Home Blog Page 561

স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থীকে নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের এক সমর্থককে হত্যা করা হয়েছে

গত ২৩ ডিসেম্বর News Report নামের একটি ফেসবুক পেজে ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করলো আ. লীগ। প্রধানমন্ত্রীর ওপর ক্ষেপেছে জাতিসংঘ’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থীকে নয়

ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার আগ অবধি আলোচিত ভিডিওটি ২ হাজার ৮ শত বার দেখা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটিতে সাড়ে ৩ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ভাইরাল ভিডিওটি’র মন্তব্যঘর ঘুরে উক্ত দাবির প্রেক্ষিতে অধিকাংশ নেটিজেনকে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখনো পর্যন্ত কোনো স্বতন্ত্র কিংবা অন্যকোনো দল সমর্থিত প্রার্থীকে হত্যার ঘটনা ঘটেনি বরং মাদারীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের সমর্থক ‘এসকেন্দার খাঁ’ নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনার বিষয়টি’র সাথে উক্ত থাম্বনেইল যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এর বিস্তারিত অংশে কোথায় স্বতন্ত্র প্রার্থীকে আওয়ামী লীগের কোনো সমর্থক কর্তৃক পিটিয়ে হত্যার দৃশ্য দেখানো হয়নি কিংবা এসম্পর্কিত কোনো তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি বরং সেখানে মাদারীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের সমর্থক এসকেন্দার খাঁ’কে হত্যার ঘটনার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

এবিষয়ে অনুসন্ধানে গত ২৩ ডিসেম্বর মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র অনলাইন সংস্করণে ‘মাদারীপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনার এক সমর্থককে কুপিয়ে হত্যা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Prothom Alo

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মাদারীপুরের কালকিনিতে এসকেন্দার খাঁ (৭০) নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনাকে নির্বাচনী বিরোধ থেকে হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২৩ ডিসেম্বর ভোরে উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ভাটাবালি এলাকায় হামলার এ ঘটনা ঘটে। পরে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। মাদারীপুর-৩ (কালকিনি, ডাসার ও সদরের একাংশ) আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের শিবির থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এসকেন্দার খাঁ তাঁদের কর্মী ছিলেন।

এছাড়াও মূলধারার একাধিক গণমাধ্যমে ( , , ) এবিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

অর্থাৎ, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থীকে হত্যা করা হয়নি। 

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র কিংবা অন্যকোনো দল সমর্থিত কোনো প্রার্থীকে আওয়ামী লীগ কিংবা অন্যকোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী বা সমর্থক কর্তৃক হত্যার সত্যতা পাওয়া যায়নি।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ২৩ ডিসেম্বর মাদারীপুর-৩ (কালকিনি, ডাসার ও সদরের একাংশ) আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের সমর্থক এসকেন্দার খাঁ নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে একটি ভিডিওতে উক্ত ঘটনার বিষয়টি উপস্থাপন করে সেখানে ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করলো আ. লী’ শীর্ষক দাবির থাম্বনেইল যুক্ত করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে এখন পর্যন্ত আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোনো স্বতন্ত্র কিংবা অন্যকোনো দল সমর্থিত প্রার্থীকে হত্যার সত্যতা পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, মাদারীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের সমর্থক এসকেন্দার খাঁ’কে হত্যার বিষয়টিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে হত্যা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সেনাবাহিনী কর্তৃক খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের গুজব

সম্প্রতি, “এইমাত্র খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করলো সেনাবাহিনী” শীর্ষক দাবিতে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

সেনাবাহিনী কর্তৃক

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গ্রেফতার হয়নি বরং অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় ভিন্ন কয়েকটি ভিডিও এবং ছবি যুক্ত করে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোরূপ তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটি কয়েকটি ভিন্ন ইস্যুর খন্ডিত ভিডিও প্রযুক্তির সাহায্যে যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে। 

২০ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের এই ভিডিওটির শুরুতে কয়েকটি ভিন্ন ঘটনার ভিডিওর খন্ডাংশ দেখানো হয়। পরবর্তীতে ভিডিওটিতে চ্যানেলটির উপস্থাপক আলোচিত দাবিটির উদ্দেশ্যে তিনটি ভিডিও দেখান। 

প্রথম ভিডিওটি দেখানোর আগে আলোচিত ভিডিওটিতে চ্যানেলটির উপস্থাপক বলেন, ‘আজকের ভিডিওটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়েছে। চলুন আমরা ভিডিও স্ক্রিনে চলে যাই পরবর্তীতে বিস্তারিত আলোচনা হবে…।’

ভিডিও যাচাই 

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে দেখানো প্রথম ভিডিওটির অনুসন্ধানে ‘Face The People’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৬ ডিসেম্বর “নির্বাচনে জনগনের ১৬০০ কোটি টাকা নষ্টের কী দরকার? বাহিনীকে কিছু দিবে, কিছু ভাগাভাগি : ফয়জুল হক” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অংশটুকু আলোচিত দাবিতে যুক্ত করূ হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটিতে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ তাদের নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেন। 

