Home Blog Page 560

‘ওরে তোর শরীরে মীর জাফরের রক্ত’ শীর্ষক গানটি মনির খান তারেক রহমানকে নিন্দা করে গাননি

সম্প্রতি, তারেক রহমানকে নিয়ে একি গান গাইলেন মনির খান! সত্যিটা তুলে ধরার জন্য গানের মাধ্যমে শিল্পী মনির খানকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।” শীর্ষক শিরোনামে কণ্ঠশিল্পী মনির খানের একটি গানের খণ্ডিত অংশ প্রচার করা হয়েছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে, কণ্ঠশিল্পী মনির খানের গাওয়া “ওরে তোর শরীরে মীর জাফরের রক্ত/তোর পিতা-মাতা সীমারের ভক্ত/রাজাকারের মতো যে তুই করলি বেঈমানি/বাংলাদেশে জন্ম যে তোর স্বভাব পাকিস্তানি/দেশের প্রতি প্রেমের প্রতি ছিল না যে টান/তবু তোর প্রতি আছে আমার আজও অনেক সম্মান/লোকে বলে বলে রে অঞ্জনা বড় বেঈমান”  শীর্ষক গানটি তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে গেয়েছেন। 

ফেসবুকে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ এখানে, এখানে এবং এখানে

এছাড়াও একই দাবির ২০২২, ২০২১ এবং ২০২০ সালের পোস্ট দেখুন যথাক্রমে এখানে, এখানে, এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,  ‘ওরে তোর শরীরে মীর জাফরের রক্তশীর্ষক গানটি কণ্ঠশিল্পী মনির খান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিন্দা করে গাননি বরং তার প্রকাশিত গানটির মিউজিক ভিডিও বিকৃত করে গানটি তারেক রহমানের উদ্দেশ্যে নিন্দা করে গেয়েছেন শীর্ষক ভুয়া দাবিটি প্রচার হয়ে আসছে।

কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মনির খানের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ১লা জানুয়ারি “Onjona 2020 By Monir Khan | অন্জনা ২০২০ – মনির খান” শিরোনামে প্রকাশিত মূল গানটি খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওর বর্ণনা এবং থাম্বনেইল থেকে জানা যায় মনির খানের গাওয়া Onjona 2020 শীর্ষক গানটির কথা ও সুর করেছেন মিল্টন খন্দকার। 

Screenshot : MK Music24 YT

‘তারেক রহমানকে নিয়ে একি গান গাইলেন মনির খান’ শিরোনামে প্রচারিত ভিডিওতে তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার ছবি সহ বেশকিছু ছবি দেখা গেলেও গানটির মূল ভিডিওতে সেই ছবিগুলো দেখা যায়নি। এডিটেড ভিডিওটিতে তারেক রহমানের ছবি যেভাবে দেখানো হয়েছে মূল ভিডিওতে মূলত সেভাবে একজন নারীর ছবি পাওয়া যায়।

অর্থাৎ গানটির অফিশিয়াল মিউজিক ভিডিওকে বিকৃত করে প্রচার করা হয়েছে।

Collage : Rumor Scanner 

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে গানটি মুক্তি পাওয়ার পর তা নিয়ে একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনগুলোতে গানটির ব্যাপারে মনির খানের বক্তব্য পাওয়া যায়।

দৈনিক আমাদের সময়ে ২০২০ সালের ২ জানুয়ারি “অঞ্জনাকে বেইমান বললেন মনির খান” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গানটি প্রসঙ্গে মনির খানের বক্তব্য পাওয়া যায়।  যেখানে মনির খান জানিয়েছেন, 

“প্রায় দুই বছর পর অঞ্জনাকে নিয়ে গান গাইলাম। অঞ্জনাকে নিয়ে এটা আমার গাওয়া ৪৩তম গান। গতকাল বিকেলে গানটি প্রকাশ করা হয়েছে। ভক্ত-শ্রোতাদের অনুরোধেই গানটি করা।’মনির খান আরও বলেন, ‘গানটি বেইমানের প্রতীক হিসেবে রাজাকার, মিরজাফর, সীমার, পাকিস্তানি, নমরুদ এমন বেশকিছু শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। আশা করি, গানটি সবার ভালো লাগবে।”

Screenshot : Dainik Amader Shomoy

একই তারিখে প্রকাশিত বাংলানিউজ২৪ এর প্রতিবেদনেও এ গান প্রসঙ্গে মনির খানের বক্তব্য পাওয়া যায়। গানটির প্রসঙ্গে মনির খান বাংলানিউজকে বলেছেন, “এবার ব্যতিক্রম কথামালায় গানটি তৈরি করেছি। বলতে পারেন, শ্রোতাদের মধ্যে অন্যরকম প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করার একটি প্রয়াস আমাদের এ গান (হাসতে হাসতে)। প্রকাশের পর থেকেই বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। আশা রাখি, শিগগিরই গানটি দেশব্যাপী আমার ভক্ত-অনুরাগীদের কাছে ছড়িয়ে পড়বে।”

Screenshot : Banglanews24

অর্থাৎ, মনির খান শ্রোতাদের মধ্যে ভিন্নরকম প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যতিক্রম কথামালার এই গানটি প্রকাশ করেছেন এই গানের সাথে তারেক জিয়াকে নিন্দা জানানোর সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য কণ্ঠশিল্পী মনির খানের সাথে হোয়্যাটসঅ্যাপ যোগে যোগাযোগ করা হলে তিনি গানটি বিকৃত করে ভুলভাবে প্রচার করার বিষয়টি নিশ্চিত করে রিউমর স্ক্যানার স্ক্যানারকে একটি বিস্তারিত টেক্সট পাঠান। তার সেই টেক্সট মেসেজটি নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো-

“আমার প্রাণ প্রিয় ভক্ত শ্রোতা ও শুভানুধ্যায়ীবৃন্দ অন্তরের অন্তরস্থল থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

১৯৯৫ সালের ২৬ নভেম্বর আমার প্রথম আ্যালবাম “তোমার কোন দোষ নেই” সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়। আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন আমার সংগীত জীবনের সূচনালগ্ন থেকে আজ অবধি মুক্তিপ্রাপ্ত প্রতিটি আ্যালবামে “অঞ্জনা” শিরোনামের একটি গান আপনাদের উপহার দিয়ে আসছি। 

সময়ের পরিক্রমায় ক্যাসেট ও সিডি বিলুপ্ত হবার পর ইউটিউবে Single Track আপলোডের প্রথা চালু হলে বিগত কয়েক বছর যাবৎ বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ পহেলা জানুয়ারী একটি করে অঞ্জনা শিরোনামের গান প্রকাশিত করছি। তারই ধারাবাহিকতায় 2020 সালের পহেলা জানুয়ারী আমার ইউটিউব চ্যানেল MK Music24-এ “তোর শরীরে মীর্জাফরের রক্ত” শিরোনামে অঞ্জনাকে নিয়ে একটি গান আপলোড করি এবং এক সপ্তাহের মধ্যেই গানটি ব্যাপক শ্রোতানন্দিত হয়। উক্ত গানটি অঞ্জনার অতীতের সকল গানের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই তৈরি করা হয়। 

কিন্ত ইদানীং  লক্ষ্য করছি একটি কুচক্রী মহল রাজনৈতিক উদ্দ্যশ্যেপ্রনোদিত ভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার নিমিত্তে উক্ত “অঞ্জনা ২০২০” শিরোনামের আসল গানটি বিকৃত করে বিভিন্ন  অনলাইন প্লাটফর্মে পনরায় আপলোড করে আমাকে মানষিক ও চারিত্রিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। সেই বিকৃত কন্টেন্টের সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। আমি এই অপকর্মের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সকল দুষ্কৃতিকারীদের উদ্দেশ্য বলতে চাই, অবিলম্বে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনারা সেই সকল বিকৃত ও এডিটকৃত কন্টেন্ট প্রত্যাহার (Delete) করুন। নয়তো আমি সকলের বিরুদ্ধে Digital নিরাপত্তা আইনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে বাধ্য হবো। প্রকাশ থাকে যে, অঞ্জনা শিরোনামের উক্ত গানটির অরজিনাল ভার্সনের ভিউ বর্তমানে সকলের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে 20 million অতিক্রম করেছে। MK Music24 ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত Original  গানটির লিংক এই স্ট্যাটাসের কমেন্ট বক্সে প্রদান করা হলো।”

মূলত, কন্ঠশিল্পী মনির খান তার গানের চরিত্র অঞ্জনাকে নিয়ে ২০২০ সালের ১লা জানুয়ারি  ‘ওরে তোর শরীরে মীর জাফরের রক্ত’ শীর্ষক গানটি তার অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করেন। গানটি প্রকাশের বছর থেকেই এর মিউজিক ভিডিও বিকৃত করে গানটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিন্দা করে মনির খানের গাওয়া গান শীর্ষক ভুয়া দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে।

