Home Blog Page 559

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন সম্প্রতি গ্রেপ্তার হননি

সম্প্রতি, সকালেই মিছিল থেকে গ্রেফতার হলেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন শীর্ষক দাবিতে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছ।  

ইশরাক

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত ইউটিউব ভিডিওটি ফেসবুকেও পোস্ট করা হয়েছে। ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির জ্যেষ্ঠ সদস্য ইশরাক হোসেন গ্রেপ্তার হননি বরং তাকে গতবছর গ্রেপ্তারকালীন সময়ে গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও প্রতিবেদনের অংশ বিশেষ কাট করে সম্প্রতি তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

আলোচিত দাবিটি সত্য কিনা তা যাচাইয়ে প্রচারিত ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মূলধারার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল ‘বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর প্রথম অংশের সাথে সাথে আলোচিত ভিডিওর প্রথম কয়েক সেকেন্ডের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, ২০২০ সালে গাড়িতে অগ্নি সংযোগের একটি মামলায় ঐ বছরের ৬ এপ্রিল বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে মতিঝিল থানা পুলিশ। 

পরবর্তীতে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই দিনে জাতীয় দৈনিক যুগান্তরের ওয়েবসাইটে  “বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন গ্রেফতার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

এছাড়া, অনুসন্ধানে বিএনপির মিডিয়া সেল এবং দেশের মূলধারার গণমাধ্যম সূত্রে সম্প্রতি বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন গ্রপ্তার হওয়ার কোনো তথ্য  খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।

উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টেবর ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা দাবিতে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করার ঘটনায় মার্কন নাগরিক মিয়ান আরেফি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির জ্যেষ্ঠ সদস্য ইশরাক ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা হাসান সারওয়ার্দীর বিরুদ্ধে পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার এজাহারে হাসান সারওয়ার্দী এবং ইশরাক হোসেনের বিরুদ্ধে মিয়ান আরেফিকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা করা এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। উক্ত মামলায় মিয়ান আরাফি ও হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেপ্তার করা হলেও ইশরাক হোসেনকে এখন অবধি গ্রেপ্তার করা হয়নি।

মূলত, ২০২২ সালে এপ্রিল মাসে ২০২০ সালে গাড়িতে অগ্নি সংযোগের একটি মামলায় বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে মতিঝিল থানা পুলিশ। সেসময় উক্ত ঘটনা নিয়ে মূলধারার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভি ভিডিও  প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সম্প্রতি আরটিভির সেই প্রতিবেদনের অংশবিশেষ যুক্ত করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন গ্রেপ্তার হয়েছেন দাবিতে ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, মতিঝিল থানার নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল জামিন পান।

উল্লেখ্য, পূর্বে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে নিয়ে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য ছড়ালে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে,

সুতরাং, সম্প্রতি বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন গ্রেপ্তার হয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়টি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

দেশে জরুরি অবস্থা জারি এবং সেনাবাহিনীর ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি 

সম্প্রতি, “অবরোধে পুলিশকে পেটাচ্ছে জামাত বিএনপি” শীর্ষক ক্যাপশন এবং ” অবরোধে পুলিশকে পেটাচ্ছে জামাত বিএনপি জরুরি অবস্থা জারি- ক্ষমতায় সেনাবাহিনী” শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

সেনাবাহিনী

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইাভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপির সভা সমাবেশ প্রতিরোধে দেশে জরুরি অবস্থা জারি  কিংবা  সেনাবাহিনী ক্ষমতায় আসার কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও এবং ছবি সংযুক্ত করে চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ৮ মিনিট ১ সেকেন্ডের এই ভিডিওটির শুরুতে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিওর খণ্ডাংশ দেখানো হয়। পরবর্তীতে আলোচিত দাবিটি সম্পর্কে তিনটি ভিডিও দেখানো হয়। কিন্তু এতে কোথাও জরুরি অবস্থা জারি কিংবা সেনাবাহিনীর ক্ষমতায় আসা বিষয়ক কোনো দৃশ্য কিংবা তথ্য দেওয়া হয়নি। 

ভিডিও যাচাই ১ 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি থাকা ঢাকা পোস্টে’র লোগোর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গত ৫ নভেম্বর ঢাকা পোস্টে’র ইউটিউব চ্যানেলে “নারায়ণগঞ্জে যুবদলের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ। BNP । Oborodh । Jamaat” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটির বিস্তারিত বর্ণনা থেকে জানা যায়, টানা ৪৮ ঘন্টার অবরোধের প্রথম দিন নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভ করেছে জেলা যুবদলের নেতাকর্মীরা। এশিয়ান হাইওয়ের বন্দরের মদনপুরে অবস্থানকালে কয়েকটি টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে। 

