সম্প্রতি, ‘বসবাসের জন্য কুষ্টিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা এবং জাতিসংঘের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে কুষ্টিয়ার মানুষ সবচেয়ে সুখী’ শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বসবাসের জন্য কুষ্টিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা এবং জাতিসংঘের জরিপে বাংলাদেশে কুষ্টিয়ার মানুষ সবচেয়ে সুখী দাবিটি সত্য নয় এবং জাতিসংঘ কর্তৃক প্রকাশিত এমন কোনো জরিপ, প্রতিবেদন বা তালিকা-ই নেই।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘ঐতিহ্যে ঘেরা কুষ্টিয়া ‘নামক একটি গ্রুপ থেকে আলোচ্য দাবিতে প্রচারিত সম্ভাব্য প্রথম দিকের পোস্ট হিসেবে পোস্টটি ( আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot Facebook
পোস্টটিতে বলা হয় ‘বসবাসের জন্য কুষ্টিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা এবং জাতিসংঘের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে কুষ্টিয়ার মানুষ সবচেয়ে সুখী।’ উক্ত পোস্টের পর থেকেই আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হতে থাকে।
তবে বসবাসের জন্য কুষ্টিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা এবং বাংলাদেশে কুষ্টিয়ার মানুষ সবচেয়ে সুখী বিষয়ে বাংলাদেশের কোনো জরিপ কিংবা জাতিসংঘের জরিপের কোনো সূত্র ঐ পোস্টে দেওয়া হয়নি।
পরবর্তীতে অনুসন্ধানে ‘বসবাসের জন্য কুষ্টিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা’ এই বিষয়ে বাংলাদেশের কোনো গণমাধ্যম কিংবা ইন্টারনেটে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় নি। পাশাপাশি জাতিসংঘের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে কুষ্টিয়ার মানুষ সবচেয়ে সুখী’ শীর্ষক কোনো জরিপ করেছে না-কি তা জানার জন্য জাতিসংঘের ওয়েবসাইট এবং ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে অনুসন্ধান করা হয়। তবে এ ধরনের জরিপের কোনো তথ্য উক্ত মাধ্যমগুলোতে খুঁজে পাওয়া যায় নি।
এছাড়াও দেশীয় বা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে জাতিসংঘের এই জরিপ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি।
আলোচ্য দাবিটি নিয়ে ফ্যাক্টচেক চলাকালীন সময়ে সম্ভাব্য প্রথম দিকের প্রচারিত দাবিটির পোস্ট এডিট করে জাতিসংঘ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়।
Screenshot :claim post
মূলত, কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই ‘বসবাসের জন্য কুষ্টিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা এবং জাতিসংঘের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে কুষ্টিয়ার মানুষ সবচেয়ে সুখী ‘শীর্ষক দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। জাতিসংঘ থেকে এ ধরনের কোনো জরিপ পরিচালনা করা হয়না। রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে, জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে এই ধরনের কোনো জরিপের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় নি। তাছাড়া, দেশীয় বা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে জাতিসংঘের এই জরিপ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি।
উল্লেখ্য, পূর্বেও বাংলাদেশের জনপ্রিয় দল- মার্কা নিয়ে জাতিসংঘ কর্তৃক জরিপ প্রকাশিত হওয়ার দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পরলে সেটিকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ‘বসবাসের জন্য কুষ্টিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা এবং জাতিসংঘের জরিপে কুষ্টিয়ার মানুষ সবচেয়ে সুখী’ শীর্ষক তথ্যটি মিথ্যা।
সম্প্রতি, ফুটবলার সার্জিও রামোসের ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলের একটি পোস্টে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কমেন্ট ও রামোসের রিপ্লাই সম্বলিত একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এসব পোস্টে যা দাবি করা হচ্ছে
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত এসব পোস্টে দেখা যায়, You need a zero to catch me লিখে ফুটবল তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো রামোসের একটি পোস্টে মন্তব্য করেছেন। একই মন্তব্যের বিপরীতে সার্জিও রামোসের আইডি থেকে কমেন্ট করা হয়, you need a world cup to catch me.