উল্লেখ্য, প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে বাংলা গানের ভুবনের জনপ্রিয় শিল্পীদের একজন মনির খান। মনির খানের গানের নায়িকা বা চরিত্র হিসেবে অঞ্জনাকে পাওয়া যায়। তার প্রায় প্রতিটি অ্যালবামেই তিনি অঞ্জনাকে নিয়ে গেয়েছেন। এখন পর্যন্ত অঞ্জনাকে নিয়ে তার গাওয়া গানের সংখ্যা প্রায় ৪২ টি। প্রতিবছর জানুয়ারির শুরুতে এ নামে গান প্রকাশ করার পরিকল্পনা রয়েছে মনির খানের।

সুতরাং,তারেক রহমানকে নিন্দা করে মনির খান ‘ওরে তোর শরীরে মীর জাফরের রক্ত’ শীর্ষক গানটি গেয়েছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বিকৃত করা।

তথ্যসূত্র

  1. Original music video – MK Music24
  2. Post song released statement of Monir Khan – Amader Shomoy, Banglanews24
  3. Statement of Monir Khan on the viral claim- Rumor Scanner 

মাহের আলী রুশো কলোরাডোতে মাস্টার্সে কোনো স্কলারশিপ পাননি 

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশের কতিপয় গণমাধ্যমে মাহের আলী রুশো নামে বাংলাদেশি এক শিক্ষার্থীর বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, “মাহের আলী রুশো গত ১৮ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো বোল্ডারে ৯০ শতাংশ স্কলারশিপ নিয়ে মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।

উক্ত দাবিতে কতিপয় গণমাধ্যমের কিছু প্রতিবেদন দেখুন নিউজ বাংলা২৪, ঢাকা পোস্ট, ইত্তেফাক (প্রিন্ট সংস্করণ), ময়মনসিংহের আলো

একই শিক্ষার্থী ও তার বাবার একটি সাক্ষাৎকার গত ২৫ এপ্রিল জাতীয় দৈনিক ডেইলি স্টার পত্রিকার ইউটিউব (আর্কাইভ) এবং ফেসবুক পেজে (আর্কাইভ) “যেভাবে একাডেমিক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সাফল্য অর্জন করেছে কিশোর মাহের আলী রুশো” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত হয়।

পত্রিকাটির ওয়েবসাইটেও এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

সাক্ষাৎকারের শুরুতে ডেইলি স্টারের সঞ্চালক পরিমল পালমা বলছিলেন, মাহের আলী রুশো ১৫ বছর বয়সে মাস্টার্স করছেন ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো বোল্ডারে। জনাব পরিমল রুশোর এই বিষয়টিকে অসাধারণ অর্জন হিসেবে অভিহিত করেছেন। 

ডেইলি স্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের ২৩:২০ মিনিট সময় থেকে দেওয়া বক্তব্যে রুশো দাবি করেছেন, তিনি Alison ওপেন ইউনিভার্সিটি নামে একটি প্লাটফর্মে Legal Studies নামে একটি ডিপ্লোমা কোর্স করেছেন। তার এই কোর্স থেকে পাওয়া দুই ক্রেডিট কলোরাডোর মাস্টার্সের Elective কোর্সে যুক্ত হবে।

তাছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম বাংলাভিশন এর ওয়েবসাইটে এবং ইউটিউব চ্যানেলে গত ১০ মে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, রুশো যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কলোরেডো বোল্ডার থেকে সম্পন্ন করেছেন মাইক্রো মাস্টার্স।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের দীর্ঘ অনুসন্ধানে জানা যায়, মাহের আলী রুশো যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো ইউনিভার্সিটি বোল্ডারে ডাটা সায়েন্সের উপর যে মাস্টার্স করছেন তাতে তিনি ৯০ শতাংশ স্কলারশিপ সুবিধা পাননি বরং কোর্সেরা নামে একটি এডুকেশন প্লাটফর্মের মাধ্যমে করা এই প্রোগ্রামে কোনো স্কলারশিপ সুবিধাই নেই। রুশোকে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করেই প্রোগ্রামটিতে এনরোল করতে হচ্ছে। তাছাড়া, রুশো এলিসন প্লাটফর্মে Legal Studies নামে করা কোর্স থেকে পাওয়া দুই ক্রেডিট কলোরাডোতে তার মাস্টার্স প্রোগ্রামের Elective কোর্সে যুক্ত হবে বলে দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে এলিসনে কোর্সটির কোনো ক্রেডিট নেই এবং মাস্টার্স প্রোগ্রামটিতে ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধাই নেই। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে, রুশোর ব্যক্তিগত একটি ওয়েবসাইটের সন্ধান পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ওয়েবসাইটে তার আলোচিত মাস্টার্সটির বিষয়ে একটি ইমেইলের স্ক্রিনশট খুঁজে পাওয়া যায়। রুশো তার ওয়েবসাইটে লিখেছেন, তিনি Coursera তে ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো বোল্ডারে Data Science এ মাস্টার্স করছেন। ইতোমধ্যেই তিনি ৩০ টি ক্রেডিটের মধ্যে চারটি ক্রেডিট সম্পন্ন করেছেন বলে উল্লেখ করেন সেখানে (২৭ এপ্রিলের আর্কাইভ অনুযায়ী)।

Screenshot source: Maher Ali Rusho’s website

কিন্তু ডেইলি স্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রুশো উল্লেখ করেননি যে তিনি প্রোগ্রামটি কোর্সেরাতে করছেন। 

আমরা কোর্সেরার বিষয়ে অনুসন্ধান করে দেখতে পাই, কোর্সেরা একটি আন্তর্জাতিক শিখন প্লাটফর্ম। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপক এই প্লাটফর্মটি চালু করেন এবং এর মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নানান প্রোগ্রাম বা কোর্স ঘরে বসেই সম্পন্ন করা যায়। এক্ষেত্রে কিছু প্রোগ্রামে কোনো খরচ না থাকলেও অধিকাংশ প্রোগ্রামই অর্থের বিনিময়ে সম্পন্ন করতে হয়। 

প্রোগ্রামটির বিষয়ে অনুসন্ধান করে কোর্সেরা এবং কলোরাডো ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে উক্ত কোর্সটি খুঁজে পেয়েছি আমরা। 

রুশো এই প্রোগ্রামটি অর্থের বিনিময়ে করছেন কিনা সে বিষয়ে ডেইলি স্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেননি তিনি। তবে তার বাবা মোহাম্মদ আলী বলছিলেন (২৭:০০ মিনিট থেকে), রুশো এতদিন ধরে মাস্টার্স, অনার্স বা যত কোর্স বা প্রোগ্রাম সম্পন্ন করেছে তাতে যে খরচ হয়েছে তা খুবই কম খরচের। সে ৯০-৯২% স্কলারশিপ পেয়েছে। সেটা দিয়েই খরচগুলো হয়েছে। মনে হতে পারে, টাকা দিয়ে কোর্সগুলো করেছে, বিষয়টা তা না।

অর্থাৎ, তিনি দাবি করছেন রুশোর মাস্টার্স প্রোগ্রামটিতে অর্থ খরচ করতে হয়নি। 

কিন্তু কোর্সেরায় এই প্রোগ্রামটির টিউশন ফি উল্লেখ রয়েছে, ১৫,৭৫০ ডলার। 

Screenshot source: Coursera

এই প্রোগ্রামে কোনো স্কলারশিপের ব্যবস্থা আছে কিনা এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে কলোরাডো ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, এই মুহূর্তে এই প্রোগ্রামে কোনো স্কলারশিপ সুবিধা নেই।

Screenshot source: University of Colorado Boulder

এ বিষয়ে জানতে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে আমরা কলোরাডো ইউনিভার্সিটির মাস্টার্সের ডাটা সায়েন্স প্রোগ্রামের সহযোগী অধ্যাপক শ্রীরাম শঙ্করানারায়ানানের (Sriram Sankaranarayanan) সাথে যোগাযোগ করলে তিনিও জানান, “এই প্রোগ্রামে আমার জানামতে কোনো স্কলারশিপ থাকার সম্ভাবনা নেই।”

জনাব শ্রীরাম এ ব্যাপারে আমাদের কলোরাডো কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। 

পরবর্তীতে কলোরাডো কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদের পক্ষ থেকেও রিউমর স্ক্যানারকে জানানো হয়, এই প্রোগ্রামের জন্য (ডাটা সায়েন্সের মাস্টার্স) তারা কোনো স্কলারশিপ দেন না।

Screenshot source: Email from Colorado Authority

অর্থাৎ, মাহের আলী রুশো কলোরাডো ইউনিভার্সিটিতে ডাটা সায়েন্সে যে মাস্টার্স প্রোগ্রামটি করছেন সেটি অর্থের বিনিময়েই করতে হচ্ছে তাকে। এই প্রোগ্রামে স্কলারশিপ সুবিধা নেই। 

এলিসনের ক্রেডিট কলোরাডোতে ট্রান্সফার শীর্ষক দাবির সত্যতা কতটুকু?

এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম মাহের আলী রুশোর ওয়েবসাইটে উক্ত এলিসনের কোর্সটির একটি সার্টিফিকেট খুঁজে পেয়েছে। সার্টিফিকেটে দেওয়া তথ্য বলছে, তার এই সার্টিফিকেট ইস্যু হয়েছে গত ০৫ মার্চ। 

Screenshot source: Maher Ali Rusho’s website

আমরা এলিসনের বিষয়ে অনুসন্ধান করে দেখতে পাই, কোর্সেরার মতো এলিসনও একটি শিখন প্লাটফর্ম। আইরিশ এই ওপেন স্টাডি প্লাটফর্মের পথচলা শুরু ২০০৭ সালে। তবে কোর্সেরার মতো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স এই প্লাটফর্মে পাওয়া যায় না। কোর্সগুলোর কোনো ক্রেডিট সুবিধাও নেই। কোর্স সম্পন্ন করতে কোনো অর্থও ব্যয় করতে হয় না। তবে সার্টিফিকেট পেতে অর্থ ব্যয় করতে হয়।

অনুসন্ধানের স্বার্থে রিউমর স্ক্যানার টিমের একজন সদস্য গত ২৭ এপ্রিল রুশোর করা Legal Studies কোর্সটি এলিসনে এনরোল করে দেখেছে। ঘন্টাখানেকের এই কোর্স সম্পন্ন করতে আমাদের কোনো অর্থ খরচ করতে হয়নি। তবে সার্টিফিকেট পেতে বা ডাউনলোড করতে ৮৩ ডলার প্রদান করতে হবে বলে জানানো হয় (১৫ জুনের সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী)৷ তাছাড়া, এই ডিপ্লোমা কোর্সে কোনো ক্রেডিটও নেই। 

Screenshot source: Alison

পরবর্তীতে কলোরাডোতে লিগ্যাল স্টাডিজের কোনো Elective কোর্স আছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানার টিমের একজন সদস্য একই কোর্সে এনরোলের প্রক্রিয়া শুরুর পর এ বিষয়ে কোর্সেরা থেকে আমাদের একটি ইমেইল পাঠিয়ে জানানো হয়, এই কোর্স করতে কোনো GRE, ট্রান্সক্রিপ্ট বা এপ্লিকেশন প্রয়োজন হবে না। 

Screenshot source: Email from Coursera

আমরা এনরোল পেজে গিয়ে (স্ক্রিন রেকর্ড রিউমর স্ক্যানার টিমের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে) আলোচিত প্রোগ্রামের ইলেক্টিভ কোর্সগুলোর তালিকা খুঁজে পেয়েছি, যেখানে Legal studies নামে কোনো ইলেক্টিভ কোর্স নেই বলে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।  

এ বিষয়ে আরো জানতে রিউমর স্ক্যানার টিম শ্রীরাম শঙ্করানারায়ানানের (Sriram Sankaranarayanan) সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, “না, আমরা স্বীকৃত নয়, এমন প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রেডিট ট্রান্সফার করি না।”

একই বিষয়ে কলোরাডো কর্তৃপক্ষ রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছে, “এই প্রোগ্রামে ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুবিধা নেই।”

অর্থাৎ, রুশো Alison এ Legal Studies নামে করা কোর্স থেকে পাওয়া দুই ক্রেডিট কলোরাডোতে তার মাস্টার্স প্রোগ্রামের Elective কোর্সে যুক্ত হবে বলে যে দাবি করেছেন তা সঠিক নয়৷ 

রিউমর স্ক্যানারকেও ভুল তথ্য দিয়েছেন রুশো

সার্বিক বিষয়ে জানতে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে মাহের আলী রুশোর সাথে যোগাযোগ করা হয়েছিল। 

রুশোর কাছে তার এলিসনে করা লিগ্যাল স্টাডিজের ডিপ্লোমা প্রোগ্রামটির মাস্টার্সের একটি ইলেক্টিভ কোর্সে এড হওয়া শীর্ষক যে দাবি তিনি করছেন তার বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলাম আমরা। 

তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলছিলেন, “আসলে ডেইলি স্টারের সাক্ষাৎকারটি যখন প্রকাশিত হলো (২৫ এপ্রিল), তখন কলোরাডো ইউনিভার্সিটির মাস্টার্স ডিগ্রিতে ইলেক্টিভ ক্রেডিটে এলিসনের লিগ্যাল স্টাডিজের কোর্স থেকে ট্রান্সফার করা সম্ভব ছিল। কিন্তু নতুন কারিকুলামে এই সুবিধা রাখা হয়নি।”

জনাব রুশো আমাদের কাছে সর্বশেষ আপডেটকৃত কারিকুলামের একটি পিডিএফ সংস্করণও পাঠিয়েছেন, যেখানে হ্যান্ডবুক বা কারিকুলামটি “২০২১ সামার ১ – ২০২২ সামার ২” শীর্ষক তথ্য উল্লেখ রয়েছে।  

Screenshot source: Email & pdf from Rusho

এই পিডিএফটি পড়ে দেখেছি আমরা। হ্যান্ডবুকটির ৭ম পৃষ্ঠায় ক্রেডিট বিষয়ক প্যারায় উল্লেখ রয়েছে, “এই প্রোগ্রামের পাইলট প্রকৃতির কারণে, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বা কলোরাডো বোল্ডারের অন্যান্য প্রোগ্রামে অর্জিত ক্রেডিট এই প্রোগ্রামে স্থানান্তরযোগ্য (transferable) নয়।”

একই প্যারায় বলা হয়েছে, “মাস্টার্সের ডাটা সায়েন্স প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে নেওয়া ক্রেডিটগুলো প্রোগ্রাম-নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তা এবং গ্র্যাজুয়েট স্কুলের নিয়ম অনুসারে প্রোগ্রামের বিবেচনার ভিত্তিতে এবং গ্র্যাজুয়েট স্কুলের কলোরাডো বোল্ডারের অন্যান্য স্নাতক ডিগ্রি প্রোগ্রামে স্থানান্তরিত করা যেতে পারে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও তাদের বিবেচনার ভিত্তিতে এই প্রোগ্রাম থেকে ট্রান্সফার ক্রেডিট গ্রহণ করতে পারে, তাদের ক্রেডিট মান স্থানান্তরের ভিত্তিতে।”

Screenshot source: pdf from Colorado Handbook

অর্থাৎ, রুশো দাবি করছেন, গত ২৫ এপ্রিলের পূর্বের কারিকুলাম অনুযায়ী তার এলিসনের ক্রেডিট কলোরাডোয় ট্রান্সফারের সুযোগ ছিল। নতুন কারিকুলামে সে সুযোগ নেই। তিনি আমাদের নতুন কারিকুলামের একটি কপিও পাঠিয়েছেন যেখানে উল্লেখ আছে, কলোরাডোর এই প্রোগ্রামে ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুযোগ নেই।

কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে রুশোর ওয়েবসাইটের গত ০১ এপ্রিলের একটি আর্কাইভ ভার্সণে একই কারিকুলামই খুঁজে পাওয়া গেছে, যেখানেও ক্রেডিট ট্রান্সফার বিষয়ক একই তথ্যই উল্লেখ দেখেছি আমরা। 

Screenshot source: Internet Archive

অর্থাৎ, রুশো তার এলিসনে করা লিগ্যাল স্টাডিজের ডিপ্লোমা প্রোগ্রামটির মাস্টার্সের একটি ইলেক্টিভ কোর্সে এড হওয়া শীর্ষক যে দাবি করছেন তা সঠিক নয়। 

স্কলারশিপ বিষয়ে কী বলছেন রুশো?

রুশোর কাছে রিউমর স্ক্যানার টিম মাস্টার্স প্রোগ্রামটিতে স্কলারশিপের বিষয়ে জানতে চেয়েছিল। তিনি আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন, এখন এই প্রোগ্রামে কোনো স্কলারশিপ সুবিধা নেই। তার দাবি, ভবিষ্যতের সেশনগুলোতে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের কোর্সেরার এই প্লাটফর্মে স্কলারশিপ মিলবে। 

কিন্তু কলোরাডোর ওয়েবসাইটে উল্লেখ রয়েছে, এই প্রোগ্রামে এনরোলকালীন একজন শিক্ষার্থীকে সম্পূর্ণ অর্থ প্রদান করতে হবে।  

Screenshot source: University of Colorado Boulder

একই প্রোগ্রামের বিষয়ে কোর্সেরার ওয়েবসাইটে উল্লেখ রয়েছে, কেউ চাইলে Pay as you go পদ্ধতিতেও ফি পরিশোধ করতে পারবে। এর মাধ্যমে এক থেকে তিনটি কোর্সের ফি পরিশোধ করে সেসব কোর্স এনরোল করা যাবে। 

Screenshot source: Coursera

রুশোকেও তাই একইভাবে অর্থ বা ফি প্রদান করেই প্রতিটি কোর্স সম্পন্ন করতে হচ্ছে। 

৭৫ এর অধিক কোর্স রুশোর: স্বপ্রণোদিত নাকি আমন্ত্রিত হয়ে করা?

