Home Blog Page 561

সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের পদত্যাগের গুজব 

0

সম্প্রতি, ক্ষেপেছে সেনাবাহিনী পদত্যাগ করতে শুরু করেছে এমপি মন্ত্রীরা পাখির মত গুলি করে হত্যা শুরু শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।

মন্ত্রীদের পদত্যাগের

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি দেখা হয়েছে ১১ হাজার বার। ভিডিওটিতে সাড়ে চারশতবারের বেশি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের নবগঠিত সরকারের মন্ত্রী এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদের কোনো সদস্য পদত্যাগ করেননি বরং ভিন্ন প্রেক্ষাপটের পূর্বে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটিতে কোথাও মন্ত্রী বা সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের দাবি সম্পর্কিত প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। এমনকি ভিডিওটিতে আলোচিত দাবির সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কোনো ভিডিও কিংবা বক্তব্যেরও উল্লেখ পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ ভিডিওটি’র শিরোনাম ও থাম্বনেইলে প্রচারিত দাবিটির সাথে বিস্তারিত অংশের অসামঞ্জস্যতা রয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত দাবির বিষয়ে আরও অনুসন্ধানে ভিডিওটিতে দেখানো ভিডিও ক্লিপগুলোর বিষয়ে আলাদাভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই ০১

আলোচিত ভিডিওটিতে প্রথম দিকের ক্লিপটিতে প্রদর্শিত বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম দেশ টিভি এর লোগো’র সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া Desh TV এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৮ জানুয়ারি “আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন কায়েম করেছে: মঈন খান” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনের একটি অংশই আলোচিত ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, আওয়ামী লীগ দেশে এক দলীয় বাকশাল শাসন কায়েম করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেছেন, ‘সারা বিশ্ব বলছে গত ৭ জানুয়ারি যে নির্বাচন হয়েছে তা সুষ্ঠু হয়নি।’ গত ২৮ জানুয়ারি রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণফোরাম এবং বাংলাদেশ পিপলস পার্টির আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

তবে উক্ত প্রতিবেদনে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব ছাড়ার ব্যাপারে কোনো তথ্য উপস্থাপিত হয়নি।

ভিডিও যাচাই ০২

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধান করে, Sheershanews নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ৭ নভেম্বর “বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ব্যাপকহারে গ্রেপ্তার করায় উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর একটি অংশই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বিরোধী দলের অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। 

আলচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর আরও একটি ভিডিও ফুটেজে বিজিবি’র সিপাহি রহিস উদ্দিনের মৃত্যু নিয়ে কথা বলা হয়। উক্ত বিষয়ের সাথে আলোচিত দাবির সাথে কোনো সম্পর্ক নেই।

পরবর্তীতে আলোচিত দাবির বিষয়ে গুগলে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ওয়েবসাইটে গত ১ ফেব্রুয়ারি “ঝিনাইদহ-১ আসনে আব্দুল হাইয়ের এমপি পদ স্থগিত” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, হাইকোর্ট ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনের নির্বাচনী ফলাফলের গেজেট দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছে। গত ০১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামানের একক বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন।

এই উক্ত ঘটনার সাথেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর কোনো সম্পর্ক নেই।

এছাড়া, দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীদের পদত্যগের দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান গত ২৮ জানুয়ারি রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণফোরাম এবং বাংলাদেশ পিপলস পার্টির আলোচনায় বলেন, আওয়ামী লীগ দেশে এক দলীয় বাকশাল শাসন কায়েম করেছে। সারা বিশ্ব বলছে গত ৭ জানুয়ারি যে নির্বাচন হয়েছে তা সুষ্ঠু হয়নি। এই তথ্যের ভিত্তিতে সেসময় বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া দেশ টিভিতে সংবাদ প্রচারিত হয়। এছাড়া একই বছরের নভেম্বরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বিরোধী দলের অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করায় জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করে। এই তথ্যের ভিত্তিতে সেসময় শীর্ষ সংবাদ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও প্রচারিত হয়। সম্প্রতি, উক্ত পৃথক দুইটি সংবাদের ভিডিও ফুটেজ একত্রে যুক্ত করে জাতীয় সংসদের সদস্য ও মন্ত্রীরা পদত্যাগ করছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, সাম্প্রতিক সময়ে সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের পদত্যাগের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