উক্ত ভিডিওর কোথাও খালেদা জিয়া গ্রেফতার বিষয়ক কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তী ভিডিওটির অনুসন্ধানে ভিডিওতে থাকা ‘BANGLA NEWS’ এর লোগোর সূত্র ধরে অনুসন্ধানে BANGLA NEWS নামক ফেসবুক পেজে গত ১৮ ডিসেম্বর “সেনাবাহিনীর ভয়ে সরকার!চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে যুক্ত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওতে ব্যারিস্টার ফুয়াদ সেনাবাহিনীর ভয়ে সরকার শীর্ষক মন্তব্য করেন এবং আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনীর অবস্থান নিয়ে আলোচনা করেন।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে দেখানো সর্বশেষ ভিডিওটির অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘NAYEEM ELLI’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ২০ ডিসেম্বর “বাংলাদেশকে চাপের আহ্বান আম্রিকার।। মার্কিন সংসদে একি প্রস্তাব” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে যুক্ত সর্বশেষ ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটিতে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কৌশল নিয়ে নিজের মনগড়া মতো কথা বলেছেন চ্যানেলটির উপস্থাপক। 

অর্থাৎ আলোচিত দাবিতে খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের কথা বলা হয়েও পুরো ভিডিওতে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ আলোচিত দাবিতে যুক্ত ভিডিওগুলোও কোনোপ্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই যুক্ত করা হয়েছে। 

এছাড়া খালেদা জিয়ার গ্রেফতারের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে তা নিয়ে দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যমে তথ্য প্রকাশ হওয়া অনুমেয়। তবে দেশীয় কোনো গণমাধ্যমে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের সাজা হয়। সেদিন থেকে তিনি কারাবন্দি হন। ২০২০ সালের মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে মুক্তি দেয়। এরপর দফায় দফায় তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে এবং তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে “এইমাত্র খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করলো সেনাবাহিনী” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, খালেদা জিয়া গ্রেফতার হননি। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার খালেদা জিয়া শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সেনাবাহিনী কর্তৃক পুলিশকে মারা, গণঅভ্যুত্থান এবং সেনাবাহিনীর দেশ চালানোর গুজব

সম্প্রতি, মাঠে নেমেই পুলিশকে পেটাচ্ছে সেনাবাহিনী আজ থেকে দেশ চালাবে সেনাবাহিনী– শীর্ষক শিরোনামে এবং মাঠে নেমেই পুলিশকে পেটাচ্ছে সেনাবাহিনী, গণঅভ্যুত্থান আজ থেকে দেশ চালাবে সেনাবাহিনী– শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচারিত হচ্ছে। 

ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, সেনাবাহিনী মাঠে নেমে পুলিশকে পেটাচ্ছে এবং আজ থেকে গণঅভ্যুত্থান। দেশ চালাবে সেনাবাহিনী। 

পুলিশকে মারা

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সেনাবাহিনী হাতে পুলিশের মার খাওয়া, গণঅভ্যুত্থান এবং সেনাবাহিনী কর্তৃক দেশ চালানোর দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি যুক্ত করে সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি একটি ভিডিও। ভিডিওটিতে একটি লাইভ টকশো, একটি সংবাদ প্রতিবেদন এবং বিএনপি’র রাজনৈতিক নেতা গোলাম মাওলা রনিকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়।

ভিডিও যাচাই- ১

আলোচিত ভিডিওটিতে একজনকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। বক্তব্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে kanaksarwarNEWS নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৪ ডিসেম্বর “আন ল’ফুল কমান্ড মানতে বাধ্য না সেনাবাহিনী-মেজর জেনারেল এহতেশাম-উল হক” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি টকশো খুঁজে পাওয়া যায়। (আর্কাইভ)

উক্ত টকশোটির একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

৫৩ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের টকশোটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ৪৩ সেকেন্ড ৩০ মিনিটের পরে উপস্থাপককে ২০১৮ সালে সেনাবাহিনীর এক সদস্যকে রাজনৈতিক কর্মী কর্তৃক লাথি দেওয়ার একটি ছবি নিয়ে আলোচনা করতে শোনা যায়।

অর্থাৎ, এখানে সেনাবাহিনীর হাতে পুলিশের মার খাওয়া বা গণঅভ্যুত্থান এবংকি সেনাবাহিনী কর্তৃক দেশ চালানো সংক্রান্ত কোনো কথা বা তথ্য উপস্থাপন করতে শোনা যায়নি।

ভিডিও যাচাই- ২ 

আলোচিত ভিডিওটির এই অংশে একটি সংবাদ প্রতিবেদন প্রচার করা হয় এবং সেখানে জাতীয় গণমাধ্যম কালবেলা’র লোগো দেখা যায়। সেই লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধানে কালবেলা’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৩ ডিসেম্বর “ভোটের আগে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া। (আর্কাইভ

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনটি হুবহু আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচার করা হয়। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে পুলিশ-র‌্যাব ও বিজিবিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী মাঠে থাকবে ১৩ দিন। আগামী ৭ জানুয়ারি হবে ভোটগ্রহণ। এর আট দিন আগে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা ভোটের মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন। বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক পরিপত্রে এসব বাহিনীর দায়িত্ব সম্পর্কেও বলা হয়েছে।

