Home Blog Page 555

বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন মারা যাওয়ার দাবিটি মিথ্যা 

0

সম্প্রতি,‘বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন মারা গেছেন‘ শীর্ষক একটি দাবিসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে৷ 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে ( আর্কাইভ) , এখানে ( আর্কাইভ ) , এখানে ( আর্কাইভ),  এখানে ( আর্কাইভ) এবং এখানে ( আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন মারা যায়নি বরং তিনি বর্তমানে ভালো আছেন এবং সিঙ্গাপুরের একটি হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানে ২৮ জুলাই বিএনপি’র অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

ঐ পোস্টে ২৮ জুলাই সিঙ্গাপুর সময় সকাল ১০ টায় তোলা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের একটি ছবি সংযুক্ত করে বলা হয়, ‘বিএনপির জাতীয় কমিটির সিনিয়র সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আলহামদুলিল্লাহ আগের থেকে অনেক সুস্থ আছেন, ভাল আছেন। কোন ধরনের গুজবে কান দেবেন না।’

এছাড়াও দেশীয় মূলধারার অনলাইন গণমাধ্যম bdnews24.com এ গত ২৮ জুলাই ” সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন মোশাররফ ‘ভালো আছেন’ ” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot Source: bdnews24.com

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ‘বেঁচে নেই‘ বলে যে খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে তা নেহাতই ‘গুজব’ বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছোট ছেলে ব্যারিস্টার খন্দকার মারুফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গতকাল থেকে একটি মহল গুজব ছড়াচ্ছে। এটা ঠিক নয়। বাবা ভালো আছেন। তার চিকিৎসা চলছে।”

মূলত, গত জুন মাসের শেষের দিকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এরই প্রেক্ষিতে খন্দকার মোশাররফ হোসেন মারা গেছেন দাবিতে একটি তথ্য গত ২৮ জুলাই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, খন্দকার মোশাররফ হোসেনের মৃত্যুর দাবিটি সঠিক নয়। বিষয়টি গুজব বলে বিএনপি এবং তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

 উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন ব্যক্তিদের মৃত্যু নিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচারের ঘটনায় একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন  দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

সুতরাং, বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন মারা গেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সমস্ত সম্পত্তি দানের বিষয়ে রতন টাটা নামে প্রচারিত উক্তিটি বানোয়াট

0

শুধুমাত্র ১৫০০ কোটি টাকাই নয়, আমার দেশ যদি সংকটে পড়ে, তাহলে আমি আমার সমস্ত সম্পত্তিও দিয়ে দিতে রাজি আছি। — রতন টাটা” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য বিগত কয়েক বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে।

Screenshot: Facebook 

২০২০ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানেএখানে। 
পোস্টগুলো আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানেএখানে

২০২১ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানেএখানে। 
পোস্টগুলো আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানেএখানে। 

২০২২ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানেএখানে। 
পোস্টগুলো আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানেএখানে। 

২০২৩ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানেএখানে। 
পোস্টগুলো আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানেএখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারত সংকটে পড়লে রতন টাটা তার সমস্ত সম্পত্তি দানের বিষয়ে কোনো ধরনের বক্তব্য দেননি বরং করোনা মহামারীর সংকট চলাকালীন তার দানের বিষয়কে যুক্ত করে আলোচিত ভিত্তিহীন তথ্যটি দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে।

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘Hindustan Times’ এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ২৮ মার্চ “COVID-19: করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ১৫০০ কোটি টাকা দেবে টাটা গোষ্ঠী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Hindustan Times

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সেসময় করোনো মহামারীর সংকট মোকাবিলায় দেশের জন্য ১৫০০ কোটি টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন রতন টাটা। এর মধ্যে টাটা ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ৫০০ কোটি এবং টাটা গ্রুপের অন্য প্রতিষ্ঠান টাটা সন্সের পক্ষ থেকে বাকি ১০০০ কোটি অনুদান দেওয়ার কথা জানানো হয়। তবে উক্ত প্রতিবেদনে ভারত সংকটে পড়লে রতন টাটার সমস্ত সম্পত্তি দান সংক্রান্ত কোনো তথ্য মন্তব্য পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।

হিন্দুস্তান টাইমের উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র হিসেবে রতন টাটার টুইট এবং টাটা সন্সের বিবৃতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। 

আমরা উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে ঐ টুইট ও বিবৃতি পর্যবেক্ষণ করি। তবে, ২০২০ সালের ২৮ মার্চ কোভিডের অনুদান বিষয়ে প্রচারিত রতন টাটার ঐ টুইটেও তার সম্পত্তি দান সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot: twitter

এছাড়া কোভিডের অনুদান নিয়ে টাটা সন্সের পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতেও রতন টাটার সমস্ত সম্পত্তি দান সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য নেই।

Screenshot: twitter

তাছাড়া, ভারত সংকটে পড়লে রতন টাটা তার সমস্ত সম্পত্তি দান করবেন এমন মন্তব্য করেছেন কিনা এই তথ্যের অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে রতন টাটাকে নিয়ে ২০২০ সাল থেকে এ প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত গত তিন বছর প্রতিবেদনগুলো যাচাই করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মূলত, ২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারীর সংকট মোকাবেলায় ভারতের জন্য ১৫০০ কোটি অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেয় রতন টাটার টাটা গ্রুপ। সে সময় সংকট উত্তরণে দেশের মানুষের মানুষের থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে টাটা গ্রুপের মালিক রতন টাটা। ঐ বিষয়কে কেন্দ্র করে ২০২০ সাল থেকে “শুধুমাত্র ১৫০০ কোটি টাকাই নয়, আমার দেশ যদি সংকটে পড়ে, তাহলে আমি আমার সমস্ত সম্পত্তিও দিয়ে দিতে রাজি আছি।” শীর্ষক মন্তব্যকে রতন টাটার মন্তব্য দাবি করে ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারত সংকটে পড়লে রতন টাটা তার সমস্ত সম্পত্তি দান করবেন জানিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রতন টাটার নামে ভুয়া উক্তি প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ভারত সংকটে পড়লে সমস্ত সম্পত্তি দান নিয়ে রতন টাটার নামে প্রচারিত উক্তিটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশ বড় টুর্নামেন্ট খেলে টুর্নামেন্টের সৌন্দর্য নষ্ট করছে শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি ব্রায়ান লারা

সম্প্রতি, ‘বাংলাদেশ বড় টুর্নামেন্ট খেলে টুর্নামেন্টের সৌন্দর্য নষ্ট করতেছে’ শীর্ষক একটি মন্তব্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক অধিনায়ক ব্রায়ান লারা ২০০৬ সালে করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ২০১৭ সালে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন বিডিক্রিকটাইম

