Home Blog Page 599

বিসিবি সভাপতি পাপনকে উদ্দেশ্য করে প্রচারিত মন্তব্যটি কাজী সালাউদ্দিনের নয়

0

সম্প্রতি “সৎ ভাবে থেকেছি বলেই টাকা নেই! তা পাপন সাহেব যে এতো টাকা-টাকা করেন, চ্যালেঞ্জ করে বলছি উনি পারলে ওনার ইনকামের বৈধ উৎস দেখাক দেশের জনগণকে” শীর্ষক শিরোনামের একটি বক্তব্য বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের নাম উদ্ধৃত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (এখানে), এখানে (এখানে), এখানে (এখানে), এখানে (এখানে), এখানে (এখানে) এবং এখানে (এখানে)। 

Screenshot from ‘Facebook’ 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন উক্ত মন্তব্য করেননি বরং আলোচিত মন্তব্যটি বিকৃতভাবে কাজী সালাউদ্দিনের নামে প্রচার করা হচ্ছে। 

গুজবের সূত্রপাত

কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, ‘কিংবদন্তি ফুটবলার কাজী সালাউদ্দীন ওরফে সভাপতি সালাউদ্দিন’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ০৭ এপ্রিল তারিখে “অসৎ ভাবে চললে আজ বাফুফেরও টাকার অভাব হতোনা” শীর্ষক শিরোনামে আলোচিত ডিজিটাল ব্যানার সম্বলিত পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from ‘Facebook | কিংবদন্তি ফুটবলার কাজী সালাউদ্দিন ওরফে সভাপতি সালাউদ্দিন 

উক্ত পেইজটি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা যায়, এটি ফুটবল সংক্রান্ত একটি ট্রল পেইজ। বিভিন্ন সময় ফুটবল নিয়ে ট্রল পোস্ট করা হয় পেইজটিতে। 

এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ করে কাজী সালাউদ্দিনের উক্ত বক্তব্য কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, ‘আর্থিক সংকটে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত প্যারিস অলিম্পিক বাছাইপর্ব খেলতে দল পাঠাতে পারেনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন’ বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের এমন দাবির সমালোচনা করে গত ০৭ এপ্রিল তারিখে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, “টাকার জন্য অলিম্পিক বাছাইপর্বে দল পাঠাতে না পারার বিষয়টি দেশের জন্য লজ্জাজনক” বলে মন্তব্য করেছেন। 

পাশাপাশি, শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সফরের একমাত্র টেস্ট ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমার মনে হয়, সমস্যাটা আপনাদের (সংবাদ মাধ্যমের), আপনারা এত বাজে প্রশ্ন করলেন কেন! আপনারা (সালাউদ্দিনের কাছে) হিসাব চাচ্ছেন, টাকা কী করেছেন? এমন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলে তো উনার (সালাউদ্দিন) মাথা খারাপ হবে, এটা সবাই জানেন। এমন প্রশ্ন করেন কেন?” 

তাছাড়া, ভিন্ন দুইটি সংবাদ সম্মেলনে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন এবং বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বক্তব্য নিয়ে দেশীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়। 

তবে, উপরোক্ত আলোচনার পরবর্তীতে বা পূর্ববর্তী সময়ে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের নামে প্রচারিত উক্ত মন্তব্যের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। 

মূলত, প্যারিস অলিম্পিক বাছাইপর্ব খেলতে বাংলাদেশ দল পাঠাতে না পারার বিষয়কে কেন্দ্র করে এবং এর পরবর্তীতে বিসিবি সভাপতির বক্তব্যের প্রেক্ষিতে একটি ট্রল পেজ থেকে বাফুফে সভাপতির নামে এই ভুয়া মন্তব্যটি প্রচার করা হলেও পরবর্তীতে এটি কাজী সালাউদ্দিনের বাস্তব মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। 

সুতরাং, “সৎ ভাবে থেকেছি বলেই টাকা নেই! তা পাপন সাহেব যে এতো টাকা-টাকা করেন, চ্যালেঞ্জ করে বলছি উনি পারলে ওনার ইনকামের বৈধ উৎস দেখাক দেশের জনগণকে” শীর্ষক মন্তব্যটি বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের বাস্তব মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সৌদির স্কুলে রোনালদোর সন্তানেরা মারধরের শিকার হননি 

সম্প্রতি, রোনালদোর বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজের বরাত দিয়ে সৌদি আরবের স্কুলে রোনালদোর সন্তানরা মারধরের শিকার হয়েছেন দাবি করে বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বুর্জ নিউজের প্রতিবেদন দেখুন Burj News (আর্কাইভ)।

সুইডেনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সুইডেন পোস্টের প্রতিবেদন দেখুন Sweden Posts English (আর্কাইভ)।

মালয়েশিয়ায় সংবাদমাধ্যম নিউ স্টেয়ার্স টাইমস এর প্রতিবেদন দেখুন New Straits Times (আর্কাইভ)

