Home Blog Page 623

তুরস্কের স্মৃতিস্তম্ভের ভিডিওকে জ্বীন-পরী বন্দী করে রাখার দৃশ্য দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, “বাস্তব জিন দেখেন তুরস্কের স্তাম্বলশহরে জিন পরি নামাজ পড়তে আসে সেখানকার হুজুর এদের বন্দি করে ফেলে” শীর্ষক শিরোনামে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে অজুরত জ্বীন-পরী আটকে রাখা হয়েছে দাবিতে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে।

টিকটকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

তুরস্কের

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ইস্তাম্বুলে জিন আটকে রাখার নয় বরং ভিডিওটি তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের একটি মনুমেন্ট বা স্মৃতিস্তম্ভের, যা ২০১৬ সালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের বিরুদ্ধে সংঘটিত ব্যর্থ সামরিক ক্যু’তে নিহত সাধারণ তুর্কি নাগরিকদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, steemit নামের ওয়েবসাইটে “Saraçhane monument of July 15” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি নিবন্ধ খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

Source: steemit

উক্ত নিবন্ধ থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই তুরস্কে রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের বিপক্ষে একটি অভ্যুত্থান অনুষ্ঠিত হয়। সেসময় তুরস্কের সাধারণ জনগণ এই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাজপথে নামেন। ফলশ্রুতিতে অভ্যুত্থানকারী সামরিক বাহিনীর সদস্যরা নির্বিচারে নিরস্ত্র সাধারণ জনগণের উপর গুলিবর্ষণ করে। 

সিসি ক্যামেরায় সেদিন অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ইস্তাম্বুল শহরে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার পূর্বে কয়েকজন মানুষের অজু করার দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। যারা বিক্ষোভে অংশ নেওয়াকে অনিবার্য মৃত্যু মেনে নিয়েছিলেন এবং পবিত্র অবস্থায় মৃত্যুবরণের উদ্দেশ্যে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার জন্য অজু করেছিলেন। পরবর্তীতে, উক্ত অভ্যুত্থানের ঘটনায় তুরস্কের সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখতে অজুরত বিক্ষোভকারীদের একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে ইস্তাম্বুল মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষ।

উক্ত নিবন্ধের সূত্র ধরে, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে eslam.de নামের ওয়েবসাইটে উক্ত স্মৃতিস্তম্বের একটি ফলকের ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

স্মৃতিস্তম্ভের ফলকে খোদাইকৃত ঘটনা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ২০১৬ সালে অভ্যুত্থানের প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিহত সাধারণ তুর্কি নাগরিকদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মিত হয়।

Source: eslam.de

তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের বিরুদ্ধে হওয়া সেই ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন আল-জাজিরা।  

মূলত, ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের বিরুদ্ধে একটি সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। উক্ত অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে এরদোয়ানপন্থী সাধারণ তুর্কি নাগরিকরা রাজপথে বিক্ষোভ করলে অভ্যুত্থানকারীদের হামলায় ২৪১জন নিহত হন। পরবর্তীতে, এই অভ্যুত্থানের ঘটনায় নিহতদের স্মরণে ইস্তাম্বুলে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয় যেখানে অজুরত বিক্ষোভকারীদের ভাষ্কর্য রয়েছে।  উক্ত স্মৃতিস্তম্ভের অজুরত মানুষের ভাস্কর্যের দৃশ্যকেই তুরস্কে ইস্তাম্বুল শহরে জ্বীন-পরী বন্দী করে রাখার দৃশ্য  দাবিতে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও পাকিস্তানের হাসপাতালে ভূত দেখতে পাওয়ার ভিডিও দাবিতে স্ক্রিপ্টেড একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেবিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, স্মৃতিস্তম্ভের দৃশ্যকে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে জ্বীন-পরী আটকে রাখার দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কালবেলা’র নকল ফটোকার্ডে নয়াপল্টনে ছাত্রদল নেত্রী মানসুরার গণধর্ষণের শিকার হওয়ার গুজব

