Home Blog Page 556

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, “উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ” শীর্ষক শিরোনামে স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে বিভিন্ন পদে নিয়োগ প্রদানের একটি বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।

স্বাস্থ্য

ফেসবুকে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

এই বিজ্ঞপ্তির পোস্টে ৩৪ হাজার রিয়েকশন, সাড়ে ৭ হাজারের অধিক কমেন্ট এবং দুই হাজারের অধিক শেয়ার হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাস্থ্য বিভাগ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করেনি বরং এটি একটি ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। 

অনুসন্ধানের শুরুতেই Uhafpc নামের যে ফেসবুক পেজ থেকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রচারিত হয় সেটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, উক্ত পেজ থেকে শুধুমাত্র দুইটি পোস্ট করা হয়েছে। গত ২৪ জুলাই এবং ৮ আগস্টের উভয় পোস্টেই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি দেখতে পাওয়া যায়।

এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সূত্র হিসেবে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর প্রকাশিত চাকরির সংবাদে’র পৃষ্ঠা-০১ এবং ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর প্রকাশিত করতোয়া’র পৃষ্ঠা-০৪ উল্লেখ করা হয়েছে।

স্বভাবতই, ২৪ জুলাই এবং ০৮ আগস্ট প্রচারিত কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সূত্র, প্রচার-পরবর্তী তারিখে প্রকাশিত হওয়ার সুযোগ নেই।

পরবর্তীতে, উক্ত পোস্ট দুইটির এডিট হিস্টোরি থেকে জানা যায়, পোস্ট দুইটির উভয়ই বহুবার সম্পাদিত হয়েছে।

এছাড়াও, উক্ত পোস্ট দুটি বিস্তারিত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পোস্টটি গত ১ নভেম্বর থেকে বুস্ট করা হয়েছে।

অর্থাৎ, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ফেসবুক পেজ, বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত পোস্টের এডিট হিস্টোরি এবং পোস্ট বুস্ট করা থেকে স্বভাবতই প্রতীয়মান হয় যে উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি একাধিকবার এডিট করে ভুয়া তথ্যসূত্র দিয়ে অধিক রিচ পাবার জন্য বুস্ট করে প্রচার করা হচ্ছে।

পরবর্তীতে, আলোচিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটির বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে অধিকতর সত্যতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: মাইদুল ইসলাম প্রধান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে এরকম কোন বিজ্ঞাপন দেয়া হয়নি। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞাপন দেয়া হলে তা আমাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে দেয়া হয়।

মূলত, Uhafpc নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে বুস্টেড পোস্টের মাধ্যমে “উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ” সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। অনুসন্ধানে জানা যায় বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। তাছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি বলে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: মাইদুল ইসলাম প্রধান রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, পূর্বে প্রতারণার একাধিক ঘটনা শনাক্ত করে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, “উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ” সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া।

তথ্যসূত্র

শেখ মুজিব পাবলিক টয়লেট দাবিতে প্রচারিত ছবিটি কি বাস্তব?

0

সম্প্রতি, “রুচির দুর্ভিক্ষ চলছে আওয়ামী লীগের মধ্যে। না হয় কোন সুস্থ মানুষের পক্ষে এমন টা করা সম্ভব নয়। শেখ মুজিব পাবলিক টয়লেট” শীর্ষক শিরোনামে পাবলিক টয়লেটের ছবি সম্বলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

শেখ মুজিব

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ মুজিব পাবলিক টয়লেট দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত করা। ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত একটি পাবলিক টয়লেটের ছবিতে ফটোশপের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ও ছবি যুক্ত করে উক্ত ছবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে, ‘Sobujdeshnews’ নামের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে  ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর “ঝিনাইদহে ইউএনওর হস্তক্ষেপে বন্ধ পাবলিক টয়লেট” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ছবির সাথে বঙ্গবন্ধু পাবলিক টয়লেট দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ছবিতে ডানপাশের দেয়ালের লেখার সাথে আলোচিত ছবিতে থাকা দেয়ালের লেখার হুবহু মিল রয়েছে। তবে, ছবিতে থাকা বামপাশের দেয়ালের সাথে মিল নেই। তাছাড়া পুরো ছবির ফ্রেমেরই হুবহু মিল রয়েছে।

মূলত, ২০১৮ সালে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার তৎকালীন ইউএনও এর হস্তক্ষেপে একটি পাবলিক টয়লেট চালু না হওয়ার অভিযোগ নিয়ে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উক্ত প্রতিবেদনে ওই পাবলিক টয়লেটের একটি ছবি সংযুক্ত করা হয়। সম্প্রতি সেই ছবিটিকেই এডিট করে টয়লেটের দেয়ালে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি এবং নাম যুক্ত করে ‘শেখ মুজিব পাবলিক টয়লেট’ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে ছবিটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

সাকিব বা বাংলাদেশকে নিয়ে বাজে মন্তব্যের কারণে শ্রীলঙ্কার সদস্যপদ স্থগিত করেনি আইসিসি  