নাইজেরিয়ার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন; Daily Post Nigeria (আর্কাইভ) Alimosho Today (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্টটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, সৌদি আরবের স্কুলে ফুটবল তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সন্তানরা মারধরের শিকার হননি বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই রোনালদোর বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজকে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, খেলাধুলা বিষয়ক ওয়েবসাইট Sportskeeda এর গত ৪ এপ্রিল প্রকাশিত “Media have published some fallacious stories” – Georgina Rodriguez hits out at ‘false’ claims about her kids after Cristiano Ronaldo’s Saudi move” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার।

প্রতিবেদনটিতে রোনালদোর বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজ  এর বরাতে বলা হয়, রোনালদোর সন্তানরা মারধরের শিকার হয়েছেন বলে যে সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে সেটি মিথ্যা।

Source: Sportskeeda

রোনালদোর বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরির সূত্র ধরে Sportskeeda উক্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। 

জর্জিয়া তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে লিখেন,‘স্কুলে আমাদের সন্তানদের নিয়ে কিছু সংবাদমাধ্যম একেবারে ভুল খবর করেছে। আমার বাচ্চারা খুব ভালো স্কুল পেয়েছে। সেখানে সবাই ভীষণ পেশাদার। আমাদের সঙ্গেও খুব ভালো ব্যবহার করেন তারা।’

Source: Sportskeeda

পাশাপাশি, কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম Mashable India এর ওয়েবসাইটে গত ৫ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে রোনালদোর বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরির বরাত দিয়ে জানানো হয় রোনালদোর সন্তানরা স্কুলে মারধরের শিকার হয়েছেন দাবিতে সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত দাবিটি ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা।

মূলত, সম্প্রতি সৌদি আরবের স্কুলে ফুটবল তারকা রোনালদোর সন্তানরা মারধরের শিকার হয়েছেন দাবি করে রোনালদোর বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজের বরাত দিয়ে বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমের সংবাদ প্রচারিত হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, উল্লিখিত দাবিটি সত্য নয়। উক্ত দাবিটিকে মিথ্যা বলে নিশ্চিত করে রোনালদোর বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজ গনমাধ্যমকে জানান, ‘সৌদি আরবে তার সন্তানরা ভালো স্কুল এবং বন্ধুবান্ধব পেয়েছে।’

প্রসঙ্গত, পূর্বেও ফুটবল তারকা রোনালদোকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্যকে শনাক্ত করে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

সুতরাং, সোদি আরবে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সন্তানরা স্কুলে হেনস্তার শিকার হয়েছেন দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ক্রিস্টমাস ও নতুন বছর উপলক্ষে তানজিন তিশা অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেননি

সম্প্রতি অভিনেত্রী তানজিন তিশার নামে একাধিক ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে ক্রিস্টমাস ও নতুন বছর উপলক্ষে তিনি অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

কী দাবি করা হচ্ছে?

তানজিন তিশার নামে পরিচালিত ফেসবুক পেজগুলো থেকে প্রচারিত লাইভগুলোর ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে, “ক্রিসমাস এবং নতুন বছরের উপহার ২০২৩! আমি প্রথম ৫০০ জনের জন্য নগদ ১ লক্ষ টাকা দান করছি, যারা সঠিকভাবে অঙ্কিত নম্বরটি অনুমান করতে পারে।”

Screenshot source: Facebook

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে
আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অভিনেত্রী তানজিন তিশা ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে ক্রিস্টমাস ও নতুন বছর উপলক্ষে কোনো অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেননি বরং তানজিন তিশার নামে পরিচালিত ভুয়া ফেসবুক পেজ থেকে পুরোনো ভিডিও ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছে।

কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে তানজিন তিশার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে পাওয়া অফিশিয়াল ফেসবুক ফ্যান গ্রুপ ‘Tanjin Tisha Official Fans Group’ এ তানজিন তিশার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বরে প্রচারিত ২০ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot source: Facebook

লাইভ ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তানজিন তিশা সেদিন তার অফিশিয়াল ফেসবুক ফ্যান গ্রুপ ‘Tanjin Tisha Official Fans Group’ এ লাইভে এসে সেই সময়ে তার সমসাময়িক অভিনয়ের কাজ নিয়ে আলাপ করেন।

পরবর্তীতে, সাম্প্রতিক সময়ে তানজিন তিশার উক্ত লাইভ ভিডিও ব্যবহার করে ‘Tanjin Tisha’ নামে ফেসবুকে একাধিক পেজ (,,) খুলে ক্রিস্টমাস ও নতুন বছর উপলক্ষে তিনি অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেছেন দাবিতে লাইভ ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে।

Screenshot collage: Rumor Scanner 

মূলত, ২০২০ সালে তানজিন তিশা তার অফিশিয়াল ফেসবুক ফ্যান গ্রুপের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানাতে এবং সেই সময়ে তার সমসাময়িক কাজের বিষয়ে আলোচনা করতে গ্রুপটিতে লাইভে আসেন। পরবর্তীতে উক্ত লাইভ ভিডিও ব্যবহার করে একাধিক ভুয়া ফেসবুক পেজ খুলে উক্ত ভিডিও ব্যবহার করে ক্রিস্টমাস ও নতুন বছর উপলক্ষে তিনি অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, ইতোপূর্বে নায়ক অনন্ত জলিলের নামে ভুয়া ফেসবুক পেজ খুলে থেকে ক্রিস্টমাস ও নতুন বছর উপলক্ষে তিনি অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেছেন দাবিতে প্রচার করা হলে সেসব পেজ ভুয়া হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ক্রিস্টমাস ও নতুন বছর উপলক্ষে তানজিন তিশার অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

