Home Blog Page 560

৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীই প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে ৫ হাজার টাকা পাবে না

0

সম্প্রতি, মাধ্যমিক পর্যায়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে ৫ হাজার টাকা করে সহায়তা প্রদান করা হবে দাবিতে ‘৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণি: প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের ৫ হাজার টাকা সহায়তা আবেদন শুরু’ শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

শিক্ষা সহায়তা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মাধ্যমিক ও সমমান পর্যায়ের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে ৫ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করার তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, মাধ্যমিক ও সমমান পর্যায়ে (৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণিতে) ২০২৪ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিকৃত/ অধ্যয়নরত শুধুমাত্র অসচ্ছল পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে ৫ হাজার টাকা করে সহায়তা প্রদান করা হবে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার। এতে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি পোস্টে তথ্যসূত্র হিসেবে ‘শিক্ষাবার্তা’ তথ্যটি উপস্থাপন করা হয়েছে। 

Collage by Rumor Scanner

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে শিক্ষাবার্তা নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১ ফেব্রুয়ারি করা ‘ব্রেকিং নিউজ শিক্ষার্থীদের ৫ হাজার টাকা সহয়তা দেয়ার ঘোষণা, আবেদন শুরু’ শীর্ষক একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

পোস্টটিতে বিস্তারিত কোনো তথ্য না থাকলেও এর মন্তব্যের ঘরে পেজটি থেকে করা একটি মন্তব্যে ‘প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০২৪ সালে মাধ্যমিক ও সমমান পর্যায়ে (ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি) ভর্তিকৃত ও অধ্যয়নরত অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করতে ভর্তি সহায়তা দেওয়া হবে।’ শীর্ষক তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। ‍

Screenshot: Facebook

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ওয়েবসাইট অনুসন্ধানের মাধ্যমে গত ২৯ জানুয়ারি প্রকাশিত ‘মাধ্যমিক ও সমমান (৬ষ্ঠ-১০ শ্রেণি) এর ২০২৪ সালের ভর্তি সহায়তার বিজ্ঞপ্তি’ একটি বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়।

Source: www.pmeat.gov.bd

বিজ্ঞপ্তিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মাধ্যমিক ও সমমান পর্যায়ে (৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণিতে) ২০২৪ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিকৃত/ অধ্যয়নরত অসচ্ছল পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিতকরণে অসচ্ছল পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের এই সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। ভর্তি সহায়তা পাওয়ার জন্যে শিক্ষার্থীদের ই-ভর্তি সহায়তা ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যারের মাধ্যম অনলাইনে আবেদন করতে হবে। 

ভর্তি সহায়তা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কোন শিক্ষার্থীরা যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন সে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বেসামরিক সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত দপ্তর ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ‘জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫’ অনুযায়ী ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডভুক্ত কর্মচারীর সন্তান আর্থিক এ অনুদান প্রাপ্তির যোগ্য বিবেচিত হবে। অন্যান্য ক্ষেত্রে পিতা, মাতা, অভিভাবকের বাৎসরিক আয় ২ লক্ষ টাকার কম হতে হবে।

এছাড়াও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী, এতিম শিক্ষার্থী, ভূমিহীন পরিবারের সন্তান, অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা সন্তানের সন্তান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ এবং দুস্থ পরিবারের সন্তান ভর্তির আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিটি থেকে আরও জানা যায়, আবেদন প্রাপ্তির পর যাচাই-বাছাই শেষে উপযুক্ত বিবেচিত হলে মাধ্যমিক ও সমমান পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ৫ হাজার, উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পর্যায়ে ৮ হাজার এবং স্নাতক ও সমমান পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ১০ হাজার করে ভর্তির জন্যে আর্থিক সহায়তা পাবেন। 

Source: www.pmeat.gov.bd

অর্থাৎ, বিজ্ঞপ্তি থেকে প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক একটি স্পষ্ট যে মাধ্যমিকের সকল শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট কর্তৃক প্রদত্ত অর্থ সহায়তা পাবে না। 

মূলত, গত ২৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট এর ওয়েবসাইটে মাধ্যমিক ও সমমান পর্যায়ে ২০২৪ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিকৃত/অধ্যয়নরত অসচ্ছল পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি সহায়তা প্রাপ্তির জন্যে অনলাইনে আবেদন দাখিল সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি, ‘৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণি: প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের ৫ হাজার টাকা সহায়তা আবেদন শুরু’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মাধ্যমিক ও সমমান পর্যায়ের সকল শিক্ষার্থীর ৫ হাজার টাকা সহায়তা পাওয়ার আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, মাধ্যমিক ও সমমান পর্যায়ে (৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণিতে) ২০২৪ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিকৃত/ অধ্যয়নরত শুধুমাত্র অসচ্ছল পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিতকরণে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে ৫ হাজার টাকা করে সহায়তা প্রদান করা হবে। 

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ভর্তি সহায়তা প্রাপ্তির অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে যা আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি রাত ১১ টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত চলমান থাকবে।

সুতরাং, মাধ্যমিক ও সমমান পর্যায়ের ৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণির প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে ৫ হাজার টাকা করে সহায়তা প্রদান করা হবে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে  প্রচারিত তথ্যটি বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক খালেদা জিয়াকে সরকার ঘোষণার ভুয়া দাবি 

0

গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ২২২টি সংসদীয় আসনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তবে গত ৩১ জানুয়ারি ‘Media Cell’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে “রাতেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে খালেদা জিয়াকে সরকার ঘোষণা নিষেধাজ্ঞার তালিকা দিলো আমেরিকা” শীর্ষক শিরোনাম এবং প্রায় সমজাতীয় থাম্বনেইলে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