অর্থাৎ, এই প্রতিবেদনেও সেনাবাহিনীর হাতে পুলিশের মার খাওয়া বা গণঅভ্যুত্থান এবংকি সেনাবাহিনী কর্তৃক দেশ চালানো সংক্রান্ত কোনো তথ্য উপস্থাপন করতে শোনা যায়নি। 

ভিডিও যাচাই- ৩

আলোচিত ভিডিওটির এই অংশে বিএনপি’র নেতা গোলাম মাওলা রনিকে বক্তব্য দিতে শোনা যায়। সেই বক্তব্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে গোলাম মাওলা রনির ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৪ ডিসেম্বর “নির্বাচন বানচাল নিয়ে আমেরিকার গোপন দলিল ফাঁস! রাশিয়ার গোয়েন্দা রিপোর্টে আ.লীগে অস্থিরতা!” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। (আর্কাইভ

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে বিএনপি’র নেতা গোলাম মাওলা রনিকেও সেনাবাহিনীর হাতে পুলিশের মার খাওয়া বা গণঅভ্যুত্থান এবংকি সেনাবাহিনী কর্তৃক দেশ চালানো সংক্রান্ত কোনো কথা বা তথ্য উপস্থাপন করতে শোনা যায়নি।

পাশাপাশি, দাবিগুলো যাচাইয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সামাজিক মাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

একটি দেশে গণঅভ্যুত্থান বা সেনাবাহিনীর কাছে দেশ চালানোর সিদ্ধান্ত হলে অবশ্যই তা গণমাধ্যমে সংবাদ হওয়ার কথা। কিন্তু উক্ত দাবিগুলো নিয়ে গণমাধ্যমে কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। 

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে “মাঠে নেমেই পুলিশকে পেটাচ্ছে সেনাবাহিনী আজ থেকে দেশ চালাবে সেনাবাহিনী”– শীর্ষক শিরোনামে এবং “মাঠে নেমেই পুলিশকে পেটাচ্ছে সেনাবাহিনী, গণঅভ্যুত্থান আজ থেকে দেশ চালাবে সেনাবাহিনী”– শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, সেনাবাহিনীর হাতে পুলিশের মার খাওয়া, গণঅভ্যুত্থান এবং দেশ চালাবে সেনাবাহিনী শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আমেরিকার চাপে নির্বাচন বন্ধ হওয়া এবং সিইসির ক্ষমা চাওয়ার দাবিটি মিথ্যা

সম্প্রতি, আমেরিকার চাপে নির্বাচন বন্ধ, ক্ষমা চাইলো সিইসি শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

নির্বাচন বন্ধ

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আমেরিকার চাপে নির্বাচন বন্ধ হয়নি এবং সিইসি  ক্ষমা চায়নি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই ০১

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায় ৮ মিনিট ২ সেকেন্ডের ভিডিওটির শুরুতে VOA Bangla এর ইউটিউব চ্যানেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের একটি সাক্ষাতকার লক্ষ্য করা যায়। 

Screenshot: Facebook

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া VOA Bangla এর ওয়েবসাইটে গত ১৯ ডিসেম্বর “হাবিবুল আউয়াল: তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে কোন মন্তব্য করা এ পর্যায়ে সমীচীন হবে না” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল VOA Bangla এ বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে সাক্ষাতকার দেন।

সাক্ষাতকারের ৮ মিনিট ০৩ সেকেন্ডে উপস্থাপিকা জনাব হাবিবুল আউয়ালকে জিজ্ঞাসা করেন, এবারের নির্বাচনের কেন্দ্র গুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে কিনা। জবাবে তিনি বলেন, “না এবারের নির্বাচনে থাকছে না”।

পরবর্তীতে উপস্থাপিকা সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাইবান্ধায় যখন নির্বাচন হয়েছিলো তখন আমাদের ৫ থেকে ১০ হাজার সিসিটিভি দরকার ছিলো। এখন ২ লক্ষ ৬০ হাজার বুথে নির্বাচন হবে। আমাদের সিসিটিভি ক্যামেরা লাগবে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ। এখন সাড়ে ৩ লক্ষ সিসিটিভি ক্যামেরা মনিটরিং করা আমাদের পক্ষে এই কেন্দ্রে বসে, সম্ভব হবে না। বিষয়টা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছিলাম। তবে বস্তুগত ভাবেই এটা সম্ভব হবে না বলেই আমরা সেই পরিকল্পনাটা পরিত্যাগ করেছি।

উপস্থাপিকা সিসিটিভি ক্যমেরা বাতিলের সিদ্ধান্ত কে নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “এটা আমাদেরই সিদ্ধান্ত”।

ভিডিও যাচাই ০২

আলোচিত ভিডিওতে রাষ্ট্রপতির দেওয়া বক্তব্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে বেসরকারি টেলিভিশন সময় টিভি এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৮ ডিসেম্বর “সুপ্রিম কোর্ট দিবস অনুষ্ঠানে যে কারণে ক্ষমা চাইলেন রাষ্ট্রপতি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনের একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, গত ১৮ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন সুপ্রিম কোর্টের ইনার কোর্ট ইয়ার্ডে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দেওয়ার শুরুতে বলেন, “আমি রাষ্ট্রপতি হিসেবে কি বক্তব্য দিবো জানিনা। কোথায় কোনো ভুল হয়ে গেলে ক্ষমা করে দিবেন। আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থী”।