মেক্সিকো-গুয়াতেমালার সীমান্ত প্রাচীরের দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন দেশের সীমান্ত প্রাচীরের ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘This is the border fence Mexico built on their border with Guatemala to keep out freeloaders’ শীর্ষক শিরোনামে একটি বর্ডার ফেন্সের (সীমান্ত প্রাচীর) ছবিকে মেক্সিকো ও গুয়াতেমালার সীমানা প্রাচীর হিসেবে দাবি করা হচ্ছে।

Image Collage by Rumor Scanner  

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোষ্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

টুইটারে একই দাবিতে প্রচারিত টুইট দেখুন এখানে
টুইটের আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরা সীমানা প্রাচীরের ছবিটি মেক্সিকো-গুয়াতেমালার বর্ডারের নয় বরং এটি ইজরায়েল ও মিশরের মধ্যবর্তী সীমান্ত প্রাচীরের ছবি।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম Middle East Eye এর ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, এটি মিসর-ইজরায়েল বর্ডারের ধারণকৃত ছবি।

Source: Middle-East Eye

উপরোক্ত তথ্যের সূত্র ধরে ছবিটির প্রকৃত উৎস অনুসন্ধান করতে গিয়ে ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘Getty Images’ এর ওয়েবসাইটে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১২ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ইজরায়েল-মিশরের সীমান্তবর্তী এলাকা রেড সি রিসোর্ট টাউন থেকে ছবিটি তুলেছেন Ahmad Gharabli নামক একজন আলোকচিত্রী।

Source: Getty image

এছাড়াও রিসার্ভ ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Speigel International এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে সমজাতীয় একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ২০১২ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে দেখা যায়, আবির সুলতান নামক একজন চিত্রগ্রাহক মিশর-ইজরায়েল বর্ডারে চিত্রটি ধারণ করেছিলেন।

Source: Spiegel International

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য প্রমাণ থেকে এটা নিশ্চিত যে, আলোচিত ছবিটি ইজরায়েল-মিশরের সীমান্ত প্রাচীরের ছবি।

মূলত, ২০১২ সালে Ahmad Gharabli নামের এক আলোকচিত্রী মিশর-ইজরায়েল সীমান্তবর্তী এলাকার রেড সি রিসোর্ট টাউন থেকে মিশর-ইজরায়েলের সীমান্ত প্রাচীরের একটি ছবি ধারণ করেন। উক্ত ছবিটিকেই সাম্প্রতিক সময়ে মেক্সিকো-গুয়াতেমালার সীমান্ত প্রাচীরের দৃশ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে।

সুতরাং, মিশর-ইজরায়েলের সীমান্ত প্রাচীরের ছবিকে মেক্সিকো-গুয়াতেমালার সীমান্ত প্রাচীরের ছবি দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশি হাফেজ তাকরিমকে অভিনন্দন জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেননি ড. জাকির নায়েক

সম্প্রতি, বাংলাদেশি হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমকে দুবাইয়ে কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করায় ইসলামিক বক্তা ড. জাকের নায়েক অভিনন্দন জানিয়ে তাঁর নিজের ফেসবুক পেইজে পোস্ট দিয়েছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানেএখানে
আর্কাইভ  দেখুন এখানে, এখানে, এখানেএখানে। 

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে। আর্কাইভ দেখুন এখানে। 

টীকটকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দুবাইয়ে কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়া বাংলাদেশি হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমকে অভিনন্দন জানিয়ে জাকির নায়েক তার ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট দেননি বরং জাকির নায়েকের নামের যে পেইজ থেকে পোস্ট দেওয়া হয়েছে সেটি তাঁর প্রকৃত পেইজ নয় বরং এটি জাকির নায়েকের নামে পরিচালিত একটি ফ্যান পেইজ।

অনুসন্ধানের শুরুতে জাকির নায়েকের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে পেইজটিতে বাংলাদেশি হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমকে অভিনন্দন জানিয়ে কোনো পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

Comparison Between Zakir Nayik Fan Page and Zakir Nayik Official Page

পরবর্তীতে, হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমকে অভিনন্দন জানিয়ে পোস্ট(আর্কাইভ) দেওয়া জাকির নায়েকের নামে পরিচালিত ফেসবুক পেইজটির পেইজ ট্রান্সপারেন্সি অংশটি বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

Screenshot: Zakir Nayik Facebook Fan Page

বিশ্লেষণে দেখা যায়, পেইজটি ২০১১ সালের ৩ আগস্ট Dr Zakir Nayik Fan Club Official নামে খোলা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে দুইবার পেইজটির নাম পরিবর্তন করা হয়। 

