Home Blog Page 609

ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্লোনিংয়ের দাবিটি মিথ্যা

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট ক্লোন করা হচ্ছে শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

যা দাবি করা হচ্ছে

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলোতে একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বলা হচ্ছে-

“বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছে যে, আমাদের প্রায় সবার একাউন্ট ক্লোন করা হচ্ছে। আপনার প্রোফাইল পিকচার এবং নাম দিয়ে আরেকটি একাউন্ট খোলা হচ্ছে। এরপর তারা আপনার বন্ধুকে বন্ধুত্বের রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছে। আর আপনার বন্ধুরা আপনি ভেবে তা গ্রহণ করছে। আর আপনাকে ফাঁসাতে বিভিন্ন সরকার বিরোধী, ধর্মবিরোধী যা লেখা/ছবি পোস্ট করবে। এই সুযোগে এই দল তাদের বার্তা ছড়াবে আপনার পরিচয়ে।”

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্লোন হওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত এই দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

গুজবের সূত্রপাত

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে বাংলাদেশি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে এই দাবির পুরোনো বা প্রথম দিকের পোস্ট হিসেবে Azam Khan নামের একটি ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টে ২০১৮ সালের ৭ আগস্ট প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে FOX 5 WASHINGTON DC এর ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের পহেলা জুলাই ‘Facebook cloning scam targets potential victims with simple friend request’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: FOX 5 WASHINGTON DC

এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্লোন করার বিষয়টি ২০১৬ সালেও ইংরেজি ভাষায় ছড়িয়েছিলো। 

অর্থাৎ, ইংরেজি ভাষায় প্রচারিত এই দাবিটিই পরবর্তীতে বাংলায় অনুবাদের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার হয়ে আসছে।

অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম The Indian Express এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ০৯ অক্টোবর ‘New hoax spreads on Facebook: No, your account has not been cloned’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: The Indian Express

প্রতিবেদনে Washington Post এবং USA Today এর বরাতে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্লোনিংয়ের বিষয়টি জানিয়ে এটিকে মিথ্যা বলে উল্লেখ করা হয়। 

পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ম্যাগাজিন Time এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ০৭ অক্টোবর ‘Worried Your Facebook Account Has Been Cloned? Here’s What to Know About This New Hoax’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Time

প্রতিবেদনে নিউইয়র্ক ভিত্তিক মিডিয়া WSYR বরাতে ফেসবুক কর্মকর্তাদের বক্তব্য উল্লেখ করে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক ভাইরাল হওয়া ফেসবুক ক্লোনিং বিষয়ক তথ্যটি বাস্তবে ক্লোন হওয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সাথে সম্পৃক্ত নয় বা এটি সেপ্টেম্বরে ঘটে যাওয়া ডেটা লঙ্ঘনের সাথে সম্পর্কিত নয়।’

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা প্রতীয়মান হয় যে, সম্প্রতি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্লোন হওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। 

পাশাপাশি, সাম্প্রতিক সময়ে কোনো ব্যবহারকারীদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্লোন হয়েছে বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট ক্লোন করা হচ্ছে দাবিতে একটি তথ্য ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিটির সত্যতা পাওয়া যায়নি। কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত এই দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা যাচাইয়ের পদ্ধতি এবং অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া না হওয়ার পরীক্ষা দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলোকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ক্লোন হওয়ার দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

মোহাম্মদ রাফির মতো গান গাওয়ার দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড

সম্প্রতি, “আমি Indian idol খুব একটা দেখি না কবে এই program টা হয়েছে জানিনা তবে রফি সাহেবের সঙ্গে এমন অদ্ভুত মিল আর কারো গলায় পাইনি দারুণ দুর্ধর্ষ।” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

যা দাবি করা হচ্ছে

উক্ত ভিডিওটি প্রকাশকারী ভারতীয় সংগীত শিল্পী মোহাম্মদ রফির সঙ্গে এমন অদ্ভুত মিল আর কারো গলায় পাননি দাবি করেন। অর্থাৎ, ভিডিওটি সত্য দাবি করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতীয় শিল্পী মোহাম্মদ রাফির কণ্ঠের সঙ্গে এমন অদ্ভুত মিল আর কারো গলায় না পাওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটি মোহাম্মদ রাফির গানের সাথে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিটের মাধ্যমে তৈরি করা।