খালেদা জিয়াকে

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার বার। ভিডিওটিতে প্রায় ৪৫৭ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

পরবর্তীতে আরও দুইটি ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। সেগুলো দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের সরকার ঘোষণা করেনি কিংবা যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো প্রকার নিষেধাজ্ঞার তালিকাও দেওয়া হয়নি বরং ভিন্ন প্রেক্ষাপটের দুইটি ভিডিওর সাথে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। আলোচিত ভিডিওটি’র শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে উল্লেখিত দাবিগুলোর সাথে ভিডিওটি’র বিস্তারিত অংশের মিল পাওয়া যায়নি। 

ভিডিওতে প্রচারিত এই দাবিগুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

অনুসন্ধানের এপর্যায়ে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপগুলোর বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই – ০১ 

আলোচিত ভিডিওর শুরুতেই ভয়েজ বাংলার প্রতিষ্ঠাতা সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজের ভিডিও ফুটেজের অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভয়েজ বাংলার ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩১ জানুয়ারি “বাংলাদেশের নির্বাচন অবাদ ও সুষ্ঠু হয়েছে মনে করে না আমেরিকা। Mostofa Fero। Voice Bangla” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির একটি অংশই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

তবে ভিডিও বিশ্লেষণে দেখা যায় উক্ত ভিডিওর কোথাও আলোচিত দাবিগুলোর প্রসঙ্গে কোনো তথ্যের উল্লেখ নেই। ভিডিওটিতে মোস্তফা ফিরোজ গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্রিক তার নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেন। 

ভিডিও যাচাই – ০২ 

আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত দ্বিতীয় ভিডিওটি ক্লিপটির অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে News Bangla Today নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩১ জানুয়ারি “ভারতের প্ররোচনায় বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় পিছুটান-এমন দাবি মানতে নারাজ যুক্তরাষ্ট্র।।” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির একটি অংশের সাথে সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর বক্তব্য অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওতে বিএনপি সাবেক প্রেস উপসচিব ও  সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন পাশাপাশি তিনি ভারতের হস্তক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্র পিছু হটলো কিনা প্রশ্ন রেখে নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেন।

তবে পুরো ভিডিও বিশ্লেষণে কোথাও আলোচিত দাবিগুলো প্রসঙ্গে কোনো তথ্যপ্রমাণ কিংবা দৃশ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মানদণ্ড’ মেনে অনুষ্ঠিত হয়নি বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র।

মূলত, গত ০৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত ২৯৮ আসনের ফলাফলে ২২২ টি আসন লাভ করে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। গত ৩০ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। এরই মধ্যে ৩১ জানুয়ারি Media Cell নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘রাতেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে খালেদা জিয়াকে সরকার ঘোষণা নিষেধাজ্ঞার তালিকা দিলো আমেরিকা’ শীর্ষক শিরোনাম এবং প্রায় সমজাতীয় থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্র সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের সরকার ঘোষণা করেনি এবং সম্প্রতি বাংলাদেশ নিয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞার তালিকাও প্রকাশ করেনি।

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া শারীরিক অসুস্থতা ও বয়স বিবেচনায় ২০২০ সালের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতাবলে ছয় মাসের মুক্তি পান। এরপর এই জামিনের মেয়াদ বেশ কয়েকবার বৃদ্ধি করা হয়। সর্বশেষ গত ১২ সেপ্টেম্বর জামিনের মেয়াদ ৬ মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২০২০ সালে জামিনে মুক্তির পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে শারীরিক জটিলতার কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক খালেদা জিয়াকে সরকার ঘোষণা কিংবা যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক নিষেধাজ্ঞার তালিকা প্রকাশের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ওবায়দুল কাদেরকে মন্ত্রিত্ব ও আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের গুজব

0

সম্প্রতি, ”সংদের ভিতরে ওবায়দুল কাদেরকে পিটিয়ে রক্তাক্ত মন্ত্রিত্ব থেকে বহিষ্কার হলেন ওবায়দুল কাদের।” শীর্ষক শিরোনাম এবং “সংসদের ভিতরে ওবায়দুল কাদেরকে পিটিয়ে রক্তাক্ত আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হলেন ওবায়দুল কাদের” থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।

মন্ত্রিত্ব

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি দেখা হয়েছে ১৫ হাজার ৬০০ বার। ভিডিওটিতে ৪ শত ৮০ টি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে সংসদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়নি এবং তাকে  মন্ত্রিত্ব ও আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারও করা হয়নি বরং গণমাধ্যমে প্রকাশিত মালদ্বীপের সংসদ সদস্যদের মারামারির সংবাদের ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। আলোচিত ভিডিওটি’র শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে উল্লেখিত দাবিগুলোর সাথে ভিডিওটি’র বিস্তারিত অংশের মিল পাওয়া যায়নি। 

ভিডিওতে প্রচারিত আলোচিত দাবিগুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

অনুসন্ধানের এপর্যায়ে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপগুলোর বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই ০১

ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম ATN News Live এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৯ জানুয়ারি “সংসদে মারমারি করলেন এমপিরা | Maldives | Parliament Members | Fight in Parliament ATN News” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনের একটি অংশই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, সম্প্রতি মালদ্বীপের সংসদে মন্ত্রিসভায় নতুন চার মন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলীয় এমপিদের মতবিরোধ হলে তা এক পর্যায়ে মারামারিতে রূপ নেয়। এটি সেই ঘটনারই একটি ভিডিও।