মূলত, গত ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল VOA Bangla এ বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে সাক্ষাতকার দেন। উক্ত সাক্ষাতকারে নির্বাচনের কেন্দ্র গুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে কিনা এমন প্রশবের জবাবে তিনি বলেন, “না এবারের নির্বাচনে থাকছে না”। উপস্থাপিকা নাথাকার কারণ জিজ্ঞাস করলে হাবিবুল আউয়াল বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাড়ে ৩ লক্ষ সিসিটিভি ক্যামেরা প্রয়োজন। এই সাড়ে ৩ লক্ষ মনিটরিং করা আমাদের পক্ষে এই কেন্দ্রে বসে, সম্ভব হবে না। বিষয়টা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছিলাম। তবে বস্তুগত ভাবেই এটা সম্ভব হবে না বলেই আমরা সেই পরিকল্পনাটা পরিত্যাগ করেছি।” এছাড়া গত ১৮ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন সুপ্রিম কোর্টের ইনার কোর্ট ইয়ার্ডে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দেওয়ার শুরুতে বলেন, “আমি রাষ্ট্রপতি হিসেবে কি বক্তব্য দিবো জানিনা। কোথায় কোনো ভুল হয়ে গেলে ক্ষমা করে দিবেন। আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থী”। সম্প্রতি এসব প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন উক্ত বক্তব্য সংগ্রহ করে একই ভিডিওতে যুক্ত করে আমেরিকার চাপে নির্বাচন বন্ধ এবং সিইসি ক্ষমা চেয়েছে দাবিতে ভিডিওটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, আমেরিকার চাপে নির্বাচন বন্ধ এবং সিইসি এর ক্ষমা চাওয়ার দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভারতের আমুল কোম্পানির শরম নামে কোনো চিজের প্যাকেট নেই  

0

সম্প্রতি, ভারতের বহুজাতিক খাদ্য পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আমুল (Amul) এর বিষয়ে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটির লোগো ব্যবহার করে শরম (Sharam) নামে তৈরি একটি চিজের প্যাকেট প্রতিষ্ঠানটি বাজারে এনেছে শীর্ষক দাবিতে এ সংক্রান্ত একটি ছবি প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

শারমিন সুলতানা জয়া (Sharmin Sultan Joya) নামে এক ব্যক্তি উক্ত ছবি ফেসবুকে পোস্ট (আর্কাইভ) করেছেন যাতে এখন অবধি ৩৫ হাজারের মানুষ রিয়েক্ট দিয়েছেন৷ পোস্টটি শেয়ার করা হয়েছে ৫ হাজার ৭০০ এর অধিক বার। 

আমুল কোম্পানির

তাছাড়া, ব্র্যান্ড নিয়ে কাজ করে ব্র্যান্ড প্র্যাকটিসনারস বাংলাদেশ (Brand Practitioners Bangladesh) নামে একটি ফেসবুক গ্রুপেও একই ছবি পোস্ট (আর্কাইভ) করা হয়েছে। এই পোস্টে আমুলের মার্কেটিংয়ের প্রশংসা করা হয়েছে।

একই ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকের আরো কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আমুল কোম্পানির শরম নামে কোনো চিজের প্যাকেট নেই বরং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই এর মাধ্যমে আলোচিত চিজের প্যাকেটের ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে এ সংক্রান্ত সম্ভাব্য প্রথম দাবিটি এক্সে (সাবেক টুইটার) খুঁজে পাওয়া যায়। অঙ্কিত সাওয়ান্ত (Ankit Sawant) নামে ভারতের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে গত ১৯ ডিসেম্বর বিকেলে ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, শরম নামেরও চিজ রয়েছে। তবে ছবিটির কোনো সূত্র তিনি উল্লেখ করেননি তার এই টুইটে। 

Screenshot: X

অঙ্কিতের এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে পরদিন (২০ ডিসেম্বর) আমুলের অফিশিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টের এ সংক্রান্ত একটি টুইট রিটুইট করা হয় যাতে তিনি উল্লেখ করেছেন যে এটি এআই দিয়ে তৈরি একটি ছবি। 

Screenshot: X

সেদিনই আরেক রিটুইটে জনাব অঙ্কিত জানান, তিনিই ছবিটি তৈরি করেছিলেন। ছবিটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় তিনি আমুলের কাছে এ বিষয়ে দুঃখও প্রকাশ করেছেন। 

Screenshot: X

আমুলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে যে টুইটটি করা হয়েছে (যা অঙ্কিত সাওয়ান্ত রিটুইট করেছেন) তাতে বলা হয়েছে, ভাইরাল ছবিটি আমুলের কোনো চিজের প্যাকেটের নয়৷ 