২০০৬ সালে উক্ত প্রসঙ্গ টেনে এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে লারা জানান, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য বাংলাদেশ যোগ্য দল নয়। “যদি জিম্বাবুয়ে এখানে খেলার সুযোগ না পায়, বাংলাদেশেরও এখানে থাকা উচিত নয়।”

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ বড় টুর্নামেন্ট খেলে টুর্নামেন্টের সৌন্দর্য নষ্ট করছে শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি ব্রায়ান লারা বরং লারার ভিন্ন একটি মন্তব্যকে বিকৃত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ২০০৬ সালে ব্রায়ান লারার বাংলাদেশ ক্রিকেট সম্পর্কিত বিভিন্ন মন্তব্য পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে ক্রিকেট বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ESPN cricinfo এর ওয়েবসাইটে ২০০৬ সালের ০৮ অক্টোবর ‘We came here to win this game emphatically’ – Lara’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচে জিম্বাবুয়ের হারের পর (ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে মাত্র ৮৫ রান করে ৯ উইকেটে হেরেছিল) ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ব্রায়ান লারাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, এই ধরনের একপেশে ম্যাচ বড় টুর্নামেন্টের সৌন্দর্য নষ্ট করছে কিনা। 

জবাবে লারা বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে এবং র‍্যাঙ্কিংয়ের নিচের দলগুলোকে উৎসাহিত করা উচিত। তারা সেখানে যেতে চায় এবং বিশ্বের সেরা দলের বিপক্ষে খেলতে চায় এবং এটি তাদের জন্য একটি সুযোগ যে কাউকে চমকে দেওয়ার।”

লারা বলছিলেন, “যদি জিম্বাবুয়ে এখানে না থাকতো তাহলে বাংলাদেশেরও থাকা উচিত নয়। কিন্তু তারা পাকিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে এবং আপনার তাদেরকে সুযোগ দিতে হবে। সামগ্রিকভাবে ক্রিকেটের জন্য বিষয়টি ভালো এবং আমাদের এটা মেনে নিতে হবে।” 

Screenshot: ESPN cricinfo

মূলত, ২০০৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচে মাত্র ৮৫ রান করে ৯ উইকেটে হেরেছিল জিম্বাবুয়ে। ম্যাচটির পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক লারাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, এই ধরনের একপেশে ম্যাচ বড় টুর্নামেন্টের সৌন্দর্য নষ্ট করছে কিনা। জবাবে লারা বলেছিলেন, “আমি মনে করি বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে এবং র‍্যাঙ্কিংয়ের নিচের দলগুলোকে উৎসাহিত করা উচিত। যদি জিম্বাবুয়ে এখানে না থাকতো তাহলে বাংলাদেশেরও থাকা উচিত নয়। কিন্তু তারা পাকিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে এবং আপনার তাদেরকে সুযোগ দিতে হবে। সামগ্রিকভাবে ক্রিকেটের জন্য বিষয়টি ভালো এবং আমাদের এটা মেনে নিতে হবে।” অর্থাৎ, লারার উক্ত মন্তব্যকেই বিকৃত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট টিম চলতি বছরের ওডিআই বিশ্বকাপের মূল পর্ব থেকে ছিটকে যায়। এরপরই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক অধিনায়ক ব্রায়ান লারার বাংলাদেশ ক্রিকেট সম্পর্কিত ভুয়া এই মন্তব্যটি আলোচনায় আসে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ক্রিকেট বিষয়ক বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমনকিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ‘বাংলাদেশ বড় টুর্নামেন্ট খেলে টুর্নামেন্টের সৌন্দর্য নষ্ট করতেছে’ শীর্ষক একটি বক্তব্যকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক অধিনায়ক ব্রায়ান লারার মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

টাইটানিক দেখতে যাওয়ার নতুন কোনো বিজ্ঞাপন দেয়নি ওশানগেট

সম্প্রতি ‘আবারও টাইটানিক দেখতে যাওয়ার বিজ্ঞাপন দিল ওশানগেট’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যম সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

গণমাধ্যমের ফেসবুক পেইজ সহ অন্যান্য পেইজে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি, বাংলা নিউজ২৪, আমাদের সময়.কম, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, মানবজমিন, নিউজ২৪, কালবেলা, আজকের পত্রিকা, যমুনা টিভি, চ্যানেল২৪, নাগরিক টিভি, বাংলা ভিশন, ঢাকা মেইল, কালের কণ্ঠ, চ্যানেল আই, ডিবিসি নিউজ, নয়া দিগন্ত, পূর্বকোণ, ডেইলি বাংলাদেশ, জুম বাংলা, বিডি২৪রিপোর্ট, অর্থ সংবাদ, কারেন্ট নিউজ, সাম্প্রতিক দেশকাল, নিউজ জি২৪, রিদ্মিক নিউজ, প্রাইম নিউজবিডি, নিরাপদ নিউজ, বহুমাত্রিক, বাংলা খবর বিডি। 

ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন  বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইকোনমিকস টাইমস, আউটলুক ইন্ডিয়া, স্পোর্টসকিডা, এনডিটিভি, দ্যা ওয়াল, এবিপিলাইভ, হিন্দুস্থান টাইমস, কলকাতা টিভি, সংবাদ প্রতিদিন.ইন

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন ইন্ডিপেন্ডেন্ট.ইউকে, ডেইলি মিরর, নিউ ইয়র্ক পোস্ট, ইয়াহু নিউজ, ডেইলি মেইল, টরেন্টো সান, এলবিসি.কম.ইউকে, ন্যাশনাল পোস্ট, দ্যা ফেডারেল, নিউজ.কম, ইএসপিএনপিজিএইচ.আইহার্ট.কম, টিজে.নিউজ, এওএল.কম, এনএনএন.এনজি

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, টাইটানিক ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়ার জন্য  টাইটান ধ্বংসের পর ওশানগেট নতুন কোনো বিজ্ঞাপন দেয়নি বরং ইন্টারনেট আর্কাইভ অনুযায়ী উক্ত বিজ্ঞাপনটি টাইটান ধ্বংসের আগে থেকেই ওয়েবসাইটে রয়েছে।

পুরানো বিজ্ঞাপনের ভিত্তিতে গণমাধ্যমে ভুল সংবাদ 

টাইটানিক ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়ার জন্য টাইটান ধ্বংসের পর ওশানগেটের নতুন বিজ্ঞাপন  দাবিতে প্রচারিত তথ্যটির প্রকাশকাল নিয়ে যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম ওশানগেটের ‘Titanic Expedition – Explore the Titanic’ শীর্ষক উক্ত ওয়েবপেজের লিংকটি কপি করে ইন্টারনেট আর্কাইভের ওয়েবসাইট archive.org তে অনুসন্ধান করে। 