সম্প্রতি, “নয়াপল্টনে গণধর্ষণের শিকার ছাত্রদল নেত্রী মানসুরা” শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আইন বিভাগের ছাত্রী মানসুরা আলমের ছবি যুক্ত জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ছাত্রদল নেত্রী মানসুরা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই বিষয় সত্য কিনা তা জানতে চেয়ে করা একটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,নয়াপল্টনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আইন বিভাগের ছাত্রী মানসুরা আলমের গণধর্ষণের শিকার হওয়ার বিষয়ক কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং দৈনিক কালবেলাও উক্ত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে কালবেলা’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ৩০ অক্টোবর ২০২৩।

Screenshot : Facebook claim post

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ এবং কালবেলা’র লোগোর সূত্র ধরে কালবেলা’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ৩০ অক্টোবর প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও কালবেলা’র ওয়েবসাইটেও এসংক্রান্ত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

Photocard Comparison : Rumor Scanner

আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ফটোকার্ডের ডিজাইনের প্রায় মিল থাকলেও আলোচিত ফটোকার্ডে থাকা টেক্সটের ফন্ট ডিজাইনের সাথে কালবেলা কর্তৃক প্রকাশিত ফটোকার্ডের টেক্সটের ফন্ট ডিজাইনের মধ্যে সুক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে।

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো বিশ্বস্ত সূত্রে উক্ত দাবি সংক্রান্ত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। 

মূলত, সরকার পতনের আন্দোলনে রাজপথে সরব বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাজধানীতে নয়াপল্টনে অবস্থিত হওয়ার স্বাভাবিক এই স্থানটি এখন রাজনৈতিকভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এরই প্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক সময়ে প্রায়ই গণমাধ্যমের সংবাদে উঠে আছে রাজধানীর এই এলাকাটির নাম। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি নয়াপল্টনে ‘গণধর্ষণের শিকার ঢাবির ছাত্রদল নেত্রী মানসুরা’ শীর্ষক শিরোনামে জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে প্রকাশিত হয়। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবিটির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি মহাসমাবেশের আয়োজন করে। পরবর্তীতে মহাসমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলার অভিযোগ এবং তা নিয়ে সংঘর্ষের জের ধরে সেই সমাবেশ স্থগিত করে ২৯ অক্টোবর সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। এদিন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করে পুলিশ। একইদিন রাতে সরকারের পদত্যাগ, খালেদা জিয়ার মুক্তি, নেতা-কর্মীদের হত্যা, গ্রেপ্তার ও হামলা, মহাসচিবকে গ্রেপ্তার ও নেতাদের বাসায় তল্লাশির প্রতিবাদে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি।

উল্লেখ্য, পূর্বে বিএনপি’র ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে  ছড়ানো একাধিক গুজব শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ‘নয়াপল্টনে গণধর্ষণের শিকার ছাত্রদল নেত্রী মানসুরা’ শীর্ষক তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে কালবেলা’র নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

কিশোরগঞ্জের বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের নকশাকে ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের নকশা দাবিতে প্রচার 

0

সম্প্রতি, একটি নকশাকে ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নকশা দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

বঙ্গবন্ধু

ছবিটি যুক্ত করে ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নকশার দাবিতে যে নকশাটি প্রচার করা হচ্ছে তা ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় বরং এটি কিশোরগঞ্জে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নকশা। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে কিশোরগঞ্জে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে আলোচিত নকশাটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman University Website 

মূলত, একটি প্রস্তাবিত নকশার ছবি ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নকশার ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত নকশাটি কিশোরগঞ্জে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নকশার ছবি। এছাড়া, ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির ওয়েবসাইট না থাকায় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে ছবিটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

আগামীকাল হতে হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফোন কলে নতুন যোগাযোগের নিয়ম চালু হওয়ার গুজব

সম্প্রতি “আগামীকাল থেকে হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফোন কলের নতুন যােগাযােগের নিয়ম কার্যকর করা হবে” শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

হোয়াটসঅ্যাপ

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কোনো প্রকার তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিগুলো ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে এবং পূর্বেও বিভিন্ন সময়ে এই ভিত্তিহীন বিষয়টি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছিল।

মূলত, কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে “আগামীকাল থেকে হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফোন কলের নতুন যােগাযােগের নিয়ম কার্যকর করা হবে” শীর্ষক দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচার করা হয়। তবে দাবিগুলোর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য,পূর্বেও বিভিন্ন সময়ে বিষয়টি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে এটিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

পণ্যের বারকোডের প্রথম তিন সংখ্যা দ্বারা কী বোঝায়?