সুতরাং, ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটের পুরোনো সংবাদ প্রতিবেদনের ফুটেজ যুক্ত করে জাতীয় সংসদের সদস্য ও মন্ত্রীরা পদত্যাগ করছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়ার গুজব

গত ০৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে উক্ত নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। তবে গতকাল ৩০ জানুয়ারি Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘সংসদ ভেঙ্গে দিলো রাষ্ট্রপতি, পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা দিলো সিএসসি (সিইসি)’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘সংসদে হাসিনাকে লাল কার্ড, পুনরায় নির্বাচন ঘোষণা দিলো রাষ্ট্রপতি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি কর্তৃক

ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ৬২ হাজার বার। ভিডিওটিতে ১ হাজারের বেশি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

পরবর্তীতে আরও একটি ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হয়। সেটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

আলোচিত ভিডিওটি’র শিরোনাম ও থাম্বনেইলে প্রচারিত দাবিগুলো হল-

  • রাষ্ট্রপতি পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন (থাম্বনেইল)
  • রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দিয়েছেন (শিরোনাম)
  • সিইসি পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন (শিরোনাম)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন জাতীয় সংসদ ভেঙে দেননি এবং রাষ্ট্রপতি কিংবা সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল পুনরায় নির্বাচন গ্রহণের ঘোষণাও দেননি বরং রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার একটি ভিডিও ক্লিপের সাথে ভিন্ন প্রেক্ষাপটের পুরোনো কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি  তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। আলোচিত ভিডিওটি’র শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে উল্লেখিত দাবিগুলোর সাথে ভিডিওটি’র বিস্তারিত অংশের মিল পাওয়া যায়নি। উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে কোথাও রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া কিংবা রাষ্ট্রপতি ও সিইসি কর্তৃক পুনরায় নির্বাচন গ্রহণের উদ্যোগের বিষয়ে কোনো তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া উক্ত ভিডিওটিতে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের কোনো ভিডিও ক্লিপও দেখা যায়নি। 

ভিডিওতে প্রচারিত এই দাবিগুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

অনুসন্ধানের এপর্যায়ে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপগুলোর বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই- ০১

আলোচিত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘আরটিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর ‘নওগাঁ-২ আসনে ভোট স্থগিত’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

এই ভিডিওটি’র একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র শুরুর দিকের একটি ভিডিও ক্লিপের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটিতে দেখা যায়, নওগাঁ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হকের মৃত্যু হওয়ায় ওই আসনে ভোট গ্রহণ স্থগিতের বিষয়ে সেসময় গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্বের এবং এর সাথে আলোচিত দাবিগুলোর কোনো সম্পর্ক নেই।

ভিডিও যাচাই- ০২

আলোচিত ভিডিওটি থেকে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের বক্তব্যের ফুটেজ অংশের কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘আরটিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩০ জানুয়ারি ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

এই ভিডিওটি’র একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের বক্তব্যের অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটিতে গতকাল (৩০ জানুয়ারি) শুরু হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে ভাষণ দিতে দেখা যায়। তিনি দীর্ঘ বক্তব্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, দেশের উন্নয়ন, সংসদ ও সংসদ সদস্যদের ভূমিকাসহ নানা বিষয় তুলে ধরেন।

অর্থাৎ, রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের এই ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবির কোনো মিল নেই।

মূলত, গত ০৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত ২৯৮ আসনের ফলাফলে ২২২ টি আসন লাভ করে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল ৩০ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। এরই মধ্যে ৩০ জানুয়ারি Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘সংসদ ভেঙ্গে দিলো রাষ্ট্রপতি, পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা দিলো সিএসসি (সিইসি)’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘সংসদে হাসিনাকে লাল কার্ড, পুনরায় নির্বাচন ঘোষণা দিলো রাষ্ট্রপতি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার একটি ভিডিও ক্লিপের সাথে ভিন্ন প্রেক্ষাপটের পুরোনো কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে তাতে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল বসিয়ে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি ও সিইসিকে জড়িয়ে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং রাষ্ট্রপতি ও সিইসি কর্তৃক পুনরায় নির্বাচন গ্রহণের ঘোষণা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সাকিবের আউট হয়ে ফেরার সময়ের এই ভিডিওতে ভুয়া ভুয়া ধ্বনি শোনা যায়নি

সম্প্রতি, দর্শকরা সাকিব আল হাসানকে ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি দিয়েছেন দাবিতে গত ২৬ জানুয়ারি চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলা সাকিব আল হাসানের আউট হয়ে সাজঘরে ফেরার সময়কার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