ভিডিও যাচাই ২ 

আলোচিত ভিডিওটিতে অবরোধ সমর্থনে মিছিলের একটি ভিডিও দেখানো হয়। উক্ত মিছিলের ব্যানারে থাকা তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে আজ ৬ নভেম্বর Bangladesh Jamaat-e-Islami -এর ইউটিউব চ্যানেলে “রাজধানীতে ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের ৪৮ ঘন্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison : Rumor Scanner

এই ভিডিওটির শুরু থেকে ৩৭ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটুকু আলোচিত ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে। 

ভিডিও যাচাই ৩

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিটি প্রসঙ্গে আরও একটি ভিডিও দেখানো হয়। উক্ত ভিডিওটির অনুসন্ধানে ভিডিওতে থাকা লোগোর সূত্র ধরে সার্চে গত ৫ নভেম্বর A1 News নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “বিএনপি ভাঙ্গতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করছে হাসিনা। সফল হবে কি?।। A1 News।। The Untold” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির শুরু থেকে ৩ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটুকু আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উপরোক্ত তিনটি ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে এটি স্পষ্ট যে, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি-জামায়াতের সরকার পতন আন্দোলনে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ নিয়ে আলোচনা করা হলেও উক্ত ভিডিওগুলোতে দেশে জরুরি অবস্থা জারি কিংবা সেনাবাহিনীর ক্ষমতায় আসা সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই।

এছাড়া, দেশে জরুরি অবস্থা জারি কিংবা সেনাবাহিনীর ক্ষমতায় আসার মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটলে অবশ্যই সে সংবাদ দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হতো। কিন্তু উক্ত দাবিগুলোর বিষয়ে গুগলে কি ওয়ার্ড সার্চ করে কোনোপ্রকার তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরিউক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটি স্পষ্ট যে, দেশে জরুরি অবস্থা জারি কিংবা সেনাবাহিনীর ক্ষমতায় আসা সংক্রান্ত কোনো কোনো ঘটনা ঘটেনি।।  

মূলত, সাম্প্রতিক সময়ে সরকার পতনের লক্ষ্যে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ এবং তা প্রতিরোধে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে সমাবেশ প্রতিরোধে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনী ক্ষমতায় এসেছে শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি-জামায়াতের অবরোধে পুলিশের সাথে দলগুলোর নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হলেও দেশে জরুরি অবস্থা জারি কিংবা সেনাবাহিনীর ক্ষমতায় আসা সংক্রান্ত কোনো ঘটনা ঘটেনি। উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি ব্যবহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) বলছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সমাবেশ ও হরতাল-অবরোধে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গত ২৮ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ১০৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। নিহত হয়েছেন একজন। 

উল্লেখ্য, পূর্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য দেশে সেনাবাহিনীর জরুরি অবস্থা জারি দাবিতে ইন্টারনেটে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে  ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি-জামায়াতের সরকার পতন আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ এবং তা প্রতিরোধে দেশে জরুরি অবস্থা জারি এবং সেনাবাহিনীর ক্ষমতায় আসা সংক্রান্ত বিষয়টি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আইসিসি বিশ্বকাপকে ইন্ডিয়ান বিশ্বকাপ বলে কোনো টুইট করেননি জেসন রয় 

0

সম্প্রতি, আইসিসি বিশ্বকাপকে ইন্ডিয়ান বিশ্বকাপ বলে টুইট করেছেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান জেসন রয় শীর্ষক  দাবিতে টুইটের একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

আইসিসি

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইংলিশ ব্যাটসম্যান জেসন রয় আইসিসি বিশ্বকাপকে ইন্ডিয়ান বিশ্বকাপ বলে কোনো টুইট করেননি। প্রকৃতপক্ষে,  জেসন রয়-এর এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্টে আলোচিত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া টুইটের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত টুইট স্ক্রিনশটটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া টুইটের স্ক্রিনশটটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে থাকা তথ্যানুযায়ী, জেসন রয়-এর এক্স অ্যাকাউন্ট @JasonRoy2Ø থেকে গত ৫ নভেম্বর আলোচিত টুইটটি করা হয়েছে। 

