সম্প্রতি, রাজধানীর ‘মিরপুরে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ‘শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন প্রতিবেদন দেখুন সময় টিভি, ইত্তেফাক, মোহনা টিভি, ঢাকা টাইমস, সময়ের আলো, এবি নিউজ, আলোকিত বাংলাদেশ, বিবার্তা২৪, রিদ্মিক নিউজ, যুবকণ্ঠ, জনমত, বাংলা নিউজ নেটওয়ার্ক।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) ও এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সরকারের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) থেকে শুরু হওয়া বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোট এবং জামায়াতে ইসলামীর তিনদিনের অবরোধের প্রথম দিনে রাজধানীর মিরপুরে ১১ নম্বরে বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং ঐ এলাকায় পোশাক শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪ এ ৩১ অক্টোবর ‘মিরপুরে পোশাকশ্রমিক-আওয়ামী লীগ-পুলিশ সংঘর্ষ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) নাজমুলকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সঙ্গে প্রথমে স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজনের মধ্যে পিকেটিংয়ের ঘটনা ঘটে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশও মাঠে নামে।
জাতীয় পর্যায়ের দৈনিক আজকের পত্রিকায় একই ঘটনায় ‘মিরপুরে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ–সংঘর্ষ, গাড়ি ভাঙচুর, আহত ২৩‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে মিরপুর বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার জসিম উদ্দিনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘আন্দোলনরত শ্রমিকদের নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে হালকা হাতাহাতি হয়েছে। হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। দুই-এক দিনের মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির কথা রয়েছে। এটা উপেক্ষা করে তারা আন্দোলন করছে। আমরা তাদের বুঝিয়ে তুলে দিয়েছি।’
একই ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত আরও প্রতিবেদন ও ছবির তুলনামূলক বিশ্লেষণ দেখুন
মিরপুরে পোশাক শ্রমিক-আওয়ামী লীগ-পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ২১ (নিউজবাংলা২৪)
এছাড়া বিষয়টি নিয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানার টিম পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান মিয়ার সাথে যোগাযোগ করে।
তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, বিএনপি-পুলিশের সংঘর্ষের দাবিটি গুজব। এখানে সংঘর্ষটি হয়েছে শ্রমিকদের দুইটি পক্ষের মধ্যে। বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা এখানে ছিল না।
একই বিষয়ে জানতে রিউমর স্ক্যানার টিম ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের ডেপুটি কমিশনার ফারুক হোসেনের সাথেও যোগাযোগ করে। তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, মিরপুরের ঘটনাটি বিএনপির সাথে সংঘর্ষ না। ওটা শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ।
মূলত, আজ মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) ছিল সরকারের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে শুরু হওয়া বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোট এবং জামায়াতে ইসলামীর তিনদিনের অবরোধের প্রথম দিন। এদিনই রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বরে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে একটি পোশাক কারখানার আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একইসাথে এই ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদেরও সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই সংঘর্ষকেই পরবর্তীতে একাধিক গণমাধ্যমে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
সুতরাং, রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বরে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনাকে গণমাধ্যমে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Jagonews24: মিরপুরে পোশাকশ্রমিক-আওয়ামী লীগ-পুলিশ সংঘর্ষ
- Ajker Patrika: মিরপুরে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ–সংঘর্ষ, গাড়ি ভাঙচুর, আহত ২৩
- News Bangla 24: মিরপুরে পোশাক শ্রমিক-আওয়ামী লীগ-পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ২১
- Statement of Pallabi Police Station OC
- Statement of DC ( Media and Public Relations, DMP)