0

সম্প্রতি, ‘আইসিসির আইন অমান্য করে বাংলাদেশ দল এবং অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বাজে মন্তব্য সর্বোপরি পাথর মারতে চাওয়ার খেসারত হিসাবে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলকে নিষিদ্ধ করলো আইসিসি’ শীর্ষক দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

সাকিব

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশ দল এবং সাকিবকে নিয়ে বাজে মন্তব্যের জন্য শ্রীলঙ্কাকে আইসিসি নিষিদ্ধ করেনি বরং শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ডের দুর্নীতি এবং সরকারী হস্তক্ষেপের কারণে আইসিসি তাদের সদস্যপদ স্থগিত করেছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এর ওয়েবসাইটে গত ১০ নভেম্বর ‘Sri Lanka Cricket suspended by ICC Board’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : ICC Website

শ্রীলঙ্কার সদস্যপদ স্থগিতের বিষয়ে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, “আইসিসি বোর্ড আজ সভায় বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করেছে। বিশেষ করে, স্বাধীনভাবে কাজ করতে ক্রিকেট প্রশাসনকে সরকারি হস্তক্ষেপের বাইরে থাকার প্রয়োজন ছিল। সময়মতো এই স্থগিতাদেশের শর্তগুলো জানিয়ে দেবে আইসিসি বোর্ড।”

Screenshot : ICC Website 

আইসিসি কর্তৃক শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দলের সদস্যপদ বাতিলের বিষয়ে বিস্তর অনুসন্ধানে ভারতীয় মাসিক ক্রীড়া পত্রিকা ‘Sportstar’ এর ওয়েবসাইটে গত ০৬ নভেম্বর ‘Sri Lanka sacks board, appoints interim committee’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : Sportstar Website 

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কা তাদের সাতটি বিশ্বকাপ ম্যাচের মধ্যে মাত্র দুটিতে জয়লাভ করেছে এবং সেমিফাইনালে ওঠার প্রতিযোগিতা থেকে প্রায় বাদ পড়েছে। এমতাবস্থায় শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া মন্ত্রী রোশান রানাসিংহে ক্রিকেট পরিচালনা বোর্ডকে বরখাস্ত করে বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গাকে প্রধান করে একটি অন্তবর্তীকালীন কমিটি গঠন করেন। 

Screenshot : Sportstar Website 

যদিও এর একদিন পরই শ্রীলঙ্কার আদালত  অন্তর্বর্তী কমিটির উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে আগের কমিটিকে পুনর্বহাল রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। 

জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো লিখেছে, শ্রীলঙ্কা সরকারের হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বিগ্ন আইসিসি। বোর্ড পরিচালনা থেকে আর্থিক বিষয়াদি এমনকি জাতীয় দলের বিভিন্ন বিষয়েও শ্রীলঙ্কা সরকারের হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বিগ্ন ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক এই সংস্থা। এর জেরেই এবার কড়া পদক্ষেপ নিলো আইসিসি।

মূলত, সম্প্রতি বাংলাদেশ দল এবং অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বাজে মন্তব্য সর্বোপরি পাথর মারতে চাওয়ার খেসারত হিসেবে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলকে নিষিদ্ধ করলো আইসিসি’ শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হলেও রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রী কর্তৃক বোর্ড সদস্যদের বরখাস্ত করার বিষয়টি আইসিসির নজরে আসলে ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ ও দুর্নীতির অভিযোগে শ্রীলঙ্কার সদস্যপদ বাতিল করে আইসিসি। উক্ত ঘটনাকেই ভিন্ন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।  

উল্লেখ্য, গত ০৬ নভেম্বর বাংলাদেশের বিপক্ষে বিশ্বকাপের ম্যাচে ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টাইমড আউট হন শ্রীলঙ্কার এঞ্জেলো ম্যাথিউস। পরবর্তীতে  তাকে এভাবে আউট করা বাংলাদেশ ক্রিকেট ও সাকিব আল হাসানের জন্য কলঙ্কজনক আখ্যা দিয়েছেন এই ক্রিকেটার। তাছাড়া, শ্রীলঙ্কায় গেলে সাকিবকে পাথর মারার হুমকিও দিয়েছেন ম্যাথিউসের ভাই ট্রেভিন ম্যাথিউস।

প্রসঙ্গত, ১৯৮১ সালে আইসিসির পূর্ণ সদস্যপদ পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। আগামী ২১ নভেম্বর আইসিসির বোর্ড মিটিংয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ জানানো হবে।

সুতরাং, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ ও দুর্নীতির অভিযোগে আইসিসি কর্তৃক শ্রীলঙ্কার সদস্যপদ বাতিল করার বিষয়টিকে ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এবং অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় শ্রীলঙ্কাকে আইসিসি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে’ শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভুলবশত ভোট দেয়নি ইসরায়েল

গত ১৬ অক্টোবর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভুলবশত ভোট দিয়েছে ইসরায়েল শীর্ষক একটি দাবি গণমাধ্যমসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার৷

