Home Blog Page 555

রাতের মধ্যেই নুরের নেতৃত্বে ঢাকা ঘেরাও  দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘এইমাত্র, রাতেই ঘেরাও ঢাকা || ফুঁসে উঠেছে নুর বাহিনী’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

নুর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নুর বাহিনীর ঢাকা ঘেরাওয়ের ভিডিও দাবিতে প্রচারিত এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি ২০২২ সালের ০৭ অক্টোবরে ছাত্রলীগ কর্তৃক ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মারধর করে পুলিশে দেওয়ার অভিযোগের ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকায় গণ অধিকার পরিষদের মশাল মিছিলের ভিডিও। যা ভুয়া লাইভ স্ট্রিমিং অ্যাপের সহায়তায় সাম্প্রতিক ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম সমকালের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২০২২ সালে ০৭ অক্টোবর আলোচিত ভিডিওটির অনুরূপ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

ভিডিওতে গণঅধিকার পরিষদের মিছিলের ব্যানারে থাকা লেখা থেকে থেকে জানা যায়, প্রয়াত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফরহাদের স্মরণসভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদ এর নেতাকর্মীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার আয়োজনে উক্ত মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে সমকালের অনলাইন বিভাগের প্রধান সংবাদ দাতা Zakaria Ibn Yusuf এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজেও একই তারিখে একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে, রাতেই ঢাকা ঘেরাও, ফুঁসে উঠেছে নুর বাহিনী’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাথে এই ভিডিওটির ব্যানার এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির স্লোগানের সাথে উক্ত ভিডিওর স্লোগানের হুবহু মিল রয়েছে। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

পাশাপাশি, গণমাধ্যম বা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে গণঅধিকার পরিষদ বা নুরুল হক নুরের ঢাকা ঘেরাও করার বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, ২০২২ সালের ০৭ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের স্মরণসভায় ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। উক্ত ঘটনার প্রতিবাদে ঐ দিনই মশাল মিছিল করে গণ অধিকার পরিষদ। সম্প্রতি ঐ মশাল মিছিলের একটি ভিডিওকে নুর বাহিনীর রাতের মধ্যেই ঢাকা ঘেরাও করার ভিডিও দাবিতে  ভুয়া লাইভ স্ট্রিমিং অ্যাপের সহায়তায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বে একই ভিডিওকে আমানউল্লাহ ও গয়েশ্বরের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে নুর বাহিনীর প্রতিবাদ ও গণ মিছিলের ভিডিও দাবি করে প্রচার করা হলে সেটি শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। উক্ত প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে

সুতরাং, পুরোনো ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে নুর বাহিনীর রাতের মধ্যেই ঢাকা ঘেরাও করার ভিডিও  দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা  মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Samakal Facebook Page: Video
  • Zakaria Ibn Yusuf Facebook: Video
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

অবরোধে বাসে আগুন দেওয়ায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে পুরস্কার দেওয়ার ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, ‘অবরোধে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্তৃক ঢাকায় ৬৪ বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে ডিএমপির পক্ষ থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে’ শীর্ষক দাবিতে একটি ফটোকার্ড সম্বলিত তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

বাসে আগুন

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং  এখানে (আর্কাইভ)।

এবিষয়ে প্রচারিত পোস্টটিতে বলা হয়েছে, “সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন অবরোধে ঢাকায় ৬৪ বসে আগুন ধরিয়ে দেয় যুবলীগ ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। বাসে আগুন দেয়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে পুরস্কার দেওয়া হয় এসব তথ্য জানান ডিএমপির মিডিয়া সেন্টার”

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকায় ৬৪ বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে ডিএমপির পক্ষ থেকে যুবলীগ ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কথা বলা হয়নি এবং বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ডিএমপির পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে পুরস্কার দেওয়ার দাবিটিও সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে এ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির পক্ষ থেকে আসামি গ্রেফতারে সাহায্যকারী এক সাধারণ মানুষকে ২০ হাজার টাকা অর্থ পুরস্কার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ১০ নভেম্বর ‘হরতাল-অবরোধে ঢাকায় ৬৪ বাসে আগুন-ভাঙচুর, ১ জন পেলেন পুরস্কার’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ফটোকার্ড সম্বলিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Somoy TV Facebook

এই পোস্টের বিস্তারিত বিবরণীতে কোথাও  যুবলীগ ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্তৃক বাসে আগুন দেওয়া কিংবা উক্ত ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে পুরস্কার দেওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