মাহের আলী রুশোর কাছে তার দাবিকৃত ৭৫টিরও অধিক অনলাইন কোর্সের বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম আমরা। রিউমর স্ক্যানার টিম তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, কোর্সগুলো কি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাকে অফার করেছে নাকি তিনি স্বপ্রণোদিত হয়ে করেছেন। কোর্স বা সার্টিফিকেট পেতে তার অর্থ খরচ করতে হয়েছে কিনা।

রুশো রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “এডেক্সসহ (edx, অনলাইন এডুকেশন প্লাটফর্ম) অন্যান্য ইউনিভার্সিটি কোর্স প্লাটফর্মে এমন অনেক কোর্স আছে যেগুলো মানুষ অডিট হিসেবে নিতে পারে। কিন্তু আপনি যদি একটি কোর্সে সার্টিফিকেট এবং পূর্ণ এসাইনমেন্ট অর্জন করতে চান তাহলে অর্থ পরিশোধ করতে হবে। এই অর্থের পরিমাণ কোর্সভেদে কমবেশি হয়। এডেক্সে এই ফি এর পরিমাণ ৫০ থেকে ৩০০ ডলারের মধ্যে।”

রুশো বলছেন, “এখন ইউনিভার্সিটিগুলো অনেক সুযোগ দিচ্ছে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য। যেমন, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির Code in Place একটি ফ্রি অনলাইন কোর্স, যেখানে সম্পূর্ণ ফ্রিতে কোর্সটি করার সুযোগ পেয়েছি। এটির নির্বাচন প্রক্রিয়া বেশ কঠোর।” 

রুশো রিউমর স্ক্যানারের কাছে দাবি করেছেন, কোর্সগুলো করতে তিনি যেমন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমন্ত্রণ পেয়েছেন ঠিক তেমনি তিনি নিজেও কিছু কোর্স বিভিন্ন এডুকেশন প্লাটফর্ম থেকে অর্থের বিনিময়ে সম্পন্ন করেছেন। 

আমরা এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে, রুশোর ওয়েবসাইটে স্ট্যানফোর্ডে প্রোগ্রামটির বিষয়ে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক রুশোকে পাঠানো একটি ইমেইলের স্ক্রিনশট দেখতে পাই৷  

ইমেইলটি থেকে জানা যাচ্ছে, স্ট্যানফোর্ড কর্তৃপক্ষ এই প্রোগ্রামের জন্য ৭০ হাজার আবেদন পেয়েছেন। তার মধ্য থেকে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের মধ্যে রুশোও একজন।

Screenshot source: Maher Ali Rusho’s website

স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে এই প্রোগ্রামটির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতি বছর ১৬০০ শিক্ষার্থী এই প্রোগ্রামটি সম্পন্ন করার সুযোগ পান। 

রুশো এই প্রোগ্রামটি সম্পন্ন করার আমন্ত্রণ পেয়েছেন বলে যে দাবি করা হয়েছে তা সঠিক নয়। এই প্রোগ্রামে এনরোল করার জন্য অন্য সকলের মতো তাকেও আবেদন করতে হয়েছে এবং পরবর্তীতে ১৬০০ শিক্ষার্থীর একজন হিসেবে তিনিও নির্বাচিত হয়েছেন। 

অর্থাৎ, রুশো অনলাইনে যেসব কোর্স বা প্রোগ্রাম সম্পন্ন করেছেন তার সবগুলোই তিনি স্বপ্রণোদিত হয়েই করেছেন। 

কলোরাডোর মাস্টার্স: অনলাইন ও অফলাইনের মান একই?

রিউমর স্ক্যানার টিম কলোরাডো কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছিল, অনলাইনে করা ডাটা সায়েন্সের মাস্টার্স প্রোগ্রাম এবং অন ক্যাম্পাসে স্বশরীরে করা কোর্সের মান একই কিনা। কোর্সেরাতে এই কোর্স সবাই করতে পারে। সেক্ষেত্রে কেউ কি এই কোর্স সম্পন্ন করে নিজেকে মাস্টার্স গ্রাজুয়েট দাবি করতে পারবে কিনা। 

এই প্রশ্নের জবাবে কলোরাডো কর্তৃপক্ষ আমাদের বলেছে, “এই প্রোগ্রামের অন ক্যাম্পাস এবং কোর্সেরা প্রোগ্রামের কারিকুলাম একই। তবে অন ক্যাম্পাস এবং কোর্সেরার কোর্সগুলো আলাদাভাবে প্যাকেজ করা হয়েছে (উদাহরণস্বরূপ, ক্যাম্পাসের একটি ক্লাস ৩ ক্রেডিটের, যেখানে কোর্সেরার প্রতি ক্লাস এক ক্রেডিটের)। শিক্ষার্থীরা প্রতিটি ক্লাস নিতে পারে যাকে আমরা নন-ক্রেডিট সংস্করণ বলি, যার জন্য শুধুমাত্র Coursera সাবস্ক্রিপশন ফি প্রয়োজন। যাইহোক, আপনি যদি ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো বোল্ডার থেকে একাডেমিক ক্রেডিট চান, তবে আপনাকে প্রতিটি কোর্সের জন্য টিউশন ফি দিতে হবে, যা আপনাকে ক্রেডিট সামগ্রীর জন্য পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত অ্যাক্সেস দেবে। একবার আপনি প্রোগ্রামে ৩০ ক্রেডিট সফলভাবে সম্পন্ন করলে, তারপর ডেটা সায়েন্সে মাস্টার অফ সায়েন্স ডিগ্রি অর্জন করবেন।”

Screenshot source: Email from Colorado Authority 

রুশো কি কলোরাডো বোল্ডার থেকে মাইক্রো মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন? 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রুশোর ওয়েবসাইটের গত ২৭ এপ্রিলের একটি আর্কাইভ ভার্সণে রুশোর মাইক্রো মাস্টার্সের একটি সার্টিফিকেট খুঁজে পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সার্টিফিকেট থেকে জানা যাচ্ছে, রুশো অনলাইন এডুকেশন প্লাটফর্ম edX এর মাধ্যমে University of Maryland Baltimore County থেকে Database Management Systems নামক একটি প্রোগ্রামে মাইক্রো মাস্টার্স সম্পন্ন করেছে। 

Screenshot source: Maher Ali Rusho’s website

সার্টিফিকেটে উল্লিখিত ভেরিফিকেশন আইডির সূত্র ধরে এডেক্সের ওয়েবসাইটে যাচাই করে দেখা যায়, সার্টিফিকেটটি আসল। গত জানুয়ারিতে এটি ইস্যু করা হয়েছে।

অর্থাৎ, মাহের আলী রুশো কলোরাডো থেকে নয়, মাইক্রো মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন University of Maryland Baltimore County থেকে। 

মূলত, গত জানুয়ারিতে দেশের কতিপয় গণমাধ্যমে মাহের আলী রুশো নামে বাংলাদেশি এক শিক্ষার্থীর বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, রুশো যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো বোল্ডারে ৯০ শতাংশ স্কলারশিপ নিয়ে মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের দীর্ঘ অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। কোর্সেরা নামে একটি এডুকেশন প্লাটফর্মের মাধ্যমে করা এই প্রোগ্রামে কোনো স্কলারশিপ সুবিধাই নেই। রুশোকে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করেই প্রোগ্রামটিতে এনরোল করতে হচ্ছে। তাছাড়া, রুশো এলিসন প্লাটফর্মে Legal Studies নামে করা কোর্স থেকে পাওয়া দুই ক্রেডিট কলোরাডোতে তার মাস্টার্স প্রোগ্রামের Elective কোর্সে যুক্ত হবে বলে  দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে এই প্রোগ্রামে ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধাই নেই। তাছাড়া, এলিসনে কোর্সটিরও কোনো ক্রেডিট সুবিধা নেই।

প্রসঙ্গত, হোয়াইট হাউসের নাম ব্যবহার করে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি রাকিবের সাফল্যের একটি খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণ করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, মাহের আলী রুশো কলোরাডো ইউনিভার্সিটি বোল্ডারে মাস্টার্সে ৯০ শতাংশ স্কলারশিপ পেয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Maher Ali Rusho: Website 
  • Statement from Maher Ali Rusho
  • Statement from University of Colorado Boulder
  • Coursera: Master of Science in Data Science
  • Statement from Sriram Sankaranarayanan
  • Rumor Scanner’s own analysis 

আফগানিস্তানের মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় গণমাধ্যমে একাধিক পুরোনো ছবি

সম্প্রতি, আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের একটি মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় বাংলাদেশের কতিপয় গণমাধ্যমে কিছু ছবি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন কালবেলা, ঢাকা পোস্ট, সংবাদ প্রকাশ, মানবকণ্ঠ, বৈশাখী টিভি, ডেইলি বাংলাদেশ, যমুনা টিভি, ঢাকা প্রকাশ, সময়ের আলো, বাংলাদেশ টাইমস, পদ্মা নিউজ, নিউজনাউ২৪, বিজনেস জার্নাল, আগামী নিউজ, আমাদের সময়, আরটিভি, প্রাইম নিউজবিডি, একুশে সংবাদ, আমার সংবাদ