ফিলিস্তিনের

উক্ত দাবিতে প্রচারিত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন দেশ টিভি (ফেসবুক)। 

একই দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভুলবশত ভোট দেয়নি ইসরায়েল বরং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ভুলবশত ইসরায়েলের নাম উচ্চারণ করে ফেলেন। এছাড়া, এটি ভোটের সময় নয় বরং রাশিয়া কর্তৃক যুদ্ধবিরতি চেয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপনের ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে দেশটিভি’র ভিডিও প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করে দেখেছি আমরা।  

ভিডিওর ১ মিনিট ১৮ সেকেন্ড সময়ে বলা হচ্ছিল, গাজায় অস্ত্র বিরতির জন্য  জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ চার দেশ। এর ফলে অস্ত্র বিরতির প্রস্তাব পাশ হয়নি পরিষদে। এদিকে পশ্চিমাদের হাতে জাতিসংঘ জিম্মি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। তবে এই বৈঠকে অস্ত্র বিরতি ইস্যুতে ভুলবশত নিজেদের বিপক্ষেই ভেটো দিয়ে বসে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রতি একাত্মতা প্রকাশে বুধবার তেল আবিব সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।…” 

এ সময় এক ব্যক্তিকে ইসারয়েলসহ কয়েকটি দেশের নাম বলতে দেখা যায়। 

পরবর্তীতে জাতিসংঘের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৭ অক্টোবর “Security Council rejects Russian resolution on Gaza – Security Council | United Nations (full)” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: United Nations YouTube Channel 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে অনুষ্ঠিত এই অধিবেশনে রাশিয়া  ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চেয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করে। সেই খসড়া প্রস্তাবটি উত্থাপনের সময় যেসকল দেশ এর পক্ষে দাঁড়ায় তাদের নাম উল্লেখ করেন এক ব্যক্তি। দেশের নামগুলো উচ্চারণ করতে গিয়ে তিনি ইসরায়েল নামও বলে ফেলেন। তবে পাশে থাকা একজন তাকে কিছু একটা বলেন তখন। এরপরই তিনি জানান, তিনি ভুলে ইসরায়েলের নাম উচ্চারণ করেছেন। ফিলিস্তিনের পক্ষে একাত্মতা প্রকাশকারী দেশের তালিকায় ইসরায়েলের নাম নেই। 

অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়া এই ব্যক্তির নাম সার্জিও ফ্রাঙ্কা দেনেসা। গত অক্টোবরে ব্রাজিলের পক্ষে তিনি জাতিসংঘের উক্ত অধিবেশনে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিভিন্ন দেশকে মাসভিত্তিক দায়িত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। অক্টোবরে এই দায়িত্বে ছিল ব্রাজিল। নভেম্বরে পেয়েছে চীন। 

মূলত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলও হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা চালায়। এতে দেশ দুইটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত নতুন মাত্রা পায়৷ পরবর্তীতে রাশিয়া ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চেয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। সেই খসড়া প্রস্তাবটি উত্থাপনের সময় যেসকল দেশ একাত্মতা প্রকাশ করে তাদের নাম উল্লেখ করার সময় উক্ত অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট সার্জিও ফ্রাঙ্কা দেনেসা ভুলবশত ইসরায়েলের নাম উচ্চারণ করেন। পরবর্তীতে তিনি তার ভুল স্বীকার করে বলেন, ফিলিস্তিনের পক্ষে একাত্মতা প্রকাশকারী দেশের তালিকায় ইসরায়েলের নাম নেই। কিন্তু এই ঘটনাকে গণমাধ্যমসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভুলবশত ভোট দিয়েছে ইসরায়েল। 

উল্লেখ্য, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷

সুতরাং, জাতিসংঘের অধিবেশনে ফিলিস্তিনের পক্ষে একটি প্রস্তাবের সম্মতি দেওয়া দেশের তালিকায় নাম না থাকলেও ইসরায়েলের নাম তৎকালীন অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট কর্তৃক ভুলবশত উচ্চারণের ঘটনাকে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দিল ইসরায়েল শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • United Nations: YouTube Video 
  • Rumor Scanner’s own investigation 

‘দ্য মেসি স্টোর’ বার্সেলোনার নতুন স্পন্সর হয়নি

সম্প্রতি, আর্জেন্টাইন ফুটবলার লিওনেল মেসির অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ ‘দ্য মেসি স্টোর’ বার্সেলোনার নতুন স্পন্সর হয়েছে দাবিতে বার্সেলোনার ফুটবলার আলেজান্দ্রো বালদে’র ছবিযুক্ত কিছু পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আর্জেন্টাইন ফুটবলার লিওনেল মেসির অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ ‘দ্য মেসি স্টোর’ বার্সেলোনার স্পন্সর হয়নি বরং Emaz নামের জনৈক স্প্যানিশ গ্রাফিক ডিজাইনারের আলেজান্দ্রো বালদে’র ছবির সাথে লিওনেল মেসির অটোগ্রাফ সংযুক্ত করে তৈরিকৃত একটি ছবিকে ব্যবহার করে কোনোরকম তথ্যসূত্র ছাড়াই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুইতেই বার্সেলোনার ফুটবলার আলেজান্দ্রো বালদে’র আলোচিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে ছবিটির উপরে emaz নামের সিগনেচার মার্ক দেখতে পাওয়া যায়। 

