Home Blog Page 558

বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা বর্তমানে অসুস্থ নন 

0

সম্প্রতি, ‘ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা মেডাম খুব অসুস্থ আপনারা সবাই উনার জন্য মহান আল্লাহর নিকট দোয়া করবেন আল্লাহ যেন উনাকে দ্রুত সুস্থতা দান করেন’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

রুমিন ফারহানা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বর্তমানে অসুস্থ নন বরং তিনি নিজেই তার সুস্থতার বিষয়টি রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন এবং সাম্প্রতিক সময়ে দেশের রাজনৈতিক ইস্যুতে তার মতামত সম্বলিত ভিডিও ইন্টারনেটে নিয়মিত প্রচারিত হচ্ছে। এছাড়া, তার অসুস্থতার দাবিতে প্রচারিত ছবিটিও প্রায় তিনমাস পূর্বের।

তথ্য যাচাই 

সাম্প্রতিক সময়ে রুমিন ফারহানার অসুস্থতার খবরটি গত ০৬ নভেম্বর (সোমবার) থেকে আজ এই প্রতিবেদন লেখা অবধি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে। তবে, দেশের রাজনৈতিক ইস্যুতে রুমিন ফারহানা’র নিয়মিত বক্তব্য প্রচার করা ইউটিউব চ্যানেল (Rumeen’s Voice) পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির অবরোধ, পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বৈঠকের বিষয়েও রুমিন ফারহানা’র মতামত সম্বলিত ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

Screenshot: Rumeen Farhana Youtube Channel 

ছবি যাচাই 

কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বিএনপি মিডিয়া সেল এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে চলতি বছরের ১৫ আগষ্টে ‘অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক‌ বিষয়ক সহসম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত পোস্টে একই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: BNP Media Cell Facebook Post 

রুমিন ফারহানার অসুস্থতার বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন এবং তিনি নিয়মিত টিভি টকশোতে অংশগ্রহণ করছেন বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন। 

এছাড়া, দেশীয় কোনো সংবাদমাধ্যমে এবং বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতেও সাম্প্রতিক সময়ে রুমিন ফারহানার অসুস্থতার বিষয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ১৫ আগস্ট বিএনপি’র মিডিয়া সেলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারাহার অসুস্থ থাকাকালীন একটি ছবি প্রচার করা হয়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঐ ছবিটি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, রুমিন ফারহানা বর্তমানে অসুস্থ। এছাড়া, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে সম্প্রতি ইন্টারনেটে রুমিন ফারহানার সুস্থ অবস্থার নিয়মিত কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পাওয়া গেছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন সময়ে রুমিন ফারহানাকে জড়িয়ে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য প্রচার করা হলে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন

সুতরাং, বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বর্তমানে অসুস্থ থাকার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি পুরোনো। 

তথ্যসূত্র

  • Rumeen Farhana Youtube Channel : Rumeen’s Voice 
  • BNP Media Cell : Facebook Post 
  • Statement from : Rumeen Farhana 
  • Rumor Scanner’s Own Analysis  

ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন-এর ফটোকার্ড বিকৃত করে বিএনপি’র ক্ষমতা গ্রহণের ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, ‘এইমাত্র পাওয়া ক্ষমতায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’ শীর্ষক শিরোনামে টিভি চ্যানেল ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন-এর ডিজাইন সম্বলিত  একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ক্ষমতা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট (আর্কাইভ

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ক্ষমতায় দাবিতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেনি। প্রকৃতপক্ষে, গত ২ নভেম্বর ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ‘এইমাত্র পাওয়া রোববার থেকে আবারা ২ দিন অবরোধের ঘোষণা বিএনপি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন-এর আদলে তৈরি আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পরবর্তীতে দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন-এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সম্প্রতি প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন-এর ওয়েবসাইট কিংবা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। 

তবে  ২ নভেম্বর ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন-এর ফেসবুক পেজে  ‘এইমাত্র পাওয়া রোববার থেকে আবারা ২ দিন অবরোধের ঘোষণা বিএনপি’ শীর্ষক শিরোনাম বা তথ্যে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায় আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে উক্ত ফটোকার্ডটির ডিজাইন এবং ফটোকার্ডটিতে যুক্ত ছবির   হুবহু মিল রয়েছে। তবে আলোচিত ফটোকার্ডটির টেক্সট ফন্টের সাথে ইনডিপেনডেন্ট’র ফেসবুক পেজে প্রচারিত অন্যান্য ফটোকার্ডের টেক্সট ফন্টের ভিন্নতা রয়েছে। ধারণা করা যায়, এই ফটোকার্ডটি এডিট করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়া, আলোচিত ফটোকার্ডের বিষয়ে  ইনডিপেনডেন্ট-এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ৭ নভেম্বর ‘মিথ্যা প্রচার’ শীর্ষক একটি ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়। উক্ত পোস্টে ‘ইনডিপেনডেন্টের নামে ছড়িয়ে দেওয়া সংবাদটি ভুয়া’ বলে জানানো হয়।’ 

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ,  ‘এইমাত্র পাওয়া ক্ষমতায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’ শীর্ষক শিরোনামে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেনি।

মূলত, গত ২৯ অক্টোবর সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কর্মসূচি পালনের পর ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে সর্বাত্মক অবরোধের ডাক দেয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। অবরোধের শেষদিন ২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দলটির পক্ষ থেকে নতুন করে ৫ ও ৬ নভেম্বর ৪৮ ঘন্টা সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচী পালনের ডাক দেওয়া হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ফেসবুক পেজে ‘এইমাত্র পাওয়া রোববার থেকে আবারো ২ দিন অবরোধের ঘোষণা বিএনপির’ শীর্ষক শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়। সম্প্রতি সেই ফটোকার্ডটি-ই ডিজিটাল প্রযুক্তি সহায়তায় এডিট বা সম্পাদনার মাধ্যমে  ‘এইমাত্র পাওয়া ক্ষমতায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’ শীর্ষক শিরোনাম যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। 

সুতরাং, ‘এইমাত্র পাওয়া ক্ষমতায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’ শীর্ষক শিরোনামে  ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন-এর নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

এক অনুষ্ঠানে উপস্থাপক ওবায়দুল কাদেরকে কাউয়া কাদের বলেছেন দাবিতে বিকৃত ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, উপস্থাপকের উপর রেগে গেলেন ওবায়দুল কাদের সাহেব শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

