Home Blog Page 561

মেসির পিএসজি ছাড়ার পর পিএসজি’র সাথে GOAT এর স্পন্সরশীপ বাতিলের দাবিটি মিথ্যা

সম্প্রতি, ‘লিও মেসি পিএসজি ছাড়ার পরপরই পিএসসি’র সাথে স্পন্সরশীপ বাতিল করলো Goat কোম্পানি’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আর্জেন্টাইন তারকা ফুটবলার লিওনেল মেসি পিএসজি ছাড়ার পর পিএসজির সাথে GOAT এর স্পন্সরশীপ বাতিল করার তথ্যটি সঠিক নয় বরং কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে ফরাসি ফুটবল ক্লাব পিএসজি’র অফিশিয়াল ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে প্রদর্শিত স্পন্সরদের বর্তমান তালিকায় GOAT এর নাম খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: PSG website 

এছাড়াও, ফুটবল কেন্দ্রিক সংবাদমাধ্যম Goal এর ওয়েবসাইটে গত ৩১ মে প্রকাশিত পিএসজি’র ২০২৩-২৪ মৌসুমের জার্সিতেও GOAT এর লোগো খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Goal

পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা ফুটবল ভিত্তিক কোনো বিশ্বস্ত সূত্রে এই দুই প্রতিষ্ঠানের চুক্তি বাতিল সম্পর্কিত কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা প্রতীয়মান হয় যে, ফরাসি ফুটবল ক্লাব পিএসজির সাথে GOAT এর স্পন্সরশীপ চুক্তি এখনো বহাল আছে।

মূলত, সম্প্রতি লিওনেল মেসি ফরাসি ফুটবল ক্লাব পিএসজি ছাড়ার পর পিএসজি’র সাথে তাদের অফিশিয়াল স্পন্সর পার্টনার GOAT স্পন্সর বাতিল করেছে শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে এই দুই প্রতিষ্ঠানের  চুক্তি বাতিল সম্পর্কিত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত পিএসজির ওয়েবসাইটে অফিশিয়াল স্পন্সর তালিকায় GOAT এর নাম রয়েছে।

প্রসঙ্গত, GOAT একটি আমেরিকান অনলাইন প্ল্যাটফর্ম সেখানে স্নিকার্স, বিশালবহুল পোশাক এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রি করা হয়। ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানিটির বর্তমানে ১৭০ টি দেশে ৩ কোটি সদস্য এবং ৬ লাখ বিক্রেতা রয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও মেসিকে জড়িয়ে ভুল তথ্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, মেসির পিএসজি ছাড়ার পর পিএসজি’র সাথে GOAT এর স্পন্সর বাতিল করার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে জরিমানা এড়াতে সুপ্রিমকোর্ট কর্তৃক ১৫ দিন সময় প্রদানের দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশানুযায়ী আপনি যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স সাথে না থাকা অবস্থায় ট্রাফিক সার্জেন্টের মুখোমুখি হন তাহলে সাথে সাথে ফাইন দিবেন না। আইনত কাগজ দেখানোর জন্য আপনি ১৫ দিনের সময় পাবেন” শীর্ষক তথ্যসম্বলিত একটি বিজ্ঞপ্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশ কিংবা পশ্চিমবঙ্গে এরকম কোনো আইন নেই বরং সুপ্রিম কোর্টের নাম ব্যবহার করে উক্ত ভুয়া তথ্যটি প্রচার করা হচ্ছে।

মূলত, পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে গাড়ির দূষণ পরীক্ষা সেন্টারের এক কর্মচারী সুপ্রিম কোর্টের বরাতে এই ভুল তথ্যটি ছাপিয়ে প্রতিষ্ঠানের সীল ও নিজের স্বাক্ষর বসিয়ে অনলাইনে প্রচার করেছে। কিন্তু বাস্তবে পশ্চিমবঙ্গে এরকম কোনো আইন নেই। প্রচারিত নির্দেশনাটি বাংলা ভাষায় হওয়ায় তা বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশেও এরকম কোনো আইন নেই এবং সুপ্রিম কোর্ট এ জাতীয় কোনো নির্দেশনা দেয়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনটি প্রায় ১১ বছর পুরানো

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার সূত্রে বাংলাদেশের জনগণের ভোটে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

২০১৬ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

২০১৭ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ায় বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়া সম্পর্কিত প্রতিবেদনটি বর্তমান সময়ের নয় বরং ২০১২ সালে গণমাধ্যমটি বাংলাদেশের দশম নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসার ব্যাপারে সম্ভাবনার কথা জানিয়ে ভারত সরকারের উদ্বেগের দাবিতে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।