এছাড়া পেইজটির এবাউট অংশ থেকে জানা যায়, এই পেইজটি জাকের নায়েকের ফ্যান বা সমর্থকদের দ্বারা পরিচালিত হয়। 

Zakir Nayik Fan Page Analysis by Rumor Scanner

অর্থাৎ, বাংলাদেশি হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমকে অভিনন্দন জানিয়ে জাকির নায়েকের যে পেইজটি থেকে পোস্ট দেওয়া হয়েছে তা জাকির নায়েকের মূল বা অফিসিয়াল পেইজ নয় বরং সেটি হচ্ছে তাঁর নামে পরিচালিত একটি ফ্যান পেইজ। 

মূলত, সম্প্রতি দুবাই আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন বাংলাদেশর হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম। গত ৪ এপ্রিল বাংলাদেশের সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম স্থান অধিকারী হিসেবে তাকরিমের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর ইসলামিক বক্তা ড. জাকির নায়েকের নামে পরিচালিত একটি পেইজ থেকে তাকরিমকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি পোস্ট করা হয়৷ তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জাকির নায়েকের নামে পরিচালিত যে পেইজটি থেকে তাকরিমকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে, সেটি তাঁর প্রকৃত পেইজ নয়। প্রকৃতপক্ষে সেটি জাকের নায়েকের নামে পরিচালিত একটি ফ্যান পেইজ। এছাড়া অনুসন্ধানে জাকির নায়েকের মূল বা অফিসিয়াল পেইজে তাকরিমকে অভিনন্দন জানিয়ে কোনো পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, বাংলাদেশি হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমকে অভিনন্দন জানিয়ে ড. জাকির নায়েক তার ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট দিয়েছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

বলিউড অভিনেত্রী উর্বশীকে পাকিস্তানি ক্রিকেটার নাসিম শাহ এর বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার দাবিটি মিথ্যা 

সম্প্রতি, “পাকিস্তান ক্রিকেটার নাসিম শাহ বলিউড অভিনেত্রী উর্বশী রাউতেলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন” শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং মূলধারার সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। ভাইরাল একটি ভিডিও ক্লিপের ভিত্তিতে উক্ত দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছে এবং সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। 

বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে এমন দেশীয় গণমাধ্যমের মধ্যে রয়েছে মানবজমিন, যায়যায়দিন, যুগান্তর, সময় টিভি, ভোরের কাগজ, ঢাকা মেইল, আমাদের সময়, চ্যানেল২৪, আজকের পত্রিকা, নিউজ২৪, দৈনিক আমাদের সময়, বিজয় টিভি(ইউটিউব), বাংলাদেশ টুডে, দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস, জুম বাংলা, দ্যা রিপোর্ট ডট লাইভ, ফ্রিডম বাংলা নিউজ

একই দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমের কিছু প্রতিবেদন দেখুন; আনন্দবাজার, এই সময়, ইন্ডিয়া টুডে, জি নিউজ বাংলা, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ইন্ডিয়া ডট কম,সংবাদ প্রতিদিন, ইন্ডিয়া টুডে। 

পাকিস্তানি গণমাধ্যমে একই দাবিতে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন; দ্য নিউজ, পাকিস্তান অবজারভার

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুকে পেজে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। আর্কাইভ এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

একই দাবিতে টিকটকে  প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়,  পাকিস্তানি ক্রিকেটার নাসিম শাহ বলিউড অভিনেত্রী উর্বশী রাউতেলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং একটি এডিটেড ভিডিওর ওপর ভিত্তি করে উক্ত দাবিতে ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের বেশকিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে, যেই ভিডিওটির(আর্কাইভ) ওপর ভিত্তি করে নাসিম শাহ উর্বশী রাউতেলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে সেই ভিডিওটি(আর্কাইভ) পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Screenshot: Tweeter

উক্ত ভিডিওতে দেখা যায়, একজন সংবাদিক নাসিম শাহ কে ‘ভারতীয় অভিনেত্রী উর্বশী কে নিয়ে কোনো মেসেজ আছে কি না’ তা জানতে চাইলে নাসিম শাহকে বলতে শোনা যায়, ‘Agar mein messege dunga toh applok viral kardenge’…. ‘taiyar ho dulhan to… uch time.. shadi karlonga.’ (If I give the message, you people will make it viral…. If the bride is ready then I will get married.”) 

ভাইরাল এ ভিডিওটি ভালোভাবে খেয়াল করলে  ‘Agar mein messege dunga toh applok viral kardenge’ এর পরের ‘taiyar ho dulhan to… uch time.. shadi karlonga.’ অংশটি এডিট করে জোড়া লাগানো বলে মনে হয়৷ 

পরবর্তীতে কিওয়ার্ড সার্চ করার মাধ্যমে নাসিম শাহ এর ঐ ভিডিও ক্লিপের সম্পূর্ণ ভিডিও খোঁজার চেষ্টা করলে Events and Happening sports নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘When is Nasim Shah getting married?’ শিরোনামে গত ৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত উক্ত অনুষ্ঠানে নাসিম শাহের বক্তব্যের দীর্ঘ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

