Home Blog Page 607

ঘরবাড়িসহ মানুষের মুখ সদৃশ ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি

সম্প্রতি, “একটা অসাধারন ক্যামেরায় তোলা ফটো! ভালো করে ফটো টি লক্ষ্য করুন পরে লার্জ করুন -আর বলুন কি দেখতে পেলেন?” শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ছবি দেখুন, পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ক্যামেরায় তোলা ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত আলোচিত ছবিটি বাস্তব নয় বরং উক্ত ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, ছবিতে যে মুখমণ্ডলের অবয়ব দৃশ্যমান তা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনসিও লুলা দা সিলভার একটি ছবির আকৃতি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘Reddit’ এ ‘r/brasilivre’ নামক গ্রুপে ‘u/raney93’ নামক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ১২ আগস্ট “Ó o meninão passando no seu feed.” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত পোস্টের ছবির সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

তবে এই ছবিটির লোকেশন কোথায় বা কে তুলেছেন এমন কোনো তথ্য এই পোস্টে পাওয়া যায়নি।

আরও অনুসন্ধান করে, Reddit এ একই গ্রুপে একই অ্যাকাউন্ট থেকে গত ১৩ আগস্ট “Compilação final pra vocês mandarem pras tias do Zap!” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত চারটি ছবির সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

পোস্টটির কমেন্ট বক্সে ‘u/raney93’ অ্যাকাউন্ট থেকে একটি কমেন্ট করে নিশ্চিত করেছেন যে তিনি এটি কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে ছবি তৈরির টুলস Stable Diffusion এবং Control Net এর সাহায্যে তৈরি করেছেন।

Screenshot from ‘Reddit’

বিষয়টি আরও অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি ছবি শনাক্তকারী ওয়েবসাইট ‘aiornot.com’ এ উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি আপলোড করলে ওয়েবসাইটি ছবিটিকে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হিসেবে শনাক্ত করে।

Screenshot from aiornot.com

এছাড়া, ক্যামেরায় তোলা অসাধারণ ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ছবির পোস্টের অনেকেই কমেন্টে জানান যে তারা ছবিটিতে একটি মুখমণ্ডলের অবয়ব দেখতে পাচ্ছে।

Image Collage by Rumor Scanner

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিটিতে কার মুখমণ্ডলের অবয়ব ছিলো তা অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার দেখে যে ছবিটি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনসিও লুলা দা সিলভার একটি ছবিকে অনুকরণ করে তৈরি করা হয়েছে।

Image Comparison by Rumor Scanner

মূলত, ঘরবাড়ি এবং ছোট খালের উপস্থিতিতে মানুষের মুখের অবয়বযুক্ত একটি ছবি সাধারণ ক্যামেরায় তোলা দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায় উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এর সাহায্যে তৈরি করা। গত ১২ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘Reddit’ এ ‘r/brasilivre’ নামক গ্রুপে ‘u/raney93’ নামক অ্যাকাউন্ট থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে ছবি তৈরির টুলস Stable Diffusion এবং ControlNet এর সাহায্যে তৈরি পোস্ট করলে তা ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে যায়। এছাড়া, ছবিতে থাকা মুখমণ্ডলের অবয়বটি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনসিও লুলা দা সিলভার একটি ছবির আকৃতি দিয়ে তৈরি করা।

উল্লেখ্য, Stable Diffusion হচ্ছে একটি লুকানো লেখা থেকে ছবি তৈরির ডিফিউশন মডেল। যেখানে যেকোনো অর্থবোধক লেখা ইনপুট দেওয়া হলে তা বাস্তববাদী ছবি তৈরি করতে সক্ষম। আর Control Net হচ্ছে একটি নিউরাল নেটওয়ার্ক কাঠামো যা অতিরিক্ত শর্ত যোগ করে ডিফিউশন মডেলগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে, এআই ইমেজ জেনারেশনে এটি নতুন মাত্রা যোগ করে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে বিভিন্ন সময় এআই দিয়ে তৈরিকৃত ছবি বাস্তব দাবিতে প্রচার করা হলে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনগুলো দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের আকৃতি দিয়ে তৈরি ছবিকে ক্যামেরায় তোলা বাস্তব ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ড. ইউনূসের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হওয়া নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি বারাক ওবামা

সম্প্রতি, ‘অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান প্রফেসর ড.ইউনূস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা ‘ শীর্ষক শিরোনাম সম্বলিত জাতীয় দৈনিক কালবেলার আদলে তৈরি একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট ( আর্কাইভ), পোস্ট ( আর্কাইভ) এবং পোস্ট ( আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান প্রফেসর ড.ইউনূস।। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা ‘শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত স্ক্রিনশটটি এডিটেড। প্রকৃতপক্ষে জাতীয় দৈনিক কালবেলার অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত ‘ড.ইউনূসকে চিঠিতে যা লিখলেন ওবামা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম এডিট করে উক্ত স্ক্রিনশটটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানে শুরুতে কালবেলার নামে প্রচারিত স্ক্রিনশটটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২৭ আগস্ট ২০২৩।

Screenshot : Facebook Claim Post 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে আলোচ্য স্ক্রিনশটটিতে দেওয়া তারিখ অনুযায়ী জাতীয় দৈনিক কালবেলার অনলাইন সংস্করণে গত ২৭ আগস্ট ‘ড.ইউনূসকে চিঠিতে যা লিখেছেন ওবামা‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : kalbela’s Website 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গত ১৭ আগস্ট অর্থনীতিবিদ, শান্তিতে নোবেলজয়ী প্রফেসর ড.মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি পাঠিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ড.ইউনূস সেন্টার ২৭ আগস্ট বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।’

রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, জাতীয় দৈনিক কালবেলার শিরোনাম এডিট করে উক্ত স্ক্রিনশটটি তৈরি করা হয়েছে।

Image comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথ্যের সূত্র ধরে ড.ইউনূস সেন্টারের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ২৭ আগস্ট ‘President Obama’s letter to Professor Yunus‘ শিরোনাম সম্বলিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : Yunus Centre’s Facebook Page 

চিঠিতে বলা হয়, প্রিয় প্রফেসর ইউনূস, মানুষের পরিবার এবং সমাজকে দারিদ্র্যমুক্ত করে তাদের ক্ষমতায়নের জন্য আপনার প্রচেষ্টা আমাকে দীর্ঘকাল অনুপ্রাণিত করছে। ২০০৯ সালে হোয়াইট হাউসে আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পেয়ে আমি বলেছিলাম, আপনার কর্মকাণ্ড লাখ লাখ মানুষকে তাদের নিজস্ব সম্ভাবনার কথা ভাবতে অনুপ্রাণিত করেছে।’ চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘ আমি আশা করি এটা আপনাকে শক্তি জোগাবে যে, যাদের অনেকের সম্ভাবনাকে আপনি বিনিয়োগ করেছেন এবং আমরা যারা সবার জন্য অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করছি, আপনি তাদের ভাবনায় রয়েছেন। আমি আশা আপনার গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার স্বাধীনতা অব্যাহত থাকবে।’

অর্থাৎ ড. ইউনূসকে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে কথা বলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। জাতীয় দৈনিক কালবেলার অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামকে এডিট করে উক্ত দাবিতে স্ক্রিনশটটি প্রচার করা হচ্ছে। 

এছাড়া,আলোচ্য বিষয়ে বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায় নি। 

মূলত, অর্থনীতিবিদ, শান্তিতে নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে গত ১৭ আগস্ট একটি চিঠি পাঠিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এই বিষয়ে দেশের জাতীয় দৈনিক কালবেলার অনলাইন সংস্করণে গত ২৭ আগস্ট ‘ড.ইউনূসকে চিঠিতে যা লিখেছেন বারাক ওবামা’ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন  প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে উক্ত প্রতিবেদনের শিরোনাম এডিট করে ‘অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান প্রফেসর ড.ইউনূস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা ‘শীর্ষক শিরোনামে একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও ড.ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হচ্ছেন দাবিতে কালবেলার সূত্রে ভুয়া তথ্য প্রচার করা হলে সেটিকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ‘অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান প্রফেসর ড.ইউনূস।। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা ‘ শীর্ষক শিরোনামে দৈনিক কালবেলার আদলে প্রচারিত স্ক্রিনশটটি এডিটেড।

তথ্যসূত্র

গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর বক্তব্যকে বিকৃত করে প্রচার 

সম্প্রতি, “দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর, জন্য আফসোস করে কি বললেন স্টেজে তাহেরী হুজুর” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও ক্লিপ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমনকিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমনকিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ভিডিও ক্লিপটিতে গিয়াস উদ্দিন তাহেরীকে বলতে শোনা যায়, আজকে এই লোকটা কবরে থাকবে আমি কল্পনাও করি নাই। আল্লাহ যেন তার কবরটাকে জান্নাতের গোলজার বানিয়ে দেয়। আমিন কন!… উনি আদমওয়ালা মানুষ ছিলেন, নম্র প্রকৃতির মানুষ ছিলেন৷ বেশী কথা বলতেন না, কিন্তু হক কথা বলতেন। আকিদার ক্ষেত্রে তিনি কাউকে ছাড় দিতেন না।…”

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর, জন্য আফসোস করে কি বললেন স্টেজে তাহেরী হুজুর” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপটিতে কথাগুলো গিয়াস উদ্দিন তাহেরী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে উদ্দেশ্য করে বলেননি বরং মুজিব এবং মতিউর রহমান নামের দুই ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে এক ওয়াজ-মাহফিলে তিনি কথাগুলো বলেছিলেন। 

রিভার্স ইমেজ সার্চ করে Md. Gias Uddin নামের একটি ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

পোস্টটিতে দাবিটি মিথ্যা বলে ক্যাপশনে লিখা হয়, বিরামপুর মিডিয়া কে ধন্যবাদ সত্য ভিডিও তুলে ধরে নষ্ট ভ্রষ্ট শি*য়াদের দুই গালে জুতা মারার জন্যে।

১ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, মূল ভিডিওটির আগের ও পরেট অংশ কেটে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে উদ্দেশ্য করে কথাগুলো বলেছেন বলে প্রচার করা হচ্ছে। 

Screenshot: Facebook 

পরবর্তীতে মূল ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ইসলামিক ওয়াজ-মাহফিল ভিত্তিক Birampur HD Media নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর পুরো ওয়াজটি খুঁজে (আর্কাইভ) পাওয়া যায়। 

১ ঘন্টা ২২ সেকেন্ডের ওয়াজ ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় ভিডিও শুরুর ৭ মিনিটে গিয়াস উদ্দিন তাহেরী বলেন, আমার মুজিব ভাই খুব মহব্বতের মানুষ আছিলেন। লোকটা আমারে দাওয়াত কইরা লোকটার নাম্বারটা আমারে দিয়া আইছে। আজকে এই লোকটা কবরে থাকবে আমি কল্পনাও করি নাই। আল্লাহ যেন তার কবরটাকে জান্নাতের গোলজার বানিয়ে দেয়। আমিন কন!…।