0

বারকোড কী?

বারকোড হল একটি বর্গাকার বা আয়তক্ষেত্রাকার চিত্র যাতে সমান্তরাল কালো রেখা এবং বিভিন্ন প্রস্থের সাদা স্থানের একটি সিরিজ থাকে, যা স্ক্যান করে পাঠ করা যায়। দ্রুত সনাক্তকরণের উপায় হিসাবে পণ্যগুলিতে বারকোড ব্যবহার করা হয়৷ সহজভাবে বললে কোনো পণ্য কেনার পর প্যাকেটের গায়ে আমরা কিছু সাদা-কালো দাগ কাটা আর তার নিচে কিছু সংখ্যা লেখা দেখতে পাই। এই লেবেলকেই বলে বারকোড।  

বারকোড তথ্য উপস্থাপন করার একটি উপায় বা মাধ্যম। আবার অন্য ভাবে বলতে গেলে বারকোড মূলত পণ্যের প্রস্তুতকারক কোম্পানি, উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ, ওজন, পরিমাণ, মূল্য এবং স্টক সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপনের একটি ডিজিটাল মাধ্যম। অর্থাৎ, কোনো পণ্যের গায়ে নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থের সাদা-কালো রংয়ের সংমিশ্রণে পণ্যের বিস্তারিত বিবরণ লিপিবদ্ধ রাখার উপায়ই হলো বারকোড।

বারকোডের ব্যবহার

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩০ ধরনের বারকোডিং সিস্টেম প্রচলিত আছে। তবে এর সবগুলোই বিশ্বব্যাপী বহুলভাবে ব্যবহৃত হয় না। ১৯৭৩ সালে যাত্রা শুরু করা GS1 বিশ্বব্যাপী বহুল প্রচলিত বারকোড সিস্টেমগুলোর একটি। অ্যামাজন, গুগল, আলিবাবা, ওয়ালমার্টের মত অনলাইন প্লাটফর্ম ছাড়াও বিশ্বব্যাপী লক্ষ-কোটি বিপনী বিতানে পণ্যের তথ্য সংরক্ষণে GS1 স্ট্যান্ডার্ড ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই বারকোডিং পদ্ধতিতে সাধারণত বারকোডের প্রথম তিনটি সংখ্যা দ্বারা পণ্যটি কোন দেশের কোম্পানির তা জানা যায়।

বারকোড নির্দেশক

বারকোড ইস্যুকারী সংস্থা GS1 এর ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, বিশ্বের প্রত্যেক দেশের বিপরীতে তারা তিন সংখ্যার একটি কোড সরবরাহ করে থাকে। এই তিন সংখ্যা দিয়ে সেই দেশের প্রত্যেক কোম্পানির বারকোড শুরু হয়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের জিএস১ কোড হলো ৮৯০। এর অর্থ হলো, ভারতীয় কোম্পানির উৎপাদিত সকল পণ্যের বারকোড নম্বর ৮৯০ সংখ্যা দ্বারা শুরু হবে। 

বারকোড কেন এখন আলোচনায়

সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন সংঘাতকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের জোর দাবি উঠেছে। এই বয়কটের দাবির স্বাপেক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বারকোড দেখে ইসরায়েলি পণ্য শনাক্তের একটি পদ্ধতি প্রচার করা হচ্ছে। যেখানে বলা হচ্ছে,  “ইসরাইলী পণ্য চেনার সহজ উপায়। বারকোডের শুরুতে যদি ৭২৯ সংখ্যা থাকে, বুঝে নিবেন এটা ইসরাইলী পণ্য” এবং পোস্টের সাথে সংযুক্ত ছবিতে থাকা ‘মেড ইন ইসরায়েল’ লেখা দ্বারা ইসরায়েলে উৎপাদিত পণ্য বলা হয়েছে। ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট এখানে এবং এখানে। 

পণ্যের

বারকোডে ৭২৯ কোড দ্বারা আসলে কী নির্দেশ করে?