ভিডিও যাচাই

ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে অনুসন্ধান করে ইউটিউবে ‘Busy Comedy Ltd 4.7M views. 2 days ago…’ নামক চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Youtube

তবে ভিডিওটিতে মোহাম্মদ রাফি এবং মদন মোহন এর ‘Yeh Duniya Yeh Mehfil’ শীর্ষক গাওয়া গানের কপিরাইট উল্লেখ করা ছিলো।

Screenshot from Youtube

ভিডিওটি আসল কিনা তা অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চ অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘SET India’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ৫ জানুয়ারিতে প্রকাশিত ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ নামক অনুষ্ঠানের একটি ভিডিওর কিছু দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

MD Shanu Vlogs 2.3M views. 7 days ago…’ নামক চ্যানেলে এমন একাধিক ভিডিও খুজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Youtube

অর্থাৎ, ভারতীয় সংগীত শিল্পী মোহাম্মদ রফির সঙ্গে এমন অদ্ভুত মিল আর কারো গলায় না পাওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এই রিয়েলিটি শো এর থেকে নেহা কাক্কর, ভিশাল দাদলানি এবং হিমেশ রেশমায়া এর ফুটেজ নিয়ে এডিটের মাধ্যমে যুক্ত করে বানানো হয়েছে।

অডিও যাচাই

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘Saregama Music’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৭ সালের ৫ জুলাই প্রকাশিত ভিডিওর অডিওর সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত অডিওর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Youtube

ভিডিওর বিস্তারিত অংশে গানের আর্টিস্ট হিসেবে মোহাম্মদ রাফির নাম উল্লেখ ছিলো।

মূলত, ভারতীয় শিল্পী মোহাম্মদ রাফির কণ্ঠের সঙ্গে এমন অদ্ভুত মিল আর কারো গলায় না পাওয়ার দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায় উক্ত ভিডিওটি সত্য নয় বরং ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ নামক অনুষ্ঠানের কিছু দৃশ্য সংগ্রহ করে এডিটের মাধ্যমে সংমিশ্রণ করে তৈরি।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও তথ্যমন্ত্রী “এই সোনার বাংলা জ্বালাইয়া দিল শেখের বেটি হাসিনা।” শীর্ষক গান গেয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ভারতীয় শিল্পী মোহাম্মদ রাফির কণ্ঠের সঙ্গে এমন অদ্ভুত মিল আর কারো গলায় না পাওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাঈদীর ছেলে মামলা করেনি

সম্প্রতি, জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে মামলা ও সাঈদীর চিকিৎসার সাথে জড়িত চিকিৎসককে সেনাবাহিনী গ্রেফতার করেছে শীর্ষক দাবিতে কিছু  ভিডিও ইউটিউবে  প্রচার করা হচ্ছে। 

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দেলাওয়ার হোসাইন মৃত্যুর ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে তার ছেলের বা সাঈদীর দল জামায়াতে ইসলামীর আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা ও সাঈদীকে চিকিৎসা দেওয়া ডাক্তার সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতারের দাবিটি সঠিক নয় বরং ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে চটকদার থাম্বনেইলের মাধ্যমে উক্ত ভিডিওগুলো প্রচার করা হচ্ছে।

প্রথম ভিডিও যাচাই 

Screenshot: Youtube thumbnail

অনুসন্ধানে দেখা যায়, MKtv News Bangla নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ২১ আগস্ট “হাসিনার নামে মামলা করলো সাঈদীর ছেলে, সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হলো ডাক্তার” শীর্ষক থাম্বনেইলে আলোচিত ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়েছে। 

৮ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, কিছু ভিডিও ক্লিপ ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদীর একটি বক্তব্য জুড়ে দিয়ে  পুরো ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

এর মধ্যে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদীর দেওয়া বক্তব্যের মূল ভিডিওটি (আর্কাইভ) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি গত ১৮ আগস্ট ২ টা ৫৯ মিনিটে প্রচার করা হয়েছিল। 

ভিডিওটিতে থাকা মাসুদ সাঈদীর বক্তব্যের সাথে ইউটিউব চ্যানেলটিতে প্রচারিত মাসুদ সাঈদীর বক্তব্যের হুবহু মিল রয়েছে। তবে তার এই বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করার ব্যাপারে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় না।

Screenshot: Facebook 

এছাড়া ভিডিওটিতে অন্যান্য যেসব খন্ডিত বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে সেগুলোতেও এমন কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলের মামলা করা ও তাকে চিকিৎসা দেওয়া ডাক্তারকে সেনাবাহিনী কর্তৃক গ্রেফতারের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। 