Screenshot: YouTube 

পরবর্তীতে ওয়াজটির ১১ মিনিট ১১ সেকেন্ডে গিয়াস উদ্দিন তাহেরীকে বলতে শোনা যায়, আল্লাহর অলি মতিউর রহমান সাহেবের খেলার কথা। উনি আদমওয়ালা মানুষ ছিলেন, নম্র প্রকৃতির মানুষ ছিলেন৷ বেশী কথা বলতেন না, কিন্তু হক কথা বলতেন। আকিদার ক্ষেত্রে তিনি কাউকে ছাড় দিতেন না।…”

Screenshot: YouTube 

অর্থাৎ, গিয়াস উদ্দিন তাহেরী কথাগুলো দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে উল্লেখ করে নয় বরং মুজিব ও মতিউর রহমান নামের দুই ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন। 

মূলত, গিয়াস উদ্দিন তাহেরী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে উদ্দেশ্য করে ওয়াজ-মাহফিলের কথা বল আফসোস করেছেন শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে হওয়া একটি ওয়াজ-মাহফিলে গিয়াস উদ্দিন তাহেরী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে উদ্দেশ্য করে কথাগুলো বলেননি বরং মুজিব এবং মতিউর রহমান নামের দুই ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে তিনি কথাগুলো বলেছিলেন। 

প্রসঙ্গত, জামায়াতে ইসলামীর হয়ে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পর পর দুইবার বাংলাদেশের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। ২০১০ সালের ২৯শে জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগের একটি মামলায় তিনি গ্রেফতার হন। পরে ২ আগস্ট এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর থেকেই কারাগারে ছিলেন জামায়াতের এই নেতা। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে আনা মোট বিশটি অভিযোগের মধ্যে আটটিতে তিনি আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর দুটো অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে আদালত ২০১৩ সালে তাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেয়। তবে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে ২০১৪ সালে আপীল বিভাগ সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়। দণ্ডাদেশ পুনর্বিবেচনা চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও সাঈদীর পৃথক রিভিউ আবেদন খারিজ করে ২০১৭ সালের ১৫ মে আমৃত্যু কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়। এরপর থেকে কারাগারে থেকেই সাজা ভোগ করছিলেন তিনি। গত ১৪ আগস্ট রাতে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।

সুতরাং, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে নিয়ে গিয়াস উদ্দিন তাহেরী বক্তব্য দিয়েছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ভারতীয় অভিনেত্রীর ছবিকে সাকিব আল হাসানের স্ত্রীর ভাইরাল ছবি দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি, “সাকিব আল হাসান এর স্ত্রীর ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল” শিরোনামে তিনটি ছবির কোলাজ ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। যেখানে সাকিব আল হাসানের জার্সি পরিহিত একটি ছবি এবং তার বিয়ের সময়ের একটি কাপল ছবির সাথে বিকিনি পরিহিত একটি ছবি যুক্ত করে সেই ছবিটিকেও সাকিব আল হাসানের স্ত্রীর ছবি হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাকিব আল হাসান এর স্ত্রীর ভাইরাল ছবি দাবিতে প্রচারিত তিন ছবির কোলাজে থাকা বিকিনি পরিহিত ছবিটি সাকিব আল হাসান এর স্ত্রীর ছবি নয় বরং সেটি ভারতীয় অভিনেত্রী ও মডেল শামা সিকান্দারের একটি ছবি। ভারতীয় অভিনেত্রী শামা সিকান্দারের একটি ছবি সংগ্রহ করে সেটি সাকিব আল হাসান ও তার স্ত্রীর ছবির সাথে কোলাজ করে ছবিটিকে সাকিব আল হাসানের স্ত্রীর ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম India.com এ “Shama Sikander Bikini And Swimwear Pictures” শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটো স্টোরিতে বিকিনি পরিহিত হুবুহু একই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায় এটি শামা সিকান্দার নামের একজন ভারতীয় অভিনেত্রীর ছবি।

Screenshot: india.com

INDIAHERALD.COM নামের অপর একটি ভারতীয় পোর্টালেও “Shama Sikander Hot Sizzling Stills” শিরোনামে ২০২০ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ঐ একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। সেখান থেকেও ছবিটি শামা সিকান্দার নামের একজন ভারতীয় অভিনেত্রীর বলে জানা যায়।

Screenshot: INDIAHERALD.COM

পরবর্তীতে শামা সিকান্দারের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে অনুসন্ধানে একই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ২০১৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ঐ ছবিটি তিনি নিজ ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করেছিলেন। 

Screenshot : Shama Sikander/Instagram 

মূলত, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের একটি ছবি এবং তার স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরের সাথে তার বিয়ের সময়ের একটি ছবির সাথে শামা সিকান্দার নামের একজন ভারতীয় অভিনেত্রীর বিকিনি পরিহিত অপর একটি ছবি কোলাজ করে সেই ছবিটিকে সাকিব আল হাসানের স্ত্রীর ভাইরাল ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।  

