের নয় বরং এটি ২০১১ সালের মার্চে জাপানের মিয়াকো শহরে হওয়া সুনামির ভিডিও।
অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি’র কি ফ্রেম কেটে কয়েকটি স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘এবিসি নিউজ’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৪ সালের ১১ মার্চ ‘Japan Tsunami Anniversary: 3 Years Later’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: ABC NEWS YouTube
উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনে থাকা একটি ফুটেজের সঙ্গে সেন্টমার্টিনে মোখার তাণ্ডবের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর হুবহু মিলখুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison by Rumor Scanner
পরবর্তীতে ভিডিওটির সূত্র ধরে কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে আমেরিকান ম্যাগাজিন দ্যা আটলান্টিকের অনলাইন সংস্করণে ২০১৬ সালের ১০ মার্চ ‘5 Years Since the 2011 Great East Japan Earthquake’ শীর্ষক শিরোনামে আলোচিত ভিডিওটির একটি স্থিরচিত্র ব্যবহার করে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: the atlantic.com
এছাড়াও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সে ২০২১ সালের ১০ মার্চ জাপানের ভয়াবহ ওই সুনামি নিয়ে ‘Ten years on, grief never subsides for some survivors of Japan’s tsunami’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি বিশেষ প্রতিবেদনে আলোচিত ভিডিওটির একই স্থিরচিত্রটি পাওয়া খুঁজে যায়।
Screenshot: REUTERS
অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটি গত ১৪ মে বাংলাদেশের কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবের দৃশ্যের নয়।
মূলত, ২০১১ সালের মার্চে এশিয়ার দেশ জাপানের মিয়াকো শহরে একটি ভয়াবহ সুনামি সংঘটিত হয়। ঐ ঘটনার একটি ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সেন্টমার্টিনে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবের ভিডিও দাবিতে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখা গত ১৪ মে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে। এতে ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়া সহ গাছপালার ব্যাপার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়াও ঝড়ে আহত হয়েছেন অন্তত ১১ জন।
উল্লেখ্য, পূর্বেও ভিন্ন দেশের কয়েকটি ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হলে বিষয়গুলো নিয়ে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমনকিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, জাপানের মিয়াকো শহরে ২০১১ সালে সংঘটিত সুনামির ভিডিওকে বাংলাদেশের সেন্টমার্টিনে সম্প্রতি আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবের ভিডিও দাবিতে টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, “কাশ্মীরে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলসেতু” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
যা দাবি করা হচ্ছে
বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলসেতু এখন ভারতে। জম্মু ও কাশ্মীরে চেনাব নদীর ওপর ১০৯ ফুট উঁচু রেলসেতুটি আইফেল টাওয়ার থেকে ১০ ফুটের চেয়েও বেশি উচ্চতায় নির্মাণ করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে চেনাব নদীর ওপর ১০৯ ফুট উঁচু রেলসেতুটি আইফেল টাওয়ার থেকে ১০ ফুটের চেয়েও বেশি উচ্চতায় নির্মাণ করার দাবিটি সঠিক নয় বরং রেলসেতুটির মোট উচ্চতা ১১৭৮ ফুট এবং এটি আইফেল টাওয়ার থেকে প্রায় ৯৫ ফুট উঁচু।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গত ২৬ মার্চ ভারতীয় গণমাধ্যম ‘NDTV’ তে “World’s Highest Railway Bridge In Jammu And Kashmir To Be Operational Soon” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে চেনাব নদীর উপর নির্মিত রেলসেতুটির মোট উচ্চতা ৩৫৯ মিটার বা ১১৭৮ ফুট এবং রেলসেতুটি আইফেল টাওয়ার থেকে প্রায় ৩৫ মিটার (১১৫ ফুট) উঁচু।
Screenshot from NDTV
পরবর্তীতে কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম ‘Al Jazeera’ এর ওয়েবসাইটে গত ২৭ এপ্রিল ‘World’s highest railway bridge to open in Kashmir soon’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও রেলসেতুটির মোট উচ্চতা বিষয়ে একই তথ্য পাওয়া যায়। তবে এই প্রতিবেদনে সেতুটি আইফেল টাওয়ার থেকে বেশি উচ্চতার কথা বলা হলেও পরিমাণগত কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