এছাড়া এসব ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রচারিত  কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রচারিত ছবিগুলো উক্ত ঘটনার নয় বরং ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ছবিকে যথাযথ তথ্যসূত্র ছাড়াই গণমাধ্যমগুলো উক্ত ঘটনার ছবি দাবিতে প্রচার করেছে।

ছবি যাচাই ১

Screenshot: dhaka post

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনার দাবিতে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে ঢাকা পোস্ট, ঢাকা প্রকাশ, বিজনেস জার্নাল, আগামী নিউজ, পদ্মা নিউজ

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বার্তা সংস্থা এপির ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ৯ অক্টোবর ‘IS bomber kills 46 inside Afghan mosque, challenges Taliban‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর আফগানিস্তানের কুন্দুজ প্রদেশের একটি মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ধারণকৃত ছবি। 

Screenshot: ap news

ছবি যাচাই ২

Screenshot: ManobKantha

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনার দাবিতে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে মানবকণ্ঠ, আমাদের সময়, আরটিভি, প্রাইম নিউজবিডি।  

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বার্তা সংস্থা এপির ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ৯ অক্টোবর ‘IS bomber kills 46 inside Afghan mosque, challenges Taliban‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর আফগানিস্তানের কুন্দুজ প্রদেশের একটি মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ধারণকৃত ছবি। 

Screenshot: ap news

ছবি যাচাই ৩

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনার দাবিতে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে যমুনা টিভি, আমার সংবাদ

Screenshot: Jamuna TV 

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আফগানিস্তানের অনলাইন পোর্টাল Kabulnow এর ওয়েবসাইটে গত ৬ জুন Car bomb kills Taliban’s deputy governor of Badakhshan province‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি আফগানিস্তানের ফয়েজাবাদ শহরে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে তালিবান সরকারের বাদাখশান প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর নিসার আহমেদ আহমাদীর মৃত্যুর ঘটনায় ধারণকৃত ছবি। 

Screenshot: Kabul Now

ছবি যাচাই ৪

Screenshot: Sangbad Prokash 

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনার দাবিতে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে সংবাদ প্রকাশ

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বার্তা সংস্থা এপির ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৮ আগস্ট ‘Police: Death toll in Afghan capital mosque bombing now 21‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের একটি মসজিদে বোমা হামলার ঘটনায় নিহত এক ব্যক্তিকে আত্মীয়-স্বজন কর্তৃক বহনের সময় ধারণকৃত ছবি। 

Screenshot: ap news

ছবি যাচাই ৫

Screenshot: Boishakhi TV  

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনার দাবিতে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে বৈশাখী টিভি, নিউজনাউ২৪

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান Getty Images এর ওয়েবসাইটে ‘Death toll in Pakistan mosque blast rises to 56‘ শীর্ষক শিরোনামে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

ছবিটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যাচ্ছে, এটি  ২০২২ সালের ৪ মার্চ পাকিস্তানের পেশাওয়ারের একটি শিয়া মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ধারণকৃত ছবি। 

Screenshot: getty images

ছবি যাচাই ৬

Screenshot: Somoyer Alo   

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনার দাবিতে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে সময়ের আলো

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বার্তা সংস্থা এপির ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ৯ অক্টোবর ‘IS bomber kills 46 inside Afghan mosque, challenges Taliban‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর আফগানিস্তানের কুন্দুজ প্রদেশের একটি মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ধারণকৃত ছবি। 

Screenshot: ap news

ছবি যাচাই ৭

Screenshot: Daily Bangladesh   

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনার দাবিতে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে ডেইলি বাংলাদেশ

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি নিউজের ফারসি সংস্করণের ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ২১ অক্টোবর ‘The recent ISIS attack on a mosque in Kabul‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি আফগানিস্তানের কাবুলের ইমাম জামান নামক একটি মসজিদে আইএস জঙ্গীদের আত্মঘাতী হামলার ঘটনায় ধারণকৃত একটি ছবি। 

Screenshot: BBC News

ছবি যাচাই ৮

Screenshot: Bangladesh Times 

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনার দাবিতে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে বাংলাদেশ টাইমস

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক গণমাধ্যম আল আরাবিয়ার ওয়েবসাইটে ২০২১সালের ৮ অক্টোবর ‘ISIS claims responsibility for deadliest attack on Afghanistan since US withdrawal‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর আফগানিস্তানের কুন্দুজ প্রদেশের একটি মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় তালেবান কর্তৃক মসজিদ পরিদর্শনের সময়ে ধারণকৃত ছবি।

Screenshot: Al Arabiya News

ছবি যাচাই ৯

Screenshot: Ekushey Sangbad

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনার দাবিতে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে একুশে সংবাদ

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক গণমাধ্যম আল আরাবিয়ার ওয়েবসাইটে ২০২১সালের ৮ অক্টোবর ‘At least 32 killed, 53 injured in mosque blast in Afghanistan’s Kandahar‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর আফগানিস্তানের কান্দাহারে একটি শিয়া মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় তালেবান কর্তৃক মসজিদ পরিদর্শনের সময়ে ধারণকৃত ছবি।

Screenshot: Al Arabiya News

ছবি যাচাই ১০

Screenshot: Kalbela

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনার দাবিতে এই ছবিটি ব্যবহার করেছে কালবেলা

কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের ওয়েবসাইটে ২০২১সালের ৩ মার্চর ‘Senior Taliban commander among dead in Kabul attack‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ২০২১ সালের ৩ মার্চ আফগানিস্তানের কাবুলে আইএস জঙ্গীগোষ্ঠীর হামলায় একজন জৈষ্ঠ্য নেতৃত্বের মৃত্যুর ঘটনায় ধারণকৃত ছবি।

Screenshot source: DW

অর্থাৎ, আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় দেশীয় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবিগুলোর সাথে উক্ত ঘটনার কোনো সম্পৃক্ততাই নেই। 

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিগুলোর শিরোনামে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। বরং কিছু গণমাধ্যম ছবিগুলো সংগৃহীত, কেউ-বা ছবিসূত্র হিসেবে বিদেশী গণমাধ্যমের নাম উল্লেখ করেছে। কতিপয় গণমাধ্যম ছবির শিরোনামে কিছুই লিখেনি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিগুলো ব্যবহার করে সংগৃহীত উল্লেখ, বিদেশী গণমাধ্যমের নাম উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্যই উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক বোমা হামলার ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হওয়া অমূলক নয়। 

মূলত, গত ৮ জুন আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের একটি মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে আফগানিস্তান সহ বিভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবি ব্যবহার করে সাম্প্রতিক ঘটনার ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিগুলোর শিরোনামে ফাইল ফটো বা পুরনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্যও দেওয়া হয়নি। এতে করে স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক বোমা হামলার ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে। 

সুতরাং, সম্প্রতি আফগানিস্তানের একটি মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে একাধিক পুরোনো ঘটনার ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার কারামুক্তি পাননি

0

সম্প্রতি, জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার মুক্তি পেয়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায় জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার মুক্তি পাননি বরং গোলাম পরওয়ারের জামিন পাওয়ার ঘটনাকেই তিনি কারামুক্তি পেয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে এর মাধ্যমে প্রাপ্ত ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ এর ওয়েবসাইটে “সকল মামলায় জামিন প্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ারকে মুক্তি দিন” এই শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে সুপ্রিম কোর্টের আইবজীবীদের সংবাদ সম্মেলনের বরাত দিয়ে বিজদাবি করা হয়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সকল মামলায় জামিন পেলেও তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি।

Screenshot from jamaat-e-islami.org

এছাড়া, দেশীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘নয়া দিগন্ত’ এর ওয়েবসাইটে “জামিনে থাকা গোলাম পরওয়ারকে কারাগারে রাখা আদালত অবমাননা” শীর্ষক শিরোনামে ১৬ জুন প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

Screenshot from Daily Naya Diganta

পরবর্তীতে অনুসন্ধানের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী এর ঢাকা দক্ষিণ মহানগরের সহকারী সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেনের ফেসবুক পেজে গত ১৪ জুন প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। সেই পোস্টে তিনি গোলাম পরওয়ার মুক্তি না পাওয়ার তথ্য জানান। 

Screenshot from Facebook

মূলত, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম পরওয়ার ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সংগঠনের একটি ঘরোয়া বৈঠক থেকে গ্রেফতার হওয়ার পর ৮ নভেম্বর উচ্চ আদালত থেকে জামিন প্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে সর্বশেষ গত ১৬ এপ্রিল এ হওয়া এক মামলায় ২৭ এপ্রিল তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। সম্প্রতি ১৩ জুন গোলাম পরওয়ার আবারও জামিন প্রাপ্ত হন। তবে এবারও তাকে কারামুক্তি না  দেওয়ায় তাকেমুক্তি দেয়ার জন্য ১৫ জুন সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত আইনজীবীবৃন্দ। সম্প্রতি সেই ঘটনাকেই জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার কারামুক্তি পেয়েছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, এর আগেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য প্রচার করা হলে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার কারামুক্তি পেয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে একটি তথ্য প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে তারেক-জোবায়দা দম্পতির লন্ডনে গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টি গুজব 