  • টাইমস অব ইন্ডিয়ায় সম্প্রতি এমন কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া সম্প্রতি খালেদা জিয়া বাংলাদেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবে শীর্ষক কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কি না তা নিয়ে অনুসন্ধান করে।

Screenshot: Times of India

তবে অনুসন্ধানে গণমাধ্যমটিতে খালেদা জিয়াকে নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে উল্লেখিত দাবিতে এমন কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি, বরং গণমাধ্যমটিতে খালেদা জিয়াকে নিয়ে সবশেষ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায় ২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরে।

Screenshot: Times of India

সেই সময়ে গণমাধ্যমটি খালেদা জিয়া শাস্তি বাড়ানোর বিষয়ে ‘Bangladesh’s former premier Khaleda Zia’s sentence stayed for another 6 months‘ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। 

  • উক্ত দাবিটির সূত্রপাত অনুসন্ধান

পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানার টিম টাইমস অব ইন্ডিয়ার বরাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে প্রচারিত তথ্যটির উৎস অনুসন্ধান করে।

এক্ষেত্রে ফেসবুকের নিজস্ব মনিটরিং টুলের ব্যবহার ও রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটি ২০১৬ সাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে। 

এ নিয়ে অনুসন্ধানে ফেসবুকে ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর Kamal Shak নামের একটি অ্যাকাউন্টে ‘ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ার মন্তব্য ,, দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী!!‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত প্রথম পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Kamal Shak Facebook Post

পোস্টটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বাংলাদেশের মূলধারার একটি জাতীয় দৈনিক ইনকিলাবের ডেস্ক নিউজ সূত্রে একটি সংবাদের ছবি প্রচার করা হচ্ছে। সংবাদের ছবিতে প্রদত্ত শিরোনামটি হচ্ছে,  ‘ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ার মন্তব্য…..বেগম খালেদা জিয়া পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।’ 

তবে অনুসন্ধানে এইদিন অর্থাৎ ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর পত্রিকাটিতে এমন কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot: Daily Inqilab epaper

পরবর্তীতে দাবিটি নিয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে ২০১২ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর bdtoday নামের একটি ওয়েবসাইটে ‘খবর এখন দুর্নীতির‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: BD Today

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ৩০ আগস্ট ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার ‘ইন্ডিয়ান ওয়ারিস কুড মাউন্ট উইথ খালেদা জিয়াস এক্সপেকটেড রিটার্ন টু পাওয়ার ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের সূত্রে সংবাদ প্রকাশ করে দেশীয় একাধিক গণমাধ্যম। এর মধ্যে ইনকিলাব ‘বেগম খালেদা জিয়া পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী’ শিরোনামে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনটিকে প্রধান সংবাদ হিসেবে প্রকাশ করে।

Screenshot: BD Today

অর্থাৎ খালেদা জিয়া বাংলাদেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন শীর্ষক দাবিটির সূত্রপাত ২০১২ সালে, টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন থেকে। 

টাইমস অব ইন্ডিয়ার উক্ত প্রতিবেদন সূত্রে সেই সময়ে বাংলাদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত আরও কিছু প্রতিবেদন দেখুন ঢাকায় ‘ক্ষমতা বদলের শঙ্কায়’ নয়া দিল্লি (বিডিনিউজ২৪), ‘টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবর’: বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনায় শঙ্কিত ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা (সমকাল), টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন : আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তার ধসে দুশ্চিন্তায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ( আমার দেশ অনলাইন; বর্তমানে বন্ধ)। 

  • কি আছে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনটিতে?

বিডি টুডের এই প্রতিবেদনের সূত্রে রিউমর স্ক্যানার টিম পরবর্তী অনুসন্ধানে টাইমস অব ইন্ডিয়ায় ২০১২ সালের ২৯ আগস্ট ‘India’s worries could mount with Khaleda Zia’s expected return to power in Bangladesh‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায়। 

Screenshot: Times of India

প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট ক্ষমতায় আসতে পারে- এমন পূর্বাভাস পেয়ে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর শঙ্কার কথা তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটির দাবি অনুযায়ী, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আশংকা, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট ক্ষমতায় আসলে ভারতবিরোধী শক্তিগুলো বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে সেদেশে সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক কার্যক্রম চালানোর সুযোগ পাবে। 

প্রতিবেদনটিতে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশভিত্তিক বিভিন্ন মৌলবাদী গোষ্ঠী ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামীর মতো নাশকতাকারী গোষ্ঠীগুলো ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা ও আশ্রয় দেওয়ার নীতি গ্রহণ করতে পারে।

