Home Blog Page 624

ইরানের বাহিনী ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে দাবিতে ভিন্ন ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, ‘ইরানের বাহিনী ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে‘ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ইরানের বাহিনী

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে ইরানের বাহিনী যাওয়ার কোনো ঘটনার নয় বরং এটি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন প্যালেস্টানিয়ান ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) এর ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আয়োজিত সামরিক মহড়ার ভিডিও।

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধমে চীনের গণমাধ্যম সিং হুয়া’র ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ৫ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Xinhua 

২ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের ভিডিওটির সাথে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ৪ অক্টোবর (বুধবার) ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন প্যালেস্টানিয়ান ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) এর ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সামরিক মহড়ার আয়োজন করা হয়। এতে আল-কুদস বিগ্রেডের হাজার হাজার সৈনিক পিআইজের সশস্ত্র শাখা মিসাইল সহ গাজার রাস্তায় মিছিল করেছে। 

এছাড়া, ৬ অক্টোবর ইন্দোনেশিয়ান গণমাধ্যম Kompas এর ইউটিউব চ্যানেলে “Palestine Claims to Have Homemade Drones and Long-Range Missiles“( ইংরেজি অনূদিত) শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদনে একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

এই ভিডিওটি প্রতিবেদন থেকেও আলোচিত ভিডিও সম্পর্কে একই তথ্য  জানা যায়। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি ইরানের বাহিনীর ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কোনো ঘটনার নয়।

মূলত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলও হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা চালায়। এতে দেশ দুইটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত নতুন মাত্রা পায়৷উক্ত সংঘাতকে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে ইরানের বাহিনী রওনা দিয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের চলমান সংঘাতে ফিলিস্তিনকে সমর্থন দিলেও সাম্প্রতিক সময়ে ইরান ফিলিস্তিনের জন্য কোনো সৈন্য পাঠায়নি। প্রকৃতপক্ষে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন প্যালেস্টানিয়ান ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) এর ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সামরিক মহড়ার।

প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিন- ইসরায়েলের এই সংঘাতে ফিলিস্তিনের পক্ষে সমর্থন দিয়ে আসছে ইরান। সর্বশেষ জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রকে হুশিয়ারি দিয়ে বক্তব্য দেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান। এর আগে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামিদ আল-তাহনির সঙ্গে বৈঠকেও হুশিয়ারি দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গাজায় ইসরায়েল সেনা অভিযান চালালে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশও সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। 

উল্লেখ্য, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷

সুতরাং, ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে ইরানের বাহিনী রওনা দিয়েছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Xinhua Facebook Post 
  • Kompas YouTube Video 

বিএনপি’র নেতৃত্ব নিয়ে বিভক্তি দাবিতে মানবজমিনের নামে ভুয়া সূত্রে তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ নিয়ে বিভক্তি! ফখরুল পন্থী বনাম তারেক পন্থী দ্বন্দ্ব চরমে শীর্ষক একটি তথ্য জাতীয় দৈনিক মানবজমিনের বরাত দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

যা দাবি করা হচ্ছে

২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ নিয়ে বিভক্তি। বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আবার নতুন করে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। এই দ্বন্দ্বে কার্যত অচল হয়ে গেছে বিএনপি সংস্থার কার্যক্রম। ভিন্ন কমিটিগুলো পুনর্গঠন করার কথা ছিলো সেই কার্যক্রমও থেমে গেছে। দলের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে লন্ডনে পলাতক বিএনপি`র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। আর এই দ্বন্দ্বের কারণেই বিএনপির ২৮শে অক্টোবর মহাসমাবেশে দুই দলে বিভক্তি হবার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। সূত্র: মানবজমিন 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন, এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিএনপির মহাসমাবেশ নিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব দাবি করে মানবজমিন কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং কোনোপ্রকার প্রমাণ ছাড়াই উক্ত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত দাবিতে প্রচারিত তথ্যের সূত্র ধরে দৈনিক মানবজমিনে এমন কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে কিনা তা জানার চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার।

তবে অনুসন্ধানে দৈনিক মানবজমিনের ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউবে উক্ত দাবিতে কোনো সংবাদ প্রতিবেদন, ফটোকার্ড বা পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো তথ্য বা সংবাদ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে আলোচিত দাবির বিষয়ে দৈনিক মানবজমিনের চিফ নিউজ এডিটর সাজেদুল হকের যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি বলেন, ‘আমরা এ ধরনের কোন রিপোর্ট করিনি। এটি গুজব।’

এছাড়া দৈনিক মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার আব্দুল্লাহ আল মারুফ রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, ‘এটি ভুয়া। আমাদের সব নিউজ আমাদের ওয়েবসাইটে থাকে। এ ধরনের কোন নিউজ আমাদের ওয়েবসাইটে নেই। পাশাপাশি এই লেখা কোন রিপোর্টের ভাষা হতে পারে না।’