Image: Facebook

তথ্যটির সত্যতা যাচাইয়ে জেসন রয়-এর এক্স আইডিতে করা সর্বশেষ পোস্টসমূহ (টুইট) পর্যালোচনা করেও উক্ত পোস্টটির (টুইট) কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও দেখা যায়, উক্ত এক্স আইডিতে ২৮ আগস্টের পর কোনো পোস্টই (টুইট) করা হয়নি। অর্থাৎ, তিনি চলমান আইসিসি ওডিআই বিশ্বকাপ নিয়ে কোনো প্রকার পোস্ট (টুইট) করেননি। 

Screenshot: X (Twitter)

পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক নানা কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও উক্ত পোস্টের (টুইট) বিষয়ে দেশী কিংবা বিদেশী গণমাধ্যমে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, ইংলিশ ব্যাটসম্যান জেসন রয় আইসিসি বিশ্বকাপ-কে ইন্ডিয়ান বিশ্বকাপ বলে তার এক্স অ্যাকাউন্টে কোনো পোস্ট (টুইট) করেননি। 

মূলত, গত ৫ নভেম্বর কলকাতার ইডেন গার্ডেনে চলমান ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষেব মাঠে নামে সাউথ আফ্রিকা ক্রিকেট দল। কিন্তু ৩২৭ রানের টার্গেটে মাত্র ৮৩ রানেই অলআউট হয়ে যায় সাউথ আফ্রিকান ক্রিকেটাররা। যা থেকে ম্যাচটিতে ভারতীয় দলের নেওয়া রিভিউগুলো নিয়ে পক্ষপাতিত্বের প্রশ্নও উঠে। এ নিয়ে দর্শকদের মাঝে শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আইসিসির সমালোচনা করে গত ৫ নভেম্বর ইংলিশ ব্যাটসম্যান জেসন রয় তার এক্স অ্যাকাউন্টে আইসিসি বিশ্বকাপ-কে ইন্ডিয়ান বিশ্বকাপ বলে পোস্ট (টুইট) করেছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত স্ক্রিনশটটি ভুয়া ও বানোয়াট। প্রকৃতপক্ষে, ইংলিশ ক্রিকেটার জেসন রয় এমন কোনো টুইটটি করেননি। এছাড়াও তিনি চলমান বিশ্বকাপ নিয়েও কোনো প্রকার টুইট করেননি।

সুতরাং, আইসিসি বিশ্বকাপ-কে ইন্ডিয়ান বিশ্বকাপ বলে নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে ইংলিশ ক্রিকেটার জেসন রয়-এর (পোস্ট) টুইট করার দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশ সরকারকে জাতিসংঘ কর্তৃক পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেওয়ার ভুয়া তথ্য প্রচার 

গত ৪ নভেম্বর Al Minar নামের ইউটিউব চ্যানেলে “সরকারকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিলো জাতিসংঘো সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন চূড়ান্ত”  শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও (আর্কাইভ)  প্রকাশ করা হয়। 

আল্টিমেটাম

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশ সরকারকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচনের কোনো সিদ্ধান্তও হয়নি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন দুইটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ১৪ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে দেখা যায়, ভিডিওটির শুরুতে দুইটি ভিডিওর খণ্ডাংশ দেখানো হয়। পরবর্তীতে ভিডিওটিতে চ্যানেলটির উপস্থাপক আলোচিত ভিডিওটির উদ্দেশ্যে দুটি ভিডিও দেখান, যেগুলোতে ভয়েজ বাংলার প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ এবং অনলাইন এক্টিভিস্ট এম রহমান মাসুমের বক্তব্য রয়েছে।

প্রথম ভিডিও যাচাই 

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে গত ৩ নভেম্বর Voice Bangla নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে ” সরকারের পদত্যাগের আলটিমেটাম এবং বিএনপির আন্দোলনে সমর্থন ইসলামী আন্দোলনের I Voice Bangla” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

৬ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষন করে দেখা যায় মোস্তফা ফিরোজ গত ৩ নভেম্বর দৈনিক মানবজমিনে  “১০ই নভেম্বরের মধ্যে জাতীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আল্টিমেটাম, বিরোধীদের আন্দোলনে সমর্থন ঘোষণা ইসলামী আন্দোলনের” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পড়ে শোনাচ্ছেন। 

এছাড়া, গত ৩ নভেম্বর জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোতে “রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দিয়ে রাষ্ট্রপতিকে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরও একটি প্রতিবেদন পড়ে শোনান তিনি। 

মোস্তফা ফিরোজের এই ভিডিওটি কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই আলোচিত দাবির ভিডিওটির সাথে যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া উক্ত দাবি সম্পর্কে দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো তথ্য খুঁজে  পাওয়া যায়নি। 