কাউয়া কাদের

যা দাবি করা হচ্ছে

ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে একজন উপস্থাপক বলছেন, ‘আমাদের সামনে এই মূহুর্তে বক্তব্য রাখবেন কাউয়া কাদের ওরফে ওবায়দুল কাদের এমপি’। এরপর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছেন, ‘এতো কথা বলো কেন? উপস্থাপক এতো কথা বলে না’।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ(আইইবি)’র সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জি. এস এম মঞ্জুরুল হক মঞ্জু ওবায়দুল কাদেরকে কাউয়া কাদের বলেননি  বরং এক অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পূর্ব মুহূর্তে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক কর্তৃক ওবায়দুল কাদেরকে সম্বোধনের অংশে ভিন্ন অডিও জুড়ে দিয়ে তার সাথে উক্ত সম্বোধন নিয়ে বক্তব্যের শুরুর অংশ যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

আলোচিত দাবিটি সত্য কিনা তা যাচাইয়ে প্রচারিত ভিডিওটির কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে News ABC নামক ফেসবুক পেজে গত ২৮ আগস্ট “উপস্থাপকের উপর বিরক্ত ওবায়দুল কাদের এমপি, বেশি প্রশংসা করতে গিয়ে বিপাকে উপস্থাপক” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর বেকগ্রাউন্ড এবং ব্যক্তিদের সাথে আলোচিত ভিডিওর কিছু অংশ এবং আলোচিত ভিডিওতে দোওয়া ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটিতে এক ব্যক্তিকে বলতে দেখা যায়, ‘এই বয়সেও তিনি যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, যার কর্মকান্ড দেখে আমরা উৎসাহ পাই, অনুপ্রেরণা পাই আমাদের সেই আজকের প্রধান অতিথি জননেতা আওয়ামী লীগের বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী জননেতা জনাব ওবায়দুল কাদের এমপি আমাদেত সামনে দিক নির্দেশনামূলক আমাদের এই উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন জননেতা জনাব ওবায়দুল কাদের এমপি।’

জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “এতো কথা কথা বলো কেন? উপস্থাপক এতো কথা বলে না। কথা কমাও। উপস্থাপনা করার সময় একটু কম করে বলো। আমাকে সবাই চেনে, তুমি আমার জন্য ৫ মমিনিট ব্যয় করলে এড্রেস করার জন্য। আমার এ এড্রেসের যেগুলো তুমি বললা এগুলা না থাকলে কি নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাকে তিনবার সেক্রেটারি করে? এতো বছর মন্ত্রী ডাকে এই মানুষ গুলো কি বেকুব, এরা এসব খবর জানেনা?”

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে MT World  নামক ইউটউব চ্যানেলে গত ২৮ আগস্ট “উপস্থাপকের উপর বিরক্ত ওবায়দুল কাদের এমপি, বেশি প্রশংসা করতে গিয়ে বিপাকে উপস্থাপক” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

অনুসন্ধানের এই পর্যায়ে রিউমর স্ক্যানার টিম আলোচিত ভিডিওটি কবে কোন অনুষ্ঠানে ধারণ করা তা জানতে ফেসবুকে পাওয়া ভিডিও দুইটির প্রকাশের তারিখ অর্থাৎ ২৮ আগস্ট ওবায়দুল কাদের কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন কিনা তা জানার চেষ্টা করে। উক্ত বিষয়ে অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার টিম জানতে পারে, গত ২৮ আগস্ট ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) উদ্যোগে সংস্থাটির সদর দপ্তরের সামনে আয়োজিত ‘উন্নয়ন ও শান্তি’ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি।

পরবর্তীতে উক্ত অনু্ষ্ঠানের বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের ফিচারে ব্যবহৃত ছবির বেকগ্রাউন্ড এবং ছবিতে থাকা ওবায়দুল কাদের এবং তার পাশে সাদা পাঞ্জাবি পড়ে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তির সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা ওবায়দুল কাদের এবং উপস্থাপকের পোশাকের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Similarity between two screenshot

সময় টিভি’র এই প্রতিবেদনে উক্ত অনুষ্ঠানের সঞ্চালকের নাম উল্লেখ না থাকায় এ বিষয়ে প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন পড়ে দেখে রিউমর স্ক্যানার টিম। প্রথম আলো’র প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আইইবি’র সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল হক উক্ত অনুষ্ঠানের সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। অর্থাৎ এই মঞ্জুরুল হকই ভিডিওতে থাকা উপস্থাপক। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওতে উপস্থাপক কর্তৃক ওবায়দুল কাদেরকে বিদ্রুপসূচক সম্বোধনের বিষয়টি সত্য নয়।

মূলত, গত ২৮ আগস্ট ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের কাউন্সিলের (আইইবি) এর উদ্যোগে আয়োজিত উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক ছিলেন উক্ত সংঠনের আইইবি’র সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জি. এস এম মঞ্জুরুল হক মঞ্জু। উক্ত অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদেরকে বক্তব্যের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর সময় মঞ্জুরুল হক তাকে লম্বা সম্বোধন করেন এবং এই সম্বোধন প্রেক্ষিতে ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যের শুরুতে কিছু কথা বলেন। এই সম্বোধনের শেষ অংশে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘কাউয়া কাদের ওরফে’ শীর্ষক অডিও যুক্ত করে ‘আমাদের সামনে এই মূহুর্তে বক্তব্য রাখবেন কাউয়া কাদের ওরফে ওবায়দুল কাদের এমপি।’ শীর্ষক আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও ইন্টারনেটে একাধিকবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদন গুলো দেখুন-

সুতরাং, “আমাদের সামনে এই মূহুর্তে বক্তব্য রাখবেন কাউয়া কাদের ওরফে ওবায়দুল কাদের এমপি।” শীর্ষক ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পূর্ণ এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

রুমিন ফারহানার প্রেসক্রিপশন দাবিতে দুই গণমাধ্যমের নকল ফটোকার্ডে ভুয়া তথ্য

0

সম্প্রতি, বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে মনোরোগবিদ্যার সিনিয়র কনসালট্যান্ট বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব:) অধ্যাপক ডা: মো: আজিজুল ইসলামকে দেখিয়েছেন এবং তিনি রুমিনের রোগ শনাক্ত করে কিছু ওষুধ দিয়েছেন দাবিতে একটি প্রেসক্রিপশনের ছবি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। এই প্রেসক্রিপশন প্রচারের ক্ষেত্রে দেশের মূলধারার দুই জাতীয় দৈনিক কালবেলা এবং আজকের পত্রিকা’র ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ড ব্যবহার করা হয়েছে। 