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাজধানীর নয়া পল্টনে এক দফা দাবি বাস্তবায়নে মহাসমাবেশের আয়োজন করে। তবে সমাবেশ শুরু পূর্বে সমাবেশকে নিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে শীর্ষক একটি তথ্য দেশের জাতীয় দৈনিক মানবজমিনের বরাত দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে সমসাময়িক সময়ে মানবজমিনের প্রিন্ট সংস্করণ ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে এমন কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি এবংvউক্ত দাবিতে গণমাধ্যমটিতে কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি গণমাধ্যমটির পক্ষ থেকে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়েছে।  

প্রসঙ্গত, পূর্বেও গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন:

সুতরাং, জাতীয় দৈনিক মানবজমিনের বরাত দিয়ে ২৮ অক্টোবরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে  বিএনপি’র শীর্ষ পর্যায়ে নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব দাবিতে  ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Manabzamin – Website
  • Manabzamin – Facebook Page
  • Manabzamin – Youtube
  • Statement from Sajedul Haque
  • Statement from Abdullah Al Maruf

স্পিকারের নিকট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের ঘোষণার ভুয়া দাবি

সম্প্রতি, ‘স্পীকারের নিকট পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী, তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর নিকট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের ঘোষণা দেননি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু হওয়ার ও কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ক্লিপ সংযুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। গত ৩০ অক্টোবর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২ মিনিট ০১ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি প্রচার করা হয়।

Screenshot: YouTube Claim Video

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ ও ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন কার্যক্রমের পুরোনো কিছু ছবি দেখানো হয়েছে।

ভিডিওটিতে বলা হয়, “অবশেষে সংসদের শেষ অধিবেশনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি করলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে পদত্যাগের ব্যাপারটি স্পিকারের নিকট পেশ করেন। এদিকে জাতীয় নির্বাচনে নিরপেক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য সংবিধান সংশোধনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।”

উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও উক্ত দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

তবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে চলতি বছরের ০৫ জানুয়ারি ‘একাদশ জমাতো সংসদের ২১ তম অধিবেশন- সরাসরি সম্প্রচার’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংসদ অধিবেশনের একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদ অধিবেশনে অংশগ্রহণের একটি দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো একটি স্থিরচিত্রের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদ অধিবেশনে অংশগ্রহণের এই ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

পাশাপাশি মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর নিকট পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য সংবিধান সংশোধনের ঘোষণা দেওয়ার দাবিটিরও কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসছে। এরই প্রেক্ষাপটে গত ৩০ অক্টোবর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘স্পীকারের নিকট পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী, তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে আলোচিত দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে বাংলাদেশে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। পরবর্তীতে এই ব্যবস্থা আর পূর্ণবহাল করা হয়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার থাম্বনেইল এবং শিরোনামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের ঘোষণা দাবিতে ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর নিকট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কথিত যুবদল নেতা বা পুলিশ কনস্টেবল নয়, এটি আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যুর ঘটনায় তার বাচ্চার কান্নার ভিডিও 

গত ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় শামীম নামে কথিত এক যুবদল নেতা নিহত হওয়ার পর একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, এটি শামিমের এবং তার লাশ ঘিরে তার পরিবারের সদস্যদের আহাজারির দৃশ্য। 

যুবদল নেতা

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফেসবুকের কিছু পোস্টে একই ভিডিও ব্যবহার করে ভিন্ন দাবিও করতে দেখা গেছে। দাবি করা হচ্ছে, এটি একই দিন (২৮ অক্টোবর) রাজধানীতে সংঘর্ষে নিহত পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজের লাশ এটি এবং তার লাশ ঘিরে তার স্বজনরা আহাজারির দৃশ্য ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে। 

উক্ত দাবিতে কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২৮ অক্টোবর মারা যাওয়া কথিত যুবদল নেতা শামিম বা পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজের লাশ নয় এটি বরং বাগেরহাটের স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার লাশের গত ১২ অক্টোবরের পুরোনো ভিডিওকে ভিন্ন দুই দাবিতে সম্প্রতি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ফেসবুকে গত ১২ অক্টোবর Journalists Kamrul Islam Titu নামক একটি অ্যাকাউন্টে আলোচিত ভিডিওটির সদৃশ একটি ভিডিওর (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যাচ্ছে, (বাগেরহাটের) শরণখোলায় ইউপি সদস্য সরোয়ার তালুকদারের ছোট মেয়ে তার বাবার লাশ দেখে আহাজারি করার দৃশ্য এটি।

Screenshot comparison: Rumor Scanner 
Screenshot comparison: Rumor Scanner

মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির নামের সূত্র এবং প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে একইদিন (১২ অক্টোবর) News Live24 নামের একটি ফেসবুক পেজে একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। জনাব সরোয়ারের লাশ দেখতে এলাকাবাসীর ভীড় জমায় সরোয়ারের বাড়ির প্রাঙ্গণে, সেটিই প্রায় প্রায় ৪৫ মিনিটের লাইভ ভিডিওটিতে দেখানো হয়। 