দ্বিতীয় ভিডিওটি যাচাই 

অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গত ৩ নভেম্বর Channel US Bangla নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “কেমন গেলো হরতাম অবরোধ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত এম রহমান মাসুমের মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ভিডিওতে থাকা তথ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটির দাবির কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটিতে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার যে ভিডিও ক্লিপগুলো যুক্ত করা হয়েছে সেগুলোতে জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশ সরকারকে  পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেওয়ার এবং সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বিষয়ক কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, আন্তর্জাতিক এবং বাংলাদেশের মূলধারার কোনো গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে জাতিসংঘ কর্তৃক সরকারকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেওয়া ও সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন চূড়ান্ত বিষয়ক কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এরই প্রেক্ষাপটে Al Minar নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “সরকারকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিলো জাতিসংঘো সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন চূড়ান্ত” শীর্ষক থাম্বনেইল এবং শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। অধিকতর ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়।  এছাড়া, নির্ভরযোগ্য কোনো  সূত্রেও এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, বাংলাদেশ সরকারকে জাতিসংঘ কর্তৃক পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেওয়া  এবং সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন চূড়ান্ত হওয়া সংক্রান্ত দাবিগুলো মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

যুদ্ধের এই পোশাকটি মহানবী (সা.) এর নয়

0

সম্প্রতি, “নবীজির যুদ্ধের পোশাক মোবারক” শীর্ষক শিরোনামে একটি যুদ্ধের পোশাকের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

মহানবী

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর যুদ্ধের পোশাকের নয় বরং এটি তুরস্কের ইস্তাম্বুলের তোপকাপি প্যালেস মিউজিয়ামে অটোমান সুলতান তৃতীয় মুস্তফার যুদ্ধের পোশাকের রেপ্লিকা।

ভিডিওটির কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, Hannan Miah নামের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০সালের ১০মে “Topkapı Palace Museum Ottoman Arms And Armour Collection, Turkey Istanbul” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

উক্ত ভিডিওতে ইস্তাম্বুলের তোপকাপি প্রাসাদে দর্শনার্থীদের জন্য রাখা সংগ্রহশালায় উক্ত পোশাকের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

এছাড়াও, তুরষ্কের সংবাদমাধ্যম “Star Gazetesi তে ২০১৬সালের ২১অক্টোবর “Sultan III. They made a replica of Mustafa’s priceless armor” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনে অটোম্যান সুলতান তৃতীয় মুস্তফার যুদ্ধপোশাকের রেপ্লিকা তৈরির বিষয়ে জানা যায়। উক্ত পোশাকটি-ই তোপকাপি প্যালেসে সংরক্ষিত আছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

মূলত, টেলিভিশন সিরিজের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ৬৪ বছর বয়সী সামি এরসিন অটোমান সুলতান তৃতীয় মুস্তফার যুদ্ধের পোশাকের রেপ্লিকা তৈরি করেন। পোশাকটি ইস্তাম্বুলে অবস্থিত তোপকাপি প্যালেস মিউজিয়ামে প্রদর্শনের সময়ে ধারণকৃত ভিডিওকে বর্তমানে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর ব্যবহৃত যুদ্ধের পোশাক দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে ছবিটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সেনাপ্রধানের যুদ্ধ ঘোষণার গুজব

সম্প্রতি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য, টকশোতে এসে হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলো সেনাপ্রধান- শীর্ষক শিরোনাম ও প্রায় সমজাতীয় তথ্যে থাম্বনেইল ব্যবহার করে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটিতে সঞ্চালক প্রশ্ন করেন ‘সেনাবাহিনী বিদেশের শান্তি রক্ষা করছেন আমাদের নির্বাচনে সেনাবাহিনী শান্তি রক্ষা করতে পারবে কি না? 

এই প্রশ্নের উত্তরে সেনাবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদকে বলতে শোনা যায়, অবশ্যই পারবে। 

পরবর্তীতে একজন বক্তাকে বলতে শোনা যায়, জ্বি এটা পাবলিক প্রসিকিউটর। তার কতবড় দুঃসাহস হয় সেনাবাহিনীকে কুত্তার বাচ্চা,  শুয়োরের বাচ্চা বলে গালি দিতে। ধন্যবাদ সেনাপ্রধান, সেনাবাহিনীটাকে আজকে এতো নিচু পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য। 