এতে ওয়েবসাইটটিতে গত ১৩ জুন ওশানগেটের নতুন বিজ্ঞাপন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্বলিত উক্ত ওয়েবপেজটির একটি আর্কাইভ সংস্করণ খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Titanic Expedition – Explore the Titanic

এই আর্কাইভ সংস্করণটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ওয়েবপেইজটিতে প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালে ওশানগেটের টাইটানিক এক্সপিডিশনটি তখনো চলমান। 

Screenshot: Titanic Expedition – Explore the Titanic

অপরদিকে ২০২৪ সালের এক্সপিডিশনের ৫ টি মিশন উল্লেখ করা আছে ওয়েবপেইজটিতে। এর মধ্যে প্রথম মিশনটি ২০২৪ সালের ৯ মে থেকে ১৭ মে, দ্বিতীয় মিশনটি একই মাসের ১৮ মে থেকে ২৬ মে, তৃতীয় মিশনটি ২৭ মে থেকে ৪ জুন, চতুর্থ মিশনটি ৫ জুন থেকে ১৩ জুন এবং সবশেষ পঞ্চম মিশনটি ১৪ জুন থেকে ২২ জুনের মধ্যে হওয়ার কথা রয়েছে ওয়েবপেইজটিতে।

পরবর্তীতে অধিকতর অনুসন্ধানে আরেকটি ইন্টারনেট আর্কাইভের ওয়েবসাইট archive.ph এ গত ১৯ জুন একই ওয়েবপেইজের আরেকটি সংস্করণ খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Titanic Expedition – Explore the Titanic

এই পেইজটিতে প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালে ওশানগেটের টাইটানিক এক্সপিডিশনটি তখনো চলমান। তবে ২০২৪ সালের এক্সপিডিশনটি পরিবর্তন করে দুইটি মিশন তথা প্রথম মিশন জুনের ১২ থেকে ২০ এবং দ্বিতীয়টি জুনের ২১ থেকে ২৯ তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

Screenshot: Titanic Expedition – Explore the Titanic

পরবর্তীতে ২২ জুন পাওয়া একই ওয়েবপেইজের আরেকটি আর্কাইভ সংস্করণ থেকেও একই এক্সপিডিশন সম্পর্কে জানা যায়। 

Screenshot: Titanic Expedition – Explore the Titanic

অপরদিকে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ জুন আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়ার পথে চালকসহ পাঁচ যাত্রী নিয়ে টাইটান সাবমেরিনটি নিখোঁজের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে গত ২২ জুন মহাসাগরের তলদেশে ব্যাপক তল্লাশির পর উদ্ধারকারীরা সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার কথা জানায়।

অর্থাৎ টাইটান নিখোঁজ হওয়ার আগে থেকেই ওশানগেটের ২০২৪ সালের টাইটানিক দেখতে যাওয়ার বিজ্ঞাপনটি তাদের ওয়েবসাইটে বিদ্যমান ছিল। 

এছাড়া গণমাধ্যমে ওশানগেটের বিজ্ঞাপনটিকে নতুন বিজ্ঞাপন দাবি করা হলেও বিজ্ঞাপনটিতে এক্সপিডিশনের কনটেন্ট এক্সপার্ট হিসেবে পিএইচ নারগিওলেট নামে এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ রয়েছে। 

Screenshot: Titanic Expedition – Explore the Titanic

অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হওয়া টাইটান সাবমেরিনটিতে থাকা পাঁচ যাত্রীর একজন ছিলেন পিএইচ নারগিওলেট, যিনি এই দুর্ঘটনায় মারা যান। 

Screenshot: en.as.com

ওশানগেটের বিজ্ঞাপনটিতে পিএইচ নারগিওলেটের এই উপস্থিতিও প্রমাণ করে, বিজ্ঞাপনটি নতুন নয়, পূর্ব থেকেই এটি তাদের ওয়েবসাইটে ছিল।

মূলত, টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে পাঁচজন আরোহী নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওশানগেটের টাইটান নামে একটি সাবমেরিন গত ১৮ জুন আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে যাত্রা শুরু করে। তবে যাত্রার প্রায় দুই ঘন্টা পরেই সাবমেরিনটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থাকা মূল জাহাজের সঙ্গে সংযোগ হারিয়ে ফেলে। পরবর্তীতে গত ২২ জুন মহাসাগরের তলদেশে ব্যাপক তল্লাশির পর উদ্ধারকারীরা সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার কথা জানান। কিন্তু সম্প্রতি দেশি-বিদেশি একাধিক গণমাধ্যম সূত্রে ওশানগেটের আবারও টাইটানিক দেখতে যাওয়ার বিজ্ঞাপন দেওয়ার দাবিতে একটি তথ্য ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অনুসন্ধানে ইন্টারনেট আর্কাইভ অনুযায়ী উক্ত বিজ্ঞাপনটি টাইটান ধ্বংসের আগে থেকেই প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে খুঁজে পাওয়া যায় এবং দূর্ঘটনার পর টাইটানিক দেখতে যাওয়ার জন্য ওশানগেট কর্তৃক পুনরায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে ‘ওশানগেট সাবমেরিনের জন্য নতুন চালক খুঁজছে’ শীর্ষক দাবিতে একইভাবে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। রিউমর স্ক্যানার টিমের ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনটি পড়ুন ‘ওশানগেট টাইটানের চালকের মৃত্যুর পর সাবমেরিন চালক নিয়োগের নতুন কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়নি।’

সুতরাং, ওশানগেট আবারও টাইটানিক দেখতে যাওয়ার বিজ্ঞাপন দিয়েছে শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

OceanGate Archive.org: https://web.archive.org/web/20230613051805/https://oceangateexpeditions.com/tour/titanic-expedition/

OceanGate Archive.ph: https://archive.fo/rWepa

OceanGate Archive.org: https://web.archive.org/web/20230622100421/https://oceangateexpeditions.com/tour/titanic-expedition/

Al Jazeera: Titan sub timeline: When did it go missing and other key events

As.com: Who was Titan passenger Paul-Henri Nargeolet? Why was he known as Mr. Titanic?

