ডা. বিকাশ গুপ্তের সূত্রে ক্যান্সার নিরাময়ের উপায় দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা

দীর্ঘদিন ধরে “ক্যান্সার আদৌ কোনো রোগ নয়” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য ডা: বিকাশ গুপ্ত  নামে এক চিকিৎসকের বরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে।

ফেসবুকে সম্প্রতি প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

২০২২ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

২০২১ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

২০২০ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

২০১৯ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

এই পোস্টগুলোতে কেউ ক্যান্সারে মারা যাবে না এমন দাবিতে দুটি উপায় অনুসরণের কথা বলা হয়েছে। 

ক্যান্সারে মারা যাবে না এমন দাবিতে পোস্টগুলোতে বর্ণিত  দুটি উপায় হলো:

১. চিনি খাওয়া বন্ধ করতে হবে। তাহলে ক্যান্সার এর জীবাণু এমনিতেই মারা যাবে।

২. গরম পানিতে লেবুর শরবত ১-৩ মাস নিয়মিত পান করলে ক্যান্সার নিরাময়/প্রতিরোধ সম্ভব হয়। এটা কেমোথেরাপির চেয়ে ১০০০ গুন ভালো।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ক্যান্সার আদৌ কোনো রোগ নয় দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দাবিগুলোর বৈজ্ঞানিক কোনো প্রমাণ নেই বরং বিশেষজ্ঞদের তথ্য মতে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি, বিস্তার ও মারা যাওয়ার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার সাথে পোস্টগুলোতে প্রচারিত দাবিগুলো অসঙ্গতিপূর্ণ। 

প্রতিষ্ঠিত সূত্র উল্লেখ করে ভুয়া তথ্য

“ক্যান্সার আদৌ কোনো রোগ নয়” শীর্ষক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যগুলোতে ‘The University of meryland (শুদ্ধ বানান, maryland) of medicine’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সূত্র উল্লেখ করে দাবি করা হচ্ছে, উক্ত প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ দীর্ঘ গবেষণায় এ কথাটি প্রমাণ করেছেন। তবে অনুসন্ধানে উক্ত প্রতিষ্ঠানের এমন কোনো গবেষণার তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে কোথাও কোথাও এটিকে মেরিল্যান্ড কলেজ অফ মেডিসিনের গবেষণা বলা হচ্ছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে , এখানে

Image Collage: Rumor Scanner

কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই নামের আলাদা কোনো প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই। বরং জানা যায়, বর্তমানের University of Maryland of Medicine ই ১৮০০ শতকে এই নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৮১২ সালে এটিকে উক্ত নামে নামকরণ করা হয়।

Screenshot: PolitiFact

ডা. বিকাশ গুপ্ত কে? ক্যান্সার নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি কি? 

“ক্যান্সার আদৌ কোনো রোগ নয়” শীর্ষক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যগুলোতে ডা: বিকাশ গুপ্ত নামে একজন চিকিৎসকের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। তার পরিচয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের  কমপ্রিহেনসিভ ক্যান্সার সেন্টার অফ নেভাডার অনকোলজিস্ট ও হেমাটোলজিস্ট৷ এসব তথ্যের সূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের উক্ত প্রতিষ্ঠানটির 

ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা যায়, বিকাশ গুপ্ত ভারতের পাটিয়ালার সরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে মেডিসিন ও অস্ত্রোপচারের উপর স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। এরপর তিনি ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাশাস্ত্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন।

Screenshot: Dr. Vikas Gupta Profile

পাশাপাশি ওয়েবসাইটটিতে ক্যান্সার বিষয়ে ডা. বিকাশ গুপ্তের মতাদর্শ হিসেবে উল্লিখিত অংশ বিশ্লেষণ করে ক্যান্সার বিষয়ে তার যে দৃষ্টিভঙ্গি পাওয়া যায়, সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘ক্যান্সার কেবলমাত্র রোগীর জীবনকেই নয়, তার পুরো পরিবারকেই প্রভাবিত করে। তাই আমার লক্ষ্য কেবল ক্যান্সারের গুনগত চিকিৎসা দেওয়াই নয় বরং চিকিৎসা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে রোগীর পুরো পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করা।’ 

Screenshot: Dr. Vikas Gupta Profile

ডা: বিকাশ গুপ্ত কি “ক্যান্সার আদৌ কোনো রোগ নয়” শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেছেন?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত পোস্টগুলোতে দেখা যায়, ”ক্যান্সার আদৌ কোনো রোগ নয়” শীর্ষক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যগুলোতে ডা: বিকাশ গুপ্তের উদ্ধৃতি হিসাবে প্রচার করা হচ্ছে। 