উক্ত নামের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বার্সেলোনার ফুটবলার আলেজান্দ্রো বালদে’র আলোচিত ছবিটি emazgfx নামের ইনস্টগ্রাম অ্যাকাউন্টে ৭ নভেম্বরের একটি পোস্টে খুঁজে পাওয়া যায়।

Source: emazgfx instagram account

উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে স্প্যানিশ শব্দ #diseñografico হ্যাসট্যাগ দ্বারা বোঝা যায় যে আলোচিত ছবিটি গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

উক্ত ইনস্টগ্রাম অ্যাকাউন্টের বায়ো থেকে জানা যায় Emaz নামের উক্ত ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী একজন গ্রাফিক ডিজাইনার। এছাড়াও, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা’র বেশকিছু খেলোয়াড়ের গ্রাফিক নির্মিত ছবিও দেখতে পাওয়া যায়।

পাশাপাশি, রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে FC Barcelona’র ভেরিফাইড এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ১৫ জুনের একটি টুইট খুঁজে পাওয়া যায়।

বার্সেলোনার ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইটকৃত উক্ত পোস্টটির তুলনামূলক পর্যালোচনা করে জার্সিতে স্পন্সর লোগোতে ভিন্নতা খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়াও দেখা যায়, উক্ত ছবিতে লিওনেল মেসির অটোগ্রাফ সংযুক্ত ছিল না।  

Source: FC Barcelona X Account

যা থেকে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, Emaz নামের স্প্যানিশ গ্রাফিক ডিজাইনার বার্সেলোনা ফুটবলার আলেজান্দ্রো বালদে’র ছবির সাথে লিওনেল মেসির অটোগ্রাফ গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে।

এছাড়াও, ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার ওয়েবসাইটে ক্লাবের স্পন্সরদের তালিকা পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

কিন্তু, স্পন্সরদের সে তালিকায় ফুটবলার লিওনেল মেসির অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ দ্য মেসি স্টোরে’র নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Source: FC Barcelona Website

এছাড়াও, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনও সূত্র থেকে আলোচিত দাবির সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

মূলত, ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা গত জুলাই মাসে ফুটবলার আলেজান্দ্রো বালদে’র একটি ছবি নিজেদের ভেরিফাইড এক্স অ্যাকাউন্টে টুইট করে। পরবর্তীতে, Emaz নামের জনৈক স্প্যানিশ গ্রাফিক ডিজাইনার বার্সেলোনা ফুটবলার আলেজান্দ্রো বালদে’র ছবির সাথে লিওনেল মেসির অটোগ্রাফ সংযুক্ত করে একটি ছবি তৈরি করেন। সেই ছবি ব্যবহার করেই ফুটবলার লিওনেল মেসির অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ দ্য মেসি স্টোর বার্সেলোনার স্পন্সর হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে লিওনেল মেসির হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা সম্বলিত একটি এডিটেড ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ফুটবলার লিওনেল মেসির অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ ‘দ্য মেসি স্টোর’ বার্সেলোনার স্পন্সর হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ফিলিস্তিন কর্তৃক ইসরায়েলের বিমান ধ্বংসের দাবিতে ভিডিও গেমের দৃশ্য প্রচার

সম্প্রতি, ফিলিস্তিন ইসরায়েলের বিমানগুলো মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

ফিলিস্তিন

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ২০২১ সালে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফিলিস্তিন ইসরায়েলের বিমানগুলোকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাস্তব নয় বরং এটি এআরএমএ ৩ নামক একটি সিমুলেশন গেমের দৃশ্য।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির কি-ফ্রেম কেটে নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘GaMiNG SL515’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ১ মে প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির টাইটেলে থাকা তথ্য থেকে জানা যায়, উক্ত ভিডিওটি এআরএমএ-থ্রি নামক একটি সিমুলেশন গেমের দৃশ্য। গেমটির অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।

এছাড়া, অনুসন্ধানে ইউটিউবে ‘এআরএমএ ৩’ সিমুলেশন ভিডিও গেমের আরও বেশ কিছু গোলাগুলির ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এমন কিছু ভিডিও দেখুন (, , , , )।

মূলত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে হামলা শুরু করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ফিলিস্তিন ইসরায়েলের বিমানগুলোকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাস্তব নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি এআরএমএ ৩ নামক একটি সিমুলেশন গেমের একটি দৃশ্য।

প্রসঙ্গত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলও হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা চালায়। এতে দেশ দুইটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত নতুন মাত্রা পায়৷ 