পরবর্তীতে সময়টিভি’র ওয়েবসাইটে গত ১০ নভেম্বর একই শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Somoy TV 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নাশকতার উদ্দেশ্যে বাসে আগুন দেয়ার সময় দুজন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তিনজনকে গ্রেফতার এবং আগুন-সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দেয়ায় পুরস্কার প্রদানের বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে গত ১০ নভেম্বর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার  ড. খ. মহিদ উদ্দিন জানান, ‘যানবাহনে আগুন দেয়ার সময় ধরিয়ে দেয়ায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী একজনকে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। বলেন, নাশকতার উদ্দেশ্যে বাসে আগুন দেয়ার সময় দুজন ও তাদের দেয়া তথ্যে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে রাজধানীর ১২টি স্থানে যানবাহনে আগুন দেয়ার সময় ১২ জনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে এক আসামি গ্রেফতারে সাধারণ মানুষ পুলিশকে সাহায্য করেছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থ পুরস্কার দেয়া হয়েছে।’

উক্ত প্রতিবেদনে কোথাও বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে ডিএমপির পক্ষ থেকে যুবলীগ ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কথা বলা হয়নি। তাছাড়া সেখানে পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তি হিসেবে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কোনো নেতার কথা বলা হয়নি বরং আসামি গ্রেফতারে সাহায্যকারী এক সাধারণ মানুষকে ২০ হাজার টাকা অর্থ পুরস্কার পুরস্কার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

অর্থাৎ, আলোচিত পোস্টটিতে উল্লেখিত “সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন অবরোধে ঢাকায় ৬৪ বসে আগুন ধরিয়ে দেয় যুবলীগ ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। বাসে আগুন দেয়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে পুরস্কার দেওয়া হয় এসব তথ্য জানান ডিএমপির মিডিয়া সেন্টার” শীর্ষক তথ্যটির সাথে এসম্পর্কিত প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে উক্ত তথ্যগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রেও উক্ত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, অবরোধে ঢাকায় ৬৪ বাসে যুবলীগ ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্তৃক আগুন দেওয়া এবং উক্ত ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে ডিএমপির পক্ষ থেকে পুরস্কার দেওয়ার তথ্যটি সঠিক নয় এবং ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির পক্ষ থেকে এমন কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

মূলত, গত ১০ নভেম্বর ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ড. খ. মহিদ উদ্দিন অবরোধে ঢাকায় বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার এবং আসামি গ্রেফতারে সাহায্যকারী ব্যক্তিদের একজন ২০ হাজার টাকা অর্থ পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম সময় টিভি তাদের ফেসবুক পেজে ‘হরতাল-অবরোধে ঢাকায় ৬৪ বাসে আগুন-ভাঙচুর, ১ জন পেলেন পুরস্কার’ শীর্ষক শিরোনামে এসম্পর্কিত একটি ফটোকার্ড এবং ওয়েবসাইটে একই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সময় টিভি’র উক্ত ফটোকার্ডটি প্রচার করে তাতে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনার ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কথা উল্লেখ করে এঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে ডিএমপির পক্ষ থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও আবরোধে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ভুয়া তথ্য শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, অবরোধে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্তৃক ঢাকায় ৬৪ বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে ডিএমপির পক্ষ থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সময় টিভি’র নকল ফটোকার্ডে ভিকারুননিসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি,‘অধিকাংশ মেধাবী ও সুন্দরী মেয়েরা ঢাকার অন্যতম স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসায় পড়ে’ শীর্ষক শিরোনামে টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি’র লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

শিক্ষার্থী

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি তাদের ফেসবুক পেজে ‘অধিকাংশ মেধাবী ও সুন্দরী মেয়েরা ঢাকার অন্যতম স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসায় পড়ে’ শীর্ষক শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট বা সম্পাদনার মাধ্যমে সময় টিভি’র লোগো সম্বলিত আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগোর সূত্র ধরে সময় টিভি‘র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও সময় টিভি’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তাছাড়াও সময় টিভি’র পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের ডিজাইনের ব্যাপক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। উভয় ফটোকার্ডে সময় টিভি’র লোগোর পজিশন, ছবি ব্যবহারের নিয়ম এবং শিরোনাম লেখার প্যার্টান ও ফন্টের মধ্যে সম্পূর্ণ ভিন্নতা রয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়াও সময় টিভি’র পেজে গত ৩ মাসে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সময় টিভি তাদের ফেসবুক পেজে উক্ত ডিজাইনে কখনো কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।