উক্ত প্রেসক্রিপশনের ছবি কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ডের মাধ্যমে প্রচার করা কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই প্রেসক্রিপশনের ছবি আজকের পত্রিকা’র ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ডের মাধ্যমে প্রচার করা কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রুমিন ফারহানার প্রেসক্রিপশন দাবিতে কালবেলা ও আজকের পত্রিকা কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং এই প্রেসক্রিপশনটি ভুয়া বলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন। তাছাড়া, প্রেসক্রিপশনে দৃশ্যমান তথ্যে অসঙ্গতি এবং ভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে উক্ত তথ্য নকলের প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

দাবিটির সূত্রপাতের খোঁজে

আলোচিত প্রেসক্রিপশনটি রুমিন ফারহানার শীর্ষক দাবিটির উৎসের খোঁজে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার দেখেছে, আজ (০৭ নভেম্বর) রাত ১২ টা ৪৮ মিনিটে ‘আশিকুর রহমান অণু’ নামে একটি ভেরিফাইড অ্যাকাউন্ট থেকে এ সংক্রান্ত সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি (আর্কাইভ) করা হয়। জনাব অণু প্রেসক্রিপশনের ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেন, “O M G!! তীব্র মানসিক অবসাদ মানে ডিপ্রেশনে আছেন রুমিন ফারহানা!! সূত্র: স্কয়ার হাসপাতালের প্রেসক্রিপশন।”

Screenshot source: Facebook

এই পোস্টের ঠিক ২৫ মিনিট পর রাত ১ টা ১৩ মিনিটে অণু এ সংক্রান্ত আরেকটি পোস্ট (আর্কাইভ) করেন, যেখানে তিনি কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড যুক্ত করেন। এই ফটোকার্ডেও আলোচিত প্রেসক্রিপশনের ছবিটি দেখা যাচ্ছিল। ০৭ নভেম্বর তারিখ উল্লিখিত এই ফটোকার্ডের শিরোনাম ছিল এমন, “সাবেক বিএনপি সাংসদ রুমিন ফারহানা ওসিডি (অবসেসিভ কম্পোলসিভ ডিজঅর্ডার) তে ভুগছেন।” জনাব অণু এই পোস্টের ক্যাপশনে জানতে চেয়েছেন, এটি সত্যি কিনা। 

Screenshot source: Facebook

এই পোস্টের কমেন্ট সেকশনে Farhana Akter নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে রাত ১ টা ৫৮ মিনিটে একই প্রেসক্রিপশন ব্যবহার করে আজকের পত্রিকা’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড কমেন্ট করতে দেখা যায়। ফটোকার্ডটির শিরোনাম ছিল এমন, “তীব্র অবসাদ আর মানসিক রোগে ভুগছেন বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা।” 

Screenshot source: Facebook 

ফারহানা আক্তার নামে অ্যাকাউন্টটি (আর্কাইভ) আমরা পর্যবেক্ষণ করে এটিকে ফেক অ্যাকাউন্ট বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। 

এই দুই পোস্টের পর আজ সকাল নাগাদ উক্ত দুইটি ফটোকার্ডের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়তে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

কালবেলা এবং আজকের পত্রিকা কি এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে? 

আমরা অনুসন্ধানে দেখেছি, কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত আলোচিত ফটোকার্ডটি যখন ০৭ নভেম্বর রাত ১ টা ১৩ মিনিটে ফেসবুকে প্রথম প্রচার হয় তার পূর্বে একই তারিখ উল্লেখ করে কালবেলা’র ফেসবুক পেজে দুইটি ফটোকার্ড প্রকাশ করা হয়৷ রাত ১২ টা ১৬ মিনিটে এবং রাত ১২ টা ৫৫ মিনিটে করা দুইটি পোস্টের ফটোকার্ডে রুমিন ফারহানা বা বিএনপি সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্যই ছিল না। বরং এই দুই ফটোকার্ড ছিল আগেরদিন হওয়া বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচের বিষয়ে।  

পরবর্তীতে কালবেলা’র ওয়েবসাইটে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে রুমিন ফারহানার বিষয়ে অতি সাম্প্রতিক সময়ে কোনো সংবাদ প্রকাশ হতে দেখেনি রিউমর স্ক্যানার টিম। সর্বশেষ ২৮ অক্টোবর তার একটি মতামত কলাম প্রকাশের তথ্য পাওয়া যায় ওয়েবসাইটে।

Screenshot source: Kalbela 

একই পদ্ধতিতে আজকের পত্রিকা’র ফেসবুক পেজেও অনুসন্ধান করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। পেজে আলোচিত ফটোকার্ডটির অস্তিত্ব না পাওয়া গেলেও একইদিন সন্ধ্যায় পত্রিকাটি এক ফেসবুক পোস্টে জানায়, আলোচিত ফটোকার্ডটি তাদের নয়। গণমাধ্যমটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজকের পত্রিকা সব সময় ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার নীতি মেনে চলে, ফলে গণমাধ্যমটি কোনো ব্যক্তির চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র প্রতিবেদনে বা ফটোকার্ডে কখনো ব্যবহার করে না।

প্রেসক্রিপশনের তথ্য বিশ্লেষণ করে যা জানা যাচ্ছে 

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোতে প্রেসক্রিপশনটি স্কয়ার হাসপাতালের বলে দাবি করা হয়েছে। গুগলের প্লে স্টোরে স্কয়ার হাসপাতালের একটি এপ্লিকেশন খুঁজে পেয়েছি আমরা। এটির ইন্টারফেসের সাথে আলোচিত স্ক্রিনশটটির দৃশ্যমান মিল পাওয়া যায়। 

Screenshot source: Square Hospital App

এবার, প্রেসক্রিপশনটি ভালোভাবে লক্ষ্য করা যাক। এপ্লিকেশনে প্রবেশ করতে শুরুতে অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়, রিউমর স্ক্যানার টিমও একটি অ্যাকাউন্ট খুলেই প্রবেশ করে। ছবিতে প্রেসক্রিপশনের উপরের দিকে অ্যাকাউন্টধারীর নাম Rumeen Farhana উল্লেখ রয়েছে। 

Image source: Facebook

প্রেসক্রিপশনে রোগীর রোগের লক্ষণ, রোগের বর্ণনা, টেস্ট এবং ওষুধের নাম উল্লেখ দেখা যাচ্ছে। প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী, রুমিন ফারহানা Major Depressive Disorder এবং Post Traumatic Stress Disorder (PTSD) নামে দুইটি রোগে আক্রান্ত বলে দাবি করা হয়েছে। 