উল্লেখ্য, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷

সুতরাং, এআরএমএ-৩ নামক সিমুলেশন গেমের দৃশ্যকে ফিলিস্তিন কর্তৃক ইসরায়েলের বিমান ধ্বংসের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব সফরের প্রতিবেদনে গণমাধ্যমে পুরোনো ছবি প্রচার

সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলমান সৌদি আরব সফরের প্রতিবেদনের সাথে দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে দুইটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী

উক্ত ছবিগুলো ব্যবহার করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন একুশে টিভি, আরটিভি, আমাদের সময়, দৈনিক জনকণ্ঠ, ডেল্টা টাইমস, ভোরের ডাক, বাহান্ন নিউজ, মানবকণ্ঠ

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি দুটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলমান সৌদি আরব সফরের নয় বরং ২০১৯ সালে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্রসমূহের সংগঠন ওআইসি’র সম্মেলনে যোগদানের ছবি এগুলো।

ছবি যাচাই-১

এই ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মূলধারার সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ১ জুন “Red carpet rolled out as PM arrives in Saudi Arabia” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি ২০১৯ সালে ওআইসি’র ১৪তম সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৌদি আরব সফর চলাকালীন সময়ের।

Source: Bangla Tribune

পাশাপাশি সেসময় অনলাইন সংবাদমাধ্যম ডেইলি বাংলাদেশ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত “Saudi Arabia rolls out red carpet for PM” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত  প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

ছবি যাচাই-২

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বার্তা২৪ এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ২ জুন প্রকাশিত “ওমরাহ শেষে মদিনায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই ছবিটিও ২০১৯ সালের ওআইসি’র সম্মেলনে যোগ দিতে সৌদি আরব সফরকালীন সময়ের। 

Source: বার্তা২৪

পাশাপাশি, অনলাইন পোর্টাল MT News এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ২ জুন “নবীজির রওজা মোবারক জিয়ারত করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 
উল্লেখ্য, সৌদি আরবের জেদ্দায় ওআইসি আয়োজিত ‘ইসলামে নারী’ বিষয়ক সম্মেলনে যোগ দিতে গত ৫ নভেম্বর প্রিন্স মোহাম্মদ বিন আব্দুল আজিজ বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর চলমান সফরের ভিডিও প্রতিবেদন দেখুন News24

মূলত, ২০১৯ সালের ৩১ মে ওআইসি’র ১৪তম সম্মেলনে যোগ দিতে সৌদি আরব সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানাতে জেদ্দার কিং আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাল গালিচার সম্মান জানায় সৌদি আরব। প্রধানমন্ত্রীর সেই সফরের দুইটি ছবিকে তাঁর চলমান সৌদি আরব সফরের প্রতিবেদনের সাথে সংযুক্ত করে প্রচার করা হচ্ছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্যও দেওয়া হয়নি। এতে করে স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলনান সৌদি আরব সফরের ছবি বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে।

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলমান সৌদি আরব সফর নিয়ে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদনে তাঁর ২০১৯ সালের সৌদি আরব সফরের ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র চলমান সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয় শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেনি

গত ০৬ নভেম্বর নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেলের মন্তব্য দাবিতে বিএনপি’র চলমান সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয় শীর্ষক একটি তথ্য দেশের একাধিক গণমাধ্যমের খবরে প্রচার করা হয়। 

উক্ত দাবিটি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন সময় টিভি, ইত্তেফাক (ফেসবুক), বায়ান্ন টিভি, বহুমাত্রিক, রিদ্মিক নিউজ, পদ্মা টাইমস, সিভি ভয়েস

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজসহ অন্যান্য পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি’র চলমান সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয় শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বরং সময় টিভি’র সাংবাদিক কর্তৃক বিএনপি’র চলমান সংঘাতের জন্য দায়ী করে বেদান্ত প্যাটেলের কাছে এ বিষয়ে মতামত চাওয়া হলেও তিনি আলোচিত দাবি সংশ্লিষ্ট কোনো মন্তব্য করেননি। 

আমরা বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে গত ০৬ নভেম্বর U.S. Department of State এর ইউটিউব চ্যানেলে আলোচিত প্রেস ব্রিফিংয়ের পুরো ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওর Description অংশে স্টেট ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একই প্রেস ব্রিফিংয়ের পুরো ট্রান্সক্রিপ্টের লিংক রয়েছে। ট্রান্সক্রিপ্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ওইদিনের প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ বিষয়ে দুইবার আলোচনা হয়েছে। 

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে ভিডিওর ২৯ মিনিট ৩০ সেকেন্ড সময় থেকে বাংলাদেশ বিষয়ে প্রথম আলোচনা খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে একজন সাংবাদিককে জিজ্ঞেস করতে শোনা যায়, “Thank you so much, Vedant. Nice to see you up here. The Bangladeshi people, they want a free and fair election. U.S.A., from this room, they declared the C-3 visa policy, and now ongoing vandalism and destruction of public properties by Bangladesh Nationalist Party activists on the pretext of exercising democratic rights in contributing to the – disrupt the peaceful political environment to upheld the next parliamentary election in Bangladesh. Will you ask nationalist party to stop the violence and participate the upcoming general election? And I have another one.” 