সুতরাং, ভারতীয় মডেল শামা সিকান্দারের একটি ছবিকে সাকিব আল হাসানের স্ত্রী ভাইরাল ছবি হিসেবে প্রচার করার বিষয়টি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সিজিআই পদ্ধতিতে তৈরি ভিডিওকে চন্দ্রযান-৩ এর বাস্তব দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, পৃথিবী থেকে ক্যামেরায় চন্দ্রযান-৩ দেখা গেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পৃথিবী থেকে ক্যামেরায় চন্দ্রযান-৩ দেখা গেছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি বাস্তব নয় বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সিজিআই পদ্ধতিতে তৈরি করা ভিডিওকে চন্দ্রযান-৩ এর ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কী-ফ্রেম কেটে সেখান থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Abhinavraj1212 নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টে (সাবেক টুইটার) গত ২২ আগস্ট ‘Chandrayan 3 is landing on the moon’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আলোচিত ভিডিওটির অনুরূপ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: X (Former Twitter)

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে এর নিচের দিকে বাম পাশে @akhilv.s শীর্ষক একটি লেখা প্রদর্শিত হতে দেখা যায়।

 Screenshot: X (Former Twitter)

পরবর্তীতে উক্ত লেখাটির সূত্রধরে কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে Akhil Vs নামের একটি  ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Instagram 

অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এর ব্যবহারকারী ভারতের কেরালা প্রদেশের একজন ভিএফএক্স বা সিজিআই আর্টিস্ট। এই অ্যাকাউন্টটিতে গত ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশিত আলোচিত ভিডিওটির অনুরূপ একটি রিল ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Instagram

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা প্রতীয়মান হয় যে, ২৩ আগস্ট চন্দ্রযান-৩ পাঠানোর ভিডিও কোনভাবেই ১৫ আগস্ট প্রকাশ হতে পারে না। এছাড়াও ভিডিওটি পোস্টকারী ব্যক্তি একজন বিএফএক্স আর্টিস্ট হওয়ায় এটা বোঝা যায় যে, উক্ত ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সিজিআই পদ্ধতিতে তৈরি একটি গ্রাফিক্স ভিডিও। 

মূলত, গত ২৩ আগস্ট ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩ চাঁদের বুকে অবতরণ করে। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে চন্দ্রযান পাঠানোর পরবর্তী সময়ে পৃথিবী থেকে ক্যামেরায় চন্দ্রযান-৩ দেখা গেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে এটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সিজিআই পদ্ধতিতে তৈরি একটি গ্রাফিক্স ভিডিও। ভিডিওটির নির্মাতা চন্দ্রযান-৩ চাঁদে অবতরণের প্রায় সপ্তাহখানেক আগে উক্ত ভিডিওটি ইন্টারনেটে প্রচার করেন।

প্রসঙ্গত, মহাকাশে দীর্ঘ এক মাস নয় দিনের যাত্রা শেষে গত ২৩ আগস্ট ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩ চাঁদের বুকে অবতরণ করছে। বুধবার ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে এই ঐতিহাসিক সাফল্যের মধ্য দিয়ে বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে ভারত এই গৌরব অর্জন করে এবং চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে অবতরণের দিক থেকে তারাই হল প্রথম দেশ।

উল্লেখ্য, পূর্বেও সিজিআই পদ্ধতিতে তৈরি একাধিক ভিডিও বাস্তব দাবিতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সিজিআই পদ্ধতিতে তৈরি একটি গ্রাফিক্স ভিডিওকে পৃথিবী থেকে ক্যামেরায় চন্দ্রযান-৩ দেখা গেছে দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

নিউটনের সেই আপেল গাছের চিত্র দাবিতে ছড়াল আসল গাছকে ক্লোন করে তৈরি ভিন্ন গাছের ছবি

সম্প্রতি, ‘এই সেই বিখ্যাত আপেল গাছ যার নিচে স্যার আইজ্যাক নিউটন বসেছিলেন’ শীর্ষক দাবিতে একটি আপেল গাছের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে ( আর্কাইভ)  এবং এখানে ( আর্কাইভ)  

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিতে যে গাছের ছবিটি প্রচার করা হচ্ছে সেটি যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির ট্রিনিটি কলেজে অবস্থিত আপেল গাছের ছবি এবং এটি স্যার আইজ্যাক নিউটন যে আপেল গাছের নিচে বসেছিলেন সেই প্রকৃত আপেল গাছ নয়। প্রকৃতপক্ষে এটি আসল আপেল গাছ থেকে কলম করে তৈরি একটি গাছ। এছাড়াও প্রকৃত আপেল গাছটির অবস্থান কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে নয় বরং সেটির অবস্থান ছিল ইংল্যান্ডের লিঙ্কনশায়ারের উলসথর্প মানর গ্রামে আইজ্যাক নিউটনের বাড়ির নিকটে। 

নিউটনের সেই আপেল গাছ কি বেঁচে আছে? গাছটির অবস্থান কোথায়?