Screenshot: Facebook 

সেদিনের এই দৃশ্যের আরো কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে। 

অনুসন্ধানে একাধিক সংবাদমাধ্যমেও জনাব সরোয়ারের মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশিত হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার ওয়েবসাইটে গত ১২ অক্টোবর প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, সেদিন খুলনা সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সরোয়ার হোসেন। বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার খাদা গ্রামের মৃত চানমিয়া তালুকদারের ছেলে সরোয়ার হোসেন তালুকদার রায়েন্দা ইউনিয়নের খাদা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছিলেন। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরোয়ার তালুকদার গত ৭ অক্টোবর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে খুলনা সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে তাকে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রায় তিন দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ সংক্রান্ত স্থানীয় গণমাধ্যমের কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে। 

বিষয়টি আরো নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানার টিম জনাব সরোয়ারের ভাতিজির সাথে যোগাযোগ করলে তিনিও ভিডিওটি দেখে এটি সরোয়ারের মৃত্যুর পর স্বজনদের আহাজারির দৃশ্য বলে নিশ্চিত করেন।

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ স্থলে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে প্রাণ হারান শামীম নামের কথিত এক যুবদল নেতা। একইদিন রাজধানীতেই সংঘর্ষে নিহত হন পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ। পরবর্তীতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, একটি লাশ ঘিরে শিশুসহ কিছু ব্যক্তি আহাজারি করছেন। ছড়িয়ে পড়া ভাইরাল কিছু পোস্টে দাবি করা হয়, এই ভিডিওতে যার লাশ দেখা যাচ্ছে তিনি শামীম। তাছাড়া, আরো কিছু ভাইরাল পোস্টে একই ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, উক্ত ব্যক্তি কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই লাশটি উক্ত দুই ব্যক্তির কারোই নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত ১২ অক্টোবর বাগেরহাটের শরণখোলায় ব্রেন স্ট্রোক করে মারা যান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য সরোয়ার তালুকদার। তার লাশ ঘিরে স্বজনদের আহাজারির ভিডিওকে উক্ত দুই ঘটনার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।  

উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুবদলের কথিত নেতা শামীম মারা যান, যিনি রাজধানীর মুগদা এলাকার বাসিন্দা। তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের এক নম্বর ইউনিটের সভাপতি ছিলেন বলে মুগদা থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি কাজী সুমন প্রথম আলোর কাছে দাবি করেছেন। একইদিন বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর সমাবেশকে কেন্দ্র পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক পুলিশ কনস্টেবল মারা গেছেন। ডিএমপির মিডিয়া বিভাগ থেকে জানানো হয়, নিহত পুলিশ কনস্টেবলের নাম আমিরুল ইসলাম পারভেজ। তার গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জে দৌলতপুর।

প্রসঙ্গত, ২৮ অক্টোবর ঢাকায় একাধিক রাজনৈতিক কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে সেসব বিষয়ে অনুসন্ধান করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। এমন কিছু ফ্যাক্টচেক দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে৷ 

সুতরাং, বাগেরহাটে ১২ অক্টোবর ব্রেন স্ট্রোক করে মারা যাওয়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সরোয়ার তালুকদারের লাশ ঘিরে স্বজনদের আহাজারির ভিডিওকে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে সংঘর্ষে নিহত কথিত যুবদল নেতা শামীম এবং পুলিশ কনস্টেবল পারভেজের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আগামী ২ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সকল পরীক্ষা স্থগিতের ভুয়া বিজ্ঞপ্তি

0

সম্প্রতি, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আগামী ০২/১১/২০২৩ তারিখ (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিতব্য সকল পরীক্ষা স্থগিত সংক্রান্ত জরুরী বিজ্ঞপ্তি’ শীর্ষক দাবিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল প্যাডের ডিজাইন সম্বলিত একটি বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যাল
Screenshot: Facebook 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আগামী ০২/১১/২০২৩ তারিখ (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিতব্য সকল পরীক্ষা স্থগিত সংক্রান্ত জরুরী বিজ্ঞপ্তি’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এমন কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি।  গত ২৮ অক্টোবর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য ২৯ অক্টোবরের সকল পরীক্ষা অনিবার্য কারণে স্থগিত ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয়টির ওয়েবসাইটে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তিকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে  গত ২৮ অক্টোবর  ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আগামী ২৯/১০/২০২৩ তারিখ (রবিবার) অনুষ্ঠিতব্য সকল পরীক্ষা স্থগিত সংক্রান্ত জরুরী বিজ্ঞপ্ত’ শীর্ষক একটি বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: National University

বিজ্ঞপ্তিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত বিজ্ঞপ্তির স্মারক নং- (০-৫)জাতীঃবিঃ/পনি/অফিস আদেশ/২০১২/০৩/৪৯০৯ এর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তির স্মারক নং-এর হুবহু মিল রয়েছে। 

