রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত এই ভিডিওটি বিশ্বের প্রথম রেলগাড়ির নয় বরং এটি Our Hospitality (১৯২৩) চলচ্চিত্রে একটি রেলগাড়ি চলার দৃশ্য।
মূলত, ১৯২৩ সালে মুক্তি পাওয়া Our Hospitality চলচ্চিত্রে রেল চলাচলের একটি দৃশ্য দেখানো হয়। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিও থেকে রেল চলাচলের একটি দৃশ্যকে বিশ্বের প্রথম রেলগাড়ি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।
উল্লেখ্য, পূর্বেও এটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সম্প্রতি, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপর পুলিশের হামলা’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে।
ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর পুলিশের হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামের বাড়িতে পুলিশ যাওয়ার বিষয়টিকে বিকৃত করে উক্ত ক্যাপশন এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে এই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটির বিস্তারিত অংশে কোথাও অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর পুলিশের হামলার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। সেখানে শুধুমাত্র ইউনূসের গ্রামের বাড়িতে পুলিশ যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে আলোচনা করা হয়।
পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র অনলাইন সংস্করণে গত ০৭ সেপ্টেম্বর ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের তথ্য নিতে গ্রামের বাড়িতে পুলিশ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০৩ সেপ্টেম্বর পুলিশ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ইউনূস এবং তার পরিবারের ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়েছেন।
পরবর্তীতে মূলধারার গণমাধ্যম ইত্তেফাকের অনলাইন সংস্করণে একই তারিখে ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের তথ্য নিতে গ্রামের বাড়িতে পুলিশ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকেও এবিষয়ে একই তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনগুলোর কোথাও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে পুলিশের হামলার বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি।
পাশাপাশি, অন্যান্য গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো মাধ্যমেও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর পুলিশের হামলার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর পুলিশের হামলার বিষয়টি সঠিক নয়।
মূলত, গত ০৩ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদস্যরা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামের বাড়িতে ইউনূস এবং তার পরিবারের বিষয়ে বিস্তারিত খোজখবর নিতে যান। পরবর্তীতে উক্ত বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর পুলিশের হামলা’ শীর্ষক ক্যাপশন এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হয়। ড. ইউনূসের ওপর হামলার দাবির প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, ড. ইউনূস সেদিন বাড়িতেই উপস্থিত ছিলেন না। এছাড়া ঐ দিন পুলিশও তার পরিবারের কোনো সদস্যের ওপর হামলা করেনি।
উল্লেখ্য, পূর্বেও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে প্রচারিত একাধিক মিথ্যা তথ্য শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামের বাড়িতে পুলিশ যাওয়ার বিষয়টিকে ‘ইউনূসের ওপর পুলিশের হামলা’ শীর্ষক ক্যাপশন এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সূত্রে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে গোপনে নারীর ভিডিও ধারণ, ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে নারীর গোপন ভিডিও ধারণের অভিযোগে ছাত্রদলের কোনো নেতা গ্রেপ্তার হননি এবং উল্লিখিত দাবিতে দৈনিক ইত্তেফাকও কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে এক ছাত্রলীগকে নেতাকে নিয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদের ফটোকার্ডকে এডিট করে ছাত্রদলের নামে প্রচার করা হয়েছে।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উক্ত ফটোকার্ডটিতে ইত্তেফাকের লোগো এবং তারিখ হিসেবে ৩১ আগস্টের কথা উল্লেখ রয়েছে।