ভুয়া ভুয়া ধ্বনি

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই ভিডিও ব্যবহার করে ফেসবুকের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিপিএলে গত ২৬ জানুয়ারি খুলনা টাইগার্স বনাম রংপুর রাইডার্সের খেলায় সাকিবের আউট হয়ে ফেরার সময়ের এই ভিডিওতে ভুয়া ভুয়া ধ্বনি শোনা যায়নি বরং বিপিএলে গত ২০ জানুয়ারি আরেক ম্যাচে দর্শকদের ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনির শিকার হন সাকিব। উক্ত সময়ের অডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এই ভিডিওয়ের সঙ্গে যুক্ত করে ভাইরাল ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি এবং ভিডিওতে যুক্ত অডিওর বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ভিডিও যাচাই 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা স্কোরবোর্ডের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে খেলাধুলা বিষয়ক ইউটিউব চ্যানেল ‘T Sports Bangladesh’ এ গত ২৬ জানুয়ারি “Extended Highlights | Khulna Tigers vs Rangpur Riders | BPL 2024” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ম্যাচটির হাইলাইটস ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison : Rumor Scanner

৪০ মিনিট ০৩ সেকেন্ডের এই ভিডিওর ৩১ মিনিটের পর থেকে আলোচিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে কোথাও সাকিব আল হাসানকে উদ্দেশ্য করে দর্শকদের ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগান শোনা যায়নি। 

অডিও যাচাই 

ভিডিওটিতে যুক্ত ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ দুয়োধ্বনির অনুসন্ধানে খেলাধুলা বিষয়ক প্ল্যাটফর্ম ‘T Sports’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২০ জানুয়ারি “Shakib vs Tamim | Match 3 | BPL 2024 | T Sports” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়৷ 

উক্ত ভিডিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২০ জানুয়ারি সাকিব আল হাসানের রংপুর টাইগার্সের মুখোমুখি হয় তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল। উক্ত ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম ওভারে ফরচুন বরিশালের ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল মুখোমুখি হন সাকিব আল হাসানের বোলিং এর। ওভারে শেষের দিকে দর্শকদের “ভুয়া ভুয়া” দুয়োধ্বনির শিকার হন সাকিব আল হাসান। 

উক্ত সময়ের ভিডিওর ২ মিনিট থেকে ২ মিনিট ৭ সেকেন্ড পর্যন্ত সাকিবকে উদ্দেশ্য করে দর্শকদের দেওয়া ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগানের সাথে গত ২৬ জানুয়ারি ‘সাকিব আল হাসান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরার সময় তাকে উদ্দেশ্যে করে দর্শক ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়েছে’ দাবিতে প্রচারিত আলোচ্য ভিডিওতে থাকা অডিওর মিল রয়েছে।

মূলত, গত ২৬ জানুয়ারি চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এ খুলনা টাইগার্সের মুখোমুখি হয় সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্স। উক্ত ম্যাচে সাকিব আল হাসান ৪ বলে ২ রান করে ক্যাচ আউট হয়ে মাঠ থেকে সাজঘরে ফেরার সময়কার একটি ভিডিও প্রচার করে সাকিবকে উদ্দেশ্য করে দর্শকরা ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি দিয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে, গত ২৬ জানুয়ারি সাকিব আউট হয়ে মাঠ থেকে ফেরার সময়ের এই ভিডিওতে দর্শকদের কর্তৃক তাকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ দুয়োধ্বনি শোনা যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, গত ২০ জানুয়ারি বিপিএলের আরেক ম্যাচে সাকিবকে উদ্দেশ্য করে দর্শকদের ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ দুয়োধ্বনি দেওয়ার সময়ের ভিডিওর অডিওস ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই অডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে তামিম ইকবালকে দর্শকরা ভুয়া ভুয়া দুয়োধ্বনি দিয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছিল। 

সুতরাং, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ দুয়োধ্বনি যুক্ত গত ২৬ জানুয়ারি সাকিব আল হাসানের আউট হয়ে ফেরার সময়কার ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বিষয়ে এই ভিডিওতে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল কোনো মন্তব্য করেননি 

সম্প্রতি, আমার আইডল মাহমুদউল্লাহ ম্যাচ শেষে রিয়াদকে প্রশংসায় ভাসালেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল– শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি এখন অবধি সাড়ে ছয় লাখের বেশি বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় তিন হাজার শেয়ার হয়েছে।