Screenshot: Times of India

তবে ইতোপূর্বে ভারত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের কাছ থেকে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ও সেদেশের সন্ত্রাসী তৎপরতায় জড়িতদের বাংলাদেশের মাটি থেকে নির্মূলে অভূতপূর্ব সহযোগিতা পেয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের জনসমর্থন কমতে থাকায় বিএনপির পুনরায় ক্ষমতা আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা। আর খালেদা জিয়া ফের ক্ষমতায় গেলে সন্ত্রাসবাদ দমনে গত কয়েক বছরের সাফল্য নস্যাৎ হতে পারে।

অর্থাৎ, বাংলাদেশের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জনসমর্থন কমে আসায় বিএনপির পুনরায় ক্ষমতা আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। 

মূলত, ২০১২ সালের ২৯ আগস্ট ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া সেই সময়ে বাংলাদেশের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে গোয়েন্দা তথ্যসূত্রে তৎকালীন বিরোধীদল বিএনপির পুনরায় ক্ষমতা আসার সম্ভাবনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে৷ যা নিয়ে দেশীয় একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে জাতীয় দৈনিক ইনকিলাব ‘বেগম খালেদা জিয়া পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী’ শিরোনামে প্রধান সংবাদ হিসেবে প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদনেরই একটি ছবি পরবর্তীতে ২০১৬ সাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বেগম খালেদা জিয়া পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে।

সুতরাং, ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার ২০১২ সালের বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনার পুরানো একটি প্রতিবেদনকে সম্প্রতি পুনরায় প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

সোলার প্যানেলের নিচে ফসল উৎপাদনে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ প্রথম নয়

0

সম্প্রতি, সোলার প্যানেলের নিচে পতিত জমিতে ফসল উৎপাদনে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ প্রথম শীর্ষক দাবিতে কয়েকটি ছবি সম্বলিত একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

যা দাবি করা হচ্ছে

প্রচারিত পোস্টে বলা হয়েছে-

“সোলার প্যানেলের নিচের পতিত জমিতে আমরা ফসল উৎপাদনের পরীক্ষামূলক উদ্যোগ নিয়েছিলাম। সেটি সফল হয়েছে। ছবিগুলো সিরাজগঞ্জে অবস্থিত সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের। উল্লেখ্য, পুরো দক্ষিণ এশিয়াতে এ ধরণের উদ্যোগ এটিই প্রথম।

দেশের খাদ্য নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতি ইঞ্চি অনাবাদী জমিকে কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি পর্যায়ক্রমে দেশের সকল সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনাবাদী জায়গাতে ছায়া ফসল (শেডস ক্রপস) চাষ করা হবে।”

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সোলার প্যানেলের নিচে পতিত জমিতে ফসল উৎপাদনে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ প্রথম শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং বাংলাদেশের পূর্বেও দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশে উল্লিখিত উপায়ে কৃষি উৎপাদনের তথ্য পাওয়া যায়।

মূলত, গত ১২ জুন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে কয়েকটি ছবিসহ প্রকাশিত একটি পোস্টে দাবি করা হয়, সোনার প্যানেলের নিচে পতিত জমিতে ফসল উৎপাদনে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ প্রথম। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উল্লিখিত উপায়ে ফসল উৎপাদনে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশই প্রথম নয় বরং বাংলাদেশের পূর্বেও দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশে তথা ভারত ও শ্রীলঙ্কাতেও উক্ত উপায়ে ফসল উৎপাদন করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশ সরকারকে কয়লা দেয়নি

সম্প্রতি ‘পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশ সরকারকে কয়লা দিয়েছে’ শীর্ষক দাবিতে দুইটি ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে ছড়িয়ে পড়েছে।

এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

Screenshot from TikTok.
Screenshot from TikTok.

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশ সরকারকে কয়লা দিয়েছে শীর্ষক দাবিটি সত্য নয় বরং কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই পুরোনো অপ্রাসঙ্গিক দুইটি ভিডিও সংযুক্ত করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

প্রথম ভিডিও যাচাই

উক্ত দাবির সাথে প্রচারিত প্রথম ভিডিওটির স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চ করে, ‘Airliners & Ships Channel’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর “BIGGEST CONTAINER SHIP EVER ACE Maiden” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ৩৫ মিনিটের মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটির শুরুর দিকের কিছু অংশ কেটে নিয়েই উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

Screenshot Source: [email protected]

উক্ত ইউটিউব ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভিডিওতে থাকা জাহাজের নাম Ever Ace। সে সূত্র ধরে অনুসন্ধানের মাধ্যমে, জাহাজের বর্তমান অবস্থান দেখানো ওয়েবসাইট ‘vesselfinder’ এ দেখা যায় উক্ত জাহাজটি গত ১২ জুন তাইওয়ানের উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া থেকে রওনা হয়েছে। এছাড়া জাহাজটি বিগত কিছু দিনে বাংলাদেশ কিংবা পাকিস্তানে যায়নি। 

