চটকদার ক্যাপশন ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে সাবেক তথ্যমন্ত্রীর মৃত্যুর সংবাদ প্রচার 

সম্প্রতি “সকালেই ইন্না’লিল্লাহ। তথ্য মন্ত্রীর মৃ’ত্যু বি’পদে সরকার।” শীর্ষক ক্যাপশন ও থাম্বনেইল  ব্যবহার করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এরকম কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 
ভিডিওগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

গুজবের সূত্রপাত

ফেসবুক মনিটরিং টুল ব্যবহার করে, দেশযোগ নামক ফেসবুক পেজে গত ৮ জানুয়ারি সকাল ৮ টা ১৩ মিনিটে উক্ত ভিডিওটি পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওর সূত্র ধরেই ফেসবুকে অন্যান্য পেজ এবং গ্রুপে উক্ত ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওতে যা আছে

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটি কয়েকটি প্রতিবেদন নিয়ে তৈরি একটি নিউজ বুলেটিনের ভিডিও।

ভিডিওর ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে তথ্যমন্ত্রীর মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করা হলে কোন তথ্যমন্ত্রী তা নির্দিষ্ট করে না বলায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের বর্তমান তথ্যমন্ত্রীর মারা যাননি বরং ভিডিওর ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে কোন তথ্যমন্ত্রী তা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ না করায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়।

অনুসন্ধান

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটি কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদন নিয়ে তৈরি একটি নিউজ বুলেটিনের ভিডিও। 

৮ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের ভিডিওর ৪১ সেকেন্ড সময়ে সংবাদের শিরোনাম উপস্থাপনের সময় সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাবিবুল্লাহ খানের মৃত্যুর সংবাদ পাঠ করা হয়।

পরবর্তীতে ভিডিওর ৮ মিনিট ১০ সেকেন্ড সময় সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাবিবুল্লাহ খানের মৃত্যু সংবাদের বিস্তারিত জানানো হয়। ১৫ জানুয়ারি শনিবার সকাল পৌনে ছয়টায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরন করেন বলে উক্ত ভিডিওতে জানানো হয়। এছাড়াও ভিডিওতে বলা হয়, সত্তরের দশকে হাবিবুল্লাহ খান বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ছিলেন।

ঘটনার অধিক সত্যতা যাচাইয়ে বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক সমকালের অনলাইন সংস্করণে গত ৭ জানুয়ারি “সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাবিব উল্লাহ খান মারা গেছেন” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,

সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাবিব উল্লাহ খান মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। হৃদরোগের আক্রান্ত হয়ে আজ শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি মারা যান। হাসপাতালের কমিউনিকেশন অফিসার ইহিতা হোসেন মিতা সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।”

এছাড়াও, অনলাইন গণমাধ্যম বিডিনিউজ২৪ এ গত ৮ জানুয়ারি “সাবেক মন্ত্রী হাবিবুল্লাহ খান মারা গেছেন” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকেও হাবিবুল্লাহ খানের মৃত্যুর তথ্যটি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। 

মূলত, উক্ত ভিডিওটি কয়েকটি প্রতিবেদন নিয়ে তৈরি একটি সংবাদ বুলেটিনের ভিডিও। ভিডিওর ৪২ সেকেন্ড সময়ে সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাবিবুল্লাহ খানের মৃত্যুর সংবাদ উপস্থাপন করা হলেও ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে শুধুমাত্র “তথ্যমন্ত্রীর মৃত্যু” উল্লেখ করে কোন তথ্যমন্ত্রী তা সুস্পষ্ট করে না লেখায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়। 

উল্লেখ্য, ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে চটকদার শিরোনাম ব্যবহার করে বিভিন্নসময় বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। উক্ত ঘটনায় পূর্বেও ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাবিবুল্লাহ খানের মৃত্যুর সংবাদের ভিডিওর ক্যাপশন এবং থাম্বনেইলে শুধুমাত্র “তথ্যমন্ত্রীর মৃত্যু” লিখে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img