এরপর আবারও এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, উনি অত্যন্ত ক্লিয়ার টার্মসে এটি বলেছে এবং কিন্তু সারা জাতি এটি শুনেছে। আমাদের যদি নিয়োগ করা হয় আমরা সবসময়ের মত এবারও অত্যন্ত সৎভাবে, নিরপেক্ষভাবে এবং আমাদের পেশাগত যে দক্ষতা আছে সেটাকে এক্সিভিট করে আমরা অবশ্যই, আমরা এটা বারেবারে করেছি বলেই তো মানুষের প্রত্যাশাটা এসেছে।। সবাই চাচ্ছে। আমরা পারবো বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। আমাদের সেই পেশাগত দক্ষতা আছে… নির্বাচন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া… নির্বাচন কন্ডাক্টর করা… 

তারপর সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদিনকে বলতে শোনা যায়, আপনার যদি যুদ্ধ করতে চান আসুন যুদ্ধ করি। আপনার এক হাজার দুই হাজার তিন হাজার লোক নিয়ে এ-কটা অস্ত্র নিয়ে আমাদের সাথে যদি যুদ্ধ করতে চান আধাঘন্টাও টিকতে পারবেন না। আমরা সেনাবাহিনী, পুলিশ আনসার, বিজিবি মিলে আমরা যারা আছি তাদের সাথে আপনারা ত্রিশ মিনিট যুদ্ধ করেন। আসেন আমরা জায়গা ঠিক করি এবং নিজেদেরকে আমাদের হাতে সপোর্দকরেন। আর না হলে যেকোনো মূল্যে আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে আামাদের আপনাদের বিরুদ্ধে যেকোনো রকম সেক্রিফাইজ করা প্রয়োজন, যেকোনো প্রকার আত্মদান করা প্রয়োজন তা করতে প্রস্তুত আছি। আমরা আত্মদান করেছি, আমরা এখানে রক্ত দিয়েছি, আমরা আরও রক্ত দেব। আপনাদেরকে আপনাদের এই হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে কখনোই সফল হতে দেব না।… 

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর প্রধান  

এই প্রশ্নের উত্তরে সেনাবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদেরযুদ্ধ ঘোষণা করার দাবিটি মিথ্যা বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ক্লিপ সংযুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। গত ৪ নভেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২ মিনিট ১১ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি প্রচার করা হয়। 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ ও ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও, যেখানে সেনাবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদিনকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়।

উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও উক্ত দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

তবে বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন ডিবিসি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ২২ নভেম্বর “সশস্ত্র বাহিনী প্রস্তুত?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি টকশো খুঁজে পাওয়া যায়।

টকশোতে সেনাবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদকে(তৎকালীন মেজর জেনারেল) উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।

৩৭ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের টকশোর ৩৫ মিনিট ১০ সেকেন্ড থেকে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা সেনা প্রধানের বক্তব্যের সাথে হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner 

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওতে সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদিনের দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে অনুসন্ধানে InFormative Bangla নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গতবছরের ২৭ মে “আসুন যুদ্ধ করি, ৩০ মিনিটও টিকতে পারবেন না, সেনাবাহিনীর কড়া হুশিয়ারি” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

১০ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদিনের বক্তব্যের হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

রাঙামাটিতে সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মির সন্ত্রাসী কার্যকলাপের হুশিয়ারী দিয়ে এমন বক্তব্য দেন সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদিন। 

অর্থাৎ, আলোচিত দাবির সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা সেনাবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদিনের বক্তব্যের কোনো মিল নেই।

পাশাপাশি মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর প্রধানের যুদ্ধ ঘোষণা দেওয়ার কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে আন্দোলন করছে। এরই প্রেক্ষাপটে গত ৪ নভেম্বর অক্টোবর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য, টকশোতে এসে হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলো সেনাপ্রধান’ শীর্ষক শিরোনাম ও প্রায় একই তথ্যে থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।  এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে আলোচিত দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও সেনাবাহিনীর নামে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য  ছড়ানো হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে সেনাবাহিনীর প্রধান’ শীর্ষক দাবিটিতে সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের পুরোনো ভিডিওকে সাম্প্রতিক হরতালে ট্রেনে আগুন লাগানোর দৃশ্য দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, “আজকের হরতাল চলাকালে পারাবত এক্সপ্রেসে আগুন দিল জনতা” শীর্ষক শিরোনামে ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ)। একই ভিডিওকে সোনারবাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগার ভিডিও দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক হরতালে অগ্নিসংযোগের ঘটনার নয় বরং এটি ২০২২ সালের ১১ জুন যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে মৌলভীবাজারে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও।

অনুসন্ধানের শুরুতে সাম্প্রতিক হরতালে পারাবত এক্সপ্রেসে আগুন লাগার কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা সে বিষয়ে জানতে গুগলে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।

