Home Blog Page 609

ক্ষমাচেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারির ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, “ক্ষমাচেয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,জরুরী অবস্থায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি” শীর্ষক শিরোনামে  ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

 হাসিনার পদত্যাগ

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারি করারও কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ক্লিপ সংযুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি (আর্কাইভ)পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। আজ (২১ নভেম্বর) Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ৩ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি প্রচার করা হয়। আলোচিত ভিডিওটিতে দাবিটি প্রসঙ্গে তিনটি ভিডিও দেখানো হয়। 

১ম ভিডিও যাচাই 

আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা প্রথম ভিডিওটির অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে ২০২০ সালের ২৪ মার্চ এনটিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে “আজ থেকে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনের ১১ সেকেন্ড থেকে ১৭ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটুকু আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner

২০২০ সালে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনে করোনাভাইরাসে সন্দেহভাজন যারা সরকারের নির্দেশ মানছে না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা পাশাপাশি সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে সেসময়  সেনাবাহিনীর মাঠে নামার  তথ্য দেওয়া হয়।

২য় ভিডিও যাচাই 

দ্বিতিয় ভিডিওটির অনুসন্ধানে প্রতিবেদকের বলা তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ২০২০ সালের ২৪ মার্চ সময় টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে “কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী। Bangladesh আরম্য। Somoy Tv। #Stayhome #Withme” শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের ৫ সেকেন্ড থেকে ১২ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটুকু আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদনে ২০২০ সালে করোনার ভয়াবহতা মোকাবেলায় করোনো রোগীদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে সেনাবাহিনী মাঠে নামার বিষয়ে তথ্য দেওয়া হয়।

৩য় ভিডিও যাচই 

অনুরূপভাবে অনুসন্ধানে গত ১৯ নভেম্বর ‘1A News’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “হাসিনা কি সেনাবিদ্রোহের ভয়ে ভীত।। 1A News।। The Untold” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটিতে উপস্থাপক দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেনাবাহিনী সম্পর্কে নিজের মতামত জানাতে গিয়ে কিছু ধারণা বা সন্দেহমূলক কথা বলেন।

উপরোক্ত তিনটি ভিডিও ক্লিপের কোথাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে দাবি করে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই ভিন্ন ঘটনার কিছু পুরোনো ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের ঘোষণা কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যাবস্থা জারি করা হয়েছে কিনা তা জানতে গুগলে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো সূত্রে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের ঘোষণা দেননি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যাবস্থা জারির কোনো ঘটনাও ঘটেনি। 

মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের তথ্য প্রচার প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ (২১ নভেম্বর) ‘Sabai Sikhi’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে “ক্ষমাচেয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জরুরী অবস্থায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত বিষয়টি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ভাইরাল ছাত্রী শিক্ষকের বিয়ে দাবিতে ভিন্ন দম্পতির বিয়ের ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি, অবশেষে বিয়ে হয়ে গেলো সেই ভাইরাল স্যার আর ছাত্রীর- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ছাত্রী শিক্ষকের বিয়ে

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাইরাল ছাত্রী শিক্ষকের বিয়ে হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং গত ফেব্রুয়ারিতে বরিশালে বিয়ে হওয়া ভিন্ন এক দম্পতির বিয়ের ভিডিও ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছে। 

মূলত, গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাজধানীর একটি কলেজের ছাত্রী শিক্ষকের ব্যক্তিগত আলাপ ভাইরাল হয়। পরবর্তীতে ভাইরাল হওয়া সেই ছাত্রী শিক্ষকের ‘বিয়ে হয়েছে’ দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত ছাত্রী ও শিক্ষকের বিয়ে হয়নি। তাছাড়া, ভাইরাল হওয়া বিয়ের ভিডিওটি গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বরিশালে বিয়ে হওয়া ভিন্ন এক দম্পতির।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে একই ভিডিও ও কিছু ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

তানজিন তিশার আত্মহত্যা চেষ্টা পরবর্তী হাসপাতালে ভর্তি থাকার দৃশ্য দাবিতে নাটকের ভিডিও প্রচার  

সম্প্রতি, তাহলে কি আসলেই সুইসাইড করতে গেছিলো তানজিন তিশা- শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও ক্লিপ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