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখাযায়, সার্জিও রামোসের ইন্সটাগ্রাম পোস্টে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মন্তব্যের বিপরীতে রামোসের উত্তর সম্বলিত স্ক্রিনশটটি এডিটেড। প্রকৃতপক্ষে রোনালদোর করা মন্তব্যের রিপ্লাইয়ে রামোসের করা উত্তরটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
এ নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে গত ১৬ আগস্ট সার্জিও রামোসের ভেরিফায়েড ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ।
Screenshot: Instagram
পর্যালোচনায় দেখা যায়, সার্জিও রামোসের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি সম্প্রতি ৬০ মিলিয়ন ফলোয়ারের মাইলফলক স্পর্শ করায় তিনি তার ফলোয়ারদের সাথে ভালোবাসা বিনিময়ের লক্ষ্যে একটি ফুটবল বুট গিভ অ্যাওয়ে ক্যাম্পেইন নিয়ে পোস্ট করেন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত পোস্টে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর করা মন্তব্যটি রয়েছে। রোনালদোর করা এই মন্তব্যটির ইংরেজি অনুবাদ দাঁড়ায়, ‘You need a zero to catch me.’
Screenshot: Instagram
তবে আলোচিত স্ক্রিনশটে সার্জিও রামোসের যে উত্তরটি দেখা যাচ্ছে তা উক্ত পোস্টে নেই। তার পরিবর্তে সার্জিও রামোসের ভিন্ন উত্তর দেখতে পাওয়া যায়।
Screenshot: Instagram
যার ইংরেজি অনুবাদ “Don’t be too confident Cris. Specialist in comebacks… minute 93 & more hahaha. By the way remember to participate, you have to use the #SR60.”
তবে সার্জিও রামোস পূর্বে মন্তব্য করে সেটি মুছে নতুন মন্তব্য করতে পারেন এমন সন্দেহ থেকে স্ক্রিনশটটি নিয়ে অধিকতর যাচাই করে রিউমর স্ক্যানার টিম।
পোস্টটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আলোচিত স্ক্রিনশটির সাথে উক্ত পোস্টের সাথে যুক্ত স্ক্রিনশটির সময়, এনগেজমেন্ট সবকিছুর হুবহু মিল রয়েছে। অর্থাৎ উক্ত স্ক্রিনশটটিতে সার্জিও রামোসের করা রিপ্লাইটিও ৫৩ মিনিট আগে এবং এর লাইক সংখ্যা ও ভাইরাল স্ক্রিনশটটির লাইক সংখ্যা ৫, ১৫৮টি।
Screenshot Comparison: Rumor Scanner
পরবর্তী অনুসন্ধানে Cheetah নামের আরেকটি টুইটার অ্যাকাউন্টে গত ১৮ আগস্ট করা একটি টুইট খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Twitter
উক্ত পোস্টটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, Razon Raj নামের ফেসবুক আইডি থেকে প্রচারিত ভিন্ন সময়ের আরেকটি স্ক্রিনশটের সাথে উক্ত টুইটের সঙ্গে যুক্ত স্ক্রিনশটটিতে দেখানো ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এবং সার্জিও রামোসের কমেন্টের সময়ের সাথে হুবহু মিল রয়েছে।
Screenshot: Rumor Scanner
অর্থাৎ উক্ত স্ক্রিনশটটিতে রোনালদোর করা কমেন্টটি ২১ ঘন্টা আগে এবং সার্জিও রামোসের করা রিপ্লাইটিও ভাইরাল স্ক্রিনশটটির মত ৭ ঘন্টা আগে।
মূলত, সার্জিও রামোসের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে সম্প্রতি ৬০ মিলিয়ন ফলোয়ারের মাইলফলক স্পর্শ করলে তিনি তার ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে তে একটি পোস্ট করেন। যাতে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো You need a zero to catch me লিখে একটি মন্তব্য করেন। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায় রোনালদোর মন্তব্যে রামোস you need a world cup to catch me লিখে রিপ্লাই করেছেন। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, রোনালদোর মন্তব্যে রামোস এমন কোনো প্রত্যুত্তর করেননি। বরং তার করা ভিন্ন একটি মন্তব্যকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে আলোচিত স্ক্রিনশটটি তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং, সার্জিও রামোসের ইন্সটাগ্রাম পোস্টের কমেন্টে রোনালদোর মন্তব্যের বিপরীতে রামোসের মন্তব্য দাবিতে একটি স্ক্রিনশট প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি ‘প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর’ শীর্ষক দাবিতে একটি ব্যাংক চেকের ছবি মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে মির্জা ফখরুলের চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া সংক্রান্ত ভাইরাল চেকটি ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে চেকটিতে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের ব্যাংক একাউন্টের নাম ও নাম্বারের মিল না থাকাসহ বেশ কিছু অসংগতি পাওয়া গেছে। এছাড়া চেকটি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের প্রণোদনার একটি চেক থেকে সম্পাদনা করা হয়েছে।
দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতেই রিউমর স্ক্যানার টিম চেকটিতে প্রদত্ত তথ্যসমূহ যাচাই করে। এ যাচাইয়ের কাজে ওপেন সোর্স থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গকে দেওয়া একাধিক চেকের সাহায্য নেওয়া হয়।
অসংগতি ১: প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের অ্যাকাউন্ট নাম এবং নাম্বার ভুল
‘মির্জা ফখরুল ৫০ লাখ টাকা চিকিৎসা সহায়তা নিয়েছেন’* দাবিতে ভাইরাল চেকটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেখানে প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের অ্যাকাউন্ট নাম PM’s Relief Fund এবং অ্যাকাউন্ট নাম্বার দেওয়া 4435403007037।
Image Analysis: Rumor Scanner
অপরদিকে ওপেন সোর্সে পাওয়া প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের চেক বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের অ্যাকাউন্ট নাম PRODHAN MONTRIR TRAN O KALYAN TAHABIL এবং অ্যাকাউন্ট নাম্বার হলো 0107333004093।
অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মির্জা ফখরুলের চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া সংক্রান্ত ভাইরাল চেকটিতে প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের অ্যাকাউন্ট নাম এবং নাম্বারটি ভুল।
অসংগতি ২: একই চেকে ভিন্ন ভিন্ন অ্যাকাউন্ট নাম্বার
অনুসন্ধানে দেখা যায়, মির্জা ফখরুলের চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া সংক্রান্ত ভাইরাল চেকটির দুই জায়গায় অ্যাকাউন্ট নাম্বারের ভিন্নতা রয়েছে।
Image Analysis: Rumor Scanner
চেকটি বিশ্লেষণে দেখা যায়, এর একস্থানে অ্যাকাউন্ট নাম্বার রয়েছে 4435403007037। আবার এরই নিচে যে অ্যাকাউন্ট নাম্বারটি রয়েছে সেটি হলো 4435403000037। অর্থাৎ শেষ চার সংখ্যার এক জায়গায় লেখা ৭০৩৭, অন্য জায়গায় লেখা ০০৩৭।
অসংগতি ৩: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবের সিল ও স্বাক্ষর
পাশাপাশি ওপেন সোর্সে পাওয়া প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের চেকগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবের সিল ও স্বাক্ষর লক্ষ্য করা যায়, যা আলোচিত চেকটিতে অনুপস্থিত।
ভাইরাল চেকটিতে দেখা যায়, সেখানে সোনালি ব্যাংকের শাখা উল্লেখ করা হয়েছে তেজগাঁও শাখা, ঢাকা। তবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যান তহবিলের প্রকৃত চেকগুলোতে সোনালি ব্যাংকের শাখা উল্লেখ করা আছে প্রাইম মিনিস্টার অফিস কর্পোরেট, ঢাকা।
Image Analysis: Rumor Scanner
অসংগতি ৫: চেকে ভাষাগত অসংগতি
চেকটি নিয়ে বিশ্লেষণে দেখা যায়, চেকটিতে সহায়তা গ্রহণকারীর নাম অর্থাৎ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নাম ও অর্থের পরিমাণ ইংরেজিতে উল্লেখ রয়েছে।
Image Analysis: Rumor Scanner
তবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের প্রাপ্ত চেকগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেখানে এই তথ্যগুলো বাংলায় উল্লেখ থাকে।
প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের প্রকৃত আরও কিছু চেকের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল চেকটির তুলনা দেখুন এখানে।
এই বিজ্ঞপ্তিতে ব্যবহৃত চেকের ছবিটির সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মির্জা ফখরুলের চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া সংক্রান্ত ভাইরাল চেকটির অ্যাকাউন্ট নাম্বার, সিজি নাম্বার, স্বাক্ষরের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Image Analysis: Rumor Scanner
চেকটি সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা যা বলছে
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে সহায়তা নেওয়ার দাবিতে প্রচারিত চেকটির বিষয়ে জানতে রিউমর স্ক্যানার টিম বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
এ প্রসঙ্গে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, ‘চমৎকার, নোংরামি উদাহরণ। এ ধরনের নোংরামি যারা করতে পারে তাদেরকে কোনো সভ্যতার মধ্যে উল্লেখ করা যাবে না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অনেক ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ তার ব্যপারে অবান্তর কোনো গুজব ছড়ানোর আগে ভেবে চিন্তে করা উচিত। এ ধরনের মানুষদের বলবো গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকবার জন্য।’
একই প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এটা নোংরামি ছাড়া আর কিছু নয়। মির্জা ফখরুল বাপের জমি বিক্রি করে চিকিৎসা ও রাজনীতি করে। আমাকে কেনা সম্ভব নয়।’
Screenshot: Manabzamin
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের সদস্য ডিপিএস হাসান জাহিদ তুষার গণমাধ্যমকে চেকটি অসত্য বলে নিশ্চিত করেন।