সম্প্রতি, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার বরাতে ‘মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে তারেক-জোবায়দা দম্পতি লন্ডনে গ্রেফতার’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য আল জাজিরার একটি নিউজ স্ক্রিনশট যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এ দাবির কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে তারেক-জোবায়দা দম্পতির লন্ডনে গ্রেফতার হওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার ওয়েবপেজ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে আটকের এ ভুয়া খবর প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জোবায়দা রহমান লন্ডনে গ্রেফতার শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক ব্যানারটি বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Source: Facebook /claim banner

প্রচারিত এ ডিজিটাল ব্যানারটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় স্ক্রিনশটে ‘Bangladeshi political leader Tarique Rahman and wife Zubaida ‘arrested’ in London’ শীর্ষক শিরোনামে আল জাজিরার একটি সংবাদ দেখানো হয়েছে এবং উক্ত নিউজ স্ক্রিনশটে এই সংবাদটি প্রকাশের তারিখ দেখানো হয়েছে ১৪ জুন ২০২৩ ।

পরবর্তীতে উক্ত শিরোনামটি কপি করে বিভিন্ন মাধ্যমে সেই প্রতিবেদনটি খোঁজার চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার। তবে সার্চে উক্ত শিরোনামে আল জাজিরাতে প্রকাশিত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot : Google search 
Screenshot : Twitter search 

পাশাপাশি আল জাজিরার ওয়েবসাইটে থাকা সার্চ অপশনে বিভিন্ন কি ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করেও উক্ত শিরোনামের কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot : Search on Al Jazeera website 

সার্চ করে অনুসন্ধানের পাশাপাশি রিউমর স্ক্যানার টিম আল জাজিরাতে গত ১৪ জুন প্রকাশিত সকল সংবাদ পর্যবেক্ষণ করেও উক্ত শিরোনামের কোনো সংবাদের অস্ত্বিত্ব পায়নি। নিচে আল জাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ১৪ জুন ২০২৩ এর সংবাদগুলো তুলে ধরা হলো-

Image Collage by Rumor Scanner
Image Collage by Rumor Scanner
Image Collage by Rumor Scanner
Image Collage by Rumor Scanner
Image Collage by Rumor Scanner
Image Collage by Rumor Scanner
Image Collage by Rumor Scanner
Image Collage by Rumor Scanner
Image Collage by Rumor Scanner

তারেক রহমান এবং মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত বিষয়ে আল জাজিরার ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ২১ জুলাই প্রকাশিত একটি সংবাদ পাওয়া যায়। ‘Bangladesh: Tarique Rahman jailed for money laundering’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সে সংবাদ মূলত সেসময় বাংলাদেশ হাইকোর্ট কর্তৃক মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার রায়ের ওপর প্রকাশিত হয়। 

aljazeera Screenshot :

অর্থাৎ, কাতার ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরায় ১৪ জুন ২০২৩ এ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের গ্রেফতারের বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। এতে প্রতীয়মান হয় যে, ‘Bangladeshi political leader Tarique Rahman and wife Zubaida ‘arrested’ in London’ শীর্ষক শিরোনামের সংবাদের স্ক্রিনশটটি আল-জাজিরার ওয়েবসাইটের সংবাদের আদলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে তৈরি করা হয়েছে। 

এছাড়াও ১৪ জুন কিংবা সম্প্রতি তারেক রহমান ও তার স্ত্রীর গ্রেফতার হওয়া সম্পর্কিত কোনো সংবাদ অন্য কোনো সংবাদমাধ্যমেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। কোনো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা দেশীয় কোনো গণমাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের গ্রেফতারের বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা প্রতীয়মান হয় যে, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে লন্ডনে তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের গ্রেফতারের দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়।

মূলত, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার ১৪ জুনের ওয়েব নিউজের একটি স্ক্রিনশট যুক্ত করে লন্ডনে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের গ্রেফতারের দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আল জাজিরাতে তারেক-জোবায়দা দম্পতির লন্ডনে গ্রেফতার সম্পর্কিত কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি। এছাড়াও অন্য কোনো গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে তারেক এবং জোবায়দার গ্রেফতারের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, মানি লন্ডারিং এর অভিযোগে লন্ডনে তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমান দম্পতির আটকের এ ভুয়া সংবাদটি আল জাজিরার নিউজের ওয়েব পেজ এডিট করে আল জাজিরাকে সূত্র দেখিয়ে প্রচার করা হয়েছে।   

প্রসঙ্গত, গত ২৮ মে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য চার সাক্ষীর কাউকেই হাজির করতে পারেনি দুদক।

সুতরাং, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে তারেক-জোবায়দা দম্পতি লন্ডনে গ্রেফতার হওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ডিএমপি’র গুলশান থানার ওসির মার্কিন ভিসা বাতিলের গুজব 

সম্প্রতি, “ডিএমপি’র গুলশান থানার ওসির মার্কিন ভিসা বাতিল! মহারাজ পেয়েছেন চিঠি” শীর্ষক দাবিতে একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডিএমপি’র গুলশান থানার ওসি বি এম ফরমান আলীর মার্কিন ভিসা বাতিল হওয়ার তথ্যটি সত্য নয় বরং কোনোপ্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

ডিএমপি’র গুলশান থানার ওসির মার্কিন ভিসা বাতিল হয়েছে কি না তার প্রাথমিক অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে উক্ত বক্তব্য সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot from Google

অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘দৈনিক ডেইলি স্টার’ এ “ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন কারা, যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস” শীর্ষক শিরোনামে গত ২৫ মে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে।

Screenshot from Daily Star

পরবর্তীতে তথ্যটি নিয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বা রাজস্ব বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের Sanction Programs and Information সেকশনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ভূঁইয়া ফরমান আলির ভিসা বাতিল বা কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot: U.S. Department of the treasury

পাশাপাশি সম্প্রতি বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে ভিসা নীতি ঘোষণা করা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেনের ভ্যারিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্ট ঘুরেও এ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বি এম ফরমান আলীর ভিসা বাতিল বা কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot from Twitter

মূলত, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক কোন দেশের সরকারি উর্ধতন কর্মকর্তাদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেন সে বিষয় নিয়ে টুইট প্রকাশ করে থাকেন। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন ভিসা নীতি ঘোষণার পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল আই এর টকশো অনুষ্ঠান তৃতীয় মাত্রায় লাইভে যুক্ত হন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।

উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থাপক জিল্লুরের প্রশ্নের জবাবে ডোনাল্ড লু বলেন, “আমি একটি বিষয় খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, আজ আমরা কাউকে স্যাংশন দিচ্ছি না। সেক্রেটারি অফ স্টেট একটি নতুন নীতির ঘোষণা করেছেন, যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সেই সব ব্যক্তির ভিসা সুবিধায় বিধি–নিষেধ আরোপ করতে পারবে, যারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”

এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির ফেসবুক পেইজ ও বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের টুইটার অ্যাকাউন্ট খুঁজেও এমন কোনো তথ্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

ওপেন সোর্স অনুসন্ধানে ডিএমপি’র গুলশান থানার ওসির মার্কিন ভিসা বাতিল হয়েছে এমন তথ্যের কোনো সত্যতা না পেয়ে এ বিষয়েঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ভূঁইয়া ফরমান আলির সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

গুলশান থানার ওসি ভূঁইয়া ফরমান আলির সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা নিশ্চিত করে রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “এই তথ্য গুলো সব অসত্য তথ্য। আমার ভিসা বাতিল হয়নি।”

কি আছে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত নতুন ভিসা নীতিতে? 