তবে এই সংক্রান্ত অনুসন্ধানে আফ্রিকা ভিত্তিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান আফ্রিকা চেক এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল Beware false cancer cures from ‘Dr Gupta’ on Facebook শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Africa Check 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ডা. বিকাশ গুপ্তের উদ্ধৃতি দিয়ে যে তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে, সেটি একটি মিথ্যা উদ্ধৃতি। মূলত ২০১৯ সালের ৪ জানুয়ারি থেকে উক্ত তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে।
অপরদিকে কমপ্রিহেনসিভ ক্যান্সার সেন্টার অফ নেভাডার ওয়েবসাইটে ক্যান্সার বিষয়ে তার যে দৃষ্টিভঙ্গি পাওয়া যায়, সেটির সঙ্গেও তার এই উদ্ধৃতিটি সাংঘর্ষিক। তার ক্যান্সার বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা যায়, সেখানে ক্যান্সারকে তিনি রোগ হিসেবেই দেখে এটির চিকিৎসা ও সেবা নিয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানগুলো যা বলছে

অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলা ভাষায় ক্যান্সার নিয়ে ডা. বিকাশ গুপ্তের মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো মূলত ইংরেজি থেকে অনুবাদ হয়ে প্রচার হচ্ছে। অর্থাৎ দাবিগুলো ইংরেজিতে প্রথম প্রচার হয় এবং নিয়ে বিভিন্ন ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান Politifact ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি ‘Says cutting out sugar and drinking hot lemon water will cure cancer.‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে জানায়, উক্ত দাবিগুলোর সত্যতার বিষয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানের কোনো পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই। 

এছাড়া প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির প্যাথলজি রিসার্চের স্ট্র‍্যাটেজিক পরিচালক ট্যাড গ্যান্সলারকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, পোস্টগুলোতে যেসব দাবি করা হয়েছে, সেগুলোর পেছনে কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ নেই। এছাড়া দাবিগুলো ক্যান্সার কোষের সৃষ্টি, ছড়িয়ে পড়া এবং মৃত্যু সম্পর্কে বুঝার ক্ষেত্রেও বৈজ্ঞানিকভাবে অপর্যাপ্ত। 

Screenshot: PolitiFact

এছাড়া ফিলিপাইন ভিত্তিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান Vera Files ও তাদের অনুসন্ধানে উক্ত দাবিগুলোকে মিথ্যা হিসেবে উল্লেখ করে ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর ‘VERA FILES FACT CHECK: FB post makes multiple FALSE claims on food that ‘kill’ cancer‘ শীর্ষক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

পোস্টের দাবি দুইটির সত্যতা যাচাই

দাবি ১: চিনি খাওয়া বন্ধ করতে হবে। তাহলে ক্যান্সারের জীবাণু এমনিতেই মারা যাবে

দাবিটির সত্যতা অনুসন্ধানে, যুক্তরাজ্যের ‘ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে‘ নামের একটি ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর ”Sugar and cancer – what you need to know শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Cancer Research UK

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, চিনিমুক্ত খাবার কম খাওয়ার সঙ্গে ক্যান্সারের নিম্ন ঝুঁকি অথবা দীর্ঘায়ুর কোনো সম্পর্ক নেই। 

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ক্যান্সার কোষ সাধারণত খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়৷ যার কারণে তাদের প্রচুর শক্তি অর্থ্যাৎ গ্লুকোজের দরকার হয়। তবে এর পাশাপাশি অন্যান্য উপাদান যেমন অ্যামিনো এসিড ও ফ্যাটের প্রয়োজন পড়ে। আবার দেহের সুস্থ কোষেরও গ্লুকোজের প্রয়োজন আছে। তাই চিনি বা মিষ্টি জিনিস বাদ দিলেই ক্যান্সার থেকে বাঁচা যাবে, ব্যাপারটা এত সহজ নয়।

একই বিষয়ে ক্যান্সার কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়ার সিইও, অধ্যাপক সানচিয়া আরন্দা এবিসি নিউজকে ২০১৭ সালের ২৬ জুলাইয়ে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ক্যান্সার থেকে বাঁচতে চিনি পরিহার করার অর্থ দেহের সুস্থ কোষগুলোকেও প্রয়োজনীয় চিনি থেকে বঞ্চিত করা। আমি মনে করি, এর মাধ্যমে আপনি ওজন কমাতে পারবেন, কিন্তু এটি আপনার দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে দিবে। যা ক্যান্সারের জন্য উপযোগী। 

Screenshot: ABC.NET

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট ‘Common Cancer Myths and Misconceptions‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানায়, গবেষণায় দেখা যায়, ক্যান্সার আক্রান্ত কোষগুলো সাধারণ কোষের চেয়ে বেশি চিনি (গ্লুকোজ) গ্রহণ করে। তবে এমন কোনো গবেষণা নেই যে, যার মাধ্যমে প্রমাণ করা যায় যে, চিনি গ্রহণ ক্যান্সার পরিস্থিতিকে জটিল করতে পারে অথবা চিনি না খেলে ক্যান্সার হবে না বা সেরে যাবে।

Screenshot: National Cancer Institute USA 

প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, তবে অতিরিক্ত চিনিগ্রহণ অতিরিক্ত ওজন বাড়াতে সহায়তা করে এবং এর ফলে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, চিনি খাওয়া বন্ধের সঙ্গে ক্যান্সার হওয়া না হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।