Screenshot: Bangla Tribune
মূলত, গত ২৪ আগস্ট বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান। তাঁর এ সিঙ্গাপুর যাত্রাকে ঘিরে ২৭ আগস্ট সন্ধ্যা থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি চেকের ছবি প্রচার করে দাবি করা হতে থাকে যে, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৫০ লাখ টাকার চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে গিয়েছেন। তবে চেকটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০ লাখ টাকা চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে মির্জা ফখরুলের বিদেশ ভ্রমণ দাবিতে ভাইরাল এই চেকটি ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে ইন্টারনেট থেকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের প্রণোদনার চেক সম্পাদনা করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই সিঙ্গাপুর যাত্রা নিয়ে পূর্বেও গণমাধ্যমের ফটোকার্ড সম্পাদনা করে বিকৃত তথ্য প্রচার করা হয়েছিল। এ নিয়ে রিউমর স্ক্যানার টিমের বিস্তারিত অনুসন্ধান পড়ুন
সুতরাং, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০ লাখ টাকা চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিদেশ ভ্রমণে যাওয়ার দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত চেকটি ভুয়া এবং উল্লিখিত দাবিটি মিথ্যা।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর কবর থেকে লাশ চুরি হওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সত্য নয় বরং দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর লাশ তার কবরেই রয়েছে এবং পুরো কবরস্থান কে ঘিরে গেটে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতেই দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর কবর থেকে লাশ চুরি হওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওর শিরোনামে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর লাশ চুরি হওয়ার বিষয়ে বলা হলেও ভিডিওতে এমন কোনো তথ্য নেই।
অর্থাৎ কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছবি এবং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।
এছাড়া প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধান করেও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর লাশ চুরি হওয়া নিয়ে গণমাধ্যমে কোনো প্রকার সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে অনুসন্ধানে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদীর ফেসবুক পেজে গত ২০ আগস্ট প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত পোস্ট থেকে জানা যায়, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর কবরস্থানকে ঘিরে ফেলা হয়েছে এবং গেটে তালা দেওয়া হয়েছে। কবরস্থানের ভেতরে প্রবেশের কোনো পথ খোলা নেই।
পরবর্তীতে জাতীয় দৈনিক ‘ দৈনিক ইনকিলাব ‘এর ওয়েবসাইটে গত ১৯ আগস্ট ‘ সাঈদীর কবরস্থানে সার্বক্ষনিক পুলিশ পাহারা‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot source : THE DAILY INQILAB
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,’জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর কবরস্থানে সার্বক্ষনিক পুলিশ পাহাড়ায় রয়েছে। পুলিশ সেখানে কাউকে দাঁড়াতে বা কবর জিয়ারত করতে দিচ্ছে না।’
অর্থাৎ দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর কবর থেকে লাশ চুরি হওয়ার মিথ্যা দাবিতে ভিডিওগুলো প্রচার করা হচ্ছে।
মূলত, গত ১৪ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। পরবর্তীতে ১৫ আগস্ট তাকে পিরোজপুরের সাঈদী ফাউন্ডেশনের পারিবারিক কবরস্থানে জানাজার পর সমাহিত করা হয়। সম্প্রতি তার কবর থেকে লাশ চুরি হওয়ার দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়,দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর লাশ তার কবরেই রয়েছে এবং তার কবরস্থানকে ঘিরে ফেলা হয়েছে এবং গেটে তালা দেওয়া হয়েছে।
সুতরাং, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর লাশ চুরি হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, “দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে” শীর্ষক কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সর্বশেষ কবিতা নয় বরং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা সর্বশেষ কবিতা হলো “তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি”।