Screenshot: X

আমুল তাদের ফেসবুক পেজেও একই বিষয়ে পোস্ট করেছে। দেখুন এখানে। 

মূলত, গত ১৯ ডিসেম্বর অঙ্কিত সাওয়ান্ত নামে এক ব্যক্তি এক্সে শরম নামে ভারতের খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আমুলের একটি কথিত চিজের প্যাকেটের ছবি পোস্ট করেন যা পরবর্তীতে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে আমুলের চিজের প্যাকেট দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে জেনেছে, আমুলের শরম নামে কোনো চিজের প্যাকেট নেই, যা আমুলের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। অঙ্কিত সাওয়ান্ত এআই দিয়ে ছবিটি তৈরি করেছিলেন, যা তিনি নিজেই আরেক টুইটে জানিয়েছেন। 

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি প্যাকেটের ছবিকে শরম নামে আমুলের চিজের প্যাকেট রয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Amul : X tweet
  • Ankit Sawant: X Tweet 
  • Rumor Scanner’s own investigation 

নিক্সন চৌধুরী নির্বাচনী প্রচারণায় ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে পালিয়ে যাওয়া বিষয়ক মন্তব্য করেননি

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র (ঈগল) প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের একটি বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে জনাব নিক্সনকে বলতে শোনা যায়, “নির্লজ্জের মতো পালাইয়ে যাইয়েন না। আমি আপনের সাথে ইলেকশন করতে চাই। আমি নির্বাচন করতে চাই কারণ আমার দেখতে হবে। দশ বছর আমি কষ্ট করসি। আমার কামাইটা কী। আপনি পালাই গেলে আমি খেলবো কার সাথে কাকা? আমার আদরের কাকা, আমার সম্মানের কাকা, আমার ইজ্জতের কাকা, একটু খেলবেন না? আপনি তো কয়েক মিটিংয়ে কইসেন, খেলা হবে। খেলা আবার বিশ মিনিটে ছাইড়া দিয়েন না৷ পুরা ৯০ মিনিট খেইলেন। আপনার কাছে হাত জোর কইরা আমি অনুরোধ করি কাকা, খেলা ছাইড়া পিছপা দিয়ে পলাইয়া যাইয়েন না। যেমন অবস্থা হইসে তালমাতাল, মনে হয় না, পুরা সময় খেলতে পারবেন।….”

ভিডিওটি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উক্ত কথাগুলো বলে চ্যালেন্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন নিক্সন চৌধুরী।

এইতো সময় নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে প্রচারিত ভিডিওটি এখন অবধি দশ হাজারের অধিক মানুষ দেখেছেন। 

নিক্সন চৌধুরী

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত বক্তব্যটি নিক্সন চৌধুরী ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে দেননি বরং একই আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহকে উদ্দেশ্য করে উক্ত বক্তব্য দেন তিনি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ফেসবুকে বাংলাদেশ নিউজ টিউব (Bangladesh News Tube) নামে একটি পেজে গত ২১ ডিসেম্বর প্রকাশিত উক্ত বক্তব্যের একটি লাইভ ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

৯ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের ভিডিওতে ১ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড সময় থেকে নিক্সনকে বলতে শোনা যায়, একটা দুইটা কাজী কেন হাজার কাজীও নিক্সন চৌধুরীর সামনে আইসা দাঁড়ানো ক্ষমতা নাই। ফাঁপরবাজি পরে করেন। পালানোর সময় হয়ে গেছে। পালানোর হুইসেল বাজছে। আমরা কিন্তু টের পাই, রাজনীতি করি।” 

এরপরই আলোচিত মন্তব্যগুলো করেন তিনি। 

আমরা লাইভ ভিডিওটির পুরো বক্তব্য শুনে দেখেছি। নিক্সন চৌধুরী তার বক্তব্যে বেশ কয়েকবার তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহর নাম উচ্চারণ করলেও ওবায়দুল কাদেরের নাম বা তার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। 

প্রথম আলোর এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, ফরিদপুরের ভাঙ্গার কাউলীবেড়া ইউনিয়নের শেখপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী প্রচারণায় কাজী জাফর উল্যাহর বিষয়ে এমন মন্তব্য করেন আওয়ামী যুবলীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য। 

উক্ত বক্তব্যের বিষয়ে গণমাধ্যমের আরো কিছু সংবাদ দেখুন ডেইলি স্টার, ইনকিলাব।

মূলত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। এই আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ। গত ২১ ডিসেম্বর ফরিদপুরে এক নির্বাচনী সভায় নিক্সন চৌধুরীকে জাফর উল্যাহকে উদ্দেশ্য করে বলেন, নির্লজ্জের মতো পালাইয়ে যাইয়েন না। আমি আপনের সাথে ইলেকশন করতে চাই। আমি নির্বাচন করতে চাই কারণ আমার দেখতে হবে। দশ বছর আমি কষ্ট করসি। আমার কামাইটা কী। আপনি পালাই গেলে আমি খেলবো কার সাথে কাকা? আমার আদরের কাকা, আমার সম্মানের কাকা, আমার ইজ্জতের কাকা, একটু খেলবেন না? তবে ইন্টারনেটে এ সংক্রান্ত ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে যে এই বক্তব্যটি নিক্সন ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, কাজী জাফর উল্যাহকে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এই আসনে আরো চার প্রার্থী রয়েছেন।