পরবর্তীতে উল্লিখিত তথ্যের সূত্র ধরে দৈনিক ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে, গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে গত ৩১ আগস্ট “ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে গোপনে নারীর ভিডিও ধারণ, ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার” শীর্ষক শিরোনাম সম্বলিত একটি ফটোকার্ড (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ফটোকার্ডের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। পাশাপাশি আলোচিত ফটোকার্ডে সংযুক্ত ব্যক্তির ছবির সাথে ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডে সংযুক্ত ব্যক্তির ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Photocard Comparison by Rumor Scanner
তবে উক্ত ফটোকার্ডে এই ব্যক্তিকে ছাত্রদল নেতা উল্লেখ করা হলেও আলোচিত ফটোকার্ডে ছাত্রলীগ নেতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মৌলভীপাড়ার একটি ব্যায়ামাগারে আসা নারীর ব্যায়াম করার দৃশ্য গোপনে ভিডিও ধারণের অভিযোগে
গত ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ব্যায়ামাগারের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূঁইয়া বিপ্লব, ফিটনেস প্রশিক্ষক মিতু আক্তার ও সাইম।
এছাড়া, উক্ত বিষয়ে অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনগুলো দেখুন ইউএনবি, সমকাল, যায় যায় দিন।
অর্থাৎ, ছাত্রদল নেতা নয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে গোপনে নারীর ভিডিও ধারণ করার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন।
মূলত, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক নারীর ব্যায়াম করার দৃশ্য গোপনে ধারণ করার অভিযোগে গত ৩০ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূঁইয়া বিপ্লবসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উক্ত বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যম ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজে “ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে গোপনে নারীর ভিডিও ধারণ, ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার” শীর্ষক তথ্য উল্লেখ করে ফটোকার্ড প্রকাশিত হয়। উক্ত ফটোকার্ডকেই ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত করে ‘ছাত্রলীগ’ শব্দটির স্থলে ‘ছাত্রদল’ শব্দটি বসিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত আট মাসে বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিষয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে গোপনে নারীর ভিডিও ধারণ, ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।
সম্প্রতি, ‘ব্র্যাক স্কুল (গণশিক্ষা প্রকল্প) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি‘ শীর্ষক দাবিতে প্রথম আলোর নামে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রথম আলোর বিজ্ঞাপন দাবিতে প্রচারিত ব্র্যাক স্কুলের (গণশিক্ষা প্রকল্প) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি নকল। প্রকৃতপক্ষে প্রথম আলোর প্রিন্ট বা অনলাইন সংস্করণে এমন কোনো বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়নি। এছাড়া ব্র্যাক থেকেও এমন কোনো বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়নি।
অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলোর নামে প্রচারিত আলোচিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে থাকা তথ্য অনুযায়ী প্রথম আলোর ওয়েবসাইট, ই-প্রিন্ট সংস্করণ, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেল অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। রিউমর স্ক্যানারের পর্যবেক্ষণে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো বিজ্ঞপ্তি বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে আলোচিত দাবির প্রেক্ষিতে ১১ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো তাদের ফেসবুক পেইজে ‘মিথ্যা প্রচারণা‘ শীর্ষক একটি ফটোকার্ড পাওয়া যায়।
Screenshot from Facebook
উক্ত পোস্টে প্রথম আলো জানায়, প্রথম আলোর নামে ছড়ানো এই বিজ্ঞপ্তিটি নকল। এটি তাদের তৈরি নয়। এছাড়া ব্র্যাকও প্রথম আলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে বিজ্ঞপ্তির সাথে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