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ১৫০ ডলারের পরিবর্তে ভুলে ১৫০০ নয়, ১৫,০০০ ডলার দান করার দাবি করেছেন

সম্প্রতি, “বাংলাদেশি সংস্থাকে ১৫০ ডলারের পরিবর্তে ভুলে ১৫০০ ডলার দান” শীর্ষক শিরোনামে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশে যা দাবি করা হচ্ছে

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মাইকেল নামক এক ব্যক্তি ত্রাণ সহায়তা নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশি একটি দাতব্য সংস্থাকে ১৫০ ডলার দান করতে গিয়ে ভুলে ১৫০০ ডলার দান করেছেন।

উক্ত দাবিতে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন দেখুন চ্যানেল ২৪জুম বাংলা

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মাইকেল নামক এক ব্যক্তি বাংলাদেশের একটি দাতব্য সংস্থাকে ১৫০ ডলার দান করতে গিয়ে ভুলে ১৫০০ ডলার দান করেননি বরং ১৫০ ডলার দান করতে গিয়ে ভুলে ১৫ হাজার ডলার দান করেছেন। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত বিষয়ে দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোর তথ্যসূত্রে উল্লেখিত নিউইয়র্ক পোস্ট এবং হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনের খোঁজ করে রিউমর স্ক্যানার।

কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গণমাধ্যম ‘New York Post’ এ ওয়েবসাইটে গত ২৭ জুন “California man mistakenly donates $15K instead of $150 to food relief program: ‘Yikes” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘New York post,

প্রতিবেদনটিতে সামাজিক মাধ্যম রেডিট এর এক পোস্টের বরাত দিয়ে দাবি করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মাইকেল নামক এক ব্যক্তি বাংলাদেশের একটি দাতব্য সংস্থাকে

ক্যালিফোর্নিয়ার একজন ব্যক্তি ১৫০ ডলার দান করতে গিয়ে ভুলে ১৫ হাজার ডলার দান করেছেন।

পরবর্তীতে, নিউ ইয়র্ক পোস্টে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে একমাস আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম রেডডিট এ ‘TIFU’ নামক ব্যবহারকারীর “TIFU by donating $15,041 to a poor community in Bangladesh instead of the $150 donation I intended.” শীর্ষক দাবিতেপ্রকাশিত পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘New York post,

সে পোস্টে ঐ ব্যক্তি দাবি করেন, বাংলাদেশি একটি দাতব্য সংস্থায় ১৫০ ডলার দান করতে গিয়ে তিনি ভুলে ১৫,০৪১ ডলার দান করেন।

দেশীয় গণমাধ্যমের তথ্যসূত্রে ব্যবহৃত ‘হিন্দুস্তান টাইমস’ এর প্রতিবেদনেও ক্যালিফোর্নিয়ার ঐ ব্যক্তি কর্তৃক ভুলে ১৫,০০০ ডলার দান করার কথা উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া, উক্ত বিষয়ে আমেরিকান গণমাধ্যম ‘Today’ এর ওয়েবসাইটে গত ২৬ জুন “Man accidentally donates $15K instead of $150 to food relief fundraiser, chaos ensues” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from ‘Today’

উক্ত প্রতিবেদনেও নিউইয়র্ক পোস্ট ও হিন্দুস্তান টাইমস এর ন্যায় একই তথ্য উল্লেখ করা হয়।

মূলত, গত মাসে সামাজিক মাধ্যম রেডিটে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মাইকেল নামক এক ব্যক্তি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ‘গো ফান্ড মি’ এর মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশি একটি দাতব্য সংস্থাকে ১৫০ ডলার দান করতে গিয়ে ভুলে ১৫ হাজার ডলার দান করেছেন বলে দাবি করেন। উক্ত বিষয়টি নিয়ে নিউইয়র্ক পোস্টসহ বেশকিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়। পরবর্তীতে নিউইয়র্ক পোস্টের বরাতে দেশীয় একাধিক গণমাধ্যমে উক্ত বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিন্তু নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে ১৫০ ডলার দান করতে গিয়ে ভুলে ১৫,০০০ ডলার দান করার বিষয় উল্লেখ করা হলেও দেশীয় গণমাধ্যমে ১৫,০০০ হাজার ১৫০০ ডলার হিসেবে প্রচার করা হয়। 

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মাইকেল নামক এক ব্যক্তি কর্তৃক এক বাংলাদেশি সংস্থাকে ১৫০ ডলারের পরিবর্তে ভুলে ১৫,০০০ ডলার দান করার দাবিকে ১৫০ ডলারের পরিবর্তে ভুলে ১৫০০ ডলার দান করা হয়েছে দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করে প্রথম হ্যালো বলার দাবিটি সত্য নয়

0

গেল মে ও জুন মাসে “হ্যালো’ একটা মেয়ের নাম। পুরো নাম মার্গারেট হ্যালো ( Margaret Hello)। তিনি আর কেউ নন – বিখ্যাত বিজ্ঞানী আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল এর গার্ল ফ্রেন্ড। গ্রাহাম বেল হলেন টেলিফোনের আবিষ্কারক। আবিষ্কারের পর তিনি প্রথম যে কথাটি বলেন তা হচ্ছে “হ্যালো” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হয়। 

গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন প্রতিবেদন দেখুন ডিবিসি নিউজ, নিউজ২৪, ডেইলি বাংলাদেশ, ঢাকা মেইল, জুম বাংলা

ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন অ্যামাজ২৪। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মার্গারেট হ্যালো নামে গ্রাহামবেলের কোনো গার্লফ্রেন্ড ছিল না এবং টেলিফোন আবিষ্কারের পর তিনি প্রথম শব্দ “হ্যালো” বলেননি বরং গ্রাহামবেলের স্ত্রীর নাম ছিল ম্যাবেল হাববার্ড অপরদিকে টেলিফোন যোগাযোগে “হ্যালো” শব্দের প্রচলন ঘটান টমাস আলভা এডিসন।

মূলত, আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেলের মার্গারেট হ্যালো নামে কোনো গার্লফ্রেন্ড ছিল না এবং টেলিফোন আবিষ্কারের পর তিনি প্রথম শব্দ “হ্যালো” বলেননি বরং গ্রাহামবেলের স্ত্রীর নাম ছিল ম্যাবেল হাববার্ড। এছাড়া ১৮৭৬ সালের ৭ মার্চ বেল যখন প্রথম সফলভাবে টেলিফোনে কল করতে সমর্থ হন, তখন তিনি সর্বপ্রথম কথা বলেছিলেন তার সহযোগী টমাস ওয়াটসনের সঙ্গে। তিনি তাকে বলেছিলেন, “মি. ওয়াটসন, এখানে আসুন। আমি আপনাকে দেখতে চাই।” যার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দাবির সঙ্গে কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও এই দাবিটি ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

হজ ২০২৩ এ হাজিদের উপস্থিতির সংখ্যা নিয়ে গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য 

সম্প্রতি, অনুষ্ঠিত চলতি বছরের হজে অংশে নেওয়া  হাজিদের ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা ও এই হজকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ উল্লেখ করে গণমাধ্যম সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। 

চলতি বছরের হজে ৩০ লাখ হাজির উপস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন- দৈনিক আমাদের সময়.কম, ডেইলি ক্যাম্পাস, আরটিভি, সময় টিভি, কালবেলা, বায়ান্ন টিভি (আর্কাইভ)।