বারকোড ইস্যুকারী সংস্থা GS1 এর দেওয়া তালিকা অনুযায়ী, ইসরায়েলের জন্য বরাদ্দকৃত কোডটি হচ্ছে ৭২৯। 

Indication By Rumor Scanner

এই তালিকার শুরুতে বলা হয়েছে, জিএস১ বারকোডিং সিস্টেমে শুরুর ৩টি ডিজিট পণ্যের কোম্পানির দেশ নির্দেশ করে, তবে পণ্যটি নির্দিষ্ট করে কোন দেশে উৎপাদিত হয়েছে তা নির্দেশ করে না। তাই ৭২৯ সংখ্যা দিয়ে শুরু হওয়া বারকোডের পণ্যটি একটি ইসরায়েলি কোম্পানির পণ্য, তবে এটি ইসরায়েলে বা পৃথিবীর অন্য দেশেও উৎপাদিত হতে পারে। 

Indication By Rumor Scanner

পরবর্তীতে, জিএস১ এর ওয়েবসাইটে Frequently Asked Questions(FAQ) অংশে “Does the GS1 Prefix (first 2 or 3 digits of the EAN-13 barcode number) show the country of origin?” শিরোনামের একটি ওয়েবপেজ খুঁজে যায়। সেখান বলা হয়, জিএস১ বারকোড পদ্ধতিতে  বারকোডের শুরুর তিন সংখ্যা দ্বারা পণ্যটি নির্দিষ্ট করে কোন দেশে উৎপাদিত তা জানা যায় না। 

অর্থাৎ, জিএস১ বারকোডিং পদ্ধতিতে ৭২৯ প্রেফিক্স ডিজিট দ্বারা নির্দেশ করা হয় যে, পণ্যটি একটি ইসরায়েলি কোম্পানির পণ্য। তবে, ৭২৯ প্রেফিক্স কোডের পণ্যটি ইসরায়েলে যেমন উৎপাদিত হতে পারে, তেমন ভিন্ন কোনো দেশেও উৎপাদিত হতে পারে। তাই নির্দিষ্ট করে বারকোডের প্রথম তিনটি সংখ্যা দ্বারা এটি জানা যায় না ঐ পণ্য কোথায় উৎপাদন করা হয়েছে। বরং যে কোম্পানি ঐ পণ্য উৎপাদন করছে সেটি কোন দেশের তা বারকোডের প্রথম তিন সংখ্যা দ্বারা চিহ্নিত করা যায়। তবে যদি বারকোডের প্রথম তিন সংখ্যা ৭২৯ এর পাশাপাশি পণ্যে নির্দিষ্ট করে Made in Israel লেখা থাকে তাহলে তখন নির্দিষ্ট করে বলা যাবে ঐ পণ্যটি ইসরায়েলি কোম্পানির এবং ইসরায়েলে উৎপাদিত। 

মূলত, বারকোড হলো তথ্য উপস্থাপন করার একটি উপায় বা মাধ্যম, যেখানে পণ্যের প্রস্তুতকারক কোম্পানি, উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ, ওজন, পরিমাণ, মূল্য এবং স্টক সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য নির্দেশিত থাকে। বর্তমানে বিশ্বে GS1 নামক একটি বারকোড ইস্যুকারী সংস্থার স্ট্যান্ডার্ড ব্যবহার করা হচ্ছে। GS1 প্রতিটি দেশের জন্য তিন সংখ্যার একটি কোড সরবরাহ করে থাকে। এর মাধ্যমে, নির্দিষ্ট পণ্যটি কোন দেশের কোম্পানির তা নির্দেশ করে। তবে পণ্যটির উৎপাদন ঐ দেশেও হতে পারে অথবা অন্য কোনো দেশেও হতে পারে। 