তানজিন তিশার

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছোটপর্দার অভিনেত্রী তানজিন তিশা সুইসাইড করে হাসপাতালে ও তাকে দেখতে গিয়েছে অভিনেতা মুশফিক আর ফারহান শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাস্তব কোনো ঘটনার নয় বরং এটি এই দুই তারকার ‘কোথায় খুঁজি তারে’ নামক নাটকে অভিনয়ের দৃশ্য।

আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ছোটপর্দার অভিনেত্রী তানজিন তিশা হাসপাতালের বেডে কান্নারত অবস্থায় বসে আছেন। তার হাত ধরে কথা বলছেন অভিনেতা মুশফিক আর ফারহান।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে Sultan Entertainment নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত তানজিন তিশা ও মুশফিক আর ফারহানের অভিনীত “Kothay Khuji Take” নামক একটি নাটক খুঁজে পাওয়া যায়।  

উক্ত নাটকের ৫৫ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে, ৩৯ মিনিটে প্রদর্শিত একটি মুহূর্তের দৃশ্যের সাথে আলোচিত দৃশ্যটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়া, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি Sadekul islam নামের ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশিত একই নাটকের ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতেও একই দৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সুলতান এন্টারটেইনমেন্ট ‘কোথায় খুঁজি তারে’ নাটকটি তাদের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। মাহমুদ মাহিনের রচনা ও পরিচালনায় তৈরি হওয়া এই নাটকটিতে অভিনয় করেন অভিনেত্রী তানজিন তিশা ও অভিনেতা মুসফিক আর ফারহান।

মূলত, গত ১৫ নভেম্বর অভিনেত্রী তানজিন তিশা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরবর্তীতে গুঞ্জন উঠে আরেক অভিনেতা মুশফিক আর ফারহানের সাথে সম্পর্কের টানাপোড়েনে ‘আত্মহত্যার’ চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তবে তানজিন তিশা এসব গুঞ্জন উড়িয়ে দেন।  এরই মধ্যে ‘হাসপাতাল তানজিন তিশার সাথে কথা বলছেন মুশফিক আর ফারহান’ এমন একটি দৃশ্য ‘তাহলে কি আসলেই সুইসাইড করতে গেছিলো তানজিন তিশা’- শীর্ষক ক্যাপশনে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওতে প্রচারিত দৃশ্যটি বাস্তব কোনো ঘটনার নয়। এটি ‘কোথায় খুঁজি তারে’ নামক একটি নাটকের দৃশ্য। 

সুতরাং, তানজিন তিশার নাটকের অভিনয়ের দৃশ্যকে সম্প্রতি তার আত্মহত্যা চেষ্টা পরবর্তী হাসপাতালে ভর্তিরত অবস্থার দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সম্প্রতি পুলিশের গুলিতে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের কোনো নেতা নিহত হননি

সম্প্রতি, ঢাকা পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রনিকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে শীর্ষক দাবিতে এক যুবকের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে উক্ত ছবি বিহীন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের কোনো নেতা পুলিশের গুলিতে নিহত হননি বরং আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টে ব্যবহৃত ছবির ব্যক্তির নাম রবিন খান এবং তিনি বর্তমানে সুস্থ আছেন। এটি গত বছর পুলিশের গুলিতে তার আহত হওয়ার পরবর্তী সময়ে ধারণকৃত। এছাড়া, রনি বা আহমেদ রনি নামের কোনো ব্যক্তি ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নেই।

বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক বদিউজ্জামান বিপ্লবের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গতকাল ২০ নভেম্বর উক্ত ছবিটি নিয়ে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

সেখানে উল্লেখিত তথ্য থেকে জানা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টে ব্যবহৃত ছবিটির যুবকের নাম মোঃ রবিন খান, তিনি ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক।

সেখানে আরও বলা হয়, মো: রবিন খান বর্তমানে সুস্থ এবং স্বাভাবিক আছেন এবং তার আহত হওয়ার এই ছবিটি পূর্বের।

পরবর্তীতে ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানের মাধ্যমে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: রবিন খানের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এবিষয়ে গত ২০ নভেম্বর প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

উক্ত পোস্টে বলা হয়, “আমাকে নিয়ে যারা এই ধরনের বিভ্রান্ত পোস্ট করতেছেন তারা দয়া করে এসব থেকে বিরত থাকুন স্বাভাবিক আছি আমার সাথে এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি এটা গত বছরের ঘটনা দয়া করে সবাই ডিলিট করুন এবং আমি ভালো আছি।”