দ্বিতীয় ভিডিও যাচাই 

Love TV নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ আগস্ট ‘আল্লামা সাঈদীর মৃত্যু নিয়ে ডাক্তার গ্রেপ্তার, হাসিনার উপর আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা (আর্কাইভ) শীর্ষক একটি থাম্বনেইলে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হয়।

৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটিতেও ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও ক্লিপ একসাথে সংযুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে। 

ভিডিওটির শুরুতেই র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈনকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বক্তব্যটি দিয়েছেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে চিকিৎসা দেওয়া ডাক্তার এস এম মোস্তফা জামানকে হত্যা হুমকিদ্বারী তফসিরুল ইসলাম গ্রেফতার করার পর একটি প্রেস ব্রিফিং এ। 

Screenshot: DBC News

এছাড়া চ্যানেলটিতে প্রচারিত ভিডিওটির দ্বিতীয় অংশ নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই অংশটি নেওয়া হয়েছে  “Nayeem Elli-Nayeem korea” নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে। গত ১৮ আগস্ট “আন্তর্জাতিক আদালতে একি কান্ড জামায়াতের।। তলেতলে একি ঘটিয়ে এলো” শীর্ষক শিরোনামে পেজটিতে উক্ত ভিডিওটি  (আর্কাইভ) প্রচার করা হয়। 

৬ মিনিট ১৮ সেকেন্ডের উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে উপস্থাপক জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী টবি ক্যাডম্যানের সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করেন। তার এই আলোচনার অংশটুকুই Love TV এর ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওটির শুরু থেকে ৫ মিনিট পর্যন্ত হুবহু তুলে ধরা হয়েছে। 

এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন 

আন্তর্জাতিক আদালতে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের এই বিষয়টিকেই সাঈদীর মৃত্যুতে চিকিৎসককে গ্রেফতারের দাবির সঙ্গে মিলিয়ে বিভ্রান্তিকর থাম্বনেইলে প্রচার করা হচ্ছে। 

অপরদিকে অনুসন্ধানে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে মামলা এবং দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর চিকিৎসক এস এম মোস্তফা জামানকে সেনাবাহিনী গ্রেফতার করেছে এমন কোনো তথ্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত ১৪ আগস্ট রাতে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে মামলা করেছেন এবং দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া ডাক্তার এস এম মোস্তফা জামানকে সেনাবাহিনী গ্রেফতার করেছে শীর্ষক দাবিতে কিছু  ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে, অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে দিয়ে এবং চটকদাদ্বার থাম্বনেইলের মাধ্যমে ভিডিওগুলো প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, জামায়াতে ইসলামীর হয়ে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পর পর দুইবার বাংলাদেশের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। ২০১০ সালের ২৯শে জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে করা একটি মামলায় তিনি গ্রেফতার হন। পরে ২ আগস্ট এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর থেকেই কারাগারে ছিলেন জামায়াতের এই নেতা। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে আনা মোট ২০ টি অভিযোগের মধ্যে ০৮ টিতে তিনি আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর দুটো অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে আদালত ২০১৩ সালে তাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেয়। তবে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে ২০১৪ সালে আপীল বিভাগ সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়। দণ্ডাদেশ পুনর্বিবেচনা চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও সাঈদীর পৃথক রিভিউ আবেদন খারিজ করে ২০১৭ সালের ১৫ মে আমৃত্যু কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়। এরপর থেকে কারাগারে থেকেই সাজা ভোগ করছিলেন তিনি। 

এছাড়া, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী গত ১৪ আগস্ট অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক এস এম মোস্তফা জামান। পরবর্তীতে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হলে তিনি ধানমন্ডি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরবর্তীতে অধ্যাপক এস এম মোস্তফা জামানকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেফতার ও করে পুলিশ। 

সুতরাং, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে মামলা এবং সাঈদীকে চিকিৎসা প্রদানকারী ডাক্তার এস এম মোস্তফা জামানকে সেনাবাহিনী গ্রেফতার করেছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ভারতে চন্দ্র অভিযান নিয়ে পুরোনো একটি কৌতুক ভিডিও বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি,‘বাংলাদেশের চন্দ্র অভিযান’ শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন, পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশের চন্দ্র অভিযানের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়। প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটি ভারতের। ভারতীয় অভিনেতা পূর্ণচন্দ্র মহীশুর ভারতের বেঙ্গালুরুতে রাস্তার অবস্থা তুলে ধরার জন্য ২০১৯ সালে এই ভিডিওটি তৈরি করেন।

ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গণমাধ্যম ‘The Guardian’ এ গত ২০১৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বরে “Walking on the moon? Indian actor walks on crater-like potholes – video” এই শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদনে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ভারতীয় অভিনেতা পূর্ণচন্দ্র মহীশুর ভারতের বেঙ্গালুরুতে রাস্তার অবস্থা তুলে ধরার জন্য চিত্রশিল্পী বাদল নাঞ্জুনদাস্বামীর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই ভিডিওটি তৈরি করেন।

পরবর্তীতে অনুসন্ধানের মাধ্যমে, ভারতীয় চিত্রশিল্পী বাদল নাঞ্জুনদাস্বামীর এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে ২০১৯ সালের ২ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘X’

মূলত, গত ২৩ আগস্ট ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩ চাঁদের বুকে সফলভাবে অবতরণ করে। এরপর থেকে এই বিষয়টি নিয়ে ভারতসহ পুরো বিশ্বে আলোচনা শুরু হয়। সেই প্রেক্ষিতে চন্দ্র অভিযান নিয়ে একটি কৌতুক দৃশ্য বাংলাদেশের দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৯ সালে ভারতীয় অভিনেতা পূর্ণচন্দ্র মহীশুর ভারতের বেঙ্গালুরুর রাস্তার অবস্থা তুলে ধরার জন্য এই ভিডিওটি তৈরি করেছিলেন।

উল্লেখ্য, চতুর্থ দেশ হিসেবে গত ২৩ আগস্ট ভারতের মহাকাশযান ‘চন্দ্রযান-৩’ চাঁদের বুকে সফলভাবে অবতরণ করে।

সুতরাং, ভারতের বেঙ্গালুরুর রাস্তার একটি পুরোনো ভিডিও বাংলাদেশের দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

চ্যানেল ২৪ এর ফটোকার্ড বিকৃত করে মির্জা ফখরুলের নামে ভুয়া তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে পরিবারসহ দেশ ছেড়ে পালালেন মির্জা ফখরুল‘ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল ‘চ্যানেল ২৪’ এর আদলে তৈরি করা একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট ( আর্কাইভ), পোস্ট ( আর্কাইভ)  এবং পোস্ট ( আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে পরিবারসহ দেশ ছেড়ে পালালেন মির্জা ফখরুল’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত ফটোকার্ডটি চ্যানেল ২৪ এর নয় বরং গত ২৪ আগস্ট চ্যানেল ২৪ এর ফেসবুক পেজে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে প্রচারিত একটি ফটোকার্ডের শিরোনামকে বিকৃত করে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে চ্যানেল ২৪ এর প্রচারিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে সংবাদটি প্রচারের তারিখ দেখানো হয়েছে ২৪ আগস্ট ২০২৩।

Screenshot : Facebook claim

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ এবং চ্যানেল ২৪ এর লোগোর সূত্র ধরে চ্যানেল ২৪ এর  ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ২৪ আগস্ট প্রচারিত দাবিটির মতো হুবহু ছবি সম্বলিত একটি ফটোকার্ড পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot : Channel 24

উক্ত ফটোকার্ডটিতে ‘সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে পরিবারসহ ঢাকা ছাড়লেন মির্জা ফখরুল’ শীর্ষক লেখা দেখতে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, চ্যানেল ২৪ এর ফেসবুকে গত ২৪ আগস্ট প্রচারিত এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম এডিট করে তাতে ‘ সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে পরিবারসহ দেশ ছেড়ে পালালেন মির্জা ফখরুল ‘ শীর্ষক তথ্য লিখে প্রচার করা হচ্ছে।

পরবর্তী অনুসন্ধানে একই তারিখে চ্যানেল ২৪ এর ওয়েবসাইটে ‘সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে পরিবারসহ ঢাকা ছাড়লেন মির্জা ফখরুল ‘শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot : Channel 24 website

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,ঘাড় ও পায়ে ব্যাথা সহ নানান রকম শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাই নিয়মিত চেকআপের জন্য পরিবারসহ সিঙ্গাপুর গেলেন তিনি। 