প্রেসক্রিপশনে সাতটি Symptoms বা রোগের লক্ষণ রয়েছে। এই লক্ষণগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে মার্কিন মানবস্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠান WebMD এর ওয়েবসাইটে গত আগস্টে ডিপ্রেশন বিষয়ক একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। এই প্রতিবেদনে ডিপ্রেশনের নয়টি লক্ষণ উল্লেখ দেখেছি আমরা। এর মধ্যে ৩ এবং ৪ নং ছাড়া বাকি সাতটি লক্ষণের সাথে আলোচিত প্রেসক্রিপশনে থাকা সাতটি লক্ষণের হুবহু মিল পাওয়া যায়। 

একই প্রতিবেদনে ডিপ্রেশন নির্ণয়ে পয়েন্ট আকারে তিনটি টেস্টের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে যথাক্রমে MRI, EKG এবং EEG। মজার বিষয় হচ্ছে, প্রেসক্রিপশনটিতেও একই ক্রমধারায় এই তিনটি টেস্টের বিষয়ই উল্লেখ রয়েছে। 

Screenshot comparison: Rumor Scanner 

২৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখের এই প্রেসক্রিপশনে ডাক্তার আজিজুল ইসলাম তিনটি ওষুধ দিয়েছেন বলে দেখা যাচ্ছে। 

প্রথমটি Arpolax tablet 20mg। এটি দিনে তিনটি করে সকাল বা সন্ধ্যায় খেতে বলা হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এই ওষুধ তৈরি করে থাকে ইনসেপটা পার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই ট্যাবলেট সাধারণত PTSD এর রোগীরাও গ্রহণ করেন। সাধারণ মাত্রায় দিনে একটি খেতে হয় এটি। তবে অবস্থা গুরুতর হলে দিনে তিনটি খাওয়ারও পরামর্শ দিয়ে থাকে ডাক্তাররা।

দ্বিতীয়টি Melixol tablet 10mg। এটি দিনে দুইটি করে দুপুরে খেতে বলা হয়েছে। এটির প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান স্কয়ার পার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সাধারণ মাত্রায় প্রতিদিন Melixol এর একটি করে ট্যাবলেট সকালে এবং দুপুরে খেয়ে থাকে রোগীরা। তবে সমস্যা গুরুতর হলে সকালের ডোজে দুইটি করে ট্যাবলেট খাওয়া যায়। 

তৃতীয়টি Anaframil tablet 150mg। এটি দিনে একটি করে ঘুমানোর পূর্বে খেতে বলা হয়েছে। কিন্তু এই ট্যাবলেটের নাম কিওয়ার্ড সার্চ করে হুবহু একই নামে কোনো ট্যাবলেটের অস্তিত্ব মেলেনি। তবে Anafranil নামে একটি ট্যাবলেটের খোঁজ মিলেছে যা Sandoz নামে একটি কোম্পানি তৈরি করে থাকে৷ এই ওষুধ সাধারণত ২৫ মিলিগ্রাম পরিমাণে পাওয়া যায়। ডিপ্রেশনের রোগীদের এই ট্যাবলেট দিনে ১০ থেকে ১৫০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত পরিমাণে খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকে ডাক্তাররা৷ 

অর্থাৎ, প্রথম ওষুধটির বিষয়ে প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক বলে প্রতীয়মান হলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওষুধটির তথ্যে গরমিল রয়েছে।

কী বলছেন সংশ্লিষ্টরা? 

সার্বিক বিষয়ে জানতে রিউমর স্ক্যানার টিম স্কয়ার হাসপাতালে মনোরোগবিদ্যার সিনিয়র কনসালট্যান্ট বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব:) অধ্যাপক ডা: মো: আজিজুল ইসলামের সাথে কথা বলেছে। তার সাথে আমাদের দীর্ঘ আলাপ হয়েছে এ বিষয়ে। তিনি বলছিলেন, এটা তার দেয়া প্রেসক্রিপশন নয়। “আর এই ওষুধ কখনো কোনো পেশেন্টকে দিয়েছি বলে মনে হয় না।” 

সম্প্রতি কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তার কাছে গিয়েছিলেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি জানালেন, এটি বলা সমীচীন হবে না। কারণ পেশেন্টদের তথ্য বাইরে প্রকাশ করা উচিত নয় বলেই মনে করেন তিনি। তবে তিনি এটা নিশ্চিত করেছেন যে এই প্রেসক্রিপশন তিনি দেননি৷ 

ডাক্তার আজিজুল বলছেন, এগুলো (ডাক্তারদের বিষয়ে ভুল তথ্য) আসলে বন্ধ হওয়া দরকার।

আমরা এ বিষয়ে জানতে রুমিন ফারহানার সাথেও যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। তবে এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, সম্প্রতি বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক রুমিন ফারহানা রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে মনোরোগবিদ্যার সিনিয়র কনসালট্যান্ট বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব:) অধ্যাপক ডা: মো: আজিজুল ইসলামকে দেখিয়েছেন এবং তিনি রুমিনের রোগ শনাক্ত করে কিছু ওষুধ দিয়েছেন দাবিতে একটি প্রেসক্রিপশনের ছবি দেশের দুই গণমাধ্যম কালবেলা এবং আজকের পত্রিকা’র ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ডের মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, সংশ্লিষ্ট দুই গণমাধ্যমসহ দেশের কোনো গণমাধ্যমেই এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। তাছাড়া, আলোচিত ফটোকার্ডে বিদ্যমান প্রেসক্রিপশনের ছবিতে থাকা তথ্যগুলো যাচাই করে রিউমর স্ক্যানার দেখেছে, টেস্টের নাম এবং রোগের লক্ষণগুলো মার্কিন মানবস্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠান WebMD থেকে হুবহু কপি করা হয়েছে। পাশাপাশি, প্রেসক্রিপশনে উল্লিখিত তিনটি ওষুধের প্রথমটির বিষয়ে প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক বলে প্রতীয়মান হলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওষুধটির তথ্যে গরমিল দেখা গেছে। এছাড়া, সংশ্লিষ্ট ডাক্তারও এটি তার দেওয়া প্রেসক্রিপশন নয় বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।

সুতরাং, বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার স্কয়ার হাসাপাতালের প্রেসক্রিপশনের ছবি দাবিতে প্রচারিত তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং একই দাবিতে কালবেলা ও আজকের পত্রিকা’র নামে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো ভুয়া বা বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

২৮ অক্টোবরের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের গুলিতে পুলিশ নিহত হওয়ার গুজব