চলতি বছরের হজে ২৫ লাখ হাজির উপস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন- প্রথম আলো, ঢাকা মেইল, চ্যানেল আই(১), বাংলাদেশ জার্নাল,মানবজমিন, বাংলাদেশ টুডে, জুম বাংলা, বিডি২৪রিপোর্ট, সমকাল (১), ডিবিসি নিউজ, সমকাল (২),দৈনিক আমাদের সময়.কম, জাগরণ, চ্যানেল২৪, রিদমিক নিউজ, আলোকিত বাংলাদেশ, ঢাকা টাইমস, সময়ের আলো, কুমিল্লার কাগজ, যমুনা টিভি, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি (১), ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি (২), চ্যানেল আই (২), কালের কণ্ঠ, একুশে টিভি, আমাদের সময়, রেডিও টুডে। 

চলতি বছরের হজে ২০ লাখ হাজির  উপস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন- এনটিভি, বাংলাদেশ জার্নাল, এটিএন বাংলা, বিডিনিউজ২৪, ডেইলি বাংলাদেশ, দৈনিক আজাদী, দৈনিক বাংলা, অর্থসূচক, দেশ রূপান্তর, এসএ টিভি, বৈশাখী টিভি, সময়ের আলো

চলতি বছরের হজে ২৩ লাখ হাজির  উপস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন- দেশ রূপান্তর। 

চলতি বছরের হজে ১৬ লাখ ৫ হাজার হাজির  উপস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন- প্রতিদিনের বাংলাদেশ

চলতি বছরের হজকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ উল্লেখ করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন- ভোরের কাগজ, ঢাকা ট্রিবিউন, ডেইলি বাংলাদেশ, নয়া দিগন্ত, সিলেটের ডাক, ঢাকা পোস্ট, সময় টিভি, ডিবিসি, অর্থ সংবাদ, ইত্তেফাক, বাংলা ইনসাইডার, রাজশাহীর সময়, সংবাদ.নেট, দ্যা রিপোর্ট, তৃতীয় মাত্রা

গণমাধ্যমের ফেসবুক পেইজ সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন- এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন- এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন- ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস (বাংলা), এস নিউজ

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, চলতি বছরের হজে অংশগ্রহণকারী হাজিদের সংখ্যা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে এই বছর হজে অংশগ্রহণকারী হাজির সংখ্যা ১৮ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫ জন। এছাড়া সদ্য সমাপ্ত হজটিও ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ নয়।

চলতি বছরের হজে অংশগ্রহণকারী হাজিদের প্রকৃত সংখ্যা

সদ্য সমাপ্ত চলতি বছরের হজে অংশগ্রহণকারী হাজিদের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে অনুসন্ধানে মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীর দায়িত্বে থাকা হারামাইন শরিফাইনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ২৭ জুন ‘BREAKING: A total of 1,845,045 Hujjaj have performed #Hajj this year‘ শীর্ষক একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Haramain Sharifain Facebook Page

সৌদি আরবের জাতীয় পরিসংখ্যান কর্তৃপক্ষের বরাতে পোস্টটিতে বলা হয়, এই বছর হজে অংশগ্রহণকারী মোট হাজির সংখ্যা ১৮ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫ জন। এর মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হজ করতে সৌদি গিয়েছেন ১৬ লাখ ৬০ হাজার ৯১৫ জন হাজি৷ বাকী ১ লাখ ৮৪ হাজার ১৩০ জন হাজি সৌদি আরবের নিজস্ব নাগরিক ও দেশটিতে অবস্থানরত বাসিন্দা।

এই পোস্টের সূত্রে পরবর্তীতে দেশটির জেনারেল অথরিটি ফর স্ট্যাটিসটিকসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘Total Number of Pilgrims in 1444 H Reaches (1,845,045) (আর্কাইভ)’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

Screenshot: General Authority for Statistics

উল্লেখ্য, জেনারেল অথরিটি অব স্ট্যাটিসটিকস বা GASTAT সৌদি আরবে পরিসংখ্যানগত তথ্য-উপাত্তের জন্য একমাত্র সরকারী উৎস। প্রতিষ্ঠানটি পরিসংখ্যান খাতের প্রযুক্তিগত তদারকি ছাড়াও পরিসংখ্যানগত অন্যান্য সকল কাজ করে। 

Screenshot: General Authority for Statistics 

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি সদ্য সমাপ্ত হজ মৌসুমের পরিসংখ্যানগত তথ্য এবং সূচক জারি করার জন্য প্রশাসনিক তথ্যের উপর নির্ভর করে। 

অর্থাৎ দেশীয় গণমাধ্যমগুলোতে সদ্য সমাপ্ত হজে অংশগ্রহণকারী হাজিদের সংখ্যা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন যেসব তথ্য (৩০, ২৫, ২৩, ২০, ১৬ লাখ ৫ হাজার) উপস্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে এই বছরের হজে অংশগ্রহণকারী হাজির সংখ্যা ১৮ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫ জন। 

২০ লাখ হাজির সংখ্যাটি যেভাবে এলো 

সদ্য সমাপ্ত হজে ২০ লাখ হাজির অংশগ্রহণ নিয়ে গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত সংবাদের সূত্রে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গণমাধ্যম গালফ নিউজে গত ২১ জুন ‘Saudi Arabia prepares to welcome more than two million pilgrims from 160 countries’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী ডা. তৌফিক আল রাবিয়ার একটি বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Gulf News

সেখানে তিনি বলেন, এই বছরের হজে বিশ্বের ১৬০ টি দেশ থেকে ২০ লাখের বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। 

এছাড়া সৌদি ভিত্তিক গনমাধ্যম সৌদি গেজেটে ২৫ জুন ‘What is new in Hajj 2023?’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও দেশটিতে ১৬০টি দেশের ২০ লাখের বেশি হজযাত্রী পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ প্রকাশ করতে দেখা যায়।

Screenshot: Saudi Gazette 

অর্থাৎ সৌদি কর্তৃপক্ষের আশাবাদকেই দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যমে সিদ্ধান্ত হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। 

চলতি বছরের হজটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ নয় 

চলতি বছরের হজটিকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ উল্লেখ করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোর সূত্রে কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরাতে গত ২৫ জুন ‘‘Largest Hajj pilgrimage in history’ begins in Saudi Arabia‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Al Jazeera

প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রতিবেদনটিতে সৌদি আরবের হজ ও উমরাহ মন্ত্রনালয়ের এক কর্মকর্তার বরাতে উল্লেখ করা হয়, ‘চলতি বছরের হজে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।’ পাশাপাশি প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয় সদ্য সমাপ্ত হজে ২৫ লাখ মানুষের সমাগম হতে পারে। এসবের ভিত্তিতে গণমাধ্যমটি ‘Largest Hajj pilgrimage in history’ শীর্ষক শিরোনামে প্রতিবেদন করে এবং শিরোনামে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ’ অংশটি উদ্ধৃতি চিহ্নের ভিতরে রেখেছে। 