পাশাপাশি আলোচিত বিষয়টি নিয়ে গত ২৫ আগস্ট চ্যানেল ২৪ এর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : Channel 24

উক্ত পোস্টের মাধ্যমে চ্যনেল ২৪ এর আদলে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া সাব্যস্ত করে পাঠকদের বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এছাড়া, চ্যানেল ২৪ এর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ,অফিশিয়াল ওয়েবসাইট কিংবা অন্যকোনো গণমাধ্যমে ”সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে পরিবারসহ দেশ ছেড়ে পালালেন মির্জা ফখরুল’ শীর্ষক কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায় নি। 

মূলত, ঘাড়ে ও পায়ে ব্যাথাসহ নানা ধরনের শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নিয়মিত চেকআপ এর অংশ হিসেবে গত ২৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার পরিবারসহ সিঙ্গাপুর যান তিনি। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৪ আগস্ট বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল ২৪’ এর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে পরিবারসহ ঢাকা ছাড়লেন মির্জা ফখরুল’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড প্রচারিত হয়। পরবর্তীতে উক্ত ফটোকার্ডের শিরোনাম বিকৃতের মাধ্যমে ‘সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে পরিবারসহ দেশ ছেড়ে পালালেন মির্জা ফখরুল’ শীর্ষক শিরোনামে চ্যানেল ২৪ এর ফটোকার্ড দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। 

উল্লেখ্য, পূর্বে প্রথম আলোর আদলে ডিজিটাল ব্যানার তৈরি করে মির্জা ফখরুলের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ‘সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে পরিবারসহ দেশ ছেড়ে পালালেন মির্জা ফখরুল’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

ভারতীয় নারী বিজ্ঞানী-প্রকৌশলীদের উচ্ছ্বাস প্রকাশের এই ছবিটি চন্দ্রযান-৩ চাঁদে অবতরণের ঘটনার নয়

সম্প্রতি ‘ভারতের চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে চাঁদে অবতরণের পর ইসরোর নারী বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের আনন্দ-উল্লাস’ শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট  (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন জনকণ্ঠ, জাগোনিউজ২৪, প্রতিদিনের সংবাদ, নিউজজি২৪, বাহান্ন নিউজ, দৈনিক শিক্ষা, বাংলা ইনসাইডার, কুমিল্লার কাগজ, সোনার দেশ, আজকের প্রত্যাশা, চাঁদনী বাজার

ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন ইন্ডিয়া টাইমস

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতীয় নারী বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের উচ্ছ্বাস প্রকাশের মুহূর্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি চন্দ্রযান-৩ অবতরণের ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে এটি ২০১৪ সালে ভারতের সফল মঙ্গল অভিযান পরবর্তী সময়ে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর নারী বিজ্ঞানীদের সফলতা উৎযাপনের মুহূর্তের পুরোনো ছবি। 

ছবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত ওয়েবসাইট গেটি ইমেজে ২০১৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ‘INDIA-SPACE-SCIENCE-MARS’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Getty Images

ছবিটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি ২০১৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মাসে ধারণকৃত। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO) এর ভারতীয় কর্মীরা ব্যাঙ্গালোরে ISRO টেলিমেট্রি, ট্র্যাকিং এবং কমান্ড নেটওয়ার্কে (ISTRAC) মার্স অরবিটার স্পেসক্রাফ্ট (MoM) সফলভাবে মঙ্গলের কক্ষপথে প্রবেশ করার পর উদযাপনের মুহূর্ত এটি।

এছাড়া একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি নিউজে ২০১৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ‘India’s Mars mission: Picture that spoke 1,000 words’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও। 

Screenshot: BBC News

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, মঙ্গলগ্রহের কক্ষপথে সফলভাবে স্যাটালাইট প্রবেশের পর ভারতীয় নারীদের এই ছবিটি তুলেছেন বার্তা সংস্থা এএফপির চিত্রগ্রাহক মানজুনাথ কিরন।

উপরিউক্ত ছবি দুইটি থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ভারতের চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে চাঁদে অবতরণের পর ইসরোর নারী বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের আনন্দ-উল্লাসের দাবিতে প্রচারিত ছবিটি পুরানো এবং এটি ভারতের মঙ্গলগ্রহ অভিযানের।

চন্দ্রযান-৩ এ ভারতীয় নারী বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের অবদান