সুতরাং, নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে জাফর উল্যাহকে উদ্দেশ্য করে নিক্সন চৌধুরীর দেওয়া বক্তব্যকে ওবায়দুল কাদেরকে দেওয়া বক্তব্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সেনাবাহিনী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি

সম্প্রতি, “হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলো সেনাবাহিনী, রাতেই সারাদেশে সেনা মোতায়ন” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, সেনাবাহিনী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই-১

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Channel 24 এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ২৭ মে “যুদ্ধ করতে চান? ৩০ মিনিটও টিকবেন না’ | Rangamati | Army Commander | Channel 24” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, পার্বত্য নিউজ এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালে প্রকাশিত “পার্বত্য কোটা উপজাতি, অউপজাতি সবার জন্য প্রযোজ্য হতে হবে- মে. জে. সাইফুল আবেদীন” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন ২০২১ সালের ২৬ মে রাঙামাটিতে এপিবিএন আঞ্চলিক কার্যালয় উদ্বোধনকালে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। সেসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা যদি যুদ্ধ করতে চান, আসুন যুদ্ধ করি । আপনারা এক হাজার দুই হাজার তিন হাজার লোক নিয়ে, আর এই ক’টা অস্ত্র নিয়ে আমাদের সাথে যদি যুদ্ধ করতে চান, আধা ঘন্টাও টিকতে পারবেন না।”

অর্থাৎ, সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীনের বক্তব্যটি পুরোনো এবং ভিন্ন প্রেক্ষাপটে দেওয়া।

ভিডিও যাচাই-২

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Cumillar Kagoj এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ২৪ মার্চ “কুমিল্লায় মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী, পুরোদমে কাল থেকে-” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, কালের কণ্ঠ এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ২৪ মার্চ “কুমিল্লায় মাঠে সেনাবাহিনী, পুরোদমে কাল থেকে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Source: কালের কণ্ঠ

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে কুমিল্লায় মাঠে নামে সেনাবাহিনী। সেসময় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর ৩১ বীরের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহাবুব আলম বলেন, কুমিল্লা শহরে একটি ক্যাম্প এবং বাকিগুলো অন্য এমন স্থানে করা হবে যাতে একটি স্থান থেকে দুই-তিনটি উপজেলায় সহজে যাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, সেনা কর্মকর্তার ভিডিওটি করোনা ভাইরাস মহামারির সময়ের।

ভিডিও যাচাই-৩

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, Bangla Info Tube এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর “নির্বাচনে মাঠে সেনাবাহিনী! ! Live With Shahed Alam I Bangladesh Election talk I Vote 2018” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহৃত ফুটেজগুলো পুরোনো এবং ভিন্ন ভিন্ন প্রসঙ্গের। 

উল্লেখ্য, স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানের নিমিত্তে ইন এইড টু দ্যা সিভিল পাওয়ারের আওতায় সমগ্র বাংলাদেশের ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় আগামী ৩ জানুয়ারি থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবে।

মূলত, আগামী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সুশৃঙ্খলভাবে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড পরিচালনার নিমিত্তে স্থানীয় বেসরকারি প্রশাসনকে সহায়তার জন্য সারাদেশে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে নির্বাচন বর্জন করে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি এবং সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছে। এসব ঘটনায় প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের তথ্য ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় “হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলো সেনাবাহিনী, রাতেই সারাদেশে সেনা মোতায়ন” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। অধিক ভিউ পাবার আশায় পুরোনো ভিন্ন ভিন্ন ভিডিওর খণ্ডাংশ যুক্ত করে করে তাতে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবির ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী যুদ্ধ ঘোষণা করেছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

নির্বাচন হবে না শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি প্রধান নির্বাচন কমিশনার

সম্প্রতি, “ভোট চাইতে গিয়ে ঝাড়ু পিটা খেলো আ.লীগ নির্বাচন হবে না বললো সিইসি” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

নির্বাচন হবে না

ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ

উক্ত দাবিতে প্রচারিত সর্বাধিক ভাইরাল ভিডিওটি গত ২৫ ডিসেম্বর ‘Bd VIP News’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রচার করা হয়। ভিডিওটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার আগ অবধি প্রায় ৩ লাখ ২৮ হাজার ৮৩৪ বার দেখা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটিতে প্রায় ১২ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ভাইরাল পোস্টটির মন্তব্যঘর ঘুরে পোস্টটির দাবির প্রেক্ষিতে অধিকাংশ নেটিজেনকে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচন হবে না শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি এবং ভোট চাইতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঝাড়ু পিটা খাওয়ার দাবিটিও সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি যুক্ত করে তৈরি করা একটি ভিডিও প্রতিবেদন। যেখানে চ্যানেল ২৪, এটিএন বাংলার একটি ভিডিও প্রতিবেদনের খণ্ডাংশ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর নেত্রী রুমিন ফারহানার একটি ভিডিও দেখানো হয়।