স্যার আইজ্যাক নিউটন যে আপেল গাছটির নিচে বসেছিল সেই মাতৃগাছটি সম্পর্কে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে ‘Atlas Obscura’ নামের একটি ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ২৬ জুন ‘How Isaac Newton’s Apple Tree Spread Across the World‘ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot Source : Atlas Obscura

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইংল্যান্ডের লিঙ্কনশায়ারের উলসথর্প মানর গ্রামে নিউটনের বাড়ির সামনের বাগানে দাঁড়িয়ে থাকা আপেল গাছটিকেই ব্যাপকভাবে নিউটনের বসে থাকা সেই আপেল গাছ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ধারনা করা হয় গাছটি ১৬৫০ সালের দিকে রোপণ করা হয়েছিল এবং ১৮১৬ সালের দিকে ঝড়ের ফলে গাছটি আংশিক ভেঙ্গে গিয়েছিল। কিন্তু গাছটি পুনরায় শিকড় দেয় এবং ৩৫০ বছরের পুরনো এই গাছটি এখনো দাঁড়িয়ে আছে। 

ইংল্যান্ডের  University of York এর ওয়েবসাইটের একটি প্রতিবেদনেও একই তথ্য পাওয়া যায়। সেখান থেকে যা জানা যায় তা হলো, নিউটন কোন গাছ থেকে আপেলের পতন দেখেছেন তা নির্দিষ্ট করেননি, তবে নিউটনের বাগানে একটি মাত্র গাছ জন্মেছিল, তাই সেই গাছটিকেই নিউটনের সেই মধ্যাকর্ষন সূত্রের সাথে সম্পৃক্ত আপেল গাছ চিহ্নিত করা হয়।

এছাড়াও, বিখ্যাত ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান স্নোপস তাদের একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে আইজ্যাক নিউটনের সেই আপেল গাছের বেঁচে থাকার বিষয়টি সত্য হিসেবে নিশ্চিত করেছে। স্নোপস জানায়, ‘আইজ্যাক নিউটন যে গাছ থেকে মাধ্যাকর্ষণ সূত্র নিয়ে এসেছিলেন সেই গাছটি এখনও বেঁচে আছে এবং ইংল্যান্ডের উলস্টর্প ম্যানরে নিউটনের পারিবারিক বাড়িতে ভালোভাবেই রয়েছে।’

দাবিকৃত গাছটি সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে 

এ নিয়ে অনুসন্ধানে কি ওয়াড সার্চ এর মাধ্যমে ‘Atlas Obscura’ নামক ওয়েবসাইটে ‘Newton’s Apple Tree,Triniti College‘ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে উল্লেখিত আপেল গাছটির সাথে ফেসবুক প্রচারিত গাছটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Atlas Obscura

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘এ গাছটি যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির ট্রিনিটি কলেজের প্রধান ফটকের পাশে অবস্থিত। এই আপেল গাছটি মূলত ইংল্যান্ডের লিঙ্কনশায়ারের উলসথর্প মানর গ্রামে নিউটনের বাড়ির সামনে অবস্থিত আসল মাতৃগাছটি থেকে কলম করে তৈরি করা হয়েছিল। যে মাতৃগাছের নিচে নিউটন বসেছিল সেই গাছটির একটি শাখা এ গাছটি, যা এখন ন্যাশনাল ট্রাস্ট দ্বারা পরিচর্চা করা হয়। মূলত নিউটনের অবদানকে স্মরণ রাখার জন্য ১৯৫৪ সালে এই গাছটি সেখানে রোপণ করা হয়েছিল।

Creating My Cambridge নামের অপর একটি ওয়েবসাইটে ‘Isaac Newton : Newton’s Scientific Discoveries‘ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও আলোচিত গাছটি সম্পর্কে একই তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘স্যার আইজ্যাক নিউটন যে আপেল গাছের নিচে বসেছিল সেই গাছটি থেকে আলোচিত গাছটি কলম করা হয়েছিল। সে গাছটি থেকে মূলত সবুজ আপেল পাওয়া যায়। সরাসরি খাওয়া না গেলেও সেটি রান্না করলে খাওয়ার উপযোগী হয়। আর নিউটন যে মাতৃগাছটির নিচে বসেছিল সেই গাছটিতে লাল আপেল হতো, যা সরাসরি খাওয়া যেত।’

Screenshot Source : Creating My Cambridge’s website 

এছাড়াও, Cambridgeshire Live এর ওয়েবসাইট cambridge-news.co.uk তে একই তথ্যই পাওয়া যায়। 

Screenshot: Cambridgeshire Live

অর্থাৎ যে গাছটিকে স্যার আইজ্যাক নিউটন এর বসে থাকা সেই প্রকৃত আপেল গাছ দাবি করা হচ্ছে সেটি মূলত আসল গাছকে কলম করে তৈরি একটি গাছ। এটি নিউটনের সেই মূল আপেল গাছ নয়।

নিউটনের সেই মাতৃগাছটির ক্লোন আছে আরো

অনুসন্ধানে মাতৃগাছটির আরও ক্লোন সম্পর্কে জানা যায়। কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘বিবিসি নিউজ’ এ ২০২২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ‘ Cambridge University Botanic Garden’s ‘Newton’s apple tree’ falls in storm ‘ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : BBC NEWS

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটির বোটানিক্যাল গার্ডেনে একটি আপেল গাছ রয়েছে যা লিঙ্কনশায়ারের গ্রান্থামের উলসথর্প ম্যানরে অবস্থিত মাতৃগাছটি থেকে ক্লোন করা হয়েছিলো। যেটি ছত্রাকজনিত কারনে দুর্বল হয়ে ঝড়ে গাছটি পরে গিয়েছিল। তবে বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তাদের কাছে গাছটির আরো একটি ক্লোন রয়েছে যা খুব শীঘ্রই তারা রোপণ করবে। 

পাশাপাশি ভারতের ইংরেজি দৈনিক ‘ THE TIMES OF INDIA ‘ তে ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই ‘Newton’s apple tree may soon take ‘root’ in India‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot Source: THE TIMES OF INDIA

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, লিঙ্কনশায়ারের গ্রান্থামের উলসথর্প ম্যানরে অবস্থিত মাতৃগাছটি থেকে ক্লোন করা গাছ ইংল্যান্ডের বিভিন্ন স্থানে রোপণ করা হয়েছে। এবং ভারতের পুনের ইন্টার-ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্সেও আনা হয়েছিল এ গাছের চারা।