Screenshot Source: Vesselfinder

দ্বিতীয় ভিডিও যাচাই

উক্ত দাবির সাথে প্রচারিত দ্বিতীয় ভিডিওটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওতে থাকা জাহাজের নাম MSC GAIA। 

সে সূত্র ধরে অনুসন্ধানের মাধ্যমে, জাহাজের বর্তমান অবস্থান দেখানো ওয়েবসাইট ‘vesselfinder’ এ দেখা যায় উক্ত জাহাজটি গত ০৩ জুন ইন্ডিয়ার উদ্দেশ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে রওনা হয়েছে। এছাড়া জাহাজটি বিগত কিছু দিনে বাংলাদেশ কিংবা পাকিস্তানে যায়নি। 

Screenshot Source: Vesselfinder

অর্থাৎ, পুরোনো অপ্রাসঙ্গিক দুইটি ভিডিও সংযুক্ত করে ‘পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশ সরকারকে কয়লা দিয়েছে’ শীর্ষক দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

গত ১০ জুন দেশীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২১ মে ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে আসা চীনা পতাকাবাহী জাহাজ এমভি জে হ্যায় সেদিন (১০ জুন) মোংলা সমুদ্রবন্দরে পৌঁছেছে।

এছাড়া গত ১৩ জুন দেশীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যম আজকের পত্রিকার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন পুনরায় শুরু করতে ৪০ হাজার টন কয়লা আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে। নতুন ঋণপত্রে আমদানি করা এই কয়লা আগামী ২৪-২৫ তারিখের দিকে পায়রা বন্দরে আসতে পারে তবে, পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে কয়লা আমদানির কোনো তথ্য বিশ্বস্ত কোনো গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত ২৫ মে কয়লা সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যায় দেশের বৃহত্তম পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট। এরপর কয়লার অভাবে সোমবার, ৫ জুন বেলা ১২টার দিকে বন্ধ হয়ে যায় পটুয়াখালীর পায়রার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটটিও। এ প্রেক্ষিতে ‘পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশ সরকারকে কয়লা দিয়েছে’ শীর্ষক একটি দাবি টিকটকে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই পুরোনো অপ্রাসঙ্গিক দুইটি ভিডিও সংযুক্ত করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, এর আগে ‘ওমান থেকে ৮৫ লক্ষ ৯২ হাজার ৮৯৫ মেট্রিক টন কয়লাসহ ৭৭ টি বিশাল জাহাজ বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে’ শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়টি মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

সুতরাং,পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশ সরকারকে কয়লা দিয়েছে শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

খুসিক নির্বাচনে মৃত নারীর ভোট প্রদানের পুরানো গল্পকে নতুন করে প্রচার

0

সম্প্রতি, সদ্য সমাপ্ত খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একজন বয়স্ক ব্যক্তির ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা দাবিতে একটি জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর লোগো ব্যবহার করে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

যা দাবি করা হচ্ছে 

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে একজন বয়স্ক মানুষ ভোট দিতে এসেছেন। পোলিং অফিসার বললেন, দাদু আপনার ভোট তো হয়ে গেছে, বয়স হয়েছে তো তাই মনে রাখতে পারেন না। বৃদ্ধ মাথা নাড়িয়ে বললেন, হু তা ঠিক। তবে একটু দেখবেন যে আমার স্ত্রী ভোট দিয়ে গেছেন কি-না? আমার স্ত্রীর নাম কুলসুম বেগম।

পোলিং এজেন্ট দেখেটেখে বললো–হ্যাঁ, দাদু, দাদীর ভোট তো হয়ে গেছে। বৃদ্ধ হাউমাউ করে কেঁদে উঠে বললেন–ওগো, এতোদিন ধরে একসাথে ঘর করে এই প্রতিদান? পরপার থেকে তুমি ভোট দিতে আসতে পারো আমার বাসায় তুমি আসতে পারোনা? আমার চাইতে ভোট তোমার প্রিয় হল?