অর্থাৎ, ছবির এই যুবকের নাম রনি নয় বরং মোঃ রবিন খান এবং তিনি মারা যাননি।

তাছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা বিএনপি সংশ্লিষ্ট কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রদলের ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের কোনো নেতা-কর্মীর পুলিশের গুলিতে মারা যাওয়ার তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি, রনি বা আহমেদ রনি নামে ঢাকা পশ্চিম ছাত্রদলের কোনো সাংগঠনিক সম্পাদকের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে প্রায়ই পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের লোক নিহত হওয়ার মতো তথ্য গণমাধ্যমের খবরে উঠে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ফেসবুকে প্রচারিত ‘ঢাকা পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রনিকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে’ শীর্ষক দাবির প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের কোনো নেতা-কর্মী পুলিশের গুলিতে মারা যায়নি। প্রকৃতপক্ষে উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্টে ব্যবহৃত ছবির যুবকের নাম রনি নয় বরং রবিন খান। তিনি ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। ২০২২ সালে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছিলেন। ব্তমানে তিনি বর্তমানে সুস্থ আছেন। এছাড়া, রনি বা আহমেদ রনি নামে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের কমিটিতে কোনো সাংগঠনিক সম্পাদক নেই।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ অক্টোবর বিএনপির চলমান অবরোধ শুরুর প্রথম দিনে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের ছয়সুতী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি রিফাত (২০) পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালেও একই ছবি ব্যবহার করে পুলিশের গুলিতে ছাত্রদল নেতা রবিন খান নিহত হওয়ার ভুয়া তথ্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ঢাকা পশ্চিম ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রনিকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Badiuzzaman Biplob: Post
  • Rabin Khan: Post
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

বিশ্বকাপে ব্যর্থতার দায়ে সাকিব হেনস্তার শিকার দাবিতে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও বিকৃত করে প্রচার 

২০২৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাজে পারফরমেন্সের কারণে দেশে ফিরে সাকিব আল হাসান ক্রিকেট সমর্থকদের তোপের মুখে পড়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। কিছু সংখ্যক পোস্টে সাকিবের সমর্থকদের তোপের মুখে পড়ার কারণ হিসেবে তার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিষয়টিকে ইঙ্গিত করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

সাকিব

এছাড়া একই  দাবিতে সামাজিক মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) কিছু পোস্ট প্রচার হতে দেখা যায়। এমন কিছু টুইট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত ভিডিও যুক্ত করে বাংলাদেশি সমর্থকরা সাকিব আল হাসানের ওপর আক্রমণ করেছে শীর্ষক দাবিতে ভারতীয় ক্রিকেট ভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকট্র্যাকার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি বিশ্বকাপ খেলা শেষে দেশে ফিরে সাকিব আল হাসান সমর্থকদের তোপের মুখে পড়েছেন দাবিটিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যটি পুরোনো ভিন্ন ঘটনার। প্রকৃতপক্ষে চলতি বছরের মার্চে দুবাইয়ে সাকিব একটি স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে গেলে উৎসুক প্রবাসীরা তাকে দেখতে ভিড় করে। তখন উক্ত ভিডিওটি ধারণ করা হয়। তবে সেসময় সাকিবকে কেউ মার মার বলে সম্বোধন করেনি। এই ঘটনার ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ‘মার মার’ শব্দগুচ্ছ যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

উক্ত লোগোর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মাধ্যমে সময় টিভি’র ইউটিউব চ্যানেল SomoyTVBulletin এ গত ১৭ মার্চে ‘দুবাইয়ে সাকিবের সঙ্গে প্রবাসীদের এ কেমন আচরণ!’ শিরোনামে একটি শর্ট ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওর সাথে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

এছাড়া সেসময় একই ভিডিওটি আরটিভি এবং বায়ান্ন টিভি‘র ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়।

পরবর্তীতে, ভিডিওর ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানে সময় টিভি’র ওয়েবসাইটে গত ১৬ মার্চ ‘বিতর্কিত সেই স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করলেন সাকিব’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ১৫ মার্চ  স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকে সঙ্গে নিয়ে ডুবাইয়ে আরাভ খানের একটি জুয়েলারি দোকান উদ্বোধন করেন সাকিব আল হাসান। আয়োজন ঘিরে সেদিন সন্ধ্যা থেকেই দুবাই গোল্ডসূকে ভিড় করেন হাজার হাজার মানুষ। 