তথ্যসূত্র

সারাদেশে সাত দিনের লকডাউন ঘোষণার গুজব 

সম্প্রতি, ‘কাল থেকে সারাদেশে সাত দিনের লকডাউন’ শীর্ষক ক্যাপশনে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম  টিকটকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওটিতে সংবাদ পাঠিকাকে বলতে শোনা যায়, কাল ভোর ৬ টা থেকে সারাদেশে শুরু হচ্ছে সাত দিনের কঠোর লকডাউন। এ সংক্রান্ত জারি করা প্রজ্ঞাপনে সরকার বলছে, লকডাউন বাস্তবায়নে সিভিল প্রশাসনের পাশাপাশি মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী ও বিজিবি। নির্দেশনা অমান্যকারীদের জন্য থাকছে শাস্তির ব্যবস্থা। শিল্প কারখানা খোলা রেখে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউন কার্যকর করবে সরকার। খান আলামিনের রিপোর্টে দেখুন বিস্তারিত… 

লকডাউন

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা সংক্রান্ত কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করেনি সরকার। এছাড়া উক্ত দাবিতে প্রচারিত সংবাদ ভিডিওটিও সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০২১ সালে করোনা প্রতিরোধে সরকারে ঘোষিত লকডাউন নিয়ে প্রচারিত সংবাদ ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে প্রচারিত ভিডিওটিতে থাকা আরটিভি’র লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধান শুরু করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

অনুসন্ধানে আরটিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ৩০ জুন “কাল ভোর ৬টা থেকে সারাদেশে শুরু হচ্ছে সাত দিনের কঠোর লকডাউন” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

Screenshot: Rtv YouTube Channel

৩ মিনিট ৩ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে সম্প্রতি লকডাউনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সামাজিক মাধ্যমে উক্ত দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

তবে, গত ৩০ অক্টোবর সরকারের পদত্যাগ, খালেদা জিয়ার মুক্তি, নেতা-কর্মীদের হত্যা, গ্রেপ্তার ও হামলা, মহাসচিবকে গ্রেপ্তার ও নেতাদের বাসায় তল্লাশির প্রতিবাদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল(বিএনপি) ৩১ অক্টোবর থেকে আজ ২ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর আগে গত ২৮ অক্টোবর সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি মহাসমাবেশের আয়োজন করে। পরবর্তীতে মহাসমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলার অভিযোগ এবং তা নিয়ে সংঘর্ষের জের ধরে সেই সমাবেশ স্থগিত করে ২৯ অক্টোবর সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় দলটি।

মূলত, ২০২১ সালের জুন মাসে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশে সাত দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছিল সরকার। সেই প্রেক্ষিতে দেশের বেসরকারি টেলিভিশন আরটিভি সংবাদ প্রকাশ করে। সম্প্রতি, বিএনপির ঢাকা হরতাল-অবরোধকে কেন্দ্র করে ২০২১ সালের সেই ভিডিও প্রতিবেদনকে সাম্প্রতিক সময়ে সারাদেশে লকডউন ঘোষণা করা হয়েছে দাবিতে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে। এই পুরোনো ভিডিও শনাক্ত ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে সরকার কর্তৃক সরকার কর্তৃক সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা সংক্রান্ত সংবাদের সত্যতা পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।  

উল্লেখ্য, পূর্বেও পুরোনো ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। এমনকিছু প্রতিবেদন পড়ুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ‘কাল থেকে সারাদেশে সাত দিনের লকডাউন’ শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ইসরায়েলি কর্নেল আটক হওয়ার ভুয়া খবর ফেসবুকে প্রচার

0

সম্প্রতি, গাজার বুরেজ ক্যাম্পে হামলার কমান্ডার ইসরায়েলি কর্নেল ইয়ার শালাম সেনাবাহিনীর হাতে আটক হয়েছে শীর্ষক তথ্যসহ দুটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