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, ‘দর্শক এবার ভোট চাইতে নিজ এলাকায় গেলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওবায়দুল কাদের সাহেব ভোট চাইতে যাওয়াই কিন্তু তার সাথে অনেক নেতাকর্মী ছিলো। এদিকে আওয়ামী লীগের ভোট চাইতে যাওয়াই আওয়ামীলীগ সমর্থকদের কঠিনভাবে ধাওয়া করলেন গ্রামের মহিলারা। ঝাড়ু নিয়ে যে দৌড়ানি দিয়েছেন সেটা নিয়ে ভিডিও এখন সোশাল মিডিয়াতে ভাইরাল…।’ 

ভিডিও যাচাই 

আলোচিত ভিডিওটিতে প্রথমেই চ্যানেল ২৪ এর একটি ভিডিও প্রতিবেদনের খণ্ডাংশ দেখানো হয়। উক্ত ভিডিওটির অনুসন্ধানে চ্যানেল ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৪ ডিসেম্বর “চট্টগ্রাম -১২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের ঝাড়ু নিয়ে ধাওয়া দিলো নৌকার সমর্থকরা। Channel 24” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো প্রথম ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।  

Video Comparison : Rumor Scanner 

পরবর্তী ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কালবেলা’র ওয়েবসাইটে গত ২৫ ডিসেম্বর “পটিয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের ঝাড়ু নিয়ে ধাওয়া” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর (ঈগল) কর্মীরা গত ২৪ ডিসেম্বর উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের অলিরহাট এলাকায় গণসংযোগ করতে গেলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর কিছু নারী সমর্থক তাদের ঝাড়ু নিয়ে ধাওয়া করে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কিছুক্ষণ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। 

উক্ত ঘটনায় ঝাড়ু নিয়ে ধাওয়া করার ভিডিওটিকেই আলোচিত ভিডিওটিতে ‘ভোট চাইতে গিয়ে ঝাড়ু পিটা খেলো আ.লীগ ‘শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।  

পরবর্তী ভিডিওটির অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে এটিএন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৪ ডিসেম্বর “ভোটের পরিবেশে শতভাগ মন দিতে পারছেন না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী! ATN News “ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনের একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা দ্বিতীয় ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নির্বাচন কমিশনার মোঃ আলমগীর আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ে রাজধানীর নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

আলোচিত ভিডিওতে সর্বশেষ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর নেত্রী রুমিন ফারহানার একটি ভিডিও দেখানো হয়। উক্ত ভিডিওটির অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘Rumeen’s Voice’ নামক ইউটিউব চ্যনেলে গত ২৪ ডিসেম্বর “এবার শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন? Rumeen’s Voice। রুমিন ফারহানা। Rumeen Farhana” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা সর্বশেষ ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটিতে রুমিন ফারহানা আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বিষয়ে নিজস্ব মতামত ব্যাক্ত করেন। 

অর্থাৎ ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণে এটি স্পষ্ট যে আলোচিত ভিডিওতে সিইসি কর্তৃক নির্বাচন হবে না শীর্ষক মন্তব্যের দাবি কিংবা ভোট চাইতে গিয়ে ঝাড়ু পিটা খেলো আ.লীগ শীর্ষক দাবি থাকলেও ভিডিওতে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না শীর্ষক কোনো মন্তব্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার করেছেন বিষয়ক কোনো সংবাদ বা তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি এবং সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছে। এসব ঘটনায় প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের তথ্য ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচন হবে না শীর্ষক মন্তব্য করেছেন এবং ভোট চাইতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঝাড়ু পিটা খাওয়ার দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিগুলো সঠিক নয়। অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ ও ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিগুলো প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

সুতরাং, প্রধান নির্বাচন কমিশনার আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ভারতে আবিষ্কৃত নতুন প্রজাতির ব্যাকটেরিয়ার নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নয়

সম্প্রতি, ভারতে আবিষ্কৃত হয়েছে নতুন প্রজাতির একটি ব্যাকটেরিয়া। গবেষকরা এর নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি কতিপয় গণমাধ্যমসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন ডিবিসি নিউজ, বাংলাদেশ জার্নাল, বিবিএস বাংলা (ফেসবুক)। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজের পোস্টসহ অন্যান্য পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে টিকটকের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতে আবিষ্কৃত নতুন প্রজাতির ব্যাকটেরিয়ার নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নয় বরং সংশ্লিষ্ট গবেষকরা এর নাম দিয়েছেন ‘প্যান্টোইয়া টেগোরি’।‌

এ বিষয়ে জানতে কিওয়ার্ড সার্চ করে ভারতের সংবাদমাধ্যম NDTV এর ওয়েবসাইটে গত ২৪ ডিসেম্বর Pantoea Tagorei: Visva-Bharati University Names Plant-Beneficial Bacteria After Rabindranath Tagore শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানি বিভাগের মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবের অধ্যাপক বোম্বা দাম ও তার পাঁচ সহকারী গবেষক পাঁচ বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে একটি ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার করেছেন। এর নামকরণ করা হয়েছে ‘প্যান্টোইয়া টেগোরি’।‌ 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে এই ব্যাকটেরিয়ার নামকরণ কেন এমন প্রশ্নে গবেষকরা বলছেন, রবিঠাকুর নিজে গাছপালা পছন্দ করতেন এবং কৃষিকাজে তার নিজের নানা রকমের অবদান রয়েছে। কৃষির উন্নতির জন্য তিনি বিজ্ঞানসাধনায় উৎসাহও দিতেন। 