অনুসন্ধানে বাংলাদেশস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ওয়েবসাইটে ‘বাংলাদেশের নির্বাচনের সমর্থনে প্রণীত নতুন ভিসানীতি সম্পর্কে সচরাচর জিজ্ঞাস্য‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: US Embassy Bangladesh 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে। প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, নতুন এই ভিসা নীতিমালার আওতায় এখন পর্যন্ত কোনো ভিসায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি।

Screenshot: US Embassy Bangladesh 

মূলত, গত ২৫ মে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে নতুন এই ভিসা নীতির আওতায় এখনো কাউকে বিধিনিষেধ আরোপ করা না হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডিএমপি’র গুলশান থানার ওসি বি এম ফরমান আলীর মার্কিন ভিসা বাতিল হয়েছে এমন একটি তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট তথ্যসূত্র ছাড়াই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুলশান থানার ওসি বিএম ফরমান আলীর ভিসা বাতিলের ভিত্তিহীন দাবি প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের মার্কিন ভিসা বাতিলের গুজব ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ডিএমপি’র গুলশান থানার ওসির মার্কিন ভিসা বাতিল করা হয়েছে শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ডিএমপি’র ডিবি প্রধান হারুনের সিঙ্গাপুরের চিকিৎসা ভিসা বাতিলের গুজব

সম্প্রতি ‘ডিবি হারুন ও তার পরিবারের সিঙ্গাপুরের চিকিৎসা ভিসা বাতিল করেছে সিঙ্গাপুর দূতাবাস’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সিঙ্গাপুর দূতাবাস কর্তৃক ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ ও তার পরিবারের সিঙ্গাপুরের চিকিৎসা ভিসা বাতিলের তথ্যটি সঠিক নয় বরং কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এমন কোনো তথ্য আছে কি না তা নিয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে অনুসন্ধানে মন্ত্রণালয়টির ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ বিষয়ক তথ্য অনুসন্ধানে (ডিএমপি)’র ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ ও তার পরিবারের সিঙ্গাপুরের চিকিৎসা ভিসা বাতিল সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot: Foreign Ministry of Singapore

এছাড়া ওয়েবসাইটটির বাংলাদেশিদের ভিসা সংক্রান্ত নির্দেশনা ঘেটে দেখা যায়, বাংলাদেশের কূটনীতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের সিঙ্গাপুরে যেতে ভিসার প্রয়োজন নেই।

Screenshot: Foreign Ministry of Singapore

পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক মানবজমিনে গত ১২ জুন ‘সপরিবারে সিঙ্গাপুর গেলেন ডিবির হারুন‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Daily Manabzamin

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ৮ জুন বৃহস্পতিবার রাতে  স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে সিঙ্গাপুর গেছেন পুলিশের উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেখানে তোলা ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেছে।

এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত আরও প্রতিবেদন পড়ুন সপরিবারে সিঙ্গাপুর গেলেন ডিবির হারুন (সাম্প্রতিক দেশকাল)।

Screenshot: Sampratik Deshkal

পরবর্তীতে দাবিটির বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হারুন অর রশিদের সিঙ্গাপুরে অবস্থান প্রসঙ্গে একাধিক ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

যেমন, এরশাদুল আলম নামে জনৈক ব্যক্তি হারুন অর রশিদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টকে ট্যাগ করে গত ১০ জুন হারুন অর রশিদ  সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন উল্লেখ করে ‘ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বিপিএম বার, পিপিএম বার,  মহোদয়  ও তারঁ সহধর্মিণী উন্নত চিকিৎসার জন্য  সিঙ্গাপুর অবস্থান করছেন।‘ শীর্ষক শিরোনামে একটি পোস্ট দেন।

Screenshot: Ershadul Alam Facebook Post 

এছাড়া রাহিদ রনি এন্টারটেইনমেন্ট নামের একটি ফেসবুক পেজেও একইদিনে হারুন অর রশিদের সিঙ্গাপুরে অবস্থানের বিষয়ে  আরো কিছু ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Rahid Roney Entertainment 

প্রসঙ্গত, গত পহেলা জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশিদকে চিকিৎসার গ্রহণের উদ্দেশ্যে সিঙ্গাপুর গমনের অনুমতি দিয়ে ১৩ দিনের বহি: বাংলাদেশ ছুটি মঞ্জুরের প্রজ্ঞাপন জারি করে।

Image: Notice of Harun Or Rashid leave

ওই প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হারুন অর রশিদের বিদেশ সফর নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন দাবি প্রচার হতে থাকে। এরপরই হারুন দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন শীর্ষক একটি দাবি(আর্কাইভ) ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া এই দাবির প্রেক্ষিতে হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন,  ‘এটা শুধু আমাকে নিয়ে নয়, গত কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে দেশের বাইরে থেকেও কিছু লোক সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে ভিডিও করছে। তারা বলছে, অনেক সরকারি কর্মকর্তা দেশের বাইরে যাওয়ার পর ফিরবেন না। এটা সম্পূর্ণ গুজব।’

Screenshot: The Daily Star 

মূলত, গত পহেলা জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা ঢাকা মেট্রোপলিটনপুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশিদকে সিঙ্গাপুর যাওয়ার অনুমতি দিয়ে ১৩ দিনের ছুটি প্রদানপূর্বক প্রজ্ঞাপন জারি করে। এই প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ও তার পরিবারের সিঙ্গাপুরের ভিসা বাতিলের দাবিতে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, হারুন অর রশিদ বা তার পরিবারের সিঙ্গাপুরের ভিসা বাতিলের দাবিটি ভিত্তিহীন এবং তিনি বর্তমানে সিঙ্গাপুরেই অবস্থান করছেন।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশিদ ছাড়াও আরও বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের ভিসা বাতিলের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত একাধিক গুজব শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। রিউমর স্ক্যানারে প্রকাশিত এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন 

সুতরাং, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ ও তার পরিবারের সিঙ্গাপুরের চিকিৎসা ভিসা বাতিলের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

র‍্যাব সদস্যদের জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে নিষিদ্ধ করা হয়নি

সম্প্রতি,“যারা র‍্যাবে ছিলেন বা আছেন এবং ভবিষ্যতে যাবেন তারা কেউই আর জাতিসংঘের শান্তি মিশনে যেতে পারবেন না” শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে র‍্যাবকে নিষিদ্ধ করা হয়নি বরং কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়াই দাবিটি ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে র‍্যাবের ওপর এমন কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে কিনা তা যাচাইয়ে জাতিসংঘের ওয়েবসাইট, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে এই অনুসন্ধানে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গুগলে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এর ওয়েবসাইটে গত ১২ জুন “UN Should Enhance Screening of Bangladesh Peacekeepers” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত বিবৃতি খুঁজে পাওয়া যায়।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর এই বিবৃতিতে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগের ক্ষেত্রে মানবাধিকার–সংক্রান্ত বিষয় যাচাই–বাছাইয়ের আহ্বান জানানো হয়।

Screenshot from Human Rights Watch website

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, জাতিসংঘের উচিত কোনো বাংলাদেশি কর্মকর্তা র‍্যাবের সঙ্গে জড়িত থাকলে, তা প্রকাশ করা এবং বাহিনী–সংশ্লিষ্ট কাউকে শান্তি রক্ষা মিশনে যোগদানে বিরত রাখা। শুধু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নয়, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সব সদস্যের মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট বিষয় যাচাই–বাছাই করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন বিভাগকে।

Screenshot from Human Rights Watch website

পরবর্তীতে উক্ত বিবৃতি নিয়ে দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন প্রথম আলো, যুগান্তর, বাংলা ভিশনদেশ রুপান্তর

মূলত, গত ১২ জুন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগের ক্ষেত্রে মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয় যাচাই বাছাইয়ের আহবান জানায়। র‍্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের উচিত র‍্যাবের সঙ্গে জড়িত সদস্যদের শান্তিরক্ষী মিশনে নিষিদ্ধ করা। তবে এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত জাতিসংঘ এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। কিন্তু হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর বিবৃতিতে কেন্দ্র করে কোনপ্রকার তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই  র‍্যাবকে জাতিসংঘে নিষিদ্ধ করা হয়েছে শীর্ষক একটি ভিত্তিহীনভাবে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র‍্যাব ও তার ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পরবর্তীতে গত বছরের জানুয়ারি মাসে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ মোট ১২টি মানবাধিকার সংস্থা র‍্যাবকে শান্তি মিশন থেকে বাদ দেওয়ার আহবান জানিয়ে চিঠি দেয় জাতিসংঘকে। তবে সেসময় এ বিষয়ে জাতিসংঘের তরফ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

সুতরাং,র‍্যাবকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

টম ক্রুজের বডি ডাবল ও স্ট্যান্ট ম্যানদের ভাইরাল ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি  

সম্প্রতি, ‘টম ক্রুজ তার বডি ডাবল ও স্ট্যান্ট ম্যানদের সাথে’ শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে।

Screenshot Source: Facebook.

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

Screenshot Source: Twitter.

টুইটারে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাকচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হলিউড অভিনেতা টম ক্রুজের বডি ডাবল ও স্ট্যান্ট ম্যান দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ছবিটি বাস্তব নয় বরং উক্ত ছবিটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ‘Midjourney Official’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে গত ৪ মে Ong Hou Woo (আর্কাইভ) নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে করা পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে আলোচিত ছবিটি ছাড়াও একই ধরনের আরো কয়েকটি ছবি লক্ষ্য করা যায়। তাছাড়া পোস্টের ক্যাপশনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

Screenshot source: Facebook.

পরবর্তীতে একই আইডি থেকে গত ৯ জুন এই ছবিগুলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি নিশ্চিত করে একটি পোস্ট (আর্কাইভ) দেওয়া হয়। 

উক্ত পোস্টের মাধ্যমে তিনি জানান, আমি মজা করার জন্য কিছু দিন আগে মিডজার্নি দিয়ে টম ক্রুজ স্ট্যান্ট ডাবলের কয়েকটি এআই ছবি তৈরি করেছি। ছবিগুলো ভাইরাল হয়ে যাবে আমি আশা করিনি। এখন বিশ্বজুড়ে অন্তত এক মিলিয়ন বা তারো বেশি মানুষ জিজ্ঞাসা করছে যে ফটোগুলি বাস্তব কিনা।

Screenshot Source: Facebook.