ভিডিও যাচাই: ০২

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম RTV এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর “যে কারণে ক্ষেপলেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনের একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর ওবায়দুল কাদেরের সংসদের বক্তব্যদানের ফুটেজ অংশের  হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, ২০২২ সালে সেপ্টেম্বের সংসদ অধিবেশনে বক্তব্য প্রদানকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামের উচ্চারণ এবং নিজের পদবি ভুলভাবে উপস্থাপনের করার কারণে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যের প্রতি রাগান্বিত হন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ক্ষমতাসীন দলের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ভিডিও যাচাই: ০৩

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে অনলাইন পোর্টাল Bdnews24 এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৫ সালের ১৭ জুলাই “Transport Minister Obaidul Quader inspects roads at Savar, Gazipur before Eid” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনের একটি অংশই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের সেদিন ঈদের সময় ফিটনেস বিহীন গাড়ির বিষয়ে ও গাড়ির চালক এবং মালিককে আইনের আওতায় আনার কথা বলেন।

অর্থাৎ, মালদ্বীপের সংসদে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের এমপিদের মারামারির ঘটনার ভিডিও ফুটেজের সাথে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনায় ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের ফুটেজ সম্পাদনার মাধ্যমে যুক্ত করে সংসদে ওবায়দুল কাদেরকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা এবং তাকে মন্ত্রিত্ব ও আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এছাড়া, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহণ এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে সংসদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করা এবং তার মন্ত্রিত্ব ও আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হওয়ার দাবির প্রেক্ষিতে দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ২৯ জানুয়ারি মালদ্বীপের সংসদে মন্ত্রিসভায় নতুন চার মন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলীয় এমপিদের মতবিরোধ হয়। পরবর্তীতে তা এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মারামারিতে রূপ নেয়। এই তথ্যের ভিত্তিতে বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া এটিএন নিউজে একটি সংবাদ প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। এছাড়া, ২০২২ সালের নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামের উচ্চারণ এবং নিজের পদবি ভুল ভাবে উপস্থাপনের কারণে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যের প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ক্ষমতাসীন দলের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রাগান্বিত হন। এই তথ্যের ভিত্তিতে সেসময় বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া আরটিভিতে সংবাদ প্রচারিত হয়। এছাড়া, ২০১৫ সালের জুলাই মাসে ঈদের সময় ওবায়দুল কাদের ফিটনেস বিহীন গাড়ির বিষয়ে ও গাড়ির চালক এবং মালিককে আইনের আওতায় আনার কথা বলেন। যা সেসময় অনলাইন পোর্টাল বিডিনিউজ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত হয়। সম্প্রতি, এই ভিডিওগুলো থেকে কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফুটেজ সংগ্রহ করে সেগুলো  ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে একত্র করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে সংসদে পিটিয়ে রক্তাক্ত এবং তাকে মন্ত্রিত্ব ও আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে সংসদে জি এম কাদের কর্তৃক ওবায়দুল কাদেরকে পেটানোর দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচারিত হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে সংসদে রক্তাক্ত করা মন্ত্রিত্ব ও  আওয়ামী লীগ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ফেসবুকের কমেন্টে @highlight লিখে অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা যাচাই করা যায় না 

0

সম্প্রতি,  ‘কমেন্টে @highlight লিখে ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা যাচাই করা যায়’ এমন একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

দাবিকৃত একটি পোস্ট হুবহু তুলে ধরা হলো- 

‘ফেইসবুকের নতুন চমক, কমেন্টে গিয়ে প্রথমে @ লিখুন, যদি highlight লিখা আসে, তাহলে সেটা কমেন্ট করুন। যদি highlight লেখাটি নীল হয় তাহলে বুঝবেন আপনার আইডি মজবুত আছে এবং সহজে কেউ হ্যাক করতে পারবে না।’ 

 @highlight লিখে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে @highlight লিখে ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা যাচাই করা যায় না বরং এটি ফেসবুকের ব্যাচ মেনশন ফিচার, একত্রে অধিক ব্যবহারকারীদের মেনশন করতে এই ফিচার ব্যবহার করা হয়। এর সাথে ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা যাচাইয়ের কোনোরূপ সম্পর্ক নেই।

@highlight সম্পর্কে যা জানা গেলো

হাইলাইট ফিচার সম্পর্কে জানতে ফেসবুকের হেল্প সেন্টারে এই বিষয়ক প্রতিবেদন খুঁজার চেষ্টা করি আমরা। তবে সেখানে এ সম্পর্কে কোনো তথ্য মেলেনি। পরবর্তীতে, ফিচারটি নিজেরাই পরীক্ষা করি।

কতিপয় ফেসবুক পেজ থেকে দাবিকৃত একটি পোস্টের কমেন্টে @ টাইপ করতেই @followers এবং @highlight নামের দুইটি অপশন আমাদের সামনে আসে। @followers অপশনের নিচে লেখা রয়েছে ‘some followers might receive notification’ আবার @highlight অপশনের নিচে লেখা রয়েছে ‘some friends might receive notification’। অর্থাৎ, @followers কমেন্ট করলে কিছুসংখ্যক ফলোয়ারের কাছে এবং @highlight কমেন্ট করলে কিছুসংখ্যক বন্ধুর কাছে যাবে। 

Screenshot: Facebook.

গ্রুপ কমেন্টে @everyone কমেন্টে একই ধরনের ফিচার দেখি আমরা। গ্রুপের অ্যাডমিন আইডি থেকে  @everyone কমেন্টের নিচে ‘some members might receive notification’ লেখা দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ, গ্রুপে অ্যাডমিন আইডি থেকে @everyone কমেন্ট করলে গ্রুপের কিছুসংখ্যক সদস্যের কাছে নটিফিকেশন যাবে। 

Screenshot: Facebook.

এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে ২০২৩ সালের ১৪ জুন প্রযুক্তি ওয়েবসাইট MakeUseOf-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাই। জানা যায় এই ধরনের কমেন্টের ফলে ব্যবহারকারীদের একত্রে নটিফিকেশন যায় যাকে ‘batch mention’ বা ‘ব্যাচ মেনশন’ নামে অভিহিত করা হয়। প্রতিবেদনে এই মেনশনের নটিফিকেশন বন্ধেরও উপায় বলে দেওয়া হয়েছে। ফেসবুক নটিফিকেশন সেটিংয়ে থাকা ট্যাগ অপশনে গিয়ে ‘batch mention’ বন্ধ করে দিলেই এই নটিফিকেশন আর আসবে না।

আমরা জানি ফেসবুকের কমেন্টে গিয়ে @ লিখলে বন্ধু তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের মেনশন করা যায়। এভাবে কেবল একক ব্যক্তিদের মেনশন করা যায়। @everyone, @followers এবং @highlight ব্যবহার করে একত্রে নির্দিষ্ট দর্শকদের মেনশন করা যায় বলে উপরিউক্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতীয়মান হচ্ছে। একত্রে অধিক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য এভাবে মেনশন করা হয়ে থাকে। 

কমেন্ট করে কী ফেসবুক আইডির সুরক্ষা যাচাই সম্ভব?

ফেসবুক কমেন্টে @highlight লেখা নীল রং হওয়ার সাথে আইডির সুরক্ষা যাচাইয়ের সম্পর্ক নেই। একই ধাচের আরো কয়েকটি দাবি পূর্বেই ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে মিথ্যা প্রমাণ করেছি আমরা।

এছাড়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া থেকে বাঁচাতে বিভিন্ন সতর্কতা অবলম্বন করা যায়। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার, লগইন অ্যালার্ট চালু এবং টু-স্টেপ অথেনটিকেশন এর মধ্যে অন্যতম। 

মূলত, ফেসবুকের কমেন্টে @highlight লিখে ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা যাচাই করা যায় এমন একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রেক্ষিতে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, @highlight ফেসবুকের একটি ফিচার। @highlight কমেন্ট করলে একসঙ্গে কিছুসংখ্যক বন্ধুর কাছে নটিফিকেশন চলে যায়। এমন আরো দুইটি শব্দ @everyone এবং @followers। Everyone কমেন্ট গ্রুপের অ্যাডমিনরা করতে পারে এবং এটি করলে গ্রুপের সদস্যদের কাছে নটিফিকেশন চলে যায়। আবার Followers কমেন্ট করলে কিছুসংখ্যক ফেসবুক অনুসারীদের কাছে নটিফিকেশন চলে যায়। এই ধরনের ফিচারকে ‘ব্যাচ মেনশন’ নামে অভিহিত করা হয়। এমন নটিফিকেশন পাওয়া বিরক্তের কারণ হলে ফেসবুকের নটিফিকেশন সেটিংয়ে গিয়ে সহজেই তা বন্ধ করা যায়। এভাবে কমেন্ট করার সুবিধা প্রদান করা হয়েছে মূলত একত্রে অধিক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য। এছাড়া এমন শব্দ কমেন্টে লেখলে এর রঙের পরিবর্তনের সাথে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সুরক্ষার কোনো সম্পর্ক নেই। 

সুতরাং, ফেসবুক কমেন্টে @highlight লিখে ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা যাচাই করা যায় শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র

গণমাধ্যমের নকল ফটোকার্ডে ডা. সাবরিনার নামে বিকৃত মন্তব্য প্রচার 

0

সম্প্রতি, আমি নিজেকে সেক্সি বিধবা মনে করি: ডা. সাবরিনা– শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর ছবিযুক্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল BD24 Live এর ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ডা. সাবরিনার

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ‘আমি নিজেকে সেক্সি বিধবা মনে করিশীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি এবং অনলাইন গণমাধ্যম BD24Liveও উক্ত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং উক্ত ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে BD24Live এর ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২৭ জানুয়ারি ২০২৪।

Screenshot: Facebook Claim Post

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ এবং গণমাধ্যমটির লোগোর সূত্র ধরে তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২৭ জানুয়ারি প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও BD24Live এর ওয়েবসাইট কিংবা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

তবে একই দিনে BD24Live এর ফেসবুক পেজে ‘আমি নিজেকে বিধবা মনে করি’ শীর্ষক শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায় এবং এর কমেন্টে একই বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: BD24Live Facebook Page 

উক্ত ফটোকার্ডের শিরোনামের আংশিক তথ্য ব্যতীত গ্রাফিকাল ডিজাইনসহ সকল বিষয়ের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Photocard Comparison: Rumor Scanner

পর্যবেক্ষণে আলোচিত ফটোকার্ডের শিরোনামের প্রথম তিন শব্দে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে শিরোনামের বাকি শব্দে ব্যবহৃত ফন্টের অমিল পাওয়া যায়।

উক্ত বিষয়ে প্রকাশিত BD24 Live প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের কারাগারের জীবনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন তিনি। যেখানে ডা. সাবরিনা জানিয়েছেন, কারাগারে কাটানো ওই দিনগুলোতে বাবা-মাকে ছাড়া কাউকেই পাশে পাননি তিনি। 

সাবরিনা বলেন, কারাগারে আমাকে কেউ দেখতে যায়নি। শুধু বাবা-মা পাশে ছিলেন। পৃথিবীতে বাবা-মায়ের চেয়ে আপন কেউ নেই। সব কষ্টে তারাই পাশে থাকেন। এসময় স্বামী আরিফুলের প্রসঙ্গ উঠতে সাবরিনা বলেন, ‘আমার স্বামী তো এখনও জেলেই আছে। তিনি আমার একমাস আগে থেকেই কারাবন্দি ছিলেন। সে আমার জন্য এখন মৃত। আমি নিজেকে বিধবা মনে করি।’