তবে ব্র্যাকের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ১২ আগস্ট প্রথম আলো’র ফটোকার্ডটি শেয়ার করে ব্র্যাকের ক্যারিয়ার ওয়েবসাইট থেকে চাকরির বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে জানতে আহ্বান জানায়।
Screenshot from Facebook
মূলত, সম্প্রতি, প্রথম আলো এবং ব্র্যাক এনজিওর লোগোসহ ব্র্যাক স্কুলের (গণশিক্ষা প্রকল্প) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি শীর্ষক একটি বিজ্ঞাপনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো এমন কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিজ্ঞাপন প্রচার করেনি। যা প্রথম আলো তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি পোস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে। এছাড়া ব্র্যাক তাদের নিয়োগ সংক্রান্ত ওয়েবসাইটেও এমন কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি।
প্রসঙ্গত, পূর্বেও প্রথম আলো’র নামে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির নকল বিজ্ঞাপন ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে বিষয়টি শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, প্রথম আলোর লোগোসহ ব্র্যাক স্কুলে (গণশিক্ষা প্রকল্প) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি শীর্ষক একটি বিজ্ঞাপন ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা।
চলতি বছরের (২০২৩ সাল) জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও দেশীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ১০৮২টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা রিউমর স্ক্যানার।
রিউমর স্ক্যানারের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফ্যাক্টচেক থেকে গণনাকৃত এই সংখ্যার মধ্যে রাজনৈতিক বিষয়ে সবচেয়ে বেশি (২৪৮) ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ মিলেছে, যা মোট ভুল তথ্যের ২৩ শতাংশ। গেল বছর (২০২২) রাজনৈতিক বিষয়ে ছড়িয়ে পড়া ৯২টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছিল রিউমর স্ক্যানার। এ বছর প্রথম পাঁচ মাসেই এ সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে।
রিউমর স্ক্যানারের পর্যবেক্ষণ বলছে, বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় চলতি বছর ইন্টারনেটে রাজনৈতিক বিষয়ক ভুল তথ্যের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে জড়িয়ে গত আট মাসে ৭৪টি ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার। নির্বাচন সামনে রেখে বিদেশি গণমাধ্যম, রাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং তাদের নেতৃত্বকে উদ্ধৃত করে বা জড়িয়ে ভুয়া মন্তব্য বা তথ্য প্রচারের প্রবণতাও লক্ষ্য করেছে রিউমর স্ক্যানার, যার সংখ্যা ২৪টি। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা বাতিল সংক্রান্ত ১৩টি এবং রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য বিকৃত করে ২১টি ভুল তথ্য প্রচার করতে দেখা গেছে।
রাজনৈতিক বিষয়ের বাইরে গেল আট মাসে আন্তজার্তিক বিষয়ে ২২৯টি, খেলার বিষয়ে ১২৩টি, জাতীয় বিষয়ে ১১৬টি, ধর্মীয় বিষয়ে ১১১টি, শিক্ষা বিষয়ে ৮১টি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে ৬৩টি, বিনোদন ও সাহিত্য বিষয়ে ৫০টি, আর্থিক প্রতারণা বিষয়ে ৪৪টি এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে ১৭টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার।
রিউমর স্ক্যানার টিমের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গত আট মাসে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক (৪৩) ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে, যা মোট রাজনৈতিক ভুল তথ্যের ১৭ শতাংশ। এছাড়া, কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমের বিষয়ে ২০টি, জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিষয়ে ১৫টি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিষয়ে ১২টি, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিষয়ে ১০টি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিষয়ে ০৮টি, গণ অধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুরের বিষয়ে ০৭টি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিষয়ে ০৭টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে।