এখানে লক্ষ্যণীয় যে, সিএনএনের দাবি, রেলসেতুটি আইফেল টাওয়ার থেকে ২৯ মিটার বা ৯৫ ফুট উঁচু। কিন্তু এনডিটিভি দাবি করছে, ৩৫ মিটার বা ১১৫ ফুট উঁচু। অর্থাৎ, সিএনএন এবং এনডিটিভির এ সংক্রান্ত তথ্যে গরমিল রয়েছে।
এ বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে, আইফেল টাওয়ারের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৫ মার্চের এ সংক্রান্ত সর্বশেষ আপডেট বলছে, আইফেল টাওয়ারের মোট উচ্চতা ৩৩০ মিটার বা ১০৮৩ ফুট।
Screenshot source: Eiffel Tower Website
উপরোক্ত তথ্যগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ভারতের রেলসেতুটির উচ্চতা ১১৭৮ ফুট। এই উচ্চতা আইফেল টাওয়ারের চেয়ে ঠিক কত মিটার উঁচু এ বিষয়ে এনটিভি দাবি করেছে, ১১৫ ফুট। সিএনএন দাবি করেছে, ৯৫ ফুটের বেশি। এ বিষয়ে আইফেল টাওয়ারের ওয়েবসাইট জানাচ্ছে, টাওয়ারটির বর্তমান উচ্চতা ১০৮৩ ফুট। এ হিসেবে রেলসেতুটি আইফেল টাওয়ার থেকে ৯৫ ফুট (২৯ মিটার) উঁচু। এক্ষেত্রে তাই, এনডিটিভি ভুল তথ্য দিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, রেলসেতুটির মোট উচ্চতা ৩৫৯ মিটার বা ১১৭৮ ফুট এবং রেলসেতুটি আইফেল টাওয়ার থেকে প্রায় ৩৫ মিটার লম্বা যা ফুটে রূপান্তর করলে হয় প্রায় ১১৫ ফুট।
Screenshot source: Indian Railways Website
অর্থাৎ, এনডিটিভির ন্যায় ভারত সরকারও দাবি করছে, সেতুটি আইফেল টাওয়ার থেকে ১১৫ ফুট উঁচু।ভারত সরকার কেন এ সংক্রান্ত তথ্যে ২০ ফুট বাড়িয়ে বলছে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায়, আইফেল টাওয়ারের উচ্চতা ২০২২ সালের পূর্বে সর্বশেষ ২০০০ সালের আপডেট অনুযায়ী ১০৬৩ ফুট (৩২৪ মিটার) ছিল।
Screenshot source: Eiffel Tower Website
এ হিসেবে, রেলসেতুটির উচ্চতা আইফেল টাওয়ার থেকে ১১৫ ফুট বেশি হয়।
অর্থাৎ, ভারত সরকার আইফেল টাওয়ারের উচ্চতা সংক্রান্ত যে তথ্য দিয়েছে তা আপডেট তথ্য ছিল না, তা ছিল ২০০০ সালের তথ্য।
মূলত, সম্প্রতি কতিপয় গণমাধ্যমে কাশ্মীরে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলসেতু বিষয়ক একটি প্রতিবেদনে দাবি করেছে, ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে চেনাব নদীর ওপর ১০৯ ফুট উঁচু রেলসেতুটি আইফেল টাওয়ার থেকে ১০ ফুটের চেয়েও বেশি উচ্চতায় (কতিপয় গণমাধ্যমে ১১৫ ফুট উঁচু দাবি) নির্মাণ করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের দীর্ঘ অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত দাবিগুলো সঠিক নয়। চেনাব নদীর উপর নির্মিত রেলসেতুটির মোট উচ্চতা ৩৫৯ মিটার বা ১১৭৮ ফুট। তাছাড়া, ভারত সরকার কর্তৃক রেলসেতুটি আইফেল টাওয়ার থেকে প্রায় ১১৫ ফুট উঁচু দাবি করা হলেও প্রকৃতপক্ষে আইফেল টাওয়ারের উচ্চতা সংক্রান্ত ২০২২ সালে সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী, রেলসেতুটি আইফেল টাওয়ার থেকে মূলত ৯৫ ফুট উঁচু।
প্রসঙ্গত, পূর্বেও জম্মু ও কাশ্মীরে চেনাব নদীর উপর ট্রেন ট্রায়াল নিয়ে ইন্টারনেটে গুজব ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
উল্লেখ্য, ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে চেনাব নদীর ওপর নির্মিত রেলসেতুটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে চালু হবে।
সুতরাং, ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে চেনাব নদীর ওপর নির্মাণাধীন রেলসেতুটি ১০৯ ফুট উঁচু এবং এটি আইফেল টাওয়ারের চেয়ে ১০ ফুট (কারও দাবি ১১৫ ফুট) বেশি উচ্চতায় নির্মাণ করা হয়েছে শীর্ষক একটি দাবি কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি, ভারতীয় টেলিভিশন ‘আকাশ ৮’ এর যৌথ কর্ণধার ইশিতা সুরানার মৃত্যুর বিষয়ে প্রকাশিত খবরের শিরোনামে ‘মাত্র ২০ বছর বয়সেই চলে গেলেন ইশিতা সুরানা’ শীর্ষক একটি দাবি কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঈশিতা সুরানা ২০ বছর বয়সে মারা যাননি বরং মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৩৯ বছর।
অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম Eisamay এর অনলাইন সংস্করণে ‘মাত্র ৩৯-এ প্রয়াত আকাশ আটের কর্ত্রী ঈশিতা সুরানা, ‘বাংলার একতা কপুর’-এর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ টেলি জগৎ’ শীর্ষক শিরোনামে গত ২০ মে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Eisamay