অর্থাৎ, BD24 Live এর ফেসবুক পেজে গত ২৭ জানুয়ারি প্রচারিত ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে তাতে ‘আমি নিজেকে সেক্সি বিধবা মনে করি: ডা. সাবরিনা’ শীর্ষক শিরোনাম যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

মূলত, ২০২০ সালের ২৩ জুন করোনার ভুয়া সনদ দেওয়া, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে ডা. সাবরিনাসহ আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। নিম্ন আদালতে তার সাজা হলেও উচ্চ আদালতে আপিল আবেদন করে জামিন পান তিনি। প্রায় তিন বছর কারাগারে কাটিয়ে গত বছরের ৫ জুন জামিনে মুক্তি পান সাবরিনা। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের কারাগারের জীবনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারের প্রেক্ষিতে অনলাইন গণমাধ্যম BD24 Live ‘আমি নিজেকে বিধবা মনে করি: ডা. সাবরিনা’ শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ প্রচার করে এবং তাদের ফেসবুক পেজে একই শিরোনামে একটি ফটোকার্ডও প্রকাশ করে। পরবর্তীতে  উক্ত ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে ‘আমি নিজেকে সেক্সি বিধবা মনে করি: ডা. সাবরিনা’ শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে প্রচার করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেরও গণমাধ্যমের ফটোকার্ড এডিট করে প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, BD24 Live এর নাম ব্যবহার করে ‘আমি নিজেকে সেক্সি বিধবা মনে করি: ডা. সাবরিনা’ শীর্ষক শিরোনামে ডা. সাবরিনাকে উদ্ধৃত করে  প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

ভোট ও থিসিস চুরির বিষয়ে ঢাবির সাবেক শিক্ষক সামিয়া রহমানের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

বিগত কয়েক বছর ধরে “ভোট চুরি করে দেশ চালাতে পারলে থিসিস চুরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে সমস্যা কোথায়?” শীর্ষক মন্তব্য সিনিয়র সাংবাদিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষক সামিয়া রহমান করেছেন দাবিতে উক্ত তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং এক্স (সাবেক টুইটার) এ প্রচার করা হয়েছে।

থিসিস চুরির

২০২১ সালে উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

২০২১ সালে এক্স (সাবেক টুইটার) এ উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

২০২৪ সালে উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধনে জানা যায়, সিনিয়র সাংবাদিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষক সামিয়া রহমান আলোচিত মন্তব্যটি করেননি বরং কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই উক্ত মন্তব্যটি তার নামে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার হয়ে আসছে। 

গুজবের সূত্রপাত

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Basherkella – বাঁশেরকেল্লা নামক এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি ইন্টারনেটে প্রকাশিত সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: X

অনুসন্ধানের এ পর্যায়ে আলোচিত দাবির প্রেক্ষিতে সামিয়া রহমানের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং দেশিয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য সামিয়া রহমানের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

“ভোট চুরি করে দেশ চালাতে পারলে থিসিস চুরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে সমস্যা কোথায়?” শীর্ষক মন্তব্য তিনি করেছেন কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আপনার কি মনে হয় এই জাতীয় লেখা আমি লিখবো? বিএনপি-জামাত কেউ এই কাজটা করেছে।”

তিনি আরও বলেন,”আমার ফেসবুক অথরাইজড। কোথাও কি এই জাতীয় হাস্যকর লেখা পোস্ট হয়েছে কোনোদিন? পাবলিকের কাজ নাই তাই এই সব ফাজলামি করে। আমার তাতে কিছু এসে যায়না।”

অর্থাৎ, আলোচিত মন্তব্যটি সামিয়া রহমান করেননি।

মূলত, ২০২১ সাল থেকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্লাটফর্মে “ভোট চুরি করে দেশ চালাতে পারলে থিসিস চুরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে সমস্যা কোথায়?” শীর্ষক মন্তব্যটি সিনিয়র সাংবাদিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষক সামিয়া রহমান করেছেন দাবিতে একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সামিয়া রহমান আলোচিত মন্তব্যটি করেন নি। সামিয়া রহমান বিষয়টি রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেন।

সুতরাং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষক সামিয়া রহমান“ভোট চুরি করে দেশ চালাতে পারলে থিসিস চুরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে সমস্যা কোথায়?” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন উল্লেখ করে ইন্টারনেটে প্রচারিত দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Samia Rahman – Facebook Account
  • Statement from Samia Rahman
  • Rumor Scanner’s own analysis

‘দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে’ কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত সর্বশেষ কবিতা নয়

0

সম্প্রতি, “দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে” শীর্ষক একটি কবিতাকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা সর্বশেষ কবিতা দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

দুঃখের আঁধার রাত্রি

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে” শীর্ষক কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত সর্বশেষ কবিতা নয় বরং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা সর্বশেষ কবিতা হলো “তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি”।

মূলত, ১৯৪১ সালের ২৯ জুলাই রবীন্দ্রনাথ জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে “দুঃখের আঁধার রাত্রি বারে বারে” কবিতাটি রচনা করেন। এই কবিতাটিকেই সম্প্রতি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত সর্বশেষ কবিতা দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত কবিতা রচনার একদিন পর অর্থাৎ, ১৯৪১ সালের ৩০ জুলাই কবিগুরু রচনা করেন “তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি” কবিতাটি; যেটি তার জীবনের শেষ রচনা।