Screenshot: Al Jazeera

তবে এ সূত্রে বাংলাদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে কোনো  উদ্ধৃতি চিহ্ন ছাড়াই সরাসরি চলতি বছরের হজটিকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। 

কিন্তু এ নিয়ে অনুসন্ধানে সৌদি আরবের গণমাধ্যম আরব নিউজে ২০২২ সালের ১৩ জুলাই ‘Hajj numbers below pre-pandemic levels despite relaxed travel restrictions’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Arab News

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হাজির সমাগম হয়েছিল ২০১২ সালে। সে বছর ৩১ লাখ ৬১ হাজার ৫৭৩ জন হাজি হজ পালন করেছিলেন।

Screenshot: Arab News

পরবর্তীতে এই প্রতিবেদনের সূত্রে জেনারেল অথরিটি অব স্ট্যাটিসটিকস বা GASTAT এর ওয়েবসাইটে  ‘Hajj Statistics 2019 – 1440’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

Screenshot: General Authority for Statistics

এই প্রতিবেদনটি থেকে পাওয়া তথ্যমতে, ২০১০ সাল (হিজরি বর্ষ ১৪৩১) থেকে ২০১৯ সাল (হিজরি বর্ষ ১৪৪০) পর্যন্ত সময়কালে সবচেয়ে বেশি হাজির সমাগম হয়েছিল হিজরি বর্ষ ১৪৩৩ তথা ২০১২ সালে। সে বছর সারা বিশ্ব থেকে হজ করতে সৌদি গিয়েছিলেন সে বছর ৩১ লাখ ৬১ হাজার ৫৭৩ জন হাজি। এছাড়া এর আগের দুই বছরও হজ করতে হাজিদের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ২০১০ সালে ২৭ লাখ ৮৯ হাজার ৩৯৯ জন এবং ২০১১ সালে ২৯ লাখ ২৭ হাজার ৭১৭ জন। 

এ প্রতিবেদন অনুসারে চলতি বছরের হজটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। 

অর্থাৎ কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা সৌদি কর্তৃপক্ষের বরাতে চলতি বছরের হজটিকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ’ হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে বিষয়টিকে উদ্ধৃতি চিহ্নের ভিতরে রেখে সংবাদ প্রচার করলেও দেশীয় গণমাধ্যমগুলো চলতি বছরের হজটিকে সরাসরি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ হিসেবে উল্লেখ করে সংবাদ প্রচার করে। 

উল্লেখ্য, এই প্রসঙ্গে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে গিয়ে কিছু কিছু গণমাধ্যম ভোরের কাগজ, ঢাকা ট্রিবিউন, ঢাকা পোস্ট, অর্থ সংবাদ, বাংলাদেশ ইনসাইডার, সংবাদ.নেট ২০১২ সালের পরিসংখ্যানটি উল্লেখ করলেও শিরোনামে চলতি বছরের হজটিকেই সরাসরি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ হিসেবে উল্লেখ করে।

মূলত, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে চলতি বছরের হজ, যা ছিল করোনা মহামারীর পরে স্বাস্থ্যবিধির কোনো ধরনের কড়াকড়ি ব্যতীত প্রথম হজ। তাই সৌদি কর্তৃপক্ষ আশা করেছিল, এবারের হজযাত্রীর সংখ্যা ২০ থেকে ২৫ লাখের বেশি হবে এবং এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ হবে। তবে পরবর্তীতে দেশটির জেনারেল অথরিটি অব স্ট্যাটিসটিকস বা GASTAT জানায়, এই বছর হজে অংশগ্রহণকারী মোট হাজির সংখ্যা ১৮ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫ জন। এর মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হজ করতে সৌদি গিয়েছেন ১৬ লাখ ৬০ হাজার ৯১৫ জন হাজি৷ বাকী ১ লাখ ৮৪ হাজার ১৩০ জন হাজি সৌদি আরবের নিজস্ব নাগরিক ও দেশটিতে অবস্থানরত বাসিন্দা। এছাড়া সৌদি কর্তৃপক্ষের আশাবাদকেই সরাসরি সিদ্ধান্ত জানিয়ে এই হজটিকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ হিসেবে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করলেও অনুসন্ধানে জানা যায়, ইতোপূর্বে ২০১২ সালে  ৩১ লাখ ৬১ হাজার ৫৭৩ জন অর্থাৎ আরও বিশাল সংখ্যক হাজি নিয়ে হজ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।  

সুতরাং, গণমাধ্যমে এই বছরের হজে অংশগ্রহণকারী হাজিদের সংখ্যা ও এই হজকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ দাবি করে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

এগুলো টাইটানের ধ্বংসাবশেষের ছবি নয়

0

সম্প্রতি, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে  গিয়ে নিখোঁজ হওয়া ডুবোযান টাইটানের ধ্বংসাবশেষ দাবিতে গত ২২ থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত একটি গণমাধ্যম এবং ফেসবুকের একাধিক পোস্টে কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়তে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম

টাইটানের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত ছবি ভিডিওর থাম্বনেইলে ব্যবহার করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন যমুনা টিভি (ইউটিউব)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো টাইটানের ধ্বংসাবশেষের নয় বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি এবং পুরোনো ভিন্ন ঘটনার একাধিক ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, ছবিগুলো প্রচারের সময় টাইটানের ধ্বংসাবশেষের কোনো ছবি প্রকাশই করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ছবি যাচাই ১

Screenshot source: YouTube

যমুনা টিভি তাদের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৩ জুন প্রকাশিত প্রতিবেদনের থাম্বনেইলে ডানদিকে যে ছবিটি প্রকাশ করেছে সেটি টাইটান সংশ্লিষ্ট কোনো ছবি নয়৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ছবিটির মূল সূত্র খুঁজে না পেয়ে আন্তজার্তিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সে গত ২৬ জুন প্রকাশিত একটি ফ্যাক্টচেক রিপোর্ট নজরে আসে আমাদের।  

রয়টার্স সে সময় নিখোঁজ থাকা টাইটানের খোঁজে নিয়োজিত সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ডের একজন মুখপাত্রের সাথে কথা বলে। তিনি জানান, তখন পর্যন্ত টাইটানের কোনো ধ্বংসাবশেষের ছবি তারা প্রকাশ করেননি।

Screenshot source: Reuters

পরবর্তীতে গত ২৮ জুন টাইটানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের খবর আসে আন্তজার্তিক গণমাধ্যমে। সেদিনই ধ্বংসাবশেষ পানির নিচ থেকে তুলে আনার দৃশ্য প্রকাশিত হয় অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম এবিসি, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি সহ একাধিক সংবাদমাধ্যমে।

Screenshot source: ABC

বিবিসির প্রতিবেদনে এসেছে, ২৮ জুনই প্রথমবারের মতো ডুবোযানটির অংশবিশেষ প্রকাশ্যে আসে।