প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, দ্য ডেইলি স্টার বাংলা এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ৭ আগস্ট প্রকাশিত “যেমন ছিল রবীন্দ্রনাথের শেষের দিনগুলো ও শেষযাত্রা” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশ থেকে জানা যায়, ১৯৪১ সালের ৩০ জুলাই সকালে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে রবীন্দ্রনাথ “তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি” কবিতাটি রচনা করেন। সেইসাথে উক্ত কবিতাটিকেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সর্বশেষ সৃষ্টি হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
সেইসাথে, ফেসবুকে প্রচারিত কবিতাটি রচনার তারিখ অনুসন্ধান করে দেখা যায়, “দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে” কবিতাটি ১৯৪১ সালের ২৯ জুলাই কলকাতার জোড়াসাঁকোতে রচিত হয়েছিল।
স্পষ্টতই “তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি” কবিতাটি রচিত হয়েছিল “দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে” কবিতাটি রচনার পর।
জীবনের শেষ বয়সে রবীন্দ্রনাথ শারীরিক অসুস্থতার কারণে শ্রুতিলিখনের মাধ্যমে ব্যক্তিগত সচিব অনিলকুমার চন্দের স্ত্রী ও রবীন্দ্রনাথের স্নেহধন্যা রাণী চন্দকে দিয়ে লেখাতেন। রানী চন্দ এর লেখা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ “গুরুদেব” এ উঠে এসেছে রবীন্দ্রনাথের জীবনের শেষদিনগুলোর স্মৃতিচারণ। গুরুদেব গ্রন্থের দ্বিতীয় মুদ্রণের ১৬০ এবং ১৬১ নম্বর পাতায় ১৯৪১ সালের ৩০ জুলাইয়ের স্মৃতিচারণ খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।
রাণী চন্দের সেই স্মৃতিচারণা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, “তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি” কবিতাটি ৩০ জুলাই সকাল বেলায় রানী চন্দ নিজেই শ্রুতিলেখক হিসেবে লিপিবদ্ধ করেছিলেন।
Source: গুরুদেব-রানী চন্দ; দ্বিতীয় সংস্করণ, পৃষ্ঠা ১৬০-১৬১
গ্রন্থটি থেকে আরও জানা যায়, ৩০ জুলাই তারিখে কবিতাটি রচনার পরই জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে রবীন্দ্রনাথের অপারেশন সম্পন্ন হয় এবং রবীন্দ্রনাথের শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে গড়াতে থাকে। সবশেষ ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট প্রয়ান ঘটে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। ফলে, শেষ কবিতাটি সম্পাদনা করারও সুযোগ হয়নি তার।
মূলত, ১৯৪১ সালের ২৯ জুলাই রবীন্দ্রনাথ জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে “দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে” কবিতাটি রচনা করেন। এই কবিতাটিকেই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত সর্বশেষ কবিতা দাবি করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত কবিতা রচনার একদিন পর অর্থাৎ, ১৯৪১ সালের ৩০ জুলাই কবিগুরু রচনা করেন “তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি” কবিতাটি যেটি তার জীবনের শেষ রচনা।
উল্লেখ্য, পূর্বেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিজের কণ্ঠে গাওয়া গান দাবিতে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং,“দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে” শীর্ষক কবিতাটিকে রবীন্দ্রনাথের শেষ কবিতা দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি,“আল নাসের এর ড্রেসিং রুমে লিও মেসির জার্সি, যেইখানে যাবেন লিও মেসিকে পাইবেন” শীর্ষক শিরোনামে সাবেক লিভারপুল তারকা সাদিও মানে এবং জরডান হেন্ডারসনের কুশল বিনিময়ের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
সাদিও মানে এবং জরডান হেন্ডারসনের কুশল বিনিময়ের ছবিটির ব্যাকগ্রাউন্ডে থাকা মেসির একটি জার্সিকে নির্দেশ করে দাবি করা হচ্ছে যে ছবিটি সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসেরের ড্রেসিং রুমে তোলা।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচ্য ছবিটি আল নাসেরের ড্রেসিং রুমে ধারণ করা হয়নি বরং জেদ্দার কিং আব্দুল্লাহ স্পোর্টস সিটির অভ্যন্তরে Roshn Saudi League এর একটি ইভেন্ট হতে ছবিটি ধারণ করা হয়েছে।
রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে Roshn Saudi League এর ভেরিফাইড এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্টে ২০২৩ সালের ৭ আগস্টের একটি ভিডিও খুজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওতে সাবেক লিভারপুল তারকা সাদিও মানে এবং জরডান হেন্ডারসনকে কুশল বিনিময় করতে দেখা যায়। ভিডিওটি বিশ্লেষন করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ছবিটি এই ভিডিওর স্থিরচিত্র।