উল্লেখ্য, পূর্বেও দাবিটি ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচজন নয়, চারজন নিহত হয়েছেন 

গত ০৫ জানুয়ারি রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে উক্ত দুর্ঘটনার ঘটনায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে নিহতের দুইটি ভিন্ন সংখ্যা প্রচারিত হয়। অধিকাংশ গণমাধ্যমে নিহতের সংখ্যা ৪ জন বলে দাবি করা হলেও কিছু কিছু গণমাধ্যম নিহতের সংখ্যা ৫ জন বলে দাবি করা হয়। তবে যেসকল গণমাধ্যমে ৫ জন নিহত খবর প্রচার করা হয় তার মধ্যে অনেক গুলোতে পরবর্তীতে সংশোধন করে ৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়।

পরবর্তীতে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা যাচাইয়ে অনুসন্ধানে নামে রিউমর স্ক্যানার টিম।

ট্রেনে

পাঁচজন নিহত দাবিতে দেশীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ প্রতিবেদন দেখুন- নিউজবাংলা২৪, নয়া দিগন্ত, জাগোনিউজ২৪, জনকণ্ঠ, যুগান্তর, ইনডিপেনডেন্ট টিভি, এখন টিভি, এক টাকার খবর (ফেসবুক) নাগরিক টিভি (ফেসবুক), ডেইলি ক্যাম্পাস, ঢাকা প্রকাশ, এবিনিউজ২৪, নিউজজি২৪, বাংলা২৪লাইভ নিউজপেপার, বাহান্ন নিউজ, বার্তা বাজার, ডেল্টা টাইমস, অর্থসূচক, দৈনিক সরোবর, জনমত, সময়ের কণ্ঠস্বর, আজকের বাংলাদেশ, জাগরণ, দৈনিক করতোয়া, আজকের দর্পণ, শেয়ারনিউজ২৪, দৈনিক করতোয়া– ২(ফেসবুক)।

একই দাবি দৈনিক আমাদের সময় প্রতিবেদন করলেও পরবর্তীতে তারা প্রতিবেদনটি সংশোধন করে নেয়। সংশোধন পূর্ববতী প্রতিবেদনের আর্কাইভ পাওয়া যায়নি।

পাঁচজন নিহত দাবিতে ভিনদেশী গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ প্রতিবেদন দেখুন- এই সময়, হিন্দুস্তান টাইমস, ফার্স্ট পোস্ট, দ্য ইকোনোমিক টাইমস, উইয়ন, নিউজ৯, ইন্ডিয়া টুডে, এনডিটিভি, আউটলুক ইন্ডিয়া, কালিঙ্গা টিভি, পর্দাফাঁস, প্রেগ নিউজ, মিন্ট, এডিটরজি, ইন্ডিয়া ব্লুম, নিউজ রুম ওডিশা, ইন্টারন্যাশনাল দ্য নিউজ, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, গলফ নিউজ। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচজন নিহত হননি বরং উক্ত ঘটনায় সর্বমোট চারজন নিহত হয়েছেন।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বিডিনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে ৯ জানুয়ারি “ট্রেন পোড়ানোর মামলায় নবীকে রিমান্ডে চায় রেল পুলিশ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ০৫ জানুয়ারি শুক্রবার রাত ৯টার দিকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকার কমলাপুরে ঢোকার আগে আগে আগুন লাগানো হলে একই পরিবারের তিনজনসহ চারজন পুড়ে মারা যান।

একই তারিখে আজকের পত্রিকা “বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন: রেল মন্ত্রণালয়ের তদন্তেও সন্দেহ ৩ যুবককে নিয়ে” শীর্ষক শিরোনামে একটি আরেকটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

এই প্রতিবেদনেও চারজন নিহতের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। 

এছাড়া, ঘটনার দিন ০৫ জানুয়ারি বিবিসি বাংলা এবং ডয়েচে ভেলে-ও চারজন নিহতের তথ্য উল্লেখ করে সংবাদ প্রকাশ করে।

পাশাপাশি একই দিনদেশীয় মূলধারার অধিকাংশ গণমাধ্যম চারজন নিহত হওয়ার তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন- প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, কালের কণ্ঠ এবং সমকাল। 

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য বার্ন ইনস্টিটিউটগুলোর জাতীয় সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেনের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার। 

অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, আহতাবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা কেউ মারা যাননি। 

পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়ার সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার। 

মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, “চারজনের লাশ হাসপাতালে আনা হয়েছে। এছাড়া কেউ মারা যাননি। চিকিৎসাধীন থাকা কেউ মারা যাননি।” 

মূলত, গত ০৫ জানুয়ারি রাজধানীর গোপীবাগ কাঁচাবাজার এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনটির কয়েকটি বগি আগুনে পুড়ে যায়। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনসহ মোট চারজন পুড়ে মারা যান। তবে এই ঘটনাটিকেই পরবর্তীতে কতিপয় দেশীয় এবং ভিনদেশী গণমাধ্যমে কোনো প্রকার তথ্যপ্রমাণ ব্যতীত পাঁচজন নিহত হয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হয়।

সুতরাং, রাজধানীতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনাকে পাঁচজন নিহত হওয়ার দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়; যা বিভ্রান্তিকর।  

তথ্যসূত্র

সংসদে জি এম কাদের কর্তৃক ওবায়দুল কাদেরকে পেটানোর গুজব 

0

গত ৩১ জানুয়ারি Sabai Shiki নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে “সংসদে ওবায়দুল কাদেরকে পিটালো জিএম কাদের, ভয়ে সংসদ বন্ধের নির্দেশ” শীর্ষক থাম্বনেইল এবং “সংসদে বসেই ওবায়দুল কাদেরকে পি*টা*লো জিএম কাদের, হাসিনার অধিনে সংসদ বয়কট” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