প্রশ্নটির বাংলা অনুবাদটি এমন, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, বেদান্ত। আপনাকে এখানে দেখে ভালো লাগলো। বাংলাদেশের জনগণ একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। ইউ.এস.এ’র এই কক্ষ থেকে, তারা C-3 ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, এবং বাংলাদেশের পরবর্তী সংসদ নির্বাচনকে আটকে দিতে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশকে ব্যাহত করতে বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কর্মীদের দ্বারা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের অজুহাতে ভাংচুর এবং সরকারী সম্পত্তি ধ্বংস করা হচ্ছে। আপনি কি জাতীয়তাবাদী দলকে সহিংসতা বন্ধ করে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বলবেন? এবং আমার আরও একটি প্রশ্ন আছে।”

জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলছিলেন, “We continue to closely monitor the electoral environment in Bangladesh leading up to this January’s election, and we take any incidents of violence incredibly seriously. We are engaging and will continue to engage with the government, with opposition parties, with civil society, and other stakeholders to urge them to work together for the benefit of the Bangladeshi people.”

এটির বাংলা অনুবাদটি এমন, “এই মুহূর্তে আমাদের মূল লক্ষ্য হলো, জানুয়ারির ভোটগ্রহণ পর্যন্ত বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশের দিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং সরকার, বিরোধীদলের নেতা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে প্রয়োজন অনুযায়ী যোগাযোগ স্থাপন করে সবাইকে একসঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানানো।”

পরবর্তীতে উক্ত সাংবাদিক আরেকটি প্রশ্ন করার সুযোগ পান। তিনি জানতে চান, ” Thank you so much. And I’ll be – Peter Haas, the honorable ambassador, in a really difficult situation. Last week, when the nationalist party leaders, they brought an U.S. citizen to their head office on camera to declare that he is the adviser of President Biden and he has an everyday connection 10 to 15 times with President Biden. And then the – other party leaders, BNP leader, has been telling, calling Peter Haas an avatar, as a rescuer for the nationalist party. Will you categorically deny this claim from the nationalist party, please? Thank you.”

অর্থাৎ, “আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। মাননীয় রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সত্যিই একটি কঠিন পরিস্থিতিতে আছেন। গত সপ্তাহে, যখন জাতীয়তাবাদী দলের নেতারা একজন মার্কিন নাগরিককে তাদের প্রধান কার্যালয়ে নিয়ে আসে ঘোষণা করার জন্য যে তিনি প্রেসিডেন্ট বাইডেন উপদেষ্টা এবং বাইডেনের সাথে তার প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ বার যোগাযোগ রয়েছে। আর দলের আরেক নেতা, পিটার হাসকে অবতার বলছেন, দলের উদ্ধারকারী হিসেবে অভিহিত করছেন। আপনি কি স্পষ্টভাবে জাতীয়তাবাদী দলের এই দাবি অস্বীকার করবেন, দয়া করে? ধন্যবাদ।” 

এই প্রশ্নের জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, “I’ve not seen that report. And I’m going to be honest – I really have no idea what you’re talking about. So let me just say this.”

অর্থাৎ, “আমি সেই রিপোর্ট দেখিনি। এবং আপনি কি সম্পর্কে কথা বলছেন তা আমার সত্যিই কোন ধারণা নেই। তাই আমাকে শুধু এই বলতে দিন…”

প্যাটেলকে বলতে দেখা যায়, “Please don’t interrupt me. We have an incredibly talented team at our embassy in Dhaka, led by an experienced ambassador who is well-versed not just working in Bangladesh, but also the broader region largely. And as I have said, we are closely monitoring their electoral environment in Bangladesh, leading up to January’s election.”

এটির বাংলা অনুবাদটি এমন, “দয়া করে আমাকে বাধা দেবেন না। ঢাকায় আমাদের দূতাবাসে আমাদের একটি অবিশ্বাস্যভাবে প্রতিভাবান দল রয়েছে, যার নেতৃত্বে একজন অভিজ্ঞ রাষ্ট্রদূত যিনি শুধু বাংলাদেশেই নয়, বৃহত্তর অঞ্চলেও কাজ করতে পারদর্শী। এবং আমি যেমন বলেছি, আমরা জানুয়ারির নির্বাচন পর্যন্ত বাংলাদেশে তাদের নির্বাচনী পরিবেশ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।”

অর্থাৎ, সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক নিজেই চলমান সংঘাতের জন্য বিএনপিকে দায়ী করে পুরো বিষয়টি বেদান্ত প্যাটেলের কাছে উপস্থাপন করে তার মন্তব্য জানতে চেয়েছেন। কিন্তু বেদান্ত তার বক্তব্যে বিএনপিকে চলমান সহিংসতার জন্য দায়ী করে এই সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয় শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি। বরং তিনি বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশের দিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করার কথা বলেছেন। 