Notice Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রচারিত অন্যান্য বিজ্ঞপ্তি পর্যালোচনা করে দেখা যায় তাদের প্রতিটি বিজ্ঞপ্তির স্মারক নং-এ ভিন্নতা রয়েছে। এছাড়াও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তির সাথে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তির লেখার ফন্টের ভিন্নতাও লক্ষ্য করা যায়। 

Notice Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়াও  প্রচারিত বিজ্ঞপ্তির সত্যতা যাচাইয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (প্রফেশনাল) মো: শাহানুর রহমান সা’দ-এর সাথে কথা বলে রিউমর স্ক্যানার টিম।  তিনি জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এমন কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়নি; এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।

অর্থাৎ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আগামী ০২/১১/২০২৩ তারিখ (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিতব্য সকল পরীক্ষা স্থগিত সংক্রান্ত কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেনি।

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে মহাসমাবেশ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। কিন্তু কাকরাইলসহ নানা জায়গায় পুলিশের সাথে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। তাই পরদিন সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যার পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য সকল পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করে সেদিনই বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। পরবর্তীতে বিএনপি’র পক্ষ থেকে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত সারা থেকে অবোরধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া যায়। যার পর থেকে ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আগামী ০২/১১/২০২৩ তারিখ (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিতব্য সকল পরীক্ষা স্থগিত সংক্রান্ত জরুরী বিজ্ঞপ্তি’ শীর্ষক দাবিতে একটি বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রাচরিত বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমন কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ২৮ অক্টোবরের বিজ্ঞপ্তিটি সম্পাদনার মাধ্যমে এটি তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আগামী ০২/১১/২০২৩ তারিখ (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিতব্য সকল পরীক্ষা স্থগিতের দাবিটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • National University Website: Notice
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানের নামে প্রচারিত মন্তব্যটি ভুয়া 

সম্প্রতি,বাংলাদেশি ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে পাকিস্তানের ক্রিকেটার মোহাম্মদ রিজওয়ানের একটি মন্তব্য প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে যে, তিনি বলেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো ক্রিকেটার আমাদের দলে থাকলে আমরা বিশ্বকাপ জিততাম। 

মাহমুদউল্লাহ

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,চলমান বিশ্বকাপকে ঘিরে মোহাম্মদ রিজওয়ান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে এমন মন্তব্য করেননি। ২০২২ এশিয়া কাপে মোহাম্মদ রিজওয়ানের পাকিস্তান বনাম ভারত ম্যাচের একটি সাক্ষাৎকারকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া পাকিস্তান এখনো বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায়নি। বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলে বর্তমানে দলটির অবস্থান পঞ্চম। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটির শুরুতে পাকিস্তানি ক্রিকেটার মোহাম্মদ রিজওয়ান এর একটি সাক্ষাৎকারের খণ্ডাংশ দেখানো হয়। পরবর্তীতে ভিডিওটিতে  সংবাদ উপস্থাপনের  মতো বলা হয়, ‘টানা পরাজয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলো পাকিস্তান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লজ্জাজনক হারের পর হতাশ পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। ম্যাচ শেষে উপস্থাপকের প্রশ্নে ম্যাচ হারার কারণ হিসেবে ব্যাটসম্যানদের দোষলেন রিজওয়ান। তিনি বলেন এই পিচে আরও রান করা উচিত ছিলো। আমাদের ব্যাটসম্যানরা ফর্মে নেই। আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের একজন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নেই….।’

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে বাংলাদেশ কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো সংবাদমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে,আলোচিত ভিডিওটিতে পাকিস্তানি ক্রিকেটার মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে থাকা মাইকে এশিয়া কাপ এর উল্লেখ দেখতে পাওয়া যায়। ভিডিওটি এশিয়া কাপের কোনো একটি ম্যাচের হওয়ার সম্ভাবনা ধরে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে ২০২২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ‘Cricket Enthusiast’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “Mohammad Rizwan interview after winning the match against India। Asia Cup 2023। PTV Sports।” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আলোচিত ভিডিওটির অনুরূপ ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির একটি খণ্ডাংশের সাথে আলোচিত দাবিটি যুক্ত করে প্রচার করা হচ্ছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি মূলত আরব আমিরাতের দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ ২০২২ এর সুপার ফোর এর প্রথম ম্যাচে পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যবর্তী ম্যাচ পরবর্তী পারফরম্যান্স নিয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ান এর ইন্টারভিউ নেওয়া হয়৷ যেখানে তিনি বলেন, ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ ফাইনাল ম্যাচ এর মতো। এটা শুধু দুইটি দেশে নয় বরং পুরো ক্রিকেট বিশ্বের লোকজন দেখছেন…।

অর্থাৎ, ২০২২ সালের এশিয়া কাপের পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যকার একটি ম্যাচকে চলমান বিশ্বকাপ দাবি করে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে পাকিস্তানের ক্রিকেটার মোহাম্মদ রিজওয়ানের নামে ভুয়া মন্তব্য ছড়ানো হচ্ছে।