২০২৩ সালে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 
২০২৩ সালে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বাংলাদেশের ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং গত বছর বিশ্বকাপ জয়ের পর ম্যাক্সওয়েলের প্রেস কনফারেন্সের ভিডিও ব্যবহার করে ভিত্তিহীন এই দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।  

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, শুরুতে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের একটি প্রেস কনফারেন্সে বক্তব্য দেওয়ার কিছু অংশ দেখানো হয়েছে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কয়েকজন ক্রিকেটারের ছবি এবং ম্যাক্সওয়েলের ছবি ব্যবহার করে উপস্থাপক মনগড়া কিছু কথা বলেছেন। 

উপস্থাপক বলেন, “আমি আগেই বলেছিলাম মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান। এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রান করবে রিয়াদ। আমার কথায় সত্যি হলো। ম্যাচ জয়ের পর বাংলাদেশের সাইলেন্ট কিলার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে একি বললেন অস্ট্রেলিয়ান হার্ড হিটার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। বাজে একটি বিশ্বকাপ পার করেছে বাংলাদেশ দল। নয়টি ম্যাচের সাতটিতেই হার। বিশ্বকাপে পুরোপুরি ম্যানপুল ছিলো বাংলাদেশ দল। তবে, ব্যাতিক্রম ছিলেন একমাত্র মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শত ব্যর্থতার মধ্যে উজ্জ্বল একটি নাম মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৩২৮ রান করে হয়েছেন সেরা রান সংগ্রাহক। এমন উজ্জ্বল পারফরম্যান্সের পর রিয়াদকে নিয়ে মুখ খুলেছন অস্ট্রেলিয়ান হার্ড হিটার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ম্যাচ শেষে এই হার্ড হিটার বলেন, রিয়াদকে আমি বেশ অনেক আগে থেকেই চিনি। সে দারুণ একজন ক্রিকেটার। বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র রিয়াদকেই আমি অনুসরণ করতাম। বিশ্বকাপ শুরুর আগে আমি শুনেছিলাম তাকে নাকি বাদ দিতে চেয়েছিল ম্যানেজমেন্ট। এরপর যখন শুনলাম বিশ্বকাপে রিয়াদ খেলবে তারপরেই আমি বলেছিলাম দারুণ কিছু করে দেখাবে রিয়াদ। কারণ, সে ক্রিকেটের একজন কিংবদন্তি। এতবড় মাপের ক্রিকেটাররা দলের ব্যর্থতায়ও উজ্জ্বল থাকে নিজের পারফরম্যান্সে। রিয়াদেী ব্যাটিং দেখে একজন ফিনিশার হিসেবে আমি বেশ খুশি।”

আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের প্রেস কনফারেন্সের বিষয়ে অনুসন্ধান করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে International Cricket Council এর ফেসবুকে পেজে গত বছরের (২০২৩) ২৫ অক্টোবর “Watch Australia’s #CWC23 post-match media conference” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি প্রেস কনফারেন্সের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

১২ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের প্রেস কনফারেন্সের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, গত বছর অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরের প্রেস কনফারেন্সের ভিডিও এটি। এছাড়া, ভিডিওটিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। 

পাশাপাশি, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, আমার আইডল মাহমুদউল্লাহ ম্যাচ শেষে রিয়াদকে প্রশংসায় ভাসালেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল- শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয় বরং কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন একটি প্রেস কনফারেন্সের ভিডিও ক্লিপ এবং কয়েকটি ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, আমার আইডল মাহমুদউল্লাহ ম্যাচ শেষে রিয়াদকে প্রশংসায় ভাসালেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কারের পর প্রথম হ্যালো বলার দাবিটি সত্য নয়

0

সম্প্রতি “জেনে নিন হ্যালো বলার ইতিহাস” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দাবি করা হচ্ছে, হ্যালো’ একটা মেয়ের নাম। পুরো নাম মার্গারেট হ্যালো ( Margaret Hello)। তিনি আর কেউ নন – বিখ্যাত বিজ্ঞানী আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল এর গার্ল ফ্রেন্ড। গ্রাহাম বেল হলেন টেলিফোনের আবিষ্কারক। আবিষ্কারের পর তিনি প্রথম যে কথাটি বলেন তা হচ্ছে “হ্যালো।” 