পরবর্তীতে ফটোকার্ডটিতে থাকা @vnsc diary লেখাটি ফেসবুকে সার্চের মাধ্যমে VNSC Diary নামের একটি ফেসবুক পেজ পাওয়া যায়। উক্ত পেজটি পর্যালোচনা করে গত ৩ নভেম্বর Beauty with Brain শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত আলোচিত ফটোকার্ডটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

অর্থাৎ, ,‘অধিকাংশ মেধাবী ও সুন্দরী মেয়েরা ঢাকার অন্যতম স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসায় পড়ে’ শীর্ষক শিরোনামে সময় টিভি কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।

মূলত, ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ-এর শিক্ষার্থীদের তৈরি একটি ফেসবুক পেজে সম্প্রতি ‘অধিকাংশ মেধাবী ও সুন্দরী মেয়েরা ঢাকার অন্যতম স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসায় পড়ে’ শীর্ষক শিরোনামে টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি’র লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়। যেটি পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি সময় টিভি এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। এছাড়াও সময় টিভি’র ফটোকার্ডের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সময় টিভির লোগো নকল করে আলোচিত দাবিতে ভুয়া ফটোকার্ডটি তৈরি করে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়েছে।  

উল্লেখ্য, পূর্বেও ইন্টারনেটে একাধিকবার সময় টিভি’র লোগো সম্বলিত বানোয়াট ফটোকার্ডে ভুল তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
প্রতিবেদনগুলো দেখুনএখানে এবং এখানে

সুতরাং, ‘অধিকাংশ মেধাবী ও সুন্দরী মেয়েরা ঢাকার অন্যতম স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসায় পড়ে’ শীর্ষক শিরোনামে সময় টিভি‘র লোগো সম্বলিত আলোচিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

  • VNSC Diary Facebook Page: Post
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

বাংলাদেশ পুলিশ সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন চায়নি

সম্প্রতি, “সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন চাইলো পুলিশ, পুলিশের বক্তব্য নিয়ে তোলপাড়” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

সেনাবাহিনী

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ পুলিশ সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানায়নি বরং ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে এডিট করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওটির শুরুতেই কয়েকটি ভিডিওর খণ্ডাংশ দেখানো হয়। ভিডিওটিতে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায়, “শুধু নৌকা নিয়ে আসলেই, টাকা-পয়সা থাকলেই, বড় বড় নেতার আত্মীয় স্বজন হলেই এই নির্বাচনে জয়লাভ করা যাবে না।”

তারপর ভিডিওটিতে বলতে শোনা যায়, লক্ষ্মীপুর উপনির্বাচনে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারায় এবার ক্ষেপে গিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। এসপি জুয়েল রানা কঠিন হুঙ্কার দিয়েছেন। তার বক্তব্যটি ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে সোস্যাল মিডিয়ায়। সেই ভিডিওটি আমরা দেখব। এদিকে সেনাবাহিনী মাঠে নামছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসব খুশির বার্তা দেওয়া হয়েছে যে সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এসব নিয়ে আমরা বিস্তারিত দেখব একটি ভিডিওতে। 

এরপর প্রচারিত ভিডিওটিতে পুলিশ কর্মকর্তা জুয়েল রানা’র বক্তব্যের ভিডিওটি ফুটেজ দেখানো হয়।

ভিডিও যাচাই

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Rtv News এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ২১ ডিসেম্বর “সিলেটে বদলি হলেন কুমিল্লার ভাইরাল পুলিশ সুপার জুয়েল রানা | Cumilla Jewel Rana | Rtv Exclusive News” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনে পুলিশ কর্মকর্তা জুয়েল রানার বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজের সাথে আলোচিত ভিডিওর পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison Image by Rumor Scanner

পরবর্তীতে, ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর Nilkamal Media এর ইউটিউব চ্যানেলে “নৌকা আনলেই যে নির্বাচনে জয়ী হতে পারবেন এমন নয়। কি বললো পুলিশ!শুনে আসুন বক্তব্য। Viral police Officer” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত কুমিল্লার তৎকালীন সার্কেল এএসপি জুয়েল রানার বক্তব্যের পূর্ণদৈর্ঘ্যের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তবে, পুলিশ কর্মকর্তা জুয়েল রানার বক্তব্যের ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন আয়োজন সংক্রান্ত দাবি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Comparison Image by Rumor Scanner

পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর “১০ মাসেই জনপ্রিয় পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা সভায় দেওয়া এএসপি জুয়েল রানার একটি বক্তব্য সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। ইউপি নির্বাচন নিয়ে ভাইরাল হওয়া বক্তব্যে জুয়েল রানা বলেন, ‘আপনি নৌকার প্রার্থী হয়েছেন বলেই চেয়ারম্যান হয়ে যাবেন বিষয়টি এমন নয়। আমি যেখানে ডিউটি করেছি নৌকা পেয়েছে ২৫১ ভোট। কিন্তু নৌকার প্রার্থী বলতে পারেননি ভোট সুষ্ঠু হয়নি। শুধু নৌকা নিয়ে আসলেই, টাকা পয়সা থাকলেই, বড় বড় নেতার আত্মীয়-স্বজন হলে এই নির্বাচনে জয় লাভ করা যাবে না৷’

অর্থাৎ, পুলিশ কর্মকর্তা জুয়েল রানার বক্তব্যটি কুমিল্লার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে প্রদান করা। লক্ষ্মীপুর উপনির্বাচনের সাথে তার উক্ত বক্তব্যের কোনো সম্পর্ক নেই।

এছাড়াও, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন আয়োজনের দাবির বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এরই প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি “সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন চাইলো পুলিশ, পুলিশের বক্তব্য নিয়ে তোলপাড়” শীর্ষক থাম্বনেইল এবং শিরোনামে ভিন্ন ঘটনার একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। অধিকতর ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়। এছাড়া, নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রেও এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, পুলিশ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন চেয়েছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মদিনায় হোটেল লবিতে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেওয়ার এই ভিডিওটি এডিটেড

সম্প্রতি, ‘মদিনায় হোটেল লবিতে ভুয়া ভুয়া শ্লোগান‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সৌদি আরব সফরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

মদিনায়

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সৌদি আরব সফরে মদিনায় হোটেল লবিতে তাঁকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সৌদি আরব সফরে মদিনার হোটেল হিলটনে অবস্থানের সময়ের একটি ভিডিওতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Anisur Rahman নামের একটি ফেসবুক পেজে গত নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মদিনা সফরের কিছু ছবি ও ভিডিও নিয়ে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

 Screenshot: Facebook

এই পোস্টে প্রচারিত একটি ভিডিও’র সাথে আলোচিত ভিডিওটির ধারণকালের স্থান ও সময়ের মিল পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল টোয়েন্টিফোর এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৫ নভেম্বর সৌদি আরবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথেও আলোচিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। এই ভিডিওটিও একই ঘটনায় ভিন্ন কোন থেকে ধারণকৃত।

Screenshot: Channel 24 YouTube 

ভিডিওটি’র বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ভিডিওটি সৌদি আরবের মদিনা হিলটন হোটেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থানের সময়ের। 

উক্ত ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে কোথাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে জনতার ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান শোনা যায়নি।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য অন্যকোনো সূত্রেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সৌদি আরব সফরে কোথাও তাঁকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেওয়ার দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ০৫ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ইসলামে নারী’ বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে সৌদি আরবে যান। শেখ হাসিনার সৌদি সফরকালে মদিনার হোটেল হিলটনে তাঁর অবস্থানকালীন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়। পরবর্তীতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত ভিডিওতে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান যুক্ত করে আলোচিত দাবির ভিডিওটি প্রচার করা হয়। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সৌদি আরব সফরে কোথাও তাঁকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেওয়ার সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, গত ০৮ নভেম্বর সৌদি আরবের জেদ্দায় ইসলামে নারী বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান শেষে ঢাকায় ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও আমেরিকার নিউইয়র্কের একটি হোটেলে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দেওয়ার সময় তাঁর সামনে ‘ভুয়া ভুয়া’ এবং ‘ভোট চোর’ শীর্ষক স্লোগান দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিকে বিকৃত  হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, মদিনায় হোটেল লবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, “উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ” শীর্ষক শিরোনামে স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে বিভিন্ন পদে নিয়োগ প্রদানের একটি বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।

স্বাস্থ্য

ফেসবুকে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

এই বিজ্ঞপ্তির পোস্টে ৩৪ হাজার রিয়েকশন, সাড়ে ৭ হাজারের অধিক কমেন্ট এবং দুই হাজারের অধিক শেয়ার হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাস্থ্য বিভাগ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করেনি বরং এটি একটি ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। 