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সদ্য সমাপ্ত খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একজন বয়স্ক ব্যক্তির ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা দাবিতে দৈনিক প্রথম আলোর লোগো ব্যবহার করে প্রচারিত তথ্যটি পুরানো। প্রকৃতপক্ষে ২০১৮ সালে খুলনা সিটি করপোরেশনেরই নির্বাচনকে ঘিরে সর্বপ্রথম তথ্যটি প্রচার করা হয়েছিল।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে দৈনিক আমাদের সময়.কমে ২০১৮ সালের ১৬ মে ‘পরপার থেকে তুমি ভোট দিতে আসতে পারো আর বাসায় আসতে পারো না?‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: amadersomoy.com

প্রতিবেদনটিতে ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যকে উদ্ধৃত করে উল্লেখ করা হয়, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে একজন বয়স্ক মানুষ ভোট দিতে এসেছেন। পোলিং অফিসার বললেন, দাদু আপনার ভোট তো হয়ে গেছে, বয়স হয়েছে তো তাই মনে রাখতে পারেন না। বৃদ্ধ মাথা নাড়িয়ে বললেন, হু তা ঠিক। তবে একটু দেখবেন যে আমার স্ত্রী ভোট দিয়ে গেছেন কি-না? আমার স্ত্রীর নাম কুলসুম বেগম।

Screenshot: amadersomoy.com

বৃদ্ধ হাউমাউ করে কেঁদে উঠে বললেন–ওগো, এতোদিন ধরে একসাথে ঘর করে এই প্রতিদান? পরপার থেকে তুমি ভোট দিতে আসতে পারো আমার বাসায় তুমি আসতে পারোনা? আমার চাইতে ভোট তোমার প্রিয় হল?

পরবর্তী অনুসন্ধানে আরেক মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক সংগ্রাম এর ওয়েবসাইটে একই বছরের ১৭ মে  ‘মিডিয়ার চোখে খুলনা নির্বাচনের নগ্নচিত্র‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে একই লেখককে উদ্ধৃত করে আলোচিত লেখাটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Daily Sangram 

অপরদিকে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর লোগো ব্যবহার করে আলোচিত তথ্যটি প্রচার করা হলেও রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে প্রথম আলোতে এমন কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বিপরীতে আলোচিত তথ্যটি নিয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার আরও আগে থেকেই  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একই ব্যক্তি অর্থাৎ পিনাকী ভট্টাচার্যকে উল্লেখ করে লেখাটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Collage: Rumor Scanner 

২০১৮ সালের ১৫ মে CCTV Bangladesh নামের একটি ফেসবুক পেইজে পিনাকী ভট্টাচার্যের পোস্টের স্ক্রিনশটসহ প্রকাশিত লেখাটি দেখুন এখানে। একইদিনে মঈনুল ইসলাম নামে জনৈক ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত আলোচিত লেখাটি পড়ুন এখানে। এমন আরও কিছু পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে৷ 

তবে অনুসন্ধানে পিনাকী ভট্টাচার্যের মূল পোস্ট ও পোস্ট প্রদানকারী অ্যাকাউন্টটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া অনুসন্ধানে সদ্য সমাপ্ত খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আলোচিত ঘটনাটির ন্যায় কোনো ঘটনা গণমাধ্যমেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত ১২ জুন একইসাথে খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দুই সিটি করপোরেশনেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জয় লাভ করে। এরই প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময়ে একজন বয়স্ক ব্যক্তির ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা সম্পর্কিত পুরানো একটি লেখা পুনরায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, উক্ত ঘটনাটি সদ্য সমাপ্ত খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের।

সুতরাং, ২০১৮ সালে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এক বয়স্ক ব্যক্তির ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে  লেখা একটি গল্প সম্প্রতি সদ্য সমাপ্ত খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

মশার নিধনে সিঙ্গাপুরে কৃত্রিম মশা তৈরির পুরোনো পদ্ধতিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি “সিঙ্গাপুরে মশার উপদ্রব কমানোর জন্য গবেষণাগারে লক্ষ লক্ষ কৃত্রিম মশা তৈরি করা হচ্ছে। এগুলির কাজ হলো স্ত্রী মশাদের খুঁজে বের করা এবং তাদের সাথে মিলিত হয়ে বাচ্চা দেওয়ার প্রক্রিয়াকে বন্ধ করে দেওয়া। এই পদ্ধতিটি ৯০% কার্যকর হয়েছে বলে প্রমাণিত” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে ‘সিঙ্গাপুরে মশার উপদ্রব কমাতে লক্ষ লক্ষ কৃত্রিম মশা উৎপাদন করা হচ্ছে’ শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং ২০১৭ সালের অক্টোবরে সিঙ্গাপুরের ব্র্যাডেল হাইটস এলাকায় প্রাথমিকভাবে ৩০০০ পোকা অবমুক্ত করা হয়েছিলো, যা ডেঙ্গু প্রতিরোধে এবং জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সহায়তা করেছিল।