আলেক্সান্ডার

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মার্গারেট হ্যালো নামে গ্রাহামবেলের কোনো গার্লফ্রেন্ড ছিল না এবং টেলিফোন আবিষ্কারের পর তিনি প্রথম শব্দ “হ্যালো” বলেননি বরং গ্রাহামবেলের স্ত্রীর নাম ছিল ম্যাবেল হাববার্ড। অপরদিকে টেলিফোন যোগাযোগে “হ্যালো” শব্দের প্রচলন ঘটান টমাস আলভা এডিসন।

মূলত, আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেলের মার্গারেট হ্যালো নামে কোনো গার্লফ্রেন্ড ছিল না এবং টেলিফোন আবিষ্কারের পর তিনি প্রথম শব্দ “হ্যালো” বলেননি বরং গ্রাহামবেলের স্ত্রীর নাম ছিল ম্যাবেল হাববার্ড। এছাড়া ১৮৭৬ সালের ৭ মার্চ বেল যখন প্রথম সফলভাবে টেলিফোনে কল করতে সমর্থ হন, তখন তিনি সর্বপ্রথম কথা বলেছিলেন তার সহযোগী টমাস ওয়াটসনের সঙ্গে। তিনি তাকে বলেছিলেন, “মি. ওয়াটসন, এখানে আসুন। আমি আপনাকে দেখতে চাই।” যার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দাবির সঙ্গে কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও এই দাবিটি ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

শেখ হাসিনার বিয়েতে খালেদা জিয়ার উপস্থিতি দাবিতে ভিন্ন ব্যক্তির ছবি প্রচার 

0

সম্প্রতি, “হাসিনার বিয়েতে খালেদা জিয়া” শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ছবি প্রচার করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনার বিয়েতে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, “হাসিনার বিয়েতে খালেদা জিয়া” শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত ছবিটি শেখ হাসিনার বিয়ের ছবি নয় বরং ছবিতে খালেদা জিয়ার পাশে কনে হিসেবে থাকা নারী বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বিশেষ সম্পাদক রোখসানা খানম মিতুয়া।

মূলত, রোখছানা খানম মিতুয়ার বিয়েতে তার কনে সাজে থাকা অবস্থায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে তোলা একটি ছবিকে শেখ হাসিনার বিয়েতে তার সাথে বেগম খালেদা জিয়ার ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে ছবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ভারতের মঞ্চে বাংলা গান গাওয়ার এই ভিডিওটি এডিটেড

সম্প্রতি, ‘আবারো ইন্ডিয়ান মঞ্চে কে কাপালো মায়ের গান গেয়ে’ শীর্ষক শিরোনামে এক যুবকের গান গাওয়ার একটি ভিডিও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউ টিকটকে প্রচার করা হয়েছে।

ভারতের মঞ্চে

টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ‘mdsabuz670’ নামক টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত ভিডিওটি দেখা হয়েছে ১৬ লক্ষেরও বেশি বার। ভিডিওটিতে ৯৪ হাজারেরও বেশি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ৫ হাজার চারশত অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে উক্ত যুবকের বাংলা গান গান গাওয়ার এই ভিডিওটি আসল নয় বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি’র শুরুতেই এক যুবককে ভারতীয় এক টেলিভিশন প্রোগ্রামে মাইক্রোফোন হাতে “মায়ের এক ধার দুধের দাম, কাটিয়া গায়ের চাম” শীর্ষক গানটি গাইতে শোনা যায়। গানটি শুনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিচারকের দায়িত্বে থাকা মঞ্চে উপস্থিত তারকাদের মুগ্ধ হতে দেখা যায়।

ভিডিওটিতে ভারতের তারকা সঙ্গীত শিল্পী হিমেশ রেশামিয়া, নেহা কক্কর, সংগীত পরিচালক বিশাল দরলানি সহ বেশ কয়েকজন তারকাকে এসময় মঞ্চে দেখা যায়। এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই

আলোচিত ভিডিওটি’র বিভিন্ন অংশে দেখানো উক্ত তারকাদের একাধিক দৃশ্যের স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সনি এন্টারটেইনমেন্ট’র অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ‘SET India’তে ২০২২ সালের ১৮ আগস্ট প্রকাশিত Indian Idol প্রোগ্রামের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিও’র একাধিক দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র একাধিক দৃশ্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়। তবে টিকটকে প্রচারিত আলোচিত ভিডিওটি’তে গান গাওয়া যুবককে এই ভিডিওটিতে দেখা যায়নি।