কর্নেল

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন, এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইসরায়েলি কর্নেল ইয়ার শালাম আটক হওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং কোনো প্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার একাধিক ছবি যুক্ত এই সেনা কর্মকর্তার আটক হওয়ার তথ্য ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রথম ছবি যাচাই

ছবিটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ইসরায়েল ভিত্তিক গণমাধ্যম ‘Times of Israel’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৩ সালের ১ নভেম্বর “4 Hamas gunmen killed, 5 soldiers injured in clash at ‘terror tunnel” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সংযুক্ত একটি ফিচার ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবরে ইসরায়েলি সৈন্য গাজা উপত্যকায় হামলা চালালে হামাসের ৪ জন মারা যান এবং ৫ জন্য ইসরায়েলি সৈন্য আহত হন।

দ্বিতীয় ছবি যাচাই

অনুসন্ধানে ইসরায়েল ভিত্তিক গণমাধ্যম ‘Mivzaklive’ এর ওয়েবসাইটে “Defense Minister Galant, the Chief of Staff, the head of the Mossad and the head of the Shin Bet held a situation assessment” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সংযুক্ত একটি ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত এই ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফিলিস্তিনের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধের সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করতে ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওভ গালান্ত ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে বসেছিলেন।

উক্ত বৈঠকে ইসরায়েলের সেনা প্রধান হেরজি হালেভি, সিন বেট রোনান বার এর প্রধান, মোসাদের প্রধান ডেভিড বারনিয়া, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিচালক জেনারেল কর্নেল ইয়েল জামির ও কর্নেল নিতজান আলন।

তবে উক্ত প্রতিবেদনে কোথাও ইসরায়েলি কর্নেল ইয়ার শালাম নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং এই কর্মকর্তার আটক হওয়ারও কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, গাজার বুরেজ ক্যাম্পে হামলার কমান্ডার ইসরায়েলি কর্নেল ইয়ার শালাম কোন দেশের সেনাবাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন সেই তথ্যও উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট গুলোতে অস্পষ্ট।

আলোচিত দাবির বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে আইডিএফ প্রধান হেরজি হালেভির আটক হওয়ার ব্যাপারে ইসরায়েলের স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, ফিলিস্তিনের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধের সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করতে সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইওভ গালান্ত ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে বসেছেন। সেই বৈঠকে ইসরায়েলের সেনা প্রধান হেরজি হালেভি সহ বেশ কয়েক জন উচ্চপদস্থ সামরিক উপস্থিত ছিলেন। তবে সম্প্রতি ইসরায়েলের সেনা প্রধান হেরজি হালেভির সে বৈঠকে উপস্থিত হওয়ার ছবি এবং ২০১৩ সালে ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনে হামলার ঘটনার পুরোনো দৃশ্যের ছবি যুক্ত করে গাজার বুরেজ ক্যাম্পে হামলার কমান্ডার ইসরায়েলি কর্নেল ইয়ার শালাম সেনাবাহিনীর হাতে আটক হয়েছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলও হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা চালায়। এতে দেশ দুইটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত নতুন মাত্রা পায়৷

উল্লেখ্য, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷

সুতরাং, ইসরায়েলি কর্নেল ইয়ার শালাম আটক হয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়টি মিথ্যা।

 তথ্যসূত্র

কালবেলা’র নকল ফটোকার্ডে ২ নভেম্বর নগরবাসীকে চলাচলের ক্ষেত্রে ডিএমপির সতর্কতার ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, ‘২ নভেম্বর নগরবাসীকে চলাচলের ক্ষেত্রে সতর্কতার পরামর্শ ডিএমপির’ শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

সতর্কতা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২ নভেম্বর নগরবাসীকে চলাচলের ক্ষেত্রে ডিএমপির পক্ষ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয় এবং কালবেলাও উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং আলোচিত এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে কালবেলা’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১ নভেম্বর ২০২৩।