পরবর্তীতে, আলোচিত ভিডিওটির কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে UNB-United News Bangladesh নামের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১১ জুন “Parabat train | মৌলভীবাজার শমসেরনগরে চলন্ত আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের বগিতে ভয়াবহ আগুন | UNB” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর ধারণকৃত স্থানের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওর বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায় উক্ত ভিডিওটি ২০২২ সালের ১১ জুন মৌলভীবাজারের শমসেরনগরে আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেসের চলন্ত ট্রেনের বগিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ধারণকৃত। 

পরর্বতীতে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার সংবাদমাধ্যম বাংলা ভিশনে’র ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১১ জুন “সিলেটগামী চলন্ত ট্রেনে ভয়াবহ আগুন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগরে আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২০২২ সালের ১১ জুন দুপুর একটার দিকে ঢাকা থেকে সিলেটগামী ট্রেনটি কমলগঞ্জের শমসেরনগরের বিমানঘাঁটির পাশে পৌঁছালে ট্রেনটির এসি বগিতে আগুন লেগে যায়। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ হিসেবে এসি কিংবা পাওয়ার ইঞ্জিনের যান্ত্রিক ত্রুটির কথা নিশ্চিত করা হয় উক্ত প্রতিবেদনে।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েক বাসে অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেলেও এখন পর্যন্ত ট্রেনে অগ্নিসংযোগের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মূলত, ২০২২ সালের ১১ জুন যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের এসি বগিতে আগুন লেগে যায়। সেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার একটি ভিডিওকে সম্প্রতি হরতালে পারাবত এক্সপ্রেসে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি মহাসমাবেশের আয়োজন করে। পরবর্তীতে মহাসমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলার অভিযোগ এবং তা নিয়ে সংঘর্ষের জের ধরে সেই সমাবেশ স্থগিত করে ২৯ অক্টোবর সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। এদিন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করে পুলিশ। একইদিন রাতে সরকারের পদত্যাগ, খালেদা জিয়ার মুক্তি, নেতা-কর্মীদের হত্যা, গ্রেপ্তার ও হামলা, মহাসচিবকে গ্রেপ্তার ও নেতাদের বাসায় তল্লাশির প্রতিবাদে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও পুরোনো ভিডিওকে সাম্প্রতিক হরতালের ভিডিও দাবিতে প্রচারিত হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, সাম্প্রতিক হরতালে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

রাষ্ট্রপতির নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারির ভুয়া তথ্য

সম্প্রতি, রাষ্ট্রপতির নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার জারির দাবিতে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের নির্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারি করারও কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ক্লিপ সংযুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। গত ০১ নভেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২ মিনিট ০৯ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি প্রচার করা হয়।

Screenshot: YouTube Claim Video

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ ও ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন, যেখানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কার্যক্রমের পুরোনো কিছু ছবি দেখানো হয়েছে।

ভিডিওটিতে বলা হয়, “এবার সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঘোষণা দিলেন নতুন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। এজন্য প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করে সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, প্রয়োজন পড়লে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত।”

উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

তবে মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে ছাড় দেওয়া হবে না: মো. সাহাবুদ্দিন’ শীর্ষক শিরোনামে সেসময়ে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির শুরুর দিকে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

অর্থাৎ, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কর্তৃক সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে ছাড় না দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করার এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশের দাবি সংক্রান্ত তথ্যও আলোচিত ভিডিওতে অনুপস্থিত।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে বাংলাদেশে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। পরবর্তীতে এই ব্যবস্থা আর পূর্ণবহাল করা হয়নি।

মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এরই প্রেক্ষাপটে গত ০১ নভেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘রাষ্ট্রপতির নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারির দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার থাম্বনেইল এবং শিরোনামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের ঘোষণা দাবিতে ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, রাষ্ট্রপতির নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জারি শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ সরকারের পরিবর্তন চায় শীর্ষক মন্তব্যটি একাত্তর টিভির নয়, মির্জা ফখরুলের

সম্প্রতি, সত্যি তুলে ধরার জন্য ৭১ টিভিকে ধন্যবাদ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

৯৯ ভাগ

যা দাবি করা হচ্ছে 

একাত্তর টিভি বলেছে, দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ যখন সরকারের পরিবর্তন চায় তখন সরকার সন্ত্রাসী কায়দায় বিএনপির বিরুদ্ধে উস্কানি দিচ্ছে। যুবলীগ ছাত্রলীগকে দিয়ে সংঘাত তৈরির পায়তারা করছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ভিডিওর মন্তব্য ঘরে অনেকেই ভিডিওটিকে একাত্তর টিভির নিজস্ব মতামত মনে করছেন।