Comparison: Rumor Scanner

অডিও যাচাই

অনুসন্ধানে Bd Love Song Karaoke এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২০ মে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওর অডিওটি “মায়ের এক ধার দুধের দাম” শীর্ষক গানের কারাওকে ভার্সন। এই কারাওকের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর অডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, উপরিউক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, উক্ত গান গাওয়ার আলোচিত এই ভিডিওটি আসল নয়।

মূলত, ইন্ডিয়ান আইডল নামক অনুষ্ঠানে বাংলা গান গেয়ে মঞ্চ কাঁপিয়েছে দাবিতে এক যুবকের গান গাওয়ার একটি ভিডিও টিকটকে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইন্ডিয়ান আইডল প্রোগ্রামে ভারতীয় তারকাদের উপস্থিতির পুরোনো কিছু ভিডিও ক্লিপ সংগ্রহ করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় “মায়ের এক ধার দুধের দাম” শীর্ষক একটি গান সম্পাদনার মাধ্যমে যুক্ত করে প্রকাশ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে বাংলাদেশিদের গান গাওয়ার দাবিতে প্রচারিত একাধিক ভিডিও ফ্যাক্টচেক করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। দেখুন-

সুতরাং, ‘ইন্ডিয়ান মঞ্চ কাপালো মায়ের গান গেয়ে’ শীর্ষক ইন্টারনেটে প্রচারিত বাংলা গান গাওয়ার ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

১০ মিনিটের মধ্যে সিটে না বসলে টিকেট বাতিল সংক্রান্ত রেলের নতুন নিয়ম দাবিতে প্রচারিত সংবাদটি ভারতের

0

সম্প্রতি, রেলে নতুন নিয়ম, ১০ মিনিটের মধ্যে সিটে না বসলে টিকিট বাতিলের দাবি সংক্রান্ত একটি সংবাদ বাংলাদেশের দাবিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম এবং ফটোকার্ড যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

টিকেট বাতিল

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রেলে নতুন নিয়মে ১০ মিনিটের মধ্যে আসনে না বসলে টিকিট বাতিলের দাবিকৃত ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ঘটনা দাবিতে সেদেশের গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদকে বাংলাদেশের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলোর সূত্র ধরে দেশীয় একাধিক গণমাধ্যমে (কালবেলা, সময় টিভি, ঢাকা পোস্ট, দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস, জুমবাংলা, ডেইলি বাংলাদেশ) এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Kalbela

প্রচারিত প্রতিবেদনগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, সংবাদগুলোর শিরোনামে ঘটনাটির স্থান উল্লেখ করা না হলেও প্রতিবেদনগুলোর বিস্তারিত অংশে এটি ভারতীয় রেলওয়ে সেবার মান উন্নয়ন করার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষের নেওয়া একটি পদক্ষেপ বলে জানানো হয়েছে। সংবাদগুলোয় দাবি করা হচ্ছে, যদি কোনো যাত্রী নির্দিষ্ট সময়ের অতিরিক্ত ১০ মিনিটের মধ্যে নিজের আসনে বসতে না পারে তাহলে তার সিট বাতিল বলে গণ্য হবে।

তাছাড়া একাধিক গণমাধ্যম তাদের ফেসবুক পেজে (, ,) বিষয়টির বিস্তারিত উল্লেখ না করে শুধুমাত্র শিরোনাম এবং ফটোকার্ড পোস্ট করার ফলে ঘটনাটি ভারতের হলেও স্থানের নাম উল্লেখ না করে বাংলাদেশে প্রচার করায় বিষয়টি বাংলাদেশের ভেবে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে এবং বাংলাদেশের নেটিজেনরা বিষয়টি সঠিকভাবে না জেনেই ঘটনাটি বাংলাদেশের বলে মনে করেছেন।

Screenshot: Facebook

উক্ত পোস্টগুলোর কমেন্টবক্স বিশ্লেষণ করে নেটিজেনদের নিকট তথ্যটি বাংলাদেশের ভেবে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করতেও দেখা যায়।