পাশাপাশি, গত আগস্টে প্রকাশিত প্রথম আলো’র একটি প্রতিবেদনে সাকিবের দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে গিয়ে বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়ার তথ্য তুলে ধরা হয়। 

অর্থাৎ, ভাইরাল ভিডিওটি গত মার্চে সাকিব আল হাসানের দুবাইয়ে একটি স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে বিশৃঙ্খলায় পড়ে যাওয়ার ঘটনার। 

অডিও যাচাই

আলোচিত ভিডিওটির ব্যাকগ্রাউন্ডে ‘মার মার’ শীর্ষক শব্দটি নিয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি মূলত ছোট পর্দার অভিনেতা মোশাররফ করিম অভিনীত ‘রক’ নামক একটি নাটকের সংলাপের অংশবিশেষ। নাটকের ৫৪ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড সময়ে মোশাররফ করিমকে ‘মার মার’ শীর্ষক সংলাপটি বলতে শোনা যায়।

এছাড়া, বিশ্বকাপ খেলা শেষে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ফিরে সাকিব আল হাসানের হেনস্তা হওয়ার কোনো খবর দেশীয় বা আন্তর্জাতিক কোনো সংবাদমাধ্যমে পাওয়া যায়নি। 

তবে, বিশ্বকাপ চলাকালীন সাকিব তার শৈশবের কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সঙ্গে নিবিড় অনুশীলনের জন্য দেশে আসলে মাঠে অনুশীলন শেষে বেরিয়ে যাওয়ার পথে মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামে উপস্থিত সমর্থকরা সাকিবকে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে দুয়োধ্বনি দেয়। তবে এ ঘটনার সাথে আলোচিত ভিডিওটির কোনো সম্পর্ক নেই।

মূলত, বিতর্কিত দুবাই প্রবাসী ব্যবসায়ী আরাভ খানের স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান চলতি বছরের মার্চ মাসে দুবাই গিয়েছিলেন। সে সময়ে সাকিব দেখতে ছুটে এসেছিলেন অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশি। সেসময় সাকিবকে দেখতে আসা বাংলাদেশি প্রবাসী সমর্থকদের ভিড়ে ঘটনাস্থলে একটি  বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্ট হয়। সম্প্রতি সেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির ঘটনায় ধারণকৃত একটি ভিডিওতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘মার মার’ শীর্ষক বেকগ্রাউন্ট অডিও যুক্ত করে সাকিবের বিশ্বকাপে বাজে পারফরম্যান্সে কারণে সমর্থকদের তোপের মুখে পড়ার ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে বলে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আসন্ন এ নির্বাচনে অংশ নিতে গত ১৮ নভেম্বর তিনটি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কেনেন জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার। 

সুতরাং, ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও এডিট করে সেটিকে বিশ্বকাপে ব্যর্থতার কারণে জড়ানোর কারণে সম্প্রতি সাকিব আল হাসান সমর্থকদের দ্বারা হেনস্তা হয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সঠিক নয়। 

তথ্যসূত্র

রিকি পন্টিং অস্ট্রেলিয়ার সদ্য বিশ্বকাপ জয়ের পর ক্রিকেট মাফিয়া শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি

0

গতকাল (১৯ নভেম্বর) ওডিআই ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এই ম্যাচের পর ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, “অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং বলেছেন, মাফিয়াদের টাকা ও ক্ষমতা তাদের ওয়ার্ল্ড কাপ জেতাতে পারেনি। এটি ক্রিকেট মাফিয়াদের বিপক্ষে ন্যায়বিচারের জয়।”

অস্ট্রেলিয়ার

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রিকি পন্টিং অস্ট্রেলিয়ার সদ্য বিশ্বকাপ জয়ের পর ক্রিকেট মাফিয়া শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং ফক্স ক্রিকেটকে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করে রিকি পন্টিংয়ের নামে উক্ত ভুয়া মন্তব্যটি প্রচার করা হয়েছে। 

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে দাবিটির সূত্র হিসেবে একটি টুইটের স্ক্রিনশট সংযুক্ত দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। এক্সে (সাবেক টুইটার) পরবর্তীতে ASG নামক একটি ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টে আলোচিত টুইটটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

গতকাল (১৯ নভেম্বর) রাত ৯ টা ৫১ মিনিটে প্রকাশিত টুইটটি এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত অন্তত ১০ লাখ মানুষের নজরে এসেছে। 

screenshot: X

এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, গতকালই বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ হয়েছে। ভারতের বিপক্ষে খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচটি শেষ হয় বাংলাদেশ সময় প্রায় সাড়ে নয়টায়। অর্থাৎ, দাবি অনুযায়ী পন্টিংকে এরপরই কথিত এই মন্তব্যটি করার কথা। 

কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ক্রীড়া বিষয়ক সংবাদমাধ্যম Fox Cricket এর ওয়েবসাইটের ভিডিও এবং নিউজ সেকশনে এই সময়ের মধ্যে পন্টিংয়ের মন্তব্য সংশ্লিষ্ট কোনো সংবাদ বা ভিডিও প্রতিবেদনের অস্তিত্ব মেলেনি। 

তাছাড়া, ফক্সের সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোতেও (ইউটিউব, এক্স, ফেসবুক) পন্টিংয়ের উক্ত কথিত মন্তব্যের হদিস মেলেনি৷ 

তবে ফক্সের এক্স অ্যাকাউন্টে আজ (২০ নভেম্বর) সকালে প্রকাশিত একটি টুইটে পন্টিংয়ের একটি মন্তব্য সংযুক্ত করা হয়, যাতে তিনি অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক কামিন্সের বিষয়ে কথা বলেছেন। এছাড়া, আজ দুপুরে ফক্সেরই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে সদ্য সমাপ্ত ওডিআই ক্রিকেট বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের ফাইনাল ম্যাচের পিচ সম্পর্কে রিকি পন্টিং বলেন, ভারত যে উইকেট বানিয়েছে সেটা তাদের উপরই উল্টোভাবে কাজ করেছে এবং তাদের ব্যাটিং লাইনআপের ধ্বংসের কারণ হয়েছে।

যদিও উপরোল্লিখিত টুইট এবং সংবাদ প্রতিবেদনটি দাবিটি ছড়িয়ে পড়ার পরদিন প্রকাশিত হয়েছে। তবুও প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনায় বিষয়টি অবগত করা হলাে।  

পরবর্তীতে রিকি পন্টিং এর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোতেও (ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম) এ সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। 

তাছাড়া রিকি পন্টিং কর্তৃক টাকা ও ক্ষমতা ভারত মাফিয়াদের ওয়ার্ল্ড কাপ জেতাতে পারেনি শীর্ষক কোনো মন্তব্য করা হলে স্বাভাবিকভাবে তা গণমাধ্যমে প্রচারিত হতো। কিন্তু দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ বা তথ্য মেলেনি। 

মূলত, গত ১৯ নভেম্বর ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩ এ ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এই ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে ষষ্ঠ বারের মতো শিরোপা জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। উক্ত ম্যাচকে কেন্দ্র করে টাকা ও ক্ষমতা ক্রিকেট মাফিয়াদের ওয়ার্ল্ড কাপ জেতাতে পারেনি শীর্ষক মন্তব্যকে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক রিকি পন্টিং এর মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধানে দেখেছে যে দাবিটি সঠিক নয়। রিকি পন্টিং এমন কোনো মন্তব্যই করেননি।

উল্লেখ্য, ASG নামক একই এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে গত অক্টোবরে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার এবং ধারাভাষ্যকার সুনীল গাভাস্কার ভারতের বিশ্বকাপ আয়োজনের অব্যবস্থাপনা নিয়ে স্টার স্পোর্টসে বক্তব্য দিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার  রিকি পন্টিং ‘টাকা ও ক্ষমতা ক্রিকেট মাফিয়াদের ওয়ার্ল্ড কাপ জেতাতে পারেনি’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা৷ 

তথ্যসূত্র

এটি বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত হারায় পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটারদের আনন্দ উল্লাসের ভিডিও নয়

গতকাল (১৯ নভেম্বর) আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের (পুরুষ) ফাইনাল ম্যাচে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া দল মুখোমুখি হয়। ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের হারের পর পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা আনন্দ উল্লাস করছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

ভারত হারায়

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গত ১৯ নভেম্বরের নয় বরং ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয়ের পর পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা আনন্দ উল্লাস করার ভিডিও এটি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওর শুরুতে একটি দৃশ্যে ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের লোগো দেখা যায়।