এর বাইরে বাংলাদেশ পুলিশের বিষয়ে ১৪টি গুজব ছড়ানো হয়েছে। পুলিশের একক সদস্য হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মুহাম্মদ হারুন অর রশিদের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি (০৫) ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত ব্যক্তিত্ব নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ০৭টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার।
গত ফেব্রুয়ারিতে তুরস্ক ও সিরিয়ায় একাধিক ভূমিকম্পের ঘটনায় বিপর্যস্ত পরিস্থিতির শিকার হয় দেশ দুইটি। এ সময় উক্ত ঘটনার বিষয়ে ছড়িয়ে পড়া ৩৬টি ভুল তথ্য (লিঙ্ক) শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। চলতি বছরের আট মাসে একক কোনো ঘটনায় এটিই সর্বোচ্চ ভুল তথ্য শনাক্তের সংখ্যা।
গত ১৪ আগস্ট ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু হয়। পরদিন এ বিষয়ে ছড়িয়ে পড়া ১০টি ভুল তথ্য (লিঙ্ক) শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে কোনো একক ঘটনায় একদিনে এটিই সর্বোচ্চ ভুল তথ্য ছড়ানোর সংখ্যা। সাঈদীর বিষয়ে পরবর্তীতে আগস্ট মাসে আরও চারটি ভুল তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে।
চলতি বছরের (২০২৩) আট মাসে গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে ৩৯টি ভুল তথ্য (নকল ফটোকার্ড ২৩ টি, গণমাধ্যমের নাম ও লোগো ব্যবহারে ০৯ টি, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম এডিট করে ভিন্ন শিরোনাম যুক্ত করে প্রচার ০৭ টি) প্রচার করা হয়েছে (লিঙ্ক)। এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে ভুল তথ্য প্রচারে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’র নাম সবচেয়ে বেশি (১৮) ব্যবহার করা হয়েছে, শতকরা হিসেবে যা ৪৬ শতাংশ। এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে রাজনৈতিক বিষয়ে (২৭), যা মোট সংখ্যার ৬৯ শতাংশ। তবে এককভাবে এইচএসসির বিষয়ে সবচেয়ে বেশি (৬) ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার একটি ফ্যাক্ট-চেকিং বা তথ্য-যাচাইয়ের উদ্যোগ যার প্রধান লক্ষ্য দেশের চলমান গুজব ও ভুয়া খবর নির্মূল করা এবং সঠিক তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ যাত্রা শুরুর পর পরের বছরের (২০২১) ২৮ জুলাই রিউমর স্ক্যানার আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট-চেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) এর সদস্যপদ লাভ করে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাজধানীর সদরঘাট এলাকায় বাংলাবাজার মোড়ে অবস্থিত ফুটওভার ব্রিজটি অবিভক্ত ঢাকার প্রথম ফুটওভার ব্রিজ নয়। প্রকৃতপক্ষে এই ফুটওভার ব্রিজটির নির্মাণের পূর্বে ১৯৭৭ সালে ঢাকার ফার্মগেটে প্রথম ফুটওভার ব্রিজ নির্মিত হয়।
দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে Branding Dhaka নামের একটি গ্রুপে ২০২০ সালের ১৫ মার্চ তৎকালীন দৈনিক বাংলা পত্রিকার সূত্রে ‘১১ আগস্ট ১৯৭৭ঃ ফার্মগেট ওভারব্রিজ উদ্বোধনের পরপর’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Branding Dhaka facebook page
এই ছবিটির বিবরণী থেকে জানা যায়, নৌবাহিনীর স্টাফ প্রধান ও উপপ্রধান সামরিক আইন প্রশাসক রিয়ার এডমিরাল এম, এইচ খান ফার্মগেটের ফুট ওভারব্রিজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করে জনসাধারণের জন্য খুলে দেন৷
পরবর্তীতে ছবিটি নিয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে songramernotebook.com নামের একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকে ১৯৭৭ সালের ১১ আগস্ট “ফার্মগেট ওভারব্রিজ উদ্বোধন” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Daily Ittefaq, 11 August, 1977
এই প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ১৯৭৭ সালের ১০ আগস্ট, ১০০ ফুট দীর্ঘ, ১২ ফুট প্রস্থ ও ২০ ফুট উঁচু ঢাকার প্রথম ফুটওভার ব্রিজটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন নৌবাহিনী প্রধান ও উপপ্রধান সামরিক আইন প্রশাসক রিয়ার এডমিরাল এম, এইচ খান। উদ্বোধন শেষে তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্যও রাখেন।