অনুসন্ধানের শুরুতেই Uhafpc নামের যে ফেসবুক পেজ থেকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রচারিত হয় সেটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, উক্ত পেজ থেকে শুধুমাত্র দুইটি পোস্ট করা হয়েছে। গত ২৪ জুলাই এবং ৮ আগস্টের উভয় পোস্টেই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি দেখতে পাওয়া যায়।

এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সূত্র হিসেবে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর প্রকাশিত চাকরির সংবাদে’র পৃষ্ঠা-০১ এবং ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর প্রকাশিত করতোয়া’র পৃষ্ঠা-০৪ উল্লেখ করা হয়েছে।

স্বভাবতই, ২৪ জুলাই এবং ০৮ আগস্ট প্রচারিত কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সূত্র, প্রচার-পরবর্তী তারিখে প্রকাশিত হওয়ার সুযোগ নেই।

পরবর্তীতে, উক্ত পোস্ট দুইটির এডিট হিস্টোরি থেকে জানা যায়, পোস্ট দুইটির উভয়ই বহুবার সম্পাদিত হয়েছে।

এছাড়াও, উক্ত পোস্ট দুটি বিস্তারিত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পোস্টটি গত ১ নভেম্বর থেকে বুস্ট করা হয়েছে।

অর্থাৎ, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ফেসবুক পেজ, বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত পোস্টের এডিট হিস্টোরি এবং পোস্ট বুস্ট করা থেকে স্বভাবতই প্রতীয়মান হয় যে উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি একাধিকবার এডিট করে ভুয়া তথ্যসূত্র দিয়ে অধিক রিচ পাবার জন্য বুস্ট করে প্রচার করা হচ্ছে।

পরবর্তীতে, আলোচিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটির বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে অধিকতর সত্যতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: মাইদুল ইসলাম প্রধান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে এরকম কোন বিজ্ঞাপন দেয়া হয়নি। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞাপন দেয়া হলে তা আমাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে দেয়া হয়।

মূলত, Uhafpc নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে বুস্টেড পোস্টের মাধ্যমে “উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ” সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। অনুসন্ধানে জানা যায় বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। তাছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি বলে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: মাইদুল ইসলাম প্রধান রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, পূর্বে প্রতারণার একাধিক ঘটনা শনাক্ত করে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, “উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ” সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া।

তথ্যসূত্র

শেখ মুজিব পাবলিক টয়লেট দাবিতে প্রচারিত ছবিটি কি বাস্তব?

0

সম্প্রতি, “রুচির দুর্ভিক্ষ চলছে আওয়ামী লীগের মধ্যে। না হয় কোন সুস্থ মানুষের পক্ষে এমন টা করা সম্ভব নয়। শেখ মুজিব পাবলিক টয়লেট” শীর্ষক শিরোনামে পাবলিক টয়লেটের ছবি সম্বলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

শেখ মুজিব

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ মুজিব পাবলিক টয়লেট দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত করা। ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত একটি পাবলিক টয়লেটের ছবিতে ফটোশপের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ও ছবি যুক্ত করে উক্ত ছবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে, ‘Sobujdeshnews’ নামের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে  ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর “ঝিনাইদহে ইউএনওর হস্তক্ষেপে বন্ধ পাবলিক টয়লেট” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ছবির সাথে বঙ্গবন্ধু পাবলিক টয়লেট দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ছবিতে ডানপাশের দেয়ালের লেখার সাথে আলোচিত ছবিতে থাকা দেয়ালের লেখার হুবহু মিল রয়েছে। তবে, ছবিতে থাকা বামপাশের দেয়ালের সাথে মিল নেই। তাছাড়া পুরো ছবির ফ্রেমেরই হুবহু মিল রয়েছে।

মূলত, ২০১৮ সালে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার তৎকালীন ইউএনও এর হস্তক্ষেপে একটি পাবলিক টয়লেট চালু না হওয়ার অভিযোগ নিয়ে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উক্ত প্রতিবেদনে ওই পাবলিক টয়লেটের একটি ছবি সংযুক্ত করা হয়। সম্প্রতি সেই ছবিটিকেই এডিট করে টয়লেটের দেয়ালে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি এবং নাম যুক্ত করে ‘শেখ মুজিব পাবলিক টয়লেট’ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে ছবিটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

সাকিব বা বাংলাদেশকে নিয়ে বাজে মন্তব্যের কারণে শ্রীলঙ্কার সদস্যপদ স্থগিত করেনি আইসিসি  