Screenshot source: BBC

অর্থাৎ, যমুনা টিভি গত ২৩ জুন টাইটানের ধ্বংসাবশেষের দাবিতে যে ছবিটি প্রকাশ করেছে সেটি টাইটান সংশ্লিষ্ট কোনো ছবি ছিল না। 

ছবি যাচাই ২

Screenshot source: Facebook

এই ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে আন্তজার্তিক সংবাদ সংস্থা AP এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot source: AP

ছবিটির ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়, ২০০৪ সালের এই ছবিটিতে টাইটানিক ডুবে যাওয়ার ঘটনায় সম্ভাব্য একজন ভুক্তভোগীর জুতা দেখা যাচ্ছে। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিটি টাইটানের ধ্বংসাবশেষের নয়। 

ছবি যাচাই ৩

Screenshot source: Facebook

এই ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Prince of Deepfakes (Parody)’ নামক টুইটার অ্যাকাউন্টে গত ২২ জুলাই “BREAKING: First photograph – Titan titanic submarine implosion debris field.” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত ছবির সাথে ফেসবুকে টাইটানের ধ্বংসাবশেষ দাবিতে প্রচারিত ছবিটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image comparison by Rumor Scanner

টুইটার অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ডিপফেক এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এর সাহায্যে তৈরি ছবি দিয়ে ভুল তথ্য প্রকাশ করা হয়, যা এই অ্যাকাউন্টের প্রোফাইল ছবি এবং বায়োতেই উল্লেখ রয়েছে। 

অর্থাৎ, এই ছবিটিও টাইটানের ধ্বংসাবশেষের ছবি নয়।

মূলত, গত ১৮ জুন টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে পাঁচজন আরোহী নিয়ে নিখোঁজ হয় টাইটান নামে একটি ডুবোযান। পরবর্তীতে ডুবোযানটির ধ্বংসাবশেষ দাবিতে গত ২২ থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত কতিপয় গণমাধ্যম এবং ফেসবুকের একাধিক পোস্টে কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ছবিগুলোর সাথে টাইটানের ধ্বংসাবশেষের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। পুরোনো ঘটনার এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, আলোচিত ছবিগুলো প্রচারের সময় টাইটানের ধ্বংসাবশেষের কোনো ছবি প্রকাশই করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সুতরাং, পুরোনো এবং এআই দিয়ে তৈরি একাধিক ছবিকে টাইটানের ধ্বংসাবশেষ দাবিতে প্রকাশ করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বলিউড সিনেমা ‘কর্ম’র চুম্বন দৃশ্য বলিউডের প্রথম স্ক্যান্ডাল নয়

0

সম্প্রতি, ১৯৩৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কর্ম’ সিনেমার একটি চুম্বনের দৃশ্যের বিষয়ে কিছু তথ্য জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে’র একটি প্রতিবেদনে প্রচার করা হয়েছে। 

যে দাবিগুলো প্রচার করা হচ্ছে

ভারতীয় নায়িকা দেবিকা রাণী এবং নায়ক হিমাংশু রায় অভিনীত বলিউডের ‘Karma’ (কর্ম) নামক একটি সিনেমার শেষাংশে হিমাংশু ও দেবিকার একটি চুম্বনের দৃশ্যকে ঘিরে সুনির্দিষ্ট দুইটি দাবি ডয়চে ভেলে’র প্রতিবেদনে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

দাবি – ১

বলিউডের প্রথম স্ক্যান্ডাল এটি। 

দাবি – ২ 

চার মিনিট স্থায়ী ছিল এই চুম্বন। 

ডয়চে ভেলে’তে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কর্ম সিনেমার আলোচিত চুম্বনের দৃশ্যটি বলিউডের প্রথম স্ক্যান্ডাল এবং এটি চার মিনিট স্থায়ী ছিল শীর্ষক দাবিগুলো সঠিক নয় বরং ধারাবাহিকভাবে দুই মিনিটের কম সময়ের উক্ত চুম্বনের দৃশ্যের পূর্বে বলিউডের অন্য সিনেমায়ও চুম্বনের দৃশ্য ছিল। 

কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গত ১৩ জানুয়ারী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘BBC’ এর ওয়েবসাইটে “Devika Rani: The myths surrounding ‘Bollywood’s longest kiss’” (আর্কাইভ) শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot source: BBC

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৩৩ সালে ‘কর্ম’ সিনেমায় বাস্তব জীবনের দম্পতি দেবিকা রানী ও হিমাংশু রায়ের সেই চুম্বনের দৃশ্য বলিউডের কোনো সিনেমায় প্রথম চুম্বন (lip lock) এবং একইসঙ্গে সব থেকে বেশি সময় ধরে চুম্বনের রেকর্ড হিসেবে লেখা হয়েছে দীর্ঘ সময়। আদতে এর কোনটিই সত্য নয়। সেই সময় সংবাদ মাধ্যমে খবর ছাপা হয়েছিল, কর্ম সিনেমার ওই চুম্বন দৃশ্য ছিল চার মিনিটের। পর্দায় সেই দৃশ্য ভারতে অনেক মিথ বা গল্পের বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে।

২০২০ সালে উক্ত সিনেমার আলোচিত চুমুর দৃশ্যটির বিষয়কে কেন্দ্র করে ভারতীয় লেখিকা কিশোয়ার দেশাই (Kishwar Desai) “The Longest Kiss: The Life and Times of Devika Rani” নামে একটি বই প্রকাশ করেন। 

ভারতীয় সিনেমা নিয়ে সেরা বই হিসেবে ২০২১ সালে দেশটির প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি বইটি। বইটিতে সেই চুম্বন এবং হিমাংশু ও দেবিকা দম্পতির টালমাটাল জীবনের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।

কিশোয়ার বিবিসিকে বলেছেন,”সিনেমাটি এমন সময়ে তৈরি করা হয়েছিল, যখন হিমাংশু রায় ও দেবিকা রানির সবেমাত্র বিয়ে হয়েছে, তারা তখন অনেক বেশি ভালোবাসায় আচ্ছন্ন ছিলেন; তাই স্ক্রিনে প্রেমোন্মত্ত সেই চুম্বন অবাক হওয়ার মতো কিছু ছিল না।”

বলিউডের প্রথম স্ক্যান্ডাল নয় এটি

আলোচিত চুম্বনের দৃশ্যটি বলিউডের প্রথম চুম্বনের দৃশ্য (স্ক্যান্ডাল) নয় দাবি করে কিশোয়ার জানান, “ভারত যেহেতু তখন ব্রিটিশদের অধীনে ছিল এবং অনেক সিনেমাই পশ্চিমাদের দর্শক-শ্রোতার জন্য বানানো হয়েছিল, তাই ভারতীয় সিনেমায় তখন সেই দৃশ্য ‘অস্বাভাবিক কিছু ছিল না’। ১৯২০ ও ১৯৩০ এর দশকের শেষ দিকে অনেক সিনেমাতেই চুম্বনের দৃশ্য ছিল।”