মূলত, সিঙ্গাপুরে বেশকিছু এলাকায় ডেঙ্গুর উপদ্রব বৃদ্ধি পেলে ২০১৭ সালের শেষের দিকে বিজ্ঞানীরা মশা হ্রাসের জন্য একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। বিশেষভাবে প্রজনন করা মশাগুলো এমন এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া বহন করে যা স্ত্রী মশা গুলোর ডিম ফুটতে এবং প্রজনন বিস্তারে বাঁধা দেয়। ফলে, মশার পরিমাণ অনেকাংশে হ্রাস পায়। সে সময়ে সিঙ্গাপুরে মশার উপদ্রব কমাতে উক্ত পদ্ধতি ব্যবহারের তথ্যটিকে সাম্প্রতিক সময়ে ‘সিঙ্গাপুরে মশার উপদ্রব কমাতে লক্ষ লক্ষ কৃত্রিম মশা উৎপাদন করা হচ্ছে’ শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও এ বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

হবিগঞ্জের রাস্তাকে নাটোরের রাস্তা দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি, ফেসবুকে একটি রাস্তার ছবিকে নাটোরের সিংড়ার ছবি বলে দাবি করা হচ্ছে। 

সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী ও নাটোর-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জুনাইদ আহমেদ পলকের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ারকৃত পোস্টে (আর্কাইভ) দাবি করা হয়েছে, ছবিটি নাটোরের সিংড়ার চলনবিলের একটি সড়কের বর্তমান অবস্থার চিত্র। 

একই পোস্ট তিনি তার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজেও শেয়ার করেছেন। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এছাড়া, জুনাইদ আহমেদ পলক Shihab Hossain নামে যে ব্যক্তির পোস্ট শেয়ার করেছেন সেই পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একইভাবে, একই ছবিকে নাটোরের সিংড়ার দাবি করে করা আরেকটি পোস্ট জুনাইদ আহমেদ পলক ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট (আর্কাইভ) ও অফিশিয়াল পেজে (আর্কাইভ) শেয়ার করেছেন। 

জুনাইদ আহমেদ পলক মো: মুরশিদুল ইসলাম নামে যে ব্যক্তির পোস্ট শেয়ার করেছেন সেই পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একইদিন জনাব পলকের শেয়ারকৃত আরেকটি পোস্টেও একই ছবিকে নাটোরের বর্তমান ছবি বলে দাবি করা হয়। উক্ত পোস্ট পলকের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং ফেসবুক পেজে দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

সম্প্রতি একই দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ২০২২ সালে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ২০২১ সালে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাছসহ রাস্তার আলোচিত এই ছবিটি নাটোরের সিংড়ার নয় বরং হবিগঞ্জের বানিয়াচং থেকে ২০২০ সালে ছবিটি তুলেছিলেন ফটোগ্রাফার শঙ্কু দেব। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শেয়ারকৃত পোস্টগুলোর কমেন্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে একাধিক ব্যক্তি ছবিটি নাটোরের নয় বলে মন্তব্য করেছেন। 

একটি কমেন্টে Shonku Deb নামের একটি অ্যাকাউন্টকে মেনশন করে একটি পোস্টের স্ক্রিনশট যুক্ত করে দিয়ে বলা হয়েছে, ছবিটি তিনি তুলেছেন। 

Screenshot collage: Rumor Scanner 

পরবর্তীতে Shonku Deb নামক অ্যাকাউন্টে গিয়ে আলোচিত পোস্টটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

শঙ্কু তার পোস্টে লিখেছেন, “গত ২০শে জুন ২০২০ সালে শোলাটেখা যাওয়ার মাঝপথে একটি ছবি তুলি। যেটি ছিল আমাদের বানিয়াচংয়ের। তো এই ছবিটি আমার আইডি সহ কয়েকটি গ্রুপে পোস্ট করার পরে বেশ রিচ উঠেছিল। তো যে ছবি ভাইরাল হয় সে ছবি কপি পোস্ট হবে এটা স্বাভাবিক ধরে নেন। কিন্তু অবাক লাগে যখন আমার ছবিটি এমপি, মন্ত্রী, ডিসি কেউ বাদ দেননি কপি পোস্ট দিতে। তা ও সমস্যা ছিল না যদি ছবির অরিজিনাল লোকেশন দিয়ে পোস্ট করতেন। যেখানে আমার এলাকার অস্তিত্ব ওই নেই সেখানে ক্রেডিট পাওয়া বিলাসিতা ছাড়া আর কিছু না। ছবির অরিজিনাল ডিটেইলস না জেনে একজন এমপি, মন্ত্রী, ডিসি কি ভাবে পোস্ট / শেয়ার করেন?”