দাবি ২: গরম পানিতে লেবুর শরবত ১-৩ মাস নিয়মিত পান করলে ক্যান্সার নিরাময়/প্রতিরোধ সম্ভব হয়। এটা কেমোথেরাপির চেয়ে ১০০০ গুন ভালো।

এই দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে University of Arkansas for Medical Sciences এর ওয়েবসাইট UAMS এ  Do Lemons and Lemon Juice Cure Cancer? শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

এই প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক কিছু গবেষণার উপর ভিত্তি করে এ ধরনের প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এসব গবেষণায় বলা হয়েছে, লেবু সহ টক জাতীয় ফল কিছু কিছু ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার জন্য উপযোগী।

আর এই তথ্যটিকেই লেবুর শরবত ক্যান্সারের প্রতিষেধক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। যদিও লেবুর শরবত কেবল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে কিন্তু এর সাথে কেমোথেরাপির কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই৷ 

Screenshot: UAMS Health

একই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর হেলথ রিসার্চ ”Do Lemons Prevent Cancer?” শীর্ষক প্রতিবেদনে জানায়, সকল ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লেবু প্রমাণিত প্রতিষেধক নয়। এটিকে কেমোথেরাপির কার্যকারিতার সঙ্গে তুলনা করার মতো কোনো গবেষণাও এখন পর্যন্ত হয়নি। 

তবে কিছু কিছু গবেষণা বলছে লেবু সহ এ জাতীয় অন্যান্য ফলে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করার উপাদান থাকতে পারে। তবে এসব উপাদান এখনো মানুষের দেহে পরীক্ষা করা হয়নি।

Screenshot: National Centre for Health Research

পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের ক্যান্সার রিসার্চ ইউকের ওয়েবসাইটের ২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ‘Miracle cancer cures? Ask for evidence‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, “লেবুর রস ক্যান্সার নিরাময় করতে পারে এমন কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।

Screenshot: Cancer Research UK

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান Snopes ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল ‘Do Lemons Cure Cancer?‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানায়, সাইট্রাস বা টক জাতীয় ফল ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে এমন সম্ভাব্য ক্যান্সার বিরোধী বৈশিষ্ট্যগুলোকে ধারণ করতে পারে।  

Screenshot: Snopes

তবে এখন পর্যন্ত এমন কোনো গবেষণা হয়নি যা লেবুকে নিশ্চিতভাবে “সব ধরনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রমাণিত প্রতিকার” অথবা কেমোথেরাপির চেয়ে শক্তিশালী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। বরং এই সমস্ত দাবিগুলো অতিরঞ্জিত, যা কোনো সত্য তথ্য দ্বারা সমর্থিত নয়।

মূলত, যুক্তরাষ্ট্রের কমপ্রিহেনসিভ ক্যান্সার সেন্টার অফ নেভাডার অনকোলজিস্ট ও হেমাটোলজিস্ট ডা. বিকাশ গুপ্তের সূত্রে ”ক্যান্সার আদৌ কোনো রোগ নয়” শিরোনামে দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুইটি উপায় অনুসরণ করলে কেউ ক্যান্সারে মারা যাবে না শীর্ষক কিছু তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে ডা. বিকাশ গুপ্ত এমন কোনো মন্তব্য করেছেন বলে প্রতীয়মান হয় না। এছাড়া ক্যান্সারের প্রতিষেধক বা প্রতিরোধক হিসেবে যে দুইটি উপায় অনুসরণ করতে বলা হয়েছে, সেগুলোর পক্ষেও সমর্থনযোগ্য কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে ওশ স্টেট মেডিকেল ইউনিভার্সিটি, মস্কো, রাশিয়ার ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. গুপ্তপ্রসাদ রেড্ডি (বি ভি) বলেছেন, ক্যান্সার কোনো মরণব্যাধি নয়, কিন্তু মানুষ এই রোগে মারা যায় শুধুমাত্র উদাসীনতার কারণে। তার মতে, মাত্র দুটি উপায় অনুসরণ করলেই উধাও হবে ক্যান্সার।” শীর্ষক শিরোনামে উপরিউক্ত পরামর্শগুলোর প্রায় কাছাকাছি দুই পরামর্শ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হলে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে সেটি মিথ্যা হিসেবে প্রতীয়মান হয়। এ সম্পর্কিত রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানটি পড়ুন এখানে। 

এছাড়া  ইন্ডিয়ার টাটা মেমোরিয়াল সেন্টার হসপিটালের ডিরেক্টর ডা. রাজেন্দ্র বুড়বের নাম ব্যবহার করে “নারকেল ফুটানো গরম জলপানে ক্যান্সার নিরাময়ের” দাবিতে আরেকটি তথ্য ফেসবুকে প্রচারিত হলে সেটিও রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে মিথ্যা হিসেবে প্রতীয়মান হয়। এ সম্পর্কিত রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানটি পড়ুন এখানে

সুতরাং, দুইটি উপায় অনুসরণ করলে কেউ ক্যান্সারে মারা যাবে না শীর্ষক শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

RS Team
Rumor Scanner Fact-Check Team
- Advertisment -spot_img
spot_img
spot_img