Screenshot: Facebook Claim Post

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ এবং কালবেলা’র লোগোর সূত্র ধরে কালবেলা’র ফেসবুক পেজে ১ নভেম্বর বা তার আগে পরে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, কালবেলা’র ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেলেও এসংক্রান্ত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, আলোচিত দাবিটির বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অন্যান্য গণমাধ্যম এবং নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

তবে গত ২৯ অক্টোবর কালবেলা’র ফেসবুক পেজে ‘হরতাল নিয়ে ডিএমপি কমিশনারের হুশিয়ারি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ডের ডিজাইনের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটিতে থাকা ছবির মিল পাওয়া যায়।

Screenshot: Kalbela Facebook Page 

ধারণা করা যায়, এই ফটোকার্ডটি সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, ‘২ নভেম্বর নগরবাসীকে চলাচলের ক্ষেত্রে সতর্কতার পরামর্শ ডিএমপির’ শীর্ষক শিরোনামে কালবেলা সাম্প্রতিক সময়ে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি।

পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য গ্রহণযোগ্য কোনো সূত্রে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এরূপ কোনো সতর্কবার্তার সংবাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যান্য নেতাকর্মী ও সমর্থকদের গ্রেপ্তার ও পুলিশি অভিযানে নেতাকর্মী নিহতের প্রতিবাদে গত ৩০ অক্টোবর দেশব্যাপী ৩ দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। এরপর জামায়াতের পক্ষ থেকেও একই তারিখে অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ‘২ নভেম্বর নগরবাসীকে চলাচলের ক্ষেত্রে সতর্কতার পরামর্শ ডিএমপির’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলা’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, দৈনিক কালবেলা এরুপ কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। দৈনিক কালবেলা’র ফেসবুক পেজে গত ২৯ অক্টোবর ‘হরতাল নিয়ে ডিএমপি কমিশনারের হুশিয়ারি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ফটোকার্ডটি নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিএনপি’র ২৮ অক্টোবরে সমাবেশের ঘটনায় বিভিন্ন ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিষয়ে গত ০৫ সেপ্টেম্বর বিস্তারিত ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ‘২ নভেম্বর নগরবাসীকে চলাচলের ক্ষেত্রে সতর্কতার পরামর্শ ডিএমপির’ শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে কালবেলা’র নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

ইরানের বাহিনী ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে দাবিতে ভিন্ন ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, ‘ইরানের বাহিনী ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে‘ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ইরানের বাহিনী

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে ইরানের বাহিনী যাওয়ার কোনো ঘটনার নয় বরং এটি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন প্যালেস্টানিয়ান ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) এর ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আয়োজিত সামরিক মহড়ার ভিডিও।

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধমে চীনের গণমাধ্যম সিং হুয়া’র ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ৫ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Xinhua 

২ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের ভিডিওটির সাথে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ৪ অক্টোবর (বুধবার) ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন প্যালেস্টানিয়ান ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) এর ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সামরিক মহড়ার আয়োজন করা হয়। এতে আল-কুদস বিগ্রেডের হাজার হাজার সৈনিক পিআইজের সশস্ত্র শাখা মিসাইল সহ গাজার রাস্তায় মিছিল করেছে। 

এছাড়া, ৬ অক্টোবর ইন্দোনেশিয়ান গণমাধ্যম Kompas এর ইউটিউব চ্যানেলে “Palestine Claims to Have Homemade Drones and Long-Range Missiles“( ইংরেজি অনূদিত) শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদনে একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

এই ভিডিওটি প্রতিবেদন থেকেও আলোচিত ভিডিও সম্পর্কে একই তথ্য  জানা যায়। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি ইরানের বাহিনীর ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কোনো ঘটনার নয়।

মূলত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলও হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা চালায়। এতে দেশ দুইটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত নতুন মাত্রা পায়৷উক্ত সংঘাতকে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে ইরানের বাহিনী রওনা দিয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের চলমান সংঘাতে ফিলিস্তিনকে সমর্থন দিলেও সাম্প্রতিক সময়ে ইরান ফিলিস্তিনের জন্য কোনো সৈন্য পাঠায়নি। প্রকৃতপক্ষে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন প্যালেস্টানিয়ান ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) এর ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সামরিক মহড়ার।