প্রসঙ্গত, ঢাকা শহরের নাগরিকদের সেবা সহজলভ্য করার স্বার্থে ২০১১ সালের ২৩ নভেম্বর স্থানীয় সরকার সংশোধনী বিল-২০১১ অনুসারে সরকার ঢাকা সিটি করপোরেশনকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে। এ আইন অনুযায়ী ২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুটি প্রশাসনিক অঞ্চলে বিভক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর ফলে ২০১২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন যাত্রা শুরু করে। এরও পূর্বে ১৯৯০ সালে তৎকালীন ঢাকা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের নাম পরিবর্তন করে ঢাকা সিটি করপোরেশন নামকরণ করা হয়েছিল।
উপরিউক্ত তথ্যসমূহ পর্যালোচনা করে প্রতীয়মান হয় যে, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৯৯৬ সালে ঢাকার সদরঘাট এলাকায় বাংলাবাজার মোড়ে নির্মিত ফুটওভার ব্রিজটি ঢাকার প্রথম ফুটওভার ব্রিজ নয়।
মূলত, সম্প্রতি ঢাকার সদরঘাট এলাকায় বাংলাবাজার মোড়ে অবস্থিত ফুটওভার ব্রিজটির অব্যবস্থাপনা ও নানা সমস্যা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতীয় পর্যায়ের দৈনিক পত্রিকা আমাদের সময় ডটকম। উক্ত প্রতিবেদনে এই ফুটওভার ব্রিজটিকে ঢাকার প্রথম ফুটওভার ব্রিজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ফুটওভার ব্রিজটির বহু পূর্বেই ১৯৭৭ সালে ফার্মগেট এলাকায় ঢাকার প্রথম ফুটওভার ব্রিজ উদ্বোধনও করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, পূর্বেও ফার্মগেটের এই ফুটওভার ব্রিজটির উদ্বোধক কে তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ালে এ নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার টিম।
সম্প্রতি, “এইমাত্র বিমানবন্দর থেকে ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেফতার মমতাজ।আর রক্ষা হলো না এমপি মমতাজের” শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে প্রচারিত হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সংগীতশিল্পী ও সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম গ্রেফতার হননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর ‘B tv news 24‘ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘এইমাত্র বিমানবন্দর থেকে ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেফতার মমতাজ। আর রক্ষা হলো না এমপি মমতাজের” শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়।
Screenshot: YouTube
ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এটি কয়েকটি ভিডিও প্রযুক্তির সাহায্যে যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে। ৮ মিনিট ২ সেকেন্ডের এই ভিডিওর শুরুতে দুইটি ভিডিওর খণ্ডাংশ দেখানো হয়। পরবর্তীতে ভিডিওটিতে চ্যানেলটির উপস্থাপক আলোচিত দাবিতে একটি ভিডিও দেখান।
ভিডিওটি দেখানোর আগে আলোচিত ভিডিওটিতে চ্যানেলটির উপস্থাপক বলেন, ‘এবার কিন্তু আর রক্ষা পেলো না এমপি মমতাজ। একের পর এক তাকে নিয়ে নিউজ আপনারা শুনতে পেয়েছেন কিন্তু সর্বশেষ ভারতের আদালতে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানায় দায়ের করেছে। যেকোনো সময় মমতাজ গ্রেফতার হতে পারে। কারন আপনারা জানেন ভারতের আদালত কিন্তু বাংলাদেশের আদালতের মতো না। তারা তাদের মতোই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সেক্ষেত্রে কি হতে যাচ্ছে মমতাজের আমরা চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ নিউজ আপনাদেরকে দিব।’
পরবর্তীতে দেখানো ভিডিওতে বলা হয়, ‘দর্শক সময়টা অনেকটা খারাপ যাচ্ছে আমাদের আওয়ামী লীগের একজন প্রথিতযশা সংসদ সদস্য শিল্পী মমতাজ বেগমের। সাংসারিক কলহ চলছে ইভেন আগামী নির্বাচনে তার আসন থেকে জাতীয় পার্টির একজন শক্ত প্রার্থী আছে। আওয়ামী লীগেরও একাধিক প্রার্থী সেই আসন থেকে আসনটা বাগানোর চেষ্টা করছে। স্থানীয় রাজনীতিতে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভেদ আছে, কোন্দল আছে। স্বামীর সাথেও আছে নানান ধরনের ঝামেলা। সকল কিছু মিলিয়ে অনেকটা চাপে আছে যখন শিল্পী মমতাজ তখনই আরও এক দুঃসংবাদ যেটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীরও কিছু করার নেই।কারন বাংলাদেশ থেকে বের হয়ে তিনি যদি ভারত যান তাহলে সাথে সাথেই তাকে গ্রেফতার করা হবে….।’