উক্ত ভিডিওর ৪৩ তম সেকেন্ডে দেখা যায় এক সাংবাদিক নাসিম শাহ এর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করে বলেন, ‘ডিএসপিও হয়ে গেছেন…বিয়ে করছেন কবে? (সাদাব, শাহীন করে ফেলেছে এবং হারিস রউফও করতে যাচ্ছে)’।

প্রশ্নের উত্তরে নাসিম শাহ বলেন, ‘স্যার, মূলত আপনার এই প্রশ্নটি আমার আব্বুকে জিজ্ঞেস করা উচিত। কেননা আব্বু যখন বলবেন দুলহান তৈরি তখনই এটা হবে। আমার পক্ষ থেকে কোনো কিছু নেই৷ এটা আব্বুকে বলতে হবে এবং আব্বু যখন বলবেন তখন বিয়ে করে নেবো।’

নাসিম শাহ এর এই প্রশ্নের উত্তর থেকে  ‘taiyar ho dulhan to… uch time.. shadi karlonga.’অংশটুকু কেটে নিয়ে আলোচিত ভিডিওতে বসানো হয়েছে।

পরবর্তীতে একই ভিডিওর ৫ তম মিনিট এর পর সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ভারতীয় অভিনেত্রী উর্বশীর জন্য কোনো মেসেজ আছে কি না তা জানতে চাওয়া হলে নাসিম শাহ হেসে বলেন, ‘যদি আমি কোনো মেসেজ দেই.. আপনারা সেটা ভাইরাল করে দেবেন’। (‘Agar mein messege dunga toh applok viral kardenge’)।

উক্ত ভিডিওতে উর্বশীকে নিয়ে নাসিম শাহ এর আর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি এবং বিয়ে সংক্রান্ত প্রশ্ন বা উত্তরটির সাথে উর্বশীর সম্পর্ক নেই।

অর্থাৎ, গত ফেব্রুয়ারিতে এক অনুষ্ঠানে নাসিম শাহ এর উর্বশীকে নিয়ে কোনো মেসেজ আছে কি না সেই প্রশ্নটির সাথে তার উত্তর এবং তার সাথে এডিট করে ‘বিয়ে কবে করছেন’ শীর্ষক ভিন্ন আরেকটি প্রশ্নের উত্তর যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। এবং এই ভিডিওর ওপর ভিত্তি করেই গণমাধ্যমে ভুয়া দাবি প্রচারিত হচ্ছে।

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে গত ফেব্রুয়ারিতে দেয়া নাসিম শাহ এর বক্তব্যের কিছু প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। গত ৮ ফেব্রুয়ারি Geo Super TV  নাসিম শাহ এর ঐ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে “When will Naseem Shah get married?” শিরোনামে এবং gnnhd.tv তে “Ask my father,” says Naseem Shah on marriage plans” শিরোনামের দুটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন দুটিতে একইভাবে বিয়ে সংক্রান্ত বক্তব্যটি উল্লেখ করা হয়েছে। 

Screenshot: Geo Super TV Website

মূলত,পাকিস্তানি ক্রিকেটার নাসিম শাহ গত ফেব্রুয়ারিতে একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সাথে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে অংশ নেন। উক্ত অনুষ্ঠানে নাসিম শাহ কে করা বেশকিছু প্রশ্নের মধ্যে তার বিয়ে নিয়ে এবং ভারতীয় অভিনেত্রী উর্বশী রাউতেলা সংক্রান্ত দুটি ভিন্ন প্রশ্নের উত্তর এর সময়কার বক্তব্য এডিট করে একসাথে করে উর্বশীকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন নাসিম শাহ দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত এডিটেড ভিডিওর ওপর ভারত, পাকিস্থান এবং বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে ‘উর্বশী রাউতেলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন নাসিম শাহ’ শীর্ষক দাবিতে ভুয়া সংবাদ প্রচারিত হয়।

সুতরাং, বলিউড অভিনেত্রী উর্বশীকে পাকিস্তানি ক্রিকেটার নাসিম শাহ বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন দাবি করে গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদটি মিথ্যা।

এআই দিয়ে তৈরি ছবি পোপ ফ্রান্সিসের বাস্তব ছবি দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি, দুই নারীর মাঝে পোপ ফ্রান্সিসের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে  ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে
আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পোপ ফ্রান্সিসের ছবিটি আসল নয়, বরং আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) সফটওয়্যার ব্যবহার করে ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ‘Out of context’ নামের একটি টুইটার অ্যাকাউন্টে গত ০৮ এপ্রিল করা একটি টুইটে পোপ ফ্রান্সিসের আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। Out of context নামের সেই টুইটার অ্যাকাউন্ট ঘুরে দেখা যায় সেখানে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে তৈরিকৃত বিভিন্ন ছবি পোস্ট করা হয়ে থাকে। পোপের ছবি ছাড়াও এআই জেনারেটেড একাধিক ছবি খুঁজে পাওয়া যায় সেই টুইটার অ্যাকাউন্টে।

Screenshot: Twitter 

এছাড়াও, কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে নিউ ইয়র্ক টাইমসে  গত ০৮ এপ্রিল “Why Pope Francis Is the Star of A.I.-Generated Photos” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে পোপ ফ্রান্সিসের অসংখ্য এআই জেনারেটেড ছবি তৈরি করা হয়েছে।