এছাড়াও, টুইটের ক্যাপশনে #RoshnSaudiLeague হ্যাশট্যাগ ব্যাবহার থেকে সহজেই অনুমেয় যে উক্ত ভিডিওটি Roshn Saudi League এর সাথে সম্পর্কযুক্ত।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে, জেদ্দায় Roshn Saudi League এর একটি ইভেন্টে অংশগ্রহনের সময়ে দীর্ঘদিনের দুই সতীর্থ- সাবেক লিভারপুল তারকা সাদিও মানে এবং জরডান হেন্ডারসন উষ্ণ কুশল বিনিময় করেন।
প্রসংগত, লিভারপুলের সাবেক তারকা ফুটবলার সাদিও মানে সম্প্রতি সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসের এবং জরডান হেন্ডারসন অপর সৌদি ক্লাব আল ইত্তিফাকে যোগ দিয়েছেন।
মুলত, সাবেক লিভারপুল তারকা সাদিও মানে এবং জরডান হেন্ডারসন সম্প্রতি জেদ্দায় অবস্থিত কিং আব্দুল্লাহ স্পোর্টস সিটিতে সৌদি প্রো লিগের লঞ্চ ইভেন্টে অংশগ্রহন করেন এবং দীর্ঘদিনের দুই সতীর্থ একে অপরের সাথে কুশল বিনিময় করেন। তাদের কুশল বিনিময়ের সময় তোলা একটি ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে লিওনেল মেসির জার্সির সংগ্রহ দেখতে পাওয়া যায়। এই ছবিকেই আল নাসেরের ড্রেসিংরুমের ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মেসির হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, আল নাসের ক্লাবের ড্রেসিংরুমে মেসির জার্সি দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চাঁদপৃষ্ঠ থেকে চন্দ্রযান-৩ এর তোলা পৃথিবীর ছবিগুলো বাস্তব নয় বরং ছবিগুলো আর্টিফিশিয়ান ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযান চাঁদে অবতরণের পর চাঁদ থেকে পৃথিবীকে কীভাবে দেখা যায় তা নিয়ে ‘এআই’ নামের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে একটি ছবি প্রকাশ করেছে ওয়েবসাইট ‘ডব্লিউআইএন’।
পরবর্তীতে ভারতীয় গণমাধ্যম WION News এর ওয়েবসাইটে গত ২৩ আগস্ট প্রকাশিত একটি স্টোরি নিউজে ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
স্টোরি নিউজে বলা হয়, চন্দ্রযান-৩ ল্যান্ড করার পর চাঁদ থেকে পৃথিবী কেমন দেখাবে? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এই অত্যাশ্চর্য ছবিগুলো তৈরি করেছে, চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে দেখা পৃথিবী কল্পনা করে।
Image Comparison: Rumor Scanner
অর্থাৎ, ছবিগুলো আর্টিফিশিয়ান ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে WION News তৈরি করে গত ২৩ আগস্ট একটি স্টোরি নিউজে ব্যবহার করে।
মূলত, ভারতের চন্দ্রযান-৩ দিয়ে চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীর ছবি শীর্ষক দাবিতে পাঁচটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিগুলো বাস্তব নয় বরং ছবিগুলো আর্টিফিশিয়ান ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি করে গত ২৩ আগস্ট ভারতীয় গণমাধ্যম WION NEWS স্টোরি নিউজ করে। পরবর্তীতে ছবিগুলো বাস্তব দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে।
সুতরাং, ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি কিছু ছবিকে চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে চন্দ্রযান- ৩ এর মাধ্যমে তোলা ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বানরের মুখের অবয়ব সদৃশ হিমালয় বানরের ফুল দাবিতে প্রচারিত ছবিটি বাস্তব নয় বরং এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দ্বারা তৈরি একটি ছবি।
অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে mygopen নামের একটি ফ্যাক্টচেকিং ওয়েবসাইটে গত ২৫ জুন ‘The monkey flowers on the Himalayas are blooming? Open only once in twenty years? The photos posted on the Internet are not real shots’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: mygopen
প্রতিবেদনটিতে উল্লিখিত ফুলটির সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হিমালয় বানরের ফুল দাবিতে প্রচারিত ফুলের ছবিটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Image Comparison: Rumor Scanner
পাশাপাশি প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক চীনা কন্টেন্ট প্লাটফর্ম Toutiao এর ‘Leaf Beauty Gallery‘ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে আলোচিত ছবিটিকে এআইয়ের সাহায্য তৈরি করা হয়েছে।
Screenshot: mygopen
পরবর্তীতে এই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে অনুসন্ধানের মাধ্যমে Toutiao ওয়েবসাইটে আলোচিত ছবিটি সহ অনুরূপ আরও কিছু ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।
Image Collage by Rumor Scanner
ছবিগুলোতে উল্লিখিত বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ছবিগুলো এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দ্বারা তৈরি।
বাস্তব Monkey Flower কেমন?