আমরা অনুসন্ধানে জানতে পেরেছি, প্রশ্নকারী সাংবাদিকের নাম দস্তগীর জাহাঙ্গীর। তিনি সময় টিভি’র যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি। তিনি নিজেও প্রেস ব্রিফিংয়ে তার করা প্রশ্নের অংশটি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন। 

প্রেস ব্রিফিংয়ের ৪৬ মিনিট সময় থেকে আরেকজন সাংবাদিককে বাংলাদেশ বিষয়ে প্রশ্ন করতে দেখা যায়। তার প্রশ্নটি ছিল, “Thank you, Vedant. Countrywide protests going on in Bangladesh. They’re demanding the resignation of the ruling prime minister, and the regime is in a sense declare war against the main opposition, BNP and protestors. Over 8,000 people have been detained, including BNP secretary general and all rank and file. At least 11 people killed since protests began on October 28. Ruling Prime Minister Hasina instructed her party members to throw opposition party members into fire or burn their hands. As the United States and the international community in Bangladesh are committed to creating a peaceful and credible environment for upcoming elections, for creating that environment, will you be with the people of Bangladesh and reflect their will under a new caretaker government?”

এটির বাংলা অনুবাদটি এমন, “ধন্যবাদ, বেদান্ত। সারা বাংলাদেশে বিক্ষোভ চলছে। তারা ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছে এবং সরকার এক অর্থে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছে। আটক করা হয়েছে, বিএনপি মহাসচিবসহ সব মিলিয়ে ৮ হাজারের বেশি লোককে। ২৮ অক্টোবর থেকে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা তার দলের সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন বিরোধী দলের সদস্যদের আগুনে নিক্ষেপ করতে বা তাদের হাত পোড়াতে। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আসন্ন নির্বাচনের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, সেই পরিবেশ তৈরির জন্য, আপনি কি বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকবেন এবং একটি নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাবেন?”

প্যাটেল উত্তরে বললেন, “So it’s important to remember – and you’ve heard me say this a number of times before, including in answering your friend’s question – that the U.S. does not support any political party in Bangladesh. We don’t favor any one political party over the other. Right now our focus continues to be closely monitoring the electoral environment in Bangladesh leading up to January’s election, engaging appropriately with the government, with opposition leaders, with civil society and other stakeholders to urge them to work together for the benefit of the Bangladeshi people.” 

এটির বাংলা অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, “এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ – এবং আপনি আমাকে অনেকবার এটা বলতে শুনেছেন, আপনার বন্ধুর প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহ – যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। আমরা কোনো একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষপাত করি না। এই মুহূর্তে আমাদের দৃষ্টি জানুয়ারির নির্বাচন পর্যন্ত বাংলাদেশে নির্বাচনী পরিবেশ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা, সরকারের সাথে, বিরোধী দলের নেতাদের সাথে, সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের সাথে বাংলাদেশি জনগণের সুবিধার জন্য একসাথে কাজ করার আহ্বান জানাতে যথাযথভাবে জড়িত হওয়া অব্যাহত রয়েছে।”

অর্থাৎ, এই সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরেও বেদান্ত প্যাটেল বিএনপিকে চলমান সহিংসতার জন্য দায়ী করে এই সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয় শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি।

বেদান্তকে প্রশ্নকারী এই সাংবাদিকের নাম মুশফিক ফজল আনসারী, যিনি খালেদা জিয়ার সাবেক প্রেস সচিব। তিনিও তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তার করা প্রশ্নের অংশটি শেয়ার করেছেন।  

মূলত, গত ০৬ নভেম্বর নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বিএনপি’র চলমান সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয় শীর্ষক একটি মন্তব্য করেছেন দাবিতে দেশের একাধিক গণমাধ্যমের খবরে প্রচার করা হয়। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বেদান্ত প্যাটেল বিএনপি প্রসঙ্গে সেদিন এমন কোনো মন্তব্য করেননি। বাংলাদেশি একজন সাংবাদিক নিজেই চলমান সংঘাতের জন্য বিএনপিকে দায়ী করে পুরো বিষয়টি বেদান্ত প্যাটেলের কাছে উপস্থাপন করে তার মন্তব্য জানতে চেয়েছিলেন। জবাবে বেদান্ত জানান,  “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের যে কোন সহিংসতার ঘটনা গুরুত্বের সাথে নিচ্ছে।” কিন্তু বাংলাদেশ বিষয়ক সেদিনের প্রেস ব্রিফিংয়ের আলোচনাগুলো বিশ্লেষণ করে বেদান্ত প্যাটেল “বিএনপি’র চলমান সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়নি।  

উল্লেখ্য, ঢাকায় গত ২৮ অক্টোবরের রাজনৈতিক সমাবেশ ঘিরে সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, 