এছাড়া গত ৩১ অক্টোবর ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসে ‘Pakistan can still qualify for World Cup semi-finals if Australia, Afghanistan, New Zealand…: All scenarios explained’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পাকিস্তান এখনো বিশ্বাপ থেকে বাদ পড়ে যায়নি। পাকিস্তান এখনো বিশ্বকাপের সেমি ফাইনাল রাউন্ডে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে।

মূলত,‘মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো ক্রিকেটার আমাদের দলে থাকলে আমরা বিশ্বকাপ জিততাম’ শীর্ষক মন্তব্যকে পাকিস্তানি ক্রিকেটার মোহাম্মদ রিজওয়ানের মন্তব্য এবং চলমান বিশ্বকাপের দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে চলমান বিশ্বকাপকে ঘিরে মোহাম্মদ রিজওয়ান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে এমন কোনো মন্তব্য করেননি এবং ২০২২ সালে এশিয়া কাপে মোহাম্মদ রিজওয়ানের পাকিস্তান বনাম ভারত ম্যাচের পর দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিওর খন্ডাংশকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং,’মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো ক্রিকেটার আমাদের দলে থাকলে আমরা বিশ্বকাপ জিততাম’ শীর্ষক মন্তব্যকে মোহাম্মদ রিজওয়ানের মন্তব্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে ; যা মিথ্যা 

তথ্যসূত্র

ভিডিওটি সম্প্রতি নিহত পুলিশ সদস্য পারভেজ কিংবা জুলাইয়ে নিহত বিএনপি কর্মী সজিবের সন্তানের আর্তনাদের নয়

গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপি’র সমাবেশে বিএনপির সঙ্গে পুলিশের  সংঘর্ষে নিহত পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ নিহত হওয়ার পর একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, এটি পারভেজের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তার সন্তানের আহাজারির দৃশ্য।

পুলিশ সদস্য

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন, এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন, এখানে (আর্কাইভ)।

ফেসবুকের কিছু পোস্টে একই ভিডিও ব্যবহার করে ভিন্ন দাবিও করতে দেখা গেছে। দাবি করা হচ্ছে, এটি গত জুলাই মাসে লক্ষ্মীপুরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সাথে সংঘর্ষে নিহত বিএনপি কর্মী সজিব হোসেনের লাশ ঘিরে তার মেয়ের আহাজারির দৃশ্যের ভিডিও।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন, এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিওটি গত ২৮ অক্টোবর মারা যাওয়া পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ কিংবা গত জুলাই মাসে লক্ষ্মীপুরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপি’র সংঘর্ষে নিহত বিএনপি কর্মী সজিবের হোসেনের সন্তানের আহাজারির দৃশ্যের নয় বরং চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহরের নয়াবাজার এলাকায় গত মে মাসে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত আজাদুর রহমান আজাদের মেয়ের কান্নার ভিডিওকে ভিন্ন দুই দাবিতে সম্প্রতি প্রচার করা হচ্ছে।

ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের শুরুতে লক্ষ্মীপুরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপি’র সংঘর্ষে নিহত বিএনপি কর্মী সজিবের হোসেনের সন্তানের আহাজারি দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর উপরে ডান কোনে Bangladesh Live লেখা একটি লোগো রিউমর স্ক্যানার টিমের নজরে আসে।

পরবর্তীতে উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে Bangladesh Live নামক ফেসবুক পেজে গত ২৯ মে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর কিছু অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner
Video Comparison: Rumor Scanner

উক্ত পোস্ট থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহরের নয়াবাজার এলাকায় বাসকারী আজাদুর রহমান আজাদ নামক এক ব্যক্তি নৈশ প্রহরীর কাজ করতেন। জমিতে প্রস্রাব করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে দুর্বৃত্তরা ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। ভিডিওতে এতে নিহত আজাদকে নিয়ে তার সন্তানের একটি হৃদয়বিদারক বক্তব্য দেখানো হয়। যেটি সম্প্রতি এবং জুলাই মাসে ভিন্ন দুইটি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

পরবর্তীতে উক্ত ঘটনা নিয়ে গত ০২ জুন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টিভিতে ‘বাবা হত্যার বিচার চেয়ে চার বছর বয়সী মেয়ের আকুতি’ শীর্ষক শিরোনাম প্রকাশিত প্রতিবেদনে নিহত আজাদের সন্তান উম্মে হাবিবা সাইরিনের ভিডিও সাক্ষাৎকার পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ভিডিওর এই শিশুর চেহারার সাথে আলোচিত দাবিগুলোতে প্রচারিত ভিডিওর শিশুর চেহারার হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

সেসময় একাধিক মূলধারার অন্যান্য সংবাদমাধ্যমেও জনাব আজাদুর রহমান আজাদের নিহতের সংবাদ প্রকাশিত হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

গত ২৮ মে জাতীয় দৈনিক আজকের পত্রিকায়  “চট্টগ্রামে নৈশপ্রহরীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২৮ মে চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী থানার হালিশহর নয়াবাজার এলাকায় আজাদুর রহমান নামের এক নৈশ প্রহরীকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়।