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত শুক্রবার (১৯ মে) কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে হাসপাতালে মৃত্যু হয় ঈশিতা সুরানার। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৩৯ বছর। পুনের আইআইএমএ থেকে এমবিএ পাশ করে ২০০৭ সালে পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম Kolkata24×7 এর ওয়েবসাইটে ‘মাত্র ৩৯ বয়সে প্রয়াত বাংলার ‘একতা কাপুর’ ঈশিতা সুরানা’ শীর্ষক শিরোনামে গত ২০ মে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: kolkata24×7 website
এই প্রতিবেদনেও একই তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়।
ভারতীয় আরেক সংবাদমাধ্যম Times of India এর ওয়েবসাইটেও ঈশিতা সুরানার মৃত্যুর খবরে বলা হয়, মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৪০ এর কোঠায়।
Screenshot: Times of India
এছাড়াও, ভারতীয় গণমাধ্যম Hindustan Times এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পুণের আইআইএমএ থেকে এমবিএ পাশ করে ২০০৭ সালে পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দিয়েছিলেন ঈশিতা।
এই প্রতিবেদন থেকেই প্রতীয়মান হয় যে, এমবিএ সম্পন্ন করে ২০০৭ সালে ব্যবসায় যোগ দেওয়া একজন মানুষের বয়স ২০২৩ সালে কোনোভাবেই ২০ বছর হওয়ার সুযোগ নেই।
মূলত, গত ১৯ মে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে হাসপাতালে মৃত্যু হয় ভারতীয় টেলিভিশন ‘আকাশ ৮’ এর যৌথ কর্ণধার ঈশিতা সুরানার। এ বিষয়ে কতিপয় গণমাধ্যমের খবরের শিরোনামে দাবি করা হয়, ২০ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৩৯ বছর। তবে বাংলাদেশের কতিপয় গণমাধ্যমের শিরোনামে তথ্যটি ভুল দেওয়া হলেও মূল প্রতিবেদনে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে বাবা অশোক সুরানার মৃত্যুর পর আকাশ ৮ চ্যানেলের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের দায়িত্ব সামলাতে শুরু করেন ঈশিতা। তিনি ছিলেন একাধারে আকাশ ৮ চ্যানেলের ক্রিয়েটিভ হেডও।
উল্লেখ্য, পূর্বেও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভুল তথ্য উপস্থাপন করে সংবাদ প্রকাশ নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, সদ্য প্রয়াত ৩৯ বছর বয়সী ঈশিতা সুরানার বয়স মৃত্যুকালে ২০ বছর হয়েছিল শীর্ষক একটি দাবি বাংলাদেশের কতিপয় গণমাধ্যমের সংবাদের শিরোনামে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সময়ে জারিকৃত ‘টাইটেল ৪২’র অবসান হওয়ায় গত ১১ মে থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে হাজার হাজার শরনার্থী প্রবেশের খবরে কতিপয় গণমাধ্যমে একটি ছবি প্রকাশ করে ছবিটি শরণার্থী প্রবেশের সময়ের শীর্ষক দাবি করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী প্রবেশের খবরে গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০১৮ সালে আমেরিকার অভিবাসীদের মেক্সিকোতে প্রবেশের সময়ে তোলা ছবি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে মার্কিন সংবাদ বিশ্লেষণ ভিত্তিক সংস্থা Toward Freedom এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ১৭ জুন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন এবং ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ০১ নভেম্বর মধ্য আমেরিকার অভিবাসীদের প্রথম কাফেলা ওক্সাকা রাজ্যের মাতিয়াস রোমেরো শহরে পৌঁছেছিল। রোমেরো মেক্সিকোর একটি শহরের নাম।
Screenshot source: Toward Freedom
ছবিটি IOM এর জন্য তুলেছিলেন রাফায়েল রদ্রিগেজ নামক এক ব্যক্তি।
পরবর্তীতে ‘International Organization for Migration (IOM)’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ০২ নভেম্বর প্রকাশিত মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot source: IOM
ছবিটির ক্যাপশন এবং প্রতিবেদনের তথ্য থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে, ছবিটি ২০১৮ সালে মেক্সিকোতে আমেরিকার অভিবাসীদের প্রবেশের দৃশ্য।
মূলত, গত ১১ মে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সময়ে জারিকৃত ‘টাইটেল ৪২’র অবসান হয়। এর ফলে দেশটির সীমান্ত দিয়ে হাজার হাজার শরনার্থী প্রবেশের খবরে কতিপয় গণমাধ্যমে একটি ছবি প্রকাশ করে ‘ছবিটি শরণার্থী প্রবেশের সময়ের দৃশ্যের’ শীর্ষক দাবি করা হয়। এর প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। ২০১৮ সালে মেক্সিকোতে আমেরিকার অভিবাসীদের প্রবেশের ছবি এটি।
সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক সময়ে শরনার্থী প্রবেশের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে ২০১৮ সালে মেক্সিকোতে আমেরিকার অভিবাসীদের প্রবেশের ছবি প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।