প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিন- ইসরায়েলের এই সংঘাতে ফিলিস্তিনের পক্ষে সমর্থন দিয়ে আসছে ইরান। সর্বশেষ জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রকে হুশিয়ারি দিয়ে বক্তব্য দেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান। এর আগে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামিদ আল-তাহনির সঙ্গে বৈঠকেও হুশিয়ারি দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গাজায় ইসরায়েল সেনা অভিযান চালালে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশও সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। 

উল্লেখ্য, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷

সুতরাং, ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে ইরানের বাহিনী রওনা দিয়েছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Xinhua Facebook Post 
  • Kompas YouTube Video 

বিএনপি’র নেতৃত্ব নিয়ে বিভক্তি দাবিতে মানবজমিনের নামে ভুয়া সূত্রে তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ নিয়ে বিভক্তি! ফখরুল পন্থী বনাম তারেক পন্থী দ্বন্দ্ব চরমে শীর্ষক একটি তথ্য জাতীয় দৈনিক মানবজমিনের বরাত দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

যা দাবি করা হচ্ছে

২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ নিয়ে বিভক্তি। বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আবার নতুন করে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। এই দ্বন্দ্বে কার্যত অচল হয়ে গেছে বিএনপি সংস্থার কার্যক্রম। ভিন্ন কমিটিগুলো পুনর্গঠন করার কথা ছিলো সেই কার্যক্রমও থেমে গেছে। দলের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে লন্ডনে পলাতক বিএনপি`র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। আর এই দ্বন্দ্বের কারণেই বিএনপির ২৮শে অক্টোবর মহাসমাবেশে দুই দলে বিভক্তি হবার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। সূত্র: মানবজমিন 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন, এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিএনপির মহাসমাবেশ নিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব দাবি করে মানবজমিন কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং কোনোপ্রকার প্রমাণ ছাড়াই উক্ত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত দাবিতে প্রচারিত তথ্যের সূত্র ধরে দৈনিক মানবজমিনে এমন কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে কিনা তা জানার চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার।

তবে অনুসন্ধানে দৈনিক মানবজমিনের ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউবে উক্ত দাবিতে কোনো সংবাদ প্রতিবেদন, ফটোকার্ড বা পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো তথ্য বা সংবাদ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে আলোচিত দাবির বিষয়ে দৈনিক মানবজমিনের চিফ নিউজ এডিটর সাজেদুল হকের যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি বলেন, ‘আমরা এ ধরনের কোন রিপোর্ট করিনি। এটি গুজব।’

এছাড়া দৈনিক মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার আব্দুল্লাহ আল মারুফ রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, ‘এটি ভুয়া। আমাদের সব নিউজ আমাদের ওয়েবসাইটে থাকে। এ ধরনের কোন নিউজ আমাদের ওয়েবসাইটে নেই। পাশাপাশি এই লেখা কোন রিপোর্টের ভাষা হতে পারে না।’

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাজধানীর নয়া পল্টনে এক দফা দাবি বাস্তবায়নে মহাসমাবেশের আয়োজন করে। তবে সমাবেশ শুরু পূর্বে সমাবেশকে নিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে শীর্ষক একটি তথ্য দেশের জাতীয় দৈনিক মানবজমিনের বরাত দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে সমসাময়িক সময়ে মানবজমিনের প্রিন্ট সংস্করণ ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে এমন কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি এবংvউক্ত দাবিতে গণমাধ্যমটিতে কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি গণমাধ্যমটির পক্ষ থেকে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়েছে।  

প্রসঙ্গত, পূর্বেও গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন:

সুতরাং, জাতীয় দৈনিক মানবজমিনের বরাত দিয়ে ২৮ অক্টোবরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে  বিএনপি’র শীর্ষ পর্যায়ে নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব দাবিতে  ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Manabzamin – Website
  • Manabzamin – Facebook Page
  • Manabzamin – Youtube
  • Statement from Sajedul Haque
  • Statement from Abdullah Al Maruf