0

সম্প্রতি, ‘আইসিসির আইন অমান্য করে বাংলাদেশ দল এবং অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বাজে মন্তব্য সর্বোপরি পাথর মারতে চাওয়ার খেসারত হিসাবে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলকে নিষিদ্ধ করলো আইসিসি’ শীর্ষক দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

সাকিব

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশ দল এবং সাকিবকে নিয়ে বাজে মন্তব্যের জন্য শ্রীলঙ্কাকে আইসিসি নিষিদ্ধ করেনি বরং শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ডের দুর্নীতি এবং সরকারী হস্তক্ষেপের কারণে আইসিসি তাদের সদস্যপদ স্থগিত করেছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এর ওয়েবসাইটে গত ১০ নভেম্বর ‘Sri Lanka Cricket suspended by ICC Board’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : ICC Website

শ্রীলঙ্কার সদস্যপদ স্থগিতের বিষয়ে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, “আইসিসি বোর্ড আজ সভায় বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করেছে। বিশেষ করে, স্বাধীনভাবে কাজ করতে ক্রিকেট প্রশাসনকে সরকারি হস্তক্ষেপের বাইরে থাকার প্রয়োজন ছিল। সময়মতো এই স্থগিতাদেশের শর্তগুলো জানিয়ে দেবে আইসিসি বোর্ড।”

Screenshot : ICC Website 

আইসিসি কর্তৃক শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দলের সদস্যপদ বাতিলের বিষয়ে বিস্তর অনুসন্ধানে ভারতীয় মাসিক ক্রীড়া পত্রিকা ‘Sportstar’ এর ওয়েবসাইটে গত ০৬ নভেম্বর ‘Sri Lanka sacks board, appoints interim committee’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : Sportstar Website 

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কা তাদের সাতটি বিশ্বকাপ ম্যাচের মধ্যে মাত্র দুটিতে জয়লাভ করেছে এবং সেমিফাইনালে ওঠার প্রতিযোগিতা থেকে প্রায় বাদ পড়েছে। এমতাবস্থায় শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া মন্ত্রী রোশান রানাসিংহে ক্রিকেট পরিচালনা বোর্ডকে বরখাস্ত করে বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গাকে প্রধান করে একটি অন্তবর্তীকালীন কমিটি গঠন করেন। 

Screenshot : Sportstar Website 

যদিও এর একদিন পরই শ্রীলঙ্কার আদালত  অন্তর্বর্তী কমিটির উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে আগের কমিটিকে পুনর্বহাল রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। 

জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো লিখেছে, শ্রীলঙ্কা সরকারের হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বিগ্ন আইসিসি। বোর্ড পরিচালনা থেকে আর্থিক বিষয়াদি এমনকি জাতীয় দলের বিভিন্ন বিষয়েও শ্রীলঙ্কা সরকারের হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বিগ্ন ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক এই সংস্থা। এর জেরেই এবার কড়া পদক্ষেপ নিলো আইসিসি।

মূলত, সম্প্রতি বাংলাদেশ দল এবং অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বাজে মন্তব্য সর্বোপরি পাথর মারতে চাওয়ার খেসারত হিসেবে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলকে নিষিদ্ধ করলো আইসিসি’ শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হলেও রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রী কর্তৃক বোর্ড সদস্যদের বরখাস্ত করার বিষয়টি আইসিসির নজরে আসলে ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ ও দুর্নীতির অভিযোগে শ্রীলঙ্কার সদস্যপদ বাতিল করে আইসিসি। উক্ত ঘটনাকেই ভিন্ন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।  

উল্লেখ্য, গত ০৬ নভেম্বর বাংলাদেশের বিপক্ষে বিশ্বকাপের ম্যাচে ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টাইমড আউট হন শ্রীলঙ্কার এঞ্জেলো ম্যাথিউস। পরবর্তীতে  তাকে এভাবে আউট করা বাংলাদেশ ক্রিকেট ও সাকিব আল হাসানের জন্য কলঙ্কজনক আখ্যা দিয়েছেন এই ক্রিকেটার। তাছাড়া, শ্রীলঙ্কায় গেলে সাকিবকে পাথর মারার হুমকিও দিয়েছেন ম্যাথিউসের ভাই ট্রেভিন ম্যাথিউস।

প্রসঙ্গত, ১৯৮১ সালে আইসিসির পূর্ণ সদস্যপদ পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। আগামী ২১ নভেম্বর আইসিসির বোর্ড মিটিংয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ জানানো হবে।