ক্লোন কি 

ক্লোন হলো কোনো একটি জীবের জেনেটিক কপি যা ক্লোনিং নামক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরী করা হয়। ক্লোন করা গাছগুলো মূল গাছের সাথে জেনেটিক্যালি অভিন্ন হবে এবং একই হারে বৃদ্ধি পাবে এবং মূল গাছের মতোই কীটপতঙ্গ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকবে। কোনো একটি জীব থেকে অনুরূপ জীব তৈরীতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। ক্লোন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে দেখুন এখানে। 

মূলত, সম্প্রতি ফেসবুকে ‘এই সেই বিশ্ব বিখ্যাত আপেল গাছ যার নিচে স্যার আইজ্যাক নিউটন বসেছিল’ দাবিতে ক্যামব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে অবস্থিত গাছের ছবি প্রচার করা হয়। তবে  অনুসন্ধানে দেখা যায়, যে গাছটিকে নিউটনের সেই আসল গাছ দাবি করা হয়েছে সেটি মূলত ইংল্যান্ডের লিঙ্কনশায়ারের উলসথর্প মানর গ্রামে নিউটনের বাড়ির সামনে অবস্থিত আসল মাতৃগাছ থেকে কলম করে তৈরি একটি গাছ। 

সুতরাং, মূল গাছ থেকে কলম করে তৈরি একটি ক্লোন গাছের ছবিকে ‘এই সেই গাছ যে গাছের নিচে স্যার আইজ্যাক নিউটন বসেছিল’ শিরোনামে প্রচার করে সেটিকে নিউটনের সেই মূল গাছ দাবির বিষয়টি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Analysis 

দেশে জরুরী অবস্থা জারির দাবিটি মিথ্যা

সম্প্রতি, ‘দেশে জরুরী অবস্থা জারি,মাঠে সেনাবাহিনী’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। 

ইউটিউবে প্রচারিত উক্ত ভিডিওটি দেখুন এখানে। ভিডিওটির আর্কাইভ ভার্সন এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপির সভা, সমাবেশ প্রতিরোধে কোনো প্রকার জরুরী অবস্থা জারি এবং সেনাবাহিনীর মাঠে নামা নিয়ে কোনো প্রকার ঘটনা ঘটেনি বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও সংযুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় একটি ভিডিও তৈরি করে কোনোপ্রকার তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

গত ১ আগস্ট Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং একজন সেনা কর্মকর্তার ছবি থাম্বনেইলে ব্যবহার করে ‘ হাসিনার লালবতি! দেশে জরুরী অবস্থা জারি, মাঠে সেনাবাহিনী | Caretaker government | তত্ত্বাবধায়ক সরকার ‘ শীর্ষক শিরোনামে ১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। 

Screenshot : Sabai Sikhi YouTube Channel 

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে ভিডিওতে থাকা বিষয়বস্তুর সাথে থাম্বনেইলের কোনো প্রকার মিল পাওয়া যায়নি। উক্ত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়,এটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ক্লিপ নিয়ে তৈরি একটি নিউজ ভিডিও। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও ক্লিপের সাথে নির্বাচনের সময়ে সেনাবাহিনীর কার্যক্রমের পুরোনো কিছু ছবি দেখা যায়।

১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের এই ভিডিওটির শুরুতে ঢাবির আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের সাক্ষাৎকারের একটি ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করা হয়। এরপর ভিডিওটির পরবর্তী অংশে প্রতিবেদনে সেনাবাহিনীর কিছু ছবি যুক্ত করে বলা হয়,’এবার বিএনপির সমাবেশ ও সহিংসতা প্রতিরোধে জরুরী অবস্থার ঘোষণা দিলেন আওয়ামী লীগ সরকার। জাতীয় নির্বাচনের আগে পরিস্থিতির অবনতি হলে যেকোনো সময় জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হবে, এর ফলে সকল রাজনৈতিক দল ও সংগঠন সমাবেশে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।এর ফলে সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে বলে জানান রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও উক্ত দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ছবি ও ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই দাবিগুলো প্রচার করা হচ্ছে।

Screenshot : Sabai sikhi YouTube Channel 

পাশাপাশি ভিডিওটি’র কি ফ্রেম কেটে কয়েকটি স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা যায়, ভিডিওটি শুরুর ১ মিনিট ১৫ সেকেন্ড ‘ এরশাদ বি-রো-ধী-আ-ন্দো-লনের চেয়েও বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে : ড. আসিফ নজরুল| Daily Manabzamin ‘ শীর্ষক শিরোনামে গত ৩১ জুলাই বাংলাদেশের দৈনিক মানবজমিনের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ভিডিও থেকে নেওয়া হয়েছে।  

Screenshot : The Daily ManabZamin’s YouTube Channel 

এবিষয়ে সাম্প্রতিক দাবি এবং প্রকৃত তথ্যের পাশাপাশি তুলনা দেখুন:

Image comparison by Rumor Scanner 

তাছাড়া, ভিডিওটি থেকে নেওয়া কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে দেখা যায়, সেগুলো অনেক পুরোনো প্রতিবেদন থেকে নেওয়া ছবি।

পাশাপাশি দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, নির্বাচন কমিশনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট বা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির জন্য কোনো জরুরী অবস্থা জারি সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও সংযুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে। 