নিহত আজাদের ভাতিজা পরিচয়দানকারী হুমায়ুন কবিরকে উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমটিতে উল্লেখ করা হয়, কথাকাটাকাটির জেরে এক যুবক মোবাইলে ফয়সালকে ডেকে নেয়। এ সময় বিষয়টা মিটমাট হয়ে যায়। কিন্তু ভোরে সবাই মিলে আজাদের ওপর হামলা চালায়। আজাদ হালিশহর নয়াবাজার এলাকার নাজিরবাড়ির বাসিন্দা। তাঁর দুটি সন্তান রয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আজাদের ভাই নগরীর বৌবাজার (নয়াবাজারের পার্শ্ববর্তী) এলাকার একটি খালি জায়গার (বাউন্ডারি দেয়া) কেয়ারটেকার। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই জায়গার গেটের সামনে কয়েকজন দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে গেলে আজাদের ভাই বাধা দেন। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। ঘটনাটি হাতাহাতি পর্যন্ত পৌঁছায়। কিছুক্ষণ পর আজাদও ঘটনাস্থলে যান। একপর্যায়ে কেয়ারটেকার ও তাঁর ভাই আজাদকে তাঁরা দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান। রোববার ভোরে আজাদ নাশতা আনতে বাড়ি থেকে বের হন। নয়াবাজার বিশ্বরোডের মুখে তাঁকে একা পেয়ে কয়েকজন ঘিরে ধরে ছুরিকাঘাত করে।

মূলত, গত মে মাসের শেষের দিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহরের নয়াবাজার এলাকায় দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজাদুর রহমান আজাদ নামের এক যুবককে ছুরিকাঘাতে খুন করে দুর্বৃত্তরা। সেসময় আজাদের শিশু উম্মে হাবিবা সাইরিনের আহাজারির হৃদয়বিদারক একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সম্প্রতি সেই ভিডিওকেই গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি’র মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষে নিহত পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজের সন্তানের আহাজারির ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া একই ভিডিওটিকে কান্না গত জুলাই মাসে লক্ষ্মীপুরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপির সংঘর্ষে নিহত বিএনপি কর্মী সজিবের সন্তানের আহাজারির দৃশ্য দাবিতেও প্রচার করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির  সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের এক পর্যায়ে এক দল লোকের গণপিটুনিতে আমিরুল ইসলাম পারভেজ নামের এক পুলিশ কনস্টেবল মারা যান। এছাড়া, গত জুলাই মাসে লক্ষ্মীপুরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপি’র সংঘর্ষে সজীব হোসেন নামে এক বিএনপি কর্মী নিহত হন।

প্রসঙ্গত, পূর্বে গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন:

সুতরাং, গত ২৮ মে নগরীর পাহাড়তলী থানার হালিশহর নয়াবাজার এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত নৈশপ্রহরী আজাদুর রহমান আজাদের সন্তানের আহাজারির ভিডিওকে গত ২৮ অক্টোবরে বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে সংঘর্ষে নিহত পুলিশ সদস্য পারভেজের সন্তান ও গত জুলাই মাসে লক্ষ্মীপুরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপির সংঘর্ষে নিহত বিএনপি কর্মী সজিব হোসেনের মৃত্যুতে তার সন্তানের আহাজারির দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সত্য নয়।

তথ্যসূত্র

মিরপুরে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষকে গণমাধ্যমে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, রাজধানীর ‘মিরপুরে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ‘শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

সংঘর্ষ

গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন প্রতিবেদন দেখুন সময় টিভি, ইত্তেফাক, মোহনা টিভি, ঢাকা টাইমস, সময়ের আলো, এবি নিউজ, আলোকিত বাংলাদেশ, বিবার্তা২৪, রিদ্মিক নিউজ, যুবকণ্ঠ, জনমত, বাংলা নিউজ নেটওয়ার্ক

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) ও এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সরকারের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) থেকে শুরু হওয়া বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোট এবং জামায়াতে ইসলামীর তিনদিনের অবরোধের প্রথম দিনে রাজধানীর মিরপুরে ১১ নম্বরে বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং ঐ এলাকায় পোশাক শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪ এ ৩১ অক্টোবর ‘মিরপুরে পোশাকশ্রমিক-আওয়ামী লীগ-পুলিশ সংঘর্ষ’  শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) নাজমুলকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সঙ্গে প্রথমে স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজনের মধ্যে পিকেটিংয়ের ঘটনা ঘটে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশও মাঠে নামে।

জাতীয় পর্যায়ের দৈনিক আজকের পত্রিকায় একই ঘটনায় ‘মিরপুরে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ–সংঘর্ষ, গাড়ি ভাঙচুর, আহত ২৩‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে মিরপুর বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার জসিম উদ্দিনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘আন্দোলনরত শ্রমিকদের নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে হালকা হাতাহাতি হয়েছে। হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। দুই-এক দিনের মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির কথা রয়েছে। এটা  উপেক্ষা করে তারা আন্দোলন করছে। আমরা তাদের বুঝিয়ে তুলে দিয়েছি।’ 