মূলত, হলিউড অভিনেতা টম ক্রুজের বডি ডাবল ও স্ট্যান্ট ম্যান দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিগুলো মূলত এআই দ্বারা তৈরি, যা Midjourney Official নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে গত ৪ জুন ‘Ong Hui Woo’ নামের এক ব্যক্তি পোস্ট করেছেন। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ছবি শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন প্রতিবেদন পড়ুন এখানে, এখানে। 

সুতরাং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) দিয়ে তৈরি হলিউড অভিনেতা টম ক্রুজের বডি ডাবল ও স্ট্যান্ট ম্যানের ছবিকে বাস্তব দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Ong Hui Woo Facebook Account: Post 
  • Ong Hui Woo Facebook Account: Post
  • Rumor Scanner Own Analysis

সৈয়দপুরের ফাইলেরিয়া হাসপাতাল বিশ্বের একমাত্র ফাইলেরিয়া হাসপাতাল নয়

সম্প্রতি,‘বন্ধ হয়ে গেল বিশ্বের একমাত্র ফাইলেরিয়া হাসপাতাল’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

গণমাধ্যমে প্রচারিত এমন প্রতিবেদন দেখুন আজকের পত্রিকা, সময় টিভি, সময়ের আলো, মানবকণ্ঠ। 

সৈয়দপুরের ফাইলেরিয়া হাসপাতালকে বিশ্বের একমাত্র ফাইলেরিয়া হাসপাতাল দাবি করে চিকিৎসা সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন ডক্টর টিভি

সামাজিক যোগাযাগমাধ্যমে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

যা দাবি করা হচ্ছে

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন এবং ফেসবুক পোস্ট গুলোতে দাবি করা হচ্ছে, নীলফামারীর সৈয়দপুরে অবস্থিত ‘সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল  অ্যান্ড ল্যাব’ বিশ্বের একমাত্র ফাইলেরিয়া হাসপাতাল।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নীলফামারীর সৈয়দপুরে অবস্থিত সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল  অ্যান্ড ল্যাব বিশ্বের একমাত্র ফাইলেরিয়া হাসপাতাল নয় বরং বাংলাদেশের সাভারেই ফাইলেরিয়া হাসপাতাল অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল নামে ফাইলেরিয়ার জন্য বিশেষায়িত আরেকটি হাসপাতাল আছে।

অনুসন্ধান যেভাবে

দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানে গনমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড  ল্যাবের ফটকের একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ফটকের ছবিটিতে হাসপাতালের মূল নামের নিচেই (বিশ্বের প্রথম প্রতিষ্ঠিত ফাইলেরিয়া হাসপাতাল) শীর্ষক একটি লেখা রিউমর স্ক্যানার টিমের দৃষ্টিগোচর হয়। 

Image: False News on Mass Media 

পরবর্তীতে এ নিয়ে অনুসন্ধানে বেসরকারী টিভি চ্যানেল বৈশাখী টিভির ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ‘ফাইলেরিয়া হাসপাতাল নির্মাণে বড় ধরণের জালিয়াতি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Boishakhi TV Online 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সরকারের সমাজ সেবা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে সাভারের জিনজিরায় ২০১২ সালে নির্মিত হয় বিশেষায়িত ফাইলেরিয়া হাসপাতাল। আট বছর আগে শুরু করা এই হাসপাতালটি নির্মাণের পুরো কাজ শেষ না করেই সব টাকা তুলে নিয়ে গেছে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সরকারি তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রায় ৪ কোটি টাকার কাজ বাকি আছে। সমাজ সেবা অধিদপ্তর দফায় দফায় চিঠি দিলেও অসমাপ্ত কাজ শেষ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে বর্তমানে এই হাসপাতালটি চালু আছে।

Screenshot: Boishakhi TV Online 

পাশাপাশি অনলাইন পোর্টাল ঢাকা পোস্টে একই বছরের ৮ জানুয়ারি ‘ভয়াবহ জালিয়াতি : সংকটে সাভারের ফাইলেরিয়া হাসপাতাল’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফাইলেরিয়াসিস বা গোদ রোগে আক্রান্ত সাধারণ মানুষের যথাযথ চিকিৎসার স্বপ্ন নিয়ে ১৯৯৫ সালে নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে যাত্রা শুরু হয়েছিল বিশ্বের প্রথম ফাইলেরিয়া হাসপাতাল। এই রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রফেসর ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন স্বল্প খরচে ফাইলেরিয়ার চিকিৎসা গরিব ও অসহায় মানুষকে রাজধানীর কাছে সাভারে আরও একটি বিশেষায়িত ফাইলেরিয়া হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। 

Screenshot: Dhaka Post  

প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়,  ঢাকা জেলার সাভারে ৫০ শয্যার ফাইলেরিয়া হাসপাতালটি ২০১০-১২ অর্থবছরে আইএসিআইবি’র ৬৭.৭০ শতাংশ জমির ওপর অসম্পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও এনজিও বিষয়ক ব্যুরো কর্তৃক নিবন্ধিত অলাভজনক, বেসরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও আইএসিআইবি’র যৌথ অর্থায়নে নির্মিত।

Screenshot: Dhaka Post  

এছাড়া জাতীয় দৈনিক যুগান্তরে ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর ‘ফাইলেরিয়া হাসপাতাল নির্মাণে নজিরবিহীন জালিয়াতি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দুরারোগ্য গোদ রোগের চিকিৎসার জন্য ৫০ শয্যার ফাইলেরিয়া অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণে প্রায় ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।

Screenshot: Jugantor  

সরকারের সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বে হাসপাতালটি নির্মাণের উদ্যোক্তা আইসিএবি (ইন্সটিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইমিউনলজি বাংলাদেশ) নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। রাজধানীর অদূরে সাভারের জিনজিরা এলাকায় নির্মাণাধীন হাসপাতালটিতে বর্তমানে সীমিত পরিসরে রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। ২০১১-১২ সালে হাসপাতাল নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হলেও তা এখনও শেষ হয়নি।

রিউমর স্ক্যানার টিমের এই পর্যন্ত অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয় যে, নীলফামারীর সৈয়দপুরে অবস্থিত সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড  ল্যাবের পাশাপাশি রাজধানীতেই ফাইলেরিয়ার জন্য বিশেষায়িত আরও একটি হাসপাতাল আছে।

পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে আরও অধিকতর অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার টিম সাভারে অবস্থিত ফাইলেরিয়া অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে। 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রিউমর স্ক্যানারকে জানান, তাদের হাসপাতালটিও ফাইলেরিয়ার জন্য বিশেষায়িত এবং বর্তমানে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাসেবা বা নিয়মিত কার্যক্রম চালু আছে।

এছাড়া রিউমর স্ক্যানার টিম সাভারে অবস্থিত ফাইলেরিয়া অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালটির নির্মাণের উদ্যোক্তা ও নীলফামারীর সৈয়দপুরে অবস্থিত সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার দায়িত্বে থাকা আইসিএবি (ইন্সটিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইমিউনলজি বাংলাদেশ) এর চেয়ারম্যান ডা. মোয়াজ্জেম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করে।

তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান,  ‘সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া হাসপাতালটি বিশ্বের একমাত্র হবে কিভাবে? এটা মিথ্যা। আমি সৈয়দপুরে এই হাসপাতাল করেছি, সাভারে করেছি।’

মূলত, ২০০২ সালে জাপান সরকারের অর্থায়নে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের ধলাগাছ এলাকায় ৭৫ শতক জায়গায় যাত্রা শুরু করে বিশ্বের প্রথম ফাইলেরিয়া হাসপাতাল।  নানা সমস্যার কারণে গত ৮ মে নীলফামারীর ফাইলেরিয়া হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে গেলে বাংলাদেশের বেশ কিছু গণমাধ্যমে এটিকে বিশ্বের একমাত্র ফাইলেরিয়া হাসপাতাল উল্লেখ করে সংবাদ প্রকাশ করতে দেখা যায়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার দায়িত্বে থাকা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইম্যুনোলজি অব বাংলাদেশ (আইএসিআইবি) এর উদ্যোগে ও সরকারের সমাজ সেবা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে রাজধানী ঢাকার সাভারের জিনজিরায়  ২০১২ সালে নির্মিত হয় আরেকটি বিশেষায়িত ফাইলেরিয়া হাসপাতাল। 

উল্লেখ্য, প্রায় এক মাস বন্ধ থাকার পর গত ১২ জুন থেকে সৈয়দপুরের ফাইলেরিয়া হাসপাতালটির চিকিৎসাসেবাসহ অন্যান্য কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়।

সুতরাং, গণমাধ্যমে সৈয়দপুরের ফাইলেরিয়া হাসপাতালটিকে  বিশ্বের একমাত্র ফাইলেরিয়া হাসপাতাল উল্লেখ করে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র