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে পাকিস্তানের ক্রীড়া গণমাধ্যম A Sports এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ০৯ নভেম্বর “YESSS! We’re into the FINAL!!! It’s time for some Bhangra and why not!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিটির মিল খুজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণ থেকে জানা যায়, সেসময় চলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ উপলক্ষে A Sports কর্তৃক আয়োজিত The Pavilion নামক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা অংশ গ্রহণ করেন। ০৯ নভেম্বর আসরের প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে পাকিস্তান ফাইনাল নিশ্চিত করে। এর জেরে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা সেদিন উক্ত অনুষ্ঠানে উল্লাস করেন। তারই দৃশ্য এটি।

মূলত, ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে  হারিয়ে পাকিস্তান ফাইনাল নিশ্চিত করে। এর প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের ক্রীড়া গণমাধ্যম A Sports কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা উল্লাস প্রকাশ করেন। সেই মূহুর্তের ভিডিওটি A Sports তাদের ইউটিউব চ্যানেনে প্রকাশ করে। তবে সম্প্রতি উক্ত ভিডিওটি ব্যবহার  করে সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারত হারার কারণে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা আনন্দ উল্লাস করার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে  হারিয়ে পাকিস্তান ফাইনাল নিশ্চিত করার পর পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটারদের উল্লাস প্রকাশের ভিডিওকে সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারত হারার কারণে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা আনন্দ উল্লাস করার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • A Sports – Youtube Video
  • Rumor Scanner’s own investigation 

সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্বাচনের তফসিল বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারির ভুয়া তথ্য প্রচার

গত ১৯ নভেম্বর ইউটিউবে Sabai Shiki নামের একটি চ্যানেলে ‘তফসিল বাতিল করে জরুরি ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি করলো সেনাবাহিনী, ভয়ে শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘তফসিল বাতিল করলো সেনাবাহিনী জরুরী তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে ভিডিও ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

তফসিল বাতিল

ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার বার দেখা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটিতে প্রায় ৭ হাজার ৮ শত লাইক এবং ২৭৪টি মন্তব্য করা হয়েছে।

পরবর্তীতে একই ভিডিওটি বেশ কিছু ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রচার করা হয়। পোস্টগুলো দেখুন  এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত ভিডিওটি লিংক শেয়ার করে ফেসবুকে প্রচারিত একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সেনাবাহিনী কর্তৃক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারি করার দাবিটি সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন, যেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যদের পুরোনো কিছু কার্যক্রমের দৃশ্য দেখানো হয়।

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, “এবার নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে মুখ খুললেন এক সেনা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, অবিলম্বে তফসিল বাতিল করে নিরপেক্ষ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নইলে জনগনের স্বার্থে যেকোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত সেনাবাহিনী। এজন্য সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিশেষ আহ্বান জানান।”

উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, ভিডিওটি’র শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে উল্লেখিত তথ্যের সাথে বিস্তারিত সংবাদপাঠ অংশের অমিল রয়েছে। শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্বাচনের তফসিল বাতিল এবং জরুরি ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি করার বিষয়টি উল্লেখ করা হলেও সেবিষয়ে বিস্তারিত সংবাদপাঠ অংশে কিছুই বলা হয়নি। এমনকি সেখানে সেনাবাহিনীর কোনো সদস্যের এসংক্রান্ত কোনো ঘোষণার ভিডিও ক্লিপও দেখানো হয়নি।

এছাড়াও, ২০১১ সালে বাংলাদেশে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। পরবর্তীতে এই ব্যবস্থা আর পুর্ণবহাল করা হয়নি। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারি করার বিষয়টি সেনাবাহিনীর আওতার বাইরে।

পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর কর্তৃক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিল কিংবা সেনাবাহিনী কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারির দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক নয়।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের ভুল তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ নভেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘তফসিল বাতিল করে জরুরি ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি করলো সেনাবাহিনী, ভয়ে শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘তফসিল বাতিল করলো সেনাবাহিনী জরুরী তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি অন্যান্য ইউটিউব চ্যানেলেও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ ও ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, সেনাবাহিনী কর্তৃক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারির দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পুলিশ ও সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার গুজব 

গত ১৬ নভেম্বর Sabai Shiki নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল হতে ‘হাসিনার কথা শুনছে না পুলিশ-সেনাবাহিনী, দ্রুত পদত্যাগের নির্দেশ’ শীর্ষক থাম্বনেইল এবং ‘হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিলো পুলিশ ও সেনাবাহিনী, ভয়ে আ.লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনেই নির্বাচন’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