Source: New York Times 

পাশাপাশি, কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক অনলাইন গণমাধ্যম ‘Buzz Feed News’ এ গত ০১ ফেব্রুয়ারি “Why Are AI-Generated Hands So Messed Up?” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরিকৃত ছবি সমূহে অসংলগ্ন হাতের আকার দেখা যায়। হাতের আঙুলের আকারও সঠিকভাবে চিত্রায়ণ করতে পারে না কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ফলে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরিকৃত ছবিসমূহে প্রায়শই দেখা মেলে অসংলগ্ন হাত কিংবা আঙুলের আকৃতি। 

Source: Buzz Feed News

Buzz Feed News এর প্রতিবেদনে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পোপ ফ্রান্সিসের ছবিটি বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। বিশ্লেষণে দেখা যায়, পোপের ডান পাশে থাকা মেয়েটির হাতের আঙুল মানুষের বাস্তব হাতের আঙুলের মত নয়। যা নির্দেশ করে যে ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি।

Screenshot:

মূলত, বাস্তব ছবি দাবিতে দুই নারীর মাঝে পোপ ফ্রান্সিসের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছড়িয়ে পড়া ছবিটি বাস্তব কোনো ছবি নয় বরং, ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খ্রিষ্টান ক্যাথলিক চার্চের প্রধান পোপ ফ্রান্সিসকে কেন্দ্র করে একাধিক এআই জেনারেটেড ছবি ছড়ানোর ঘটনা ঘটেছে।

প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এআই জেনারেটেড ছবি বাস্তব দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, দুই নারীর সাথে বসে থাকা পোপ ফ্রান্সিসের ছবিটি আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে

তথ্যসূত্র

Out Of Context Twitter Acoount – https://twitter.com/outofcontext_AI
Out of Context on Twitter – https://twitter.com/outofcontext_AI/status/1642909856829960199 
The New York Times: Why Pope Francis Is the Star of A.I.-Generated Photos
BuzzFeed News: Why Are AI-Generated Hands So Messed Up?
Reuters: Fact Check-Image of Pope Francis wearing oversized white puffer coat is AI-generated

লেবানন থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি প্রচার

সম্প্রতি, লেবানন থেকে ইসরায়েলে ৩০টির বেশি রকেট হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে রকেট হামলার একটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।

Screenshot: Banglanews24

উক্ত ছবি সংযুক্ত করে বাংলা নিউজ (আর্কাইভ) এবং ঢাকা মেইল (আর্কাইভ) প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, লেবানন থেকে ইসরায়েলে ৩০টির বেশি রকেট হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে ব্যবহৃত ছবিটি সাম্প্রতিক নয় বরং ছবিটি ২০২১ সালের।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম ‘Daily Mail’ এ ২০২১ সালের ১৬ মে “Israeli police shoot dead Palestinian driver who rammed into Jerusalem checkpoint to injure four officers – as families are pulled from Gaza rubble after another night of airstrikes with children accounting for nearly a third of Palestine’s 174 dead” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে হুবহু একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Daily Mail

উক্ত ছবির ক্যাপশনে লেখা হিয়েছে, ২০২১ সালের ১৫ মে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরায়েলি শহরগুলিকে লক্ষ্য করে গাজা থেকে রকেট ছোড়া হচ্ছে।

এছাড়া, ছবিটির নিচে বা দিকের অংশে ছবির সোর্স হিসেবে ‘@Anadolu Agency via Getty Images’ এর নাম দেওয়া হয়েছে। 

উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘Getty Images’ এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ১৬ মে “Rockets fired from Gaza Strip towards Israel” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মূল ছবিটি পাওয়া যায়। এই ছবির ক্যাপশনেও একই তথ্য দেওয়া হয়েছে।

Screenshot from Getty Images

অর্থাৎ, সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচারিত ছবিটি ২০২১ সালের।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইসরায়েলের দিকে অন্তত ৩০টি রকেট ছোড়া হয়েছে।


মূলত, ২০২১ সালের ১৫ মে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরায়েলি শহরগুলিকে লক্ষ্য করে গাজা থেকে রকেট ছোড়ার সময় ধারণকৃত একটি ছবি সাম্প্রতিক সময়ে লেবানন থেকে ইসরায়েলের দিকে ৩০টির বেশি রকেট ছোড়ার ঘটনার প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যবহার করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, এর আগেও বিভিন্ন সময় ভুয়া ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে

সুতরাং, লেবানন থেকে ইসরায়েলে ৩০টির বেশি রকেট হামলার ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট প্রেক্ষাপট উল্লেখ ব্যতীত ২০২১ সালের একটি ছবি ব্যবহৃত হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

বঙ্গবাজারে বাইকে করে এসে আগুন লাগানোর দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পুরোনো 

সম্প্রতি রাজধানীর বঙ্গবাজারে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একটি ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে যে, বঙ্গবাজারের আগুনের সূত্রপাতের সাথে দুইজন ব্যক্তি জড়িত, যারা মোটরসাইকেলে করে এসে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানেএখানে
আর্কাইভ  দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানেএখানে। 