সুতরাং, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ ও দুর্নীতির অভিযোগে আইসিসি কর্তৃক শ্রীলঙ্কার সদস্যপদ বাতিল করার বিষয়টিকে ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এবং অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় শ্রীলঙ্কাকে আইসিসি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে’ শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভুলবশত ভোট দেয়নি ইসরায়েল

গত ১৬ অক্টোবর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভুলবশত ভোট দিয়েছে ইসরায়েল শীর্ষক একটি দাবি গণমাধ্যমসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার৷

ফিলিস্তিনের

উক্ত দাবিতে প্রচারিত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন দেশ টিভি (ফেসবুক)। 

একই দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভুলবশত ভোট দেয়নি ইসরায়েল বরং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ভুলবশত ইসরায়েলের নাম উচ্চারণ করে ফেলেন। এছাড়া, এটি ভোটের সময় নয় বরং রাশিয়া কর্তৃক যুদ্ধবিরতি চেয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপনের ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে দেশটিভি’র ভিডিও প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করে দেখেছি আমরা।  

ভিডিওর ১ মিনিট ১৮ সেকেন্ড সময়ে বলা হচ্ছিল, গাজায় অস্ত্র বিরতির জন্য  জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ চার দেশ। এর ফলে অস্ত্র বিরতির প্রস্তাব পাশ হয়নি পরিষদে। এদিকে পশ্চিমাদের হাতে জাতিসংঘ জিম্মি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। তবে এই বৈঠকে অস্ত্র বিরতি ইস্যুতে ভুলবশত নিজেদের বিপক্ষেই ভেটো দিয়ে বসে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রতি একাত্মতা প্রকাশে বুধবার তেল আবিব সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।…” 

এ সময় এক ব্যক্তিকে ইসারয়েলসহ কয়েকটি দেশের নাম বলতে দেখা যায়। 

পরবর্তীতে জাতিসংঘের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৭ অক্টোবর “Security Council rejects Russian resolution on Gaza – Security Council | United Nations (full)” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: United Nations YouTube Channel 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে অনুষ্ঠিত এই অধিবেশনে রাশিয়া  ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চেয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করে। সেই খসড়া প্রস্তাবটি উত্থাপনের সময় যেসকল দেশ এর পক্ষে দাঁড়ায় তাদের নাম উল্লেখ করেন এক ব্যক্তি। দেশের নামগুলো উচ্চারণ করতে গিয়ে তিনি ইসরায়েল নামও বলে ফেলেন। তবে পাশে থাকা একজন তাকে কিছু একটা বলেন তখন। এরপরই তিনি জানান, তিনি ভুলে ইসরায়েলের নাম উচ্চারণ করেছেন। ফিলিস্তিনের পক্ষে একাত্মতা প্রকাশকারী দেশের তালিকায় ইসরায়েলের নাম নেই। 

অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়া এই ব্যক্তির নাম সার্জিও ফ্রাঙ্কা দেনেসা। গত অক্টোবরে ব্রাজিলের পক্ষে তিনি জাতিসংঘের উক্ত অধিবেশনে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিভিন্ন দেশকে মাসভিত্তিক দায়িত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। অক্টোবরে এই দায়িত্বে ছিল ব্রাজিল। নভেম্বরে পেয়েছে চীন। 

মূলত, গত ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলও হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা চালায়। এতে দেশ দুইটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত নতুন মাত্রা পায়৷ পরবর্তীতে রাশিয়া ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চেয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। সেই খসড়া প্রস্তাবটি উত্থাপনের সময় যেসকল দেশ একাত্মতা প্রকাশ করে তাদের নাম উল্লেখ করার সময় উক্ত অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট সার্জিও ফ্রাঙ্কা দেনেসা ভুলবশত ইসরায়েলের নাম উচ্চারণ করেন। পরবর্তীতে তিনি তার ভুল স্বীকার করে বলেন, ফিলিস্তিনের পক্ষে একাত্মতা প্রকাশকারী দেশের তালিকায় ইসরায়েলের নাম নেই। কিন্তু এই ঘটনাকে গণমাধ্যমসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভুলবশত ভোট দিয়েছে ইসরায়েল। 

উল্লেখ্য, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷

সুতরাং, জাতিসংঘের অধিবেশনে ফিলিস্তিনের পক্ষে একটি প্রস্তাবের সম্মতি দেওয়া দেশের তালিকায় নাম না থাকলেও ইসরায়েলের নাম তৎকালীন অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট কর্তৃক ভুলবশত উচ্চারণের ঘটনাকে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দিল ইসরায়েল শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • United Nations: YouTube Video 
  • Rumor Scanner’s own investigation 