একই ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত আরও প্রতিবেদন ও ছবির তুলনামূলক বিশ্লেষণ দেখুন 

Image Analysis: Rumor Scanner

মিরপুরে পোশাক শ্রমিক-আওয়ামী লীগ-পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ২১ (নিউজবাংলা২৪)

এছাড়া বিষয়টি নিয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানার টিম পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান মিয়ার সাথে যোগাযোগ করে। 

তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, বিএনপি-পুলিশের সংঘর্ষের দাবিটি গুজব। এখানে সংঘর্ষটি হয়েছে শ্রমিকদের দুইটি পক্ষের মধ্যে। বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা এখানে ছিল না। 

একই বিষয়ে জানতে রিউমর স্ক্যানার টিম ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের ডেপুটি কমিশনার ফারুক হোসেনের সাথেও যোগাযোগ করে। তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, মিরপুরের ঘটনাটি বিএনপির সাথে সংঘর্ষ না। ওটা শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ। 

মূলত, আজ মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) ছিল সরকারের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে শুরু হওয়া বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোট এবং জামায়াতে ইসলামীর তিনদিনের অবরোধের প্রথম দিন। এদিনই রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বরে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে একটি পোশাক কারখানার আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একইসাথে এই ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদেরও সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই সংঘর্ষকেই পরবর্তীতে একাধিক গণমাধ্যমে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বরে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনাকে গণমাধ্যমে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আফগানিস্তানে ছাত্রদের দ্বারা নির্মিত ২শত কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ের ছবি দাবিতে স্পেনের পুরোনো ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘আফগানিস্তানের কুন্দুজ থেকে জালালাবাদ পর্যন্ত ২ শত কিলোমিটার অত্যাধুনিক এক্সপ্রেসওয়ের কাজ সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্ররা সম্পন্ন করেছে’ দাবিতে একটি রাস্তার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আফগানিস্তানের কুন্দুজ থেকে জালালাবাদ পর্যন্ত ২ শত কিলোমিটার অত্যাধুনিক এক্সপ্রেসওয়ের কাজ সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রদের করার দাবিতে রাস্তার যে ছবিটি প্রচার করা হচ্ছে তা আফগানিস্তানের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ছবিটি স্পেনের আন্দালুসিয়া অঞ্চলের অটোভিয়া দেল অলিভার নামের একটি রাস্তার।

ছবিটির সত্যতা যাচাইয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Driftwood Journals নামের একটি ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর  Spain’s 10 Most Scenic Road-Trip Routes ~ A Windows Down Guide শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফিচার প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner 

ফিচার প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত প্রতিবেদনে থাকা একটি ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত রাস্তার ছবিটির হুবহু মিল রয়েছে।

এছাড়াও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, এটি মূলত স্পেনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এমন কিছু রাস্তা নিয়ে যেখানে গাড়ি নিয়ে দারুণ একটি রোড ট্রিপ দেওয়া যেতে পারে। সেই রাস্তাগুলোর মধ্যে আলোচিত ছবিটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ আন্দালুসিয়ার জলপাই বাগানে ঘেরা অটোভিয়া দেল অলিভার নামক রোডটি অন্যতম।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জনপ্রিয় উন্মুক্ত বিশ্বকোষ Wikipedia এর ওয়েবসাইটে ২০০৭ সালের ২৫ নভেম্বর File:Autovia olivar.jpg শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত আরেকটি ছবি খুঁজে যায়। উক্ত ছবিটির সাথেও আলোচিত ছবিটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Image Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়াও উক্ত ছবির সাথে প্রদত্ত মেটাডেটা থেকে জানা যায়, ছবিটি অটোভিয়া দেল অলিভার নামক মহাসড়কের। যা ফারনান্দো আলদা ক্যালভো নামের একজন ফটোগ্রাফার ২০০৬ সালের ১০ অক্টোবর তুলেছেন।

তাছাড়া, lacontradejaen নামের স্পেন ভিত্তিক ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে ২০২০ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ১৫ বছরের অপেক্ষার পর অবশেষে স্পেনের অলিভার হাইওয়ে তৈরির কাজ শেষ হয়েছে এবং এই রাস্তার কাজ ২০০৫ সালে শুরু হয়েছিল।

পরবর্তী অনুসন্ধানে সম্প্রতি আফগানিস্তানে কুন্দুজ থেকে জালালাবাদ পর্যন্ত ২ শত কিলোমিটারের অত্যাধুনিক এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কোনো কাজ হয়েছে কিনা এবং তার সাথে সে দেশের শিক্ষার্থীরা যুক্ত আছেন কিনা জানতে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও দেশীয় বা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির সাথে আফগানিস্তানের কোনো সম্পর্ক নেই।