Screenshot source : Facebook 

পরবর্তীতে আরো অনুসন্ধান করে শঙ্কুর ফটোগ্রাফি বিষয়ক পেজ ‘পথে প্রান্তরে’তে ২০২০ সালের ২৬ জুলাই প্রকাশিত একটি পোস্টে (আর্কাইভ) আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

ছবিটির লোকেশন হিসেবে পোস্টে উল্লেখ করা হয়, হরতি জঙ্গল রোড (বানিয়াচং)।

Screenshot source : Facebook

একইদিন (২৬ জুলাই, ২০২০) Tour Group Bd নামক একটি গ্রুপেও শঙ্কু একই ছবি ও তথ্য পোস্ট করেন। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

Screenshot source : Facebook

এ বিষয়ে জানতে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে আমরা জনাব শঙ্কু দেবের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আমাদের জানান, “২০২০ সালের ২০ জুন তুলেছিলাম আমি বানিয়াচং উপজেলার শোলাটেখা জায়গায়। আমি তো ফটোগ্রাফার। সেদিন ফটোওয়াকে গিয়ে ছবিটি তুলেছিলাম। এরপর আমি ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পর ছবিটি ভাইরাল হয়ে যায়।” 

শঙ্কু বলছেন, তার এই ছবিটি ভিন্ন স্থান এবং ভিন্ন জনের তোলা বলে প্রচার হয়ে আসছে। আমাদের অনুরোধে শঙ্কু তার তোলা আলোচিত ছবিটির মূল ফাইল আমাদের কাছে পাঠান। আমরা ছবিটির মেটাডাটা বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হই, ছবিটি ২০২০ সালের ২০ জুনই তোলা হয়। তবে ছবি তোলার সময় ডিভাইসটির লোকেশন বন্ধ থাকায় ছবির লোকেশনের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

Screenshot collage: Rumor Scanner

পরবর্তীতে বানিয়াচংয়ের মাতাপুরে থাকেন ‘S M Ovi’ নামক এক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

জনাব অভি রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুরোধে উক্ত স্থানে গিয়ে কিছু ছবি এবং একটি ভিডিও ধারণ (রিউমর স্ক্যানারের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে) করে আমাদের কাছে পাঠান। 

আমরা ছবিগুলোর মেটাডাটা বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হই, আলোচিত রাস্তাটি হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের আদর্শবাজার-লক্ষীবাওর জলাবন রোডে অবস্থিত করতকলা নামক স্থানে অবস্থিত।

Screenshot collage: Rumor Scanner

মূলত, সম্প্রতি ফেসবুকে একটি রাস্তার ছবিকে নাটোরের সিংড়ার ছবি বলে দাবি করা হচ্ছে। নাটোরের সিংড়ার চলনবিলের একটি সড়কের বর্তমান অবস্থার চিত্র দাবিতে প্রচারিত তিনটি পোস্ট তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ও নাটোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য জুনাইদ আহমেদ পলকের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজে শেয়ার করা হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিটি নাটোরের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২০ সালে শঙ্কু দেব নামে একজন ফটোগ্রাফার হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের আদর্শবাজার-লক্ষীবাওর জলাবন রোডে অবস্থিত করতকলা নামক স্থান থেকে ছবিটি তুলেছিলেন। 

উল্লেখ্য, চলন বিলের রাস্তার পুরানো অবস্থান বুঝাতে যে ছবি ব্যবহার হয়েছে সেই ছবিটি তোলার স্থান ও সময় সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য না পাওয়ায় ঐ রাস্তার পুরানো ও বর্তমান অবস্থার প্রকৃত চিত্রের তুলনা দেখানো সম্ভব হয়নি। তবে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানে নিকট অতীতে ধারণকৃত চলন বিলের রাস্তার বেশ কিছু ভিডিও ইন্টারনেটে পাওয়া গেছে। যার মাধ্যমে বর্তমানে চলন বিলের মাঝে ‘পাকা সড়কই’ পরিলক্ষিত হচ্ছে। ভিডিও গুলো দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

Screenshot collage: Rumor Scanner 

প্রসঙ্গত, গত বছর (২০২২) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে না পারা শীর্ষক একটি দাবি ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি গুজব হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের আদর্শবাজার-লক্ষীবাওর জলাবন রোডের একটি রাস্তার ছবিকে নাটোরের ছবি বলে ফেসবুকে দাবি করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ইউনিসেফ নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নামে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি 

0

সম্প্রতি ‘ইউনিসেফ নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়োগ’ শীর্ষক শিরোনামে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘ইউনিসেফ নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়োগ’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে জাতিসংঘের উক্ত সংস্থাটির নাম দিয়ে এমন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচার হয়ে আসছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