পুরো ভিডিওর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে গত ০৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ এর অনলাইন সংস্করণে ‘মমতাজের আবেদন খারিজ করে গ্রেফতার পরোয়ানা ভারতের আদালতের‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৯ আগস্ট ভারতের মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচার৷ বিভাগীয় আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের। মমতাজ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে একটি আবেদনপত্র আদালতে দাখিল করে জানান সেই দিন কানাডায় একটি অনুষ্ঠানে থাকার ফলে তাঁর পক্ষে আদালতে হাজিরা দেওয়া সম্ভব হয়নি। মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ওই আবেদন খারিজ করে দিয়ে মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
উক্ত প্রতিবেদনে থাকা তথ্যগুলো প্রচারিত ভিডিওটির ৫ মিনিট ১৫ সেকেন্ড থেকে পাঠ করা হয়। কিন্তু প্রচারিত ভিডিওটিতে কিংবা উক্ত প্রতিবেদনের কোথাও সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের গ্রেফতারের কথা উল্লেখ ছিল না।
এছাড়া প্রচারিত ভিডিওতে মমতাজকে গ্রেফতারের কথা বলা হলেও সম্প্রতি তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্তকিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে।
অর্থাৎ প্রচারিত ভিডিওতে থাকা তথ্যের সাথে ভিডিওটির থাম্বনেইল এবং শিরোনামে থাকা তথ্যের কোনো প্রকার মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গ এবং প্রতারণার অভিযোগে জনৈক শক্তিশংকর বাগচী ভারতের আদালতে মামলা করেন। গত ৯ আগস্ট মামলার শুনানিতে উপস্থিত না হওয়াতে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বহরমপুর আদালত। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘এইমাত্র বিমানবন্দর থেকে ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেফতার মমতাজ।আর রক্ষা হলো না এমপি মমতাজের’ শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, অধিকতর ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, মমতাজ গ্রেফতার হননি এবং সম্প্রতি তিনি জামিন পেয়েছেন।
সুতরাং, ভারতীয় পুলিশের হাতে সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের গ্রেফতারের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভূমি অপরাধ আইন পাশের বিষয়টি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত ০৪ সেপ্টেম্বর এসংক্রান্ত একটি বিল জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হলেও তা এখনো পাশ হয়নি।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে ভুমি অপরাধ আইন পাশ হয়েছে মর্মে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে পরবর্তীতে আলোচিত গেজেটটি খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে বিলটি গত ০৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তীতে ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ১১ সেপ্টেম্বর ভূমি অপরাধ আইন বিষয়ক ভুয়া গুজব প্রসঙ্গে একটি সতর্কতামূলক গণবিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই ধরনের ভুয়া খবর ও গুজব জনমনে বিরূপ প্রভাব ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে, যা মোটেই কাম্য নয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে। নতুন আইন প্রণয়নের পর তা সরকারি গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমেও প্রকাশ করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট সব সরকারি পোর্টালে প্রকাশ করা হয়।
সেখানে আরও বলা হয়, মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রকৃত তথ্য হচ্ছে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন’ প্রস্তুত ও অনুমোদনসংক্রান্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, ভূমি অপরাধ আইন পাশের তথ্যটি সঠিক নয়।