সংসদে জি এম

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভাইরাল এক  ভিডিও দেখা হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ ১৫ হাজার বার। ভিডিওটিতে প্রায় ৩ হাজার হাজার ২০৯  পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

পরবর্তীতে আরও একটি ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হয়। সেটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত উক্ত ভিডিওটি’র লিংক শেয়ার করে ফেসবুকে প্রচারিত একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সংসদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের পিটাননি এবং গত ৩০ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রথম অধিবেশনে সংসদ বন্ধ কিংবা বয়কটের ঘটনাও ঘটেনি বরং গত ২৮ জানুয়ারি মালদ্বীপের সংসদে সরকারি ও বিরোধীদলীয় এমপিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা এবং গত ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের সংসদে জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে উদ্দেশ্য করে লালমনিরহাট-১ আসনের এমপি মোতাহার হোসেনের দেওয়া বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের উত্তেজিত হওয়ার ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রচারিত একাধিক ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে তাতে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটিতে কোথাও ওবায়দুল কাদেরকে জিএম কাদের পিটিয়েছেন এ সম্পর্কিত কোনো তথ্য বা প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। এমনকি ভিডিওটিতে আলোচিত দাবির সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কোনো ভিডিও কিংবা বক্তব্যেরও উল্লেখ পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ ভিডিওটি’র শিরোনাম ও থাম্বনেইলে প্রচারিত দাবিটির সাথে বিস্তারিত অংশের অসামঞ্জস্যতা রয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত দাবির বিষয়ে আরও অনুসন্ধানে ভিডিওটিতে দেখানো ভিডিও ক্লিপগুলোর বিষয়ে আলাদাভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওতে যুক্ত প্রথম তিনটি ভিডিও ক্লিপই গত ২৯ জানুয়ারি মালদ্বীপে সংসদের ভেতরে এমপিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মূলধারার গণমাধ্যম এটিএন নিউজ, যমুনা টিভি এবং ডিবিসি নিউজ এ প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন থেকে নেওয়া।

Video Comparison : Rumor Scanner 
Video Comparison : Rumor Scanner 
Video Comparison : Rumor Scanner 

আলোচিত ভিডিওর সর্বশেষ অংশে থাকা ভিডিওটির অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে যমুনা টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি “আবারও উত্তপ্ত জাতীয় সংসদ, জাপা এমপিদের ওয়াকআউটের হুমকি | Parliament | JaPa | Jamuna TV” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনের একটি অংশই আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৩০ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রথম অধিবেশন শুরু দিন রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর নিজের বক্তব্য দিচ্ছিলেন লালমনিরহাট-১ আসনের এমপি মোতাহার হোসেন। কথা প্রসঙ্গে সংসদকে তিনি জানান, অনেক আগে সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জামানত হারিয়েছিলেন তার কাছে। এতে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন জাপা এমপিরা। এ ইস্যুতে পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা বলতে না দিলে ওয়াকআউটের হুমকি দেন তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ডেপুটি স্পিকারের জায়গায় কার্যক্রম চালানোর দায়িত্ব নিজ হাতে নেন স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী।

তবে এই ঘটনায় সরকার ও বিরোধীদলের সদস্যদের মধ্যে হাতাহাতি, সংঘর্ষ কিংবা সংসদ বন্ধ বা বয়কটের ঘটনা ঘটেনি।

অর্থাৎ, উক্ত ভিডিও ক্লিপগুলোর সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই। কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই উক্ত ভিডিও ক্লিপগুলো আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাথে যুক্ত করা হয়েছে।  

এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ করে ওবায়দুল কাদেরকে জি এম কাদের পিটিয়েছেন কিংবা সংসদ বন্ধের নির্দেশ সম্পর্কিত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ২৮ জানুয়ারি মালদ্বীপের সংসদ অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জোর মন্ত্রীসভার সদস্যদের অনুমোদন দিতে সংসদের বিশেষ অধিবেশন বসে। মুইজ্জো সরকারের নতুন চার মন্ত্রীকে মন্ত্রিসভায় যোগদানের বিলে প্রবল অসম্মতি জানান বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। সেসময় বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের চেম্বারে প্রবেশের বাধা দেন সরকারি দলের এমপিরা। এর থেকেই দুই দলের এমপিদের মধ্যে মারামারি ও চুল টানাটানির ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি গত ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রথম অধিবেশনে লালমনিরহাট-১ আসনের এমপি মোতাহার হোসেন বলেন, অনেক আগে সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জামানত হারিয়েছিলেন তার কাছে। এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক জাতীয় পার্টির সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এতে সংসদে হট্টগোল দেখা দিলে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এসব ঘটনা নিয়ে নিয়ে একাধিক গণমাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এরই প্রেক্ষিতে একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের কিছু ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে “সংসদে ওবায়দুল কাদেরকে পিটালো জিএম কাদের, ভুয়ে সংসদ বন্ধের নির্দেশ” শীর্ষক থাম্বনেইল এবং “সংসদে বসেই ওবায়দুল কাদেরকে পি*টা*লো জিএম কাদের, হাসিনার অধিনে সংসদ বয়কট” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে যে, দাবিগুলো সঠিক নয়। অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে একাধিক ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিক তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবির ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, সংসদে ওবায়দুল কাদেরকে জিএম কাদের পিটিয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বিয়ের বয়স মেয়েদের ১৬ বছর ও ছেলেদের ১৮ বছর নির্ধারণ করে নতুন আইন পাস হয়নি