অনুসন্ধানে গবেষণা দলটির সদস্য অরজিত মিশ্র কর্তৃক তার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি টুইট খুঁজে পাওয়া যায়। 

টুইটে তিনি জানান, ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কারের ঘটনাটির মাধ্যমে তারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে সম্মান জানাতে তার নামের সাথে মিল রেখে ‘প্যান্টোইয়া টেগোরি’ নাম দিয়েছেন৷ 

Screenshot: X

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার সংক্রান্ত এই গবেষণা প্রতিবেদনটি ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ মাইক্রোবায়োলজিতে (Indian Journal of Microbiology) প্রকাশিত হয়েছে। 

পরবর্তীতে জার্নালটিতে গত ১৪ ডিসেম্বর Pantoea tagorei sp. nov., a Rhizospheric Bacteria with Plant Growth-Promoting Activities শিরোনামে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Springer 

এই প্রতিবেদনেও ব্যাকটেরিয়াটির নামের বিষয়ে একই তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়।

মূলত, ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক সম্প্রতি একটি ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কারের কথা জানিয়েছেন যার নামকরণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামের সাথে মিল রেখে রাখা হয়েছে ‘প্যান্টোইয়া টেগোরি’।‌ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি সম্মান জানাতে এই নামকরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। এই ঘটনাকে ব্যাকটেরিয়াটির নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখা হয়েছে শীর্ষক দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, ভারতে নতুন আবিষ্কৃত ব্যাকটেরিয়ার নাম ‘প্যান্টোইয়া টেগোরি’ দেওয়া হলেও এর নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দাবিতে কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

জ্বালানী তেলের অভাবে নয়, ৮টি ট্রেন বন্ধ নাশকতার শঙ্কায় 

0

সম্প্রতি জ্বালানী তেলের অভাবে ৮ টি ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

৮টি ট্রেন বন্ধ

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জ্বালানী তেলের অভাবে নয় বরং সাম্প্রতিক সময়ে ট্রেনে নাশকতা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে নিরাপত্তার কারণে উক্ত ৮টি ট্রেনের চলাচল স্থগিত রাখা হয়েছে।  

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে গত ২২ ডিসেম্বর আটটি ট্রেনের চলাচল স্থগিত, দুটি সীমিত শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

এই প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, চলমান হরতাল-অবরোধে নাশকতা এড়াতে চার জোড়া ট্রেনের চলাচল স্থগিত করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। চলাচলের পথ সীমিত করা হয়েছে এক জোড়া ট্রেনের। এসব ট্রেনের সব কটিই রাতে চলাচল করে। 

প্রথম আলো বলছে, রেলের হিসাবে এক জোড়া ট্রেন হলো গন্তব্য স্থানে যাওয়া ও আসা। অর্থাৎ চার জোড়া ট্রেনের চলাচল স্থগিত মানে আটটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল হলো। 

রেলের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান প্রথম আলোকে বলেছেন, এটা বড় কোনো ঘটনা নয়। রাতে কিছু ট্রেনে যাত্রী পাওয়া যায় না। এ ছাড়া হরতাল-অবরোধও আছে। সার্বিক বিবেচনা করে কিছু ট্রেনের যাত্রা সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত রাখা হচ্ছে। আর একটি ট্রেনের যাত্রা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। 

পশ্চিম অঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার গণমাধ্যমকে বলেছেন, মূলত ট্রেনগুলো রাতে যাত্রা করে। আমরা নিরাপত্তা দিতে পারছি না। এজন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। নিরাপদ ট্রেন করতে যা যা করার দরকার অমরা মিটিং করে সেটি করছি।

এ বিষয়ে আরো কিছু গণমাধ্যমের সংবাদ দেখুন আজকের পত্রিকা, কালবেলা, যমুনা টিভি। 

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ট্রেনগুলো বন্ধ রাখার বিষয়ে নাশকতার শঙ্কা ব্যতিত জ্বালানী তেলের অভাব বা অন্য কোনো কারণ উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত নভেম্বর থেকে হরতাল-অবরোধে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু ট্রেনে আগুন দেওয়াসহ নানা ধরণের নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। এরই প্রেক্ষিতে নিরাপত্তার শঙ্কায় সম্প্রতি আটটি ট্রেনের চলাচল সাময়িক বন্ধ রেখেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। উক্ত ঘটনাকেই জ্বালানী তেলের অভাবে ট্রেনগুলোর চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে পুলিশ কর্তৃক ট্রেনে আগুন দেওয়ার ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত একটি ভিডিওর বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, নিরাপত্তার শঙ্কায় দেশের আটটি ট্রেনে চলাচল বন্ধ রাখার ঘটনাকে জ্বালানী তেলের অভাবে ট্রেনগুলোর চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র