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে। আর্কাইভ দেখুন এখানে, এখানে। 

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানেএখানে। আর্কাইভ দেখুন এখানেএখানে। 

উক্ত ভিডিওটি ব্যবহার করে গণমাধ্যম কালবেলায় প্রচারিত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত থাম্বনেইল দেখুন:

কালবেলায় এই ভিডিওয়ের ভিত্তিতে ভুক্তভোগীদের বক্তব্য দেখুন কালবেলা ফেসবুক (আর্কাইভ), কালবেলা ইউটিউব (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বঙ্গবাজারে দুইজন অজ্ঞাত ব্যক্তির বাইকে করে এসে আগুন লাগানোর দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সঙ্গে উক্ত ঘটনার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। প্রকৃতপক্ষে অন্তত এক বছর আগ থেকেই ইন্টারনেটে উক্ত ভিডিওটির অস্তিত্ব রয়েছে।

বাইকে এসে আগুন দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে 

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ২০২২ সালের ৯ এপ্রিল SKL-Oxotic নামের একটি ফেসবুক পেইজে উক্ত ভিডিওটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: SKL-Oxotic Facebook Page 

কিন্তু ভিডিওটিতে কোনো ধরনের তথ্যসূত্র বা শিরোনাম উল্লেখ করা হয়নি৷ অর্থাৎ ভিডিওটি কোন প্রসঙ্গে, কোন স্থান থেকে ধারণকৃত এমন কোনো তথ্যও পাওয়া যায়নি। তবে ভিডিওটিতে  Bhoot #bhoothakaalam #bhootboss #bhootni #bhoothakaalamreview #bhootakola #bhootaaiya ইত্যাদি শীর্ষক বেশকিছু হ্যাশট্যাগ খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: SKL-Oxotic Facebook Page 

এই ভিডিওটির সঙ্গে বঙ্গবাজারে আগুন লাগানোর ঘটনার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ উক্ত ভিডিওটির সঙ্গে বঙ্গবাজারে আগুন লাগার ঘটনার কোনো সম্পৃক্ততাই নেই।

বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কি বলছে? 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়নি। বরং কীভাবে এই আগুন লাগল, সে বিষয়ে তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করেছে ফায়ার সার্ভিস। কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

Screenshot: bdnews24 

ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

Screenshot: Jamuna TV 

এছাড়া অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে মঙ্গলবার ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এ কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে৷ পাশাপাশি আগুন লাগার ঘটনায় কোনো সংস্থাই এখন পর্যন্ত স্পষ্ট কোনো মন্তব্য করেনি।

Screenshot: DW Bangla 
Screenshot: Prothom Alo 

একই বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)’র কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পেছনে ব্যবসায়ীদের দ্বন্দ্ব-বিরোধের কারণ আছে কি না পুলিশ খতিয়ে দেখছে। তিনি বলেন, বঙ্গবাজারে বহুতল ভবন নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিরোধ ছিল। এই কারণে আগুন লেগেছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Screenshot: Dhaka Times24

অর্থাৎ বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য জানা যায়নি। 

বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত আগুনের সূত্রপাতের একটি ভিডিও প্রতিবেদন দেখুন এখানে। 

Screenshot: Ekattor TV
এক বছর আগের এই ভিডিওটি যেভাবে গণমাধ্যম ও ভুক্তভোগীদের প্রভাবিত করেছে

বঙ্গবাজারে সংঘটিত এই আগুনের ঘটনায় গত ৫ এপ্রিল জাতীয় দৈনিক কালবেলা ‘বঙ্গবাজারে দুইজন বাইকে এসে আগুন লাগিয়েছে: বলছেন ব্যবসায়ীরা’ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। 

প্রতিবেদনটির ১ মিনিট ৩৩ সেকেন্ড সময়ে একজন ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমি একটু আগে দেখলাম নেটে, দুইজন বাইকে এসে আগুন লাগাই দিয়া গেল গা।’

Screenshot: Kalbela

একই প্রতিবেদনের ২ মিনিট ৫৫ সেকেন্ড সময়ে আরেকজন ভুক্তভোগী বলেন, ‘সকালবেলা নেটে দেখছি যে, একজন আসলো। আসার পর একজন নামছে, এরপর আগুন লাগাই দিয়া উধাও।’

Screenshot: Kalbela 

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এই ভুক্তভোগী বলেন, ‘এটা কিভাবে বলবো? আমরা সন্দেহ করছি, তারাই কাজটা করছে।’

অর্থাৎ উক্ত ভুক্তভোগীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক বছর পূর্বের তথ্যসূত্রহীন ভিডিওটিকেই বঙ্গবাজারের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত হিসেবে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, কেবল ভুক্তভোগীরাই নয়, কালবেলা পত্রিকাটিও তাদের প্রতিবেদনের থাম্বনেইলে আলোচিত ভিডিওটি ব্যবহার করে। তবে পরবর্তীতে গণমাধ্যমটি থাম্বনেইলটি সম্পাদনা করে আলোচিত ভিডিওয়ের অংশটি সরিয়ে ফেলে।