সম্প্রতি,‘পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে পুলিশ মুখ খুললো হাসপাতালের আহত পুলিশ’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

সংঘর্ষে

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন পোস্ট (আর্কাইভ) ও পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ২৮ অক্টোবর পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে পুলিশের ছোঁড়া  গুলিতে কনস্টেবল আমিরুল পারভেজ নিহত হননি এবং উক্ত ঘটনায় আহত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কোনো পুলিশ সদস্যও এমন কোনো তথ্য প্রদান করেননি। প্রকৃতপক্ষে, ইউটিউবার ও সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন এর ইউটিউব চ্যানেলে ‘হাসিনার ফাদ হইতে সাবধান!’ শীর্ষক শিরোনামে সম্প্রতি প্রচারিত একটি ভিডিওর কিছু অংশ কাট করে তার শুরুতে এবং শেষাংশে উপস্থাপকের ভয়েস যুক্ত করে অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, ভিডিওটিতে সঞ্চালক দাবি করেন, গত ২৮ অক্টোবর পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে পুলিশ কর্মকর্তা নিহত এবং হামলার ব্যাপারে আহত পুলিশ সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস করেছেন। গোপন তথ্যসূত্রের মাধ্যমে সাংবাদিক ইলিয়াস উক্ত তথ্যগুলো সংগ্রহ করে তার ভিডিওর মাধ্যমে তিনি তা জনসম্মুখে এনেছেন। এরপর উপস্থাপক দর্শকদের উদ্দেশ্যে সেই ভিডিওটি দেখান।

আলোচিত সেই ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সাংবাদিক ইলিয়াস কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই দাবি করেন যে পুলিশ বাহিনীতে যেসকল সদস্যরা রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ তাদেরকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে পাঠিয়ে থাকেন। কনস্টেবল আমিরুল পারভেজ রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ হওয়ায় তাকে সেদিন সেখানে ডিউটিতে পাঠানো হয়। এছাড়াও তিনি দাবি করেন যে, তার ধারণা কনস্টেবল আমিরুল পারভেজকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পিটিয়ে হত্যা করেছেন। কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিডিওটিতে তিনি তার বক্তব্যের সপক্ষে নানা বিশ্লেষণ উপস্থান করেন। তবে, ভিডিওটির কোথাও পুলিশ সদস্যের করা গুলিতে কনস্টেবল আমিরুল পারভেজ নিহত হওয়ার ব্যাপারের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে সাংবাদিক Elias Hossain এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৯ নভেম্বর হাসিনার ফাঁদ হইতে সাবধান! #eliashossain #sheikhhasina #awamileague #bnp #police শীর্ষক শিরোনামে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে ‍ইলিয়াস হোসেনের দেখানো ভিডিওটির ফুল ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করেও ২৮ অক্টোবর পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে কনস্টেবল নিহত হওয়ার ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে থাম্বনেইলে ব্যবহৃত আহত পুলিশ সদস্যদের ছবিগুলো উক্ত ঘটনার কিনা তা যাচাই করতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বাংলানিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৩ জুন বিএনপির হামলায় ৫ পুলিশ সদস্য আহত, আটক ১৩ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Banglanews24 

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটির ফিচার ইমেজের সাথে আলোচিত থাম্বনেইলে ব্যবহৃত আহত পুলিশ সদস্যদের ছবির হুবহু মিল রয়েছে।

পাশাপাশি জানা যায়, উক্ত ছবিটি সেসময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বরগুনার আমতলী উপজেলা বিএনপির ডাকা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচির সময়ের। কর্মসূচিতে বাধা দিলে পুলিশের ওপর তখন দলটির নেতাকর্মীরা হামলা চালান। এসময় ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন। যাদের দুজনকে উক্ত ছবিতে দেখা যাচ্ছে। 

এছাড়াও প্রাসঙ্গিক নানা কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে উক্ত ঘটনায় আহত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কোনো পুলিশ সদস্যের সেদিন পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে কনস্টেবল নিহত হওয়ার তথ্য প্রদানের কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে The Business Standard এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ২৮ অক্টোবর পুলিশের ওপর বর্বরোচিত সেই হামলা শীর্ষক থাম্বনেইল এবং রাজধানীর ফকিরাপুল চার রাস্তার মোড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘ’র্ষে এক পুলিশ কনস্টবল নিহত হয়েছেন শীর্ষক ক্যাপশনে ২ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু ভিডিওটিতে হামলার শিকার পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে কাউকে গুলি করতে দেখা যায়নি। বরং ভিডিওতে একদল উত্তেজিত জনতা কর্তৃক কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে বেধরপ প্রহার করতে দেখা যায়।

এছাড়া, চ্যানেল২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে ‘যেভাবে হামলা চালানো হলো পুলিশের উপর’ শীর্ষক শিরোনামে একই স্থানের ৩:০৫ সেকেন্ডের আরেকটি ভিডিও পাওয়া যায়। এই ভিডিওটিতেও শিকার পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে কাউকে গুলি করতে দেখা যায়নি।

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে   জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ইউটিউব চ্যানেলে ৭ নভেম্বর ‘কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় পুলিশ হত্যার নেতৃত্ব দেয় আমান’ | Police Investigation | BNP শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি মাল্টিমিডিয়া প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

প্রতিবেদনটিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামানকে বলতে শোনা  যায়, ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সদস্যসচিব আমানউল্লাহ আমান-এর নেতৃত্বে সেদিন পুলিশ কর্মকর্তাদের উপর হামলা চালানো হয়। এসময় একটি বড় ইটের আঘাতে কনস্টেবল আমিরুল মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর তাকে নির্দয়ভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। উক্ত ঘটনায় রাজধানীর মহাখালী থেকে আমানউল্লাহ আমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য প্রমাণ থেকে এটা স্পষ্ট যে, ২৮ অক্টোবর পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের সময় পুলিশে গুলিতে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল পারভেজ নিহত হননি।

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর শেখ হাসিনা সরকার পতনের এক দফা দাবি নিয়ে রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সমাবেশের এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ বাঁধে। উক্ত সংঘর্ষ চলাকালে একদল উত্তেজিত জনতার হামলায় রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় আমিরুল পারভেজ নামের একজন পুলিশ কনস্টেবল নিহত হন। এছাড়াও একই ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ব্যাপক আহত হন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে পুলিশ মুখ খুললো হাসপাতালের আহত পুলিশ’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। যেটিতে কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্য সূত্র ছাড়াই সাংবাদিক ইলিয়াসকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্বারা রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ডিউটিতে প্রেরণের এবং পুলিশ কনস্টেবল হত্যাকাণ্ডে ছাত্রলীগের জড়িত থাকার দাবি করতে শোনা যায়। এছাড়াও ভিডিওটির কোথাও পুলিশের গুলিতে কনস্টেবল নিহত হবার বিষয়ে কোনো প্রদান করতে দেখা যায়নি। 

সুতরাং, ২৮ অক্টোবর পুলিশের গুলিতে পুলিশ নিহত হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের মৃত্যুর গুজব

সম্প্রতি, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস মারা গেছেন দাবিতে একটি তথ্য শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে।

টিকটকে প্রচারিত ভিডিওগুলোর কোনোটাতে বলা হয়েছে, অপু বিশ্বাস সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। আবার কোনোটাতে বলা হয়েছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

অপু

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস অ্যাক্সিডেন্ট কিংবা আত্মহত্যা করে মৃত্যুবরণ করেননি বরং নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আপু বিশ্বাস বর্তমানে জীবিত এবং সুস্থ রয়েছেন।

অপু বিশ্বাস মারা গেছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওগুলোতে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়নি, তাছাড়া একটি ভিডিওতে অপু বিশ্বাস সড়ক দুর্ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার কথা বলা হলেও সেখানে তার সাম্প্রতিক অবস্থার কোনো ভিডিও কিংবা ছবিও দেখানো হয়নি। অপর একটি ভিডিওতে বলা হয়েছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। সেখানে আত্মহত্যার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, তার সাবেক স্বামী শাকিব খান চিত্রনায়িকা বুবলিকে বিয়ে করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও এই দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানে চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গতকাল ০৬ নভেম্বর একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Apu Biswas Facebook Page

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম দারাজ আয়োজিত ১১.১১ শো। উক্ত লাইভ প্রোগ্রামটিতে আপু বিশ্বাস অংশ নিয়েছেন।

তাছাড়া, অপু বিশ্বাসের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের গত দুইদিনের আরও কিছু পোস্ট (, ) পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেগুলো থেকেও নিশ্চিত হওয়া যায়, তিনি বর্তমানে স্বাভাবিক অবস্থায় আছেন।

এছাড়াও, মূলধারার গণমাধ্যম যুগান্তরের অনলাইন সংস্করণে গত ০৪ নভেম্বর ‘তাপস বুবলীর প্রেম, মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে তাপস-বুবলির প্রেম ইস্যুতে অপু বিশ্বাস একটি ভারতীয় গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেছেন।

অর্থাৎ, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস মারা গেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে এখন পর্যন্ত অপু বিশ্বাসের মৃত্যুর কিংবা অসুস্থতার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস সড়ক দুর্ঘটনায় এবং আত্মহত্যা করে মারা গেছেন দাবি করে একাধিক ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয় বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে অপু বিশ্বাস বর্তমানে জীবিত এবং সুস্থ আছেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস মারা গেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি গুজব।

তথ্যসূত্র

নির্বাচন কমিশনের নামে সেনাবাহিনীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাওয়ার ভুয়া তথ্য প্রচার

গত ৫ নভেম্বর Al Minar নামের ইউটিউব চ্যানেলে “সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা দেওয়ার নির্দেশ, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলো সিইসি” শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও (আর্কাইভ) প্রকাশ করা হয়। 

পদত্যাগ

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা দেওয়ার নির্দেশ দেয়নি এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগও চায়নি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন দুইটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ১৪ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে দেখা যায়, ভিডিওটির শুরুতে দুইটি ভিডিওর খণ্ডাংশ দেখানো হয়। পরবর্তীতে ভিডিওটিতে চ্যানেলটির উপস্থাপক আলোচিত ভিডিওটির উদ্দেশ্যে দুটি ভিডিও দেখান, যেগুলোতে ভয়েজ বাংলার প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ এবং বাংলা ইনফোটিউব এর কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শাহেদ আলমের বক্তব্য রয়েছে।

প্রথম ভিডিও যাচাই

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতিতে, গত ৪ নভেম্বর Voice Bangla নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “হঠাৎ গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভাতীয় দূতের সাক্ষাত। Mustofa Feroz I Voice Bangla” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison: Rumor Scanner

৬ মিনিট ১২ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় মোস্তফা ফিরোজ গত ৩ নভেম্বর জাতীয় দৈনিক যুগান্তরে “শেখ হাসিনার প্রতি দৃঢ় সমর্থন থাকবে ভারতের” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পড়ে শোনাচ্ছেন। 

এছাড়া, গত ৩ নভেম্বর জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকে “নতুন তিনটি প্রকল্প দুই দেশের জন্যই কল্যাণকর: প্রধানমন্ত্রী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরও একটি প্রতিবেদন পড়ে শোনান তিনি। 

মোস্তফা ফিরোজের এই ভিডিওটি কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই আলোচিত দাবির ভিডিওটির সাথে যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া উক্ত দাবি সম্পর্কে দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো তথ্য খুঁজে  পাওয়া যায়নি।

দ্বিতীয় ভিডিওটি যাচাই 

অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গত ৪ নভেম্বর Bangla InfoTube নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “মাঠের মনোবল বুঝত্র হলে ২ ছবি ও কিছু কথা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত শাহে আলমের মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison: Rumor Scanner

১১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় শাহেদ আলম গত ২ নভেম্বর চ্যানেল ২৪ এর  ওয়েবসাইটে “গ্রেপ্তার আতঙ্কে ফসলের মাঠে রাত কাটছে বিএনপির নেতাকর্মীদের” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা করছিলেন।

এছাড়া, ভিডিওতে থাকা তথ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটির দাবির কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটিতে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার যে ভিডিও ক্লিপগুলো যুক্ত করা হয়েছে সেগুলোতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাওয়া বিষয়ক কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, বাংলাদেশের মূলধারার কোনো গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাওয়া বিষয়ক কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এরই প্রেক্ষাপটে Al Minar নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা দেওয়ার নির্দেশ, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলো সিইসি” শীর্ষক থাম্বনেইল এবং শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। অধিকতর ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়।  এছাড়া, নির্ভরযোগ্য কোনো  সূত্রেও এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, পূর্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিয়ে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন দেখুন এখানে:

সুতরাং, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাওয়া সংক্রান্ত দাবিগুলো মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ক্রিকেটার টেম্বা বাভুমা ভারতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে কোনো মন্তব্য করেননি

সম্প্রতি, দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার ম্যাচ পরবর্তী প্রেজেন্টেশনের দৃশ্য সম্বলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

যা দাবি করা হচ্ছে

উক্ত ভিডিওতে দাবি করা হয়, ভারতের বিপক্ষে দুর্নীতির অভিযোগ এনে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা বলেছেন, “ভারত আম্পায়ার এবং নিজের মাঠের সুবিধা নিয়ে ম্যাচ জিতেছে। এ ম্যাচে আম্পায়াররা বেশকিছু সিদ্ধান্ত আমাদের বিপক্ষে দিয়েছে। বিশ্বকাপের মত আসরে আম্পায়ারদের এমন সিদ্ধান্তগুলো সত্যিই হতাশাজনক। ভারতকে জেতানোর জন্য যদি বিশ্বকাপ আয়োজন করা হয়ে থাকে, তাহলে এভাবে না খেলে কাপটা ভারতকে দিয়ে দিলেই তো হয়।”

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

টেম্বা বাভুমা

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ্বকাপ আয়োজনে ভারতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা কোন মন্তব্য করেননি বরং টেম্বা বাভুমার ম্যাচ পরবর্তী প্রেজেন্টেশনের দৃশ্যের সাথে ভুয়া মন্তব্য যুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওতে টেম্বা বাভুমার মন্তব্যের তথ্যসূত্র হিসেবে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনের কথা উল্লেখ করা হয়। 

উক্ত সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে’র ওয়েবসাইটে গত ৬ নভেম্বর “IND vs SA: Would be very short-sighted and unfair to blame Kolkata pitch after India loss, says Rob Walter” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনের একটি ভিডিও খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

উক্ত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা অংশগ্রহণ-ই করেননি। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের পক্ষ থেকে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন কোচ রব ওয়াল্টার। উল্লেখ্য যে সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ রব ওয়াল্টার বলেন, ভারতের বিপক্ষে হারার পর কলকাতার পিচকে দোষারোপ করা খুবই সংকীর্ণ মনের এবং অন্যায় কাজ হবে।

Source: India Today

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, গত ৫ নভেম্বর Ramen Sports TV নামের ইউটিউব চ্যানেলে “Temba bavuma post match presentation today || India vs South Africa || world cup 2023 ||” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ পরবর্তী প্রেজেন্টেশনে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার সাক্ষাৎকার পর্ব দেখতে পাওয়া যায়।

তবে, বাভুমার ম্যাচ পরবর্তী প্রেজেন্টেশনের সাক্ষাৎকার পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, তিনি ভারতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে কোনো মন্তব্য-ই করেননি। 

Source: Ramen Sports TV

পাশপাশি, খেলাধুলা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম Cricbuzz এর ওয়েবসাইটে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ২০২৩ বিশ্বকাপ ম্যাচের কমেন্ট্রি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

কিন্তু, ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের কমেন্ট্রি থেকেও আলোচিত দাবির কোনো সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

Source: Cricbuzz

এছাড়াও, প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য সূত্র হতে টেম্বা বাভুমার আলোচিত মন্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

উল্লেখ্য, গত ৫ নভেম্বর ক্রিকেট বিশ্বকাপের ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে ২৪৩ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করে ভারত। 

মূলত, ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ভারতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে টেম্বা বাভুমা অংশগ্রহণ-ই করেননি। এছাড়াও কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে তার এরূপ মন্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

প্রসঙ্গত, পূর্বে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ভারতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পুলিশ ও প্রধানমন্ত্রীর ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা এবং সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন আয়োজনের ভুয়া তথ্য প্রচার

গত ০৬ নভেম্বর Al Minar নামের ইউটিউব চ্যানেলে “পুলিশ ও প্রধানমন্ত্রীর উপর নিষেধাজ্ঞা। সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন করবে আমেরিকা” শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। 

আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি ফেসবুকেও প্রচার করা হয়। ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়নি এবং দেশটি সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচনে আয়োজনের বিষয়েও কোনো মন্তব্য করেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন দুইটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে আলোচিত দাবি সম্বলিত উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ১২ মিনিট ৫৬ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, ভিডিওটির শুরুতে দুইটি ভিন্ন ভিডিওর খণ্ডাংশ দেখানো হয়। পরবর্তীতে, আলোচিত ভিডিওটিতে চ্যানেলটির উপস্থাপক দর্শকদের উদ্দেশ্যে দুটি ভিডিও দেখান, যেগুলোতে 1A News এর সম্পাদক কাজী হেমায়েত উদ্দিন মিশন এবং সাবেক সাংসদ গোলাম মওলা রনি’র বক্তব্য রয়েছে।

প্রথম ভিডিও যাচাই

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, 1A News এর ফেসবুক পেজে গত ৩ নভেম্বর “হঠাৎ পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সাথে পিটার হাসের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের রহস্য কি?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

৬ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় কাজী হেমায়েত উদ্দিন মিশন গত ২ নভেম্বর জাতীয় দৈনিক মানবজমিনের “মোমেনের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করলেন পিটার হাস” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পড়ে শোনাচ্ছেন। 

দ্বিতীয় ভিডিও যাচাই

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মওলা রনি’র ফেসবুক পেজে গত ২ নভেম্বর “পিটার হাস কি ব্যর্থ হবেন ! ড্যান মজিনার পরিণতি ঘটানোর চেষ্টা! আমেরিকাকে উচিত শিক্ষা দিবে আ.লীগ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

১৫ মিনিট ৬ সেকেন্ডের উক্ত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সাবেক সাংসদ গোলাম মওলা রনি দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে নিযুক্ত আমেরিকার সাবেক রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা এবং বর্তমান রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে নিয়ে ব্যক্তিগত মতামত ও রাজনৈতিক বিশ্লেষণ তুলে ধরেন।

অর্থাৎ, ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটিতে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার যে ভিডিও ক্লিপগুলো যুক্ত করা হয়েছে সেগুলোতে আগামী নির্বাচন ইস্যুতে সরকারের সমালোচনা এবং অবস্থান নিয়ে আলোচনা করতে দেখা গেলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এবং সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচনে আয়োজন বিষয়ক কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, বাংলাদেশের মূলধারার কোনো গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশের ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা এবং সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচনে আয়োজন বিষয়ক তথ্যের কোনো সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, ঢাকায় গত ২৮ অক্টোবরের রাজনৈতিক সমাবেশ ঘিরে সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, 

২৮শে অক্টোবর ঢাকায় যে রাজনৈতিক সহিংসতা সংঘটিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র তার নিন্দা জানায়। একজন পুলিশ কর্মকর্তা, একজন রাজনৈতিক কর্মীহত্যা এবং একটি হাসপাতাল পোড়ানোর ঘটনা অগ্রহণযোগ্য। সাংবাদিকসহ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতাও তেমনই। আমরা সব পক্ষকে শান্তি ও সংযমের আহ্বান জানাই। সম্ভাব্য ভিসা নিষেধাজ্ঞার জন্য আমরা সমস্ত সহিংস ঘটনার পর্যালোচনা করব।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত মে মাসে ভিসা নীতি ঘোষণা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যে ভিসা নীতি কার্যকর করা শুরু হয়েছে। এই নীতির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপ করবে। এর মধ্যে বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা ও কর্মচারী, সরকারপন্থি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

আরও উল্লেখ্য যে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের  র‌্যাব ও তার ছয়জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এরই প্রেক্ষাপটে Al Minar নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “পুলিশ ও প্রধানমন্ত্রীর উপর নিষেধাজ্ঞা। সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন করবে আমেরিকা” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়। 

পূর্বে নির্বাচন কমিশনের নামে সেনাবাহিনীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাওয়া সংক্রান্ত ভুয়া তথ্য প্রচারিত হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশের ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা এবং সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন আয়োজন সংক্রান্ত ইন্টারনেটে প্রচারিত দাবিগুলো মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভারতীয় অভিনেত্রী উরফি জাভেদের গ্রেপ্তার হওয়ার গুজব

0

সম্প্রতি ভারতীয় মডেল অভিনেত্রী উরফি জাভেদ গ্রেপ্তার হয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন, এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এছাড়া, ভিডিও ব্যতীত উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন, এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উরফি জাবেদ গ্রেপ্তার হয়েছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, একটি কফি শপে উরফি জাভেদ বসেছিলেন। এরপর একটি পুলিশের গাড়ি  এসে দোকানের সামনে দাঁড়ায় এবং গাড়ি থেকে দুজন নারী পুলিশ উরফি জাভেদকে দোকানের বাইরে ডেকে নিয়ে থানায় যেতে বলেন। এরপর কেন তাকে থানায় যেতে বলা হচ্ছে উরফি জাভেদ এমন প্রশ্ন করলে পুলিশ বলেন, এত ছোট পোশাক পরে রাস্তায় কেউ চলাফেরা করে? এরপর পুলিশের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাকাটাকাটির পর উরফিকে দুই নারী পুলিশকে গাড়িতে তুলতে দেখা যায়।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতীয় মডেল অভিনেত্রী উরফি জাভেদকে পুলিশ গ্রপ্তার করেনি বরং তার গ্রেপ্তার হওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি স্ক্রিপ্টেড। 

উরফি জাভেদের আটক হওয়ার সত্যতা জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Shivam Shukla নামক এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত একটি পোস্টের কমেন্ট থেকে উরফি জাভেদের ভেরিফাইড ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ৩ নভেম্বর প্রকাশিত একটি স্টোরির স্ক্রিনশট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Instagram

স্টোরির ক্যাপশনে উরফি জাভেদ লিখেন, “ফ্যাশন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছি। বন্ধুরা এটি ফ্র্যাকিনস ইন্ডিয়া’র ক্যাম্পেইনের শুট ছিলো (বাংলায় অনূদিত)।”

পরবর্তীতে একইদিনে উরফি জাভেদের ভেরিফাইড ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ফ্র্যাকিনস ইন্ডিয়াকে হ্যাশট্যাগ সহ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Instagram

ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লিখেন, আমার উগ্র ফ্যাশন গেমের জন্য ফ্যাশন পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে, কিন্তু কিছুই আমাকে থামাতে পারবে না! ফ্র্যাকিনস ইন্ডিয়া’র সাথে আমার একাত্বতা ঘোষণা করতে পেরে আমি খুব উত্তেজিত। কিছু দুর্দান্ত স্টাইলের জন্য প্রস্তুত হোন! (বাংলায় অনূদিত)।

পরবর্তীতে উক্ত বিষয়ে আরও অধিকতর অনুসন্ধানে ভারতের মুম্বাই পুলিশের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে ৩ নভেম্বরে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

পোস্টে বলা হয়, সস্তা প্রচারের জন্য দেশের আইন লঙ্ঘন করা যাবে না! অশ্লীলতার মামলায় মুম্বাই পুলিশ কর্তৃক একজন মহিলা গ্রেপ্তার হওয়ার ভাইরাল ভিডিওটি সত্য নয়। এই ভিডিওতে চিহ্ন এবং পোশাকের অপব্যবহার করা হয়েছে। যাই হোক, উক্ত বিভ্রান্তিকর ভিডিও তৈরিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ওশিওয়ারা পিএসটিএন – ১৭১, ৪১৯, ৫০০, ৩৪ ধারা মোতাবেক একটি ফৌজদারি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। আরও তদন্ত চলমান। ভিডিওতে থাকা ভুয়া পুলিশ পরিদর্শককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং গাড়িটিও জব্দ করেছে মুম্বাই পুলিশ।

এছাড়া, ভারতীয় গণমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস এ ৩ নভেম্বরে “Mumbai police take legal action against Urfi Javed over fake arrest video” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

মূলত, গত ৩ নভেম্বর ভারতীয় মডেল অভিনেত্রী উরফি জাভেদ ফ্যাশন ব্রান্ড ফ্র্যাকিনস ইন্ডিয়া’র হয়ে একটি ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে পুলিশের হাতে ছোট কাপড় পড়ার কারণে গ্রেপ্তার হওয়ার একটি স্ক্রিপটেড ভিডিও তৈরি করে ইন্টারনেটে প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক মূহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় এবং সত্য দাবিতে প্রচারিত হতে থাকে। এরপর উরফি জাভেদ তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি একটি ক্যাম্পেইনের শুটিং এর অংশ লিখে একটি স্টোরি প্রকাশ করে ঘটনার মূল বিষয় তুলে ধরেন। তবে উরফি জাভেদের এমন ভিডিও তৈরি করার জন্য মুম্বাই পুলিশ উক্ত ভিডিও তৈরির সাথে যুক্ত সকলের বিরুদ্ধে মামলা করেন এবং উক্ত ভিডিওতে থাকা পুলিশ ইন্সপেক্টরকে গ্রেপ্তার করেন।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও ভারতীয় অভিনেত্রীদের নামে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন:

সুতরাং, ভারতীয় মডেল অভিনেত্রী উরফি জাভেদ গ্রেপ্তার হওয়ার দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র