এই ফুলটি সবচেয়ে রঙিন বন্যফুলগুলোর মধ্যে একটি। বানর জিহ্বা বের করার সময় মুখের সাথে এই ফুলের কিছুটা মিল থাকায় এটি বানরফুল নামে পরিচিত।
Screenshot: San Diego Zoo
বানরের ফুল ফোটার সময় প্রজাতি এবং অঞ্চলের উপর নির্ভর করে। পশ্চিম উপকূলে, বানরের ফুল মার্চের প্রথম দিকে এবং অক্টোবরের শেষের দিকে ফুটতে পারে। উত্তর-পূর্বে, তারা জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফুল ফোটে। এছাড়াও অঞ্চলের উপর নির্ভর করে বসন্ত থেকে শরত্কালের শেষের দিকে বা গ্রীষ্মের শুরু থেকে শরত্কালের প্রথম দিকে, এক সময়ে কয়েক মাস ধরে বানরের ফুল ফোটে।
Screenshot: The Spruce
এছাড়াও বাস্তব Monkey Flower এর সাথে আলোচিত এই ছবিটির অনেক পার্থক্য দেখা যায়।
Image Comparison by Rumor Scanner
অর্থাৎ, বানরের অবয়ব সদৃশ হিমালয় বানরের ফুলের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি বাস্তব কোনো ছবি নয় এবং এর সাথে হিমালয়েরও কোনো সম্পর্ক নেই।
উল্লেখ্য, আলোচিত ছবিটি এআই দ্বারা তৈরি হওয়ায় এই ফুল ২০ বছরে একবার ফোটার বিষয়টিও মিথ্যা বলে প্রতীয়মান হয়।
মূলত, সম্প্রতি বানরের অবয়ব সদৃশ হিমালয় বানরের ফুলের ছবি দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করে দাবি করা হয়, এটি ২০ বছরে একবার ফোটে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, বানরের অবয়ব সদৃশ হিমালয় বানরের ফুলের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি বাস্তব কোনো ছবি নয়। প্রকৃতপক্ষে এটি এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দ্বারা তৈরি ছবি।
প্রসঙ্গত, এআই দিয়ে তৈরি ছবি শনাক্তকরণ সম্পর্কে আরও জানতে পূর্বেও এআই দিয়ে তৈরি ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত গুজবের বিপরীতে রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন পড়ুন
সুতরাং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই দ্বারা তৈরি বানরের অবয়ব সদৃশ হিমালয় বানরের ফুলের ছবিকে বাস্তব দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
একই দাবিতে ২০২২ সালে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
যা দাবি করা হচ্ছে
ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলোতে একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বলা হচ্ছে-
“বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছে যে, আমাদের প্রায় সবার একাউন্ট ক্লোন করা হচ্ছে। আপনার প্রোফাইল পিকচার এবং নাম দিয়ে আরেকটি একাউন্ট খোলা হচ্ছে। এরপর তারা আপনার বন্ধুকে বন্ধুত্বের রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছে। আর আপনার বন্ধুরা আপনি ভেবে তা গ্রহণ করছে। আর আপনাকে ফাঁসাতে বিভিন্ন সরকার বিরোধী, ধর্মবিরোধী যা লেখা/ছবি পোস্ট করবে। এই সুযোগে এই দল তাদের বার্তা ছড়াবে আপনার পরিচয়ে।”
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্লোন হওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত এই দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।
গুজবের সূত্রপাত
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে বাংলাদেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে এই দাবির পুরোনো বা প্রথম দিকের পোস্ট হিসেবে Azam Khan নামের একটি ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টে ২০১৮ সালের ৭ আগস্ট প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Facebook
পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে FOX 5 WASHINGTON DC এর ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের পহেলা জুলাই ‘Facebook cloning scam targets potential victims with simple friend request’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: FOX 5 WASHINGTON DC
এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্লোন করার বিষয়টি ২০১৬ সালেও ইংরেজি ভাষায় ছড়িয়েছিলো।
অর্থাৎ, ইংরেজি ভাষায় প্রচারিত এই দাবিটিই পরবর্তীতে বাংলায় অনুবাদের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার হয়ে আসছে।
অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম The Indian Express এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ০৯ অক্টোবর ‘New hoax spreads on Facebook: No, your account has not been cloned’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: The Indian Express
প্রতিবেদনে Washington Post এবং USA Today এর বরাতে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্লোনিংয়ের বিষয়টি জানিয়ে এটিকে মিথ্যা বলে উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ম্যাগাজিন Time এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ০৭ অক্টোবর ‘Worried Your Facebook Account Has Been Cloned? Here’s What to Know About This New Hoax’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Time