সদ্য চাঁদে অবতরণ করা ভারতের নবযান চন্দ্রযান-৩ এ ইসরোর নারী বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের অবদান নিয়ে অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াতে গত ২৩ আগস্ট ‘Chandrayaan-3: Meet the scientists who put India on the Moonশীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটিতে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর কর্মকর্তার বরাতে বলা হয়, দেশটির ৫৪ জন নারী প্রকৌশলী ও বিজ্ঞানী চন্দ্রযান-৩ মিশনে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে। তারা প্রত্যেকেই এই প্রকল্পে সহযোগী, ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর ও প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছেন।

Screenshot: Times of India

পাশাপাশি ভারতীয় গণমাধ্যম সিএনবিসিটিভি১৮ এ গত ২৪ আগস্ট ‘Chandrayaan-3 Victory — Women scientists at the helm of India’s lunar exploration’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে চন্দ্রযান-৩ মিশনে কাজ করা কয়েকজন নারী বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীর পরিচয় সম্পর্কে জানা যায়।

Screenshot: CNBCTV18

এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, ভানিতা মুথাইয়া ও ঋতু কারিদাল। এর মধ্যে ঋতু কারিদাল চন্দ্রযান-২ এর মিশন ডিরেক্টর ও মঙ্গলে স্যাটালাইট প্রেরণ মিশনের ডেপুটি অপারেশন ডিরেক্টর ছিলেন। অপরদিকে ভানিতা মুথাইয়া ছিলেন চন্দ্রযান-২ এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর। এছাড়া ভারতের মঙ্গল অভিযানের সাথেও সফলভাবে জড়িত ছিলেন তিনি।

Screenshot: CNBCTV18

প্রতিবেদনটি থেকে আরও যাদের নাম পাওয়া যায়, তারা হলেন মৌমিতা দত্ত, নন্দিনী হারিনাথ, অনুরাধা টিকেসহ প্রমুখ। 

মূলত, গত ২৩ আগস্ট বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-থ্রি চাঁদের বুকে অবতরণ করে। এরই প্রেক্ষিতে ভারতীয় নারী বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের আনন্দ উদযাপনের একটি ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ছবিটি পুরানো। প্রকৃতপক্ষে এটি ২০১৪ সালে ভারতের সফল মঙ্গল অভিযান পরবর্তী সময়ে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর নারী বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের সফলতা উৎযাপনের মুহূর্তের ছবি। 

সুতরাং, ভারতের চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে চাঁদে অবতরণের পর ইসরোর নারী বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের আনন্দ-উল্লাসের মুহূর্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ড. ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হচ্ছেন দাবিতে কালবেলার সূত্রে ভুয়া তথ্য প্রচার 

সম্প্রতি, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হচ্ছেন শীর্ষক তথ্য জাতীয় দৈনিক কালবেলা’তে প্রকাশিত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

Screenshot: Crowdtangle

পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হচ্ছেন শীর্ষক তথ্য জাতীয় দৈনিক কালবেলা’তে প্রকাশিত হয়েছে বলে যে দাবি করা হয়েছে তা সঠিক নয় বরং কালবেলা’য় এমন কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। লন্ডনভিত্তিক বাংলা সংবাদমাধ্যম সুরমা নিউজের এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ক আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কালবেলা’র ওয়েবসাইট, গেল কয়েকদিনের প্রিন্ট সংস্করণ এবং ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে ড. ইউনসূের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হওয়া সংক্রান্ত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। 

Screenshot: Kalbela Website 

পরবর্তীতে এ বিষয়ে জানতে কালবেলা’র অনলাইন বিভাগের এডিটর পলাশ মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানান, কালবেলায় এমন কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। 

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিটির সূত্র হিসেবে কালবেলা’র নাম ব্যবহার করা হলেও সংবাদমাধ্যমটিতে এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। 

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে ফেসবুকে Abdur Rab Bhuttow নামে একটি অ্যাকাউন্টে গত ২৪ আগস্ট রাতে একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

পোস্টে সুরমা নিউজ নামে লন্ডনভিত্তিক একটি সংবাদমাধ্যমের প্রিন্ট সংস্করণে প্রকাশিত “কে হচ্ছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান?” শিরোনামের একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট যুক্ত করা হয়েছে। একইসাথে প্রতিবেদনের বিস্তারিত বর্ণনাও পোস্টের ক্যাপশনে জনাব ভুট্টো তুলে দিয়েছেন। 