Collage: Rumor Scanner

পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম News18 এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই “Will Your Train Ticket Be Cancelled If You Are Late By 10 Minutes? Railway Official Answers” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ট্রেন ছাড়ার ১০ মিনিটের মধ্যে আসনে না পৌঁছালে টিটি চাইলে অন্য কাউকে নির্দিষ্ট যাত্রীকে আসন দিয়ে পারবে এমন দাবিতে একটি তথ্য ভারতীয় গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়। তবে নিউজ ১৮ কে দেওয়া সাক্ষাতকারে পিআইবি রেলের মহাপরিচালক (ডিজি) যোগেশ বাওয়েজা জানান ট্রেন ছাড়ার ১০ মিনিটের মধ্যে নিজ আসনে না বসলে টিকিট বাতিলের তথ্যটি মিথ্যা। হ্যান্ড হেল্ড স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার পর টিকিট চেক করার জন্য টিটি ৩০ মিনিট সময় নেয়। এর পর যদি কেউ ১০ মিনিট দেরি করে তাহলে সেক্ষেত্রে টিটি অন্য কাউকে আসন দিয়ে দিতে পারবে।

খেয়াল করুন, এ সংক্রান্ত সংবাদটি ২০২৩ সালের জুলাইয়ের। ভারতীয় কতিপয় গণমাধ্যমে এই সংবাদটিই সম্প্রতি নতুন করে প্রচার হওয়ার ফলে তা বাংলাদেশের গণমাধ্যমেও প্রচার হতে শুরু করে। 

তবে এ সম্পর্কিত খবরের শিরোনামে স্থানের নাম না উল্লেখ করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়েছেন।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে রেল কর্তৃপক্ষের নতুন নিয়ম অনুসারে ১০ মিনিটের মধ্যে আসনে না বসলে টিকিট বাতিলের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, ভারতের রেল কর্তৃপক্ষের নতুন নিয়ম দাবি করে গেল বছর সে দেশের কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দাবি করা হয়, অনুসারে হ্যান্ড হেল্ড স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের পর ১০ মিনিটের পর কেউ আসনে না বসলে সেই আসনে টিটি অন্য যাত্রীদের বসাতে পারবেন। উক্ত সংবাদটি সম্প্রতি ভারতেরই কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যার বরাতে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করে সংবাদ প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিষয়টি বাংলাদেশের ঘটনা মনে করে ইন্টারনেটে প্রচার করেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ভারতের ঘটনা বাংলাদেশের দাবিতে প্রচারিত হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, ভারতীয় হ্যান্ড হেল্ড স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার ১০ মিনিটের মধ্যে আসনে না বসলে টিকিট বাতিলের দাবিতে প্রচারিত সংবাদকে বাংলাদেশের গণমধ্যমের  শিরোনামে স্থানের নাম উল্লেখ না করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

খালেদা জিয়া সম্প্রতি কোনো সমাবেশে বক্তব্য দেননি

0

সম্প্রতি, “দীর্ঘ ১৫ বছর পর সমাবেশে বক্তব্য দিলেন খালেদা জিয়া হাসিনাকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

খালেদা জিয়া

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সম্প্রতি কোনো সমাবেশে বক্তব্য দেননি বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে ৮ বছর পুরোনো একটি ভিডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বক্তব্য রাখতে দেখা যায়।

ভিডিও যাচাই-১

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয়বাদি দল (বিএনপি) এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর “Khaleda Zia’s Speech 24 Sep 2015 লন্ডনে খালেদা জিয়ার বক্তব্য” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর শিরোনাম থেকে জানা যায়, এটি ২০১৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর লন্ডনে একটি মতবিনিময় সভায় খালেদা জিয়ার বক্তব্যের পুরোনো ভিডিও।

পরবর্তীতে, মূলধারার সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর “বিশৃঙ্খলায় সংক্ষিপ্ত খালেদার ঈদ শুভেচ্ছা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Source: প্রথম আলো

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পূর্ব লন্ডনের বার্কিংসাইড এলাকার ‘দ্য লেকভিউ’ মিলনায়তনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের আয়োজন করে বিএনপির যুক্তরাজ্য শাখা। খালেদা জিয়া ছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে তার ছেলে তারেক রহমান ও তারেক রহমানের স্ত্রী জোবায়দা রহমান উপস্থিত ছিল বলে উক্ত প্রতিবেদন থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া শারীরিক অসুস্থতা ও বয়স বিবেচনায় ২০২০ সালের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতাবলে ছয় মাসের মুক্তি পান। এরপর এই জামিনের মেয়াদ বেশ কয়েকবার বৃদ্ধি করা হয়। সর্বশেষ গত ১২ সেপ্টেম্বর জামিনের মেয়াদ ৬ মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২০২০ সালে জামিনে মুক্তির পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে শারীরিক জটিলতার কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। 