মূলত, ২০০১ সালের পর পুনরায় ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতায় আসে তালিবান। দীর্ঘ সংগ্রামের পর দেশটিতে শাসন ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার পর দেশের সকল পর্যায়ে নতুন আইন প্রণয়ন শুরু করা হয়। যার কিছু কিছু ব্যাপক সমালোচিত হলেও কিছু কর্মকাণ্ড সমাদৃতও হয়েছে। তবে সম্প্রতি, আফগানিস্তানের কুন্দুজ থেকে জালালাবাদ পর্যন্ত ২ শত কিলোমিটার অত্যাধুনিক এক্সপ্রেসওয়ের কাজ সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির ছাত্ররা সম্পন্ন করেছে এমন দাবিতে একটি রাস্তার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত রাস্তার ছবিটি আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক সময়ে নির্মিত কোনো রাস্তার ছবি নয়। ছবিটি মূলত স্পেনের আন্দালুসিয়া অঞ্চলের অটোভিয়া দেল অলিভার নামের একটি রোডের। তাছাড়া এই ছবিটি প্রায় ১৬ বছর আগের।

সুতরাং, ‘আফগানিস্তানের কুন্দুজ থেকে জালালাবাদ পর্যন্ত ২ শত কিলোমিটার অত্যাধুনিক এক্সপ্রেসওয়ের কাজ সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্ররা সম্পন্ন করেছে’ দাবিতে স্পেনের একটি রাস্তার পুরোনো ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

মাওলানা তারিক জামিলের ছেলের মৃত্যু অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে হয়নি

সম্প্রতি, “অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে মাওলানা তারিক জামিলের ছেলে নিহত” শীর্ষক শিরোনামে কিছু প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়।

মৃত্যু

সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন আমাদের সময়, ইনসাফ

একই দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অজ্ঞাত পরিচয় কোনো বন্দুকধারীর গুলিতে পাকিস্তানের ইসলামিক স্কলার মাওলানা তারিক জামিলের ছেলে আশেক জামিলের মৃত্যু ঘটেনি বরং নিরাপত্তারক্ষীর কাছ থেকে বন্দুক নিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম The Dawn এর ওয়েবসাইটে আজ (৩০ অক্টোবর) “Tariq Jamil’s son dies under ‘mysterious’ circumstances” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে আঞ্চলিক পুলিশ কর্মকর্তা (আরপিও) সোহাইল চৌধুরীর বরাত দিয়ে জানানো হয়, মাওলানা তারিক জামিলের পুত্র আশেক জামিল বাড়ির ব্যায়ামাগারে অনুশীলনের সময় নিরাপত্তাকর্মীকে ডাকেন এবং তার বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে নিজের বুকে গুলি চালান। পরবর্তীতে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

পাকিস্তানের মিয়ান চান্নুর ডেপুটি পুলিশ সুপার সালিম, আশেক জামিলের আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলে উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়।

Source: The Dawn

পরবর্তীতে, মাওলানা তারিক জামিলের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে আজ (৩০ অক্টোবর) মধ্যরাতে একটি পোস্টে মাওলানা তারিক জামিলের অপর পুত্র ইউসুফ জামিলের একটি ভিডিও বার্তা খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার।

Screenshot: Facebook 

উর্দুতে লেখা উক্ত ভিডিওর ক্যাপশন বাংলায় অনুবাদ করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওটি ইউসুফ জামিলের ভাই আশেক জামিলের মৃত্যু বিষয়ক ভিডিও বার্তা। 

উক্ত ভিডিও বার্তায় মাওলানা তারিক জামিলের ছেলে ইউসুফ জামিল জানান, তার ভাই আশেক জামিল দীর্ঘদিন থেকেই মানসিক অবসন্নতায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি তার মানসিক অবস্থার অবনতি হলে সেটি নিয়ন্ত্রণের জন্য বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার চিকিৎসাও চলছিল। ঘটনার দিন তার (ইউসুফ জামিল) ভাই আশেক জামিল বাড়িতে একাই ছিলেন। একসময় তিনি বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীর হাত থেকে বন্দুক নিয়ে নিজেই নিজের বুকে গুলি চালান। 

মূলত, পাকিস্তানের ইসলামিক স্কলার মাওলানা তারিক জামিলের ছেলে আশেক জামিল দীর্ঘদিন থেকেই মানসিক অবসন্নতায় ভুগছিলেন। মানসিক অবসন্নতার কারণেই ২৮ অক্টোবর বাড়ির নিরাপত্তায় নিয়োজিত এক নিরাপত্তাকর্মীর বন্দুক নিয়ে নিজের বুকে গুলি করে আত্মহত্যা করেন তিনি। তার এই মৃত্যুর ঘটনায় মাওলানা তারিক জামিলের ছেলে আশেক জামিল অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বে মাওলানা তারিক জামিলের ব্যাপারে মিথ্যা তথ্য প্রচারিত হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, মাওলানা তারিক জামিলের পুত্র আশেক জামিল অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র