Screenshot source: BBC

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইউটিউবে ১৯২৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হিন্দি সাইলেন্ট সিনেমা ‘A Throw of Dice‘ খুঁজে পাওয়া যায়। ১ ঘন্টা ১৬ মিনিট দৈর্ঘ্যের সিনেমাটিতে ১৯:৪৫ মিনিটের সময় শ্বেতা দেবী এবং চারু রায়ের একটি চুম্বনের দৃশ্য ছিল। এই সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন হিমাংশু রায়। 

অর্থাৎ, ১৯৩৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কর্ম’ সিনেমার চুম্বনের দৃশ্যটি বলিউডের প্রথম স্ক্যান্ডাল নয়। এর চার বছর আগে মুক্তি পাওয়া আরেক বলিউড সিনেমাতেও চুম্বনের দৃশ্য ছিল। 

চার মিনিট স্থায়ী ছিল না এই চুম্বন 

বিবিসি বলছে, কর্ম’তে চুম্বনের যে দৃশ্যের কথা বলা হচ্ছে, সেটি ছিল সিনেমার একেবারে শেষ দিকে; গোখরার ছোবলে অচেতন রাজপুত্রকে বাঁচাতে মরিয়া রাজকুমারী তাকে চুম্বন খেয়েছেন। 

বিবিসিকে কিশোয়ার দেশাই বলেছেন, “সিনেমায় চার মিনিট ধরে চুম্বনের যে গল্প প্রচলিত রয়েছে, তা সত্যি নয়। “শুরুতে কেবল একটি চুম্বন ছিল না, ধারাবাহিক বা একের পর এক চুম্বন ছিল। আর যদি সময় হিসাব করেন, তা দুই মিনিট পার হবে না।”

Screenshot source: BBC

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইউটিউবে ‘কর্ম’ সিনেমাটি খুঁজে পাওয়া যায়। ১ ঘন্টা ০৩ মিনিট দৈর্ঘ্যের সিনেমাটির শেষ দিকে ৫৫ মিনিট সময় থেকে আলোচিত চুম্বনের দৃশ্যটি খুঁজে পাওয়া যায়। ধারাবাহিক এই চুম্বনের দৃশ্য দুই মিনিটেরও কম সময় স্থায়ী ছিল। 

অর্থাৎ, ‘কর্ম’ সিনেমার চুম্বনের দৃশ্যটি চার মিনিট নয়, ধারাবাহিকভাবে দুই মিনিটেরও কম সময় স্থায়ী ছিল।

মূলত, ১৯৩৩ সালে দেবিকা রাণী ও হিমাংশু রায় অভিনীত সিনেমা ‘Karma’ (কর্ম) মুক্তি পায়। উক্ত সিনেমায় দেবিকা ও হিমাংশুর একটি চুম্বনের দৃশ্যকে বলিউডের প্রথম স্ক্যান্ডাল এবং চার মিনিট স্থায়ী চুম্বনের দৃশ্য শীর্ষক দাবিতে ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে প্রচার করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, চুম্বনের দৃশ্যটি বলিউডের প্রথম স্ক্যান্ডাল নয়। এর চার বছর পূর্বে মুক্তি পাওয়া আরেক বলিউড সিনেমা ‘A Throw of Dice’ এও চুম্বনের দৃশ্য ছিল। এছাড়া, উক্ত চুম্বনের দৃশ্য ধারাবাহিকভাবে দুই মিনিটেরও কম সময় স্থায়ী ছিল। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও এই দাবিটি ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

ঈদুল আযহা উপলক্ষে বিকাশ কর্তৃক ব্যবহারকারীদের ৪৯৯৯ টাকা বোনাস দেওয়ার দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, ‘ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে বিকাশ কোম্পানী সব বিকাশ ব্যবহারকারীদের ৪৯৯৯ টাকা ঈদ বোনাস দিচ্ছে।’ শীর্ষক একটি ক্যাম্পেইন লিংক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে বিকাশ কোম্পানী সব বিকাশ ব্যবহারকারীদের ৪৯৯৯ টাকা ঈদ বোনাস দেওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং বিকাশের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে বোনাস প্রদানের এই প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে বোনাসের প্রলোভন দেখানো ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশের চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু সেসময় ওয়েবসাইট লিংকটি কাজ না করায় প্রবেশ সম্ভব হয়নি।

Screenshot from Fake Bkash website

বিকাশ কি এমন কোনো ক্যাম্পেইন চালু আছে?

বিকাশের ওয়েবসাইট ও ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে অনুসন্ধান করে ঈদুল আযহা উপলক্ষে ব্যবহারকারীদের বোনাস দেওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

Screenshot from Fake Bkash website

পাশাপাশি, নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে বিকাশ থেকে এমন বোনাস দেওয়া প্রসঙ্গে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে বিকাশের ওয়েবসাইটের লাইভ চ্যাটের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে বলা হয়, ‘বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে বলা হয়, ‘অনুগ্রহ করে এ ধরনের ভুল তথ্য দ্বারা বিভ্রান্ত হবেন না। অসাধু চক্র বিভিন্ন নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য কোনো মাধ্যমে নানা ধরনের মিথ্যা অফার দেখিয়ে বিকাশের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে। বর্তমানে বিকাশ এ ধরনের কোনো অফার ঘোষণা করেনি এবং উক্ত অফারগুলোর সাথে বিকাশ-এর কোনো সম্পর্ক নেই। তাই, এসব মিথ্যা অফারের লোভে পড়ে কিংবা প্রতারিত হয়ে এই ধরনের কোনো ওয়েবসাইট অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে কোনো লেনদেন করবেন না এবং আপনার বিকাশ একাউন্ট নাম্বার, পিন, ভেরিফিকেশন কোড বা অন্য কোনো তথ্য দিবেন না। এছাড়া এ ধরনের ওয়েবসাইটের লিংক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকবেন।’

মূলত, ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে বিকাশ কোম্পানী সব বিকাশ ব্যবহারকারীদের ৪৯৯৯ টাকা ঈদ বোনাস দিচ্ছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিকাশের পক্ষ থেকে এমন কোনো বোনাস ঘোষণা করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে বিকাশের লোগো ব্যবহার করে বিকাশের ওয়েবসাইটের আদলে তৈরি ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতারণার উদ্দেশ্যে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

ইতিপূর্বে একাধিকবার বিকাশের ওয়েবসাইট নকল করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রলোভন দেখানো হয়। সেসময় উক্ত বিষয়গুলোকে মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদন গুলো দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে বিকাশ কোম্পানী সব বিকাশ ব্যবহারকারীদের ৪৯৯৯ টাকা ঈদ বোনাস দিচ্ছে শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র