Thumbnail Comparison by Rumor Scanner

মূলত, গত ৪ এপ্রিল রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে মার্কেটটির প্রায় পাঁচ হাজার দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দাবি করা হয় যে, দুইজন ব্যক্তি বাইকে করে এসে বঙ্গবাজারে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাইকে এসে বঙ্গবাজারে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি অন্তত এক বছরের পুরানো। এছাড়া আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ফায়ার সার্ভিস সহ তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো তদন্ত কমিটি আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।

সুতরাং, এক বছর পুরোনো ভিডিওকে বঙ্গবাজারে দুইজন অজ্ঞাত ব্যক্তির বাইকে করে এসে আগুন লাগানোর ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

পুলিশ কর্মকর্তা বহিষ্কার দাবিতে বিভ্রান্তিকর ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, “বড় পুলিশ প্রধান বহিষ্কার” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ভিডিও প্লাটফর্ম ইউটিউবে প্রকাশিত ‘ভিডিওটি’ দেখুন ‘Faridpur TV’ (আর্কাইভ)।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,পুলিশের প্রধান কর্মকর্তা বহিষ্কার হওয়ার ঘটনাটি বাংলাদেশে ঘটেনি বরং গ্রিসে পুলিশের প্রধান কর্মকর্তার বহিষ্কার হওয়ার ঘটনা ঘটেছে এবং কোন দেশের পুলিশ তা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ না করে এবং ভিডিও’র থাম্বনেইলে বাংলাদেশের পুলিশের ছবি ব্যবহার করার কারণে বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।

অনুসন্ধানে শুরুতে “বড় পুলিশ প্রধান বহিষ্কার” শীর্ষক থাম্বনেইলে বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যের ছবি সহ গত ১৯ মার্চ, ২০২৩, ‘Faridpur TV’ তে প্রচারিত ভিডিওটি নজরে আসলে তা পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু ভিডিওর ভেতরে কোথাও বাংলাদেশের প্রধান পুলিশ অফিসার কিংবা অন্য কোনো পুলিশ সদস্য বহিষ্কার হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি।

তবে একপর্যায়ে দেখা যায় ভিডিওটির ৮ঃ০৬ মিনিটে গ্রীসের পুলিশ প্রধান বহিষ্কার হওয়ার তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

Screenshot from Youtube

অনুসন্ধানে গত ১৮ মার্চ কালের কণ্ঠে “গ্রিসের পুলিশ প্রধান বরখাস্ত” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেই প্রতিবেদনে গ্রিসের পুলিশ প্রধান বরখাস্ত হওয়ার ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।

Screenshot from Kaler Kantho

ভিডিওটির স্থিরচিত্র থেকে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ২২ মার্চ ২০২০ এ ‘Andrew Plant’ এর একটি ছবি সহ টুইট পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টে সংযুক্ত ব্যক্তির সাথে আলোচিত নিউজ বুলেটিনের প্রেজেন্টারের সাথে হুবহু মিলে যায়। ‘Faridpur TV’ তাদের ভিডিওতে যে নিউজ প্রেজেন্টারের দৃশ্য দেখিয়েছিলো সেটি বিবিসি নিউজ থেকে কপি করা।

Collage by Rumor Scanner

এছাড়া কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে গত ১৯ মার্চ বাংলাদেশে কোনো পুলিশ কর্মকর্তা বহিষ্কার হওয়ার তথ্য খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিও’র বিস্তারিত প্রতিবেদন এবং এবিষয়ে গণমাধ্যমমের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, গ্রিসে পুলিশ কর্মকর্তা বহিষ্কার হওয়ার ঘটনাতে গ্রিসের নাম উল্লেখ না করে বড় পুলিশ কর্মকর্তা বহিষ্কার হয়েছে দাবি করে থাম্বনেইলে বাংলাদেশ পুলিশের ছবি ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার করা হয়েছে।

মূলত, ট্রেন দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনগণ বিক্ষোভ করলে গত ১৮ মার্চ গ্রিসের পুলিশ প্রধান বরখাস্ত হয়। সেই তথ্যটি উপস্থাপন করতে গিয়ে ‘Faridpur TV’ তাদের ইউটিউব চ্যানেলের একটি ভিডিওর থাম্বনেইলে বাংলাদেশের পুলিশের ছবি ব্যবহার করার কারণে বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।

প্রসঙ্গত, অসামাজিক কার্যকলাপ ও ঘুষ গ্রহণের দায়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মোহা. আবদুর রকিব খানকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গত ২৭ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

উল্লেখ্য, থাম্বনেইলে চটকদার শিরোনাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এসব ঘটনা নিয়ে পূর্বেও ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, গ্রিসে পুলিশ কর্মকর্তা বহিষ্কার হওয়ার ঘটনাতে গ্রিসের নাম উল্লেখ না করে বড় পুলিশ কর্মকর্তা বহিষ্কার হয়েছে লিখে প্রচার করা হচ্ছে এবং থাম্বনেইলে বাংলাদেশের পুলিশের ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র