Screenshot: Facebook 

সেখানে বলা হয়, ‘নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত জাইকা ও আমেরিকার দাতা সংস্থার অর্থায়নে পরিচালিত ১২ বছর মেয়াদী প্রকল্পে শহর ও গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক, পুষ্টি, মাও শিশু পরিচর্যা, শিশু স্বাস্থ্য, পথ শিশু ও প্রতিবন্ধী পূনর্বাসন, ফ্যামেলি প্লানিং টিকাদান কর্মসূচী ম্যাটানিটিক ক্লিনিক, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নারী দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বাস্ত বায়নের লক্ষ্যে কিছু সংখ্যক পুরুষ/মহিলা নিয়োগ করা হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের পদের নাম, ছবি ও মোবাইল নাম্বার সহ সিভি অথবা দরখাস্ত এই ই-মেইলে [email protected] পাঠাতে হবে।’

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে প্রদর্শিত ইমেইল এড্রেসটি ([email protected]) লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এটি ইউনিসেফের প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল নয়, বরং এটি একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট; যা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি নিয়ে সন্দেহ তৈরি করে। 

পরবর্তীতে ইউনিসেফ বাংলাদেশের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে সেখানে প্রদর্শিত ইমেইল ঠিকানাটি যাচাই করে দেখা যায় এটি এমন [email protected]

Screenshot: UNICEF Bangladesh 

অর্থাৎ প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে প্রদর্শিত ইমেইল ঠিকানাটি ইউনিসেফের অফিশিয়াল ইমেইল ঠিকানা নয়।

এছাড়া ইউনিসেফ বাংলাদেশের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ‘ইউনিসেফ নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়োগ’ শীর্ষক কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে ইউনিসেফের মূল ওয়েবসাইটের জব সেকশনে গিয়ে এমন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কিত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Screenshot: UNICEF website

পাশাপাশি, গণমাধ্যম, ইউনিসেফ বাংলাদেশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে ইউনিসেফের নারী ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়োগ সম্পর্কিত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, দীর্ঘদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইউনিসেফের নামে বিভিন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হচ্ছে। রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইউনিসেফ নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়োগ শীর্ষক সম্প্রতি প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। তাছাড়া ইউনিসেফের ওয়েবসাইট কিংবা অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ইউনিসেফের স্বাস্থ্য প্রকল্পে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।  

সুতরাং, ‘ইউনিসেফ নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়োগ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

এক নারীর সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত মুহুর্তের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি এডিটেড 

0

ওনাকে কেউ চিনেন” শীর্ষক শিরোনামসহ ভিন্ন ভিন্ন শিরোনামে এক নারীর সঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত মুহূর্তের  ছবি দাবি করে একটি ছবি বেশ কয়েক মাস ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

বিগত সময়ে টুইটারে প্রচারিত এমন কিছু টুইট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এক নারীর সঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিটি আসল নয় বরং ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ফটোশপের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘ImgSpice’ নামের একটি ইমেজ হোস্টিং ওয়েবসাইটে আলোচিত নারীর সঙ্গে থাকা ভিন্ন একজন পুরুষের মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

ছবিটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উক্ত নারীর সঙ্গে (বাম পাশে) থাকা ভিন্ন একজন পুরুষের ছবি (ডানপাশে) সংযুক্ত রয়েছে, স্পষ্টত তিনি ওবায়দুল কাদের নন। 

এছাড়া, আলাদা দুইটি ছবি পাশাপাশি রেখে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, মূল ছবিটিতে থাকা নারীকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় মিরোর ইফেক্ট ব্যবহার করে পুরুষের ছবিতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মুখ মণ্ডলের ছবি সংযুক্ত করে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

তাছাড়া, ছবি দুইটির পেছনে থাকা দৃশ্যগুলোরও হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

মূলত, ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহপূর্বক একজন নারীর সঙ্গে  পুরুষের ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবিকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত করে সেখানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মুখ মণ্ডলের ছবি সংযুক্ত করে এটি ওবায়দুল কাদেরের সাথে এক নারীর ব্যক্তিগত মূহুর্তের ছবি দাবিতে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে প্রচার করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও অস্ত্র হাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছবি দাবিতে একটি ছবি প্রচারের প্রেক্ষিতে বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

সুতরাং, ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত এক নারীর সঙ্গে এক পুরুষের অন্তরঙ্গ মূহুর্তের ছবিতে ফটোশপের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মুখ মণ্ডলের ছবি সংযুক্ত করে সেটি ওবায়দুল কাদেরের সাথে ঐ নারীর ব্যক্তিগত মূহুর্তের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

  • ImgSpice website 
  • Rumor Scanner’s own analysis