Collage: Rumor Scanner

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটিতে সংবাদ পাঠিকার কথা গুলো সংবাদ পাঠিকা কিংবা একাত্তর টিভির নিজস্ব মতামত নয় বরং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেওয়া এক বক্তব্যের বরাতে পরিবেশিত সংবাদের একটি অংশ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে কাট করে উক্তদাবিতে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে একাত্তর টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৪ জুলাই ‘বিএনপির সমাবেশে সংঘাতের শঙ্কা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

একাত্তর টিভির সংবাদ প্রতিবেদনটির প্রথম দশ সেকেন্ড উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাথে হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটিতে সংবাদ উপস্থাপিকা বলেন, ‘দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ যখন সরকারের পরিবর্তন চায় তখন সরকার সন্ত্রাসী কায়দায় বিএনপির বিরুদ্ধে উস্কানি দিচ্ছে। যুবলীগ ছাত্রলীগকে দিয়ে সংঘাত তৈরির পায়তারা করছে। নয়াপল্টনে এক সভায় এক অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি আরো বলেন এই পরিস্থিতে সংঘাত হলে এর দায় আওয়ামী লীগকেই নিতে হবে।’

ভিডিওটি থেকে আরও জানা যায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার নয়া পল্টনে সরকার পতনের এক দফা এক দাবি আদায়ের অংশ হিসেবে ৬ ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন দুইশতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা। 

একই সময়ে বিএনপি কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় গত ২৭ জুলাইয়ের তারিখে বিএনপির মহাসমাবেশের প্রস্তুতি সভা চলছিলো। সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ তো এখন হরতাল ভাঙ্গার দলে পরে গিয়েছে। তারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ সরকার পতন চায় এবং তারা এ আন্দোলনে জড়িত হয়ে পড়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আপনারা যারা আছেন এই আন্দোলনের সাথে একাত্ত্বতা করা উচিত।

একই তথ্যে গত ২৪ জুলাই মূলধারার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলা ভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে “দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ সরকারের পরিবর্তন চায়: মির্জা ফখরুল” শীর্ষক শিরোনামে সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

অর্থাৎ, আলোচিত মন্তব্যটি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের।

মূলত, গত ২৪ জুলাই নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সরকার পতনের এক দফা এক দাবি আদায়ের অংশ হিসেবে দুইশতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ৬ ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। একই সময়ে বিএনপি কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় গত ২৭ জুলাইয়ের তারিখ অনুষ্ঠিত বিএনপির মহাসমাবেশের প্রস্তুতি সভা চলছিল।। সেই সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ তো এখন হরতাল ভাঙ্গার দলে পরে গিয়েছে। তারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ সরকার পতন চায় এবং তারা এ আন্দোলনে জড়িত হয়ে পড়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আপনারা যারা আছেন এই আন্দোলনের সাথে একাত্ত্বতা করা উচিত। উক্ত ঘটনা এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য নিয়ে সেসময় মূলধারার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভিতে সংবাদ প্রকাশিত হয়। একাত্তর টিভিতে প্রকাশিত সেই সংবাদের ‘দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ যখন সরকারের পরিবর্তন চায় তখন সরকার সন্ত্রাসী কায়দায় বিএনপির বিরুদ্ধে উস্কানি দিচ্ছে। যুবলীগ ছাত্রলীগকে দিয়ে সংঘাত তৈরির পায়তারা করছে।’ শীর্ষক অংশ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় কাট করে উক্ত মন্তব্যটি একাত্তর টিভি’র নিজস্ব মতামত দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া নোবেল পাওয়ার যোগ্য শীর্ষক মন্তব্য দৈনিক যুগান্তরের দাবিতে ইন্টারনেটে  প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ যখন সরকারের পরিবর্তন চায় দাবিতে একাত্তর টিভি’র নামে প্রচারিত এই ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

ডিবিসি নিউজের ফটোকার্ড নকল করে বদনা চুরির দায়ে ট্রেন থেকে যুবক আটকের ভুয়া খবর

0

সম্প্রতি, ‘চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ বিজয় এক্সপ্রেস ময়মনসিংহ জংশনে অবস্থান কালে বিজয় এক্সপ্রেস থেকে বদনা চুরি করার দায়ে ময়মনসিংহের এক যুবক কে আটক করেছে ময়মনসিংহ রেলওয়ে পুলিশ’ শীর্ষক শিরোনামে ডিবিসি’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ডিবিসি