এছাড়াও, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে সম্প্রতি কোনো সমাবেশে খালেদা জিয়ার বক্তব্য রাখার তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তার সে অনুষ্ঠানে দেওয়া একটি বক্তব্যের ভিডিওকেই সম্প্রতি “দীর্ঘ ১৫ বছর পর সমাবেশে বক্তব্য দিলেন খালেদা জিয়া হাসিনাকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম” শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। তবে মূলত অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় পুরোনো একটি ভিডিওর খণ্ডাংশ যুক্ত করে করে তাতে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিতে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, দীর্ঘ ১৫ বছর পর খালেদা জিয়া সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দাবিতে ছড়ালো গুজব 

সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানকে নিষেধাজ্ঞা, নতুন নির্বাচন দেওয়ার নির্দেশ– শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে। 

ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া, নতুন নির্বাচন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

 নিষেধাজ্ঞা

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার দাবিটি মিথ্যা এবং আবার নতুন নির্বাচন দেওয়ারও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বরং কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়া অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় ভিন্ন প্রসঙ্গের কয়েকটি ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে চটকদার থাম্বনেইলে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হচ্ছে। 

আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, শুরুতে দুইটি সংবাদ প্রতিবেদন রয়েছে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদকে সমালোচনা করে বক্তব্য দেওয়ার দুইটি ভিডিও প্রচার করতে দেখা যায়। 

ভিডিও যাচাই-১

শুরুতে প্রচারিত সংবাদ প্রতিবেদনটিতে উপস্থাপকের পঠিত সংবাদের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৬ জানুয়ারি “বর্তমান সংসদ সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে গঠন করা হয়েছে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটির সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা সংবাদ প্রতিবেদনটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, ১৬ জানুয়ারি বিএনপিপন্থি আইনজীবী ব্যরিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন করা মন্তব্যের প্রেক্ষিতে করা সংবাদ প্রতিবেদন এটি। আইনজীবী ব্যরিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বর্তমান সংসদ সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে গঠন করা হয়েছে; একইসাথে অসাংবাধিনাকি।

এখানে প্রধানমন্ত্রীর ও সেনাপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া, নতুন নির্বাচন নিয়েও কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি৷ 

ভিডিও যাচাই-২

এই অংশেও একটি সংবাদ প্রতিবেদন প্রচার করতে দেখা যায়। প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে এটিএন বাংলা এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৬ জানুয়ারি “ভোটের সঠিক হার জানতে চায় ইইউর বিশেষজ্ঞ দল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটির সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা সংবাদ প্রতিবেদনটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের হার নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বিশেষজ্ঞ দল। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) পক্ষ থেকেও একই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে।

এরই প্রেক্ষিতে করা সংবাদ প্রতিবেদন এটি। এখানেও আলোচিত দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। 

ভিডিও যাচাই-৩

এই অংশে একজন উপস্থাপককে সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে কিছু তথ্য উপস্থাপন করতে শোনা যায়। সেই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Nagorik TV নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩ জানুয়ারি “ভূমিদস্যু বসুন্ধরার শাহ আলমকে পুরস্কৃত করা সেনাপ্রধান শফিউদ্দিন জনগণের পক্ষ নেবেন কি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, সম্প্রতি সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদের কার্যক্রম নিয়ে নিজের মনগড়া কিছু তথ্য উপস্থাপন করছেন উপস্থাপক। তবে, আলোচিত দাবিগুলো সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ তিনি দেখাতে পারেনি। এছাড়া এ সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য কোনো তথ্যও অনলাইনে পাওয়া যায়নি। 

ভিডিও যাচাই- ৪

এই অংশের ভিডিওটিতে একজনকে সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে সমালোচনা করতে শোনা যায়। তবে, এখানে তিনি নিষেধাজ্ঞা বা নতুন করে নির্বাচনের নির্দেশ সংক্রান্ত কোনো কথা বলেননি এবং কোনো তথ্যও উপস্থাপন করেননি। 

এছাড়া, আলোচিত দাবিগুলো অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানকে নিষেধাজ্ঞা, নতুন নির্বাচন দেওয়ার নির্দেশ- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিগুলো মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন দুইটা ঘটনার সংবাদ প্রতিবেদন এবং ভিন্ন দুইটি ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে চটকদার থাম্বনেইলে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যমেও এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানকে নিষেধাজ্ঞা, নতুন নির্বাচন দেওয়ার নির্দেশ- শীর্ষক দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র