মূলত, ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন’ প্রস্তুত ও অনুমোদন সংক্রান্ত কার্যক্রম বর্তমানে চলমান রয়েছে। গত ০৪ সেপ্টেম্বর এসম্পর্কিত বিলটি জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। তবে এটি পাশ হওয়ার পূর্বেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভূমি অপরাধ আইন পাশ হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয় আইন পাশ হওয়ার বিষয়টিকে ভুয়া খবর বলে নিশ্চিত করেছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গুজব প্রচারের বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, ভূমি অপরাধ আইন পাশ হয়েছে দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, ঘটে যাওয়া মরক্কোর ভূমিকম্পকে কেন্দ্র করে ‘মরক্কোর ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য উন্মুক্ত দেওয়া হয়েছে রোনালদোর হোটেল’ শীর্ষক একটি দাবি দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক মরক্কোর ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য মরক্কোর মারাকেশে অবস্থিত পর্তুগিজ ফুটবল তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মালিকানাধীন পেস্তানা সিআর সেভেন হোটেল উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবিটি সত্য নয়। তথ্যটি সঠিক নয় বলে হোটেল কর্তৃপক্ষ রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছে।
গুজবের সূত্রপাত
গত ০৯ সেপ্টেম্বর স্প্যানিশ গণমাধ্যম মার্কা উক্ত দাবিতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। মার্কার প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ‘ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মরক্কোর হোটেল গত শুক্রবার (বাংলাদেশ সময় শনিবার) মরক্কোয় আঘাত হানা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।’
মার্কার উক্ত প্রতিবেদনে মরক্কোতে থাকা একজন স্প্যানিশ পর্যটক Irene Seixas (আইরিন সেক্সাস) স্পেনের একটি টেলিভিশন চ্যানেল দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও সংযুক্ত করা হয়েছে। স্প্যানিশ ভাষার সেই বক্তব্য অনুবাদ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।
তিনি বলেছেন, ‘এখন আমরা খুব খারাপ মেজাজে আছি। আমরা ফ্লাইট খুঁজতে শুরু করলাম। ফ্লাইট খুব তাড়াতাড়ি বিক্রি হয়ে গেছে। আমাদের আগামী বুধবার ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল, তাই আমরা ১ হাজার ইউরো দিয়ে টিকিট নিতে বাধ্য হয়েছি। সব হোটেলগুলো একই রকম। আমরা মারাকেশের নতুন অঞ্চলে যেতে বাধ্য হয়েছি, যেখানে হোটেলগুলো আরও উন্নত। এবং এখন আমরা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর হোটেলে, যা মারাকেশ শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত, সেখানে আমরা একটি রুম নিতে পেরেছি। আমরা অপেক্ষা করছি। আমরা সারা রাত রাস্তায় ঘুমিয়েছি এবং সকাল সাতটায় তারা (হোটেল কর্তৃপক্ষ) আমাদের জানায় যে আমরা এখন হোটেলে যেতে পারি এবং তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের একটি রুম দেওয়ার চেষ্টা করবে। বর্তমানে আমরা এখানে একটি লবিতে রয়েছি, বিভিন্ন জাতীয়তার অনেক লোক এখানে রুম পাওয়ার চেষ্টায় অপেক্ষা করছে, আমরা সবাই রাস্তায় ঘুমিয়েছি।’
তার সম্পূর্ণ বক্তব্যের কোথাও তিনি বলেননি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর হোটেলে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে কিংবা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য হোটেলটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বরং তার বক্তব্যে স্পষ্টভাবেই বুঝা যাচ্ছে তিনি রুম বুকিং নিয়েছেন এবং তার মতো আরো অনেকেই হোটেলে বুকিং নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
অর্থাৎ, মার্কার প্রকাশিত প্রতিবেদনটি ত্রুটিপূর্ণ। আর এই ত্রুটিপূর্ণ প্রতিবেদনের সূত্র ধরেই উক্ত দাবিটি দেশ-বিদেশি গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
পরবর্তীতে, মারাকেশে অবস্থিত রোনালদোর মালিকানাধীন হোটেল সম্পর্কে বিস্তারিত অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। জানা যায় হোটেলের নাম পেস্তানা সিআর সেভেন মারাকেশ। বিশ্বব্যাপী সব মিলিয়ে এই হোটেলের ৫টি শাখা রয়েছে, যার একটি মরক্কোর মারাকেশ শহরে অবস্থিত।
ই-মেইল যোগে মরক্কোর মারাকেশ অঞ্চলে অবস্থিত পেস্তানা সিআর সেভেন হোটেল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘তথ্যটি সঠিক নয়। পেস্তানা সিআর সেভেন হোটেলে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আশ্রয় দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।’
Screenshot: Email.