মূলত, আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপির সভা, সমাবেশ প্রতিরোধে হঠাৎ করেই দেশে জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে এমন কোনো জরুরী অবস্থা জারির ঘটনা ঘটেনি। 

উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় পূর্বেও একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে। 

সুতরাং আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপির সভা, সমাবেশ প্রতিরোধে হঠাৎ করেই দেশে জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

পুরোনো ভিডিওকে জামায়াতের হরতালে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, হরতালের নামে নৈরাজ্য ও বিশৃংখলা করায় জামায়াতে ইসলামী দলের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতালে নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ শীর্ষক দাবিটি প্রচারিত ভিডিওটি সঠিক নয় বরং ভিডিও গত ১৫ আগস্ট চট্টগ্রামে হওয়া জামায়াত শিবিরের সাথে পুলিশের সাধারণ সংঘর্ষের ঘটনার এবং সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামী দল কোনো হরতাল কর্মসূচী পালন করেনি। 

ভিডিওটির কিছুর স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চ করে, Cvoice24.com নামক চট্টগ্রাম ভিত্তিক একটি স্থানীয় নিউজ পোর্টালের ফেসবুক পেজে গত ১৫ আগস্ট “চট্টগ্রামে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে (আর্কাইভ) পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook 

৭ মিনিট ১০ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতালে পুলিশের সাথে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাথে হুবহু মিল রয়েছে ও উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে Cvoice24.com এর লোগো রয়েছে এবং ভিডিওটি ৭ মিনিট ১০ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের।

অর্থাৎ, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি Cvoice24.con পেজ থেকেই সংগৃহীত।

এছাড়া, কী ওয়ার্ড সার্চ করে সম্প্রতি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের হরতাল কর্মসূচী পালনের কোনো তথ্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অন্যদিকে গত ১৫ আগস্ট দৈনিক সমকালে “চট্টগ্রামে পুলিশ-জামায়াত সংঘর্ষ, আটক ৩০” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চট্টগ্রামে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজা আয়োজনকে ঘিরে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। নগরের আলমাস মোড় থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ পরে নগরের ওয়াসা মোড়, কাজির দেউড়ি ও জিইসি পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। 

Screenshot: Daily Samakal 

মূলত, গত ২২ আগস্ট সরকারের পদত্যাগের দাবিতে দেশজুড়ে দিনব্যাপী ‘অহিংস’ হরতালের ডাক দিয়েছিলেন প্রকৌশলী ম ইনামুল হকের নেতৃত্বাধীন সর্বজন বিপ্লবী দল। এই হরতালের কর্মসূচীকে কেন্দ্র করেই জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পুরোনো একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেম প্রচার করা হচ্ছে। তবে ২২ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর কোনো হরতাল কর্মসূচী ছিলো না এবং এইদিন পুলিশের সাথে তাদের কোনো সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেনি।

সুতরাং, ভিন্ন ঘটনার এবং পুরোনো ভিডিওকে সম্প্রতি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সুধা মূর্তির সবজি বিক্রি করার দাবিটি সত্য নয়

0

সম্প্রতি, “সুধা মূর্তি প্রতিদিন একটা সময় করে সব্জি বিক্রি করেন,এবং প্রতিদিন ফুটপাতের পাশে বসে নিজের অর্জিত অর্থ দিয়ে রান্না করে প্রচুর দরিদ্র মানুষ কে খাওয়ান।” শীর্ষক দাবিতে একটি কোলাজ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

যা দাবি করা হচ্ছে

গোল্ড মেডেলিস্ট ইঞ্জিনিয়ার, পদ্মশ্রী পদকপ্রাপ্ত এবং ভারতীয় ব্যবসায়ীর নারায়ণ মূর্তির সুধা মূর্তি। তিনি প্রতিদিন একটা সময় করে সবজি বিক্রি করেন এবং প্রতিদিন ফুটপাতের পাশে বসে নিজের অর্জিত অর্থ দিয়ে রান্না করে অনেক দরিদ্র মানুষকে খাওয়ান। শুধুমাত্র নিজের ইগো, নিজেকে বড়ো ভাবা কন্ট্রোল করার জন্য, সমাজের দরিদ্র মানুষগুলোর দুঃখগুলো বোঝার জন্য তিনি এমনটা করেন।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন, পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইনফোসিস ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন সুধা মূর্তি প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে সবজি বিক্রি করার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে সুধা মূর্তি কখনো সবজি বিক্রি করেননি। এছাড়া, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি ভারতের জয়নগরের রাঘবেন্দ্র মঠে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজের সময়ের তোলা।

ছবি যাচাই ০১

অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘Timesnownews’ এ ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত “Sudha Murty is not selling vegetables in this viral picture. Know the truth here” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনের ছবির সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সুধা মূর্তি প্রতি বছর তিন দিনের জন্য ভারতের জয়নগরের রাঘবেন্দ্র মঠে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন। সেসময় তিনি সবজির মাঝে বসে সেগুলোকে খাবারের জন্য প্রস্তুত করছিলেন।

বিষয়টি আরও অধিকতর নিশ্চিত করার জন্য ভারতীয় গণমাধ্যম ‘News 18’ এ ২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর “Seen Viral Image of Sudha Murthy ‘Selling’ Vegetables at Temple? This is The Story Behind it” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনে সুধা মূর্তির দেওয়া একটি সাক্ষাতকার খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from News 18

প্রতিবেদনটিতে আইএএনএস এর বরাতে দেওয়া একটি সাক্ষাতকারে সুধা মূর্তি বলেন, এমন ভুয়া খবরের জন্য আলোচনায় আসায় তিনি লজ্জিত।

তিনি বলেন, ‘আমি সেখানে সবজি বিক্রি করতে বসে ছিলাম না। আমি সেখানে মঠে ছিলাম, সবজি বিক্রি করতে না। এটি আমার কাছে খুব ভালো লাগে। ভারতের জয়নগরের রাঘবেন্দ্র মঠে বাৎসরিক তিন দিনের জন্য সেবা করতে আমি ফল গুলোর মাঝখানে বসেছিলাম যাতে করে আমি ভালো ভালো বেঁছে নিয়ে রান্না করতে পারি।’

ছবি যাচাই ০২

অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘ Business Today’ এ গত ১০ মার্চ “Sitting on the floor, preparing ‘pongala’: Sudha Murty’s humble avatar in this pic has gone viral” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ছবর সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ২য় ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সুধা মুর্তি তিরুবনন্তপুরমের আট্টুকাল ভগবতী মন্দিরে পোংগালা উৎসবের খাবার পোংগালা নামক খাবার রান্না করছিলেন।

মূলত, ইনফোসিস ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন সুধা মূর্তি প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে সবজি বিক্রি করেন দাবিতে উনার কোলাজ ছবিসহ একটি তথ্য ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায় সুধা মূর্তি সবজি বিক্রি কখনো সবজি বিক্রি করেননি বরং ভারতের জয়নগরের রাঘবেন্দ্র মঠে বাৎসরিক তিন দিনের সেচ্ছাসেবীর ভুমিকায় কাজের সময়ের ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে সুধা মূর্তির জীবনের গল্প দাবিতে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করব ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, সুধা মূর্তির স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করার ছবিকে সবজি বিক্রি করছেন দাবিতে প্রচার করায়া হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশে কুষ্টিয়ার মানুষ সবচেয়ে সুখী শীর্ষক কোনো জরিপ প্রকাশ করেনি জাতিসংঘ 

0

সম্প্রতি, ‘বসবাসের জন্য কুষ্টিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা এবং জাতিসংঘের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে কুষ্টিয়ার মানুষ সবচেয়ে সুখী’ শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন পোস্ট ( আর্কাইভ), পোস্ট( আর্কাইভ) এবং পোস্ট (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বসবাসের জন্য কুষ্টিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা এবং জাতিসংঘের জরিপে বাংলাদেশে কুষ্টিয়ার মানুষ সবচেয়ে সুখী দাবিটি সত্য নয় এবং জাতিসংঘ কর্তৃক প্রকাশিত এমন কোনো জরিপ, প্রতিবেদন বা তালিকা-ই নেই।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘ঐতিহ্যে ঘেরা কুষ্টিয়া ‘নামক একটি গ্রুপ থেকে আলোচ্য দাবিতে প্রচারিত সম্ভাব্য প্রথম দিকের পোস্ট হিসেবে পোস্টটি ( আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot Facebook

পোস্টটিতে বলা হয় ‘বসবাসের জন্য কুষ্টিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা এবং জাতিসংঘের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে কুষ্টিয়ার মানুষ সবচেয়ে সুখী।’ উক্ত পোস্টের পর থেকেই আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হতে থাকে।

তবে বসবাসের জন্য কুষ্টিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা এবং বাংলাদেশে কুষ্টিয়ার মানুষ সবচেয়ে সুখী বিষয়ে বাংলাদেশের কোনো জরিপ কিংবা জাতিসংঘের জরিপের কোনো সূত্র ঐ পোস্টে দেওয়া হয়নি।

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে ‘বসবাসের জন্য কুষ্টিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা’ এই বিষয়ে বাংলাদেশের কোনো গণমাধ্যম কিংবা ইন্টারনেটে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় নি। পাশাপাশি জাতিসংঘের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে কুষ্টিয়ার মানুষ সবচেয়ে সুখী’ শীর্ষক কোনো জরিপ করেছে না-কি তা জানার জন্য জাতিসংঘের ওয়েবসাইট এবং ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে অনুসন্ধান করা হয়। তবে এ ধরনের জরিপের কোনো তথ্য উক্ত মাধ্যমগুলোতে খুঁজে পাওয়া যায় নি। 

এছাড়াও দেশীয় বা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে জাতিসংঘের এই জরিপ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি।

আলোচ্য দাবিটি নিয়ে ফ্যাক্টচেক চলাকালীন সময়ে সম্ভাব্য প্রথম দিকের প্রচারিত দাবিটির পোস্ট এডিট করে জাতিসংঘ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়।

Screenshot :claim post

মূলত, কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই ‘বসবাসের জন্য কুষ্টিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা এবং জাতিসংঘের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে কুষ্টিয়ার মানুষ সবচেয়ে সুখী ‘শীর্ষক দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। জাতিসংঘ থেকে এ ধরনের কোনো জরিপ পরিচালনা করা হয়না। রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে, জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে এই ধরনের কোনো জরিপের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় নি। তাছাড়া, দেশীয় বা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে জাতিসংঘের এই জরিপ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বাংলাদেশের জনপ্রিয় দল- মার্কা নিয়ে জাতিসংঘ কর্তৃক জরিপ প্রকাশিত হওয়ার দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পরলে সেটিকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ‘বসবাসের জন্য কুষ্টিয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা এবং জাতিসংঘের জরিপে কুষ্টিয়ার মানুষ সবচেয়ে সুখী’ শীর্ষক তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র