তাঁতী দলের নেতা আজাদ পুলিশের ১০ হাজার পোশাকসহ গ্রেপ্তার হননি

সম্প্রতি ১০ হাজার পুলিশের পোশাকসহ গ্রেপ্তার বিএনপি(তাঁতীদল) নেতা আবুল কালাম আজাদ।শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

তাঁতী

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট  (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ),  পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদকে পুলিশের ১০ হাজার পোশাকসহ গ্রেপ্তারের দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে তিনিসহ আরও দুজনকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গত ১৭ অক্টোবর পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজ২৪ এ গত ১৮ অক্টোবর ‘বিএনপি নেতা দুলু-তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ আটক’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শামসুদ্দিন দিদারের পাঠানো একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদকে তার শেওড়াপাড়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আটক করেছে কাফরুল থানা পুলিশ।

একই ঘটনায় জাতীয় দৈনিক সমকালে একইদিনে ‘তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ গ্রেপ্তার‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুকুল আলমের বরাতে জানানো হয়, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে মামলাটি দায়ের করা হয়। বুধবার তাদের আদালতে হাজির করা হবে।

এসব প্রতিবেদনের সূত্রে আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত দাবিটির সত্যতা সম্পর্কে জানতে রিউমর স্ক্যানার টিম কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুকুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করে। 

তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনা তো আরও প্রায় সপ্তাহখানেক আগের। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে দায়ের করা মামলায়। পুলিশের ১০ হাজার পোশাকসহ গ্রেপ্তারের দাবিটি ভুয়া।

অপরদিকে অনুসন্ধানে জানা যায়, আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তারের পর ১৮ অক্টোবর (বুধবার) আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম আবুল কালাম আজাদসহ আরও পাঁচজনকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পাশাপাশি তাদেরকে কারাগার পাঠানোর পরবর্তী সময়ে তাদের জামিনের বিষয়ে বিশ্বস্ত সূত্রে আর কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ থেকে প্রতীয়মান হয়, বর্তমানে তারা কারাগারেই আছেন।

মূলত, ২৮ অক্টোবর সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি মহাসমাবেশের আয়োজন করে। এই মহাসমাবেশকে ঘিরে দলটির অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদকে পুলিশের ১০ হাজার পোশাকসহ গ্রেপ্তারের একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, তাঁতী দল কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদকে এই সমাবেশের অন্তত ১০ দিন আগেই ভিন্ন একটি মামলায় পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তার এই গ্রেপ্তারের সঙ্গে পুলিশের ১০ হাজার পোশাকসহ গ্রেপ্তারের দাবিটির কোনো সত্যতা নাই বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকার কাফরুল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুকুল আলম।

সুতরাং, পুলিশের ১০ হাজার পোশাকসহ তাঁতী দল কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তারের দাবিটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

Banglanews24: বিএনপি নেতা দুলু-তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ আটক

Samakal: তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ গ্রেপ্তার

Ajker Patrika: তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালামসহ পাঁচজন কারাগারে

Statement of Kafrul Police Station’s OC

আরও পড়ুন

spot_img