প্রতিবেদনে নিউইয়র্ক ভিত্তিক মিডিয়া WSYR বরাতে ফেসবুক কর্মকর্তাদের বক্তব্য উল্লেখ করে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক ভাইরাল হওয়া ফেসবুক ক্লোনিং বিষয়ক তথ্যটি বাস্তবে ক্লোন হওয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সাথে সম্পৃক্ত নয় বা এটি সেপ্টেম্বরে ঘটে যাওয়া ডেটা লঙ্ঘনের সাথে সম্পর্কিত নয়।’
অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা প্রতীয়মান হয় যে, সম্প্রতি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্লোন হওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।
পাশাপাশি, সাম্প্রতিক সময়ে কোনো ব্যবহারকারীদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্লোন হয়েছে বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
মূলত, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট ক্লোন করা হচ্ছে দাবিতে একটি তথ্য ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিটির সত্যতা পাওয়া যায়নি। কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত এই দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা যাচাইয়ের পদ্ধতি এবং অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া না হওয়ার পরীক্ষা দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলোকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সম্প্রতি, “আমি Indian idol খুব একটা দেখি না কবে এই program টা হয়েছে জানিনা তবে রফি সাহেবের সঙ্গে এমন অদ্ভুত মিল আর কারো গলায় পাইনি দারুণ দুর্ধর্ষ।” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
যা দাবি করা হচ্ছে
উক্ত ভিডিওটি প্রকাশকারী ভারতীয় সংগীত শিল্পী মোহাম্মদ রফির সঙ্গে এমন অদ্ভুত মিল আর কারো গলায় পাননি দাবি করেন। অর্থাৎ, ভিডিওটি সত্য দাবি করা হচ্ছে।
ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতীয় শিল্পী মোহাম্মদ রাফির কণ্ঠের সঙ্গে এমন অদ্ভুত মিল আর কারো গলায় না পাওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটি মোহাম্মদ রাফির গানের সাথে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিটের মাধ্যমে তৈরি করা।
ভিডিও যাচাই
ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে অনুসন্ধান করে ইউটিউবে ‘Busy Comedy Ltd 4.7M views. 2 days ago…’ নামক চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot from Youtube
তবে ভিডিওটিতে মোহাম্মদ রাফি এবং মদন মোহন এর ‘Yeh Duniya Yeh Mehfil’ শীর্ষক গাওয়া গানের কপিরাইট উল্লেখ করা ছিলো।
Screenshot from Youtube
ভিডিওটি আসল কিনা তা অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চ অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘SET India’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ৫ জানুয়ারিতে প্রকাশিত ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ নামক অনুষ্ঠানের একটি ভিডিওর কিছু দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Image Comparison by Rumor Scanner
MD Shanu Vlogs 2.3M views. 7 days ago…’ নামক চ্যানেলে এমন একাধিক ভিডিও খুজে পাওয়া যায়।
Screenshot from Youtube
অর্থাৎ, ভারতীয় সংগীত শিল্পী মোহাম্মদ রফির সঙ্গে এমন অদ্ভুত মিল আর কারো গলায় না পাওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এই রিয়েলিটি শো এর থেকে নেহা কাক্কর, ভিশাল দাদলানি এবং হিমেশ রেশমায়া এর ফুটেজ নিয়ে এডিটের মাধ্যমে যুক্ত করে বানানো হয়েছে।
অডিও যাচাই
প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘Saregama Music’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৭ সালের ৫ জুলাই প্রকাশিত ভিডিওর অডিওর সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত অডিওর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot from Youtube
ভিডিওর বিস্তারিত অংশে গানের আর্টিস্ট হিসেবে মোহাম্মদ রাফির নাম উল্লেখ ছিলো।
মূলত, ভারতীয় শিল্পী মোহাম্মদ রাফির কণ্ঠের সঙ্গে এমন অদ্ভুত মিল আর কারো গলায় না পাওয়ার দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায় উক্ত ভিডিওটি সত্য নয় বরং ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ নামক অনুষ্ঠানের কিছু দৃশ্য সংগ্রহ করে এডিটের মাধ্যমে সংমিশ্রণ করে তৈরি।
প্রসঙ্গত, পূর্বেও তথ্যমন্ত্রী “এই সোনার বাংলা জ্বালাইয়া দিল শেখের বেটি হাসিনা।” শীর্ষক গান গেয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ভারতীয় শিল্পী মোহাম্মদ রাফির কণ্ঠের সঙ্গে এমন অদ্ভুত মিল আর কারো গলায় না পাওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড।