Home Blog Page 557

ওশানগেট টাইটানের চালকের মৃত্যুর পর সাবমেরিন চালক নিয়োগের নতুন কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়নি

সম্প্রতি, টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া সাবমেরিন টাইটান নিখোঁজের সংবাদের পর সাবমেরিনটির মালিকানা প্রতিষ্ঠান ‘ওশানগেট সাবমেরিনের জন্য নতুন চালক খুঁজছে’ শীর্ষক দাবিতে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েববসাইটের একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। এই বিষয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও একাধিক সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।

দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন জাগো নিউজ২৪, কালবেলা, নিউজজি২৪, এবিনিউজ২৪, জয় যুগান্তর

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন নিউ ইয়র্ক পোস্ট, ডেইলি মিরর, ইয়াহু, ডেইলি স্টার.ইউকে, নিউ ইয়র্ক ডেইলি নিউজ, প্যাডেস্ট্রিয়ান.টিভি, রাডার অনলাইন

ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন নিউজ১৮ , স্পোর্টসকিডা, হিন্দুস্থান টাইমস,  দ্যা স্টেটমেন্টস

গণমাধ্যমের ফেসবুক পেইজসহ অন্যান্য পেইজে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),   এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ)।  

গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিও দেখুন জাগোনিউজ২৪ (আর্কাইভ)।

একই বিষয়ে শিরোনামে সিদ্ধান্ত জানিয়ে খবরের ভিতরে অস্পষ্টতা রেখে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন চ্যানেল২৪, ঢাকা মেইল, আনন্দবাজার। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘ওশানগেট সাবমেরিনের জন্য নতুন চালক খুঁজছে’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত স্ক্রিনশটে থাকা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি টাইটান নিখোঁজের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির সাবমেরিন চালক মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়নি বরং অন্তত ২০২০ সাল থেকেই একই তথ্য সম্বলিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রতিষ্ঠানটির ওয়েববসাইটে খুঁজে পাওয়া যায়। ইন্টারনেট আর্কাইভ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সর্বশেষ গত ৩০ মেও প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে একই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম প্রতিষ্ঠানটির ওয়েববসাইটে এ নিয়ে অনুসন্ধান করে। তবে এই আর্টিকেল লেখার সময় পর্যন্ত ওশানগেটের ওয়েবসাইট (আর্কাইভ) ডাউন থাকায় সেখানে প্রবেশ করা যায়নি।

Screenshot: oceangate.com

বিজ্ঞপ্তিটির প্রকাশকাল সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে 

রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানের এ পর্যায়ে বিজ্ঞপ্তিটির প্রকাশকাল নিয়ে যাচাইয়ে ইন্টারনেট আর্কাইভের ওয়েবসাইট archive.org তে ওশানগেটের ‘OceanGate Career Opportunity’ শীর্ষক উক্ত ওয়েবপেজের লিংকটি কপি করে অনুসন্ধান করে। এতে ওয়েবসাইটটিতে ওশানগেটের  সাবমেরিনের জন্য নতুন চালক খোঁজার বিজ্ঞপ্তি সম্বলিত উক্ত ওয়েবপেজটির আর্কাইভ সংস্করণ  খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: archived on 3 August, 2020

আর্কাইভের ওয়েবসাইটটিতে বিদ্যমান ওশানগেটের  ওয়েবপেজটি বিশ্লেষণ করে  ২০২০ সালের ৩ আগস্ট থেকে শুরু করে ২০২৩ সালের ৩০ মে পর্যন্ত ওয়েবসাইটটিতে ওশানগেটের উক্ত ওয়েবপেজটির একাধিক আর্কাইভ সংস্করণ পাওয়া যায়। 

Image Collage: Rumor Scanner 

এছাড়া বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, ওশানগেটের  ‘OceanGate Career Opportunity’ শীর্ষক  ওয়েবপেজটির প্রতিটি আর্কাইভ সংস্করণেই একই তথ্য বিদ্যমান। 

গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ জুন আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়ার পথে চালকসহ পাঁচ যাত্রী নিয়ে টাইটান সাবমেরিনটি নিখোঁজের ঘটনা ঘটে। 

Screenshot: Al Jazeera 

পরবর্তীতে গত ২২ জুন মহাসাগরের তলদেশে ব্যাপক তল্লাশির পর উদ্ধারকারীরা সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার কথা জানায়। এরই প্রেক্ষিতে ফেসবুকে ওশানগেটের নতুন করে সাবমেরিন চালক নিয়োগের একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে। 

তবে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবপেজের ২০২০ সালের আর্কাইভে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আলোচিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটির সঙ্গে দুর্ঘটনার পূর্বে সর্বশেষ গত ৩০ মের আর্কাইভে পাওয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Collage: Rumor Scanner 

অর্থাৎ, ওশানগেট সাবমেরিনের জন্য নতুন চালক খুঁজছে দাবিতে প্রচারিত প্রতিষ্ঠানটির ওয়েব পেজের স্ক্রিনশট সম্বলিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

আর্কাইভ কি? 

যেহেতু ইন্টারনেটে প্রচারিত যেকোনো তথ্য সহজেই মুছে ফেলা যায়, তাই ফ্যাক্টচেকিংয়ের আর্কাইভ একটি গুরুত্বপূর্ণ টুল। ফ্যাক্ট-চেকিংয়ে আর্কাইভ বলতে বুঝায়, ইন্টারনেটের কোনো কন্টেন্ট বা  আধেয়ের ফুটপ্রিন্ট বা হুবহু কপি সংরক্ষণ করা। অনেক সময়েই দেখা যায়, গণমাধ্যম কিংবা বিভিন্ন সাইটে কোনো তথ্য প্রচারের পর পরবর্তীতে সেটি পরিবর্তন বা মুছে ফেলে। সেই মুছে ফেলা আধেয় কিংবা অপরিবর্তিত অবস্থার আধেয় খুঁজে পেতে সহযোগিতা করে ইন্টারনেট আর্কাইভ।

এছাড়াও একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনো সাইটে কি কি আধেয় ছিল, কোন আধেয় কখন প্রথম প্রকাশ হয়েছিল, সাইটের ইন্টারফেস সহ আধেয়ের বিবর্তনের রূপরেখা খুঁজে পেতেও সহযোগিতা করে ইন্টারনেট আর্কাইভ।

মূলত, আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে পাঁচজন আরোহী নিয়ে টাইটান নামে একটি সাবমেরিনে চড়ে গত ১৮ জুন যাত্রা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওশানগেট। তবে যাত্রার প্রায় দুই ঘন্টা পরেই সাবমেরিনটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থাকা মূল জাহাজের সঙ্গে সংযোগ হারিয়ে ফেলে। পরবর্তীতে গত ২২ জুন মহাসাগরের তলদেশে ব্যাপক তল্লাশির পর উদ্ধারকারীরা সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার কথা জানান। উক্ত ঘটনায় তিন আরোহী সহ ফ্রান্সের নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য পল অঁরি নাজোলে এবং ওশানগেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাবমেরিনটির চালক স্টকটন রাশও মারা যান। এমন প্রেক্ষিতেই সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টাইটানের মালিকানা প্রতিষ্ঠান ওশানগেটের ওয়েবসাইট থেকে একটি স্ক্রিনশট নিয়ে দাবি করা হচ্ছে, টাইটান নিখোঁজের ঘটনায় চালকের মৃত্যুর পর ওশানগেট সাবমেরিনের জন্য নতুন চালক খুঁজছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওশানগেট সাবমেরিনের জন্য নতুন চালক খোঁজার দাবিতে প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি অন্তত ২০২০ সাল থেকেই প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বিদ্যমান।

সুতরাং, টাইটান নিখোঁজের ঘটনায় চালকের মৃত্যুর পর ওশানগেট সাবমেরিনের জন্য নতুন চালক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

নেইমারের বাবা গ্রেফতার দাবিতে গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য

গত ২৩ জুন দেশের কতিপয় গণমাধ্যমে ‘নেইমারের বাবা গ্রেফতার’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, “পরিবেশ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার জুনিয়রের বাবা নেইমার ডি সিলভা সান্তোসকে গ্রেফতার করেছে ব্রাজিলের পুলিশ।”

কোনো কোনো গণমাধ্যমে এসেছে, গ্রেফতারের পর তাকে ছেড়েও দেওয়া হয়। এ ঘটনায় নেইমারের বাবাকে ৫০ লাখ ব্রাজিলিয়ান রিয়েল জরিমানা করা হয়।

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের কিছু প্রতিবেদন দেখুন ইনডিপেনডেন্ট টিভি, সময় টিভি (ইউটিউব), যমুনা টিভি, ডিবিসি নিউজ, যুগান্তর, ইনকিলাব, কালবেলা, বাংলাভিশন, দৈনিক আমাদের সময়, নিউজবাংলা, বাংলাদেশ প্রতিদিন, জনকণ্ঠ, প্রতিদিনের বাংলাদেশ, ডেইলি অবজারভার, নয়া দিগন্ত, দৈনিক করতোয়া, মানবকণ্ঠ, যায়যায়দিন, ডেইলি মেসেঞ্জার, আমাদের সময়, সংবাদ প্রকাশ, জাগো নিউজ২৪, নিউজজি২৪, বায়ান্ন টিভি, বাহান্ন নিউজ, ঢাকা মেইল, সময়ের আলো, বাংলাদেশ জার্নাল, একুশে সংবাদ, ঢাকা টাইমস২৪, ডেল্টা টাইমস, বিডি২৪ রিপোর্ট, এবিনিউজ২৪, সোনালী নিউজ, জুম বাংলা, এমটিএন নিউজ, স্বাধীন আলো, রেডিও টুডে, কুমিল্লার কাগজ। 

একই দাবিতে কতিপয় পত্রিকার প্রিন্ট সংস্করণের সংবাদ দেখুন যুগান্তর, প্রতিদিনের বাংলাদেশ।

ভারতীয় গণমাধ্যমে একই দাবিতে প্রকাশিত প্রতিবদন দেখুন হিন্দুস্তান টাইমস, হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা, জিনিউজ, সংবাদ প্রতিদিন

একই দাবিতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন Uol (ব্রাজিল), The Sun (ইংল্যান্ড), Daily Mail (ইংল্যান্ড)। 

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ইউটিউবের কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফুটবল তারকা নেইমার জুনিয়রের বাবা নেইমার ডি সিলভা সান্তোসকে গ্রেফতার করার পর ছেড়ে দেওয়া এবং তাকে ৫০ লাখ ব্রাজিলিয়ান রিয়েল জরিমানা শীর্ষক দাবিগুলো সঠিক নয় বরং নেইমার ডি সিলভা সান্তোসকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ গ্রেফতারের আদেশ দিলেও পরে তা বাতিল করা হয়। তাছাড়া, নেইমার বা তার বাবাকে কোনো জরিমানা করা হয়নি। অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে জরিমানা করা হবে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে রিউমর স্ক্যানার দেশের মূলধারার তিন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ২৪, ডেইলি স্টার এবং প্রথম আলো‘র এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে নেইমারের বাবা গ্রেফতার হয়েছেন শীর্ষক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

বিডিনিউজ২৪ লিখেছে, বাড়ির নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে গিয়ে স্থানীয় সরকারের কর্মকর্তাগণ নেইমারের বাবার দুর্ব্যবহার ও অপমানের শিকার হন বলেও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এক পর্যায়ে তাকে গ্রেফতার করার হুমকি দেয় কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তা করা হয়নি। 

জরিমানার বিষয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, অভিযোগ প্রমাণ হলে অন্তত ৫০ লাখ ব্রাজিলিয়ান হেইয়াস (১০ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি) জরিমানা দিতে হবে নেইমারকে।

একই তথ্য দিয়েছে ডেইলি স্টার। তবে গ্রেফতার সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করেনি প্রথম আলো। 

অর্থাৎ, বাংলাদেশের গণমাধ্যমেই নেইমারের বাবাকে গ্রেফতার এবং জরিমানা সংক্রান্ত দুই রকম তথ্য দেখা যাচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে উল্লেখ করা হয়, “কর্তৃপক্ষের বিবৃতি অনুযায়ী, অভিযোগ প্রমাণিত হলে নেইমার জুনিয়রকে জরিমানা হিসাবে কমপক্ষে ৫ মিলিয়ন রেইস (১.০৫ মিলিয়ন ডলার) দিতে বাধ্য করা হতে পারে।”

রয়টার্স লিখেছে, “কর্মকর্তারা বলেছেন যে নির্মাণ বন্ধ করতে সম্পত্তি পরিদর্শনের সময়, অ্যাথলেটের বাবা নেইমার দা সিলভা সান্তোস তাদের অপমান করেছিলেন। পরে তাকে গ্রেফতারের হুমকি দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা হয়নি।” 

Screenshot source: Reuters 

একই তথ্য পাওয়া যায়, ফুটবল বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম Goal এর ওয়েবসাইটের এক প্রতিবেদনেও। 

Screenshot source: Goal

Goal লিখেছে, ব্রাজিলের উপকূলীয় শহর মাঙ্গারাতিবার (Mangaratiba) স্থানীয় মেয়রের অফিস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। 

পরবর্তীতে অনুসন্ধান করে মাঙ্গারাতিবার (Mangaratiba) স্থানীয় মেয়রের অফিসের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে আলোচিত বিবৃতিটি (আর্কাইভ) খুঁজে পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Screenshot source: Facebook

বিবৃতিতে জরিমানার বিষয়ে বলা হয়, “আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপটি হবে খুঁজে পাওয়া অনিয়মগুলো মূল্যায়ন করে জরিমানা ধার্য করা। ধারণা করা যাচ্ছে, পরিবেশগত ক্ষতির পরিপ্রেক্ষিতে সেটা ৫০ লাখ ব্রাজিলিয়ান রিয়ালের (১০ লাখ ডলারের বেশি) কম হবে না।” 

অর্থাৎ, নেইমার বা তার বাবাকে কোনো জরিমানা করা হয়নি। অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে জরিমানা করা হবে। 

নেইমারের বাবাকে গ্রেফতারের বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হয়েছে এভাবে, “এটা স্পষ্ট করা উচিত যে অভিযান চলাকালীন, সেক্রেটারি শায়েন ব্যারেটো নেইমারের বাবার দ্বারা উপেক্ষার স্বীকার হন এবং তাকে সাজার আদেশ দিয়েছিলেন। দণ্ডবিধির ৩৩১ নং ধারার উপর ভিত্তি করে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, যা তাদের পেশা অনুশীলনে সরকারী কর্মকর্তাদের অবমাননাকে অপরাধ করে তোলে। যাইহোক, যুক্তিযুক্ততার নীতি বিবেচনা করে এবং জনাব নেইমার সান্তোসের উপদেষ্টার অনুরোধ অনুসরণ করে, তাকে সাও পাওলোতে একটি প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।”

বিষয়টি নিশ্চিত হতে মাঙ্গারাতিবার (Mangaratiba) স্থানীয় মেয়রের অফিসের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তাদের কাছে পুরো বিষয়টির ব্যাখ্যা চাইলে শুরুতে তাদের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে ফেসবুক পোস্টটিরই একটি কপি পাঠানো হয়। 
দেখুন এখানে:

Screenshot source: Email from City Hall of Mangaratiba

ইংরেজি ভাষায় অনুবাদকৃত সংস্করণ দেখুন এখানে –

Screenshot source: Google Lens

একই মেইলে স্থানীয় মেয়রের অফিস উক্ত ঘটনার সময়কালের তিনটি ভিডিও পাঠান। 

দেখুন এখানে। 

পরবর্তীতে নেইমারের বাবাকে গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় মেয়রের অফিস থেকে রিউমর স্ক্যানার টিমকে জানানো হয়, “Foi dada a voz de prisão, e algum tempo depois, ainda durante a operação de fiscalização, a Secretária retrocedeu da decisão para atender um pedido da assessoria do pai de Neymar.” 

অর্থাৎ, গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল। তবে কিছু সময় পর নেইমারের বাবার উপদেষ্টার অনুরোধে উক্ত সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে তারা। 

Screenshot source: Email from City Hall of Mangaratiba

মূলত, গত ২৩ জুন দেশের কতিপয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, “পরিবেশ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার জুনিয়রের বাবা নেইমার ডি সিলভা সান্তোসকে গ্রেফতার করেছে ব্রাজিলের পুলিশ। গ্রেফতারের পর তাকে ছেড়েও দেওয়া হয়। এ ঘটনায় নেইমারের বাবাকে ৫০ লাখ ব্রাজিলিয়ান রিয়েল জরিমানা করা হয়।” কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিগুলো সঠিক নয়। নেইমারের বাবাকে গ্রেফতার করা হয়নি। অভিযান পরিচালনাকারী কর্তৃক গ্রেফতারের আদেশ দেওয়া হলেও পরে তা বাতিল করা হয়। তাছাড়া, নেইমার বা তার বাবাকে কোনো জরিমানা করা হয়নি। অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে জরিমানা করা হবে। স্থানীয় মেয়রের অফিসের পক্ষ থেকে এ বিষয়গুলো রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়েছে। 

সুতরাং, নেইমারের বাবাকে গ্রেফতারের পর ছেড়ে দেওয়া এবং ৫০ লাখ ব্রাজিলিয়ান রিয়েল জরিমানা করা শীর্ষক দুইটি দাবি আন্তর্জাতিক ও দেশীয় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

তুরস্কের পুরোনো ভিডিওকে ঢাকায় ভবন ধসের ভিডিও দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি ‘এইমাত্র ঢাকায় দেখা যাচ্ছে যে একটি বিল্ডিং ভেঙ্গে যাইতেছে‘ শীর্ষক শিরোনামে একটি বহুতল ভবন ধসের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক এবং ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু রিল ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত এমন কিছু শর্ট ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ঢাকার কোনো ভবন ধসের ঘটনার নয় বরং এটি  তুরস্কের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া একটি বহুতল ভবন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ধ্বংস করার দৃশ্য।

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে গত ২৯  মার্চ Dr. Esmeralda নামের একটি ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্টে একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Twitter 

ভিডিওটির ক্যাপশনে উল্লেখিত তুর্কি ভাষার বিস্তারিত বিবরণী অনুবাদ করে জানা যায়, এটি তুরস্কে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে ভবন ধ্বংস করার ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিও।

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও, muhendisyen নামের অপর একটি ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্টে গত ২৮ মার্চ প্রকাশিত একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায় এবং সেখানেও একই তথ্য জানা যায়।

Screenshot: Twitter

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম Anadolu Ajansi এর ওয়েবসাইটে গত ০৩ জুন ‘One of the last two buildings that suffered heavy damage on the Ebrar Site in Kahramanmaraş was destroyed more controlledly’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Anadolu Ajansi Website

উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ভবনের ছবিগুলোর সাথে আলোচিত ভিডিওর ভবনের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঝুঁকি এড়াতে তুরস্কে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন ধ্বংস করার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে উক্ত ভবনটি স্থানীয় শহর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত উপায়ে ধ্বংস করা হয়েছে। 

এছাড়াও, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম DAILY SABAH-র ওয়েবসাইটে গত ১০ মে ‘Building demolitions, waste removal speed up in southeast Türkiye’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot:dailysabha

উক্ত প্রতিবেদন থেকেও তুরস্কের শক্তিশালী ভূমিকম্পের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কর্তৃক ধ্বংস করার তথ্য জানা যায়।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো সূত্রে বাংলাদেশে  সম্প্রতি বড় কোনো ভবন ধসের সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, ঢাকায় ভবন ধসের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়।

মূলত, সম্প্রতি একটি বহুতল ভবন ধসে পড়ার ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করে দাবি করা হয় এটি ঢাকায় একটি ভবন ধসের ঘটনার দৃশ্য। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটি তুরস্কের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন নিয়ন্ত্রিত উপায়ে ধ্বংসের ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিও’র দৃশ্য। গত মার্চে একাধিক ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্টে উক্ত ভিডিওটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫ এবং উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেটের গোপালগঞ্জ। তবে সেই ভূমিকম্পের ঘটনায় কোনো ভবন ধস কিংবা হতাহতের সংবাদ পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও তুরস্কের ভূমিকম্পের ভিডিও তাজিকিস্তানের দাবিতে প্রচার করা হলে বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, তুরস্কে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত একটি বহুতল ভবন নিয়ন্ত্রিত উপায়ে ধ্বংসের ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিওকে ঢাকায় ভবন ধসের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলা এবং নিহতের পুরোনো সংবাদ বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার

সম্প্রতি, “আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলা, নিহত ২০” শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ অফিসে সম্প্রতি কোনো বোমা হামলার ঘটনা ঘটেনি এবং এতে কেউ নিহতও হয়নি বরং প্রচারিত ভিডিওতে ২০০১ সালে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলার পুরোনো সংবাদ এবং থাম্বনেইলে বাংলাদেশের মানুষের সংঘর্ষের পুরোনো ছবি ব্যবহার করায় বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।

গত ১৬ জুন  BNC Tv, Ourislam24.com, Padma Tv, News Bulletin এবং আজকের খবর নামের কয়েকটি ফেসবুক পেজ থেকে ‘আ’লীগ অফিসে বোমা হামলা, নিহত ২০’ শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে বাংলাদেশের মানুষের সংঘর্ষের পুরোনো ছবি ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়।

অনুসন্ধানের শুরুতে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। News Plus নামের পেজে প্রচারিত এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এটি কয়েকটি প্রতিবেদন নিয়ে তৈরি একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিও।

Screenshot: Facebook 

News Plus নামের পেজ থেকে প্রকাশিত ৯ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে ৮ মিনিট ৫ সেকেন্ড থেকে ‘আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলা, নিহত ২০’ শিরোনামে একটি সংবাদ পাঠ করা শুরু হয়। এবিষয়ে সংবাদ পাঠ ৮ মিনিট ৫ সেকেন্ড থেকে শুরু হয়ে ৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড পর্যন্ত চলে। 

সেখানে বিস্তারিত সংবাদে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসে শোকাবহ দিন ১৬ জুন। ২০০১ সালের এই দিনে চাষাঢ়া আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলায় ২০ জন প্রাণ হারান। কিন্তু ২২ বছরেও এই হামলা মামলার বিচারকাজ শেষ হয়নি। সেদিন বোমা হামলায় আহত হন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চন্দনশীলসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। যাদের অনেকে হাত-পা হারিয়ে এখনও পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে আছেন। তারা আজও দুঃসহ স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছেন। ২২ বছরেও মামলার বিচারকাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেদিন বেঁচে যাওয়া নেতাকর্মীরা। তবে মামলা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাক্ষীদের অনীহাসহ নানা কারণে বিচারকাজ বিলম্বিত হচ্ছে।

উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে গত ১৬ জুন  “আ.লীগ অফিসে বোমা হামলায় ২০ জন নিহত, ২২ বছরেও শেষ হয়নি বিচারকাজ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Bangla Tribune

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসে শোকাবহ দিন ১৬ জুন। ২০০১ সালের এই দিনে চাষাঢ়া আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলায় ২০ জন প্রাণ হারান। কিন্তু ২২ বছরেও এই হামলা মামলার বিচারকাজ শেষ হয়নি। সেদিন বোমা হামলায় আহত হন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চন্দনশীলসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। যাদের অনেকে হাত-পা হারিয়ে এখনও পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে আছেন। তারা আজও দুঃসহ স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছেন। ২২ বছরেও মামলার বিচারকাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেদিন বেঁচে যাওয়া নেতাকর্মীরা। তবে মামলা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাক্ষীদের অনীহাসহ নানা কারণে বিচারকাজ বিলম্বিত হচ্ছে।’

রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে, বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রথম তিন প্যারা আলোচিত ভিডিওতে হুবহু পাঠ করা হয়েছে। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিও’র বিস্তারিত প্রতিবেদন এবং এবিষয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, সম্প্রতি আওয়ামী লীগ অফিসে কোনো বোমা হামলার ঘটনা ঘটেনি এবং এতে কেউ নিহতও হয়নি। 

মূলত, ২০০১ সালে নারায়ণগঞ্জের চাষঢ়া আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলার ঘটনার ২২ বছরেও বিচার হয়নি এমন প্রতিবেদন গণমাধ্যম প্রকাশ করলে ঘটনাটি আলোচনায় আসে। তবে উক্ত ঘটনাটিকে প্রচার করতে গিয়ে একটি নিউজ বুলেটিন ভিডিওতে আ’লীগ অফিসে বোমা হামলা, নিহত ২০’ শীর্ষক অপ্রাসঙ্গিক শিরোনাম এবং চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, চটকদার ক্যাপশন এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে অধিক ভিউ পাবার আশায় উক্ত দাবিতে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে চটকদার শিরোনাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এসব ঘটনা নিয়ে পূর্বেও ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন প্রতিবেদন পড়ুন এখানে এবং এখানে। 

সুতরাং, ২০০১ সালে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলার ঘটনাকে সময় উল্লেখ না করে সম্প্রতি কয়েকটি ভিডিওতে ‘আ’লীগ অফিসে বোমা হামলা, নিহত ২০’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

এআই দিয়ে তৈরি বৃদ্ধদের স্কেটিংয়ের ছবিকে আসল ছবি দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, দুই বৃদ্ধের স্কেটিং করার একটি ছবি ওমানে তোলা বাস্তব ছবি দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ওমানের ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুই বৃদ্ধের স্কেটিং করা ছবিটি বাস্তব নয় বরং এটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি। 

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে sard.visuals নামের একটি ইন্সটাগ্রাম আইডি থেকে গত ২৭ মে “Post Juma prayers activities” শিরোনামে প্রচারিত পোস্টে উক্ত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Instagram

sard.visuals এর আইডি পরিদর্শন করে দেখা যায়, sard.visuals আইডিটি মূলত muji70 নামের একটি আইডি থেকে পরিচালনা করা হয়। 

Screenshot: Instagram 

পরবর্তীতে muji70 আইডিটি পরিদর্শন করে দেখা যায়, Mujahid Jamal নামের ওমানের এক ভিজুয়াল আর্টিস্ট এটি পরিচালনা করে থাকেন। 

Screenshot: Instagram

পরিশেষে, sard.visuals ও muji70 আইডি দুইটি পরিদর্শন করে দেখা যায়, মুজাহিদ জামাল মূলত আরব দেশের সংস্কৃতির বিভিন্ন ছবি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি করে থাকেন। 

Screenshot: Instagram 
Screenshot: Instagram 

মূলত, ওমানে তোলা দুইজন বৃদ্ধের স্কেটিংয়ের বাস্তব দৃশ্য দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছো। তবে,অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি মূলত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি করা। যা মুজাহিদ জামাল নামের ওমানের এক ভিজুয়াল আর্টিস্ট তৈরি করেছেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ছবি বাস্তব দাবিতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন পড়ুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) দিয়ে তৈরি বৃদ্ধদের স্কেটিংয়ের ছবিকে ওমানে তোলা বাস্তব ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • sard.visuals Instagram Account: Post
  • muji700 Instagram Account
  • Rumor Scanner Own Analysis

গুগল বার্ডের সফটওয়্যার ডাউনলোডের লিংকগুলো ভুয়া

সম্প্রতি, সার্চ ইঞ্জিন গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গুগল বার্ডের সফটওয়্যার ডাউনলোডের বিজ্ঞাপন হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন পেইজ থেকে কিছু লিংক প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গুগল বার্ডের সফটওয়্যার ডাউনলোডের বিজ্ঞাপন হিসেবে ফেসবুকে প্রচারিত লিংকগুলো ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে গুগল ও গুগল বার্ডের নামে বিভিন্ন পেইজ খুলে প্রতারণার উদ্দেশ্যে এসব লিংক প্রচার করা হচ্ছে।

লিংকগুলোর বিষয়ে যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম প্রথমেই  গুগল ও গুগল বার্ডের যেসব পেইজ থেকে বিজ্ঞাপনগুলো প্রচার করা হচ্ছে, সেই পেইজগুলো নিয়ে অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে  লিংক প্রচার করা অন্তত পাঁচটি  পেইজের  পেইজ ট্রান্সপারেন্সি বিভাগ যাচাই করে দেখা যায়,  উক্ত পেইজগুলোর চারটিই সম্প্রতি নাম পরিবর্তন করে গুগল ও গুগল বার্ড সম্পর্কিত নাম ধারণ করেছে।

Image Collage: Rumor Scanner 

পরবর্তী অনুসন্ধানে উক্ত পেইজগুলোতে সরবরাহকৃত লিংকগুলোতে প্রবেশের চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, লিংকে ক্লিক করার পরের ধাপেই কোড সেটিং (বিভিন্ন নাম্বার) সম্বলিত সফটওয়্যার ডাউনলোড করার একটি নির্দেশনা আসে (রিউমর স্ক্যানার টিম নিরাপত্তার স্বার্থে সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকে)।

Screenshot: Fake Facebook Page

পাশাপাশি কিছু লিংকে প্রবেশ করার পর গুগল ক্রোম থেকে ব্যবহারকারীর উদ্দেশ্যে একটি নিরাপত্তামূলক সতর্কতা প্রদর্শন করা হয়। 

Screenshot: Google Chrome

গুগল ক্রোম থেকে সাধারণত ম্যালওয়্যার কোনো কিছু ডাউনলোড করতে গেলে এই ধরনের সতর্কবার্তা আসে এবং ডাউনলোড লিংকটি ব্লক করে দেওয়া হয়। 

Screenshot: Google Chrome

পাশাপাশি গুগলের ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেইজ, প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট ও একইসাথে গুগল বার্ডের ওয়েবসাইট খুঁজে এই টুলটির সফটওয়্যার চালু করার বিষয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি। বরং দেখা যায়, গুগল বার্ড এখন পর্যন্ত কেবল ওয়েবসাইট ভিত্তিক কার্যক্রম চালাচ্ছে।

Screenshot: Google Bard

মূলত, বার্ড হচ্ছে গুগল কর্তৃক নির্মিত একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চ্যাট রোবট, যা কেবল  ওয়েবসাইট ভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন ফেসবুক পেইজ থেকে বার্ডের সফটওয়্যার ডাউনলোডের লিংক হিসেবে কিছু লিংক প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এসব ফেসবুক পেইজগুলো ভুয়া এবং পেইজগুলো থেকে যেসব লিংক প্রচার করা হচ্ছে সেসব লিংকগুলোও প্রতারণার উদ্দেশ্যে তৈরি করা।

সুতরাং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে  গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গুগল বার্ডের সফটওয়্যার ডাউনলোডের বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রচারিত লিংকগুলো সম্পূর্ণ ভুয়া এবং প্রতারণামূলক।

তথ্যসূত্র

হাসান আল মামুন নুরের বিরুদ্ধে মোসাদের কাছ থেকে ৪০০ কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেননি

0

সম্প্রতি “নুরকে বিশ্বাস করে ভিপি বানিয়েছিলাম, দলের দায়িত্ব দিয়েছিলাম। কিন্তু মোসাদের কাছ থেকে গোপনে ৪০০ কোটি টাকা নিয়ে সে আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে” শীর্ষক শিরোনামে গণ অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব হাসান আল মামুনের মন্তব্য দাবিতে একটি তথ্য একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুর মোসাদের কাছ থেকে গোপনে ৪০০ কোটি টাকা নিয়েছেন শীর্ষক কোনো মন্তব্য গণঅধিকার পরিষদ নেতা হাসান আল মামুন করেননি বরং কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই গণমাধ্যমের আদলে একটি ফটোকার্ড তৈরি করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে ছাত্র অধিকার পরিষদের একাংশের সদস্য সচিবকে নিয়ে সংগঠনটির অপর অংশের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব হাসান আল মামুনের এমন মন্তব্যের বিপরীতে বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যমে কোনো প্রকাশিত সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot from Google

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের  মাধ্যমে মূলধারার দেশীয় গণমাধ্যম ‘দৈনিক কালবেলা’ এর ওয়েবসাইটে গত ২০ জুন “নুর বিশ্বাসঘাতকতা করেছে : হাসান আল মামুন” শীর্ষক শিরোনামেপ্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে থেকে সাম্প্রতিক সময়ে নুরুল হক নুরকে নিয়ে হাসান আল মামুনের মন্তব্য জানা যায়।

Screenshot from kalbela

কালবেলাকে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমরা নুরুল হক নুরকে বিশ্বাস করেছিলাম। তাকে ভিপি বানিয়েছি। দলের দায়িত্ব দিয়েছি। কিন্তু সেই আমাদের বিশ্বাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ইসরায়েলি এজেন্টের সঙ্গে নুর বৈঠক করেছে। সে এখন সেটা স্বীকার করেছে। অথচ শুরুতে এটা নিয়ে আমরা অন্য দলগুলোর সঙ্গে তর্ক করেছি। আমাদের তখন বলা হয়েছিল, এমন কোনো বৈঠক হয়নি। অথচ এখন বৈঠকের কথা বলছেন। এভাবে দ্বিমুখী চরিত্রের মানুষ নেতৃত্বে থাকতে পারে না। তার বিরুদ্ধে অনেক আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগও রয়েছে। এসব কাজ করে নুর দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’ হাসান আল মামুন বলেন, ‘রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ এনেছেন অনেকে। আমরা চাই এসবের তদন্ত হোক। তদন্ত করা হবে। এরপর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এছাড়া একই দিনে মূলধারার আরেক সংবাদমাধ্যম এনটিভি এর ওয়েবসাইটে “রেজা-নুরের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি হবে : হাসান আল মামুন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ntvbd

এনটিভিকে দেওয়া বক্তব্যে হাসান আল মামুন জানান, ‘কোটা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছি। তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম। আমাদের রাশেদ ছিলেন। আমরা পরবর্তীতে তারুণ্য নির্ভর দল (গণ অধিকার পরিষদ) গড়ে তুলি।  আজকে আহ্বায়ক সদস্য সচিবকে বহিষ্কার করে, সদস্য সচিব আহ্বায়ককে বহিষ্কার করে। আসলে যা হচ্ছে এভাবে চলতে পারে না।’

তিনি আরও জানান, ‘আমাদের ১২১ সদস্যের কমিটি আছে। আমরা খুব শিগগিরই একটা তদন্ত কমিটি গঠন করব। একটি নিরপেক্ষ তদন্তে মাধ্যমে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব আমরা।’

এছাড়া মূলধারার গণমাধ্যম একাত্তর টিভির ফেসবুক পেজে গত ২১ জুন “অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগেই কি শেষ হবে গণ অধিকারের রাজনীতি?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওতে গণঅধিকার পরিষদের সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে একাত্তর জার্নালের লাইভ অনুষ্ঠানে দেওয়া হাসান আল মামুনের বক্তব্য দেখা যায়, লাইভে হাসান আল মামুন জানান, এখানে আমাকে ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব করা হয়েছে বা রাশেদ খানকে ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক করা হয়েছে এটি মূল বিষয় নয়। মূল বিষয়টি হচ্ছে সদস্য সচিব নুরুল হন নুর রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে ইন্সাফ পার্টিতে যোগদান করার অভিযোগ এনেছেন। রেজা কিবরিয়া বলছেন সরকার বিরোধী যেকোনো আন্দোলনে আমি থাকবো। রেজা কিবরিয়া নুরুল হকের বিরুদ্ধে মেন্দি সাফাদির সাথে বৈঠক, ওর সাথে যোগাযোগ, ইন্ডিয়ান এম্বাসির সাথে যোগাযোগ করেন এই বিষয়ে তারা একে অপরের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বক্তব্য দিচ্ছেন, পরস্পরকে বহিষ্কার করছেন। তাহলে আমরা কারা?

Screenshot from Facebook

উপরে আলোচ্য কোনো প্রতিবেদনেই নুরুল হক নুর মোসাদের কাছ থেকে গোপনে ৪০০ কোটি টাকা নিয়েছেন শীর্ষক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘দৈনিক প্রথম আলো’তে “এবার নুরুল হক ও রাশেদকে গণ অধিকার পরিষদ থেকে অব্যাহতির ঘোষণা রেজা কিবরিয়ার” শীর্ষক শিরোনামে গত ২০ জুন প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় রেজা কিবরিয়ার সঙ্গে নুরুল হক নুরের বিরোধ প্রকাশ্য হলে একে অপরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বিবৃতি সহ নিজ নিজ ফেসবুক পাতায়ও পোস্ট দিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন। এর মধ্যে ১৯ জুন রাতে নুরুল হকের নেতৃত্বে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলের ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ঘোষণা করা হয়। এ নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন অভিযোগ এনে ২০ জুন গণ অধিকার পরিষদের প্যাডে রেজা কিবরিয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নুরুল হককে গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব এবং রাশেদ খানকে যুগ্ম আহ্বায়কের পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতির ঘোষণা দেওয়া হয়।

এছাড়া, বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে গণ অধিকার পরিষদের একাংশের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব হাসান আল মামুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “এখানে লেনদেনের ব্যাপারে কিংবা ৪ শত কোটি টাকার ব্যপারে কোনো মন্তব্য আমি করিনি। আমার নামে এসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত অনলাইনে বা অফলাইনে আমি এমন কোনো মন্তব্য করিনি।” 

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর মোসাদের কাছ থেকে গোপনে ৪০০ কোটি টাকা নিয়েছে শীর্ষক কোনো মন্তব্য সংগঠনটির অন্য অংশ ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব হাসান আল মামুন করেননি। 

মূলত, গত ২১ জুন ‘নুরকে বিশ্বাস করে ভিপি বানিয়েছিলাম, দলের দায়িত্ব দিয়েছিলাম। কিন্তু মোসাদের কাছ থেকে গোপনে ৪০০ কোটি টাকা নিয়ে সে আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।’ শীর্ষক একটি বক্তব্য গণঅধিকার পরিষদের একাংশের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব হাসান আল মামুনের দাবিতে গণমাধ্যমের আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, গণঅধিকার পরিষদ নেতা হাসান আল মামুন সংগঠনটির আরেক নেতা নুরুল হক নুর সম্পর্কে ‘আমরা নুরুল হক নুরকে বিশ্বাস করেছিলাম। তাকে ভিপি বানিয়েছি। দলের দায়িত্ব দিয়েছি। কিন্তু সেই আমাদের বিশ্বাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।’ শীর্ষক মন্তব্য করলেও নুর মোসাদের কাছ থেকে ৪০০ কোটি টাকা নিয়েছে এমন কোনো মন্তব্য করেননি। এছাড়া, সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের শীর্ষ নেতা রেজা কিবরিয়া সংগঠনের আরেক শীর্ষ নেতা নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মসহ মোসাদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তোলেন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া ও সদস্যসচিব নুরুল হক নুরের একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংগঠনটিতে পাল্টাপাল্টি অব্যাহতির ঘটনা ঘটেছে। গত ১৯ জুন নুরুল হক নুর ও তাঁর অনুসারীরা দলে আহ্বায়ক থাকার পরও তার পদের বিষয়ে স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত না জানিয়ে যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খানকে দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ঘোষণা করেন। এর প্লাটা প্রতিক্রিয়া হিসেবে পরদিন ২০ জুন নুরুল হক নুর ও রাশেদ খাঁনকে দলের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির ঘোষণা দেন রেজা কিবরিয়া। একই সঙ্গে আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান আল মামুনকে দলের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব ঘোষণা করেন তিনি। এর আগে সংগঠনের অভ্যন্তরে শীর্ষ দুই নেতার বিরোধী নিয়ে গত ১৮ জুন ঢাকায় রেজা কিবরিয়ার বাসভবনে বেঠকে বসেন গণ অধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দ। বৈঠকে নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে সংগঠনের তহবিল নিয়ে নয়ছয়সহ সংগঠনে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলেন৷ এছাড়া নুরের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে বৈঠক এবং একটি দেশের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ তুলেন রেজা কিবরিয়া। অপরদিকে নুরুল হক নুরও রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে সংগঠনের অনুমতি না নিয়ে অনেক দিন ধরে ফরহাদ মজহার ও শওকত মাহমুদের নেতৃত্বাধীন ইনসাফ কায়েম কমিটির কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নেওয়া এবং তাদের থেকে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ করেন। এছাড়া রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে দলের সাংগঠনিক কর্মসূচিতে সময় না দেওয়ার অভিযোগ করেন নুরুল হক নুর।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ডিজিটাল ফটোকার্ডে ভুয়া দাবি প্রচার করা হলে সেগুলোকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনগুলো দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, নুরুল হক নুর মোসাদের কাছ থেকে গোপনে ৪০০ কোটি নিয়েছেন শীর্ষক মন্তব্যকে হাসান আল মামুনের মন্তব্য দাবি করে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

‘গণঅধিকার পরিষদের এই সংকটময় মুহূর্তে হিরো আলমের মত নেতৃত্ব প্রয়োজন’ শীর্ষক মন্তব্যটি আসিফ নজরুলের নয়

0

সম্প্রতি ‘গণঅধিকার পরিষদের এই সংকটময় মুহূর্তে দলটিকে সামনে এগিয়ে নিতে হিরো আলমের মত ডিটারমাইন্ড এবং সাহসী নেতৃত্ব প্রয়োজন’ শীর্ষক একটি তথ্য দৈনিক প্রথম আলোর আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে ঢাবির অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘গণঅধিকার পরিষদের এই সংকটময় মুহূর্তে দলটিকে সামনে এগিয়ে নিতে হিরো আলমের মত ডিটারমাইন্ড এবং সাহসী নেতৃত্ব প্রয়োজন’ শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এই মন্তব্যটি ড. আসিফ নজরুলের নয় এবং প্রথম আলোও এধরণের কোনো সংবাদ প্রচার করেনি বরং ভিত্তিহীনভাবে প্রথম আলোর আদলে তৈরি করা একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রথম আলোর আদলে তৈরি আলোচিত ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের কোনো নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করা হয়নি। অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রথম আলোর ওয়েবসাইট, প্রথম আলোর ফেসবুক পেজ এবং প্রথম আলোর ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রথম আলোর ছাড়াও অন্যকোনো গণমাধ্যমেও প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও আলোচিত দাবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

Screenshot: Google Search 

তবে ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানে ড. আসিফ নজরুলের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ২০ জুন গণ অধিকার পরিষদের বিবদমান দুই পক্ষের সাম্প্রতিক পাল্টাপাল্টি কার্যক্রম নিয়ে একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Dr. Asif Nazrul Facebook

তবে, উক্ত পোস্টে কোথাও গণ অধিকার পরিষদের নেতৃত্বে হিরো আলমকে নিয়ে কোনো তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

ইন্টারনেটে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানে ড. আসিফ নজরুল গণ অধিকার পরিষদ এবং হিরো আলমকে নিয়ে আলোচিত মন্তব্যটি করেছেন এমন কোনো তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় পরবর্তীতে বিষয়টির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে ড. আসিফ নজরুলের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানান, “এই ধরনের কোনো মন্তব্য আমি করি নাই। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”

এছাড়া, আজ ২২ জুন প্রথম আলোর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টের মাধ্যমে প্রচারিত এই ফটোকার্ডটিকে নকল এবং তাদের তৈরি নয় বলে জানানো হয়। 

Screenshot: Prothom Alo Facebook

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, ‘গণঅধিকার পরিষদের এই সংকটময় মুহূর্তে দলটিকে সামনে এগিয়ে নিতে হিরো আলমের মত ডিটারমাইন্ড এবং সাহসী নেতৃত্ব প্রয়োজন’ শীর্ষক মন্তব্যটি ড. আসিফ নজরুলের নয় এবং এই দাবিতে দৈনিক প্রথম আলো কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।

মূলত, সম্প্রতি ‘গণঅধিকার পরিষদের এই সংকটময় মুহূর্তে দলটিকে সামনে এগিয়ে নিতে হিরো আলমের মত ডিটারমাইন্ড এবং সাহসী নেতৃত্ব প্রয়োজন’ শীর্ষক একটি তথ্য দৈনিক প্রথম আলোর আদলে তৈরি একটি  ফটোকার্ডে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে, প্রথম আলো’র ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট গুলোতে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, এমন কোনো মন্তব্য ড. আসিফ নজরুল করেননি বলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন। এছাড়াও প্রথম আলোর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকেও উক্ত ফটোকার্ডটি তাদের নয় বলে জানানো হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন সময় প্রথম আলোর ফটোকার্ড নকল করে  মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে  ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনগুলো দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ‘গণঅধিকার পরিষদের এই সংকটময় মুহূর্তে দলটিকে সামনে এগিয়ে নিতে হিরো আলমের মত ডিটারমাইন্ড এবং সাহসী নেতৃত্ব প্রয়োজন’ শীর্ষক একটি তথ্যকে ড. আসিফ নজরুলের মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

‘সালমান খানের হাত ধরে বাকিটা সময় কাটাতে চান মিয়া খলিফা’ শীর্ষক ফটোকার্ড চ্যানেল ২৪ প্রচার করেনি

সম্প্রতি ‘সালমান খানের হাত ধরে বাকিটা সময় কাটাতে চান মিয়া খলিফা, বাকিটা ইতিহাস‘ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল ২৪’ এর আদলে তৈরি করা একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘সালমান খানের হাত ধরে বাকিটা সময় কাটাতে চান মিয়া খলিফা বাকিটা ইতিহাস’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত ফটোকার্ডটি চ্যানেল ২৪ এর নয় বরং গত ১৫ জুন চ্যানেল ২৪ এর ফেসবুক পেজে সালমান খান ও মিয়া খলিফাকে নিয়ে প্রচারিত একটি ফটোকার্ডের শিরোনামকে বিকৃত করে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে চ্যানেল ২৪ এর লোগো ব্যবহার করে প্রচারিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ দেখানো হয়েছে ১৫ জুন ২০২৩।