0

সম্প্রতি, ‘বিয়ের বয়স মেয়েদের ১৬ বছর ও ছেলেদের ১৮ বছর নির্ধারণ করে মন্ত্রীসভায় নতুন আইন পাশ হয়েছে’ শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

নতুন আইন

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে বিয়ের বয়স মেয়েদের ১৬ ও ছেলেদের ১৮ বছর নির্ধারণ করে মন্ত্রিসভায় নতুন আইন পাস হওয়ার তথ্যটি সঠিক নয় বরং ২০১৪ সালে বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ রোধে প্রস্তাবিত আইনে উক্ত বয়সের কথা উল্লেখ থাকলেও পরবর্তীতে সেটি চূড়ান্তভাবে পাস হয়নি। তাছাড়া ২০১৭ সালে ‘বাল্য বিবাহ নিরোধ বিল-২০১৭’ পাস হয়। উক্ত আইনে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ এবং ছেলের ক্ষেত্রে ২১ বছর রাখা হয়েছে।

দাবিটি’র সূত্রপাত

কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে দেশীয় অনলাইন পোর্টাল বিডিসি নিউজ৭১ এ ২০১৯ সালের ০৩ অক্টোবর ‘বিয়ের বয়স মেয়েদের ১৬ বছর ও ছেলেদের ১৮ বছর বয়স করে মন্ত্রীসভায় নতুন আইন পাশ’ শীর্ষক শিরোনামে ও জনতার কথা বলে নামের পোর্টালে ২০২২ সালের ২৬ আগস্ট একই শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Collage by Rumor Scanner

উক্ত প্রতিবেদনগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে উল্লেখিত তথ্যগুলো বিবিসি নিউজের বাংলা সংস্করণে ২০১৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ‘বাল্য বিবাহের দোষে শাস্তি বাড়ছে, কমছে বয়স’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে নেওয়া হয়েছে। উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্যের সাথে ওই প্রতিবেদনগুলোর তথ্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

বিবিসি নিউজে প্রকাশিত এসম্পর্কিত প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ২০১৪ সালে বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ রোধে প্রস্তাবিত এক আইনে সাজা ও জরিমানার মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি বিয়ের বয়স কমিয়ে নারীদের জন্য ১৬ এবং পুরুষদের জন্য ১৮ করা হয়েছে।

তবে বিবিসি’র উক্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি এসংক্রান্ত আইনটি প্রস্তাবিত ছিল। চূড়ান্তভাবে পাস হয়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে ‘বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন’ ওয়েবসাইটে ‘সংসদে বাল্য বিবাহ নিরোধ বিল-২০১৭ পাস’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে পাস হওয়া আইন অনুযায়ী বিয়ের জন্য সর্বনিম্ন বয়স মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ বছর ও ছেলের ক্ষেত্রে ২১ বছর উল্লেখ করা হয়েছে এবং এর কম বয়সীদের বিয়ের জন্য অপ্রাপ্ত বয়স্ক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তৎকালীন মহিলা ও ,শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি জাতীয় সংসদে ‘বাল্য বিবাহ নিরোধ বিল-২০১৭’ প্রস্তাব করেন। পরবর্তীতে কণ্ঠভোটে সেটি পাস হয়।

তবে উক্ত আইনের ১৯ ধারায় বলা হয়েছে, “এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিধি দ্বারা নির্ধারিত কোন বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্ত বয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে, আদালতের নির্দেশ এবং পিতা-মাতা বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতিক্রমে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণক্রমে, বিবাহ সম্পাদিত হইলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে না।”

Screenshot: Ministry of Law website

উক্ত ধারাতেও বিশেষ কোনো বয়সের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

তাছাড়া ২০১৭ সালে সংসদে উক্ত বিলটি পাশ হওয়ার পর তা সেবছরের মার্চে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পায়। পরবর্তীতে বাল্যবিবাহ সম্পর্কিত এই আইন সংশোধন কিংবা অন্যকোনো নতুন আইন পাসের কোনো তথ্য গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, ২০১৭ সালে পাস হওয়া বাল্য বিবাহ নিরোধ বিলে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ এবং ছেলের ক্ষেত্রে ২১ বছরই রয়েছে এবং এই আইনের বিশেষ বিধানেও নির্দিষ্ট কোনো বয়সের কথা উল্লেখ নেই।

মূলত, ২০১৪ সালে বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ রোধে প্রস্তাবিত এক আইনে সাজা ও জরিমানার মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি বিয়ের বয়স কমিয়ে নারীদের জন্য ১৬ এবং পুরুষদের জন্য ১৮ করা হয়। সেসময় এবিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে উক্ত আইনটি সেসময় চূড়ান্তভাবে পাস হয়নি। তবে উক্ত বিষয়টিকেই সাম্প্রতিক সময়ে বিয়ের বয়স মেয়েদের ১৬ বছর ও ছেলেদের ১৮ বছর নির্ধারণ করে মন্ত্রিসভায় নতুন আইন পাশ হয়েছে শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ২০১৭ সালে ‘বাল্য বিবাহ নিরোধ বিল-২০১৭’ পাস হয়। উক্ত আইনে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ এবং ছেলের ক্ষেত্রে ২১ বছর রাখা হয়েছে। ২০১৭ সালের পরবর্তী সময়ে এই আইন সংশোধন কিংবা এ বিষয়ে নতুন কোনো আইন পাস হয়নি।

সুতরাং, বিয়ের বয়স মেয়েদের ১৬ বছর ও ছেলেদের ১৮ বছর নির্ধারণ করে মন্ত্রিসভায় নতুন আইন পাস হয়েছে দাবিতে সাম্প্রতিক সময়ে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র