‘দ্য মেসি স্টোর’ বার্সেলোনার নতুন স্পন্সর হয়নি

সম্প্রতি, আর্জেন্টাইন ফুটবলার লিওনেল মেসির অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ ‘দ্য মেসি স্টোর’ বার্সেলোনার নতুন স্পন্সর হয়েছে দাবিতে বার্সেলোনার ফুটবলার আলেজান্দ্রো বালদে’র ছবিযুক্ত কিছু পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আর্জেন্টাইন ফুটবলার লিওনেল মেসির অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ ‘দ্য মেসি স্টোর’ বার্সেলোনার স্পন্সর হয়নি বরং Emaz নামের জনৈক স্প্যানিশ গ্রাফিক ডিজাইনারের আলেজান্দ্রো বালদে’র ছবির সাথে লিওনেল মেসির অটোগ্রাফ সংযুক্ত করে তৈরিকৃত একটি ছবিকে ব্যবহার করে কোনোরকম তথ্যসূত্র ছাড়াই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুইতেই বার্সেলোনার ফুটবলার আলেজান্দ্রো বালদে’র আলোচিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে ছবিটির উপরে emaz নামের সিগনেচার মার্ক দেখতে পাওয়া যায়। 

উক্ত নামের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বার্সেলোনার ফুটবলার আলেজান্দ্রো বালদে’র আলোচিত ছবিটি emazgfx নামের ইনস্টগ্রাম অ্যাকাউন্টে ৭ নভেম্বরের একটি পোস্টে খুঁজে পাওয়া যায়।

Source: emazgfx instagram account

উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে স্প্যানিশ শব্দ #diseñografico হ্যাসট্যাগ দ্বারা বোঝা যায় যে আলোচিত ছবিটি গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

উক্ত ইনস্টগ্রাম অ্যাকাউন্টের বায়ো থেকে জানা যায় Emaz নামের উক্ত ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী একজন গ্রাফিক ডিজাইনার। এছাড়াও, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা’র বেশকিছু খেলোয়াড়ের গ্রাফিক নির্মিত ছবিও দেখতে পাওয়া যায়।

পাশাপাশি, রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে FC Barcelona’র ভেরিফাইড এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ১৫ জুনের একটি টুইট খুঁজে পাওয়া যায়।

বার্সেলোনার ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইটকৃত উক্ত পোস্টটির তুলনামূলক পর্যালোচনা করে জার্সিতে স্পন্সর লোগোতে ভিন্নতা খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়াও দেখা যায়, উক্ত ছবিতে লিওনেল মেসির অটোগ্রাফ সংযুক্ত ছিল না।  

Source: FC Barcelona X Account

যা থেকে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, Emaz নামের স্প্যানিশ গ্রাফিক ডিজাইনার বার্সেলোনা ফুটবলার আলেজান্দ্রো বালদে’র ছবির সাথে লিওনেল মেসির অটোগ্রাফ গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে।

এছাড়াও, ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার ওয়েবসাইটে ক্লাবের স্পন্সরদের তালিকা পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

কিন্তু, স্পন্সরদের সে তালিকায় ফুটবলার লিওনেল মেসির অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ দ্য মেসি স্টোরে’র নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Source: FC Barcelona Website

এছাড়াও, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনও সূত্র থেকে আলোচিত দাবির সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

মূলত, ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা গত জুলাই মাসে ফুটবলার আলেজান্দ্রো বালদে’র একটি ছবি নিজেদের ভেরিফাইড এক্স অ্যাকাউন্টে টুইট করে। পরবর্তীতে, Emaz নামের জনৈক স্প্যানিশ গ্রাফিক ডিজাইনার বার্সেলোনা ফুটবলার আলেজান্দ্রো বালদে’র ছবির সাথে লিওনেল মেসির অটোগ্রাফ সংযুক্ত করে একটি ছবি তৈরি করেন। সেই ছবি ব্যবহার করেই ফুটবলার লিওনেল মেসির অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ দ্য মেসি স্টোর বার্সেলোনার স্পন্সর হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে লিওনেল মেসির হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা সম্বলিত একটি এডিটেড ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ফুটবলার লিওনেল মেসির অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ ‘দ্য মেসি স্টোর’ বার্সেলোনার স্পন্সর হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র