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানে চ্যানেল ২৪ এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ১৫ জুন প্রচারিত দাবিটির মত হুবহু ছবি সম্বলিত অন্য একটি ফটোকার্ড পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

সেখানে ‘সালমানের হাত ধরে এবার বলিউডে মিয়া খলিফা, জল্পনা তুঙ্গে’ শীর্ষক লেখা দেখতে পাওয়া যায়।

Image comparison: Rumor Scanner

অর্থাৎ, চ্যানেল ২৪ এর ফেসবুকে পেজে গত ১৫ জুন প্রচারিত এই ফটোকার্ডটির  শিরোনাম এডিট করে তাতে ‘সালমান খানের হাত ধরে বাকিটা সময় কাটাতে চান মিয়া খলিফা’ শীর্ষক তথ্য লিখে প্রচার করা হয়েছে। 

এছাড়াও একই তারিখে চ্যানেল ২৪ এর ওয়েবসাইটে ‘সালমানের হাত ধরে এবার বলিউডে মিয়া খলিফা, জল্পনা তুঙ্গে’ শীর্ষক শিরোনামে  প্রকাশিত বিস্তারিত সংবাদটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Channel 24

এই প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশে কোথাও ‘সালমান খানের হাত ধরে বাকিটা সময় কাটাতে চান মিয়া খলিফা’ শীর্ষক তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, চ্যানেল ২৪ এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ, অফিশিয়াল ওয়েবসাইট কিংবা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও ‘সালমান খানের হাত ধরে বাকিটা সময় কাটাতে চান মিয়া খলিফা’ শীর্ষক কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, ‘সালমান খানের হাত ধরে বাকিটা সময় কাটাতে চান মিয়া খলিফা’ শীর্ষক কোনো সংবাদ চ্যানেল ২৪ প্রকাশ করেনি।

মূলত, গত ১৫ জুন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল ২৪’ এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ‘সালমানের হাত ধরে এবার বলিউডে মিয়া খলিফা, জল্পনা তুঙ্গে’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড প্রচারিত হয়। পরবর্তীতে উক্ত ফটোকার্ডের শিরোনাম বিকৃতের মাধ্যমে ‘সালমান খানের হাত ধরে বাকিটা সময় কাটাতে চান মিয়া খলিফা, বাকিটা ইতিহাস’ শীর্ষক শিরোনামে ফটোকার্ড তৈরি করে চ্যানেল২৪ এর ফটোকার্ড দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও প্রথম আলোর আদলে ডিজিটাল ব্যানার তৈরি করে মির্জা ফখরুলের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ‘সালমান খানের হাত ধরে বাকিটা সময় কাটাতে চান মিয়া খলিফা’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড।

তথ্যসূত্র

নুরুল হক নুরের সাথে শামা ওবায়েদের ভাইরাল এই ছবিটি এডিটেড

0

সম্প্রতি গণ অধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুরের সাথে বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদের একান্ত মূহুর্ত দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গণ অধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুরের সাথে বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদের একান্ত মুহূর্ত দাবিতে ভাইরাল এই ছবিটি এডিটেড। মূলত ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত নুরুল হক নুর ও শামা ওবায়েদের ভিন্ন দুটি ছবির মিরর ফ্রেম ফটোশপের মাধ্যমে জোড়া লাগিয়ে উক্ত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে ম্যানুয়ালি সার্চের মাধ্যমে নুরুল হক নুরের নামের একটি  ফেসবুক পেজেগত ০৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত এক পোস্টে নুরের সাথে টুপি-পাঞ্জাবি পরিহিত এক ব্যক্তির ছবিসহ কয়েকটি গ্রুপ ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook 

উক্ত পোস্টের প্রথম ছবিতে প্রদর্শিত টুপি-পাঞ্জাবি পরিহিত ব্যক্তির কাঁধে হাত রেখে দাঁড়িয়ে থাকা নুরুল হক নুরের ছবির সাথে নুরুল হক নুর ও শামা ওবায়েদের আলোচিত ছবিতে থাকা নুরের পোশাক, হাতের অবস্থান, চুল, অঙ্গভঙ্গি এবং ছবির বেকগ্রাউন্ডের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

শুধু আলোচিত ছবিতে নুরের দাঁড়িয়ে থাকার অবস্থান শামা ওবায়েদের ডানে হলেও ঢাকা মহানগর উত্তর গণঅধিকার পরিষদ নেতা জিয়ার সাথের ছবিতে নুুরের অবস্থান জিয়ার বামে। অর্থাৎ ভাইরাল ছবিটিতে নুরের আসল ছবিটির মিরর ফ্রেম বসানো হয়েছে।

Image Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে ম্যানুয়ালি অনুসন্ধানে শামা ওবায়েদ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ০৫ জুন প্রকাশিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিতে শামা ওবায়েদের সাথে লাল ব্লেজার পরিহিত এক নারীকে দেখা যাচ্ছে।

Screenshot: Facebook

এছাড়াও Shama Obaed Official Fan’s Club নামের ফেসবুক গ্রুপে ২০২০ সালের ২৩ জু  Sabbir Molla নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হতে করা এক পোস্টে একই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

এই ছবিতে শামা ওবায়েদের পোশাক, হাতের অবস্থান, চুল, অঙ্গভঙ্গির সাথে নুরের সাথে আলোচিত ছবি থাকা শামা ওবায়েদের ছবির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

শামা ওবায়েদের এই ছবিটিও নুরের আসল ছবির ন্যায় দাঁড়ি থাকার অবস্থান পাশের ব্যক্তির ডান দিকের পরিবর্তে বাম দিকে বসানো হয়েছে। মূলত ভাইরাল ছবিটিতে শামা ওবায়েদের আসল ছবিটির মিরর ফ্রেম বসানো হয়েছে।

Image Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুর ও বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদের ভিন্ন দুটি ছবির মিরর ফ্রেম ফটোশপের মাধ্যমে জোড়া লাগিয়ে উক্ত ছবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

Image Comparison by Rumor Scanner

মূলত, সম্প্রতি গণ অধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুরের সাথে বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদের একান্ত মূহুর্ত দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভাইরাল এই ছবিটি এডিটেড। প্রকৃতপক্ষে নুরুল হক নুর নামের একটি ফেসবুক পেজ এবং শামা ওবায়েদ নামের অপর একটি ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ভিন্ন দুটি ছবি সংগ্রহ করে মিরর ফ্রেম ফটোশপের মাধ্যমে জোড়া লাগিয়ে উক্ত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও এক নারীর সাথে ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত মূহুর্তের ছবি দাবিতে একটি এডিটেড ছবি প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, নুরুল হক নুর ও শামা ওবায়েদের ব্যক্তিগত মূহুর্ত দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত এই ছবিটি এডিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র