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট  (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট  (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বদনা চুরির দায়ে ময়মনসিংহে ট্রেন থেকে যুবক আটকের দাবিটি মিথ্যা। এছাড়া উক্ত দাবিতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসি নিউজও  কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ  করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ইংরেজি পত্রিকা ঢাকা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ২২ আগস্ট ‘হোয়াটসঅ্যাপে আইজিপি সেজে ডিআইজিকে ‘হাই’, যুবক গ্রেপ্তার’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত প্রতিবেদনের ফিচার ইমেজটি ব্যবহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ডিবিসি নিউজের ডিজাইনের আদলে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগো’র সূত্র ধরে নিউজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সম্প্রতি প্রচারিত উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, ডিবিসি নিউজের ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ড এবং ডিবিসি নিউজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম

Image: Facebook

এতে আলোচিত ফটোকার্ড এবং ডিবিসিতে প্রকাশিত অন্যান্য ফটোকার্ডের শিরোনামের ফন্টের সুস্পষ্ট পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

এছাড়া, ডিবিসি নিউজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচারিত প্রতিটি ফটোকার্ডের শিরোনাম লেখার ফন্ট এবং আলোচিত ফটোকার্ডের ফন্ট ভিন্ন। এছাড়াও ডিবিসির প্রকাশিত ফটোকার্ডে শিরোনাম লেখার ক্ষেত্রে সাধারণত লাল এবং কালো এই ‍দুই রঙের ফন্ট দেখা যায়। যা আলোচিত ফটোকার্ডের ক্ষেত্রে অনুপস্থিত।

পরবর্তী অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ইংরেজি পত্রিকা ঢাকা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ২২ আগস্ট  ‘হোয়াটসঅ্যাপে আইজিপি সেজে ডিআইজিকে ‘হাই’, যুবক গ্রেপ্তার’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত  প্রতিবেদনে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজির সরকারি ফোন নম্বর দিয়ে খোলা হোয়াটসঅ্যাপ আইডিতে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজির আহমেদের ইউনিফর্ম পরা ছবি যুক্ত করে ভুয়া আইডি খুলে তা দিয়ে হাই লিখে মেসেজ পাঠায় আমিরুল ইসলাম নামের নওগাঁর এক যুবক। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় জেলা পুলিশের সাইবার টিমের সহায়তায় উক্ত যুবককে আটক করা হয়।

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, তিনি ড. বেনজির আহমেদের ছবি যুক্ত ভুয়া আইডি থেকে পুলিশের বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে মেসেজ পাঠিয়ে পরে সেগুলোর স্ক্রিনশট দেখিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও এলাকায় প্রাধান্য বিস্তারের চেষ্টা করত।

অর্থাৎ, ডিবিসি আলোচিত শিরোনামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি প্রচার করেনি।

মূলত, ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজির আহমেদের ছবিযুক্ত একটি হোয়াটসঅ্যাপ আইডি থেকে পুলিশের বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে মেসেজ পাঠানো হয়। পরবর্তীতে পুলিশের সাইবার টিমের সহায়তায় আমিরুল ইসলাম নামের এক যুবককে নওগাঁ থেকে আটক করা হয়। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা ঢাকা ট্রিবিউন তাদের ওয়েবসাইটে ২২ আগস্ট ‘হোয়াটসঅ্যাপে আইজিপি সেজে ডিআইজিকে ‘হাই’, যুবক গ্রেপ্তার’ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সম্প্রতি, উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিটি ব্যবহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট বা সম্পাদনার মাধ্যমে ‘চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ বিজয় এক্সপ্রেস ময়মনসিংহ জংশনে অবস্থান কালে বিজয় এক্সপ্রেস থেকে বদনা চুরি করার দায়ে ময়মনসিংহের এক যুবক কে আটক করেছে ময়মনসিংহ রেলওয়ে পুলিশ’ শীর্ষক শিরোনামে ডিবিসি নিউজের ফটোকার্ডের আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিষয়ে গত ০৫ সেপ্টেম্বর বিস্তারিত ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ‘চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ বিজয় এক্সপ্রেস ময়মনসিংহ জংশনে অবস্থান কালে বিজয় এক্সপ্রেস থেকে বদনা চুরি করার দায়ে ময়মনসিংহের এক যুবক কে আটক করেছে ময়মনসিংহ রেলওয়ে পুলিশ’ শীর্ষক শিরোনামে ডিবিসি নিউজের আদলে তৈরি ফটোকার্ডটি ভুয়া এবং আলোচিত দাবিটিও সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র