পদত্যাগের নির্দেশ

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি ৪ লক্ষ ৩৮ হাজার ৯ শত ৩৭ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওতে লাইক দেওয়া হয়েছে হয়েছে ৫ হাজার ১ শত সংখ্যক। ভিডিওটির মন্তব্যঘর ঘুরে অনেক আলোচিত দাবির প্রেক্ষিতে নেটিজেনদের মতামত জানাতে দেখা গেছে।

এছাড়া অন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকেও একই ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কর্তৃক পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো দুইটি ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই ০১

প্রথম ভিডিও ক্লিপের বিষয়ে জানতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘maksud un nabi’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২১৪ সালের ২৬ জুন “Narayanganj asp Bashir disclose Shamim Osman” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, এটি ২০১৪ সালের ২৬ জুন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে উপনির্বাচন চলাকালীন সময়ের ভিডিও। নির্বাচনের দিন নারায়ণগঞ্জের তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. বশিরউদ্দীন সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে তার সাথে অশোভন আচরণ এবং তাকে হুমকি প্রদানের অভিযোগ তোলেন।

উক্ত ঘটনা নিয়ে সেসময় প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

ভিডিও যাচাই ০২

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি মূলধারার টিভি চ্যানেল সময় টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ৪ সেপ্টেম্বর “সফলভাবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ: আইজিপি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত প্রতিবেদনে প্রচারিত পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন এর বক্তব্যের সাথে আলোচিত ভিডিওতে প্রচারিত আব্দুল্লাহ আল-মামুন বক্তব্যের হবহু মিল পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চে একই দিনে দেশিয় সংবাদ সংস্থা বাসস এর ওয়েবসাইটে “আগামী দিনেও যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত পুলিশ : আইজিপি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন সিনিয়র সচিবের পদমর্যাদা পেয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে এসব কথা বলেন।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা এই দুই ভিডিও ক্লিপের কোনটিতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে  সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের তথ্য প্রচার প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ‘হাসিনার কথা শুনছে না পুলিশ-সেনাবাহিনী, দ্রুত পদত্যাগের নির্দেশ’ শীর্ষক থাম্বনেইল এবং হাসিনাকে পদত্যাগের নির্দেশ দিলো পুলিশ ও সেনাবাহিনী, ভয়ে আ.লীগ শীর্ষক শিরোনামে ইউটিউবে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরে যাওয়ায় ভারতের সমর্থকদের টিভি ভাঙচুরের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিটি পুরোনো

গতকাল (১৯ নভেম্বর), আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের (পুরুষ) ফাইনাল ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছে ভারত। এই পরাজয় মানতে না পেরে ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকরা টিভি ভাঙচুর করেছেন দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

টিভি

উক্ত ছবি ব্যবহার করে প্রচারিত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন বিডিক্রিকটাইম (ফেসবুক) এবং একুশে সংবাদ। 

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

তাছাড়া, একই ছবি ব্যবহার করে উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি গতকাল অর্থাৎ ১৯ নভেম্বরের ফাইনাল পরবর্তী সময়ের নয় বরং এটি ২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ভারতের হেরে যাওয়ার পরে ভারতের সমর্থকদের টিভি ভাঙচুরের ঘটনার ছবি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম দেখেছে, এই ছবিটির বিষয়ে পূর্বেও ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করা হয়েছিল। 

গেল বছরের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, আলোচিত ছবিটি ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারত পাকিস্তানের কাছে হেরে যাওয়ার পর ভারতের আহমেদাবাদের পালডিতে ক্রিকেট ভক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েকটি টিভি সেট ভেঙে ফেলার দৃশ্য।  

একই ছবি ভিন্ন দাবিতে একই বছরের (২০২২) নভেম্বরেও প্রচার করা হলে সেসময়ও ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

মূলত, গতকাল (১৯ নভেম্বর) আইসিসি ম্যানস্ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজিত হয় ভারত। এই হার মানতে না পেরে ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকরা টিভি ভাঙচুর করেছে দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। ২০১৭ সালে  চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারত পাকিস্তানের কাছে হারার পর ভারতের ক্রিকেট ভক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েকটি টিভি সেট ভেঙে ফেলে। সেসময়কার দৃশ্য এটি।

সুতরাং, ২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ভারতের হেরে যাওয়ার পরে ভারতে টিভি ভাঙচুরের ঘটনার পুরোনো ছবিকে সদ্য সমাপ্ত ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার সাথে ভারতের পরাজয়ের পর ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের টিভি ভাঙচুরের ঘটনার দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র