Screenshot: Facebook

প্রতিবেদনটি সুরমা নিউজের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে গত ২৩ আগস্ট। দেখুন এখানে। 

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ের একটি সূত্র সুরমাকে জানিয়েছে যে, ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে ড. মোহাম্মদ ইউনুসের নাম প্রস্তাব করেছে। শেখ হাসিনা সেই সরকারে তাকে রাখার শর্তে রাজি হয়েছেন। তবে ড. ইউনুস সেই সরকারে হাসিনাকে রাখতে রাজি হচ্ছেন না। ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে সরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন।” 

সুরমা নিউজের দাবি, “বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থার একটি সূত্র পররাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ের সেই সূত্রকে সমর্থন করে সুরমাকে জানিয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে আরও কয়েকটি নাম তারা বিবেচনা করছে। তারা সবাই সম্মানিত ব্যক্তি। এর মধ্যে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়া ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদারের নাম আছে। এই পদে টেকনোক্র্যাট এবং বর্তমানে যেসব ব্যক্তি রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন, তাদেরকে নিয়োগ করার বিষয়ে আপত্তির কথা তারা জানিয়েছে।” 

অর্থাৎ, সুরমা নিউজে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ড. ইউনূসের নাম এসেছে, যা থেকে আলোচিত দাবিটির সূত্রপাত বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। 

কিন্তু এ বিষয়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দেশের একাধিক দল আন্দোলন করলেও উক্ত সরকারে কারা থাকবেন বা কে প্রধান হবেন এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দলের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্যও পাওয়া যায়নি গণমাধ্যমে।

মূলত, সম্প্রতি নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হচ্ছেন দাবিতে জাতীয় দৈনিক কালবেলা’তে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। কালবেলা এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, লন্ডনভিত্তিক বাংলা সংবাদমাধ্যম সুরমা নিউজে গত ২৩ আগস্ট এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যেখানে দাবি করা হয়েছে, ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম প্রস্তাব করেছে। এই তথ্যকে কেন্দ্র করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ক আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।  

প্রসঙ্গত, পূর্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল অনুমোদন দিয়েছে শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি বানোয়াট প্রমাণ করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।  

সুতরাং, ড. ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হচ্ছেন দাবিতে কালবেলার সূত্রে একটি তথ্য ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচী নিয়ে ফেসবুকে গুজব

সম্প্রতি, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচী প্রকাশ শীর্ষক দাবিতে একটি ডিজিটাল ব্যানার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত ব্যানারে থাকা তথ্যানুযায়ী

• ৯ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) তফসিল ঘোষণা করা হবে।

• ১৯ নভেম্বর (রবিবার) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ।

• ২২ নভেম্বর (বুধবার) মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই করা হবে।

•  ২৯ নভেম্বর (বুধবার) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ।

• ৩০ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) প্রতীক বরাদ্দ করা হবে।

•  ২৩ ডিসেম্বর (শনিবার) ভোট গ্রহণ করা হবে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন, পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি প্রকাশের দাবিতে প্রচারিত ব্যানারে থাকা তথ্যগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রথম ঘোষিত তফসিলের তথ্যগুলোই সম্প্রতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল এখনো ঘোষণা করেনি।

অনুসন্ধানের শুরুতে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি প্রকাশের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে খোঁজ নেয় রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে ওয়েবসাইটটিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

Screenshot from Bangladesh Election Commission

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারে গত ৯ আগস্ট “সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা নভেম্বরে: ইসি আনিছুর” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি  প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘The Daily Star’ 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, তফসিল নিয়ে নির্বাচন কমিশন এখনো কোনো বৈঠক করেনি। এছাড়া আগামী নভেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান।

পরবর্তীতে বেসরকারি টিভি চ্যানেল আইয়ের ওয়েবসাইটে ২৬ আগস্ট “অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া জাতীয় নির্বাচনের তফসিলটি ভুয়া: ইসি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘Channel I’

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২৬ আগস্ট একটি লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া জাতীয় নির্বাচনের তফসিলের ঘোষণা, মনোনয়নপত্র ও ভোট গ্রহণের তারিখ সংক্রান্ত ব্যানারটি গুজব বলে চিহ্নিত করেছেন।

তবে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যগুলোর উৎস অনুসন্ধানে  উক্ত দাবিতে প্রচারিত তারিখগুলোর সূত্র ধরে অনলাইন পোর্টাল বিডিনিউজ২৪ এ ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর “তফসিল ঘোষণা, ভোট ২৩ ডিসেম্বর” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘Bdnews24’ 

প্রকাশিত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনার সেদিন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত, তা বাছাই হবে ২২ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ নভেম্বর। তার ২৩ দিন পর হবে ভোটগ্রহণ। যা ফেসবুকে প্রচারিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচীর সাথে হুবহু মিলে যাচ্ছে।

Image Comparison by Rumor Scanner

এছাড়া অনলাইন পোর্টাল বাংলানিউজ২৪ এ ২০১৮ সালের ৯ নভেম্বর “একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২৩ ডিসেম্বর” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর হওয়ার তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ে ৮ নভেম্বরে দেওয়া নির্বাচনের তফসিলে উল্লিখিত তফসিলের ঘোষণা, মনোনয়নপত্র ও ভোট গ্রহণের তারিখসমূহকে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচী দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

মূলত, সম্প্রতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচী প্রকাশ হয়েছে দাবিতে একটি ডিজিটাল ব্যানার ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচী প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রথম তফসিলে থাকা সময়সূচীকেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচী দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ বিভিন্ন জোটের দাবির পর ভোট গ্রহণের সময় ২৩ ডিসেম্বর থেকে এক সপ্তাহ পিছিয়ে  ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল পুনঃনির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন৷

সুতরাং, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচী প্রকাশ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কাতার আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতির কান ধরে দল থেকে পদত্যাগ করার গুজব

0

সম্প্রতি, কাতার আওয়ামী লীগ সভাপতি কান ধরে উঠ বস করে দল থেকে পদত্যাগ করেছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কাতার আওয়ামী লীগ শাখার তৎকালীন সভাপতি ও বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ওমর ফারুক চৌধুরীর কান ধরে উঠ বস করে দল থেকে পদত্যাগ করার তথ্যটি সঠিক নয় বরং ২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান কর্তৃক শ্যামল কান্তি ভক্ত নামে এক শিক্ষককে কান ধরে ওঠবোস করানোর প্রতিবাদে নিজেই কান ধরে ওঠ বস করেছিলেন ওমর ফারুক চৌধুরী।

মূলত, ২০১৬ সালের মে মাসে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে স্কুলটির দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে শাসন করার সময় ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠে। পরবর্তীতে স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে ওঠবস করানো হয়েছিল। এই ঘটনায় দেশের সচেতন নাগরিকেরাও কান ধরে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান। এরই প্রেক্ষিতে কাতার আওয়ামী লীগ শাখার তৎকালীন সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীও কানে ধরা ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে প্রতিবাদ জানান। তবে তার কান ধরার এই ছবিটিই পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি কান ধরে দল থেকে পদত্যাগ করেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেননি বরং বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগ, কাতার শাখার প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেসময় এটিকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর অটোগ্রাফ চাননি

0

সম্প্রতি, রোনালদোই প্রথম মানুষ যার অটোগ্রাফ চেয়েছেন রানী শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন, পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ফুটবল তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর অটোগ্রাফ চাননি বরং কোনোপ্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

মূলত, ২০২১ সালের ০১ সেপ্টেম্বরে ‘Sport Innovation Society’ নামের একটি ভেরিফাইড টুইটার একাউন্ট থেকে রানী এলিজাবেথ পর্তুগিজ ফুটবল তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সাক্ষরিত জার্সি চাওয়ার দাবিতে একটি টুইট প্রকাশ করা হয় এবং উক্ত টুইটকে সূত্র উল্লেখ করে বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এর দুই ঘন্টা পর ‘Sport Innovation Society’ টুইটটি সড়িয়ে নেয় এবং তাদের পূর্বের টুইটটের সোর্সের সত্যতা নিশ্চিত না থাকায় পরবর্তীতে তারা আরও একটি টুইট পোস্ট করে ক্ষমা প্রদর্শন করেন। যা রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ফুটবল তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর থেকে অটোগ্রাফ চেয়েছেন দাবিতে বিভিন্ন সময়ে প্রচার হয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি, সময় টিভিতে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এবং পর্তুগিজ ফুটবল তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর একটি কোলাজ ছবিসহ প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট নিয়ে রোনালদোই প্রথম মানুষ যার অটোগ্রাফ চেয়েছেন রানী শীর্ষক দাবিতে ভিত্তিহীন এই তথ্যটি সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

পূর্বে একই দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।