বিভিন্ন সময়ে ‘পাকিস্তানের হাসপাতালে ভূত দেখা গিয়েছে’ শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে একটি ভিডিও প্রচার হয়ে আসছে।
সম্প্রতি ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
বিভিন্ন সময়ে ইউটিউবে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পাকিস্তানের হাসপাতালে ভূত দেখা গেছে দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাস্তব নয় বরং এটি একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিও, যা অভিনয়ের মাধ্যমে তৈরী করা হয়েছে।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবের Syed Sadam9085 নামের একটি চ্যানেলে ২০২২ সালের ২৭ জুলাই ‘Real Ghost caught by cctv camera (আর্কাইভ)’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিওটিতে ঘটনার সময় ও তারিখ উল্লেখ থাকলেও এটি পাকিস্তানের কোন হাসপাতালের ঘটনা এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে অধিকতর অনুসন্ধানের লক্ষ্যে রিউমর স্ক্যানার টিম উক্ত চ্যানেলটিতে বিদ্যমান একই দাবিতে প্রচারিত অন্যান্য ভিডিওগুলো বিশ্লেষণ করে দেখে।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, হাসপাতালে ভূত দেখার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে যারা উপস্থিত ছিল, একই ব্যক্তিদের চ্যানেলটির অন্যান্য ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালে ভূত দেখার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির স্থানের সঙ্গেও অন্যান্য ভিডিওগুলোর স্থানের মধ্যে হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
এছাড়া উক্ত চ্যানেলটিতে একই ব্যক্তিবর্গ দ্বারা তৈরী একাধিক শর্ট ফিল্মের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। তাদের এমন কিছু শর্ট ফিল্ম দেখুন এখানে এবং এখানে।
পাশাপাশি রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে পাকিস্তানের হাসপাতালে ভূত দেখার দাবিতে হুইলচেয়ার চলাচলের যে ভিডিওটি দেখা যায়, সেটির অনুরূপ পূর্বেও ভাইরাল হওয়া কিছু ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যা পরবর্তীতে গুজব হিসেবে প্রতীয়মান হয়।
উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে ভারতীয় ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান Factlyও পাকিস্তানের হাসপাতালে ভূত দেখার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, হুইলচেয়ার চলাচলের এই ভিডিওগুলো সাধারণত বাতাস বা গোপনে সুতার মাধ্যমে টেনে তৈরি করা হয়। আবার কিছু ক্ষেত্রে রিমোট নিয়ন্ত্রিত হুইলচেয়ারগুলোকেও এসব ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
মূলত, দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানের হাসপাতালে ভূত দেখা গেছে শীর্ষক দাবিতে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার হয়ে আসছে। সম্প্রতি এমনই একটি ভিডিও বাংলাদেশে ফেসবুকে প্রচার হলে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওটি স্ক্রিপ্টেড বা অভিনয়ের মাধ্যমে তৈরী। পাশাপাশি অনুসন্ধানে একই স্থানে, একই ব্যক্তিবর্গ দ্বারা তৈরী অনুরূপ বিভিন্ন ভিডিওচিত্রও খুঁজে পাওয়া যায়।
সুতরাং, একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিওকে পাকিস্তানের হাসপাতালে ভূত দেখা গেছে দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।