২৮শে অক্টোবর ঢাকায় যে রাজনৈতিক সহিংসতা সংঘটিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র তার নিন্দা জানায়। একজন পুলিশ কর্মকর্তা, একজন রাজনৈতিক কর্মীহত্যা এবং একটি হাসপাতাল পোড়ানোর ঘটনা অগ্রহণযোগ্য। সাংবাদিকসহ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতাও তেমনই। আমরা সব পক্ষকে শান্তি ও সংযমের আহ্বান জানাই। সম্ভাব্য ভিসা নিষেধাজ্ঞার জন্য আমরা সমস্ত সহিংস ঘটনার পর্যালোচনা করব।

সুতরাং, গত ০৬ নভেম্বরের প্রেস ব্রিফিংয়ে এসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বিএনপি’র চলমান সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয় শীর্ষক একটি মন্তব্য করেছেন দাবিতে দেশের একাধিক গণমাধ্যমের খবরে প্রচার করা হয়; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

সৌদি আরবের ২০৩৪ বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামের নকশা দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো এআই দিয়ে তৈরি

0

সম্প্রতি, সৌদি আরব ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনকে সামনে রেখে দেশটির স্টেডিয়ামগুলোর ডিজাইন প্রকাশ করেছে শীর্ষক দাবিতে একাধিক ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

স্টেডিয়ামের নকশা

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সৌদি আরব ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য কোনো ধরণের স্টেডিয়ামের ডিজাইন প্রকাশ করেনি বরং  কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে তৈরি কিছু স্টেডিয়ামের নকশার ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, বিশ্বকাপের আয়োজক হতে প্রস্তাব দেওয়ার জন্য ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল ফিফা। এই সময়সীমার শেষদিনে এসে ফুটবল অস্ট্রেলিয়া তাদের বিড প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এতে করে ২০৩৪ বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য একমাত্র প্রার্থী এখন সৌদি আরব। 

এ সংক্রান্ত খবরটি গণমাধ্যমে এলেও 

সৌদি আরব ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে স্টেডিয়ামের নকশা প্রকাশ করেছে শীর্ষক কোনো তথ্য গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম। 

পরবর্তীতে ছবিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে omdertimes নামক একটি আরবি ভাষার ওয়েব পোর্টালে গত ৭ নভেম্বরে প্রকাশিত কিছু ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। লক্ষ্য করে দেখা যায়, ছবি গুলোতে ‘@ibrahima5118’ নামক টিকটক অ্যাকাউন্টের ওয়াটার মার্ক দেওয়া আছে।

Screenshot from omdertimes

পরবর্তীতে উক্ত ওয়াটারমার্ক এর সূত্র ধরে এবং প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধান করে ‘ibrahima5118’ নামক টিকটক অ্যাকাউন্টটি খুঁজে পাওয়া যায় এবং চলতি বছরের নভেম্বর মাসের শুরুতে প্রকাশিত স্লাইড ভিডিওতে থাকা ছবিগুলোর সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবি গুলোর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে থাকা ক্যাপশন থেকে জানা যাচ্ছে,  এই ছবি গুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমতার সাহায্যে তৈরি করা। 

Screenshot from Google Lens

এছাড়া বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের লক্ষ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি ছবি শনাক্তকরণ ওয়েবসাইট Is It Ai এ ছবিটির ব্যাপারে জানতে চাইলে ওয়েবসাইটটি ছবিটি প্রায় ৭০% কৃত্রিম হিসেবে চিহ্নিত করে।

Screenshot from isitai.com

এছাড়া, ২০৩৪ সালে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিতব্য ফিফা বিশ্বকাপের মাঠের নকশা প্রকাশ হওয়ার তথ্য বা চিত্র দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, অস্ট্রেলিয়া আগ্রহ প্রকাশ না করায় সৌদি আরব বর্তমানে ২০৩৪ সালের ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসেবে একক প্রার্থী। দেশটির বিশ্বকাপ আয়োজনের খবরের মধ্যেই একটি টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি বিশ্বকাপের একাধিক মাঠের নকশার ছবি পোস্ট করা হয়। উক্ত ছবিগুলো ব্যবহার করে ইন্টারনেটে সৌদি আরবে ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ স্টেডিয়ামগুলোর ডিজাইন প্রকাশ করেছে দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে যা সঠিক নয়। 

উল্লেখ্য, ফুটবল নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ এশিয়া অথবা ওশেনিয়া মহাদেশের যেকোনো দেশের জন্য চূড়ান্ত করেছিলো। তবে অস্ট্রেলিয়া আগ্রহ প্রকাশ না করায় সৌদি আরব ২০৩৪ সালের ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ সম্ভাব্য আয়োজক দেশ হিসেবে প্রার্থী হয়।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও একাধিক ঘটনায় কৃত্রিম বুদ্ধিমতার সাহায্যে তৈরি ছবি বাস্তব দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন দেখুন এখানে:

সুতরাং, সৌদি আরব ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনকে সামনে রেখে দেশটির স্টেডিয়ামগুলোর ডিজাইন প্রকাশ করেছে শীর্ষক দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি কিছু ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র