মূলত, একটি স্প্যানিশ টিভি চ্যানেলে মরক্কোতে থাকা একজন স্প্যানিশ পর্যটকের দেওয়া বক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা উক্ত দাবিতে সংবাদ প্রকাশ করলে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। তবে, বিষয়টি সঠিক নয়। যা হোটেল কর্তৃপক্ষই রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছে।
উল্লেখ্য, মরক্কোর মধ্যাঞ্চলে গত ৯ সেপ্টেম্বর শনিবার ৬ দশমিক ৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত দুই হাজারের বেশি জন মারা গেছে। উক্ত ভূমিকম্প দুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন ফুটবলাররা। ভূমিকম্পের ঘটনায় সমবেদনা জানিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, লিওনেল মেসি, আশরাফ হাকিমি সহ আরো অনেক তারকা ফুটবলার।
প্রসঙ্গত, গত মার্চে আঘাত হানা সিরিয়া ও তুরস্কের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বিমান ভর্তি সাহায্য পাঠিয়েছে এমন একটি সংবাদ দেশ-বিদেশি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার টিম।
সুতরাং, ‘মরক্কোয় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য উন্মুক্ত দেওয়া হয়েছে রোনালদোর হোটেল’ শীর্ষক সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি সুইডেনের সাবেক তারকা ফুটবলার জলাতন ইব্রাহিমোভিচের বক্তব্য দাবিতে ‘ফিফা যদি আমাকে পেনাল্টি দেয়, তাহলে সুইডেনকে ২০২৬ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন করবো।’ শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সুইডেনকে ২০২৬ বিশ্বকাপ জেতানো প্রসঙ্গে পেনাল্টি নিয়ে জলাতন ইব্রাহিমোভিচ এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে ইরাকের একটি খেলা ভিত্তিক ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উক্ত ভুয়া দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছে।
দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত পোস্টগুলোর সূত্রে ইরাক থেকে পরিচালিত Xendan Sports (আর্কাইভ) নামের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ৭ সেপ্টেম্বর ইব্রাহিমোভিচকে উদ্ধৃত করে কুর্দি ভাষায় লেখা একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Xendan Sports
পোস্টটির বাংলা অনুবাদ থেকে জানা যায়, ‘ফিফা যদি আমাকে পেনাল্টি দেয়, তাহলে সুইডেনকে ২০২৬ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন করবো।’
তবে উক্ত পোস্টটি যাচাই করে ইব্রাহিমোভিচ এই বক্তব্য কবে, কোথায় দিয়েছেন এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি ফেসবুক পেজটিতে প্রদত্ত ওয়েবসাইট সূত্রেও ৭ সেপ্টেম্বর বা পূর্বে এবং পরে ইব্রাহিমোভিচকে নিয়ে এমন কোনো প্রতিবেদনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এছাড়া দাবিটি নিয়ে অধিকতর অনুসন্ধানেও এই পেজটি ছাড়া আলোচিত দাবিটি সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য সূত্রে আর কোথাও এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইব্রাহিমোভিচ চলতি বছরের গত ৫ জুন ৪১ বছর বয়সে সকল প্রকার ফুটবল থেকে অবসর গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন এবং এই ঘোষণার পর তিনি নতুন করে আর ফুটবলে ফেরার ব্যাপারে কোনো ঘোষণা দেননি। এ থেকেও প্রতীয়মান হয় যে, তাকে পেনাল্টি দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলে সুইডেনকে ২০২৬ বিশ্বকাপ জেতানো প্রসঙ্গে তার বক্তব্যটি বানোয়াট।
মূলত, সম্প্রতি ইরাক থেকে পরিচালিত একটি ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে সুইডেনের সাবেক তারকা ফুটবলার জলাতন ইব্রাহিমোভিচের ছবি ও তার নাম ব্যবহার করে ‘ফিফা যদি আমাকে পেনাল্টি দেয়, তাহলে সুইডেনকে ২০২৬ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন করবো।’ শীর্ষক একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, তার বক্তব্যটি কোনো ধরনের প্রেক্ষাপট, সূত্র ও স্থান-কাল উল্লেখ না করেই পেজটিতে প্রচার করা হয়েছে। পাশাপাশি পেজটি ব্যতীত এই বক্তব্যের দ্বিতীয় কোনো সূত্রও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া আরও দেখা যায়, ইব্রাহিমোভিচও সম্প্রতি সকল প্রকার ফুটবল থেকে অবসর গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন।
সুতরাং, পেনাল্টি দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলে সুইডেনকে ২০২৬ বিশ্বকাপ জেতানো প্রসঙ্গে ইব্রাহিমোভিচকে উদ্ধৃত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত মন্তব্যটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা।